প্রতিটা ধর্মেই কমবেশী উদ্ভট গালগল্প রয়েছে, যুক্তিবাদী ধর্ম হিসেবে পরিচিত বৌদ্ধধর্মের শাস্ত্রেও রয়েছে এই ধরণের বেশকিছু গল্প। যেহেতু আমাদের আলোচনার বিষয় নারীর প্রতি বৌদ্ধশাস্ত্রীয় দৃষ্টিভঙ্গি তাই উদ্ভট গল্পে না যেয়ে নারী প্রসঙ্গেই আসি যদিও সেখানেও আমরা উদ্ভট গালগল্প পাবো। একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, বৌদ্ধধর্ম হিন্দুধর্মের প্রভাবকে অস্বীকার করতে পারে নি, সম্ভবত সেজন্যই এই ধরণের অযৌক্তিক গল্পগুলো বৌদ্ধশাস্ত্রের পাতায় স্থান করে নিয়েছে।
আজকে এই বিষয়ে আমরা আলোচনা করবো সমুদগ জাতক নিয়ে। ৪৩৬ নম্বর এই জাতকের বর্তমানবস্তুতে বোধিসত্ত্ব কোন এক উৎকণ্ঠিত ভিক্ষুর উদ্দেশ্যে বলেন,
“দেখো তুমি রমণী লাভের জন্য এতো ব্যগ্র কেন? রমণীরা পাপাসক্ত ও অকৃতজ্ঞা। পূর্বে ব্রহ্মদৈত্য কোন রমণীকে গিলিয়া নিজের কুক্ষির মধ্যে রাখিয়া বিচরণ করিতো, তথাপি সে তাহার চরিত্র রক্ষা করিতে ও তাহাকে একমাত্র পুরুষে আসক্ত রাখিতে পারে নাই। সে যাহা না পারিয়াছে তুমি তাহা পারিবে কেন?”
এই জাতকের অতীতবস্তুতে জানা যায়, বোধিসত্ত্ব প্রবজ্জা নিয়ে হিমালয়ে বসবাস করেছিলেন। সেসময় ব্রহ্মদৈত্য এক কুলকন্যাকে আহারের নিমিত্তে ধরে আনিলেও তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে নিজ গুহায় দাম্পত্য জীবন শুরু করেন। কিন্তু দানব কন্যাটির চরিত্রের উপর আস্থা রাখতে পারেননি। এজন্য তিনি নারীটিকে একটি বাক্সের মধ্যে বন্দি করে নিজেরই উদরে গোপন রাখতেন।
একদা বাক্সটি খুলে নারীটিকে কিছু সময়ের জন্য বাতাস লাগাতে বলে নিজে স্নানের জন্য গেলে নারীটি কৌশলে বায়ুপুত্রকে বাক্সের ভিতর গ্রহণ করে নেয় এবং সেখানে উভয়ে কামলীলায় মত্ত হয়। বাক্সসহ ব্রহ্মদৈত্য বোধিসত্ত্বের নিকট ধর্মকথা শুনতে গেলে তিনি তিনজনকে স্বাগতম জানান। তিনজন শুনে ব্রহ্মদৈত্য অবাক হলে বোধিসত্ত্ব বায়ুপুত্রের সাথে নারীটির যৌনতার সবকিছু খুলে বলেন।
এরপর ব্রহ্মদৈত্যকে বোধিসত্ত্ব কিছু উপদেশ দেন যার মধ্যে অন্যতম –
@ ছলনাময়ী নারীদের চরিত্রে কখনোই বিশ্বাস করতে নেই।
@ যত সাবধানেই নারীকে রক্ষা করো না কেন তারা বহুগামি হবেই।
@ নরকের পথে সব সময় নারীদের গমন।
@ রমণী ত্যাগ করা পুরুষই একমাত্র প্রকৃত সুখ লাভ করতে পারে।
@ রমণী ত্যাগ করে ধর্ম করাই মঙ্গল।
@ নারী সংসর্গ দুর্গতি আনয়ন করে।
নিম্নে দানবকে প্রদান করা বোধিসত্ত্বের উপদেশ গাঁথা তুলে ধরা হলঃ
“তুমি তব ভার্যা যারে পেটিকা ভিতরে
পুরিয়া কুক্ষিতে সদা রাখো রক্ষাতরে,
তৃতীয় বায়ুর পুত্র ভার্যা সঙ্গে তব
কুক্ষি মধ্যে করিতেছে মদন উৎসব।
যত সাবধানে করো না কেন রক্ষণ
বহু ছল জানে নারী, বিশ্বাস কখন
চরিত্রে তার আর করা নাহি যায়
নরকের পথে নারী প্রপাতের প্রায়।
রমণী সংসর্গ ত্যাজি যে জন বিচরে,
বীত সুখ হয়ে সেই সুখ লাভ করে।
রমণী সংসর্গ ত্যাজি ধর্ম অনুষ্ঠান
ইহাই বিজ্ঞের পক্ষে মঙ্গল নিদান।
এই সুখ তাহাদের প্রার্থনীয় অতি
রমণী সংসর্গে ঘটে অশেষ দুর্গতি।”
কোন বিশেষ নারী নয়, নির্বিশেষে সকল নারীই ব্যভিচারিণী, না এটা আমার কথা নয় বলেছেন স্বয়ং বোধিসত্ত্ব যার মহত্ত্ব সম্পর্কে চতুর্থ পর্বে বর্ণনা করেছিলাম। সকল নারীই যে ব্যভিচারিণী এই বিষয়ে আলোচনা করবো ১৪৫ নম্বর জাতক যার নাম রাধ জাতক। এই জাতকের অতীতবস্তুতে ব্যভিচারিণী ব্রাহ্মণীকে ব্রাহ্মণ বাঁধা দিতে গেলে বোধিসত্ত্ব বলেন, “ভাই তুমি নিতান্তই অবোধ, কিছুই বুঝো না, তাই এইরূপ বলিতেছো। রমণীদের সঙ্গে বহন করিয়া লইয়া বেড়াইলেও রক্ষা করিতে পারা যায় না।” এরপর বোধিসত্ত্ব নিম্নোক্ত গাঁথাটি বলেনঃ
“তুমি নাহি জান আরও কতো জন
না হইতে অর্ধ রাত্রী দিবে দর্শন!
নিতান্ত অবোধ তুমি, তাহারই কারণ
বলিলে করিতে মোরে অসাধ্য সাধন।
কামিনীর কুপ্রবিত্তি, পতিভক্তি বিনা
দমিতে যে পারে কেহ, আমিতো দেখিনা।
কিন্তু সেই পতিভক্তি, হায় হায় হায়
নারীর হৃদয়ে কিছু নাহি দেখা যায়।”
নারী নিয়ন্ত্রণ পুরুষতন্ত্রের জন্য অন্যতম দুশ্চিন্তার কারণ। বৌদ্ধশাস্ত্রের নারী সংক্রান্ত প্রতিটি উপদেশের মধ্যে নারীকে নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি প্রকট ভাবে দেখা যায়। কিন্তু তারপরও “নারী হলো দুর্নিবার, তাকে কখনোই নিয়ন্ত্রণ করা যায় না” এই উপদেশও দিয়েছেন স্বয়ং বোধিসত্ত্ব। বোধিসত্ত্বের মতে, “রমণীরা একবার খারাপ হওয়া শুরু করলে তাকে কখনোই ফিরানো সম্ভব হয় না। তাই পূর্বে থেকেই রমণীকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।”
এই বিষয়ে আমরা আলোচনা করবো বৌদ্ধশাস্ত্রের ২৬২ নম্বর জাতক যার নাম মৃদুপাণি জাতক। এই জাতকের বর্তমানবস্তুতে কোন এক উৎকণ্ঠিত ভিক্ষুকে উদ্দেশ্য করে বোধিসত্ত্ব বলেন, “রমণীরা স্বীয় প্রবৃত্তির অনুসরণ আরম্ভ করিলে তাহাদিগকে রক্ষা করা অসম্ভব। পুরাকালে পণ্ডিতজনেও নিজের কন্যা রক্ষা করিতে পারেন নাই। পিতা কন্যার হাত ধরিয়াছিলেন, তথাপি সেই কন্যা প্রণোদিত হইয়া পিতার অজ্ঞাতসারে পুরুষান্তরের সহিত পলায়ন করিয়াছিলো।”
এই জাতকের অতীত বস্তুতে জানা যায়, বোধিসত্ত্ব পুরাকালে বারানসীর রাজপদে অধিষ্ঠিত হন। তার কন্যা ও ভাগিনেয় পরস্পর প্রেমাসক্ত হয়ে পড়ে। পুরুষের প্রেমে নারীটি এতোই উদ্বেলিত ছিল যে, সংকেতস্থলে মিলনের জন্য কৌশলে পলায়ন করে। এজন্যই বোধিসত্ত্ব বলেছেন, ‘হাত ধরিয়া বেড়াইলেও কেহ রমণীদিগকে রক্ষা করতে পারে না। রমণীরা এমনই অরক্ষণীয়া।’ এ বিষয়ে বোধিসত্ত্ব যে গাঁথাটি বলেন তা হলোঃ
“কে পারে তুষিতে বল রমণীর মন
সাবধানে বলি সদা মধুর বচন!
নদীতে ঢালিলে জল,
কে কবে লভিবে ফল?
ললনার বাসনার অন্ত নাহি পাই।
নিয়ত নরক পথে নারীর গমন
দূর হতে সাধু তারে করে বিসর্জন।
তুষিতে নারীর মন যে করে যতন,
ভালোবাসে দেয় তারে যত পারে ধন,
ইহা মুত্র নাশ তার
যেন নারী দুর্নিবার,
ইন্ধনে লভিয়া পুষ্টি তাহাই যেমন
মুহূর্তের মধ্যে নাশ করে হুতাশন,
তেমনি নারীগণে যেবা ভালোবাসে
তাহাকেই পিশাচীরা অচিরে বিনাশে।”
(চলবে)
তথ্যসূত্রঃ
পূর্বের পর্বসমূহঃ
বৌদ্ধশাস্ত্রে পুরুষতন্ত্র (পর্ব ০৪)
বৌদ্ধশাস্ত্রে পুরুষতন্ত্র (পর্ব ০৩)
জাতক গল্প ছাড়া কিছু নয়। পাঠক বন্ধুগণ, যদি কেউ ছোট একটা সাপ দেখে সে একজন কে বলবে আমি একটা সাপ দেখেছি। সে আরেকজনকে বলবে, জৈনেক ব্যক্তি এত্তবড় একটা সাপ দেখেছে। সে আরেকজনকে বলবে জৈনেক ব্যক্তি একটা সাপ দেখেছে, তার দুইটা মথা। সে আরেকজনকে বলবে জৈনেক ব্যক্তি একটি সাপ দেখেছে সাপটি একটি মানুষ খাচ্ছিল। এভাবে বিবর্তণ হয়। জাতক বলুন আর বৌদ্ধ ধর্মের অধিকানংশ ধর্মীয় বই গুলো বলেন সব এমন ভাবে পরিবর্তীত হয়েছে যে, সেখানে অনুষ্টান, নিয়ম, গল্প, ভয় ছাড়া কিছু নাই।
নীলয়… আমি শুধু বলতে চাই যে, জাতক ইতিহাস নয়, এটা সম্পূর্ণ একটা সাহিত্য। আপনি ধর্মের সাথে এটাকে একিভুত করেছেন। জাতকের কাহিনী গুলো বুদ্ধের জীবদ্দশার আগে থেকেই(মহাভারতের ঘটনা দ্র) বিকশিত হতে হতে তার কাহিনী গুলো বিভিন্ন পর্যায়ে শতাব্দীর পর শতাব্দে ধরে লোক কাহিনীর সাথে মিশে আদি রূপ হারিয়েছে। আপনি যদি অষ্টম শতাব্দীর পন্ডিত বুদ্ধ ঘোষ এর সম্পাদনা ইংরেজি অনুবাদ দেখেন সেখানে এরকম কাহিনী পাবেন না । তার পর ও বলি, এটা নিছক সাহিত্য, ধর্মের ইতিহাসের সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই । আমার জানামতে,বুদ্ধের কোন discourse (সুত্র) এ নারী কে নিয়ে আলাদা বক্তব্য নেই। বুদ্ধ sexist ছিলেন কীনা, তাঁর জীবনী থেকে সেটা বের করতে পারেন, তাহলেই প্রমান করতে পারবেন যে ,তাঁর ধর্মে নারীর অবমাননা বিদ্যমান। আমি তা পাইনি। তিনি তাঁর সংঘ কে নারী থেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে চেয়েছেন। সেটা একটা সেনা বাহিনীর নিয়ম শৃঙ্খলার বিষয় হতে পারে, এ ছাড়া আর কোন ঘটনা বা বক্তব্য আমার জানা নেই । আপনি পারলে বের করবেন । কিন্তু জাতক নয় । এই জাতকের কাহিনী গুলো ইংরেজি সাহিত্যে চসার সার্থক ভাবে ব্যবহার করেছেন। আরও ভূরি প্রমান আছে যে এসব নিতান্তই বিশ্ব সাহিত্যের উপাদান । গল্পের মধ্যমে আদিতে নৈতিক শিক্ষা দেয়া হয়েছে। তাই অজান্তা, ইলরা, বরহুত বা সিংহল দ্বীপের ফ্রেসকো তে তা উঠে এসেছে । আপনি দিল্লী বিশ্ব বিদ্যালয়ের গবেষক ড কুমকুম রায়ের justice in jataka সন্দর্ভ টা পরে দেখতে পারেন। মূল জাতক পড়তে চাইলে http://www.sacred-texts.com/bud/j5/j5029.htm এই সাইট এ পড়তে পারেন। আর বাংলায় একটা অনুবাদ আছে , তা হল ‘জাতক সমগ্র’ ভাষান্তর এবং সম্পাদনা – সুধাংশু রঞ্জন ঘোষ, কলকাতা – এই বই এ মূল কাহিনী পড়তে পারেন। কারন কালে কালে অনেক লোককাহিনী তাতে প্রক্ষিপ্ত হয়েছে। বৌদ্ধ ধর্মকে প্রটেক্ট করা আমার উদ্যেশ্য নয় । আমি শুধু সত্যাসত্য বিবেচনা করতে চাই । প্রাচীন ধর্ম হওয়াতে অনেক কিছু প্রক্ষিপ্ত এবং প্রবিষ্ট হয়েছে, সেই সুত্রে গ্রীক পিথাগোরাসের জাতিস্মর উপাদান টা হয়তো এসেছে, যেমন গ্রীক দেবতার মুরতির আদলে বুদ্ধের ইমেজ এসেছে । বুদ্ধ এবং গ্রীক সভ্যতা সমসাময়ীক বলেই হয়তো এসব ফিউশন ঘটেছে, সেখানে বুদ্ধের কোন হাত নেই এবং অন্য ধর্মের মতো বিধিনিষেধ ও নেই , তাই অবাধে জায়গা করে নিয়েছে । সবাই জানে সম্রাট অশোকের দরবারে গ্রীক দূত এসেছিলেন। গ্রীক মিনেন্দার(মিলিন্দ) ছিলেন একজন বড় বৌদ্ধ ভিক্ষু।নালন্দার প্রজ্ঞাবান পন্ডিত্ রা সবাই এসেছেন ব্রাম্ম্যন্য ধর্ম থেকে ।
রমণী ছাড়া সুখ কিভাবে পাওয়া যায় সে সম্পর্কে কিছু লেখা নাই ???
কোন গাইড লাইন???
সমকামে আমার রুচি নেই আর দক্ষিন হস্ত দিয়ে কি প্রকৃত সুখ হয়???
১২-১২ বা ৭১-৭২ রমণী না চাইলেও একটা পার্মানেন্ট আর একটা পরকীয়া আর মাঝে মধ্যে একটু রুচি বদল তো প্রয়েজন :rotfl:
কিন্তু রমণী ছাড়া সুখ 😕
ক্যামনে কি ???
দেখেন তো কোন মন্ত্র থন্ত্র পান কিনা খুঁজে (H)
@এম এস নিলয়,
আপনি অষ্টাঙ্গিক মার্গ অনুসরণ করুন। :)) এর মাধ্যমে আপনি ভোগ, শোক, কামনা, বাসনা সব কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে যাবেন। :rotfl: তখন দেখবেন এই সংকীর্ণ চিন্তা ভাবনা আপনার আর আসবেই না। 😉
ভালো লাগল পড়ে। বুদ্ধ তাঁর মায়ের প্রতিও রুঢ় আচরণ করেন এমন জানা যায়। বৌদ্ধ সঙ্ঘে ভিক্ষুণীর প্রবেশ প্রাথমিক পর্বে বারণ ছিল। কথিত পরে শিষ্য আনন্দের যুক্তি মেনে তা সংশোধন করেন বুদ্ধ। আমার ধারণা, নারী বিষয়ে সমকালীন সমাজপতি, ব্রাম্ভণ্য শাস্ত্রকারদের রক্ষণশীলতা থেকে মুক্ত হতে পারেন নি ,যেটা আশ্চর্যের। সুজাতা বা আম্র্পালীদের তিনি কি করে উপেক্ষা করেন যখন তিনি নারী সম্পর্কে এত রুঢ়ভাষী তা সত্যিই বোধের অগম্য। আমি একবার এক সুপণ্ডিতের কাছে বুদ্ধের ব্যক্তিগত জীবন বিষয়ে এক উন্মোচন পাই। শুনে বিমূঢ় হয়ে যাই। সেটা এখানে উল্লেখ করছি যথেষ্ট দ্বিধায় পাছে কারও ব্যক্তিগত বিশ্বাস ও শ্রদ্ধাবোধ আহত হয়। সেটা যদিও আমার উদ্দেশ্য বা কাম্য নয় খোলাখুলি বলছি। গল্পটা ড্যান ব্রাউনের “দা ভিন্সি কোড”-র মতোই। যিশুর সঙ্গে মেরি ম্যাগডেলিনের যৌন সংসর্গজাত সন্তান পরবর্তী সময়ে রাজা আর্থারের পূর্বপুরুষ এমন কাহিনী গোপন অলিন্দে চালু আছে। অন্য মতে যিশু কাশ্মীরে আসেন এবং এক কাশ্মীরী কন্যাকে বিবাহ করে বহু সন্তানের জন্ম দেন। এন্ড্রিয়াস ফেবার কাইজার নামের গবেষক বাসরত সালিম বলে এক কাশ্মীরির সাক্ষাত্কার নিয়েছিলেন যেখানে সালিম নিজেকে যিশুর বংশধর বলে দাবি করে। যাইহোক, ড্যান ব্রাউন যিশুর পিতৃত্বের গল্পটি ব্যবহার করেন। বুদ্ধের সঙ্গে আম্র্পালীর যৌন সম্পর্ক থেকে অনুরূপভাবে না কি মৌর্য্য বংশের উত্পত্তি। ওই সুপন্ডিত আজ আর বেঁচে নেই। হতে পারে ড্যান ব্রাউনের উপন্যাস তাঁকে প্রভাবিত করেছিল। তবে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের উচ্চপদস্থ তিনি ব্রাম্ভী ও খরোষ্ঠী লিপির পাঠ জানতেন ,জানতেন হিব্রু ও গ্রিক। আমার কাছে ব্যাপরটা আজও রহস্য।
@অমিতাভ সেনগুপ্ত,
যতদূর জানি, মৌর্য রাজবংশের উৎপত্তি চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য করেছিলেন নন্দ রাজবংশকে পরাজিত করে। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যর নামানুসারে পরবর্তী বংশধরদের মৌর্য নামটা আসে, এর আগে এই নাম ছিল না। চন্দ্রগুপ্তের বংশ পরিচয় নিয়ে মতান্তর আছে। কেউ মনে করেন, তিনি কোন নন্দ যুবরাজ ও তার পরিচারিকা মুরা’র সন্তান ছিলেন। মৌর্য্য কথার উৎপত্তি মুরা থেকেই। কেউ কেউ আবার মনে করেন তিনি নেপালের তরাই অঞ্চলের এক প্রজাতন্ত্রের থেকে এসেছিলেন। আবার কেউ কেউ আবার মনে করেন তিনি গান্ধার অঞ্চলের এক প্রজাতন্ত্রের থেকে এসেছিলেন।
চন্দ্রগুপ্তের রাজত্বকাল ছিলো ৩২২ খ্রীষ্টপূর্ব-২৯৮ খ্রীষ্টপূর্ব, আর গৌতম বুদ্ধর জীবৎকাল ছিলো ৫৬৩ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকে ৪৩৮ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে। হিসাবে মিল পাচ্ছি না। :-Y
@নিলয় নীল,
গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য দেবার জন্য ধন্যবাদ। নিশ্চয়ই লক্ষ করে থাকবেন আমি কোনো তথ্য খাড়া করতে চাই নি। আমার পরিচিত এক পন্ডিতের মুখে শোনা একটি ব্যাখ্যার উপস্থাপনা করেছি মাত্র। সে ব্যাখ্যার যৌক্তিকতা নিয়েও কোনো মন্তব্য করি নি। এমনকী প্রয়াত এবং আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় ওই পন্ডিত মানুষটির উপর কোনো দায়ভার চাপিয়ে দিই নি। অন্তিমে এও বলেছি যে ওই ব্যাখ্যা আমার কাছে আজও রহস্যময়। ইতিহাসের সব অলিগলি ,এলিয়ট যাকে ” cunning passages ” বলেছেন, ঘোরার দাবিদার বোধহয় সবচেয়ে বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস গবেষকও নন । ইতিহাস হাইপথেসিস। নিয়ত পরিবর্তিত হতে থাকে নতুন আবিষ্কারের আলোয়। ভারতীয় উপমহাদেশের আড়াই হাজার বছর পুর্বকার ইতিহাস তো আরো অনুমান স্বাপেক্ষ। কারণ এ উপমহাদেশে কোনো হেরোডটাস,প্লিনি জন্মান নি। এবার “মুরা”-য় আসা যাক। আপনি অবশ্যই অবগত থাকবেন যে মৌর্য বংশের উত্পত্তি ও নামকরণ বিষয়ে কৌটিল্যর অর্থশাস্ত্র’, মত্সপুরাণ,বিষ্ণুপুরাণ, বায়ু পুরাণ, সূর্যবংশ বর্ণিত ব্যাখ্যা ও তত্ত্ব ছাড়াও আরও দুই তত্ত্ব রয়েছে। একটি ময়ূর পালক (পালনকারী) তত্ত্ব। দ্বিতীয় তত্ত্বে নেপালী তরাই ও উত্তর ভারতের গোরখপুর সংলগ্ন প্রাচীন পিপ্পালিবন গণরাজ্যের বাসিন্দা ক্ষুদ্র ক্ষত্রিয় জনগোষ্ঠী মোরিয়াদের উল্লেখ আছে। বৌদ্ধ ও জৈন শাস্ত্রে ‘মোরিয়া’ ,’মোরা’ ‘ময়ূর’ এ তিন শব্দের ঘনিষ্ঠতা স্বীকৃত। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যকে বৌদ্ধ শাস্ত্র বলছে ময়ূরগোষ্ঠী প্রধান পুত্র। আপনি নিশ্চয়ই টোটেম এনিমেল বিষয়ক মিথ সম্পর্কে পূর্ণ ওয়াকিবহাল। প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশে বহু নরগোষ্ঠীর গোত্র,পদবির উত্পত্তি এভাবে। আরও দুটি উদাহরণ -ভরদ্বাজ (পেঁচা) ,গর্গ (কুমির) ইত্যাদি।
অসাধারণ লিখেছেন | (Y)
সব ধর্মই একই রকমের পুরুষতান্ত্রিক এবং অনৈতিক উপদেশ-নির্দেশ এ ভরপুর | আপনার লেখার মাধ্যমেই বৌদ্ধ ধর্মের এই বিষয়গুলো জানতে পারছি | আরও লিখুন | 🙂
@তারিক,
ধন্যবাদ, সাথে থাকুন। (F)
তাজ্জব বনে গেলাম :-s
@এম এস নিলয়,
আমিও তাজ্জব বনে গিয়েছিলাম যখন প্রথম এই সব পাঠ করি। আমার একটা অন্য রকম ধারণা ছিলো বৌদ্ধধর্ম সম্পর্কে। 😕
@এম এস নিলয়,
হুম, এক ধর্ম নারীদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভোগে লাইসেন্স দেয়, আরেক ধর্ম নারীসং তযাগ করতে বলে।
এই নিয়েই দুনিয়া!
এই কথা যে বলেছে, নিশ্চিতভাবে আমার মনে হয় সে গে ছিল। সমকামিতা আমি অসমর্থন করি না। কিন্তু এই বাক্যে সে নিজের অভ্যাস ও ইচ্ছাটা কেন সবার উপর প্রজোয্য মনে করছে, সেটাই সমস্যা।
@তামান্না ঝুমু,
সংসার সব সময় সাধনার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, আর এই সংসারের কেন্দ্রে হলো নারী, সম্ভবত বৌদ্ধশাস্ত্রে নারী বিদ্বেষের এটি অন্যতম কারণ। বৌদ্ধ নিজের বউ রেখে সারা জীবন জঙ্গলে জঙ্গলে কাটিয়ে দুঃখ দর্শন রচনা করেছেন। এই দুঃখ দর্শন অনুসরণ করেই সম্ভবত প্রকৃত সুখ পাওয়ার কথা বুঝানো হয়েছে।
@নিলয় নীল,
এই বাণী মেনে নিলে ও অনুসরণ করলে তো মানব সম্প্রদায় বিলুপ্ত হয়ে যাবে অচিরে। মানুষের বংশবিস্তার বন্ধ হয়ে যাবে।
@তামান্না ঝুমু,
ওনি দুঃখ থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে দিয়েছেন।
বিয়ে করলে সংসার হয়। আর সংসার দুঃখ ময় বলেছেন।
বিয়ে করতে নিষেধ করেননি। বংশবিস্তার করতে নিষেধ করেননি।
@নিলয় নীল, বুদ্ধ ছিল একজন দায়িত্বহীন মানুষ!
@শেহজাদ আমান,
দ্বায়িত্ব হীন মানে .
অপমান করছেন কেন .
এই অধিকার কে দিল আপনাকে .
জানা না থাকলে জেনে নিবেন .
বুঝলেন।
@নিলয় নীল,
ঠিক নিলয়।
হায় হায় কি বলেন।এইটা আবার পুরুষতন্ত্র হল নাকি? এইটাতো পুরুষ বধ তন্ত্র। 😀
@অর্ফিউস,
বৌদ্ধ সাধন পথে নারী প্রতিবন্ধকতা হিসেবেই বিবেচিত হয়। আর এই জন্যই ইনিয়ে বিনিয়ে এই সব উপদেশ।
আচ্ছা তাহলে বুদ্ধ দেবের তার স্ত্রী বা সন্তানের প্রতি কোনো টান বা মানষিক ব্যথা ছিল না ?