বাংলাদেশের পাঠক পাঠিকারা , মূলত নাস্তিকরা -এই প্রশ্ন আমাকে প্রায় করেন। বাংলাদেশে নাস্তিকতার ভবিষ্যত কি?
বাংলাদেশ বা এই বাংলা ঐতিহাসিক ভাবেই উদার সমাজের উত্তরাসূরী। সহজিয়া এই মাটির সূর। রবীন্দ্রনাথ, লালন সাঁই, নজরুল এই গৌরবাজ্জ্বল উত্তরাধিকারের শ্রেষ্ঠ সন্তান।
কিন্ত গত দুই বছরে বাংলাদেশের নাস্তিকরা যেভাবে তাদের দেশে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন-রাষ্ট্রযন্ত্রের কায়েমী স্বার্থ আসিফ মহিউদ্দিনের মতন ব্লগারদের জেলে ঢুকিয়েছে-খুব স্বাভাবিক ভাবেই তাদের মনে অনেক ভয়। সংশয়। যুক্তি বুদ্ধিতে অবিচল থেকে পথ চলা যেন বর্ষার অমবশ্যার রাতে কাদায় পা রাখা। কখনো না জানা খাদ, কখনো উঁচিয়ে আছে সাপ। কল্লাকাটা মৌলবাদি সাপের ছোবল নিয়ে যায় রাজীব হায়দারের মতন তরুন যুক্তিবাদিদের জীবন। অহল্যার অভিশপ্ত জীবন-সাপমোচনে অপেক্ষায় দিন গুজরান। অনেকেই হতাশ। আশা হারাচ্ছেন।
আমি বাংলাদেশীও নই-সমাজবিজ্ঞানীও নই। তাই বাংলাদেশে নাস্তিকতার ভবিষ্যত নিয়ে লেখা অনেকটা অনধিকার চর্চা। কিন্ত আমার চোখ কান খোলা. ইতিহাস ঘাঁটা। প্রযুক্তিবিদ হওয়ার কারনে ভবিষ্যত দেখার সুযোগটা আরেকটু বেশী। সেই অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করেই লিখছি। যেটা মনে হচ্ছে ঠিক-সেটাই লিখছি।
(১) সমাজ উদার হবে না কট্টর পন্থী-এর ভিত্তি উৎপাদন কাঠামো। এবং ইতিহাস। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক বিবর্তন না বুঝলে, ভবিষ্যতবাণী সম্ভব না।
বাংলাদেশের ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলে-যার আবার অধিকাংশ জল- ষোল কোটি লোকের সংস্থান অসম্ভব। বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত সেই দিকেই যাবে যেদিকে জমি প্রতি উৎপাদন বেশী।
বাংলাদেশে গার্মেন্ট শিল্পের উদ্ভব এবং কৃষি থেকে আস্তে আস্তে মেশিন নির্ভর কুটির শিল্পের বিকাশ– কৃষি শ্রমিক থেকে শিল্প শ্রমিকের বিবর্তনের গল্প। যা অন্যান্য দেশেও হয়েছে অতীতে। একটা দেশ যখন কৃষি থেকে আস্তে আস্তে শিল্পের দিকে এগোতে থাকে- প্রকৃতির নিয়মেই সেই সমাজে আস্তে আস্তে ধর্মের গিঁট ঢিলা হতে থাকে।
ক) শিল্প শ্রমিক মূলত নিউক্লিয়ার ফ্যামিলির জন্ম দেয়-যারা অনেকটাই স্বাধীন স্বতন্ত্র জীবন ( অন্তত গ্রামের থেকে) কাটাতে সক্ষম
খ) মহিলা শ্রমিকের উদ্ভব-আরেকটি গুরুত্বপূর্ন সামাজিক বিপ্লব-যা মৌলবাদকে অনেকটাই রুখতে সাহায্য করবে। শরিয়ার বিরুদ্ধে সব থেকে সরব সমর্থন আসবে মহিলা শ্রমিকদের কাছ থেকেই। ইসলামের থেকে পেট, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ন এদের কাছে।
গ) শিল্প শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়ানোর প্রয়োজনেই-সমাজে “স্কিল” এর গুরুত্ব বাড়বে। “স্কিল” অর্জন করা সমাজের ফোকাস হলে-সেই সমাজ ইহকালের “স্কিল” এবং তার থেকে কি করে উপায় বাড়ানো যায়-সেই চিন্তাতে চলবে। নতুন বাংলাদেশ জাভা, পি এচ পি শিখতে যতটা আগ্রহী হবে-ধর্মের ব্যাপারে অতটা আগ্রহ থাকতে পারে না। ব্যাতিক্রম থাকতেই পারে।
তবে আজ বাংলাদেশে গার্মেন্ট শিল্পের যে রমরমা, সেটা-আর খুব বেশী হলে চলবে আগামী কুড়ি বছর। অটোমেশনের ফলে আমেরিকাতে পোষাক তৈরী করা আস্তে আস্তে বাংলাদেশ থেকে আমদানীর চেয়ে লাভজনক হবে। বর্তমানে থ্রি ডি অটোমেশনের দৌলতে একজন লোকের থ্রিডি মডেল জানা থাকলে, তার মাপের একদম ফিট পোষাক, মেশিন থেকে অটোমেটিক বার করা কোন সমস্যাই হবে না। ফলে বাংলাদেশের দরকার হবে নতুন জীবিকার। নতুন শিল্পের।
এই দুই দশকের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যান্য আধুনিক জীবিকার দিকে ঝুঁকবে। যেমন সফটওয়ার প্রোগ্রামিং, বিপিও, কেপিও, বায়োটেক ইত্যাদি।
বাংলাদেশে বৃহৎ পুঁজি নেই। বিদেশীরাও বিনিয়োগে ভয় পায়। এর ভাল দিকটাই বেশী। এর কারনে বাংলাদেশে এই নব্য আই টি ফিল্ডে অসংখ্য ছোট ছোট উদ্যোগী। এই মার্কেটে টিকে থাকতে গেলে, একদম লেটেস্ট “স্কিল” দরকার। ভারতের ইনফোসিস, টিসিএসের একটা বড় অংশই ২০ বছরের পুরাতন আই বি এম মেইন ফ্রেইম -ইত্যাদি মেইন্টেনেন্সের কাজ করে। বাংলাদেশের এই সব ছোট কোম্পানীগুলিকে টেকার একটাই পথ। লেটেস্ট এন্ড গ্রেটেস্ট স্কিল। মূলত ওপেন সোর্স প্রোগ্রামিং স্কিল ছোট কোম্পানীর ব্যবসার জন্য ঠিকঠাক। এই জন্য বাংলাদেশের আই টি মার্কেটে বুদ্ধিমান, দক্ষ প্রগ্রামারদের দড় বাড়বে। পৃথিবীর সর্বত্রই এই শ্রেনীর বুদ্ধিমান প্রোগ্রামাররা লিব্যারাল সমাজের অংশ। যাদের মাথায় বুদ্ধি আছে, মহম্মদের কাল্পনিক চরিত্রদিয়ে তাদের বুদ্ধু বানানো মুশকিল। অর্থনীতির নিয়মে বাংলাদেশে এদের সংখ্যা আস্তে আস্তে বাড়বে। টাকার জোরে বাড়বে এদের সামাজিক প্রতিপত্তি, ইনফ্লুয়েন্স।
সব থেকে বড় কথা-এই উন্নত অর্থনীতির শরিক হতে গেলে আগের মত-জাস্ট ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি আছে যথেষ্ঠ না। মাথায় বুদ্ধি এবং উদ্ভাবনী ক্ষমতাও থাকতে হবে। গয়ংগচ্ছ জ্ঞানে চলবে না। আমি জানি অনেকেই বলবেন ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যে মৌলবাদি বেশী। সেটা আস্তে আস্তে কাটবে,বিশেষত ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যে। কারন চোখ কান খোলা রাখলে দেখা যায় এই সব গয়ংগচ্ছ ইঞ্জিনিয়ারদের, মধ্যমমেধার উচ্চডিগ্রীধারীদের মধ্যেই মৌলবাদের প্রভাব বেশী। সেটা কমবে-কারন ডিগ্রির মূল্য হবে অর্থহীন। অটোমেশনের যুগে যেখানে প্রোগ্রাম ও লিখে দেবে মেশিন-সেখানে মানুষ তার বুদ্ধির সেরাটা না দিলে, চাকরিই পাবে না।
এই বৌদ্ধিক বিকাশ হবে মার্কেটের দাবী। এবং কে না জানে-এই যুগে মার্কেটের শক্তিই সর্বশক্তিমান। মানুষের মনে বুদ্ধির বিকাশ হলে, সে আধ্যাত্মিক থাকতেই পারে। কিন্ত কৃষ্ণ মহম্মদের গাঁজাখুরী গল্পে বিশ্বাস করবে না।
(২) দ্বিতীয় আশার কারন রাজনীতি। বাংলাদেশ ভারত বেষ্ঠিত। ভারতের স্বার্থের বিরোধি কিছু হওয়া বাংলাদেশে মুশকিল। এর ভাল খারাপ দিক দুটোই আছে।
ভালটাই লিখি। সেটা হচ্ছে ভারতের কারনে মৌলবাদিদের প্রতি আমেরিকার ফোকরদালালি বাংলাদেশে চলবে না। সেটা সাম্প্রতিক ইতিহাসে সুস্পষ্ট। বি এন পি কোন সাহসে ভোট বয়কট করেছিল ? তার ধারনা ছিল, আমেরিকাতে লবিস্টদের টাকা ঢেলে, তারা হাসিনার বৈধতা নষ্ট করবে। আমেরিকা অদ্ভুত জাত। অদ্ভুত এই ডিসির রাজনীতি। এখানে টাকা দিয়ে সেনেটর কেনা বৈধ ব্যবসা। পোষাকি নাম লবিং। বি এন পির লবিস্টরা আমেরিকা, ইংল্যান্ডকে দিয়ে এই নির্বাচনের বিরুদ্ধে নেতিবাচক স্টেটমেন্ট বাড় করেছিল। কিন্ত ভারতের বিরোধিতায় সফল হয় নি সেই চক্রান্ত। বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে কখনো যাবে না আমেরিকা বা ইউরোপ। কারন ভারতের বিশাল মার্কেটের টান। ফলে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের মৌলবাদিরা চেকমেট। তাদের পক্ষে পাকিস্তান। মধ্যপ্রাচ্যও যাবে না ভারতের বিরুদ্ধে যেহেতু ভারত তাদের তেলের বৃহত্তম ক্রেতা। সব কাটাকুটি-সাপ লুডো শেষ। পড়ে রইল পাকিস্তান!
সাধে ম্যাডাম জিয়া দিল্লীতে গিয়ে নাকখঁত দিয়ে বিজেপি নেতাদের দূর্গাপূজোতে বাংলাদেশে আমন্ত্রন দিয়েছেন? উনিও বুঝছেন দিল্লীর কৃপা না হলে, তারপক্ষে মসনদ ফিরে পাওয়া মুশকিল!
(৩) তৃতীয় আশার কারন ডেমোগ্রাফি এবং শিক্ষা । বাংলাদেশের ফার্টালিটি রেট এখন দুই দশমিক পাচ। অর্থাৎ মা প্রতি আড়াই জন সন্তান । পঁচাত্তর সালে এটা ছিল ৬ এর কাছাকাছি। মাত্র তিন দশকে ! শিশুশিক্ষা এবং শিশুমৃত্যর হার কমাতে বাংলাদেশ ভারতের চেয়েও বেশী সফল। ফ্যামিলি সাইজ দুই এর কাছে হলে, বাবা মা ছেলে মেয়ের শিক্ষার প্রতি যত্নবান হবেই, তারা চাইবেন ছেলে মেয়েদের জন্য ভাল জীবিকা।
ছেলে মেয়ে থাকুক দুধে ভাতে-এই চাওয়াটা উদার সমাজের ভিত্তিভূমি। কারন এখান থেকেই বস্তুবাদি, যুক্তিবাদি মননের শুরু। ছেলেমেয়ে আছে ১০ জন-খাওয়ানোর ক্ষমতা নেই। পড়ানো দূরের কথা। সুতরাং আল্লা জানে, আল্লা খাওয়াইবে-এই ধরনের চিন্তা থেকেই ভাববাদ-সেখান থেকে মৌলবাদ আরো বেশী গভীরে ঢোকে।
ছেলে মেয়েকে দুধে ভাতে রাখতে সমাজ চাইবে উন্নততর শিক্ষা, উন্নত অর্থনীতি। তারা ভালোই জানে মৌলবাদি সমাজে এসব পাওয়ার না।
(৪) চতুর্থ কারন পরিবেশ বিপর্যয়। বাংলাদেশে ভূর্গভস্থ জলের অবস্থা খারাপ। আর্সেনিকে ভর্তি। বরিশালের জলে নুন। আস্তে আস্তে বাংলাদেশের অনেক জমিই বসবাসের অযোগ্য হবে। এই টুকু মাত্র দেশ। এত লোক। যাবে কোথায়? খাবে কি?
পরিত্রানের উপায় কি? উপায় একটাই। আরো বেশী বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি নির্ভর সমাজ। যে সমাজ শিখবে জল বাঁচাতে, বৃষ্টির জল বাঁচাতে-আর্সেনিক মুক্ত করতে ফিল্টারিং করতে। বিজ্ঞান কখনোই বই পড়ে জীবনে আসে না। তা আসে জীবনের সাথে যুক্ত হলে। শ্রেফ বেঁচে থাকার জন্য বাংলাদেশের মানুষ বাধ্য হবে আস্তে আস্তে বিজ্ঞানভিত্তিক জীবনে ঢুকতে।
(৫) পঞ্চম কারন- যৌন জীবনের নয়া বিন্যাস। এই ফেসবুকে যুগে, মোবাইলের যুগে ছেলে মেয়েদের মেলামেশা বোরখা দিয়ে আটকানো যায়? বোরখা দিয়ে বুকের খাঁজ কাটকানো যায়-কিন্ত ফেসবুক আর মোবাইলে বুকের হৃদপিন্ডের আদান প্রদানের সুযোগ ত কেও আটকাতে পারবে না!! কোন মেয়ে চাইবে মৌলবাদি বর ? পার্টনার সিলেকশনের প্রশ্নে কেও হয়ত নাস্তিক ছেলে বা মেয়ে নাও পছন্দ করতে পারে-কিন্ত মৌলবাদি দের ও কেও পছন্দ করবে না প্রেমের এই ওপেন মার্কেটে। প্রকৃতির নিয়মে এখানে উদার মনের ছেলে মেয়েরাই জিতবে। এখন হয়ত একজন মৌলবাদির বিয়েতে অসুবিধা হয় না। বোরখা পড়া বিবি জুটেই যায়। আর কবছর বাদে জুটবে না। সেটা হবে মৌলবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে সব থেকে বড় প্রতিরোধ।
সমাজ, তার চাহিদা বদলায় দ্রুত। বিবর্তন হয় সেই দিকে-যেদিকের উৎপাদন শক্তি বেশী। সবাই ভাল থাকতে চায়। এই চাওয়াটাই বস্তবাদি উদার সমাজের ভিত্তি। বাংলাদেশ সেই দিকেই এগোচ্ছে। আস্তে না-দ্রুত। মৌলবাদ ধ্বংসের ক্ষেত্রে হয়ত ভারতকেও দ্রুত ছাড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ।
বিপ্লব
আওয়ামিলীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেখুন খেলা কোন দিকে যায় ,বাংলাদেশ ছারা প্রিথিবীর আর কোন মুস্লিম দেশে গনতন্ত্র নেই ,বাংলাদেশেই যে কতটুকু গনতন্ত্র আছে তা তো সবাই জানেন। অপেক্ষা করুন আর দেখুন পাকিস্থান ,আফগানিস্থান এর মত দেশ হবে এই বাংলাদেশ ।
এটা মানতে পারলাম না দাদা। শিবির নিয়ন্ত্রিত ট্রেনিং একাডেমীগুলো থেকে মগজ ধোলাই করা অনেক ফ্রীল্যান্সারের সাথে আমার পরিচয় হয়েছে। এদের মনোভাব অনেকটা এমন – “আমরা ইহূদী-নাসারাদের পকেট থেকে পয়সা এনে ধীরে ধীরে ইসলামী দেশ গড়ে তুলবো।” এদের দিয়ে ভাই আর যাই বলেন, উদারপন্থী সমাজ গড়ার আশা করতে পারেন না।
বিপ্লব, আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে, উদার সমাজের জন্যে গনতন্ত্র, মুক্তচিন্তা’র অধিকার এসবার দরকার নেই। সংঘ পরিবারকে নিরংকুশ ক্ষমতাদেয়া উদার ভারতের শাগরেদগিরি করে চললেই বাংলাদেশে উদার সমাজ কায়েম হয়ে যাবে। পুরো লেখায় একবার গনতন্ত্রের উল্লেখ নেই, আছে স্বোৈরতন্ত্রের প্রতি প্রচ্ছন্ন সমর্থন। স্বোৈরতন্ত্রের পথ ধরে পুতিনের রাশিয়ার মতো বাংলাদেশেও আসবে উদার, প্রগতিশীল সমাজ।
শিক্ষার প্রতিবন্ধকতা হিসেবে বারবার ধর্মের কথাই তুলেছেন। আপনার বোধহয় জানা নেই যে, সেকুলার উদার আওয়ামী সরকার বিলবোর্ড-প্রোপাগান্ডা সর্বস্ব সাফল্যের পিছনে ছুটে বাংলাদেশের স্কুল, কলেজ পর্যায়ের শিক্ষা ব্যবস্থার কেমন বারোটা বাজিয়েছে। আওয়ামী স্বোৈরতন্ত্রের একনম্বর বুদ্ধিবৃত্তিক মদতদাতা মুহম্মদ জাফর ইকবালই শেষ পর্যন্ত লিখতে বাধ্য হচ্ছেন, ”
যাদের দায়িত্বে এই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, তারা কি জানেন এই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার এখন কী ভয়ংকর অবস্থা? ঢাকা বোর্ড ৮৫ শতাংশ, যশোর বোর্ড ৬০ শতাংশ। যশোরের বাতাস কি বিষাক্ত? কেন এত কম ছেলেমেয়ে পাশ করল? আমি কি বাজি ধরে বলতে পারি না সামনের বছর এক লাফে যশোর বোর্ড এগিয়ে যাবে– যেভাবে সিলেট বোর্ড এগিয়ে গিয়েছিল? ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে কার জন্যে এই প্রহসন? দেশ ধ্বংস করার কার এই মহাপরিকল্পনা?”
কোনোরকম রাজনঐতিক চেক এন্ড ব্যালেন্স ছাড়া বাংলাদেশে উদার সমাজ গঠনের পথে এগোনোর জন্যে আপনার প্রেসক্রিপশন কতটা কাজ করে দেখা যাক।
@সফিক,
আমার লেখাতে স্বৈরতন্ত্র, গনতন্ত্র কোথাও আসে নি। আর উদার লিব্যারাল সমাজ গনতন্ত্র ছারা সম্ভব? লিব্যারাল সমাজ মানে কি শুধু ধর্মে লিব্যারাল? রাজনৈতিক দৃষ্টিতেও তা লিব্যারাল হতে হবে।
গণতন্ত্র ব্যাপারটা লিব্যারালিজমে ইম্পলিসিট। গনতন্ত্র ছারা আবার লিব্যারালিজম বা উদার সমাজ হয় না কি? স্বৈরতন্ত্রের প্রশ্নই ওঠে না। আপনি আওয়ামি লীগকে স্বৈরাচারী শাসন হিসাবে দেখছেন, সেটা আপনার নিজের সমস্যা। আওয়ামী লিগত বিম্পিকে ভোট বয়কট করতে বলে নি।
ভুলভাল শিক্ষা ব্যবস্থা পশ্চিম বঙ্গেও চালু আছে বহুদিন। কিন্ত লোকজন কে যখন রোজগার করে খেতে হবে, শিক্ষা ছারা তার গতি কি?
@বিপ্লব পাল,আপনার বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কে তেমন ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ নেই। আপনি আওয়ামী লাইন ‘ভোট বয়কট’ নিয়েই আছেন! আপনার জানা নেই যে ৫ই জানুয়ারী নির্বাচন বয়কটের কয়েকমাস পরে বিএনপি কয়েক পর্যায়ে অনুষ্ঠিত লোকাল গভর্নমেন্ট ইলেকশন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলো। নির্বাচনের প্রথম পর্ব দুটিতে বিএনপি’র বিপুল বিজয় দেখে আওয়ামী সরকার তৃতীয় পর্ব থেকেই ব্যপকভাবে ভোট জালিয়াতি, কেন্দ্র দখল আর প্রতিপক্ষ দমনে নেমে ভোটের চিত্র পুরো পাল্টে দেয়। গুরুত্বহীন উপজেলা নির্বাচনেই যখন আওয়ামী লীগ এতটা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তখন জীবনমরণ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে কি হতো এটা সহজেই অনুমেয়।
বাংলাদেশের সবাই জানে আওয়ামী লীগ কোনভাবেই ক্ষমতা ছাড়বে না। ঘোর আওয়ামী সমর্থকরাও এখন পত্র-পত্রিকা সবখানের স্পষ্ট করে নিয়মিত বলছে যে বাংলাদেশের আপাতত উন্নয়ন দরকার, গনতন্ত্রের দরকার নেই। তারা স্পষ্ট করেই বলছে যে বাংলাদেশের জনগন এখনো নিজেদের নেতৃত্ব নির্ধারনের যোগ্যতা সম্পন্ন হয় নি, এখন একদলীয় শাসনই দরকার। এই সবকিছু না জেনে আপনি এখনো গনতান্ত্রিক, লিবারেল, উদার সমাজের ছবক দিয়ে যাচ্ছেন!
যদি আপনার ঝোলায় গনতন্ত্রবিহীন উদার সমাজের কোনো ফর্মূলা থেকে থাকে তবে সেটিই বের করে দেখান। গনতন্ত্র এখন বাংলাদেশের চেতনাবাদীদের কাছে ভয়াবহ এলার্জি উদ্রেককারী মতবাদ।
@সফিক,
পনি আওয়ামী লাইন ‘ভোট বয়কট’ নিয়েই আছেন! আপনার জানা নেই যে ৫ই জানুয়ারী নির্বাচন বয়কটের কয়েকমাস পরে বিএনপি কয়েক পর্যায়ে অনুষ্ঠিত লোকাল গভর্নমেন্ট ইলেকশন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলো। নির্বাচনের প্রথম পর্ব দুটিতে বিএনপি’র বিপুল বিজয় দেখে আওয়ামী সরকার তৃতীয় পর্ব থেকেই ব্যপকভাবে ভোট জালিয়াতি, কেন্দ্র দখল আর প্রতিপক্ষ দমনে নেমে ভোটের চিত্র পুরো পাল্টে দেয়। গুরুত্বহীন উপজেলা নির্বাচনেই যখন আওয়ামী লীগ এতটা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তখন জীবনমরণ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে কি হতো এটা সহজেই অনুমেয়।
>>>>
বিম্পি যে উপনির্বাচনে জিতছিল-সে খবর অবশ্যই ছিল আমার কাছে। কিন্ত একদলীয় নির্বাচনেই বা একটা পার্টি ৬০ টা সিটে হারে কি করে? সুতরাং অনুমানের ওপর ভিত্তি করে কোন মন্তব্য করলে সেটা ঠিক না।
গণতন্ত্রের বিকল্প নেই। স্বৈরাচারী সরকার উদার হতে পারে না। ইন্ডিড, স্বৈরাচার আরো বেশী মৌলবাদ ডেকে আনে যেহেতু জনগনের প্রতিবাদের আর কোন উপায় থাকে না। এটা আমরা মিশর, তুরস্কের সেকুলার স্বৈরাচারী সরকারের ইতিহাসেও দেখেছি।
বাংলাদেশে সেই টার্ন আছে-দেখছি। কিন্ত এটা মানতে নারাজ যে আওয়ামী লীগের আমলে বাংলাদেশে কোন গণতন্ত্র নেই বা বাংলাদেশ একটি স্বৈরাচারী শাসনের দিকে যাচ্ছে।
বিপ্লবের লেখা সব সময়ই আকর্ষনীয় হয়।
শুরুর প্রশ্নটা, মানে বাংলাদেশে নাস্তিকতার ভবিষ্যত কি বুঝতে আমি অপরাগ। লোকে নাস্তিক হতে পারে কিন্তু নাস্তিকতা নামক কিছু আছে কি? থাকলে তো মনে করতে হবে নাস্তিকতাও আরেকটি ধর্ম বা দর্শন। প্রশ্নটা সম্ভবত হওয়া উচিত ছিল বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতার ভবিষ্যত কি?
বিপ্লবের এ জাতীয় বিশ্লেষনে আগেও দেখেছি যে উনি মৌলবাদের প্রতিরোধ হিসেবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, আধুনিক বিজ্ঞান শিক্ষাকে মোক্ষম প্রতিষেধক মনে করেন। আমার মনে হয় তত্ত্বীয়ভাবে কথাটা সত্য হলেও এটা একটু বেশীই জেনারেলাইজেশন। ৭২ সালের তূলনায় বাংলাদেশে বর্তমানে অর্থনৈতিক অবস্থা অনেক ভাল হয়েছে (পার ক্যাপিটা, দারিদ্রসীমা…), শিক্ষার হারেও উন্নয়ন হয়েছে ব্যাপক। কিন্তু মৌলবাদ উলটা বেড়েছে। নেপাল ভারতের তূলনায় দরিদ্র দেশ, শিক্ষার হারেও পিছিয়ে, সেখানে নিশ্চয়ই হিন্দু মৌলবাদ ভারতের তূলনায় অনেক কম। কাজেই ধর্মীয় মৌলবাদকেও জেনারেলাইজ করা যায় না। বিশেষ করে যদি ভারতে হিন্দুত্ববাদী মৌলবাদ এবং বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বের ইসলামী মৌলবাদের উত্থান এক করে ফেলেন তবে বড় ধরনের ফাঁক থাকবে।
ভারতে বিজেপি বা তাদের চ্যালাচামুন্ডারা হিন্দুত্ববাদ উষ্কে ভোট কামায়। কিন্তু তারা কি দেশের সেক্যুলার সংবিধান বদলে বেদ গীতা দিয়ে দেশ চালাবে এমন দাবী করে? কিংবা আমেরিকান ভারতীয়রা হোয়াইট হাউজে হিন্দুত্ববাদের পতাকা কবে ওড়াবে এই আশায় বুক বেধে আছে? অষ্ট্রেলিয়ার কোন হিন্দু ধর্মগুরু ক্ষমতা দাবী করে? বাংলাদেশ পাকিস্তানের কথা তো বাদই দিলাম, জরিপে দেখা গেছে এমনকি ব্রিটেনের ৪০ ভাগ মুসলমান সে দেশে শরিয়া আইন চায়। সেখানকার হিন্দু অধিবাসীদের ভেতর কি এমন কোন ট্রেন্ড আছে?
আরবের তেলের পয়সা ফুরালে ইসলামী মৌলবাদ কমে আসবে এটা মানি। মৌলবাদ উষ্কাতে ফান্ডিং লাগে, সেটা আসে মূলত সেখান থেকেই। কিন্তু যেই আগুন ইতোমধ্যে লেগেছে সেটা সহজে নিভবে না।
শুধু বাংলাদেশী ডাক্তার ইঞ্জিনিয়রদের মাঝেই না মৌলবাদী প্রবনতার এটা কমন ট্রেন্ড। এনিয়ে গবেষনাও আছে। কাজেই শুধু হাই টেকের যুগ চলে আসলেই মৌলবাদ চলে যেতে বাধ্য এতটা এ মুহুর্তেই আশা করা উচিত না। রাতারাতি নাস্তিক হয়ে যাবার তো প্রশ্নঈ আসে না, তার কোন প্রয়োযনও নেই।
শিক্ষার অগ্রগতির সাথে বরং যেটা দেখা যাচ্ছে সেটা হল সব দেশেই ধর্ম কেন্দ্র করে মুসলমানদের ভেতরেই বিভেদ দিনে দিনে প্রকট হচ্ছে। এক অংশ ধর্মভিত্তিক ব্যাবস্থার বিরুধে দাঁড়ালেও আরেক অংশ আরো তীব্রভাবে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছে, কারন তারা ধর্মকে সেক্যুলার শক্তির কাছে আক্রান্ত মনে করছে। রাজতন্ত্রের বাইরে থাকা মুসলমান প্রধান প্রতিটা দেশেই ধর্মভিত্তিক বনাম সেক্যুলার পোলারাইজেশন প্রকট হচ্ছে। ভারতে মৌলবাদ থাকলেও এই ধরনের সমস্যা নেই। রাজনীতি ধর্মের মত বায়বীয় ইস্যু দিয়ে প্রভাবিত হবার ফলে এসব দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বাড়ছেই। স্বাভাবিকভাবেই পড়াশুনা শেখা এলিট জনসমষ্টি সেক্যুলার গোষ্ঠীর বড় অংশ। তুরষ্ক, মিশর, বাংলাদেশ সবখানেই একই দশা। আলজিরিয়া আফগানিস্তানে তো দফায় দফায় গৃহযুদ্ধ হয়েছে। এটা মনে রাখতে হবে যে এসব দেশের সেক্যুলার ধারার লোকেরা নাস্তিক মুরতাদ নয়, তারাও বেশীরভাগই মুসলমান।
বাংলাদেশেও এই দুই ধারার বিভেদ সঙ্ঘাত দিনে দিনে আরোই বাড়বে যার পরিষ্কার আলামত দেখা গেছে গত বছর হেফাজত উত্থানের সময়। আশার কথা শুধু একটাই যে যারা হেফাজতি উত্থানে উল্লসিত হন কিংবা শরিয়া কায়েম করার প্রশ্নে জরিপে হ্যা ভোট দেন তারাও বেশীরভাগই আসলে গুনাহর ভয়ে বা ভাবের বশে এসব করেন। শফি মোল্লা আমিনী হুজুরের মত লোকে দেশ চালাবে তারাও আসলে চান না। মুশকিল হল তারা সেটা পরিষ্কার বলতে পারেন না, মডারেট বলতে যাদের বুঝি এনারা পুরাই বিভ্রান্ত। এরই আউটকাম হল ৭২ সালের সংবিধান ভুলে মদিনা সনদ থেকে দেশ চালানো। এই বিভ্রান্তি কাটানোই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বিপ্লবের তত্ত্বের হাইটেক লোকজন এই গ্রুপেও ভালই থাকবেন।
@আদিল মাহমুদ,
এবং কিছু আরবদেশ ছাড়া বাকী মুসলিম দেশ গুলোতে এই মডারেটরাই ক্ষমতায় আছে,এদের পেটে ক্ষুধাও কিছুটা কম, তাই এদের এই ইন্দ্রিয়জালিক বিভ্রান্তি সহজে কাটবার নয়।সময় লাগবে।
কিছু লোকে তো বলেথাকে কেবল আরব ফান্ডিং না, এর পেছনের কারণ মার্কিনিদের লোভ।তারাই নাকি,বোকা মুসলমানকে বেহেস্তের লোভ দেখিয়ে,জিহাদি বানাচ্ছে।
@প্রাক্তন আঁধারে,
মডারেটদের বিভ্রান্তি ভাংগানোই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, এর কোন সহজ রাস্তা নেই। আরব স্যালাইন বন্ধ হলেও মডারেটগংই এরপরেও বহুদূর নিয়ে যাবে। উগ্র বা মৌলবাদী বলতে আমরা যাদের বুঝি তারা সংখ্যার হিসেবে খুব বেশী নয়। তাদের মূলত টিকিয়ে রাখে এই মডারেটবৃন্দ।
মডারেটগন ধর্মীয়/রাজনৈতিক সব ব্যাপারেই সুবিধেবাদী। নিজেদের ছেলেপিলেকে আধুনিক বিদ্যালয়ে পড়াবে কিন্তু মাদ্রাসার বিরুদ্ধে কিছু বললেই তেড়ে আসবে। শরিয়া কায়েম হলেই দুনিয়ায় অপার শান্তি নেমে আসবে বিশ্বাস করবে কিন্তু ধরে ধরে শরিয়া আইনের নানান ধারা দেখালে ইহা আসল ইসলাম নহে বলে এড়াবে। আর রাজনীতির ক্ষেত্রে তো কথাই নেই।
তারেক সাহেব এখন লন্ডন বসে বুঝতে পেরেছেন ধর্মীয় আদর্শে রাজনৈতিক দল হতে পারে না। ওনার বাবাই নাকি বলে গেছেন। অথচ ওনার সেই বাবাই ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বৈধতা দিয়ে গেছেন। আসল কথা ওনারা এখন বুঝতে পেরেছেন যে ভারতের বিরুদ্ধাচরন করে ক্ষমতায় বসার কোন আশা নাই, এমনকি আমেরিকার আশীর্বাদও কাজ করে না। তাই এখন সুর পাল্টেছেন, দরকার পড়লে আবারো হেফাজত উষ্কাতে এনাদের বাধবে না।
ইসলামের নামে জংগীবাদে আমেরিকার ভূমিকা একেবারেই নেই এমন নয়। কিন্তু মূল কারনগুলির কাছে আমেরিকা ফ্যাক্টর তুচ্ছ। ইসলামী জংগীবাদের নানান ডাইমেশন আছে। ইরাকে আফগানিস্তানে আল কায়েদা আমেরিকান মারে তা মানা যায় আমেরিকার কর্মফল। তাই বলে হাজার বছর ধরে চলে আসা শিয়া সুন্নী দাংগা আমেরিকানরা বাধিয়েছে? ঢাকায় খুন হওয়া ইমাম ফারুকীর হত্যাকান্ডে তার পরিবার অভিযোগ করেছে বিশ্বাসজনিত বিভেদের কারনে ভিন্ন তরিকার মুসলমানরাই দায়ী, এমনকি আজ আরো কয়েক আলেমের নামে মামলা হয়েছে। হত্যা আসলেই কে করেছে এখনো বলা না গেলেও এটা তো নিশ্চিত যে ভিক্টীমের পরিবার এসব লোককে হত্যা করার মত পোটেনশিয়াল মনে করে। নিজেদের ভেতর এই উগ্রতা কি আমেরিকানরা শিখিয়ে গেছে? বাংলা ভাই, শায়খ রহমান, মুফতি হান্নান এদের আমেরিকা বানিয়েছে? ইসলামিক সন্ত্রাস ভিন্ন ডাইমেনশনের হলেও সব কিছুর মূলে আছে সেই ধর্মীয় উগ্রতা।
আমেরিকা নিয়ে লোকে এত বেশী অবসেসড যে সব গুলিয়ে ফেলে। ধর্মওয়ালা বা ডানপন্থী ধরনের লোকে চায় যেভাবেই হোক ধর্ম বা নিজ ধর্মগোষ্ঠীর ওপর যেন কোন ভাবেই দায় না পড়ে, আর বামধারার আঁতেলরা তো তৈরীই থাকে সব আমেরিকার ওপর ঢালতে। এই দ্বিতীয় দল আরো বিচিত্র, অদ্ভূত অদ্ভূত মনগড়া তথ্য ওনারা তৈরী করে ফেলতে পারে নিজেদের তত্ত্ব সমর্থনে। এসব নিয়ে একটা লেখা দেব।
আসলে আরব ফান্ডিংও মূল কারন না। আরব ফান্ডিং হল অনেকটা টাইম বোমায় ডেটোনেটরের মত। বিছানার তলায় বোমা নিয়ে ঘুমালে সব সময় হয়ত ফাটবে না, কিন্তু ফাটতে যে ডেটোণেটর দরকার তা আসতে পারে বিভিন্ন উপায়ে।
@আদিল মাহমুদ,
আসলে আপনাদের একটা ব্যপার বুঝতে ভুল হচ্ছে। ভারত বাংলাদেশে মধ্যবিত্তরা পরজীবি। বুদ্ধিজীবি বলতে কেও নেই। এসবের কারন একটাই । কলোনিয়াল উত্তরাধিকার বা হ্যাংওভার। নিজেরা ত কোনকালেই স্বাধীন ছিলাম না। তাই দ্বায়িত্ববোধটাই নেই। এসবই আস্তে আস্তে আসবে। যেদিন অর্থনীতি থমকে যাবে। ভারতে প্রায় থমকে গেছিল-তাই মোদি অর্থনীতি চাঙ্গা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েই ক্ষমতায় এলেন।
আমি এই লেখা নিয়ে সব থেকে যেটা বড় অভিযোগ পেয়েছি-সেটা হচ্ছে, মৌলবাদ বিরোধি আন্দোলনে লেখালেখি বা বই এর ভূমিকাকে না যুক্ত করায়।
আমি অভিজিতের প্রত্যুত্তরে আমার অবস্থান ব্যক্ত করেছি। আবার লিখি। বই ৯৯% লোক পড়ে না। নিউজ পেপার পড়ে অধিকাংশ লোক। কিন্ত এর কোনটাই উদার বা মৌলবাদি সমাজের বিবর্তনে খুব বেশী এফেক্ট করেবে না। কিছুটা করবে। কিভাবে সেটাই লিখি।
নাস্তিক্য নিয়ে লেখা আগেও ছিল-এখনো আছে। ডিরোজিও যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন -তিনিও বেশ কিছু লিখেছেন-তার ও নাস্তিক ছাত্র ছিল-কিন্ত তা হিন্দু বাঙালীকে উদার করে নি-বা নাস্তিক্য/উদারতা এই সমাজে ঢোকে নি।
হিন্দু বাঙালী সমাজে অধুনা যে সামান্য উদারতা এসেছে তা মূলত কোলকাতা কেন্দ্রিক। কারন সেখানে উৎপাদন কাঠামো আধুনিক হয়েছে সবার আগে। নিউক্লিয়ার সংসারের জন্ম, সাহিত্য/নাটক চর্চা শুরু হয়েছে সবার আগে।
শিল্পায়ন, উৎপাদনের পরিবর্তন শিক্ষার নতুন চাহিদাকে ত্বরান্বিত করে। সুতরাং এই উৎপাদন কাঠামোর পরিবর্তন না এলে, হাজার ডিরোজিও বাংলায় জন্মালেও কিছু হবে না।
তবে হ্যা-সমাজের একটা সার্বিক মূল্যায়ন থাকা দরকার। বাংলা ভাষায় যুক্তিবাদি লেখা যত সহজলোভ্য হয়, তাতে একটা মধ্যবিত্ত শ্রেনী তৈরী হবে, যারা চেতনার আলোকে উদ্ভাসিত হবে।
বাংলাদেশে নাস্তিকদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি বরাবরই আশাবাদী। কিন্তু আবার হতাশও। হতাশ হওয়ার কারনটা আপনি জানেন। কিন্তু ড. হুমায়ুন আজাদ স্যারের হত্যার পর বা সেই সময় থেকে মৌলবাদীরা প্রচন্ড-ভাবে মাথা চারা দিয়ে উঠেছে। তারপর থেকে তাদের হত্যাযজ্ঞ চলছে। যুক্তিবাদী-মুক্তমনাদের সরিয়ে দিতে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। এই অবস্থায় হতাশ হওয়া ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু আপনার লেখা পড়ে অনেকটা আশা ফিরে পেলাম। তাই আপনাকে ধন্যবাদ।
ভালো হয়েছে লেখা তা কিন্তু আমি সব কিছুর সাথে একমত নই বিপ্লব ভাইয়া , সেটা হলো আধুনিক সিখ্হা গ্রহণ করলেই যে মৌলবাদ শেষ হবে এইটা মানতে পারলাম না , এইটা একটা অসত্য কথা ধর্মান্ধ মোল্লারা অনেক অসভ্য হলেও তারা সমস্ত আধুনিক গ্যাজেট এবং জিনিস সম্বন্ধে ফিকির করে ওহ তাহা ব্যবহার করে , তাহলে তো আপনার কথা অনুসারে সবাই মুক্তমনা মুসলিম হয়ে যেত দাড়ি , সুন্নাত , কোরান তেলাবাত করবার পরেও কিন্তু তা কি বাস্তবে হয়েছে ? হইনি তবে আসার আলো অনেক মুসলমান প্রগ্রেস্সিভে হয়েছে এবং মুক্তমনা হয়েছে কিছু চাপে পরে কিছু সেচ্ছায় । কিন্তু ভবিষ্যতে ওই চাপে পরে মুক্তমনা মুসলমান হবার দিন আসছে কারণ যত দিন যাবে পৃথিবীতে চাকরি কমবে আমার মনে হই অনেক আমূল পরিবর্তন হয়ে অনেক সেক্টর শেষ হয়ে যাবে ।
@Nastik Paharadar,
আমি জানতাম এই প্রশ্ন উঠবে। এর উত্তর আমি দিয়েছি আগেই।
প্রযুক্তির ব্যবহারে কেও বিজ্ঞান মনস্ক হয় না। কিন্ত প্রযুক্তি উৎপাদন কাঠামো বদলায়। পুরাতন জীবিকাকে হত্যা করে। নতুন জীবিকার দরকার হয়।
এই নতুন জীবিকাই নতুন আলোর জন্ম দেয়।
তেলের জন্য মুসলিম ছেলে মেয়েদের হাতে টাকা এসেছ। তারা লেটেস্ট গ্যাজেট ব্যবহার করছে। কিন্ত যেই দিন ওই গ্যাজেটটা তাদের নিজেদের তৈরী করতে হবে-সেদিন বিসমিল্লাপনা করলে, পারবে না। সেই দিনই আসছে যে-শুধু প্রযুক্তির ভোক্তা হলে, বেঁচে থাকতে পারবে না। প্রযুক্তি নিজেকেই তৈরী করতে হবে। এটা ওই বিসমিল্লা শ্রেনীর ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ না। এর জন্য ব্যবসা, মার্কেট ইঞ্জিনিয়রিং, ফাইনান্সের জটিল কাঠামো লাগে। এই পরিকাঠামো পৃথিবীতে উদার রাষ্ট্রগুলি ছারা কোথাও নেই।
এ থেকে বি প্রোগ্রামিং করতে বিসমিল্লা শ্রেনীর প্রগ্যামারদের কোন সমস্যা হবে না। কিন্ত তাকে যখন ওই এ থেকে বি বেচতেও হবে-তার দাড়ি দেখলেই ক্লায়েন্ট পালাবে। আর সেই দিনটাই আসছে দ্রুত আগামীতে। পেটের দায়ে, সেখান থেকেই উদার সমাজের শুরু হবে।
২০ বছর পরের না, বর্তমানের বাংলাদেশে মৌলবাদিদের বাড়তে দিচ্ছে কিছু “রঙীন গরগিটি” পলিশি ওয়ালা দেশ।
যদি সময় করে একটু ব্যাখ্যা করতেন,আম্রিকার এই ফোরকদালালির মূল উদ্দেশ্য কি? বাংলাদেশে সরাসারি একসেস পাওয়ার ইচ্ছে,চীনের ওপর প্রভাব দমন,ভবিষ্যৎ প্রতিদ্বন্দী ভারতের প্রভাব দমন নাকি অন্য কিছু?
@প্রাক্তন আঁধারে,
ওসব কিছু না। আমেরিকার রাজনীতিবিদদের একটা বড় ইনকাম তোলাবাজি-পোষাকি নাম লবিং। জামাত এই লবিস্টদের টাকা দিয়ে, এখানকার সেনেটর কংগ্রেসম্যানদের আওয়ামী লিগের বিরুদ্ধে চালানোর চেষ্টা করেছিল।
আমাদের এই দেশের ( আমেরিকার) রাজনীতিবিদগুলো অধম ( সব দেশেই তাই)-এদের টাকা দিয়ে যে কোন পার্টি নিজেদের স্বার্থ বানাতে পারে। নইলে আমেরিকার কোন কারন নেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফোকর দালালি করার।
বিপ্লব দা, খুব সুন্দর বলেছেন- মার্কেটই পারে মুসলিমকে অমুসলিম বানাতে। তাহলে জীবন জীবিকাই হলো জীবন পদ্ধতির প্রধান চালিকা শক্তি। পেটে যদি ভাত না থাকে তাহলে ঈশ্বর বিশ্বাস কোথায় দৌড়ায় পালায় তার ঠিক নেই। আরেকটি কথা মানুষ আসলে জন্মেই স্বাধীন। আস্তে আস্তে তাকে প রাধীন তার শৃংখ লে বন্ধী ক রা হয়েছে ঠিক তেম নি মানুষ জ ন্মেই নাস্তিক আস্তে আস্তে তাকে ঈশ্বর বিশ্বাসী বানানো হয়েছে। এর পিছনে যে কারনটি রয়েছে তা হলো ব্যর্থতা। বড় কোন শক্তির কাছে মানুষ যখন পরাজিত হয়েছে তখন সে ঐ বড় শক্তিকে দেবতার আসনে বসিয়েছে। ঈশ্বরের ভাবনাটা এসেছে মানব মনের মানসিক দুর্বলতার থেকে।
লেখাটা ভাল। কিন্তু কিছু ব্যাপার একেবারে তাত্ত্বিক মনে হয়েছে। আমিও এক সময় এভাবে ভাবতাম – আইটিতে কাজ করতে থাকলে হয়তো ধর্ম কর্ম নিয়ে ভাবনার সুযোগ পাবে না, মানুষ হয়তো লিবার্যাল হয়ে উঠবে। কিন্তু আমার কিছু পর্যবেক্ষণ একেবারেই বিপরীত মনে হয়েছে। আমেরিকার কোম্পানিতে আইটিতে কাজ করা এবং সেসব কোম্পানিতে নিয়োজিত স্বদেশীদের দেখার এবং বুঝবার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। তার প্রেক্ষিতেই আমি এ কথা বলছি।
আমার এখনকার কোম্পানিতে একটি বাঙালি ছেলে কাজ করে। এমনিতে খুব ভাল প্রোগ্রামার। কিন্তু একই সাথে আবার প্রচণ্ড পরহেজগার যাকে বলে। মেয়েরা সামনে আসলে পাশ ফিরে কথা বলে (ধর্মের নির্দেশ বেগানা মেয়েদের দিকে তাকানো নিষেধ)। প্রতি শুক্রবারে লাঞ্চ আওয়ারে মসজিদে নামাজ পড়তে যায়। আর যে কোন কাজ শুরু করার আগে বিসমিল্লাহ বলে, সুরা পড়ে নেয়। কানে হেড-ফোন গোজা থাকে। আমেরিকানরা ভাবে গান শুনছে বুঝি। কিন্তু আসলে শুনে ওয়াজ।
টেকনোলজি কিংবা পাশ্চাত্য জীবন কোনটাই একে বদলাতে পারেনি। বরং টেকনোলজি তাদের কোরে তুলেছে আরো সফিস্টিকেটিড। আগে মাইকে ওয়াজ চলতো। এখন চলে আইফোনে – হেডোফোনে, জাভা প্রোগ্রামিং এর তালে তালে। ফেসবুক, টুইটার ইউটিউব কি জঙ্গিরা ব্যবহার করেছে না? ইহুদি নাসারাদের আবিষ্কার বলে কিন্তু পরিত্যাগ করছে না, বরং সেগুলোকে ব্যবহার করছে নিজস্ব ধর্মীয় প্রচারণার কাজে। আমি আসলে মনে করি না, জাভা, পিএইচপি – কোন কিছুই ভবিষ্যতের বাঙালি প্রজন্মকে ধর্ম থেকে বিচ্যুত করতে পারবে, যদি না স্কুল কলেজ থেকেই মানুষকে ধর্মের পাশাপাশি চার্বাক, এপিকিউরাস, রাসেল, ডারউইন, হকিং, ওয়েইনবার্গ, স্টেংগর, ডকিন্স, মার্ক্স, পপারদের দর্শন শিক্ষার ব্যবস্থা না করা হয়। ভাল প্রযুক্তিবিদ হওয়া আর আলোকিত মানুষ হওয়া একসূত্রে গাঁথা নয় মোটেই।
@অভিজিৎ,
আর ঘরে? ঘরেই যদি শিখিয়ে দেয়া হয় চার্বাক, এপিকিউরাসরা সব শুধু খারাপ এবং নিষিদ্ধ, ধর্মই একমাত্র সত্য? আর ভয় দেখিয়ে এগুলো শেখায় সবচেয়ে কাছের জন মা বাবারা? সর্ষেভুত মগজধোপা এদেরকে ছেড়ে দিলে কি করে হবে?
স্কুল কলেজ নির্ভর শিক্ষা, সেটাও তো সেই শাসক নিয়ন্ত্রিতই। আমার ধারণা ঘরে যদি সুশিক্ষা শুরু না হয়; তা হলে গোড়ায় গলদ থেকেই যাবে। এই ত্রুটিতে উৎসাহ দেবে ইশ্বরবাদী ভরপুর ইনভেন্টরি। মুক্তমন মিলতে লাগবে অনেক সময়। পুরোনো মা বাবাদের কথা থাক না হয়, নতুন মা বাবা কাছের মানুষরা যদি এখুনি তাদের শিশুদের ভয়মুক্ত করে বড় করা শুরু না করে তা হলে এগুনোর গতি কত আর বাড়বে? আর ক্রাইসিস হলে তো কথাই নেই, ইশ্বরভীত অভাবী মানুষ নালিশ করতে, প্রতারিত হতে কোথায় ছুটবে সে তো বলাই বাহুল্য।
@অভিজিৎ,
বর্তমানে আই টিতে যে স্কিল লাগে, তা করনিক শ্রেনীর। এই মধ্যবিত্ত শ্রেনীতে বরাবরের জন্য ধর্ম এবং পরজীবিতা সমস্যা।
আমি আগামী দিনের কথা লিখছি। আগামীতে যে শিক্ষায় একজনকে শিক্ষিত হতে হবে তাতে জাস্ট মেকানিকাল প্রোগ্রামিং যথেষ্ঠ না-ঐ টুকু মেশিন লার্নিং করে দেবে। অধিকাংশ “জীবিকাধারী” লোককে স্ট্রাটেজিক বা ব্যবসা, বা সৃজনশীল-এই টাইপের কাজ করতে হবে। এর বাইরে চাকরি থাকবে না।
এগুলি করতে গেলে, একজনকে যথেষ্ঠ চিন্তাশীল হতে হবে। সে নাস্তিক নাও হতে পারে-কিন্ত লিব্যারাল না হলে এই ধরনের কাজে সাফল্য আসে না। ডারউইন তার নিজের পথ ধরেই “লিব্যারালিজম” নির্বাচিত করবে।
সেই জন্য শিক্ষাব্যবস্থাতেই আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। যেমন এবার থেকে আমেরিকান কমন কোরে, ল্যাঙ্গুয়েজ শিক্ষার ক্ষেত্রে সৃজনশীলতার ওপর সব থেকে বেশী জোর দেওয়া হচ্ছে। অঙ্কর ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে এটা জরুরী নয়-ছেলেটা এটা পারুক-এটা জরুরী কতগুলো নতুন ভাবে সে অঙ্কটা সমাধান করতে পারছে। কারন অটোমেশনে সব থেকে আগে চাকরি হারিয়েছে আমেরিকান রা। আর আজকের স্কুলের ছেলেদের আরো বেশী অটোমেশনের সামনা হতে হবে। সুতরাং সৃজনশীল শিক্ষা ছারা নতুন প্রজন্মের কোন ভবিষয়ত নেই। আমেরিকাতে সেটা এবার থেকে বেশ জোর দিয়ে করা হচ্ছে। গোটা পৃথিবী জুরেই এটা আমরা দেখব।
আমি মনে করি না ধর্মান্ধ থেকে মুক্তি পেতে কোন বই এর দরকার আছে। আমার দেখা সেরা নাস্তিক এবং সেকুলার একজন ক্লাস ৪ পাস করা মিস্ত্র-আবু বক্কর। যাদের পা মাটিতে, প্রতিটা দিন খেতে হয় ক্লায়েন্টের মন বুঝে, প্রতিযোগিতা বুঝে, তাদের পক্ষে ধর্মান্ধ হওয়া অসম্ভব।
ধর্মান্ধতা পরজীবি মধ্যবিত্ত শ্রেনীর থেকে এসেছে। কৃষিকাজ শুরুর সাথে সাথে এই সব ধর্মর উদ্ভব। যবে থেকে মানুষকে তার মাথা আর বেশী কাজে লাগাতে হয় নি-চেনা ছকে জীবন ফেলে, উৎরে গেছে। এটাই এই সব উদ্ভট ধর্মবিশ্বাসের কারন। সেই আরামের দিন আর থাকছে না। মানুষকে আরো গভীরে ভাবতে হবে-সৃজনশীল হতে হবে-নিজেকে করে খাওয়ার দিন আস্তে আস্তে ফিরিতেছে। এটা লিব্যারাল সমাজ ছাড়া সম্ভব না।
@বিপ্লব পাল,
ইন্টারেস্টিং। আমি ভাবতাম বই মানুষকে আলোকিত করে। তুমি তো দেখছি উল্টো কথা শোনাচ্ছ। 🙂
@অভিজিৎ,
আমার অভিজ্ঞতা এটা শিখিয়েছে। আমার ছেলে ৫ বছর বয়স থেকে নাস্তিক। আমি তাকে নাস্তিকতা শেখায় নি। সে তখন কোন বই পড়তেও জানত না 😕 বরং ৩ বছর বয়স থেকে তার দাদু দিদারা শিখিয়েছিল পৌরানিক ইশ্বরের গল্প। আমি বাধা দিই নি। পাচ বছরের মাথায় সেই আমাকে বলে, এই গড হচ্ছে মেক বিলিফ স্টোরি। আমি বল্লাম কেন রে– বল্লো আরে দূর সব কিছু ত বিবর্তনের জন্য হয়েছে। আসলে সে ছোট বেলা থেকে সায়েন্স ডকুমেন্টারীর পোকা।
এছারাও অসংখ্য খেটে খাওয়া ছোট ব্যবসায়ী শ্রেনী দেখেছি-যারা ধর্মের ভাওতাবাজি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছে। যারা ছোট খাট খেটে ব্যবসা করে -সারাদিন পরিশ্রম করে-এই শ্রেনীর মধ্যে ধর্মান্ধতা সব থেকে কম। অভিজ্ঞতা থেকেই এদের চোখ খোলে। বই পড়ে নয়।
আরেকটা গল্প বলি। লস এঞ্জেলেসে গেলে অরেঞ্জ কাউন্টির ইন্ডিয়ান পট্টিতে এক পাকিস্তানী মহিলার রেস্টুরেন্ট ছিল। সে যখন ওটা খোলে, অন্যান্য মুসলিম রেস্টুরেন্টের মতন সেখানে কাবা, মুসলিম ক্যালিগ্রাফি দিয়ে ডেকরেশন করে রেখেছিল।
রেস্টুরেন্ট চলছিল না। সে ছমাসের মধ্যে ইসলামিক ক্যালিগ্রাফি বদলিয়ে সেখানে শিখ, শিব, কৃষ্ণের ছবি লাগালো। এবার রেস্টুরেন্টে ভীর দেখে কে! আসলে অধিকাংশ মুসলমান গরীব-রেস্টুরেন্টে খাওয়ার পয়সা নেই- আমেরিকাতে হিন্দুদের পকেটে টাকা বেশী। তারা আবার মুসলিম রেস্টুরেন্ট পছন্দ করে না খুব বেশী।
ব্যবসা খুব কঠিন জিনিস-এসব বই পড়ে শেখা যায় না। অভিজ্ঞতা, বাস্তব জ্ঞানে শিখতে হয়।
মার্কেট হচ্ছে একমাত্র শক্তি যা আল্লার থেকেও অনেক অনেক বেশী সর্বশক্তিমান। মার্কেটের শক্তিই পারে মুসলিমকে অমুসলমান বানাতে। কোন বই না। ১% লোক ও বই পড়ে না। এই যে স্কান্ডেনেভিয়ান দেশগুলিতে ৮০% নাস্তিক-তা কি বই পড়ে? মোটেও না। ওটা লিব্যারাল সোসাইটির এক স্বাভাবিক বিবর্তন।
একজন শিশু নাস্তিক হয়েই জন্মায়। কৃষিকাজ শুরুর আগে মানুষ নাস্তিকই ছিল। আস্তিকতা বা ঈশ্বরের ধারনাটা শিখতে হয় পরিবার বা সমাজ থেকে। সুতরাং নাস্তিকতার জন্য কোন বই এর দরকার নেই। ওটাই মানুষের মনের স্বাভাবিক অবস্থা। শ্রেফ দরকার ধান্দাবাজি বোঝার মতন বুদ্ধি।
@বিপ্লব পাল,
একটু বেশি বেশি হয়ে গেলো না বিপ্লব পাল? এই কথাটার কি কোন অনুপাত ফ্যাক্টস আর ফিগার দেখে বলেছেন না কি মন চাইলো আর লিখে দিলেন?
@কাজী রহমান,
ফাক্ট এন্ড ফিগার থেকেই বলছি। নর্থ আমেরিকাতে মুসলমান ফামিলির গড় ইনকাম ৫৬,০০০ ডলার, হিন্দু ফামিলির গড় ইনকাম ৯১,০০০ ডলারের কাছাকাছি। তবে মুসলমানদের ইনকাম গড় আমেরিকান ইনকামের থেকে বেশী। কিন্ত সাদ্দার্ন ক্যালিফোর্নিয়া এক্সপেন্সিভ জায়গা। ওখানে ওই ধরনের এভারেজ ইনকামে রেস্টুরেন্টে বা বাইরে বেশী খাওয়া মুশকিল। পাকিস্তানি সব রেস্টুরেন্ট ভারতীয় খরিদ্দারেই চলে।
@বিপ্লব পাল,
মুসলমানরা রেস্তোরায় খায় না, অথচ ওদের চেয়ে কম ইনকাম করে মূলধারার মানুষেরা কিন্তু মহানন্দে দিব্যি বুফে খেয়ে বেড়াচ্ছে ওই একই রকম রেস্তোরায়। না কি বলবেন ওরা ইন্ডিয়ান ফুড কি তা চেনেই না। আর মুসলমানদের রেস্তোরায় না খাওয়া বা কম খাওয়াটা সম্পুর্ন আয় ভিত্তিক!
কোন লিঙ্ক রেফারেন্স না দিয়েই আবার! বেশ। আর কি কি ফ্যাক্টর ওখানে নেয়া হয়েছে? শুধু গড় আয় তো এক মাত্র ব্যাপার হতে পারে না, পারে নাকি?
তো কি হোল, ওই জায়গা নিয়ে আমাকে বলাটা; বাহুল্য মাত্র, বুঝলেন তো?
সমস্যাটা ঠিক এইখানে। ওই সব রেস্টুরেন্টের বেশিরভাগ খদ্দেরই কিন্তু আমেরিকার মূলধারার। ভারতীয় উপমহাদেশের নয়।
মন্তব্য করেছি খামোখা যেন জেনারেলাইজেশন না হয়। বুঝতে পেরেছেন আশা করছি।
@কাজী রহমান,
আমি একমত না। একদমই না। ভারতী খাবার আমেরিকাতে খুব বেশী জনপ্রিয় না। অধিকাংশ ভারতীয় বা পাকিস্তানি রেস্টুরেন্ট চলে ভারতীয়দের জন্যই।
আমেরিকার নানান ধর্মীয় গ্রুপের ডিটেলস এখানে পাবেন। এখানে দেখুন
৩০,০০০ ডলারে কম ইনকাম মাত্র ৯% হিন্দুর সেখানে মুসলমানদের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ৩০% এর বেশী। আর ১৬% মুসলিমের ইনকাম ১০০,০০০ ডলারের বেশী-এখানে ৪৩% হিন্দুদের ইনকাম ১০০,০০০ এর বেশী। আমেরিকাতে হিন্দুদের অর্থনৈতিক অবস্থা অন্যান্য ধর্মীয় গ্রুপের থেকে ভাল ঃ
http://www.pewforum.org/2009/01/30/income-distribution-within-us-religious-groups/
@বিপ্লব পাল,
একমত হতেই হবে এমন কোন কথা নেই। আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ ভিত্তিক মত আমি দিয়েছি।
যাকগে; আসল লেখা ছেড়ে ছুড়ে এসব হচ্ছে মাঠের বাইরের কথা।
আপনার লেখা বাংলাদেশ নিয়ে। সেখানকার কালিক স্থানিক আর বর্তমান বাস্তবিক ব্যাপারগুলো সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক নয় নিশ্চই। লেখাটিতে আপাতত ডর্মেন্ট অথচ বিষাক্ত মৌলবাদী ইনভেন্টরি গুরুত্বের সাথে স্থান পেতে পারতো। আসিফ যেমন বলেছেন আরকি। ধর্মান্ধরা ভুখা পেটেও কিন্তু সওয়াব কামাতে পিছপা হয় না। এই সব ফ্যাক্টর বাদ দিয়ে প্রজেকশন অসম্পূর্ণ। এমনকি তা কুড়ি বছর পরের ছবিতেও। কাজেই ওদের কিছুটা হলেও নিউট্রাল করতেই হবে। কুকুরের লেজ সোজা করবার মত হলেও একটা কিছু কাজ দিয়ে ব্যস্ত রাখতে হবে।
একটা কমপ্লিমেন্ট দিয়ে রাখছি; বাংলাদেশের ভবিষ্যত নিয়ে ইতিমধ্যে যেসব লেখা আমি পড়েছি, সেগুলো ছাঁপিয়ে আপনার লেখার অন্যসব দিক গুলো নিয়ে আগে কেউ বলেছেন বলে মনে পড়ছে না। পজিটিভ নোট নিয়ে সেজন্য এটি ব্যতিক্রমী। শুধু মোল্লাদের জুড়ে দিন; সেই সাথে নিউট্রালাইজেশনের সময়সীমাও। আর জ্ঞানপাপী শাসক শ্রেণীর সাথে ইশ্বরবাদীদের চিরায়ত আঁতাত; এটিও শক্ত সম্ভাবনায় থাকতে হবে। এসব ওভারকাম করার কি ব্যবস্থা? এগুলোর সাথে সাথে শিক্ষা ব্যবস্থা, অভিজিৎ যেমন বলেছে, সেসবের গুরুত্বও কি কম? ঘরের মগজধোপা, মানে মা বাবারা, কাছের মানুষেরা এদেরকেও তো ধর্তব্যের মধ্যে আনতে হবে। সব মিলে আপনার মত কনফিডেন্ট লেখকের এই লেখাটি আরো অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ন হতে পারতো।
@কাজী রহমান,
আপনার যদি মনে হয় আওয়ামী লীগ-মৌলবাদ আঁতা এই জন্যে যে আলীগারদের মধ্যে মুসলমান প্রেম আছে, সেটা ভুল। তাহাদের একটাই প্রেম- ভোট এবং ক্ষমতা ভেঙে কাঁঠাল খাওয়া।
আপনি যেটাকে ফাক্টর বলে মনে করছেন, আমি করছি না। কারনটা সহজ। পেটের দায় বড় দায়। পেট ভরায় মার্কেট। দুর্ভাগ্য যে মধ্যপ্রাচ্যের টাকাও পেট ভরাতে আসছিল। সেটাই আপনাদের মধ্যে এই ভুল ধারনাটা দিয়েছে। সেই মধ্যপ্রাচ্যের টাকাত শুকিয়ে আসছে।
সুতরাং বাংলাদেশকে সংসার চালাতে হবে গ্লোবাল মার্কেট দিয়েই। আর মার্কেট কঠিন ঠাঁই মশাই। সেখানে উৎপাদন শক্তিতে পিছিয়ে থেকে আপনি পারবেন না। এগিয়ে থাকতেই হবে। আর এগোতে গেলে উদার সমাজ ছারা গতি নেই। হয় উদার সমাজ বা ইরাক/পাকিস্তান/আফগানিস্তনাএর মতন গৃহযুদ্ধ। এর বাইরে আর কোন অপশন নেই। কিন্ত গৃহযুদ্ধ হবে না। কারন বাংলাদেশ ভারত বেষ্ঠিত। ভারত নিজের স্বার্থেই ইসলামিক শক্তিগুলিকে দমন করবে। যেমন বি এন পিকে টিপে দিয়েছে। ভারত বেষ্ঠিত না হলে এদ্দিনে বি এন পির হাতে ইসলামিক দেশগুলি থেকে অজস্ত্র অস্ত্র এসে বাংলাদেশ গৃহযুদ্ধ হত।
@বিপ্লব পাল,
ভুল ঠিক তো পরের কথা, আমি এমনটা কোথায় বলেছি মশাই?
আমি যা বলেছি তা হল, জ্ঞানপাপী শাসক শ্রেণীর সাথে ইশ্বরবাদীদের চিরায়ত আঁতাত; এটিও শক্ত সম্ভাবনায় থাকতে হবে। এসব ওভারকাম করার কি ব্যবস্থা? আপনি চাইলে এটি ইন্কুল্ড করবেন, না হলে নাই। এতে আম্লীগ বিম্পি জামাত জাপার কথা নেই। কথা আছে শাসক শ্রেণী ও ইশ্বরবাদীদের এবং তাদের আঁতাতের; যা সাধারনত: জনমুখী হয় না, হয় ক্ষমতামুখী। এরা সুন্দর অনেক কিছুকেই বাধা দেয় আপন স্বার্থে।
প্রজেকশন বা প্রিডিকশনটা আপনার, আমার নয়। ওটি গ্রহনযোগ্য করতে আপনি কি কি ডাটা ভরবেন সেটা আপনার ব্যপার। আমরা মন্তব্য তো নিশ্চই করতে পারি; নয় কি?
আপনার এই কথাটা কিন্তু বেশ হয়েছে। প্রোএক্টিভ না হলে ব্যালান্স হারাতে হবে। ঠিক অপশন এখন বা আগেভাগেই প্রেডিক্ট করে বেছে নিতে হবে।
ভোর হল নাকি? ঠিক আছে এইবার আমার পক্ষ থেকে (C)
বিপ্লব ভাই,
আপনার লেখাটির সাথে বহু অংশেই একমত। কিন্তু আপনি এদেশে মধ্যপ্রাচ্যের অর্থায়নে মাদ্রাসা শিক্ষাকে আলোচনার অন্তর্ভূক্ত না করায় পুরো আলোচনাটার একটা বড় খুঁত রয়ে গেল। প্রযুক্তির ব্যবহার, বিজ্ঞান চেতনা খণ্ডিত ভাবে হলেও যে তার বিকাশমান ধারা, তার সাথে ধর্মান্ধতা আর মৌলবাদের পেছনে বিপুল অর্থকরী ঢালা, তাদের অর্থনৈতিক ভিত্তিকে অবশ্যই আলোচনার আরেকটা দিক হিসেবে উল্লেখ করা জরুরী ছিল।
সেটা বাদ দিলে লেখাটি বরাবরের মতই চমৎকার হয়েছে।
@আসিফ মহিউদ্দীন,
এটা সত্য মধ্যপ্রাচ্যের তেলে টাকায় মৌলবাদের যে চাষাবাদ হয়, সেটা বাদ দিয়ে এই আলোচনা সম্ভব না।
আমার মতে মধ্যপ্রাচ্যের টাকা আগামীতে কোন ফাক্টর হবে না। মধ্যপ্রাচ্যে এখন কাতার বা কুয়েত ছারা কোন দেশেরই আর অত টাকা নেই। আমেরিকাত ফ্রাকিং আবিস্কার হওয়ার ফলে আমেরিকা এখন নিজেই তেল রফতানী করবে। এর সাথে রিনিউবেলের উত্থান, ইলেকট্রিক কার ও দ্রুত আসছে বাজারে। আমেরিকাতে তেলের ব্যবহার কমছে ২% হারে। কিন্ত তাও মধ্যপ্রাচ্যর ইকনমি এত ডাউন না-কারন চীন এবং ভারত তেলের আমদানী বাড়িয়েছে সাংঘাতিক হারে। তবে ভারত ও চীনেও ফ্রাকিং এবং ইলেকট্রিক কার আসছে। অনেক মেট্রো প্রজেক্টের জন্য তেলের ব্যবহার কমবে।
(১) বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়া লেবারের সংখ্যা ক্রমশ কমবে, সুতরাং বাংলাদেশকে তার নিজের অর্থনীতি গড়তেই হবে। কারন মধ্যপ্রাচ্যে, বিশেষত আরবে জনবিস্ফোরন অব্যাহত। তাদেরই আজ টাকা নেই। তারা লেবার ইম্পোর্ট কমাবে।
(২) আরো একটা ব্যপার লক্ষ্য করছি-আরব আমীর, প্রিন্সরা ক্রমশ আধুনিক হচ্ছেন। কাতারের প্রিন্স তেলের টাকাটা কিন্ত বিজ্ঞানের ওপর খরচ করেন অনেক বেশী-তিনি কাতার সায়েন্স ফাউন্ডেশন খুলে কাতারে বিশ্বের সেরা বিজ্ঞানী প্রযুক্তিবিদদের কাজের জন্য আহবান করেছেন। তিনি চান কাতারের ছেলে মেয়েরা বিজ্ঞান প্রযুক্তি শিখুক-কারন তেলের টাকায় বেশীদিন চলবে না-তা তিনিও জানেন।
(৩) শুধু প্রিন্স না-আরবের নতুন প্রজন্ম ইসলামের জন্য এত খরচ করবে না যা তাদের বাপেরা করেছে চ্যারিটিতে। আরবের নতুন প্রজন্ম-ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবসায় নেমেছে এমন বন্ধু আমার প্রচুর আছে। এরা টাকাটা জাকাতে না দিয়ে ব্যবসা, শেয়ার বন্ডে ঢালতেই উৎসাহী বেশী। আরবের সব থেকে ধনী প্রিন্স তালাল কিন্ত টাকা জাকাতে ওড়ান না-তার ফাউন্ডেশন মুসলমানদের মধ্যে পেশাদার শিক্ষার জন্যয় ব্যয় হয়।
কালা যাত্রার ধ্বনি মোটেও মৌলবাদিদের সাথে নেই-সাথে ছিল একমাত্র আরবের তেলের টাকা-সেটা আস্তে আস্তে শুকিয়ে আসছে। এতেব চিন্তার কিছু নেই। যেটা আমরা গত দু দশকে দেখেছি-সেই তেলের টাকায় বিসমিল্লার অত্যাচার, তা ক্ষনস্থায়ী এক ইতিহাস। ওই তেলের টাকা ইসলামকে পচিয়েছে, মুসলমানদের অনেক যুগ পেছনে ফেলেছে। সেটা এবার আর হচ্ছে না।
অনেক ইতিবাচক দিক দেখিয়েছেন। আশার ফানুস উড়াতে চাই কিন্তু বাদ সাধে শিক্ষাব্যবস্থা…
যেখানে দিনদিন শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতির হাত ধরে একঝাঁক প্রগতিশীল ছেলেমেয়ে উঠে আসার কথা তেমনটা হচ্ছে কই… তবুও স্বপ্ন দেখতে চাই… :-s
আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী ও উচ্চ শিক্ষিত হলেই যে মুক্তমনা হয়ে মুক্তচিন্তার অধিকারী হবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। আমি অনেক ট্যালেন্টেড ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারদের দেখেছি বেশ কড়া মুসলিম ও হিন্দু মূল্যবোধ বয়ে নিয়ে বেড়ায়। আমি মনে করি এধরনের মানুষ ভারত বাংলাদেশ সব জায়গাতেই পাবেন। এসব মানুষ এদের ক্যারিয়ারের সাফল্য ধর্মকর্মের আশীর্বাদ হিসেবে মনে করে আরও জোরেশোরে ধর্মীয় কাজে মন দেয়।
আমার আত্নীয়র মধ্যে একজন অতি আধুনিক ছেলে, ঢাকাতে পড়ালেখা করা অবস্থায় সপরিবারে আমেরিকায় চলে যায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে হয়ত কমিউনিটির লোকদের খপ্পরে পড়ে ব্রেইনওয়াশ হয়ে উল্টো কাঠমোল্লাতে পরিণত হয়। এখন নিজের চাচাতো বোনদের সাথেও দেখা করতে ওর ঈমানদন্ড বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এরকম নব্য কট্টরপন্থীদের কথা ভুলে গেলে চলবেনা। এরাই একসময় জিহাদী জোশে আক্রান্ত হয়ে অস্ট্রেলিয়া ও পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশ থেকে সিরিয়া বা ইরাকে আইএস এ যোগ দিচ্ছে। পাশ্চাত্যের আধুনিক সমাজব্যবস্থা, উচ্চশিক্ষা, আর্থিক স্বচ্ছলতা কোনটিই এদেরকে মুক্তমনাতো নয়ই বরং গ্যেটো কমিউনিটির মধ্যে থেকে নিজ দেশ থেকেও কট্টর ভাবধারায় বেড়ে উঠতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।
@প্রতীক,
এর উত্তর আমার লেখাতেই রয়েছে। বর্তমানে ইঞ্জিনিয়ারিং এর, আই টির ৯৯% কাজ আসলেই কেরানীর কাজ। সেটা চলে যাবে দ্রুত। হুস করে। মার্কেট চাইবে সেই সব ইঞ্জিনিয়ারদের যারা সৃজনশীল, বুদ্ধিমান। এখন মুরি মুরকির এক দর। এই পরিবর্তন আমেরিকাতে অনেকটা এসেছে, ভারতে আসছে। বাংলাদেশে আসিবে। এই শ্রেনীর লোকেরা মৌলবাদি হতে পারে না। এদের ধর্ম বিশ্বাস কিছু থাকতেই পারে-কিন্ত এরা হবে অনেক মডারেট। লিব্যারাল।
আমেরিকা থেকে যারা আই সিসিএর দিকে যাচ্ছে, তারা আমেরিকান মুসলিম সমাজে ব্যতিক্রম। মোটেও ট্রেন্ড না। আমেরিকাতে ৬ মিলিয়ান মুসলিমের বাস। মোটে ১২ জন আই সি সে গেছে। তার থেকে অনেক বেশী মুসলমান সন্তান প্রতি বছর হার্ভাডে যাচ্ছে। এগুলো নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।
আপনি বাংলার পরিবর্তন গুলো বেশ পজেটিভ ভাবে দেখিয়েছে। আসলে কী তাই? মৌলাবাদের স্থান না হলেও এই মাটিতে একটি সুস্থ্য ধারার গনতান্ত্রিক সামাজিক কাঠামো আজও গড়ে উঠতে পারেনি। যে রাজনীতি পার্শ্ববর্তী দেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় সেই দেশ কী নিজের ভাগ্য নিজেরাই নিয়ন্ত্রন রাখার ক্ষমতা রাখে? কিছু কিছু ক্ষেত্রে সামাজিক উন্নয়ন হয়েছে বটে। শিক্ষা ক্ষেত্রে এক ভয়াবহ অবনতি হয়েছে। সৃজনশীল শিক্ষার ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। সেই সনাতনি শিক্ষা ব্যবস্থাটি বানিজ্যিকরন হয়েছে।
@রওশন আরা,
“সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে” এই চিন্তা আস্তে আস্তে গভীরে প্রেথিত হলে বাংলাদেশে একটি সুস্থ গণতন্ত্র সময়ের প্রতীক্ষা।
@রওশন আরা,
মার্কেট সৃজনশীল ব্যক্তির চাহিদা ছিল না এদ্দিন-তাই শিক্ষায় ছিল না সৃজনশীলতা। সৃজনশীল প্রোগ্রামাররা ছাড়া বাকীরা কেও চাকরি ই পাবে না। মার্কেটের চাপেই বাংলাদেশ ভারতের শিক্ষা সৃজনশীল হবে-ওই যে বল্লাম আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে-এইটুকু সৎ আশাই যথেষ্ঠ।
সমাজবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে বলব আপনার বিশ্লেষণটি যৌক্তিক হয়েছে… ফার্টিলিটি রেট কমতে থাকলে মানুষের চিন্তা চেতনা যৌক্তিকতার দিকে হাটতে বাধ্য…
ভয়ও আছে… মাদ্রাসার শিক্ষার্থী যে হারে বাড়তেছে… এরা যখন ভবিষ্যত কর্মক্ষেত্রে নিজেদেরকে যোগ্যতার প্রমাণ দিতে পারবে না তখন হতাশ হয়ে উগ্রপন্থার দিকে এগিয়ে নিজেদের ফ্যান্টাসির মাস্টারবেট করে মিসক্যারেজ করবে নাতো?
@মুহাইমীন,
সেত এখনি করছে। কিন্ত তাতে কি পেট ভরে? এখন ভরছে, কারন সৌদি ইত্যাদি মুসলিমদেশ গুলির টাকা। সেই সোর্স বন্ধ হলেই, এদের উৎপাত ও বন্ধ হবে। এদের করে খেতে হবে ত। নিজের পেটের ভাত জোগার করা অত সহজ না।