মীজান ভাই (অধ্যাপক মীজান রহমান)কে মুক্তমনা ব্লগে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার কিছু নেই। তিনিই সম্ভবতঃ বাংলা ব্লগস্ফিয়ারের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ ব্লগার। বাংলাদেশের যে কয়জন একাডেমিয়ার সাথে যুক্ত শিক্ষাবিদ আন্তর্জাতিক খ্যাতি পেয়েছেন, বাংলাদেশকে পরিচিত করতে পেরেছেন দর্পভরে বিশ্বের অঙ্গনে, তার মধ্যে মীজান রহমান অন্যতম। সেই ১৯৬৫ সালে কানাডার অটোয়াস্থ কার্লটন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনায় যোগ দিয়েছিলেন, সেখানে একটানা তেত্রিশ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের গণিতের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সেরা শিক্ষকের সম্মান সহ বহু সম্মানেই তিনি ভূষিত হয়েছেন। তিনি গতবছর একটি চমৎকার বই লিখেছেন ‘শূন্য’ নামে। কেউ যদি গণিতের শূন্য নামের মহিমায় আচ্ছন্ন হতে চান, বইটি তাকে পড়তে হবে।
বলতে ভাল লাগছে, শ্রদ্ধেয় মীজান রহমানের সাথে একটা গুরুত্বপূর্ণ বই লেখায় হাত দিয়েছি। মহাবিশ্বের উৎপত্তির প্রান্তিক ধারণাগুলো নিয়ে হবে এই বই। মীজান রহমান যেমন গণিতের শূন্যতা নিয়ে লেখালিখি করেছেন, আমারও আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল শূন্যতা; তবে সেটা গণিতের নয় পদার্থবিজ্ঞানের শূন্যতা। শূন্যতার পুরো ব্যাপারটি শুধু গণিতবিদদের নয়, আধুনিক জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানের গবেষণারও সজীব একটি ক্ষেত্র। স্টিফেন হকিং, স্টিফেন ওয়েনবার্গ, অ্যালেন গুথ, আঁদ্রে লিণ্ডে, আলেকজাণ্ডার ভিলেঙ্কিন এবং লরেন্স ক্রাউস সহ মূলধারার প্রায় সকল পদার্থবিজ্ঞানীরা আজ মনে করেন, আধুনিক স্ফীতিতত্ত্ব অনুযায়ী কোয়ান্টাম স্তরে ‘শূন্যতা’র মধ্য দিয়ে এক সময় মহাবিশ্বের সূচনা হয়েছিল, এবং ব্যাপারটা অসম্ভব কিছু নয়। এ নিয়ে আমি বেশ কিছু লেখা লিখেছি বাংলায়। সেগুলো গ্রন্থিত করে মীজান রহমানের সাথে বই লেখার প্রয়াস নেয়া হয়েছে। দেখা যাক। বইয়ের নাম ধাম এখনো ঠিক করা হয়নি, তবে ফেসবুকে একটা পেইজ করে রাখা হয়েছে ‘শূন্য থেকে মহাবিশ্ব : মহাবিশ্বের উৎপত্তির সাম্প্রতিক ধারণা’। আশা করছি সেখান থেকে বইটার ব্যাপারে সর্বশেষ তথ্য পেতে পারবেন পাঠকেরা ।
এই বইটা লিখতে গিয়ে নতুন করে মহাবিশ্বের ইতিহাস ঝালাই করতে হচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে বিগ ব্যাং এর উপর পড়লাম। কত নতুন ঘটনাই যে জানলাম, আর শিহরিত হয়ে উঠলাম রোমাঞ্চে। ভাবছি এ নিয়ে দুই পর্বের সিরিজ লিখব। প্রথম পর্বে থাকবে চিরায়ত বিগ ব্যাং এর ধারনা এবং এর পেছনের ইতিহাস। পরের পর্বে আসবে স্ফীতিতত্ত্ব সহ বিগ ব্যাং পরবর্তী আধুনিক ধারনাগুলো। আশা করছি পাঠকেরা সাথে থাকবেন।
পর্বগুলো বইয়ের অধ্যায়ের কথা মাথায় রেখে লেখা বলে আকারে বড়। ব্লগ হিসেবে পড়তে হয়তো পাঠকদের গলদঘর্ম হতে হবে। এই অসুবিধার জন্য আমার তরফ থেকে দুঃখপ্রকাশ করছি।
আরেকটি ব্যাপার। দীর্ঘদিন কারাবাসের পর মুক্তমনা ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীন আজ জামিন পেয়েছেন (এ ব্যাপারে বিপ্লব রহমানের পোস্ট দ্রঃ)। গত পয়লা এপ্রিল জামাতি আর হেফাজতি মোল্লাদের তোষামোদ করতে গিয়ে যেভাবে সরকারের পক্ষ থেকে প্রগতিশীল ব্লগারদের হাতকড়া পরিয়ে পাকড়াও করা হয়েছিল, তা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। এর পর থেকেই আমরা চেষ্টা করেছি ব্লগারদের মুক্ত করতে। শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বব্যাপী। আমাদের সে আহবানে সাড়া দিয়ে সারা বিশ্বের মুক্তচিন্তক আর মানবতাবাদীরা রাস্তায় নেমেছেন প্ল্যাকার্ড হাতে। অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, সিএফআই, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস সহ বহু সংগঠনই বিবৃতি দিয়েছিল সরকারের বাক স্বাধীনতার উপর এই আগ্রাসনের প্রতিবাদে। আমি নিজেও বেশ কিছু প্রবন্ধ লিখেছিলাম আন্তর্জাতিক মিডিয়ায়। আর বাংলাদেশে ব্লগার এবং অ্যাক্টিভিস্টরা তো কয়েক দফা করে পথে নেমেছেন। কৃতজ্ঞতা জানাই সবাইকে যারা আসিফের এই কঠিন সময়গুলোতে পাশে ছিলেন, আশার খোরাক যুগিয়েছিলেন। আমার এই সিরিজটি আসিফের জন্য উৎসর্গীকৃত হচ্ছে।
:line:
মহাবিস্ফোরণের কথা
অভিজিৎ রায়
আমরা সবাই নক্ষত্রের সন্তান
মহাবিশ্ব সংক্রান্ত যে কোন বিজ্ঞানের বই খুললেই আমরা দেখি সেটা অবধারিতভাবে শুরু হয় বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণ দিয়ে। সেই যে ১৯২৯ সালে এডউইন হাবল তার বিখ্যাত টেলিস্কোপের সাহায্যে আকাশের গ্যালাক্সিগুলোর দিকে তাকিয়ে বুঝতে পেরেছিলেন গ্যালাক্সিগুলো একে অপর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে – তা দেখেই কিন্তু এক ধরণের ধারনা পাওয়া যায়, দূর অতীতে নিশ্চয় তারা খুব কাছাকাছি ছিল, খুব ঘন সন্নিবদ্ধ অবস্থায় গাঁটবন্দি হয়ে। আর সেই গাঁট-পাকানো অবস্থা থেকেই সবকিছু চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে আকস্মিক এক বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে। এটাই সেই বিখ্যাত ‘বিগ ব্যাং’- এর ধারণা। এ ধারণা অনুযায়ী, প্রায় ১৩৭০ কোটি বছর আগে অতি উত্তপ্ত এবং প্রায় অসীম ঘনত্বের এক পুঞ্জিভূত অবস্থা থেকে এক বিশাল বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে উদ্ভব ঘটেছে আমাদের এই চিরচেনা মহাবিশ্বের ।
অবশ্য আজকে আমরা মহাবিশ্বকে যেভাবে দেখি, মহাবিশ্বের ঊষালগ্নে এর প্রকৃতি কিন্তু একদমই এরকম ছিল না, ছিল অনেকটাই আলাদা। আজকে আমরা যে চারটি মৌলিক বলের কথা শুনতে পাই – সবল নিউক্লিয় বল, দুর্বল নিউক্লিয় বল, তাড়িতচৌম্বক বল এবং মাধ্যাকর্ষণ বল – বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন, এই চারটি বল ‘সুপার ফোর্স’ বা অতিবল হিসেবে একসাথে মিশে ছিল। ওরকম ভাবেই ছিল তারা মহাবিস্ফোরণের ঊষালগ্ন থেকে শুরু করে ১০-৪৩ সেকেন্ড পর্যন্ত। প্রথম এক সেকেন্ড পর্যন্ত মহাবিশ্ব ছিল যেন জ্বলন্ত এক নিউক্লিয় চুল্লি। তাপমাত্রা ছিল একশ কোটি ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের চেয়েও বেশি। সেসময় কোন চেনা জানা কণা ছিল না, চারদিক পূর্ণ ছিল কেবল প্লাজমার ধোঁয়াশায়। এক সেকেন্ড পরে কোয়ার্ক, ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রনের মত মৌলিক কণিকাগুলি তৈরি হয়। তিন সেকেন্ড পরে প্রোটন আর নিউট্রন মিলে তৈরি হল নিউক্লিয়াস, এর পরে যথাক্রমে হাইড্রোজেন, হিলিয়াম, লিথিয়াম। কিন্তু মহাবিশ্বের উদ্ভবের প্রায় কয়েক লক্ষ বছর পর্যন্ত আমরা যাকে জড়পদার্থ বা ম্যাটার বলি সেরকম কিছুই তৈরি হয় নি। তখন আসলে রঞ্জন রশ্মি, আর বেতার তরঙ্গের মত লম্বা দৈর্ঘ্যের অতি তেজী রশ্মিগুলোই বরং পদার্থের উপর রাজত্ব করছিল। প্রায় চার লক্ষ বছর পরে তাপমাত্রা খানিকটা কমে তিন হাজার ডিগ্রি কেলভিনে নেমে আসার পরই কেবল প্লাজমা থেকে স্থায়ী অণু গঠিত হবার মত পরিবেশ তৈরি হতে পেরেছে। এসময় মহাবিশ্বের কুয়াশার চাদর ধীরে ধীরে সরে গিয়ে ক্রমশ স্বচ্ছ হয়ে আসে, পথ তৈরি হয় ফোটন কণা চলাচলের। আর তার পরই কেবল তেজস্ক্রিয় রশ্মিসমূহের উপর জড়-পদার্থের আধিপত্য শুরু হয়েছে। এর পর আরও প্রায় একশ কোটি বছর লেগেছে গ্যালাক্সি জাতীয় কিছু তৈরি হতে। আর আমাদের যে গ্যালাক্সি, যাকে আমরা আকাশগঙ্গা নামে ডাকি, সেখানে সূর্যের সৃষ্টি হয়েছে আজ থেকে প্রায় পাঁচশত কোটি বছর আগে। আর সূর্যের চারপাশে ঘূর্ণ্যমান গ্যাসের চাকতি থেকে প্রায় ৪৫০-৪৬০ কোটি বছরের মধ্যে তৈরি হয়েছিল পৃথিবী সহ অন্যান্য গ্রহ-উপগ্রহগুলো।
চিত্র: মহাবিস্ফোরণের কালপঞ্জি (ছবির কৃতজ্ঞতা :অপূর্ব এই মহাবিশ্ব, এ এম হারুন-অর-রশীদ এবং ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী)
এই জায়গায় এসে একটি মজার তথ্য উল্লেখ করব, আর তথ্যের অভিব্যক্তিটি এতোই শক্তিশালী যে, এটা আমাদের মত কাঠখোট্টা বিজ্ঞান লেখকদেরও কাব্যিক করে তোলে প্রায়শই। বিষয়টা হল – বিগ ব্যাং থেকে সবকিছুর শুরু বলে আমরা জানি। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, মহাবিস্ফোরণের পর মুহূর্তে হাইড্রোজেন, হিলিয়াম কিংবা লিথিয়ামের মত মৌল তৈরি হলেও আমাদের জীবনের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় যে মৌলগুলো – কার্বন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন এবং লৌহ – এগুলো কিন্তু সে সময় তৈরি হয়নি। এগুলো তৈরি হয়েছে অনেক অনেক পরে কোন না কোন নাক্ষত্রিক বিস্ফোরণ থেকে, যাদের আমরা মহাকাশে সুপারনোভা বলে জানি। ‘অনেক অনেক পরে’ বলছি কারণ, বিজ্ঞানীরা গণনা করে দেখেছেন, প্রথম নক্ষত্র তৈরি হয়েছিল বিগ ব্যাং ঘটার অন্তত ৭৫ কোটি বছর পরে। আর তারকার বিস্ফোরণ – মানে সুপারনোভার মত ব্যাপার স্যাপার ঘটতে সময় লেগেছিল আরো অনেক। তবে যেটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা হল – আমাদের এই দেহ কার্বন দিয়ে, কিংবা দেহের ভিতরকার হাড়গুলো ক্যালসিয়াম দিয়ে তৈরি হতে পেরেছে হয়তো এ জন্যই – কেননা সুদূর অতীতে কোন না কোন নক্ষত্র নিজেদের বিস্ফোরিত করে তার বহির্জগতের খোলস থেকে এই জীবনোপযোগী মৌলগুলো ছড়িয়ে দিয়েছিল মহাশূন্যে। অনেক পরে সেই মৌলগুলো শূন্যে ভাসতে ভাসতে জড়ো হয়েছে সূর্য নামক এক সাদামাঠা নক্ষত্রের চারপাশে ঘূর্ণনরত এক সুনীল গ্রহে, এবং শেষ পর্যন্ত তৈরি করেছে প্রাণের বিবর্তনীয় উপাদান। আমাদের ছায়াপথের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে অন্তত ২০ কোটি নক্ষত্র এভাবে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছে, হয়তো আমার আপনার ভবিষ্যৎ জন্মকে সার্থক করে তুলবে বলে। আমরা সবাই আসলে নক্ষত্রের ধূলি – স্টারডাস্ট[1]। এর চেয়ে কাব্যিক অনুরণন আর কীই বা হতে পারে? সেজন্যই বোধ হয় লরেন্স ক্রাউস তার ‘ইউনিভার্স ফ্রম নাথিং’ গ্রন্থে বলেছেন[2],
‘আমাদের মহাবিশ্ব সম্পর্কে সবচেয়ে কাব্যিক যে সত্যটা আমি জানি তা হল, আপনার দেহের প্রতিটি অণু পরমাণু একসময় লুকিয়ে ছিল একটি বিস্ফোরিত নক্ষত্রের অভ্যন্তরে। অধিকন্তু, আপনার বাম হাতের পরমাণুগুলো হয়তো এসেছে এক নক্ষত্র থেকে, আর ডান হাতের গুলো এসেছে ভিন্ন আরেকটি নক্ষত্র থেকে। আমরা আক্ষরিক ভাবেই সবাই নক্ষত্রের সন্তান, আমাদের সবার দেহ তৈরি হয়েছে কেবল নাক্ষত্রিক ধূলিকণা দিয়ে’।
চিত্র: আমরা আক্ষরিক ভাবেই সবাই নক্ষত্রের সন্তান, আমাদের সবার দেহ তৈরি হয়েছে কেবল নাক্ষত্রিক ধূলিকণা দিয়ে।
রসিকরাজ গ্যামো ভাঁড়
ছোটবেলায় আমরা গোপাল ভাঁড়ের অনেক গল্প পড়তাম। গোপাল ভাঁড়ের একেকটা গল্প পড়তাম আর হাসির চোটে আমাদের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যেত একেবারে। কিন্তু তখন কি কস্মিন কালেও জানতাম, গোপাল ভাঁড়ের চেয়েও রসিক এক বিজ্ঞানী আছেন, তার অবদানের কথা উল্লেখ না করলে বিগ ব্যাং এর ইতিহাসটা অসম্পূর্ণই থেকে যাবে!
তিনি জর্জ গ্যামো। আমরা যে বিগ ব্যাং এর কথা বলি সেই বৈজ্ঞানিক ধারণাটি বিজ্ঞানের জগতে প্রতিষ্ঠিত করার প্রাথমিক কৃতিত্ব অবশ্যই এই কৃতি পদার্থ বিজ্ঞানীর; তাঁর বিস্ময়কর প্রতিভার স্পর্শ কেবল পদার্থবিদ্যা নয়, জ্যোতির্বিজ্ঞান, তেজস্ক্রিয়তা থেকে শুরু করে এমনকি জীববিজ্ঞানেরও নানা শাখায় ছড়িয়ে রয়েছে। রুশ-দেশের এই রসিক আর খেয়ালী বিজ্ঞানী, যিনি আবার শখের যাদুকরও ছিলেন, প্রায় অর্ধ শতাব্দী আগে একক চেষ্টাতেই বলা যায় ‘বিগ-ব্যাং’র ধারণাকে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। সেজন্য অনেকে আজ তাকে অভিহিত করেন ‘বিগ ব্যাং এর পিতা’ হিসেবেও।
গ্যামোর আদি নিবাস ছিল রাশিয়ায়। আমরা যে ফ্রিডম্যানের কথা জানি, যিনি এক সময় আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্বের গাণিতিক সমাধান হাজির করেছিলেন মহাবিশ্বের প্রসারণ তুলে ধরতে, সেই আলেকজান্ডার ফ্রিডম্যান ছিলেন এক সময় গ্যামোর শিক্ষক, পড়াতেন পেট্রোগ্রাডে ১৯২৩ -২৪ সালের দিকে[3]। বোঝাই যায় গুরু মারা বিদ্যা ভালই রপ্ত করেছিলেন গ্যামো।
গ্যামোর প্রতিভার বর্ণিল আলোকচ্ছটার সাথে রাশিয়ার বাইরের পৃথিবী পরিচিত হয়েছিল সেই ১৯২৮ সালেই। গ্যামো তখন জার্মানির গোটিংগ্যান বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছেন আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের গবেষণার সাথে পরিচিত হতে। গিয়েছিলেন অনেকটা তার শিক্ষক অরেস্ট কোভলসনের জোরাজুরিতেই। গ্রীষ্মকালীন অবকাশটাতে কৃতি ছাত্রকে যেন উপোষ করে কাটাতে না হয় সেজন্য একটা শিক্ষাভাতাও যোগাড় করে দিয়েছিলেন শিক্ষক মশাই। জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তখন আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের নানামুখী গবেষণার কেন্দ্রবিন্দু। গ্যামো সেখানে গিয়ে কিছুদিনের মধ্যেই একটা গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার করে ফেললেন। তেজস্ক্রিয় পদার্থের অবক্ষয়কে ব্যাখ্যার জন্য সুরঙ্গ প্রভাব (‘টানেলিং এফেক্ট’) ব্যবহার করলেন, যা এতদিন কেবল কোয়ান্টাম বলবিদ্যার জগতেই ব্যবহৃত হত। তার এই নতুন ব্যাখ্যা সরাসরি পরীক্ষণ থেকে হাতে কলমে পাওয়া উপাত্তের সাথে মিলেও গেল অবিকল।
গ্রীষ্মকালীন অবকাশ শেষে রাশিয়া ফেরার পথে ভ্রমণপ্রিয় গ্যামো ভাবলেন, ফিরে যখন যাচ্ছিই – একটু না হয় ডেনমার্ক ঘুরে যাওয়া যাক। সেখানে কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানের দিকপাল নিলস বোর কি করে যেন গ্যামোর তেজস্ক্রিয়তা নিয়ে কাজের (সেটা তখনো কোথাও প্রকাশিত হয়নি) খোঁজ পেয়েছিলেন। ডেনমার্কে গ্যামোর সাথে সাক্ষাৎ করে আর তার কাজ সামনাসামনি দেখেশুনে বোর এতটাই মুগ্ধ হন যে, কোপেনহেগেনে তার ইন্সটিটিউটে গ্যামোকে ফেলোশিপের প্রস্তাব দিয়ে দিলেন। গ্যামো মহা উৎসাহে কাজ শুরু করে দিলেন তখনই। কিন্তু গ্যামো চাইলে কি হবে, বাধা আসলো খোদ সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকেই। কিছুদিন বোরের ইন্সটিটিউটে কাজ করার পর গ্যামো তখন (১৯৩০) রোমে নিউক্লীয় পদার্থবিজ্ঞানের এক সেমিনারে যোগদানের পায়তারা করছিলেন। কিন্তু সোভিয়েত অ্যাম্বেসি থেকে বলা হল তার পাসপোর্টের মেয়াদ আর বাড়ানো হবে না, এত জায়গায় ঘোরাঘুরি বাদ দিয়ে তাকে ‘ঘরের ছেলে ঘরে’ মানে সোজা সোভিয়েত ইউনিয়নে ফেরত যেতে হবে।
গ্যামো ফিরলেন রুশ দেশে। স্ট্যালিনের জামানা চলছে তখন। গ্যামো নিজ দেশে ফিরে এমন এক জন্মভূমিকে দেখতে পেলেন যেখানে মহামতি স্ট্যালিন এবং তার স্তাবকেরা শিল্প সাহিত্য বিজ্ঞান সবকিছুকেই মার্ক্সিজমের নাগপাশে বন্দি করে রেখেছেন। ধর্মান্ধ এবং প্রতিক্রিয়াশীল রাষ্ট্রের মত সেখানে সাহিত্য সংস্কৃতি সৃষ্টির গৎবাঁধা ছক বাৎলে দেওয়া হয়েছিলো, এর অন্যথা হলে তাদের ‘কমি-ধর্মানুভূতিতে’ আঘাত লাগত। বাংলা ব্লগের ব্লগারদের লেখায় ধর্মের সমালোচনা, কিংবা কোন কার্টুনিস্টের কার্টুন আঁকা কিংবা ‘মুহম্মদ বিড়াল’ নিয়ে নির্দোষ কৌতুকেও যেমন ইসলামের অনুসারীদের পিত্তি জ্বলে যায়, তেমনি স্ট্যালিনকে নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপে কমিউনিস্ট অনুসারীদের গায়ে লাল লাল ফোস্কা পড়তো। তার প্রমাণ পাওয়া যায় ব্যঙ্গাত্মক রচনার জন্য স্ট্যালিনীয় জামানায় সিন্যভস্কি-দানিয়েলের বিচারের প্রহসনে। জেলখানায় সাত বছর বন্দি রাখা হয়েছিলো সিন্যভস্কিকে, দানিয়েলের কপালে জুটেছিলো পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। সলঝনিৎসনের উপন্যাস ‘ফার্স্ট সার্কেল’ (First Circle)-এ দেখানো হয়েছিলো কিভাবে উপন্যাসের নায়ক শেষ পর্যন্ত স্ট্যালিনের শ্রম শিবিরে নিজেকে খুঁজে পায়। সলঝনিৎসনকে সে সময় দেশ ত্যাগ করতে কিংবা নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি। আঁদ্রে শাখারভকে গোর্কিতে নির্বাসন দেওয়া হয়। এই উদাহরণগুলো উল্লেখ করে এক সময় একটা লেখা লিখেছিলাম ‘মার্ক্সবাদ কি বিজ্ঞান?’ (২০০৮) শিরোনামে যা বাংলা ব্লগস্ফিয়ারে পক্ষে বিপক্ষে নানা তর্ক-বিতর্ক এবং আলোচনার সূত্রপাত ঘটিয়েছিল[4]। কেবল সাহিত্য নয়,স্ট্যালিন এবং তার আদর্শবাদী সৈনিকেরা ভাবতেন বিজ্ঞানকেও মার্কসীয় মতবাদের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে, নইল চলবে না। মার্কসীয় মতবাদের সংগে সংগতিপূর্ণ করার লক্ষ্যে সময় সময় বিজ্ঞানের শাখাগুলোকে বিকৃত করতেও পিছপা হননি। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শাখাটি ছিল জেনেটিক্স বা বংশগতিবিদ্যা। রাশিয়া একসময় সারা পৃথিবীতেই জেনেটিক্সের গবেষণায় শীর্ষস্থানে ছিলো, অথচ স্ট্যালিনের আমলে রাশিয়ায় জেনেটিক্সের উপর গবেষণার লালবাতি জ্বলে গিয়েছিল। তা হবে নাই বা কেন। মার্ক্সবাদকে বাঁচাতে বংশাণুবিদ্যাকেও বিকৃত করতে পিছপা হননি শাসকেরা। এই উদ্দেশ্যে সেসময় লাইসেঙ্কো নামক এক ঠগ বিজ্ঞানীকে নিয়োগ করা হয়[5]। যখন ভাভিলভ সহ অন্যান্য বিজ্ঞানীরা লাইসেঙ্কোর তত্ত্বের ভুল ধরিয়ে দেন তখন স্ট্যালিন তাদের সবকটাকে ধরে গুলাগে পাঠিয়ে দেন। ভাবিলভকে গুলি করে হত্যা করা হয়। শুধু ভাভিলভ নয়, স্ট্যালিনের প্রতিহিংসার স্বীকার হয়ে সে সময় আরো প্রাণ হারিয়েছিলেন কার্পেচেঙ্কো, সালমোন লেভিট, ম্যাক্স লেভিন, ইস্রায়েল আগলের মত বিজ্ঞানীরা। লাইসেঙ্কোর পাশাপাশি স্ট্যালিন জামানায় লেপিশিঙ্কায়া নামের আরেক ঠগ বিজ্ঞানীকে প্রমোট করা হয়েছিল – উদ্দেশ্য সেই ‘পুঁজিবাদী জেনেটিক্স’ সরানো। বিজ্ঞানকে অবশ্যই শ্রমজীবী বা প্রলেতারিয়েতের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে, তা নইলে চলবে না – এটাই বিজ্ঞান সম্পর্কে স্ট্যালিনীয় ঘরনার মানুষদের ‘বৈজ্ঞানিক থিওরি’[6]।
চিত্র: বিজ্ঞানী জর্জ গ্যামো (১৯০৪ – ১৯৬৮)
কেবল জীববিজ্ঞানী কিংবা বংশগতিবিদেরা নয়, সোভিয়েত পদার্থবিদরাও সে সময় আগ্রাসন থেকে রেহাই পাননি[7]। আইনস্টাইন আপেক্ষিক তত্ত্ব প্রদান করার পর, ব্যাপারটা মার্ক্সিজমের সাথে ‘সংগতিপূর্ণ’ মনে না করায় ‘সোভিয়েত এনসাইক্লোপিডিয়া’ প্রকাশ করা হয় রিলেটিভিটিকে ‘নস্যাৎ’ করে। রাশিয়ার একজন বিখ্যাত মার্ক্সবাদী দার্শনিক তার তখনকার লেখায় বলেছিলেন –
‘আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্ব কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ এটা প্রোলেতারিয়েতদের কাছে গ্রহণীয় নয়’।
এই নির্বোধ মন-মানসিকতা জর্জ গ্যামোর সহ্য হয়নি। তা হবেই বা কেন। কিছুদিন আগেই নিলস বোরের গবেষণাগারে কোয়ান্টাম বলবিদ্যার উপর হাতে কলমে কাজ করে এসেছেন। অথচ দেশে এসে দেখলেন, সেখানে কোয়ান্টাম বলবিদ্যা আর আপেক্ষিক তত্ত্বকে দেখা হচ্ছে ‘অপবিজ্ঞান’ আর ‘মার্ক্সিজম-লেনিনিজম’ এর সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ বিষয় হিসেবে[8]। এই সব কূপমণ্ডূকতার প্রতিবাদ করায় জর্জ গ্যামো স্ট্যালিনীয় বাহিনীর কোপানলে পড়লেন। হয়তো মারাই পড়তেন ভাভিলভের মত, কিংবা বছরের পর বছর থাকতে হত শ্রম-শিবিরে, কিন্তু তার আগেই তিনি সোভিয়েত ইউনিয়ন ছেড়ে সস্ত্রীক পালানোর সিদ্ধান্ত নিলেন।
চিত্র: এ ধরণের একটি কায়াকে করেই স্ত্রীকে নিয়ে কৃষ্ণ সাগর পাড়ি দিয়ে রাশিয়া থেকে পালাতে মনস্থ করেছিলেন গ্যামো।
কিভাবে পালালেন সেও এক ইতিহাস। শুনলে মনে হবে যেন কোন হিন্দি মুভির প্লট। তিনি কয়েকটা ডিম, চকলেট, স্ট্রবেরি এবং দুই বোতল ব্র্যাণ্ডি বগলদাবা করে সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে একটা ছোট নৌকায় (এ নৌকাগুলো কায়াক নামে পরিচিত) উঠে পড়লেন। উদ্দেশ্য কৃষ্ণ সাগরে ১৭০ মাইল পাড়ি দিয়ে তুরস্ক পৌঁছবেন। প্রায় ৩৬ ঘণ্টা প্যাডেল করে সাগরের বিশাল বিশাল ঢেউ এর সাথে যুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত নাকানি চুবানি খেয়ে মাঝপথে তীরে এসে আছরে পড়লেন। হাসপাতালেও থাকতে হয়েছিল দিন কয়েক। সে যাত্রা দেশ ছেড়ে পালাতে না পারলেও এক সময় ঠিকই সুযোগ বুঝে ব্রাসেলস হয়ে আমেরিকা চলে আসলেন। যোগ দিলেন জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে, শিক্ষক হিসেবে।
সেখানেই রালফ আলফারের সাথে তার পরিচয়। আলফার ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছিলেন পিএইচডি করার জন্য। আলফারের সাথে সাথে মিলে ‘বিগ-ব্যাং’র ধারণা নিয়ে কাজ শুরু করেন গ্যামো। হাবলের মহাবিশ্বের প্রসারণ সূচক বিখ্যাত আবিষ্কারের সাথে তিনি পরিচিত তো ছিলেনই। সেই প্রসারণের ভিডিও টেপটিকে যদি পেছনের দিকে চালানো যায়, তবে সেটা নিশ্চয় একটা আদিম অবস্থায় এসে থামবে। তিনি এর নাম দিলেন ‘ইয়েল্ম’। সেই আদিম অবস্থারই গাণিতিক সিমুলেশন করবেন বলে তারা ঠিক করেন।
মজার ব্যাপার হচ্ছে গ্যামো বা আলফার কেউ নিজে থেকে ‘বিগ ব্যাং’ শব্দটি চয়ন করেন নি। গ্যামোর ধারণাকে খণ্ডন করতে গিয়ে আর এক প্রখ্যাত তাত্ত্বিক জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফ্রেডারিক হয়েল সর্ব প্রথম এই বিগ-ব্যাং শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। হয়েল ছিলেন বিগ-ব্যাং তত্ত্বের বিপরীতে স্থিতিশীল অবস্থা (Steady State) নামে মহাবিশ্বের অন্য একটি জনপ্রিয় মডেলের প্রবক্তা। হয়েলের তত্ত্বের সাথে প্রথম দিকে যুক্ত ছিলেন কেম্ব্রিজ কলেজের হারমান বন্দি, থমাস গোল্ড আর পরবর্তীকালে একজন ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী, তাঁর নাম জয়ন্ত নারলিকর। ১৯৪০ সালে একটি রেডিও প্রোগ্রামে হয়েল গ্যামো আর তাঁর অনুসারীদের ধারণাকে খণ্ডন করতে গিয়ে বেশ বাঁকা সুরেই অধ্যাপক হয়েল বলেছিলেন, ‘হাঃ সেই উত্তপ্ত বিগ ব্যাং’ – এই বিস্ফোরণের ধারণা যদি সঠিকই হবে, তবে তো এর ছাই-ভস্ম এখনও কিছুটা থেকে যাওয়ার কথা। আমাকে ‘বিগ ব্যাং’ এর সেই ফসিল এনে দেখাও, তার পর অন্য কথা।’ এর পর থেকেই বিগ-ব্যাং শব্দটি ধীরে ধীরে বিজ্ঞানের জগতে স্থায়ী আসন করে নেয়। সে যাই হোক, আলফারের পিএচডি’র শেষ পর্যায়ে আলফার ও গ্যামো যুক্তভাবে ‘Physical Review’ জার্নালের জন্য ‘Origin of the Chemical Elements’ শিরোনামে একটি গবেষণা নিবন্ধ লিখতে শুরু করলেন। আর এখানেই রসিকরাজ গ্যামো বিজ্ঞান জগতের সবচাইতে বড় রসিকতাটি করে বসলেন। জার্নালে ছাপানোর আগে তিনি তাঁর বন্ধু আর এক স্বনামখ্যাত পদার্থবিদ হ্যানস বিথের (কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়, নিউইয়র্ক) নাম তাঁকে না জানিয়েই প্রবন্ধটির লেখক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে নেন। পরে কারণ হিসেবে বলেছিলেন, “ ‘আলফার’ আর ’গ্যামো’- এই দুই গ্রীক ধরণের নামের মাঝে ‘বিটা’ জাতীয় কিছু থাকবে না, এ হয় নাকি? তাই বিথেকে দলে নেওয়া!” সত্য সত্যই ১৯৪৮ সালের ১লা এপ্রিলে এই তিন বিজ্ঞানীর নামে প্রবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছিল, আর গ্যামোর রসিকতাকে সত্যি প্রমাণিত করে পেপারটি এখন ‘আলফা-বিটা-গামা পেপার’ ( α-β-γ paper) নামেই বৈজ্ঞানিক মহলে সুপ্রতিষ্ঠিত।
কিন্তু সেই প্রবন্ধটিতে কি বলেছিলেন গ্যামো? তিনি ধারণা করেছিলেন যে, একটি মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে যদি মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়ে থাকে তবে সেই ভয়ঙ্কর বিকিরণের কিছুটা স্বাক্ষর, মানে বিকিরণ-রেশের কিছুটা এখনও বজায় থাকার কথা। গ্যামো হিসেব কষে দেখালেন যে, সৃষ্টির আদিতে যে তেজময় বিকিরণের উদ্ভব হয়েছিল, মহাবিশ্বের প্রসারণের ফলে তার বর্ণালী তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পেতে সেটা এখন পরম শূন্য তাপমাত্রার উপরে ৫ ডিগ্রি কেলভিনের মত হওয়া উচিত। এই তেজময় বিকিরণের অবশেষকেই বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছেন ‘মহাজাগতিক পশ্চাৎপট বিকিরণ’ বা ‘cosmic back ground radiation’। মহাশূন্যে এই বিকিরণের প্রকৃতি হবে মাইক্রোওয়েভ বা ক্ষুদ্র তরঙ্গ। সহজ কথায় বিষয়টি বুঝবার চেষ্টা করা যাক। সৃষ্টির আদিতে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড ছিল যেন একটি উত্তপ্ত মাইক্রোওয়েভ চুল্লি যা এখন ঠাণ্ডা হয়ে ৫ ডিগ্রি কেলভিনে এসে পৌঁছেছে। এই ব্যাপারটিই ধরা পড়ল ১৯৬৪ সালে আর্নো পেনজিয়াস আর রবার্ট উইলসনের পরীক্ষায়, গ্যামোর গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হবার ১৬ বছর পর। গ্যামোর সেই গবেষণাপত্রটির কথা ততোদিনে ভুলেই গিয়েছিল সবাই। কিন্তু সেখানে যাবার আগে আমাদের আরেকজন জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানীর কথা জেনে নেওয়া প্রয়োজন।
জর্জ লেমিত্রি এবং তাঁর ‘আদিমতম কণা’
বিগ ব্যাং-এর কথা বললে এর পেছনে আরেকজন ব্যক্তির অবদানের কথা উল্লেখ না করলে তাঁর প্রতি নিতান্তই অবিচার করা হবে। তিনি হলেন জর্জ হেনরি লেমিত্রি (Georges Lemaître), বিগ ব্যাং তত্ত্বের আর একজন প্রবক্তা- যিনি ছিলেন একাধারে পদার্থবিজ্ঞানী এবং সেই সাথে ধর্মযাজক। নাস্তিক গ্যামোর মত ধর্মযাজক লেমিত্রিও কিন্তু বিগ ব্যাং-এর পিতা খেতাব পাবার যোগ্য দাবীদার,এবং অনেকে সেটা তাকে ডাকেনও।
আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা থেকে প্রাপ্ত ক্ষেত্র সমীকরণের একটা সমাধান হাজির করেছিলেন লেমিত্রি, বিজ্ঞানী ফ্রিডম্যানের মতোই। গ্যামোর মতো তিনিও ছিলেন মহাজাগতিক কালপঞ্জির এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তিনি তার শিক্ষাজীবন শুরু করেছিলেন প্রকৌশলী (পুরকৌশলী) হিসেবে, বেলজিয়ামের ক্যাথলিক লুভেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময় জার্মান সৈন্যরা বেলজিয়াম আক্রমণ করলে তার পড়াশোনায় সাময়িক ছেদ পড়ে। তিনি ‘আর্টিলারি অফিসার’ হিসেবে বেলজীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন আর সেখানে কাজ করেন চার বছরের জন্য। বিশ্বযুদ্ধের পর তিনি সিভিল ইঞ্জিয়ারিং-এ আর না ফিরে গিয়ে পদার্থবিদ্যা এবং গণিত নিয়ে উৎসাহী হয়ে পড়েন তিনি। ১৯২০ সালে অর্জন করেন পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি। পাশাপাশি ধর্মযাজকের পেশায়ও উৎসাহী হয়ে পড়েন তিনি। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘সত্যে পৌঁছনোর দুইটি পথ। আমি দুটোই অনুসরণ করতে মনস্থ হলাম’।
পরবর্তী বছরগুলোতে তিনি সে সময়কার বিখ্যাত বিজ্ঞানী আর্থার এডিংটনের সাহচর্য লাভ করেন কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এডিংটন তার গাণিতিক দক্ষতা এবং পদার্থবিজ্ঞানের জ্ঞানে মুগ্ধ হয়েছিলেন। এডিংটন তার সম্বন্ধে বলেছিলেন, ‘তুখোড় এক ছাত্র – করিৎকর্মা, স্বচ্ছ দৃষ্টিসম্পন্ন এবং গনিতে দক্ষ’। লেমেত্রি এক সময় কেম্ব্রিজের পাঠ চুকিয়ে চলে গেলেন আমেরিকায়। এমআইটিতে করলেন পদার্থবিজ্ঞানে দ্বিতীয় বারের মতো পিএচডি।
১৯২৫ সালে তিনি বেলজিয়ামে ফিরে গিয়ে তার পুরনো বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে যোগ দিলেন। সেখানেই তিনি আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্বের সমীকরণের উপর ভিত্তি করে নিজের মহাজাগতিক মডেল তৈরি করে ফেললেন। তার সমাধান ছিল অনেকটা পূর্বসূরি ফ্রিডম্যানের মতোই। এ সমাধানে মহাজাগতিক ধ্রুবক গোনায় ধরার দরকার পড়েনি তার। তার সমাধান থেকে বেরিয়ে আসলো মহাবিশ্ব ক্রমশঃ প্রসারিত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সময়ের ঘড়িকে পেছনের দিকে চালিয়ে তিনি একদম শুরুর মানে ব্রাহ্ম-মুহূর্তের একটা ছবিও আঁকলেন তার গণিত আর বিজ্ঞানের কল্পনায়, কাব্যিক ভাবে সে সময়টাকে অভিহিত করলেন ‘A Day without yesterday’ হিসেবে। তিনি এই মহাবিশ্বের সমস্ত গ্রহ, নক্ষত্র, নীহারিকাকে চেপে ঠেসে ঘন সন্নিবদ্ধ এক ছোট্ট মহাবিশ্বে পরিণত করলেন, আর তার নাম দিলেন ‘প্রাইমিভাল এটম’ বা আদিম কণা নামে। লেমেত্রির কাছে মহাবিশ্ব সৃষ্টির ব্যাপারটা ছিল সেই আদিম কণা নামের শক্তিশালী তেজস্ক্রিয় কণাটির অবক্ষয়, যা থেকেই তৈরি তৈরি হয়েছে এই বিশ্বজগত[9]।
লেমেত্রি তার আদিম কণা তত্ত্ব আর মহাবিশ্বের প্রসারণের ব্যাপারে মহা উৎসাহী হয়ে উঠলেলেও তার উৎসাহের বেলুন কিন্তু রাতারাতি চুপসে গেল। আর চুপসে দিয়েছিলেন আইনস্টাইন স্বয়ং। আইনস্টাইনের মাথায় তখন ‘স্থিতিশীল মহাবিশ্বের’ ভুত। তার নিজের সমীকরণেই মহাবিশ্বের প্রসারণের ইঙ্গিত লুকিয়ে থাকলেও মহাজাগতিক ধ্রুবক ঢুকিয়ে সেটাকে স্থিতিশীল রূপ দিয়ে রেখেছেন তিনি। ফ্রিডম্যান কিংবা লেমেত্রি, যারাই মহাজাগতিক ধ্রুবকের বাইরে গিয়ে সমাধান হাজির করছেন, তাদেরকে কান মলে দিয়ে বাতিল করে দিচ্ছেন। তাই ১৯২৭ সালে ব্রাসেলসের একটা সেমিনারে লেমিত্রি যখন তার মহাজাগতিক মডেল আইনস্টাইনের সামনে তুলে ধরলেন, আইনস্টাইন বিনা বাক্য ব্যয়ে বাতিল করে দিলেন এই বলে – ‘তোমার ক্যালকুলেশন ঠিকি আছে, কিন্তু তোমার ফিজিক্সটা তো বাপু জঘন্য’।
চিত্র: আইনস্টাইন এবং লেমিত্রি
কিন্তু আইনস্টাইনের ভুল ভাঙতে সময় লাগেনি। ১৯২৯ সালে হাবল যখন মাউন্ট উইলসন মানমন্দির থেকে সে সময়কার ১০০ ইঞ্চি ব্যাসের সবচেয়ে বড় টেলিস্কোপের (হুকার প্রতিফলক) সাহায্যে প্রমাণ হাজির করলেন যে মহাবিশ্ব আসলে প্রসারিত হচ্ছে, তখন কিন্তু আইনস্টাইনই ভুল প্রমাণিত হলেন, আর লেমেত্রি হলেন সঠিক।
লেমেত্রি নিঃসন্দেহে খুশি হয়েছিলেন। নিজের তত্ত্বের স্বপক্ষে প্রমাণ পেলে কার না খুশি লাগে। কিন্তু লেমেত্রি যত না খুশি হলেন, ধর্মের চিরন্তন ধ্বজাধারীরা মনে হয় খুশি হলেন তার চেয়েও ঢের বেশি। তারা বাইবেলের জেনেসিস অধ্যায়ের সাথে এর মিল খুঁজতে শুরু করলেন, আর ‘বিগ ব্যাং’ কিংবা আদি কণাকে হাজির করলেন ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রমাণ হিসেবে। যেমন ১৯৫১ সালে পোপ (Pope Pius XII) বলেছিলেন –
‘আজকে বিজ্ঞান শতাব্দী পাড়ি দিয়ে একটি জায়গায় পৌঁছেছে যখন সেই আদিম ফিয়াট লাক্স (লেট দেয়ার বি লাইট)কে অবলোকন করার মত পরিস্থিতি এসেছে – যে আদিম অবস্থা থেকে আলো এবং শক্তির বিকিরণ ঘটেছে, আর উৎক্ষিপ্ত কণাগুলো দ্বিখণ্ডিত আর চূর্ণ হয়ে লক্ষ কোটি ছায়াপথে পরিণত হয়েছে। কাজেই সুদৃঢ় বৈজ্ঞানিক কাঠামো থেকে পাওয়া ফলাফলের মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত যে, এই মহাবিশ্বের শুরু হয়েছিল সৃষ্টিকর্তার হাতে। যদি সৃষ্টির শুরু থাকে, তবে অবশ্যই এই সৃষ্টির একজন স্রষ্টাও রয়েছে, আর সেই স্রষ্টাই হলেন ঈশ্বর’।
লেমেত্রি যেহেতু ধর্মযাজক ছিলেন, ছিলেন খ্রিস্টধর্মে বিশ্বাসী একজন বিজ্ঞানী, সেহেতু কেউ হয়তো ভাবতে পারেন যে পোপের এই উক্তিতে লেমেত্রি যার পর নাই খুশি হয়ে বগল বাজাবেন। তা হয়নি। লেমেত্রি ধার্মিক হলেও তিনি ছিলেন বিজ্ঞানমনস্ক, যুক্তিনিষ্ঠ এক মানুষ। আদিম কণার ধারনা যেটাকে আধুনিক বিগ ব্যাং এর সার্থক প্রতিভাস বলে মনে করা হয়, সেটা তিনি পেয়েছিলেন নিগূঢ় গণিত আর বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের প্রয়োগে, কোন ধর্মীয় ঐশী মন্ত্রে নয়। তিনি সেটা সোজাসুজি বলতেনও – ‘কোন ধর্মীয় চেতনা আমাকে মহাজাগতিক মডেল নির্মাণে কখনোই অনুপ্রাণিত করেনি’। তিনি কূপমণ্ডূক ধর্মবাদীদের মত বাইবেলের আয়াতে বিজ্ঞান খোঁজা কিংবা বিজ্ঞান আর ধর্মের গোঁজামিল দেয়াকে সবসময়ই অপছন্দ করতেন। তাই পোপ যখন বাইবেলকে ঐশী-গ্রন্থ বানাতে বিগব্যাংকে সাক্ষীগোপাল হিসেবে হাজির করলেন, তখন তিনি এর জবাবে বললেন, ‘আমি যতদূর দেখছি, এই তত্ত্ব অধিপদার্থবিদ্যা আর ধর্মের চৌহদ্দির বাইরের জিনিস’। শুধু তাই নয় পোপ যেন ভবিষ্যতে এ ধরণের ‘ছেলেমানুষি’ আর না করেন, সেজন্য তিনি ভ্যাটিকান মানমন্দিরের পরিচালক ড্যানিয়েল ও’কনেলের সাথে দেখা করলেন। ভবিষ্যতে পোপ যেন মহাজাগতিক ব্যাপারে তার লম্বা নাকটা আর না গলান – ব্যাপারটা দেখতে পরিচালক মশাইকে অনুরোধ করে আসেন লেমিত্রি।
পরবর্তী ইতিহাস থেকে দেখা যায়, পোপ কিন্তু লেমেত্রির অনুরোধ ঠিকই রেখেছিলেন। বিগ ব্যাং এর ব্যাপারে তিনি আর কখনোই কোন অভিমত দেননি, করেননি ‘আম গাছে নিমের সন্ধান’[10]। আজকের দিনে জাকির নায়েক আর হারুন ইয়াহিয়ার অনুসারীরা যারা সুযোগ পেলেই তাদের শতাব্দী-প্রাচীন ‘বিজ্ঞানময় ধর্মগ্রন্থ’ গুলোর মধ্যকার নানা আয়াতের সাথে বিগ ব্যাং এর মিল খুঁজে পান, তারা ধর্মযাজক লেমেত্রির এই অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত থেকে শিক্ষা নিতে পারেন[11]।
প্রমাণ মিললো বিগ ব্যাং এর
গ্যামোর সেই বিখ্যাত আলফা-বিটা-গামা পেপারের কাহিনিতে আরেকবার ফিরে যাওয়া যাক। গ্যামো আর আলফার বুঝেছিলেন, মহাবিস্ফোরণের পর থেকে শুরু করে তিন লক্ষ আশি হাজার বছর পর্যন্ত মহাবিশ্ব অস্বচ্ছ গোলকের মত ছিল অনেকটা। প্লাজমা অবস্থায় অণুরা জোড় বাধতে পারেনি। প্রায় চার লক্ষ বছর পরে তাপমাত্রা খানিকটা কমে তিন হাজার ডিগ্রি কেলভিনে নেমে আসল। ঐ সময়টার পরই কেবল স্থায়ী অণু গঠিত হবার মত পরিবেশ তৈরি হতে পেরেছে। এই সময়টাকে বলে রিকম্বিনেশন বা পুনর্মিলনের যুগ। এ সময়ই মহাবিশ্ব ক্রমশঃ স্বচ্ছ হয়ে আসে। আর আলোক কণা প্লাজমার খাঁচায় আটকে না থেকে পাড়ি দিতে শুরু করে অন্তবিহীন পথ। গ্যামো, আলফার আর আলফারের আরেক সঙ্গী হারমান তাদের গবেষণায় দেখিয়েছিলেন, বিগ ব্যাং যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে সেই আলোর অপভ্রংশ আমাদের এখন খুঁজে পাবার কথা। সেটাই হবে বিগ ব্যাং এর ফসিল, যেটার জন্য হয়েল আর গোল্ডেরা উৎসুক ছিলেন, আর ওটার অনুপস্থিতির সুযোগে মহাবিস্ফোরণের সমর্থকদের দেদারসে ব্যাঙ্গ করেছেন । গ্যামোরা জানতেন, বিগ ব্যাং এর পর থেকে মহাবিশ্ব হাজার গুণ প্রসারিত হয়েছে। তাই যে আলোক তরঙ্গ দেখবার প্রয়াস নেয়ার কথা বলা হচ্ছে সেটা আজকের দিনে হবে মোটামুটি ১ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের কাছাকাছি কোন তরঙ্গ। অর্থাৎ, তড়িচ্চুম্বকীয় পরিসীমায় যাকে সনাক্ত করা যাবে বেতার তরঙ্গ হিসেবে। আর এই বিকিরণের তাপমাত্রা হবে পাঁচ ডিগ্রি কেলভিনের মত।
মুশকিলটা হল পেপারটা প্রকাশিত হবার কিছুদিন পরেই এই গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার কথা ভুলেই গিয়েছিল সবাই। আসলে গ্যামোর সময়ে মহাবিশ্বের প্রান্তিক বিষয় নিয়ে গবেষণাগুলোকে পদার্থবিজ্ঞানের মূল ধারা হিসেবে না দেখে দেখা হত পাগলাটে বিজ্ঞানীদের কল্পনাবিলাস হিসেবে। আরেকটা মূল কারণ অনেকে মনে করেন জর্জ গ্যামোর স্বভাবসিদ্ধ ভাঁড়ামি আর রঙ্গপ্রিয়তা[12]। আলফা-বিটা-গামা নামের পেপার বানানোর জন্য বিথের নাম তাকে না জানিয়েই লেখক তালিকায় ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন গ্যামো, আমরা সেটা আগেই জেনেছি। এ ধরণের অনেক কিছুই গ্যামো করতেন, যার কারণে গ্যামোকে খুব বেশি গুরুত্ব দিতেন না তার সহকর্মীরা কিংবা অন্যান্য রাশভারী গবেষকেরা। গ্যামো একবার গণনা করে দেখালেন ঈশ্বর মশাই নাকি পৃথিবী থেকে ৯.৫ আলোকবর্ষ দূরে থাকেন। গণনার হিসেবটা এসেছিল ১৯০৪ সালে জাপান-রাশিয়া যুদ্ধের সময়, রাশিয়ার কিছু চার্চ নাকি যুদ্ধের ভয়াবহতা কমানোর জন্য বিশেষ গণপ্রার্থনার ব্যবস্থা করেছিল। কিন্তু সে প্রার্থনায় তাৎক্ষণিক কোন ফল না হলেও বেশ ক’বছর পর – ১৯২৩ সালের দিকে ক্যান্টো ভূমিকম্পে জাপানের বিরাট ক্ষয় ক্ষতি হয়েছিল। এ থেকে রসিকরাজ গ্যামো সিদ্ধান্তে আসেন, ঈশ্বরের অভিশাপ আলোর বেগে এসে পৌঁছাতে যে সময় লেগেছে তাতে করে পাওয়া যায় ঈশ্বর থাকেন পৃথিবী থেকে ৯.৫ আলোকবর্ষ দূরে! তিনি একটা সময় বিজ্ঞানী হয়েলকে নিয়ে বাইবেলের জেনেসিসের আদলে নিজস্ব এক নতুন জেনেসিসও লিখেছিলেন। এর পাশাপাশি ছিল তার শিশু কিশোরদের জন্য লেখা মজাদার ‘মিস্টার টম্পকিন্স’ সিরিজ। বিজ্ঞানের ফ্যান্টাসি মিশিয়ে নানা ধরণের গালগপ্প বানাতেন গ্যামো। এমনি একটা বইয়ে (মিস্টার টম্পকিন্স ইন ওয়াণ্ডারল্যনাড) তিনি এমন একটা রাজ্যের কল্পনা করলেন যেখানে আলোর গতি প্রতি ঘণ্টায় মাত্র কয়েক কিলোমিটার। ফলে সেই রাজ্যের সাইকেল আরোহীরা সাইকেল চালাতে চালাতেই সময়ের শ্লথতা কিংবা দৈর্ঘ্যের সংকোচনের মত আপেক্ষিকতার প্রভাবগুলো চোখের সামনে দেখতে আর অনুভব করতে পারেন। বিজ্ঞানের গল্পপ্রিয় শিশু কিশোর আর কল্পনাবিলাসী পাঠকেরা এগুলোতে নির্মল আনন্দ পেলেও গ্যামোর প্রতিপক্ষদের কাছে এগুলো ছিল স্রেফ ছেলেমানুষি, আর তুচ্ছ। তার ছাত্র আলফারের সমস্যা হয়েছিল আরো বেশি। গ্যামোর তদারকিতে পিএইচডি করায় অনেকেই আড়ালে আবডালে বলতেন, ‘জোকারের আণ্ডারে’ পিএইচডি করছেন আলফার। যদিও মহাজাগতিক বিকিরণের মূল গণনাগুলো করেছিলেন আলফারই।
অবশ্য তাদের গবেষণাকে ভুলে যাবার পেছনে গ্যামোর স্বভাবজাত তারল্যই একমাত্র কারণ ছিল না। গ্যামো নিজেও একটা সময় পদার্থবিজ্ঞানের বিশেষতঃ মহাবিশ্বের প্রান্তিক গবেষণা বাদ দিয়ে রসায়ন এবং জীববিজ্ঞানে উৎসাহী হয়ে পড়েন, এবং ডিএনএ র রহস্যভেদ করা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজও করেন। আলফারও একাডেমিয়া ছেড়ে দিয়ে আমেরিকার অন্যতম বৃহৎ কোম্পানি জেনেরাল ইলেকট্রিকে (GE) গবেষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। এভাবেই ধীরে ধীরে হারিয়ে গেলো বিগ ব্যাং নিয়ে গ্যামোর গবেষণা, এক সময় পড়ল বিস্মৃতির ধুলোর পুরু স্তর। ‘আউট অব সাইট, আউট অব মাইণ্ড’ বলে কথা!
এর পরের দশ বছর এভাবেই চলেছিল। এর মধ্যে ১৯৬০ সালে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ রবার্ট ডিকি এবং জিম পিবলস স্বাধীনভাবে গবেষণা করে সিদ্ধান্তে আসেন যে বিগ ব্যাং এর প্রমাণ যদি কিছু থেকে থাকে তা থাকবে সেই মহাজাগতিক অণুতরঙ্গ পটভূমি বিকিরণের মধ্যেই। তারাও গ্যামোর কাছকাছিই ফলাফল পেয়েছিলেন। তাদের হিসেব ছিল, বিকিরণের তাপমাত্রা হবে ১০ ডিগ্রী কেলভিন বা তার নীচে, আর বিকিরণের তরঙ্গদৈর্ঘ্য কয়েক সেন্টিমিটার। তারা গ্যামো আর তার দলের মতোই একটা গবেষণাপত্র প্রকাশ করার চিন্তা করছিলেন এ নিয়ে। কিন্তু গবেষকদের গবেষণাপত্রে যাই থাকুক না কেন, বাস্তবে এর খোঁজ তখনো পাওয়া যায়নি।
আসলে মহাজাগতিক অণুতরঙ্গ পটভূমি বিকিরণের খোঁজ পাওয়াটা একটা সৌভাগ্যপ্রসূত ঘটনাই বলতে হবে। ১৯৬৫ সালের দিকে আমেরিকার নিউ জার্সির বিখ্যাত বেল ল্যাবে আর্নো পেনজিয়াস এবং রবার্ট উইলসন বেতার যোগাযোগের মাইক্রোওয়েভ তরঙ্গ নিয়ে কাজ করছিলেন। এমন নয় যে কোন তরঙ্গ ফরঙ্গ খোঁজার মত কোন কিছু তাদের মাথায় ছিল। তাদের লক্ষ্য আসলে ছিল উপগ্রহ যোগাযোগব্যবস্থা ত্রুটিপূর্ণ করা। বেল ল্যাবের অনতিদূরে ক্রেফর্ড হিল বলে একটা জায়গায় ৬ মিটার (প্রায় ২০ ফুট) লম্বা একটা ‘হর্ন এন্টেনা’ পড়ে ছিল। এই একসময় বেল ল্যাবের ‘ইকো প্রজেক্ট’ বলে একটা প্রকল্পে এটা ব্যবহার করার কথা ছিল। কিন্তু অর্থনৈতিক এবং অন্যান্য নানা কারণে সেই প্রকল্প থেকে যন্ত্রটাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। তারপর থেকে ওটা ওভাবেই পড়ে ছিল। পরিত্যক্ত এই এন্টেনাকে রেডিও টেলিস্কোপের মতো কোন কিছুতে স্থানান্তরিত করা যায় কিনা, এ নিয়ে কাজ করতেই মূলতঃ উদ্যোগী হন পেনজিয়াস আর উইলসন। তারা বেল ল্যাব থেকে অনুমতি নিয়ে আসলেন যাতে এই এন্টেনা ব্যবহার করে তারা অন্তত কিছুদিন আকাশের দিকে তাক করে বেতার তরঙ্গ অনুসন্ধান করতে পারেন।
কিন্তু অনুসন্ধান করতে চাইলে কি হবে, আকাশের যেদিকেই এন্টেনা তাক করেন না কেন, তারা দেখেন এক অপ্রীতিকর আওয়াজ বা নয়েজ এসে সব ভজকট লাগিয়ে দিচ্ছে। এই নয়েজের মাত্রা এমনিতে খুবই কম, কিন্তু এই নয়েজ থেকে কোনভাবেই মুক্তি পাওয়া যাচ্ছে না যে! এমন নয় যে এই আওয়াজ তাদের কাজে খুব বেশি সমস্যা করছিল। সাধারণত জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এ ধরণের নয়েজকে সিস্টেমের ভ্রান্তি ধরে নিয়ে মূল কাজে এগিয়ে যান, কিন্তু পেনজিয়াস আর উইলসন নাছোড়বান্দা হয়ে পড়েই রইলেন – তারা এই আওয়াজের উৎস খুঁজে বের করবেন বলে।
এ ধরণের ক্ষেত্রে নয়েজের উৎস এবং প্রকৃতি হয়ে থাকে দুই ধরণের। এই নয়েজ আসতে পারে কোন বহির্জাগতিক উৎস থেকে, কিংবা হতে পারে কোন যন্ত্রের নিজস্ব ত্রুটির কারণে। প্রথমে বহির্জাগতিক কোন উৎস ঝামেলা পাকাচ্ছে কিনা সেটা সন্ধান করলেন এই দুই বিজ্ঞানী। হর্ন এন্টেনার কাছাকাছি অবস্থিত কোন বৃহৎ তড়িৎ-আবিষ্ট ল্যান্ডমার্ক কিংবা কোন বৈদ্যুতিক যন্ত্রের কারণে এই বৈদ্যুতিক সঙ্কেত তাদের এই হর্ন এন্টেনায় ধরা পড়ছে কিনা তার খোঁজ করলেন। ফলাফল সেই শূন্য। এমনকি একসময় আকাশ পর্যবেক্ষণ বাদ দিয়ে নিউইয়র্কের দিকেও তাদের টেলিস্কোপ তাক করলেন। সঙ্কেতের কোন তারতম্য হল না। যেদিকেই যন্ত্র তাক করেন সেদিকেই তারা শুনতে পান সেই একই মৃদু ‘হিস্ হিস্’ শব্দ।
ঝামেলাটা যন্ত্রের নিজস্ব ত্রুটির কারণে হচ্ছে কিনা সেটাও অনুসন্ধান করলেন তারা। তারা যন্ত্রের এমপ্লিফায়ার, স্পিকারগুলো খুঁটিয়ে দেখলেন, আর সবচেয়ে বেশি দেখলেন বৈদ্যুতিক বর্তনী এবং বর্তনীর সংযোগস্থানগুলো। কোন শিথিল বা নড়বড়ে বৈদ্যুতিক সংযোগ সমস্যা সৃষ্টি করছে নাকি, সেটাও আগাপাশতলা পরীক্ষা করলেন বহুবার। এমনকি যে সংযোগগুলো প্রথম দৃষ্টিতে ভালই মনে হচ্ছিল, সেগুলোকেও তারা অ্যালুমিনিয়ামের টেপ দিয়ে মুড়লেন পুনর্বার। সাবধানের তো মার নেই।
কিন্তু কোন কিছু করেই এই ‘গায়েবী আওয়াজ’ সরানো যাচ্ছিল না। এমন সময় তাদের নজরে পড়ল তাদের সাধের এন্টেনায় কোত্থেকে একজোড়া কবুতর এসে বাসা বেঁধেছে। কে জানে অনেকদিন ধরেই হয়তো তারা সেখানে ঘাপটি মেরে ছিল। পেনজিয়াস আর উইলসন ভাবলেন, যাক এইবার হতচ্ছাড়া সংকেতের উৎস খুঁজে পাওয়া গেছে। ২০ ফুট এন্টেনা বেয়ে উপরে উঠে গিয়ে কবুতরের বর্জ্য পরিষ্কার করলেন, কারণ তারা ভেবেছিলেন এন্টেনায় জমা হওয়া এই ‘White dielectric material’ গুলোই যত নষ্টের গোঁড়া। কিন্তু সেগুলো সাফসুতরো করেও লাভ হল না, এমনকি দুই দফা কবুতর তাড়িয়েও না।
প্রায় হাল ছেড়ে দেয়া অবস্থা যখন, তখনই পেনজিয়াস এমআইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্নার্ড ব্রুকের কাছ থেকে একটা টেলিফোন কল পান। ব্রুক তাকে বলেন যে তিনি প্রিন্সটনের দুই গবেষক – ডিকি আর পিবলসের একটা গবেষণাপত্রের ড্রাফট কপি পেয়েছেন, যেখানে তারা বিগ ব্যাং এর মডেলের ক্ষেত্রে বিস্ফোরণ পরবর্তী অণুতরঙ্গ দৈর্ঘ্যের একটা মাপজোক করেছেন। ব্রুকের কেন যেন মনে হচ্ছে ডিকি-পিবলসের গবেষণার সাথে পেনজিয়াস -উইলসনের এন্টেনায় ধরা পড়া আওয়াজের কোথাও একটা সম্পর্ক আছে। ব্রুক বললেন, ‘ইউ শুড প্রোবাবলি কল ডিকি অ্যাট প্রিন্সটন’[13]।
এর পরদিনই প্রিন্সটনে ফোন করলেন পেনজিয়াস, আর ফোন ধরলেন ডিকি। ডিকির সাথে ফোনে কথা বলতে বলতেই প্রথম বারের মত পেনজিয়াস বুঝতে পারলেন কী গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার করে ফেলেছেন তারা নিজেদের অজান্তেই। এন্টেনায় ধরা আওয়াজের সাথে নিউইয়র্কের দিকে এন্টেনা তাক করা, বর্তনীর শিথিল সংযোগ কিংবা কবুতরের বিষ্ঠা – কোন কিছুরই কোন সম্পর্ক নেই। তারা আসলে খুঁজে পেয়েছেন মহাবিস্ফোরণের প্রাচীনতম ফসিল। মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রাউন্ড রেডিয়েশন যাকে বলে। পশ্চাৎপট বিকিরণের তীব্রতা মেপে ডিকি-পিবলসদের গণনার কাছাকাছি ফলাফল পেয়েছেন তারা। পরম শূন্যের উপর ৩ ডিগ্রি। আর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য পাচ্ছেন দুই মিলিমিটারের সামান্য কম। পেনজিয়াসের এই সব কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেলেন ডিকি । ফোন রেখে তার ছাত্রদের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘বৎসরা, পাঙ্গামারা সারা’ (‘বয়েস, উই হ্যাভ বিন স্কুপড’)।
চিত্র: পেনজিয়াস এবং উইলসন বেল ল্যাবের বিখ্যাত সেই হর্ন এন্টেনার সামনে
এর পরদিনই ডিকি তার সাথে আরো দু’জন পদার্থবিদকে নিয়ে প্রিন্সটন থেকে ৩০ মাইল গাড়ি চালিয়ে নিউজার্সির হোলম্যান টাউনশিপে পৌঁছালেন। সেখানেই বেল ল্যাবের রিসার্চ সেন্টার। সেখানে পেনজিয়াস আর উইলসনের পরীক্ষা নিরীক্ষার ফলাফলগুলো হাতে কলমে দেখে নিশ্চিত হলেন, হ্যাঁ যে সিগনাল তারা অ্যান্টেনায় পাচ্ছেন, সেটা মহাজাগতিক অণুতরঙ্গ পটভূমি বিকিরণই বটে। তখনই দুই দল মিলে তাদের গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করতে মনস্থ করলেন অ্যাস্ট্রোফিজিকাল জার্নালে। তাদের গবেষণার ফলাফল প্রকাশের পর পেনজিয়াস আর উইলসনের এই আবিষ্কারটিকে বিজ্ঞানের জগতে অন্যতম সেরা আবিষ্কার হিসেবে স্বীকৃত হয় প্রায় সর্বত্রই। নাসার নভোচারী রবার্ট জ্যাস্ট্রো বলেছিলেন, ‘পেনজিয়াস আর উইলসন আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের বিগত পাঁচশ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে সেরা আবিষ্কারটি করছেন’। হার্ভার্ডের পদার্থবিদ এডওয়ার্ড পার্সেল ছিলেন আরো এককাঠি বাড়া। তিনি বলেছিলেন, ‘যে কোন কারো দেখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস এটি’।
এই মহাজাগতিক অণুতরঙ্গ পটভূমি বা সিএমবি আবিষ্কারের জন্য পেনজিয়াস ও উইলসন নোবেল পুরস্কার পান ১৯৭৮ সালে- গ্যামোর মৃত্যুর দশ বছর পরে। লেমিত্রিও মারা গিয়েছেন ততদিনে। মরণোত্তর নোবেল পুরস্কার প্রদানের কোন রীতি নেই, থাকলে গ্যামোকে চোখ বন্ধ করে বোধ হয় তখন নির্বাচিত করা হত, যিনি প্রায় একক প্রচেষ্টায় বিগ-ব্যাং’র ধারণাকে বিজ্ঞানের জগতে প্রতিষ্ঠা করেছেন। বোধ হয় কিছু বৈজ্ঞানিক অবদান সব সময় থেকে যাবে যা নোবেল প্রাইজের চেয়েও বেশি দামী আর গুরুত্বপূর্ণ।
বিগ ব্যাং এর ফসিল আনলো কোবে
পেনজিয়াস আর উইলসন মহাজাগতিক অণুতরঙ্গ পটভূমি বিকিরণের হদিস দিলেও সেটা খুব নিখুঁত ছিল না। কারণ বিজ্ঞানীরা জানতেন, মহাজাগতিক অণুতরঙ্গ পটভূমি বিকিরণ বড় স্কেলে সুষম মনে হলেও ছোট স্কেলে কিছুটা হলেও ‘ফ্লাকচুয়েশন’ বা অস্থিতি বজায় থাকতে হবে। এই অস্থিতিটুকুই কাজ করবে ভবিষ্যৎ-গ্যালাক্সি তৈরির বীজ হিসেবে।
কিন্তু এই অস্থিতি ধরে ফেলা কোন সহজ ব্যাপার নয়। অনেক সূক্ষ্ম যন্ত্রপাতির দরকার। সত্তুরের দশকে যে সমস্ত যন্ত্রপাতি ছিল তা দিয়ে একশ ভাগের এক ভাগ মাত্রায় ফ্লাকচুয়েশন পরিমাপ করা সম্ভব ছিল। কিন্তু এতে কোন অস্থিতি ধরা পড়েনি। আবহমণ্ডলের মধ্যকার রশ্মিগুলো ঝামেলা করছে ভেবে বেলুন ফেলুন উপরে পাঠিয়ে নানা পরীক্ষা করা হল, তাতেও কোন ভাল ফলাফল এলো না।
সাফল্য এলো অবশেষে নব্বইয়ের দশকের শুরুতে। বহু খরচাপাতি করে নাসা একটা কৃত্রিম উপগ্রহ বানিয়েছিল কোবে (COBE) নামে ১৯৮৯ সালে। এই মহাজাগতিক বিকিরণ কব্জা করার লক্ষ্যেই বানানো হয়েছিল সেটা। সেই কোবে আদিম সদ্যজাত মহাবিশ্বের এক দুর্লভ ছবি আমাদের কাছে এনে দিল – যার মধ্যে পাওয়া গেল অস্থিতির সুস্পষ্ট চিহ্ন। ব্যাপারটা চিন্তা করা যাক। আমাদের আজকের এই মহাবিশ্বের বয়স ১৪ শ কোটি বছরের বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন, আর এই কসমিক ব্যাকগ্রাউন্ড রেডিয়েশন বা সিএমবির যে ছবিটা আমরা দেখি সেটা মহাবিশ্ব জন্মানোর মাত্র চার লক্ষ বছরের। মানবিক স্কেলে চিন্তা করলে অনেকটা এরকমের শোনাবে – আমাদের মহাবিশ্বকে যদি সত্তর বছরের বৃদ্ধ হিসেবে আমরা কল্পনা করি, তবে কোবের সংগৃহীত এই মহাজাগতিক অণুতরঙ্গ পটভূমি বিকিরণ বা সিএমবির ছবিটা মাত্র কয়েক ঘণ্টার সদ্যজাত শিশুর। আর সেই শিশুবেলাকার ছবির মধ্যেই রয়েছে নক্ষত্র তৈরি হবার সম্ভাবনাময় বীজ।
১৯৯২ সালে আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির সেমিনারে যখন এই ফলাফল প্রকাশ করা হল, আর সে সভায় উপস্থিত ১৫০০ জন বিজ্ঞানীর সবাই যখন হতবাক হয়ে দেখলেন কোবের মাইক্রো তরঙ্গ পটভূমি বিকিরণের উপাত্ত ২ দশমিক ৭৩ ডিগ্রি কেলভিনের কৃষ্ণকায়া বিকিরণের তত্ত্বীয় রেখার সাথে প্রায় পুরোপুরি মিলে গেল, তখন মুহুর্মুহু করতালিতে ফেটে পড়ল পুরো সভাঘর।
চিত্র: কোবের পাঠানো মহাজাগতিক অণুতরঙ্গ পটভূমি বিকিরণ থেকে প্রাপ্ত উপাত্ত ২ দশমিক ৭৩ ডিগ্রি কেলভিনের কৃষ্ণকায়া বিকিরণের তত্ত্বীয় রেখার সাথে প্রায় পুরোপুরি মিলে গিয়েছিল (ছবির উৎস : স্টিফেন হকিং, ইউনিভার্স ইন এ নাটশেল)।
প্রিন্সটনের জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানী অস্ট্রিকার মন্তব্য করলেন,
‘যখন পাথরের খাঁজে ফসিল পাওয়া যায় তখন আমাদের চোখে প্রজাতির উদ্ভবের ছবিটা স্পষ্ট হয়ে উঠে। কোবে আমাদের জন্য মহাবিশ্বের ফসিল নিয়ে এসেছে’।
কথাটা মিথ্যে নয়। এই সিএমবি সদ্যজাত মহাবিশ্বের ফসিলই তো। কিন্তু তারপরেও একটা ব্যাপার হল, কোবের পাঠানো ছবি খানিকটা হলেও ঝাপসা ছিল। আর কোবের সংবেদনশীলতা ছিল কেবল ৭ ডিগ্রি কোনের চেয়ে বড় ফ্লাকচুয়েশনগুলো কব্জা করার মতো পর্যায়ের। কিন্তু এর চেয়েও সূক্ষ্ম ফ্লাকচুয়েশন ধরার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ২০০৩ সালে ডব্লিউ-ম্যাপ (WMAP) উপগ্রহের পাঠানো উপাত্তের জন্য।
চিত্র: পেনজিয়াস –উইলসন, কোবে এবং ডব্লিউ ম্যাপ থেকে পাওয়া মহাজাগতিক অণুতরঙ্গ পটভূমি বিকিরণ।
কোবে এবং ডব্লিউ ম্যাপের পাঠানো মহাজাগতিক বিকিরণের ফসিলই বিগ ব্যাং বনাম স্থিতি তত্ত্বের দ্বন্দ্বের যবনিকা ফেলে দেয়। মহাবিশ্বের উৎপত্তি নিয়ে তত্ত্বের দ্বন্দ্বে বিগ ব্যাং বেরিয়ে আসে একমাত্র ‘সুপার পাওয়ার’ হিসেবে।
অতঃপর…
‘বিগ ব্যাং’ তত্ত্বের গৌরবময় সাফল্য বিজ্ঞানীদের একেবারে সম্মোহিত করে রেখেছিলো বেশ অনেক দিন। সবকিছুই সেই উত্তপ্ত মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে একসাথে সৃষ্টি হয়েছে, আর তার আগে কিছুই ছিলো না, এমন ভাবনা যেন বিজ্ঞানীরা অনেকটা স্বতঃসিদ্ধ হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছিলেন কয়েক দশক ধরে। মহাজাগতিক অণুতরঙ্গ পটভূমি বিকিরণের প্রত্যক্ষ প্রমাণ পেয়ে অনেকে আবার বিগ-ব্যাং তথা মহাবিস্ফোরণ তত্ত্বের মধ্যে একেবারে ‘ঈশ্বরের প্রতিচ্ছবি’ পর্যন্ত দেখতে পেয়েছিলেন। এমনকি নিউজ উইকের মত ম্যাগাজিন ১৯৯৮ সালের ২০ এ নভেম্বর সম্পাদকীয় ছেপেছিলো এই বলে বিজ্ঞান নাকি ঈশ্বরকে পেয়ে গেছে!
চিত্র: (ক) স্ট্যান্ডার্ড বিগ-ব্যাং মডেল : যেটি মনে করে অতি ঘন, উত্তপ্ত এক অদ্বৈতবিন্দুর মধ্যে দিয়ে আমাদের মহাবিশ্বের জন্ম হয়েছে। (খ) ‘বিজ্ঞান ঈশ্বরকে পেয়ে গেছে’- দাবী করে নিউজ-উইকের একটি কুখ্যাত প্রচারণা।
তারপর যতদিন গেছে উত্তেজনা আর ‘সম্মোহনের ভাব’ ধীরে ধীরে থিতিয়ে এসেছে। একটা সময় পরে বিজ্ঞানীরা নিজেরাই দেখেছেন বিগ ব্যাং -এর প্রমিত মডেল আসলে সব সমস্যার সমাধান দিতে পারে না। এরও অনেক সমস্যা আছে। বিজ্ঞান লেখক ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী প্রায়ই তার লেখায় বলেন, ‘স্বর্গোদ্যানে ঘাসের নীচে সাপের অবস্থান যেমন রসভঙ্গ করে, মহাবিস্ফোরণ বা বিগ ব্যাং তত্ত্বও একইভাবে সর্বৈব সুন্দর নয়। এরও সমস্যা আছে।[14]’ যেমন, বিজ্ঞানীরা আজকের মহাবিশ্বের প্রকৃতি অনুসন্ধান করে দেখেছেন প্রায় ১৪শ কোটি বছর আগে ঘটা মহা বিস্ফোরণ অনেক বড় স্কেলেও প্রচণ্ড সমসত্ত্ব ছিল। কিন্তু কেন যে ছিল এর কোন ব্যাখ্যা কেউ দিতে পারেনি। বলতে পারেনি এত বিশালকায় এই মহাবিশ্বের দুইপ্রান্তের দুই অঞ্চলের তাপমাত্রা কিভাবে সমান হয়? এ সমস্যাটি দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞানীদের মাঝে পরিচিত ছিল ‘দিগন্ত সমস্যা’ হিসেবে। দিগন্ত সমস্যার পাশাপাশি ছিল মহাবিশ্বের ‘সামতলিক সমস্যা’। ‘প্রমিত বিগ ব্যাং এর মডেল কখনোই বলতে পারেনি কেন আমাদের মহাবিশ্ব অতিমাত্রায় ফ্ল্যাট বা সমতল (১০২৮ সেন্টিমিটার স্কেলে)। এরকম সমতল মহাবিশ্ব তৈরি করতে গেলে মহাবিশ্বের মোট ঘনত্ব আর সন্ধি ঘনত্বের অনুপাত হতে হবে টায়ে টায়ে ১। মহাবিশ্বের উষালগ্নে কীভাবে এই ‘সূক্ষ্ম সমন্বয়ের’ মত ব্যাপার ঘটেছিল? জবাব পাওয়া যায়নি। এর উপর মরার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল ‘ম্যাগনেটিক মনো-পোল’ সমস্যা। মহাবিস্ফোরণ তত্ত্বের প্রমিত মডেল বৈদ্যুতিক-চুম্বকীয় আধানযুক্ত অতি ভারী একক মেরুবিশিষ্ট কিছু কণিকার প্রাচুর্য থাকবার ভবিষ্যৎবাণী করেছিলো, যা আমরা কখনোই দেখতে পাই না। এমনকি আমাদের মহাবিশ্ব বাড়তে বাড়তে কেন এতো বড় হল – এ সমস্যারও কোন সমাধান হাজির করতে পারেনি এ তত্ত্ব। স্ট্যান্ডার্ড বিগ ব্যাং তত্ত্ব অনুযায়ী অতি ঘন, উত্তপ্ত এক অবস্থার মধ্যে দিয়ে যদি আমাদের মহাবিশ্বের জন্ম হয়ে থাকে, তবে গণনা করে দেখা গেছে এটি খুব বেশী হলে মাত্র দশটি প্রাথমিক কণিকা তৈরি করার মত ক্ষেত্র তৈরি করতে পারে। আর তা দিয়ে একজন মুক্তমনা পাঠকেরও মাথা গুঁজবার ঠাঁই হবে না, তাদের একেক জনের দেহেই যে রয়েছে প্রায় ১০২৯ টি অমনতর প্রাথমিক কণিকা!তার চেয়েও বড় কথা হল, বিগব্যাংকে মহাবিশ্বের উৎপত্তির ‘আলাদীনের চেরাগ’ হিসেবে অনেকে দেখাতে চাইলে কি হবে এটিকে আসলে উৎপত্তির সর্বশেষ তত্ত্ব বলা যায় না। আদপে এটা বিস্ফোরণ বিষয়ক তত্ত্বই নয়। এর মাধ্যমে একটি বিস্ফোরণের বেশ কিছু ফলাফল ব্যাখ্যা করা যায় বটে কিন্তু বিস্ফোরণের মূল প্রকৃতি সম্বন্ধে সে কিছুই বলতে পারে না। কি এই বিস্ফোরণ, এই বিস্ফোরণের আগে কি ছিল, কিংবা কেনই বা এই মহাবিস্ফোরণ ঘটেছিল, এ বিষয়ে এই মডেল একেবারেই নীরব।
আসলে এই নিঃসীম নীরবতা ভেঙ্গে উত্তর হাজির হওয়ার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হয়েছিল আশির দশকে অ্যালেন গুথ নামে এক বিজ্ঞানীর আগমনের জন্য; ‘স্ফীতিতত্ত্বের জনক’ হিসেবে পরিচিত এই প্রতিভাধর বিজ্ঞানীর কাজের মাধ্যমেই এইসব কঠিন কঠিন প্রশ্নের উত্তর ক্রমশ আমরা জানতে পেরেছি। এ নিয়ে আলোচনা করা যাবে আগামী পর্বে …
চলবে
তথ্যসূত্র –
[1] Physicist Finds Out Why ‘We Are Stardust…’, Science News, June 25, 1999
[2] Lawrence M. Krauss, A Universe from Nothing: Why There Is Something Rather than Nothing, Free Press, 2012, p 17.
[3] George Gamow, My World Line : An Informal Autobiography, Viking Adult; 1970
[4] অভিজিৎ রায়, মার্ক্সবাদ কি বিজ্ঞান?, মুক্তমনা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০০৮ দ্রঃ। মুক্তমনা এবং সচলায়তন ব্লগে সে সময় (২০০৮) প্রকাশিত এ লেখায় স্ট্যালিনীয় জামানায় সাহিত্যিক এবং বিজ্ঞানী এবং দার্শনিকদের উপর লাগাতার অত্যাচারের নমুনা পেশ করে বাম ঘরণার দেশীয় সৈনিকদের ভয়ঙ্কর তোপের মুখে পড়েছিলাম। যথারীতি ‘পুঁজিবাদের দালাল’ , ‘শোধনবাদী’ থেকে শুরু করে ‘ছাগল’ ‘পাগল’ সহ নানা উপাধি হজম করতে হয়েছিল।আমি দিন কয়েক পরে একটি প্রত্যুত্তর দিয়েছিলাম ‘মার্ক্সবাদ কি বিজ্ঞান?’ প্রবন্ধের সমালোচনার উত্তরে’ শিরোনামে। অবশ্য তাতে খুব একটা লাভ হয়েছিল বলা যাবে না। এ লেখাটি এখনো অনেকের কাছে বাংলা ব্লগে মার্কসবাদ নিয়ে তর্ক বিতর্কের আদি অকৃত্রিম উৎস।
[5] অভিজিৎ রায়, লাইসেঙ্কোইজম, মুক্তমনা, নভেম্বর ০১, ২০০৮।
[6] স্টালিনীয় আমলে বিজ্ঞানীদের উপর লাগাতার অত্যাচার এবং বিজ্ঞানের নামে অপবিজ্ঞান প্রচারের সাথে পাঠকেরা আরো বিস্তৃতভাবে পরিচিত হতে চাইলে অনন্ত বিজয় দাশের লেখা ‘সোভিয়েত ইউনিয়নে বিজ্ঞান ও বিপ্লব : লিসেঙ্কো অধ্যায়’ (শুদ্ধস্বর)বইটি পড়ে দেখতে পারেন।
[7] জেনেটিক্সকে যেমন ‘পুঁজিবাদী বিজ্ঞান’ হিসেবে অভিহিত করে হটানোর চেষ্টা করা হয়েছিল, ঠিক তেমনি আবার একটা সময় বিগ ব্যাং এরও বিরুদ্ধাচরণ করা হয়েছিল কমিউনিস্ট রাশিয়ায়। বলা হয়েছিল বিগ ব্যাং এর ধারণা মার্ক্সিস্ট ভাবধারার সাথে একেবারেই সঙ্গতিপূর্ণ নয়, ওটা ‘বুর্জোয়া বিজ্ঞান’। যে সমস্ত বিজ্ঞানীরা বিগ ব্যাং তত্ত্বের পক্ষে কথা বলতেন তাদের উপর নেমে এসেছিল রাস্ট্রীয় নির্যাতন। যেমন, ১৯৩৭ সালে নিকোলাই কোজারভ নামের এক বিজ্ঞানী ছাত্রদের মাঝে বিগ ব্যাং মডেল নিয়ে আলোচনা করায় তাকে ধরে শ্রমশিবিরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। অত্যাচার করা হয়েছিল ভসেভলদ ফ্রেডরিকস এবং মাতভেই ব্রনস্টেইন নের মত বিজ্ঞানীদের উপরেও, করণ তারা বিগ ব্যাং তত্ত্বের সমর্থক ছিলেন। গ্যামো রাশিয়া ছেড়ে পালানোর পর তাকে বিশ্বাসঘাতক ‘আমেরিকান মুরতাদ’ (Americanized apostate) হিসেবে চিহ্নিত করে বিচারের প্রহসনও করা হয়েছিল।
[8] Alex Vilenkin, Many Worlds in One: The Search for Other Universes, Hill and Wang, 2007
[9] Lemaître later summarized his theory as thus: “The primeval atom hypothesis is a cosmogenic hypothesis which pictures the present universe as the result of the radioactive disintegration of an atom”.
[10] ধর্মগ্রন্থে বিজ্ঞান অনুসন্ধানের অপচেষ্টা নিয়ে আমি বহু আগে একটা লেখা লিখেছিলাম ‘বিজ্ঞানময় কিতাব’ নামে। লেখাটি আরেকটু বিবর্ধিত আকারে অন্তর্ভুক্ত হয় রায়হান আবীরের সাথে যুগপৎভাবে লিখিত ‘অবিশ্বাসের দর্শন’ (শুদ্ধস্বর, ফেব্রুয়ারি, ২০১১) বইয়ে। সহব্লগার নাস্তিকের ধর্মকথাও এই বিষয় নিয়ে একাধিক প্রবন্ধ লিখেছেন ব্লগে। ধর্মে বিজ্ঞান খোঁজার প্রয়াসকে তিনি অভিহিত করেছেন ‘আম গাছে নিমের সন্ধান’ হিসেবে। লেখাটি মুক্তমনার সংকলনগ্রন্থ ‘বিশ্বাস ও বিজ্ঞান’ (চারদিক, ২০১২) এ অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
[11] এখানে উল্লেখ্য, মুসলিম বিশ্বের একমাত্র নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী আব্দুস সালামও লেমিত্রির মতোই বিগ ব্যাং তত্ত্বকে কোরআনের আয়াতের সাথে মিশাতে বারণ করতেন। তিনি বলতেন,
‘বিগব্যাং তত্ত্বের সাম্প্রতিক ভাষ্যটি বর্তমানে মহাবিশ্বের উৎপত্তির সর্বোৎকৃষ্ট ব্যাখ্যা প্রদান করছে। কিন্তু আগামীকাল যদি এর চাইতেও কোন ভাল ব্যাখ্যা পাওয়া যায়, তাহলে কি হবে? তাহলে কি নতুন বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির সাথে তাল মেলাতে গিয়ে ধর্মগ্রন্থের আয়াত বদলে ফেলা হবে?’
[12] Simon Singh, Big Bang: The Origin of the Universe, HarperCollins; 2005
[13] Richard Panek, The 4 Percent Universe: Dark Matter, Dark Energy, and the Race to Discover the Rest of Reality, Houghton Mifflin Harcourt; 1ST edition , January 10, 2011
[14] এ এম হারুন-অর-রশীদ এবং ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী, অপূর্ব এই মহাবিশ্ব, প্রথমা, ২০১১। অথবা, সৈয়দা লাম্মীম আহাদ এবং ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী, সবার জন্য জ্যোতির্বিদ্যা, তাম্রলিপি, ২০১২ দ্রষ্টব্য।
এরকম লেখা আর পাব না। দুঃখ হয়।
অনেক ভাল লাগলো, এত কষ্ট করে আমাদের কে এত সুন্দর একটি পোষ্ট দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
ভালো লাগল অনেক। ধন্যবাদ
ধৈর্যের লাগাম টেনে ধড়ে অতিকায় লেখাটা পড়া শেষ করলাম।
আরো ২ বার না পরলে হবেনা।
কারন বেশীরভাগ টার্ম সম্পর্কে আগে থেকে ধারনা থাকলেও কেন যেন অনেক কথাই আমার মাথার ওপর দিয়ে গিয়েছে ।
আবার পড়া শুরু করলাম 🙂
অসাধারণ ! পরের পর্বগুলোর অপেক্ষায় রইলাম ।
বিজ্ঞান লেখায় কেউ ধর্মের প্যাচাল আনলেই লাত্থাইয়া ব্লগ থেকে বের করে দেওয়া হবে এই রকম একটা ঘোষনার উপস্থিতি মিস করতেছিলাম লেখাটার একদম উপরে। এইটা করা অত্যন্ত দরকারী ছিল। আস্তিকরা যেমন কিছু হইলেই ঈশ্বর দেখে, আর এইখানের কতিপয় নাস্তিকরা কিছু না হইলে ঈশ্বর দেখে। কী করব, এরা শিখছেই কয়েকটা সাইটের দুই পাতা ব্লগ পড়ে ইসলামের পুটু মারতে। এইরকম একটা বিজ্ঞানের ব্লগ লেখার যোগ্যতা, মুরদ কিংবা মস্তিষ্ক কোনটাই নাই, জানে না এমন একটা ব্লগ লিখতে কী পরিমান পরিশ্রম করতে হয়। যার জন্য এই রকম চমৎকার একটা পোস্টে আল্লা না কোন ফু কী করছে না করছে সেই আলোচনা নিয়া আসে।
কঠোরভাবে এই ব্যাপারগুলো দমন করা উচিত অভিদা।
লেখার ব্যাপারে আলাদা কিছু বললাম না, কারন বলার দরকার নাই। বিজ্ঞান লেখায় অভিজিৎ ইজ অভিজিৎ।
@সাইফুল ইসলাম,অভিজিৎ স্বয়ং এই লেখায় ধর্মকে উল্লেখ করেছেন! অবশ্যই প্রাসঙ্গিক ক্রমে। অপ্রাসঙ্গিকভাবে নয়। কয়েক জায়গায়ই ধর্ম (প্রচলিত ধর্মগুলো) নিয়ে আলোচনা করেছেন। যেমন:
এইরকম আরো কিছু আছে। 🙁
@সুষুপ্ত পাঠক,
প্রাসঙ্গিক আলোচনায় আমার কোন আপত্তি নাই, আর আমার কথার উদ্দেশ্যেও এটা ছিল না। মন্তব্যকারীদের মধ্যে কয়েকজনের অতীত ইতিহাস জানলে বুঝতেন কেন আমি এই কথা বলেছি। ওয়ার্নিং হিসেবে। চমৎকার আলোচনাকে বিষ্ঠাতে পরিণত করতে এদের জুরি নাই। সো, ওয়ার্নিংটা বজায় থাকুক।
অফিসে হালকা কাজ থাকায় ভাবলাম মুক্তমনায় ঢুকি। কিছু সময় কাটানো যাবে। কারন অফিসে কাজ কম থাকলেও ছুটি পাওয়া যাবে না। অবশ্য দিনে এনে দিন খাওয়ারা কাজের ফাঁকে ইচ্ছা থাকলে একটু আধটু পড়তে পারে আর কি। এই যা।
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে ফেললাম। অসাধারণ লাগলো। বিজ্ঞানের ছাত্র হতে পারি নি। তাই বিজ্ঞান এর সূত্র-মূত্র কিছু বুঝি না বলে এ সব কিছু দেখলেই হাতের নাগালে রাখতাম না। কিভাবে নিজের অজান্তে বিজ্ঞান এর প্রবন্ধ গুলো ভাল লাগতে শুরু করলো তা বলতে পারবো না।
আশা করি বই টা বেড় হলেই হাতের নাগালে পাবো খুব শীঘ্রই এবং আগামি পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকবো।
বিঃদ্রঃ এই লাইন টাতে মনে হয়
‘বলা যায়’ দুই বার হয়েছে।
বিজ্ঞান বুঝি না। তবু বিজ্ঞান পড়তে ভাল লাগে। পৃথিবীর মত কোন গ্রহ আবিষ্কৃত হলে কেন এত খুশী হই, জানি না। বা, লক্ষ বছরের পুরনো ফসিল আবিষ্কারের খবর শুনলেও কেন যে শিহরিত হই! বিগ ব্যাং এর আগে কি ছিল, তা জেনে কি লাভ? তবু বিমল আনন্দ হয়!
লেখে পড়ে আনন্দ পেয়েছি, শিহরিত হয়েছি, এর বেশি কিছু বলতে চাই না, বলার নেইও। তবে একটা রিকোয়েস্ট, অভিজিৎদা, বইটা পেতে যেন আমাদের একুশে বইমেলা বা তার শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে না হয়! ভাল একটা বই যত আগে পাঠকের চোখ দেখে, ততই কি ভাল না?
বিজ্ঞানের জয় হোক! জয় হোক মুক্তচিন্তার! মুক্তমনার পাতা ভরে উঠুক বিজ্ঞান লেখায়! বিজ্ঞানপ্রেমিদের ভিড়ে গমগম করুক মুক্তমনার উন্মুক্ত প্রান্তর!
চমৎকার জ্ঞান সমৃদ্ধ প্রবন্ধ হয়েছে।
অনবদ্য! দারুণ একটা বই পেতে যাচ্ছি। একদম ঘোরের মধ্যে পড়ে ফেললাম যেন। এমন জায়গায় থামালেন। শিগগিরি পরের পর্ব চাই।
স্ট্যালিনে রাশিয়ায় পদার্থবিজ্ঞানেরও যে এই দশা হয়েছিলো তা জানা ছিলো না। এই লেখা থেকে জানলাম। তবে ঐ অংশটা অধ্যায়ের মূল থীম থেকে খানিকটা সরে গেছে।
লেখা বরাবরের মতোই অসাধারণ তবে প্রথম দিকে মনে হয় কিছু অপ্রাসঙ্গিক কথা এসে গেছে। কিছুদিন আগে কিছু রিভিউ পেপার পড়ে দেখলাম আধুনিক অ্যাস্ট্রোনমির একটা বড় সমস্যা হচ্ছে টেলিস্কোপ থেকে প্রাপ্ত বিশাল ডাটা বিশ্লেষণ করা, হাজার হাজার টেরাবাইট ডাটা থেকে দরকারি ইনফরমেশন পাওয়া সহজ কথা না, এজন্য ডাটা মাইনিং এর নতুন নতুন অ্যালগোরিদম দরকার হচ্ছে, অ্যাস্ট্রোইনফরমেটিক্স নামের নতুন বিষয়ই তৈরি হয়ে গেছে। বায়োলজীতেও এধরণের সমস্যায় পড়তে হয় বিজ্ঞানীদের। “বিগ ডাটা” এখন একটা পপুলার রিসার্চ টপিক, এই টপিকটা নিয়ে একটা ব্লগ লিখবো ভাবছি!
পড়ে দারুন লাগলো| প্রথমে এক নিশ্বাসে পড়ে নিয়ে, তারপর চেখে চেখে পড়লাম|
গত বছর একটা দারুন বই পড়েছিলাম| জিম আল-খালিলির “ব্ল্যাক হোল, ওয়ার্ম হোল এন্ড টাইম মেশিন”|
সেই বইটার থেকে অনেক কিছু মনে পড়ে গেল| বইটিতে মহাজাগতিক মহাবিস্ফোরণের চমত্কার ব্যাখা দেওয়া আছে| বিগ ব্যাং-এর কথা ভাবলেই যেইটা মনে হয় যে মহাবিশ্বের কোনো আদিম প্রান্তে হয়ত এটি ঘটেছিল এবং তার থেকেই মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হয়ে আজকের রূপ নিয়েছে|কমন সেন্স দিয়ে ভাবলেই এই চিত্রটা মাথায় ভেসে ওঠে|যেন কোনো প্রচন্ড আনবিক বোমার বিস্ফোরণের মতন|অনেকেই এইরকম ধারণা পোষণ করলেও, এই চিত্রটাই তো ভুল|মহাজাগতিক মহাবিস্ফোরণ একসাথে মহাবিশ্বের সর্বত্র সংগঠিত হয়েছে! ভাবলেই গায়ে কাঁটা দেয়!
আমার আরেকটা কথা সব সময় মনে হয়| যদি অনন্ত মহাবিশ্ব তত্ত্ব সঠিক হয়, তাহলে অন্যান্য মহাবিশ্বগুলো কি বিস্ফোরণের মাধ্যমেই সৃষ্টি হয়েছে? সেই মহাবিশ্বগুলোতে কি পদার্থবিদ্যার সুত্রগুলো একই আচরণ করে নাকি ভিন্ন? যদি ভিন্ন হয় তো কেন? আমাদের মহাবিশ্বেই বা কেন পদার্থ বিদ্যার সুত্র গুলো এমন ধারা? এই বিষয়ে আধুনিক তাত্ত্বিক পদার্থবিদদের মতামত সম্বন্ধে লেখক যদি পরবর্তী অংশে আলোকপাত করেন তো ভালো লাগবে|
@ অভিজিৎদা, দারুণ লেগেছে । পরের পর্বের অপেক্ষায় আছি । আমার একটা প্রশ্ন ছিল – আপনার লেখা এবং বিভিন্ন লেখা থেকে জেনেছি – কোয়ান্টাম ফ্ল্যাকচুয়েশনের ব্যাপারে । কোয়ান্টাম বলবিদ্যা আমাদের নতুন করে ভাবাচ্ছে আর জানাচ্ছে যে,কোয়ান্টাম ফ্ল্যাকচুয়েশন হবার পরের অবস্থা বিগ ব্যাং । এ ব্যাপারে আপনার কাছ থেকে জানতে চাইছি । ভাল থাকবেন ।
অসাধারন লেখা অভিজিৎ। মিজান সাহেবের সাথে লেখা বইটির প্রত্যাশায় রইলাম। আশাকরি বইটিতে বিশেষ করে ‘শুন্যতা’ উপরে অনেক বিস্তারিত লেখা হবে। শুন্য থেকে সৃষ্টি, চিরায়ত ‘কমনসেন্স’ যুক্তির একটা বিশাল অস্ত্র হয়ে আছে এখনো। কোয়ান্টাম আর রিলেটিভিটির জগতে যে কমনসেন্স খাটে না এই জিনিষটি এখনো অনেক বিজ্ঞানমনস্করাও আয়ত্ব করতে পারে নি।
একটা ছোট কথা, আপনি লিখেছেন “পরবর্তী ইতিহাস থেকে দেখা যায়, পোপ কিন্তু লেমেত্রির অনুরোধ ঠিকই রেখেছিলেন। বিগ ব্যাং এর ব্যাপারে পোপ আর কখনোই কোন অভিমত দেননি, করেননি ‘আম গাছে নিমের সন্ধান’”
জানামতে কিন্তু পোপ এর পরও বিগ ব্যাং কে নিয়ে অনেক কথা বলেছেন। হকিং এর সেই বিখ্যাত A BRIEF HISTORY OF TIME (1992) এই তো রয়েছে এক কনফারেন্স এর কথা যেখানে তিনি বলেছিলেন, My interest in the origin and fate of the universe was reawakened when I attended a conference on cosmology in the Vatican. Afterwards we were granted an audience with the Pope. He told us that it was alright to study the evolution of the universe after the big bang, but we should not inquire into the big bag itself because it was the moment of creation and therefore the work of God.
অবশ্য তখন আর পোপ Pius XII ছিলেন না, অন্য পোপ এসেছিলেন। তবে গত ৫০ বছরে কিন্তু ক্যাথলিক পোপেরা বার বার বিগ ব্যাং কে ধর্মের সাথে সামন্জস্যপূর্ন বলে মত দিয়েছেন। এমনকি কদিন আগে সদ্যবিদায়ী পোপ র্যাটজিংগার ও বিগ ব্যাং নিয়ে সারমন দিয়েছিলেন।
http://www.cbsnews.com/8301-501465_162-20027781-501465.html
@সফিক,
হুমম, অন্য পোপেরা বলেছিলেন বটে, তবে পোপ Pius XII আসলেই লেমিত্রির অনুরোধের পর এ নিয়ে কথা বাড়াননি, কোথাও আর বিগ ব্যাং এর সাথে বাইবেল জোড়া দেননি।
@অভিজিৎ, আমি আগে কোথাও পড়েছিলাম, প্রাণের আদিম উৎস সমুদ্র। এক হিসেবে আমরা তাই সমুদ্রের সন্তান। এটা ভাবতে বেশ লাগতো। এখন মহাশূন্য থেকে ভেসে আসা ম্যাটার পৃথিবীতে এসে প্রাণের সূচনা ঘটিয়েছিল এই তথ্য আরো এক অন্য রকম অনুভূতি এনে দিল! আর্য্যরা বহিরাগত না স্থানীয় এই বিতর্ক আমরা এখনও চালিয়ে যাচ্ছি। যেখানে গোটা প্রাণীজগতই বহিরাগত 🙁
বিজ্ঞান লেখা আমাদের মত আকাট মূর্খদের বেশিরভাগ সময় অবোধ্য থেকে যায় মূলত বিষয়গুলো কঠিন এবং বিজ্ঞানের পরিভাষায় লেখা হয় বলে। খুব কম লেখকই আছেন যারা সর্ব সাধারণের কথা বিবেচণা করে এমনভাবে লেখেন যাতে বুঝতে সুবিধা হয়। আপনি সেই লেখক যিনি এই কাজটা করে আমাদের অশেষ উপকার করছেন। লেখাটি পড়ে এমন অনেক কিছু জেনেছি যা আগে জানতাম না। ব্যাখা করেছেন সহজ ভাষায় যাতে আমরা বুঝতে পারি। ( আমি ইহা রচনা করেছি সহজ করে যাতে তোমরা বুঝতে পারো। কোন রহস্যতা আছে কি? ;-( )
এই সিরিজটা অধির আগ্রহে পড়ছি কারণ বিগ ব্যাং-এর আগে কি ছিল সে বিষয়ে আমরা জানতে পারবো। অসাধারণ দাদা!
লেখা টা পড়ে ভালো লাগল। সাথে আরেকটা অনুভূতিও যোগ হল, এখন থেকে যদি কখনো কোনও কারণে নিজেকে খুব তুচ্ছ মনে হয় তখন ভাবব – না আমি তুচ্ছ নই, আমি নক্ষত্র কন্যা (*)
আমি পদার্থ বিদ্যা সম্বন্ধে তেমন কিছুই জানিনা, তাই নির্বোধের মত একটা প্রশ্ন করি- মহাবিশ্ব সম্প্রসারণের ফলে কি মহাকর্ষ বল পরিবর্তন হয়?
অনবদ্য লেখা। পরবর্তী পর্বের আশায় রইলাম। (Y) (D)
@স্যাম,
ধন্যবাদ।
মহা বিস্ফোরনের সব বিষয়ই আছে কোরানে। যা ইতোমধ্যেই কোরানে বহাল তবিয়তে বিদ্যমান , সেই ১৪০০ বছর আগেই আমাদের উম্মী নবি মোহাম্মদ জানত , তা এখন ইহুদি নাসারারা আবিস্কার করে কি বোঝাতে চায় সেটাই তো বুঝি না। তাই ভাই সকল , এইসব ইহুদি নাসারাদের কিতাব ও বিজ্ঞান বাদ দিয়ে কোরান পড়ুন ও বিজ্ঞানের চুড়ান্ত শিখরে উঠে যান। বিশ্বজগতের সকল বিজ্ঞানই আছে কোরানে। তাই কোরান বাদ দিয়ে খামোখাই আপনারা ইহুদি নাসারাদের কাছে বিজ্ঞান শিখতে যান। এটাই বড়ই আফশোস !!!
@বিদ্রোহী,
ঠিক কথা!
অসাধারন অভিজিৎ রায়। মুগ্ধ হয়ে পড়েছি। আগামীর অপেক্ষায়…….
@কেশব অধিকারী,
ধন্যবাদ আপনাকে।
আজকের দিনে জাকির নায়েক আর হারুন ইয়াহিয়ার অনুসারীরা যারা সুযোগ পেলেই তাদের শতাব্দী-প্রাচীন ‘বিজ্ঞানময় ধর্মগ্রন্থ’ গুলোর মধ্যকার নানা আয়াতের সাথে বিগ ব্যাং এর মিল খুঁজে পান, তারা ধর্মযাজক লেমেত্রির এই অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত থেকে শিক্ষা নিতে পারেন । (Y) (Y) (Y)
অসাধারন লেখা। :clap
পরবৰ্তী ৰ্পবের আপেক্ষায় আছি …. :guru:
@তারিক,
🙂
@অভিজিৎ,
নিঃসন্দেহে অসাধারন লেখা। আশা করি পরবর্তী লেখাতেও ভাল কিছু পাব। বিগ ব্যাঙের পর কি আমাদের মহাবিশ্ব সৃষ্টির আরেক মতবাদ খুব সম্ভবত Intelligent Design এর ঠিক ভুল দিকগুলো নিয়ে কিছু বলবেন?
>>আজকের দিনে জাকির নায়েক আর হারুন ইয়াহিয়ার অনুসারীরা যারা সুযোগ পেলেই তাদের শতাব্দী-প্রাচীন ‘বিজ্ঞানময় ধর্মগ্রন্থ’ গুলোর মধ্যকার নানা আয়াতের সাথে বিগ ব্যাং এর মিল খুঁজে পান, তারা ধর্মযাজক লেমেত্রির এই অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত থেকে শিক্ষা নিতে পারেন ।
‘কোন ধর্মীয় চেতনা আমাকে মহাজাগতিক মডেল নির্মাণে কখনোই অনুপ্রাণিত করেনি’-লেমেত্রি।>>
যাকির নায়েক বা হারুন ইয়াহ্যিয়া কখন বলেনি ধর্মগ্রন্থ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বিজ্ঞানের বিভিন্ন সুত্রের আবিস্কার। তবে কারও কারও double standard মন আসল জিনিস অনুধাবন করতে পারে না। আপনারা প্রায়ই বলেন ধর্ম পুরাতন দিনের কথা বা ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের কোণ সম্পর্ক নেই আবার যখন কেউ সম্পর্ক তুলে ধরে আপনারা সেটা যাচাই না করে অহেতুক মন্তব্য করেন। ভাই যাকির নায়েক বা হারুন ইয়াহ্যিয়া যা বলেছে তা কি কুরআনের বাইরে, না কি মিথ্যা বানোয়াট। যদি মিথ্যা হয়ে থাকে তাহলে তুলে ধরেন , আর যদি না পারেন তাহলে শিক্ষা কার নেয়া উচিৎ?
@ওয়ালিদ জাহান,
বিদ্রোহী ভাইয়ের মন্তব্য আবার পড়ুন :
মহা বিস্ফোরনের সব বিষয়ই আছে কোরানে। যা ইতোমধ্যেই কোরানে বহাল তবিয়তে বিদ্যমান , সেই ১৪০০ বছর আগেই আমাদের উম্মী নবি মোহাম্মদ জানত , তা এখন ইহুদি নাসারারা আবিস্কার করে কি বোঝাতে চায় সেটাই তো বুঝি না। তাই ভাই সকল , এইসব ইহুদি নাসারাদের কিতাব ও বিজ্ঞান বাদ দিয়ে কোরান পড়ুন ও বিজ্ঞানের চুড়ান্ত শিখরে উঠে যান। বিশ্বজগতের সকল বিজ্ঞানই আছে কোরানে। তাই কোরান বাদ দিয়ে খামোখাই আপনারা ইহুদি নাসারাদের কাছে বিজ্ঞান শিখতে যান। এটাই বড়ই আফশোস !!!
@তারিক,
আল-কুরান বিজ্ঞানের বই নয়। আল-কুরান নিদর্শনের বই যা বিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আল্লাহ আল-কুরানে বারবার বলেছেন তোমরা মহাজগতের সৃষ্টির ও গঠনের রহস্য জানার চেষ্টা কর। যদি জানতে পার তবে দেখবে তা আল-কুরানের সাথে মিলবে । তাই আল-কুরানের নিদর্শনকে আমরা সব সময় বিজ্ঞান দিয়ে যাচাই করি। বাকি থাকছে ইহুদী নাসারাদের বিজ্ঞান। বিজ্ঞান কারো বাপের সম্পত্তি না। আজকের বিজ্ঞানের পিছনে হিন্দু ও মুসলিম বিজ্ঞানীদের যথেষ্ট অবদান আছে। তবে এখন ক্ষমতায় যায়নিস্ত, তাই বিজ্ঞানে অগ্রবর্তী তারা।
@ওয়ালিদ জাহান,
সঠিক। ইহা হইল ৰ্ধম-ঙ্গান এর বই ।
অবশ্যই।
মুসলিম বিশ্বের একমাত্র নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী আব্দুস সালামও লেমিত্রির মতোই বিগ ব্যাং তত্ত্বকে কোরআনের আয়াতের সাথে মিশাতে বারণ করতেন। তিনি বলতেন,
জাকির নায়েক টাইপের মানুষের বিঙ্গানের বিভিন্ন বিষয়ে মিথ্যাচার সৰ্ম্পকে জানতে নীচের দুইটি লিখা পড়ুন :
১. Islam and the “Big Bang”: A Refutation by TH Huxley .
২. জাকির নায়েকের মিথ্যাচার: প্রসঙ্গ ‘বিবর্তন ।
@তারিক,
ভাই আপনি জাকির নায়েক টাইপের মানুষের বিঙ্গানের বিভিন্ন বিষয়ে মিথ্যাচার সৰ্ম্পকে জানতে নীচের দুইটি লিখা দিয়েছেন যার মধ্যে ১ম তা যাকিরের বিষয়ে না হারুন ইয়াহিয়া বিষয়ে। যাই হোক আমি দুটোরই উত্তর দিব ইনশাল্লাহ। আমি সচলায়তনে আমার মন্তব্যে পোস্ট করতে চায়লুম কিন্তু হচ্ছে না। যাই হোক আপনার ২ নাম্বার প্রস্নের উত্তরে আমি যে মন্তব্য করতে চেয়েছিলাম তা নিচে দিলামঃ
আপনের লেখাটা পরে খুব মজা পেলাম। আপনি যাকির নায়েকের বিবর্তনবাদের ভুল ধরেছেন কিন্তু নিজে কতো ভুল করছেন সেটা দেখেন নাই। নাস্তিকরা সবসময় দাবী করে তারা জেনে বুঝে তারপর মন্তব্য করে। আসলে তা কতটা ঠিক তা আপনার লেখায় আর আপনার লেখা পরে করা মন্তব্যে পরিস্কার। আপনি যাকির নায়েকের এমন ভুল ধরছেন যা সে করে নাই আর তা পরেই সবাই খুব মজা পেলাম, খুব ভাল লেখা এইসব মন্তব্য করছে কিন্তু নিজেরা যাচাই করেও দেখে নাই যে আপ্নে যা বলেছেন তা কতটুকু ঠিক। কেউ কেউ লিখছে যাকিরের কাছে এই বিষয়ে চিঠি লেখা উচিত। ভাই যাকির লাগবে না আমিই আপনের ধরা ভুলের উত্তর দিচ্ছি।
>>CHARLES DARWIN WROTE A LETTER TO HIS FRIEND THOMAS THOMTAN, IN 1861 SAYING ‘I DO NOT BELIEVE IN ‘NATURAL SELECTION’- THE WORD THAT YOU USE – I DON’T BELIEVE IN ‘THEORY OF EVOLUTION’ BECAUSE I HAVEN’T GOT ANY PROOF. I ONLY BELIEVE IN IT BECAUSE IT HELPS ME IN CLASSIFICATION OF EMBRYOLOGY, IN MORPHOLOGY, IN RUDIMENTARY ORGANS’.
THOMAS THOMTAN? এই নামে গুগল সার্চ করে কাউকে পাওয়া গেল না।>>
আপনার প্রথম ভণ্ডামি হল আপনি ইন্টারনেট এ তার বক্তৃতার ভুল অনুবাদকারীদের দেয়া নাম বলেছেন THOMAS THOMTAN। আপনি বা যারা আপনার মন্তব্য বাহবাহ দিয়েছে তারা যাচাই করলে শুনতেন যাকির বলেছেন Thomas Thornton । এই চিঠির বিষয়ে আপনি বেশ কয়েকটি ভুল বের করছেন যে THOMAS THOMTAN যেমন নামে কেউ নেই, ডারউইন এই কথা বলতে পারে না ইত্যাদি। পাব। যাই হোক অনুগ্রহ করিয়া নিম্নক্ত লিঙ্কে আপনি বা যারা এই কথা বলে ও যাকির কার নাম বলছে যে নাই, এমন চিঠির কথা বলছে যা লেখা হই নাই তার উত্তরঃ
http://www.jstor.org/discover/10.2307/224920?uid=3737584&uid=372774501&uid=2134&uid=2&uid=70&uid=3&uid=372774491&uid=60&sid=21102439626111
>> যাই হোক এরপর আপনি যাকির নায়েকের দেয়া বিবর্তনের ৪ ধাপের বেপারে বলেছেন যাকির বিবর্তন কিছুই জানে না, কমপক্ষে ১৪ ধাপ। হোমোনাইট বা হোমোনাইড বলে কিছু নেই। DOSNOPYTICHEST নামে কোন হোমিনিড নেই। ice age Australopithecus ধ্বংস হই নাই, গেছে। হোমো স্যাপিয়েন্স তো আমরা, আর আমরা তো এখনও বহাল তবিয়তে বেচে আছি। নিয়ানডার্থালদের সাথে আধুনিক মানুষের কোন সম্পর্কই ।ক্রো-ম্যাগনন আলাদা কিছু না।
– প্রথমত আপনার জ্ঞান নাই দেখে আপনি আরেকজনকে ভুল বলবেন তা ঠিক না। যাকিরকে যখন প্রশ্ন কওরা হয়, মনে রাখতে হবে যে এটা থিসিস পেপার না। এখানে বিবর্তনবাদের বিস্তারিত বলতে গেলে ২-২.৫ ঘণ্টার বক্তৃতা দেয়া লাগবে। তাই সারমর্ম বলতে গেলে উনি যা বলেছেন তা ভণ্ডামি না বিবর্তনবাদের ধাপগুলর অল্প কথায় বর্ণনা। সারসংক্ষেপে ৪ ধাপই মানুষের বিবর্তন। ১৪ ধাপ হল বিস্তর বাখ্যা। নিম্নে আমি লিঙ্ক দিচ্ছি যেখানে প্রথমে ৪ ধাপের উল্লেখ করা যা যাকিরের বর্ণনা মতই ও পরবর্তীতে বিস্তারিতঃ
http://www.answers.com/topic/human-evolution পরুন এবং দেখুন এখানে Australopithecus, Homo erectus-homo sapiens, Neanderthal man, Cro-Magnon man।
– এরপর আসি আপনার বিষয়ে শোনা hominite বিষয়ে। একে আপনি নিজে না শুনে আরেকজনের লেখা কপি করবেন। তারপর ওইটারে ভুল বলবেন। যাকির বলেছেন হোমোনাইড। আপনার মতে hominid কে হোমোনাইড উচ্চারন করা ভুল। ভাই আপনি মনে হয় এখনও আদিম ইংরেজি যুগে আছে। যেমন- বর্তমান ইংরেজি উচ্চারনে যখন কেউ বলবে ‘কউল মে’ এটা কি আপনে অনুবাদ করবেন ’koul me’? শব্দের উচ্চারণ সময়কাল ভেদে পরিবরতন হয়। তাই আপনাকে বুঝে নিতে হবে বক্তা বলতে চেয়েছেন call me not koul me. যাকির নায়েক Hominid বলেছেন হোমোনাইড বলেছেন এটা আপনের ভিন্ন উচ্চারনের মানুষের মিশেন নাই দেখে বুঝার কথা না।
– আপনি যে নিজে যাচাই না করে আরেকজনের ভুল বাংলায় অনুবাদ করছে তার আরেক প্রমান DOSNOPYTICHEST। নিজে শুনুন যাকির নায়েক Australopithecus বলেছেন DOSNOPYTICHEST না। তারপর বলুন এতাকি ভণ্ডামি না যে Australopithecus কে DOSNOPYTICHEST বানায়া তারপর বলে যাকির নায়েক বিবর্তনবাদ জানে না কারন DOSNOPYTICHEST নামে কোন ধাপ নাই না ।
– হোমো সাপিয়েন্স- যদিও শুরুতে আপনি আপনের সাধারন বিজ্ঞানের প্রশংসা করেন কিন্তু এখন তার প্রমান দিলেন। বুঝলুম আপনে কপি করছেন কিন্তু আপনের বন্যা আপার তো জানার কথা আমরা হোমো স্যাপিয়েন্স না হোমো স্যাপিয়েন্স স্যাপিয়েন্স। হোমো স্যাপিয়েন্স Homo erectus এর জাতভাই। আর আধুনিক মানুষ হোমো স্যাপিয়েন্স স্যাপিয়েন্স।
– http://www.answers.com/topic/human-evolution
“
They big difference is brain size, build and teeth:
Homo Sapien
“The brain size is larger than erectus and smaller than most modern humans, averaging about 1200 cc, and the skull is more rounded than in erectus. The skeleton and teeth are usually less robust than erectus, but more robust than modern humans. Many still have large brow ridges and receding foreheads and chins”
Homo sapien sapien
“Modern humans have an average brain size of about 1350 cc. The forehead rises sharply, eyebrow ridges are very small or more usually absent, the chin is prominent, and the skeleton is very gracile….
Even within the last 100,000 years, the long-term trends towards smaller molars and decreased robustness can be discerned. The face, jaw and teeth of Mesolithic humans (about 10,000 years ago) are about 10% more robust than ours. Upper Paleolithic humans (about 30,000 years ago) are about 20 to 30% more robust than the modern condition in Europe and Asia.”
http://www.talkorigins.org/faqs/homs/spe…”
-Australopithecus died in ice age – আগে ইতিহাস ভালমতো জানুন তারপর মন্তব্য করুন। Australopithecus কিভাবে বিলুপ্ত হয়েছে নিম্নে দেখুনঃ
http://bcb703.blogspot.com/2006/04/3-million-years-ago-australopithecus.html
http://www.bbc.co.uk/sn/prehistoric_life/human/human_evolution/food_for_thought1.shtml
-নিয়ানডার্থালদের ও ক্রো-ম্যাগনন বিষয়ে আপনার অসীম জ্ঞানে মানুষের বিবর্তনে কোন স্থান নেই আর যাকির না জেনে আন্তাজে বলছে। মন্তব্যকারিদের বিপুল করতালি। সাবাশ শিক্ষানবিশ। ভাই যে বিষয়ে জ্ঞান নাই সে বিষয়ে আরেকজনের ভুল না ধরে খিচ মেরে বসে থাকুন নাহলে ভণ্ডামি ধরতে গিয়ে নিজেই ভণ্ড হবেন। আমি আবারও পূর্বের লিঙ্কটি দিচ্ছি যেখানে বিবর্তনবাদের সারসংক্ষেপ ৪ ধাপ দেখে জানুন যে কে বিবর্তনবাদ জানে আর কে অল্পবিদ্যায় ভয়ঙ্করী হয়ে অপবাদপ্রদাঙ্কারি।
http://www.answers.com/topic/human-evolution পরুন এবং দেখুন এখানে Australopithecus, Homo erectus-homo sapiens, Neanderthal man, Cro-Magnon man।
>> আপনি Albert Szent-Gyorgyi কে ALBERT GEORGIE বলায় মস্ত ভুল বলছেন। যাকির তো বলেইছেন উনি তার নাম বলছেন যিনি ভিটামিন সি আবিষ্কারের জন্য নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী আপনিও তার লিঙ্ক দিয়েছেন। আপনি মনে হয় শচিন রমেশ তেন্দুল্কারকে শচিন তেন্দুল্কার বললে চিনবেন না? আরও বললেন ভিটামিন সি উদ্ভাবন (invent) করা সম্ভব না। কারণ এটা প্রকৃতিতেই পাওয়া যায়। এখানে উদ্ভাবনের বদলে আবিষ্কার হবে। ভাই এটা থিসিস পেপার না সরাসরি সম্প্রচারিত লেকচার। আপনে দেখছি গ্রামারের বেপারে খুব চিন্তিত তারপর বলি এটা ভুল না কারন আগুনকে শিখা বললে ভুল হয় না। আপনি MS Word এ invent লিখে ডান মাউস ক্লিক করে synonym দেখবেন discover আছে নাকি নাই।
>> ঊনার invent discover নিয়ে ভুল বলে ফেললেন আর আপনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাগিয়ে এই ভুল বাহির করলেন আর কি শুনলেন- ‘THE CAVE APE AND MAN’ ।যাকির নায়েক বলেন নাই। ভাই ভিডিও টি দেখুন। শুধু কপি পেস্ট করলে হবে? উনি বলেছেন the crazy ape and man। হা, উনি তো and man বারতি লাগিয়েছে।। হা হা কি মজা। ভুল করছে। ইন্টারনেট এ সার্চ করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাগিয়ে এই ভুল বাহির করলেন। বেটা ২-২.৫ ঘণ্টা ধরে লেকচার দিচ্ছে দিচ্ছে আর উনার সামনে কোন রেফারেন্স ম্যাটেরইআল নেই। এখন আপনি যদি এতাকে তারপর অ ভণ্ডামি বলেন তাহলে দেখেন আপনি কত বড় ভণ্ড যে crazy কে cave বানায়ছেন এত ম্যাটেরইআল নিয়ে।
>>ও হ্যাঁ, Frank O. Salisbury নামে একজনকে পাওয়া গেছে। কিন্তু ইনি তো চিত্রশিল্পী।>> আপনের ইন্টারনেট সার্চ দক্ষতায় আমি বিমুগ্ধ। যদিও আমি মোটামুটি নিশ্চিত আপনি অনুসন্ধান করেন নি শুধু কারো লেখা কপি করছেন কারন নিম্নে আমি উনার একটা বইয়ের রিভিউ লিঙ্ক দিচ্ছিঃ
http://maxwellinstitute.byu.edu/publications/review/?vol=18&num=1&id=610
আর উনির যে বইটি বিবর্তনবাদের বেপারে তা হলঃ Frank B. Salisbury, «Doubts about the Modern Synthetic Theory of Evolution», American Biology Teacher। খুজে পাবেন না আপনি আর ভণ্ড যাকির তাই না?
>>আপনি বলেছেন paremishia নামে কিছু নেই। আমি আপনার সাথে একমত। ভণ্ডামির সীমা আপনাদের নাই তার আরেক প্রমান। যাকির বললেন paramecia আর উনাকে ভুল প্রমান করার জন্য বানলেন paremishia মুসলমানদের লজ্জায় ফালায়া দিলেন। আপনার দেয়া লিঙ্কটা যদি দেখেন দেখবেন ২ নাম্বার লাইন এই paramecium কে paramecia বলা হয়েছে। কিন্তু আপনারা যাচাই না করে না পরেই লিখতে বসেন আর কেউ কেউ তার চেয়েও বড় … সাথে সাথে তালি দেয় নিজেরা যাচাই না করে আবার দাবী করে আমরা যাচাই বাছাই করে কথা বলি। এখন বলেন paramecia কে paremishia লিখে একজনকে ভণ্ড বলা কি ভণ্ডামি না?
>>এখন আসি একবারে প্রথম কথায় যেখানে যাকির ডারউইনের বিবর্তনবাদের শুরুর কিছু ইতিহাস বলেন আর আপনি তার সাথে বিবর্তনবাদের সামঞ্জস্য পাননি। আমি আগেই বলেছি এটা প্রশ্নোত্তর পর্ব। এখানে ইতিহাস বিস্তারিত বলতে গেলে অনেক সময়ের বেপার। আপনি বলেছেন পরিবেশকে কিভাবে ঠোকর দেয়া যায় এটা জাকির নায়েকের সাথে দেখা হলে শিখে নেব। আপনার বুদ্ধিমত্তা আর সাধারন ইংরেজি বুঝার ক্ষমতা কত উপরে তা বুঝলাম। BIRDS PECKING AT NICHES অর্থ পাখিরা যোগ্যস্থানে ঠোকর দিচ্ছে। যাকিরের কথার অর্থ যা আপনার বোধগম্যতার বাহিরে তা দারায়। ডারউইন অনুসন্ধান করে পেল বিভিন্ন পরিবেশগত স্থানে ঠোকরানোর জন্য পাখিদের ঠোঁট বিভিন্ন আকৃতির হয়। আপনি বলেন প্রজাতিগুলোর মধ্যে ঠোঁটের দৈর্ঘ্য ছাড়াও আরও অনেক পার্থক্য ছিল: রং, দেহের আকার, সঙ্গীর সাথে ব্যবহার, গান এবং খাদ্যাভ্যাস। যাকির বলেন নাই যে ডারউইনের অনুসন্ধান এখানেই শেষ বা পাখিদের আর কোন অমিল ছিল না। পাখির বিভিন্ন আকৃতির ঠোঁট দেখে ডারউইন তার অনুসন্ধান শুরু করে। যাকির বলেন উনি শুধু এক প্রজাতির পাখির উপর পরিক্ষা করেন আর আপনি বলেন ডারউইন এই কথা জানলে স্ট্রোক করতো । এই বেপারে আমি নিশ্চিত নই এত বড় জীববিজ্ঞানী আর এটা বুঝতেই পারে নাই যে অগুলা এক প্রজাতির। যাই হোক মুল কথা হচ্ছে যাকিরের সারমর্ম আপনার দেয়া ডারউইন ফিঞ্ছেস এর উইকি লিঙ্কের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
>>এবার সত্যিকার ভুল যাকির কি করেছিলেন? উনি দ্বীপের নাম ভুল বলেন। গ্যলিলিওর মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়নি। Arthur_Keith কে ভুল করে রুপার্টস আলবার্ট বলেছেন। ফ্রান্সিস ক্রিক এর নাম ভুল বলেছেন। হোয়াইটমিট নামে কোন বিজ্ঞানী আমি খুজে পাইনি। এখন আমি খুজে পাইনি দেখে এই বিজ্ঞানী যে নাই তা বলা অমূলদ কারন আমাদের লেখন থমাস থরন্তন, সালিসবুরি, পারামিসিয়া ইত্যাদি খুজে পায় নাই যা আমি খুজে দিলুম। আর অনেকের বই ইন্টারনেট এ পাওয়া যায় না। রুপার্টস আলবার্ট, ফ্রান্সিস ক্রিক এর নাম আর দ্বীপের নাম ভুল বলেছেন এটা ভণ্ডামি বলার আগে বুঝতে হবে এটা একটা একটা প্রশ্নোত্তর পর্ব যার আগে যাকির ২.৫ ঘণ্টা বক্তৃতা দেন। উনার সামনে কোন material ছিল না। শুধু স্মৃতিশক্তির উপর উনি অই নামগুল বলেন। আপনারা এত material নিয়ে crazy কে cave, paramecia কে paremishia, Australopithecus কে DOSNOPYTICHEST শুনতে পারেন আর উনি ফ্রান্সিস ক্রিক রে হান্সিন ক্রিক বললে দোষ। আর পন্দিতি করলেন সাধারন জ্ঞানের কিন্তু জানেন না গ্যালাপগাস দ্বীপ না দ্বীপপুঞ্জ। ডারউইন গ্যালাপগাস দ্বীপপুঞ্জ এর বিভিন্ন দ্বীপ এ অনুসন্ধান চালায়। যাকির যে দ্বীপের নাম বলতে চেয়েছিলেন তা গ্যালাপগাস না Culpepper Island যা Darwin Island নামে আখ্যায়িত। আপনে ভুল ধরতে এসে ইন্টারনেট এর সাহায্য নিয়ে এতো রিসার্চ করে দ্বীপপুঞ্জ কে দ্বীপ বলেন আর মানুষের ভুল ধরতে আসছেন। আর ফ্রান্সিস ক্রিক বিবর্তনবাদ বিষয়ে কি বলেছেন তা নিম্নে রেফারেন্সে পরুনঃ
Francis Crick, Life Itself: It’s Origin and Nature, New York, Simon & Schuster, 1981, p.88।
যাকির যাকে রুপার্টস আলবার্ট বলে ভুল বলেছেন কিন্তু তার সম্পরকে যা বলেছে তা ভুল না। Arthur_Keith নব বিবর্তনবাদের উপর বই লিখেনঃ নিম্নে উনার উইকি লিঙ্ক দিলুম যেখানে উনার মন্তব্য দ্রস্তব্যঃ
http://en.wikipedia.org/wiki/Arthur_Keith#Quotations
যাকির নায়েক উক্ত বক্তৃতায় যা বলেন তা ভুল না আপনার অজ্ঞানতা। এখন বিবর্তনবাদ ঠিক না ভুল এ বিষয়ে আমি মন্তব্য করব না। আমি সাধারন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার, জীববিজ্ঞানী নই যে আপনার মত নিজের দুই পয়সার যোগ্যতা নাই আর আরেকজনের ভুল ধরতে যাব। আপনি তো নিজের নামতাও ব্যবহার করেন নাই। নাকি ভয় পান মৌলবাদীরা আপনাকে মারবে। ভয় নাই দিন বদলাইছে। এখন দিন এমন রাসুল(সাঃ) নিয়ে কটূক্তি করে আসিফ মহিউদ্দিন জামিন পায় আর হাসিনাকে নিয়ে মন্তব্য করলে ৭ বছরের সাজা হয়। তবে আমি বিজ্ঞানীদের মতবাদ তুলে ধরব। আপনি যাকিরের ভুল ধরতে হলে উনার বই আছে বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রজুক্তি নিয়ে। ইন্টারনেট এ ভুলভাল না পরে ওটা পরুন তাহলে এভাবে অন্যকে ভণ্ড বানাতে গিয়ে নিজে ভণ্ড হবেন না।
>> -অভিজিৎ বা বিবর্তনবাদ এর পক্ষে কথা বলে তাদের একটা চরম বেপার হল তারা কখনো বিবরতনবাদের সমস্যাগুল বলে না। আমি আগেই বলেছি আমি বিবর্তনবাদ বিষয়ে মন্তব্য করব না শুধু বিজ্ঞানীদের মতবাদ তুলে ধরব।
http://www.icr.org/article/3383/
http://www.newgeology.us/presentation32.html
http://www.evolutionnews.org/2012/07/what_are_the_to_1062011.html
http://www.icr.org/article/7237/
– যাকির আগেই বলেছে উনি কেন বিবর্তনবাদ নিয়ে মন্তব্য করেন না। কারন বিবর্তনবাদ থিওরি কোন প্রমানিত সত্য না। যদিও আপনারা তা মানতে চান না। আপনি বলেছেন মহাকর্ষ শক্তির মত বিবর্তনবাদ সত্য। আপনি থেওরি ও প্রমানিত সত্যর ভিতর পার্থক্য জানেন না। গালিলিও খুব সম্ভবত বলেছিলেন পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘুরে। এটা ছিল থিওরি। এখন এটা সত্য। তেমন পৃথিবী সমান এটা আগে থিওরি ছিল পরে ভুল প্রমান হয় আমরা জানি পৃথিবী গোল। এভাবেই কখনো থেওরি সঠিক হয়। কখনো ভুল হয়। আর যেগুলো সত্য প্রমান হয় সে বিষয়ে কোন বিজ্ঞানীদের অমত থাকে না। যেমন চাদের আলো প্রতিফলিত এই বিষয়ে কোন বিজ্ঞানীদের অমত নেই। বিবর্তনবাদের বিষয়ে অনেক প্রশ্ন ও মতপার্থক্য আছে। তাই যে বিষয়ে মতপার্থক্য আছে তা কাল পরিবর্তিত হতে পারে। এই জন্য যাকির তার বিজ্ঞানিক তুলনা শুধু প্রমানিত সত্যের সাথে করেন। নিম্নের লিঙ্কে দেখুন বিজ্ঞানীদের মতে বিবর্তনবাদ fact কি নাঃ
http://www.chick.com/bc/1987/evolution.asp
-এ নিয়ে বর্তমানে জীববিজ্ঞানীদের মধ্যে কোন সংশয় নেই। >> আপনি কি ভাই মজা নিচ্ছেন। নাহলে নিম্নের লিঙ্কে গিয়ে বিজ্ঞানীদের লিস্ট দেখুনঃ
http://www.reviewevolution.com/press/pressRelease_100Scientists.php
আরও কিছু লেখা রেফারেন্সসহ পাবেন হারুন ইয়াইয়া সাইট এ। আশা করি অগুলর উত্তর একদিন আপনারা যারা সত্যি জানেন তারা দিবেন। তারা না যারা ইন্টারনেট থেকে না বুঝে না শুনে আরেকজনের ভণ্ডামি ধরতে গিয়ে নিজের ভণ্ডামির পরিচয় দেয়।
@ওয়ালিদ জাহান, আপনার উদ্দেশ্যটা এখন বুঝতে পাড়ছি আপনি আসলেই এখানে ত্যানা পেচাইতে আসছেন । বিগ ব্যাং নিয়ে অভিজিৎ ভাইয়ের এই উচুঁমানের পোস্টে আপনি আপনার হযরত জোকার নায়েক(সাঃ) গুনগান গাইতে আসছেন । এই পোস্টে ছাগলামী না করে নিজে হযরত জোকার নায়েক(সাঃ)এর দৃষ্টিতে ‘বিৰ্বতন’ নিয়ে পোস্ট দেন সেখানে আলোচনা করব। কাঠাল পাতার শুভেচ্ছা রইল ।
:thanks: :thanks: :thanks:
@তারিক,
যাকির নায়েক কে নিয়ে তেনা আমি পেচাই নাই আপনারাই উনাকে আপনাদের অসাধারন পোস্টে প্যাচাইছেন। আপনি মনে হয় ভুলে গেছেন যাকিরের বিবর্তনবাদের অপবাখ্যার লিঙ্ক আপনেই দিছেন। আপনি ইট মারবেন আর পাটকেল আশা করবেন না? আমি এই পোস্টে এত কথা লিখতাম না বরং আপনারাই নিজেরে মহাজ্ঞানী মনে করেন আর বাকি সবাইরে ছাগল মনে করেন। আমি যদি উত্তর না দিতাম তাহলে বলতেন যাকিরকে নিয়ে কথা বলতে আসছিল, ২ টা লিঙ্ক দিয়ে থামায় দিছি। যাই হোক আমি আপনাদের সাথে তর্ক বা যাকিরের ওকালতি করতে আসি নাই। তর্ক করতে আসলে বিগ ব্যাঙ্গের অনেক সমস্যা আছে অভিজিতের সাথে অগুলা নিয়ে তর্ক করতাম। লেখাটা পরার পর দেখলাম বিগ ব্যাঙের ভাল খারাপ বুঝার চেয়ে আপনারা যাকিরের আর হারুন ইয়াইয়ার সমালচনায় মত্ত। না বুঝে আন্তাজে বাহবাহ করা আর নিজেরে মহাজ্ঞানী মনে করা আপনাদের ধর্ম।
ঠিক আছে দেখি আপনি অভিজিতের চমৎকার লেখা কত ভাল বুঝছেন। পারলে বলেন উনি যতোটুক লিখছে তাতে বিজ্ঞানের কোন কোন অসঙ্গতি আছে অথবা বিগ ব্যাঙ এখন সৃষ্টির কোন কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে নাই?
আপনার প্রিয় খাবার আপনেই খায়েন আমি বানর থেকেও হই নাই আর আপনার ভাইবেরাদার না। Best of Luck..
@ওয়ালিদ জাহান (রাঃ),
বিগব্যাং সৰ্ম্পকে আমার কোন ধারনাই নাই। শফি হুজুর দেশে ফিরলে উনার কাছ থেকে বিগব্যাং সৰ্ম্পকে শিক্ষা গ্রহন করব ।
বিগ ব্যাং এর সবচেয়ে বড় অসংগতি হল এই তত্ত্ব কুরায়ানের নীন্মোক্ত আয়াতকে প্রশ্নবিদ্ধ করে :
:-Y :-Y :-Y
জী, আপনি ৯০ ফুট বাবা আদমের ৬ ফুট সন্তান । (*) (*) (*)
Narrated Abu-Huraira , The prophet Said : “Allah created adam, making him 60 cubits tall”. Bukhari vol:4, number:543 .
@তারিক,
বিগ ব্যাঙ সম্পর্কে আপনার ধারনা না থাকলেও কুরআন সম্পর্কে আপনার ধারনা আছে দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু ধারনা যেটা আছে সেটাও ভুল। আইয়ামে জাহিলিয়াতের নাম তো শুনেছেন নিশ্চয়ই। অন্ধকার যুগ বলা হত। কিছু বুঝলেন? জাহিলিয়াত অর্থ অন্ধকার বা অজ্ঞান এবং আইয়াম অর্থ যুগ। অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী একটা কথা আছে না। যারা না জেনেই কুরানের ভুল ধরে তাদের অবস্থা সেইরকম। আপনি কুরানের যে আয়াত পাঠ করেছেন সে আয়াত আরবিতে পরলে দেখবেন লেখা সিত্তাতি আইয়াম। আইয়াম শব্দটা দিন অথবা সময়কাল/যুগ দুই অর্থেই ব্যবহার হয়।
Shakir: Surely your Lord is Allah, Who created the heavens and the earth in six periods, and He is firm in power, regulating the affair, there is no intercessor except aher His permission; this is Allah, your Lord, therefore serve Him; will you not then mind?
যদি আসমান ও জমিন ছয় সময়কালে হয় তাহলে বিগ ব্যাঙ মতবাদের সাথে কোন অনঙ্গতি থাকে না।
আর আপনার বাকি মন্তব্য (যেমন যাকিরকে ছেরে এখন শফিকে ধরছেন) শুধুই বিবাদ ছরানোর জন্য তাই আমি তার কোন জবাব দিলাম না আর আপনার মত ভিত্তিহীন অপবাদপ্রদানকারির কাছ থেকে আমি বিগ ব্যাঙের বৈজ্ঞানিক অসঙ্গতি জানবেন এটা আশাও করি না।
@তারিক, ওআলিদ ভাইএর কথা্র সমালোচনা করলে করুন। তাকে ব্যাঙ্গ করে সম্বোধন করছেন কেন? নাকি তার কথা আপনার মতবাদের বিরুদ্ধে গেছে বলে গোদে বিষফোঁড়া হয়েছে?
@ওয়ালিদ জাহান,
তার মানে আপনি কি বলতে চাইলেন যে জাকির মিয়া কোরানের মধ্য থেকে যে নানা বিজ্ঞানের সূত্র আবিস্কার করছে তা সঠিক ? যেমন – জাকির মিয়া বের করেছে কোরানে নাকি বিগ ব্যাং আছে , আছে আপেক্ষিক তত্ত্ব ও আরও কত কি। আপনি কি বলতে চাচ্ছেন , সেগুলো সঠিক ? আপনি আগে আপনার মতামত পেশ করুন , তারপর আমরা দেখাব জাকির মিয়া কত প্রকারে মিথ্যা কথা বলেছে ও কোরানের শব্দের অর্থ পর্যন্ত পাল্টিয়ে ফেলার মত নাফরমানী কাজ করেছে। বস্তুত: জাকির মিয়ার মত এত বড় ভন্ড ও মিথ্যাবাদী আমি আর দ্বিতীয়টি দেখিনি। তবে জাকির মিয়া এ ধরনের ডাহা মিথ্যা কথা বলতে সাহস পায় তার কারন তার একটা বিরাট সংখ্যক শ্রোতাই তার মিথ্যা কথাকে বিশ্বাস করার জন্য আগ বাড়িয়ে থাকে। তবে সাম্প্রতিক কালে ঐ ভন্ড লোকটির ফর্ম পড়তির দিকে , আস্তে আস্তে পাবলিক বুঝতে পেরেছে যে লোকটা আসলেও একটা ভন্ড ও মিথ্যাবাদী, সৌদি পেট্রো ডলার হাতিয়ে নেয়ার ধান্ধাতেই সে কোরানের মধ্যে নানা রকম বিজ্ঞান আবিস্কার করছে।
@বিদ্রোহী,
জাকির মিয়া বের করেছে কোরানে নাকি বিগ ব্যাং আছে , আছে আপেক্ষিক তত্ত্ব ও আরও কত কি। আপনি কি বলতে চাচ্ছেন , সেগুলো সঠিক ?>>
আপনি সঠিক ধরেছেন আমি বলতে চাচ্ছি যে, উনারা যা বলেছেন তা সঠিক। আশা করি আপনি জাকির মিয়া কত প্রকারে মিথ্যা কথা বলেছে তা উপস্থাপন করবেন।
@ওয়ালিদ জাহান,
জোকার মিয়া যদি সঠিক হয়ে থাকে , তাহলে আগে জোকারের কোরানে বিজ্ঞান আবিস্কার নিয়ে একটা পোষ্ট দেন তখন দেখাব জোকার কি পরিমান কোরানের অর্থ পাল্টিয়েছে, ভাড়ামি ও মিথ্যা কথা বলেছে তার বক্তব্যে সেটা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখাব। যেহেতু দাবী করছেন আপনি যে জোকার মিয়া কোরান থেকে বিজ্ঞান আবিস্কারের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে তাই সেটা প্রমানের দায়ীত্ব আপনার। যুক্তির এ নীতি সম্পর্কে আপনার নিশ্চয়ই সাধারন জ্ঞান আছে , তাই নয় কি ?
@বিদ্রোহী,
নিম্নে লিঙ্ক থেকে যাকির নায়েকের বই পাবেন। আর ইন্টারনেট এ উনার evolution এর ৭ মিনিটে ২৮ ভুল দেখায়েন না। কারন যে দেখায়ছে তার ভণ্ডামি আমি উপরে তারিকের মন্তব্যে তুলে ধরছি বিস্তারিত। পরেন দেইখেন।
https://www.google.com.bd/url?sa=t&rct=j&q=&esrc=s&source=web&cd=3&cad=rja&ved=0CDsQFjAC&url=http%3A%2F%2Fsunnahonline.com%2Film%2Fquran%2Fqms.pdf&ei=Q0DcUbnVOYntrAem2YDYDw&usg=AFQjCNF7TxXyhXATzaNmMBYklDxPbxllHg&sig2=XUqiF63cb0-zSz4SR-9bCQ&bvm=bv.48705608,d.bmk
@ওয়ালিদ জাহান(রা), উপরে মন্তব্য করা যাচ্ছে না তাই এখানে করছি।
আপনি আসলেই আপনার ভন্ড হযরত জোকার নায়েক(সা:) এর খাঁটি অনুসারী।
ভালই লেকচার শুনাইলেন …. এখন Ibn Kathir, Yusuf Ali আর M. Pickthall এর অনুবাদ পড়েন :
Ibn Kathir এর অনুবাদ :
10.(3. “Surely, your Lord is Allah Who created the heavens and the earth in six Days and then rose over (Istawa) the Throne, arranging the affair ﴿of all things﴾. No intercessor (can plead with Him) except after He permits. That is Allah, your Lord; so worship Him (alone). Then, will you not remember) লিংক: এখানে ।
50.(38. And indeed We created the heavens and the earth and all between them in six Days and nothing of fatigue touched Us.) লিংক: এখানে ।
Yusuf Ali এর অনুবাদ :
10:3. Verily your Lord is Allah, who created the heavens and the earth in six days, and is firmly established on the throne (of authority), regulating and governing all things. No intercessor (can plead with Him) except after His leave (hath been obtained). This is Allah your Lord; Him therefore serve ye: will ye not receive admonition? লিংক: এখানে ।
50:38. We created the heavens and the earth and all between them in Six Days, nor did any sense of weariness touch Us. লিংক: এখানে ।
M. Pickthall এর অনুবাদ :
010.003 Lo! your Lord is Allah Who created the heavens and the earth in six Days, then He established Himself upon the Throne, directing all things. There is no intercessor (with Him) save after His permission. That is Allah, your Lord, so worship Him. Oh, will ye not remind ? লিংক: এখানে ।
050.038 And verily We created the heavens and the earth, and all that is between them, in six Days, and naught of weariness touched Us. লিংক: এখানে ।
কি বুঝলেন ???
লেকচার মারার আগে, কোথায় এবং কাদের উদ্দেশ্যে লেকচার মারতে চাচ্ছেন তা জানা হযরত জোকার নায়েক(সা:) এর অনুসারীদের কৰ্তব্য !!!
@তারিক,
আপনি আমার মন্তব্যটা ঠিকমত পরেন নাই। আসলে নিজেকে বেশি বুদ্ধিমান মনে করলে যা হয়। আমি আপনাকে বিস্তারিত উদাহরণসহ লিখছি।
وَلَقَدْ خَلَقْنَا السَّمَـوَتِ وَالاٌّرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِى سِتَّةِ أَيَّامٍ وَمَا مَسَّنَا مِن لُّغُوبٍ
سِتَّةِ أَيَّامٍ (সিত্তাতি আইয়াম)
سِتَّةِ(সিত্তাতি )=ছয়
أَيَّامٍ( আইয়াম)= দিন অথবা সময়কাল।
যে শব্দটার অর্থ আপনি দিন দেখাচ্ছেন আমি বলি নাই টার অর্থ দিন না। এই শব্দতার দিন ও সময়কাল(যুগ) দুই অর্থেই ব্যবহার হয়। আমার কথাটা যে সত্যি তা বুঝার জন্য যে কোন মুসলমানকে জিজ্ঞেস করুন তোমরা কি জান আইয়ামে জাহিলিয়াত অর্থ কি? আপনি দেখবেন তারা উত্তর দিবে অন্ধকারের যুগ। এখানে আইয়াম শব্দটা যুগ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মনে রাখবেন কুরানের অনুবাদ কখন কুরআন নয়। এটা একটা অনুবাদের চেষ্টা। আইয়ামে জাহিলিয়াতের উদাহরন দেয়ার উদ্দেশ্য যেন এটা বহুল ব্যবহৃত শব্দ যার অর্থ মোটামুটি সবায় জানে এবং আপনারা বলতে না পারেন নিজের মত অনুবাদ করা হচ্ছে। আমি ভালমতই যানি কোথায় এবং কাদের উদ্দেশ্যে লেকচার মারছি, আপনারা তারা যারা বুঝাইলেও বুঝেন না, দেখাইলেও দেখেন না। যাই হোক নীচে একটা লিঙ্ক দিচ্ছি যেখানে প্রতি শব্দের ব্যকরনসহ অর্থ আছে।
http://corpus.quran.com/wordbyword.jsp?chapter=10&verse=3#(10:3:1)।
@ওয়ালিদ জাহান,
আপনার কি মনে হয় Ibn Kathir কিংবা Yusuf Ali / M. Pickthall মত ইসলামী স্কলার(আরবী ভাষায় পারদৰ্শী) এরা এটা জানে না যে, “আইয়াম” এই শব্দটা দিন ও সময়কাল(যুগ) দুই অর্থেই ব্যবহৃত হয় ??? তারা কেন “আইয়াম” শব্দটার অৰ্থ “দিন” হিসেবে ব্যবহার করল ???
এখন আপনি যদি মনে করেন Ibn Kathir কিংবা Yusuf Ali / M. Pickthall মত ইসলামী স্কলাররা গৰ্দভ , তাহলে আর কি বলার থাকে ?
আর আপনি যে Muhammad Habib Shakir অনুবাদ পাঠ করেছেন , অনেক ইসলামী স্কলার তার অনুবাদের Criticise করছেন । লিংক : এখানে ।
ভাল থাকেন ।
@তারিক,
আপনাকে আমি শুধু shakir এর অনুবাদ না উক্ত আয়াতের শব্দ বাই শব্দ অর্থসহ ব্যকরঙ্গত ব্যখ্যার লিঙ্ক দিছি। আমি বলি নাই যে Ibn Kathir কিংবা Yusuf Ali / M. Pickthall মত ইসলামী স্কলাররা ভুল কারন এরা ভুল হইত যদি আইয়াম শব্দের অর্থ দিন না হইত বা আমি যদি বলতাম আইয়াম অর্থ দিন না সময়কাল।
@ওয়ালিদ জাহান, শাবাশ……।।
@সাঞ্জিদ,
Ibn Kathir কিংবা Yusuf Ali / M. Pickthall মত ইসলামী স্কলাররা কেন “আইয়াম” শব্দটার অৰ্থ “দিন” হিসেবে ব্যবহার করল ???
আর এখন কেন হযরত জোকার নায়েক(সাঃ)এর অনুসারীদের এখানে “আইয়াম” শব্দটা যুগ হিসেবে ব্যবহৃত হবে বলে গলা ফাটাচ্ছে ???
ওয়ালিদ জাহানের সাথে আমি কেন তৰ্ক করেছি, সেটা বুঝার জন্য পদার্থবিজ্ঞানী আব্দুস সালামের উক্তিটি ঠান্ডা মাথায় পড়ুন :
কুরআনে বিগ ব্যাং এর ইঙ্গিত দেয়া আছে, এই দাবী প্রসঙ্গে –
কুরআনের যে আয়াতটি এখানে ব্যবহার করা হয়, সেটা হচ্ছে ২১:৩০ (http://islamawakened.com/quran/21/30/w4wbv.html)
আয়াতটি যা বলে তা হলো পৃথিবী এবং সাত আসমান একসময় সম্মীলিত অবস্থায় ছিল। আল্লাহ্ এই অবস্থা থেকে পৃথিবী এবং আসমানকে আলাদা করেন। আপনারা বলছেন এই বর্ণনা বিগ ব্যাং থিওরির সাথে মিলে যায়। আসলেই কি মিলে?
বিগ ব্যাং থিওরি যা বলে তা হলো মহাবিশ্ব একসময় সংকুচিত অবস্থায় ছিল। সেই অবস্থা থেকে একটা প্রসারণ সংঘটিত হয় (that’s the bang, figuratively speaking), এই প্রসারণের প্রথম দিকে মহাবিশ্ব যথেষ্ট উত্তপ্ত ছিল, তারপর তা ঠান্ডা হওয়া শুরু করে। তখন ধীরে ধীরে সাবএটমিক পার্টিকল, এটম প্রভৃতি তৈরি হতে থাকে, এরা পরবর্তীতে তারা, গ্যালাক্সি প্রভৃতি তৈরি করে, তারাসমূহ থেকে উৎক্ষেপিত বস্তুসমূহ থেকে পৃথিবীর মতো গ্রহগুলো তৈরি হয়। কাজেই মহাবিশ্ব সংকুচিত অবস্থা থেকে প্রসারিত হয়ে তারা, গ্যালাক্সি, গ্রহ প্রভৃতি তৈরির একটা অতি অতি অতি অতি ক্ষুদ্র অংশ হচ্ছে পৃথিবীর জন্ম। এরসাথে সাত আসমান ও পৃথিবীর একিভূত অবস্থা থেকে এগুলোকে আলাদা করার তো কোনো মিলই নেই।
এবং আপনি যদি এই আয়াতগুলোর দিকে তাকান -http://corpus.quran.com/wordbyword.jsp?chapter=41&verse=10
http://corpus.quran.com/wordbyword.jsp?chapter=41&verse=11
বিগ ব্যাং এর সাথে এই বর্ণনা কোনোভাবেই মেলানো সম্ভব না। এখানে পাহাড়সমেত পৃথিবীর সৃষ্টি আগে হয়েছে সেটা দাবী করা হচ্ছে, তারপর গ্যাসীয় অবস্থায় থাকা আসমানকে সাত আসমান করা হয়েছে। উল্লেখ কুরআন মতে এই সাত আসমানের প্রথম আসমানে তারকারাজি অবস্থিত। তার মানে, তারকারাজির সৃষ্টি হয়েছে পাহাড়সমেত পৃথিবী সৃষ্টির পর। । I am sorry but how do you even begin to compare this with big bang?
প্রিয় বিষয়, প্রিয় লেখক। অসাধারণ লাগল। দ্বিতীয় পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
প্রশ্ন আছে,
নিউক্লিয়াস কেন প্রোটন ও নিউট্রন দিয়েই গঠিত হল, অন্য কিছু দিয়ে নয় কেন? ইলেক্ট্রন তখন কি করছিল, পরে এসে কেনই বা নিউক্লিয়াসের চারদিকে ঘোরা শুরু করল?
ধন্যবাদ। (F)
@আসাদ,
সুন্দর প্রশ্ন। আপনার প্রশ্ন গুলো খুবই মৌলিক প্রশ্ন – যেগুলোর উত্তর পেতে বিজ্ঞানীদের যথেষ্ট সাধনা করতে হয়েছে।
আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে হলে আপনাকে পার্টিকেল ফিজিক্সের যে কোন বই দেখতে হবে। আর জানতে হবে বিগ ব্যাং ঘটার পরমুহূর্তগুলোতে ঠিক কি ঘটেছিল। আমি খুব সহজ একটা বই সাজেস্ট করব ফ্র্যাঙ্ক ক্লজের ‘Particle Physics: A Very Short Introduction’ বইটি। আর বিগ ব্যাং এর পরের ৩ মিনিটে কি হয়েছিল এটা জানতে আপনি দেখতে পারেন স্টিভেন ওয়েইনবার্গের ক্লাসিক বইটি – The First Three Minutes।
এই ক্ষুদ্র পরিসরে আমার পক্ষে সব কিছু ব্যাখ্যা করা সম্ভব হয়তো হবে না। তবুও কিছুটা চেষ্টা করব।
বিগ ব্যাং কে একটা বিশাল নিউক্লিয় চুল্লির বিস্ফোরণের মত মনে করুন। সেই বিস্ফোরণ থেকে এসেছিল নিউক্লিয়ার পদার্থ, কোয়ার্ক, প্রভৃতি কণা,সেই সাথে ইলেকট্রন। বিস্ফোরণের পর থেকেই মহাবিশ্ব ক্রমশ শীতল হতে থাকে। ফলে কোয়ার্কগুলো জোড়া লেগে লেগে প্রোটন তৈরি করে। এধরণের কোন বিক্রিয়া হয়তো চলেছিল তখন –
e (ইলেকট্রন) + p (প্রোটন) ⇄ n (নিউট্রন) + ν (নিউট্রিনো)
অর্থাৎ ইলেকট্রন আর প্রোটন থেকে আমরা অনবরত নিউট্রন আর নিউট্রিনো পাচ্ছিলাম। কিন্তু মহাবিশ্ব যত শীতল হচ্ছিল, নিউট্রনের উৎপাদন তত কমে যাচ্ছিল। এক মাইক্রোসেকেন্ড পরেই নিউট্রিনোর উৎপাদন নাকি ‘শীতনিদ্রা’ লাভ করেছিল, এবং প্রতি দশ মিনিটে নাকি নিউট্রনের পরিমাণ কমে অর্ধেকে চলে আসছিল। তবে সকল নিউট্রন মারা যাবার আগেই প্রোটনের সাথে মিলে নিউক্লিয়াস তৈরি করতে পেরেছিল। আসলে নিউক্লিয়াস তৈরি হয়েছিল ডিউটেরনের। ডিউটেরন হচ্ছে হাইড্রোজেনের মাসতুত ভাই। যাদের আমরা বলি আইসোটোপ। টেকনিকালি, ডিঊটেরনের ভর আসলে পৃথক পৃথক ভাবে নিউট্রন আর প্রোটনের ওজন করলে যা পাব, তারচেয়ে খানিকটা হালকা।
আসলে এ সময়টাতে নিউক্লিয়ার ফিউশন প্রক্রিয়া চলছিল, যেটা এখনো আমাদের সূর্যের অভ্যন্তরে ঘটে চলেছে। ডিউটেরন আর প্রোটন মিলে তৈরি করেছিল হিলিয়াম নিউক্লিয়াস। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন প্রোটন এবং নিউট্রনকে নিউক্লিয়াসের মধ্যে একসাথে ধরে রাখার পেছনে আছে স্ট্রং নিউক্লিয়ার ফোর্স। আর নিউক্লিয়াস যেহেতু ধনাত্মক চার্জ বিশিষ্ট, সেহেতু ঋণাত্মক চার্জবিশিষ্ট ইলেকট্রনকে আকৃষ্ট করে তার চারিদিকে ঘুরতে। অবশ্য ইলেকট্রনের ঘোরা মানে ঠিক সূর্যের চারিদিকে আমাদের পৃথিবীর ঘরা নয়, যদিও আমাদের ছেলেবেলাকার বইয়ে ঠিক ওরকমের ছবিই আমরা পেয়েছি। ওটা ছিল পুরনো রাদারফোর্ডের মডেল, যেটা আসলে সেভাবে এখন আর সঠিক নয়। বাস্তবে, কোয়ান্টাম বলবিদ্যার সম্ভাবনার ক্লাউড, ইলেকট্রনের স্পেসিফিক শক্তিস্তর (কোয়ান্টা) সহ অনেক ব্যাপার স্যাপার আছে।
যথারীতি চমৎকার লেখা ! তবে দ্রুত দ্বিতীয় পর্ব চাই।
@রণদীপম বসু,
অবশ্যই। আপনার লেখা অনেকদিন ধরে দেখিনা, রণদীপম দা।
এটা পড়ার সময় একটি সুখের খবর জানলাম- আসিফ মহিউদ্দিনের জামিনে মুক্তি পেয়েছেন ।
অনেক দিন পর আপনার বিজ্ঞান বিষয়ক এত বড় একটি লেখা পড়তে পেরে ভাল লাগল। রিভিশন দিলাম আবার নতুন কিছু ঘটনা বিশেষ করে গ্যামোর পলায়নের উপাখ্যানটায় আড্ডা দেয়ার মতো টপিকো জানলাম। একই সাথে আপনার জন্য ‘শূন্য থেকে মহাবিশ্ব’ বিষয়ক বইটি লেখার জন্য শুভকামনা রইল।
আমি এর আগে ‘ লাইসেঙ্কোইজম’ ও ‘মার্ক্সবাদ কি বিজ্ঞান?’ শিরোনামে আপনার দুইটি লেখা পড়েছি। সেগুলোতে আপনি মার্ক্সবাদী বিশেষ করে সোভিয়েত ইন্টেলিজেন্টসিয়ার রাজনৈতিক প্রচারে অপবিজ্ঞানকে প্রমোট করার চমৎকার বৃত্তান্ত দিয়েছেন। আফসোস! ছাগুরা যেমন ‘৭১রে তাদের পূর্বসুরিদের কৃত দুষ্কর্মকে এখন পর্যন্ত ডিফেন্ড করে, তেমন অনেক বামরাও ঐসব কেলেঙ্কারিকে নিঃদ্বিধায় ডিফেন্ড করে!
কোন বিশেষ ডক্ট্রিন বা মতাদর্শ কখনো বিজ্ঞানের গাইড হতে পারে না। বিজ্ঞানের চেষ্টা হচ্ছে সবচেয়ে নিরপেক্ষ অর্থাৎ ভৌতগত ভাবে প্রকৃতিকে বুঝার চেষ্টা করা। আর প্রকৃতির নকশা খোজার জন্য বিজ্ঞানের আছে নিজস্ব মেথড (scientific method) । এমন কি ঐ বিশেষ মেথডটিকেও বিজ্ঞানে স্বতঃসিদ্ধ মনে করা হয় না, বরং পর্যবেক্ষন-অনুমান-পরীক্ষণের নিরিখে তা প্রতিনিয়ত প্রমাণিত হচ্ছে। উদাহরনসরূপ আমরা যে এখনো নুতন নুতন আবিষ্কার করতে সক্ষম হচ্ছি এই মেথড বা পদ্ধতি ব্যবহার করে, তা মাধ্যমে পরোক্ষভাবে মেথডটিও প্রমাণিত হচ্ছে। কিন্তু ডগমায় বিশ্বাসী সোভিয়েত বিজ্ঞানীরা scientific method এর চেয়ে দ্বান্দিক বস্তুবাদকে বেশি গুরুত্ব দিত মনে হয়। মার্ক্সবাদের নির্ণয়বাদী দর্শনের (deterministic) অনুসারীরা অনিশ্চয়তাসুত্র, প্রোবাবিলিটি ফাংশন ইত্যাদির কোপেনহেহেন ব্যাখার অনির্ণয়বাদি চরিত্রকে অস্মীকার করেছিল। আইনস্টাইনও কোপেনহেহেন ব্যাখার বিরোধী ছিলেন, কিন্তু তার বিরোধিতা ছিল বিজ্ঞানের ভেতরে থেকে। কিন্তু সোভিয়েতদের কাছে সেটা ছিল তাদের সরকারী দর্শনের বিরোধী দর্শনকে পরাস্ত করতে রাষ্ট্রশক্তির ব্যবহার করা। স্তালিন জমানায় কোয়ান্টাম মেকানিকস একপ্রকার নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু পারমাণবিক বোম বানানোর স্বার্থে শেষ দিকে এই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে বাধ্য হয়েছিল তারা।
সোভিয়েত ইউনিয়নে কোয়ান্টাম মেকানিকসকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল এটা বিভিন্ন জায়গায় পড়েছি কিন্তু পুরো গল্পটা এখনো জানা হয় নি। আশা করছি আপনি কোন দিন এটা নিয়ে লিখবেন তখন জানবো ।
আমি আপনার লেখার ও মুক্তমনার অনেক পুরোনো পাঠক কিন্তু কমেন্ট খুব একটা করি নি। তাই কমেন্টে প্রাঞ্জলতার ঘাটতি থাকতে পারে বলে ক্ষমাপ্রার্থী।
সিরিজের পরের লেখাটির অপেক্ষায় আছি।
@রাফাত,
আপনার মন্তব্য আমার লেখার চেয়ে অনেক প্রাঞ্জল। এবার থেকে নিয়মিত মন্তব্য পেলে খুশি হব। সেই সাথে লেখাও।
দুর্দান্ত! পড়াতে এতই নিমগ্ন ছিলাম যে মাইকের ‘শুক্রবারিয় আওয়াজ’ বিরক্ত করতে পারে নাই! পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায়…
@সুদীপ্ত শেল্ডন,
হেঃ হেঃ … তাইলে আপনার পারলৌকিক পুরস্কারের বারটা বেজে গেল আমার লেখার ধাক্কায় 🙂
আর বাই দয় ওয়ে, লগ ইন করে মন্তব্য করতে পারেন। ইমেল যাওয়ার কথা।
@অভিজিৎ,
দোজখে আপনি পুড়বেন…আমার কি! (H) এখানে একটু দুর্ঘটনার কথা বলে নেই-আমি অনেক পূর্বে আরেকটা ইমেইলের ঠিকানা থেকে মুক্তমনায় কমেন্ট শুরু করি কিন্তু দুর্ঘটনাবশত কিছুদিন পর আমি ঐ ইমেইলের পাসওয়ার্ড ভুলে যাই। যাই হোক দেড় বছরের চালচুলোহীন জীবনের অবসান হল। ধন্যবাদ। তবে পরবর্তী লেখাটা তাড়াতাড়ি না দিলে খবর আছে। :guli:
অসাধারণ! কি দারুন প্রাঞ্জল বর্ণনা! অনেক ধন্যবাদ অভিজিৎ
@অন্ময়,
ধন্যবাদ, আপনাকেও।
আপনার ধারনাটা মনেহয় ভুল (U) । আমি তো এক নিঃশ্বাসে পুরোটা পড়ছি ।
এতদিন পর লেখা দিলেন :guli: সেই কবে “একজন অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম এবং মহাবিশ্বের ভবিষ্যৎ (২য় পর্ব)” লেখাটা দিয়ে শেষ করেছিলেন ।
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম
এই পেজের পোস্টগুলোও অনেক সুন্দর (F)
অনেক কষ্ট করে আমাদের জন্য লিখছেন তাই অনেক ধইন্না (F)
@মহন,
আপনার সুন্দর কমেন্টের জন্যও একথালা ধইন্যা।
:thanks:
অসাধারণ হয়েছে দাদা এত কষ্ট করে লাভ নেই বিজ্ঞান প্রসব বেদনা সহ্য করবে আর ওরা বাচ্চার মালিক বলে বুক ফুলিয়ে বেড়াবে। পৃথিবীতে বিজ্ঞানই সবচেয়ে বেশি অনাথ।
@মেহেদি হাসান,
(Y)
@মেহেদি হাসান,
আপনার কথায় হয়তো সত্যতা আছে। কিন্তু কাউকে না কাউকে তো চেষ্টা করে যেতেই হবে। গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিয়ে চুপ করে রইলে পৃথিবীটা এখনো হয়তো সমতল থাকতো, কিংব সূর্যটা ধর্মগ্রন্থের কথা মত এখনো ঘুরতো পৃথিবীর চারিদিকেই।
ঐ যে ছটবেলায় কবিতা পড়েছিলেন না – ‘আমরা যদি না জাগি মা, কেমনে সকাল হবে?’ 🙂