২৬ ফেব্রুয়ারি, ৩০ এপ্রিল, ১২ মে, ৭ আগস্ট। ১৬৩ দিনের ব্যবধানে ৪ জন মুক্তমনা ব্লগারকে কাপুরোষিত ভাবে একই কায়দায় কুপিয়ে হত্যা করা হল। হত্যা করে পালিয়ে গিয়ে গোপন আস্তানা থেকে দায় স্বীকার করে ‘সাহস আর দম্ভ’ দেখিয়েছে ইসলাম প্রতিষ্ঠাকারীরা।
তাতে কতটুকু ইসলাম প্রতিষ্ঠা পেয়েছে? যে মতাদর্শের অনুসারীকে যুক্তির সামনে দাঁড়াতে না পেরে চাপাতি হাতে পেছন থেকে খুন করার পথ বেছে নিতে হয় সেটা কি ভঙ্গুর, বিপর্যস্ত, রুগ্ন, বিকলাঙ্গ মতাদর্শ নয়?
এই বছরেই ছয় মাসের ব্যবধানে সেই বিকলাঙ্গ মতাদর্শের উন্মাদনায় আমরা হারিয়েছি অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর রহমান বাবু, অনন্ত বিজয় দাশ এবং সর্বশেষ নিলয় নীলকে। তাদের স্বজনরা আক্রান্ত হয়েছেন, বিপর্যস্ত হয়েছেন, তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে কাটাচ্ছেন জীবন। আমরা বন্ধু, সহযোদ্ধা হারানোর বেদনায় হয়েছি হতবিহবল।
কিন্তু যে মতাদর্শের জন্য এই আক্রমণ, এই পৈচাশিক হত্যার উৎসব তাতে কি জিততে পেরেছে খুনিদের মতাদর্শ?
অভিজিৎ রায়, অনন্ত বিজয়, রাজীব হায়দার, ওয়াশিকুর বাবু, নিলয় নীল কে হত্যা করে কত উইকেটে জিতল ইসলাম?আইএস, বোকো হারাম, আল কায়েদা, তালেবানের শত শত হত্যা , ধর্ষণ, নারীকে যৌনদাসি বানানোতে কত রানের জয় হয়েছে ইসলামের?
ইসলামিষ্টরা সারা বিশ্বব্যাপী হত্যার তাণ্ডবলীলা চালাবে আর একদল লোক সেটা জাস্টিফাই করে বলবেন ‘ ইহা সহি ইসলামের কাজ নয়’। তো সহি ইসলাম চর্চাকারীরা কতটা প্রতিবাদ করেছেন এসব অনাচারের? নাকি অভিজিৎ, অনন্ত, রাজীবরা এসব লিখল কেন বলে প্রশ্ন তোলেছেন বেশি? হত্যার পর হত্যাকে জাস্টিফাই করে খুনিদের অপরাধকে হালকা করার উৎসব তো দেখলাম অহরহ।প্রচার মাধ্যমে ‘ব্লগার’ শব্দটাকেই সুকৌশলে নেতিবাচকভাবে প্রচার করা হল।
কোন একটা মতাদর্শ যখন যৌক্তিকতার নানা প্রশ্নে রুগ্নতর হয়ে উঠে তখন তার অন্ধবিশ্বাসী অনুসারীরা অসহায় হয়ে উন্মাদের মত আক্রমণ করে। যারা এইসব পৈচাশিকতাকে ‘সহি ইসলাম নয়’ তত্ত্বে বিশ্বাস করেন তারা নিজেদের মতাদর্শকে সন্ত্রাসবাদের পরাজিত লেবেল থেকে উত্তরণের দায়িত্ব নিয়ে আমাদের সামনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দেখান যে এতে মানবতা আছে, ভালোবাসা আছে। আপাতত পৈচাশিকতা ছাড়া কিছু তো দেখতে পারছি না।
আমি ধর্ম অবিশ্বাসী মানুষ। ঈশ্বর, ভগবান, আল্লাহ, ভূত, প্রেত, অলৌকিক তন্ত্র মন্ত্রে আস্থাশীল নই। যুক্তি নির্ভর, বিজ্ঞান নির্ভর জীবন যাপনে আস্থাশীল। মানুষের ভেতরেই আসল ঈশ্বর খুঁজি।
শাহ আব্দুল করিম বলেন-
“তন্ত্র মন্ত্র করে দেখি তার ভেতরে তুমি নাই, শাস্ত্র গ্রন্থ পড়ি যত আরও দূরে সরে যাই”।
অযৌক্তিক প্রথা, সংস্কারে নিজেকে কোনভাবে খাপ খাওয়াতে না পেরে ধীরে, ধীরে দূরে গিয়ে নিজের আলাদা জীবন দর্শন নিয়ে তো কাউকে কামড়াতে যাচ্ছি না। বিশ্বাসী মানুষের মত আমারও বেঁচে থাকার অধিকার আছে এই সহজ বোধ জাগ্রত করতে অক্ষম কেন তবে ‘উন্নত’ মতাদর্শের অনুসারীর?
বিশ্বাসীদের মতে অবিশ্বাসীদের জন্য কঠোর সাজা রয়েছে আখেরাতে। ধর্মগ্রন্থেও তার উল্লেখ্য আছে। কিন্তু আখেরাত পর্যন্ত অপেক্ষা না করে নিজেই যে শাস্তি দেয়ার ভার তোলে নিল তাতে কি এটাই প্রমাণ হয়না যে আখেরাতে আসলে তাদের নিজেদেরই আস্থা নেই?
রাষ্ট্রের ভূমিকা
অনেকবার বদলের পর বিসমিল্লাহ দিয়ে শুরু হওয়া বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বলার পাশাপাশি অন্য সব ধর্ম ও মত পথের মানুষের সমান অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার কথা বলা হয়েছে। রাষ্ট্র অসাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মনিরপেক্ষতার মূলনীতি ধারণ করবে আছে এমন কথাও। বাস্তবে যদিও তার অধিকাংশ অনুসরণ করা হয়না। কিন্তু ধর্মের নামের খুনের মত অপরাধকে প্রশ্রয় দিবে রাষ্ট্র?
ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামীলীগ সরকার। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার তারা বাস্তবায়ন করছেন, যে বিচারের জন্য আমাদের দীর্ঘ দিনের আন্দোলন। এই জন্য তারা ধন্যবাদ পেতে পারেন। অথচ এই বিচারের জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে, ব্লগে ফেসবুকে সোচ্চার থাকাদের মধ্যে কেউ খুন হলে কোন বিকার নেই এই দলটির। অথচ সেক্যুলারিজমের বুলি আওড়াতে তাদের প্রায়ই দেখা যায়।
অভিজিৎ রায় হত্যার পর প্রধানমন্ত্রী লুকিয়ে অভিজিৎ রায়ের বাবা এবং তাঁর প্রয়াত স্বামী ওয়াজেদ মিয়ার সরাসরি শিক্ষক অজয় রায়কে ফোন করে সমবেদনা জানিয়েছিলেন, বিচারের আশ্বাস দিয়েছিলেন। সাধারণত দেখা যায় খ্যাতিমান কেউ আক্রান্ত হলে বা নিহত হলে রাজনৈতিক স্টান্ডবাজির জন্য হলেও রাজনীতিবিদ মন্ত্রীরা ফলাও করে আক্রান্ত পরিবারের কাছে গিয়ে ছবি টবি তোলেন কিন্তু অভিজিৎ রায় হত্যার আমরা দেখলাম ভিন্ন চিত্র। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ৪জন মন্ত্রী অজয় স্যারের বাসায় গেলেন গোপনে। যেন তারা কোন চুরি করছেন।
নাস্তিকের মৃত্যুতে প্রকাশ্যে সমবেদনা জানাতে গিয়ে যদি তারা ‘নাস্তিক’ ট্যাগ খান এই ভয়ে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রীরা গোপনীয়তা বেছে নিয়েছিলেন। পরে বিষয়টা পরিষ্কার করেছেন প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি বলেছেন – তারা হত্যাকারীদের ধরার জন্য কাজ করছেন কিন্তু প্রকাশ্যে কিছু বলে নাস্তিক পরিচিত হতে চান না। অথচ মজার কথা হলো আজকাল ব্লগার হত্যা হলে নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেয় বিএনপি-জামায়াতও, যারা কিনা মতাদর্শিকভাবে নিহত ব্লগারদের ঠিক বিপরীত মেরুর বাসিন্দা এবং যাদের বিরুদ্ধে জঙ্গিগোষ্টিকে মদদ দেয়ার সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে। আর যে দলের সাথে একটা জায়গায় হলেও নিহত ব্লগারদের মতাদর্শিক নৈকট্য আছে বলে মনে করা হয় সেই ‘সেক্যুলার’ আওয়ামীলীগ নিশ্চুপ, নির্বিকার। ধর্ম কার্ডের ভয়ে তারা কুঁকড়ে আছেন।
আমি মনে করি এরপর থেকেই তীব্র আস্কারা পেয়েছে উগ্র ধর্মীয় গোষ্টী। তারা একধরনের গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে গেছে যে ব্লগারদের হত্যা করলে সরকার বিষয়টি তেমন সিরিয়াসলি নিবে না। সরকার নানা কারণেই এটি এড়িয়ে যাবে।
অভিজিৎ রায়ের মত সৃজনশীল শক্তিশালী লেখককে খুন করে হজম করা গেল, সমকালীন সময়ে কূপমুণ্ডকতা থেকে বের হতে যিনি রাখতে পারতেন সবচেয়ে প্রভাবশালী ভূমিকা তাকে হত্যা করে খুনিরা কোনোরূপ ‘ঝামেলা’ ছাড়াই সামলে নিতে পারল তখন কয়েকগুন উৎসাহে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে।
অভিজিৎ হত্যার মাস দুয়েকের মধ্যেই দিনের আলোয় খুন হন ৮৪ জনের লিস্টে না থাকা ওয়াশিকুর রহমান বাবু। তাঁর খুনিদের দুজনকে ধরিয়ে দিলেন সমাজে প্রান্তিক অবস্থানে থাকা দুজন মানুষ। যাদেরকে ‘হিজড়া’ বলে হাসি ঠাট্টা করা হয়।
কিন্তু সেই ধৃত খুনিদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের কোন নেটওয়ার্কই বের করতে পারল না পুলিশ। এর ঠিক ১২ দিন পর সিলেটে সকাল বেলায় খুন হলেন আমার ভীষণ কাছের অগ্রজ বন্ধু ব্লগার বিজ্ঞান লেখক অনন্ত বিজয় দাশ। ব্যক্তিগতভাবে এই হত্যা আমাকে আক্রান্ত করেছে বেশি। খুনিরা প্রকাশ্যে হেঁটে হেঁটে চলে গেলেও কোন হদিস পেল না পুলিশ। অনেকদিন পর এক ফটো সাংবাদিককে একটি ছবির সূত্রে গ্রেফতার করে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ তথ্য পাওয়ার খবর দিলেও আদতে এই মামলার দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি হয়নি। আসলে গুরুত্বপূর্ণ কোন কিছুই যে পুলিশ বের করতে পারেনি কিংবা পারলেও সেই অনুযায়ী কাজ করেনি বা করার কোন ইচ্ছা তাদের নেই এর স্পষ্ট প্রমাণ নিলয় নীলের নিজ বাসায় খুন হয়ে যাওয়া।
এই অবস্থায় রাষ্ট্রের নির্বিকারত্ব জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দেয়ার সামিল। প্রধানমন্ত্রী আজ (৮ আগস্ট) বলেছেন – ‘ধর্মকে হাতিয়ার করে কোন হত্যাকাণ্ড ঘটতে দেয়া হবে না’। অবশেষে তাঁর ছেলের ভাষায় ‘স্পর্শকাতর’ বিষয়ে তিনি মুখ খুলেছেন বলে সাধুবাদ। কিন্তু তাঁর কথায় আস্থা রাখবেন ক’জন?
হুমায়ুন আজাদের উপর হামলার পর আজকের প্রধানমন্ত্রী তখন বিরোধীদলীয় নেত্রী। আহত হুমায়ুন আজাদকে দেখতে সিএমএইচে যাওয়ার সময় সেনানিবাসের গেটেই তাঁর গাড়ি আটকে দিলে তিনি হেঁটেই বাকি পথ গিয়ে হুমায়ুন আজাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। কই হুমায়ুন আজাদের মত স্বঘোষিত নাস্তিকের পাশে দাঁড়িয়ে তো তিনি নাস্তিক ট্যাগ খান নি।
আজ যদি বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এভাবে ব্লগার খুন হত তাহলে আমি নিশ্চিত আওয়ামীলীগ তখন প্রতিবাদ করত। তীব্র প্রতিবাদে সামিল হতেন আওয়ামী ঘরানার বুদ্ধিজীবী , সংস্কৃত কর্মী সকলে। আজ তারা সরকার বিব্রত হয় কিনা এই চিন্তায় নিশ্চুপ আছেন। কিন্তু সরকারের গা বাঁচাতে বাঁচাতে খুন হয়ে যাবে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের স্বপ্ন।
বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপি-জামায়াত-হেফাজতের ক্ষয়িষ্ণু শক্তি প্রবল পরাক্রমশালী সরকারকে পতন ঘটাতে পারে এমনটা মনে হয়না আমার। তবে কেন এত ভয়? রাজনৈতিক সকল সুবিধা অর্জন করে তবেই কি প্রতিক্রিয়া দেখান হবে?
বাংলাদেশে বসবাসকারী ধর্মে অবিশ্বাসী ব্লগারদের বেশিরভাগেরই সামর্থ্য নেই বিদেশে যাবার। নিজের মাতৃভূমিকে প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র করার স্বপ্ন দেখে হঠাৎ পরবাসে যাওয়ার ইচ্ছাই বা কার হয়? সরকারের কাছে নতুন করে আর নিরাপত্তা দেয়ার কথাও বলাও অনর্থক মনে হচ্ছে।
যারা চাপাতি নিয়ে মতাদর্শ প্রতিষ্ঠার খুনে মত্ত আছেন তাদের উদ্দেশ্যে অনর্থক একটি বাক্য বলে শেষ করছি।
হে উগ্রজন, চাপাতি ফেলে আসুন না কলমের যুদ্ধে, মগজের যুদ্ধে। নিজেদের মতাদর্শ নিয়ে চাপাতি ছাড়া দাঁড়াতে এত ভয়? এ কি মতাদর্শিক পরাজয় নয়?
[সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ক্ষত বিক্ষত বাঁহাতে এখনো ব্যান্ডেজ। হারিয়ে ফেলেছি বাঁহাতের তিন আঙুলের অর্ধেক অংশ। তবু তীব্র হতাশায় আক্রান্ত হয়ে এক হাত দিয়ে অনেক কষ্টে এই বিচ্ছিন্ন এলোপাতাড়ি কথাগুলো লিখে রাখলাম]
ধর্মান্ধ-নরপিশাচ-বর্বরদের দ্বারা সংঘটিত এই সকল নির্মম হত্যাকান্ডের নিন্দা জানানোর সঠিক ভাষাও আমার জানা নেই ! রাফিদা আহমেদ বন্যার ভাষায় বলতে হয় জানোয়ারের অধম এই সকল কীটদের ” ঘৃনা করতেও আমার ঘৃনা হয়”! আর একের পর এক এই সকল হত্যাকান্ডে বর্তমান সরকার যে ভাবে নির্বিকার উদাসীন ভাবে বসে আছে এতে করে এই কথা বলতে আমার দ্বিধা নেই এই সরকার ভোট হারাবার ভয়ে – ক্ষমতা হারাবার ভয়ে এই দেশে ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে ! যদি এই সরকার রাজীব হত্যার বিচার করত তবে এই খুনীরা অভিজিৎ, ওয়াশিকুর, অনন্ত, আর নিলয়কে হত্যা করার সাহস পেত না ! আমি মনে করি অভিজিৎ, ওয়াশিকুর, অনন্ত আর নিলয় হত্যার জন্য এই সরকার ১০০ ভাগ দায়ী ! এই সরকারের মুখে আমার থু থু দিতে ইচ্ছে করে ! এই নপুংশক সরকারের আমি অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করি ! অভিজিৎ, ওয়াশিকুর, অনন্ত ও নিলয় হত্যাকান্ডের জন্য দায়ী এই সরকারের বিরুদ্ধে আওন্তর্জাতিক আদালতে অচিরেই মামলা দায়ের করা উচিৎ!
prothomei khoma cheye nicchi english horofe bangla lekhar jonno. ekhane deoa software try korechilam kintu khub ekta subidha kore uthte parlam na r ekhane poschimbonge bangla keyboard khub ekta chalu noi. ami dhorme bissas kori na sadhinota juktibad dorshon bigyane bissas rakhi. tai jonmosutre bangladeshi na holeo kimba poschimbonger basinda holeo amar paser dese moddhojugio sontraser chaya amakeo atonkito kore. amar edesheo dhormer dhojadharider ovab nei (se je dhormoi hok na keno), majhe majhe tader torjon gorjon o tibrovabe sunte pai. tai aaj niloydar hottar por eta bangladeser somossa bole cokh buje thakte parlam na. ebar prosonge asi. bigoto koekmas dhore bivinno channel, online news portal ittadite bangladeser samprotik ghotonaboli porjobekkhon kore cholechi. jevabe eker por ek mukto chintar manush nrisongshovabe khun hocchen tate blogerder sirdarate atonker himel chorasrot boe jete baddho. r tar folsorup oneke hoito lekha bondho korechen ba oneke poschima deser nirapod asroye giye lekhalekhi korchen. amra ahoto hocchi, roktakto hocchi, tarpor sohorer rastay mombati michil korchi r bolchi astro diye sontras diye kolom thamano jabe na. tarpor kichudin jete na jete nijeder jibon ebong onnanno ghotonabolir majhe amader khover agun chaichapa pore jacche. sorkar ebong rajneeti je amader rokkha korbe na ta poriskar. suruta hoyechilo lekhika taslima nasriner desh chara diye r aajo sei eki tradition choleche. kintu amra ki kokhono vebe dekhechi michil kora, sorkarer kache protibader dabi janano ettadir baire amader kichu korar ache kina. onek vebe ami ektimatro upay khuje pelam.
ekhon ami ja bolte jabo tate hoito sushil sovvo somaj boro dhakka khaben. bhumikate iti tene ebar asol kothata boli. amar mot sosostro protirodh gore tulun. jani apnara jara sristi koren tader pokkhe kolom chere hate astro tule neoa khub kothin kaaj. kintu ekbar vebe dekhun amra jotoi chechai na keno je amader kolom thambena, kolom kintu thamche. amader kolom kere neoa hocche, ja amader sristir hatiar. tai kolomke bachate amader hatiar nite hobe boiki. ekhate thakuk kolom amader rekhat jeno ottacharir bodh korar somoi na kape. ja vabchen ora omanush bole ki amrao omanush hobo, manobikota bhule jabo, tader boli apnara ki ekhono bujhte parchen na je manobota aaj kritodase porinoto hoeche? r jara desh chere palacchen tader boli ei khunider asfalon barar jonno apnarao dayi. ora to etai chai je koekjonke khun kore sontraser rajotto kayem korte jate muktochintar manushera hoi palie jai noito tader mukh chirotore bondho hoe jai. apnara joto palaben toto ora oder safolle bolian hoe apnader ei deshke soitaner muktanchole porinoto korbe. r ekta kotha nischoi janen sikor upre gele kono gach bache na. aaj nijer deshe dhaoa kheye palacchen, kaal onnodeshe onno kono ottachari apnake tara korbe na sekotha nischit hoe bolte parben apni? r poroborti projonmoke ki bolben? tader bolte parben to je apnara apnader vitemati kichu soitaner kache attosomorpon korechen?
jonomot gore tola nischoi abossok. ta apnara kore cholechen eto tibro sontraser majhe darieo. selam janai apnader. ami etao jani je ottachari kokhono sesh hasi haseni. edero asfalon tamte baddho, kaler niome. kintu ektai prosno r koto rajib, avijit, wasikur, niloyder rokto jhorbe. hitler, stalin, musolini eder asfalon kintu emni emni thameni. astro diei eder thamate hoeche. hoito tate oneker rokto bolidan geche. tai asun protigga kori r kono muktochintar manushke amra morte debona. R palabona amra. Ora chapatti nile amrao nebo. Oderke r amader marar jonno follow korte hobe na, amra oder ghore dhukbo, jater name bojjati kora oi soitangulor sorir theke rokto jhorabo. Joto ora jhorieche tar theke ro besi, totokkhon jhorabo jotokkhon na sontraser kalo megh kete mukto chintar surjo akashe udito hoi.
Sesh korbo kobitar ekta laine die
“ khoma jetha khin durbolota, he rudo nisthur jeno hote pari totha,
Tomar aadeshe”
Ruder nyay ekhate thakuk sristir kolom, rekta haat amra rangabo ottacharir rokte.
ইংরেজী হরফে এত বড় একটা লেখা মডারেটররা চোখমুখ শক্ত করে কেন শেষ পর্যন্ত পড়ে গেলেন এবং – কী আশ্চর্য- ছাপিয়েও দিলেন সেটা বোঝার জন্য আমিও পড়ে দেখলাম। পড়ে মনে হল অন্যদেরও পড়া উচিত। আর অন্যদের যেন এতটা ধকল না যায় তাই আপনার লেখাটা ‘বাংলা করে’ দিলাম।
আলোর পথযাত্রী’র বক্তব্য-
প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি ইংলিশ হরফে বাংলা লেখার জন্য। এখানে দেয়া সফটওয়্যার ট্রাই করেছিলাম কিন্তু খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারলাম না; আর এখানে পশ্চিমবঙ্গে বাংলা কী-বোর্ড খুব একটা চালু নয়।
আমি ধর্মে বিশ্বাস করি না; স্বাধীনতা, যুক্তিবাদ, দর্শন, বিজ্ঞানে বিশ্বাস রাখি। তাই জন্মসুত্রে বাংলাদেশী না হলেও কিংবা পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হলেও আমার পাশের দেশে মধ্যযুগীয় সন্ত্রাসের ছায়া আমাকেও আতঙ্কিত করে। আমার এদেশেও ধর্মের ধ্বজাধারীদের অভাব নেই (সে যে ধর্মই হোক না কেন), মাঝে মাঝে তাদের তর্জন গর্জনও তীব্রভাবে শুনতে পাই। তাই আজ নিলয়দা’র হত্যার পর ‘এটা বাংলাদেশের সমস্যা’ বলে চোখ বুজে থাকতে পারলাম না।
এবার প্রসঙ্গে আসি। বিগত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন চ্যানেল, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্যাদিতে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী পর্যবেক্ষন করে চলেছি। যেভাবে একের পর এক মুক্তচিন্তার মানুষ নৃশংসভাবে খুন হচ্ছেন তাতে ব্লগারদের শিরদাঁড়াতে হিমেল চোরাস্রোত বয়ে যেতে বাধ্য। আর তার ফলস্বরূপ অনেকে হয়তো লেখা বন্ধ করেছেন বা অনেকে পশ্চিমা দেশের নিরাপদ আশ্রয়ে গিয়ে লেখালেখি করছেন। আমরা আহত হচ্ছি, রক্তাক্ত হচ্ছি, তারপর শহরের রাস্তায় মোমবাতি মিছিল করছি আর বলছি অস্ত্র দিয়ে সন্ত্রাস দিয়ে কলম থামানো যাবে না। তারপর কিছুদিন যেতে না যেতে নিজেদের জীবন এবং অন্যান্য ঘটনাবলীর মাঝে আমাদের ক্ষোভের আগুন ছাইচাপা পড়ে যাচ্ছে। সরকার এবং রাজনীতি যে আমাদের রক্ষা করবে না তা পরিস্কার। শুরুটা হয়েছিলো লেখিকা তসলিমা নাসরিনের দেশ ছাড়া দিয়ে আর আজও সেই একই ট্রেডিশন চলছে। কিন্তু আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি মিছিল করা, সরকারের কাছে দাবী জানানো ইত্যাদির বাইরে আমাদের কিছু করার আছে কি না? অনেক ভেবে আমি একটি মাত্র উপায় খুঁজে পেলাম।
এখন আমি যা বলতে যাবো তাতে হয়তো সুশীল সভ্য সমাজ বড় ধাক্কা খাবেন। ভূমিকাতে ইতি টেনে এবার আসল কথা বলি। আমার মত- সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। জানি আপনারা যারা সৃষ্টি করেন তাদের পক্ষে কলম ছেড়ে হাতে অস্ত্র তুলে নেয়া খুব কঠিন কাজ। কিন্তু একবার ভেবে দেখুন আমরা যতই চেঁচাই না কেন যে আমাদের কলম থামবে না, কলম কিন্তু থামছে। আমাদের কলম কেড়ে নেয়া হচ্ছে যা আমাদের সৃষ্টির হাতিয়ার। তাই কলমকে বাঁচাতে আমাদের হাতিয়ার নিতে হবে বৈকি। একহাতে থাকুক কলম, আমাদের আরেক হাত যেন অত্যাচারীর বধ করার সময় না কাঁপে। যারা ভাবছেন- ওরা অমানুষ বলে কি আমরাও অমানুষ হবো, মানবিকতা ভুলে যাবো- তাদের বলি, আপনারা কি এখনো বুঝতে পারছেন না যে মানবতা আজ কৃতদাসে পরিনত হয়েছে? আর যারা দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন তাদের বলি, এই খুনিদের আস্ফালন বাড়ার জন্য আপনারাও দায়ী। ওরাতো এটাই চায় যে, কয়েকজনকে খুন করে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে যাতে মুক্তচিন্তার মানুষেরা হয় পালিয়ে যায় নয়তো তাদের মুখ চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। আপনারা যত পালাবেন তত ওরা ওদের সাফল্যে বলীয়ান হয়ে আপনাদের এই দেশকে শয়তানের মুক্তাঞ্চলে পরিনত করবে। আরেকটা কথা নিশ্চয়ই জানেন, শিকড় উপড়ে গেলে কোন গাছ বাঁচে না। আজ নিজের দেশে ধাওয়া খেয়ে পালাচ্ছেন, কাল অন্যদেশে অন্যকোন অত্যাচারী আপনাকে তাড়া করবে না সে কথা নিশ্চিত হয়ে বলতে পারবেন আপনি? আর পরবর্তী প্রজন্মকে কী বলবেন? তাদের বলতে পারবেন তো যে আপনারা আপনাদের ভিটেমাটি কিছু শয়তানের কাছে আত্মসমর্পন করেছেন?
জনমত গড়ে তোলা নিশ্চয়ই আবশ্যক। তা আপনারা করে চলেছেন এত তীব্র সন্ত্রাসের মাঝে দাঁড়িয়েও। সেলাম জানাই আপনাদের। আমি এটাও জানি যে, অত্যাচারী কখনো শেষ হাসি হাসেনি। এদেরও আস্ফালন থামতে বাধ্য কালের নিয়মে। কিন্তু একটাই প্রশ্ন- আর কত রাজিব, অভিজিৎ, ওয়াশিকুর, নিলয়দের রক্ত ঝরবে। হিটলার, স্টালিন, মুসোলিনি এদের আস্ফালন কিন্তু এমনি এমনি থামেনি। অস্ত্র দিয়েই এদের থামাতে হয়েছে। হয়তো তাতে অনেকের রক্ত বলিদান গেছে। তাই আসুন প্রতিজ্ঞা করি, আর কোন মুক্তচিন্তার মানুষকে আমরা মরতে দেবো না। আর পালাবো না আমরা। ওরা চাপাতি নিলে আমরাও নেবো। ওদেরকে আর আমাদের মারার জন্য ফলো করতে হবে না, আমরা ওদের ঘরে ঢুকবো। জাতের নামে বজ্জাতি করা ঐ শয়তানগুলোর শরীর থেকে রক্ত ঝরাবো। যত ওরা ঝরিয়েছে তার থেকেও আরো বেশি। ততক্ষন ঝরাবো যতক্ষন না সন্ত্রাসের কালো মেঘ কেটে মুক্তচিন্তার সুর্য আকাশে উদিত হয়।
শেষ করবে কবিতার একটা লাইন দিয়ে-
“ক্ষমা যেথা ক্ষীন দুর্বলতা, হে রূদ্র, নিষ্ঠুর যেনো হতে পারি তথা, তোমার আদেশে” ।
রূদ্রের ন্যায় একহাতে থাকুক সৃষ্টির কলম, আরেকটা হাত আমরা রাঙাবো অত্যাচারীর রক্তে।