একটা কথা এত বছর ধরে শুনে আসছি যে মেয়েদের যৌন চাহিদা কম বলে তারা একটা পুরুষ নিয়েই সারা জীবন পার করে দিতে পারে, কিন্তু ছেলেদের যৌন চাহিদা অনেক বেশি তাই তাদের চারটা কিংবা একাধিক নারী লাগে। এখানে প্রশ্ন হল, সেক্সি কিংবা যৌনাবেদনময়ী এই শব্দটার জন্মই হয়েছে মেয়েদের জন্য । পরুষ কে ইদানীং হট, পৌরুষদীপ্ত, এসব বলা হলেও যৌনতার আবেদন নারীই বহন করে । তাহলে নারীর যৌন চাহিদা পুরুষের থেকে কম এই ধরেনর কথা কতটা যৌক্তিক? নারীর যৌনতা আসলে কতটা? নারী কি শুধুমাত্র ভালবাসা এবং সমাজের চাপে তাদের যৌনতা কে নিয়ন্ত্রণ করে নাকি আসলেই নারী যৌনতায় পুরুষের থেকে পিছিয়ে? নাকি পুরো বিষয়টাই পুরুষের তথা পুরুষতান্ত্রিক সমাজের ধাপ্পাবাজি?
শুরু করি রোমান সাম্রাজ্য দিয়ে , রোমান রানীদের যৌনাসক্তির কথা জগত বিখ্যাত। রোমান রানী ভ্যালেরিয়া ম্যাসালিনা ছিল তাদের মধ্যে সব চেয়ে বেশি আলোচিত । বলা হয় তার প্রথম স্বামী রোমান সম্রাট ক্লডিয়াস এর ধ্বংসের কারণ ছিল ভ্যালেরিয়ার এই অতিরিক্ত যৌনাসক্তি। স্বামী ক্লডিয়াস যখনই বাইরে যেতেন ভ্যালেরিয়া তখন প্রাসাদ থেকে বের হয়ে অপরিচিত পুরুষদের সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হতেন, এবং নাগালের মধ্যে যত পুরুষ পাওয়া যায় তত পুরুষের সাথেই সঙ্গম করতেন। শেষ পর্যন্ত এই রানী নিজেকে বারবনিতায় পরিণত করেছিলেন। অবশ্যই বারবনিতা হওয়াটা তার জন্য মোটেও অর্থে আয়ের পথ ছিল না। শুধু তার যৌন চাহিদা কে পরিপূর্ণ করার উপায় ছিল এই বেশ্যাবৃত্তি। বেশ্যালয়ের সব চেয়ে জনপ্রিয় নারী ছিল সিসিলিয়া। একদিনে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পুরুষের সাথে সঙ্গম করার রেকর্ডটি ছিল তার। তাই ভ্যালেরিয়া একবার বেশ্যালয়ে একটা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল। সিসিলিয়া নাকি ভ্যালেরিয়া, দুজনের মধ্যে এক দিনে যে সর্বোচ্চ সংখ্যক পুরুষের সাথে সঙ্গম করতে পারবে সে-ই হবে বিজয়ী । ১৫ জনের পরই সিসিলিয়া হার মেনে নিয়েছিল কিন্তু ভ্যালেরিয়া ২৫ পার করেও ক্লান্ত হয়নি, বরং না থেমে ব্রথালয় বন্ধের আগ পর্যন্ত সে তার কাজ চালিয়ে গেছে। কোন সন্দেহ নেই সেই বিজয়ী হয়েছিল। ভ্যালেরিয়া যখন তার দ্বিতীয় বিয়েটি করে, তখন সে জনসম্মুখে তার দ্বিতীয় স্বামীর সাথে যৌনতায় লিপ্ত হয়। এই রানী এক কথায় শি উলফ ছিল। ভ্যালেরিয়ার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য ছিল সেক্স!! ভ্যালেরিয়াকে ইতিহাস মনে রেখেছে শুধুই তার যৌনতার প্রতি এই প্রবল আসক্তির জন্যই । যৌনাসক্তি-ই তার সব চেয়ে বড় পরিচয়। অবশ্য এক দিনে নন স্টপ সঙ্গম করার রেকর্ডটি ভ্যালেরিয়ার নয়, এটি জয় করেছিল মার্কিন পর্নস্টার লিসা স্পারাক্স। সে এক দিনে ৯১৯ জনের সাথে সঙ্গম করে এই বিশ্ব রেকর্ডটি করেছিল।
আর একজন রানীর কথা এক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা যায়। ক্যাথরিন দ্যা গ্রেট। ১৭৪৫ সালে তার বিয়ে হয় রাজা পিটারের সাথে। পিটার ছিল শারীরিক ভাবে অক্ষম পুরুষ। বিয়ের পর সাত বছর পর্যন্ত তাদের মধ্যে কোন যৌন সম্পর্ক হয়নি । এর পর রানী ক্যাথরিন একের পর এক পুরুষ কে তার প্রেমিক হিসেবে বেঁছে নিতে থাকেন এবং তার যৌন চাহিদা মেটাতে থাকেন। তবে তিনি যে কোন পুরুষের সাথেই সঙ্গম করতেন না । যদি তার কোন পুরুষ পছন্দ হত তবে আগে তার নিজস্ব ডাক্তার দিয়ে আগে ঐ পুরুষ টিকে চেক করাত যে তার শরীরে কোন রোগ আছে কিনা এবং সে শারীরিক ভাবে যৌনতায় সক্ষম কিনা এরপর তাকে সে তার যৌন সঙ্গী হিসেবে বেঁছে নিত। ক্যাথেরিনের তিন’শ প্রেমিক ছিল, যাদের সাথে সে যৌন সঙ্গ ভোগ করেছে।এখানে উল্লেখ্য যে সব পুরুষ-ই চাইত ক্যাথেরিনের যৌন-সঙ্গী হতে কারণ ক্যাথরিন তার এই সব প্রেমিকদের প্রচুর ধনসম্পদ দিত। রাশিয়ার বিখ্যাত এই রানী যৌনতার প্রতি এতই আসক্ত ছিল যে বলা হয়ে থাকে, সে তার ঘোরার সাথে সঙ্গম করতে গিয়ে মারা যায়। যদিও এ প্রসঙ্গে কোন তথ্য প্রমাণ নেই। তবুও তার যৌনতার প্রতি আসক্তি এবং এ জন্য সে কতটা আগ্রহী ছিল তার প্রচুর সাক্ষ্য প্রমাণ রয়েছে ইতিহাসের পাতায়।
নিকল নারিয়েন, প্লেবয় ম্যাগাজিনে ২০০২ বিখ্যাত প্লেমেট অফ দা মান্থ হয়েছিল । এই আলোচিত মডেল তার যৌনাসক্তি নিয়ে বেশ খোলামেলা বক্তব্য সব সময় রেখে আসছে। তার ভাষায়, যৌন চাহিদা তাকে প্রচণ্ডভাবে তাড়িত করে, এবং যে কোন অবস্থাতেই যৌনতা তার কাছে মুখ্য বিষয়। এটা শুধু নিকলের বক্তব্য নয়, অসংখ্য নারী মডেল, অভিনেত্রী এবং পাশ্চাত্যের স্বাধীনচেতা নারীরা যৌনতার প্রতি তাদের আকর্ষণ এবং প্রকাশ্যে কিংবা অপ্রকাশ্যে প্রবল যৌনতা-পূর্ণ জীবন ধারণ করেন। অনেকেই বলে থাকে বয়স বাড়ার সাথে সাথে নারীদের যৌনতা কমে যায় অথচ পুরুষের কমে না। তাই বৃদ্ধ বয়সে কোন পুরুষ বিয়ে করলে সেটাকে খুব স্বাভাবিক ভাবে দেখা হয় আর কোন নারী মাঝ বয়সে বিয়ে করলেও আমাদের সমাজে ঐ নারীর যৌন ক্ষমতা নিয়ে ঠাট্টা করা হয়। এমন কি সমবয়সী ছেলে মেয়ে বিয়ে না করার পেছনে নারীর যৌনতা কমে যায় নামক ভ্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গি বিশেষ ভাবে দায়ী।
আচ্ছা পৃথিবীর সব চেয়ে বেশি বয়সী বারবনিতার বয়স কত আন্দাজ করতে পারেন? ঠিক আছে আমি-ই বলে দিচ্ছি; তার বয়স ৮২ বছর। তার নাম চিনু। তাইওয়ানের এই নারী এই বয়সেও প্রচণ্ড ভাবে যৌনতায় সক্ষম।
গত ২৯ জুলাই ২০১০এ টেলিগ্রাফ একটা সংবাদ প্রকাশ করেছিল, গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে, মধ্য বয়সী নারীরা অল্প বয়সী নারীদের তুলনায় যৌনতায় বেশি সক্রিয় থাকে। গবেষকরা প্রমাণ করেছেন ৩১ থেকে ৫৪ বছরের নারীরা যৌনতায় সব চেয়ে বেশি একটিভ থাকে। তাই নারীর বয়স যৌনতার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে না। বিষয়টা সম্পূর্ণ-ই শারীরিক চর্চার। যে নারী শরীর চর্চা করে কিংবা চর্চার সুযোগ পায়, তার যৌন ক্ষমতা ঠিকই থাকে। যেমনটা থাকে পুরুষের। এই সমীক্ষাগুলো কে অনেকেই ব্যতিক্রম বলে উড়িয়ে দেবার চেষ্টা করবেন জানি। তাদের জন্য আরও চমকপ্রদ তথ্য আছে। মহাভারতের দ্রৌপদী চরিত্রটির স্বামী ছিল ৫ জন। এই চরিত্রটি বাস্তব উদাহরণ হল ভারতের উত্তরখাণ্ড এর দেরাদুন গ্রামে বসবাস করা নারী রাজো ভার্মা। তার পাঁচ স্বামী। যারা আপন পাঁচ ভাই। নিয়ম করেই স্বামীদের সঙ্গে সময় কাটে রাজোর। স্বামীরাও এক স্ত্রী নিয়ে মহা সুখে আছে। শুধু রাজোড় পাঁচ স্বামী তা নয়, এটা তাদের গাঁয়ের প্রাচীন রীতি। তার মায়ের ছিল তিন স্বামী।
নারীদের বহুস্বামী রাখার এই রীতি বহু পুরাতন রীতি। একে বলা হয় পলিয়েন্ডারী। তানজেনিয়ার “নিম্বুই” সম্প্রদায়ের নারীরা তাদের ইচ্ছানুযায়ী পাঁচ বা ততোধিক স্বামী একত্রে রাখতে পারে। এক্ষেত্রে পুরুষের সাথে তাদের সম্পর্কের কোন সমস্যা হয় না। এছাড়া তিব্বত, ক্যানাডার আর্কটিক, নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকা, ভারতের লাদাখ ও ঝাড়খণ্ড, কেনিয়া, তানজেনিয়া, অ্যামাজনের জো উপজাতিরা,ভেনিজুয়েলা এবং আর কয়েকটি পোলিনেশিয়া সমাজে এই ধরনের বিবাহ সামাজিক ভাবেই স্বীকৃত। চীনের মঙ্গোলীয় অঞ্চলে মসোউ গোষ্ঠী, সাহারা আফ্রিকা ও আমেরিকার উপজাতিদের মাঝেও এই রীতি রয়েছে। তিব্বত, চীন ও তাঞ্জানিয়ার কয়েকটি আদিবাসী সম্প্রদায়েও এই প্রথা চালু রয়েছে। একে বলা হয় “ফ্রেটারনিটি পলিয়েন্ডারী”। এই ধরনের বিয়েতে নারী কেবল মাত্র সহোদর ভাইদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এছাড়া ভেনিজুয়েলার বারী ক্ল্যান সম্প্রদায়ের নারীরা সামাজিক ভাবে একই সাথে দুজন পুরুষকে বিয়ে করে এবং দুজনেই সামাজিকভাবে সন্তানের পিতার মর্যাদা পেয়ে থাকে। অ্যামেরিকার এবিসি নিউজ ২০১১ সালে এমন একটি পরিবারকে নিয়ে রিপোর্ট করে, যেখানে দেখানো হয় জায়া তার দুই স্বামী জন, ইয়ান এবং তাদের দুই বছরের ছেলে এইমেন কে নিয়ে একই ছাদের নীচের বাস করছে দুই বছরের বেশী সময় ধরে। এবং তারা যথেষ্ট সুখী। নারীর যৌনতা নিয়ে গবেষকদের মধ্যে অসংখ্য তত্ত্ব উপাত্ত আছে। নারী যে পুরুষের চেয়ে যৌনতায় বেশি সক্রিয় এর অসংখ্য প্রমাণ আছে। সেক্স ডিফারেন্স ইন সেক্সচুয়াল ফ্যান্টাসি বইটি তে এলিস স্যামন্স উল্লেখ করেছেন যৌন ক্ষেত্রে নারীরা অনেক সময় পুরুষের তুলনায় ৭ গুণ বেশি সক্রিয় থাকে।
“ঈশ্বর নারী কে যৌন ক্ষমতা দিয়েছেন” মাঝে মাঝে এডউইন লুয়িস কোলের মত ধর্ম প্রসারকদের মুখ ফসকে সত্যিটা বের হয়ে যায়। যদিও ধর্ম গ্রন্থগুলো নারীকে যৌনতা উপভোগের কোন বিঁধান দেয়নি। কোথাও বলা হয়নি স্ত্রী যদি যৌনতায় সন্তুষ্টি লাভ না করে তবে স্বামীর পাপ হবে। অথচ নারীদের ক্ষেত্রে উল্টা। তাদের একমাত্র কাজ স্বামীর যৌনতার আনন্দটুকু নিশ্চিত করা। সেখানে স্বামী অক্ষম হলেও স্বামী কে ছেড়ে যাবার অধিকার নারী কে দেয়া হয়নি। আমাদের সমাজে যৌনতা শব্দটাই নিষিদ্ধ তার উপড়ে কন নারী যদি যৌনতার কথা বলে তবে তাকে কি বলে সম্বোধন করা হয় সে কথা কারোর-ই অজানা নয়। আর পুরো বিষয়টাকে ধর্মীয় ছকে ফেলা হয়েছে বলে নারীরা নিজেদের জন্য যৌন আনন্দ বলে যে কিছু আছে সেটা থেকে গুটিয়ে থাকে। পুরো বিষয়টা নির্ভর করে স্বামীর ইচ্ছা অনিচ্ছার উপর। নারী আসলে পুরুষের তুলনায় যৌনতায় কখনোই পিছিয়ে ছিল না। তার প্রচণ্ড ভাবেই এই বিষয়ে আকর্ষণ বোধ করে কিন্তু বেশ্যা, বারবনিতা ট্যাগ এবং সামাজিক শাস্তির ভয়ে নিজের ভেতরে প্রচণ্ড একটা দেয়াল তুলে রাখে, আর পুরুষেরা সেই সুযোগে নিজের যৌনতা প্রবণ, যৌনতা কামী প্রমাণ করে তাদের একাধিক নারী কামনা কে জায়েজ করে নেয়।
মুক্তমনা মানেই সত্যধর্ম বিরোধী নয়।
যৌনতার অলিগলি মাড়ানোই কি মুক্তমনা? অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা। মৃত্যুর পর কি হবে চিন্তা করলে প্রসঙ্গ অনেক উজ্জ্বল হতো। সময় থাকতে ভাবুন।
একজন লেখক হিসেবে আমার দায় সত্যটা উপস্থাপন করা এবং সেই সাথে আমার মতামত এর যৌক্তিকতা তুলে ধরা। যদিও যুক্তি বিষয়টাও এক এক পাঠকের কাছে এক এক রকম, তাই যেভাবেই উপস্থাপন করি না কেন, সেখানেও আপত্তির যায়গা থাকবেই । এবং এটাই খুব স্বাভাবিক ।
যারা মন্তব্য করেছেন সবাইকে-ই আন্তরিক ধন্যবাদ। বিশেষ করে লেখাটি পড়ে, বিষয়টি ভেবেছেন বলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। প্রথমেই মনে করিয়ে দিচ্ছি লেখাটির বিষয়বস্তু ছিল , নারীর যৌন চাহিদা পুরুষের থেকে কম এই ধারণা কতটা যৌক্তিক?আদৌ যৌক্তিক কিনা ? এখানে একবারও নারী কে পুরুষের চেয়ে অধিক যৌনকামী প্রমাণ করার চেষ্টা হয়নি বরং পুরুষের যেমন বহুকামীতার প্রতি আসক্তি আছে নারীদেরও আছে, পুরুষের যৌন চাহিদা যেমন আছে নারীদেরও আছে , কোন কোন ক্ষেত্রে নারীদের বেশি সক্রিয়তা দেখা গেছে , কোন ক্ষেত্রে পুরুষের । কিন্তু আমাদের সমাজ নারীর বহুকামীতা কে কোন ভাবেই সমর্থন করে না যেটা পুরুষের ক্ষেত্রে ধর্ম দিয়ে জায়েজ করা হয়েছে এবং সামান্য কিছু আব্রু থাকলেও এটা সমাজে প্রচলিত বিষয়। যৌনতার সাথে নীতি নৈতিকতা ভিন্ন প্রসঙ্গ বিধায় সেটা নিয়ে এই পোষ্টে আলাপ করছি না । ভবিষ্যতে এ নিয়ে লেখার ইচ্ছে আছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ করা জরুরী , এই পোষ্টে যাদের কথা উল্লেখ আছে তারা ক্ষমতাধর নারী বলেই তাদের যৌনতার প্রতি এই আকর্ষণ প্রকাশ্যে এসেছে এবং তারা এটা নিয়ে ভীত ছিলেন না বলেই বিষয়গুলো কে স্বাভাবিকের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন । যেটা সাধারণ নারীদের ক্ষেত্রে সম্ভব নয় । কারণটা আশা করি ব্যাখ্যা করার কোন প্রয়োজন নেই ।
পত্রিকার পাতায় অসংখ্য নারীর পরকীয়ার নিউজ পাওয়া যায় । প্রেমের নাম দিলেও বিষয়টা প্রথমত যৌনতা। আর তাদের কে সমাজ কি চোখে দেখে সেটাও কার অজানা নয়। সামাজিক ভাবে নারীর যৌনতা এতটাই অবহেলিত যে , কোন কোন নারী কখনো তার স্বামী কেও বলতে পারে না , সে যৌনতায় সন্তুষ্ট নয়। এর একমাত্র কারণ পুরুষ প্রধান সমাজ এবং নারীর যৌনতার বিষয়টা পুরুষ নিয়ন্ত্রণ করে।
ধর্ষণকামীতা একটা মানসিক রোগ। এর সাথে যৌনতা মেশানোও এক ধরণের অসুস্থতা । যৌনতার প্রতি আকর্ষণ এবং এ জন্য দুজনার সম্মতিতে যৌনতা একটা সুস্থ চর্চা। সেটা বহুকামিতা হলেও সেটা অসুস্থ চর্চা নয়।
পুরুষের যৌন চাহিদা, নারীর থেকে বেশি মোটেও নয় , এই প্রসঙ্গে ডাক্তার অনির মন্তব্য থেকে একটা লাইন ধার করছি // যৌন রোগীর সংখ্যা বিচার করলে নব্বই ভাগ-ই পুরুষ তবুও বলা হয় যৌনতার ক্ষেত্রে পুরুষ- ই এগিয়ে// এই সব কিছুর বিচারে , সমাজে নারীর যৌনতা নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারণাগুলো ভাঙা খুবই জরুরী ।
লেখাটি তে নারীদের বেশি বেশি অংশগ্রহণ আশা করেছিলাম । হয়ত এর পরে সেটা পাব ।
শেষ করছি ছোট একটা আক্ষেপ নিয়ে ,
আমার ধরনা ছিল অন্তত কেউ একজন এই লেখারটির সাথে বিজ্ঞান ভিত্তিক আরও তথ্য উপাত্ত যোগ করে লেখাটা সমৃদ্ধ করবেন। কিন্তু সেটার প্রতি এখনো কার আগ্রহ দেখছি না। আপনাদের মধ্যে কেউ এই কাজটি করলে সেটা নারীমুক্তির ক্ষেত্রে একটা চমৎকার পদক্ষেপ হবে। ধন্যবাদ ।
১১/ পুরুরষের বহুগামিতার প্রমাণ স্বরূপ একটি উদাহরণ প্রায়শই দেয়া হয়। বিভিন্ন রাজার হেরেম, ক্ষমতাশীল পুরুষদের অসংখ্য পত্নী- উপপত্নীর ব্যবস্থা, যা নারীদের ক্ষেত্রে খুব বেশি দেখা যায় না। এই রকম উদাহরণ- ‘ইনকমপ্লিট’, কেননা- এটা যত না পুরুষের যৌনতার আধিক্য, তীব্রতা, বহুগামিতার পরিচায়ক, তার চাইতেও তার ক্ষমতার বহিপ্রকাশ ঘটে এসব উদাহরণের মধ্য দিয়ে।
কেননা, একজন পুরুষের হেরেমে অসংখ্য নারী রাখা মানে এই নয় যে- সেখানকার নারীদের সেই সামান্য বা কালেভদ্রে যৌনতার সুযোগ পাওয়াটাই নারীর স্বাভাবিক যৌনতার পরিমাপক। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়- হেরেমের তো বটেই, এক পুরুষের বহুবিবাহের ঘটনায়- নারীরা অবদমনের স্বীকার, কিংবা তাদের যৌন চাহিদা চরিতার্থ করতে অনেক সময়ে অন্যত্র অন্যকিছুর শরনাপন্ন হতে হয়। আর এরকম ঘটে বলেই – নারীর এরকম ইল্লিসিট রিলেশন নিয়ে সমাজ নানা রকমের ট্যাবু তৈরির চেস্টা করেছে সব সময়ই- অর্থাৎ নারী কুলটা, কলঙ্কিনি, অসতী … ইত্যাদি।
তার্কিশ এক নারী চলচ্চিত্রকার বাংলাদেশে এসেছিল, একটা ওয়ার্কশপে। সে নারীদের সমকামিতা নিয়ে ধারাবাহিক কাজ করেছিলো। তার একটা স্টাডি ছিল এই যে- তুরস্কের উচ্চবিত্তদের এই যে হেরেম, বহু নারীতে আসক্তি, এবং ক্ষমতাকেন্দ্রের প্রান্তে অবস্থানকারী নারীদের বঞ্চিত রাখা- এসবই ঐ নারীদের মাঝে সমকামের প্রচুর অনুশীলনের মাধ্যমে প্রকাশ হতো।
বিষয়টা হচ্ছে- একজন পুরুষ যতই বহুনারীতে আসক্ত হোক, তার বহু পত্নী- উপপত্নী থাকুক- সে তার স্বাভাবিক যৌনচাহিদা অনুযায়ী যৌনতায় লিপ্ত হয়। এমন না যে, সে প্রতিদিন সব পত্নী-উপপত্নীর সাথেই মিলিত হয়, তারচেয়ে বরং- একেকদিন একেকনারীর কাছে যায়- এর মানেই হচ্ছে প্রতি নারীই অনেক দিন পর পর যৌনতার সুযোগ পায় … (অনেক সময় কোন পত্নীর কাছে টানা অনেকদিন, কয়েকমাস থাকলে- ঐ পুরা সময়কাল বাকি নারীরা বঞ্চিত থাকে) … নবী মুহম্মদ সা এর ক্ষেত্রেও দেখা যায় এক সময় তার নয় স্ত্রীর কাছে পালা করে যেত, মানে নয়জনের কাছে নয়দিন … তার মানেই হচ্ছে একেকজন স্ত্রী ৯ দিনে মাত্র একবার যৌনতার সুযোগ পাচ্ছে।
এসব উদাহরণ তাই পুরুষের বহুগামী প্রকৃতির উদাহরণ হিসেবে খুবই মিসলিডিং।
৬/ এবারে, খ নম্বর প্রশ্নের জবাবের দিকে যাই। আবারো গণিতের সাহায্য নেই। বিষমকামের বিষয়েই এখানে আমরা আলাপ করছি- যেখানে যেকোন যৌনক্রিয়ায় একজন নর এবং একজন নারীর প্রয়োজন। (হিসেবের সুবিধার জন্যে দলগত যৌনতাও বাদ দিচ্ছি)। গানিতিকভাবে বলা যায়- দুনিয়ার যাবতীয় পুরুষের যৌনক্রিয়ার মোট সময় – যাবতীয় নারীর মোট যৌনক্রিয়ার সময়ের সমান। একজন নর যদি ৫ জন নারীর সাথে ৩০ মিনিট করে যৌনতায় লিপ্ত হয়- তাহলেও একজন পুরুষের ও ৫ জন নারীর মোট যৌনক্রিয়ার সময় সমান (১৫০ মিনিট), অথবা আরো যদি এক্সটেন্ড করি- বলা যাবে, মানুষের একদম শুরু থেকে আজ পর্যন্ত বিষমকামের ক্ষেত্রে (ও দলগত যৌনতাকে বাদ দিলে)- ৫০-১২০ মিলিয়ন, বিলিয়ন শুক্রাণুর অধিকারী নর ও মাসে একটি মাত্র ডিম্বাণু নিষিক্ত করার ক্ষমতাসম্পন্ন নারীর – সর্বমোট যৌনক্রিয়ার সময় সমান। অর্থাৎ, নর ও নারীর যৌনতায় অংশ গ্রহণ একদম সমান।
৭/ গর্ভধারণের প্রসঙ্গ খুব আসে। গর্ভধারণের সময়কালে নারী যৌনতায় অংশ নিতে পারে না, ফলে এটাও একটি কারণ পুরুষ তার স্বাভাবিক যৌনতা বজায় রাখতে বহুগামি হয় বা পরনারীতে আসক্ত হয়। সেটাও যদি হতে হয়ে- বুঝতে হবে, সেই পর নারী ঐ সময়ে গর্ভাবস্থায় নয় এবং তুলনামূলক অধিক পুরুষের সাথে যৌনতায় লিপ্ত হলেই এটা সম্ভব। আবার সেই গণিত দিয়ে বুঝাই। ১০-১০ জনের একটি সমাজ। সুবিধের জন্যে প্রথমে ধরলাম সবাই একগামি এবং প্রত্যেকের চাহিদা এমন যে- প্রত্যেকে গড়ে প্রতিদিন একবার যৌনক্রিয়া করে (বেশি বলে ফেললাম নাকি? বেশি মনে হলে প্রতি মাসে বা প্রতি সপ্তাহে একবার ধরে হিসাব করতে পারেন)। এখন, এক নারী গর্ভধারণ করলো- এবং গর্ভধারণ থেকে সন্তান উতপাদনের পরে কয়েকদিন পর্যন্ত ধরলাম- মোট ৪ মাস বা ১২০ দিন যৌনক্রিয়ায় অপারগ ছিল। বাকি ৯ জন পুরুষ ও ৯ জন নারী স্বাভাবিক ভাবে প্রতিদিন একবার মিলিত হয়। এখন এই পুরুষকে যদি ১২০ দিন ১২০ বার স্বাভাবিক যৌনক্রিয়া করতে হয়- তাহলে বাকি ৯ জন নারীর এক বা একাধিক জনের কাছে যেতে হবে অথবা পুরো সময় “উপোস” থাকতে হবে! যখন বলা হচ্ছে- নারীর গর্ভধারণ পুরুষকে বহুগামী বানিয়েছে, তখন বলা যায়- এটা একই সাথে নারীকেও বহুগামী বানায়। আদিম সমাজে- যেখানে মিলে মিশে গোত্রের সকল নারীর সাথে সকল পুরুষের যৌন সম্পর্ক ছিল- তখনও এমনটা হতো যে- গর্ভহীন অবস্থায় একজন নারী একজন পুরুষের চাইতে অধিক বহুগামী হতো এবং ঐ সময়টুকুতে তাদের যৌনক্রিয়ার সময়কালও অনেক বেশি থাকতো! (যেমন, কোন সময়ে ৩ জন নারী গর্ভাবস্থার কারণে অপারগ হওয়া মানে- ৭ জন নারীকে ১০ জন নরের সাথে যৌনক্রিয়ায় লিপ্ত হতে হতো। ফলে- একজন নরের তুলনায় একজন নারীকে বেশি পুরুষ ও বেশি সময় ধরে যৌনকর্ম করতে হতো) …
৮/ পুরুষের বহুগামিতার সমর্থন আর নারীর একগামিতাকে বাধ্য করা- এটার পেছনে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ দায়ী। এখানে কোন প্রকৃতিপ্রদত্ত ব্যাপার স্যাপার নেই। কেননা- বুঝতেই পারছেন, সমাজে এমন অনুশীলনের কোন বাস্তব ভিত্তি নাই। অর্থাৎ, পুরুষের বহুগামিতা আছে মানে হচ্ছে নারীরও বহুগামিতা আছে। ফলে- একটির বহুগামিতাকে সমর্থন আরেকটির নিন্দা মানেই হচ্ছে- একের উপরে অপরকে ডমিনেট করার সুযোগ তৈরি করা ও সেটার আয়োজন করা …
৯/ দুনিয়ার যাবতীয় ধর্ষণের ৯৯% ক্ষেত্রেই পুরুষ হচ্ছে ধর্ষক, সমাজ- সভ্যতা- সংস্কৃতি- ইতিহাস এসব বাদ দিয়ে এরকম পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে যদি কেউ সিদ্ধান্ত টানে যে- পুরুষের ধরণই হচ্ছে সে প্রকৃতিগতভাবেই ধর্ষকামী- সেটা হচ্ছে মারাত্মক ভুল। আজ ৯৯% ধর্ষক হচ্ছে পুরুষ, কারণ এই সমাজটা হচ্ছে পুরুষতান্ত্রিক। এটা ভালো বুঝা যাবে- আমাদের আদিবাসী সমাজ-সংস্কৃতির দিকে তাকালে।
১০/ আজকের রুচি- সংস্কৃতি- সভ্যতা বলে আমরা যৌনতার যেসব আচরণ নিয়ে গর্ব করি- তার প্রায় সবই আসলে ট্যাবু। এমনকি একগামি সম্পর্ককে নিয়ে একরকম যে মহত্ত আরোপ করা হয় – সেটাও ট্যাবু- যেহেতু সমাজটি পুরুষতান্ত্রিক- সব রকমের ট্যাবুর ডিরেক্ট ভিক্টিম হচ্ছে নারী, এমনকি এই মনোগ্যামিকে সুন্দর, মহৎ, ‘পবিত্র’ হিসেবে দেখার ট্যাবুটাও নারীর জন্যে ক্ষতিকর!
১/ এই লেখার দূর্বলতা হচ্ছে- নারীর যৌনতার যেসব উদাহরণ দেয়া হয়েছে- বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেগুলো এক্সট্রিম পর্যায়ের অথবা পুরুষতান্ত্রিক সমাজের আরেকটি ক্ষতের পরিচায়ক। (কিছু আলোচনা অবশ্য এসেছে- সাধারণ সামাজিক কাস্টম হিসাবে- কিন্তু শুরুর ঘটনাগুলো ছবিসহ যেভাবে এসেছে তাতে – সেই সামাজিক কাস্টম হিসেবে নারীর বহুগামিতার ব্যাপারটি আড়ালে পড়েছে)। যে রানীমাতা টানা ২৫ জনের সাথে যৌনতায় লিপ্ত হয়ে ঐ সময়ের বেশ্যালয়ের সেরা জনপ্রিয় নারীকে বিস্তর ব্যবধানে পরাজিত করে- তার আলোচনা নর-নারীর স্বাভাবিক আচরণ বিশ্লেষণে সহায়ক নয় বলে মনে হয়। তাছাড়া, সমাজে প্রস্টিটিউশনের উদাহরণ দেয়াও যথেস্ট নয়- কেননা এটা মূলত পুরুষের ভোগের উদ্দেশ্যেই মূলত সৃষ্ট, ফলে এক সময়ে অভ্যস্ত নারী অসংখ্য পুরুষ গমনে পটু হলেও বলা যায় না- এটা তার স্বাভাবিকভাবে ও স্বেচ্ছায় পাওয়া যৌনতার প্রাকটিস।
২/ নারীর যৌনতা বা নারী ও পুরুষের যৌনতা বিষয়ক তুলনামূলক আলোচনাটার মাঝে দুই প্রশ্ন আমার কাছে মূলঃ ক/ নারী ও পুরুষের মধ্যে প্রকৃতিগতভাবে কার মাঝে বহুগামী হওয়ার ঝোক বেশি, খ/ নারী ও পুরুষের মাঝে কার মধ্যে যৌনতার আকাঙ্খা, চাহিদা- বেশি? – এই প্রশ্নদুটো আলাদা করা জরুরি মনে করি এই কারণে যে- তুলনামূলক যৌন আকাঙ্খা কারো কম হওয়ার পরেও একজন নারী বা নর পার্টনার পরিবর্তনে আগ্রহী হতে পারে।
৩/ আমার ধারণা- উপরের প্রশ্নদুটোর মাঝে প্রথমটির জবাব ইজিয়ার, ২য়টির চাইতে। আমার ধারণা- প্রকৃতিগতভাবে নারী ও পুরুষ উভয়েই সমান বহুগামী। ‘প্রকৃতিগত’ বিষয়টা বুঝতে আমি বুঝছি- মানুষের মাঝ থেকে তার সামাজিক অনুশাসন- বিধি নিষেধ- সংস্কৃতি- রুচি এসব বাদ দিলে যা থাকে সেটা। (১০০ টা নারী শিশু ও ১০০ টা পুরুষ শিশুকে জন্মের পরপরেই একটা মানবহীন, সভ্যতাহীন দ্বীপে ছেড়ে দিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে পারলে ভালো হইতো) … প্রাচীণ ইরোটিক ভাস্কর্য যত দেখা যায়- যত প্রাচীণে যাওয়া যায়- নারী-পুরুষের বহুগামিতা দেখা যায়। প্রাচীন সাহিত্যেও নারীর বহুগামিতা বহু পাওয়া যায়। (পুরুষেরও)।
৪/ গণিত দিয়ে বিষয়টা বুঝার চেস্টা করি। আমরা জানি, দুনিয়ায় নর ও নারীর অনুপাত প্রায় ১:১। এরকম সমান সংখ্যক নর নারীর ক্ষেত্রে, নর বা নারী কারোর পক্ষেই এককভাবে বহুগামী হওয়া সম্ভব নয়। আপনারা ১০ জন নারী ও ১০ জন পুরুষের একটা সমাজের কথা চিন্তা করে দেখেন। সব নারী একগামী হলে- কোনভাবেই কোন পুরুষের পক্ষে বহুগামী হওয়া সম্ভব নয়। ফলে- এরকম সমাজে কোন পুরুষ বহুগামী তখনই হওয়া সম্ভব- যখন কোন না কোন নারী বহুগামী। ইমব্যালান্স সোসাইটিতে (আমাদের মত পুরুষতান্ত্রিক)- বেশিরভাগ নারীর একগামিতা আর বেশিরভাগ বহুগামিতা চালু করতে চাইলে- কোন কোন নারীর অনেক অনেক গুন বহুগামী হতে হবে (যেমন- প্রস্টিটিউশনের মাঝে)। কিংবা, কোথাও যদি প্রস্টিটিউশনের বাইরে সাধারণ বলে কথিত সমাজে শুধু পুরুষের বা শুধু নারীর বহুগামিতা অর্থাৎ বহুবিবাহ চালু করতে হয়- অবশ্যই কোন না কোন পুরুষের কিংবা কোন না কোন নারীর (যথাক্রমে) ভাগ্যে যৌনতার ধারে কাছেও যাওয়া সম্ভব হবে না। মানে এই ১০-১০ জনের সমাজে যদি প্রতি পুরুষের ২ টি বিয়ের বিধান থাকে এবং নারীর এক বিয়ের বেশি অনুমতি না থাকে- তাহলে ৫ জন পুরুষ ২ টি করে বিয়ে করলে- বাকি ৫ জন পুরুষের ভাগ্যে বিয়ে জুটবে না! এখন এই সমাজ বিশ্লেষণ করে কি বলা যাবে যে- নারীর চাইতে পুরুষ বেশি বহুগামি? যে সমাজে ৫ জন পুরুষ শুন্যগামী- তারা কিভাবে অধিক বহুগামী হবে? আবার আগের উদাহরণের প্রস্টিটিশনের বিষয়টা বিবেচনায় নেই- তাহলেও বলা যায়- প্রস্টিটিউশনের এই নারীরা অন্য সব বহুগামী পুরুষের তুলনায় অনেকগুন বহুগামী। ফলে- আপনি যদি এভারেজ করেন- তাহলে- দেখবেন, অতি অবশ্যই নারী ও পুরুষের একগামী হওয়ার ও বহুগামী হওয়ার হার সমান হতে বাধ্য।
৫/ বিবর্তনবাদকে আপহোল্ড করলেও- বিবর্তনীয় সাইকোলজির ব্যাখ্যা অনেকসময়ই ঠিক মনোপুত নয়। শুক্রাণু আর ডিম্বাণুর সংখ্যার পার্থক্য বিচারে একগামী আর বহুগামী আচরণের কিংবা যৌন আকাঙ্খা/ যৌন চাহিদার পার্থক্যের বিবর্তনীয় ব্যাখ্যাতেও কেমন যেন খটকা তৈরি হয়! মানুষের বা পশু পাখির যৌন আকাঙ্খা বা চাহিদা কি শুক্রাণু- ডিম্বানুর সংখ্যা বেশি কম দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হয়? সকল নারীর ক্ষেত্রেই এটা সত্য যে মাসে কেবল একটি ডিম্বানুই নিষীক্ত হওয়া সম্ভব, তাহলে তো দুনিয়ার সকল সময়ের সকল স্থানের নারীর যৌন চাহিদা, আকাঙ্খা একই হওয়ার কথা। এবং একজন ফার্টাইল নারীর ক্ষেত্রে ফার্টিলিটির পুরা স্পান জুড়ে একই রকম যৌন আকাঙ্খা বা চাহিদা থাকার কথা! তেমন কি ঘটে? প্রতিদিনই ৫০-১২০ মিলিয়ন বিলিয়ন শুক্রাণুর অধিকারী বলেই পুরুষ প্রতিদিনই একই রকম ভীষণ যৌন চাহিদাযুক্ত থাকে, এবং যৌন চাহিদার পেছনে ‘বংশ বৃদ্ধি’র উদ্দেশ্য – সেটা যেহেতু শুক্রাণু বেশি সেহেতু “প্রকৃতিগত ভবেই নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য পুরুষ চাইবে যত বেশি পারা যায় তার জীনের কপি তৈরি করতে, তাই সে বেশি বেশি মেয়েদের সাথে মিলিত হবার সুযোগ খোঁজে”- এমন ব্যাখ্যায় মনে হয়- ৫০-১২০ মিলিয়ন বিলিয়ন শুক্রাণু- নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পুরুষের মাথায় গিয়ে কামড়া কামড়ি শুরু করে দেয়- ফলে যৌনচাহিদা মারাত্মক বেড়ে যায় …
তথ্যবহুল এবং একটি ব্যতিক্রমধর্মী লেখা। সামাজিক ভন্ডামিকে ভাঙ্গতে নারীর যৌন অধিকার নিয়ে নারী আন্দোলন কাজ করছে। এমন লেখা আরও আসুক। নারীকে নিয়ে প্রচলিত ধারণা, সামাজিকিকরণ ও অচলায়তনকে ভাঙতে এ ধরণের পদক্ষেপ প্রয়োজন। আমি এ লেখাটির বহুল প্রচারের সুপারিশ করছি।
সমাজে একদল হায়েনাচক্রেএভাবে আমাদের চোখের সামনে অনাসৃষ্টি করে যাবে। নারীকে পণ্য হিসেবে দেখবে। সুযোগ পেলেই ধর্ষণ করবে। কিংবা উদ্যত হবে। সামাজিক প্রতিরোধ দরকার। সেই সাথে জাগরণ দরকার। আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে। কাজেই নারীপণ্য কেনার জন্যে জাহেলী যুগের ন্যায় অস্থির না হয়ে বরং এখনই সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। একটি নারীও যেন ধর্ষিতা না হয়। নারীকে যেন আমরা মনোবীকারে পরিণত না করি। তাই একুশ শতকের পৃথিবীতে নারীকে পুরুষের সমঅধিকার দিতে হবে। নারীরাও সমাজের কাণ্ডারী। নারীরা না জাগলে সমাজ জাগবে না। সুতরাং নারীদের অর্থনীতি, মনন ও চিন্তাকে পুঁজিবাদী আগ্রাসনের মুখে না ফেলে বরং আসেন আমরা সকলে মিলে এক হই। নারীর পর্দা উন্মোচন করি। আমাদের পুরুষকুলের ভালো লাগা থাকতেই পারে, কিন্তু সেই ভালো লাগা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ফ্রান্সে অনেক দূরপল্লী অঞ্চল থেকে নারীরা কাজ করতে শহরে ছুটে আসত। সে দেশে পুরুষের পাশাপাশি নারীরা কাজ করলে এদেশেও সম্ভব।
সমাজের দুটি পা-পুরুষ ও নারী। কোনো কারণে যদি এক পা বেঁধে রাখা হয়, তবে এক পা দিযে কতদূর বা এগোবে সমাজ। তাই এই মুহূর্তে জাগরণ জরুরী।
ভাল চিন্তা ও লেখা, সংগ্রহ করে রাখলাম, পরে পড়ব
সবাইকে আলোচনায় অংশ গ্রহণের জন্য ধন্যবাদ
আপনি আমার মূল সুর ধরতে পারেন না। আমি বেজ পয়েন্ট ছিল সায়েন্স,আর আপনি আনছেন ধর্মগ্রন্থের কথা। হিংস্রতা আর খুনের প্রবৃত্তিও ন্যাচারাল জিনিস। এইটা কোথায় পেলেন ভাই?? ন্যাচারাল হল তা যা সব পরিস্থিতে একই। ক্ষুদা, যৌনতা,ইত্যাদি হল ন্যাচারাল ইনসটিংক্ট,সব প্রানীতে একইন এখন কারো কারো খুন করতে ভাল লাগলে এটা তার সাইকোলজিক্যাল ডিজওর্ডার। এটা ন্যাচারাল হয় কেম্নে?
অন্যদিকে যৌনতা যদি নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তাহলে জনসংখ্যা মাত্রা ছাড়িয়ে যাবে | এছাড়া ধর্ষণের ঘটনাও বাড়তে পারে |
জনসংখ্যা কমাইতে হইলে বুঝি কোন প্রজাতির এক অংশের সবার যৌণ ক্ষমতা কমাইতে হইবে?? তাহলে তো কনডম না বানায়া একটা সিরাম বানানোর দরকার ছিল,যাতে মাইয়াদের যৌন ক্ষমতা ধুম কইরা কমে যায়। আর ধর্ষনের ক্ষেত্রে তো কনট্রাডিক্টরি কথা বলে ফেললেন। দুনিয়ার ৯৯% ধর্ষন করে পুরুষ। এই কম (আপনার কথায়) চাহিদা নিয়াই এই অবস্থা,বাড়াইলে কি হইব কে জানে!
প্রথমত যৌনতা সব প্রাণীতে যদি একইরকম থাকবে তাহলে কামশীতলতা বলে কিছুই থাকত না | তা যখন আছে তখন বুঝা যায় যে যৌনতা সব প্রাণীতে একইরকম নেই | সুতরাং যৌনতা ন্যাচারাল নয় | অন্তত আপনার সংজ্ঞা অনুযায়ী |
প্রথমত কোনো এক প্রজাতির এক অংশের যৌন ক্ষমতা যদি খুব বেশি হয় আর অপর অংশের যদি খুব কম হয় তাহলে এই অসম অবস্থা দূর করতে হলে এক অংশের কমানো আর অপর অংশের বাড়ানোর ব্যবস্থা করতেই হবে | এর উল্টোটা করলে ফল ভালো হবে না | কনডম এক ধরনের যৌন প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করে | মনু মহারাজের সময় তো কনডম ছিল না | তাই তিনি তার বিধান দেননি |
আর সেই ধর্ষণে উস্কানি দেয় মেয়েরা | সেটা তো বললেন না | এক হাতে তো তালি বাজে না | মেয়েরা প্রথমে উস্কায় পুরুষদেরকে তারপরে পুরুষেরা যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলেই সেটা হয় ধর্ষণ | ধর্ষণ ব্যাপারটা অত্যন্ত জটিল দাদা | বহু মেয়ে নিজেদের মতলব সিদ্ধ করতে মিথ্যে ধর্ষণের গল্প বানায় | আবার কোথাও কোথাও সত্যি ধর্ষণ হয় | কিন্তু ধর্ষণে উভয় পক্ষেরই যোগদান থাকে |
#যুক্তিবাদী এখানেই তো সমস্যা। যৌনতা একটা ন্যাচারাল বিষয়। এটা কি কোকের বোতল নাকি যে কমিয়ে বাড়িয়ে লেভেল করব?? আর কাকে বাড়ানোর জন্য কাকে কমিয়ে কিকি লেভেল করতে বলছেন? ন্যাচারালি ফিজিকাল স্ট্যাবিলিটি বা শক্তি পুরুষের বেশি,এখন কি উচিত হবে পুরুষদের সব ধরনের কায়িক শ্রম ও ব্যায়াম থেকে অব্যহতি দিয়ে মেয়ের সাথে লেভেল করা? ন্যাচারাল জিনিসকেকে কেন সাপ্রেস করার চেষ্টা ভাই?? আর যৌনতা কম বেশি এইরকম কোন ডিসটিংক্ট সায়েন্স চোখে পড়ে নাই। আর পার্থক্য খুব বেশি কম হলে কোন নারী পুরুষ ই যৌন মিলনে তৃপ্ত হত না।
ফিজিকাল স্টেবিলিটি বা শারীরিক শক্তি আর যৌনতা এক জিনিস নয় | শারীরিক শক্তি দৈনিক আহার্য সংগ্রহের কাজে লাগে আর যৌনতা সন্তান উত্পাদন ও আনন্দের কাজে লাগে | এই জন্যই শারীরিক শক্তি কমিয়ে দিলে দৈনিক আহার্য সংগ্রহ করা যাবে না | তাতে ক্ষতি হবে | সেই কারণেই শক্তি কমানোর কথা শাস্ত্র বলে নাই | অন্যদিকে যৌনতা যদি নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তাহলে জনসংখ্যা মাত্রা ছাড়িয়ে যাবে | এছাড়া ধর্ষণের ঘটনাও বাড়তে পারে |
ঠিকই তো | হিংস্রতা আর খুনের প্রবৃত্তিও ন্যাচারাল জিনিস | এটাকে সাপ্রেস করার কি দরকার ? যৌনতাকে যদি সাপ্রেস না করা হয় তাহলে হিংস্রতাকেও সাপ্রেস করার দরকার নেই | হাজার হোক ন্যাচারাল জিনিস তো |
ঠিক কথা | কিন্তু এই লেখাটাতেই তো বহু উদাহরণ রয়েছে , মেয়েদের যৌন ক্ষমতার |
যৌন মিলনে তৃপ্তি পেতে গেলে কামসূত্র ও আধুনিক যৌনশিক্ষা প্রয়োজন | নাহলে তৃপ্তি পাওয়া যায় না |
আমি কিন্তু ধর্মশাস্ত্রের কথায় কোনো ত্রুটি দেখি না | নারীর যৌনতা যদি পুরুষের চেয়ে বহুগুন বেশি হয় তবে সেটাকে দমন করাই তো বুদ্ধিমানের কাজ | আগুন যেখানে আগে থেকেই বেশি তাকে আরো বাড়ালে তো সে দাবানল হয়ে যাবে , তাকে কমানোটাই তো উচিত | অন্যদিকে পুরুষের যৌনতা নারীর চেয়ে কম , তাই সেটাকে বাড়ানোর নিদান দেয়া হয়েছে | তা যদি কমানোর নিদান দেয়া হত তাহলে তো পুরুষ আর পুরুষ থাকত না | তার যৌনতা বলে কিছুই থাকবে না | সুতরাং ধর্মশাস্ত্র খারাপ কিছু তো বলেনি |
সমাজে নারীপণ্যের ব্যাপক হারে বিজ্ঞাপন শুরু হয়েছে। এখনি এর প্রতিরোধ জরুরী। রাস্তায় যেদিকে তাকান না কেন, নারী পণ্যের বিলাসিতা আপনার চোখে পড়বেই। এখন নতুন করে নারী জাগরণের উন্মেষ ঘটাতে হবে। এভাবে নারী পণ্য সমানাধিকভাবে বাড়তে থাকলে অচিরেই নারীরা গৃহে আবদ্ধ হয়ে পড়বে। এই সমাজেরে একটা বৈশিষ্ট্য হলো কোনো নারীকে দেখলেই তাকে অতিরিক্ত শ্রদ্ধা প্রদর্শনের নামে, আতিথেয়তা প্রদর্শনের নামে তাকে উত্যক্ত করা। সমাজে ন্যায়বিচারের ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা না হলে এটা দূরীকরণ সম্ভব নয়। বিজ্ঞাপনের মোড়কে নারীপণ্যের ব্যবহার চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে ব্যাধীর মতই। কাজেই সামাজিকভাবে এর প্রতিরোধ দরকার নারী ও পুরুষ সমানভাবে বিজ্ঞাপনে অংশ নেবে। নোংরা নারীপণ্যের বিলাসিতা করে আমাদের সুরুচিকে নষ্ট করবেন না।
নারীদের যৌণ চাহিদা নিয়ে আমার কিছু খটকা ছিল। কিন্তু আপনার লেখাটি পড়ে বুঝলাম না নারীরা সব কিছুতে ক্ষমতাবান। কারন আমাদের সমাজে প্রতিনিয়ত মেয়েদের দ্রুত বিয়ে দেওয়ার জন্য সবাই উঠে পড়ে লাগে। সবার মতে দ্রুত বিয়ে না হলে মেয়েদের যৌন ক্ষমতা হারায়। যার ফলে স্বামী আর একটি বিয়ে করার প্রবণতা বেড়ে যায়। কিন্তু আজ যুক্তি দিয়ে দেখিয়ে দিবো নারীরর যৌন ক্ষমতা পুরুষের তুলনায় অনেক।
যৌন চাহিদা নিয়ে অনেক হোয়াক্স বাজারে চালু আছে। সঠিক হত যদি ইতিহাসের পাশাপাশি মেডিকেলের আলোকে বিষয়টার আলোচনা করা হত। অনেক যায়গায় শুনেছি নারীদের যৌন চাহিদা পুরুষের চাইতে বেশি,আবার এক্সপোজার টাইম ও বেশি। কারন হয়তোবা মেয়েদের অর্গাজমে সীমেন টাইপ ফ্লুইড বের হয় না। তবে পোক্তা কোন সায়েন্টিফিক তথ্য পেলে ভাল হত।
আপনি যথার্থই বলেছেন। কিন্তু এদেশের শিক্ষকরা এসব নিয়ে শ্রেণীকক্ষে আলোচনা করতে লেজ্জা পান। বিশেষত পুরুষ শিক্ষকরা। উচিত হবে নিম্ন মাধ্যমিক শ্রেণী থেকে যৌনশিক্ষাকে পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত করা। তাহলে শিক্ষার্থীরা উপলব্ধি করতে পারবে নারী ও পুরুষের স্বাস্থ্য সম্পর্কে। পুরুষের পৌরুষ ও নারীর ত্বক সম্বন্ধে। আমি কোনো বিতর্কে জড়াবো না। কিন্তু আমাদের দেশে যৌনশিক্ষা প্রদানে অনাগ্রহী শিক্ষক-শিক্ষকাগণ যদি ভষ্যিত প্রজন্ম সম্পর্কে কিছুটা উপলব্ধি করেন, তাহলে আমার এ লেখা সার্থক।
এটা ঠিক মেডিক্যালি বের করা খুব ঝামেলার। কারন যৌনতা নিয়ন্ত্রণকারী কিছু কমন হরমন যেমন ভ্যাসোপ্রেসিন এবং অক্সিটোসিন পুরুষ এবং মেয়েদের দেহে সাধারণত গড়ে সমান থাকে। কিন্তু পুরুষের দেহে টেস্টেস্টোরন বেশি এবং মেয়েদের দেহে এস্ট্রোজেন বেশি থাকে। কারন এদুটি প্রিথক হরমন, যা নারী পুরুষের আলাদা যৌনতা প্রকাশক শারীরিক বিকাশও ঘটায়। এখন কোনটা শক্তিশালী এটা বের করা মুশকিল। আবার সব থেকে বেশি সমস্যা হল সামাজিক অবস্থান এবং সাইকোলজিক্যাল ব্যাপার। এই দুটি যৌনতা ভিত্তিক আচরণ কে খুব বেশি নিওন্ত্রন করে। একটা রক্ষনশীল পরিবারে বেড়ে ওঠা এবং একটি মুক্ত সংস্কৃতিতে বেড়ে ওঠা মানুষের যৌন আকঙ্খা বা যৌনতায় সাড়া দেওয়ার পরিমান একই রকম হবে না। তাই এধরনের এক্সপেরিমেট আসলেও টাফ, যা একটু আধটু হয়েছে তারা তো আর অনেক বেশি স্যাম্পেল নিয়ে করতে পারেনি। তাই দেখা যায় যে এক এক টা এক্সপেরিমেন্ট এ এক এক ধরনের রেজাল্ট পাওয়া যায়। তবে নারী যেহেতু মাসে একবার ডিম্বানু নিষিক্ত করার সূজগ পায়, এবং সন্তান বড় না হওয়া পর্যন্ত যেহেতু দায়িত্ব থাকে তাই প্রকৃতি গত ভাবেই নারী চায় নির্ভরশীল সাস্থবান এবং আস্থাশিল কোন পুরুষ। আর পুরুষের শুক্রাণু যেহেতু সংখ্যায় অনেক বেশি প্রতিদিনই প্রায় ৫০-১২০ মিলিওন তৈরি হয়, কিন্তু একক ভাবে আবার শুক্রানুর কোন গুরুত্বই নেই। তাই প্রকৃতিগত ভবেই নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য পুরুষ চাইবে যত বেশি পারা যায় তার জীনের কপি তৈরি করতে, তাই সে বেশি বেশি মেয়েদের সাথে মিলিত হবার সূজগ খোঁজে। এটাই বিবর্তন ভিত্তিক ব্যখ্যা। এবং হাজার হাজার বছর ধরে সমাজে এমন্টাই চলে আসছে। তবে আমরা যেহেতু কিছুটা সভ্য তাই আমরা এরকমটা করি না, নিজেদের কে বুঝিয়ে সুজিয়ে কোডটাকে ফাকি দেবার চেষ্টা করি। কিন্তু তারপরও কিন্তু সেটা সম্ভব হয় না। তবে কিছু সাইন্টিফিক রিসার্চ বলে যে ছেলেদের দেয়ে টেস্টেস্টরন প্রায় ১০+ গুণ বেশি হবার কারনে এদের সেক্স ড্রাইভ বেশি।
:good:
লেখাটিতে অনেক অজানা বিষয় পেলাম।
মেয়েদের যৌন চাহিদা বা আকাঙ্ক্ষা কম এই কথাটা মুলত পুরুষতান্ত্রিক পুরুষদের সৃষ্টি; সঠিক ভাবে বললে যৌন চাহিদা বা লিপ্সা লুকিয়ে রাখার ক্ষমতা পুরুষের চাইতে নারীর বেশী। কিন্তু কার চাইতে কার বেশী সেটা মুলত শারীরিক এবং মানসিক অবস্থার উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।
ধর্মশাস্ত্র বলে নারীদের যৌনচাহিদা পুরুষের তুলনায় আটগুন বেশি | মনুসংহিতাই তো এই কথা বলে |
এটা মানতে পারলাম না | বুড়ো বয়সে কেউ বিয়ে করলে পুরুষদেরও শুনতে হয় নানা কথা | যেমন মেয়ের বয়সী মেয়েকে বিয়ে করা হয়েছে | মধু কবি তো লিখেই ফেলেছিলেন একটি আস্ত নাটক “বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রো” | আমার মনে হয় চিরকাল সমাজে একজাতের লোক আছে যারা অন্যের সুখ দেখতে পারে না , তারা সর্বদা ন্যাক্কারজনক ভাষায় সবকিছুর দোষত্রুটি ধরে , কেবল নিজেরটা দেখতে পায় না |
ভালো লাগলো । শুধু দুটি বিষয়ে প্রশ্ন/খটকা ছিলঃ
১। বানান বিষয়কঃ লেখাটির টাইটেল-এ বানান টি ‘ভন্ডাম’ নাকি ‘ভণ্ডামো’ হবে?
২। তথ্যসুত্রঃ লেখাটির বিষয়বস্তু যেহেতু ইতিহাস বিষয়ক (Category ইতিহাস, ধর্ম, নারীবাদ, ব্লগাড্ডা, মুক্তমনা), তাই মনে হোল রেফারেন্স/তথ্যসুত্র গুলো যদি উল্লেখ করতেন, হয়ত আরেকটু পূর্ণতা পেত লেখাটি।
আমি আসলে বলতে গেলে একদম-ই নতুন মুক্তমনায় । আপনাদের লেখাগুলি পড়ি, ভালো লাগে, চিন্তার খোরাক যোগায়, ভাবতে শেখায় … আর তাই ঘুরে ফিরে আসি এখানেই । কোন ভুল বলে থাকলে ক্ষমা করবেন ।
ধন্যবাদ ।
না না খারাপ লাগবে কেন ? আমাদের পাঠক বাড়ুক , আরো মানুষ মুক্তমনা হোক এটাই কাম্য।
:good:
ধন্যবাদ আপনার এই পোস্টের জন্য,
আপনি একতটা সরল ব্যাপারকে সরল ভাবে পরিবেশন করেছেন। যৌনতা নারী পুরুষ নির্বিশেষে একটা জরুরি ব্যাপার, এবং এতে নারী পুরুষের সমান সমান অধিকার থাকতে লাগেই লাগে। আর মানুষের চরিত্রের সঙ্গে (ভাল না খারাপ বিচার করতে গেলে) আসে সে শঠ , প্রতারক কিনা , অথবা সে উপকারী
এবং সৎ কিনা, যৌনতার সঙ্গে চরিত্রের কোনো সম্পর্কই নেই। (নারী পুরুষ নির্বিশেষে)। হিপিদের কথা জানেন নিশ্চয় , সবাই একসাথে বাস করত(ছেলেরা এবং মেয়েরা একসাথে) যৌন সম্বন্ধ করত সবার সঙ্গে , বাচ্চা হয়ে গেলে সবাই একসাথে মানুষ করত। এতে কারুর মধ্যে কোনো ঝামেলা হতই না , এটাই ছিল স্বাবাভিক , আগামি সমাজ আমার মনে হয় কিছু টা হলেও হিপিদের মত হওয়া উচিত। পুরুষের যে যৌন চাহিদা , নারীর ও সেই এক চাহিদা সমান সমান থাকবে এটাই স্বাবাভিক । তবেই সমাজ সুস্থ । খুব ভাল লাগল লেখাটি পড়ে ফড়িং ক্যামেলিয়া।
এটা অস্বীকার করার কোন জায়গা নেই যে ঐতিহাসিক ভাবে নারীর যৌনতাকে সমাজ suppress করে গেছে- এমনকি সরাসরি নাকচ করে দেয়াও বিরল ঘটনা নয়। কিন্তু নারী ও পুরুষের যৌন চাহিদা প্রায় সমস্ত সমাজেই আলাদা। উদাহরণ হিসাবে এই ক্ষেত্রে Devid P Schmitt এর গবেষণা উল্লেখ করতে পারি(http://www.uni-konstanz.de/iscience/reips/pubs/papers/ISDP_JPSP.pdf)। তিনি ৬ টি মহাদেশের ৫২ টি জাতির সংখ্যা তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন এই পার্থক্য। তাঁর মতে এই পার্থক্য “কালচারাল ইউনিভারসাল” এবং এর ব্যাখ্যা বিবর্তনগত। যারা শুধু socialization এর ব্যাখ্যা করতে চান, তাদের সম্পর্কে তিনি বলেছেন।
“Despite the present evidence that sex differences in the desire for sexual variety appear culturally universal, it is important to note that alternate nonevolutionary explanations of these findings may exist. For example, the robust sex differences observed in the ISDP may be due to culturally universal features of gender socialization and social-role stereotyping (e.g., Eagly, 1987). Men may desire sexual variety more than women do because men universally experience developmental forces such as more often observing high-status men preferring sexual variety. Short-term mating with multiple partners may also be central to every world region’s view of masculinity. Still, these proximate explanations would only be true alternatives to an evolutionary perspective on universality if the same socialization processes somehow arose in all cultures independently, and for nonbiological reasons. Such random pancultural development, although possible, is extremely unlikely (Cronk, 1999). Even if pancultural socialization practices associated with sex differences in basic mating tendencies were found, ultimate-evolutionary questions would remain as to why men would universally experience this form of socialization, why cultures would universally define masculinity in this way, and why sex roles would exist in the first place.”
এমনকি কিছু সমাজতাত্ত্বিক একে “হিউম্যান ইউনিভারসাল” বলেও মনে করেন এবং যতদূর জানি, এটা প্রায় সর্বত্র স্বীকৃত। অনেকে আদর্শগত কারণে এর বিরধিতা করতে চান। অনেকে আবার “evolutionary behavioral science” -কে পুরপুরি উড়িয়েই দিতে চান(ফ্রি থট ব্লগ এ এই মর্মে একটি লেখা পরেছি- কিন্তু সেটা বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি)।
যদিও এই বিশ্লেষণ সংখ্যাতাত্ত্বিক এবং যে উদাহরণগুলো আপনি দিয়েছেন, সেগুল ঘটা অস্বাভাবিক না( যদিও যতদূর জানি ক্যাথরিন দি গ্রেট এর ক্ষেত্রে ঘোড়ার ঘটনা সম্ভবত রটনা)। কারণ ব্যক্তি বিশেষ সংখ্যাতত্ত্বের স্পেকট্রাম এর যে কোন প্রান্তে থাকতে পারে। তাই আমার মনে হয় অন্তত এই বিষয়ে “পুরুষের তথা পুরুষতান্ত্রিক সমাজের ধাপ্পাবাজি” বলে চালিয়ে দেয়া সম্ভব না।
১। আসাম প্রদেশে কিছু স্বাধীনচেতা রাজমাতা ছিল যাদের রাজা ছাড়াও বহু শয্যাসংগী থাকত। একই সময়ে একাধিক পুরুষকে ব্যবহার করত।তারা একাজের বেতনভুক।
২। মোঘল বা অন্যান্যদেশের রাজা-বাদশাহদের হেরেম ছিল। এই হেরেমে নারীর সংখ্যাও রাজার সৌয্য-বীর্যের প্রতিক ছিল। কিন্তু কোন রানীর এমন হেরেম ছিল না।
৩। রাহুল সাংকৃতায়নের “ভলগা থেকে গংগা” বইতে দেখা যায় সভ্যতার শুরুতে এক নারীর একাধিক পতি থাকত। সে থাকত দলের বা গোত্রের প্রধান।
একাধিক পার্টনার থাকা না থাকা নির্ভর করে ক্ষমতা ও অর্থের কারনে। নারী বা পুরুষ যার কাছেই ক্ষমতা বা অর্থ যেকোন একটি থাকলেই সে একাধিক পার্টনার পেয়ে যায়। সমাজ এখানে গৌন।
তবে ক্ষমতাহীন ও অর্থহীনদের নিয়েই দুনিয়ার যত সমস্যা,সামাজিক বাধা নিষেধ। কারো একটা পার্টনার জুটতেই কষ্ট হয় আবার রিক্সাওয়ালদের বউ থাকে অগুনিত। অপরদিকে গরীবের সুন্দরী বউ সবার ভাবী হয়।
@বিপ্লব কর্মকার, না, এটা সাধারণ চিত্র নয়। সমাজ নারীকে একাধিক প্ররুষ ভোগ করার অধিকার দেয় না।