বারুইপুরের আদালতে আজ ভিড়টা একটু বেশিই।
এরকম ছোট আদালতে এমন অসম্ভব ভিড় মোটেও মানানসই নয়। মামলাটাও এমন কোনো আলোচিত মামলা নয় যে অহেতুক ভিড় করতে হবে। আদালতের মতোই মামলাটাও ছোট। তবে মামলা ছোট হলেও বিবাদী ধনী লোক। কৌঁসুলি হিসাবে নিয়োগ দিয়েছেন সদ্য বিলাত ফেরত এক ব্যারিস্টারকে।
বারুইপুর কোলকাতার কাছে হলেও, সে সময়ে বিলাত ফেরত ব্যারিস্টার পথে ঘাটে দেখা যেতো না। বাঙালি ব্যারিস্টারতো ছিলই না বললেই চলে। তাই, বিলাত ফেরত ব্যারিস্টারকে ভিড় করে দেখার মানুষজনের এই লোভকে খুব একটা দোষ দেওয়া যায় না। তবে, আজকের এই ভিড় শুধু একজন বিলাত ফেরত ব্যারিস্টার দেখার কারণে নয়। এই বিলাত ফেরত ব্যারিস্টারটির নাম তারা তাঁর বিলাত যাবার আগে থেকে জানতো। বিলাতে যাবার আগে ব্যারিস্টারটি কয়েক বছর সাহিত্যচর্চা করে গেছেন। সে কারণে কেউ তাঁর কবিতা পড়েছে, কেউ কাব্যগ্রন্থ পড়েছে, কেউ বা রঙ্গ মঞ্চে তাঁর লেখা নাটক দেখেছে। কবি হিসাবে কিছুটা নামডাকও কামিয়ে ফেলেছেন তিনি এর মধ্যে। একজন আবেগপ্রবন কবি কীভাবে ব্যারিস্টারির মত আবেগশূন্য বৈষয়িক বিষয়কে সামাল দেন, সেটা দেখার কৌতুহলই মানুষজনের মধ্যে বেশি। এমন অদ্ভুত বৈপরিত্য সহজপ্রাপ্য নয়। সে কারণেই আদালত উপচে পড়ছে জনারণ্যে।
যথাসময়েই হাকিম সাহেব এজলাশে এলেন। অল্পবয়েসী একজন হাকিম। বয়স ত্রিশের কাছাকাছি। কোট পান্টের বদলে চোগা-চাপকান পরে আছেন তিনি। একহারা চেহারা। গায়ে মাংস নেই বলে যতটুকু না লম্বা, তার চেয়ে বেশি লম্বা মনে হয়। মাথার মাঝখানে সিঁথি করা। হাকিম সাহেবের প্রশস্ত ললাট, খড়গের মত চাপা নাক। উপরের ঠোঁটটা নীচের ঠোঁটের চেয়ে বড়। নীচেরটা প্রায় দেখাই যায় না এমন। তারপরেও ঠোঁটের কোণায় একটা শুভ্র হাসির বিদ্যুৎ খেলা করে চলে। চোখ দুটো তীক্ষ্ণ উজ্জ্বল। এই উজ্জ্বল চোখ দেখলেই বোঝা যায় মানুষটা অসম্ভব রকমের বুদ্ধিমান একজন মানুষ।
জনতার মধ্যে যাঁরা একটু জ্ঞানী, একটু বেশি খোঁজখবর রাখেন, তাঁরা জানেন যে, হাকিম সাহেব ব্যারিস্টার সাহেবের মত অত কীর্তিমান না হলেও তাঁর ঝাঁঝও কম নয়। এর মধ্যেই খান দুয়েক উপন্যাস লিখে ফেলেছেন তিনি। জনতার এই জ্ঞানী অংশটা তুমুল লড়াই আর নাটক দেখার জন্য মনে মনে উত্তেজিত হয়ে উঠেছে। কলোসিয়ামে বাঘ সিংহের লড়াই দেখে প্রাচীন রোমানরা যেমন উত্তেজিত হতো, অনেকটা সেরকম।
বিখ্যাত এবং সুদক্ষ অভিনেতা যেমন তুমুল আত্মপ্রত্যয় নিয়ে মঞ্চে প্রবেশ করেন, ব্যারিস্টার সাহেবও সেভাবেই এজলাশে হাজির হলেন। রাজকীয় ঢঙে, দাপুটে মেজাজে। পোশাক-আশাক, আচার আচরণে পুরোদস্তর সাহেবি তিনি। কেবল গায়ের রঙটিতেই বাঙালির শ্যামল কোমল ছাপ মাখানো। ব্যারিস্টার সাহেব হাকিম মশায়ের মত যুবক নন। মাঝবয়েসী, পৌঢ় তিনি। শরীরে পৌঢ়ত্বের স্থূলতা দেখা দিয়েছে। সিঁথি মাঝ বরাবর। মাথার চুল বিরল হতে শুরু করেছে। নাকটা মোটা, অধরগুলো পুরু। সারা চোখে মুখে ছটফটে চাপা উল্লাস তাঁর। মনের মধ্যে কী হচ্ছে তার পুরো ছাপ প্রকাশিত হয়ে যায় মুখের অভিব্যক্তিতে। কোনো কিছুই গোপন থাকে না সেখানে। চোখ দুটো সাগরের মতো উদার আর উজ্জ্বল। চারিপাশটা এক নজর বুলিয়েই তিনি বুঝে যান যে, এই রঙ্গ মঞ্চের প্রধান অভিনেতা তিনি। হাকিম জবরদস্ত হলেও তার সুতীব্র উজ্জ্বলতার কাছে ম্লান। প্রখর সূর্যের কাছে টিমটিমে মাটির প্রদীপ যেনো। এজলাশ, মামলা, হাকিম সবকিছু উপলক্ষ্য মাত্র, তিনিই একমাত্র লক্ষ্য, তিনিই প্রধান পুরষ। আকাশে একমাত্র নক্ষত্র তিনি, বাকি সবাই গ্রহ-উপগ্রহ, তাঁকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান। হাজার হাজার জনতার হাত থেকে অশ্রুত করতালি তিনি শুনতে পান। তাঁর নামে জয়ধ্বনি দিচ্ছে সমবেত সবাই।
হাকিম নিজেও টের পেয়েছেন যে, এই বিশালাকায় পর্বতের কাছে আজ তিনি ম্রিয়মান। সবার আগ্রহ এবং কৌতুহলের কেন্দ্র বিন্দু ব্যারিস্টার সাহেব। সমবেত সকলের মনোযোগ পাচ্ছেন বিলাত ফেরত ব্যারিস্টারটি। তিনি স্থির করলেন যে, মনোযোগ প্রত্যাশী আত্মম্ভরি এই ব্যারিস্টারকে আজ তিনি কোনো গুরুত্ব দেবেন না। পুরোপুরি উপেক্ষার নীতি নেবেন। এটাই হবে তাঁর শাস্তি। এই এজলাশে তিনিই প্রধান, আর সবাই গৌণ। ব্যারিস্টার সাহেবের বাইরে নাম যশ যাই থাকুক না কেনো, এখানে তাঁকে তাঁর অধীনতাই মেনে নিতে হবে। তীক্ষ্ণ উজ্জ্বল দুটো চোখ কাগজে নিবদ্ধ রাখলেন তিনি। সরাসরি তাকাচ্ছেন না ব্যারিস্টারের দিকে। অনুকম্পা মিশ্রিত তাচ্ছিল্যের সাথে ব্যারিস্টারের তর্ক শুনতে লাগলেন তিনি।
ব্যারিস্টার সাহেবের জন্য সব জায়গাই রঙ্গমঞ্চ। আর সেই মঞ্চের তিনিই সেরা অভিনেতা। শুধুমাত্র দর্শকেরাই নয়, সহ অভিনেতারাও তাঁর দক্ষ অভিনয়ের দর্শকমাত্র। এই ছোকড়া হাকিমও তাই। অহংকারী শার্দুলের মত তিনি গভীর আত্মবিশ্বাস আর আত্মপ্রত্যয় নিয়ে কেন্দ্রভূমি দখল করে ফেলেন। কৌঁসুলির কৌশল তাঁর কর্ম নয়, বরং নিজেকে মেলে ধরার মধ্যেই মূল আনন্দ লুকিয়ে রয়েছে। সে কারণে দুই চার কথার পরেই তাঁর মক্কেল চলে যায় পশ্চাদভূমিতে। তিনি নিজে চলে আসেন সম্মুখভাগে। দর্শক মনোরঞ্জনই এখন তাঁর একমাত্র ধ্যান-জ্ঞান। আদালত কক্ষ জুড়ে রাজকীয় পদক্ষেপে হেঁটে বেড়ান তিনি। গমগমে মোটা স্বরে এক নাগাড়ে কথা বলে যেতে থাকেন। সেই বক্তব্যে কখনো থাকে ইংরেজি কাব্যের কোটেশন, কখনো থাকে ভারতচন্দ্রের প্রতি তীব্র ব্যঙ্গোক্তি, শ্লেষ। বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে কখনো তাকান জনতার দিকে, কখনো তাকান হাকিমের দিকে, কখনো আত্মপ্রেমী নার্সিসাসের মতো নিজের অত্যুগ্র বিলাতি পোশাকের দিকে।
ব্যারিস্টারের মনোযোগ আকর্ষণের এই তীব্র নাটকীয় প্রচেষ্টা দেখে মনে মনে হাসেন হাকিম। পুরোটা সময় ধরে নির্লিপ্ত তাচ্ছিল্য তিনি ধরে রেখেছেন। আত্মপ্রেমী, উদ্ধত, অহংকারী, দুর্বিনীত ব্যারিস্টারকে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন যে হাজারো চেষ্টা করলেও তাঁর মনোযোগ তিনি পাবেন না। সন্তুষ্টির একটা আনন্দ খেলা করে যায় তাঁর মনের মধ্যে। অধর কোণে ফুটে উঠে চাপা কৌতুকের হাসি। বুঝতে পারছেন ব্যারিস্টার সাহেবের চোখ তাঁর দিকে, প্রাণপনে চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁর মনোযোগ পাবার।
হঠাৎ করেই ভুলক্রমে কাগজ থেকে চোখ উঠে যায় তাঁর। ব্যারিস্টারের সাথে চোখাচোখি হয়। এতক্ষণের সংকল্প ভুলে, আদালত ভুলে, জনতা ভুলে, স্থানকালপাত্র ভুলে দুজনে দুজনের চোখের দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন। সময় যেনো থেমে গেছে কোথাও, ইতিহাসের চাকাও বোধ হয় সেই সাথে। কোলাহলমূখর জনতাও আশ্চর্যজনকভাবে স্তব্ধ। ইতিহাসের এক বিরল ঘটনার সাক্ষী তারা আজ।
তীক্ষ্ণ উজ্জ্বল বুদ্ধিদীপ্ত একজোড়া চোখ মিলে গেছে সাগরের মত উদার আত্মপ্রত্যয়ী আবেগী চোখের সাথে, কাব্যের সাথে গদ্যের সম্মিলন ঘটেছে যেনো।
বাংলা সাহিত্যের প্রথম আধুনিক ঔপন্যাসিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বাংলা ভাষার প্রথম আধুনিক কবি এবং সর্বকালের সেরা কাব্য প্রতিভা মাইকেল মধুসূদন দত্তের চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে থাকেন অনন্তকাল।
কালের যাত্রা রূদ্ধ হয়ে যায় ঠিক সেই মুহূর্তটায়।
তথ্যসূত্রঃ মাইকেল মধুসূদন – জীবন-ভাষ্য – প্রমথনাথ বিশী
নীরদ সি চৌধুরী তার স্মৃতিকথায় লিখেছিলেন কিশোরগন্জ এলাকায় ছেলেবেলায় বাড়ীতে অতিথী আসলে, ছেলেমেয়েদের লাইন করে দাড়িয়ে মধুসূদন আবৃত্তি করতে হতো কোনরকম একসেন্ট ছাড়াই, এটা দেখানোর জন্যে যে কে কতোটা ভালো শুদ্ধ বাংলা শিখেছে। মধূসূদনের কবিতার মতো বিশুদ্ধ বাংলার মুক্তামালা আজ পর্যন্ত সৃষ্টি হয় নি।
মধূসূদন আর উনিশ শতকের বাংলা নিয়ে গল্প কদিন পর পরই চাই।
উহ! দারুণ।
এইসব কি লিখেন? লোকে ফরিদ আহমেদ নাম দেখলে যাইই লেখা হোক বাহবাও দিয়ে যায়।
আপনার গুলবদন বিবি নিয়ে ব্যাস্ত থাকার কথা। ফরজ কাজ ছেড়ে যারা নফল নিয়ে ব্যাস্ত থাকে তাদের একেবারেই বরদাস্ত করা যায় না।
@আদিল মাহমুদ,
আদিল ভাই, আপনিও কিন্তু ফরজ কাজ করছেন না। “ধর্ম শিক্ষার নামে সাম্প্রদায়িকতার সরল পাঠ”
সিরিজ টা কিন্তু থেমে আছে।শেষ করি বলেও করছেন না। খুব মন খারাপ হইসে আমার 🙁 পুরাটা না লেখলে পড়ি কেমনে? ৩ পার্ট পড়ে থেমে গেছি, যদিও ৫ পার্ট লিখেছেন 🙁
মনে রাইখেন ফরজ কাজ না করা কিন্তু কবিরা গুনা। আখেরাতে দোজখ ছাড়া আপ্নের গতি নাই আদিল ভাই 😀
@আদিল মাহমুদ,
চলেন নাম পালটাপালটি করি। লোকে আদিল মাহমুদ নাম দেখলেও নমঃ নমঃ করতে থাকে। আর আমার নিন্দুকের কী অভাব আছে? এইখানেইতো দেখলাম কয়েকজনকে। আহারে কবির মতো উদার হয়ে আমিও যদি বলতে পারতাম, নিন্দুকেরে বাসি আমি সবার চেয়ে ভাল।
গুলবদনতো অন্যের বিবি। তারে নিয়া ব্যস্ত থাকাটা বেহেস্তি কাজ হইতে পারে, কিন্তু ফরজ কাজ মোটেও না। :))
@ফরিদ আহমেদ,
এইসব মারফতি কথা ছাড়েন। ধানাই পানাই, আজে বাজে লিখা বাদ দিয়ে আসল জিনিস নামান। অন্যের বিবি ঘাটাঘাটি সংক্রান্ত নৈতিকতার খোঁজ করার আপনার অন্তত দরকার নাই। নাস্তিক মানুষের আবার নৈতিকতা চিন্তা কিসের…
@আদিল মাহমুদ,
:-s :-s
চরম কৌতুহল উদ্দীপক লেখা, এমন ঐতিহাসিক ঘটনা এতো আকর্ষনীয়ভাবে উপস্থাপনের জন্য আপনাকে সেইরকম ধন্যবাদ ফরিদদা। একটানে সাঁই করে পড়ে ফেললাম ।
লেখালেখির সব টেকনিক লুকায়া না রাইখে ব্যাপন প্রক্রিয়ায় ছড়ায়া দেননা, তাইলে আমরাও কিছু…………… শিখি :-Y
@ভদ্র,
চরম একটা ভদ্র কমপ্লিমেন্ট এর জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ। (F)
সব টেকনিক শিখায় দিলেতো বিপদ। এই করেই না টুকটাক পেটের ভাত জোগাড় করি। 🙂
এত্তোটুকুন একটা ঘটনা কিন্তু তার যে উপস্থাপন, অসাধারন! ধন্যবাদ ফরিদভাই। আরোও চাই!
@কেশব অধিকারী,
আরো আসবে কেশবদা। চিন্তা নাই। 🙂
(Y)
@আলসে কুড়ে,
(B)
শেষ হইয়াও হইল না শেষ!
কে জিতেছিল এই লড়াইয়ে, ফরিদ ভাই, শেষ পর্যন্ত? নাকি দুজনেই দুজনের ব্যক্তিত্বের কাছে পরাজিত হয়ে মাটির সাথে মিশে গিয়েছিলেন?
উপভোগ্য এই লেখাটির জন্য অনেক ধন্যবাদ! (C)
@কাজি মামুন, ভাই আপনার বার্তা বাক্সটা দয়া করে চেক করবেন তো। দেখেন তো আমার রিপ্লাইটা গেছে কিনা। নেট সমস্যার কারনে মাঝে মাঝে ফেইল্ড হয়।
@কাজি মামুন,
বাংলা ভাষা এবং সাহিত্য।
@ফরিদ ভাই,
বাংলা ভাষা এবং সাহিত্য কিভাবে জিতেছিল? আদালত কক্ষে অনুষ্ঠিত একটি ব্যাক্তিত্বের লড়াই কিভাবে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের জন্য জন্ম দিয়েছিল এক মাহেন্দ্রক্ষণ, হয়ে উঠেছিল বিপুল ফসলসম্ভবা?
জানি না, এই প্রশ্নটাও আগেরটার মতই বলদমার্কা হইছে কিনা! আগেরটার উত্তর দিয়ে চরম আস্কারা প্রদানই হয়ত দ্বিতীয় বলুদে প্রশ্নটার জন্ম দিয়াছে!
ফরিদ আহমেদের লেখার ভক্ত সবাই।আমিও। কিন্তু এত ছোট লেখার জন্য এত বাহবা দিলে ফরিদ ত ফাকিবাজি শুরু করবে, বড় লেখার কষ্ট করবে কেন?। । আর একটু বড় লেখা না হলে চলে না বাহে।
@সপ্তক,
হক কথা। চান্দু অলরেডি চান্দাবাজির ধান্দা শুরু কইরা দিসে …….. অজু কইরা পড়েনঃ
এইবার বুঝেন :))
@সপ্তক,
লেখাটা কী খুব ছোটো হয়েছে? ব্লগের জন্য মনে হয় এরকম সাইজই প্রয়োজন। বড় লেখাতে মনোযোগ রাখার মতো ধৈর্য কি এখন মানুষের আছে?
অনামীকে একটা ব্যাখ্যা দিয়েছিলাম এই লেখার বিষয়ে। সেটাই আবার বলছি। এটা লিখবার কোনো পূর্ব পরিকল্পনা আমার ছিল না। আকস্মিকভাবেই লেখা হয়ে গিয়েছে এটি। প্রাক-প্রস্তুতি নিয়ে বসে ছিলাম অন্য একটি লেখার জন্য। কিন্তু, সেই লেখা বাদ দিয়ে আচমকাই এটা লিখতে শুরু করি আমি। আসল লেখাটার এক লাইনও লেখা হয় নি আজো। যে লেখাটা লেখা হয় নি, ওটা যখন লিখিত হবে, নিশ্চিত থাকেন, দানবাকৃতির হবে সেটি। ওর জন্য যে প্রস্তুতি নিয়েছি, সেটি ব্যাপক।
বাহবার বিষয়ে একমত আপনার সাথে। কাউকে অতিরিক্ত বাহবা দিলে, তার বখে যাবার সম্ভাবনাই বেশি।
ডিপ্লোম্যাসির ধার না ধেরে দুম করে সত্য কথা বলে দেবার আপনার বদ অভ্যাসটাকে খুব পছন্দ করি আমি। (Y)
ফরিদ ভাই,
অছম হয়েছে.
@অমিত দাস,
ধন্যবাদ দাদা।
@ফরিদ ভাই,
হারেমবাসিনীদের কি হইলো? :-O :-O
আগে ওই সিরিজটা শেষ করেন| তারপর জজ ব্যারিস্টার, বিদ্যাসাগর-বঙ্কিম-মাইকেল-রবীন্দ্রনাথ নিয়ে লিখবেন| ক্রনোলজি মানবেন তো! ছোটবেলায় চ্যাপ্টার বাই চ্যাপ্টার সাল তারিখ এমনি মুখস্থ করলাম?
লেখাটি মন্দ হয়নি, তবে আগের সিরিজটার জন্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি|
@অনামী,
আমি কি মোগল বাদশাহ যে হারেমবাসিনীদের খবর জানিবো?
এই লেখাটা আসলে হুট করে হয়ে গেছে। লিখতে বসেছিলাম অন্য একটা লেখা। সেটা না লিখে এটা লিখে ফেলেছি পাঁচ মিনিটের সিদ্ধান্তে। যেটা লিখতে বসেছিলাম পরিকল্পনা করে, সেটির এক লাইনও লেখা হয় নি। 🙁
গুলবদনকে ভুলি নাই। ওটা শেষ করবো। হয়তো খেয়াল করেছেন যে, ওই লেখা এখন আর শুধু হুমায়ূননামাতে সীমাবদ্ধ নেই। বিস্তৃতি ঘটছে হুমায়ূননামার সীমানা ছাড়িয়ে। এর জন্য অন্য বই থেকেও রেফারেন্স লাগছে। পরের পর্বের একটা অংশের জন্য দু’টো বই লাগবে আমার। দুটো বই-ই পড়া আমার, কিন্তু আপাতত হাতের কাছে নেই। এর একটা টরন্টো পাবলিক লাইব্রেরিতে আছে, কিন্তু আমার বাসা থেকে অনেক দূরের রাস্তা। কাজেই, অর্ডার দিয়েছি। অন্যটা আমাজন থেকে কিনতে হবে। পকেটে পয়সা নাই। ব্রোক। সবাই মিলে চান্দা দিলে আপত্তি নাই আমার। এক টাকা সাহায্য দিলে, হাশরের ময়দানে দশ নেকি সওয়াব পাবেন। তাই দিয়ে হারেমবাসিনী হুরপরী কিনতে পারবেন আপনারা। 🙂
@ফরিদ ভাই,
না মজাক্করিনি বাহে, সত্যি বুলিছি. তয় ফুলটাইম লেখলে বাংলা সাহিত্য একটু চাঙ্গা হতু.
@হেলাল,
চাঙ্গা হতু কিনা জানি না, তবে চাঙ্গে যে উঠাতে পারতাম তাতে কোনো সন্দেহ নাই। :))
টানটান উত্তেজনাকর লেখা! আল্লাগো, আরেকটু হলে শ্বাস বন্ধ হয়ে মইরা যেতাম.
@হেলাল,
মজাক করলেন নাকি বাহে?
:guru: :guru: :guru: :guru:
@শাম্বাদিত্য বিশ্বাস,
এত কুর্ণিশ কাকে? :-s
@ফরিদ আহমেদ, প্রথমত যে দুজন কে নিয়ে লিখেছেন তাদেরকে। আর দ্বিতীয়ত আপনাকে, এত সুন্দর লেখা আর পাঠক মনে অবাক কৌতুহল জাগানোর জন্য। আবার ধন্যবাদ।
@শাম্বাদিত্য বিশ্বাস,
প্রথম দুজন কুর্ণিশ প্রাপ্য। কাজেই কোনো কথা নেই। আপত্তি নিজের জায়গায়। তারপরেও যখন দিয়েই ফেলেছেন, পালটা হিসাবে আমার কাছ থেকে গোলাপ গ্রহণ করুণ। গুণে গুণে চারটা। (F) (F) (F) (F)
জানা ঘটনা অনেক আগ্রহ নিয়ে পড়ানোর মত আবেদন সৃষ্টি করে লেখার কৌশল মুক্তমনায় ফরিদের মত আর কার?
@গীতা দাস,
প্রশংসা করিয়া লজ্জা দিবেন না। (F)
আসলে ফরিদ ভাইয়ের বেশিরভাগ লেখাগুলিতে বলার মত কিছু থাকে না শুধুই লেখার অসাধারন স্টাইলটা মুগ্ধ পাঠকের মত পড়ে যেতে হয়।
আর যেহেতু বিতর্কিত বিষয় প্রায় থাকে না বললেই চলে, কাজেই লেখার আবেদনটাও হয় অন্যরকম।
ফরিদ ভাই আপনার জন্য শুভেচ্ছা। (F)
@অর্ফিউস,
ইতিহাসতো নিরস জিনিস ভাইয়া। একটু অন্যরকম করে না লিখলে কেউতো পড়বেই না। তেতো বড়িকে একটু সুগার কোটেট করার চেষ্টা আর কি।
বরাবরের মতই ভিন্ন স্বাদের চমৎকার লেখা। বেশ টানটান উত্তেজনা আর রহস্য তৈরী করে একবারে শেষ মাথা পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাবার দারুন কৌশল। আরো লেখা চাই (C)
@কাজী রহমান,
বঙ্কিম, মধুসূদনেও টানটান উত্তেজনা আর রহস্য পান। মাসুদ রানা পড়ে পড়ে আপনি উচ্ছন্নে গেছেন। 😛
@ফরিদ আহমেদ,
এইত্তো থলের বেড়াল বাইরে। স্টাইল টুকলিফাইং ফ্রম মাসুদ রানাইং। হু: হু: সিরাজুদ্দৌ …… থুড়ি, ফরিদ আহমেদ এইবার তুমি শ্যাষ …….. হু: হু: হু: হু: হু: হু:ম (H)
@কাজী রহমান,
স্টাইল অব মাসুদ রানা ইজ ফাটাফাটিং। কাজেই জনাব কাজী সাহেব, টুকলিফাইং ফ্রম মাসুদ রানা ইজ জাস্টিফাইং।
@ফরিদ আহমেদ,
টিকাচে টিকাচে, গিলটি মিয়া টিকাচে :))
@কাজী রহমান,
আপনি যে সিলটি মারা গিলটি লোক, সেতো আগেই জানি। বুলবুলি কী আর আপনেরে এমনি এমনি ঠোকরায়?
@ফরিদ আহমেদ,
হুদা কি ঠোকরায়, রাম খামচিও দ্যায়। যাগ্গা, এইবারের মত চাইপ্প্যা গ্যালাম। শান্তি শান্তি শান্তি।
অনেক সুন্দর লেখার ভঙ্গি। তার চেয়ে আকর্ষণীয় ঘটনাটি। আমরা জানা ছিল না। ধন্যবাদ লেখককে।
@বাহার,
ঘটনাটা আসলেই আকর্ষণীয়। বাংলা সাহিত্যের দুই দিকপালের এরকম অদ্ভুত পরিবেশে অদ্ভুত দ্বৈরথ চিন্তাই করা যায় না। তবে, আমি নিজে কতটা আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে পেরেছি, সেটা প্রশ্নসাপেক্ষ।
ফরিদ ভাই, লেখার স্টাইলটা চরম হইসে … (Y) :clap
@তারিক,
পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া। (F)