বাইবেল এবং উট
আমরা সবাই বাইবেল কিংবা কোরান থেকে ইব্রাহীম (আব্রাহাম), ইয়াকুব (জেকব), ইউসুফ (যোসেফ) এইসব নবীদের গল্প পড়েছি। এইসব নবীদের গল্পের সাথে উট এবং উটবহরের রয়েছে ওতপ্রোত সম্পর্ক। আব্রাহাম উটের বহর নিয়ে মেসোপটেমিয়ায় নমরুদ এর রাজ্য থেকে ইমিগ্রেশন করে পবিত্র ভূমি কানান (আজকের প্যালেস্টাইন) এ হিব্রু জাতির পত্তন করেছিলো এটা তো আমরা সবাই জানি। এছাড়াও বিভিন্ন নবী’র উটপালন, ইউসুফের উটের বহর নিয়ে মিশরে বাণিজ্য, এরকম আরো অনেক ঘটনার সাথেই রয়েছে উটের বর্ণনা। এতোদিন পর্যন্ত খ্রীস্টান এবং ইহুদী বিশ্বাসী বাইবেল বিশারদ ও ইতিহাসবিদরা বলে আসছিলেন যে আব্রাহামের প্যালেস্টাইনে আগমন এবং সেই সাথে ইহুদী জাতির সূচনার ঐতিহাসিক সময়কাল মোটামুটি খ্রীস্ট পূর্ব ২২০০ থেকে ২০০০ সালের দিকে।
সম্প্রতি ইজরায়েলের তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্কিওলজিস্টরা ইজরায়েলে উটের প্রথম আবির্ভাবকে বৈজ্ঞানিকভাবে নিরূপন করার চেষ্টা করেছেন এবং তাদের প্রাপ্ত ফলাফল বাইবেলের ঐতিহাসিক সঠিকত্বকে একটা বড়ো আঘাত হেনেছে। আর্কিওলজিস্টরা পেয়েছেন যে এই অন্চলে উটের আবির্ভাব ঘটেছে বাইবেল বর্নিত আদি নবীদের যুগ (Age of the Patriarchs 2000-1500 BCE) এর অনেক পরে। এই আবিষ্কার কেবল বাইবেলের ঐতিহাসিকতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেনি, সেই সাথে বাইবেল যে বর্নিত ঘটনাগুলির অনেক পরে লেখা হয়েছিলো সেটাও স্পষ্ট করেছে।
প্রত্নতাত্তিকরা মোটামুটি একমত যে বন্য উটকে প্রথম বশীকরন করে ভারবাহী পশু হিসেবে গৃহপালিত করা হয় খ্রী: পূ: ২০০০ সালের দিকে আরব উপদ্বীপে, বর্তমানের সৌদী আরবে। এই গৃহপালিত উট ও উট দ্বারা মাল পরিবহনের ব্যবস্থা আরব উপদ্বীপ থেকেই আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন অন্চলে ছড়িয়ে পড়ে। তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্কিওলজি ডিপার্টমেন্ট এর ড: এরেজ বেন-ইউসেফ এবং ড: লিদার সাপির ইজরাইলে প্রথম গৃহপালিত উটের সন্ধানে প্রত্নতাত্তিক গবেষনা করেছেন ইজরাইল ও জর্ডানের সীমান্তবর্তী আরাভা উপত্যকায়।
আরাভা উপত্যকায় পাওয়া গেছে প্রাচীন তামার খনি। লোহার ব্যবহার প্রচলনের আগে ব্রোন্জ ছিলো সভ্যতার প্রধান ধাতু। ব্রোন্জ তৈরীর মূল উপাদান তামা একারনে ব্রোন্জ যুগে (খ্রী: পূ ৩০০০ থেকে খ্রী: পূ: ১০০০) যেখানেই তামার খনির সন্ধান পাওয়া যেতো সেখানেই শিল্প-বাণিজ্য ও জনপদ কেন্দ্র গড়ে উঠতো। প্রত্নতাত্তিকেরা আবিষ্কার করেছেন যে আরাভা উপত্যকা খ্রী: পূ: ১৩০০ থেকে মধ্যপ্রাচ্যে তামা উৎপাদনের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠে। সুতরাং সেই সময়ে যদি ইজরাইলে উটের প্রচলন হয়ে থাকে তবে নিশ্চই আরাভা উপত্যকায় তার নিদর্শন পাওয়া যাবে।
এরেজ বেন ইউসেফ এবং লিদার সাপির এর টীম আরাভা উপত্যকায় অনেক খনন, গবেষণা ও রেডিওকার্বন ডেটিং করে দেখেছেন যে এই উপত্যকায় প্রথম গৃহপালিত উটের দেহাবশেষ পাওয়া যাচ্ছে কেবল মাত্র খ্রী: পূ: ১০০০ এর কাছাকাছি এবং তার পরের সময় হতেই। আরও উল্লেখ্য যে খ্রী: পূ: ৯০০ এর দিকে প্রায় প্রতিটি সক্রিয় তামার খনির খননেই প্রচুর উটের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে কিন্তু খ্রী: পূ: ১০০০ এর পূর্বের সাইটগুলোতে কিছুই পাওয়া যায় নি। সেই সময়টি তো আব্রাহাম, আইজাকের সময় থেকে অনেক পরে তো বটেই এমনকি রাজা ডেভিড এর রাজত্বকালীন সময় (আনুমানিক খ্রী: পূ: ১১০০) এর ও পরে।
প্রত্নতাত্তিকেরা আরও পেয়েছেন যে এই সময়টিতে উটের হঠাৎ আবির্ভাবের সাথে সাথে তামা উৎপাদন টেকনোলজী ও জনবসতির ধরনেরও হঠাৎ বিপুল পরিবর্তন হয়। একারনে তারা অনুমান করছেন যে এই অন্চলে সেই সময়ে উটের প্রচলন করে কোনো বাইরের শক্তি, সম্ভবত মিশরীয় রাজ্য তাদের বাণিজ্য পথের মাধ্যমেই।
এই সংবাদটি পাঠকেরা পড়ে দেখতে পারেন নীচে দেয়া লিংক টি থেকে।
http://www.eurekalert.org/pub_releases/2014-02/afot-fif020314.php
তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয় এই আলোড়ন সৃষ্টিকারী গবেষনা প্রকাশের প্রেস রিলিজে সরাসরি মত প্রকাশ করে যে “” The discrepancy “is direct proof that the [Biblical] text was compiled well after the events it describes,”
এই আবিষ্কারটি যদি মোটামুটি স্বীকৃত ইতিহাস হিসেবে স্থান পেয়ে যায় তবে এর গুরুত্ব হবে অপরিসীম। এতে প্রথমত পরিষ্কার হবে যে বাইবেলে বর্নিত নবীদের গল্পগুলি কোনভাবেই পুরোপরি ঐতিহাসিক হতে পারে না এবং বাইবেলের গল্পকাহিনীগুলি লেখা হয়েছিলো খ্রী: পূ: ৮০০-৯০০ সালের পরে, যখন ইজরায়েলে গৃহপালিত উটের ব্যবহার ব্যপক হারে ছড়িয়ে পরেছিলো। যেহেতু সেই সময়ে ইজরায়েলে অনেক উট ছিলো সেহেতু বাইবেলের কাহিনীকাররা ধরেই নিয়েছিলেন যে সেই আব্রাহাম, যোসেফ এর সময়েও উট সর্বত্র প্রচলিত ছিলো।
তবে বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কারটি নিয়ে আরো কিছু বলার আছে। পৃথিবীতে বর্তমানে সবচেয়ে বেশী প্রত্নতাত্তিক খনন ও গবেষনা পরিচালিত হয় ইজরায়েলে। যেহেতু ইজরায়েল বাইবেল বর্নিত ঐতিহাসিক পবিত্রভূমি, সেহেতু ঈজরায়েলের মাটিতে খনন করে বাইবেলকে সত্য প্রমানের প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন খোজার জন্যে ফান্ডের অভাব হয় না। বিশেষ করে আমেরিকার রক্ষনশীল খ্রীষ্টানরা তো এ ধরনের খননের জন্যে টাকার ঝাপি খুলে বসেই আছে। যে কোন একটি সময়ে ইজরায়েলে শত শত অ্যামেচার প্রত্নতাত্তিক দল খনন করছে বাইবেলে বর্নিত ঘটনাগুলিকে সত্য প্রমানের জন্যে।
বাইবেলের ঐতিহাসিকতা প্রমানের নিদর্শন পাওয়ার পেছনে ইজরায়েলীদের ও অনেক স্বার্থ রয়েছে। ইজরায়েল জানে যে প্যালেস্টাইনীদের উৎখাত করে সেখানে নতুন করে আবার ইজরায়েল রাষ্ট্র গড়ার পেছনে একটি দাবীকে বারবার বড়ো সমর্থন হিসেবে দেখানো হয় যে এই ভূমিটি অনেক হাজার বছর আগে থেকেই ইহুদীদের বাসভূমি। সুতরাং বাইবেলের পক্ষে যায় এমন কোনো নিদর্শন, পক্ষান্তরে বর্তমান ইজরাইলের পক্ষেই যায়। সুতরাং ইতিহাস আর প্রত্নতত্ত ইজরায়েলীদের কাছে কেবল ইতিহাস আর জ্ঞানচর্চার বিষয় নয়, বর্তমানের রাজনীতি আর রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার জন্যে অতি গুরুত্বপূর্ন জলজ্যান্ত বিষয়।
কিন্তু প্রত্নতত্তের উপরে এতো কিছু নির্ভর থাকার পরেও ইজরায়েলের যারা খ্যাতনামা আর্কিওলজিস্ট, তারা অত্যেন্ত অবজেক্টিভ ভাবেই ইতিহাস ও প্রত্নতত্তের চর্চা করছেন। ইজরায়েলের বিখ্যাত আর্কিওলজিস্টরা এমন অনেক আবিষ্কার ও মত দিয়েছেন যা মোটের উপরে বাইবেলের বিরুদ্ধেই যায়। জিভ হারজগ নামের একজন প্রত্নতত্তবিদ, ইজরায়েলী একাডেমিক আর্কিওলজিস্টদের গত ৭০ বছরের গবেষণা ও খননকে সামারাইজ করেছেন এভাবে
“This is what archaeologists have learned from their excavations in the Land of Israel: the Israelites were never in Egypt, did not wander in the desert, did not conquer the land in a military campaign and did not pass it on to the 12 tribes of Israel. Perhaps even harder to swallow is the fact that the united monarchy of David and Solomon, which is described by the Bible as a regional power, was at most a small tribal kingdom. And it will come as an unpleasant shock to many that the God of Israel, Jehovah, had a female consort and that the early Israelite religion adopted monotheism only in the waning period of the monarchy and not at Mount Sinai.Most of those who are engaged in scientific work in the interlocking spheres of the Bible, archaeology and the history of the Jewish people – and who once went into the field looking for proof to corroborate the Bible story – now agree that the historic events relating to the stages of the Jewish people’s emergence are radically different from what that story tells.”
http://mideastfacts.org/facts/?option=com_content&task=view&id=32&Itemid=34
তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক প্রত্নতত্তবিদ প্রফেসর ইজরেল ফিংকেলস্টাইন, যাকে বাইবেল প্রত্নতত্তের পিতা বলা হয়, তার গবেষনায় মত প্রকাশ করেন যে রাজা দাউদ-সলোমনের সময়ে জেরুজালেম ছিলো এক ধনী, বিশাল রাজ্যের রাজধানী তো নয়ই বরং ছোট্ট একটি উপজাতিয় শহর। আশেপাশে মিশর, আসিরীয়, ব্যাবিলনীয় রাজ্যগুলির মাঝে অপাংক্তেয় একটি গ্রামের মতো।
https://www.middleeastmonitor.com/news/middle-east/2705-senior-israeli-archaeologist-casts-doubt-on-jewish-heritage-of-jerusalem
আমরা দেখছি যে এতো বড়ো স্টেক থাকা সত্বেও ইজরাইলে ফিংকেলস্টাইন, এরেজ বেন ইউসেফ, লিদার সাপির এর মতো খ্যাতনামা প্রত্নতত্তবিদরা নির্মোহভাবে কেবল ইতিহাস ও জ্ঞানের সাধনাই করছেন। সেই জ্ঞান যদি নিজ দেশ ও জাতির জন্যে সুখকর না হয় তবুও তার চর্চা ও প্রকাশ তাদের কোনো আপত্তি নেই।
আমাদের দেশে ইতিহাস ও প্রত্নতত্তের গবেষণা ও আলোচনায় যে জিনিষটি মুখ্য হয়ে দেখা দেয় সেটি হলো ইতিহাসের মূল উদ্দ্যেশ্যই হলো যেনো বাংলাদেশ ও বাংগালী জাতির গৌরবগাথার বর্ণনা। নির্মোহভাবে ইতিহাসচর্চার কোনো ট্র্যাডিশনই আমাদের মাঝে গড়ে উঠে নি। একথা অনস্বীকার্য যে জ্ঞান-বিজ্ঞান, ইতিহাস-সমাজ চেতনায় আমরা ইহুদী এবং অন্য অনেক জাতির চেয়েই পিছিয়ে আছি। কিন্তু এটা সময় ক্ষেপনের কোনো অজুহাত হতে পারে না। চারিদিকে এতো নিদর্শন থাকা সত্বেও আমরা পৃথিবীর আধুনিক চিন্তা-চেতনাকে গ্রহন করবো না বরং পশ্চাদপর ট্রাইবাল চিন্তা-ভাবনা দ্বারাই পরিচালিত হবো, এই উদ্দ্যেশ্যে অবিচল থাকলে আমরা ক্রমাগত পিছিয়েই থাকবো।
যীশু বলেছেন “ধনবানের স্বর্গে প্রবেশ করা অপেক্ষা সূচের ফুটো দিয়ে উটের প্রবেশ করা সহজ।”
মথি ১৯ অধ্যায় ২৪ পদ এবং লুক ১৮ অধ্যায় ২৫ পদ।
কিন্তু আমি কি বলি জানেন ???
বাইবেল যদি ঈশ্বরের লেখা হয় তবে সূচের ফুটো দিয়ে উটের প্রবেশ পানি খাওয়ার মতই সহজ কাজ 🙂
আপনার লেখাটি ভালো লাগলো; অবিশ্বাসের আরও একটি পয়েন্ট উন্মোচিত করলেন যা আগে খেয়াল করিনি বা জানিনি কখনো 🙂
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ :clap
বাইবেল এবং উটের এই নতুন তথ্য বেশ আলোড়ন তুলেছে। এই আবিষ্কার ধর্ম ও রাজনীতি দুই ক্ষেত্রেই কেনো এতো গুরুত্বপূর্ন এটা জানতে হলে বিশ্বের সেরা পত্রিকাগুলোয় কয়েকটি লেখাটি পড়ে দেখতে পারেন। কয়েকটি বিশেষ অংশ।
There are 21 references to camels in the first books of the Bible, and now we know they are all made up.
Some of them are quite startlingly verisimilitudinous, such as the story of Abraham’s servant finding a wife for Isaac in Genesis 24: “Then the servant left, taking with him 10 of his master’s camels loaded with all kinds of good things from his master. He set out for Aram Naharaim and made his way to the town of Nahor. He made the camels kneel down near the well outside the town; it was towards evening, the time the women go out to draw water.”
But these camels are made up, all 10 of them. Two Israeli archaeozoologists have sifted through a site just north of modern Eilat looking for camel bones, which can be dated by radio carbon.
http://www.theguardian.com/commentisfree/andrewbrown/2014/feb/13/old-testament-camels-zionism-genesis
New York Times পত্রিকায়
http://www.nytimes.com/2014/02/11/science/camels-had-no-business-in-genesis.html?_r=0
প্রশ্ন হচ্ছেঃ ‘ভূমিটি অনেক হাজার বছর আগে থেকেই ইহুদীদের বাসভূমি’ – এমনকি এমন ঐতিহাসিক ও বৈজ্ঞানিক প্রমান মিললেও প্যালস্টাইনীদের উৎখাত করে আবার ইজরায়েল রাষ্ট্র গড়াটা বৈধ ও যৌক্তিক ভিত্তি পেয়ে যায়??? পৃথিবীর কয়টা যুক্তিশীল মানুষ তা সমর্থন করবে?
তাই নাকি?? বাইবেলের পক্ষে গেলেই ইজরায়েলের পক্ষে যায়??? অসম্ভব ফাইন যুক্তি তো!
(যতদূর বুঝতে পারি, আপনি বলতে চেয়েছেন, ইজরাইল বাইবেলের আবেগকে পুঁজি করে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারে, কিন্তু সে তো সবাই করছে, সব ধর্মের লোকই তো বলছেন, প্যালেস্টাইনে তাদের মূল্যবান ঐতিহাসিক নিদর্শন আছে!)
যাই হোক, দীর্ঘদিন বাদে ভিন্ন টপিক নিয়ে লিখছেন দেখে ভাল লাগল। আপনার এ ধরনের লেখাগুলো মুক্তমনার জন্য মানানসই।
@কাজি মামুন, আপনি কি কমেন্ট টি আমাকে করেছেন নাকি ঈজরায়েলী জাতীয়তাবাদীদেরকে করেছেন এটা বুঝলাম না। কথা শুনে মনে হচ্ছে আমার কথাকেই ব্যংগ করতে চেয়েছেন। ব্যাপারটি স্পষ্ট করা দরকার ছিলো। আমি আগেও বলেছি যে খামোকা বড়োদের কথাবার্তার মধ্যে কিছু না জেনে নাক গলানোর স্বভাবটি বাদ দিন।
হুয়ান কোল (Juan Cole) হলো মধ্যপ্রাচ্যের বিষয়ে অন্যতম বিশেষজ্ঞ বলে সবার কাছে স্বীকৃত। তিনি তার বহুল পঠিত ব্লগে এই উটের সংবাদটিকে কেমন ভাবে উপস্থাপন করেছেন, সেটা দেখুন।
A new paper by Israeli archeologists Lidar Sapir-Hen and Erez Ben-Yosef, posted at the University of Tel Aviv web site , is bad news for biblical literalists and far right wing Israeli nationalists who use the Bible for support.
In short, those far right wing Israelis who use the bible stories as a basis for kicking Palestinians out of their homes in East Jerusalem are making many mistakes, including historical ones, as well as human rights mistakes.
http://www.juancole.com/2014/02/jerusalem-archeology-written.html
@সফিক,
বড়োদের কথাবার্তায় অংশ না নিলে ছোটরা শিখবে কি করে! নাকি চিরকাল বড় থাকতে চান? ছোটদের বয়কট করে?
ও হ্যা, এত কিছু বললেন, কিন্তু একটি প্রশ্নের উত্তরও দিলেন না! আপনার লাইন কোট করেই ত প্রশ্ন করা হয়েছিল! দয়া করে এক কথায় জানাবেন নীচের প্রশ্নগুলিরঃ
১.আপনি কি মনে করেন, প্যালেস্টান ইহুদীদের হাজার বছরের বাসভূমি প্রমান হলেই জায়নাবাদ আন্দলন বা প্যালেস্টাইনিদের উচ্ছেদকরন একটা যৌক্তিক ভিত্তি পায়?
২.আপনি কি মনে করেন, বাইবেলের পক্ষে গেলেই ইসরায়েলের পক্ষে যায়?
৩.আপনি কি মনে করেন, শুধু ইহুদিরাই পুস্তকের উপর ভিত্তি করে প্যালেস্টাইনের উপর দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়? অন্য কোন জাতির পুস্তক/ইতিহাস নির্ভরতা নেই সেখানে?
@কাজি মামুন,
প্রশ্নগুলি আমার জন্য না, তাও চেষ্টা করি ধারনা প্রকাশ করতে।
– সোজা কথায় না,যায় না। ধর্মগ্রন্থে কি লেখা আছে কি প্রমান হল হল না সে দিয়ে বর্তমান যুগের বিশাল জটিল এক ভূ-রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান কোনভাবেই হয় না। এসব তথাকথিত স্বাক্ষ্য প্রমান নিয়ে নিশ্চয়ই জাতিসঙ্ঘের মীটিং কিংবা ইসরাইল/প্যালেষ্টাইন আলোচনায় বসবে না। কিন্তু এইগুলি আসলে কাজে লাগবে নিজেদের নাগরিকদের মনোবল শক্ত করতে, ব্রাদারহুড ফিলিং বৃদ্ধি করতে। ইসরাইলকে টিকে থাকার জন্য এর গুরুত্ব অসীম।
@কাজি মামুন, আমার অশোভন মন্তব্যের জন্যে দু:ক্ষিত। আপনি যাকে উদ্দ্যেশ্য করেই কমেন্ট করে থাকেন আমার এভাবে রিয়্যাক্ট করা ঠিক হয় নি। আমি পাঠকদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।
তবে আপনিও আশা করি প্রভোকেটিভ কথা বলা বাদ দেবেন। এই ধরনের লেখা মুক্তমনার জন্যে মানানসই আর আওয়ামী লীগ কিংবা চেতনাবাজীকে বংশদন্ড দেয়া লেখা লিখলে সেটা মুক্তমনার উপযুক্ত নয়, এই সার্টিফিকেট দেয়া বান্ছনীয় নয়।
আপনার লেখা ভাল লেগেছে। তবে শেষে আপনি বাঙালীর ইতিহস চর্চা নিয়ে যেই মতামত দিয়েছেন তার সাথে একমত হতে পারলাম না।
বাংলার ইতিহাস জানতে গেলেই সামনে চলে আসে বহির্গতরা কিভাবে এখানে এসে এদেশের মানুষকে বর্ণ প্রথার নাগপাশ থেকে মুক্ত করেছে। এরপরই ইতিহাস চর্চার পরিবর্তে মুখ্য হয়ে উঠে আরবীয় ধর্মের গুনকীর্তন।
তবে নির্মোহ দৃষ্টিতে বাঙলার ইতিহাস চর্চা শুরু এখনো হয়নি। ইজরাইলে ফিংকেলস্টাইন এর কাজের উপর একটা প্রামান্যচিত্র দেখেছিলাম The Bible Unearthed যেখানে তিনি মুসা, দাউদ সহ সেমিটিক নবীদের আগমনের প্রন্ততাত্ত্বিক নিদর্শন খুজে বেড়িয়েছেন খোদ ইজরাইলে বসেই। আমাদের মাঝে এমন মানসিক বিবর্তন এখনো হয়নি। বাঙালীর ইতিহাস চর্চার পরিবর্তে আরবের বেদুইনদের জীবনচর্চাই এখানে বেশী হয়। তাই বাংলায় আবির্ভাবের সময়কার লেখিকা তিলোপা এবং চর্যাপদের উল্লেখ শুধু পরীক্ষায় খাতায়ই সীমাবদ্ধ। জাতীয় জীবনে এর কোন ভুমিকাই এখন আর খুজে পাওয়া যায়না। আমরা আত্মবিস্মৃত জাতি।
বাইবেল মহিমান্বিত করার প্রজেক্টে গোঁড়া খ্রীষ্টানদের ফান্ডিং এ পরিচালিত গবেষনা উলটো বাইবেলে বর্নিত কাহিনীরই ফাঁকই প্রকাশ বেশ মজার মনে হচ্ছে। নাকি এটা আবার মধ্যযুগের ইহুদী ঠ্যাংগানোর শাস্তি স্বরুপ খ্রীষ্টানদের ওপর ইহুদীদের ইন্টেলেকচুয়াল প্রতিশোধ? ইহুদী গবেষকদের নিশ্চয়ই মাথার দাম ধরা হবে (এমনকি রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও), চোরের মত তাদের পালিয়ে বেড়াতে হবে। মৌলবাদী তো সব ধর্মেই আছে আমরা বলে থাকি।
হারজগ সাহেবের ফাইন্ডিংস তো রীতিমত ইহুদী জাতীয়তাবাদের ব্যাকবোন বলে প্রচলিত কেচ্ছা ধরেই টান দেয় মনে হচ্ছে। উনিই বা উগ্র ইহুদীদের দেশে মাথা যথাস্থানে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন কি করে কে জানে।
আমাদের মধ্যে সত্য গ্রহন না করতে পারার মানসিক রোগ, নির্মোহ না থাকতে পারার শুধু ইতিহাসেই নয়, সব কিছুর ভেতরেই পাওয়া যায়। এর চরম কুফলের উদাহরন হল অন্ধ রাজনৈতিক দল প্রীতির চর্চা করতে করতে সফলভাবে এক মগের মুল্লুক সৃষ্টি করতে পারা। কথা হল নির্মোহ না হতে পারার কারন অনুমান করা কি খুব কঠিন? কোন ধরনের দর্শন মানুষকে চরম ভাবে পক্ষপাতিত্ব করার শিক্ষা দেয়?
প্রত্নতত্ত্ব বেশ ইন্টারেষ্টিং লাগে ছোটবেলা থেকেই, নিঃসন্দেহে মানব ইতিহাস সভ্যতার গতি প্রকৃতি জানতে নয়, চরম এভেঞ্চারের মজা পাওয়া যায় বলে। আশা করি এমন লেখা আরো বড় আকারে দেবেন।
@আদিল মাহমুদ,এখানে একটা ব্যাপার আছে। ফিংকেলস্টাইন, এরেজ বেন ইউসেফ, লিদার সাপির এর মতো আর্কিওলজিস্টরা সাধারনত ইজরাইল অথবা অন্য কোন দেশের ইউনিভার্সিটি’র সাথে যুক্ত। তাদের অবজেক্টিভিটি নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। আপনি নিজেই জানেন যে ইজরাইলের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি রিসার্চের জন্যে দুনিয়ায় কতটা খ্যাতনামা।
আসলে Biblical Archaeology তে মেতে আছে অনেক আ্যামেচার, শৌখীন আর্কিওলজিস্ট। এদের কারো কারো ভালো ডিগ্রী আছে, কারো নেই। এদের আসল কাজ হলো আমেরিকা, ইউরোপে ধনী রক্ষনশীল বুড়োবুড়ি দের কাছে গিয়ে বলা যে আমি ইজরাইলের অমুক জায়গায় অমুক নবীর অমুক নিদর্শন পেয়েছি। এখন এটা খুড়ে বের করে আনতে পারলেই বাইবেলের অমুক জিনিষটো প্রমান হয়ে যাবে। বুড়ো বুড়ি রাও সওয়াবের লোভে অকাতরে এসব শৌখীন আর্কিওলজিস্টদের টাকা পয়সা বিলিয়ে দেয়। এজন্য সারা ইজরাইলেই অসংখ্য খনন চলছে। খননের চাহিদা এতো যে ইজরাইল সরকার অনেক বাধা নিষেধ আরোপ করেছে, তবুও নানা রকম লবিং-টবিং করে খোড়া খুড়ি চলছে। বলাই বাহুল্য যে অনেক শৌখীন আর্কিওলজিস্ট এর আসল উদ্দ্যেশ্য দানের টাকার অধিকাংশ মেরে দিয়ে, মরুভূমির মাঝে খামোকাই কিছুদিন খোড়াখুড়ি করা।
এসব সৌখীন প্রত্নতত্তবিদদের সাথে ইউনিভার্সিটির আর্কিওলজিস্টদের সম্পর্ক তেমন একটা নেই। ইজরাইলের একাডেমিক আর্কিওলজিস্টদের সুনাম আছে বেশ ভালোই।
@সফিক,
আমারই তো লোভ হচ্ছে গোল টুপি মাথায় চড়িয়ে এই ব্যাবসায় নেমে যাইঃ)।
আমার আগের বস ছিলেন লেবাননের লোক, উনি একদিন বলছিলেন মধ্যপ্রাচ্য পুরোটাই কেমন পুরো কীর্তিতে ভরপুর, ওনারা ছোটবেলায় দুই বন্ধু বাড়ির পেছনের বালু হাত দিয়ে সরিয়ে সরিয়েই বাইজেন্টাইন আমলের ইঁটের সারি বার করেছিলেন। ইসরাইলে আরো ভালভাবেই পাওয়া যাবার কথা।
যে কোন গবেষনা কাজেই মনে হয় ইসরাইলীদের সুনাম আছে।