‘প্রথম আলো’ নামের একটা সুশীল পত্রিকা আছে দেশে। সবাই এরে চেনে। অনেকে আবার একে আদর করে ‘প্রগতিশীল পত্রিকা’ বলে। কেউ বলে ‘নিরপেক্ষ’। মতিউর রহমান এর সম্পাদক, জাফর ইকবাল, হাবিবুর রহমানের মতো সজ্জনেরা এখানে কলাম লেখেন। আরো আছেন আনিসুল হক, ফারুক ওয়াসিফ, মিজানুর রহমান, সোহরাব হাসান, উৎপল শুভ্র। আমরা আশাবাদী হই। দেখলাম, এবারের নির্বাচন ফিচার করতে গিয়ে প্রথম আলো কতকগুলো ছবি ছাপিয়েছে তাদের পত্রিকায়। ছবিগুলো দেখলেই বোঝা যাবে এর ভিতরের ‘নিরপেক্ষ’ এজেন্ডা –
প্রথম ছবিটা এরকমের (ছবিটি নিয়ে এমনকি জালিয়াতির অভিযোগও এসেছে, এখানে দ্রঃ):
আরেকটি ছবি দেখুন, সিলেটের চা বাগানের শ্রমিকরা, সংখ্যালঘুরা ভোট দিচ্ছেন –
কিংবা এটি-
কি বোঝা গেল? ভোট তো হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ সবাই দিয়েছে বোধ করি, কিন্তু প্রথম আলোর ছবি দেখলে মনে হবে কেবল শাঁখা সিঁদুর পরা নারীরাই দেশে থাকেন, তারাই কেবল ভোট দেন! ছবি দেখে মনে হয় হিন্দুরা ছাড়া বোধ হয় আর কেউ ভোটকেন্দ্রেই যায়নি । এক ফেসবুক ইউজার তো প্রশ্ন করেই বসেছেন – ‘কেবল মাসিরা ভোটকেন্দ্রে ক্যান, খালারা কই?’। ঠিক প্রশ্ন কইচ্ছেন কর্তা। আপ্নের ‘মাসিরা ভোটকেন্দ্রে ক্যান’ নামক পিথাগোরাসের উপপাদ্যের পিছে লাইন ধরে সম্পূরক প্রতিপাদ্যও ক্যানো জানি আসে মনের কোণে – ‘বাংলাদেশে ঠিক নির্বাচনের পর পরই কেন শুধু সংখ্যালঘু গ্রামগুলোর ওপরই আক্রমণ হয়’?
প্রশ্নগুলো সহজ। উত্তরও তো জানা।
আজ দেখলাম যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে নিবেদিতপ্রাণ গবেষক, আইনজীবী, ব্লগার, এবং মানবাধিকার কর্মী রায়হান রশীদ ফেসবুকে স্ট্যাটাসে লিখেছেন –
“ভোটার-সারিতে অপেক্ষমাণ হিন্দুদের ছবি ছাপিয়ে সারা দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর বিম্পিজামাতের আক্রমণকে উসকানি দেওয়ার জন্য দৈনিক প্রথম আলোর ফটো-সাংবাদিক সাজিদ হোসেন, সম্পাদক মতিউর রহমান ও প্রকাশকের বিচার চাই। অবিলম্বে তাদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের আওতায় এনে গ্রেফতার করা হোক।” ( হাঁটুপানির জলদস্যু)
১০০ ভাগ সমর্থন করি এই দাবী। তদন্ত চাই, চাই ব্যবস্থাগ্রহণ। এভাবে চলতে পারে না। দেশটা মিডিয়া-মগদেরও একার মুল্লুক না। হাতে শক্তিশালী প্রচারযন্ত্র আছে বলেই তার সদম্ভ যথেচ্ছ অপব্যবহার হবে, এটা মানি না। রুয়ান্ডা আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালে গণহত্যার উস্কানীদাতা ‘কাংগুরা’ পত্রিকা গণহত্যায় তাদের দায় এড়াতে পারেনি। ভিন্ন ধর্মাবলম্বী সংখ্যালঘু, ধর্মে অবিশ্বাসী তরুণ, প্রগতিশীল সেক্যুলার রাজনীতিতে বিশ্বাসী কর্মী – এধরণের মানুষদের নির্মূল করার যেন কোন বিশেষ প্রোজেক্টে বিশ্বস্ত সহযোগীর ভূমিকায় নেমেছে মিডিয়ার একাংশ। ‘আমার দেশ’, ‘সংগ্রাম’, ‘দিগন্ত টেলিভিশন’ দিয়ে এই গণহত্যামূলক নির্মূলীকরণ উস্কানির শুরু। প্রথম আলোর মতো তথাকথিত বিবেকবান সুশীল পত্রিকাগুলোও নানা সময়ে ঠারে ঠারে এই অপকর্মগুলো করেছে। কিন্তু আজকে পত্রিকাটি সংলঘুদের ছবি ছাপিয়ে যা করলো তা বাংলাদেশের মিডিয়ার জন্য একটা কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে। এখন সবই উম্মোচিত। সাম্প্রতিক বাংলালিকস এর সৌজন্যে আমরা এই সংঘবদ্ধ অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত পেয়েছি। এর মূলোৎপাটন দেখতে চাই আমরা।
রায়হান রশীদদের দেখে আশাবাদী হতে মন চায়। কিন্তু হই ক্যামনে?
একটা ছোট পরিসংখ্যান দেই। বাংলাদেশে ১৯৪১ সালে হিন্দু জনসংখ্যা ছিল শতকরা ২৮ ভাগ। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের অব্যবহিত পরে তা শতকরা ২২ ভাগে এসে দাঁড়ায়। এরপর থেকেই সংখ্যালঘুদের উপর ক্রমাগত অত্যাচার এবং নিপীড়নের ধারাবাহিকতায় দেশটিতে ক্রমশ হিন্দুদের সংখ্যা কমতে থাকে। ১৯৬১ সালে ১৮.৫%, ১৯৭৪ সালে কমে দাঁড়ায় ১৩.৫%, ১৯৮১ সালে ১২.১%, এবং ১৯৯১ সালে ১০% এ এসে দাঁড়ায়। সাম্প্রতিক সময়গুলোতে হিন্দুদের শতকরা হার কমে ৮ ভগের নিচে নেমে এসেছে বলে অনুমিত হয়। যারা বিলুপ্ত বন্য প্রাণী নিয়ে চিন্তিত, এখন বাংলাদেশের হিন্দুদের দিকে একটু নেক নজর দিতে পারেন। আপনাদের নেক নজর থাকলে কে জানে – সাইবেরিয়ান বাঘ, মেরু ভল্লুক কিংবা বিরল প্রজাতির পাণ্ডাদের মত হয়তো বিলুপ্তির হাত থেকে হিন্দুরা রক্ষা পেলেও পেতে পারে এ যাত্রা।
প্রতিবার দশে নির্বাচন নিয়ে তামাসা শুরু হয়, আর তামাসার পর শুরু হয় গণহারে কচুকাটা। এভাবেই চলছে। ১৯৪৭ এ একবার, ’৬৫তে পাক-ভারত যুদ্ধের পরে আরো একবার ’৭১ এ তো প্রতিদিনই , এরশাদের আমলে দুবার, ২০০১ সালে বিএনপি-জামাত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পরে দাঙ্গায় নাজেহাল হয়ে বহু হিন্দু হিন্দু পার্শ্ববর্তী ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল এদেশের চৌদ্দ পুরুষের ভিটেমাটি ছেড়ে। পূর্ণিমা রাণীর মত বহু হতভাগ্য নারীকে হতে হয়েছিল গণধর্ষণের শিকার। এই তো সেদিন – সাঈদীর বিচারের পরেও অসংখ্য হিন্দু বাড়ি জালিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। স্বাধীন দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার পেতে হলে যদি বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ হতে হয়, ভাইকে পুড়ে মরতে হয়, বোনকে দেখতে হয় ধর্ষিতা, তাহলে এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারটা চেয়ে কি ফায়দা কে জানে। বরং বিচার ফিচার না হলেই মনে হয় এই অভাগারা একটু নিরাপদে থাকে। সাইদীর ফাঁসি হইলেই বা কি আর আওয়ামীলীগ নির্বাচনে জিতলেই বা কি লাভ। কচুকাটা তো চলছেই।
মনে পড়ে শামসুর রাহমান একবার একটা কবিতা লিখেছিলেন, ‘সুধাংশু যাবে না’ নামে। আমার অত্যন্ত প্রিয় একটা কবিতা। কবিতাটা এরকমের –
সুধাংশু যাবে না
শামসুর রাহমানলুণ্ঠিত মন্দির, আর অগ্নিদগ্ধ বাস্তুভিটা থেকে
একটি বিবাগী স্বর সুধাংশুকে ছুঁলো
‘আখেরে কি তুমি চলে যাবে?’ বেলা শেষে
সুধাংশু ভস্মের মাঝে খুঁজে
বেড়ায় দলিল, ভাঙা চুড়ি, সিঁদুরের স্তব্ধ কৌটা,
স্মৃতির বিক্ষিপ্ত পুঁতিমালা।স্বর বলে, ‘লুটেরা তোমাকে জব্দ ক’রে
ফেলে আশে পাশে
তোমার জীবনে নিত্যদিন লেপ্টে থাকে
পশুর চেহারা সহ ঘাতকের ছায়া,
আতঙ্কের বাদুড় পাখার নিচে কাটাচ্ছ প্রহর,
তবু তুমি যেও না সুধাংশু।’আকাশের নীলিমা এখনো
হয়নি ফেরারি, শুদ্ধাচারী গাছপালা
আজও সবুজের
পতাকা ওড়ায়, ভরা নদী
কোমর বাঁকায় তন্বী বেদিনীর মতো।
এ পবিত্র মাটি ছেড়ে কখনো কোথাও
পরাজিত সৈনিকের মতো
সুধাংশু যাবে না।
***
চমৎকার কবিতা নিঃসন্দেহে। এরশাদের আমলে যখন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে, তখন বাবরি মসজিদ ইস্যু করে দাঙ্গা লাগানো হয়েছিল। আমি তখন ঢাকা কলেজে পড়ি। চোখের সামনেই মরণ চাঁদের দোকান ধূলিস্ম্যাৎ হয়ে যেতে দেখেছিলাম। দেখেছিলাম ক্ষুধার্ত চোখের হায়নাদের মিছিল করে জগন্নাথ হলের কালীবাড়ির দিকে যেতে… তখনো আমি রোমান্টিক কবিদের মতোই শামসুর রাহমানকে আবৃত্তি করতাম – ‘এ পবিত্র মাটি ছেড়ে কখনো কোথাও, পরাজিত সৈনিকের মতো সুধাংশু যাবে না’।
আজ মনে হয় বড়ই ইম্প্র্যাকটিক্যাল রোমান্টিক ছিল এ পাগলামি। আমি সিঙ্গাপুরে থাকাকালীন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার সময়গুলোতে আলমগীর হুসেন নামের এক বড় ভাইয়ের সাথে থাকতাম রুম শেয়ার করে। আমার লেখালিখির সূত্র ধরে উনিও একসময় লেখালিখিতে এসেছিলেন। উনি শামসুর রাহমানের কবিতাটার একটা প্যারোডি লিখেছিলেন এরকমের –
সুধাংশু তুই পালা
আলমগীর হুসেনপাগলামি করিসনে বন্ধু সুধাংশু
সময় যে পার হয়ে যাচ্ছে
এবার যে তোর পালানোর বেলা
জিদ করিসনে বন্ধু, এখনই তুই পালা।জানি তুই কী ভাবছিস বন্ধু সুধাংশু
দাঁড়িয়ে হাহাকারের ছোঁয়ায় জড়ানো শ্মশানসম বাস্তুভিটায়
সেই হারিয়ে যাওয়া প্রাণচঞ্চল দিনগুলো, আমাদের ছেলেবেলা
কিন্তু এবার যে তোর পালানোর বেলা, এবার তুই পালা।আমি জানি নির্বাক দাঁড়িয়ে তুই কী ভাবছিস বন্ধু সুধাংশু
সেই একপাল বন্ধুগুলো রামী, শেপু, কাকলী আরও অনেকে
প্রাণময় কোলাহলে কাটিয়েছি সকাল-দুপুর-সন্ধ্যা বেলা
কিন্তু এবার যে তোকে পালাতে হবে, এবার তুই পালা।আমি বুঝি তোর শঙ্কা আগামী বিরহ বেদনার বন্ধু সুধাংশু
আড়াই যুগ ধরে তিলে তিলে গড়ে উঠা আত্মার সম্পর্ক -
এই বাস্তুভিটার সাথে আর এক ঝাঁক বন্ধুর ভালবাসা প্রাণঢালা।
কিন্তু এবার যে তোকে পালাতে হবে, এবার তুই পালা।কোথায় সেই কল-কাকলীতে মুখরিত সবুজ সুন্দর কাপালী-ভিটাটি বন্ধু সুধাংশু
দু’টি জীর্ণ-শীর্ণ ঘর চির-দুঃখীর মতো দাঁড়িয়ে আছে আজ সেই কাপালী ভিটায়।
কোথায় সেই রামী, শেপু, কাকলী আরও সেই প্রিয় বন্ধুগুলা
ওরা যে সবাই পালিয়েছে, এবার তোর পালা।তুই কি জানিস বন্ধু সুধাংশু
তোর বিদায়ে ভীষণ ব্যথা পাবে আমার ঐ ছ’বছরের অবুঝ বোনটি ‘নেহা’
কাটাবে কত সন্ধ্যা অধীর প্রত্যাশায়, সুধাংশু ভাইকে জড়িয়ে ধরবে: কোথায় চকলেটগুলা?
তবুও তোকে পালাতে হবে যে, এবার তুই পালা।আরও জানি বন্ধু সুধাংশু
তোর ষোড়শী বোনটি ‘মিলা’ দুষ্টামির ছলে আর বলতে পারবে না: আলমদা তুমি এত কৃপণ কেন?
চলো মেলায় নিয়ে, কিনে দিতে হবে সুন্দর একটি মালা।
তথাপি তোকে পালাতে যে হবে, এবার তুই পালা।তোকে যে বলা হয় নি বন্ধু সুধাংশু
মিলা’র সহপাঠী আমার ভাইটি ‘রিপন’ বলছিল সেদিনঃ ভাইয়া মিলা’টা যা সুন্দর হয়েছে না!
বলে দিয়েছি ওকে, সুন্দরী মেধাবী মিলা বিশ্ব জয় করবে, তোর মতো গর্দভটি ওর দিকে তাকাবে না।
তোর হাতে যে সময় নেই বন্ধু, এবার তুই পালা।মিলাকে যে বিশ্ব জয় করতেই হবে বন্ধু সুধাংশু
অসাধারণ সুন্দরী মেধাবী মিলার জন্য এক ধর্ষিত, অচ্ছুৎ, অভাগী নারীর জীবন
হবে মানবতার জন্য এক অমার্জনীয় ব্যর্থতা।
তাই আমার কাতর মিনতি বন্ধু, এখনই তুই পালা।
======
মজার ব্যাপার হচ্ছে আজকে যখন ‘সুধাংশু যাবে না’ লিখে নেটে সার্চ দিলাম, কোথাওই শামসুর রাহমানের মূল কবিতাটি পেলাম না। সব জায়গাতেই আলমগীরের লেখা কবিতাটাই পেলাম। অনেকে ওটাকে শামসুর রাহমানের কবিতা হিসেবে ব্লগে টগে পোস্টও করেছেন। কিন্তু আমি জানি কবিতাটি শামসুর রাহমানের নয়, ওটা আলমগীরের প্যারোডি (মূল কবিতাটি পিডিএফ আকারে মুক্তমনায় আছে, দ্রঃ), আমার সামনেই সেই প্যারোডি-কবিতাটি আলমগীর লিখেছিলেন ।
কবিতার বিবর্তন দেখে শত দুঃখের মাঝেও হাসি পেল। আমার প্রিয় দেশটাও যেন কবিতার মতোই মূর্তিমান প্যারোডি হয়ে গেছে। হ্যা, ‘সুধাংশু যাবে না’র চেয়ে ‘সুধাংশু তুই পালা’ ই বরং এখন রূঢ় বাস্তবতা।
এখন আমি রোমান্টিক কবির মতো ‘এ পবিত্র মাটি ছেড়ে কখনো কোথাও, পরাজিত সৈনিকের মতো সুধাংশু যাবে না’ বলে অহংকার করি না, বরং আলমগীরের মতো প্র্যাক্টিকাল হয়েই ভাবি – ‘আমার কাতর মিনতি বন্ধু, এখনই তুই পালা’।
য পলায়তি স জীবতি।
(ছবির জন্য কৃতজ্ঞতা: রায়হান রশীদ এবং রাজীব নন্দী)
ব্রিগেডিয়ার Fatty Frowen ২য় বিশ্বযুদ্ধে আফ্রিকার মরুভূমিতে একটি পা হারান ও জার্মানদের হাতে বন্দি হন । পরবর্তীতে জেনারেল মন্টগোমারীর সাথে দেখা হলে মন্টি জানতে চান, কেন তিনি জার্মানদের হাতে ধরা দিয়েছিলেন । ফ্রেয়নের উত্তর ছিল, “Sir, you too would have been a prisoner had you left a leg behind.”
কেন জানি ‘সুধাংশু যাবে না’ কবিতাটি পরে ২য় বিশ্বযুদ্ধের এই ঘটনাটা মনে পরে গেল ।
আজ সুধাংশুকে পালাতে বলছেন, কাল কিন্তু ঠিকই আমাদের পালাতে হতে পারে। 😕
@Asif H Tamim,
ভাই শখ করে কি আর পালাইতে বলি? সাকারেই খালি মনে হয় দুর্দিনে – আগে কুকুর লেজ নাড়াতো, এখন লেজই মনে হয় কুকুর নাড়ায়।
গ্লাসের অর্ধেক ভর্তি এবং অর্ধেক খালি…… আমি যদি বলি প্রথম আলো এখানে এই ছবির মাধ্যমে একটা সার্বজনিন ব্যাপার তুলে ধরতে চেয়েছে যেটা সব সাংবাদিক দেখাতে চেস্টা করে…
কেউ বোরকা পরা মহিলাটির কথা বলছেনা :-s এই ছবিকে এভাবেও ব্যাখা করা যায় “ভোটে হিন্দু-মুসলিম সহ সব ধর্মাবলম্বী এবং শ্রেণীর মানুষের অংশগ্রহণ………………”
আমার মনে হয় এই লেখাটি এবং এই লেখার সমর্থনে যারা বলছেন তারা প্রথম আলোর প্রতি দীর্ঘ দিনের ক্ষোভ বহিপ্রকাশ করলেন মাত্র…… অ্যাংগার রিলিজ।
প্রথম আলো এবং এর অভিবাবক কংলোম্যারেট ট্রান্সক্রম গ্রুপের অনেক অপকর্ম আছে – সেসব নিয়ে যৌক্তিক তুলে ধরা উচিত। এই ছবি আসলেই খুবই দূর্বল জিনিষ……
@সংবাদিকা,
সেতো বটেই, সব ধর্মাবলম্বীর অংশ গ্রহন, যেমন হিন্দু, মুরতাদ ( মুসলিমদের মধ্যে), আবার কিছু মুসলিম। তবে হিন্দু কিন্তু ঢের বেশি, যদিও বাংলাদেশে প্রতি ১০ জনের একজনও হিন্দু নাই, আর ছবিতে হিন্দুরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ!!
এতে এটাও প্রমান হতে পারে যে হিন্দু,মুরতাদ আর কিছু অসহায় মুসলিম যেমন সরকারী চাকরী জীবি যারা চাকরী যাবার ভয়ে ভোট দিতে বাধ্য হচ্ছে!! চরম অসাম্প্রদায়িক মেসেজ সন্দেহ নাই :-s
@সংবাদিকা,
আপনার ‘গ্লাসের অর্ধেক ভর্তি এবং অর্ধেক খালির’ উপামাটা ভুল কিংবা মিসপ্লেসড। বাংলাদেশে জনসংখ্যার যেখানে নব্বই ভাগের উপর মুসলিম, সেখানে এই লাইন দেহলে মনে হয় এর বিপরীত। নব্বই ভাগই যেন হিন্দু। এটা কি দেশের সত্যিকার রিফ্লেকশন? বোরখা পরা মহিলাটা সামনে এলেও মূলতঃ হিন্দুদের ফোকাস করেই যে ছবিটা তোলা হয়েছে সেটাতে কোন সন্দেহ নেই। লাইনের অর্ধেক মুসলিম অর্ধেক ভিন্ন হলেও না হয় গ্লাসের অর্ধেক ভর্তি এবং অর্ধেক খালি – উপমাটা প্রযোজ্য হত। এখানে বরং ‘ফাটা কলসি বাজে বেশি’টাই বেশি প্রযোজ্য।
২য়তঃ প্রথম আলোর প্রতি দীর্ঘ দিনের ক্ষোভ বহিপ্রকাশের কিছু নেই। আর অন্যায় না হলে ক্ষোভের ব্যাপার আসবেই বা কেন। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে এমন কিছু ছবি আপলোড করা হয়ছে যেগুলো হামলা এবং সন্ত্রাসে ইন্ধন যুগিয়েছে পুরোমাত্রায়। তার উপর আছে ফটোশপে জচ্চুরির অভিযোগ। প্রথম আলো যদিও বলছে তারা ফটোশপে কখনোই কিছু এডিট ফেডিট করেনা, করেনি, কিন্তু বিদ্যা বালানের ছবি ফটোশপ করে পর্দানশীন করার উদাহরণ পাঠকেরাই তুলে ধরেছেন –
[img]https://scontent-a-atl.xx.fbcdn.net/hphotos-frc3/q71/1510868_10152192135544257_1834785183_n.jpg[/img]
আরেকটা প্রথম আলোর রিপোর্ট সম্বলিত ছবি দেখলাম ফেসবুকে ঘুরছে , যেখানে দুইজনকে ফটোশপ করা হয়েছিল –
[img]http://s12.postimg.org/5fjnz5r3x/Prothom_Alo_2_2.jpg[/img]
যাহোক, কি করা হয়েছে বা কি করা হয়নি, তা আমার বিবেচ্য নয়, বরং মিডিয়ার একটা দায়িত্ব রয়েছে কোন ছবি ব্যবহার করলে কি ধরণের প্রতিক্রিয়া আসতে পারে, সেটা বোঝার। সেই দায়িত্বশীলতা যদি অনুপস্থিত থাকে সেটা হতাশাজনকই।
@সংবাদিকা,
ফটোশপড করে মহিলাদের মাথায় রক্তরাঙা সিঁদুর আর কপালে টিপ লেপ্টে হিন্দুদের উপর আক্রমণকে উস্কে দেবার পরও এটা দুর্বল জিনিস হয় কী করে? এটাতো এখন আর ভুলের পর্যায়ে নেই, অপরাধের পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। পশ্চিমা দেশে হলে এতক্ষণে পত্রিকার সম্পাদকসহ এর সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে পুলিশ ধরে নিয়ে যেত।
@ফরিদ আহমেদ,
ঘটনা আসলেই তেমন হলে মাহমুদুর রহমান আমার দেশ গংও এদের কাছে শিশু। এটা অবশ্যই ক্রিমিনাল এক্ট।
@আদিল মাহমুদ,
এখন পর্যন্ত আলামত যা দেখা যাচ্ছে তাতে ঘটনা সত্যই। প্রথমতঃ ছবিটা বাছাই করা হয়েছে পরিকল্পিতভাবে। হিন্দুরা দল বেঁধে এই নির্বাচনে ভোট দিচ্ছে, এটা দেখানোর জন্য। দ্বিতীয়তঃ এটা যাতে কারো নজর না এড়ায়, সে কারণে ছবিতে বাড়তি রঙ লাগিয়ে সিঁদুর এবং টিপকে উজ্জ্বলতা দিয়ে দৃশ্যমান করা হয়েছে।
হিন্দুদের উপর আক্রমণ হোক, সেই পরিকল্পনা কতটা ছিল, সে বিষয়ে যদিও আমি অতটা নিশ্চিত নই। কিন্তু আওয়ামী লীগকে হেয় করার ইচ্ছাটা সেখানে ষোল আনাই উপস্থিত ছিল, এটা বলে দিতে পারি কোনো দ্বিধা ছাড়াই।
পরিকল্পনা থাকুক বা না থাকুক, প্রথম আলোর এই হঠকারী এবং অসৎ উদ্দেশ্যের কারণে অসংখ্য মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, একটা ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে চরম ভীতি এবং অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এর দায় প্রথম আলো এড়াতে পারে না কোনোভাবেই। শুধু ক্ষমা চাইলে বা ভুল স্বীকার করলেই চলবে না। আদালতের মাধ্যমে এদের বিচার হওয়া প্রয়োজন।
দারুন লেখা….
সিআইএর প্রধান অস্ত্র মিডিয়া। নেটে চার্চ কমিটির রিপোর্ট সার্চ করুন, সেখানে সিআইএর স্বীকারোক্তি আছে।
বাংলাদেশে এখন সরকরারের উচিত হবে, প্রথম আলো-এনটিভি-বাংলাভীষন-ইটিভির লাইসেন্স বাতিল করা।
মিডিয়ার ব্যপারে নীতিমালা করা-
১) বিদেশী কোন বিনিয়োগ বাংলাদেশের মিডিয়ায় করা যাবে না।
২) বিদেশের সাথে ব্যবসা বা অন্য কোন অর্থনেতিক সম্পর্ক আছে এমন কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্টান মিডিয়ায় বিনিয়োগ করতে পারবে না, এর পরিচালনার সাথে থাকতে পারবে না। (যেমন ট্রান্সকম)।
৩) মিডিয়ায় বিনিয়োগের বৈধ আয়ের (অতীত থেকে বর্তমানকাল পর্যন্ত) উতস থাকতে হবে।
৪) সাংবাদিক এবং সুশীল টকারদের সম্পদ কড়া নজরদারীতে রাখতে হবে।
৫) সব চ্যানেল খবর প্রচার করতে পারবে না, যারা খবর প্রচার করবে তারা শুধুই এই জাতীয় খবর আর তথ্যচিত্রই প্রচার করবে (যেমন বিবিসি বা সিএনএন), যারা বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান করবে তারা খবর বা খবর নির্ভর টকশো প্রচার করতে পারবে না।
আর শেখ হাসিনাকে আরো সজাগ হতে হবে, দলের লোক চাইলে চ্যানেল দিতে হবে – এটা হবে না।
অমিও ছবিটা দেখেছিলাম। অবাক হয়েছিলাম ছবিটা দেখে। সারাদেশে যখন এরকম নাশকতা চলছে, তায় আবার সংখ্যালঘুদের লক্ষ্য করে, তখন এরকম এক প্রতিকুল পরিবেশে ওরা দলে দলে বেরিয়ে আসবে ঢাকার মতো জায়গায় কিছুটা অস্বাভাবিক বৈকি! মতির আলো একটা নোটিশ দিয়েছে দেখলাম। দেখুন এখানে।
@কেশব কুমার অধিকারী,
আমি নোটটা দেখেছি কেশবদা। আমার কাছে ওটা গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। অনেক ধরণের ঘাপলা আছে। ছবি যে এডিট করা হয়েছে (সিঁদুরের রঙ গাঢ় করা, কিংবা সিঁদুরবিহীন মাথায় সিঁদুর বসানো ইত্যাদি) তা অনেকগুলো প্রফেশনাল সফটওয়্যারে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ভিডিও আছে এনিয়ে:
http://vimeo.com/83591578
আবারো ছবিটা আবার ভাল করে দেখুন, ৬ এবং ৭ নং মহিলার সিঁদুর এমনিতেই বোঝা যাচ্ছে অস্বাভাবিক!আর সবারই সিঁদুরের রঙ এক। মনে হচ্ছে লাইনের অন্ততঃ ৪ জন একই কৌটার সিঁদুর ব্যবহার করে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। ৫ নং নারী – তার কপালে বা মাথার তালুতে সিঁদুর না থেকে আছে চুলের উপর অল্প একটু!! এভাবে কেউ চুলে সিঁদুর লাগায়? আমি অন্ততঃ দেখিনি। তার উপর তিনি গোলাপি কালারের যে কাপড়টি পরে আছেন সেটি শাড়ি কি? সচলায়তনে ষষ্ঠপাণ্ডব তার কমেন্টে বলেছেন, “এটি হচ্ছে সেই চাদর যেটা শীত-গ্রীষ্ম বারোমাস আজকাল মুসলিম নারীরা পরে থাকেন পর্দার অনুষঙ্গ হিসেবে। তাঁর ঘোমটা টানা, পর্দার অনুষঙ্গ চাদর প্রমাণ করে তিনি মুসলিম। তাঁর সিঁথির বদলে ডানপাশের চুলের ওপর টানা সিঁদুরের দাগ দেয়া এবং কপালে সিঁদুরের ফোঁটা না থাকা প্রমাণ করে এই সিঁদুরের দাগ ছবি তোলার পর লাগানো হয়েছে”। স্পর্শ সপ্তম মহিলা সম্বন্ধে লিখেছেন, “সপ্তম মহিলার বড় টিপটা কপালের উপর সেটে থাকলে এই অ্যাঙ্গেল থেকে বৃত্তাকার টিপকে আরো চ্যাপ্টা (উপবৃত্তাকার) দেখানোর কথা। আর ছবির ডেপ্থ অফ ফিল্ডের কারণে সামনের দিকের ফোকাসে থাকা অবজেক্টের রং গুলোর স্যাচুরেশন বেশি হয় (উজ্জল হয়)। যত পিছনে যাবে রং তত ধুসরতর (ম্লান) হতে থাকবে। তৃতীয় মহিলার কপালের টিপ যতটা লাল দেখাচ্ছে, তার পরে চতুর্থ, পঞ্চম জনেরটা অতটা লাল দেখাবে না। এভাবে অষ্টম নবম জনের কাছে গিয়ে লাল রং তার ঔজ্জল্য অনেকখানি হারানোর কথা। কিন্তু ষষ্ঠ এবং সপ্তম জনের কপালের লাল রং এই ধারা মানেনি। হঠাৎ করেই লালের মাত্রা বেড়ে গেছে”। এরকমের অসঙ্গতি অনেক।
তার পরেও যদি ধরে নেই প্রথম আলোর বক্তব্য ঠিক, ফটোশপে তারা এডিট ফেডিট কিছু করেনি, তাহলেও বহু প্রশ্ন থেকে যায়। যেভাবে মহিলাদের মাথায় সিঁদুর দেয়া আছে, বাংলাদেশের মহিলারা সেভাবে সিঁদুর দেয় না। কবি নির্মলেন্দু গুণ টেকি বিষয়ে এত অভিজ্ঞ নন, কিন্তু তিনি তার অভিজ্ঞতা থেকেই বুঝেছেন যে ছবিটা জাল। তিনি লিখেছেন –
রায়হান রশীদ তার স্ট্যাটসে প্রথমআলোর সাফাই বিবৃতির জবাবে লিখেছেন :
@অভিজিৎ,
অভিজিৎদা, ঘাপলা যে আছে তাতে তো কোন সন্দেহ নেই মনে হচ্ছে। ইতো মধ্যে অনলাইনে বেশ কয়েকটা ফটোগ্রাফিক আ্যনালাইসিস দেখলাম। যেখানে অভিযোগের যথার্থতা নিহীত। ‘একতার’ সম্পাদক ছিলেন এই লোক….জনাব মতিউর রহমান! এতো অধঃপতন! ভাবাই যায়না।
স্বাধীনতার পর মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ এ দেশে তাদের বেতনভুক্ত দালাল নিয়োগ করেছিল।তৎকালীন সময়ে এ দেশের পাঁচজন এডিটর সিআইএর বেতন ভুক্ত এজেন্ট ছিলেন।বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিজেদের এজেন্ডা পূরনে সংবাদপত্ত্রের এডিটরদেরকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করে।বিনিময়ে তাদেরকে দেয়া হয় মোটা অংকের টাকা এবং বৈদেশিক সুযোগ সুবিধা।মতিউর রহমান কাদের এজেন্ডা পূরনে কাজ করছে তা একটু বিশ্লেষন করলে সহজেই বুঝা যায়।একটি জনপ্রিয় সংবাদপত্র গনমানুষকে প্রভাবিত করতে পারে।আর বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই প্রভাবের সুযোগ নিয়ে নিজেদের এজেন্ডা পূরন করে।
প্রাণ বাঁচানোর জন্য শুধাংশুদের পালানো উচিত তা শুধাংশুরা জানেন, কিন্তু পালাবে কোথায়? তাদের যে পালানোর জায়গা নেই কোথাও।
ফেসবুকে ছবিটা পেলাম –
বাংলাদেশে সবাই হিন্দু, তুই এবার খুশি তো মতি?
[img]http://blog.mukto-mona.com/wp-content/uploads/2014/01/moti_shobaI_hindu.jpg[/img]
যতই দিন যাচ্ছে প্রথম আলোর সাম্প্রদায়িক(আসল) চেহারা নগ্নভাবে আমাদের সামনে উন্মোচিত হচ্ছে। এই বিষয়টি নিয়ে লেখার জন্য অভিজিৎ ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।
একদল নিরস্ত্র সংখ্যালঘুদের( হিন্দুধর্মাবলম্বী) উপর আরেকদল সশস্ত্র সংখ্যালঘুদের (জামাত-শিবির) নারকীয় হামলা।
সারাংশ হলো যে যাই বলুক যতদিন আওয়ামী লীগ ও বি এন পি জামাত কে তাদের ঘৃণ্য রাজনীতির ঢাল হিসেবে ব্যবহার করবে ততদিন এই ভয়াবহ ঘটনাগুলো ঘটতে থাকবে…কোন মিছিল, মিটিং, রোডমার্চ কাজে আসবে না..।।
আরেকটি সম্ভাবনা আছে যদি কি না অবশিষ্ঠ ৯ ভাগ হিন্দুও দেশ ছেড়ে চলে যায়।
…জাতি হিসেবে কতটা ব্যর্থ আমরা!!!
লেখা পড়ে বুকের মাজে হাজার ব্যাথা টন টন করছে
মনে হচ্ছে জেন এক মুণ্ডু হীন পিশাচের দেশে বসবাস করছি আমরা ।
এই মুহুর্তে বলা জায় , রুদ্র মুহাম্মদ সহিদুল্লাহর সেই কবিতাটি
বাতাসে লাশের গন্ধ’
রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ
আজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই,
আজো আমি মাটিতে মৃত্যুর নগ্ননৃত্য দেখি,
ধর্ষিতার কাতর চিৎকার শুনি আজো আমি তন্দ্রার ভেতরে__
এ-দেশ কি ভুলে গেছে সেই দুঃস্বপ্নের রাত, সেই রক্তাক্ত সময়?
বাতাসে লাশের গন্ধ ভাসে,
মাটিতে লেগে আছে রক্তের দাগ।
এই রক্তমাখা মাটির ললাট ছুঁয়ে একদিন যারা বুক বেঁধেছিলো,
জীর্ন জীবনের পুঁজে তারা খুঁজে নেয় নিষিদ্ধ আঁধার।
আজ তারা আলোহীন খাঁচা ভালোবেসে জেগে থাকে রাত্রির গুহায়।
এ যেন নষ্ট জন্মের লজ্জায় আড়ষ্ট কুমারী জননী,
স্বাধীনতা__একি তবে নষ্ট জন্ম?
একি তবে পিতাহীন জননীর লজ্জার ফসল?
জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন।
বাতাসে লাশের গন্ধ__
নিয়ন আলোয় তবু নর্তকীর দেহে দোলে মাংশের তুফান।
মাটিতে রক্তের দাগ__
চালের গুদামে তবু জমা হয় অনাহারী মানুষের হাড়।
এ-চোখে ঘুম আসে না। সারারাত আমার ঘুম আসে না__
তন্দ্রার ভেতরে আমি শুনি ধর্ষিতার করুন চিৎকার,
নদীতে পানার মতো ভেসে থাকা মানুষের পচা লাশ,
মুন্ডুহীন বালিকার কুকুরে খাওয়া বীভৎস শরীর
ভেসে উঠে চোখের ভেতরে__আমি ঘুমুতে পারি না, আমি ঘুমুতে পারি না…
রক্তের কাফনে মোড়া__কুকুরে খেয়েছে যারে, শকুনে খেয়েছে যারে,
সে আমার ভাই, সে আমার মা, সে আমার প্রিয়তম পিতা।
স্বাধীনতা__সে-আমার স্বজন হারিয়ে পাওয়া একমাত্র স্বজন,
স্বাধীনতা__সে-আমার প্রিয় মানুষের রক্তে কেনা অমূল্য ফসল।
ধর্ষিতা বোনের শাড়ি ওই আমার রক্তাক্ত জাতির পতাকা
পতনের গতি দেখে মাঝে মাঝে মনে হয় আরো কতটা নামা যাবে…..সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু খবর এসেছে আওয়ামী লীগারদের হিন্দুদের আক্রমন সংক্রান্ত। বাংলাদেশে স্বাধীন করে লাভ হয়েছে এই যে আজ আওয়ামী লীগও পিছিয়ে থাকছে না। পাকিস্তান আমল থেকে যে স্বাধীন বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা নগ্নভাবে বেড়ে তা কাউকে লজ্জা বা পীড়া দেওয়া দূরের কথা, অনেককে স্বীকারও মনে হয় করানো যাবে না। পাকিস্তান আমলে সাম্প্রদায়িকতা ছিল অতি সীমিত সংখ্যক চিহ্নিত মহলের মাঝে সীমাবদ্ধ, আজ তা মোটামুটি সার্বজনীন, কোন রাখঢাক তেমন নেই। খোলা মিডিয়ায় যেভাবে চরম সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করা হয় পাকিস্তান আমলে ঘোর সাম্প্রদায়িক লোকেও সেভাবে সাহস করতে পারতো না।
এখন এমন একটা অবস্থায় আমরা বাস করছি যেখানে কোন দলকে বিশ্বাস করা যায় না… নিউজ মিডিয়া বিশ্বাস করা যায় না……বুদ্ধিজীবি বিশ্বাস করা যায় না…গন্তব্য কোথায়? বিশ্বাস ভংগ, অবিশ্বাসের যে কালচার যুদ্ধপরাধী বিচার কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে এর সুদুরপ্রসারী প্রতিক্রিয়া এখনো আমরা ভাবা শুরু করিনি। গনতন্ত্রের ভিত্তি ছিল এমনিতেই অতি দূর্বল, অবিশ্বাসের কালচার এটাকে করে তুলবে অসম্ভব।
@আদিল মাহমুদ ভাই,
আওয়ামী লীগের উপর এই অভিযোগ তোলা কিন্তু উচিৎ না। কিছু লোকের আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে হিন্দুদের সম্পত্তি দখলের চেষ্ঠা করা মানে এটা না যে ঐসব ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী। প্রথমআলো পত্রিকাই ঐসব খবরকে সাম্প্রদায়িক রং মেখে প্রকাশ করছে যেন আসল সাম্প্রদায়িক হামলাকারীদের থেকে দৃষ্টিভঙ্গি অন্যদিকে ঘুরানো যায়। আওয়ামী লীগের অবশ্যই তাদের সৰ্মথকদের মধ্যে যারা ঐধরনের অপরাধমূলক কৰ্মকান্ডে লিপ্ত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া উচিৎ। কিন্তু অন্যদিকে দেখেন বিএনপি-জামাত জোটের হিন্দুদের এদেশ থেকে বিতারিত করার উদ্দেশ্য হল ভোটের হিসাবে রাজনৈতিক ফায়দা লুটা, এই জোটের সৰ্মথকেরা কিন্তু হিন্দুদের সম্পত্তি ভোগ-দখলের জন্য সাম্প্রদায়িক হামলা করছে না। এদেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির জন্ম দিয়েছেও এই বিএনপি আর জামাত। সাঈদীর রায়ই হোক আর নিৰ্বাচনে জয়-পরাজয়ই হোক এরা গিয়ে হামলা করছে ঐ হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর । হিসাব খুব সহজ হিন্দুদের ভয়ভীতি দেখিয়ে দেশ ছাড়া করো আর ইসলামী রজনীতির প্রসার ঘটাও !!!
প্রধানমন্ত্রী গতকাল যেমন বলেছেন এদের বিরুদ্ধে এখন সেভাবেই হাৰ্ডলাইনে যাওয়া উচিৎ।
@তারিক,
কথাটা আওয়ামী লীগের ওপর অভিযোগ করা না করার নয়।
আওয়ামী গোষ্ঠির লোকজনও যে সাম্প্রতিক সময়ে নানান ঘটনায় সাম্প্রদায়িক হামলার সাথে জড়িত হচ্ছে এটা প্রথম আমিও সেভাবে বিশ্বাস করতে পারিনি। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মাঝে মাঝে ডানপন্থী ধরনের পত্রপত্রিকায় এ ধরনের খবর দেখলে তেমন আমলে নেইনি সহজবোধ্য কারনে। এরপর ধীরে ধীরে দেখলাম যে শুধু আওয়ামী বিদ্বেষী বা মৌলবাদী সূত্রগুলি নয়, বেশ কিছু রিলায়েবল সূত্র, এমনকি আওয়ামী শিবিরের লোকজনেও একই ধরনের খবর দেয় তারপর আর ইগ্নোর করতে পারি না।
বেশ কিছু ঘটনা হয়ত সঙ্ঘটিত করেছে জামাত বিএনপির লোকে, উতসাহের সাথে অংশ নিয়েছে আওয়ামী ধারার লোকেও এতে আমার মনে তেমন সংশয় নেই। দলীয়ভাবে তাদের এমন কোন নির্দেশ দেওয়া কিংবা আওয়ামী রাজনীতির সাথে এর সম্পর্ক হয়ত নেই। দেশে যে নগ্ন সাম্প্রদায়িক মূল্যবোধের চর্চা শুরু হয়েছে তার প্রকোপ থেকে তারাও বাদ যাচ্ছে না। নগরীতে আগুন লাগলে কি ভিন্ন কিছু হবার কথা? এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের নোংরা রাজনীতি, ব্যাক্তিগত লোভ লালসা, প্রতিপক্ষজে ফাঁসানোর চেষ্টা এ রকম বহু কারন দাঁড়া করানো গেলেও সত্য এটাই যে আওয়ামী ধারার লোকেও এসবে জড়িত হচ্ছে। জামাত বিএনপির তূলনায় তাদের অবদান এখনো নগন্য, এবং সংখ্যালঘু উজাড় করে ভোট ব্যাংক বাড়ানোর মত লক্ষ্য নেই বলে আত্মতৃপ্তির কিছু দেখি না।
২০১২ সালের রামুর ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতার উতসাহের সাথে জংগী মিছিল সঙ্ঘটিত করার ছবি তো দেখেছেন নিশ্চয়ই। সাঁথিয়ার ঘটনায় জামাত শিবির সরাসরি হামলা করলেও সে ঘটনায় সরাসরি জড়িতদের দেখা গেছে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর আশেপাশে। বুজতে পারি যে মন্ত্রীর পক্ষে আশেপাশের সকলকে চেনা মন্ত্রীর পক্ষে সম্ভব নয়। সে এলাকার আরো বড় বিশিষ্ট আওয়ামী নেতা এবং গত আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাঈদও ঘটনায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে সরাসরি দায়ী করে বিবৃতি দিয়েছেন। “তোদের বাপ বাঁচাতে আসেনি” জাতীয় বক্তব্যও পড়েছি। সব সূত্র, অধ্যাপক সাঈদ সকলে জামাতের টাকা খেয়েছে এতটা ভাবা আমার পক্ষে এখনো সম্ভব নয়। আরো বেশ কিছু ঘটনা আছে যেগুলি এখন ঘাটাঘাটি করে বার করার ইচ্ছে বা সময় আপাতত নেই। সামান্য নিকট অতীতের ইতিহাস ঘাঁটলেও দেখা যায় যে স্বাধীনতার পর শত্রু সম্পত্তি নাম দিয়ে হিন্দুদের সম্পত্তি দখলের প্রতিযোগিতায়ও আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত লোকজন ভালই জড়িত ছিল।
সাম্প্রদায়িক ঘটনাকে কেবল রাজনৈতিক কারনে বস্তাবন্দী করা কিংবা যাবতীয় দায় কেবল বিএনপি জামাতের ওপর চাপানো সংখ্যালঘুদের তেমন মংগল কিছু করবে না। এসব ঘটনার চুড়ান্ত দূঃখজনক উপলব্ধি এটাই যে অসাম্প্রদায়িক ধারার লোকেও আজকাল দূর্বল অসহায় সংখ্যালঘুদের রাজনৈতিক হাতিয়ার, লুটপাটের সহজ টার্গেট বিবেচনা করছে। সাম্প্রদায়িকতা যে দেশে কতটা বেড়েছে তার আর এক প্রমান হয়ত এটা।
@আদিল মাহমুদ ভাই,
আমি নিজেও খুবই অবাক হয়েছিলাম আওয়ামী সৰ্মথকদের সাম্প্রতিক সময়ে সাম্প্রদায়িক হামলার সাথে যোগসূত্রতা দেখে। শেখ হাসিনা যেই দৃঢ়তার সাথে বিশ্বজিৎ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত নিজ দলের কৰ্মীদের বিচারের ব্যবস্থা করেছে ঠিক সেভাবেই ঐ সকল আওয়ামী সৰ্মথকদের যারা সাম্প্রদায়িক হামলার সাথে জড়িত তাদের বিচারের ব্যবস্থা করা উচিৎ ছিল। কিন্তু আমার আওয়ামী লীগের পক্ষে কথা বলার কারন হল বিভিন্ন পত্রিকা যেমন প্রথম আলো তাদের বিশেষ কিছু লেখকদের দিয়ে সব সাম্প্রদায়িক হামলার দায়ভার আওয়ামী লীগের উপর চাপিয়ে দেয়, যার ফলে মূল আসামীদের থেকে সাধারন মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরে যায়।
যখন দেখি ৰ্ধামিক ভাই-ব্রাদাররা হিন্দুদের উপর আক্রমনে আমার মত সেক্যুলারিস্টের চেয়েও বেশী মৰ্মাহত ও ক্ষুদ্ধ, তখন আসলে সাম্প্রদায়িক ঘটনাকে আমি শুধু ৰ্ধমীয় দৃষ্টিকোন থেকে দেখতে পারি না তাই রাজনীতি দিয়ে একটা ব্যাক্ষা দেওয়ার চেষ্ঠা করি। আর আজকে শুনলাম সরকার অভয়নগরে হিন্দুদের উপর হামলাকারীদের দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যালের মাধ্যমে বিচারের ব্যবস্থা নিচ্ছে। আশাকরি দ্রুত ঐ ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে।
ভাই আপনাকে মাঝেমাঝে অযথা প্রশ্ন করে বিরক্ত করি প্লিজ মাইন্ড কইরেন না।
তারিক,
বিশ্বজিতের ওপর হামলা সাম্প্রদায়িক কারনে হয়নি, সেটা হয়েছিল বরং উলটা ধারায় বলা চলে। তাকে হত্যা করা হয়েছিল হিন্দু সংখ্যালঘু হিসেবে নয়, জামাত শিবিরের সদস্য সন্দেহ। সে ঘটনা এতটাঈ বেপরোয়াভাবে প্রকাশ্য মিডিয়ার সামনে হয়েছিল যে বিচার না করার কোনই উপায় ছিল না। তারপরেও সরকারকে ধন্যবাদ দেওয়া যায়। আগেই বলেছি যে আওয়ামী সম্পর্ক কেবল প্রথম আলোই করে না। বিভিন্ন সূত্রেই আসে, যখন খোদ আওয়ামী সূত্র থেকেও আসে তখন ইগনোর করা যায় না।
– ধার্মিক মানুষ মানেই সাম্প্রদায়িক হামলা করবে বা সমর্থন করবে এমন ধারা উন্মাদীয় কথা উগ্র নাস্তিক ছাড়া কেউ বলবে না।
কথা হল সাম্প্রদায়িকতা ঠিক কাকে বলে তা কি আমাদের কাছে পরিষ্কার? বাবড়ি মসজিদ রামু বা বরিশাল পাবনা মালোপাড়া ষ্টাইলে হামলা করে মন্দির মসজিদ ধ্বংস করে এবং সংখ্যালঘুদের বেধড়ক পিটুনী দিলে তখনই সাম্প্রদায়িক সমস্যা হয়েছে বলা যায়, তার আগে নয়? আমার ধারনা বেশীরভাগ লোকে সাম্প্রদায়িকতা বলতে এমন কিছুই বোঝে। নইলে ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত’ এই জাতীয় বাগাড়াম্বরে অহংকার বোধ করা এক ধরনের অজ্ঞতা কিংবা ভন্ডামি।
এই তত্ত্বের সমর্থনে অকাট্য প্রমানের মত উদাহরন পেশ করা হয় ঐতিহাসিক আমল থেকেই এখানে হিন্দু মুসলমান শান্তির সাথে বসবাস করছে, ব্রিটিশ শাসনের আগে কোন দাংগা হাংগামা হয়নি, ব্রিটিশেই দাংহা হাংগামা শিখিয়ে গেছে। দাংগা হাংগামা ব্রিটিশ আসার আগে কতটা হয়েছিল সে বিতর্কে না গিয়েও বলা যায় যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বলতে যা বোঝায় তা উপমহাদেশে ঠিক কবে ছিল না বলা যায় না। পুরো উপমহাদেশই ইসলাম ধর্ম আগমনের পর ধীরে ধীরে হিন্দু-মুসলমান দুই ভিন্ন গোত্রে বিভক্ত হয়ে থেকেছে। দাংগা হাংগামা না করলেও তাদের মধ্যে সমসত্ত্ব মিশ্রন কোনদিন হয়নি। সেই আমল থেকেই এখনো এখনো ভারত পাকিস্তান বাংলাদেশ একই অবস্থা, সংখ্যাগলঘুরা সব যায়গাতেই নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় দলবদ্ধ অবস্থায় থাকে। সোজা কথায়, ধর্মের ভিত্তিতে দুই সম্প্রদায়ের মাঝে পরিষ্কার বিভাজন আছে। এটাকে কি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বলা যেতে পারে? আমি অসাম্প্রদায়িক মানুষ বলতে বুঝি যার মনে মানুষের ধর্ম পরিচয় কোন রেখাপাত করে না তাকে। অমন মানুষ আমাদের দেশে ঠিক কতজন পাওয়া যাবে? বাংলাদেশের ৯৫ ভাগ ধার্মিকই হয়ত অন্য ধর্মের লোকের ওপর হামলা করা সমর্থন করবে না, কিন্তু তাদের মধ্যে সকলেই কি মালাউন বলে কখনো কাউকে গালি দেননি এমন কথা হলপ করে বলা যায়? আমি ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি যায় না। ঘরের ভেতর বোমা নিয়ে বসবাস করলে… প্রতিদিন হয়ত ফাটে না, কিন্তু ফাটার জন্য সামান্য নড়াচড়া, উত্তাপ বা ঘর্ষনই যথেষ্ট। বোমা ফাটার পর সেই নড়াচড়া কিংবা স্ফুলিঙ্গের ওপর এক তরফা দায় চাপানো আসল সমস্যা এড়াবারই নামান্তর। বর্তমানে অনেকটা সেটাই করার চেষ্টা হচ্ছে, বিএনপি জামাত যেহেতু টার্গেট তাই সকলের উতসাহ এ লাইনেই প্রবল।
আরেকটা ব্যাপার বুঝতে হবে যে সাম্প্রদায়িক হামলা ব্যাপার মানেই সরাসরি ধর্মের সাথে জড়িত এমন নাও হতে পারে। কিংবা অন্য কথায় ধর্মীয় গোষ্ঠীগত সমস্যা মারামারি মানেই ধর্মের কারনে হয়েছে এমন নাও হতে পারে। শ্রীলংকার গৃহযুদ্ধকে বৌদ্ধ হিন্দুর যুদ্ধ বলা যায় না। মায়ানমারের মুসলমান নিধনও বৌদ্ধ মুসলমানের সমস্যা নয়, আপাত দৃষ্টিতে তেমন মনে হলেও।
বাংলাদেশে যতদিন না ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের ছায়া থেকে বার না হবে ততদিনই সাম্প্রদায়িক সমস্যা থাকবেই, প্রথমে নিকেশ হবে সংখ্যালঘুরা, এরপর চলবে নিজেদের মধ্যে পাকিস্তানী কায়দায় খুনাখুনী। ধর্মের সরাসরি নির্দেশনার তেমন দরকার হয় না, ধর্মের ভিত্তিতে যে বিভাজন সমাজ টিকিয়ে রেখেছে সেটাই অনর্থ ঘটাতে যথেষ্ট। এই বিভাজন সব সময়ই ছিল, ’৭৫ পরবর্তি সময়ে এই বিভাজন যাতে আরো বাড়ানো যায় সে লক্ষ্যে নানান কায়দায় রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তথাকথিত এক তরফা ধর্মানুভূতির সুড়সুড়ি, কথায় কথায় ধর্ম বিপন্ন হওয়া, উদ্দেশ্যমূলক ভাবে অমুসলমানদের সম্পর্কে ঢালাও বানোয়াট অভিযোগ গোয়েবলসীয় কায়দায় বিনা বাধায় করে যাওয়া, ধর্ম শিক্ষার নামে শিশু বয়স থেকেই সাম্প্রদায়িক বিষ বাষ্প রোপন করা এসব কিছুর কুফল কেবল বিএনপি জামাত সমর্থকদের ওপরই পড়বে এমন ভাবনার যুক্তিসংগত কারন নেই।
আপনার কথিত ধার্মিকরা নিঃসন্দেহে বেশীরভাগই এই ধরনের হামলা সমর্থন করবে না, নিন্দাই করবে জানি। তবে এতে তেমন একটা কিছু হবে না। এসব হামলায় নিন্দাবাদ জানালেও নৈতিক দায় তাদেরও ভালই পড়ে। ওপরে বলা ফ্যাক্টরগুলি সমাজে নানান আবেগ অনুভূতি অন্ধ বিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে টিকিয়ে রাখতে তারাই সহায়তা করে। আমাদের বিদ্যালয়ের ধর্ম শিক্ষার সিলেবাসে সরাসরি বিধর্মীদের প্রতি ঘৃনা সৃষ্টিকারী সবক দেওয়া হচ্ছে। যারা সাম্প্রদায়িক হামলায় ব্যাথিত হন সেসব ধার্মিকরা কয়জনে সেসব বিষময় শিক্ষা তুলে দিতে দাবী জানিয়েছেন? আপনি তাদের নিজে সেসব বই দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করে দেখুন না তারা কি বলে। সাম্প্রদায়িক ঘৃনার শিক্ষা দেবেন, বিভাজন যাতে টিকে থাকে তার সব ব্যাবস্থা জিইয়ে রাখবেন, এরপর চরমে গেলে তখন ব্যাথিত হবেন, নিন্দা জানাবেন এই খেলাই চলে আসছে এবং চলবে।
সাম্প্রতিক সময়ের সাম্প্রদায়িক হামলাগুলির ৯০% এর বেশীই রাজনৈতিক কারনে হচ্ছে এতে সন্দেহ নেই। মুলত বিএনপি জামাতিরাই মূল হোতা বোঝা যায়। এটা অতি পরিষ্কার যে ২০০১ সালের পর থেকেই বিএনপি-জামাত চক্রের দেশকে সংখ্যালঘু শূন্য করে ভোট ব্যাংক দৃঢ় করা অনেকটা ওপেন সিক্রেট তবে রাজনৈতিক কারনেই কোথাও কোথাও জামাতি নিধনের কৌশল হিসেবে আওয়ামী লীগের লোকেও এসব কান্ডকীর্তন কিছু কিছু করছে। কোথাও দলীয় কলহের জের হিসেবে ফ্রন্ট লাইনে ব্যাবহার করা হচ্ছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনকে। সোজা কথায় ধর্মীয় বিভাজনের বিষের সুবিদে যে যেভাবে পারে নিচ্ছে।
@আদিল মাহমুদ,
ভাই আমি বলি নাই যে বিশ্বজিৎ এর উপর হামলা সাম্প্রদায়িক কারনে হয়েছে। আমি শুধুমাত্র বলেছি যে বিশ্বজিৎ হত্যাকান্ডের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা আসামীদের নিজ দলের কৰ্মী কি না, তা পরোয়া না করে যেভাবে ঐ আসামীদের বিচারের ব্যবস্থা করেছেন। ঠিক সেভাবেই সাম্প্রদায়িক হামলাকারীরা আওয়ামী লীগের সৰ্মথক কিনা তা পরোয়া না করে, ঐ হামলাকারী যে দলেরই হোক তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার করা উচিৎ।
সহমত। আর আপনার বাকি মন্তব্যে দ্বিমত করার মত কিছু নাই। আপনি ঠিকই বলেছেন শিশু বয়স হতেই ৰ্ধমশিক্ষার নামে এদেশের মানুষের মন-মানসিকতাকে সাম্প্রদায়িক করে গড়ে তোলা হচ্ছে। দেশের মানুষকে সাম্প্রদায়িক শিক্ষা দিয়ে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠন অসম্ভব। অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠনের জন্য সৰ্বপ্রথম অসাম্প্রদায়িক জাতি তৈরি করা জরুরী।
@তারিক ভাই,
একটা কথা যদি কিছু মনে না করেন তবে একটা পরামর্শ দেই। আপনি কি অভ্র ব্যবহার করেন? করলে জাস্ট কীবোর্ডের “R” কে দুবার প্রেস করেন তাহলেই সমর্থক লেখা যাবে। সম”RR”থক, শুধু ইনভার্টেড কমা না দিয়ে আর ইংরেজী অপশনে না গিয়ে, ব্যাস হয়ে গেল সমর্থক।
@অর্ফিউস, ভাই বাংলা লেখার সফটওয়ার নিয়ে আমার সমস্যা নাই সমস্যা হল বানানে। (*) আমার সাধারনত বাংলায় লেখা হয় না, ব্লগগুলোতে ঢুকলেই কেবল বাংলা লেখি তাই বানানে কিছু উল্টাপাল্টা হয়ে যায়। ভুলটা ধরাইয়া দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। (B)
সংখ্যালঘুদের উপর এত অত্যাচার হয়, কিন্তু অপরাধীরা ধরা পড়ে কমই, শাস্তি হয় আরো কম। শাস্তি হয় না বলেই বারবার একই ঘটনা ঘটে। রামুর ঘটনার কথাই ধরা যাক, একটি শান্ত জনগোষ্ঠির উপর তুচ্ছ ছুতোয় এতবড় অত্যাচার হয়েছে, ঐতিহাসিক নিদর্শণ ধবংস করা হয়েছে, প্রবল মানসিক অত্যাচারসহ ভীতির সঞ্চার করা হয়েছে, কিন্তু এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হয়েছে কি? যারা এর পেছনে জড়িত তারা কি শাস্তি পেয়েছে? শুধু ঘটা করে পুনর্বাসন আর মন্দির গড়ে দিলেই কি সব ঠিক হয়ে যায়, ভাঙ্গা মন জোড়া লাগে? পূর্ণিমা নামের এক হতভাগীর কথা পত্রিকায় পড়েছি। এখন কোথায় আছে সে, কেমন আছে কে রাখে তার খবর! তার নিপীড়কদের কি শাস্তি হয়েছে? গভীর রাতে জোব্বাধারী মোল্লা-হুজুরেরা যখন ওয়াজ-মাহফিলের নামে অশ্লীল মাসায়েলার সাথে অমুসলিমদের ধর্মের বিরদ্ধে বিষোদ্গার করে তখন ব্লাশফেমীর কারণে তাদের ধরা হয় না কেন? ‘মালাউন’ শব্দটির মত একটি বিষাক্ত বিজাতীয় শব্দের ব্যবহার নিষিদ্ধ হয় না কেন? এরকম প্রশ্ন আছে অজস্র কিন্তু সত্যি কি আমরা অনেকেই এসব দেখেও না দেখার, শুনেও না শোনার ভান করিনা? দেশে কিছু সুবিধাভোগী সুশীল আছেন যারা কেবল বিশেষ সময়ে সংখ্যালঘুদের জন্য কুমীরের মায়া কান্না কাঁদেন; কিন্তু ঐ পর্যন্তই! দলকানা লোকদের কাছে আর কি এমন আশা করা যায়…
কিছু বলার নেই, অভিজিৎদা!
@আবদুল গাফফার চৌধুরী কয়েক বছর আগে থেকে লেখা দিচ্ছেন না। আমাদের উচিত সবাইকে এই ব্যাপরে জানানো।
@অভিজিৎদা, একটু আগে শাহাদুজ্জামান ভাইকে অনুরোধ করলাম ‘প্রথম আলো’ তে না লিখতে । উনি জানালেন, কিছুদিন ধরে উনি লেখা দিচ্ছেন না । শুনে ভালো লাগলো। জাফর ইকবাল স্যার না লিখলে খুব খুশী হবো্ ।
@অসীম,
ব্যাপারটা শুরু হওয়ায় আনন্দিত বোধ করছি। মতি মিয়ার বোধদয় হবে বলে মনে হয় না, কিন্তু প্রথম আলোর মধ্যকার অগনিত বিবেকবান সংবাদিকেরা যদি সামনে এগিয়ে আসেন, তাহলে দেখবেন, প্রথম আলোর ভিত্তি যতই মজবুত মনে হোক না কেন, ফাটল ধরবেই। আর নিজেরাই তখন ফাটল সারাতে উদ্যোগী হবেন।
আজকে দেখলাম আলীম আল রাজী দেখলাম স্ট্যাটাস দিয়ে বলেছেন তিনি রস আলো পৃষ্ঠার দায়িত্বে ছিলেন, ছেড়ে দিচ্ছেন। এরকম করে সবাই পায়ে পায়ে এগিয়ে এলে পরিবর্তন ঘটতে বাধ্য।
সচলে চরম উদাস দাবী করছেন প্রথম ছবিটা এডিট করা, ছয় এবং সাত নম্বর মহিলাকে ভালো করে দেখলে সেটাই মনে হয়।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
হ্যা, এডিট করাই। চরম উদাসের লেখাটি তো আছেই, এমনিতে হাই রেজুলেশনের ছবিটা দেখেও তা বোঝা যায়। এই এডিটের কাজ করেছে প্রথমালর স্বনামধন্য কুশীলবেরাই। আমি উপরে জাহিদ রাসেলকে উত্তর দিতে গিয়ে লিখেছি।
প্রথম আলোর এই ন্যাক্কারজনক কাজের বড় সড় প্রতিবাদ হওয়া দরকার।
সময়োপযোগী লেখা।
আমি শুধু ফেইসবুকে যা লিখেছি তা তুলে দিচ্ছি।
“আমাদের বাসার house manager অনীতার বোনেরা আশুগঞ্জের চর থেকে বিতাড়িত হয়ে ভৈরবে অবস্থান নিতে বাধ্য হয়েছিল নির্বাচনের পর পর। পরে আর্মিরা আবার বাড়িতে নিয়ে গেছে। তাঁদের বাড়িতে অবস্থান এখন ঝঁকিপূর্ণ।তাঁদের অপরাধ তারা ভোট দিতে গেছিল। আবার ভোট কেন্দ্রে না গিয়েও উপায় ছিল না। সংখ্যালঘুরা শাঁখের করাতে পড়েছে। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে আওয়ামীলীগ আর বি এন পি উভয়ের মতেই গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে। অনীতা মনে করে সংখ্যালঘুদের মারার জন্য পাঁচ বছর পর পর নির্বাচন নামক গণতন্ত্রের নাটক হয়।কারণ এর আগে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে কসবায় তাঁর ভাইয়েরা ভুগেছে।”
যশোরের অভয়নগর উপজেলার চাঁপাতলা গ্রামের মালোপাড়ায় তাণ্ডবের উস্কানির জন্যে “প্রথম আলো” বা মতিউর রহমানকে দায়ী করাটা আমার কাছে বাড়াবাড়িই মনে হচ্ছে। প্রথম আলোর আজকের প্রতিবেদনে থেকেই জানা যায়-এই অঞ্চলে জামাত শিবিরের ঘাঁটি আগ থেকেই আছে।
@জাহিদ রাসেল,
বাড়াবাড়ি নয় মোটেই। প্রথম আলো বরাবরই সূক্ষভাবে পাঠকদের মাঝে সাম্প্রদায়িকতা উস্কে দিয়েছে, এর বহু আলামত আছে (দেখুন এখানে, কিংবা এখানে)। আর বায়তুল মোকারম মসজিদের খতিবের পা ধরে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া, আব্দুল হাই কিংবা অদিতি ফাল্গুনীর নিম্নমানের কুৎসিৎ গল্প প্রকাশ এবং তারপর ক্ষমা চাওয়া,পারসোনাতে গোপন ভিডিও কিংবা ইসলামী ব্যাংকের বিজ্ঞাপন প্রচারের মতো ঘটনা, এগুলোর কথা তো আপনিই বলেছেন।
যে ছবিটি প্রথম আলো ছাপিয়েছে সেটাও ইচ্ছে করে সিঁদুর আর টিপের রঙ গাঢ় করে ছাপিয়েছে প্রথম আলো। এধরনের ছবিতে শাখা সিঁদুর এতো উদ্ভাসিত হয়ে উঠার কথা নয়। আমরা রাস্তা ঘাটার যানজটের, ভীর ভাট্টার অনেক ছবিই পেপারে দেখি, কয়জনকে আমরা হিন্দু বলে আইডেন্টিফাই করতে পারি? কিন্তু প্রথম আলোর ছবিটায় সব কিছুই মাত্রাতিরিক্ত উজ্জ্বল। আপনি হাই রেজুলুশনের এই ছবিটা দেখুন, তাহলেও অনেক কিছু পরিস্কার হবে।
আরো ডিটেল বিশ্লেষণ চাইলে এই লেখাটি দেখুন –
প্রথম আলোর সাম্প্রদায়িকতা
জাফর ইকবাল স্যার প্রথম আলোতে লেখা ছেড়ে দিয়েছেন যতটুকু জানি।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
এটা সত্য হলে খুবই আনন্দের ব্যাপার হবে। তুমি কোন লিঙ্ক বা কিছু দিতে পার, যাতে এ ব্যাপারটা কনফার্ম করা যায়?
@অভিজিৎ দা,
কোনো লিংক খুজে পাচ্ছিনা। তার রিসেন্ট লেখাগুলো কিন্তু একাধিক অনলাইন পত্রিকায় ছাপা হলেও প্রথম আলোতে ছাপা হয়নি।
ধন্যবাদ দাদা , সময়োপযোগী লিখেছেন। প্রথম আলোর বিরুদ্ধে অনেক কথাই এতদিন নেটে দেখেছি আজ একেবারে হাতেনাতে ধরিয়ে দিলেন।
সংবাদ মাধ্যমের উপরে কথা বলাটা খুব বিপদের কারন এটা করতে গেলেই বাকশালের গন্ধ পাওয়া যায়।বাক-স্বাধীনতার এই সুযোগ যারা কাজে লাগাচ্ছে তাদের ব্যাপারে কি করা যায় বলে আপনি মনে করেন?এই ধংস্ব যজ্ঞের উষ্কানীদাতা হিসাবে মতিউর ও তার সাংগ পাংগ দের বিরুদ্ধে কেস দেওয়া যায় না?
@ছন্নছাড়া,
কেস দিয়ে লাভ কি? এইদেশে এইসবের বিচার হবে না। রাজাকার দের বিচার ৪২ বছর পর শুরু হয়েছে, আর তারপরেও কচলাকচলি থামেনি, কেউ কেউ আবার রাজনৈতিক গন্ধও পাচ্ছে।সেখানে রাজাকারদের তুলনায় প্রথম আলোর ইমেজ তো একেবারে ফেরেশতা তুল্য, আর ফেরেশতার বিরুদ্ধে সরাসরি লাগতে চায় এমন লোক খুবই কম আছে!
কবিতা ২টি ওনাদের স্বনামে আমার ফেসবুকে যুক্ত করতে চাই।
অনুমতি চাইছি।
@তিতাস,
অবশ্যই। সানন্দে অনুমতি দিলাম।
খুব কাজের লেখা দিয়েছেন অভিদা। প্রথম অংশটা পড়লাম ( পরেরটা আপনার এক মন্তব্যে একটু আগেই পড়েছিলাম)।
এই প্রথম আলোকে নিয়ে মারাত্বক ধন্ধে থাকলেও বাকস্বাধীনতার (?) এই মহান দেশে প্রথম আলো নিয়ে সমালোচনা করাটা বেশ মুশকিলের কাজ, অনেকটা ব্লাস্ফেমীর মত ( ধর্ম নিরপেক্ষ ব্লাস্ফেমী!!) । সমালোচনা করলেই অবধারিত ভাবে বাকশালী খেতাব জুটবে।
এই পত্রিকা পড়া বাদ দিয়েছি সম্প্রতি এর একঘেয়ে লেখা আর পাঠকদের একপেশে মন্তব্য পড়তে পড়তে। আজ আপনার লেখা পড়ে প্রথম আলো বর্জনের একটা ভাল রসদ পাওয়া গেল। শুভেচ্ছা নেবেন প্রথম আলোর স্বরূপের খানিকটা তুলে ধরাতে। সামনে ব্লাস্ফেমীটা চালু রাখবেন এই আশা রইল।
পড়ুন ,
এই প্রথম আলোকে নিয়ে মারাত্বক ধন্ধে থাকলেও বাকস্বাধীনতার (?) এই মহান দেশে প্রথম আলো নিয়ে সমালোচনা করাটা বেশ মুশকিলের কাজ, অনেকটা ব্লাস্ফেমীর মত ( সুশীল ব্লাস্ফেমী!!) 🙂
@অর্ফিউস,
প্রথম আলো খুবই জরিপি পত্রিকা।এরা পাঠকদের ভেতর সবসময় নানা রকম জরিপ করতে থাকে।কোন খবর কত পারসেন্ট পাঠককে হার্ট করবে,কোন খবর কত পারসেন্ট পাঠকে আমোদিত করবে তার হিসাব এদের কাছে থাকে।নিজেদের চাহিদা যেন কোন ভাবেই না কমে সেজন্য এরা পাঠকদের মতিগতি খুব নজরে রাখে।বেশ আগে যখন প্রথম আলো পড়তাম তখন মনেহতো এরা পাঠকের একটা সুস্থ্য রূচিবোধ তৈরিতে ভুমিকা রাখে।তবে এখন এরা ভীষণ রকমভাবে ক্ষণিক পাঠকদের চাহিদার সাথে নিজেদের কনভার্ট করে খরব প্রকাশ করে।প্রথম আলো কোন আবেগ থেকে লেখে না,প্রচলিত কোন আবেগকে আঘাতও করে না, এরা পাঠকদের আবেগকে ব্যাবহার করে,এবং এতে চাহিদাও বাড়ে।
@প্রাক্তন আঁধারে, সেতো বটেই ভাই, তবে ঐ যে বলছিলাম যে ব্লাস্ফেমি তত্ব।এখানে কোন হুজুর না, আধুনিক ছেলে মেয়েরাই হাসাহাসি করবে। তবে এইযে ব্যাপারটা অভিদা সামনে তুলে আনলে আর এই নিয়ে একটা চিন্তার খোরাক দিলেন, সেটা আমার মত মোটামুটি চিন্তাশুন্য মানুষকে অনেকটাই সাহায্য করবে।
আমার সমস্যা হল যে আমার বিশেষ কিছু দিকে জানার পরিধি একেবারেই কম। আর তাই একমুখী কিছু চিন্তাভাবনা করতে অভ্যস্ত হবার কারনে অন্যদিকে চিন্তা ডাইভার্ট হতে বেশ সময় লাগে, যেটা মোটেও এই যুগে ভাল কাজ না। বুঝতে পারছি চিন্তাকে আরেকটু শানাতে হবে। না হলে মুক্ত মনাতে ভাল কোন লেখাও দিতে পারব না বলেই আমার বিশ্বাস। খুব মনঃকষ্টে আছি বিষয়টা নিয়ে। এতদিন ধরে কন্ট্রিবিউট করছি অথচ কোন মান সম্মত লেখা দিতে পারলাম না, যা কিনা চিন্তার খোরাক জোগাতে পারে। রিসার্চ করার আগ্রহের অভাবেই এমন হয়, আলসেমি আর কি!!
@অর্ফিউস,
আপনার চিন্তা মোটেই একমুখী নয়, দারুণভাবেই স্বচ্ছ। আপনার মত লেখক এবং পাঠকদের দেখলে আশাবাদী হতে মন চায়।
@অভিজিৎ দা, ধন্যবাদ আপনার কথার জন্য। আসলে আপনার মত কিছু মানুষের কাছ থেকে পাওয়া ইতিবাচক কথা আমার মত যথেষ্ট পরিমানে নার্ভাস লোকের জন্য বড় অনুপ্রেরণা হিসাবেই কাজ করবে।
মুক্ত মনার জন্য ভাল কিছু লিখতে প্রায়শ ইচ্ছা করে, কিন্তু যেহেতু আমি মনে করি যে মুক্ত মনাতে লেখা দিলে নুন্যতম একটা মান থাকতে হয়, আর লেখার সেই মান পর্যন্ত্ পৌছাতে পারব কিনা এই ভয়েই ভীত হয়ে লেখার চিন্তা ভাবনা করেও আর শুরু করতে সাহস করে উঠতে পারি না।
তবু আমার খুবই ইচ্ছা, জীবনে অন্তত একটা হলেও মুক্ত মনার জন্য মানসম্মত লেখা দেয়া, এজন্যে আমি কিছু অনুশীলন করে নিজেকে প্রস্তুত করব ভাবছি।
সুন্দরবনের ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার’ আর সুন্দর দেশ বাংলাদেশের ‘সংখ্যালঘু’ দুটোই এখন বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি। বাংলাদেশ বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের উচিৎ এই দুই বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির দিকে একটু নজর দেয়া। আর এদের সংরক্ষন করতে না পারলে দয়াকরে সাঈদিকে ঝুলানোর কাজটা আপাতত পোস্টপন করেন।
(বন্য প্রাণী আর সংখ্যালঘুদের মধ্যে আপাতত কোন পার্থক্য দেখছি না তাই দায়িত্বটা বাংলাদেশ বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের উপরই বর্তায়)
সাঈদিকে ঝুলানো হলে বাংলাদেশে হারিকেন জ্বালিয়েও সংখ্যালঘু খুঁজে পাওয়া যাবে না।
তবে ব্যাক্তিগতভাবে আমি সাঈদীকে ঝুলানোর পক্ষে। যদিও একারণে চড়া মুল্য দিতে হবে বাংলাদেশকে, ইন আদার ওয়ার্ডস ‘সংখ্যালঘুদের’।
@দিগ্বিজয় শুভ,
তার মানে তো আর এইনা যে এই ভয়ে রাজাকার দের ছেড়ে দিতে হবে! তবে সাইদিকে ঝুলানোর আগে জামাত কে ঝুলিয়ে দিলে মানে নিষিদ্ধ করলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। মুশকিল হল এই যে লীগ সেটা করবে বলে মনে হয় না। জামাতের সমর্থকরা এতে করে বি এন পির ভোট বাড়িয়ে দেবে না? এই রিস্ক লীগ নিবে কেন? এইটা হল সেকুল্যার লীগের কংকাল।