একটি পুরনো কৌতুক দিয়ে শুরু করি। একটি রেস্টুরেন্টে ভীষণ ভীড় হওয়ায় একই টেবিলে দুজন মানুষ খেতে বসেছেন। ওয়েটার আসা মাত্রই উভয়েই মাছের অর্ডার করলেন। ওয়েটার দুটি প্লেটে করে দুটি মাছ নিয়ে এলেন এবং টেবিলে রাখলেন। বলা বাহুল্য মাছ দুটির আকৃতি একেবার সমান ছিলো না। এই সময় টেবিলে বসা দু’জনের একজন অনেকটা অবচেতনেই বড় মাছের প্লেটটি নিজের দিকে টেনে নিলেন। এই দেখে অপরজন বেজায় অসন্তুষ্ট হলেন। তিনি চটে গিয়ে অপরজনকে শুধালেন এ কেমন আচরণ ভাই? সৌজন্যতা বলতে কি কিছুই জানেন না? অভদ্রের মতো বড় মাছটি নিয়ে নিলেন যে? প্রথম ব্যক্তি তখন বললেন, আপনি হলে কোনটি নিতেন? দ্বিতীয় ব্যক্তি বললেন, আমি হলে সৌজন্যতা দেখিয়ে ছোট মাছটিই নিতাম। প্রথম ব্যক্তি উত্তরে বললেন, তাহলেতো মিটেই গেলো, আপনিতো ছোট মাছটিই পেয়েছেন!
ভাগাভাগি নিয়ে সৃষ্টির আদিকাল থেকেই মানুষে-মানুষে, রাজায়-রাজায়, জাতিতে-জাতিতে, দেশে-দেশে কলহ আর অসন্তোষ চলে আসছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের সাথে মায়নমার এবং ভারতের সমুদ্রসীমা নিয়ে দীর্ঘদিনের কলহ পারস্পরিক আলোচনা সাপেক্ষে নিষ্পন্ন না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক আদালতের স্মরণাপন্ন হতে হযেছে। তবে অনেক সময় তৃতীয়পক্ষের দ্বারস্থ হয়েও উভয়েই কিংবা উভয়ের অন্ততঃ একজন সন্তুষ্ট হয়ে ফিরে আসবেন এমন নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না। তাছাড়া ‘বানরের পিঠে ভাগ’ এর মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশংকাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। দেওয়ানী মামলাগুলোতে এই পরিস্থিতি তৈরি হওয়া নিত্যনৈমিত্তিক ব্যপার। যুদ্ধে কোনো পক্ষই জয় লাভ করে না বলে একটি কথা প্রচলিত আছে। একই কথা বলা যায় মামলা মোকদ্দমার ক্ষেত্রেও।
তবে দ্বি-পাক্ষিক ভাগাভাগির একটি ‘ঈর্ষামুক্ত’ কার্যকর পদ্ধতি আছে যেই পদ্ধতিতে ভাগাভাগির পর উভয়ের কারোই অপরের ভাগ নিয়ে ঈর্ষা করার যৌক্তিক ভিত্তি থাকে না। সেটি হচ্ছে ‘আমি ভাগ করি তুমি বাছাই করো’ পদ্ধতি। অর্থাৎ যে দু’জনের মধ্যে ভাগ করতে দিতে হবে তার একজন দুই ভাগ করবে এবং অপর জন একটি ভাগ বেছে নেবে। ভাগের দায়িত্ব যার উপর পড়বে সে চেষ্টা করবে যতটা সম্ভব সমান দুই ভাগে ভাগ করতে এবং অপরজন চেষ্টা করবে যথাসম্ভব বড় অংশটি বেছে নিতে। ভাগাভাগি শেষে প্রথমজন মনে করবে সে ঠিক অর্ধেকটা নিতে পেরেছে, আর যদি না পারে তাহলে তার জন্য সে নিজেই দায়ী কেননা তার ভাগ সমান হয় নি। অপরদিকে যে বেছে নেবে সে মনে করবে সে বড় অংশটিই পেয়েছে। আর যদি না পেয়ে থাকে তাহলে সেটি তারই ব্যর্থতা, সে ঠিক ভাগটি বাছাই করে নিতে পারে নি। এই প্রক্রিয়ায় কেউ কাউকে দোষারোপ করতে পারবে না বরং এই পদ্ধতির সবচেয়ে বড় সফলতা হচ্ছে যে যা পেয়েছে বলে ধারণা করবে তার সমষ্টি একের চেয়ে বেশি হবে!
এতো গেলো পারস্পরিক অশ্রদ্ধাঘটিত বা অবিশ্বাসপ্রসূত সমস্যা। কিন্তু এর সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী অথচ সম্পূর্ণ বিব্রতকর পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে পরস্পরের প্রতি মাত্রাতিরিক্ত সৌজন্যবোধ থেকে। ট্রেনে ওঠতে গিয়ে পারষ্পরিক অতিসৌজন্যতাবোধের দরুন কেউ কারো আগে ট্রেনে উঠতে না পারায় শেষে ট্রেন ছেড়ে দিয়েছিলো এই কাহিনী অনেকেরই জানা আছে। খাবার খেতে গিয়ে দু’টুকরো মাছের একটি বড় এবং একটি ছোট হলে উভয়েই বড় টুকরোটি নিয়ে নিতে অস্বস্তি বোধ করবেন, অথচ উভয়েই হয়তো বড় টুকরোটিই পেতে চাইবেন। সেই ক্ষেত্রে উভয়েই হয়তো প্রথমে নেওয়াটা এড়িয়ে যেতে চাইবেন। এই ক্ষেত্রে প্রথমজনের জন্য পরিস্থিতি যথেষ্ট বিব্রতকর এবং যিনি প্রথম টুকরোটি নেবেন তিনি হয়তো সৌজন্যতার খাতিরে ছোট টুকরোটি বাছাই করবেন এবং এতে অপরজনের ভাগে বড় টুকরোটি পড়বে। তিনি না পারবেন চক্ষুলজ্জার কারণে বড় টুকরোটি নিতে এবং না পারবেন সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বড় টুকরোটি হাতছাড়া হওয়ার হতাশা এড়াতে। তবে তিনি যদি চক্ষুলজ্জা এড়িয়ে বড়টুকরোটি নিয়ে নিতে পারেন তাহলে তা হবে অপরজনের জন্য ক্ষোভের কারণ। সেজন্য হয়তো ভেবে বসবেন, “ব্যাটা কেমন ছোটলোক!”
যাই হোক, এটি যে একটি গণিত বিষয়ক লেখা সেটি আমার মনে রাখা উচিৎ। গল্পে গল্পে অনেকদূর পেরিয়ে এসেছি। এবার একটু ভাগাভাগির গণিত নিয়ে কথাবার্তা শুরু করা যাক। তবে বুঝতে না পারলেও আমরা এরই মধ্যে ভাগাভাগির গণিতে ঢুকে গেছি। দুই ব্যক্তির মধ্যে ‘আমি ভাগ করি, তুমি বাছাই করো’ পদ্ধতিতে ভাগাভাগি করে আমরা এরই মধ্যে গাণিতিক পদ্ধতির সূচনা করেছি। তবে এই গণিত এতোটাই সহজবোধ্য আর দৃষ্টিগ্রাহ্য যে এটিকে আমরা গণিত হিসেবে অবধারণ করি না। তাছাড়া এধরনের ভাগের পদ্ধতি আজ হতে অন্ততঃ ২৮০০ বছর আগেও প্রচলিত ছিলো। দু’জনের মধ্যে এধরনের ভাগাভাগিতে পরষ্পরের প্রতি অসন্তোষ পুষে রাখার সুযোগ নেই। রহিম যদি ভাগ করে আর করিম যদি বেছে নেয় তাহলে উভয়কেই যে যা পেলো তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। করিমের বেছে নেওয়ায় রহিমের অসন্তুষ্ট হওয়ার সুযোগ নেই। কারণ ভাগ সে নিজেই করেছে। অভিশাপ দিতে হলে নিজেকেই দিতে হবে।
তবে এই দুজনের মধ্যে যদি তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে সলিম ঢুকে যায় তাহলে পুরো বিষয়টি জটিল হয়ে পড়ে এবং আমাদেরকে গণিতের দিকে আরো ঝুঁকে পড়তে হয়। অর্থাৎ দু’জনের মধ্যে “আমি ভাগ করি, তুমি বাছাই করো” পদ্ধতি প্রয়োগ করা যতোটা সহজ, তিনজনের ক্ষেত্রে ততোটা সহজ নয়। রবার্টসন এবং ওয়েব নামের দু’জন গণিতবিদ সর্বপ্রথম তিনপ্রার্থী বিশিষ্ট এই সমস্যাটির সমাধানের জন্য একটি এলগরিদম প্রস্তাব করেন, তবে সেটি শেষপর্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ বলে প্রমাণিত হয়েছে। তাঁদের সমাধানটি এরকম: ধরা যাক, রহিম, করিম ও সলিমের মধ্যে একটি কেক এমনভাবে ভাগ করে দিতে হবে যেন তিনজনের মনেই এই ধারণা তৈরি হয় যে তারা অন্ততঃ কেক এর ১/৩ করে ভাগে পেয়েছে। আরো ধরা যাক, কেকটিকে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে ভাগ করা যায়, অর্থাৎ পরমাণুর ধারণা এই ক্ষেত্রে ধর্তব্য নয়। তাহলে এলগরিদমের ধাপগুলো হবে এরকম:
ধাপ ১: রহিম কেকটিকে a এবং d এই দু’টি ভাগে ভাগ করবে যাতে a অংশে কেক এর ১/৩ এবং d অংশে কেকের ২/৩ আছে বলে সে নিজে আস্বস্ত হয়।
ধাপ ২: করিম d টুকরোটিকে এমন b ও c অংশে ভাগ করবে যেন প্রতিটি ভাগ সমান হয়েছে বলে সে নিজে আস্বস্ত হয়।
ধাপ ৩: সলিম a, b, c হতে যেকোনো একটি অংশ বেছে নেবে। রহিম বাকী দু’টি থেকে যেকোনো একটি অংশ বেছে নেবে এবং অবশিষ্ট ভাগটি পাবে করিম।
এটি স্পষ্ট যে, সলিম তার ভাগটি নিয়ে সন্তুষ্ট থাকবে কেননা সে প্রথমে নিজের খুশীমতো টুকরোটি বেছে নিয়েছে। রহিমও সন্তুষ্ট হবে যদিও সন্তুষ্টির কারণটা একটু জটিল। সলিম যদি a অংশটি বেছে নেয় তাহলে রহিমের কোনো সমস্যা নেই কেননা সে নিজেই a ভাগটি করেছে এবং নিশ্চিত করেছে সেটি ১/৩ ভাগের বেশি নয় এবং তাই সহজেই সে বাকী দু’টি অংশ থেকে পছন্দনীয়টি বেছে নিতে পারে। অপরদিকে সলিম যদি a না নিয়ে b অথবা c বেছে নেয় তাহলে রহিমের a বেছে নিতে আপত্তি থাকার কথা নয় কেননা সে নিজের কাছে আস্বস্ত যে এটিতে কেকের ১/৩ অংশই আছে। কিন্তু মুশকিল হবে করিমকে নিয়ে। সে যদি রহিমের প্রাথমিক ভাগাভাগিতে সন্তুষ্ট না হয় তাহলে ভাবতে পারে a অংশটি ১/৩ এর চেয়ে বড় এবং d অংশটি ২/৩ এর চেয়ে ছোট। সেই ক্ষেত্রে সে সন্তুষ্ট হতো যদি a অংশটি নিতে পারত। কিন্তু তার সুযোগ যেহেতু সবার শেষে আসছে তাই বাকী দু’জনের একজন তার আগেই a অংশটি নিয়ে নেবে।
এই ধরনের ‘বিব্রতকর’ ও ‘অমানবিক’ সমস্যার প্রথম ‘ন্যয়সঙ্গত’ সমাধানটি করেন একজন পোলিশ গণিতবিদ হিউগো স্টেইনহস। ১৯৪৪ সালে তিনি তাঁর পদ্ধতিটি প্রকাশ করেন যাতে ‘ছাঁটাইকরণ’ নামক একটি কৌশল অবলম্বন করা হয়। এই এলগরিদমের ধাপগুলো নিন্মরূপ:
ধাপ ১: রহিম কেকটিকে a এবং d এই দু’টি ভাগে ভাগ করবে যাতে a অংশে কেক এর ১/৩ এবং d অংশে কেকের ২/৩ আছে বলে সে নিজে আস্বস্ত হয়।
ধাপ ২: সে a অংশটিকে করিমের কাছে প্রেরণ করবে। যদি করিমের কাছে এই ভাগটিকে ১/৩ এর চেয়ে বড় মনে হয় তাহলে সে কিছু অংশ ছাঁটাই করে নিজের কাছে এটিকে ১/৩ অংশ হিসেবে আস্বস্তবোধ করবে। (আর যদি সে আগে থেকেই আস্বস্ত হয়ে থাকে যে রহিম এটিকে পুরোপুরি ১/৩ অংশে ভাগ করতে পেরেছে তাহলে ছাঁটাই না-ও করতে পারে।) ধরি ছাঁটাইয়ের পর পরিবর্তিত ভাগটি হলো a’। অন্য দুজনের কাছে অবশ্য এটি ১/৩ এর সমান বা ছোটও মনে হতে পারে।
ধাপ ৩: করিম a’ ভাগটিকে সলিমের কাছে পাঠাবে, যে কিনা এই ভাগটি নিজে গ্রহণও করতে পারে কিংবা ছোট মনে করে বর্জনও করতে পারে। যদি সলিম এই ভাগটি গ্রহণ করে তাহলে অবশিষ্ট কেকটি ছাঁটাইকৃত অংশটুকুসহ রহিম ও করিম ‘আমি ভাগ করি, তুমি বাছাই করো’ পদ্ধতিতে ভাগ করে নেবে এবং ফলশ্রুতিতে তিনজনই নিজেদের ভাগ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকবে। আর সলিম যদি a’ ভাগটি গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায় তাহলে করিমকেই এটি গ্রহণ করতে হবে কেননা সে নিজেই এটিকে ছাঁটাই করে বা না করে নিজের কাছে ১/৩ হিসেবে আস্বস্ত অবস্থায় আছে। অবশিষ্ট কেক ছাঁটাইকৃত অংশটিসহ একই পদ্ধতিতে রহিম ও সলিম ‘আমি ভাগ করি, তুমি বাছাই করো’ পদ্ধতিতে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেবে এবং তিনজনই নিজেদের ভাগ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকবে।
এই পদ্ধতিতে তিনের অধিক প্রার্থীর ক্ষেত্রেও কাজে লাগানো যায় তবে সেই ক্ষেত্রে তা খুবই জটিলাকার ধারণ করবে। বরং তিনের অধিক প্রার্থীর জন্য এর চেয়ে সহজ একটি পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা যাক। প্রকৃতপক্ষে এটি যেকোনো সংখ্যক প্রার্থীর জন্যই কাজে লাগানো যায়। ধরি, রহিম একটি কেক যোগাড় করেছে। এটি যখন সে গ্রাস করতে উদ্যত হলো তখনই করিম এসে হাজির হল এবং কেকের সমান-সমান অংশ দাবি করে বসল। রহিম তখন ‘আমি ভাগ করি, তুমি বাছাই করো’ পদ্ধতিতে দু’জনের মধ্যে সন্তোষজনক ভাবে কেকটি ভাগ করে ফেলল। তারপর দু’জনে যখন নিজের ভাগের কেকটুকু গ্রাস করতে উদ্দ্যত হলো তখন কোথা হতে যেন সলিম এসে হাজির হলো এবং কেকের সমান সমান অংশ দাবী করে বসল। তখন বাকী দুজন তাদের ভাগটিকে সমান তিন ভাগে ভাগ করার চেষ্টা করবে, অন্ততঃ নিজেদের কাছে সমান তিন ভাগে ভাগ করেছে বলে আস্বস্ত থাকবে এবং সলিম উভয়ের কেকের ভাগ থেকে একটি করে টুকরো নিয়ে নেবে। সবারই দু’টুকরো করে কেক হয়ে গেলো। এটিও আদতে ‘আমি ভাগ করি, তুমি বাছাই করো’ এর অনুরূপ। এমতাবস্থায় এই তিনজন জন যখন তাদের কেকটি খেতে উদ্যোগী হবে তখন চতুর্থ ব্যক্তি হিসেবে কলিমের প্রবেশ ঘটবে এবং একই ভাবে সমান-সমান ভাগ চেয়ে বসবে। অপর তিনজন তখন তাদের কেকের টুকরোগুলোকে নিজেদের কাছে আলাদাভাবে স্তুপীকৃত করে সমান চার ভাগ করে ভাগ করবে এবং কলিম তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে একটি করে ভাগ নিয়ে নেবে। এভাবে সবার কাছেই তিনটি করে ভাগ থাকবে এবং কেউ কারো প্রতি অভিযোগ করতে পারবে না। এই চারজন যখন তাদের কেকের ভাগ থেকে খেতে উদ্যত হবে এই সময় n তম ব্যক্তির প্রবেশ ঘটবে এবং……………………………………..।
বুঝতেই পারছেন, বাস্তবে এই পদ্ধতিতে প্রার্থীর পরিমাণ একটু বেশি হয়ে গেলে সবাইকে কেকের গুড়ো খেতে হবে। তা হোক না, কেকের গুড়ো তো সব এক পেটেই যাচ্ছে! সবাইতো সমান ভাগই পাচ্ছে বা অন্ততঃ সমান ভাগ পেয়েছে বলে আস্বস্ত আছে। যারা এই ধরনের ভাগাভাগি পড়ে হাসাহাসি করছেন তাদের জন্য বলে রাখি এটি মোটেও ছেলেখেলা নয়। জগতের অনেক সিরিয়াস এবং ‘গম্ভীর’ প্রকৃতির ভাগাভাগি ছাঁটাইকরণ পদ্ধতির মাধ্যমেই হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্যটি বোধকরি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে জার্মানীর বিভিন্ন অংশের কর্তৃত্ব নিয়ে মিত্র বাহিনীর মধ্যে ভাগাভাগি! আর যা-ই হোক এটি নিশ্চয়ই বছরের পর বছর বিবাদে জড়িয়ে থাকার চেয়ে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য এবং যুক্তিসঙ্গত পদ্ধতি।
দারুণ লেগেছে লিখাটি। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে লিখার জন্য। আর সুখ পাঠ্যও বটে …!!
ছোটকাল থেকে গনিতে আমি একটু বেশীই কাঁচা, এই জন্য মাইরও খাইছি :-Y পোস্টটা দিয়ে এ কথা মনে না করিয়ে দিলে কি চলতো না? :guli:
@নিলয় নীল,
আমারতো মনে হয় ভাগাভাগির নিয়ম শিখিয়ে আরো মাইরের হাত থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছি! 🙂
হুম,ঠিকই বলেছেন।তবে এই পার্টিকুলার বড় মাছ,ছোট মাছের সমস্যাটি খুবই কমন এবং বাস্তব।তদুপুরি অধিকাংশ সময়ই এটা নিকট জনের মধ্যে ঘটে থাকে,যেহেতু নিকট জনের ক্ষেত্রে ঘটে তাই খোলাখুলি কথাবলে সমাধান করাটা একেবারে খারাপ না।তবে নিতান্ত নিকটজন ছাড়া অন্যদের ক্ষেত্রে সৌজন্য দেখিয়ে ছোটটাই নেওয়া উচিত।
আর ইন্টারেস্টিং বিষয় নিয়ে দারুণ এই লেখাটার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
‘আমি ভাগ করি তুমি বাছাই করো’ পদ্ধতিটি দারুণ,অভিযোগ শোনা লাগে না।কিশোর বয়েসে খেলা করতে গিয়ে অনেকবার এই পদ্ধতি প্রয়োগ করেছি।
এটা অতি বাস্তব সত্য।সমাধান খোলাখুলি সব বলে নিয়ে, বড়টার কিছুটা কেটে নেওয়া।
@প্রাক্তন আঁধার,
হ্যাঁ, দুইজনের ক্ষেত্রে ‘আমি ভাগ করি তুমি বাছাই করো’ পদ্ধতিটি গণিতের চেয়ে বেশী কমনসেন্সের ব্যাপার। তবে তিন বা ততোধিক ক্ষেত্রে চিন্তা করতে গেলে বিষয়টি জটিল হয়ে পড়ে। এমনকি আমরা দেখতে পেয়েছি একজন গণিতবিদ সমাধান করতে গিয়ে ভুল করে ফেলেছেন।
আমার কাছে সবচেয়ে সহজ সমাধান হচ্ছে দৃষ্টিভঙ্গীর সংকীর্ণতা পরিহার করে যেকোনটি মেনে নেওয়া! 🙂