এতোদিন পশ্চিমে থেকেও আবহাওয়াটা ঠিক পোষায় না সাজিয়াদের। শীতকে প্রচণ্ড ভয় তার ওপর স্ক্যান্ডিনেভিয়ার কাছের এই দেশগুলোতে শীতের দিনে আলোও নেই, ঘুটঘুটে অন্ধকার। ক্রিসমাসের ছুটিতে প্রায়ই সূর্যালোকের খোঁজে এদিকে ওদিকে বেড়িয়ে পড়ে তারা। সারা জীবনের স্বপ্ন একবার ইজিপ্টে যাবে। সূর্যালোক খোঁজ করতে করতে ইজিপ্টে মন ঠিক করে আনন্দে আত্মহারা। যথাসময়ে বাক্স প্যাটরা গুছিয়ে চললো ইজিপ্ট-দ্যা ল্যান্ড অফ হিসট্রি।
লুক্সর টেম্পল, কোর্নাক টেম্পল, ভ্যালি অফ দ্যা কিংস, হাবু টেম্পল, টেম্পল অফ হাসিবস্যুট, কোম ওমবো ইত্যাদি নানা জায়গায় ভ্রমণ করলো নীলের ওপর দিয়ে, ক্রুজ ট্যুর ছিলো। আট দিনের ভ্রমণ শেষে দিগ্বিবিজয়ের আনন্দ নিয়ে তারা বাড়ি ফিরলো।
সাজিয়ার বারো বছর বয়সী মেয়েও বললো, মা, জীবনে যতো ছুটি কাটিয়েছি, ইজিপ্ট ইজ দ্যা বেস্ট।
আজকাল ফেসবুকের কল্যাণে কোন ইভেন্টই গোপন থাকে না, আর এটা গোপন থাকার তো কোন কারণই নেই। মহাসমারোহে ফেসবুকে ফটো পোস্ট করে চলেছে সাজিয়া। এতো এতো ছবি উঠিয়েছে ডিএসএলার-এ, বাছাই করে পোস্ট করাও একটা বিরাট কাজ। একদিন স্থানীয় একজন বেড়াতে এলেন। গল্প হচ্ছে, চা খাচ্ছে।
বললো, আপনাদের মিশরের ছবি দেখে খুবই ভাল লাগছে। কোথায় কোথায় গেলেন? আমারও অনেকদিনের ইচ্ছা ওখানে যাওয়ার, কতো ইতিহাস।
সাজিয়ার তো আনন্দে টইটুম্বর অবস্থা, আনন্দে আটখানা হয়ে ফেটে পড়ে বলতে লাগলো কোথায় কোথায় গিয়েছে।
উনি একটু অপেক্ষা করে বললেন, মুসা নবী যেখানে নীল নদকে ওনার লাঠি দিয়ে দুই দিকে দুই ভাগ করলেন, সেখানে যান নাই!
সাজিয়া একটু থমকে গেলো। তারপর বললো, এসবতো আসলে মিথ, লোকের মুখে মুখে ছড়ায়, এ ধরনের কোন জায়গার অস্তিত্ব আসলে নেই।
ভদ্রমহিলা খুবই রেগে গেলেন, কী বললেন? কী বললেন আপনি? মুখে মুখে ছড়ায়? কুরআনে লেখা আছে জানেন, আল্লাহর কুরআনে!
সাজিয়া নিরুত্তর। যেভাবে উনি রেগে গেছেন তাতে সে এখন কী বলবে বুঝতে পারছিলো না।
সাজিয়াকে এমনিতেই ভদ্রমহিলার কম পছন্দ। আল্লাহর প্রতি সাজিয়ার ডর ভয় কম, এমনিতে সাজিয়া মানুষ খারাপ না হলেও কোন ইসলামি রেওয়াজ পালন করে চলে না। ছেলেরা অল্পবয়সে অনেকসময় এমন হয় উনি দেখেছেন, আবার বয়স হলে ঠিকও হয়ে যায় কিন্তু মেয়ে এরকম উনি শুধু এই একটা চিজই দেখলেন। সাজিয়াকে নিরুত্তর করাতে পেরে উনি বিজয়ীর দম্ভে আবার বললেন, আমার পরিচিত অনেকেই যারা গেছেন তারা দেখে এসেছেন। অনেক মুসলমান ট্যুরিস্ট হিসেবে শুধু এটা দেখতেই যায়, এটা আসলে ইমানের ব্যাপার।
নিরুপায় সাজিয়া বললো, চলেন গুগুলে দেখি এমন কোন জায়গা মিশরে সত্যিই আছে কিনা?
তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে উনি বললেন, সব গুগলে থাকে না, সব গুগলের ব্যাপার না। অনেক কিছু কুরআনে আছে, ইমানের ব্যাপার।
রাগে লাল চেহারা করে বারবার যেই এমফেসিস তিনি ‘কুরআন’ শব্দের ওপর দিচ্ছিলেন সাজিয়া ভয়ে এতোটুকু হয়ে গেলো যে উনি না রাগে তাকে মার দিয়ে ফেলেন। সাজিয়া মিশরের ইতিহাস জেনে ও তাকে বলবে, কী না বলবে দ্বন্দ্বে পড়ে গেলো।
সবদিক বিবেচনা করে সাজিয়া তার মুখ বন্ধ রাখাই সমীচীন মনে করলো। এখন সে জেনে গেছে ধর্মানুভূতি আহত হলে মারাত্মক ক্ষেপে যাওয়ার, এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে মেরে-ফেলারও অধিকার আছে।
_________________________
[৩২০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে রাজা মেনেস উত্তর মিশর আর দক্ষিণ মিশরকে এক রাজ্যে পরিণত করেন। তার পর ৩১টি রাজবংশের শতশত রাজা-যাদের উপাধি ছিল ‘ফেরৌন’-এই মিশর রাজ্যটি শাসন করেন। কাজেই ‘ফেরৌন’- যাকে ‘ফেরাউন’ বলা হয়-তা কারো নাম নয়, এটা তৎকালীন মিশর শাসনকর্তার উপাধি। এই শতশত ফেরাউনদের মাঝে অনেকেই যেমন অত্যাচারী ছিলেন, আবার অনেকে দয়ালু প্রজাবৎসলও ছিলেন। আর এই ৩১টি রাজবংশের শতশত ফেরাউনদের মাঝে একজনই ফেরাউন আছেন যাঁর নামের আগে ‘দি গ্রেট’ কথাটি উল্লেখ করা আছে। আর তিনি হলেন ‘দি গ্রেট দ্বিতীয় রামেসিস’ যিনি ৬৭ বছর মিশরকে শাসন করেছেন। শুধু তাই নয়-তাঁকে তাঁর মৃত্যুর পরেও হাজার বছর ধরে মিশরবাসী ‘দি গ্রেট’ নামে ডেকেছে।
বনি ইস্রায়েলেরা প্রথমে মিশরের উদ্বাস্তু ছিল। অনেক বনি ইস্রায়েল দাস হয়ে মিশরে এসেছে এবং শত শত বছর সময়ের প্রবাহে স্থায়ীভাবেই বসবাস করছিল, আর তারা সিনাই উপদ্বীপের রামিশেজ প্রদেশে বসবাস করত। তাদের আদিবাস কেনান বা প্যালেস্টাইন। সেখান থেকে প্যালেস্টাইন বা কেনান দেশ পূর্বদিকে। মুসা বনি ইসরায়েলদের সাথে নিয়ে পূর্ব দিকে প্যালেস্টাইন না-গিয়ে সেখান থেকে পায়ে হেঁটে কয়েকশ মাইল পশ্চিমে নীল নদ পাড়ি দিতে যাবে কোন দুঃখে?
আর মুসা পালিয়েই বা যাবে কেন? মুসার নেতৃত্বে বনি ইস্রায়েলিদের যে-দলটি প্যালেস্টাইনে গিয়েছিল সে দলে সব মিলিয়ে প্রায় ছয় লক্ষ লোক ছিল, সাথে আরও ছিল তাদের বিশাল পশু পাল। ছয় লাখ লোক এক রাতে রাষ্ট্রীয় কোন আলাপ আলোচনা ছাড়া পালিয়ে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া কি সম্ভব? মুসার নিজের কিতাব ‘তোরা’ বা ‘তাওরাত’ থেকে একটি উদ্ধৃতি দিচ্ছি- “তখন রাত্রিকালে ফেরাউন মোসি (মুসা) ও হ্যারোনকে ডাকাইয়া বলিলেন, তোমরা উঠো, ইসরায়েলদিগকে লইয়া আমার প্রজাদের মধ্য হইতে বাহির হও, তোমাদের কথানুসারে মেষপাল ও গো-পাল সঙ্গে লইয়া চলিয়া যাও এবং আমাকেও আশীর্বাদ করো……” তার মানে, বেরুনোর কথা ফেরাউন নিজেই বলেন, মুসা পালিয়ে গেছে, এটা সত্যি নয়। এবং তিনি ঠিক হুমকি দিয়েও তাড়িয়ে দেন নি, মুসা তো তাঁর ঘরেই পালকপুত্রের মতো ছিলো।
‘দি গ্রেট দ্বিতীয় রামেসিস’ নীল নদে ডুবে মরেছেন একথা সত্যি। একটা দুর্ঘটনায় তিনি পানিতে পড়ে মারা যান কিন্তু সেটা হজরত মুসাকে মারতে গিয়ে, একথার কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি আছে কি?]
__________________________________________________________________
এ সমস্ত খুব ভাল করে জানা থাকা সত্বেও সাজিয়া মুখ খুলে সামনের জনকে কিছুতেই বলতে পারলো না, যার অস্ত্বিত্ব নেই তাঁকে খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। গল্প গল্পই হয় আর বাস্তব বাস্তব। আসলে যখন কেউ কিছু মেনে নিয়ে তারপর কথা শুরু করেন তখন সেখানে আলোচনার আর কিছু থাকে না।
কি কাণ্ড! এই ভাইরাসের প্রতিকার সত্যিই খুব শক্ত কাজ। মিথও হিতাহিত জ্ঞান কেড়ে নিতে পারে, এমনকি বাস্তব চিন্তা। মন দিয়ে পড়ছি। আরো লিখুন।
মিশরের টেম্পলে টেম্পলে ঘুরে অনেকবার অনুভব করেছি মানুষ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে, অমর করতে, অন্যদের ভয় দেখাতে কখনও নিজে গড সেজেছে আবার কখনো কল্পনায় গড সাজিয়েছে। চিন্তা ভাবনার অনেক খোরাক পাওয়া যায়। র
চিন্তা ভাবনার খোরাক পেয়েছেন বটে, তবে তা দিয়ে বাংলাদেশে কাজ হবে না।
বাসার পাশে মসজিদ। সে সুবাদে মাইকে ঘরে বসেই জুম্মাবারের ফ্রী বয়ান শুনি। এমনই এক বয়ানে মওলানা সাহেব বল্লেন- “আল্লা পারেন্না এমন কিছু নেই, তিনি চাইলে মুহুত্বে সব লন্ডভন্ড করে দিতে পারেন। প্রসঙ্গ ক্রমে তিনি ব্যাঙ্গাত্মক ভাষায় জাপানের সাম্প্রতিক ভূমিকম্প/সুনামির রসালো বর্ননা দিলেন। আল্লার ক্ষমতার কাছে মানুষের শক্তি, সামর্থ, বিজ্ঞান, প্রযুক্তিকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে উপস্থিত মুসুল্লীদের আলহামদুলিল্লা অর্জন করলেন।” পরক্ষনেই সেই মওলানা মসজিদের দ্বিতল ভবন নির্মান করার জন্য মানুষের কাছে টাকা, পয়সা, ধান, চাল, ছাগল, গরু দান করার সবিনয় আকুতি জানিয়ে বল্লেন- “আপনারা না দিলে আল্লার ঘর মসজিদ হবে কি ভাবে?”
মনে মনে ভাবলাম এত বড় সুনামি-দানব সামান্য একটি মসজিদের দ্বিতল ভবন নির্মান করার সক্ষমতা দেখাতে পারেন্না!!!!???
সে আর বলতে! তাওতো মসজিদের জন্যে চেয়েছেন, নিজের জন্যে প্রকাশ্যে চান নি। এমনিও জন্ম থেকে মাদ্রাসায় পড়ে, এক রকম ভিক্ষাবৃত্তিই করে তাদের জীবন চলে। সেই জিঘাংসা ঢেলে দেন মাইকে করে জুম্মাবারে।
দারিদ্রতার এই দুষ্ট চক্র থেকে এদেরও মুক্তি নেই, আমাদেরও এদের হাত থেকে পরিত্রাণ নেই
অনেক দেশে অনেক মিথকে ভিত্তি করে গড়ে উঠছে পর্যটন কেন্দ্র। অর্থনীতিতে এর ভূমিকা আছে বলেই অনেকে জেনে শুনেও মিথকে মিথ বলতে রাজি হয় না। হিন্দুরা যে গঙ্গাস্নানে গিয়ে পূণ্যলাভে বিশ্বাস করে – সেই গঙ্গার অবস্থা আমাদের বুড়িগঙ্গার চেয়েও ময়লা। বিশ্বাসের ভাইরাসের কারণে ময়লা চোখে পড়ে না।
ভালো লাগলো ভিন্ন চোখের দর্শন। কলম চলুক।
সবচেয়ে মজার ছিলো, ইটালীর ভেরোনাতে, রোমিও-জুলিয়েটের আস্তানা। জুলিয়েটের জানালা। ওখানে আবার রোমিওর স্ট্যাচুর একটি বিশেষ অংশে চুমু খেলে প্রেমে সাফল্যের কথা বলা হয়েছে এবং সবচেয়ে মজার কথা, নতুন যুগের নতুন ছেলে মেয়েরা করছে, সে ছবি তোলার জন্যে করুক আর যে জন্যেই করুক, করছে সে হলো মোদ্দা কথা।
পুরাণ কেবল তখনই সুন্দর যখন তাকে পুরাণ হিসেবে উপলব্ধি করার ক্ষমতা মানুষের থাকে, যখনই কেউ পুরাণকে বাস্তব ভৌত ঘটনা মনে করে তখনই তার পুরাণটা হয় হাস্যকর নয় বীভৎস রূপ ধারণ করে। মুসলমানদের মধ্যে বোধহয় ১ শতাংশের চেয়েও অনেক কম মানুষ আছে যারা কুরানের পুরাণকে পুরাণ হিসেবে দেখতে পারেন। খ্রিস্টান বা ইহুদিদের মধ্যে একটা বিশাল অংশই তাদের ধর্মগ্রন্থের পৌরাণিকতা স্বীকার করে নেয়, কিন্তু মুসলমানদের অধিকাংশ এই দিক দিয়ে নাবালকই রয়ে গেছে। এক পাদ্রির কাছে শুনেছিলাম, তিনি বাইবেলকে একটা বই নয় বরং একটা লাইব্রেরি হিসেবে দেখেন; প্রকৃতির নিয়ম জানতে চাইলে যেমন উপন্যাসের তাকের দিকে না গিয়ে পদার্থবিজ্ঞানের তাকের দিকে যাওয়া উচিত, তেমনি তার মতে বাইবেলের একেকটা অংশ একেকটা তাক, এবং যে বিষয়ে পড়াশোনা করতে চান সে বিষয়ের তাকেই যেতে হবে; পুরাণের তাক দিয়ে অন্য কার্যসিদ্ধির চেষ্টা করা যাবে না। এই ধারণার মধ্যে অবশ্যই একটা সুবিধাবাদিতা আছে, কিন্তু তারপরও এটুকু উপলব্ধিও ধার্মিকদের সংস্কৃতিমনা করার ক্ষেত্রে কার্যকরি হতে পারে।
আপনার পরববর্তী ভিন্ন চোখে দুনিয়া দর্শনের অপেক্ষায় থাকলাম।
অন্যরা মারামারি করে অনুভব করেছে কিছুটা যে এগুলোর কোন মানে নেই। মুসলমান জাতিকে এক লক্ষ চুরাশি হাজার পয়গম্বর হেদায়েত করতে পারে নাই কারণ ব্রেইনের যে অংশ দিয়ে অক্সিজেন আসা যাওয়া করে সেটি ব্লক তাই অনুভব, অনুভূতি নেই …
আপু, আরো লিখেন। বাঙ্গালীর ঘিলু যতদিন মিথের মিথ্যেয় বুদ হয়ে থাকবে ততদিন লিখে যেতে হবে।
শুভকামনা আপু।
বাঙ্গালি কী লেখায় পরিবর্তন হওয়ার জাতি? অরন্যে রোদন জেনেও স্বভাবের দোষে রোদন করে যাবো
মিথ আর ধর্মের পার্থক্য বুঝাতে এমন উদাহরণ দিয়ে লিখুন। ভালো লেগেছে ।
ধন্যবাদ আপা, লেখার ইচ্ছে আছে। ভাল থাকবেন
আমি গত ৪ মাস আগে বিমানে বাংলাদেশে ভ্রমন করি।ট্রানজিটের বিমান পরিবর্তন করার পর হঠাৎ দেখি জীন্স পেন্ট ও শার্ট এবং পুরো মাথাটা হিজাব জাতীয় স্কার্ফ মার্কা পরিহিত এক মহিলা আমার পাশের ছিটে এসে বসলেন। বিমান উড্ডয়নের আধা ঘন্টা পর মহিলাই আমার সাথে তার সাথে অনেক ডলার নিয়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন করে উত্তর জানতে চাইলেন।আমি বললাম আমি ঠিকঠাক উত্তর জানি না ,তবে মনে হয় আপনি লিগালি বাংলাদেশে যাতায়তের সময় ৫ হাজার ডলার নিজের সাথে বহন করতে পারেন।দেখি তার মুখে কালো ছায়ার ছাপ পড়েছে।কারন তার সাথে ৫ হাজারের ৪ গুন বেশী ডলার ছিল যা সে নিজেই আমাকে বলল।
এই সূত্র ধরে তার সাথে আলোচনা চলতে থাকে বিমান মাটিতে অবতরন করা পর্যন্ত এবং কে কোথায় থাকি থেকে শুরু করে সমাজ,দর্শন,বিজ্ঞান ও ধর্ম ইত্যাদি নিয়ে।
আলোচনা চলতে থাকে কারন সে নাকি ঢাকা মেডিকেল থেকে পাশ করে এখন আমেরিকায় গত ১৫ বছর থাকে এবং সেখানে চিকিৎসক হিসাবে কর্মরত।নিজেই বলল আমি আগে মাথায় হিজাব পরতাম না,এখন পরি,কারন ১/১১ আমার জীবন পাল্টিয়ে দিয়েছে।সে-ই থেকে সে ইসলামের ইতিহাস এবং কোরান নাকি ভালোভাবে পড়ে বুঝেছে কেন পৃথিবীর এতো সমস্যা।
হঠাৎ করে নারীবাদের কথা নিয়ে আলোচনা উঠলে কথায় কথায় আমি তসলিমা নাসরিনের কথা বললে দেখি ওনার চেহারায় এক ভয়ংকর জিহাদি জোস নিয়ে দাঁতের উপর দাঁত কড়মাড়িয়ে এমন বিকৃত মুখভংগি করলেন যেন যদি তসলিমা তার সামনে থাকত তাহলে সে তাকে অভিজিৎকে যেভাবে মারা হয়েছিল সেভাবে আঘাত করতে ধিদ্বাবোধ করত না।আমি বললাম আপনি এতো উত্তেজিত হচ্ছেন আপনারতো হার্ট আটার্ক হবে।বলল হবে না!! কারন তসলিমার মত নারীদের কারনেই তো আজ বাংলাদেশের নারীদের এমন দূরাবস্থা।
বললাম পুরুষদের অবস্থা কেমন ?নিরুত্তর।আর বললাম আপনি যে এতো নৈতিকতার আর ভাল খারাপের দোহাই পাড়ছেন তো মাথায় হিজাব পরে তো আপনিই অনৈতিকতার কাজ করছেন এবং রাষ্ট্রের সাথে ধোকাবাজী করছেন।তসলিমা কি সেরকম এমন কিছু করেছে !! এবারো নিরুত্তর।
এই হলো বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে তথাকথিত আধুনিক নামধারী নারীদের মানসিক অবস্থা।আসলে উচ্চশিক্ষায় বাহারি হলেই হবে না যদি মনের সাংস্কৃতিক বিপ্লব বা জীবন জগতের বোধের উম্মেষ জীবনে না ঘটে।সে জন্যই বিজ্ঞান পড়া আর বিজ্ঞানের নিত্যনতুন দ্রব্য ভোগ এক জিনিস আর বিজ্ঞানমনস্কতা হওয়া সম্পূর্ন অন্য জিনিস।
তাই বাংলাদেশের সমাজ বদলানোর জন্য বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ হওয়া আশু জরুরী।
সিরিজটি চলুক…ভাল থাকবেন।
আপনার মন্তব্যটি পড়ে অনেক আগে মুক্তমনায় লেখা নিজের একটি প্রবন্ধের কথা মনে পড়ে গেলো। https://www.mukto-mona.com/Articles/talukder/kon_pothe_jacchi.pdf
জীবনের সবচেয়ে বড় আয়রনী হলো, ধর্মের অনুশাসনের সবচেয়ে বড় শিকার মেয়েরা কিন্তু কেন যেন তাদের মধ্যেই এর প্রতি আনুগত্য বেশী। শৈশবের ব্রেইন ওয়াশ সবাই অতিক্রম করে উঠতে পারে না।
হিজাবের আধিক্য এতো প্রবল দেশে যে ফেসবুকে দেখলাম, “নগরদোলা” ফ্যাশন হাউজ বৈশাখী ড্রেস করেছে, কুর্তি, লেগিং আর হিজাব!!!!
আপনারা পাশে থাকলে অবশ্যই সিরিজটি চলবে। ভাল থাকবেন।
@ তানবীরা
ভালই তো। এখন যত তাড়াতাড়ি বাংলাদেশকে তালিবান রাষ্ট্র বানিয়ে ইসলামি আইন চালু করা যায় ততই মঙ্গল। এ জাতির পাছা শরিয়তি বেত্রাঘাত চায়। মগজে পচন ধরেছে, সম্পূর্ণ ধ্বংস না হয়ে আর উপায় নেই। আমরা খামোখাই সময় আর রক্ত ক্ষয় করছি।
বাংলাদেশের ব্যাপারে আমার একটা কথাই মনে হয়,
নেই কিছু আর হারিয়ে যাবার
শেষ থেকে শুরু যে আবার …………
শুরু থেকে আবার শুরু করতে হবে, কোন উপায় নেই
@ আমরা অপরাজিত,
বিজ্ঞানমনস্ক শব্দটির জায়গায় ইসলামমনস্ক বসিয়ে দিন।
– ফরহাদ মাজহার
মিশরের ইতিহাস উনাকে বলা আর উলুবনে মুক্তা ছড়ানো একই কোথাও হইত। লেখাটা পরে মিশরের ইতিহাস জানার তৃষ্ণা বেড়ে গেল।
মিশরের টেম্পলে টেম্পলে ঘুরে অনেকবার অনুভব করেছি মানুষ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে, অমর করতে, অন্যদের ভয় দেখাতে কখনও নিজে গড সেজেছে আবার কখনো কল্পনায় গড সাজিয়েছে। চিন্তা ভাবনার অনেক খোরাক পাওয়া যায়।