কিছু দিন আগে মুক্তমনায় বিপ্লব পাল একটি লেখায় উল্লেখ করেছিলেন ‘নাস্তিকতা মানুষের মনের স্বাভাবিক অবস্থা। আস্তিকতা হচ্ছে মনের বিকৃত অবস্থা। প্রতিটা শিশু যখন জন্মায় সে আল্লা, ঈশ্বর-হিন্দু মুসলমান কিছুই জানে না। প্রতিটি শিশুই নাস্তিক।` এর প্রত্যুত্তরে একাধিক মন্তব্যে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে । এটা সত্যি যে আস্তিকতা ও ভাষা কৃত্রিমভাবে মানুষকে শেখানো হয় । কিছু অনুভূতিসূচক (ক্রোধ, কাম, ক্ষুধা, আনন্দ, বেদনা ইত্যাদিসূচক) ইণ্টুইটিভ আওয়াজ (কিছু প্রাণীর ক্ষেত্রে হাসি-কান্নায় পরিণত, কিছু প্রাণীর ক্ষেত্রে এই স্বর থেকে সঙ্গীতের জন্ম) এবং অঙ্গসঞ্চালন (কিছু প্রাণীর ক্ষেত্রে যা নৃত্যে পরিণত) হচ্ছে প্রাণীর ভাব প্রকাশের সবচেয়ে সহজাত মাধ্যম । উন্নত প্রাণী হিসেবে মানুষ উন্নত বিবর্তিত ভাষার সৃষ্টি করেছে । মানুষ বিবর্তিত ধর্মীয় সমাজব্যবস্থারও জন্ম দিয়েছে । তবে মানুষের সব সভ্যতায় ধর্মের সৃষ্টি হয়নি, যেমন উত্তর এশিয়া, উত্তর-পূর্ব এশিয়া ও পূর্ব এশিয়ার উত্তরাঞ্চল । ধর্ম ও ঈশ্বর যদি স্বাভাবিক হতো তবে মানুষকে ধর্মপথে চালিত করবার জন্য এতো কাঠ-খড় পোড়াতে হতো না, ধর্মে এতো কৃত্রিম আচার-অনুষ্ঠান ও স্বভাববিরুদ্ধ আচরণ ও তথাকথিত রক্ষণশীলতা থাকতো না, নারীত্বের অবমাননা ও সমাজপতিদের রক্তচক্ষু থাকত না । বরং ধর্ম হতো অনেকবেশি সহজাত (তাই আদিবাসীদের ধর্মগুলো অসম্পূর্ণ হলেও সহজাত প্রকৃতিঘেঁষা)। কিন্তু প্রচলিত বড় ধর্মগুলোর সহজাত আচরণের বিরোধিতা ও রক্তচক্ষু দেখেই বোঝা যায় এগুলো কোনটাই প্রকৃতির সহজাত বৈশিষ্টসম্পন্ন নয় (বিজ্ঞানের সাথে ধর্মের বিরোধের কথা বাদই দিলাম)। তাই নাস্তিকতা মানুষের মনের স্বাভাবিক অবস্থা একথা আমরা স্বীকার করে নিতে পারি । কিন্তু বাংলা ‘নাস্তিকতা` শব্দটির ব্যবহার ব্যপকার্থে । ভারতীয় উপমহাদেশে প্রচলিত সমাজগুলো মতে সাধারণত: যে ব্যক্তি কোন ধর্মে বিশ্বাসী নন তিনিই ‘নাস্তিক` বলে বিবেচিত হন । কিন্তু ব্যক্তিভেদে এই বিশ্বাস-অবিশ্বাস বিষয়টি অনেক জটিল । কেউ আছেন যাঁরা প্রচলিত ধর্মবিশ্বাসে এবং প্রচলিত ধর্মগ্রন্থবর্ণিত ঈশ্বরে বিশ্বাসী নন, কিন্তু আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বাসী, অর্থাত্ বস্তুবাদী নন, এঁদেরকে ধর্মবিহীন আধ্যাত্মবাদী বলা হয় (Spiritual But Not Religious – SBNR) । যাঁরা মনে করেন কোন ঐশ্বরিক শক্তি আছে কি নেই সে বিষয়ে কখনোই জানা সম্ভব নয় তাঁদের বলা হয় গোঁড়া অজ্ঞেয়বাদী (Strict Agnostic)। যাঁরা মনে করেন কোন ঐশ্বরিক শক্তি আছে কি নেই সে বিষয়ে কখনোই জানা সম্ভব নয় কিন্তু ধর্মপালন করেন এঁদেরকে আস্তিক অজ্ঞেয়বাদী (Agnostic Theist) বলা হয় । ঈশ্বর থাকুক কিংবা না থাকুক এতে কিছুই এসে যায় না এঁদের বলা হয় অ্যাপাথিস্ট (Apatheist) । যাঁরা কোন অলৌকিকতা ও আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বাসী নন এবং যে কোন প্রশ্নে বিজ্ঞানপন্থী ও যুক্তিবাদী তাঁরা হচ্ছেন বস্তুবাদী (Materialist)। মূলত বস্তুবাদী চিন্তা-ভাবনাই আধুনিক বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদের উত্স্য । বস্তুবাদীরাই বিজ্ঞান ও যুক্তির সবচেয়ে বড় সমর্থক । সেক্ষেত্রে মানুষের মনের সবচেয়ে স্বাভাবিক অবস্থা কি ? বস্তুবাদী ? আপাত: দৃষ্টিতে বিশ্ব জগতের সাথে সম্পর্ক যুক্ত করলে বস্তুবাদী অবস্থাকেই সবচেয়ে স্বাভাবিক অবস্থা হিসেবে মনে হয় । কিন্তু বস্তুবাদকে আধ্যাত্মবাদে পরিণত করা সহজ নয় অথবা অসম্ভব । সম্ভবত: ২০০৫ সালের দিকে ইংল্যাণ্ডের এক বিজ্ঞানী দেখিয়েছিলেন যে মানুষের মনের ক্রম:বিবর্তিত হওয়ার ক্ষমতা আস্তিকতাবাদের জন্ম দিয়েছে । সেক্ষেত্রে আমার মনে একটি প্রশ্ন জাগে যে মানুষের মনের স্বাভাবিক অবস্থা বস্তুবাদী নয়, বরং অজ্ঞেয়বাদী, যদিও এটি যুক্তির মাধ্যমে সংশোধনযোগ্য ধারণা ।
পশ্চিম ইউরোপে ধর্মে অবিশ্বাসীদের বিপুল জনসংখ্যাধিক্যের অনেকগুলো কারণের অন্যতম হচ্ছে পরিবারপ্রথার গুরুত্ব কমে যাওয়া । ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ ধর্মবিহীনতার একটি বড় উত্স্য । মানুষের ধর্মবিশ্বাসের সর্ববৃহত্ উত্স্য তার পরিবার ও সমাজ । প্রাক্তন কমিউনিস্ট শাসিত পূর্ব ইউরোপের চেয়ে পশ্চিম ইউরোপে মেটিরিয়ালিস্ট এবং অ্যাগ্নস্টিকদের শতকরা হার বেশি । উল্লেখ্য কমিউনিস্ট দেশগুলোতে সরকারী প্রচার মাধ্যম ও শিক্ষা ক্ষেত্রে নাস্তিকতা প্রচার করা হয়, যার কারণে আর্থ-সামাজিক ভাবে এবং বাক ও ব্যক্তিস্বাধিনতার দিক দিয়ে পশ্চিম ইউরোপের সমতুল্য না হওয়া সত্ত্বেও প্রাক্তন কমিউনিস্ট দেশগুলোতে একটি বড় ধর্মবিহীন জনগোষ্ঠীর উদ্ভব হয়েছে । তবে পূর্ব এশিয়াতে আগে থেকেই একটি বড় ধর্মবিহীন জনগোষ্ঠী ছিলো । ইউরোব্যারোমিটার পোল ২০১০, ইউরোব্যারোমিটার পোল ২০০৫, উইকিপিডিয়া, সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক, গ্যালাপ পোল ২০০৯, গ্যালাপ পোল ২০০৮, পিউ রিসার্চ সেণ্টার সহ বিভিন্ন উত্স্য থেকে পাওয়া তথ্যে (পরষ্পর বিরোধিতা সত্ত্বেও) ধারণা করা যায় পৃথিবীতে শিক্ষার হার ও মাথাপিছু গড় ক্রয়ক্ষমতা যে দেশগুলোতে বেশি এবং Human Development Index (HDI) উঁচু পর্যায়ে সেসব দেশে ধর্মের প্রভাব সবচেয়ে কম । এছাড়া ধর্মীয় প্রভাব কমার ক্ষেত্রে অন্য বড় কারণগুলো হচ্ছে অবাধ ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ, বাকস্বাধিনতা, আধুনিক শিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, তথ্য প্রযুক্তি ও মিডিয়ার প্রসার । এখানেই ভূতপূর্ব কমিউনিস্ট শাসিত পূর্ব ইউরোপের চেয়ে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য ও বাকস্বাধিনতাপন্থী উন্নত অর্থনীতি ও উচ্চ HDI অধিকারী পশ্চিম ইউরোপের পার্থক্য ।
বিশ্বের সর্বাধিক অধার্মিক ও ধর্মবিহীন মানুষের বসবাস চায়নাতে । সবচেয়ে বেশি বস্তুবাদী, আস্তিক ধর্মপরিচয়বাদী অধার্মিক, নাস্তিক ধর্মপরিচয়বাদী ও অজ্ঞেয়বাদী মানুষের সংখ্যা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে । সবচেয়ে বেশি ঈশ্বর ও আধ্যাত্মবিশ্বাসী ও ধর্মানুসারী মানুষের সংখ্যা ভারতে । মহাদেশ হিসেবে ইউরোপ অধার্মিক ও ধর্মবিহীন নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ । এশিয়াতে নিরঙ্কুশ না হলেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং পৃথিবীর অর্ধেকের বেশি অধার্মিক ও ধর্মবহীন জনগোষ্ঠীর বাস । বস্তুবাদী জনগোষ্ঠীর সর্ববৃহত্ বাস এশিয়াতে হলেও জনসংখ্যার শতকরা অনুপাতে ইউরোপে সর্বাধিক । ধার্মিক ও আধ্যাত্মবিশ্বাসী জনগোষ্ঠী জনসংখ্যার শতকরা অনুপাতে আফ্রিকায় সর্বাধিক কিন্তু সংখ্যার বিচারে এশিয়ায় সর্বাধিক ।
অনেক রাষ্ট্রে অবিশ্বাসীদের কে আলাদা ভাবে গণনা করা হয় না, বিশেষত: মুসলিমপ্রধান রাষ্ট্রে কিংবা ভারতের মতো তথাকথিত ‘ধর্মনিরপেক্ষ` রাষ্ট্রে । আবার অনেক রাষ্ট্রে ছোট্ট শিশুদেরকেও পরিবারের সাথে নির্দিষ্ট ধর্মীয় পরিচয়ের ভেতর গণনা করা হচ্ছে এবং ১৮ বছর বয়সের আগ পর্যন্ত আত্মস্বীকৃত অবিশ্বাসীদেরও নাস্তিক হিসেবে স্বীকৃতি মিলছে না । তাই বলা যায় অনেক রাষ্ট্রে ধর্মীয় জনসংখ্যা অতিরঞ্জিতভাবে দেখানো হচ্ছে এবং পৃথিবীর মোট জনসংখ্যায় নাস্তিক জনসংখ্যা যা দেখানো হচ্ছে বাস্তবে তা অনেক বেশি । এক্ষেত্রে ইউরোপীয় দেশগুলো অনেক সঠিকভাবে দেখাচ্ছে । তবে পশ্চিমের মানুষদের ভেতর এবং বিভিন্ন দেশের ইহুদী ও শিক্ষিত হিন্দুদের অনেকের মধ্যে একটি প্রবণতা আছে, অবিশ্বাসী হলেও পরিবারের ঐতিহ্যগত ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নামকে নিজের পরিচয় হিসেবে ব্যবহার করা । আজেরবাইজান, আল্বানিয়া এবং কাজাখস্তান আরও কিছু অঞ্চলের ‘মুসলিম`-দের মধ্যেও এটা দেখা যায় । অনেক মুসলিম দেশেই নাগরিকদেরকে নিজের ধর্মীয় বিশ্বাসকে বাধ্যতামূলকভাবে ঘোষণা দিতে হয় যেখানে ‘নাস্তিক` বলে কোন পরিচিতির সরকারী স্বীকৃতি নেই, ‘ইসলামী` রাষ্ট্রগুলোতে তো বটেই এমনকি ইন্দোনেশিয়ার মতো রাষ্ট্রেও এটা প্রচলিত ! ভারত ও বাংলাদেশে যদিও বাধ্যতামূলকভাবে কাউকে ধর্মীয় পরিচয় ঘোষণা দিতে হয় না, কিন্তু সরকারীভাবে কোন এথিস্ট পপুলেশন দেখানো হয় না (ট্যাবু) । ভারতে সব অমোঙ্গোলয়েড আদিবাসী ও সব ধরণের অচ্ছুতদের ‘হিন্দু` হিসেবে দেখানো হয় এবং মুসলিম জনসংখ্যা বাস্তবের চেয়ে অনেক কম দেখানো হয়, অবিশ্বাসী ও সেক্যুলার জনসংখ্যা দেখানো হয় না, মনে হয় ভারতের সব মানুষই কোন না কোন ধর্মের অনুসারী, তাও প্রধানত: ‘হিন্দু` (মনুবাদী ব্রাহ্মণ্যবাদী) !
বিশ্ব ধর্মীয় জনসংখ্যা (পিউ রিসার্চ সেণ্টার, ২০১২):
খ্রিশ্চ্যান ৩১.০৫%*
মুসলিম ২৩.২%*
ধর্মবিহীন ১৬.৩%†
হিন্দু ১৫%*
বৌদ্ধ ৭.১%*
লোকধর্মসমূহের অনুসারী ৫.৯%*
অন্যান্য ধর্ম ও কাল্ট –সমূহের অনুসারী ০.৮%*
জুডাইস্ট ০.২%*
* ধর্মানুসারী এবং ধর্মপরিচয়ে পরিচিত কিন্তু অধার্মিক কিংবা নাস্তিক – এদের মিলিত সংখ্যা ।
† বস্তুবাদী, নাস্তিক অজ্ঞেয়বাদী ও ধর্মবিহীন আধ্যাত্মবাদী – এদের মিলিত সংখ্যা ।
অধার্মিক জনসংখ্যা (অধার্মিক ধর্মবিশ্বাসী, আস্তিক অজ্ঞেয়বাদী ও ধর্মবিহীনদের মিলিত জনসংখ্যা) ৩৬% (উইকিপিডিয়া, ২০১২)
অধার্মিক জনসংখ্যা সংখ্যাগরিষ্ঠ এমন রাষ্ট্রগুলোর তালিকা নিচে দেয়া হলো । এখানে মাথাপিছু গড় ক্রয়ক্ষমতা কম এবং Human Development Index (HDI) উঁচু নয় এরকম দেশও রয়েছে । অধার্মিক বলতে বস্তুবাদী, অজ্ঞেয়বাদী, ধর্মবিহীন আধ্যাত্মবাদী, ধর্মপরিচয়বাদী অধার্মিক – এঁদের সকলকেই গণনা করা হয়েছে ।
যেসব রাষ্ট্রে অধার্মিক জনগোষ্ঠী নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ:
(১) = (২) + আস্তিক ধর্মপরিচয়বাদী অধার্মিক + নাস্তিক ধর্মপরিচয়বাদী
(২)=(৩)+(৪)+(৫)
(১) অধার্মিক জনসংখ্যা : ধার্মিকতার অভাব (Lack Of Religiosity) রয়েছে এমন জনসংখ্যা । ধর্মবিশ্বাস ও ধর্মপালন – যুগপত্ যাঁরা ধারণ ও প্রতিপালন করেন তাঁদের ‘ধার্মিক` হিসেবে ধরে বাকি আর যাঁরা রয়েছেন তাঁদের সকলকে ‘অধার্মিক` হিসেবে ধরা হয়েছে । বস্তুবাদী, আস্তিক ধর্মপরিচয়বাদী অধার্মিক, নাস্তিক ধর্মপরিচয়বাদী, ধর্মবিহীন আধ্যাত্মবাদী, অজ্ঞেয়বাদী – এঁদের সকলকেই অধার্মিক গোষ্ঠীতে ধরা হয়েছে ।
আস্তিক ধর্মপরিচয়বাদী অধার্মিক : যাঁরা ঐতিহ্যগত কারণে ধর্মীয় পরিচয়ে বিশ্বাসী কিন্তু ধর্মকে জীবনের খুব প্রয়োজনীয় বিষয় হিসেবে স্বীকৃতি দেন না ও ধর্মকর্মে কখনো গুরুত্ব দেন না ।
নাস্তিক ধর্মপরিচয়বাদী : কিছু ব্যক্তি আছেন যাঁরা ঐতিহ্যগত কারণে ধর্মীয় পরিচয়ে বিশ্বাসী কিন্তু ধর্মে বিশ্বাসী নন ।
(২) ধর্মবিহীন জনসংখ্যা (Irreligious Population) : বস্তুবাদী, অজ্ঞেয়বাদী ও ধর্মবিহীন আধ্যাত্মবাদী – এঁদের সকলকে এই গোষ্ঠীতে ধরা হয়েছে ।
(৩) ধর্মবিহীন আধ্যাত্মবাদী (SBNR – Spiritual But Not Religious): প্রচলিত ধর্মবিশ্বাসে এবং প্রচলিত ধর্মগ্রন্থবর্ণিত ঈশ্বরে বিশ্বাসী নন, কিন্তু আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বাসী, অর্থাত্ বস্তুবাদী নন ।
(৪) নাস্তিক অজ্ঞেয়বাদী (Agnostic Atheists) : যাঁরা ঈশ্বরে সন্দেহবাদী কিংবা ঈশ্বরকে কখনোই খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয় মনে করেন কিংবা ঈশ্বরে বিশ্বাস-অবিশ্বাস কোনটাই নেই – এঁদের সকলকে এই গোষ্ঠীতে ধরা হয়েছে ।
(৫) বস্তুবাদী (Materialists) : যাঁরা কোন অলৌকিকতা ও আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বাসী নন এবং যে কোন প্রশ্নে বিজ্ঞানপন্থী ও যুক্তিবাদী ।
ইউরোপীয় দেশগুলোর তথ্যসূত্র: ইউরোব্যারোমিটার পোল ২০১০ ও ২০০৫, সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক, গ্যালাপ পোল ২০০৬, ২০০৭, ২০০৮ ও ২০০৯ । ইউরোব্যারোমিটার পোল-এর জরিপ সঠিকতার সবচেয়ে নিকটবর্তী এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে একে গুরুত্ব দেয়া হয় ।
অন্যান্য দেশগুলোর তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া, সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক, গ্যালাপ পোল ২০০৬, ২০০৭, ২০০৮ ও ২০০৯ ।
ফাঁকা ঘর (Cell)-গুলোর তথ্য-উপাত্ত আমার কাছে নেই ।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ভুক্ত দেশসমূহ যেখানে অধার্মিক জনসংখ্যা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ:
** প্রাক্তন পূর্ব জার্মান ভূখণ্ডে ৫২% বস্তুবাদী (ইউরোব্যারোমিটার পোল ২০০৫) ।
(১) = (২) + আস্তিক ধর্মপরিচয়বাদী অধার্মিক + নাস্তিক ধর্মপরিচয়বাদী
(২)=(৩)+(৪)+(৫)
(১) অধার্মিক জনসংখ্যা : ধার্মিকতার অভাব (Lack Of Religiosity) রয়েছে এমন জনসংখ্যা । ধর্মবিশ্বাস ও ধর্মপালন – যুগপত্ যাঁরা ধারণ ও প্রতিপালন করেন তাঁদের ‘ধার্মিক` হিসেবে ধরে বাকি আর যাঁরা রয়েছেন তাঁদের সকলকে ‘অধার্মিক` হিসেবে ধরা হয়েছে । বস্তুবাদী, আস্তিক ধর্মপরিচয়বাদী অধার্মিক, নাস্তিক ধর্মপরিচয়বাদী, ধর্মবিহীন আধ্যাত্মবাদী, অজ্ঞেয়বাদী – এঁদের সকলকেই অধার্মিক গোষ্ঠীতে ধরা হয়েছে ।
আস্তিক ধর্মপরিচয়বাদী অধার্মিক : যাঁরা ঐতিহ্যগত কারণে ধর্মীয় পরিচয়ে বিশ্বাসী কিন্তু ধর্মকে জীবনের খুব প্রয়োজনীয় বিষয় হিসেবে স্বীকৃতি দেন না ও ধর্মকর্মে কখনো গুরুত্ব দেন না ।
নাস্তিক ধর্মপরিচয়বাদী : কিছু ব্যক্তি আছেন যাঁরা ঐতিহ্যগত কারণে ধর্মীয় পরিচয়ে বিশ্বাসী কিন্তু ধর্মে বিশ্বাসী নন ।
(২) ধর্মবিহীন জনসংখ্যা (Irreligious Population) : বস্তুবাদী, অজ্ঞেয়বাদী ও ধর্মবিহীন আধ্যাত্মবাদী – এঁদের সকলকে এই গোষ্ঠীতে ধরা হয়েছে ।
(৩) ধর্মবিহীন আধ্যাত্মবাদী (SBNR – Spiritual But Not Religious): প্রচলিত ধর্মবিশ্বাসে এবং প্রচলিত ধর্মগ্রন্থবর্ণিত ঈশ্বরে বিশ্বাসী নন, কিন্তু আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বাসী, অর্থাত্ বস্তুবাদী নন ।
(৪) নাস্তিক অজ্ঞেয়বাদী (Agnostic Atheists) : যাঁরা ঈশ্বরে সন্দেহবাদী কিংবা ঈশ্বরকে কখনোই খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয় মনে করেন কিংবা ঈশ্বরে বিশ্বাস-অবিশ্বাস কোনটাই নেই – এঁদের সকলকে এই গোষ্ঠীতে ধরা হয়েছে ।
(৫)বস্তুবাদী (Materialists) : যাঁরা কোন অলৌকিকতা ও আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বাসী নন এবং যে কোন প্রশ্নে বিজ্ঞানপন্থী ও যুক্তিবাদী ।
তথ্যসূত্র: ইউরোব্যারোমিটার পোল ২০১০ ও ২০০৫, সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক, গ্যালাপ পোল ২০০৬, ২০০৭, ২০০৮ ও ২০০৯ । ইউরোব্যারোমিটার পোল-এর জরিপ সঠিকতার সবচেয়ে নিকটবর্তী এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে একে গুরুত্ব দেয়া হয় ।
যেসব রাষ্ট্রে অধার্মিক জনগোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠ নয় কিন্তু সম্মিলিতভাবে একক কোন ধর্মের অনুসারীদের চেয়ে বড়:
(১) = (২) + আস্তিক ধর্মপরিচয়বাদী অধার্মিক + নাস্তিক ধর্মপরিচয়বাদী
(২)=(৩)+(৪)+(৫)
(১) অধার্মিক জনসংখ্যা : ধার্মিকতার অভাব (Lack Of Religiosity) রয়েছে এমন জনসংখ্যা । ধর্মবিশ্বাস ও ধর্মপালন – যুগপত্ যাঁরা ধারণ ও প্রতিপালন করেন তাঁদের ‘ধার্মিক` হিসেবে ধরে বাকি আর যাঁরা রয়েছেন তাঁদের সকলকে ‘অধার্মিক` হিসেবে ধরা হয়েছে । বস্তুবাদী, আস্তিক ধর্মপরিচয়বাদী অধার্মিক, নাস্তিক ধর্মপরিচয়বাদী, ধর্মবিহীন আধ্যাত্মবাদী, অজ্ঞেয়বাদী – এঁদের সকলকেই অধার্মিক গোষ্ঠীতে ধরা হয়েছে ।
আস্তিক ধর্মপরিচয়বাদী অধার্মিক : যাঁরা ঐতিহ্যগত কারণে ধর্মীয় পরিচয়ে বিশ্বাসী কিন্তু ধর্মকে জীবনের খুব প্রয়োজনীয় বিষয় হিসেবে স্বীকৃতি দেন না ও ধর্মকর্মে কখনো গুরুত্ব দেন না ।
নাস্তিক ধর্মপরিচয়বাদী : কিছু ব্যক্তি আছেন যাঁরা ঐতিহ্যগত কারণে ধর্মীয় পরিচয়ে বিশ্বাসী কিন্তু ধর্মে বিশ্বাসী নন ।
আস্তিক অজ্ঞেয়বাদী : যাঁরা ঈশ্বরে সন্দেহবাদী কিংবা ঈশ্বরকে কখনোই খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয় মনে করেন কিন্তু ধর্মপালন করেন ।
(২) ধর্মবিহীন জনসংখ্যা (Irreligious Population) : বস্তুবাদী, নাস্তিক অজ্ঞেয়বাদী ও ধর্মবিহীন আধ্যাত্মবাদী – এঁদের সকলকে এই গোষ্ঠীতে ধরা হয়েছে ।
(৩) ধর্মবিহীন আধ্যাত্মবাদী (SBNR – Spiritual But Not Religious): প্রচলিত ধর্মবিশ্বাসে এবং প্রচলিত ধর্মগ্রন্থবর্ণিত ঈশ্বরে বিশ্বাসী নন, কিন্তু আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বাসী, অর্থাত্ বস্তুবাদী নন ।
(৪) নাস্তিক অজ্ঞেয়বাদী (Agnostic Atheists) : যাঁরা ঈশ্বরে সন্দেহবাদী কিংবা ঈশ্বরকে কখনোই খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয় মনে করেন কিংবা ঈশ্বরে বিশ্বাস-অবিশ্বাস কোনটাই নেই এবং কোন ধর্মের অনুসারী নন – এঁদের সকলকে এই গোষ্ঠীতে ধরা হয়েছে ।
(৫)বস্তুবাদী (Materialists) : যাঁরা কোন অলৌকিকতা ও আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বাসী নন এবং যে কোন প্রশ্নে বিজ্ঞানপন্থী ও যুক্তিবাদী ।
তথ্যসূত্র: গ্যালাপ পোল ২০০৬, ২০০৭, ২০০৮ ও ২০০৯ এবং উইকিপিডিয়া । ইউরোব্যারোমিটার পোল-এর জরিপ সঠিকতার সবচেয়ে নিকটবর্তী এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে একে গুরুত্ব দেয়া হয় ।
অন্যান্য দেশগুলোর তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া, সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক, গ্যালাপ পোল ২০০৬, ২০০৭, ২০০৮ ও ২০০৯ ।
ফাঁকা ঘর (Cell)-গুলোর তথ্য-উপাত্ত আমার কাছে নেই ।
সংখ্যালঘু হলেও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক অধার্মিক জনগোষ্ঠী বাস করে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতে । বিশেষ করে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গদের ভেতর অধার্মিকতা উচ্চ সংখ্যক (সম্ভবত: শ্বেতাঙ্গ পুরুষদের ভেতর এবং মাছাপিছু গড় ক্রয়ক্ষমতায় সবচেয়ে ওপরে অবস্থান করা নিউ ইংল্যাণ্ডের স্টেটগুলোতে সংখ্যাগরিষ্ঠ) ।
ইউ.এস.এ. (আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র): অধার্মিক ২০%-৩৭.৩%, যার ভেতর ধর্মবিহীন জনসংখ্যা ২০%-এর মতো ।
অধার্মিক জনগোষ্ঠীর সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ার সম্ভাবনা আছে এমন দেশসমূহ (সঠিক তথ্য-উপাত্ত না থাকায় ছকভুক্ত করা হয়নি): গার্ণ্জি (চ্যানেল আইল্যাণ্ডজ), গ্রিন্ল্যাণ্ড, জার্জি (চ্যানেল আইল্যাণ্ডজ), ফকল্যাণ্ড আইল্যাণ্ডজ, ফ্যারো আইল্যাণ্ডজ, সিঙ্গাপোর । এর বাইরেও অন্য দেশ থাকতে পারে ।
একাধিক জরিপে আস্তিক-নাস্তিক প্রশ্নে যে ফলাফল পাওয়া গেছে তা নিম্নরূপ:
(০১) উচ্চ আই.কিউ. (I.Q.) অধিকারী ব্যক্তিদের ভেতর তুলনামূলকভাবে নাস্তিকতা বেশি দেখা যায় ।
(০২) কম আই.কিউ. অধিকারী ব্যক্তিদের ভেতর ধর্মান্ধতা বেশি দেখা যায় ।
(০৩) বেশি আই.কিউ. গড়ের জনগোষ্ঠীগুলোতে অপেক্ষাকৃত কম আই.কিউ. গড়ের জনগোষ্ঠীগুলোর তুলনায় ধার্মিকতা কম হয় ।
(০৪) অর্থনৈতিক ভাবে দরিদ্র জনগোষ্ঠীগুলোতে সমৃদ্ধ জনগোষ্ঠীগুলোর তুলনায় ধর্মীয় উন্মাদনা বেশি হয় ।
(০৫) আধুনিক উচ্চশিক্ষিতদের ভেতর কমশিক্ষিত/অশিক্ষিত –দের তুলনায় ধার্মিকতা কম হয় ।
(০৬) বিজ্ঞান শিক্ষিত ও বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিদের ভেতর বস্তুবাদিতা বেশি দেখা যায় ।
(০৭) মোঙ্গোলয়েড ও শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় কালো ও বাদামি বর্ণের জনগোষ্ঠীগুলোতে ধর্মবিশ্বাস বেশি দেখা যায় ।***
(০৮) ইতিহাসের অন্ধকার যুগেও নর্ডিক (উত্তর ইউরোপীয় শ্বেতাঙ্গ)–দের ভেতর যুক্তিবাদী হওয়ার প্রবণতা এবং পীতাঙ্গ (নর্দার্ণ মোঙ্গোলয়েড)–দের ভেতর অ্যাপোথীস্ট (ধর্মে অনুত্সাহী) হওয়ার প্রবণতা অন্য জনগোষ্ঠীগুলোর তুলনায় বেশি দেখা গেছে ।
(০৯) গড়পরতা পুরুষদের ভেতর যুক্তিবাদী দৃষ্টিভঙ্গীর প্রবণতা গড়পরতা নারীদের চেয়ে বেশি দেখা যায় ।****
(১০) ধার্মিকতাপ্রধান দেশের চেয়ে অধার্মিকতাপ্রধান দেশগুলোতে দুনীর্তি কম হয় এবং সুশাসন ও যুক্তিপূর্ণ ন্যায়বিচার প্রচলিত করার জন্য মানুষের আগ্রহও বেশি থাকে ।
*** সম্ভবত: ঐতিহাসিক পশ্চাদ্পদতার কারণে (নিজস্ব অভিমত) ।
(১১) উন্নত দেশগুলোসহ সমস্ত পৃথিবীতেই বিগত প্রতি দশকের নতুন প্রজন্মগুলোতে তার পূর্ববর্তী প্রজন্মগুলোর তুলনায় অধার্মিকতা ও নাস্তিকতা বৃদ্ধি পেয়েছে ।
**** সম্ভবত: ভূতপূর্ব যুগে বেশির ভাগ সমাজে নারী শিক্ষার প্রচলন কম থাকার কারণে (নিজস্ব অভিমত) ।
পৃথিবীতে প্রচলিত ধর্মগুলোতে মানুষের যুক্তিবোধ (Rationality) ও বিবেকবোধ (Conscience) ছোটবেলা থেকেই নষ্ট করে দেয়া হয় । আসলে যুক্তিবোধ ও বিবেকবোধের অভাবকে ধর্ম দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা হয় । ধর্ম টিকে থাকার এটি একটি প্রধান অবলম্বন । একারণে ধার্মিকতাপ্রধান সমাজের মানুষের ভেতর ধীশক্তি (Intelligence) ও সহজাত নীতিবোধ কম থাকে (Conscience) । এসব দেশে শুধু রাষ্ট্রযন্ত্র নয় বরং সাধরণ মানুষও সুযোগ পেলে দুর্নীতি করে । অন্যদিকে ধীশক্তিসম্পন্ন মানুষের ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবোধবোধ বেশি থাকে এবং ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবোধসম্পন্ন মানুষের বিবেকবোধ বেশি থাকে ।
পৃথিবীতে বিগত প্রতি দশককে হিসেবে নিয়ে দেখা যাবে তার পূর্ববর্তী দশকগুলোর প্রজন্মগুলোর তুলনায় ঐ দশক ও তার পরবর্তী প্রজন্মগুলোতে অধার্মিকতা ও বস্তুবাদিতা বৃদিধ পেয়েছে । যেমন ১৯৭০ দশক কিংবা ১৯৯০ দশককে টাইমলাইন ধরে এর পূর্ববর্তী প্রজন্মগুলোর তুলনায় এর পরবর্তী প্রজন্মগুলোতে অধার্মিকতা ও নাস্তিকতা অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে । মুসলিমপ্রধান দেশগুলোতে যদিও মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় তার কারণ অমুসলিমদের দেশত্যাগ । কিন্তু এখানে শুভঙ্করীর ফাঁকি হচ্ছে সত্যিকারভাবে মুসলিম সমাজে অধার্মিকতা ও নাস্তিকতা কতটা বৃদ্ধি পেয়েছে তা দেখানো হয় না ।
খুবই ভাল তথ্যবহুল লেখা। আমি প্রিন্ট আউট নিয়ে রেখে দিলাম। সকলকে পড়াব।
তথবহুল লেখা। অনেক কিছু জানতে পারলাম। (Y)
মুক্তমনার পাঠকদের উদ্দেশ্যে বলছি, মরুঝড় ইসলাম নিয়ে যেসব দাবী করে তাতে বোঝা যায় এই লোকটির ইসলাম ধর্মীয় পড়াশোনা কম আছে অথবা অন্যদের ‘নাদান` মনে করেন । আপনারা কি চান বিভিন্ন স্পর্শকাতর বিষয়ে মুসলিম ধর্মগ্রন্থ, ফিক্হ্ এবং বিভিন্ন শারিয়াহভিত্তিক রাষ্ট্রের নারী ও অমুসলিম বিষয়ক বৈচারিক উদাহরণ ও তার আইনের উত্স্যগুলো নিয়ে আলোচনা হোক ? আমার আপত্তি নেই কিন্তু মুক্তমনা মডারেটকেও অনুরোধ করছি এতে মুক্তমনার ক্ষতির সম্ভাবনা আছে কিনা । নতুবা ‘বার্তা`-র মাধ্যমে আগ্রহী পাঠকদের প্রেরণ করা যেতে পারে । মনে রাখবেন আমি ধর্মীয় জ্ঞান নিয়েই বড় হয়েছি এবং অকারণে পিতৃধর্মের অন্ধকার দিক নিয়ে আলোচনা করতে খুব ভালো লাগে তা নয় । ধন্যবাদ ।
@khurshid,
আপনার সাথে প্রথম আলাপ। তাই হয়ত জানেন না-আমি কিন্তু কাউকে আক্রমন করে কিছু বলি না। যেমন- তার এই ঘাটতি,ওনার জ্ঞান কম,এই সেই…
ব্লগের নামটাই দেখুন ভালো করে-মুক্তমনা। আমি নিজেকে তাই ভাবি। এবং সেভাবেই উপস্থাপন করি।
কোন জায়গায় জ্ঞানের ঘাটতি সেটা কেন বলছেন ভাই? দেখুন এই রকম একটি বিষয়ে আমি আপনাকে কিভাবে বলেছি-
আমি কিন্তু চাইলে খুব পন্ডিত ভাব নিয়ে বলতে পারতাম যে-আপনার এখানে ঘাটতি। কিন্তু বলেছি কি? তবে? তবু আশা পরের বার এমন করবেন না। মুক্তমনে আলোচনা হোক-ঝগড়া-ঝাটি নয়।(তবে মাঝে মাঝে আমারো কিন্তু শব্দ চয়ন এদিক-সেদিক হয়,তেমন হলে-ক্ষমা)। কথা হবে…
(F) সত্যি কথা বলতে কী, আধ্যাত্মিকতার আনন্দের কাছে অন্যান্য সব আনন্দই মাটি।তাই আমি মনে করি সুস্থ ও শান্তিময় জীবনের জন্য নাস্তিকতার চাইতে আধ্যাত্মিকতার বেশি দরকার।
@মোঃ কনক,
সুন্দর উপলব্ধি।
১৯৬০-এর দশকে ইংল্যাণ্ড্ ও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয় অনুভূতির পার্থক্য : একটি মজার ঘটনা :
১৯৬৬ সালের মার্চ মাসে ব্রিটিশ ব্যাণ্ড ‘দা বিট্ল্স্ (The Beatles)`-এর (পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি এলপি, ইপি, টেপ, সিডি বিক্রির রেকর্ড ‘দা বিট্ল্স্`-এর) প্রধান ভোকালিস্ট এবং গিটারিস্ট জন লেননের একটি সাক্ষাত্কার লণ্ডন ইভনিং স্ট্যাণ্ডার্ড্ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় যাতে তিনি বলেছিলেন যে খ্রিশ্চ্যানিটি পতনের পথে এবং দা বিট্ল্স্ জেসাস খ্রাইস্টের চেয়ে জনপ্রিয় । ইয়ু.কে.-তে এই বক্তব্যের কোন পাবলিক রিয়্যাক্শান ছিলো না । আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের একটি টিন ম্যাগাজিন ডেইটবুক (Datebook)-এ যখন এই সাক্ষাত্কারটি ১৯৬৬-র অগাস্ট মাসে পুনর্প্রকাশিত হয় তখন ‘পাশ্চাত্যের বাইবল্ বেল্ট` নামে পরিচিত আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণের অঙ্গরাষ্ট্রগুলোতে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় । মেক্সিকো, সাউথ আফ্রিকা ও স্পেইনেও এ নিয়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয় । এদেশগুলোর কিছু অঞ্চলে এবং আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণের কিছু অঙ্গরাষ্ট্রে বিট্লসের রেকর্ড পোড়ানো হয়, তাঁদের নির্ধারিত সাংবাদিক সম্মেলন প্রত্যাহৃত হয়, ওখানকার কিছু রেডিও স্টেশনে তাঁদের গান নিষিদ্ধ হয় এমনকি তাঁদের হুমকিও দেয়া হয় । এসময় তাঁরা তাঁদের নির্ধারিত ইয়ু.এস.এ. সফর বাতিল করার কথাও চিন্তা করেন । শেষ পর্যন্ত তাঁরা ইয়ু.এস.এ. সফরে যান এবং সফরের শুরুতেই ১১ই অগাস্ট ১৯৬৬-তে ইলিনয় অঙ্গরাষ্ট্রের শিকাগোতে একটি সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন (ইলিনয় ইয়ু.এস.এ.-র লিবারেল উত্তরের অঙ্গরাষ্ট্র) । এখানে জন লেনন যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তার কিছু অংশ ছিলো এরকম :
‘‘…আমি আসলে ইংল্যাণ্ডের বাস্তবতায় এ কথা বলেছি ।…আমি যা বলেছি তা এখানকার (আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র) চেয়ে ইংল্যাণ্ডের ক্ষেত্রে বাস্তব এবং সত্য ।…“
উচ্চ আই.কিউ. (I.Q.) অধিকারী ব্যক্তিদের ভেতর তুলনামূলকভাবে নাস্তিকতা বেশি দেখা যায় ।
কথাটা পুরোপুরি মানতে পারলাম না। আপনি হয়তো বিজ্ঞানীদের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন তবে আমার বন্ধুদের মধ্যেই দেখেছি উচ্চ আই কিউ এর অধিকারী অনেকে সবকিছু বৈজ্ঞানিকভাবে চিন্তা করলেও ধর্মের ক্ষেত্রে নিজেকে তীব্র আস্তিক বলে দাবি করে। ব্যাপারটা মনে হয় অনেকটা মানসিকতার, মানে আপনি সঠিক যুক্তিটা গ্রহণ করতে চান নাকি যে যাই বলুক তালগাছটা আমার মনে করে বসে থাকেন।
আরেকটা কথা, আপনি নাস্তিক অজ্ঞেয়বাদী আর বস্তুবাদীর যে সংজ্ঞা দিয়েছেন তা অনেক সময় একইরকম বুঝায়। আমি নিজে অলৌকিকতায় বিশ্বাসী নই বরং বিজ্ঞান এবং যুক্তি দিয়েই প্রভাবিত। একই সাথে ঈশ্বর আছেন কিনা তা নিয়ে আমি সন্দিহান। ঈশ্বর থাকলেও থাকতে পারেন এমন একটি ধারণা আমি পোষণ করি অথবা ঈশ্বর না থাকলেও এই মহাবিশ্ব সৃষ্টির পেছনে কোন না কোন মৌলিক উপাদান/শক্তি আছে বলে মনে করি। আপনি যেহেতু এই বিষয়ে ভালই পড়ালেখা করেছেন তাই আপনার কাছে জানতে চাই আমি কোন শ্রেণীতে পড়ব?
@অজ্ঞ মানব,
বিষয়টি এক-দুজন ব্যক্তিকেন্দ্রিক নয়, I.Q.-র এই ব্যপারটি গোষ্ঠীকেন্দ্রিক । যেমন একজন ধর্মবিশ্বাসীর I.Q. একজন ধর্মবিহীনের চেয়ে বেশি হতে পারে । কিন্তু আপনি মানুন আর নাই মানুন এটা সব কটি গবেষণা থেকেই প্রমাণিত যে ধর্মবিশ্বাসী গোষ্ঠীর I.Q. কম । এর প্রধান কারণ যুক্তিবিহীনতা ।
একই ব্যক্তি একাধিক বিশ্বাস রাখেন । যেমন বিজ্ঞান গবেষণার ক্ষেত্রে, ন্যায় ও রাজনৈতিক দর্শনের ক্ষেত্রে তিনি যে বস্তুবাদী পথে ভাবেন, পরিবারের আর্থিক উন্নতি কিংবা ছেলেমেয়ের পরীক্ষার ফল প্রকাশের সময়ে তিনি তীব্র আধ্যাত্মবাদী হয়ে যান, বিশেষ করে উপমহাদেশের শিক্ষিত মধ্যবিত্তদের একটি বড় অংশের ভেতর এই আচরণ লক্ষ্যণীয় । পার্থক্য হচ্ছে কেউ ‘ভগবান` কিংবা ‘দুগ্গা-দুগ্গা` করেন, কেউ ‘আল্লাহ-আল্লাহ`, পরিবার থেকে যাঁর যেটা পাওয়া । বিশ্বাস করুন আর নাই করুন একজনকে একবার ‘স্তালিন-স্তালিন` করতে দেখেছি (মনে করলে হাসি পায় । আমি মার্ক্সবাদী নই), তাঁর যুক্তি এটা তাঁর নিজস্ব মনোসংযোগ বা স্নায়ুস্থিরকরণ প্রক্রিয়া, অলৌকিকভাবে কেউ বাঁচিয়ে দেবেন সেই বিশ্বাস থেকে নয় । মনে হয় পূর্বোক্তদের ক্ষেত্রেও একই বিষয় প্রযোজ্য ।
বস্তুবাদ বাস্তবজগতের অভিজ্ঞতা ও যুক্তি ভিত্তিক স্বীকৃতি, অলৌকিকতার প্রতি সরাসরি ‘না` । অন্যদিকে অজ্ঞেয়বাদ ‘হাঁ` এবং ‘না`-এর মাঝামাঝি স্তর, দুটোই নাস্তিকতা ।
বেশ তথ্য সমৃদ্ধ লেখা।
ধার্মিক বা আস্তিক শুমারী ঠিক কিভাবে করা হয় সেটা নিয়ে আমারো সংশয় আছে। এখানে বলা কারনগুলি ছাড়াও আরো ভেতরে গেলে লক্ষ্য করা যেতে পারে যে একই ধর্মগোষ্ঠীর বিভিন্ন গোত্র একে অপরকে সেই ধর্মগোষ্ঠির বলে মনে করে না। ধর্মীয় পরিচয় ব্যাপারটাই যথেষ্ট গোলমেলে হতে পারে।
আমি যতটা জানি তাতে অধিকাংশ ধার্মিকই ধর্মীয় পরিচয় মূলত পারিবারিক সূত্রে পায়। পারিপার্শ্বিক সমাজ ব্যাবস্থা, শিক্ষা ব্যাবস্থা সেটায় সাহায্য করে। এখানে নিজ জ্ঞান বুদ্ধি খাটিয়ে সিদ্ধান্ত নেবার তেমন অবকাশ নেই, যারা নেন তাদের ব্যাতিক্রমই বলা যেতে পারে। প্রাপ্ত বয়ষ্ক হবার পর, এমনকি জ্ঞান বিজ্ঞান বিকশিত হবার পরেও পারিবারিক ধর্মীয় পরিচয়ই ধার্মিকরা ধরে রাখে, বেশীরভাগ ধার্মিকই নিজ ধর্ম সম্পর্কেও খুব বেশী পড়াশুনা করেন না, অন্য ধর্ম তো দূরের কথা। আর যারা ধর্ম বিষয়ে পড়াশুনা করেন তাদেরও দৃষ্টিভংগী হয়ে যায় নিজ ধর্মের পক্ষে নানান ভাবে যুক্তিতর্ক সাজানো, সময়ে সময়ে অপরাপর ধর্ম সম্পর্কে খারাপ ধারনা আরো দৃঢ় করা।
পারিবারিক এবং যে কোন রকম পক্ষপাতপূর্ন পরিবেশ থেকে মুক্ত রেখে প্রাপ্ত বয়ষ্ক হবার পর নিজে নিজে পড়ে মানুষকে ধর্ম সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবার ব্যাবস্থা রাখা গেলে আসল পরিসংখ্যান দেখা যেত। ধার্মিকদেরও যারা নিজের ধর্মে কোন রকম দূর্বলতা আছে এমন বিশ্বাস করেন না তাদেরও নিশ্চয়ই এ ব্যাবস্থায় আপত্তি করার কথা না যারা ।
বেশ তথ্য সমৃদ্ধ লেখা (Y)
বেশ কিছু তথ্য কপি করে রাখলাম; মস্তিষ্কে 🙂
ধন্যবাদ লেখাটির জন্য :))
যেকোন যুক্তিপূর্ণ বক্তব্য মেনে নিতে রাজি আছি, আমার লেখাকে রক্ষা করা এই মন্তব্যের উদ্দেশ্য নয় বরং এই পোস্টের কিছু মন্তব্যকারীদের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় তাঁদের লক্ষ্য এড়িয়ে গেছে । আমি উপরে মন্তব্যে উল্লেখ করেছি মানুষের মনের স্বাভাবিক অবস্থা একরকম অজ্ঞেয়বাদিতা (A particular state of agnosticism) । আমার এই লেখার কোন অংশে ‘মানুষের মনের স্বাভাবিক অবস্থা নাস্তিকতা কিংবা আস্তিকতা` এরকম দাবীর প্রতি কোন স্বীকৃতি দেইনি, তার কারণ ‘আস্তিক` কিংবা ‘নাস্তিক` শব্দ দুটির কোনটিই ওয়েল ডিফাইণ্ড বা স্পষ্টীকৃত নয় । আরও নিখুঁত পর্যালোচনার প্রয়োজনে আমি কয়েকটি নির্দিষ্ট শব্দ বেছে নিয়েছি – বস্তুবাদিতা, অজ্ঞেয়বাদিতা, অলৌকিকতাবাদিতা, ইত্যাদি । আমার মূল লেখার অংশবিশেষ দেখুন:
লক্ষ্য করুন আমি মানুষের মনের মূল অবস্থা ‘বস্তুবাদী` কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছি ‘অজ্ঞেয়বাদিতা`-কে মানুষের মনের মূল অবস্থা হিসেবে উল্লেখ করেছি যেখানে বিশ্বাস ও অবিশ্বাস দুয়ের সম্ভাবনাই থেকে যায়, যদিও তাতেও সংশয় প্রকাশ করেছি । দ্বিতীয়ত: আরেকটি বিষয় মন্তব্যে বলেছি যে আদি সভ্যতাগুলোকে উদাহরণ হিসেবে গ্রহণ করা সম্ভব নয় । সব জনগোষ্ঠীর ভেতর দৈবশক্তির প্রতি বিশ্বাসের অস্তিত্ব ছিলো – এই বিষয়টি ঠিক নয় । কোরিয়া উপদ্বীপ, উত্তর চীনসহ উত্তর-পূর্ব এশিয়ার বহু অংশে ধর্ম অনেক পরে বাইরে থেকে এসেছে, তা সত্ত্বেও বিরাট জনসংখ্যা আধুনিক যুগের আগে থেকেই ধর্মবিহীন ছিলো, অবিশ্বাস্য হলেও সত্য এখানে অনেক সমাজে আধুনিক খ্রিশ্চ্যান ধর্মপ্রচারক দ্বারা প্রচলিত ধর্ম ছিলো প্রথম সামাজিক ধর্ম (এক্ষেত্রে আরো পর্যালোচনা দাবী রাখে) । আমি জোর দিয়েছি শিশুর বেড়ে ওঠার অভিজ্ঞতার আলোকে তার মনোজগতের পরিবর্তনের ওপর, যা পারিপার্শ্বিকতা, সামাজিক শিক্ষা এবং সমাজ ও প্রকৃতির সাথে সাংঘর্ষিকতার ওপর নির্ভরশীল, অর্থাত্ একটি মানব শিশুকে যদি জঙ্গলে বড় করা যায়; বিখ্যাত শিকারী জিম করবেট উত্তর ভারতের এমন একটি বালিকার কথা উল্লেখ করেছিলেন যার অন্য মানব শিশুর মতো কোন বিশ্বাস এবং ভাষা ছিলো না । কৃষি সভ্যতা পূর্ববর্তী মানুষের গুহাচিত্রে দৈবশক্তির প্রতি বিশ্বাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায় না (মালাগা, স্পেইন, ৪১৫০০ বি.সি.ই. – ৪০৩০০ বি.সি.ই.) ।
প্রাচীন বহু সভ্যতায় নারী ও পুরুষের সমকামিতা (যেমন গ্রিস, কেনান) ও পেডেরাস্টি (Pederasty, পুরুষ-কর্তৃক-বালকপুরুষ/তরুণপুরুষ-কামিতা; যেমন গ্রিস, পার্সিয়া, চায়না, রোমান সাম্রাজ্য, পাঞ্জাব, মধ্যপ্রাচ্য) সামাজিক স্বীকৃতির মাধ্যমে প্রচলিত ছিলো এবং আফঘানিস্তান, খাইবার-পাখতুনখোয়া, পাকিস্তানি বেলুচিস্তান, বিহার, উত্তর প্রদেশ এসব অঞ্চলের অনেক সমাজে Pederasty-এর স্বীকৃতি এখনও বিদ্যমান । আমরা কি বলবো মানুষের স্বাভাবিক অবস্থা Homosexuality, Bisexuality, Self-abusing অথবা Pederasty ? বিভিন্ন সভ্যতা বিভিন্ন সময়ে কখনো নারীতান্ত্রিক, কখনো পুরুষতান্ত্রিক কিংবা কোনটি হয়তো উভতান্ত্রিক ছিলো । তাই বিভিন্ন প্রাচীন সভ্যতাকে মানুষের মূল বৈশিষ্ট্যের মানদণ্ড হিসেবে গ্রহণ করা সম্পূর্ণ ভুল । কারণ সভ্যতা নিজেই একটি কৃত্রিম সৃষ্টি ।
আমি বিতর্কের মাধ্যমে এই বিষয় সংশোধনে রাজি আছি তা আগে থেকেই বলছি, কিন্তু আমার বক্তব্যের অর্থ আগে বুঝতে হবে । নিচে মানুষের মনের মৌলিক অবস্থার প্রশ্নে আমার সংশয়বাদী দৃষ্টিভঙ্গীর পক্ষে কতগুলো সাফাই পেশ করলাম:
১। বস্তুবাদ যদিও বিজ্ঞানভিত্তিক একমাত্র সত্য, কিন্তু সব মানুষ মানসিকভাবে জন্মগত বস্তুবাদী হয় না । জন্মগত বস্তুবাদী ও অলৌকিকতাবাদী হওয়ার বিষয়টি বংশপরম্পরায় প্রচলিত সামাজিক শিক্ষার কারণে জেনেটিক উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত হওয়া সম্ভব ।
২। অলৌকিকতাবাদিতা একধরণের বিকৃতি তার কারণ কোন বাস্তব অভিজ্ঞতার দ্বারা এটা প্রাপ্ত হওয়া যায় না ।
৩। প্রাচীন সভ্যতার উদাহরণ সর্বক্ষেত্রে নৃতত্ত্ববিজ্ঞানের দৃষ্টিতে মানুষের মৌলিক মানদণ্ড হিসেবে স্বীকৃত নয় । ধরেই নেয়া হয় কোন বিকৃত জনগোষ্ঠী বিজয়ী হবার কারণে ইতিহাসে প্রাধান্য বিস্তার করতে পারে, মনে রাখবেন আলেক্সান্দারের সেনাবাহিনী উভকামী গণধর্ষক ছিলো ।
৪। মানুষের মন বস্তু অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ক্রম:বিবর্তনশীল । তাই ভবিষ্যতে কোন একসময়ে মানুষের মন জন্মগতভাবে বস্তুবাদী হওয়ার ব্যপারটি উড়িয়ে দেয়া যায় না ।
৫। দুজন ভিন্ন মানুষের মৌলিক মনোজগত্ সম্পূর্ণ ভিন্ন হওয়া সম্ভব, জেনেটিকসূত্রে দুটো ভিন্ন বাস্তবতার জগত্ থেকে আসা পরিবারসূত্রে ।
৬। শিক্ষা ও বুদ্ধিমত্তার পার্থক্য দুজন মানুষের মনোজগতকে পার্থক্য গড়ে দিতে সক্ষম । জন্মগতভাবে উন্নত আই.কিউ. সম্পন্ন মানুষের মনোজগত্ যুক্তিবাদী তথা বস্তুবাদী ।
মানুষের মন বস্তু অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ক্রম:বিবর্তনশীল না হলে সভ্যতার অগ্রগতি সম্ভবপর ছিলো না ।
নিজের উদাহরণ দিচ্ছি । ছোটবেলা থেকে পারিবারিক ও সামাজিক পরিমণ্ডলে আমাকে ধর্মীয় শিক্ষা নিয়ে বড় হতে হয়েছে । দ্রুত অনুধাবন ক্ষমতার কারণে এবিষয়ে ছোটবেলাতেই ব্যুত্পত্তি লাভ করি (যার কারণে আমার ধার্মিক পিতা আমি অবিশ্বাসী জেনেও আমার সাথে নির্দিষ্ট পারিবারিক ধর্মটির বিষয়ে আলোচনা করতে পছন্দ করেন) । কিন্তু অলৌকিকতাবাদকে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতে অক্ষম ছিলাম । একটা বয়স ছিলো যখন নিয়মিত ধর্মশিক্ষা সত্ত্বেও বিশ্বাস সম্পর্কিত কোন চিন্তার উদ্রেক ঘটতো না । কিন্তু ১২-১৪ বয়সে যখন এ বিষয়ে সিরিয়াস চিন্তার উদ্রেক ঘটলো তখন বস্তুবাদকেই একমাত্র সত্য হিসেবে গ্রহণ করেছি । এক্ষেত্রে আমার চিন্তাজগতের মৌলিকরূপ জন্মগতভাবেই বস্তুবাদী ছিলো সন্দেহ নেই । এবিষয়ে অন্যান্যদের দৃষ্টিভঙ্গী ও অভিজ্ঞতা বিনিময়কে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি ।
@khurshid, উপরের এই মন্তব্যটি বিষণ্ণতার মন্তব্যের প্রতিমন্তব্য হিসেবে দেয়া হলেও আলাদাভাবে দেয়া হলো আরও কিছু তথ্যগত সংযুক্তির কারণে ।
এই ধরনের একটা পোষ্ট বহুদিন থেকে দরকার ছিল। একে বলে ইনসাইটফুল এনালাইটিক। আমি এই তথ্যগুলো নিয়ে গত তিন বছর ধরে ঘাঁটছিলাম। আমেরিকান সমাজ বিজ্ঞানীরাও অনেক কাজ করছেন।
এতে কতগুলি ব্যাপার পরিস্কার
[১] ধর্ম এবং সামন্ততান্ত্রিক উৎপাদন ব্যাবস্থা একে অপরের পরিপূরক। মার্কেট এবং ধনতন্ত্রের বিকাশের সাথে মানুষের “আইডেন্টিটি” বা পরিচয় আস্তে আস্তে আমি বাংলাদেশী বা ভারতীয় ছেরে বা আমি হিন্দু বা মুসলিম ছেরে, ক্রমশ-দুটি দিকে যাবে। আমি ক্রেতা না বিক্রেতা? ইন্টারনেটের জন্য ক্রমশ দেশের সীমানা লোপ পাবে-লোপ পাবে জাতি এবং নানান ভাষা। টিকে থাকবে একটা গ্লোবাল মার্কেট। সেখানে আমাদের দুটি পরিচয় থাকবে-আমরা হয় ক্রেতা বা বিক্রেতা। আস্তে আস্তে চাকরির ধরন বদলিয়ে সবাই ছোট ছোট বিজনেস ইউনিটে বা ইউনিটের স্বাধীন মেম্বারের পরিনত হবে যেখানে এই ধরনের ক্রেতা বিক্রেতা পরিচয়েই সবাইকে সর্বদা বাঁচতে হবে। সেখানে নিশ্চয় আমি টুপি পরে তিলক লাগিয়ে মার্কেটে বেড়ব না-কারন তাতে আমার ক্রেতা পেতে ক্ষতি হবে। এই জন্যেই ধর্ম ক্রমশ কোনঠাসা হবে। এই নিয়ে আমি আগেও লিখেছি ঃ ধর্মের মৃত্যু ঘন্টা
[২] আমি হিন্দু না মুসলমান -সেই পরিচয় যখন আমি ক্রেতা না বিক্রেতা এই পরিচয়ে চলে আসবে-তখন হিন্দু বা মুসলাম আইডেন্টি কার্ড খেলিয়ে কেও রাজনীতি করতে পারবে না। ফলে মাদ্রাসা শিক্ষা বা আলেমদের তোষন বন্ধ করে রাজনীতি হবে উন্নয়নের রাজনীতি।
এর পরেও আমি কে, জীবনের উদ্দেশ্য কি এই প্রশ্নগুলি সবার মনেই থাকবে। ঐতিহাসিক ভাবেই এই প্রশ্নের সন্ধানে লোকে গীতা, কোরান বা আধুনিক বিজ্ঞান ভিত্তিক দর্শনের মধ্যে এসবের উত্তর সন্ধান করবে। যেমন আমি করি। কিন্ত আমি হিন্দু বা আমি মুসলমান এই ধরনের কৃত্রিম পরিচয় কপ্পুরের মতন উবে যাবে।
@বিপ্লব পাল,
সবশেষে এটা একটা উদ্ভট মন্তব্য করলেন। মানুষ যখনই জীবনের অর্থ খুজতে গীতা , কোরানের মধ্যে ঢুকবে তখনই সে দিক ভ্রান্ত হয়ে পড়বে, পড়তে বাধ্য আর তখনই তার ধর্ম পরিচয় আবার চাগাল দিয়ে উঠবে। আপনার এই ক্রেতা বিক্রেতা ফর্মূলাও মানুষকে তার ধর্ম থেকে বিচ্যুত করতে পারবে না যতক্ষন আপনি যথার্থভাবে একেবারে খেলো ভাবে প্রমান না করছেন এইসব ধর্ম হলো একটা ফালতু অন্ধ বিশ্বাস এবং এর বাস্তব কোন ভিত্তি নেই। সেটা করতে হবে যার যার ধর্মীয় কিতাবগুলোর সমালোচনা করেই। সেটা না করলে , তারা তাদের কিতাবের নানা রকম ভিন্ন ও কাল্পনিক অর্থ করে সেটাকেই আকড়ে ধরে থাকবে। এটা যে করবে সেটা তো দেখতেই পাচ্ছেন।
ক্রেতা বিক্রেতা ফর্মূলা তো আমেরিকার চাইতে আর কোন দেশে বেশী চালু না , তো সেখানে তো দেখি হিন্দু মুসলমানদের ধর্মিয় অনুভূতি যখন তারা স্বদেশে ছিল তার চেয়ে অনেক বেশী। এমন কি তাদের ছেলেমেয়েদের ভিতরও সেটা বেশী। তাহলে আপনার ফর্মূলা কি অযৌক্তিক নয় ? এমন কি আমেরিকাতে তো দেখি নতুন মুসলিম কনভার্ট পর্যন্ত সন্ত্রাসীর খাতায় নাম লেখায়। এর কারন কি ? ক্রেতা বিক্রেতা ফর্মূলা তাদের উপরও তো কাজে দেয় না। এখানেই আপনাকে মনস্তাত্ত্বিক ব্যখ্যায় আসতে হবে। মানুষের জীবন অর্থনীতির কর্মকান্ড দ্বারা বিরাট অংশে চালিত হলেও একটা পর্যায়ে প্রতিটি মানুষের উপর মনস্তত্ত্ব একটা প্রভাব ফেলে,তখন মানুষের মনের মধ্যে সেই মৌলিক প্রশ্ন – আমি কে ? আমি কোথা থেকে আসলাম? আমার জীবনের লক্ষ্য কি ? জীবনের মূল্য কি ? এইসব প্রশ্ন আসতে বাধ্য। প্রচলিত দর্শন তত্ত্ব এসব প্রশ্নের কোনই উত্তর দিতে পারে না , তার কারন বাজার অর্থনীতির এ যুগে দর্শন নিয়ে চিন্তা ভাবনা একেবারেই কমে গেছে তাই নতুন কোন দর্শনের কোন খোজ পাওয়া যাচ্ছে না।
আর তখনই ধর্ম হয়ে দাড়ায় তাদের সামনে সবচাইতে বড় আশ্রয়। ধর্মীয় কিচ্ছা কাহিনীতে বহু গোজামিল বা উদ্ভটত্ব থাকলেও মানুষ সেটা থেকেই জীবনের মূল্য খুজতে চেষ্টা করে। তাই প্রচলিত ধর্মগুলোর অন্ত:সার শূন্যতা প্রকাশের সাথে সাথে নতুন ধরনের দর্শন চিন্তাটাও জরুরি। সেটা যতক্ষন পর্যন্ত না হচ্ছে ততদিন বাজার তত্ব দিয়ে ধর্মকে উচ্ছেদ করা যাবে না। এখানে আর একটা ফ্যক্টর কাজ করে বলে আমার মনে হয়। যে কোন একটা ধর্মের উগ্রতা অন্য একটা ঘুমন্ত ধর্মকেই জাগিয়ে তুলে তাকেও উগ্র করে তোলে। যেমন উপমহাদেশে হিন্দুদের মধ্যে ধর্মীয় উগ্রতা সৃষ্টির কারন আমি ইসলামের উগ্রতাকেই দায়ী করি। ইসলামের উগ্রতাকে ঠেকাতে বাধ্য হয়ে নিতান্ত উদার ও প্রায় নাস্তিক হিন্দুও উগ্র হিন্দু হয়ে পড়ছে। আমার ধারনা , ইউরোপ আমেরিকতাতে যত বেশী ইসলামী জঙ্গীবাদ বৃদ্ধি পাবে সেখানে মৃতপ্রায় খৃষ্টীয় উগ্রতা বৃদ্ধি পাবে। যার আলামত ইতোমধ্যেই কিছুটা দৃশ্যমান। আর হয়ত এভাবেই দুনিয়াতে একটা মহা হানাহানি শুরু হয়ে ধর্ম নিয়ে ভবিষ্যতে কোন একদিন।
@বিদ্রোহী,
। ইসলামী উগ্রতার কারণ কি? সেটাও বলুন।
এমন হবার কারণ কি? কই আর কেউ তো এমন করে না। তবে কিসে মুস্লিম দের এমন করতে বাধ্য করছে,সেটা বলবেন না?
জি,বিপ্লব পালের চিন্তা অযৌক্তিক। ………….তিনি একটা ধর্মহীন বিশ্ব দেখার অপেক্ষায় তাই একটু তড়িঘড়ি করেন …
@মরুঝড়, কাকে কে বাধ্য করে ? ইসলাম নিজেই একটি উগ্রবাদী ধারণা । বিগত ১৪০০ বছরের ইসলাম গণহত্যা, গণধর্ষণ, আইকনোক্লাজম এইসবের ক্ষেত্রে রৌপ্যপদক পাবার দাবী রাখে (স্বর্ণপদক ১৬শ-১৭শ-১৮শ শতকের রোমান কাথোলিক স্পেনিয়ার্ডদের জন্য বরাদ্দ) । এসব গণহত্যা, গণধর্ষণ, আইকনোক্লাজম, ক্রীতদাসত্ব ‘জিহাদে সব কিছু জায়েজ` ফতোয়া দিয়ে সিদ্ধ করা হয়েছে । ইসলামপন্থীরা আজ পর্যন্ত এজাতীয় কোন কর্মের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করেনি । পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সেক্যুলার শাসনতন্ত্রের সুবাদে মুসলিমরা সব সুযোগ-সুবিধা পান, অথচ একটি শারিয়াহ আইনভিত্তিক রাষ্ট্রে অমুসলিম, নারী এবং ইসলাম ধর্মত্যাগকারীদের প্রতি কি ভয়াবহ বিকৃত অন্যায্য আচরণ করা হয় । নারীদের প্রতি ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গী বায়োলজিক্যাল দৃষ্টিভঙ্গীর সম্পূর্ণ বিরুদ্ধ । মুসলিমরা যেখানে সংখ্যালঘু সেখানে তাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী এক রকম, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের জন্য আরেক রকম । ভারত বিভক্তির পর পাকিস্তান থেকে লক্ষ লক্ষ হিন্দু এবং সিখদের বের করে দেয়া হয়েছে । কাশ্মির ভ্যালি অঞ্চলের হিন্দু ও সিখরা নিজ দেশে পরবাসী, জাম্মু কিংবা দিল্লির শরণার্থী শিবিরে মানবেতর জীবন-যাপন করছে । অথচ জেনেটিকভাবে সন্ত্রাসী হওয়া সত্ত্বেও ভারতে এদের দুধ-কলা দিয়ে পোষা হচ্ছে, ইসলামের দৃষ্টিতে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধে যঁদের জন্য দার-য়ুলইসলাম পাকিস্তানকে সহায়তা করা আলফার্ধ-য়ুলআইন (ওয়াহাবি মতে) । ভারতীয় মুসলিমদের প্রতি ঐতিহ্যসূত্রে হামদার্দি হওয়া সত্ত্বেও বিশ্বব্যাপী মুসলিমদের কর্মকাণ্ড ও দৃষ্টিভঙ্গী দেখে মনে হয় আধুনিক যুগের সূচনায় স্পেইন থেকে মুসলিমদের যেভাবে বিতাড়ন করা হয়েছে সেভাবে দুনিয়ার সব জায়গা থেকেই না মুসলিমদের বিতাড়ন করা শুরু হয়ে যায় ।
হয় মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর জন্য ধর্মনিরপেক্ষতা, নারী-পুরুষ সমানাধিকার, অবাধ বাকস্বাধিনতা মেনে নিন, অথবা (ধর্ম সবই তো রূপকথা,) সময় থাকতে বাহাই কিংবা নব্য খ্রিশ্চিয়ানিটির মতো ভালো ধর্ম গ্রহণ করুন ।
@khurshid,
একটা উদাহরণ দিন। আলোচনা করতে সুবিধা হবে।
আবার একটা উদাহরণ দিন ।
আবার উদাহরণ দিন আর যদি বলেন কোথায় শরিয়া আইন আছে এবং কার সাথে কিভাবে অন্যায্য আচরণ করা হয়েছে।
অনুরোধ করব আন্তর্জাতিক রাজনীতি কিভাবে কাজ করে তা নিয়ে পড়ার।
নীচে আমেরিকা কিভাবে আপনাদের বোকা বানায় তার একটু নমুনা দিলাম।
http://www.globalresearch.ca/empire-energy-and-al…american-terror.
পড়ে আসুন।
মানুষের জন্য হাজার রকমের দাওয়াই বানান,সমস্যা নেই কিন্তু ইসলাম ছাড়া কোন মুক্তি নেই। মুসলিম রা কি করে তাই দেখে যে ধর্ম কে বিচার করে তাকে আর কি ই বা বলা যায়। নীচের কথাটি আপনার জন্য-Don’t judge a car by its driver.
তা ইসলাম কি তাদের সাথে এমন করতে বলেছে? আমাদের পাঠ্যবই এ তো সুন্দর সুন্দর কথা লেখা থাকে ,সদা সত্য বলিবে। আমরা কজন মানি? তা দোষ কি আমার নাকি বই এর? সব ধর্মেই কিছু মানুষ উগ্র। ধর্ম তাদের এমন বানায় নি ,তারা ই নিজেদের মত করে ধর্ম বানিয়েছে। যারা মন্দির ,মসজিদ ভাঙ্গেন তারা কেউ ধার্মিক নন-তারা স্রেফ বলদ।
@মরুঝড়, আপনার ইসলাম সম্পর্কে এবং ইসলামী রাষ্ট্রগুলো সম্পর্কে পড়াশোনার ঘাটতি আছে । দয়া করে এমন কিছু উদাহরণ দিতে বাধ্য করবেন না যা আপনার ‘অনুভূতিতে আঘাত লাগে` ।
@khurshid, দিন ভাই আঘাত,অনুমতি দিলাম। আমার বিশ্বাসে যদি জোর না থাকে তবে আপনার টাই মানব, তবে মনে রাখবেন-প্রশ্নের বদলে পালটা প্রশ্ন কিন্তু আমিও করব। আপনি করবেন ইসলাম নিয়ে আর আমি করব আপনার নাস্তিক্যবাদ নিয়ে(ধরে নিলাম আপনি নাস্তিক ভুল হলে মাফ করবেন)। শুরু করেন——-
@মরুঝড়, বুঝলাম ভাই যে এটা খুবি ভালো car. এমনই ভালো যে চালক পাওয়া মুশকিল। আজ পর্যন্ত পাইলাম যে একটা ভালো চালক car খুব দারুন ভাবে চালায়া নিচ্ছে। চারিদিকে খালি crash খাওয়া দেখছি। আপ্নের ভাষায় স্রেফ বলদদেরকেই দেখছি চালকের আসনে। অবশ্য আপ্নে যদি একটা ভালো চালকের উদাহরদেন তো ভাল হয়, আমারও জানা হবে ভাল চালকের নামটা। তো এখন পুরা বিশ্বে যদি দেখি একই কোম্পানির car শুধু crash খাচ্ছআর চালকের আসনে খালি বলদেরাই (আপ্নের ভাষ্য মতে) বসে আছে তো চালকের সাথে সাথে তো car ও প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
@শিরোনামহীন,
আমিও তাই দেখছি।
কথা সত্য।
এ দিতে হলে ইতিহাসের দিকে দৌড়াতে হয়। তারপর ও ইরান মোটামুটি চলে।
যার দোষ তাকেই গালমন্দ করুন।
@মরুঝড়,
করছি ভাই, এমনই car যে শুধু বলদরাই চালাতে যায়। এমনও হতে পারে সেই car যে চালাতে যায় সেই বলদ হয়ে যায়।
ওপরে দ্রুত টাইপিঙে ভুলক্রমে ‘আলফার্ধ-য়ুলআইন` লেখা হয়েছে, হবে ‘আলফার্দুলকিফায়াহ` ।
@khurshid,
দাদা কথাটা খুব খাটি বলেছেন। কিন্তু মুসলিমরা কি তা পারবে?
আমার তো মনে হয় তা শুরু হয়ে গেছে।
@শিমূল,
ইসলামে এসবি আছে। এবং খুব ভালো করেই আছে। নারী কিংবা মানুষ ,সবার জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ বিধান হল -ইসলাম।
আপনাদের বাক স্বাধীনতা আর নারী সমতার দেশের মানুষ কেমন আছে একবার খোজ নিন। ধর্ম নিরপেক্ষতার আর নারীবাদ তারা শুধু রপ্তানি করেছে আর সাথে মিশে দিয়েছে মহা ভয়ঙ্কর,মানবতা ধংস্কারী পুজিবাদ,যার ছোবলে বিশ্ব আজ দিশেহারা,আর চারদিকে শুধু লোভী মানুষের ভিড়। কিন্তু সেটা কিন্তু তারা আপনাকে বুঝতে দিবেনা। মুখে মানবতার জন্য তারা তুবড়ি উড়াবেন কিন্তু যেইনা নিজেদের স্বার্থ দেখেবেন তখনি সব ঠিক আছে। জানেন তো -শেখ মুজিবের আমলে খাদ্য দুর্ভিক্ষ হয়েছিল,কিন্তু আপনাদের মানবতাবাদী মহান আমেরিকা তাদের খাদ্য জাহাজ ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল স্রেফ রাজনীতির জন্য-বাংলার মানুষ না খেয়ে মরেছে। কিন্তু এই মহান দেশের কেউ এগিয়ে আসেনি। এদের এসব কর্মে বিশ্বময় অশান্তি। sidney sheldon এর best laid plan বইটি পড়ে দেখবার জন্য অনুরোধ করব।এই বিশ্ব ব্যাংক আর আইএম এফ কি কাজ করে? জানেন। এই মহান গণতন্র আর মানবাধিকারের ফেরিওালা রা wto, world bank,imf করেছে শুধু গরীব দেশগুলোকে শুষে মারার জন্য। সেকি আপনি জানেন না। দু চার টাকার জন্য হাত পাতলেই-তারা বলেন তেলের দাম বাড়াতে,চালের দাম বাড়াতে,সরকারী ভর্তকি কমিয়ে দিয়ে তারা তৃতীয় বিশ্বের মানুষের রক্ত শুষে নেন। আর তারা এসব করেন-পুজিবাদ,গনতন্র রপ্তানি করে। কিন্তু আপনাদের মত লোক ভাবেন এতে তো নারীবাদ আছে,আছে সমতা,আছে এই অই স্বাধীনতা। হায় কপাল-এক বারো ওদের চালাকি ধরতে পারেন না।
ইসলাম সব আছে ভাই ।সমাজে মানুষের জন্য একটি সুস্থ বিধান। ইসলামের বাস্তবায়ন না হলে আপনি ইসলাম বুঝতে পারবেন না। ভালো থাকবেন…
@শিমূল, পারবে না । এদের সবচেয়ে খারাপ দিকটি হচ্ছে মিথ্যাচার ও অস্বীকারপ্রবণতা, অনেকটা ন্যাজিদের হলোকস্ট ডিনায়ালিজমের মতো । গণহত্যা, নারী-বিদ্বেষী ফতোয়া, গণধর্ষণ, শিশুধর্ষণ, অমুসলিমদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গী, এই বিষয়গুলোকে মাথায় রেখে এবং পাকিস্তান, ইরান, সৌদি আরাবিয়া, তালেবান আফগানিস্তানের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে …কে চিরতরে নিষিদ্ধ করাই উচিত্ । …-এর উদ্ভবই হয়েছে কিছু লুণ্ঠনবাজ-ধর্ষক-দাসমালিক-শিশুধর্ষকদের নিয়ে । এদের প্রধান ধর্মমন্দিরটিও মূর্তি উপাসকদের কাছ থেকে মূর্তি ভাঙ্চুর করে দখল করা । এদের ধর্মগ্রন্থ একটি অবিশ্বাস্যগ্রন্থ যা না দেখলে বিশ্বাস করা শক্ত । পিডোফিলিয়া, যুদ্ধবন্দী নারীদের ধর্ষণ, অমুসলিম ও নারীদের সাথে কেমন আচরণ করা হবে, অমুসলিমদের প্রতি ঘৃণা, সন্ত্রাস – এর সব কিছুই এদের ধর্মগ্রন্থই স্বীকৃতি দেয় । ভারতীয় মুসলিমদেরকে ‘জেনেটিক সন্ত্রাসী` বলা উচিত্ হয়নি, এজন্য আমি দুখি:ত ও ক্ষমাপ্রার্থী, কিন্তু এটা সত্যি দারুলইসলাম বিষয়ক ফতোয়া ভারতের নিরপত্তার জন্য আশঙ্কার কারণ । বাংলাদেশের ১৯৭১-এর কর্মকাণ্ডের বিচার, পকিস্তান ও ইরানে নারী ও অমুসলিম নিপীড়ন এবং ভারতের নিরাপত্তা একই সূত্রে গ্রথিত । এর চেয়ে বেশি বলা অনুচিত্ হবে । তবে এদের ধর্মগ্রন্থগুলোর বিভিন্ন রেফারেন্স চাইলে ব্যক্তিগতভাবে সরবরাহ করবো । আসলে মুক্তমনায় এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা উচিত্ বলেও আমি মনে করি না । তাছাড়া আমার উদ্দেশ্য ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো বা এ নিয়ে বাহাস করা নয়, শত শত বছর হিন্দুদের উপর অত্যাচার ও মন্দির ভাংচুরকেও এরা আজকাল ‘ফ্লুক` বলে উড়িয়ে দিতে চায়, ঠিক যেমন …আইনের দেশগুলোতে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের পুরুষদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা অথবা অভিযোগ প্রমাণ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে । নয় মুক্তমনাতেই অতীতে এ নিয়ে অনেকে লিখেছেন । আমাদের Apostates of Islam-দের বিভিন্ন মাইক্রোব্লগে পাবেন (মধ্যপ্রাচ্য, ইরান ও পাকিস্তানের বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনসহ, যাদের সাথে ওখানকার বর্তমান অবস্থা ও অভিজ্ঞতা পাবেন, ছবি ও গোপন ভিডিওসহ)।
@khurshid,
এ ধরনের কথা বলার সময় উদাহরণ দিলে ভাল হয় না হলে সাধারন মানুষ ইসলাম কে ভুল বুঝতে পারে আর আর দেখতে হবে ভুল কার ইসলামের নাকি কে ফতোয়া দিল তার। যেমন -মুখতারান মাই এর কাহিনী জানেন নিশ্চয়। কার ভুল ছিল? ইসলামের নাকি কাঠমোল্লার?
আপনি নিজেই বলুন তো এই দেশ গুলোতে কি পুর্নাঙ্গ শরিয়া আছে? তাহলে ব্যর্থতার দায় ইসলামের হবে কেন?
আয়েশা আর সাফিয়ার জন্য অবিশ্বাসীদের কষ্ট দেখে আমারো কষ্ট হয়। এত ই যদি খারাপ লাগার মত ঘটনা তবে সাফিয়া কেন সংসার করলেন? কেন তিনি পালালেন না? কেন নবীকে বিষ মিশিয়ে মারলেন না? কেন? তার খারাপ লাগেনি? কই তার কোন আও্য়াজ নেই তবে আপনারা এত সোরগোল করেন কেন?
আয়েশা কে বিয়ে করেছিলেন যখন তার বয়স ৬ বছর ছিল। আচ্ছা বলুন তো-মহানবী যখন প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিলেন তখন আবু বকর আপত্তি করেছিলেন? কেন? মহানবীর বয়স বেশি এজন্য? নাকি অন্যকিছু? বয়স নিয়ে তো আবু বকরের আপত্তি ছিল না। তবে আপনার লাগে কোথায়? আপনি এই সময়ের মানুষ এ জন্য? সময় নেই-তাই খুব সংক্ষেপে বলি-মহানবীর আদর্শ সব সময়ের জন্য ই কিন্তু তিনি তো সেই সময়ের মানুষ। সেই সময়ে এমন কিছু করে ছিলেন যা শুধু সময় টি কে present করে। তাই এখনকার সময় দিয়ে সেগুলো বিচার এর পাল্লায় না তোলাই ভাল। আর ও নানা অভিযোগ করেছেন,শুধু বলি আরেক বার ইসলাম ভালো করে পড়বার। আর সব শেষে -ইসলামের বিধানের চেয়ে ভাল কোন বিধান পাবেন না,সে যত ই অবিশ্বাস করেন। কথা হবে…
@মরুঝড়,
দাদা আমাদের কাছে সেই ইতিহাস নেই যেখানে দেখানো যাবে, আবু বকর আসলেই আপত্তি করে ছিলেন কিনা?
সাফিয়ার কি তখন ওই সংসার না করে আর উপায় ছিলো? আমি জানি আপনি আমার এসব প্রশ্নের ও উত্তর হয়তোবা দেবেন কিন্তু তা তে কি সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে? প্রকৃত সত্য জানা প্রয়োজন।
ভগবান আপনার মঙ্গল করুন।
@মরুঝড়,
আয়েশা সফিয়ার কথা নাহয় বাদই দিলাম,ককিন্তু আপ্নে আমারে একটা ব্যাপার বোঝান, আমাদের দেশে যেসব মেয়েরা যৌতুকের কারনে শ্বশ্বুর বাড়িতে নির্যাতিত হতে হতে শেষ পর্যন্ত মারা যায় তারা কেন প্রথমবার মার খাওয়ার পর স্বামির বাড়ি ছেড়ে পালায় না বা স্বামীরে বিষ দিয়া মারে না। তারা মার খেয়ে বাপের বাড়ি থেকে টাকা নিয়া আবার স্বামীর বাড়ি ফেরত আসে মার খেয়ে বা আগুনে পুড়ে মরার জন্য। তারা কেন আওয়াজ তোলে না যে যৌতুক দিয়া বিয়া করব না। তারমানে কি তারা নির্যাতিত হতে পছন্দ করে। যৌতুক দিতে পছন্দ করে। তাইলে যারা হুদাহুদিই যৌতুক বন্ধ কর বলে চিল্লাপাল্লা কর তাদের দেখে আমার কষ্ট পাওয়া ঊচীৎ।
@শিরোনামহীন,
দুই বিষয়ের প্রেক্ষাপট আলাদা। সাফিয়া এমন একজনের সংসার করেছেন যাকে আপনারা তার গোত্রের হত্যাকারী ঠাওরান। যদিও ঘটনা সেরকম কিছু নয়। গোত্র ভিত্তিক আরব সমাজে ,সাফিয়া পালিয়ে গেলে তাকে দেখবার লোকের অভাব ছিলনা। খুব ভালো হয় যদি সাফিয়ার পুরো জীবনী পড়েন। তাহলেই বুঝবেন। আর আমার সোনার বাংলার কথা কি বলব-ইসলাম না মানলে যা হয় আর কি।
আগে সন্তান জম্মের সাথে সাথে ঠিক করা হত সন্তান বড় হয়ে কি হবে,ডাক্তার না ইঞ্জিনিয়ার না অন্য কিছু?
এখন থেকে মনে হয় ঠিক করা হবে সন্তান বড় হয়ে আস্তিক হবে না নাস্তিক হবে!!!!!!
নাস্তিকতাই মানুষের মুক্তির একমাত্র পথ (Y)
@তূর্য রায়,
নাস্তিকতা কানাগলি ভায়া। এর দৌড় বেশি দূর নয়,একটু দৌড়ালেই দম ফুরিয়ে আসে।
@মরুঝড়, আপনার আরও মন্তব্য দেখে মনে হয়েছে আপনি একজন মুসলিম । একটি জবাব মুসলিমরা হয় বোঝে না অথবা এড়িয়ে যায় । আপনার আল্লাহর স্থান-কাল-ম্যাস এবং উপাদান সম্পর্কে বলবেন কি ?
@khurshid, শুধু আস্তিক রাই এত উত্তর দেবে কেন? নাস্তিক রাও দিক…বলেন কিভাবে আল্লাহ ছাড়াই মহাবিশ্ব হল-? দেখি কেমন দৌড়ান।
@,
এ উত্তর আস্তিকদেরকেই দিতে হবে যে ভাই। কারন মহাবিশ্ব সৃষ্টির জন্য তাদেরই কাউরে প্রয়োজন পরে। যদিও তারা এটুকু বলেই খালাশ যে সৃষ্টিকর্তা বল্লেন হও আর হয়ে গেল। মহাবিশ্ব যদি এম্নি এম্নি না হতে পারে তো আল্লাহই বা এম্নি এম্নি কই থেকে আসলো। আল্লাহ যদি এম্নি এম্নি আসতে পারে তো মহাবিশ্ব আইলে কি সমস্যা? দেখি একটু দৌড়ান তো
@শিরোনামহীন,
বাহ দারুন বলেছেন তো। আছে বললে -প্রমান দিতে হবে আর নাই বললে কিভাবে নাই তা আর বলবেন না। কেমন হল না? আস্তিক-নাস্তিক সবার ই একই অবস্থান। আমাকে আছে প্রমাণ করতে হবে আর আপনাকে নাই।
এই তো মজা। মনে করুন-আপনার বাড়িতে একটা ফুটবল উড়ে এসে পড়ল।
প্রশ্ন১-বল টা কি এমনি উড়ে এসেছে?
প্রশ্ন২-যদি বলেন-এমনি এসেছে,তবে কিভাবে?
এতটূকু বোঝালেই হবে। বাকি প্যাচ পরে খোলা যাবে। দৌড় লাগান,দেখি।
@মরুঝড়,
হ ভাই, খুব ভালা দৌড়ায়ছেন। আমার এক বন্ধু আইসা বলল তার ঘরে প্রতি রাতে একটা হুর পরী আসে। আমি বললাম, ধুর ব্যাটা। হে কইল, বিশ্বাস করলি না। আমি কইলাম, আসে তো প্রমান দেখা। হে কইল, ও আসে কইসি দেখা আমারেই প্রমান দিতে হবে যে হুর পরী আসে, তুই যে বিশ্বাস করলি না, তো তুই প্রমান দে, যে সে আসে না।
আপনি কি বুঝছেন মরুঝড়, আপনের ব্যাপারটা অনেকটা এরকম। আল্লার নাম/ধারনা তো আর নাস্তিকরা আমদানী করেনি। আস্তিক নাস্তিক এর একই অবস্থান কই পাইলেন। আপনেরা, আস্তিকরা চিল্লাপাল্লা করতাছেন আল্লাহ আছে, ভগবান আছে, দেবতা আছে। কিছু মানুষ আপনাদের প্রশ্ন করছে আছে তার কি প্রমান। উলটা আপ্নে চাইয়া বসেন নাই তার প্রমান কি। ভালই।
ভাই, ফুটবল কোথায় থেকে এসেছে তার বাস্তবসম্মত, যুক্তিনির্ভর কারন পর্যন্ত আমি যেতে পারবো। কিন্তু আপনে যেটা করবেন সেটা হল সেই কারনের পরে কাল্পনিক, বিশ্বাসনির্ভর, অবাস্তব একটা কারন দর্শাবেন, যার প্রমান চাইলে ত্যানা প্যাচাবেন। কই দৌড়াব আপনিই কন।
আপনার তথ্য বহুল পোষ্টটির জন্য ধন্যবাদ।”নাস্তিকতা মানুষের মনের স্বাভাবিক অবস্খ” কখাটি মানতে পারলাম না। হয়তো বর্তমান কালের প্রেক্ষাপটে কথাটি আংশিক ভাবে সঠিক, কিস্তু প্রাগৈতিহাসিক যুগের দিকে তাকালে আমার মনে হয় কথাটি একটু ভিন্ন রকম। পৃখিবীর বিভিন্ন স্খানে বিভিন্ন জাতির উৎপত্তি হয়েছিল।কিন্তু সব জাতির মধ্যেই কোন না কোন ধরণের ঈশ্বরে বিশ্বাস ছিল। তাদেরকে কি কোন সুচতুর ব্যাক্তি নিজ স্বার্থের জন্য ঈশ্বর চিন্তা মাথায় ঢুকিয়ে ছিল? আমার মনে হয় না। আমার ধারণা প্রথমদিকে মানুষের অসহায়্ত্ব থেকেই ঈশ্বর ধারণার উৎপত্তি।আদি কালে আগুনকে মানুষ ভয় পেত কারণ তা নিয়ণ্ত্রণ করার সাধ্য মানুষের ছিলনা। সে কারণে তখন আগুনকে পূজা করতো।
পরে ঈশ্বর ধারণাটি প্রাতিষ্ঠনিক রূপ লাভ করে। তখন খেকেই ঈশ্বর কে সুচতুর ব্যক্তিরা নিজ স্বার্থে ব্যবাহর করে। এই আধুনিক যুগেও মানুষ অনেক বিষয়ে অসহায় সে কারণে কোন শিশুকে যদি এখন আস্তিকতা বা নাস্তিকতা কোন বিষয়েই শিক্ষা না দেন তবে তার অসহায়ত্বের সময় ঈশ্বর সংক্রান্ত একটি বিশ্বাস মনে জাগ্রত হতে পারে।এটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত বিশ্লেষণ।
@বিষন্নতা,
কোন প্রানী/শক্তিকে ভয় পেলে কিংবা কোন প্রানী/শক্তির সামনে নিজেকে অসহায় মনে করলেই ঐ প্রানী/শক্তির কাছে প্রাৰ্থনা শুরু করা কি স্বাভাবিক আচরন ???
@তারিক,
এখানে স্বাভাবিকতা বলতে নিজের স্বভাবজাত চিন্তা চেতানার কথা বলা হয়েছে, যা বাহির থেকে কোন ব্যক্তির উপর চাপিয়ে দেওয়া হয় না।ধন্যবাদ।
@বিষন্নতা, ধন্যবাদ ।
Homo habilis মানবরা শাকাহারী (Vegetarian) ছিলো কিন্তু Neanderthal মানবরা তা ছিলো না । শিশু যেমন পারিপার্শ্বিকতা-শিক্ষা-অভিজ্ঞতা এসবের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে তেমনি আদিম মানবের ক্ষেত্রে তার পারিপার্শ্বিকতা ও তার সঙ্ঘর্ষের অভিজ্ঞতা তাকে সভ্যতা গড়ে তুলবার ক্ষেত্রে বস্তুগত ও নীতিগত উপকরণ তৈরিতে সহায়তা দিয়েছে । পৃথিবীর দুটো ভিন্ন প্রান্তের দুটো ভিন্ন জনগোষ্ঠীর বেড়ে ওঠার অভিজ্ঞতা এক ছিলো না । ঈশ্বর বলতে আমরা যে এক সর্বশক্তিমান এবং তথাকথিত ‘অসীম` কোন অস্তিত্বের ধারণা সম্পর্কে জানি – এই ‘সেমিটিক` ঈশ্বরের ধারণা কিন্তু খুব বেশি পুরনো নয়, মাত্র ৪০০০ বছরের পুরনো । এর চেয়ে প্রাচীন কাল্টগুলোতে এমনকি এর পরবর্তী সময়ের অসেমিটিক (Non-Semitic) ধর্মগুলোতে এধরণের ঈশ্বরের অস্তিত্ব পাই না বরং মানবিক গুণ সমৃদ্ধ দেব-দেবী-দের আধিক্য দেখি ।
মানুষের সবচেয়ে সহজাত বৈশিষ্ট্য খুঁজতে গেলে প্রাচীন মানবের সংস্কৃতি লক্ষ্য করাটা ভুল হবে । কারণ আগেই উল্লেখ করেছি, তার পারিপার্শ্বিক প্রকৃতি, জীবজগত্, খাদ্য ও পরিবেশগত প্রভাবের কারণে তার ভেতর বিভিন্ন পরিবর্তন সূচিত হয়েছিলো । আমাদেরকে এক্ষেত্রে শিশু মনোস্তত্ত্ব (Child Psychology)-এর সাহায্য নিতে হবে । যদি এই শিশু কয়েক অযুত বছর পূর্বের অভিজ্ঞতার বদলে যদি আধুনিক বিজ্ঞান শিক্ষার ভেতর দিয়ে বড় হয় তবে তার পক্ষে বস্তুবাদী হওয়াই স্বাভাবিক । তবে কোন শিক্ষা ছাড়া একটি শিশুকে গড়ে উঠতে দিলে সম্ভবত: একরকম অজ্ঞেয়বাদিতা (A particular kind of agnosticism) হতে পারে তার মৌলিক বৈশিষ্ট্য । এক্ষেত্রে মনোস্তত্ত্ব নিয়ে বড় রকমের কাজ করার সুযোগ রয়েছে ।
@khurshid,
যে ব্যক্তি দেব, দেবী আগুন, গাছ, বা ঈশ্বর কে উপাসরা করে সে নিশ্চয় নাস্তিক নয়?
ঠিক তাই। কিন্তু অদ্ভুত বিষয় হল সব জনগোষ্ঠীরই ডেইটি ছিল অর্থাৎ তারা কেউ নাস্তিক ছিলনা।কাজেই এসবের আলোকে বলা যায় যে নাস্তিকতা মনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া না।
বিজ্ঞান হচ্ছে মূলত বস্তুবাদী চিন্ত চেতনা, যা আস্তিকতার কিছুটা বিপরীত। একজন শিশুকে যদি শুধু বিজ্ঞান শিক্ষা দেন তবে তার মধ্যে নাস্তিকতা চিন্তা চেতনা গড়ে উঠার সম্ভাবনা থাকে। অতএব শুধু বিজ্ঞান শিক্ষায় শিক্ষিত একটি শিশুর চিন্তা চেতানাকে যেমন ঠিক নেচারাল বলা য়ায় না, ঠিক তেমনি ভাবে ধর্ম শিক্ষায় শিক্ষিত শিশুর চিন্তাকে স্বাভাবিক চিন্ত বলা যায় না।
নাস্তিকতা মানে কোন প্রকার ডেইটিকে অস্বীকার করা, অতএব কোন শিশুকে নাস্তিকতা শিখতে হলে প্রথমেই তাকে ডেইটি সম্পর্কে জানতে হবে, তার পর তাকে স্বীকার বা অস্বীকার করার প্রশ্ন আসবে।একেবারে প্রকৃতির মাঝে গড়ে উঠা একটি শিশুর মধ্যে হয়েতা ডেইটি সম্পর্কে কোন ধারণারই জন্ম নেবে না (যদিও পৃখিবীর আদি ইতিহাস অন্য কথা বলে)।যদি কোন ব্যক্তির এই অজ্ঞতা কে নাস্তিকতা বলেন তবে অবশ্য নাস্তিকতা মনের স্বাভাবিক অবস্থা হলে হতেও পারে। কিন্তু আমার জানা মতে নাস্তিকতা হলো যে কোন ডেইটিকে অস্বীকার করা, ডেইটি সম্পর্কে অজ্ঞতা নয়।
সহমত।যতদিন সে রকম কাজ না হচ্ছে ততদিন “নাস্তিকতা মানুষের মনের স্বাভাবিক অবস্খ” একথা বলা ঠিক মুক্ত মনের পরিচায়ক নয়।ধন্যবাদ।
@বিষন্নতা,
আপনার এ কথার সাথে একমত, সম্ভবত কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, নিচে আলাদা ভাবে মন্তব্যাকারে দেয়া হয়েছে, দেখুন ।
@বিষন্নতা,
@বিষন্নতা,
মানব বিবর্তনের শুরুতে ঈশ্বরের আগে এসেছে পুনঃজম্মের ধারনা। পুনজন্ম ভিত্তিক ধর্ম যেমন জৈন ধর্মগুলি এসেছে ঈশ্বর ভিত্তিক ধর্মের আগে। আপনি জৈন ধর্ম নিয়ে আমার লেখাটা পড়তে পারেন।
http://blog.mukto-mona.com/?p=28847
সুতরাং ঈশ্বরভিত্তিক চিন্তা স্বাভাবিক না-এটা এসেছে কারন ঈশ্বর ভিত্তিক চিন্তা উন্নততর রিপ্রোডাক্টিভ ফিটনেসের জন্ম দিয়েছিল মানব বিবর্তনে। অর্থাৎ মেয়েদের দাবিয়ে রেখে জোর করে ৬-৭ টি সন্তানের জন্ম না দিতে পারলে, সেকালে, কোন সমাজের টিকে থাকা ছিল অসম্ভব যেহেতু শিশুমৃত্যু ছিল অনেক বেশী। এছারা মিলিটারি কারন ত ছিল ই।
উন্নততর চিকিৎসা, শিল্প এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থার সাথে সাথে ধর্ম এবং ঈশ্বরের মৃত্যু অনিবার্য্য এই শতকে।
@বিপ্লব পাল,
ধর্মের মৃত্যু এ জন্য হবে না,তা বিজ্ঞান যত উন্নত ই হোক। কিছু জিনিস মানুষের বাইরে থাকবে চিরকাল। তবে বিলুপ্ত হবে এটা মানি-তবে সেটা র কারণ মানুষের জ্ঞান সাধনা নয়-ভোগ সাধনা। আজ থেকে ৩০/৪০ বছর পর মানুষ শুধু দেখতেই মানুষ এর মত হবে।
বিজ্ঞান নিয়ে অত বেশি আত্ম বিশ্বাসী হবেন না। আমরা আমাদের দুচোখ দিয়ে মহাকাশের অনেক দূর পর্যন্ত দেখতে পাই-অথচ চোখের চার ইঞ্চি পিছনেই যে ঘাড় তাই দেখতে পাইনা। মানুষ কে কিছু সীমাবদ্ধতা দিয়েই তৈরি করা হয়েছে। তাই লাফালাফি মানুষের বেশি মানায় না। বাকি থাকে ধর্ম । একটা ধর্মহীন বিশ্বের কল্পনা করে বেশ আনন্দ পান বলে মনে হচ্ছে। লিখে নিন-ধর্ম ছেড়ে এখনি মানব চিত্তের বৈকল্য দেখা দিয়েছে,আর কিছু কাল পরেই যেখানে সেখানে সাইকিয়াট্রিস্ট দের চেম্বার বসবে। আর যদি ভাবেন ধর্ম বিলুপ্ত হলে পৃথিবী শান্তি তে ভরে যাবে তাহলে বলব-অলীক কল্পনা আজই বাদ দিন। আধ্যাত্মিক শান্তি দেবার ক্ষমতা একমাত্র ধর্মেই আছে।
আগে ১০/১২ সন্তান নেয়া টা ছিল স্বাভাবিক কিন্তু অস্বাভাবিক আপনার শব্দ চয়ন। জোর করে ,দাবিয়ে রেখে কথা গুলো কেন যে লিখেন?
@মরুঝড়,
স্বাভাবিক বলতে কি বোঝাতে চাচ্ছেন? প্রচলিত বলতে চেয়েছিলেন মনে হয়। সব প্রচলিত আচারই কিন্তু সকলের জন্য স্বাভাবিক নয়। জোর করার কথা, দাবিয়ে রাখার কথা উঠছে কারন বিভিন্ন রকম পন্থা থাকা সত্তেও মেয়েদের লড়াই করতে হয়েছে (এবং সে লড়াই এখনও শেষ হয়েছে বলা যায়না,) তার নিজের শরীর নিয়ে সে কি করবে সেই সিধান্ত টুকু শুধু নেয়ার জন্য।
বিপ্লব পাল যে অর্থে বললেন তার কিছু পর কিন্তু এই দাবিয়ে রাখার উদ্দেশের সাথে আরও যোগ হয় ধর্মীয় গোঁড়ামি ও স্বার্থপরতা।
কনডম তো অনেক আগে থেকেই ছিল, কিন্তু কজন পুরুষ ব্যাবহার করতে রাজী হত? কিন্তু তারপর বার বার গর্ভধারন করা আর সে বাচ্চাদের জন্ম দিয়ে বড় করতে করতে কার জীবনটা শেষ হয়ে যেত? এমনকি ডিস্ক জাতীয় কিছু ব্যাবহার করার জন্য কয়েক বাচ্চার মা, বিবাহিত মহিলাদের পর্যন্ত কি পরিমান যে কাঠ খড় পোড়াতে হত !
হরমনাল কন্ত্রাসেপ্সন উদ্ভাবিত হয় সেই গত শতাব্দির বিশের কোঠায়, কিন্তু তখন সেটা সেই উদ্দেশে ব্যাবহারের কথা কেউ উচ্চারণই করতে পারতনা। লুদ্ভিগ হেবেরলান্দত ১৯২১ সালে তা করার চেষ্টা করলে তাকে এমনই রোষের সম্মুখীন হতে হয় যে তিনি আত্মহত্যাই করেন শেষ পর্যন্ত। ইউরপের বেশির ভাগ দেশে কন্ত্রাসেপ্তিভ পিল বৈধতা পায় মাত্র ষাট সত্তর দশকে এসে। সব দেশে এখনও গর্ভপাত করান যায়না বৈধ ভাবে।
গত বছর আয়ারল্যান্ডে অন্তসন্তা সবিতার হঠাত প্রচণ্ড রকম রক্ত খরন শুরু হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তার জীবন বাঁচানোর জন্য গর্ভপাত করান দরকার ছিল তক্ষুনি। কিন্তু ধরমভিরু সে দেশের আইনে তা নিষিদ্ধ হওয়ায়, ডাক্তার অস্বীকৃতি জানান। ফলাফল ঈশ্বর প্রদত্ত ভ্রূণও গেল, সবিতার প্রান ত বটেই। যুক্তরাষ্ট্রে ত আবার বেশ কিছু জায়গায় এখন মেয়েদেরকে মনে করা হয় শধু মাত্র সমাজের গর্ভ। মোট ৩৫টী স্টেটে বলবত আছে ফেটীসাইড ল। কিভাবে এই আইন প্রয়োগ করা হয় বলি একটু। গর্ভাবস্থায় উঁচু জুতো পড়ে হেঁটেছ, গর্ভপাত হয়ে গেছে? সিঁড়ি থেকে পড়ে গেছ, গর্ভপাত হয়ে গেছে? জোরে গাড়ী চালিয়েছ, গর্ভপাত হয়ে গেছে? তোমার বয়স ১৫ বছর, পেটে বাচ্চা তারপরও মাদকাশক্ত, গর্ভপাত হয়ে গেছে? যাও তাহলে জেল খাট গিয়ে! এই হল অবস্থা!
আর বাংলাদেশে? এই সেদিনও, এক মহিলা তিন বাচ্চার মা আবারও গর্ভবতী হয়ে বলছিলেন যে তিনি ক্লান্ত, কোন বাচ্চাকে পরিপূর্ণ করে ভালবাসার, নিজে বাঁচার, গড়ে ওঠার কোন সময় আর শক্তিই তিনি আর পাচ্ছেননা। জন্মনিরধক ? (বাংলাদেশে তো আবার বলতে হয় জন্মবিরতিকরন। শুধু বিরতি দেয়া হচ্ছে, তারপর আবার হবে।) স্বামী মহদয় বলেছেন তাতে নাকি আল্লাহর বিরুদ্ধে যাওয়া হয় !
ভ্যাটিকানের বিরোধিতা, মুখ দিয়েছেন যিনি অন্ন দেবেন তিনি, এসবের মাশুল যেহেতু মেয়েদেরকেই গুনতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে, তো এটাকে দাবিয়ে রাখা আর জোর করা বলবেন না তো কি বলবেন?
@কেউ,
ভাই আপনি তো দেখি গোটা বিশ্ব ঘুরে আসলেন। আরে ভাই আমাদের দাদী নানীদের দেখেন-১০/১২ টা করে ছেলে-মেয়ে। তো সেই সময়ে না ছিল কন্ডমের চল, না ছিল পিল। এখন বলেন-নানী-দাদীদের কি করার ছিল? নানা-দাদাদেরই বা কি করার ছিল।? স্বাভাবিক ভাবেই তারা যৌন মিলনে গেলেই-ফলাফল বছর শেষে আরেক জন নতুন …এখানে জোর করে, দাবিয়ে রেখে কথাগুলো কি মানান সই। তাই বলে ছিলাম যে স্বাভাবিক।
আয়ারল্যান্ড এর উদাহরণ দিয়েছেন
ইসলামে এরকম কোন সমস্যা নেই। আর গোড়ামি ধর্মে নয়-মানুষের মাঝে আছে বা থাকে।
কথাটি যে অর্থে বলা তার অর্থ ঠিক আছে। পৃথিবীতে যে ফসল হয় তা কি আমাদের চাহিদার চেয়ে কম? তবে খাদ্য রাজনীতি র কথা বললে অবশ্য ঝামেলা হবে।তবে আল্লাহর পৃথিবী তে কোন কমতি নেই। তবে যে কথা বলার জন্য এত কিছু তা হল-আপনি জন্মনিয়ন্ত্রন করেন বা বিরতি যা খুশি করুন কিন্তু আসল কথা হল-প্রাণ নিয়ন্ত্রন করবেন না। এত টুকু হলেই হবে। কথা হবে…
তথ্যবহুল বিশ্লেষন । (Y)
নাস্তিকতা মানুষের মনের স্বাভাবিক অবস্থা । আস্তিকতা হচ্ছে মনের বিকৃত অবস্থা । এটাই চরম সত্য ।।।