আজব! এরকম এক সুপার শপের মাঝখানে রেসিডেন্সিয়াল হোটেল লিখে রেখেছে কেন! পেট্স্মার্ট (petSmart) এর ভিতরে হোটেল আসবে কোথা থেকে! মাঝে মাঝেই আমি এই পেট্স্মার্ট দোকানটাতে বেড়াতে যাই। পাখি দেখতে, নানা রঙের মাছ দেখতে, নিরীহ সরীসৃপগুলোতে দেখতে; কাচের জার কিংবা একুয়ারিয়ামের গা বেয়ে ধীরে ধীরে এগোতে থাকা শামুক-ঝিনুক দেখতে। আর বাহারী কুকুর-বিড়ালের কথাতো বাদই দিলাম। তামাম দুনিয়ার পোষা প্রাণী (pet) এনে জড়ো করে রাখে এই দোকানটি। প্রাণীগুলোর বিভিন্ন ধরণের খাবার-দাবার কিংবা ঔষধ-পথ্যের ব্যবস্থাও আছে। গিরিগিটি আর ব্যাং-রাও যে pet হতে পারে সেটা সর্বপ্রথম এখানেই এসে দেখেছিলাম। তাদের খাদ্য হিসেবে আবার ঝিঁঝিঁ পোকাও বিক্রি হয়। আর, যে-সব মহামানবেরা বাসায় সাপ পুষে, তাদের কথা কি বলবো, পারলে তাদের বাসায় গিয়ে পায়ের ধুলো নিয়ে আসি। কিন্তু, সে না-হয় গেলো, তাই বলে পেট্স্মার্টের একেবারে মাঝখানে রেসিডেন্সিয়াল হোটেল থাকতে যাবে কেন!

ঘটনা কি, জানার জন্য হোটেলের দিকে এগোতে থাকি। এগিয়ে দেখি, সেখানে তিড়িং বিড়িং করে লাফালাফি করছে কুকুরগুলো। দেখে মনে হচ্ছিলো ঝড়ের দিনে মামার দেশে আম কুড়াতে এসেছে। ঘটনা খুবই সহজ, কিন্তু, অসামান্য। মানুষজন যখন নিজ শহর ছেড়ে অন্য কোথাও বেড়াতে যাবে, তখন তাদের আদরের পোষা প্রাণীটিকে কোথায় রেখে যাবে, কার কাছে রেখে যাবে? নিজের পোষা কুকুর-বিড়াল নিয়ে সবসময়তো আর অন্যের বাসা-বাড়িতে গিয়ে উঠা যায় না। তাদের সেই প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে পোষা প্রাণীদের জন্য পেট্স্মার্ট তৈরী করেছে রেসিডেন্সিয়াল হোটেল। মালিকের অনুপস্থিতিতে সেখানে প্রাণীগুলোর দেখা-শোনা, খাওয়া-দাওয়া, আদর-যত্নের সমস্ত ব্যবস্থা করা আছে। ততক্ষণে আমারো মাথায় এসেছে, আরে আমার মতো ছন্নছাড়া, যারা উইকেণ্ডের আগে-পরে একদিন বেশি ছুটি পেলেই গ্যালাপ্যাগাস দীপপুঞ্জে যাওয়া যায় কি-না সেই পরিকল্পনা করে, এই সার্ভিস তো তাদেরই সবচেয়ে বেশি দরকার। এই রকম সার্ভিস না থাকলে, সেটাই বরং হতো অবাক করার মত ব্যাপার।

আমাদের বাসায়ও pet আছে। বেটা ফিশ, গোল্ড ফিশের মতই দেখতে। নাম ল্যারি। ল্যারির আগে আরো দুটো মাছ ছিলো- লালি আর ডোরি। লালি-ডোরি মারা যাওয়ার পর তাদের একজনের নামের প্রথম অংশ আর অন্যজনের নামের শেষ অংশ এক করে ল্যারির নাম রাখি আমরা। বেটা ফিশ্ এর বেঁচে থাকার জন্য ঘরের তাপমাত্রা সবসময় ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখতে হয়। বেটা ফিশ্ না-কি আবার তার মালিককে দেখে চিনতে পারে। আমরাও সেটা টের পাই, যখন বুঝি আমাদের দেখে ল্যারি চঞ্চল হয়ে উঠে, কাচের জারের দেয়ালে এসে ধাক্কা খায়। যদিও কাচের জারে বন্দী রাখা নিয়ে আমার আপত্তি আছে এবং ধারণা করি, মালিকের উপস্থিতি নয়, বরং খানিকটা পরে খাবারের সম্ভাবনার কথা ভেবেই হয়তো তার চঞ্চল হয়ে উঠা।

                        ছবিঃ আমাদের প্রথম pet বেটা ফিশ্ লালি।

এই পোষা প্রাণীগুলোর (pet) কথা বলছি, আমেরিকান মানুষজনের বিচিত্র সব প্রাণী pet হিসেবে রাখার স্বভাবের কথা বলার জন্য। কিন্তু, সবচেয়ে বিচিত্র, সবচেয়ে অনন্য pet রাখার কথা যার কাছে শুনেছিলাম, তিনি আমেরিকান নয়, বাংলাদেশী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের, শহীদুল্লাহ হলে আমার সিনিয়র সোহেল ভাই। উনার pet আবার কোন প্রাণী নয়, উনার pet হলো কোষ (cell)। কাচের জারে সেটা তিনি রাখতে পারেন না। রাখতে হয়ে ল্যাবরেটরীতে। প্রতিদন নিয়ম করে সেই কোষগুলোকে খাবার দিতে হয়। ভালো-মন্দ দেখাশোনা করতে হয়। শিকাগোতে আমার বাসায় বসে সোহেল ভাইয়ের মুখ থেকে যখন তার pet এর কথা শুনছিলাম তখনতো আমার প্রশ্ন আর যেন শেষ হয় না।

কোষ নিয়ে কথা বলতে বলতেই এক পর্যায়ে উঠে আসে হেনরিয়েটা ল্যাকস্ এর কাহিনীটাও। ১৯৫১ সালে ক্যান্সারে মৃত্যুবরণকারী হেনরিয়েটাকে না-জানিয়ে ডাক্তার তার শরীরের ক্যান্সার আক্রান্ত কোষ সংরক্ষণ করেন। পরবর্তীতে সেই কোষ হয়ে উঠে চিকিৎসা বিজ্ঞানের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান; ব্যবহার হয় পোলিও, ক্লোনিং এবং জিন গবেষণায়। হেনরিয়েটা ল্যাকস্ (Henrietta Lacks) এর নাম সংক্ষেপ করে, সায়েন্টিস্টদের কমিউনিটিতে সেই কোষ পরিচিতি পায় হেলা কোষ (HeLa cell) নামে। বিশ্বব্যাপী পরিচিত হয়ে উঠা সেই কোষ বিক্রি হতে থাকে বিলিয়ন বিলিয়ন, চলে মিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য। কিন্তু, কৃষ্ণাঙ্গ এক দরিদ্র তামাক চাষী হেনরিয়েটার কথা একটিবারের জন্য কেউ উল্লেখ করার প্রয়োজনও মনে করে না।

যেই হেনরিয়েটার দেহের কোষ বিক্রি করে যেখানে চলছে মিলিয়ন ডলারের ব্যাবসা, চলছে জীবন রক্ষাকারী ক্যান্সার চিকিৎসার গবেষণা; সেই হেনরিয়েটার পরিবারের সদস্যদেরই কি-না কোনো মেডিকেল ইন্সুরেন্স নেই, নেই তাদের সুচিকিৎসার নিশ্চয়তা। খুব স্বাভাবিকভাবেই, কথা উঠেছে হেনরিয়েটার অনুমতি না নিয়ে তার কোষ সংরক্ষণের নৈতিক দিক নিয়ে, হয়েছে মামলা। হেনরিয়েটার উপর বিবিসি তৈরী করেছে এক ঘণ্টার ডকুমেন্টারি, রেবেকা স্ক্লুট লিখেছেন দ্যা ইমমোরটাল লাইফ অভ হেনরিয়েটা ল্যাকস্। অপরাহ উইনফ্রে আর এইচবিও চ্যানেল রেবেকার সেই বই এর উপর ভিত্তি করে ঘোষণা দিয়েছে চলচ্চিত্র নির্মাণের।

                        ছবিঃ দ্যা ইমমোরটাল লাইফ অভ হেনরিয়েটা ল্যাকস্

কিন্তু, কথা হলো সোহেল ভাই যে শিকাগো বেড়াতে আসলেন উনার পোষা কোষগুলোর কি হলো! পেট্স্মার্ট আর যাই করুক তাদের রেসিডেন্সিয়াল হোটেলে কোষ রাখার ব্যবস্থা যে করতে পারবে না, সে আমি ভালো করেই জানি। প্রশ্ন করতেই তিনি উত্তর দেন, ওহ্ ! তাদেরকে ঘুম পাড়িয়ে রেখে এসেছি, এখান থেকে গিয়ে ঘুম ভাঙাবো। আমিতো ভাবি এই লোক এ- সব কি বলে! জিজ্ঞেস করি, আপনি কি কোষের জন্য বিছানা-বালিশের ব্যবস্থা করেছেন না-কি! তিনি বলেন, না, ওদেরকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় নাইট্রোজেনের ভিতর রেখে ঘুম পাড়াতে হয়। ঘুম পাড়ানো মানে হচ্ছে ওদের সব কার্যক্রম বন্ধ রাখা । মনে মনে যেই না ভাবছি, এই জিনিস না দেখলে আমার আর হচ্ছে না, তখনই সোহেল ভাই আমন্ত্রণ জানালেন, ম্যাডিসন যাবার, যেখানে গেলে দেখতে পারবো তার পোষা কোষগুলি।

ম্যাডিসন শহর উইসকনসিন স্টেইটের রাজধানী। উইসকনসিন নদীর নামে স্টেইটের নাম। আর, আমেরিকার চতুর্থ প্রেসিডেন্ট জেমস ম্যাডিসনের নামে শহরের নাম। শিকাগো থেকে গাড়ীতে ম্যাডিসন যেতে তিন ঘণ্টার মত সময় লাগে। আমেরিকার অনেকে মানুষ জনাকীর্ণ-কোলাহলময় বড় শহরগুলোতে বসবাস করতে পছন্দ করেন না। কিন্তু, বড় শহরের আশপাশে অন্য কোনো অপেক্ষাকৃত ছোট শহর বেছে নেন, যাতে করে কখনো প্রয়োজন হলে দু-তিন ঘণ্টায় গাড়ি চালিয়ে বড় শহরে চলে যেতে পারেন। সেই হিসেবে বসবাসের জন্য ম্যাডিসন খুবই যুতসই একটা শহর। তার উপর, বড় শহরে ট্যাক্সের পরিমাণও বেশি। বড় শহরের আরো সমস্যা আছে। খুব বড় হলে সে-শহরকে কেন জানি আপন ভাবতে কষ্ট হয়, সময় লাগে। ছোট শহর আপন আপন লাগে।শিকাগোর তুলনায় ম্যাডিসন ছোট্ট একটা শহর। পথ চলতেই মানুষজন হাই-হ্যালো বলছে। নির্জন রাস্তায় মধ্যরাতে একা হেঁটে বেড়ালেও কোনো সমস্যা নেই, একেবারেই নিরাপদ। অন্যদিকে, কোনোদিন যদি শিকাগোতে একটাও গোলাগুলিতে মৃত্যুর ঘটনা না ঘটে, তাহলে সেই মহাব্যতিক্রমী ঘটনাটা সংবাদ চ্যানেলগুলো সারাদিন ধরে শিরোনাম হিসেবে দেখায়।

অনেকে ম্যাডিসনকে আদর করে ছোটো নামে ডাকেন ম্যাড সিটি নামে। তবে চারপাশে ছড়িয়ে থাকা লেইকের কারণে সম্ভব্ত চার হ্রদের শহর ডাক নামটাই সবচেয়ে মানানসই। উইসকনসিন স্টেইটের সীমানায় সুবিশাল লেইক মিশিগান থাকলেও, স্টেইটের প্রায় মাঝ বরাবর অবস্থিত ম্যাডিসন শহরের লেইক্গুলো তুলনামূলক ভাবে অনেক ছোটো। তবে সৌন্দর্যের বিচারে কোনো অংশেই কম নয়। ছোট হবার বিশাল এক সুবিধাও আছে। এক জায়গাতে দাঁড়িয়েই চোখ জুড়িয়ে দেখে নেয়া যায় সম্পূর্ণ লেইকটাকে।

                          ছবিঃ লেইক মেন্ডোটা

ম্যাডিসন শহরের শরীরে অলংকার হয়ে সেজে থাকা লেইক মেন্ডোটা আর লেইক মনোনার সৌন্দর্য দেখে থমকে দাঁড়াবে না, সে-রকম পথিক খুঁজে পাওয়া দায়। সে-লেইকের ময়ূরকণ্ঠী জলে চুপচাপ ছায়া হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে শহর ম্যাডিসন। শীত কাল আসলে এই লেইকগুলোতে আবার বরফ জমে যায়। ম্যাডিসন শহরবাসী পরিবার-পরিজন নিয়ে সেখানে তখন আইস স্ক্যাটিং করে বেড়ায়, বরফ খুঁড়ে গর্ত করে, সেখানে বড়শি ফেলে মাছ ধরে।

                          ছবিঃ লেইক মনোনা

প্রথম দিন লেইকে লেইকারণ্য মেন্ডোটা-মনোনা আর সেগুলোর আশপাশ দেখেই কাটিয়ে দিলাম। পরের দিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস যাবার পালা। ইউনিভার্সিটি অভ উইসকনসিন ম্যাডিসন- সোহেল ভাই এখানেই পিএইচডি করছেন। বিশ্বখ্যাত এই RU/VH (Research University / very high research activity) বিশ্ববিদ্যালয়ের আছে ১৯ জন নোবেল লরিয়েট। সোহেল ভাইয়ের সৌজন্যে সেখানটাতে উনার পোষা কোষগুলো দেখার সাথে সাথে দেখা হলো আরো অনেক আধুনিক গবেষণাকর্ম। কিন্তু, কে জানতো আজ থেকে ছয় দশকেরও আগে, এখান থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে গেছেন আরো একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী গবেষক। প্রফেসর কামাল উদ্দিন আহমদ। ১৯৪৯ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করে ফিরে যান বাংলাদেশে। একটি নয়, দুইটি নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োকেমিস্ট্রি, ফার্মেসী এবং খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞানের মত তিন তিনটি অত্যাধুনিক বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা তিঁনি। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় পর্যায়ে পরিচালনা করা হয় গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি সমীক্ষা। তাঁরই মাধ্যমে আসে রাতকানা রোগের জন্য ভিটামিন এ এবং গলগণ্ডের জন্য আয়োডিনযুক্ত লবণ খাওয়ার মত প্রচারণাগুলো। ২০০৪ সালে তাঁর মৃত্যুর পর, পরিবারের ইচ্ছা ও প্রচেষ্টায় বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অভ উইসকনসিন ম্যাডিসন চালু আছে কামাল উদ্দিন আহমদ গ্রাজুয়েট স্কলারশিপ। যেটি বাংলাদেশী স্টুডেন্টদের জন্য বয়ে এনেছে সে-বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ণ ও গবেষণা করার বিরল এক সুযোগ (বিস্তারিত এখানে)।

ইউনিভার্সিটি অভ উইসকনসিন ম্যাডিসনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা ম্যাডিসন শহরকে নিয়ে গল্প করতে গেলে খুব স্বাভাবিকভাবে সেই গল্প ঘুরে ফিরে হয়ে উঠে ইউনিভার্সিটির গল্প। আমেরিকার অন্য কোনো স্টেইটের নামে কোনো আইডিয়া আছে কি-না জানা নেই, তবে উইসকনসিন স্টেইটের নামে আছে উইসকনসিন আইডিয়া। স্টেইটের দেয়া সেই আইডিয়াকেই লালন করে ইউনিভার্সিটি অভ উইসকনসিন ম্যাডিসন। উইসকনসিন আইডিয়ার মূল কথা হলো, স্টেইটের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হবে, স্টেইটের অধিবাসীদের সমস্যার সমাধান করা, তাদের স্বাস্থ্য এবং জীবন-যাত্রার মান উন্নয়ন করা, স্টেইটের পরিবেশ রক্ষায় ও কৃষিক্ষেত্রে অবদান রাখা

                    ছবিঃ ইউনিভার্সিটি অভ উইসকনসিন ম্যাডিসন, ক্যাম্পাসের একাংশ

পরিশেষে, ম্যাডিসন শহরের বিশেষ একটা বৈশিষ্ট্যের কথা বলে শেষ করি। আমেরিকার সব স্টেইটের রাজধানী শহরগুলোতে থাকে স্টেইট ক্যাপিটল। সেখানে সংসদ অধিবেশন বসে। মোটামুটি সব স্টেইট ক্যাপিটল ভবনগুলো উপরটা হয় অর্ধগোলাকৃতি গম্বুজের মত।

                      ছবিঃ ম্যাডিসনে অবস্থিত উইসকনসিনের স্টেইট ক্যাপিটল

এই স্টেইট ক্যাপিটলকে কেন্দ্র করে উইসকনসিন স্টেইটে অদ্ভুত এক আইন জারি করা আছে। শহরের কোন ভবনের উচ্চতা ২৮৪ ফুট উঁচু স্টেইট ক্যাপিটলের বেশি হতে পারবে না। দেখার ইচ্ছে ছিলো সেটি কতটুকু সত্যি। শহর থেকে কিছুটা দূর সরে সেটা পর্যবেক্ষণের চেষ্টা করছিলাম। লেইকের অন্য পাশে দাঁড়িয়ে তাই ব্যাস্ত হয়ে যখন দেখছিলাম ম্যাডিসন শহরের স্কাই লাইন, দেখি সবগুলো ভবনের ভীড়ে তখন, মাথা তুলে সবার উঁচুতে দাঁড়িয়ে উইসকনসিন স্টেইট ক্যাপিটল।

                        ছবিঃ দৃষ্টিনন্দন স্টেইট ক্যাপিটল

ফেরার সময়, ম্যাডিসন থেকে বেশ চিন্তিত হয়েই ফিরছিলাম শিকাগোতে। তিন দিন ধরে ল্যারিকে বাসায় একা রেখে গেছি। যাবার আগে তার জন্য কেনা হয়েছে হিটার, জারের তাপমাত্রা ঠিক রাখবার জন্য। যেহেতু খাবার দেয়ার জন্য বাসায় কেউ থাকবে না, পেটস্মার্ট থেকে বিশেষ খাবার কেনা হয়েছে। সে-খাবার তার জারের ভিতর রেখে যেতে হবে, তিন দিন ধরে সেটাই খাবে। কিন্তু, এতটুকু একটা মাছ, আগে কখনো এমনটা হয়নি; তাই কি না কি হলো, সেটা ভেবেই দুশ্চিন্তাই হচ্ছিলো। বাসার দরজা খুলেই দেখি, জারের অন্যপাশ থেকে আস্তে আস্তে এ-পাশে এসে উঁকি দিচ্ছে ল্যারি। খানিক স্থির হয়ে থাকে; তারপর আর পায় কে – ছুটোছুটি, ব্যস্ততা, চঞ্চল হয়ে উঠা! মহাখুশি!!

========> এই সিরিজের বাকী পর্বগুলো একসাথে পাবেন এখানে

মইনুল রাজু
[email protected]