কী এক বাতাস লন্ডভন্ড কইরা দিতাছে আফ্রিকার পশুগুলার
বাদামী লোমগুলারে।মাছির মতোন উড়ুক্কু কিকুওয়ারা
রক্তের বন্যায় ভাসায়া দিতাছে খোলা মাঠ।
মরাগুলা ছড়াইয়া ছিটাইয়া আছে একখান বেহেশতের মইধ্যে।
খালি মরা লাশের ভিতরের মাতব্বর পোকেরা চিৎকার কইরা উঠেঃ
‘এইসব মরা লইয়া কান্দনের কিছু নাই।’
পন্ডিতেরা দেখায় আর জরীপকারীরা আমাগো কয়
ভিনদেশ দখলকারীগো কী কী চালাকি থাকে ।
কিন্তু কথা হইলো,বিছনার মইধ্যে টুকরা টুকরা হইয়া থাকা সাদা বাচ্চাটা
এইসবের কী বুঝে?
কিংবা ইহুদিগো মতোন যাগো সরাইয়া দেওয়া হয় দুনিয়া থেইক্যা
সেইসব অসভ্যগো কাছে এইসবের মানে কী?
মাইর খাইতে খাইতে বিরাট মিছিল ধলা সারসগুলার মরা শরীর দিয়া বানানো
সাদা মাটির উপরে আইসা আছড়াইয়া পড়ে;সভ্যতা শুরু হওয়া মাত্র
শুকাইয়া পুইড়া যাওয়া নদী থেইকা অথবা জন্তু জানোয়ার দিয়া ভরপূর জমিন থেইকা
চলতাছে এই ধলা সারসগুলার কান্দন।জানোয়ারের উপরে জানোয়ারের আক্রমণ-দুনিয়ার
নিয়মই এই,আমরা জানি।কিন্তু দ্যাখতে পাই, মানুষও দেবতা হইবার চায়
আরেকজনের ঘাড় মটকাইয়া।
জানোয়ারের মতোনই সে খেইপা উঠে
নাচতে থাকে বাজনার তালে তালে।
যখনই সে সাহস খুঁজবার চায়, দেশি লোকেরা তখনও
ভয় পাইতে থাকে শ্বেতাঙ্গ শান্তির চুক্তিরে।
তারপরও জানোয়ারের মতন চাহিদা মিটাইতে গিয়া
লোকে বাইর করে খারাপ সব মতলব।এতে কইরা
ঠিক ঠিকই কিন্তু উলূ বনে যায় আমাগো মুক্তা।হিস্পানীওয়ালাগো
দেশে দ্যাখি গরিলা যুদ্ধ করতাছে মনুষ্য-উত্তর জীবের লগে।
আমার রক্তের ভিতরে দুই দিকেরই বিষ
আমি কোনদিকে যাই?রক্তের নালী ভাগ হইয়া আছে দুই দিকে আমার।
আমি যে কিনা গালিগালাজ করছি মদখোর বিলাতী অফিসাররে
কোনটারে রাখুম আমি
আফ্রিকা আর আমার প্রিয় এংরাজি ভাষার মধ্যে?
দুইটারেই ছ্যাকা দিমু?নাকি দিয়া দিমু তাগো তাই
যা তারা আমারে দিছে?
এই মরণলীলা কী কইরা আমি দেখুম আর বইয়া থাকুম চুপচাপ?
আফ্রিকারে আমি ছাইড়া যদি যাই, কেমনে বাঁচুম বলো।
(ডেরেক ওয়ালকটঃ এ ফার ক্রাই ফ্রম আফ্রিকা)
ডেরেক ওয়ালকট পশ্চিম ইন্ডিয়া দ্বীপপুঞ্জের সেন্ট লুসিয়া দ্বীপের অধিবাসী।তাঁহার পিতামহ শ্বেতাঙ্গ আর মাতামহ কৃষ্ণাঙ্গ।ইহা লইয়া তাঁহার দুঃখের অন্ত ছিলো না।কেনিয়াতে এংরাজ সাম্রাজ্যবাদের বিরূদ্ধে মাউ মাউ আন্দোলনে কিকুওয়ারা লড়িয়াছিলো।এই কবিতাটি সে প্রেক্ষাপটেই রচিত হয়।ডেরেক ওয়ালকট উদার মানবতাবাদী।তিনি কোন দিকের রক্তপাতই সহ্য করিতে পারেন না।নোবেল কমিটি তাহাকে নোবেল দিবার সময় এ ব্যাপারটাই মাথায় রাখিয়াছিলো কীনা আমরা তাহা বলিতে পারি না।আপত্তিজনক অনুবাদের জন্য মদীয় প্রচেষ্টাই দায়ী হইবেক।)
দুঃখিত …… অনুবাদটা কেমন যেন আঞ্চলিক আর চলিত ভাষার মিশ্রিত খিচুড়ি লাগতেছে…
তবে এটা স্বীকার করতেই হবে সাবলীল অনুবাদ্…
আপনি কি সবসময় এভাবে আঞ্চলিক ঢঙে লেখেন ? এ ঢঙের কারণে হয়ত কবিতাটা একটু হালকা হয়ে গেল। এটা আমার ব্যক্তিগত অভিমত। ধন্যবাদ। এমনিতে ওয়ালকট বোঝা বেশ শক্ত, অনুবাদ চলতে থাকুক..
@মোজাফফর হোসেন, সব সময় আঞ্চলিক ভাষায় লিখিনা;সাধু চলিত আর আঞ্চলিক -একেক সময় একেকটা ব্যবহার করি ।ওয়ালকট কঠিনই বটে।ধন্যবাদ।
পড়লাম।
মন্দ তো লাগে নি।
কিন্ত্ত কথা হচ্ছে, অনুবাদের জন্যে এরকম প্রয়োগটা কী আপনি সুবিধাজনক বলে মনে করছেন?
@আহমেদ সায়েম, কবিতাটার ইংরেজি নাম হচ্ছে ‘এ ফার ক্রাই ফ্রম আফ্রিকা’।সিরিয়াস ভঙ্গিতে লেখা কবিতা।কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে কবিতাটি ‘শ্লেষাত্নক’ ভাবেও পাঠ করা যায়।তবে এ ধরণের অনুবাদ নিয়ে অনেক মতপার্থক্য আছে।আমার এইভাবে অনুবাদ করতে বেশ ভালোই তো লেগেছে।
@মাহমুদ ইমরান,
আমার কাছে ভালই লেগেছে ।আর তাছাড়া অনুবাদের কোন স্বীকৃত নিয়মত নাই? আর অনূদিত কবিতাতে মূলের স্বাদ কখনই পাওয়া যায় না।তাই অনুবাদকি এখানে মূল কবি।
এখানে ভাষাটা অন্যরকম হয়ে গেল না?
যাই হোক, তপ্ত পরিবেশে আপনার অনূদিত কবিতা স্বস্তির বাতাস বয়ে এনেছে। আর আপনার নিজস্ব কবিতাও মনে হয় পড়েছি আগে। আপনার নিজের বা অনূদিত কবিতা আরও বেশি পড়তে চাই। ভাল থাকুন, ইমরান ভাই!
@কাজি মামুন, হুম একটু কৃত্রিম হয়ে গেছে।দ্যাখি এইটারে অন্যভাবে বলা যায় কিনা।ভালো থাকবেন আপনিও।