একটি ইসলাম-প্রধান দেশের এক হিন্দু বাড়িতে আমার জন্ম। পিত্তৃতান্ত্রিক সমাজে আমি একজন মেয়ে হয়ে জন্মেছি। ধর্মভীরু জগতে আমি একজন স্বঘোষিত নাস্তিক। আশেপাশে যাই ঘটতে দেখি না কেন, পরিসংখ্যান দিয়ে নিজেকে সান্তনা দেয়া আমার ছোটবেলার অভ্যাস। যুগ যুগ ধরে দুর্বল ও সংখ্যালঘুরা সবল ও সংখ্যাগরিষ্ঠ দ্বারা অত্যাচারিত হয়ে আসছে। এই তো স্বাভাবিক। এই তো জীবন। মানবমন যে তবু কত অদ্ভুত, কত অবুঝ! যখনই দেখি নিজের দেশ পুড়ছে, ছারখার হচ্ছে, পরিসংখ্যানের পর্দার আড়ালে আর লুকিয়ে থাকতে পারি না। বেরিয়ে আসে ভেতরের যত রাগ, ঘৃণা, হতাশা। জং ধরা কলমটাও নিশপিশ করতে থাকে অস্থিরতায়। জং ছাড়াতে পারি না। তবু, কয়েক মুহূর্তের জন্য হলেও রাগ তো ঝাড়তে পারি!
পলাতকা
কোন এক একলা জানালায়,
অকপট যৌবনে দূরদেশী কোন মেয়ে
স্বপ্ন দেখেছিল—
বাড়ি ফিরবে গলা খুলে গান গেয়ে।
দেখলে তাকে গলা টিপে ধোরো,
পিছপা হয়ো না আর।
জন্ম যার চিৎকারে,
সঙ্গীতের অধিকার
কে কবে দিয়েছিল তারে?
গলা চিরলে দেখতে পাবে
তার রক্ত লাল নেই।
তার রক্ত বিষের চেয়ে নীল।
জীবনানন্দ, তোমার সোনালী ডানার চিল
তাকে আর ডাকে না—
তোমার ভেজা মেঘ, মাঠ, পথ,
চাইলেও চিনতে পারে না তাকে।
তবু জীবনের কোন এক ফাঁকে
নিয়েছে সে বাঁচার- বাঁচতে চাওয়ার- শপথ।
তাই আজ যখন
পুড়ছে তোমার ক্লান্ত পতাকা,
দূরে হাসে, দীর্ঘ দীর্ঘশ্বাসে,
ঘরছাড়া এক মৌনী পলাতকা।
ভাস্বতী
৭ জানুয়ারি, ২০১৪
এটা অস্বাভাবিক ভাস্বতী। এটার প্রতিবাদে আপনার কলম থেকে আগুন ঝরুক
@কাজী রহমান,
আগুন খুঁজে পেতে এখন কষ্ট হয়। কেবল স্ফুলিঙ্গই বের হয় এই যা! তবু, মনে অনেক শান্তি পাই কিছু লিখলে।
ধন্যবাদ।
মনের ক্ষোভ, বেদনা, হতাশার প্রতিফলন ঝরেছে কবিতায়
@গীতা দাস,
এখন লেখালেখি খুব কম করা হয়। রাগ আর দুঃখ যখন বাকরুদ্ধ করে দেয়, কেবল তখনই ভেতর থেকে কবিতা আসে। সে রাগ আর দুঃখ বুঝতে পারার জন্য ধন্যবাদ।
কবিতা অনেক সময়ই হয়ে ওঠে আমাদের ক্রোধ ও আবেগ বহিঃপ্রকাশ।
ধন্যবাদ আপনার কবিতার উদ্ধৃতিটি শেয়ার করার জন্য।
@ভাস্বতী, ধন্যবাধ আপনাকেও আপনার সুন্দর কবিতাটি আমাদের পড়ার শুজুক করে দেয়ার জন্য ।
আপনার কবিতা পড়ে আমার লেখা একটি কবিতার কিছু লাইন মনে পড়েগেল ।
আমি ভালনেই
আমি ভাল থাকতে পারিনা বিষদর বেদনার কালো হিংস্র থাবার জন্য ।
আমি ভাল থাকতে পারিনা ধর্মান্ধ সমাজের নুংরা প্রথার জন্য
আমি ভাল থাকতে পারিনা টকবাজ মানুষের প্রথারনার জন্য
আমি ভাল থাকে পারিনা ভণ্ডেরা যখন লণ্ডভণ্ড করে দেয় বাংলাদেশের শহীদ মিনার
আমি ভাল থাকতে পারিনা বিশ্যের আনাচে কানাচে যখন সবলের আঘাতে দুরবলের মাতা ফেটে রক্তঝরে লঙ্গন হয় মানবাতা ।
আমি ভাল থাকতে পারিনা যখন মানুষ টাকার লোভে বিক্রি করে নিজের বিবেক। ।
আমি সেই দিন ভাল থাকব
যেদিন তোমারা তুলেনিবে হাতে মুহন বাঁশের বাঁশি
যে বাঁশীর মধুর সুরের মুর্ছনায় আকাশে , বাতাসে
জাগিবে নৃত্য
আর সারা পৃথিবীর মানুষের পুলকিত হবে
বেদনা বিভুর চিত্য ।