[১]
আসিফ, সুব্রত, রাশেল এবং বিপ্লব। সত্য কথনের পুরষ্কারস্বরূপ এরা এখন বাংলাদেশের জেলে। গান্ধী লিখেছিলেন, এই দুনিয়াটাই এত অসততা এবং নির্মমতার আধার, জেল ছাড়া, সৎ লোকের অন্য কোন ঠাঁই নেই! পয়লা বৈশাখের আনন্দের দিন আজ বিষাদঘন বেদনার আধার। এই চার সৎ নির্ভীক যোদ্ধার নাম বাংলাদেশের ইতিহাসে একদিন প্রগতিশীলতার উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত হিসাবে লেখা থাকবে। সমাজ বিজ্ঞানীরা মনে করেন, আজ থেকে একশ বছর ভবিষ্যতে-ধরুন এই ২১০০ সালে, প্রথাগত ধর্মের অস্ত্বিত্ব থাকবে না। কেন এমন হবে এই নিয়ে আমার একটি বিস্তারিত ব্লগ আছে অধ্যাপক ভিগনারের কাজের ভিত্তিতে।
ভাবুন সে এক পৃথিবী যেখানে বাংলাদেশ নেই, ইসলাম নেই। আছে একটাই দেশ-পৃথিবী-একটাই ধর্ম মানবতা। ভবিষ্যতের সেই পৃথিবী এই চার নাস্তিক ব্লগারের কারাবাস কিভাবে দেখবে? শুধু ঈশ্বরের অস্তিত্ব অস্বীকার করার জন্য এবং হজরত মহম্মদের সমালোচনার জন্য চার জন সৎ সমাজদ্রষ্টাকে রাষ্ট্র জেলে পাঠিয়েছে? আল্লা বা ঈশ্বর অস্তিত্বহীন মিথ । সেই অস্তিত্বহীন মিথের অত্যাচারে যদি বিজ্ঞানমনস্ক জনমানসকে কোন রাষ্ট্র ধ্বংস করতে উদ্যত হয়, সেই রাষ্ট্রের ভবিষ্যত প্রজন্মের কি হবে?
তেল খননে ফ্রাকচারিং এর আবিস্কারের সাথে সাথে মধ্যপ্রাচ্যে তেলের অর্থনীতি ধ্বংস হওয়ার দিন সমাগত। বড়জোর আর এক দশক। এর মধ্যেই সৌদি আরব থেকে অধিকাংশ বাংলাদেশী এবং ভারতীয় শ্রমিকদের তাড়ানো শুরু হয়েছে। তেলের টাকায় ইসলাম করার দিন শেষ। বাংলাদেশের ওই ক্ষুদ্র জমিতে এত লোক। বিজ্ঞানভিত্তিক সমাজ এবং রাষ্ট্র না গড়তে পারলে, পাকিস্তানের মতন পঙ্গু ধর্মীয় রাষ্ট্রে পরিণত হবে বাংলাদেশ। রাষ্ট্রের জনগণকে উন্নত করতে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তর ছাড়া বিকল্প কি আছে? আল্লা কেও মানুক বা না মানুক-আশা করি বাংলাদেশের ধর্মভীরু জনগণ ও এত আহাম্মক না যে তারা মনে করে আল্লাপাক তাদের বসে বসে খাওয়াবে!
[২]
নাস্তিকতা মানুষের মনের স্বাভাবিক অবস্থা। আস্তিকতা হচ্ছে মনের বিকৃত অবস্থা। প্রতিটা শিশু যখন জন্মায় সে আল্লা, ঈশ্বর-হিন্দু মুসলমান কিছুই জানে না। প্রতিটি শিশুই নাস্তিক। এরপর তার মাথায় আল্লা, ঈশ্বর গড ভূত ভগবান এসব ঢোকানো হয়। ভয় দেখিয়ে জোর করে প্রতিটি শিশুকে আস্তিক বানানো হয়। ঈশ্বরে বিশ্বাস একধরের ব্রেইন ড্যামেজ। যা ছোটবেলায় শিশুমনে ভয় দেখিয়ে ঢোকানো হয়।
যদি ভয় দেখানো না হয়, যেকোন শিশু, তার নিজের স্বাভাবিক বিচার বুদ্ধিতেই এইসব আল্লা ঈশ্বরের গাঁজাখুরি গল্পে হাসাহাসি করবে। আমার সাত বছরের শিশুপুত্রকে কোন দিন আমি বলি নি ঈশ্বরের অস্তিত্ব নেই। বরং আমি তাকে ভারতীয় সংস্কৃতি শিক্ষার জন্য মন্দিরে পাঠাচ্ছি আবার তার সাথে বিজ্ঞানের অনেক ডকুমেন্টারি ও দেখি। আজকাল সে আমাকে বলছে, আচ্ছা এই অস্তিত্বহীন ঈশ্বরের পেছনে লোকে এত সময় নষ্ট করে কেন?
এখন এই প্রশ্ন যদি বাংলাদেশের কোন শিশু তার বাবাকে করে, সে নিশ্চয় বকাবাকি বা মারধোর খাবে। বা অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিশুটি এই ধরনের কোন প্রশ্ন তুলবেই না কারন আমার পুত্র যত বিজ্ঞানের ডকুমেন্টারী দেখার সুযোগ পায়, সে হয়ত পাবে না। অর্থাৎ আস্তিকতা, ঈশ্বরে বিশ্বাস একজন শিশুর ওপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়। নাহলে পৃথিবীর প্রতিটি শিশু, যারা বিজ্ঞানকে জানতে জানতে বড় হবে, তারা কোনদিন ঈশ্বর বিশ্বাসী হতে পারে না।
কিন্তা তাহলে ঈশ্বরের সৈনিকরা বিবর্তনের খেলায় বিজয়ী হোল কি করে? কি করে তারা দখল করে বসল রাজনৈতিক ক্ষমতা? এর উত্তর ও ইতিহাস থেকে সহজেই পাওয়া যায়।
সমাজ বিন্যাসের প্রথম ধাপেই ঈশ্বরের জন্ম হয় নি। প্রথমে জন্ম হয়েছে একটি মৌল প্রশ্নের। জীবনের উদ্দেশ্য কি? এটি কি একটি মাত্র জীবন ? কারন জীবন যদি শুধু ক্ষণস্থায়ী বর্তমান হয়, অধিকাংশ লোক একটি নিয়ানুবর্তিক সমাজবিন্যাসের দিকে যাবে না। এই জন্য মানব সমাজে ঈশ্বরের জন্মের পূর্বে এসেছিল পুনঃজন্মের ধারনা। অর্থাৎ আবার জন্ম হবে। এই মিথের ওপর ভিত্তি করে পৃথিবীর সব থেকে আদিমতম ধর্ম সম্ভবত জৈন ধর্ম ( এই নিয়ে অতীতের একটি আলোচনা এই প্রবন্ধে পাওয়া যাবে )।
পুনঃজন্ম যেমন একটি শক্তিশালি মিথ-ঠিক তার পরেই জন্ম হয় ঈশ্বর বা আল্লা নামক মিথের। যা ইতিহাসে আরো শক্তিশালী রাষ্ট্র এবং সমাজব্যাবস্থার জন্ম দিতে সক্ষম হয়।
এই দিক থেকে ভারতের ইতিহাস খুব গুরুত্বপূর্ন। ভারতের প্রথম ঐতিহাসিক সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্য এবং তার সমসাময়িক ইতিহাসে দেখা যাবে ধর্ম তখনো প্রতিষ্ঠানিক না। সব ধরনের ব্যাক্তি সেখানে আছে। সম্রাট ধননন্দের রাজ সভায় দেখা যাবে রাজা নিজে শুদ্র এবং তান্ত্রিক। তার মূল ডানহাত বা সিকিউরিটি প্রধান কাত্যায়ন বৌদ্ধ। নন্দ বংশের প্রধানমন্ত্রীরদল আবার বৈদিক ব্রাহ্মন । চানক্য নিজে ছিলেন ব্রাহ্মন শিক্ষক। অথচ তার প্রধান শিষ্য চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্য ৪২ বছর বয়সে সাম্রাজ্য ছেড়ে জৈন সন্নাস্যী হয়ে গৃহত্যাগ করেন। চন্দ্রগুপ্ত বৈদিক হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেন নি। আবার তার পুত্র বৈদিক হিন্দু এবং পৌত্র অশোক হলেন বৌদ্ধ। ভারতের এই সময়ের দর্শনের ইতিহাস খুব সমৃদ্ধ। কারন সবার ধর্মচারনের স্বাধীনতা ছিল। গুরু তার শিষ্যকে বা পিতা তার পুত্রকে জোর করে নিজ ধর্মে চাপতেন না। না সমাজ, ব্যাক্তির ওপর ধর্মকে চাপাত। এই উদার ধারা বাঙালী সমাজেও বিদ্যমান ছিল বৌদ্ধ পাল রাজবংশ পর্যন্ত।
ব্যাক্তির ওপর ধর্মকে জোর করে চাপানোর এই ইতিহাস বাংলাতে শুরু হয়, সেন রাজবংশ থেকে। সেন রাজারা অহিন্দু বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির ওপর জোর করে বৈদিক হিন্দু ধর্ম চাপানো শুরু করে। বাঙ্গালী কোন কালেই বৈদিক হিন্দু ছিল না। ফলে সেন রাজাদের বিরুধে বাঙালী জনগোষ্ঠির অজস্র বিদ্রোহ হয়-এবং সেন রাজারা কোনদিন পালরাজাদের মতন জনপ্রিয় হতে পারেন নি। এর জন্যেই আমরা দেখি মাত্র ১৮ জন ঘোরসওয়ার নিয়েই লক্ষন সেনকে পালাতে বাধ্য করেন বখতিয়ার খিলজি। কারন সেনেরা তখন জনবিচ্ছিন্ন। এরফলশ্রুতি স্বরূপ বাঙালীরা দলে দলে রাজধর্ম ইসলামে ধর্মান্তরিত হতে থাকে। এই পক্রিয়া চলতে থাকে শ্রীচৈতন্যের সংস্কার আন্দোলন পর্যন্ত-যা আবার একটি উদারনৈতক সহজিয়া বাঙালী ধর্ম তৈরী করে।
[৩]
বাঙালী মুসলমানরা নামেই ছিল মুসলমান। ধমনীতে ছিল সহহিয়া ধর্ম। ফলে বৌদ্ধ সহজিয়া ধর্ম আস্তে আস্তে ইসলামিক সহজিয়া ধর্মে রূপান্তরিত হয় । শাহ জালালের মতন সুফীরা এই ছিলেন এই রূপান্তরের ক্যাটালিস্ট। কিন্ত সেই ইসলাম আরবের খেজুর কাঁটার ওয়াহাবি ইসলাম না। বস্তুত নিম্নমধ্যবিত্ত বা গরীব বাঙালীর ধর্মে কোন পার্থক্য ছিল না- গরীব বাঙালী ফকির, বৈষ্ণব, সুফী ইত্যাদি সহজিয়া পথেই ছিল দীর্ঘকাল। বাঙলা ভাষাতে কোন কোরান ছিল না সেই ১৮৮৭ সাল পর্যন্ত। এবং প্রথম কোরান যিনি বাংলায় লিখলেন, সেই গিরিশ ভাই একজন ব্রাহ্ম। কেশব চন্দ্র সেনের নববিধান সভা, কোরানের বঙ্গানুবাদ করার খরচ দিয়েছিল। শুধু তাই না-বাংলার আলেমগন গিরীশচন্দ্রকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে লিখেছেন ”
আমরা বিশ্বাস ও জাতিতে মুসলমান। আপনি নিঃস্বার্থভাবে জনহিত সাধনের জন্য যে এতোদৃশ চেষ্টা ও কষ্ট সহকারে আমাদিগের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআনের গভীর অর্থ প্রচারে সাধারণের উপকার সাধনে নিযুক্ত হইয়াছেন, এজন্য আমাদের আত্যুত্তম ও আন্তরিক বহু কৃতজ্ঞতা আপনার প্রতি দেয়।
”
“
কুরআনের উপরিউক্ত অংশের অনুবাদ এতদূর উৎকৃষ্ট ও বিস্ময়কর হইয়াছে যে, আমাদিগের ইচ্ছা, অনুবাদক সাধারণ সমীপে স্বীয় নাম প্রকাশ করেন। যখন তিনি লোকমন্ডলীয় এতোদৃশ্য উৎকৃষ্ট সেবা করিতে সক্ষম হইবেন, তখন সেই সকল লোকের নিকট আত্ন-পরিচয় দিয়া তাঁহার উপযুক্ত সম্ভ্রম করা উচিত।”
আমার ধারনা এই সহজিয়া ভাবটা নষ্ট হয়েছে ১৯৮০ সাল থেকে-যবে থেকে আরবের পেট্রডলারে খেজুর কাঁটাআলা ইসলামের আমদানী হয়েছে বাংলাদেশ [ এবং ভারতেও]।
তিতুমির এর সময় থেকেই ওয়াহাবিদের একটা ক্ষীন প্রভাব বাংলাতে ছিল। নোয়াখালির দাঙ্গার পেছনে, সেই ওয়াহাবিদের প্ররোচনা কাজ করেছে। কিন্ত ১৯৮০ সাল থেকে এরা প্রচন্ড টাকা ঢালে ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে। পাকিস্তান এর মধ্যে উচ্ছন্নে গেছে। ভারতে মুসলমান-হিন্দু টেনশন ক্রমাগত বাড়ছে।
আর বাংলাদেশ হচ্ছে একমাত্র দেশ, যে দেশের একটা বিশাল সংখ্যক বুদ্ধিজীবি এই ওয়াহাবি খেজুর কাঁটার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সাহস দেখিয়েছে। কিন্ত দেখা যাচ্ছে, সেই জয় ক্ষণস্থায়ী। বাংলাদেশী সরকার ধর্মীয় মৌলবাদের পায়ের ধূলোধোয়ার জন্য নাস্তিক ব্লগারদের কারাগারে নিক্ষেপ করল। বৃটিশ ভারতে ডিরোজিওর শিষ্যরা হিন্দু ধর্মকে আক্রমন করে। তারা হিন্দু দেবদেবী নিয়ে ব্যাঙ্গ করত। সেই আক্রমনের জন্য পরবর্ত্তীকালে হিন্দু ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের জন্ম হয়। ডিরোজিওর বিরুদ্ধেও হিন্দুদের আক্রোশ ছিল-কিন্ত তার জন্য ডিরোজিও বা তাদের শিষ্যদের আজ থেকে দুশো বছর আগে জেলে যেতে হয় নি। আর সেই জন্য হিন্দু ধর্মে সংস্কার কিছুটা এগিয়েছে।
অথচ বাংলাদেশে সেটুকুও সম্ভব হল না। ফলে বাংলাদেশের মৌলবাদি পচন অব্যাহত থাকবে যদ্দিন না সেই পচনশীল সমাজ ক্ষুদার অভাবে বিদ্রোহ ঘোষনা করে, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিকে গ্রহণ করবে। এই শতাব্দিতে ধর্ম হচ্ছে সেই পচা মাছ, যা শাক দিয়ে ঢাকা যায় না। বাংলাদেশ কেন পৃথিবীর কোন দেশের কোন সরকার পারবেনা ধর্মের দুর্গন্ধকে আটকাতে।
মুক্তমনার সব পাঠকদেরকেই আহ্বান জানাচ্ছি, লেখার ওপর সুনির্দিষ্ট মন্তব্য করুন, যুক্তি দিন । কোন যুক্তির অবতাড়না না করেই জনৈক ‘সিরাজুল ইসলাম`-এর মতো কম আই.কিউ. সম্পন্ন লোকজন কর্তৃক কোন লেখককে ‘জ্ঞানহীন` বলা থেকে বিরত থাকুন । একমাত্র সঠিক যুক্তি প্রদর্শনের পরই এধরণের মন্তব্য করুন । বাকিটা আপনাদের আই.কিউ. এবং রুচিবোধের ওপর ছেড়ে দিলাম ।
আল্লা বা ঈশ্বর অস্তিত্বহীন মিথ ।
এটা নিতান্তই আপনাদের মত ধর্ম জ্ঞান হীনদের অনুমান মন্তব্য মাত্র।মূলতঃ আল্লাহ বা ইশ্বরই একমাত্র অস্তিত্ববাণ,আর সকল সৃষ্টিই অস্তিত্বহীন।
এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে চাইলে,আমি আলোচনা করতে ও স্রষ্টার অস্তিত্ব দেখাতে রাজি আছি।
সত্য সহায়।গুরুজী।।
@সিরাজুল ইসলাম,
ঠিক আছে। এখানে আল্লার অস্তিত্বর সপক্ষে ১০ টি সেরা যুক্তি লিখুন।
@বিপ্লব পাল,
আপনি প্রথমেই চাইলেন
আমি যুক্তি নয়,দেব আল্লাহর অস্তিত্বের তথ্য।
তার আগে আপনাকে জানতে ও চিনতে হবে আল্লাহ কি?আপনি কি জানেন আল্লাহ কি?
আপনি কোন আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমান চান?কোরানে বলা আল্লহর, না কু-সংস্কারবাদীদের বলা অদৃশ্য আল্লাহর?
সত্য সহায়।গুরুজী।।
@সিরাজুল ইসলাম, যাঁকে তাঁকে জ্ঞানহীন বলা থেকে বিরত থাকুন, খারাপ অভ্যাস । এতই যদি জ্ঞানী তবে ঈশ্বরের আকার, আয়তন, ভর, আণবিক গঠন এবং পৃথিবী থেকে তাঁর অবস্থানগত দূরত্ব সম্পর্কে বলুন । মহাজগতে অসীম স্থান ও অসীম সময় বলে কিছু নেই । তাই এদুটো বাদ দিয়ে বলুন । আর কারো জ্ঞান সম্পর্কে মন্তব্য করবার ক্ষেত্রে ভদ্র হন এবং আরও জ্ঞান অর্জন করুন ।
@khurshid,
আমি যাকে তাকে জ্ঞানহীন বলিনি।যিনি ধর্ম ও আল্লাহ বিষয়ের সঠিক জ্ঞান রাখেন না,এবং তার উপর মন্তব্য করেন তাকে আমি ধর্ম ও আল্লাহ বিষয়ে জ্ঞানী বলতে পারিনা।আমি শুধু জ্ঞানহীন শব্দ ব্যাবহার করিনি ,আমি বলেছি ধর্ম জ্ঞানহীন।
আপনি কোন আল্লাহর অস্তিত্ব জানতে চান?কোরানের বলা আল্লাহর না কু-সংস্কারীদের আল্লাহর?
সত্য সহায়।গুরুজী।।
@বিপ্লব পাল,
আমাদের দেশে একটা কথা প্রচলিত “আগরতলা আর চৌকির তলা এক না”।
গলা ছেড়ে চিত্কার করলেই সেটা গান হয় না। সব হাইপোথিটিকাল বিষয় সবার সাথে যায় না। মূল বিষয়টা হল আইন, এটা সবার জন্য একই। আইনটা ভাল না খারাপ সেটা অন্য স্টেজের তর্কের বিষয়। আর কেউ গ্রেফতার হইলেই সে দোষী হয় না। আইন যদি না ভাঙ্গে তবে তারা এমনিতেই মুক্ত হয়ে আসতে পারবে এতে কোন সন্দেহ নেই। আমি আসিফ ভায়ের উপর বিরক্ত ছিলাম শুধুমাএ শোনা কথার উপর ভিত্তি করে। তার একটি আর্টিক্যাল পড়ে আমার তাকে অনেক ভাল লাগছে। লাইফে অনেক খুশি হব তার সাথে কখোনো দেখা হয়ে গেলে।
আমি একবার সমরেশ মজুমদারের একটা সাক্ষাতকার পড়ছিলাম ওনি বলছিলেন- ধর্ম নিয়ে অনেক কিছু বলতে ইচ্ছা করে কিন্তু ভারতের সুপ্রচলিত দাঙ্গার ভয়ে ওনি কিছু বলেন না। আমি জানি না ভারতে বাংলাদেশের মত ধর্মীয় আনুভূতি ও ব্যাক্তিগত অনুভূতি নিয়ে কোন আইন আছে কিনা তবে বাংলাদেশে এটা আছে তাই আমাদের সবার ভাল লাগুক আর নাই লাগুক সেটা মেনে চলতে হবে। আইনের দৃষ্টিতে দোষী হয়ার পর আইন নিয়ে টানা – টানি করার মত কাপুরষতা আর আছে কিনা আমি জানি না।
যদি তাই হয় মাদার তেরেসা, অমর্ত সেন, হুমায়ুন আহমেদ, হুমায়ুন আজাদ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সোনিয়া গান্ধী তারা জেলে গেলেন না কেন। তাহলে যারা জেলে আছে সবাই সত এবং আমরা সবাই মিথ্যাবাদী। যাই হোক বিষয়টা আমি বলার জন্য বলা বলে মেনে নিলাম।
কেন তারা আইন ভাঙছে তাই!!!!!
যাক এতদিন জানতাম মুহাম্মদ (স) আয়েশা (র) কে বিয়ে করে যুদ্ধ করে ইসলাম প্রচার করেছেন। এখনকার মুসলমানরা গলাকেটে ইসলাম প্রচার করছেন।যাক তাহলে দেখা যাচ্ছে ইসলাম এখন তেলের উপর ভাসছে। গ্রেট তেল থিউরি!!!!!!
এর কী কোন বৈজ্ঞনিক সত্যতা আছে মানে মাথার কোষ বা অন্য কিছু কী ক্ষয় হয়? কৌতুহল বশত প্রশ্নটা করলাম।
আপনার ছেলের যে বয়স তাতে তাকে ইস্বর নাই বল্লে সে এটা বিশ্বাস করবে আবার যদি বুজান ইশ্বর ৩৩ লাখ সেটাও সে বিশ্বাস করবে। এ ধরনের উদ্ধৃতি দেয়াটা উদ্দেশ্যমূলক ছাড়া আর কিছু না।
আপনার এই ধরনের মারধোরের চিন্তা আসলো কেন বুজলাম না। এই উদ্ধৃতিটি নিছক কল্পনা ছাড়া আর কিছু না। আচ্ছ আপনার ছেলে যদি কালকে থেকে ধার্মিক হয়ে যায় আপনি কী তাকে মারধর করবেন? জানার ইচ্ছা থেকে বল্লাম।
তা আপনি শিয়র হলেন কী করে? আপনার কাছে এ বিষয়ে ওহী নাজিল হয়েছে কি না জানার ইচ্ছা রইল।
যাই হোক স্টেফেন হকিং এর রিসেন্ট গবেষনা থেকে জেনেছি আমরা পদার্থ ছাড়া আর কিছু না। আমার মনে সন্দেহ আছে আপনি তাও কিনা। সুধুমাএ নিজের তত্ব প্রচার করার জন্য অদ্ভুত অদ্ভুত হাইপোথিসের ব্যবহার, সব শেষে নিজশ্ব ভিত্তিহীন তাত্বিক ঐতিহাসিক গবেষনা আপনার লেখাটা বালখিল্য পর্যায় নিয়ে গেছে।
আমার জানা মতে মুহাম্মদ (স) এর কোন ছেলে ছিল না। তা আপনি ওনার জীবনী কোথায় পড়েছেন পড়ার ইচ্ছা রইল। 😕
@ইফতেখার মাহমুদ বুলবুল,
আপনি মুসলমান এবং তারপরেও জানেন না হজরত মহম্মদ তার পালিত পুত্র জায়েব এর বৌ জয়নাবকে প্রেম নিবেদন করেন এবং জয়নাব ও মহম্মদের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন এবং তার স্বামীকে ডিভোর্স করে প্রফেটকে বিবাহ করেন। সেই অধ্যায় এখানে লেখা আছে অসংখ্য স্থলে-একটি সার সংক্ষেপ এখানেই পাওয়া যাবে-মুক্তমনাতেও আছে অজস্রঃ
http://www.answering-islam.org/Responses/Menj/zaynab.htm
http://www.muhammadanism.org/Muhammad/Muhammad_Married_DaughterIL.htm
গান্ধী যে স্কেলে সততার কথা বলেছেন, এরা কেও সেই স্কেলে সৎ না। রবীন্দ্রনাথ এবং হুমায়ুন আজাদ দুজনেই শাসক শ্রেনীর অজস্র অত্যাচার এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে একটুও কথা বলেন নি।
বললে এদের সততার পুরস্কার স্বরূপ এরাও জেলে থাকতেন।
যে আইন সমাজকে পিছিয়ে দেয়, প্রগতিশীলরা সেই আইন ভাঙেন এবং তার জন্যে জেলে যান। গান্ধী, নেতাজি এরা বৃটিশ আইন ভেঙে জীবনের একট বড় অংশ জেলে কাটিয়েছেন। তাই আমরা এদের স্বরণ করি। আমরা স্বরণ করিনা, সেই সব লোকেদের যারা বৃটিশের অন্যায় আইন মেনে “লয়াল” সিটিজেন হিসাবে জীবন নির্বাহ করেছে।
১২০০ মিলিয়ান মুসলমান ১২০০ মিলিয়ান ইসলাম ধর্ম পালন করেন। দুজন মুসলিম পাবেন না যার কাছে ইসলামের অর্থ হুবহু এক। এটা সব ধর্মের জন্য সত্য। সুফি ইসলামের মত উন্নত মানবিকতার ইসলাম ও যেমন অনেকে মানে, আবার তেলে টাকায় ভাসা ওয়াহাবি ইসলামের মতন সভ্যতার ক্যান্সার চারিদিকে ছড়াচ্ছে। কোন ইসলামকে ইঙ্গিত করছি, সেটা বুঝলে ভাল হয়। ইসলাম অনুসরন করে মহান ব্যাক্তি এবং ঘৃন্য বর্বর-দুই প্রকৃতির লোকেদের জন্ম হয়েছে। সুতরাং কোন ইসলাম-এটা বোঝা জরুরী।
এটা নিয়ে অনেক গবেষণ আছে যে পিতা মাতা সমাজের ভ্রান্ত ধারনা গুলো যখন ভয় দেখিয়ে বাচ্চাদের মাথায় ঢোকানো হয়, তারা সেই ভয় থেকে বেড়িয়ে আসতে পারে না। এটা একধরনের মানসিক রোগের সাথে সমতুল্য।
এই প্রবন্ধে সেই গবেষনার একটা সারমর্ম পাবেন কি ভাবে ধর্ম একটা ছেলের ব্রেইন ড্যামেজ করতে পারে।
আমি আমার ছেলেকে ঈশ্বর আছে কি নেই সেটা কোন দিন বোঝাই নি। বরং তার দাদু দিদিমা বন্ধু এরা সারাদিন ঈশ্বর আছে সেটাই তাকে বুঝিয়েছে। ঈশ্বর নেই এই চিন্তা আমার ছেলের মাথায় এসেছে বিজ্ঞানের ভিডিও দেখে। এটা জেনে যে মানুষ এবং প্রকৃতির উৎপত্তি কার্যকারনের ফল।
আমি আমার জৈন ধর্মের ওপর লেখা প্রবন্ধে সেই ব্যাপারে বিশদ আলোচনা করেছি। আপনি না পড়ে কটূ মন্তব্য করলে, তার দায় আপনার।
বানর এবং পাখীর ঈশপের গল্পটা আমরা সবাই জানি। বানরা বর্ষায় ভিজছিল-আর পাখীরা তাদের গৃহ থেকে ভাবল-আরে এদের যদি আমরা বাড়ি বানানো শিখিয়ে দিই-তাহলে এরা বৃষ্টি এবং রোদের হাত থেকে রেহাই পাবে। সেই মত পাখিদের দল যখন বানরদের কাছে গৃহের উপকারিতা নিয়ে উপদেশ দিতে গেল, বানরের দল ভাবল, এই ক্ষুদ্র পাখিরা তাদের উপদেশ দেওয়ার ধৃষ্টতা দেখায়- দে ওদের বাসা গুলো সব ভেঙে।
আজকে বাংলাদেশের নাস্তিকদের ওপর অত্যাচারে, এই গল্পটা বারবার করে মনে পড়ছে। আসিফ মহিউদ্দিন বার বার করে বাংলাদেশের ওপর ধর্মের বাজে প্রভাব নিয়ে লিখে গেছে। ধর্মর জন্য বাংলাদেশ এবং ভারত দুটো দেশেই প্রগতির সমস্যা আছে। কিন্ত আস্তিকদের অবস্থা গল্পের ওই বানরদের মতন। যারা ঘরে থাকে নি, তাদের বোঝানো মুশকিল ঘরটা কেন দরকার।
একটা ছোট কারেকশন দরকার
এটা হবে
@বিপ্লব পাল, ভাই আপনার জবাবের জন্য ধন্যবাদ। আপনি যে মাপের জ্ঞানী মানুষ আমি ভাবিনি আপনি আমার মন্তব্যর জবাব দিবেন। আমি ব্যক্তগত কিছু বিষয় নিয়ে কিছুটা চাপে আছে তাই সম্ভবত মনে হইছে আমার মন্তব্যগুলো আপনাকে আঘাত করছে। তাই আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমি একটু ব্যস্ত আছি অল্প কিছু দিনের মধ্যে আমি আপনার মন্তব্যর জবাব দিব।
আমি মুসলমান হব না কি হিন্দু হব না কি নাস্তিক হব সেটা আমার ব্যাপার। আমি কি হব সেটা সরকার কেন নির্ধারণ করে দেবে? আমার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার অধিকার কারো নেই। আমি আমার মত করে বাচব। আর আমি অন্য কারো অনুভুতিতে আঘাত দিব না। আমি আমার চিন্তা গুলো প্রকাশ করব। আমি কাউকে নকল করব না। আমি আমার মত, আমি কারো মত নই। তাই আমার চিন্তা চেতনায় আঘাত করার অধিকার কারো নেই। আমি কারো গোলাম নই। আজ আমি পশুদের ভয় পেতে পারি, আজ আমি পালিয়ে যেতে পারি কিন্তু কাল আমি প্রস্তুত থাকব এবং বন্যের অনধিকার আক্রমন প্রতিহত করব।
একদিকে হেফাজতের মহাসমাবেশ চলছে আর অন্যদিকে “আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত” চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে আগামী ২০শে এপ্রিল শনিবার, মহানবীকে নিয়ে অবমাননাকর কটূক্তিকারীদের কঠোর শাস্তি দাবির পাশাপাশি ইসলামের নামে নৈরাজ্য ও সহিংসতা এবং মওদুদীবাদীদের অপতৎপরতা বন্ধে আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে সুন্নী আকিদায় বিশ্বাসী জনতার এই মহাসমাবেশ থেকে ।
কাঠমোল্লায় ভরে গেছে বাংলাদেশ । বাংলাদেশের ভবিষ্যত বড়ই উজ্জ্বল !!!
জয় মোল্লাতন্ত্র !!!
যদি যুদ্ধপরাধীদের বিচারটা না চলত তবে সরকার এই হেফাজতকে দুই পয়সা দাম দিত না। কিন্তু এখন জামাত-শিবিরের অশান্তির সাথে হেফজতে জামাতের অশান্তি যাতে যুক্ত না হয় তাই কৌশলগত একটা কাজ করেছে সরকার। তাই যুদ্ধপরাধীদের বিচারে এদের আত্মত্যাগ ও স্বরনীয় থাকবে।
আমার একটা জ্ঞান জিজ্ঞাসা ছিল, যদি পারেন তবে আমাকে তথ্য দিয়ে সাহায্য করেন। আমি আমার এক পরিচিতর কাছে শুনলাম যে, ওল্ড টেষ্টামেন্ট এ নাকি মহানবী মুহাম্মদ আসবেন, এমন কোন ভবিষ্যত বানী করা আছে? বিষয়টি কতটুকু সত্য? নাকি অপপ্রচার? যদি কেউ জানান তাহলে উপকৃত হব।
@নাশিদ,
আপনাকে শুভেচ্ছা। প্রথমে বলেন আপনার এই মন্তব্য উপরের পোস্টের সাথে সংগতিপূর্ণ হলো কি?
আর প্রশ্নের উত্তরে বলছি, হ্যা, সেটা পুরো অপপ্রচার এবং এর সূচনা ঘটেছে মুহাম্মদের সময় থেকেই। তিনি নিজেকে প্রতিশ্রুত পুরুষ বলে প্রচার শুরু করেন। মুহাম্মদ নিউ ও অল্ড টেস্টামেন্ট উভয়টি থেকেই প্রচুর মালমশলা কোরানে ঢুকিয়েছেন এবং খ্রিস্ট ও জুডাইজমকে ইসলামের পূর্বসুরী বলে ঘোষণা দিয়েছেন যদিও দুটির মধ্যে কোনোটায় এমনকি আল্লাহর নামও নেই!
আর বাকিটা আপনি নিজেই একটু কষ্ট করে জেনে নিন। কোনো কিছু জানতে হলে এতটুকু কষ্ট করতে হয় বৈকি!
@সৈকত চৌধুরী,
ধন্যবাদ আপনাকে। আমি জানি আমার জিজ্ঞাসাটা উপরের পোস্টের সাথে মোটেই সংগতিপূর্ন নয়। কিন্তু আমি অন্যভাবেতো আপনাদের মত কাউকে জিজ্ঞাসা করতেও পারছিলামনা। আসলে আমি এই মহানবীর বিষয়টি জানতামও না, সম্প্রতি আমার পরিচিত এক ব্যক্তির সাথে আলাপকালে এই বিষয়টি উঠে আসে এবং সেখানেই আমি চুপ হয়ে যাই। যাহোক, জানার জন্য কষ্ট কিছুটা আমি করেছি যা কিনা ইন্টারনেট ঘাটাঘাটি। কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন মত পাবার কারনে আমি যাকে তাকে জিজ্ঞাসা করে উল্টাপাল্টা তথ্য পাবার বদলে সরাসরি আপনাদের কাছেই এইভাবে জিজ্ঞাসা করেছি। এটা করাটা যদি ঠিক না হয়ে থাকে তাহলে আমি দুঃখিত।
পুনশচঃ যদি কোন লিঙ্ক দেন তাহলে ভালো হত।
@নাশিদ,
জানতে যখন আপনার এতই আগ্রহ, আমি একটু সাহায্য করি। যেখান থেকে এর উৎপত্তি তা হলো-
তাওরাতে কী লেখা আছে-
এবার আপনি খুঁজে নিন ইব্রাহিমের পুত্র ইসহাকের বংশে কতজন আর ইসমাইল বংশে কতজন নবি ছিলেন।
আদিপুস্তক থেকে ইসমাইল হারিয়ে গেছেন অনেক আগেই। সমস্ত বাইবেল জুড়ে ইসহাক বংশের নবিদের ছড়াছড়ি, মুহাম্মদের নামগন্ধ সেখানে থাকার প্রশ্নই উঠেনা। মুহাম্মদ কোরানে যা বলেছেন তা তার বিয়ের ঘটক (খাদিজার চাচাতো ভাই) ওরাকা বিন নওফেলের কাছ থেকে শুনা।
এরকমটাই মনে করা হত, বিপ্লবদা! এখন এই ধারণাটি কিন্তু চ্যালেঞ্চের মুখে পড়েছে! অনেক ঐতিহাসিকই এখন আর একে খুব বেশী অথেনটিক মনে করেন না! বাঙ্গালি মুসলমান শুধু পক্ষ পরিবর্তন করেননি, ধর্মান্তর তাদের মধ্যে কিছু ভাবাবেগের জন্ম অবশ্যই দিয়ে থাকবে।
বরং একে অনেক বেশি নিখাদ মনে হয়, বিপ্লবদা!
প্রিয় বিপ্লব,
এটার অর্থ কি? ধর্মকে শাসক কাজে লাগায়, শাসক শ্রেণী ধন্তন্ত্রের সেবাদাস আপনিও সেটা মানছেন । তাহলে তো এটাই বোঝা যাচ্ছে যে এই সেবাটি ধনতন্ত্রের ইপ্সিত । ধনতন্ত্র দোষমুক্ত হোল কি করে? ডেনমার্ক নরওয়ে আর ফিনল্যান্ডে জনতা যদি প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের নিয়ন্ত্রনের বাইরে থাকে তবে তার পেছনে লুকোন কারণটি কিন্তু অন্য । পৌত্তলিক স্কান্দিনেভিয়া কে ধর্ম পরিবর্তনের জন্যে যে রাষ্ট্র পোষিত প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের (পড়ুন ভ্যাটিকান চার্চ) সুদীর্ঘ হিংসাময় অধ্যায়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল, তাতে জনতা বরাবরই সেই ধর্মের যাঁতাকলের বাইরে বেরিয়ে আসতে চেয়েছে । তারই ফলশ্রুতি বর্তমান স্কান্দিনেভিয়ার ক্রিশ্চিয়ান চার্চের থেকে দুরত্ব। এবং স্কান্দিনেভিয়ার ইতিহাসেও রাষ্ট্র এই ভূমিকাই পালন করেছে ।
এখানে আপনি সম্পূর্ণ অন্য কথা বলছেন । এখানে আপনি বলছেন ধনতন্ত্র লোভের (দোষ যুক্ত) । আর বলছেন ধর্ম লোভের বিপরীতে; তাহলে ধর্মের বিরুদ্ধে যাওয়ার প্রয়োজন টা কোথায়?
যদি ধনতন্ত্রের অগ্রগতি ধর্মের বিলোপের প্রয়োজনীয় এবং যথেষ্ট শর্ত হত তাহলে বিশ্বের সেই দেশে সবার আগে ধর্মের লোপ হত যেখানে ধনতন্ত্র সবচেয়ে এগিয়ে আছে; যেমন কিনা আমেরিকা । বিপ্লব বাবু, ধনতন্ত্রের অগ্রগতির সঙ্গে ধর্মের বিলয়ের কোনও সম্পর্ক নেই ।
পুঁজির কোনও খারাপ ভালো নেই । বাজে পুঁজি বলতে আপনি কি বোঝাতে চান? স্কান্দিনেভিয়া অন্তত এক্ষেত্রে কোনও প্রমান নয় ।
খাটি কথা । যদি কখনো আমি এর উলটোটি বলে থাকি, জানাবেন, মাফ চেয়ে নেব ।
২৫০০ বৎসর আগের ভারতীয় প্রাতিষ্ঠানিকতা কিরূপ ছিল সেটা অন্য একটি সময় সাপেক্ষ আলচনার বিষয় হতে পারবে। ভবিষ্যতে আপনার সাথে এ বিষয়ে আলচনা করতে পারলে ভাল লাগবে, কিন্তু সেসময় বর্ণভেদ শক্তিশালী ছিলনা এটা সত্যি নয় । আর এতগুলো হাজার বৎসরের ইতিহাসে খুঁজলে সাবর্ণ ও বর্ণহীনদের দুচারটে সমঝোতার গল্পও পাওয়া যাবে। কিন্তু সেটা কি মুখ্যধারা না ব্যাতিক্রমী সমঝোতা ? আপনি বলেছেন “মহাভারতে যেমন বর্ণ ভেদ আছে তেমন বর্ণভেদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও পাওয়া যাবে “ আসলে কিন্তু এর উলটো । মহাভারতে ‘অধিকাংশ স্থলে’ বর্ণ ভেদ আছে আর কদাচিৎ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ পাওয়া যায় । উলটোটি যদি সত্যি হয়, শুধু জায়গা গুলো উল্লেখ করবেন, ব্যাসদেব এর নামে বাজারে চলিত বইটির সংস্কৃত রূপটি আমার কাছে রাখা আছে, নিজের ভুল শুধরে নেব । মনুস্মৃতি সম্পর্কিত আপনার শেষ বাক্যটি যে হাড়ে হাড়ে সত্যি সেটা আপামর ভারতবাসী প্রতিদিনের জীবনে টের পান ।
না সেটা সত্যি নয় । ৯/১১ কোনও শাস্তির পদ্ধতি নয় । এবং মার্কিন পুঁজি কোন শাস্তি পায়নি । ৯/১১ একটি হতাশা পুষ্ট বিদ্বেষ ময় সন্ত্রাসবাদ । এর আঘাত পরেছে শুধু মার্কিন জনতার ওপর । মার্কিন জনতা আর মার্কিন পুঁজি যে এক নয়, সেটা কেন ভুলে যাচ্ছেন । বস্তুত ৯/১১ মার্কিন পুঁজিকে আরও বেশী দাঁত নখ বার করে তৃতীয় বিশ্বে সামরিক ইন্টারভেনশনের সুযোগ করে দিয়েছে । সুযোগ দিয়েছে মার্কিন জনতার মধ্যে জঙ্গি মনোভাবকে আরোবেশি সুদূরপ্রসারী করতে ।
এবার আসি আসল কথায় । যেটা তে আপনি আমি সত্যি আগ্রহী । জামায়েত কে কি করে আটকানো যায় ? জামায়েত কে আটকাতে গিয়ে আপনি বা আপনার মতো যারা লেখা গুলো লিখছেন, তাদের এই লেখাগুলোর একটি বিরাট অবদান আছে । কিন্তু মনে রাখতে হবে যে সেটা লড়াইয়ের একটি অঙ্গ মাত্র । এই লেখার সাথে আর যা প্রয়োজন সেটি হোল উৎপাদন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী যে শ্রেণীটি নিজ প্রয়োজনে জামায়াএত এর রাজনীতি কে প্রপাগেট করছে তার বিরুদ্ধে শ্রমিক কৃষক কে, ছাত্র যুবকে, বুদ্ধিজীবীদের একত্রিত করা । এবং প্রয়োজন লেখার মধ্যে দিয়ে কসমোপলিটান পুঁজি, তার দালাল জাতীয় পুঁজি এবং জামায়েত এর রাজনীতির শরিক সমাজের অন্ধ শক্তি গুলির আঁতাত কে নগ্ন করে তুলে ধরা । নইলে, আফগানিস্তান সাক্ষ্মী, স্বপ্ন থেকে অনেক দূরে সরে যাবে দেশ । হয়ত সেটাই শেষ নয়, হয়ত আবার নতুন দিন আসবে, কিন্তু মাঝখানের রাত্রিটি হবে খুবই দীর্ঘ এবং যন্ত্রনাদায়ী । সে যে ভুল রাস্তা শুধুমাত্র সেটা প্রমানের জন্যে সে ভুলের রাস্তায় নাইবা গেলাম আমরা । আপনারই অন্য একটি লেখার প্রতি ইঙ্গিত করে বলছি , “Human are special enough to make exception” নেতি নেতি করে ইতিতে পৌছনো যায়, কিন্তু মানুষের জীবন নিয়ে সেটা খুব বড় খেলা হবে ।
@সুকান্ত,
আমেরিকাতে ধর্মের লোপ এগোচ্ছে না এটা কোত্থেকে পেলেন? সত্য হল, প্রতি দশকে আমেরিকাতে নিধার্মিক এর পারসেন্টেজ বাড়ছে এবং লোকেরা প্রথাগত ধর্ম থেকে বেড়িয়ে আসছে। এই পক্রিয়াটি আস্তে আস্তে হওয়ার কারনে চোখে পড়ে না। কিন্ত এই ব্যাপারে অনেক সমাজ গবেষণা আছে যে আমেরিকাতে ধর্মের প্রাবল্য ক্রমশ কমছে।
http://en.wikipedia.org/wiki/Religion_in_the_United_States
মূলত দুটো তথ্যের দিকে আমি নজর দিতে বলব
[১] ১৯৯০ সালে ৮% লোক আমেরিকাতে নিজেদের নিধার্মিক বলত-২০০৬ সালে প্রায় ১৪% লোক আমেরিকাতে নিজেদের নিধার্মিক বলে। নাস্তিক এবং নিধার্মিকরা আমেরিকাতে সব চেয়ে দ্রুত বৃদ্ধিকামী জনতা। আনুমানিক ২০৫০ সালের মধ্যে নিধার্মিকরাই আমেরিকাতে সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে।
[২] আমেরিকাতে মোটে ৫% লোক বিশ্বাস করে ধর্ম জীবনের সব থেকে গুরুত্বপূর্ন বিষয়। সেখানে ১৭% আমেরিকান বিশ্বাস করে টাকা এবং ক্যারিয়ার ধর্মের থেকে অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ন।
ধর্ম অবশ্যই লোভের বিপরীতে। লোভি হও, এই উপদেশ কি কোন ধর্ম কোন দিন দিয়েছে?
কিন্ত তবুও আমি ধর্মের বিপক্ষে এই জন্যে যে এই ধরনের ভাববাদি আধ্যাত্মিক ধারনা মানুষের সারভাইভাল ফিটনেস কমায়। কারন প্রযুক্তির আবিস্কার এবং অগ্রগতির পেছনে মানুষের লোভের ভূমিকাটাই সর্বাধিক। আজকের ইন্টারনেট থেকে বিদ্যুত, ফেসবুক থেকে গুগুল, এসবের উত্থানের পেছনে লোভের ভূমিকাই সর্বাধিক। এগুলি ঐতিহাসিক সত্য যা অস্বীকার করে লাভ নেই।
আপনার ভুল শুধরানোর সত্যিই সময় এসেছে।
মহাভারতের সময় ও বর্ণভেদ ভারতীয় সমাজকে ভীষন ভাবে কলুশষিত করছিল । এই সময় উপন্যাস লেখক হলে লেখাটা কি ভাবে লিখতেন? বর্নভেদ যখন আছে, তখন তজ্জনিত সমাজের দুরাবস্থার কথাত লিখতেই হবে। কিন্ত আপনি যদি বর্ণভেদের প্রতি সহানুভূতিশীল না হোন, মহাভারতের চরিত্রের মাধ্যমেই প্রতিবাদ জানাবেন। এই প্রতিবাদ মহাভারতে ছত্রে ছত্রে। আমি এই নিয়ে একটি বিস্তারিত লেখা পরে দেব। আপাতত দু চারটি উদাহরণ তুলে দিচ্ছি
[১] বর্ণভেদ প্রথায় মহাভারতের সব থেকে ট্রাজিক চরিত্র কর্ণ। এই প্রথার ভূত সব থেকে বেশী তাকেই তাড়া করেছে।
প্রথম যখন রাজপুত্রদের যুদ্ধে তিনি অর্জুনকে দ্বন্দে আহ্বান করলেন, সেই ক্ষনে কুলগুরু জানালেন, ক্ষত্রিয় না হওয়ার কারনে তিনি অর্জুনকে দ্বৈরথে আহ্বান জানাতে পারেন না। এর পরের মুহুর্তেই দুর্যোধন তাকে অঙ্গরাজ্যের রাজা হিসাবে অভিষিক্ত করে জানালেন, যোদ্ধার পরিচয় তার বাহুবলে। শুধু জন্মে না। সুতরাং অর্জুন তার শ্রেষ্ঠতার পরীক্ষা দিক।
দ্বিতীয় দৃশ্যের অবতারনা দ্রোপদীর স্বয়ংবর সভায় যেখানে দ্রোপদী কর্নকে সুতপুত্র বলে ধনুক তুলতেই দিলেন না। এই ক্ষনে দ্রোপদী এবং দ্রুপদের বিরুদ্ধে দুর্ধোজন একটি লম্বা বক্তব্য রাখেন -এবং প্রশ্ন তোলেন ক্ষত্রিয় আসল পরিচয় জন্মে না তার কর্মে।
তৃতীয় ঘটনা এর পরেই ঘটে। রাগে, অপমানিত কর্ণ বনবাসী হতে চলেছেন। এই সময় জাতিভেদ প্রথার কুফল নিয়ে দুর্যোধন এবং কর্নের লম্বা বক্তব্য আছে বনপথে। যুর্যোধন কর্ণকে বলছেন জাতিভেদ তিনি মানেন না-এই সব দুর্ভাগ্যজনক প্রথা মানা উচিত ও না। কর্নের যদি কোন ক্ষত্রিয়কন্যা ভাল লাগে, তিনি নিজে গিয়ে কর্ণের জন্যে তাকে হরণ করে আনবেন।
জাতিভেদ নিয়ে বৃহত্তর ঘটনা ঘটে কর্নের সাথে ভ্রুশালীর বিবাহে। ভ্রুশালী ও সুতপুত্রী ছিলেন। কর্ণ ভ্রুশালী এবং তার সহচরী রাজকন্যা অসাবরীকে ডাকাতদলের কাছ থেকে উদ্ধার করেন। এরপর ভ্রুশালী (মতান্তরের পদ্মাবতী) এবং অসাবরী দুজনেই কর্নের প্রেমে পরলেন। কর্ন রাজকুমারী অসাবরীর প্রেম স্বীকার করে তার পিতার কাছে বিবাহ প্রস্তাব নিয়ে গেলেন। অসাবরীর পিতা সুতপুত্র কর্নের এই স্পর্ধা দেখে তাকে অপমান করলেন। এরপর কর্ন অসাবরীর কাছ জানতে চাইলেন তার মত কি। অসাবরী জানতেন না, কর্ণ সুতপুত্র। জানা মাত্র তিনিও সরে গেলেন।
অপমানিত এবং ভগ্ন হৃদয়ে কর্ন তার পিতা সূর্য্যকে স্বরণ করে জানতে চাইলেন কেন জন্মের [ বা বর্ণভেদের ] কারনে তাকে এত অপমান সইতে হবে। প্রথমে দ্রৌপদি, তারপরে অসাবরীর এই প্রত্যাখ্যান শুধু জন্মের কারনে তাকে এত ব্যাথিত করে-কর্ন আত্মহত্যা করতে যাচ্ছিলেন। এমন অবস্থায় কর্নের পিতা সূর্য তাকে বলেন সমাজের বর্নপ্রথাকে মেনে নিয়ে আত্মহত্যা করার থেকে বোকামি আর কিছু হয় না। বরং অসাবরির স্বয়ংবর সভায় গিয়ে উপস্থিত সমস্ত ক্ষত্রিয়কে পরাজিত করে তাদের জানিয়ে দেওয়া উচিত, শৌর্য্য বীর্জের ক্ষমতায় একজন ক্ষত্রিয় হয়।
সেইমত কর্ণ অসাবরীর স্বয়ংবর সভাতে উপস্থিত হলেন এবং উপস্থিত সব রাজাকে বন্দী বানালেন। এবার পরাজিত পিতা অসাভরীকে কর্নর হাতে দিতে চাইলেন। কিন্ত অভিমানী কর্ন অসাবরীকে প্রত্যাখ্যান করে, তার দাসী ভ্রুশালী বা পদ্মাবতীকে গ্রহণ করে, অপমানের প্রত্যুত্ত্ব্রর দিলেন।
এর পরেও অজস্রবার দেখাযাবে যখনই কর্নকে সুতপুত্র হিসাবে অর্জুন উল্লেখ করেছেন, কৃষ্ণ বকে দিয়েছেন এই বলে-বীরের জাতি হয়। সে দানবীর কর্ণ। তার পৌরুষই তারপরিচয়।
এর পরে আসবে ভীমের সাথে হিড়িম্বার বিবাহ। ভীনের মতন একজন ক্ষত্রিয় কি রাক্ষসকন্যাকে বিবাহ করতে পারেন? যুধিষ্ঠির এর এই প্রশ্নে কুন্তীর উত্তর ঐতিহাসিক। যে নারীর হৃদয়ে প্রেম জেগেছে তার আর কোন বর্ণ নেই-শুধু প্রেমের অধিকারেই একজন নারী, একজন পুরুষকে পেতে পারেন।
এখানে মহাভারতের রচয়িতা অসাধারন নৈপুন্যে বর্নভেদের ওপর প্রেমকে স্থাপনা করেন।
এরপরের সব থেকে বড় অধ্যায় ঘটোৎকচের কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধাগমেন। ঘটোৎকচ অভিমানী ছিলেন। হয়ত রাক্ষসপুত্র বলে তাকে ডাকেন নি কৃষ্ণ। কৃষ্ণ বলেন, যোদ্ধার কোন ধর্ম নেই-তাকে বিশেষ কার্যের জন্য ইতিহাস দরকার আছে-সেই জন্যেই তিনি ডাকেন নি। কিন্ত যোদ্ধার কোন ধর্ম হয় না।
আরো বড় উদাহরন দ্রোনাচার্য্য। কুরুক্ষেত্রে তিনি যখন পান্ডবদের সংহার করছেন দেবতারা থেজে পান্ডব সবাই তাকে স্লেজিং করা শুরু করে যে তিনি ব্রাহ্মন-শিক্ষা দেওয়া তার কাজ। তার হাতে অস্ত্র মানায় না। দ্রোনাচার্য্যর উত্তর সব ক্ষেত্রেই এক। কেও ব্রাহ্মন বা ক্ষত্রিয় হয়ে জন্মায় না। নিজের কর্তব্যের জন্যে সবাইকেই নিজের পেশা খুজে নিতে হয়। অথচ এই দ্রোনই একলব্যর আঙুল কেটে নেন এবং তাকে শিক্ষা থেকে বঞ্ছিত করেছিলেন। কিন্ত মহাভারতে এটাঅ দেখি দ্রোনাচার্য অর্জুনের প্রতি তার দুর্বলতা বোঝাতে একলব্য এপিসোডে নিজের পাপের কথা স্বীকার করেছেন।
এছারা ও অজস্র উপাখ্যান আছে মহাভারতে বর্নভেদ নিয়ে। তা অর্জুন-উলুপীর প্রেম থেকে কৃষ্ণকে গোয়ালা বলে আপমান করা পর্যন্ত বিস্তৃত। কিন্ত সব স্তরেই দেখা যাবে-মহাভারতের ভাষা এবং বক্তব্য বর্নভেদের কালো দিকটিই নির্দেশ করেছে।
এই নিয়ে বহুদিন ধরে আমার একটি সম্পূর্ন প্রবন্ধ লেখার ইচ্ছা আছে। সময় পেলে, মহাভারতে বর্নভেদ নিয়ে বিস্তারিত লেখার ইচ্ছা রইল।
@ বিপ্লব দা,
প্রথমে আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ এতো চমৎকার একটা লেখা দেওয়ার জন্য।
আমি বিশ্বাস করি আমাদের সমাজের মানুষরাই পারে সমাজটাকে বদলাতে।
আমার পরিবার এ আমি আপনার উপরের কথাটার সমর্থন দেখতে পাই।
আজও আমাদের পরিবার একটা নামে মাত্র মুস্লমান পরিবার। হয়তোবা ঠিক তা ও না।
আমি আশায় থাকলাম আপনার কাছ থেকে আরো অসংখ্য এরকম লেখা পেতে থাকবো।
@শিমূল,
ছোটো বেলা থেকে যত মুসলিম পরিবার দেখেছি-সবাই নামে মাত্রই মুসলিম ছিল। আমরা একসাথে দূর্গাপূজা, ইদ করে বেড়িয়েছি। আস্তে আস্তে ১৯৮০ সালের পর থেকে আরবের টাকাতে “আসল ইসলামের” আমদানি এবং দাপাদাপি শুরু হয়। আমি ভারতের প্রেক্ষাপট ই বলছি। আমাদের এলাকাতে মহাদেব আহমেদ এবং কৃষ্ণ মোক্তার নাম আকছার পাওয়া যায়। এসব নিয়ে কেও কোনদিন ভাবে নি। সবার ফোকাস ছিল কি করে পাটের দাম উঠলে মেয়ের বিয়ে দেওয়া যায়-এই আকাঙ্খায় হিন্দু মুসলিমে পার্থক্য ছিল না। তেলের টাকার চোটে এত মাদ্রাসা গজিয়েছে এই ধরনের উদার ইসলামিক ধারা ক্রমশ কোনঠাসা এখন। এবং তা এলাকাগুলিকে ১০০% সাম্প্রদায়িকতার বীজ বুনে দিয়েছে।
@বিপ্লব পাল,
ঠিক বলেছেন দাদা। আমার দুই পিসি ই হিন্দু ঘরে বিয়ে হয়েছে। আমার ঠাম্মা থেকে শুরু করে মা পর্যন্ত দেখছি সবাই আজও শাঁখা-পলা-সিঁদুর পরেন। আজকাল অনেকেই এই নিয়ে অনেক কথা বলে, এসব নাকি অনিইস্লামিক! আমাদের বাড়িতে গোমাংস ঢুকার নিয়ম নেই। ইদুল ফিতর হয় কিন্তু কোরবানী ঈদটা পালন করা হয় না। আমার মা প্রতিদিন এ ঠাকুর বাড়িতে যান। আমাদের বাড়িতে ঠাকুরের ছবিও রাখা আছে।
আমার বড় বোনের একটি মুসলিম পরিবারে সম্বন্ধ করে বিয়ে হয়েছিলো। মাত্র চার মাস সেই বিয়ে টিকেছিলো। তার শশুর বাড়ীর সাথে কিছুতেই মানাতে পারেনি সে।
এখন সে নিজের পছন্দে এক হিন্দু ছেলের সাথে বিয়ে করেছে। এখন তার দুটি বাচ্চা ও আছে।
ছোট কাল থেকে আমি একটা গালি বরাবর খেয়ে এসেছি বিভিন্ন জায়গায় তা হোল মালাউন।
-কথাটা বিতর্কিত। এরা নাস্তিক হতে পারে, তবে হযরত মূহম্মদের সমালোচনা এদের সকলে করেছে কিনা সেটাতে ঘোরতর সন্দেহ আছে। আমি রাসেলের সাথে অন্য এক ব্লগে বহুদিন ব্লগিং করেছি, সে যে নাস্তিক সেটাও জানতে পেরেছি বহুদিন পরে, ইসলাম বিদ্বেষী দুরের কথা। শুভ ছিল নুতন ব্লগার, তার কিছু লেখা এই ব্লগেই আছে। সে এমনকি লিখত সে জামাত শিবিরের বিরুদ্ধে কোন ধর্মের বিরুদ্ধে নয়। ইসলাম বিদ্বেষী বা নবী সমালোচনাকারী ধরতে চাইলে এদের চেয়ে আরো কড়া কথা লেখার পাবলিক ব্লগ জগতে বহু আছে। হাতের কাছে যে কয়টা পেয়েছে মুরগী ধরার মত ধরে পুরেছে হেফাজতিদের ঠান্ডা করতে। কি মামলা দেবে এখন পর্যন্ত তাও সাব্যস্ত করতে পারেনি এমনই মারাত্মক সব অপরাধ এদের।
বাংলাদেশের একমাত্র সমাধান আমার মতে হেফাজতে ইসলাম জাতীয় কোন দলের ক্ষমতায় বসা। সুখে থাকলে যে ভুতে কিলায় এটা অনেক সময় ঠেকে শিখতে হয়।
@আদিল মাহমুদ,
ঠিক। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর যেমন ভারতের লোক বুঝেছিল, এরা সেই একই লোক।
বিপ্লবদা,
চমৎকার লিখেছেন। আসলেই এই ব্যপারটাই ঘটে চলেছে আমাদের সমাজে। আবু এম ইউসুফের মতে বাংলাদেশে উগ্রমৌলবাদী নেই! তাহলে সরকারী বাধা সত্ত্বেও মতিঝিলে লাখো মানুষের সমাগম হলো কি করে? বাংলাদেশে শুধু উগ্রমৌলবাদ নয় এখন সমাজটা অনেকটা ধর্মান্ধতায় পর্যবশিত। এটা বিশেষ করে আশির দশকে শুরু হয়ে বিস্তৃতি লাভ করে আজকের পর্যায়ে এসেছে।
যাইহোক বিশ্লেষনটা চমৎকার হয়েছে। খুব দরকার ছিলো লেখাটার।
আর এই অবস্থাটির পরিবর্তন দরকার। তা নাহলে মানুষের মোহ মুক্তির অবসান হবেনা।
আপনার শেষ প্যারাটার সাথে একমত হতে পারছি না, কিংবা বুঝতে পারছি না। যদিও “>৬% প্রবৃদ্ধি’ কতটা sustainable সেটা প্রশ্ন সাপেক্ষ, ইতোমধ্যেই তো অস্বস্তি শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু গার্মেণ্ট সেক্টরের জন্যে নতুন বাজার উন্মুক্ত হচ্ছে দেখছি খবরের কাগজে। বাংলাদেশের মুক্তির জন্যে সত্যিকারের দরকার তো সুশাসন, সেটার জন্যে বাংলাদেশের সোসাইটিতে সিলেকটিভ প্রেশার কতটা? বিদেশী বিনিয়োগ আর সস্তা শ্রমের ফলশ্রুতি যে প্রবৃদ্ধি তার অংশিদার হতে মুক্তমনা হবার দরকার কতটা?
@অনীক সামীউর রহমান,
আপনার প্রশ্নটা মিলিয়ান ডলারের। কিন্ত আপনি যে এই ওপেন প্রশ্ন করতে পারবেন, এমন ওপেন সোসাইটিও ত দরকার।
ভারতের অভিজ্ঞতা বলে দরকার আছে। ভারতের ও এক হাল। একটা কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজ, পৃথিবির সব গবেষনা এবং অফিসের ব্যাক অফিস হতে যাচ্ছিল। কিন্ত আর পারছে না টানতে। কারন সমাজে আইন নেই-শিক্ষার মান ও অনুন্নত। আস্তে আস্তে পূর্ব ইউরোপ এবং ল্যাটিন আমেরিকা ভারতের সার্ভিস মার্কেট দখল করছে। এর কারন ভারতে আইনের শাসনের অভাব, প্রাইভেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের নামে অনুন্নত শিক্ষা।
আইনের শাসন আসবে কি করে যদি শাসক শ্রেনী ধর্মের সুরসুড়ি দিয়েই ক্ষমতা দখল করতে পারে?
আমি তো আতঙ্কে আছি বাংলাদেশে শরিয়া আইন চালু হয় কি না। আপনার যারা দেশের বাইরে থাকেন তারা তো মন খুলে লিখতে পারছেন, কিন্তু আমি এখন হাসিনার ভয়ে চুপসে গেছি, জেলের ভয় আমার কণ্ঠরোধ করে ফেলেছে। ভাবছি মন খুলে লেখার জন্য দেশ ত্যাগ করবো। তখন দেখবো, মৌলাবদি সরকার আর মৌলাবদিরা আমার কী করে ? :-s :-s
সবই তো বুঝলাম, কিন্তু যতদিন বর্তমান উৎপাদন এবং মালিকানা স্বম্পর্ক টি বজায় থাকছে ততদিন ইন্সটিটিউশনালাইজড ধর্মটি উৎপাদনের ফলভোগিদের যে প্রয়োজনটি পূরণ করে থাকে সে প্রয়োজনটি ফুরিয়ে যাবে কি করে একটু পরিস্কার করবেন?
খুবই ভালো কথা। কিন্তু সমাজ ব্যাপী যে গননিয়ন্ত্রনের জগদ্দল পাষাণটি জনতাকে পিষছে এই কাগুজে তলোয়ারে তার নাশ সম্ভব কি? যে নৈরাশ্যময়, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে অসুরক্ষিত সমাজ ব্যবস্থা পারলৌকিক নির্ভরতার জন্ম দেয় এবং এই অবিঞ্জান প্রসূত অস্ত্রটির প্রয়োগে সমাজে প্রভুত্বকারী যে শ্রেণীটি একে প্রপাগেট করতে চায় তার বিলয় বিনা এই বিষ প্রশমন সম্ভব?
দেখুন, আপনি ঠিক বুঝেছেন। শুধু একটা ভুল করছেন, এটি ‘শুধুমাত্র শিশুর’ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। যে কোনও বয়সের, সমাজের একটি বৃহৎ জনতার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এই জোর করে চাপিয়ে দেওয়া টা একটা বিশেষ উদ্দেশ্যে হয়ে থাকে এবং আপনি সেটা জানেন।
পুনঃজন্মের ধারনার পর ইশ্বর ধারনার উৎপত্তি, এটা হয়ত ঠিক নয়, কিন্তু সে তর্ক এখানে অপ্রাসঙ্গিক। আপনি ইতিহাস থেকে ‘কি করে তারা দখল করে বসল রাজনৈতিক ক্ষমতা’ সে উত্তর এখানে দেননি। কিন্তু একটি অন্য সত্য কে উন্মোচিত করতে পেরেছেন যে, এর অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য ছিল রাষ্ট্র ব্যবস্থা গঠনে সহায়তা করা। শ্রেণীবিভক্ত সমাজে সে রাষ্ট্রের কি ভূমিকা ছিল বিগত বেশ কিছু হাজার বছরের মানব ইতিহাসে, সে কথা কি আমাকেই বলতে হবে?
এর মধ্যে ভারত ভূমিতে ধর্মের অপ্রাতিষ্ঠানিকতা কি করে বুঝে ফেললেন? ধননন্দ যদি আপনার কথা অনুযায়ী শুদ্র রাজা হন তবে যে ধর্ম সমাজকে চতুর্বর্ণে ইতিমধ্যে ভাগ করে ফেলেছে তার প্রাতিষ্ঠানিকতা নিয়ে প্রশ্নের জায়গাটা কোথায় থাকে? বৌদ্ধ ধর্ম কোনদিন অপ্রাতিষ্ঠানিক ছিল? আপনি তো দেখছি বৈদিক ধর্মকেও অপ্রাতিষ্ঠানিকতার মলাট পড়াতে চান এবং আপনার মতে জৈনরাও প্রাতিষ্ঠানিক নন। তাহলে প্রাতিষ্ঠানিক কারা?
খুব সত্যি কথা। তিতুমির ওয়াহাবি ছিলেন। কিন্তু ওয়াহাবিদের সে প্রভাব নীল বিদ্রহেও ছিল। সেকথা ভুলে গিয়েছিলেন না ইচ্ছেকরেই উল্লেখ করেননি। ওয়াহাবিদের সে প্রভাব সিপাহী বিদ্রোহেও ছিল। যিনি দিল্লীর দখল নিয়েছিলেন এবং ওউধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সেই মউলভি আহমেদুল্লাহ ও ওয়াহাবি ছিলেন।
না, শুধু বাংলাদেশ নয়। ডক্টর আমিনুল্লাহ এবং আরও অনেকের নেতৃত্বে শোলে জাওেদ এর দেশ আফগানিস্তানও রুখে দাঁড়িয়েছিলো কিন্তু মার্কিন পুঁজির স্বার্থে তাকে বলি চড়তে হয়েছে। বাংলাদেশেও দেশি বিদেশি পুঁজির স্বার্থেই তা হবে। খেজুর কাটাটি ওয়াহাবি কিন্তু যে বিষবৃক্ষে তার জন্ম সেটি কসমোপলিটান পুঁজি এবং তার স্থানীয় দালাল পুঁজি।
একশ শতাংশ খাটি কথা। মেহনতি জনতাই শেষ কথা বলবেন।
@সুকান্ত,
এই ধরনের একমাত্রিক চিন্তা ঠিক না। ধর্মকে শাসকরা কাজে লাগায়-এই শাসক শ্রেনী ধণতন্ত্র বা রাজতন্ত্রের সেবাদাস হতে পারে। এটা রাজনৈতিক ক্ষমতার কেন্দ্রীকরনের দোষ। ধনতন্ত্রের দোষ না। যেসব ধনতান্ত্রিক দেশে গণতন্ত্র সঠিক এবং সরাসরি যেমন ডেনমার্ক, নরোওয়ে বা ফিনল্যান্ডে-নাস্তিকরা সংখ্যাগরিষ্ঠ।
ধণতন্ত্র দাঁড়িয়ে আছে লোভের ওপর-আর ধর্মের অবস্থান লোভের বিপরীতে। একই সাথে প্লেবয় এর ব্যাবসা আর ধর্মের ব্যাবসা একসাথে চলে কি করে? উপোরক্ত স্কয়ান্ডেনেভিয়ান দেশগুলিতে ধনতন্ত্রের কারনেই আস্তে আস্তে ধর্ম লোপ পাচ্ছে এবং পাবে।
“ক্ষমতার কেন্দ্রীকরনের” সাথে ধনতন্ত্রকে গোলানো উচিত না যদিও বাজে পুঁজি তাই করে বা করে এসেছে। কিন্ত তার বিপরীতে অনেক প্রমান আছে এবং স্কয়ান্দেনেভিয়ান দেশগুলি এর উজ্জ্বল প্রমান।
রাষ্ট্র কোন স্থায়ী ধারনা না। সেও সমাজ বিবর্তনের ফল। তার জন্ম উৎপত্তি উৎপাদন ব্যাবস্থার একটা ধাপে। ধর্মের ও তা। সুতরাং রাষ্ট্রএর অবলুপ্তি ধর্মের মতন ই আসন্ন।
আজ থেকে ২৫০০ বছর আগে, প্রতিষ্ঠানের রূপটা এমন ছিল না যে তোমাকে এই ধর্ম নিতেই হবে। আপনি মৌর্য্যদের ইতিহাস পড়ুন। আর সেই ২৫০০ বছর আগে বর্নভেদ ও এত শক্তিশালী ছিল না। চন্দ্রগুপ্ত ও শুদ্র সন্তান ছিলেন। কিন্ত তাকে শিক্ষা দিয়ে মানুষ করেছিলেন চানক্য ব্রাহ্মন। মহাভারতে যেমন বর্নভেদ আছে তেমন অধিকাংশ স্থলে, বর্ণভেদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও পাওয়া যাবে। কৃষ্ণ, যুধিষ্ঠির, যুর্যোধন, কর্ণ এরা সবাই বর্ণভেদের বিরুদ্ধে তীব্র বক্তব্য রেখেছেন। মহাভারতের রচয়িতা নিশ্চিত ভাবেই বর্ণভেদে ব্যাথিত ছিলেন। কিন্ত ১৫০০ বছর আগে মনুস্মৃতি লেখার সাথে সাথে এই বর্ণভেদ তীব্রভাবে ভারতীয় সমাজে গ্রাস করে- মেয়েদের অধিকার কেরে নেওয়া হয়।
মার্কিন পুঁজি আফগানিস্তানে যে কাজ করেছে, তার শাস্তি তারা পেয়েছে ৯/১১ এর মাধ্যমে। কিন্ত যতদোষ নন্দঘোষ করে কি জামাতকে আটকানো যাবে?
@বিপ্লব পাল,
সত্যি কি তাই? ৯/১১ কিন্তু মার্কিন পুঁজি-র বিনিয়োগে নির্মিত এক সম্ভাবনাময় নিবেশ পরিকল্পনাও হতে পারে – এই লিঙ্কটি (এবং আরো অনেক আছে) সেরকমই দিক নির্দেশ করে। সত্য মিথ্যা বলতে পারি না, তবে পুরো দেখলে মনে কিছু প্রশ্ন জাগে বইকি। কারণ এটি মাইকেল মুরীয় (তুরীয় কন্সপিরেসি) মুভি নয়। আর ঘটনার ঠিক পূর্বে ঘটনাস্থল (গুলি)-র ইতিহাস (সেপ্টেম্বর মাসের ৮ এবং ৯ তারিখ টুইন টাওয়ার এ ৩৬ ঘন্টার জন্য বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা হয় – ফলে কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা / নিকট বর্তনীভুক্ত চিত্রগ্রাহক কাজ করছিল না। তাছাড়া FAA র আপাতকালীন নির্দেশ পরিবর্তন করা হয় তিন মাস আগে) খুবই কাকতালীয় – কম করে বললেও। :-s
বেঁচে থাকা ধর্মগুলোর ভেতর জৈন ধর্মই পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো ধর্ম । তথ্যটি প্রথম আপনার কাছ থেকেই জেনেছি এবং তথ্য সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করে নিশ্চিতও হয়েছি । এ সম্পর্কে আপনার পূর্বের লেখাও পেলাম । ধন্যবাদ । আমার পূর্বের ধারণা ছিলো সামারিতান ইয়াহুদি যা বাবিলোনিয় সাম্রাজ্যের সমসাময়িক, জৈন ধর্মকে মূলত শেষ তীর্থঙ্কর মহাবীরার ধর্ম হিসেবেই জানতাম । কিছু অতিবিশ্বাসীরা তথাকথিত হিন্দু ধর্ম / আধুনিক হিন্দু ধর্মকে ‘পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্ম` হিসেবে দাবি করেন, যা সত্য নয় ।
@khurshid,
হিন্দু ধর্ম বলে কোন কিছুর অস্তিত্ব ভারতের অতীতে ছিল না। অতীতের ভারত ছিল অসংখ্য ধর্ম এবং দর্শনের মিউজিয়াম। ভারতে মুসলমান আক্রমনের ফলে প্রান্তিক ভারতীয় দর্শন চর্চার মৃত্যু হয় কারন এরা রাজানুগ্রহে এই চর্চা চালাতেন এবং রাজশক্তি ইসলাম হওয়ার পর, এই দর্শনগুলি চর্চা করার আর কেও থাকে না। ফলে মুসলমানদের আগমনের সাথে সাথে ভারতের জ্ঞান চর্চায় অন্ধকার যুগের শুরু হয়। নালন্দা , বৌদ্ধ বিহারের মতন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে মুসলিমরা ধ্বংশ করে। এগুলি ছিল প্রাচীন ভারতে জ্ঞানচর্চার মূল ক্ষেত্র।
এর ফলে জনগনের কাছে যে ধর্ম পরে থাকে যাকে বিদেশীরা সিন্ধু বা হিন্দু বলে অভিহিত করে তা এক পরাজিত জনশক্তির নিকৃষ্ট অমানবিক আচার আচরন।
@বিপ্লব পাল, মনুবাদী সংস্কৃতি মৌলিক ইসলামের চেয়ে কম ভয়ঙ্কর নয় । প্রাচীন ভারতীয় সমাজের ক্ষয়িষ্ঞুতা ও নারীর সামাজিক অবনমনের সূচনা মুসলিম আগমনের আগে থেকেই শুরু হয়েছিলো মনুবাদাশ্রিত ব্রাহ্মণ্যবাদের উত্থানের মাধ্যমে (খ্রী: ৩য়-৪র্থ শতক: মনুস্মৃতি ; আদি শঙ্করাচার্য ; গুপ্ত রাজবংশ) । মুসলিমরা প্রাচীন ভারতীয় বিজ্ঞান, দর্শন, গণিতের পুনরুত্থান ঘটিয়ে ভারতীয় রেনেসাঁ তৈরী করতে পারেনি বটে কিন্তু মধ্যযুগের শ্রেষ্ঠ এশীয় সভ্যতাগুলোর সংমিশ্রণ ভারতে আনতে সক্ষম হয়েছিলো । মুসলিম সৈন্যদের বিশাল অংশ লুটেরা, গণহত্যাকারী, ধর্ষক ও আইকনোক্লাস্ট ছিলো বটে কিন্তু মধ্যযুগীয় ভারতীয় মুসলিমদের ভেতর থেকেই শিল্পকলার শ্রেষ্ঠ কিছু অবদান প্রতিষ্ঠা পেয়েছে । বর্ণবাদান্ধ ভারতীয় সমাজে কিছুটা সমতামূলক বিচারব্যবস্থা (যা মুসলিমদের কয়েকশো বছর ভারতশাসনের জন্য বিশাল সংখ্যক হিন্দু শ্রেণীর মৌন সমর্থনের অনুঘোটকের কাজ করেছিলো), ভারতীয় আঞ্চলিক ভাষাগুলোর সাহিত্য প্রতিষ্ঠা, হিন্দী ভাষা ও সাহিত্যের উত্তরণ এবং রাজকার্যে এর ব্যবহার, রাষ্ট্রিয় জাতীয়তাবাদের প্রাথমিকরূপের ধারণা, সতীদাহ ও বাধ্যতামূলক বৈধব্য প্রথা রোধের চেষ্টা, এমনকি বাল্যবিবাহ রোধের চেষ্টা, এগুলো মুসলিম শাসনকালের বিভিন্ন সময়ের শ্রেষ্ঠ দিক, যার অনেকগুলো ব্রিটিশ এবং ৪৭-পরবর্তী সময়ে পূর্ণতা পেয়েছে । ভারতীয় উপমহাদেশের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ইতিহাসের বিভিন্ন যুগের সবচেয়ে সঠিক ও সুন্দর উপাদানগুলোকে একত্রিত করে উপমহাদেশীয় রেনেসাঁর প্রতিষ্ঠা যার একমাত্র সঠিক নেতৃত্ব দানে সক্ষম নাস্তিকেরাই । এর জন্য প্রয়োজন উপমহাদেশব্যাপী মাদ্রাসা শিক্ষা ও বাধ্যতামূলক ধর্মীয় শিক্ষার অবসান, বিজ্ঞান শিক্ষার বিস্তার ও বিজ্ঞানভিত্তিক বিভিন্ন প্রচারণা, তথ্য প্রযুক্তির প্রসার এবং বাকস্বাধিনতা – যার দ্বারা আমরা পরবর্তী তরুণ প্রজন্মগুলোকে একটি আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক সভ্যতা গড়ার পথে অনুপ্রেণিত করতে পারি । হিন্দুদের চেয়ে মুসলমানরাই এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা । একদম সত্যিকথা বলতে মুসলিমপ্রধান দেশগুলো পৃথিবীর আধুনিক সভ্যতার জন্য সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ । আর তারচেয়েও বড় সমস্যা, আমেরিকা কর্তৃক আবিষ্কৃত তথাকথিত ‘মডারেট মুসলিম`-দের নিয়ে, যে বর্ণচোরাগুলো আধুনিক শিক্ষা ও প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার করে আধুনিক পোশাক-আশাক পরে গণতান্ত্রিক সেজে আধুনিকতার মুখোশ পরে থাকে । এদের প্রশ্রয়ে মাদ্রাসাশিক্ষিত নামক আদিমশ্রেণীর অদ্ভুততম প্রাণীগুলো যারা নারীকে সন্মান পর্যন্ত করতে জানে না তারা মুসলিমপ্রধান রাষ্ট্রগুলোর প্রতিটি বিষয়ে নাকগলানোর সুযোগ পাচ্ছে । শুধু এ অঞ্চলের জন্যই নয়, সমস্ত পৃথিবীর সব সম্প্রদায়ের মানুষের জন্যই একটি বড় পদক্ষেপ নেয়ার সময় এসেছে, ১. আধুনিক সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে, ২. নারীর সন্মান ও নারীত্বের মর্যাদা সুরক্ষিত রাখার স্বার্থে ৩. বাক ও ব্যক্তিস্বাধিনতা চিরকাল বজায় রাখার স্বার্থে ৪. সন্ত্রাসবাদকে চিরতরে বিদায় করার স্বার্থে ৫. সেকুলার রাষ্ট্রব্যবস্থা ও বিচারব্যবস্থা বজায় রাখার স্বার্থে – মুসলিম সমাজের জন্য একটি চরম ভবিষ্যত্ নির্ধারণ করে দেয়া এবং তা মানতে বাধ্য করা ।
@khurshid,
ইতিহাসের সবটাই ঠিক আছে-শুধু একটা অংশ ছারা। মুসলিম শাসকরা ভারতে কোন সাম্যবাদি সমাজ বা আইন প্রণয়ন করে নি। তারা হিন্দু বর্ণবাদকে প্রশয় দিত-কারন এতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের শাসন ব্যাবস্থা টিকিয়ে রাখা সহজ ছিল। মুসলিম সুলতানদের দেওয়ান এবং বিভিন্ন রাজকার্যে শুধু ব্রাহ্মনদের নিয়োগ করা হত।
@বিপ্লব পাল, সাম্যবাদী আইন নয়, ব্রাহ্মণ্যবাদী শাসনে অতীষ্ঠ জনগোষ্ঠীর কাছে পূর্বের তুলনায় অনেক সহনশীল বলতে চেয়েছি, ‘কিছুটা সমতামূলক` শব্দটি প্রত্যাহার করছি, আসলে শব্দটি দ্বারা সঠিক যা বোঝাতে চেয়েছি তার উপযুক্ত হয়নি । যেমন ব্রাহ্মণ্যবাদী সমাজ ও শাসকদের বিচারব্যবস্হা বর্ণভিত্তিক ছিলো, মুসলিম কাজিপ্রথা সময়ের লিখিত আইনে তা ছিলো না এবং আইনত মির আদল, মুফতি ও কাজি অথবা কাজিউলকুজ্জাত এবং বিভিন্ন স্তরের কাজিগণ এই বিচারকক্রমগুলো প্রশাসনের যিনি প্রধান অর্থাত্ সুলতানের অধীন ছিলো না । তবে তাইমুরি (মুঘল) শাসন আমলে বিচারকদের পদবি, কার্যাদি ও স্বাধিনতা কিছু বদলে যায় । সুলতানি ও মুঘাল উভয় জামানায়েই রাজস্ব বিভাগ ব্রাহ্মণরা নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং কায়স্থরা করণিক পদে সংখ্যায় বেশি ছিলো, শিক্ষিত মুসলমানদের চেয়ে ভারতে শিক্ষিত ব্রাহ্মণ ও কায়স্থের সংখ্যা বেশি ছিলো, ব্রাহ্মণতোষণও একটা কারণ কিন্তু সব সময়ে নয় । সম্রাট আলামগির (আওরাঙজেব) কিংবা নবাব মুর্শিদকুলি খানের মতো বহু চরম হিন্দুবিদ্বেষী ও আইকনোক্লাস্ট মুসলিম শাসক এবং রাজ কর্মচারী ছিলেন যাঁরা ব্রাহ্মণতোষক ছিলেন না তা আপনিও জানেন । সম্রাট আলামগির সাম্রাজ্যের সকল রাজকর্মচারীকে মুসলমান হওয়ার আদেশ দিয়ে ফরমান জারি করেছিলেন, তা সত্যেও তাঁর রাজস্ব বিভাগ (এবং সম্ভবত: তাঁর সেনাবাহিনীও হিন্দুপ্রধান ছিলো) । মুসলমানরা সেসময় সম্ভবত: আরও বেশি সংখ্যালঘু ছিলো যার কারণে ভারতবর্ষের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এক ঘর শিক্ষিত মুসলমান দুষ্প্রাপ্য, কিন্তু আশেপাশের দুচার গ্রাম মিলে এক ঘর শিক্ষিত বর্ণহিন্দু পাওয়া যেতোই । নিজ ক্ষমতার স্বার্থেই বাধ্য হয়ে এ ধরণের মুসলিম শাসকরা যোগ্য লোকদের পদায়ন করতেন, যা ব্রাহ্মণ্যবাদী সময়ে প্রধানত বর্ণভিত্তিক উপায়ে হতো ।
মনে করুন, একজন দলিত ‘পরছাইয়া`-র অভিযোগ নিয়ে কাজির দরবারে গেলেন কিছু উচ্চবর্ণের মানুষের বিরুদ্ধে, কিংবা কোন নারী তাঁর প্রয়াত স্বামীর পরিবারের বিরুদ্ধে কাজির দরবারে অভিযোগ জানালেন যে তিনি তাঁর ছোট ছোট সন্তানদের রেখে সহমরণে যেতে চান না কিন্তু তাঁরা তাঁকে জোর করছে । এক্ষেত্রে শেষপর্যন্ত কাজির রায় ঐ দলিত কিংবা ঐ নারীর পক্ষে দিতেন । অন্যদিকে ব্রাহ্মণ্যবাদী যুগে প্রচলিত রাজকীয় বিধিবিধানগুলোকেই আজ আমরা হিন্দু সামাজিক রীতি বলে উল্লেখ করছি, যার অনেকগুলো অতি প্রাচীন কিন্তু অনেকগুলো নয়, অনেকগুলো বৈদিক ধর্ম থেকে এসেছে অনেকগুলো রাজারা নিজ স্বার্থে বানিয়েছে, এবং অঞ্চলভেদেও রীতিনীতির পার্থক্য হচ্ছে । অর্থাত্ যে অঞ্চলের যে রাজা যেভাবে বিধান তৈরী করছিলেন সে ক্ষেত্রে হিন্দু রীতি ও ঐতিহ্যের আঞ্চলিক পার্থক্য হয়েছে । তাই অহিন্দুদের কাছে হিন্দুদের ধর্মের কেন্দ্রিয় মূলনীতির এবং কেন্দ্রিয় ‘মূল ঈশ্বর` চরিত্রের ঐক্যের অভাব ধোঁয়াশার মতো লাগে । হত্যাকাণ্ডের দায়ে নবাব মুর্শিদ কুলি খাঁ তাঁর একমাত্র ছেলেকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন, ব্রাহ্মণ্যবাদী যুগে ব্রাহ্মণের ছেলের মৃত্যুদণ্ডের বিধান দেওয়ার সাহস কে দেখাতেন !
ইসলামি জুরিস্প্রুডেন্স মুসলিম পুরুষকে সুপিরিওরিটি দান করে । এটা পুরোপুরি মুসলিমপুরুষবাদী বিধান । কিন্তু সেই যুগের ভারতের বেশিরভাগ অঞ্চলে মুসলিম জনসংখ্যার স্বল্পতাহেতু হিন্দু-মুসলিম কনফ্লিক্ট হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকতো অর্থাত্ বিচার বিভাগে মুসলিম পুরুষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের ঘটনা বেশিরভাগ প্রত্যন্ত অঞ্চলে কম ঘটতো । এই বিচারব্যবস্থা অনেক বেশি জনরোষ সৃষ্টি করতে পারতো যদি আরও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলমান ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলে বাস করতো । ইসলামি বিচারব্যবস্থার সবচেয়ে অন্যায়মূলক দিকটি হচ্ছে মুসলিম পুরুষদের প্রতি এর শ্রেষ্ঠত্ববাদী দৃষ্টিভঙ্গী । আমি বলছি না এর অন্যান্য বিধান ভালো কিছু কিন্তু ভারতবর্ষের অভিজ্ঞতায় এর ভালো বিকল্প কিছু ছিলো না ব্রিটিশ আইন ও বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত । তাই আমরা মারাঠা কনফেডারেসিতেও বেশ কিছু পরিবর্তন ও সংযুক্তিসহ এর প্রয়োগ দেখি ।
ব্রাহ্মণতোষণ তাইমুরিয় মুঘাল সম্রাটরা যেভাবে করতেন (সম্রাট আলামগির বাদে) প্রথমদিকের মুসলমান সুলতানরা সেভাবে করতেন না । বরং প্রথমদিকের ইসলামি সুলতানদের জিহাদি সৈন্যরা গোহত্যার মতো ব্রাহ্মণ হত্যা ও ব্রাহ্মণের ‘জাত মেরে` বিরল আনন্দ উপভোগ করতো । আর তা ছাড়া শুধু ব্রাহ্মণতোষণে রাজ্য সুরক্ষিত হলে সেন বংশ এত সহজে নবদ্বীপ থেকে বিতাড়িত হত না ।
এ বিষয়গুলো আপনিও জানেন না এমন নয়, এবং আমার দৃষ্টিভঙ্গীও সমালোচনার উদ্র্ধে নয় । বরং ইতিহাসের মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গী আপনার এবং আমার মিল রয়েছে যা সাম্প্রদায়িক ইতিহাসবিদদের (যাঁরা এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠ) সাথে মেলে না । সাম্প্রদায়িক ইতিহাসবিদদের ভিড়ে ইতিহাস বিশ্লেষণের ভিন্ন ধারার প্রচেষ্টা সহজও নয়, তেমনি সমালোচনার উদ্র্ধেও নয় । এ বিষয়ে আমার নিজস্ব কিছু কাজ আছে যা মুক্তমনাতে পাঠাবো বলে ভাবছি । আপনার নিয়মিত লেখা এবং সহযোগিতা পাবার আশা রাখি । ধন্যবাদ ।
পুনশ্চ: আমার পূর্বোক্ত মন্তব্যের দ্বিতীয় বাক্যে ভুলক্রমে ‘খ্রী: ৩য়-৪র্থ শতক` লেখা হয়েছে, যা হবে ‘খ্রী: ৪র্থ -৫ম শতক` । এজন্য দু:খিত ।
@khurshid, @বিপ্লব পাল, আমাকে কিছু reading material এর কথা বলতে পারবেন?
@অনীক সামীউর রহমান, Reading Materials নির্ভর করবে আপনি ঠিক কোন অঞ্চল কোন সময়ের প্রেক্ষাপটে কাজ করতে চান । আমি ইতিহাসের ওপর কাজ করি স্কুলজীবন থেকে (ইতিহাস আমার বিষয় নয়, আমি বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম) । প্রচলিত গ্রন্থ আপনার পরিচিতদের ভেতর যাঁরা ইতিহাসের ছাত্র/শিক্ষক ছিলেন বা আছেন তাঁদের মাধ্যমে জানতে পারবেন । আমি ইতিহাস বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে ভাষাবিজ্ঞান, নৃতত্ত্ব, ভূগোল, হিউম্যান বায়োলজি, অর্থনীতি, মনোবিজ্ঞান, বায়োলজি অব জেণ্ডার, লোকজ ও ক্ল্যাসিক্যাল শিল্পকলা (সঙ্গীত, স্থাপত্য, চিত্রকলা, কারুশিল্প, ভাষকর্য ইত্যাদি), ধর্ম, মাইথোলজি ইত্যাদিকে সমন্বিত করে কাজে লাগাই । আরও দুটো বিষয়কে মাথায় রাখি – যুক্তি এবং কল্পনাশক্তি ও ইণ্ট্যুশন ।
@khurshid,
ইতিহাস নিয়ে এত বিস্তারিত কিছু করার ইচ্ছা নেই, অন্তত এখনি নেই। আমি আসলে প্রাচীনকাল থেকে বৃটিশদের আসার আগ পর্যন্ত ভারতের ইতিহাসের উপর কিছু বইপত্রের নাম চাইছিলাম। শুরুতেই খুব বিস্তারিত বই হলে পড়তে সমস্যা হবে। আপাতত এমন কিছু বইয়ের নাম বলুন যাতে আরো সামনে আগানোর Primer টা পাওয়া যায়।
ভালো হয় যদি সাথে বইগুলির ডাউনলোড লিঙ্ক সাথে দিতে পারেন।
“Hope is a good thing,may be the best of things,and no good things ever dies”
shawshank redemption মুভির এই উক্তি আমার খুব প্রিয়।
এদের বিরুদ্ধে আমারা জয়ী হব।এই আশা আমার!!!
বিজ্ঞানের ডকুমেন্টারীগুলো কি বাংলাতে দ্যাখেন? বাচ্চাদের বুঝতে পারার মত সহজ ভাষায় তো?
ডাউনলোড লিঙ্ক আছে?
@মহন,
এগুলি সবই ইংরেজিতে এবং মূলত ন্যাশানাল জিওগ্রাফিক বা নোভা এই দুই সংস্থার। ইউটিউবে সব পাবেন। আমি মুক্তমনার অধিকারিকদের একবার বলেছিলাম এই ভিডিও গুলোর বাংলা ভয়েস ওভার করার একটি প্রজেক্ট নিতে। এগুলির বঙ্গানুবাদ ভীষন দরকার।
@বিপ্লব পাল,
ধন্যবাদ বাংলা লিঙ্ক পেলে আমাকে দয়া করে জানাবেন।
অবশ্য ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক অনেক ডক বাংলাতে প্রচার করে ।
কিন্তু আমি ঐ গুলো ইউটিবে পাইনা।
কি সুন্দর লেখা রে বাবা!!!
দাদা, আরেকটা ভাল লেখার জন্য ধন্যবাদ। (Y)
অফটপিক, আপনি তেল খননে ফ্রাকচারিং পদ্ধতির কারণে আরবদের ক্ষতি হবে বলছেন কেন?
@প্রতিম লালা,
২০১৮ সালের মধ্যে আমেরিকাতে তেল উদবৃত্ত হবে। আমেরিকা আর কোন তেল আমদানি করবে না। ভারত, চীন এই দেশ গুলিও ফ্রাকচারিং শুরু করার মুখে। ফলে আরবের তেলের আর কোন ডিমান্ড থাকবে না বা তেলের দাম ও অনেক কমে যাবে। আরব অর্থনীতিতে তেল ছারা আর কিছু নেই। তেলের দাম কমে গেলে, বা রফতানি কমে গেলে এই দেশ গুলি শুয়ে যাবে। কারন এদের বংশ বৃদ্ধি হয়েছে গুনিতক হারে। আরবের ফার্টালিটি রেট ৬ এর কাছাকাছি। লোকেদের খাওয়ানোর পয়সাও থাকবে না।
@বিপ্লব পাল,
কিন্তু এই ফ্রাকচারিং পদ্ধতিটা আসলে কি? গুগলে সার্চ দিয়ে তো দেখলাম এ পদ্ধতিতে সেই ৪০ এর দশক থেকে তেল উৎপাদন করা হচ্চে এবং বর্তমানে ৭০% এর মত তেল এ প্রক্রিয়াতেই উৎপন্ন হয়। আসল কথা হলো তেল খনিতে থাকলেই সে তাকে ফ্রাকচারিং করা যবে , না থাকলে কোথা থেকে সেটা করা হবে? নাকি আপনি বলতে চাচ্ছেন যে – যে কোন পাথর থেকেই তেল উৎপাদন করা যাবে এ পদ্ধতিতে ? বিষয়টা আর একটু খোলাসা করা যায় না ?
@বিদ্রোহী,
হাইড্রোলিক ফ্রাকিং দিয়ে ২ মাইল তলায় শেল লেয়ার থেকে তেল তোলা হচ্ছে। এটা নতুন প্রযুক্তি এবং আমেরিকাতে গত ৫ বছরে ডাকোটা, পেন স্টেট, ভার্জিনিয়াতে এই পদ্ধতিতে তেল তোলা হচ্ছে।
http://en.wikipedia.org/wiki/Hydraulic_fracturing
@বিপ্লব পাল,
ওখানে গিয়ে তো দেখলাম তেল নয় গ্যাস তোলা হচ্ছে। যাহোক, কথা হচ্ছে , অত নীচে কি সব যায়গাতে তেল ও গ্যাস আছে নাকি ? সেটা যদি থাকে , আর সেখান থেকে সেগুলো তোলার মত প্রযুক্তিও যদি হাতে থাকে , তাহলে খামোখা সবাই আরব দেশের পা চাটে কেন ? সারা বিশ্ব কি এখন জানে না , ঐ অর্ধ সভ্য আরবদেশ গুলো তাদের তেলের টাকা দিয়ে সারা দুনিয়াতে অসভ্যতা ছড়িয়ে দিচ্ছে? একটু কষ্ট করে তাদের উন্নত দেশগুলো নিজ নিজ দেশে এভাবে তেল গ্যাস তোলা শুরু করলেই তো তেলের দাম অনেক পড়ে যাবে , যার ফলে আরব দেশগুলোর অসভ্যতা ছড়ানোর পিছনে অর্থ বিনিয়োগও কমে যাবে, দুনিয়াটা রেহাই পাবে। কিন্তু সেটা কেন হচ্ছে না শুনি ?
@বিদ্রোহী,
(১) আপনি কি জন্মের পরের দিন ই লেখা শুরু করেছিলেন?
ফ্রাকিং এর ফলে আমেরিকার তেল আমদানি ৮% হারে কমছে। ২০১৭ সালের মধ্যে আমেরিকা তৈল বা গ্যাস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ন হবে। এর মধ্যে আমেরিকার আমদানি কমলেও তেলের দাম কমছে না কারন ভারত এবং চীনে আমদানি বাড়ছে। কিন্ত ভারত এবং চীনেও আস্তে আস্তে ফ্রাকিং আসবে। ফলে ২০২০ সাল নাগাদ আমরা হয়ত দেখতে পাব, আরব তেলের অর্থনীতির গঙ্গাযাত্রা সম্পূর্ন।
(২)
কোন দেশকে বা জাতিকে অসভ্য বলাটা মুক্তমনাদের শোভা পায় না। এটা ধার্মিক বা মুসলিম বা হিন্দুদের জন্যই তোলা থাক যারা কুয়োর ব্যাঙ। তারা এই ধরনের কথা বলতে পারে-অন্য কোন জাতিকে অসভ্য বলা মুক্তমনের পরিচয় না। জ্ঞানের ত নয় ই।
আরব জাতির মধ্যে বহুদিন ধরেই গভীর দর্শন এবং আধ্যাত্মিক চেতনাবোধ ছিল। তারা ভাল কবি এবং ব্যবসায়ীর জাত বলেই পরিচিত ছিল। ইসলামের জন্ম আরবে হওয়াটা এক্সিডেন্ট না। ইসলামের জন্মের পূর্বেই এই আরব জাতির মধ্যে একধরনের “ইনটক্সিকেটিং মিস্টিজিম” [যা ভারতেও আছে] ছিল, যা ইসলামের মাধ্যমে প্রচার লাভ করে। যেমন কালকেই টাইম অভ ফাল্কন সিনেমটা দেখছিলাম। এটা সেই সময়ের গল্প যেখন আরবে সবে তেলের আবিস্কার করেছে টেকসান ওয়েল। যে ট্রাইব এর বিরোধি-তার বক্তব্য ছিল-আমেরিকানরা যা কিছু করে সব লোভের জন্য। তাই তাদের পরিহার করা ভাল। তাদের মনোভাব ছিল, যা কেনা যায়, তা দামী হতে পারে না। তাই এই তেলই একদিন তাদের জাতিকে ধ্বংশ করবে। সেরকম কিছু হয় নি। তেলের টাকায় আরব ভালই আছে। হবে তেল বিক্রি না হলে, তাদের যে দুরাবস্থা হবে সে নিয়ে সন্দেহ নেই। কিন্ত সে আর যাইহোক আরব জাতিকে অসভ্য বলা ঠিক না। তাদের মাধ্যমেই জ্ঞান বিজ্ঞান একদিন পৃথিবীতে ছড়িয়েছে। আজকে তারা পিছিয়ে গেছে কারন তাদের সমাজ সেই ভাববাদি জগতেই থাকতে চাইছে ( ভারতে ও এটা সমস্যা)।
আর তেলের টাকায় সেটা সম্ভব ও হচ্ছে। ভারত ভাববাদে থাকতে চাইলেও পারে না-কারন তেলেরা টাকা নেই। তাই তাকে আধুনিক প্রযুক্তিকে , আধুনিকতাকে গ্রহন করে বেঁচে থাকতে হয়। এই জন্যে ভারত হয়ত সাম্প্রতিক কালে কিছু এগিয়েছে। কিন্ত ভারত এবং আরব-এই দুই জাতিই ভাববাদের পাঁকে আকন্ঠ নিমজ্জিত-আবার সেটাকে খারাপ বলাও মুশকিল কারন জীবনের পরম আদর্শ বলে কিছু হতে পারে না। আমি অনেক ফকিরকেই দেখেছি, সে তার “কিছু নেই” পৃথিবীতে পরম সুখী। আর আমি এত কিছুর চাপে, টেনশনে অতটা সুখী মোটেই নেই। সে অসভ্য আর আমি সভ্য-এই ধরনের বক্তব্য আমি করব না-তা হবে আমার অজ্ঞানতার পরিচয়।
@বিপ্লব পাল,
হজকে বাদ দিচ্ছেন কেন? ২০২৫ সালে নাকি ~১৭ মিলিয়ন লোক হজে যাবে। আর ইসলামের আব্বা আরব গেলেও ইসলামের আম্মা ইরানতো আছেই। ইরানতো সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে। সম্প্রতি ইরানী গণমাধ্যমগুলি আমারদেশ, হেফাজত এগুলি নিয়েও ব্যাপক প্রচার শুরু করেছে। আমার বি এন পি সমর্থক, মডারেট মুসলিম বন্ধুদের যে অবস্থান, তেহরানের অবস্থান মনে হচ্ছে একি(আপনার কটা থাকলে ভালো বুঝবেন)।
@অনীক সামীউর রহমান,
তা থেকে তাদের কটা টাকা ইনকাম? মাথাপিছু ১০০০ ডলার? তাহলে ও ১৭ বিলিয়ান ডলার হয়। সৌদি আরবের তেলের আয় ট্রিলিয়ান ডলারে।
আর তেলে আয় কমলে-অনেক মুসলানের ই হজে যাওয়ার সাধ্য থাকবে না।
খাঁটি কথা । (Y)
“মহাবিশ্ব শূন্য থেকে লক্ষ কোটি বছরের বিৰ্বতনের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে ” এটা বুঝানোর চেয়ে ঈশ্বর-আল্লা-ভূত-ভগবান-পরকাল-আরবের রাজার গাঁজাখোরি গল্প শোনানো অনেক সহজ ।
@তারিক,
না , সেটা ঠিক না, আমেরিকাতে নোভা বলে একটি সরকারি সংস্থা বাচ্চাদের জন্য খুব সুন্দর বিজ্ঞানের ভিডিও বানায়। এগুলি বোঝা বাচ্চাদের জন্য বেশ সহজ এবং বেশ উত্তেজনাপূর্ণ। এগুলি দেখলে, তারা আর গাঁজাখুরিতে বিশ্বাস করবে না।
খুব সময়য়োপযোগী লেখা সন্দেহ নেই। কিন্ত আপনার আগের লেখা (ভিগনার) পড়ে আর বাংলাদেশের পরিস্থিতি বিচারে মনে হয়েছে ধর্মের অন্ধকার কোন দিন শেষ হবার নয়। পৃথিবীর একদিকে যত আলোকিত হবে অন্য দিকে ঠিক সেইভাবে অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে থাকবে। মুক্তচিন্তার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে চার ব্লগারের অবদান অনস্বীকার্য্য।
ভাল লিখেছেন (Y)
অধ্যাপক ভিগনারের লিঙ্ক টা কাজ করসে না।
@আগন্তুক,
লিংকটা ঠিক করে দিলাম।
(Y)
চমত্কার প্রবন্ধ ।
দেখুন: http://usatoday30.usatoday.com/news/religion/story/2012-02-22/black-atheists-civil-rights/53211196/1.
বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, মানবাধিকার, লিঙ্গসমতা, সমানাধিকার, ব্যক্তিস্বাধিনতা, বাকস্বাধিনতা, শিশু অধিকার, যুক্তিভিত্তিক আইনের শাসন ইত্যাদি নাস্তিকদেরই সৃষ্টি, কোন ধর্মগ্রন্থ থেকে সৃষ্টি হয়নি । মুসলমানদের জ্ঞানবাপি ও মথুরা মসজিদ রক্ষা, বাবরী মসজিদের ভূমি অধিকারের আশা, হিন্দুদের ঢাকেশ্বরী মন্দির টিকে আছে নাস্তিকদের সহযোগিতাতেই । তবে সংখ্যালঘু হলে নাস্তিকদের সহযোগিতা নেবে আর সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে বসে নাস্তিকদের বিরোধিতা করবে তা চলবে না । আমাদের সহযোগিতা ব্যতীত মুসলমানরা বেনারস-মথুরার মসজিদ টিকিয়ে রাখতে পারবে না ।
ইতিহাসের লোভ সামলাতে পারলাম না: এটা সত্যি যে সেনদের জনপ্রিয়তায় ঘাটতি ছিলো । ১৮৫৭-৫৮ তে শেষ মুঘাল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফারকে প্রধানত হিন্দু জনগোষ্ঠীই ভারতের স্বাধীন সম্রাট হিসেবে ঘোষণা করেছিলো, অথচ ১২০৪-এ নবদ্বীপ-গৌড়ের জনগোষ্ঠী লক্ষ্মণ সেনের পক্ষে দাঁড়ায়নি । সহজিয়া বৌদ্ধ থেকে ‘সহজিয়া মুসলিম` তত্ত্বটি আমিও আগে থেকেই মানতাম (তবে এর পাশাপাশি কিছু সন্দেহ আছে যা আলোচনার ইচ্ছা রইলো) । জৈনদের বিষয় নিয়েও পরে আলোচনার ইচ্ছা রইলো । তবে এটা সত্যি জৈন ধর্ম আধুনিক ‘হিন্দু` ধর্ম থেকে পুরনো, এটা মানার জন্য আলাদাভাবে ধন্যবাদ ।
ইসলাম মূলত সহিংসতার মাধ্যমেই প্রসার হয়েছে বেশি । একদম প্রথমে এটি পুরোপুরি একটি war-cult ছিলো যা মূলত সহিংস আচরণ, ধ্বংস, লুণ্ঠন, হত্যাকাণ্ড, ক্রীতদাস-যৌনদাসী-শিশুযৌনদাস প্রথা ও ধর্ষণকে প্রশ্রয় দিয়ে এসেছে । পরবর্তীতে আরও আলোচনার ইচ্ছা রইলো । ধন্যবাদ । (Y)
@khurshid,
ইতিহাস ভালোবাসা ভালো…… তবে নির্মোহ ভাবে ভালবাসলে আরও ভালো। ২০০, ৮০০, ১৫০০, ১৮০০, ২২০০ কিংবা ২৫০০ হাজার বছরের টা মনে রাখার সাথে সাথে আরও আগে যেমন ৩০০০-৩৫০০ বছর আগেরটাও…… ইত্যাদিও মনে রাখা উচিত; সাথে সাথে তারও আগেরটা ত বটেই— নাহয় রোমান্টিক ফ্যান্টাসি ব্যাতিত ফলাফল আর কিছুই থাকবেনা……… সোশ্যাল সাইন্স-আর্টস পরিণত হবে ফাইন আর্টস-লিটারেচারে।
@সংবাদিকা,
আপনার মারেফতি বা আধ্যাত্মিক টাইপের কথা কিছুই বোধগম্য হলো না। একটু ঝেড়ে কাসুন , যাতে বুঝতে পারি।
্
@সংবাদিকা,
আপনার কমেন্ট পড়ে অনেক্ষণ হাসলাম!! আপনি ভাল থাকবেন।
😀
@সংবাদিকা,
khurshid, এর কথার প্রেক্ষিতে আপনার কথা মোটেও বোধগম্য হলো না। বিস্তারিত বলুন।
যতই টাকা ঢালুক, বাংলাদেশের মাটিতে উগ্র মৌলবাদ শেকর গাঁড়তে সক্ষম হয়নি, হবে না।
@আবু এম ইউসুফ,
নাস্তিকদের কারাবাস কি দুর্বল মৌলবাদের প্রতিফলন?
@বিপ্লব পাল, আলেমরা ৮৪ জন নাস্তিক ব্লগারদের নামের তালিকা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী করেছিল। তাদের মধ্য থেকে পরীক্ষানিরীক্ষার পর যে ৪ জন নাস্তিক ব্লগার’কে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ যে তারা অত্যন্ত অশ্লীল, উগ্র ও আক্রমনাত্মক ভাবে তাদের ব্লগে নাস্তিকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছিল। এই অভিযোগ প্রমানিত হলে বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে তাদের শাস্তি হবে। নাস্তিকদের মধ্যে কেউ কেউ উগ্র মৌলবাদী আচরণ করে থাকে যেটা একটি বহুত্ববাদী সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করতে পারে। যদি উগ্র ধর্মীয় মৌলবাদ বাংলাদেশে শেকর গেড়ে থাকতো, তাহলে সেই ৮৪ জন স্বঘোষিত নাস্তিকদের সবাইকে গ্রেফতার করা হতো। বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকার স্পস্টভাবেই বলেছে বাংলাদেশে তথাকথিত ‘ব্ল্যাশফেমি’ আইন প্রবর্তন করা হবে না এবং এই মতের সাথে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সমর্থন আছে।
@আবু এম ইউসুফ,
আমি আসিফকে চিনি। ওর ব্লগ ও পড়ি। ওর ব্লগে আমি ইসলাম বা মহম্মদের বিরুদ্ধে অশ্লীল বা উত্তেজনাপূর্ন কিছু পায় নি।
তাছাড়া, ধর্মানুভূতি একটা সোনার পাথর বাটি। হিন্দুদের মূর্তিপূজা দেখে একজন মুসলমানের ধর্মানুভুতিতে লাগে। আবার, ইসলাম অনুযায়ী মূর্তিভাঙা পূণ্যের কাজ। সেটা নিশ্চয় হিন্দুদের আঘাত দেবে। সুতরাং এই ধরনের ক্ষণভঙ্গুর “প্লুরালিস্ট” সমাজ, যার সাধনা ভারত বর্ষে গত ৭০ বছর থেকে দেকছি, তা বিলকুল সোনার পাথর বাটি। এই ধর্মের পাঁক থেকে বেড়োতে ধর্মকে যৌত্বিক আঘাত দিতেই হবে।
এখন হজরত মহম্মদ তার বৌমাকে বিয়ে করেছিল- এই তথ্য কেও অস্বীকার করে না। সেই তথ্যকে অবশ্যয় রুচিসম্মত ও যুক্তিপূর্ণ ভাবে পেশ করা উচিত।
বিবি আয়েশার বিবাহও তাই। একজন বুড়োর পক্ষে কচি মেয়ের প্রাণিগ্রহণ সেই সমাজের জন্য নিশ্চয় আউট অব প্লেস ছিল না। কিন্ত মুসলিমরা যখন হজরত মহম্মদকে তাদের জীবনের সর্ববৃহৎ আদর্শ বলে মানে, তখম তাদের প্রফেটের মতন বাল্যবিবাহ বা পুত্রবধুকে বিবাহ করাটাও আর্দশের মধ্যে চলে আসে।
আমি উদাহরণ দিচ্ছি। পশ্চিম বাংলাতে বামপন্থার অত্যাচারে দলে দলে সব ধর্মের পুরুষ মানুষরা অন্য রাজ্যে কাজ করে। ফলে নদীয়া , মুর্শিদাবাদ এইসব জেলায় গ্রামগুলি পুরুষশুন্য।
এগুলি মুসলিম প্রধান এলাকা। এসব গ্রামে পুরুষেরা কাজ করে অন্য রাজ্যে, পূত্রবধুরা থাকে শশুড় শাশুড়ীর কাছে। এবং এই সব শশুর মশাইরা যদি হজরত মহম্মদকে তাদের আদর্শ বলে মানেন এই সব পূত্রবধূদের নিরাপত্তা বলে কিছু থাকবে?
বাই দ্য ওয়ে, এই সব জেলাগুলিতে স্বামীর অনুপস্থিতিতে শশুড়দের ধর্ষন খুবই বেড়েছে। আমি নিশ্চয় বলব না এর কারন এরা তাদের প্রফেট দেখে অনুপ্রাণিত। কারন সেরকম কোন প্রমান নেই। কিন্ত এটাত নিশ্চয় বলব, শশুরের রা যদি তাদের প্রফেট দেখে অনুপ্রানীত হয়ে, নিজেদের পুত্রবধুকে বিয়ে করার চেষ্টা করেন, তাহলে, হজরত মহম্মদ তাদের আদর্শ পুরূষ, সেই ধারনাটা ধাক্কা খায়।
সুতরাং এই ধরনের ধর্মানুভূতির গল্ল না তোলাই উচিত। সমাজ এবং রাষ্ট্রকে তার অন্তিম লক্ষ্য যে আগামী প্রজন্ম আরো শক্তিশালী হোক, তারা দুধে ভাতে থাকুক, সেই দিকেই লক্ষ্য রাখতে হবে।
@বিপ্লব পাল, অবশ্যই সরকার চারজন ব্লগারকে গ্রেফতার করে অতি-সক্রিয়তা দেখিয়েছে। এর থেকে ভালো কিছু সরকারের কাছ থেকে আশা করাও বৃথা। অভিযোগ প্রমানিত না হওয়া পর্যন্ত গ্রেফতারের কোন প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু, এই ক্ষেত্রে সরকার এটা করেছে এবং এর প্রতিবাদে আন্দোলন চলছে। বাংলাদেশের সামাজিক পরিস্থিতি স্বত্বেও ব্লগারদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে যে আওয়াজ উঠেছে সেই আওয়াজটিকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করে যেতে হবে। আপনি ইসলামের নবীর কথা বলেছেন, কিন্তু আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের নিয়ে কার্টুন প্রকাশ করার জন্য কিছুদিন ফেসবুক বন্ধ ছিল। ইউটিউবে কোন একটি ছবির কারনে ইউটিউব বন্ধ ছিল এবং এখনো আংশিক বন্ধ আছে। আপনার সাথে আমি একমত এবং একটি গবেষণায় দেখা গেছে যেসকল সমাজে নারীর পর্দাপ্রথা যত বেশী সেসকল সমাজে নারী ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের হার তত বেশী। আর এই সকল নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের শতকরা প্রায় ৫০% পুরুষ আত্মীয়দের কারনেই ঘটেছে। বাংলাদেশে শিক্ষা ও সামাজিক, রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা নির্মানে ধর্মের মৌলবাদী ব্যখ্যার যেটুকু ভূমিকা সেই ভুমিকাকে বিযুক্ত করে পুরুষের মন ও মানসিকতায় পরিবর্তনের জন্য সামাজিক আন্দোলনের প্রয়োজনে যৌক্তিক আলোচনা ও সমালোচনার বিকল্প নেই।
@আবু এম ইউসুফ,
“অত্যন্ত অশ্লীল” বলতে কি বোঝায় জানিনা তবে সুব্রত শুভর লেখা মুক্তমনাতেই আছে, আপনি কষ্ট করে পড়ে দেখুন অশ্লীল লাগে কিনা আপনার কাছে। রাসেলের ব্যাপারে এ কথা আরো বেশি খাটে, তিনি খুবই ভদ্র ভাষায় লিখতেন। এরা দুজনই যতটা ধর্ম নিয়ে লিখতেন তার থেকে জামাত-শিবির ইত্যাদি নিয়ে বেশি লিখতেন। আসিফের কথাতো বিপ্লব পাল বললোই, চতুর্থজনের ব্যাপারে আমার ধারণা নেই। তাই যে অভিযোগের কথা আপনি বললেন বা সরকার বলছে সেটার আসলে ভিত্তি নেই।
@রামগড়ুড়ের ছানা, আমি বলেছি, …… অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ প্রমানিত হলে তাদের শাস্তি হতে পারে। অভিযোগ, সত্য না মিথ্যা সঙ্গত কারনেই এই বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করি নাই।
@বিপ্লব পাল,
মানবতা বাদ হল একটা ইউটোপিয়ান ধারনা। প্রশ্ন থাকে -কিভাবে এটা বাস্তবায়ন করবেন? ধর্ম তুলে দিয়ে? কিন্তু তারপর কি? কোন দর্শন , কোন রাজনৈতিক কাঠামোর হাতে ছেড়ে দেবেন ,আপনার বিখ্যাত মানবতাবাদ কে প্রতিষ্ঠা করতে? ভাবছেন গণতন্র করবে। আমার উত্তর -ছাই।
এটা আপনার ব্যক্তিগত মতামত। আপনার যদি মনে হয় আপনার হাতে র ঘড়িটা কেউ তৈরি করেনি,নিজে নিজেই হয়েছে,আমার কিইবা বলার আছে?
ইসলামের আসল রুপ সহজিয়া ই । আর এর বাইরে অন্য কিছু হল মতলববাজ দের আবিষ্কার। সে এখন খেজুর কাটা হোক আর লাউ কাটা হোক। ভাই গিরিশ কে যারা সন্মান দিয়েছেন,তারা ঠিক তাই করেছেন যা ইসলামের করা উচিত। আর আজকাল যা দেখি তাতে আর ধর্ম কোথায়। আমাদের জামাত-শিবির হোক কিংবা শিবসেনা বা আর এস এস-এরা আমাদের ধর্ম গুলো কে অধর্ম বানিয়ে ছেড়েছে।
ঠিক এই জায়গায় এসে আমি প্রায় সবাইকে ভুল করতে দেখি। হোতকা ধার্মিকদের গালি না দিয়ে গালি দিলেন ধর্মকে। ইসলাম-সনাতন ধর্মে বিরোধ নেই কিন্তু বিরোধ আছে হোতকা ,আবাল মুস্লিমের সাথে হোতকা,আবাল হিন্দুর।