নীলয়, ওয়াশিকুর বাবু, অনন্ত বিজয় দাশ এরা সবাই মাঝারি ধরনের চাকরি করতো। বাংলাদেশের মানুষ যেখানে দুইটি পয়সা কীভাবে বাড়তি ইনকাম করা যায় সেই চিন্তায় মত্ত থাকে সেই সময় এই মানুষগুলো সমাজকে ধর্মান্ধমুক্ত, কুসংস্কার মুক্ত অথবা কেউ ধর্মহীন একটি সমাজের কথা ভাবত।
নীলয় দুই বছর আগে পরিবারের অমতে বিয়ে করে। নীলয় একটি এনজিওতে চাকরি করতো! সেই মেয়েটি ভালোবাসার টানে নীলয়কে বিয়ে করে। সেই মেয়েটির আজকে সব শেষ। শুধু মাত্র ধর্মের সমালোচনার জন্য প্রাণ নিতে হল প্রিয় মানুষটির।
ডিবি পুলিশ ভাবে ধর্মের সমালোচনা করলে নাকি বিভিন্ন বিদেশী সংস্থা থেকে টাকা পাওয়া যায়, দেশের মানুষভাবে ধর্ম নিয়ে লিখলেই ইউরোপ আমেরিকায় ভিসা ফ্রি! আসলে কী দরকার ছিল মরার দেশে এসব নিয়ে লেখালেখির করার। লেখালেখি, ব্লগ এগুলো একটি সভ্য রাষ্ট্রের জন্য। যে রাষ্ট্রে পায়ু পথে গ্যাস পাম্প করে শিশু হত্যা করা হয়, যে রাষ্ট্রে নাস্তিক হত্যার খবর শুনে ধার্মিকরা প্রকাশ্যে উল্লাস করে সেই রাষ্ট্রে ব্লগিং করা তো অপরাধ।
বিরোধী দলে থাকার সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা হুমায়ুন আজাদকে দুই মাইল হেঁটে দেখতে গিয়েছিলেন। কারণ আর্মি ওনার গাড়ি হাসপাতাল পর্যন্ত যেতে দেয় নি। তখন কিন্তু নাস্তিক ট্যাগের ভয় ছিল না। কিন্তু এখন অভিজিৎ রায়ের পিতাকে কল করতেও ভয় পান প্রধানমন্ত্রী। কারণ তার সরকার নাস্তিক ট্যাগ নিতে চায় না। রাষ্ট্রের আইন সবার জন্য সমান তা এই মুল্লুকে বোঁঝাবে কাকে? যেসব ব্লগার নিহত হয়েছে সেসব ব্লগারদের মধ্যে একমাত্র রাজিব হায়দারের খুনীদের পুলিশ ধরতে পেরেছে। কারণ পুলিশের উপর তখন চাপ ছিল। গণজাগরণ মঞ্চের হাওয়া তখন গরম ছিল, এ কারণে প্রধানমন্ত্রীও ছুটে গিয়েছিলেন রাজিবের বাসায়। আসলে সবকিছু স্ট্যান্ডবাজি। যারা বিএনপির আমলে মৌলবাদী, সংখ্যালঘু নির্যাতনের ফেনা তুলে ফেলত তারা এখন নীরব। তারা তাদের সরকারকে বিব্রত করতে চায় না। ওয়াশিকুর বাবুর খুনিদের ধরে শিখণ্ডীরা! পুলিশ সেই মামলার কোন অগ্রগতি আজো দেখাতে পারে নি।
স্বাধীনতার পর শেখ মুজিব ইসলামি ফাউন্ডেশান বানালেন, মুসলিম বিশ্ব যেন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত দেয় তার জন্য OIC তে যোগ দিলেন। কিন্তু তারপরও ইসলামিকদের মন পেলেন না। তাদের হাতেই খুন হতে হল আপনাকে। শেখ মুজিব মারা গেছেন এই অগাস্টের ১৫ অগাস্ট আবার ১৯৭৫ সালে এই মাসে সবচেয়ে বেশি স্বাধীন দেশের স্বীকৃতি মিলেছে ইসলামিক দেশগুলো থেকে। পাকিস্তান চাল পাঠায়, সৌদি আরব শেখ সাহেবের মৃত্যুর খবর শুনে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বীকৃতি দেয়।
তাই প্রধানমন্ত্রীকে ইতিহাস পাঠের মাধ্যমে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যাদের মন রক্ষায় এতো ভয়ে আছেন, ক্ষমতা ও ভোটের জন্য এতো তোষামোদ করছে আপনি নামাজ পড়ে কপালে দাগ করে ফেললেও তাদের মন পাবেন নাহ। গত মেয়াদে আপনার ধর্মমন্ত্রীর বাড়িতে হিজবুত তাহরীর সদস্যরা মিটিং করেছে তা আমরা ভুলে যাই নি। আমরা ভুলে যাই নি আপনার পুলিশ বিভাগ আমাদের জিডি নেয় নি। উল্টো থানায় গিয়ে আমাদের ধমক খেতে হয়েছে।
আর যারা বলেন ইসলামের সাথে এসবের সর্ম্পক নেই তাদের উদ্দেশ্যে বলছি- ধর্ম সংস্কারের উদ্দোগ না নিলে, ধর্মের নামে হত্যা, ধর্ষণ বন্ধ করতে না পারলে আপনার ধর্মটি সন্ত্রাসবাদ ধর্ম হিসেবে পাকাপোক্ত প্রতিষ্ঠিত হবে। মসজিদে যখন ধর্মের নামে ভিন্ন ধর্ম সর্ম্পকে ঘৃণা ছড়ানো হয়, ওয়াজে যখন নাস্তিকদের হত্যার হুমকি দেওয় হয় তখন আপনি চুপ করে থাকেন। এখানেই আপনাদের সুবিধাবাদিতা। আপনার ধর্মের নামে হত্যা হলে এর দায় আপনার ধর্মকেই নিতে হবে। পৃথিবীর সকল ধর্ম কমবেশি সংস্কার হয়েছে তাই তাদের ধর্মে আপনার ধর্মের মতন হিংস্রতা নেই, কথায় কথায় কল্লায় ফেলে দেওয়ার রেকর্ড নেই। একবার ভাবুন তো পৃথিবীতে কয়েক হাজার ধর্ম থাকা সত্ত্বেও শুধু আপনার ধর্মের মানুষ হত্যায় জড়িয়ে পড়ছে কেন? ইসলাম আসার পরেও পৃথিবীতে ৩১টি (সম্ভবত) ধর্ম আসে। তাই ইসলামই পৃথিবীর শেষ ধর্ম নয়, ইসলামই পৃথিবীর শিশু ধর্ম নয়। তাই নিজের ধর্ম সংস্কার করুন, ধর্মীয় সন্ত্রাস সর্ম্পকে সমাজ ও পরিবারকে সচেতন করুন। আর না হলে পৃথিবীতে ইসলাম সন্ত্রাসের ধর্ম হিসেবে স্থান করে নিতে আর বেশি সময় নেবে নাহ। কারণ কাঁদা মাটির দেশ থেকে বরফের চূড়া কোথাও আজ ইসলামিক সন্ত্রাসীদের থেকে কেউ নিরাপদ নয়।
ব্লগার হত্যার বিচার চাই।
ভারতে আরএসএস এবং কিছু চরমমৌলবাদী শক্তি বা বিষবাস্প আজও ছড়ায় এরফলে মুসলিম এবং হিন্দুদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে এবং অবশেষে তা দাঙ্গা সৃষ্টি হয় এরফলে উভয় ধর্মের মানুষজনের মৃত্যু হয়।এই দাঙ্গার ঘটনার কয়েকটি উদাহরণ হল-1-মাঁলেগাও এক্সপ্রেস বিস্ফোরণ(যার মূলে প্রধান আরএসেএসের মদতে হয়েছিলো)2-বাবরি মসজিদ কান্ড( মূলেআরএসএস ও তার দল বিজেপি)।গুজরাট দাঙ্গা(যারা এই দাঙ্গার মূল নায়ক আজ তারা দেশের শীর্ষ স্তরে আছে মোদী,সিং, শাহ এছাড়া তাদের তাবড় তাবড় নেতারা),এই সাম্প্রদায়িক শক্তি বা অন্যান্য শক্তির বিরুদ্ধে ভারতের বামপন্থীরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে আজও।শুধু ভারত বা বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্বের একমেরু নীতি এবং পুঁজিবাদী নীতি এবং বুর্জোয়া শক্তির নির্ভর করে চলা তা কতটা বিপজ্জনক তা সময় বলবে ।এইসকল কারণ জন্যই আজ সারা বিশ্বের উপর অস্থিরতা।
কোন মুসলিম সেচ্ছায় ধর্মান্তরিত হলে তাকে মেরে ফেলার স্পষ্ট নির্দেশ দেয়া আছে কোরানে। এটা নিঃসন্দেহে একটা সন্ত্রাসী বাক্য যা প্রতিদিন লাখো মানুষ পড়ছে এবং অনেকেই স্বাভাবিক বিষয় হিসেবে মেনে নিচ্ছে।
সহমত আপনার সাথে ।
@romman agp
নীল তো আর মুসলমান ধম’ থেকে ধমা’নতরিত হয়নি আর যদি হয় ও বা কারো পাঁকা ধানে তো মৈ দেয়নি তবে নীল কে কেন এমন অমানবিক ভাবে মেরে ফেলল তারা( মৌলবাদী চরমপন্থিরা)?
ইসলাম ধর্মের সংস্কারের ধারণা ধর্মটির জন্মের সাথেই সাংঘর্ষিক, সাংঘর্ষিক কলেমার সাথে, স্ক্রিপটের সাথে। বিনাশ ও বর্জন ছাড়া আদতে রাস্তা খোলা নাই। ধর্মটির সময় শেষ হয়ে এলো বলে। একেকটা প্রাণ হরণ, এই ধর্মটির প্রাণ-প্রদীপকেই নিয়ত মৃয়মান করে দিচ্ছে।
ধর্মটি একদিন থাকবে না, নীলয় নীলকে সেদিনও স্মরণ করা হবে।
জনাব
আপনাকে বলছি আপনি একজন স্বাধীন চেতনার মানুষ বলে সহজে বলতে পারলেন সব ধর্মকে সংস্কার করা হয়েছে । ইসলাম কেন সংস্কার হয়নি ।
প্রথমত আপনি কি পারবেন আপনার মানে নতুন করে সাজিয়ে অন্য পুরুষের সাথে বিয়ে দিতে । অথবা আপনার মাকে বুন কে কেউ ধর্ষণ করলে আপনি কি পারবেন হারানো ইজ্জত ফিরিয়ে দিতে ।
নিশ্চয় না ।
তেমনি ইসলাম এটা কোন মানুষের তৈরী বিদান নয় । আল্লাহর পক্ষ হতে একটি নির্ভূল পথ । যার কোন সংস্কার দরকার নেই । মনে করেন আপনি যে মালিকের চাকরি করেন । যদি তার হুকুম মত না চলে তার বিরুদ্ধে চলেন নিশ্চয় সে আপনাকে লাথি দিয়ে বের করে দিবে । কিন্তু আল্লাহ তো সমস্ত মালিকদের সৃষ্টি কর্তা । তার বিরুদ্ধে এত নাফরমানি করার পরেও সে আপনাকে অবকাশ দিচ্ছে ।
হয়ত আপনি যা বলেছি তাও করতে পারবেন কারণ হয়ত আপনার ধর্ম তা সমর্থন করে । কিন্তু আমার ধর্ম বলে মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত ।
নির্ভুল পথের পথিকেরা খুন করে কেন? এটাও কি আল্লাহর বিধান?
চাকরীতে যোগদান করে নিয়ম না মানলে যেমন চাকরী থাকবে না, আমি যদি মনে করি নিয়মগুলো এতোই সনাতন যে মানার উপযুক্ত না, আমিও চাকরী ছেড়ে দেব। অন্য চাকরী খুজব, যা আমার মতের সাথে মিলে, তাতে কেউ আমার মাথা কাটতে পারবে না।
অথচ আপনারা তো ধর্ম ছাড়ার অপরাধে মাথায় কেটে নিচ্ছেন। ধর্ম ছেড়ে অপরাধ যদি করে থাকে, সে অপরাধ আল্লাহর সাথে করেছে, আপনাদের সাথে নয়। আপনারা মাথা কাটছেন কেন? আল্লাহর বিচার আল্লাহলেই হাশরের ময়দানে করতে দেন না। নাকি আল্লাহের বিচারের উপর আপনাদের ভরসা নেই, তা আপনারাই নাস্তিকের মাথা কাটছেন?
আপনার এই মন্তব্যটাতে এটম বম্ব লুকানো আছে . কোন মুসলিম সেচ্ছায় ধর্মান্তরিত হলে তাকে মেরে ফেলার স্পষ্ট নির্দেশ দেয়া আছে কোরানে। এটা নিঃসন্দেহে একটা সন্ত্রাসী বাক্য যা প্রতিদিন লাখো মানুষ পড়ছে এবং অনেকেই স্বাভাবিক বিষয় হিসেবে মেনে নিচ্ছে। অথচ আমাদের এমনকি অন্য সকল দেশের সংবিধান ই বিষয়টিকে হত্যাকান্ড হিসেবে বিবেচনা করে। তাহলে এই বিশেষ রকমের সহিংশ হত্যাকান্ড রোধে আমাদের সরকার এবং সংবিধান কেন এই ধরনের সন্ত্রাশী বাক্য গুলো বাতিল এবং মুদ্রণ অযোগ্য ঘোষনা করবেনা।এই মর্মে একটা মামলা অথবা রীট আবেদন করে দিলে এবং মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট যদি আবেদন গ্রহন করে…….. ফলাফল কি হতে পারে আন্দাজ করতে পারেন !!!
পৃথিবীর সকল ধর্মের মানুষের মনে করে তার ধর্মটাই সত্য। সুতরাং আপনার আবেগী কথাগুলো ধোঁপে টিকবে না। আর ধর্ম যদি বাপ মা হয় তাহলে বলতে বাপ-মা’ও সন্তানের ভাল জন্য তো নিজেদের পরিবর্তন করে। তাহলে ধর্মটাও করে ফেলুন নাহ, যেহেতু সেটাও বাপ-মার মতন।
শুধুমাত্র আল্লাহ আর ধর্মকে রক্ষার্থে যদি শিরচ্ছেদ করতে হয়,ইসলাম শান্তির ধর্ম হয় কিকরে।সত্য রক্ষার্থে হাতে চাপাতি তুলে নিতে হয় না।মিথ্যা প্রতিষ্ঠার জন্য চাপাতি প্রয়োজন।।
মৌল বাদীরা নীলয় নীলদের মত সমমনাদের চাপাতির আঘাতে বাকরুদ্ধ করলে ও পরাজয় তাদেরকে করতে পারেনি , পরাজীত মৌলবাদীরা নিজেরাই হোয়েছে বা হোচছে আর সোচচার করছে আমাদের মত কোটি নীলয় নীল দের।
সুব্রত শুভ, আপনার প্রতিটি লেখাই অত্যন্ত চমৎকার, এটাও ভালো লেগেছে শুধু শেষে ‘ব্লগার হত্যার বিচার চাই’ অংশ টুকু কেমন জানি লাগল। সরকারের যে এই হত্যাকাণ্ডগুলোকে বিচারের আওতায় আনার বিন্দুমাত্র সদিচ্ছা নেই তা দিনের আলোর মত পরিষ্কার। তাই, আমরা যতই ব্লগে, ফেসবুকে বিচার চাই লিখে গলা ফাটাই না কেন তাতে কিছুই হবে না। দিনশেষে সবাই নয় ক্রিকেট নয় আরেকটা গরম নতুন ইস্যু নিয়া বিজি হয়ে যাবে। তাই, আমার মনে হয় এভাবে বিচার না চেয়ে সরকারকে বিচার করতে কিভাবে বাধ্য করা যায় সেই চিন্তা করা দরকার। এটা হতে পারে বহির্বিশ্ব থেকে প্রেসার ক্রিয়েট করিয়ে বা অন্য কোন ভাবে। আপনারা যারা লেখালেখি করেন তারা পারস্পরিক ভেদাভেদ ভুলে সবাই যেহেতু একই মতাদর্শে বিশ্বাসী তাই এখনি এ নিয়ে একসাথে কাজ করুন। সামনের দিনগুলোতে আমাদের কি কি করনীয় তা ঠিক করুন । আর যেন কোন লাশ আমাদের দেখতে না হয় , ধন্যবাদ ।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
সুব্রত, কিছু মনে করবেন না, এখন আপনার সব লেখা পড়ার সময়ই আপনার “নাস্তিক হত্যায় আমাদের দায়!” লেখাটির কথা মনে পড়ে যায়…
নীল হত্যায় পুলিশ, রাষ্ট্র, ধার্মিক, সমাজ সবারই দায় আছে। তাই বলে আমেরিকায় বসে আমি কোন অবতারের নামে নোংরা ইভেন্ট ঘোষনা করতে পারি না। এসব করে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে নাস্তিকরা। একটা ছেলেকে তার পারিবারিক বিশ্বাস থেকে মুক্ত না করে, এগুলো করে বরং তাদের আরো বেশি ধার্মিকতার দিকে ঠেলে দিচ্ছি। জানার আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারলে মানুষ স্বাভাবিকভাবে মুক্ত হতে বাধ্য। আমাদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।
সুব্রত শুভ, আপনি কি বুঝতে পারছেন আপনি মৌলবাদীদের কথাটাই প্রতিধ্বনিত করছেন? মৌলবাদীরা বলে ওরা খুন হচ্ছে ওদেরই দ্বায়িত্বহীন কথার জন্য, কোপ খাবে না তো কি!
আর আপনি বলছেন, মুক্তমনারা কোপ খাচ্ছে আমাদেরই দ্বায়িত্বহীন কথার জন্য। আমি আপনার আর মৌলবাদীদের কথায় কোন পার্থক্য দেখছি না।
আমি আপনার সাথে সহমত যে দ্বায়িত্বহীন কথায় ক্ষতি ছাড়া উপকার, সমাজ পরিবর্তন কিছুই হয় না, কিন্তু তাই বলে চলমান খুনের ঘটনাগুলোর দায় দ্বায়িত্বহীন কথা বলা নাস্তিকদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া একধরণের অযৌক্তিক আবেগ ছাড়া কিছু মনে হচ্ছে না।
আপনার কাছে অনুরোধ, দয়া করে বিভাজনটা আর বাড়াবেন না। এই যে বিভাজন ছড়াচ্ছেন, এটাও মুক্তমনা সম্প্রদায়ের ক্ষতি ছাড়া কোন উপকার করছে না।
@জওশন আরা শাতিল
আপনি আমার কমেন্টটি অন্যভাবে দেখেছেন। আমার মিনিং এটা নয় তা আমার কমেন্টে স্পষ্ট বোঝা যায়। দায়িত্বহীন লেখালেখির জন্য জঙ্গিরা আমাদের মারছে এমন কথা তারা কখনো বলে নি। খুনের দায় অন্যেরও ঘাড়েও দিই নি। আমি যাকে বলেছি তাকে আমি ফেসবুকে অনেকের বালখিল্য আচরণকে ইঙ্গিত করেছি। আশা করি তিনি তা বুঝেছেন। আর ইভেন্টের কথা হল অভি দা মারার পর লন্ডন থেকে একটা ইভেন্ট খোলা হয়। যা কুরুচীপূর্ণ ছিল। আমি সেটাকেই মিন করেছি। ভদ্রভাবে লিখলেও জঙ্গিরা হুমকি দেবে, হত্যা করবে তাই বলে আমি আমার দায়িত্ব ও কান্ডজ্ঞান হারিয়ে বসতে পারি না। কারণ সমাজের প্রতি দায়টা আমাদের বেশি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে আমরা আন্দোলন করেছি। আমরা কেউ কিন্তু শাহবাগের মোড় থেকে দশ হাত দূরে গোলাম আযমের জানালায়ও ঢিল ছুড়ি নি। সভ্যতার মানবিচারে এখানেই আমাদের সাথে ওদের তফাৎ। ….কেউ কারো সাথে না বনলে তাকে পাতলা নাস্তিক, সুবিধাবাদী নাস্তিক খেতাবও দিয়ে দেয় অনেকে। তসলিমা নাসরিন যেমন ঘোষণা করেন; ওনার সমালোচনা যারা করে সবাই মৌলবাদী। সবার আচরণ নাকি একই রকম।
ফেসবুকে কান্ডজ্ঞানহীন আচরণের জন্য কাউকে সমালোচনা করলে কী মৌলবাদী কন্ঠস্বর শোনা যাওয়ার মতন মনে হতে পারে? বিষয়টা অন্যরকম হয়ে গেল না? তারপরও আপনার মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা। আমি জানি না কেন আপনি এমন অভিযোগ তুললেন।
সুব্রত, আপনি কি নিলয়ে লেখাগুলো পড়তেন? তার ফেইসবুক পোস্ট ও ইস্টিশানের ব্লগগুলো? অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি হয়ত আপনি সেসব পড়েননি। আজকে আমাদের মধ্যেই যে নতুন বিতর্ক উঠেছে “উগ্র নাস্তিক” নিলয় ঠিক তাই ছিলেন। নিলয় একটা পেইজ চালাতো চেলিব্রেটি সমগ্র নামে, সেটা দেখতে পাবেন। সেখানে আমার একাধিক “উগ্র পোস্টগুলো” শেয়ার করেছে। নিলয় নিজে প্রচুর “উগ্র” লেখা লিখেছে। ধর্মকারী, চুতরাপাতা, আসিফের কাবায় রং লাগানো বা কুরআনের উপর চায়ের কাপ তাকে হত্যা করে নাই। অভিদার মত তাকে “বিজ্ঞান লেখক” বানানো যাবে না। কাল আমাকে মেরে ফেললে আমার কোন লেখা দিয়ে আমাকে “ভদ্র নাস্তিক” বানানোর কোন উপায় থাকবে না। তখন আমাকে বা আমাদের মত যারা তাদের কি বলবেন? বলবেন তারা তাদের নিজেদের লেখার জন্যই মরেছে?
@সুষুপ্ত পাঠক
আমি নিলয়কে খুব ভাল করেই চিনি তা হয়তো আপনি জানেন না। আমি এখানে নীলয়কে কিছু বানাতে এসেছি? আর আমি কী কখনো উগ্র শব্দটি ব্যবহার করেছি? আপনার লেখা আমার কাছে উগ্র লাগে না, আবার আমার লেখা অনেকের কাছে উগ্র লাগে। সুতরাং এটা পরিমাপ করার কোন যন্ত্র পৃথিবীতে নেই।
আপনি আসিফ ইস্যু, চায়ের কাপ এগুলো সবই বলেছেন। অনেকের মতন এগুলোর নিয়ে বক্তব্য আমি অতীতে স্পষ্ট করেছি। তারপরও আপনি যেহেতু টেনে আনলেন সেহেতু বলতে বাধ্য হচ্ছি; লন্ডনের ইভেন্টের কথা কী ইচ্ছে করে এড়িয়ে গেলেন? আমি নাস্তিকদের খুব পরিপক্ক ভাবতাম কিন্তু ফেসবুকে এসে সেই মোহ ভেঙেছে। সবচেয়ে খারাপ লেখালেখি কেন কোন জঙ্গিকেও বিনা বিচারে হত্যা সমর্থনযোগ্য নয়। আশা করি উত্তর পেয়ে গেছেন।
ফেসবুক ব্লগে অনেক কিছু নিয়ে স্ট্যান্ডবাজি করা যায়। তবে আমি আমার জীবন ও অনলাইন আলাদা করে এখন দেখি না। কারণ সেই সুযোগ আমার নেই। তাই আমি কোন কিছুতে স্ট্যান্ডবাজি করি না। তসলিমা নাসরিন ওনার সমালোচকদের মৌলবাদী, হেফাজতি টাইটেলে ভূষিত করেন। আমি কাউকে দায়িত্বশীল আচরণের কথা বললে সবাই ভেবেই বসে আমি উগ্র নাস্তিকদের হত্যার জন্য তাদের লেখাকে ইঙ্গিত করেছি। মূল সমস্যা হল; আপনি যদি আগেই কোন সিন্ধান্তে পৌছে লেখা পড়তে শুরু করেন তাহলে এমনটা মনে হওয়া স্বাভাবিক। গ্রামে যেমন- কলের উপর কাথাকে রাতের বেলায় অনেকের কাছে সাদা বুড়ি মনে হয়।
এখন স্পষ্ট করি, কেন আমি দায়িত্বশীল আচরণের কথা বারবার বলছি। প্রথম বলে নেওয়া ভাল; আপনি যদি আপনার ব্যক্তিগত লাভ লোকশানের জন্য নাস্তিকতার করেন তাহলে এই আবদার আপনার কাছে না। এই আবদার তাদের কাছেই যারা মনে করে অনলাইনে অন্তত দুই জন লোক তাকে ফলো করে এবং যারা আমার কাছে কিছু প্রত্যাশা করে কিছু শিখতে চায় তাদের কিছু জানানো, শেখানো আমার দায়িত্ব। কারণ এরাও যাতে অন্যদের কিছু শেখাতে পারে।
শেষ কথা; আমি কী কখনো বলেছি; তাদের লেখার জন্য তাদের দায়? আবারো মনে করিয়ে দিতে চাই; আমি কোন গোষ্ঠী বা গ্যাং নই, আমি ব্যক্তি।
সরকারের পরোক্ষ মদদে হত্যা হচ্ছে।
পরোক্ষ না। সরকার উৎসাহিত করছে।
আমার তো ভাই মাঝে মধ্যে মনে হয় ভুত মনে হয় সর্ষের ভিতরই আছে।
জনাব সুব্রত শুভ আপনার বক্তব্য মোটেও ঠিক নয়, আপনি ইচ্ছাকৃত ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী দের হিংসাত্বক কার্যক্রম উপেক্ষা করেন, আপনার জেনে রাখা ভাল আর এস এস এর কর্মীরা কম সংখ্যালঘু নির্যাতন করে না, তারা কম বিদ্বেষ ছড়ায় না।
সুব্রত শুভ নামটা শুনতে হিন্দু ধর্মের শোনায় বলেই কি উনাকে ভিন্ন দেশ ভারতের জংগী সংগঠন নিয়ে পড়ে থাকতে হবে? ভারতীয় হিন্দুত্ববাদীরা সংখ্যালঘু নির্যাতন করে বলে কি বঙ্গদেশীয় মুসলিম জংগীরা সাধু হয়ে যায়? উনি কোথাও কোন কিছু উপেক্ষা করেননি। নিজের দেশের জলজ্যান্ত সমস্যা নিয়ে কথা বলেছেন।
সমগ্র বিশ্বে ইসলামিস্টরা জংগী কর্মকান্ড ছড়াচ্ছে, এটাই সত্য। সত্য এড়াতে এতো আগ্রহ কেন আপনাদের? কেন আপনাদের কলম থেকে ইসলামী জংগীবাদের বিরুদ্ধে একটা বাক্যও বের হচ্ছে না?
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মানেই একে অপরের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর কারখানা। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে ভারতে কেন সমগ্র পৃথিবীতে ধর্মবাদী কিংবা সাম্প্রদায়িক দল আছে। কিন্তু অন্যরা কেউ রাইফেল নিয়ে পরলোকের প্রত্যাশায় সমুদ্র সৈকতে নেমে গিয়ে পর্যটক হত্যা করে না। আমাদের যুদ্ধ জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদীদের চাপাতির কোপে ফারুকীর মতন মাজারপন্থী ধার্মিকও নিহত হয়েছে। এছাড়া গোপীবাগে এক সাথে ৬ খুনের মতন ঘটনা ঘরে ধর্মবাদীদের হাতে। সুতরাং এদের হাতে ধার্মিকরাও নিরাপদ নয়। সমগ্র পৃথিবীতে এই বছরের ধর্মবাদীদের হামলার রের্কড নিচে দেওয়া হল।
জানুয়ারীতে – ৩১টি
ফেব্রুয়ারীতে- ১২টি
মার্চ এ- ২২টি
এপ্রিলে ১৮টি
মে তে- ২৭টি
জুনে -২৯টি
জুলাইতে- ৩৭টি
আগষ্ট ৭ পর্যন্ত ৭টি।
মোট ১৮৩টি আক্রমন।