কোরান ও হাদিসে ভুরি ভুরি আজগুবি,উদ্ভট ও অযৌক্তিক বিষয় থাকার পরেও এমন কি এসব ভাল ভাবে জানার পরেও কেন একজন মানুষ ইসলাম মেনে চলে? এর বহু কারন থাকলেও প্রধান কারন হলো দোজখের আগুনের ভয়ে। মানুষ যে আসলে বেহেস্তের হুর পরীর লোভে খুব বেশী ধর্মপরায়ণ হয় তা ঠিক নয় , সে বরং যাতে দোজখে পড়ে আগুনে না পোড়ে, দোজখের আগুন থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্যই ইসলাম ধর্ম অনুসরণ করে।একজন অমুসলিমকে ইসলামে আহ্বান করার জন্যেও এটা হলো সব চেয়ে ভাল দাওয়াই।দুনিয়ার অধিকাংশ মানুষই এখনও কোন না কোন ধর্ম বিশ্বাস করে।ধর্ম বিশ্বাস মানেই হলো কোন এক সৃষ্টি কর্তায় বিশ্বাস। তখন স্বাভাবিক ভাবেই যেটা চলে আসে তা হলো- সৃষ্টি কর্তা মানব জাতিকে সৃষ্টি করে দুনিয়াতে পাঠিয়েছে, বিভিন্ন সময় হয় সৃষ্টি কর্তা নিজে স্বয়ং ( যীশু, কৃষ্ণ, রাম এসব অবতার)এসে এদেরকে ভাল মন্দ শিক্ষা দিয়ে গেছে, অথবা সে বহু নবী পয়গম্বর ( ইব্রাহিম, মূসা, মোহাম্মদ এসব নবী)পাঠিয়ে সেসব শিক্ষা দিয়ে গেছে। এখন ভাল কাজ করলে যদি পুরষ্কার থাকে , যেমন স্বর্গ বা বেহেস্ত আর সেখানে হুর, পরী, অপ্সরি , মদের নহর, গেলমান এসব ; তাহলে খারাপ কাজের জন্য শাস্তির ব্যবস্থা থাকতেই হবে। সেটা হতে পারে জ্বলন্ত আগুনে পোড়া যা খুব বেশী প্রচলিত সব ধর্মেই। এখন দুনিয়াতে চলতে ফিরতে গেলে মা্নুষ সব সময় ভাল কাজ করতে পারে না , জীবন জীবিকার তাড়নায় তাকে অনেক সময়ই খারাপ কাজ করতে হয় বা ধর্মীয় অনুশাসন বা ক্রিয়া কলাপ গুলো সঠিক ভাবে পালন করা সম্ভব হয় না। যার ফলাফল নির্ঘাত দোজখে আগুনে পোড়া। সে পোড়া যদি হয় অনন্ত কাল তাহলে মানুষের মনের মধ্যে অজান্তেই একটা বিশাল ভয় ঢুকে যাবে। তখন তার যুক্তিবোধ ভোতা হতে বাধ্য।তখন সে মনে করে অত শত চিন্তা ভাবনা করে কোন লাভ নেই, সৃষ্টি কর্তা আছে কি নেই এটা নিয়েও গবেষণা করে কোন ফায়দা নেই, ব্যস্ত জীবনে এসব নিয়ে খোজ খবর করারও কোন সময় নেই।তার চেয়ে সোজা রাস্তা হলো ধর্মটাকে পালন করে যাওয়া যেভাবে যতটুকু পারা যায়।এখানে ইসলামের বিশেষত্বটা কি ? ইসলামের বিশেষত্বটা হলো – মোহাম্মদ সাধারন মানুষের এ দোটানা মনোভাবকে খুব ভালমতো বুঝতে পেরেছিলেন।বুঝতে পেরেই তিনি তার ইসলাম ধর্মের মধ্যে এ দোজখের ভয়টাকেই সবচাইতে বেশী কাজে লাগিয়েছিলেন।অন্যান্য ধর্মে দোজখ বা নরক যন্ত্রনার কথা থাকলেও সেটা ইসলামের মত এত বেশী প্রকট নয়।এত বেশী পরিস্কার ভাবে দোজখ বা নরকের বিবরণও অন্যান্য ধর্মে নেই যেটা আছে ইসলাম ধর্মে।এর ফরে বিভ্রান্ত মানুষ অনেক সময়ই ইসলামের ফাঁদে পড়ে ইসলাম গ্রহণ করে বসে।
হিন্দু ধর্মে স্বর্গ ও নরক দুটো থাকলেও একটা উদ্ভট তত্ত্ব আছে সেখানে আর সেটা হলো জন্মান্তরবাদ।মানুষ তার কর্ম অনুযায়ী পূনরায় জন্মগ্রহণ করে, এভাবে শত শত লক্ষ লক্ষ বার জন্মও গ্রহণ করতে পারে একজন মানুষ পূর্ন পাপ স্খলন করে স্বর্গে যাওয়ার জন্য।এই যদি হয় অবস্থা সেখানে নরকের কোন প্রয়োজনীয়তা দেখা যায় না কারন জন্মের পর জন্ম গ্রহণ করে যদি পাপ স্খলন করতে হয় তাহলে এক পর্যায়ে সবাই স্বর্গে চলে যাবে, নরকে শাস্তি ভোগ করার সুযোগ কোথায় ?
খৃষ্টাণ ধর্মে বলা হয় যীশু নিজে স্বয়ং ঈশ্বর, তিনি তার সন্তানরূপ মানবজাতিকে এত ভালবাসেন যে তিনি মানুষরূপে(যীশু) জন্মগ্রহণ করে দুনিয়ার সেসব মানুষের পাপ গ্রহণ করে চলে গেছেন সেই দুই হাজার বছর আগে, যেসব মানুষ যীশুকে তাদের রক্ষাকর্তা রূপে গ্রহন করেছে বা করবে। এক্ষেত্রে যারা তাকে রক্ষাকর্তা রূপে গ্রহণ করে নি তাদের জন্য নরক যন্ত্রনার একটা ব্যবস্থা থাকাটা বেশ যুক্তি যুক্ত।খৃষ্টান ধর্মে নরকের ধারনা এসেছে অবশ্যই তার আগের ধর্ম ইহুদি থেকে। তৌরাত কিতাব থেকে কিছু ধারনা পাওয়া যায় , যেমন-

তার সমস্ত পূত্র কন্যারা তাকে সান্তনা দিতে এগিয়ে এলেও তিনি কোন সান্তনা পেলেন না, তিনি বললেন –না, আমি শোক করতে করতে আমার সন্তানের কাছে পাতালে নেমে যেতে চাই।জেনেসিস-৩৭:৩৫

কিন্তু প্রভূ যদি অঘটন ঘটান আর ভূমি যদি হা করে এদের ও এদের সবকিছুকে গ্রাস করে ফেলে তবে এরা জীবন্তই পাতালে নেমে যায় আর তখন বুঝতে পারবে এরা প্রভূকে অবজ্ঞা করেছে।মোশী একথা শেষ করা মাত্র তাদের পায়ের নীচ থেকে মাটি তলিয়ে গেল।আর ভূমি তার নিজের মুখ হা করে তাদের, তাদের পরিবারের সকলকে ও কোরার পক্ষের সকল লোককে এবং তাদের সম্পত্তি গ্রাস করে ফেলল।নাম্বারস(গণনাপুস্তক)-১৬: ৩০-৩৩

বলা বাহুল্য পাতাল এখানে মোটেও কোন স্বর্গ নয়।স্বর্গ হলে প্রভু তাকে অবজ্ঞাকারীদেরকে সেখানে পাঠাত না।সুতরাং এটা নরককেই বোঝাচ্ছে। এখন এই পাতাল নামক নরকে কি আগুন আছে নাকি অন্য কোন শাস্তির ব্যবস্থা সেখানে আছে সেটা পরিস্কার নয়, তবে সেটা যে কোন মহা যন্ত্রনাদায়ক স্থান সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।

তৌরাত কিতাবে পাতাল হিসাবে আখ্যায়িত হলেও নতুন নিয়ম তথা গসপেলে দেখা যাচ্ছে এটাকে নরক বলা হচ্ছে ,যেমন-
যারা দেহকে মেরে ফেলতে পারে কিন্তু আত্মাকে মেরে ফেলতে পারে না তাদেরকে ভয় করো না, বরং যিনি দেহ ও আত্মা দুটোকেই নরকে বিনাশ করতে পারেন তাকে ভয় কর।মথি-১০: ২৮

তোমার হাত যদি তোমার পদস্খলনের কারন হয় তবে তা কেটে ফেল, দুটো হাত নিয়ে নরকে সেই অনির্বান আগুনে যাওয়ার চেয়ে বরং নুলো হয়ে জীবনে প্রবেশ করাই তোমার পক্ষে মঙ্গল।মার্ক-৯:৪৩

এ বর্ণনা থেকে বোঝা যাচ্ছে যে নরকে আগুন আছে আর তা অনির্বান তথা কখনো নেভে না আর পাপীদেরকে সে অনির্বান আগুনে অনন্তকাল পোড়ানো হবে। এ থেকে বোঝাই যাচ্ছে যে, মোহাম্মদ মূলত: বাইবেলের নতুন নিয়ম থেকেই তার অগ্নিময় দোজখের ধারনা আমদানি করেন।
যদি খেয়াল করা হয় তবে দেখা যাবে তৌরাত কিতাব বা গসপেল কোথাও বারংবার মানুষকে নরকের আগুনের ভয় দেখানো হয় নি।কদাচিৎ নরকের আগুনের ভয় দেখানো হয়েছে। তবে দোদুল্যমান মানুষকে ধর্মের পথে টানার জন্য নরক বা দোজখের আগুনের ভয় দেখানো বলা বাহুল্য একটা কার্যকর মারাত্মক দাওয়াই।বিশেষ করে সেই প্রাচীন যুগে যখন মানুষের জ্ঞান ছিল সীমিত।এমনকি বর্তমানের এই বিজ্ঞানের যুগেও দোজখের আগুনের ভয় মানুষকে দারুনভাবে তাড়া করে ফেরে। তার প্রমান হলো ইসলাম ও দোজখের ভয়ে সদা কম্পমান মুমিন মুসলমানরা।তাই দেখা যায় মুমিন বান্দারা যতটা না বেহেস্তে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে তার চেয়ে বেশী ভয় পায় দোজখের আগুনে যাতে পুড়ে মরতে না হয়।এখন দেখা যাক কি ভাবে ও কত প্রকারে মোহাম্মদ এ ধরনের একটা অলীক দোজখের ভয় দেখিয়ে মানুষকে তার দলে ভিড়িয়েছিলেন।

আর যে লোক তা অস্বীকার করবে এবং আমার নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার প্রয়াস পাবে, তারাই হবে জাহান্নামবাসী; অনন্তকাল সেখানে থাকবে।২:৩৯
এরাই পরকালের বিনিময়ে পার্থিব জীবন ক্রয় করেছে। অতএব এদের শাস্তি লঘু হবে না এবং এরা সাহায্যও পাবে না।২:৮৬
যার বিনিময়ে তারা নিজেদের বিক্রি করেছে, তা খুবই মন্দ; যেহেতু তারা আল্লাহ যা নযিল করেছেন, তা অস্বীকার করেছে এই হঠকারিতার দরুন যে, আল্লাহ স্বীয় বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছা অনুগ্রহ নাযিল করেন। অতএব, তারা ক্রোধের উপর ক্রোধ অর্জন করেছে। আর কাফেরদের জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি।২:৯০
এরা চিরকাল এ লা’নতের মাঝেই থাকবে। তাদের উপর থেকে আযাব কখনও হালকা করা হবে না বরং এরা বিরাম ও পাবে না।২:১৬২
কাফেরদিগকে বলে দিন, খুব শিগগীরই তোমরা পরাভূত হয়ে দোযখের দিকে হাঁকিয়ে নীত হবে-সেটা কতই না নিকৃষ্টতম অবস্থান।৩:১২
যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কস্মিণকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে ক্ষতি গ্রস্ত।৩:৮৫
হে আমাদের পালনকর্তা! নিশ্চয় তুমি যাকে দোযখে নিক্ষেপ করলে তাকে সবসময়ে অপমানিত করলে; আর জালেমদের জন্যে তো সাহায্যকারী নেই।৩:১৯২
এবং তোমরা সে আগুন থেকে বেঁচে থাক, যা কাফেরদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।৩:১৩১
আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে, এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি।৪:১৮
অতঃপর তাদের কেউ তাকে মান্য করেছে আবার কেউ তার কাছ থেকে দূরে সরে রয়েছে। বস্তুতঃ (তাদের জন্য) দোযখের শিখায়িত আগুনই যথেষ্ট।এতে সন্দেহ নেই যে, আমার নিদর্শন সমুহের প্রতি যেসব লোক অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করবে, আমি তাদেরকে আগুনে নিক্ষেপ করব। তাদের চামড়াগুলো যখন জ্বলে-পুড়ে যাবে, তখন আবার আমি তা পালটে দেব অন্য চামড়া দিয়ে, যাতে তারা আযাব আস্বাদন করতে থাকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, হেকমতের অধিকারী।৪:৫৫-৫৬
যে ব্যক্তি স্বেচ্ছাক্রমে মুসলমানকে হত্যা করে, তার শাস্তি জাহান্নাম, তাতেই সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন, তাকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তার জন্যে ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন।৪:৯৩
তাদের বাসস্থান জাহান্নাম। তারা সেখান থেকে কোথাও পালাবার জায়গা পাবে না। ৪:১২১
আর কোরআনের মাধ্যমে তোমাদের প্রতি এই হুকুম জারি করে দিয়েছেন যে, যখন আল্লাহ তা’ আলার আয়াতসমূহের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রুপ হতে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা প্রসঙ্গান্তরে চলে যায়। তা না হলে তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে। আল্লাহ দোযখের মাঝে মুনাফেক ও কাফেরদেরকে একই জায়গায় সমবেত করবেন।৪:১৪০
প্রকৃতপক্ষে এরাই সত্য প্রত্যাখ্যাকারী। আর যারা সত্য প্রত্যাখ্যানকারী তাদের জন্য তৈরী করে রেখেছি অপমানজনক আযাব।৪:১৫১
আর এ কারণে যে, তারা সুদ গ্রহণ করত, অথচ এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল এবং এ কারণে যে, তারা অপরের সম্পদ ভোগ করতো অন্যায় ভাবে। বস্তুত; আমি কাফেরদের জন্য তৈরী করে রেখেছি বেদনাদায়ক আযাব।৪:১৬১
তারা দোযখের আগুন থেকে বের হয়ে আসতে চাইবে কিন্তু তা থেকে বের হতে পারবে না। তারা চিরস্থায়ী শাস্তি ভোগ করবে।৫:৩৭
যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলবে এবং তা থেকে অহংকার করবে, তারাই দোযখী এবং তথায় চিরকাল থাকবে।৭:৩৬
আল্লাহ বলবেনঃ তোমাদের পূর্বে জিন ও মানবের যেসব সম্প্রদায় চলে গেছে, তাদের সাথে তোমরাও দোযখে যাও। যখন এক সম্প্রদায় প্রবেশ করবে; তখন অন্য সম্প্রদায়কে অভিসম্পাত করবে। এমনকি, যখন তাতে সবাই পতিত হবে, তখন পরবর্তীরা পূর্ববর্তীদের সম্পর্কে বলবেঃ হে আমাদের প্রতিপালক এরাই আমাদেরকে বিপথগামী করেছিল। অতএব, আপনি তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দিন। আল্লাহ বলবেন প্রত্যেকেরই দ্বিগুণ; তোমরা জান না।৭:৩৮
পূর্ববর্তীরা পরবর্তীদেরকে বলবেঃ তাহলে আমাদের উপর তোমাদের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই অতএব, শাস্তি আস্বাদন কর স্বীয় কর্মের কারণে।৭:৩৯
নিশ্চয়ই যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলেছে এবং এগুলো থেকে অহংকার করেছে, তাদের জন্যে আকাশের দ্বার উম্মুক্ত করা হবে না এবং তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। যে পর্যন্ত না সূচের ছিদ্র দিয়ে উট প্রবেশ করে। আমি এমনিভাবে পাপীদেরকে শাস্তি প্রদান করি।৭:৪০
তাদের জন্যে নরকাগ্নির শয্যা রয়েছে এবং উপর থেকে চাদর। আমি এমনিভাবে জালেমদেরকে শাস্তি প্রদান করি।৭:৪১
তারা কি একথা জেনে নেয়নি যে, আল্লাহর সাথে এবং তাঁর রসূলের সাথে যে মোকাবেলা করে তার জন্যে নির্ধারিত রয়েছে দোযখ; তাতে সব সময় থাকবে। এটিই হল মহা-অপমান।৯:৬৩
ছলনা কর না, তোমরা যে কাফের হয়ে গেছ ঈমান প্রকাশ করার পর। তোমাদের মধ্যে কোন কোন লোককে যদি আমি ক্ষমা করে দেইও, তবে অবশ্য কিছু লোককে আযাবও দেব। কারণ, তারা ছিল গোনাহগার।৯:৬৬
ওয়াদা করেছেন আল্লাহ, মুনাফেক পুরুষ ও মুনাফেক নারীদের এবং কাফেরদের জন্যে দোযখের আগুনের-তাতে পড়ে থাকবে সর্বদা। সেটাই তাদের জন্যে যথেষ্ট। আর আল্লাহ তাদের প্রতি অভিসম্পাত করেছেন এবং তাদের জন্যে রয়েছে স্থায়ী আযাব।৯:৬৮
হে নবী, কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করুন এবং মুনাফেকদের সাথে তাদের সাথে কঠোরতা অবলম্বন করুন। তাদের ঠিকানা হল দোযখ এবং তাহল নিকৃষ্ট ঠিকানা।৯:৭৩
তারা কসম খায় যে, আমরা বলিনি, অথচ নিঃসন্দেহে তারা বলেছে কুফরী বাক্য এবং মুসলমান হবার পর অস্বীকৃতিজ্ঞাপনকারী হয়েছে। আর তারা কামনা করেছিল এমন বস্তুর যা তারা প্রাপ্ত হয়নি। আর এসব তারই পরিণতি ছিল যে, আল্লাহ ও তাঁর রসূল তাদেরকে সম্পদশালী করে দিয়েছিলেন নিজের অনুগ্রহের মাধ্যমে। বস্তুতঃ এরা যদি তওবা করে নেয়, তবে তাদের জন্য মঙ্গল। আর যদি তা না মানে, তবে তাদের কে আযাব দেবেন আল্লাহ তা’আলা, বেদনাদায়ক আযাব দুনিয়া ও আখেরাতে। অতএব, বিশ্বচরাচরে তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী-সমর্থক নেই।৯:৭৪
সে সমস্ত লোক যারা ভৎর্সনা-বিদ্রূপ করে সেসব মুসলমানদের প্রতি যারা মন খুলে দান-খয়রাত করে এবং তাদের প্রতি যাদের কিছুই নেই শুধুমাত্র নিজের পরিশ্রমলব্দ বস্তু ছাড়া। অতঃপর তাদের প্রতি ঠাট্টা করে। আল্লাহ তাদের প্রতি ঠাট্টা করেছেন এবং তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব।৯:৭৯
পেছনে থেকে যাওয়া লোকেরা আল্লাহর রসূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বসে থাকতে পেরে আনন্দ লাভ করেছে; আর জান ও মালের দ্বারা আল্লাহর রাহে জেহাদ করতে অপছন্দ করেছে এবং বলেছে, এই গরমের মধ্যে অভিযানে বের হয়ো না। বলে দাও, উত্তাপে জাহান্নামের আগুন প্রচন্ডতম। যদি তাদের বিবেচনা শক্তি থাকত।৯:৮১
আর ছলনাকারী বেদুঈন লোকেরা এলো, যাতে তাদের অব্যাহতি লাভ হতে পারে এবং নিবৃত্ত থাকতে পারে তাদেরই যারা আল্লাহ ও রসূলের সাথে মিথ্যা বলে ছিল। এবার তাদের উপর শীগ্রই আসবে বেদনাদায়ক আযাব যারা কাফের।৯:৯০
এখন তারা তোমার সামনে আল্লাহর কসম খাবে, যখন তুমি তাদের কাছে ফিরে যাবে, যেন তুমি তাদের ক্ষমা করে দাও। সুতরাং তুমি তাদের ক্ষমা কর-নিঃসন্দেহে এরা অপবিত্র এবং তাদের কৃতকর্মের বদলা হিসাবে তাদের ঠিকানা হলো দোযখ।৯:৯৫
আর কিছু কিছু তোমার আশ-পাশের মুনাফেক এবং কিছু লোক মদীনাবাসী কঠোর মুনাফেকীতে অনঢ়। তুমি তাদের জান না; আমি তাদের জানি। আমি তাদেরকে আযাব দান করব দু’বার, তারপর তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হবে মহান আযাবের দিকে। ৯:১০১
যে ব্যাক্তি স্বীয় গৃহের ভিত্তি রেখেছে কোন গর্তের কিনারায় যা ধ্বসে পড়ার নিকটবর্তী এবং অতঃপর তা ওকে নিয়ে দোযখের আগুনে পতিত হয়। আর আল্লাহ জালেমদের পথ দেখান না।৯:১০৯
তাঁর কাছেই ফিরে যেতে হবে তোমাদের সবাইকে, আল্লাহর ওয়াদা সত্য, তিনিই সৃষ্টি করেন প্রথমবার আবার পুনর্বার তৈরী করবেন তাদেরকে বদলা দেয়ার জন্য যারা ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে ইনসাফের সাথে। আর যারা কাফের হয়েছে, তাদের পান করতে হবে ফুটন্ত পানি এবং ভোগ করতে হবে যন্ত্রনাদায়ক আযাব এ জন্যে যে, তারা কুফরী করছিল।১০:০৪
মন লোকদের ঠিকানা হল আগুন সেসবের বদলা হিসাবে যা তারা অর্জন করছিল।১০:৮
অবশ্য তোমাদের পূর্বে বহু দলকে ধ্বংস করে দিয়েছি, তখন তারা জালেম হয়ে গেছে। অথচ রসূল তাদের কাছেও এসব বিষয়ের প্রকৃষ্ট নির্দেশ নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু কিছুতেই তারা ঈমান আনল না। এমনিভাবে আমি শাস্তি দিয়ে থাকি পাপি সম্প্রদায়কে।১০:১৩
আর যারা সঞ্চয় করেছে অকল্যাণ অসৎ কর্মের বদলায় সে পরিমাণ অপমান তাদের চেহারাকে আবৃত করে ফেলবে। কেউ নেই তাদেরকে বাঁচাতে পারে আল্লাহর হাত থেকে। তাদের মুখমন্ডল যেন ঢেকে দেয়া হয়েছে আধাঁর রাতের টুকরো দিয়ে। এরা হল দোযখবাসী। এরা এতেই থাকবে অনন্তকাল।১০:২৭


পূরো কোরান থেকে এভাবে শত শত আয়াত দেখানো যাবে যার মাধ্যমে মোহাম্মদ তার অনুসারী ও তাকে অবিশ্বাসকারী মানুষদেরকে ক্রমাগত ভয় দেখিয়েছেন দোজখ ও তার আগুনের।মূল বক্তব্য হলো-

তোমরা আমাকে নবী মান, আমি যা বলি তাই শোন, না হলে তোমাদেরকে দোজখে পোড়ান হবে।

শুধু কোরান নয়, হাদিসেও আছে এরকম ভূরি ভূরি উদাহরন।এবার সেগুলোকে একটু দেখা যাক-

ইবনে আব্বাস বর্ণিত – নবী বলেছিলেন, “ আমাকে দেখানো হয়েছিল দোজখের অধিকাংশ অধিবাসী হলো নারী যারা অকৃতজ্ঞ ছিল”। জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, “ তারা কি আল্লাহকে অবিশ্বাস করে ?”(বা আল্লাহর প্রতি অকৃতজ্ঞ?)।তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, “ তারা তাদের স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞ এবং তাদের যে সুবিধাদি দেয়া হয় তা তার জন্য তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।যদি তুমি তাদেরকে সব সময় নানা রকম সুবিধা প্রদান কর এবং কোন এক সময় তারা ভিন্ন কিছু দেখে যা তাদের পছন্দ নয়, তখন তারা বলবে- আমি তোমার কাছ থেকে কখনই ভাল কিছু পাই নি”। সহি বুখারি, ভলুম-১. বই-২, হাদিস-২৯

আাবু সাইদ খুদরি বর্ণিত- একদা আল্লাহর নবী ঈদ উল আজহা বা ঈদ উল ফিতর এর নামাজ পড়ার জন্য বের হলেন। পথে তিনি কিছু নারীদেরকে যেতে দেখলেন ও বললেন-“ ওহে নারীরা, দান কর, কারন আমি দেখেছি দোজখের অধিকাংশ অধিবাসী হলো নারী তারা আগুনে পুড়ছে” । তারা জিজ্ঞেস করল-“ হে আল্লাহর নবী কেন তা ?” তিনি উত্তর দিলেন- “ তোমরা সব সময়ই তোমাদের স্বামীদেরকে অভিশাপ দাও আর তাদের প্রতি অকৃতজ্ঞ। আমি তোমাদের মত কম বুদ্ধি সম্পন্ন ও ধার্মিক আর কাউকে দেখিনি। একজন অতি সতর্ক মানুষও তোমাদের জন্য বিপথে যেতে পারে”। তারা জিজ্ঞেস করল-“ হে আল্লাহর নবী, বুদ্ধি ও ধর্মে আমাদের যে ঘাটতি আছে সেটা কিরকম?” তিনি বললেন- “ এটা কি ঠিক নয় যে একজন পুরুষের সাক্ষী হলো দুইজন নারীর সমান( সূরা বাকারা,২:২৮২) ?” তারা হ্যা সূচক উত্তর দিল। তখন নবী বললেন-“ এটাই তোমাদের বুদ্ধির ঘাটতি। এটা কি ঠিক নয় যে তোমাদের মাসিক রজ:স্রাবের সময় নামাজ বা রোজা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে?” স্ত্রীলোকগুলো হ্যা সূচক উত্তর দিল। তিনি বললেন-“ এটাই তোমাদের ধর্ম জ্ঞানের ঘাটতি”।বুখারি, ভলুম-১, বই-৬, হাদিস নং-৩০১,

উসামা বর্ণিত-নবী বলেছিলেন, “ আমি বেহেস্তের দরজায় দাড়ালাম এবং দেখলাম যে যারা তাতে প্রবেশ করল তাদের অধিকাংশই গরিব, যখন ধনীরা তাতে প্রবেশ করতে গেল তাদেরকে গেটে থামান হলো। তখন আমি দোজখের গেটে দাড়ালাম এবং দেখলাম তাতে যারা প্রবেশ করল তাদের অধিকাংশ নারী”। বুখারি, ভলুম-৭, বই-৬২, হাদিস-১২৪
হুবহু এ ধরনের আরও বহু হাদিস আছে।

আবু সাইদ খুদরি বর্ণিত- ……………….নব তখন বললেন, “ একজন ঘোষণা করবে, ‘ যারা যার যার উপাসনা করতে তারা এক এক কাতারে দাড়াও’ । সুতরাং যারা ক্রুশের উপাসনা করত তারা ক্রুশের কাছে যাবে , যারা পুতুলের পুজো করত তারা তাদের পুতুলের কাছে যাবে, যারা বিভিন্ন দেব দেবীর উপাসনা করত তারা তাদের স্ব স্ব দেব দেবীদের কাছে যাবে।অত:পর যারা এক আল্লাহর উপাসনা করত ও কিছু আহলে কিতাবীরা ( ইহুদি ও খৃষ্টান) বাকী থেকে যাবে। অত:পর তাদেরকে কাছে দোজখ উপস্থিৎ হবে যেন তার ছিল একটা ছায়া মাত্র। তারপর ইহুদিদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে “ তোমরা কিসের উপাসনা করতে?’ তারা উত্তর দিবে, ‘ আমরা এজরা যিনি ছিলেন আল্লাহর পূত্র তার উপাসনা করতাম’।তাদেরকে বলা হবে , ‘ তোমরা হলে মিথ্যাবাদি, কারন আল্লাহর কোন পূত্র বা স্ত্রী নেই। এখন তোমরা কি চাও ? তারা উত্তর দিবে-‘ আমাদেরকে কিছু পানি দাও’। তখন তাদেরকে বলা হবে , ‘ পান কর’ এবং তাদেরকে দোজখে ফেলে দেয়া হবে। এর পরে খৃষ্টানদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে , ‘ তোমরা কার উপাসনা করতে ? তারা উত্তর দিবে , ‘ আমরা আল্লার পূত্র মেশিয়ার উপাসনা করতাম’। তখন তাদেরকে বলা হবে, ‘ তোমরা মিথ্যাবাদি, আল্লাহর কোন পূত্র বা স্ত্রী নেই’। এখন তোমরা কি চাও? তারা বলবে –‘ আমরা পানি পান করতে চাই’। তাদেরকে বলা হবে – ‘পান কর’ এবং এই বলে তাদেরকে দোজখে ফেলে দেয়া হবে।তখন শুধুমাত্র যারা আল্লাহর উপাসনা করত ও তার প্রতি বাধ্য ছিল তারাই বাকী থাকবে………”। বুখারি, ভলুম-৯, বই-৯৩, হাদিস-৪৩২

আন নুমান বর্ণিত- আমি নবীকে বলতে শুনেছি, “ যাকে দোজখে সব চাইতে কম শাস্তি দেয়া হবে তার শুধুমাত্র পায়ের পাতা দোজখে থাকবে কিন্তু তাতেই তার মাথার ঘিলু টগ বগ করে ফুটতে থাকবে”। বুখারি, ভলুম-৮, বই-৭৬, হাদিস-৫৬৬

এর পরেও কারও যদি ইসলামি দোজখ সম্পর্কে আরও বেশী জানার আগ্রহ থাকে , তিনি কামরান মির্জার নিবন্ধ ভয়ংকর ইসলামি দোজখে যেতে পারেন।

এরকম হুবহু এক রকম হাদিস আছে বুখারি, মুসলিম, আবু দাউদ সহ সকল হাদিস বইয়ে।আর সেখানে বলা আছে রোম হর্ষক দোজখ ও তার আগুনের বিবরণী। সেসব দেখলে বোঝা যায় , মোহাম্মদ নিজের কল্পনাকে আশ্রয় করে দোজখের চিত্র এঁকেছেন।এসব বর্ণনা কখন দিয়েছেন প্রায় অজ্ঞ ও নিরক্ষর মানুষের সামনে? সেই ১৪০০ বছর আগের মূর্খ গোয়ার একগুয়ে উগ্র দেশ প্রেমিক আরবদের কাছে, যারা ছিল মূলত: খুব গরিব ও যাদের জীবন যাত্রা ছিল খুব কঠোর।এখনো এ সমাজে উদ্ভট গল্প ও কিচ্ছা বিশ্বাস করার লোকের অভাব নেই, তারা ভূত পেত্নি জ্বীন পরী ইত্যাদিতে বিশ্বাস করে।কিছুকাল আগেও গ্রাম গঞ্জে মানুষকে হর হামেশাই ভুতে ধরত, পরে ওঝা ডেকে ভুত তাড়াতে হতো। এ যদি হয় বর্তমান কালের অবস্থা সেই ১৪০০ বছর আগেকার অবস্থাটা সহজেই বোধ গম্য। প্রশ্ন হলো – এত কিছুর পরেও মোহাম্মদকে কেন কুরাইশদেরকে দলে টানতে এত বেগ পেতে হলো?

প্রথম কারন হলো – কেউ সাধারণত অত সহজে তার নিজের বিশ্বাসটাকে ত্যাগ করতে চায় না তা সেটা যতই আজগুবি হোক না কেন।মানুষ গোষ্ঠিবদ্ধ জীব, কেউ সহসা তার ধর্মীয় বিশ্বাসটাকে ত্যাগ করে বিচ্ছিন্ন হতে চায় না। তাছাড়া প্রত্যেকেই মনে করে তার ধর্মীয় বিশ্বাস হলো সেরা।কুরাইশরাও সেটাই মনে করত।

দ্বিতীয়ত:কুরাইশরা যে মোহাম্মদকে নবী হিসাবে বিশ্বাস করে তার ইসলাম গ্রহন করতে রাজী হয় নি তার কারন হলো তারা মোহাম্মদকে ভাল করেই চিনত ও জানত।বাল্য কাল থেকে তার মধ্যে এমন কোন গুণপনা দেখা যায় নি যে হঠাৎ করে নিজেকে নবী হিসাবে দাবী করলেই তাকে বিশ্বাস করতে হবে।

তৃতীয়ত: তৎকালীন আরব সমাজে কতকগুলো রীতি ছিল। শৌর্য বীর্যের একটা মহান মর্যাদা ছিল সে সমাজে।বাল্য কাল থেকে মোহাম্মদ এমন কোন শৌর্য বীর্যের পরিচয় দেন নি যে তাকে নবী হিসাবে মেনে তার কথা শুনে চলতে হবে।

চতুর্থত: মোহাম্মদ বাল্যে তার দাদা মুত্তালিব ও পরে যৌবনে আবু তালিবের অধীনে থাকতেন ও আবু তালিবের উট দুম্বা চরাতেন। এতীম নি:স্ব মানুষকে সে সমাজের মানুষ করুনার দৃষ্টি দিয়ে দেখলেও তাকে নেতা মানার মত মানসিকতা কুরাইশদের ছিল না।

পঞ্চমত: মোহাম্মদের সত্যিকার অর্থেই কোন মর্যাদা ছিল না, কারন ২৫ বছর বয়েসে ৪০ বছরের ধনী খাদিজাকে বিয়ে করা ও তার পর স্ত্রীর অর্থে বসে জীবন যাপন করাটা সেই আরবী সমাজে ছিল ভীষণ রকম অসম্মানজনক একট ঘটনা। স্ত্রীর ওপর নির্ভরশীল মানুষকে ভীষণ রকম হীন দৃষ্টি দিয়ে দেখা হতো সে সমাজে।এরকম একটা চাল চুলোহীন ও মর্যাদাহীন মানুষকে নবী হিসাবে মেনে নেয়া ছিল ভীষণ রকম আত্মরম্ভী, উদ্ধত কুরাইশদের কল্পনার বাইরে।তখনকার যে সব কুরাইশ নেতাদের কথা জানা যায় যেমন- আবু লাহাব, আবু জেহেল, আবু সুফিয়ান এরা ছিল যেমন তেজস্বী তেমনি আত্মমর্যাদাশীল।তারা ছিল সেই সমাজের দন্ড মুন্ডের কর্তা।

এ পঞ্চম কারন থেকে বোঝা যায় যে কেন মোহাম্মদ খাদিজাকে বিয়ে করার পর প্রায় একাকি হয়ে পড়েছিলেন যে কারনে তিনি প্রায়ই নির্জন বাস করতেন। স্ত্রীর ওপর বসে খাওয়া মর্যাদাহীন একটা মানুষকে কেউ সে সমাজে পাত্তা দিত না, তার কথা কেউ কানে দিত না।শৈশবেই পিতা মাতা হারা মোহাম্মদ এমনিতেই পিতা মাতার আদর ভালবাসাহীন পরিবেশে বেড়ে উঠে মানসিক ভাবে হয়ে উঠেছিলেন যেমন হতাশাগ্রস্ত, তেমনি এক রোখা।বিয়ের আগে আবু তালিবের বাড়িতে থাকা অবস্থায় তিনি সমাজে কোন মতে মেলা মেশা করতে পারতেন , কারন আবু তালিবও ছিলেন সে সমাজে একজন সম্ভ্রান্ত নেতা। বিয়ের পর একেবারেই একা হয়ে যান মোহাম্মদ। যা তার হতাশাগ্রস্থ মানসে বিশাল প্রভাব ফেলে।প্রায়ই একাকি নির্জন বাস করতে থাকেন। নির্জনে কাটানো একজন হতাশাগ্রস্থ মানুষের মনে নানা রকম চিন্তা ভাবনা, কল্পনা উকি ঝুকি দিতে থাকে। এ থেকেই তার সৃষ্টি হয় দৃষ্টি বিভ্রম তথা হ্যালুসিনেশন সমস্যা। হেরা গুহায় নির্জন বাস বা ধ্যান করার সময় মোহাম্মদ সেই দৃষ্টি বিভ্রমে আক্রান্ত হন যা সেই বিখ্যাত জিব্রাইল ফিরিস্তা দর্শনের ঘটনা ও প্রথম ওহী নাজিলের ঘটনা হিসাবে প্রচারিত।২৫ বছর থেকে ৪০ বছর। ১৫ বছর সময় বেশ লম্বা সময় একজন মানুষের জীবনে। এই ১৫ বছর ধরে মোহাম্মদ বহু চিন্তা ভাবনা কল্পনা করেছেন আর তার পরেই তার অলীক দর্শনের গল্প মানুষের কাছে প্রচার করা শুরু করেছিলেন। এর মধ্যে তিনি ভাল মতো জেনে গেছেন তৌরাত ,গসপেলের গল্প। কারন তিনি তার চাচা আবু তালিবের সাথে বেশ কয়বার বানিজ্য উপলক্ষ্যে সিরিয়া গমন করেন, সিরিয়াতে বসবাস করত খৃষ্টান ও ইহুদিরা। সেখানে অবস্থান উপলক্ষ্যে মোহাম্মদ তাদের সাথে মেলা মেশা করে তাদের ধর্মীয় কাহিনীগুলি ভালই রপ্ত করেন। এখন অনেকে কোরানের ঐশ্বরিকতা প্রমান করতে যেয়ে প্রশ্ন তোলেন- নিরক্ষর মোহাম্মদের পক্ষে কিভাবে তৌরাত ও গসপেলের কাহিনী কোরানে বলা সম্ভব ছিল ? তারা ভুলে যায় বা গোপন করে যায় যে , মোহাম্মদ তার কোরানের বানী প্রচার শুরু করেন যখন তার বয়স ৪০ আর তার আগে তিনি ইহুদি খৃষ্টানদের সাথে মেলা মেশা করে তাদের কাহিনী গুলো ভাল মতো জেনে নিয়েছিলেন। তবে যেহেতু শুনে শুনে সব হুবহু মুখস্ত করা সম্ভব হয় না, বলার সময় অনেক কিছুই এলোমেলো হয়ে যায়,তাই তার কোরানে তার কথিত তৌরাতের কাহিনীগুলো বেশ উদ্ভট ও জগাখিচুড়ি মার্কা যার সাথে তৌরাতের কাহিনীর অনেক অমিল পরিলক্ষিত হয়। যেমন যীশুর মাতা মরিয়মকে তিনি যীশুর প্রায় এক হাজার বছর আগে আসা মুসা নবীর বোন ইমরান কন্যা মরিয়ম বলে বর্ণনা করেছেন। যীশুকে নিয়ে যখন মরিয়ম তার আত্মীয় স্বজনের কাছে যায় তখন তার আত্মীয় স্বজনরা সন্দেহজনক প্রশ্ন করলে সদ্য জাত যীশু নিজেই প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের মত কথা বলে ওঠেন। বলা বাহুল্য এসব কাহিনীর সাথে তৌরাত বা ইঞ্জিল কিতাবের কোন মিল নেই। এসব নিয়ে যখন প্রশ্ন তোলা হয় , বলা হয় – এসব কিতাব নাকি বিকৃত। হাস্যকর যুক্তি। নিজে বিকৃত বা ভুল কাহিনী প্রচার করে পরে জোর করে বলা হচ্ছে অন্যদের কিতাব বিকৃত।মরিয়ম কার কন্যা ছিল বা যীশু সদ্যজাত অবস্থায় কথা বলেছিল কি না এসব তথ্য বিকৃত করলে তৌরাত বা ইঞ্জিলের কি লাভ? কোন লাভ নেই। লাভ ছাড়া কেউ কি কিতাব বিকৃত করে? বিশ্বাসী ব্যক্তিরা কখনই তাদের কিতাব বিকৃত করে না যদি তারা সেই কিতাবকে ঐশ্বরিক প্রাপ্ত জ্ঞান করে। কারন তা হলে তো তারা পাপী হয়ে গেল। পাপের ভয় কে না পায় ? সাধ করে কি পাপ করে কেউ নরকের আগুনে পুড়তে চায় ? সুতরাং কোন বিশ্বাসী মানুষ সচেতন ভাবে কখনই তাদের কিতাব বিকৃত করে না। তবে যেটা হতে পারে , কিতাবের কিছু অংশ সংরক্ষন করতে ব্যর্থ হলে বা হারিয়ে গেলে তার স্থলে কিছু মনগড়া কাহিনী লিখতে পারে তবে তা কিতাবের মূল সূরকে কখনই বিকৃত করবে না। বরং তাকে আরও মহিমান্বিত করার জন্যই তা করবে।

মোহাম্মদ মক্কাতে দোজখের আগুনের ভয় দেখিয়েও তেমন সুবিধা করতে না পেরে অবশেষে মদিনায় পাড়ি জমান ও সেখানে নানা কায়দায় ক্ষমতা দখল করেন।আর তখন থেকে তার ইসলাম প্রচার শুরু হয় তিন কায়দায়, দোজখের ভয় দেখানো, বেহেস্তের হুর পরীর লোভ দেখানো ও পরিশেষে কোনটাতে কাজ না হলে তার দলবল নিয়ে বিভিন্ন গোষ্টিতে আক্রমন ও তাদেরকে ছারখার করে দেয়া অর্থাৎ ভীতির মাধ্যমে ইসলাম প্রচার।মূলত: এই শেষ পদ্ধতির মাধ্যমেই মোহাম্মদ সব চাইতে বেশী সফল।ধর্ম প্রচারক মোহাম্মদের চাইতে শাসক হিসাবে মোহাম্মদের সাফল্য অনেক বেশী।যদি ভালমতো গবেষণা করা যায় তাহলে দেখা যাবে মদিনাতে মোহাম্মদের ইসলাম প্রচারে সাফল্য ছিল মূলত: অন্যদের সম্পদ লুট পাট ও তা গণিমতের মাল হিসাবে ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়ার মাঝে।মানুষ যে আসলে তার কোরানের বানী শুনে বা ইসলামের মাহাত্ম দেখে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তা গ্রহণ করত সেটা মোটেও সঠিক নয়। যদি ইতিহাসের দিকে তাকানো যায় তাহলে দেখা যাবে , মোহাম্মদ তার দল বল সহ মদিনায় যাওয়ার পর সেখানে তাদের বেচে থাকার কোন পেশা ছিল না।গরিব মদিনাবাসীদের পক্ষে মোহাম্মদ ও তার দলবল কে বেশীদিন মেহমানদারী করাও সম্ভব ছিল না। ফলে তাদেরকে মদিনার পাশ দিয়ে চলে যাওয়া মক্কাবাসীর বানিজ্য কাফেলা আক্রমন করা ছাড়া কোন গতি ছিল না , আর এসব কাজেই মূলত: মক্কাবাসীরা ছিল ওস্তাদ।তাহলে গতি ধারা অনুযায়ী বোঝা যায় যে , মদিনায় যাওয়ার পর পরই যে সূরা নাজিল হয়েছিল তাতে লুটের মাল বৈধ হওয়ার বিধান থাকবে। এবং সত্যিই তাই। তালিকা অনুযায়ী দেখা যায় ,বাকারা হলো মাদানী সূরা কিন্তু এর দুই তৃতীয়াংশই নাজিল হয়েছিল মক্কাতে। আর এর পরেই নাজিল হয় সূরা আনফাল।

আর তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাক যতক্ষণ না ভ্রান্তি শেষ হয়ে যায়; এবং আল্লাহর সমস্ত হুকুম প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। তারপর যদি তারা বিরত হয়ে যায়, তবে আল্লাহ তাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করেন।সূরা আনফাল ৮:৩৯

আর তারা যদি না মানে, তবে জেনে রাখ, আল্লাহ তোমাদের সমর্থক; এবং কতই না চমৎকার সাহায্যকারী। সূরা আনফাল ৮:৪০

আর এ কথাও জেনে রাখ যে, কোন বস্তু-সামগ্রীর মধ্য থেকে যা কিছু তোমরা গনীমত হিসাবে পাবে, তার এক পঞ্চমাংশ হল আল্লাহর জন্য, রসূলের জন্য, তাঁর নিকটাত্নীয়-স্বজনের জন্য এবং এতীম-অসহায় ও মুসাফিরদের জন্য; যদি তোমাদের বিশ্বাস থাকে আল্লাহর উপর এবং সে বিষয়ের উপর যা আমি আমার বান্দার প্রতি অবতীর্ণ করেছি ফয়সালার দিনে, যেদিন সম্মুখীন হয়ে যায় উভয় সেনাদল। আর আল্লাহ সব কিছুর উপরই ক্ষমতাশীল।সূরা আনফাল ৮:৪১

আল্লাহ বলছে যতক্ষন ভ্রান্তির শেষ না হয় অর্থাৎ তারা ইসলাম কবুল না করে বা মোহাম্মদের দলে না ভেড়ে ততক্ষন পর্যন্ত যুদ্ধ করতে হবে।যুদ্ধে যদি জয়লাভ হয়ে থাকে তা হলে তা আল্লাহর সমর্থনে হয়েছে, আর সেকারনে যুদ্ধ লব্ধ দ্রব্য সামগ্রীতে আল্লাহরও কিছু হক রয়েছে। তাই তা থেকে এক পঞ্চমাংশ হলো আল্লাহ, তার রসুল মোহাম্মদ ও তার আত্মীয় স্বজন এবং অসহায় মুসাফিরদের জন্য।মোহাম্মদ যে কত চালাক লোক ছিলেন তার প্রমান মেলে উক্ত ৮: ৪১ এর শেষ অংশ এতীম-অসহায় ও মুসাফিরদের জন্য থেকে। প্রথমে বলছে আল্লাহর জন্য গণিমতের মাল দরকার , তার পর বলছে মোহাম্মদের দরকার, তারপর বলছে তার নিকট আত্মীয় স্বজনের জন্য দরকার। আল্লাহ তো আর গণিমতের মাল ভোগ করতে দুনিয়াতে আসবে না , সে তো তার সাত আসমানের ওপর আরশে বসে আছে মহা আরামে,তার তো কোন গণিমতের মাল দরকার নেই, তার অর্থ আল্লাহর নামের অংশটুকুও যাবে মোহাম্মদের ভাগে।প্রশ্ন উঠতে পারে তাহলে মোহাম্মদ তো আল্লাহর নামে গণিমতের মাল দাবী না করলেও তো পারতেন।আল্লাহর নাম করার অর্থই হলো লোকজন যেন ভয়ে তাড়াতাড়ি সেই এক পঞ্চমাংশ দিয়ে দেয়, না দিলেই গুনাহ আর তার শাস্তি হলো দোজখে আগুনে পুড়ে শাস্তি ভোগ করা। যুদ্ধে যেতে না পারা মোহাম্মদের আত্মীয় স্বজন কারা ? তার বহু সংখ্যক স্ত্রী ও আরও কিছু আত্মীয় স্বজন যারা তার সাথে মদিনায় হিজরত করেছিল যাদের অধিকাংশ ছিল নারী তাদের জীবন কেমনে চলবে তাই তাদের জন্যও গণিমতের মাল দরকার। এখন গণিমতের মালের সকল অংশই যদি মোহাম্মদের দখলে যায়, তা হলে তা দেখতে খারাপ দেখায় এজন্যই এটাকে একটু জনকল্যাণমূলক দেখানোর জন্যই বলা হচ্ছে শেষে যে এ গণিমতের মালের কিছু অংশ এতিম, অসহায় ও মুসাফিরদের জন্যও নির্ধারিত। গণিমতের মাল না দিয়ে কোন মুসলমান যাতে উল্টা পাল্টা বা টাল বাহানা করতে না পারে বা আত্মস্যাত করতে না পারে , কোরানে সেকারনে বার বার এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, যেমন-

আপনার কাছে জিজ্ঞেস করে, গনীমতের হুকুম। বলে দিন, গণীমতের মাল হল আল্লাহর এবং রসূলের। অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং নিজেদের অবস্থা সংশোধন করে নাও। আর আল্লাহ এবং তাঁর রসূলের হুকুম মান্য কর, যদি ঈমানদার হয়ে থাক।সূরা আনফাল ৮:০১

সুতরাং তোমরা খাও গনীমত হিসাবে তোমরা যে পরিচ্ছন্ন ও হালাল বস্তু অর্জন করেছ তা থেকে। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, মেহেরবান।সূরা আনফাল ৮:৬৯

এবং বিপুল পরিমাণে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ, যা তারা লাভ করবে। আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। সূরা আল ফাতাহ ৪৮:১৯

আল্লাহ তোমাদেরকে বিপুল পরিমাণ যুদ্ধলব্ধ সম্পদের ওয়াদা দিয়েছেন, যা তোমরা লাভ করবে। তিনি তা তোমাদের জন্যে ত্বরান্বিত করবেন। তিনি তোমাদের থেকে শত্রুদের স্তব্দ করে দিয়েছেন-যাতে এটা মুমিনদের জন্যে এক নিদর্শন হয় এবং তোমাদেরকে সরল পথে পরিচালিত করেন।সূরা আল ফাতাহ ৪৮:২০

লোকজন যুদ্ধ করে কোন গোত্র বা বানিজ্য কাফেলা আক্রমন করে তাদের ধণ সম্পদ দখল করলে গণিমতের অংশ হিসাবে মোট মালামালের এক পঞ্চমাংশ মোহাম্মদ পাবেন যা আল্লাহ বার বার হুকুম দিয়েছে।কিন্তু যদি কোন কারনে যুদ্ধ ছাড়াই অর্থাৎ কারো সাহায্য ছাড়াই অমুসলিমদের কোন মালামাল দখল করা যায় তার কি বিধান?সেটা কিন্তু সম্পূর্ণ মোহাম্মদের নিজের সম্পদ। যেমন নিচের আয়াত-

আল্লাহ বনু-বনুযায়রের কাছ থেকে তাঁর রসূলকে যে ধন-সম্পদ দিয়েছেন, তজ্জন্যে তোমরা ঘোড়ায় কিংবা উটে চড়ে যুদ্ধ করনি, কিন্তু আল্লাহ যার উপর ইচ্ছা, তাঁর রসূলগণকে প্রাধান্য দান করেন। আল্লাহ সবকিছুর উপর সর্বশক্তিমান।সূরা আল হাসর ৫৯:০৬

আল্লাহ জনপদবাসীদের কাছ থেকে তাঁর রসূলকে যা দিয়েছেন, তা আল্লাহর, রসূলের, তাঁর আত্নীয়-স্বজনের, ইয়াতীমদের, অভাবগ্রস্তদের এবং মুসাফিরদের জন্যে, যাতে ধনৈশ্বর্য্য কেবল তোমাদের বিত্তশালীদের মধ্যেই পুঞ্জীভূত না হয়। রসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।সূরা আল হাসর ৫৯:০৭

উক্ত ৫৯:০৬ আয়াতে দেখা যাচ্ছে বনু বনুযয়র নামক কোন এক গোষ্ঠীর সম্পদ বিনা যুদ্ধেই মুসলমানদের দখলে আসে। এমতাবস্থায় আল্লাহ বলছে যুদ্ধ ছাড়া যদি কোন সম্পদ প্রাপ্ত হয় তার উপর মোহাম্মদের প্রাধান্য থাকবে অর্থাৎ তা মোহাম্মদের নিজের হয়ে যাবে।আর তা থেকে মোহাম্মদ মন চাইলে কাউকে কিছু দিতে পারেন আর যাই তিনি দিবেন সেটাকেই সন্তুষ্ট মনে গ্রহন করতে হবে , কোন রকম ওজর আপত্তি করা চলবে না। তা করলেই বিপদ , দোজখের আগুনে পুড়তে হবে।মানুষজন যখন জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করবে যাতে সে মারাও যেতে পারে , না মারা গেলে দারুনভাবে আহত হতে পারে, এর পর যুদ্ধে জয়ী হয়ে মালামাল দখল করলে সেখান থেকে কড়ায় গন্ডায় এক পঞ্চমাংশ মোহাম্মদের জন্য নির্ধারিত যার সামান্যতম হের ফের করার উপায় নেই, অথচ যুদ্ধ ছাড়া কোন সম্পদ দখল করা হলে তা হবে সম্পূর্নই মোহাম্মদের নিজের আর মোহাম্মদ যদি ইচ্ছা করেন তাহলেই তার সাহাবিরা কিছু পেতে পারে , সেখানে তাদের কোন সুনির্দিষ্ট হিস্যা নেই। প্রশ্ন হতে পারে ,মোহাম্মদের অনুসারী তো অনেক সুতরাং মোহাম্মদ কিভাবে সবাইকে সমান ভাবে তার সেই সম্পদ বন্টন করবেন? তাই আল্লাহ মোহাম্মদের ইচ্ছার ওপরেই এ সম্পদের বিলি বন্টন নির্ধারন করে দিয়েছে।কিন্তু সেক্ষেত্রে পাল্টা প্রশ্ন হলো – সেই সম্পদের চার পঞ্চমাংশ যদি সাহাবীদের জন্য নির্ধারিত থাকত, তাহলে অসুবিধা কি ছিল? মোহাম্মদ কি নিজের ব্যক্তিগত কারনে সে সম্পদ দখল করতে পেরেছিলেন নাকি সাহাবীদের আত্ম ত্যাগ ও সাহসের কারনে মোহাম্মদ এমন অবস্থায় পৌছেছিলেন যে তখন এমনও অবস্থা সৃষ্টি হতো যে বিনা যুদ্ধেই তিনি সম্পদ লাভ করতে পারতেন। এখন দেখা যাক উক্ত সম্পদ মোহাম্মদ আসলে কিভাবে খরচ করেছিলেন-

এরপর আল্লাহ পাক বলেন: যে জনপদ এভাবে বিজিত হবে ওর মালের হুকুম এটাই যে ওটা রসুলুল্লাহ নিজের দখলে নিয়ে নিবেন যার বর্ণনা এই আয়াত ও পরবর্তী আয়াতে আছে(সূরা আল হাসর- ৫৯: ৬-৭)। এটাই হলো ফায় মালের খরচের স্থান ও হুকুম। যেমন হাদিসে এসেছে যে , বনী নাজিরের মাল ফায় মাল হিসাবে রসুলের হয়ে যায়, আর তা থেকে তিনি সারা বছরের জন্য স্বীয় পরিবারের খরচ চালাতেন, যা অবশিষ্ট থাকত তা তিনি যুদ্ধাস্ত্র ও যুদ্ধের সরঞ্জামাদি ক্রয়ে ব্যয় করতেন। (ইবনে কাথিরের তাফসির, অনুবাদ: ড: মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান, খন্ড -১৭ম, পৃষ্ঠা- ৩৯৭)

কি সুন্দর ব্যবস্থা। উক্ত আয়াত ও তার তাফসির দেখে মনে হয় যেন, মোহাম্মদের নিজের কারিশমাতেই বনু নাজিরের লোকজন তাদের দুর্গ ছেড়ে পালিয়ে গেছিল।তারা পালিয়েছিল ঠিকই তবে মোহাম্মদের কারনে নয়, মোহাম্মদের দুর্ধর্ষ লুটেরা বাহিনীর ভয়ে। তাহলে উক্ত গণিমতের মাল কেন শুধুমাত্র মোহাম্মদের নিজের হবে? তার বাহিনীর লোকজনের কেন কোন সুনির্দিষ্ট হিস্যা থাকবে না? অথচ যুদ্ধ করে জয়লাভ করে মালামাল দখল করলে তা থেকে একেবারে কড়ায় গন্ডায় মোহাম্মদকে সুনির্দিষ্ট এক পঞ্চমাংশ দিতে হবে? না দিলেই কেন দোজখের আগুনে পুড়ে জ্বলার ভয় দেখানো হবে ? এখন কোরানের উক্ত আয়াত দেখে কি মনে হয় যে তা আল্লাহর কাছ থেকে আসছে? নাকি সুচতুরভাবে মোহাম্মদই এগুলো বলছে যাতে আল্লাহর নামে ভাল পরিমান সম্পদ দখল করে তার বিশাল পরিবারের ভরণপোষণের নিশ্চয়তা বিধান করা যায়?

শুধু কোরানের বানী দিয়েই মোহাম্মদ ক্ষান্ত হন নি, বার বার তিনি নিজেই ঘোষণা করেছেন- গণিমতের মাল তথা লুট পাঠকৃত মাল হলো হালাল অর্থাৎ আল্লাহ নির্দেশিত পবিত্র জিনিস যাতে মানুষ কখনই যেন লুট তরাজ করতে সামান্যতম দ্বিধা দ্বন্ধে না ভোগে, যেমন-

জাবির বিন আব্দুল্লাহ বর্ণিত- আল্লাহর নবী বলেছেন গণিমতের মাল(লুটপাটের মাল) আমার জন্য বৈধ করা হয়েছে।(বুখারি, বই-৫৩, হাদিস-৩৫১)

জাবির বিন আব্দুল্লাহ বর্ণিত: নবী বলেছেন- পাঁচটি জিনিস আমার জন্য বৈধ করা হয়েছে যা অন্য কোন নবীকে বৈধ করা হয় নি , যেমন- (১) ত্রাস সৃষ্টির দ্বারা আমাকে বিজয়ী করা হয়েছে, (২) সারা দুনিয়া আমার প্রার্থনার জায়গা করা হয়েছে, (৩) গনিমতের মাল(লুটপাটের মাল) আমার জন্য বৈধ করা হয়েছে, (৪) কেয়ামতের মাঠে আমাকে মধ্যস্থা করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে ও (৫) আমাকে সমস্ত মানব জাতির জন্য পাঠানো হয়েছে অথচ অন্য নবীদেরকে তাদের স্ব স্ব জাতির জন্য পাঠানো হয়েছে। (বুখারি, বই -৭, হাদিস নং-৩৩১)

উক্ত হাদিস থেকে জানা যাচ্ছে যে , মোহাম্মদ ভয়ভীতি ও জোর জুলুম করার অবাধ লাইসেন্স পেয়েছেন তার শান্তির ধর্ম ইসলাম প্রচারের আর তা করতে গেলে যখন কেউ তার কথা মানবে না তখন তার উপর আক্রমন চালিয়ে তাদেরকে হত্যা জখম করে তাদের মালামাল ও নারীদেরকে গণিমতের মাল হিসাবে দখল করতে পারবেন মোহাম্মদ তথা মুসলমানরা। এখানে ৫ নং পয়েন্ট টা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। যখন কোরান হাদিস ঘেটে প্রমান করা হয়ে যে মোহাম্মদ শুধুমাত্র মক্কা মদিনায় ইসলাম প্রচারের জন্য এসেছিলেন ও তাই ইসলাম শুধুমাত্র আরবদের জন্যই তখন ইসলামিষ্টরা উক্ত হাদিস দেখিয়ে প্রমান করতে চায় যে মোহাম্মদ গোটা মানব জাতির জন্য। মজাটা হলো তারা এই শেষ ৫ নং পয়েন্টটাকে তাদের পক্ষের বলে গ্রহণ করলেও অপর ১ নম্বর পয়েন্টকে কিন্তু আপাত: গ্রহণ করতে ইচ্ছুক নয় কারন সেগুলোতে শান্তির কোন ছোয়া নেই। তখন সেটা হয়ে যাচ্ছে জায়িফ হাদিস তথা মিথ্যা হাদিস। কি অদ্ভুত যুক্তি , একই হাদিসের কিছু অংশ তাদের জন্য সুবিধা বলে সেটুকু সঠিক আর বাকিটুক মিথ্যা! গোজামিলের যুক্তিরও একটা সীমা থাকা দরকার।

আবু হুরায়রা বর্ণিত- নবী বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর খেদমদে জিহাদে যোগ দেয়, তাকে আল্লাহ হয় পুরস্কার হিসাবে গণিমতের মাল প্রদান করেন নতুবা তাকে সরাসরি বেহেস্তে নসিব করেন ( যদি সি মৃত্যু বরন করে)।( বুখারি, বই-২, হাদিস-৩৫)

ঠিক একই রকম হাদিস নিচে-

Narrated Abu Huraira: I heard Allah’s Apostle saying, “The example of a Mujahid in Allah’s Cause– and Allah knows better who really strives in His Cause—-is like a person who fasts and prays continuously. Allah guarantees that He will admit the Mujahid in His Cause into Paradise if he is killed, otherwise He will return him to his home safely with rewards and war Booty.”(Bukhari, Book #52, Hadith #46)

তার মানে জিহাদ তথা অমুসলিম জনপদে বা অমুসলিমদেরকে আক্রমন করে জিহাদ করলে বেঁচে থাকলে বা মারা গেলে কোনই ক্ষতি নেই , উভয় দিক দিয়েই লাভ। কারন জয়ী হয়ে ফিরে আসলে গণিমতের মাল পাওয়া যাবে, মারা গেলে সরাসরি বিনা বিচারে বেহেস্তে গিয়ে হুর পরীদের সাথে লাগামহীন ফুর্তি করা যাবে। সুতরাং এর পরেও যদি কোন মুসলমান অলসভাবে চুপ করে বসে থাকে, তার মত মুনাফেক আর হয় না। ইসলাম শান্তির ধর্ম বলে এর পরেও যদি কোন মুসলমান অমুসলিমদের কাছে তারস্বরে প্রচার করতে থাকে তার মতো ডাহা মিথ্যাবাদি আর কেউ হতে পারে না। প্রতিটি মুসলমানের উচিত নবীর বানী অনুসরণ করে অমুসলিমদের ওপর ঝাপিয়ে পড়া , আক্রমন করে তাদেরকে নি:শেষ করে দেয়া, আর তা করতে গিয়ে বাঁচলে বা মরলে কোনই ক্ষতি নেই , উভয় দিক দিয়েই লাভ। সুতরাং যারা এখন বিভিন্নভাবে জঙ্গী হামলা করে কাফির মুনাফিক হত্যা করছে, তাদেরকে কেন বিভ্রান্ত মুসলমান আখ্যা দেয়া হয় তা ঠিক বোধগম্য নয়।কাফির মুনাফিক হত্যা করতে গেলে অনেক সময় নিজেকেই উৎসর্গ করতে হয়, এটাকে কেন কিছু ইসলামি পন্ডিত আত্মহত্যা বলে রায় দেয় সেটাও বোধগম্য নয়।আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে কৌশলগত কারনে যদি কারও শরিরে বোমা বাধতে হয় , তাহলে তা কিভাবে আত্মহত্যা হতে পারে ? আত্মহত্যা হবে যদি কেউ ব্যক্তিগত কারনে নিজেকে হত্যা করে সেটা।

আবু আব্দুল আজিজ বর্ণিত- যখন আল্লাহর রসুল খায়বার দখল করলেন, ——- আমরা খায়বার দখল করলাম, তাদেরকে বন্দী করলাম,লুন্ঠিত মালামালও যোগাড় করলাম। দাহিয়া এসে বলল- হে নবী , আমাকে গনিমতের মাল হিসাবে একটা নারী দিন বন্দিনী নারীদের মধ্য হতে।নবী খুব উদার ভাবে বললেন- যাও তোমার যেটা পছন্দ সেটা নিয়ে নাও। সে তখন সাফিয়া বিনতে হুইকে নিল। এক লোক এসে বলল- হে নবী আপনি দাহিয়াকে সেই নারী দিয়েছেন যে নাকি খায়বারের সর্দারের স্ত্রী। নবী তখন তাকে সাফিয়াকে তার কাছে আনার জন্য হুকুম করলেন। সাফিয়াকে তার সামনে আনা হলে, তিনি দাহিয়াকে অন্য নারী নিতে বললেন ও সাফিয়াকে নিজের কাছে রেখে দিলেন। (বুখারি, বই -৮, হাদিস-৩৬৭)

উক্ত হাদিস থেকে বোঝাই যাচ্ছে, মহান দয়ালু নবি কোন কিছু দান করলেও সেটা ফেরত নিতেন যদি তার মন চাইত। সাফিয়াকে ফেরত নিয়ে নেয়াতে দুটো ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনি- তিনি দান করে তা ফেরত নিয়েছেন ও নারীর প্রতি তার যে সীমাহীন আকর্ষন ছিল তার বহি:প্রকাশ ঘটিয়েছেন। সাফিয়া ছিল সুন্দরী ও আকর্ষনীয় দেহ বল্লরীর অধিকারী তার দিকে চোখ পড়তেই মহান নবীর দিল মন উষ্ণ হয়ে ওঠে ও সাথে সাথেই তার আগের দেয়া বক্তব্য পাল্টে ফেলে তাকে নিজের কাছেই রাখেন।

মোহাম্মদের সাঙ্গ পাঙ্গরা কি পরিমান যৌন কাতর ছিল তার একটা বিবরন পাওয়া যায় নিচের হাদিসে-

আবু সাইদ আল কুদরি বর্ণিত- সে যখন নবির সাথে বসেছিল জিজ্ঞেস করল- হে নবী , আমরা কিছু নারী বন্দিনী হস্তগত করেছি আর আমরা তাদের সাথে যৌনমিলন করতে চাই।কিন্তু আমরা সতর্কভাবে তা করতে চাই।ব্যপারে আপনার কি অভিমত? নবী বললেন- তোমরা কি সত্যিই সেরকম করে থাক ? আল্লাহ সমস্ত আত্মাই সৃষ্টি করে রেখেছেন, যারা জন্মের জন্য নির্ধারিত তারা জন্ম লাভ করবেই। বুখারি, বই-৩৪, হাদিস-৪৩২

যারা মোহাম্মদকে দুনিয়ার শ্রেষ্ট আদর্শবান মানুষ মনে করে আর তার সাথে চলাফেরা করা সাহাবিদের মনে করে আদর্শ মানুষ তারা কি বলবে উপরের হাদিস গুলো পড়ে ? অবশ্য অত্যাধিক নারী প্রীতি ও যৌন আকাংখায় অত্যাধিক কাতরতা যদি আদর্শ মানুষের লক্ষন হয় তাহলে বলার কিছু নেই। আসলে উপরের ৪৩২ নং হাদিসটির আসল রহস্য হলো- যে সব বন্দিনী নারীরা ছিল তাদের অনেকেরই স্বামী বর্তমান ছিল, সাহাবিরা তাই তাদের স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায় তাদের সাথে যৌন মিলন করতে নিমরাজি ছিল।সে প্রেক্ষিতে মহা শান্তির ধর্ম ইসলামের প্রবর্তক দ্বিধাহীনভাবে আদেশ করছেন যে – তাদের স্বামী বেচে থাক বা না থাক কিছুই আসে যায় না যথেচ্ছ তাদেরকে ধর্ষন করতে পার, নিচের আয়াতের প্রেক্ষিতে উক্ত হাদিসের আবির্ভাব-

এবং নারীদের মধ্যে তাদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধ; তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের মালিক হয়ে যায়-এটা তোমাদের জন্য আল্লাহর হুকুম। এদেরকে ছাড়া তোমাদের জন্যে সব নারী হালাল করা হয়েছে, শর্ত এই যে, তোমরা তাদেরকে স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব করবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য-ব্যভিচারের জন্য নয়। অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবে, তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোন গোনাহ হবে না যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ সুবিজ্ঞ, রহস্যবিদ।সূরা নিসা, ৪:২৪

অর্থাৎ এটা আল্লাহর হুকুম যে বন্দিনী নারীরা ধর্ষনের যোগ্য তা তাদের স্বামী বেঁচে থাক বা মারা যাক।এখন ধরা যাক, সমস্ত অমুসলিম ইসলামের এসমস্ত আল্লাহর বানী উপলব্ধি করে তারা সবাই একত্রিত হয়ে মুসলমানদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে তাদেরকে পরাজিত করত: তাদের সব নারীদেরকে বন্দি করল ও ইসলামের দেখানো পথে তারা তাদেরকে উপর্যুপরি ধর্ষণ আরম্ভ করল, মুসলমানরা সেটাকে কি চোখে দেখবে? যেমন শোনা যায় ইরাক বা আফগানিস্তানে মার্কিন সেনারা নারীদেরকে মাঝে মাঝে ধর্ষণ করে, তা নিয়ে মুমিন বান্দারা এত চিৎকার চেচামেচি করে কেন ? তাদের তো বরং আনন্দিত হওয়া উচিত এই ভেবে যে তারা আল্লাহ ও তার নবীর পদাংক অনুসরণ করছে। এ প্রসঙ্গে ইসলামি পন্ডিতদের যে বক্তব্য পাওয়া যায় তা হলো – সেই সময়ে দাসি বা বন্দিনী নারী ধর্ষন অনুমোদিত ছিল এখন এটা বাতিল হয়ে গেছে। কিন্তু বাতিল যে হয়ে গেছে তার কোন কোরানিক বা হাদিসের দলিল আছে? দুনিয়াতে এখনো পাঁচ ভাগের চারভাগ মানুষই অমুসলিম তথা ইহুদি নাসারা কাফের, মুসলমানের দায়িত্ব তো শেষ হয় নি এখনো। তাদেরকে ইসলামের পতাকা তলে আনতে মুসলমানদেরকে অবিরত জিহাদ করে যেতে হবে, তা করতে গেলে যখন কাফেরদের নারীরা বন্দিনী হবে , তখন কি তাদেরকে বলৎকার করা নিষেধ করা আছে কোথাও কোরান হাদিসে ?তন্ন তন্ন খুজেও তো কোথাও এ বিষয়ে কিছু পাওয়া গেল না , তাহলে ইসলামি পন্ডিতদের এ ধরনের নিজস্ব মতামত তথা মিথ্যা প্রচারনার উদ্দেশ্য কি ?

এখন দেখা যাক ,জিহাদে শহিদ হলে কি কি পাওয়া যাবে বেহেস্তে , যেমন কোরানে বলা আছে-

কোরান ৫২: ১৭-২০: মুমিনগণ থাকবে সুখময় জান্নাতে, যেখানে আনন্দ-উল্লাস করে বেড়াবে আল্লাহ দানে… তাদের বলা হবেঃ তোমাদের কৃতকর্মের জন্য খাও-দাও, ফূর্তি করো, এবং তারা সারি-বাধা সিংহাসনে হেলান দিয়ে বসবে এবং আমরা (আল্লাহ) তাদেরকে যৌন-উন্মাদক চোখওয়ালা পরম সুন্দরী হুরদের তাদের সঙ্গী বানাব।
কোরান ৫২:২২-২৫: বেহেশ্তে তারা ফলমূল এবং মাংস যা চাইবে আমি (আল্লাহ) তাই দেব। সেখানে তারা একে অপরকে লোভনীয় পানপাত্র দেবে; যেখানে অসার বাতুলতা নেই, নেই কোন পাপকর্ম। সেখানে তাদের সেবায় নিবেদিত সুরক্ষিত মুক্তার ন্যায় সুন্দর কিশোরেরা ঘুরাফেরা করবে। তারা একে অপরের দিকে মুখ করে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
কোরান ৩৭:৪০-৪৯: তাদের জন্য থাকবে আনন্দ-উল্লাস ও সম্মান-সম্ভ্রম আল্লাহর বিলাস বাগানে। সিংহাসনে মুখোমুখি বসবে তারা এবং স্বচ্ছ ঝর্ণা থেকে স্ফটিকের ন্যায় সাদা মদের পেয়ালা থেকে পান করবে তারা, যা হবে চমৎকার মজাদার ও সুস্বাদু কিন্তু তারা হবে না মাতাল। এবং তাদের পাশে থাকবে লাজুক ও মন-মাতানো আয়তলোচনা চিরকুমারী হুরী, যেন সুরক্ষিত ও নাজুক শুভ্র ডিম্বের ন্যায়।
কোরান ৪৪:৫১-৫৫: হ্যাঁ, সঠিক পথের অনুসারীদের জন্য থাকবে সুরক্ষিত আবাস — বিলাস-বাগান ও ঝর্ণার মাঝে। চমৎকার কারুকার্য বিশিষ্ট সিল্কের কাপড়ে সজ্জিত হয়ে তারা মুখামুখি বসবে; এবং আমরা (আল্লাহ) তাদের সঙ্গী বানাব সুন্দরী, টানা-টানা ও যৌন-উন্মাদক চোখ-ওয়ালা শ্বেতকায় হুরীদেরকে।
কোরান ৫৫: ৫৬-৫৭: তাদের মধ্যে থাকবে আয়তলোচনা লজ্জাবতি চিরকুমারী হুরীগণ, যাদেরকে কোন মানুষ বা জ্বিন কখনোই স্পর্শ করেনি…
কোরান ৫৫:৫৬-৭৪: সেথায় থাকিবে প্রবাল ও পদ্মরাগ সদৃশ যুবতীগণ (হুরী), দুটি ঘন সবুজ উদ্যান, উদ্বেলিত দু’টি ঝর্ণা। সেথায় আছে ফলমূল, খেজুর ও আনার, আছে সুশীলা সুন্দরী যুবতীরা, সুনয়না ও তাবুতে অবস্থানকারী কুমারী হুরবালা – যাদেরকে মানব অথবা জ্বিন কখনোই স্পর্শ করেনি।
কোরান ৫৬:১৫-২৩: তারা স্বর্ণখচিত সিংহাসনে হেলান দিয়ে মুখোমুখিভাবে বসবে; তাদের আশে-পাশে ঘুরাফেরা করবে মুক্তার ন্যায় চির-কিশোরেরা খাটি সুরাপূর্ণ পানপাত্র হাতে নিয়ে; যা পান করলে তাদের শীরঃপীড়া হবে না; আর থাকবে তাদের পছন্দমত পাখীর মাংস; থাকবে আয়োতলোচনা (টানা চোখের) কুমারী হুরীগণ; আবরণে রক্ষিতা মুক্তার ন্যায়; ইহা তাদের কর্মফল।
কোরান ৭৮:৩১-৩৬: মুত্তাকীদের জন্য আছে সাফল্য; বাগান ও আঙ্গুর রস এবং সমবয়স্ক সুন্দরী উন্নতবক্ষা (তীরের ন্যায় খাড়া-খাড়া স্তনযুগল) কুমারী যুবতীগণ এবং তাদের হাতে থাকবে শরাব ভর্তি পেয়ালা, যা আল্লাহর কাছ থেকে তাদের প্রাপ্য পুরস্কার।
কোরান ৭৬:১৪-১৯: বেহেশ্তে থাকবে বৃক্ষছায়া ও যাবতীয় ফলমুল, যা চাবে তাই পরিবেশন করা হবে রৌপ্য-স্ফটিকের পাত্রে; আরও পান করতে দেওয়া হবে যাঞ্জাবিলের মিশ্রিত সালসা এবং সালসাবীল নামে এক ঝর্ণা; তাদের কাছে ঘুরাফেরা করিবে বিক্ষিপ্ত মুক্তার ন্যায় চির কিশোর বালকগণ।
কোরান ৫৬:৩৪-৩৭: তথায় থাকিবে তাদের জন্য উচ্চ শয্যা-সংগিনী, যাদেরকে সৃজিয়াছি বিশেষভাবে চিরকুমারী (ever virgin) ও সমবয়স্কা করে।
কোরান ২:২৫: হে নবী (সাঃ) যারা ইমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদেরকে বেহেশতের সুসংবাদ দিন, যার পাদদেশে প্রবাহমান থাকবে নদী। যখনই তারা কোন ফলমুল পাবে তখনই তারা বলবে, এতো অবিকল সে ফলই যাহা আমরা পৃথিবীতেও পেয়েছিলাম। বস্তুত তাদেরকে একই রকম ফল দেওয়া হবে, এবং সেখানে থাকবে তাদের জন্য শুদ্ধচারিনী রমণীকুল আর সেখানে তারা অনন্তকাল বাস করিবে।
কোরান ৪৭:১৫: মুমিন মুসলমানদেরকে যে জান্নাতের ওয়াদা দেয়া হয়েছে, তার অবস্থা নিম্নরূপ: তাতে আছে পানির নদী, নির্মল দুধের নদী যার স্বাদ অপরিবর্তনীয়, পান-কারীদের জন্য সুস্বাদু শরাবের নদী এবং বিশুদ্ধ মধুর নদী। তথায় তাদের জন্য আছে রকমারি ফলমুল ও তাদের পালনকর্তার অনুগ্রহ। পরহেযগাররা কি তাদের সমান, যারা থাকবে জাহান্নামে অনন্তকাল এবং যাদেরকে পান করতে দেওয়া হবে ফুটন্ত পানি, যা পান করিলে তাদের নাড়িভুঁড়ি ছিন্ন বিছিন্ন হবে?

আহা , পরম করুনাময় আল্লাহর কি অসীম কুদরত। তিনি মুমিন বান্দা ও শহিদদের জন্য কি অতুলনীয় ব্যবস্থাই না করে রেখেছেন। আয়ত লোচনা উন্নত বক্ষা হুর বা সঙ্গীনি। আর কি চাই। যে কোন মুমিন বান্দার তো এ জগতেই এসব চিন্তা করে পাগল হয়ে যাওয়ার কথা। বস্তুত তারা পাগল হয়ও। হয় বলেই তো তারা অনেকেই সেই সময় তো বটেই ইদানিং কালেও গায়ে অথবা গাড়িতে বিস্ফোরক ভর্তি করে চলে যায় কাফেরদের আক্রমন করতে। যাতে সাথে সাথেই হুর পরীদের সাথে মৌজ করতে চলে যাওয়া যায়। ইসলাম পালন না করলে অহরহ দোজখের আগুনে জ্বলা পোড়ার ভয় দেখানো সেই সাথে সঠিকভাবে ইসলাম পালন করলে বেহেস্তে হুর পরী ও অবাধ পান করার লোভ কে সম্বরন করতে পারে ? তাই দেখা যায় যখন মোল্লারা ওয়াজ নসিহত করে তারা লোলুপতার সাথে হুরদের আকর্ষণীয় বর্ণনা দেয় যাতে মুমিন বান্দারা যেন আরও বেশী লালায়িত থাকে। এত কিছুর পরও যে দুনিয়ার অধিকাংশ মানুষই ইসলাম গ্রহণ করছে না , তারা নিরেট মূর্খ ও বধির ছাড়া আর কি ? কেন যে মুসলমানরা নিজেদের মহা বুদ্ধিমান ও পন্ডিত মনে করে আর ভাবে অমুসলিমরা গন্ড মূর্খ , এখন কি আর বুঝতে বাকি আছে ? আসলেই অমুসলিমরা নিতান্তই মূর্খ ও ইতর প্রানী, তা না হলে ইসলামে এমন ধরনের মহা সুবন্দোবস্ত কে প্রত্যখ্যান করতে পারে ? তবে যেকথাটা না বললেই নয় তা হলো- এতসব ব্যবস্থা তো হলো সব পুরুষদের জন্য, নারীদের জন্য এসব কিছুই নেই। তাই তারা বেহেস্তে কি পাবে না পাবে তা একমাত্র আল্লাহই ভাল জানে। তবে বিভিন্ন হাদিস থেকে দেখা যাচ্ছে- বস্তুত মুসলিম নারীরা বেহেস্তেই যাবে না, যাবে সব দোজখে। যেমন উপরের – (বুখারি, ভলুম-১, বই-৬, হাদিস নং-৩০১), (সহি বুখারি, ভলুম-১. বই-২, হাদিস-২৯), (বুখারি, ভলুম-৭, বই-৬২, হাদিস-১২৪ )হাদিস গুলো। এখানে খুব পরিস্কার ভাষায় বলা হচ্ছে দোজখের বাসিন্দারা হলো মূলত: নারী। আর যৌক্তিক ভাবে সেটাই হওয়ার কথা। কারন তারা জিহাদে যেতে পারবে না, তাই সত্যিকার মুসলমান হওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাছাড়া বেহেস্তে পুরুষদের জন্য অগনিত হুর তৈরী করে রাখাতে , সেখানে নারীদের কোন দরকারও থাকার কথা নয়। তারা সেখানে থাকলে বরং গন্ডগোল হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। কারন তারা যখন দেখবে তাদের স্বামীরা বহু সংখ্যক হুরদের সাথে কামকেলীতে ব্যস্ত তখন তারা সেখানে মারামারি কাটাকাটি শুরু করে দিতে পারে, বুদ্ধিমান মোহাম্মদ তাই চতুরতার সাথেই সব মেয়েদেরকে দোজখে পাঠিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন যাতে তাদের স্বামীরা নিরুপদ্রবে হুরদের সাথে অনাবিল যৌন আনন্দ উপভোগ করে যেতে পারে। তাহলে প্রশ্ন উঠতে পারে নারীরা এত ধর্ম পালন করে কেন? কারন তারা মূর্খ , স্বয়ং কোরানে আল্লাহ নারীকে পুরুষের অর্ধেক মর্যাদা দিয়েছে আর নবী সেটা ভালমতো ব্যখ্যা করে বলেও গেছেন। যেমন কোরানের আয়াত-

দুজন সাক্ষী কর, তোমাদের পুরুষদের মধ্যে থেকে। যদি দুজন পুরুষ না হয়, তবে একজন পুরুষ ও দুজন মহিলা। ঐ সাক্ষীদের মধ্য থেকে যাদেরকে তোমরা পছন্দ কর যাতে একজন যদি ভুলে যায়, তবে একজন অন্যজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়। সূরা নিসা ২: ২৮২

উক্ত আয়াতের ব্যখ্যা হিসাবেই এসেছে পূর্বোক্ত বুখারি, ভলুম-১, বই-৬, হাদিস নং-৩০১ হাদিসটি। এর পর মুসলিম নারীরা কিভাবে তর্ক করতে পারে যে তারা পরিপূর্ণ মানুষ ? অনেক কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ ডিগ্রীধারী নারীদেরকে দেখা যায় নারীদেরকে ইসলাম কতটা মর্যাদা দিয়েছে সেটা আদাজল খেয়ে প্রমান করতে কিন্তু তাদেরকে বেহেস্তে কি দেয়া হবে এ ব্যপারে একেবারে নিশ্চুপ দেখা যায়। তখন তারা বলা শুরু করে কোরানের আয়াত ও হাদিসকে ভূলভাবে ব্যখ্যা করা হচ্ছে। কিন্তু যেখানে কোরান ও হাদিসে খুবই পরিস্কার ভাষায় সব কিছু বলা আছে সেখানে সেটা ভূলভাবে কিভাবে ব্যখ্যা হলো তা ঠিক বোধগম্য নয়। তবে সঠিক ব্যখ্যাটি যে কি সেটাও তাদের অজানা। মূর্খ মুসলিম নারীগুলো বুঝতেই পারে না যে তাদেরকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছে দোজখে পুড়ে মারার জন্য।তাই বেহেস্তে তাদের জন্য কোন কিছু সৃষ্টি করা হয় নি।তাদের এ মহা মূর্খতাই তাদেরকে ইসলামে আকড়ে রাখে। এই মূর্খ মুসলিম নারীগুলো কি এখন বুদ্ধিমতী হওয়ার চেষ্টা করবে ?

সুতরাং কেন একজন মুসলমান তার ইসলামকে আকড়ে ধরে থাকে, তা বুঝতে কি আর কোন সন্দেহ থাকার কথা?

বাংলা কোরান
বাংলা কোরান
বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ ও মালিক মুয়াত্তার হাদিস
শুধুমাত্র বুখারী শরিফ
ইবনে কাথিরের বাংলা তাফসীর
বাংলা বাইবেল

মোহাম্মদ ও ইসলাম , পর্ব-১৯
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১৮
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১৭
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১৬
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১৫
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১৪
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১৩
মোহাম্মদ ও ইসলাম , পর্ব-১২
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১১
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-10
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-9
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-8
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-7
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-6
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-5
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-4
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-3
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-2
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-1