সেই ছোটবেলার কথা। এক ভিখারিনী আসত ভিক্ষা করতে। পরনে শতচ্ছিন্ন ময়লা বস্ত্রখণ্ড, আলুথালু ধুলোমাখা বিবর্ণ চুল; চোখমুখ উদ্ভ্রান্ত,সদা অস্থির, অসংলগ্ন কথাবার্তা। ছিন্ন বস্ত্রখণ্ডটি ঠিকমত গায়ে জড়ান থাকত না তার। কোন দিক দিয়ে কাপড় পড়ে যাচ্ছে, কোন দিক দিয়ে লেগে আছে সে দিকে তার পরোয়াই ছিল না! ঝড়ের বেগে বিচলিত হয়ে দৌড়াত সে দিক-বিদিক। কখনো সে সন্তানবতী থাকত, কখনো বা থাকত তার কোলে একটি ছোট্ট শিশু। শিশুটির দেহে স্পষ্ট লেগে থাকত অপুষ্টি ও অনাদরের চিহ্ন। সবাই তাকে ডাকত, সাজুনী পাগলী। অন্যান্য ভিক্ষাজীবীদেরকে দেখতাম, যাদের কাছে তারা ভিক্ষা চাইত তাদের উদ্দেশ্যে নিজেদের মুখ হতে অবিরত আশীর্বাদ, স্তুতিবাক্য মুষলধারায় বর্ষিত হত। নিত্যনতুন কথায় ও সুরে অভিনব ভিক্ষা-সংগীত তো আছেই। তারা জানত মানুশ পটানর নানান কলা-কৌশল। সাজুনী কোনো কৌশল জানত না, বা সে কৌশলের ধার ধারত না। কোনো বাসার দরজা খোলা পেলেই সে দৌড়ে এসে বাসায় ঢুকে যেত। বলত, কী দেবে তাড়াতাড়ি দাও। একটু খাবার দাও, তিনদিন কিছু খাইনি। বাচ্চাটার জন্য একটু দুধ দাও। ওকে দেখলেই সবাই সজোরে দরজা বন্ধ করে দিত। নারী পুরুশ সকলেই দূর দূর, ছি ছি করত। দৈবক্রমে কারো বাসায় ঢুকে গেলে তারা বলত, তুই নাপাক তুই পাপী কুলটা খবরদার আর কভুও বাসায় ঢুকবি না। হায় আল্লা সবই নাপাক হয়ে গেল, এবার সবকিছু জমজম কুয়ার পানি দিয়ে ধুতে হবে। সাজুনীর বাচ্চাটাকে দেখিয়ে সকলে জিজ্ঞেস করত, এই বাচ্চা পেলি কোথা, বাচ্চার বাবা কোথা, সে তোদের দেখাশোনা করে না? সাজুনী নির্দ্বিধায় নির্লিপ্তভাবে জবাব দিত, বাচ্চার বাবা কে তা আমি কী করে জানব? ছি ছি তোর বাচ্চার বাবা কে তা তুই জানিস না! ছি জাহান্নামী পাতকী লজ্জা লাগে না তোর! দূর হ, পাপমুখ আর দেখাবি না কারুকে। সাজুনী বলত, আ-মরি আমায় যারা পাপী বানাল, যেসব ছাপ কাপড়ের পুরুশ আসে এই নোংরা আমার সাথে পাপ করতে তারা পাপী না! আমি গাছতলায় ঘুমোতে গেলেই চারদিক থেকে শেয়াল-কুকুরের দল আমায় ঘিরে ধরে। শূকরের বাচ্চারা আমায় পাগল করে ছাড়ল। একেক দিন একেক জায়গায় যাই ঘুমোতে। যেখানে যাই সেখানেই কুকুরের উৎপাত। ওঁত পেতে থাকে হারামির দল। আমি কি ওদের জ্বালায় গাছ তলায়ও ঘুমোতে পারব না শান্তিতে! নিত্যনতুন জায়গায় নিত্যনতুন কুকুর আসে আমায় ছিঁড়ে খেতে। এতগুলি কুকুরের মধ্যে এই কুকুরের বাচ্চার বাবা কে তা কি করে জানব?
নারী-পুরুশ, বৃদ্ধ, বালক-বালিকা সবাই সাজুনীকে ছি ছি দূর দূর করত। কারুকেই তার প্রতি একটুখানি সহানুভূতি দেখাতে দেখিনি। এমন কি কোনো নারীও সেই দুখিনী নারীর দুঃখ বোঝেনি কভু। যে সকল ভদ্রলোকেরা সাজুনীর প্রতিটি রাতকে নরকে পরিণত করত তারা কারা? দিনের আলোর মানীগুণী ছাপকাপড়ের লোকেরা রাতের আঁধারে কেমন করে শকুনে রূপান্তরিত হয়? যে শিশুকে সবাই একবাক্যে “জারজ” বলত সেই শিশু ভদ্র সমাজের কারো ঔরসজাত হতে পারে না কি?
আমার এক ভাবীর কাছে কলকাতার একটি মুভির কাহিনী শুনেছিলাম। মুভিটি আমার এখনো দেখা হয়ে উঠেনি। মুভির নাম “ফালতু” কাহিনীটি এমন;
এক পাগলী বাস করে এক গ্রামে। ছোট্ট একটা কুড়ে ঘরে তার বাস। দিনমান ভিক্ষা করে। রাতে স্বাভাবিকভাবে কুটিরে শকুনিদের উপদ্রব। একদিন সবাই বুঝতে পারল যে, পাগলিনীটি সন্তানবতী হয়েছে। একদা সন্তান জন্মদান-কালে সে মারা গেল। বেঁচে রইল নবজাত শিশু পুত্রটি। বাচ্চাটিকে গ্রামের সবাই মিলে লালন-পালন করে বড় করল। তার কোনও নাম রাখা হয়নি। সবাই তাকে ডাকে “ফালতু।” সেই গ্রামেরই এক মেয়ের সাথে ফালতুর প্রণয় হল, তাদের বিয়ে ঠিক হল। বিয়েতে গ্রামবাসী মহা-খুশি। বিয়ের দিন মেয়ের বাবা বিয়েতে বাধ সাধল। বলল, ভাইবোনে কখনও বিয়ে হতে পারে না। ফালতু কার ঔরসজাত তা তো নিশ্চয় করে বলা যায়না। তবে নিশ্চিত হওয়া যায় অজস্র শকুনের ঝাঁকের মধ্যে কন্যার বাবাও ছিল, যার মেয়ের প্রেমে পড়েছিল ফালতু!
যে সকল অন্নহীন, বস্ত্রহীন, গৃহহীন, সহায়হীন নারীরা গাছতলায় বা আকাশের নিচে যে কোথাও ঘুমায় তাদের আর কিছু থাক বা না থাক শরীর আছে। হয়ত বা সেই শরীরে মন বলে কোনো বস্তুও আছে। তাদের শরীরের প্রক্রিয়াও বিত্তশালী, উচ্চশিক্ষিত, সম্ভ্রান্ত, গৃহী নারীদের মত। তারাও বংশ বিস্তারের ক্ষমতা রাখে, যেমন রাখে অন্যান্য প্রাণীকুল। পেটের খিদার মত দেহের খিদাও থাকে ধনী-দরিদ্র সবার। সব কিছুতেই জাত-হীনদেরই কেবল জাত যায়। উচ্চ-বংশজাতদের বা পুরুশদের সেই ভয় নেই। যেই হতদরিদ্র নোংরা নারীদের দেখলে সবার ঘৃণা জন্মে, থু থু আসে, বিবমিষা জাগে; যাদের দুর্গন্ধে লোকে নাকে রুমাল চাপা দেয়, কোন মহামানব যান তাদের কাছে বীরত্ব কিংবা পুরুশত্ব প্রদর্শন করতে! দু’পক্ষের সম্মতিক্রমেও যদি কোনো সম্পর্ক স্থাপিত হয়ে থাকে সেই মাশুল কেন শুধু নারীকেই দিতে হয়? বোঝা কেন শুধু নারীকেই বইতে হয়? পুরুশ তার পৌরুশ চরিতার্থ করেই কেটে পড়তে পারে। নারী সেই বীরপুরুশের পৌরুশ ও ঔরস বয়ে যায় সবার লাথি-ঝাঁটা খেয়ে। হাজার প্রতিকূলতা ও লাঞ্ছনার মাঝেও হয়ত সেই অনাকাঙ্ক্ষিত ভ্রূণটি ভূমিষ্ঠ হয়। জন্মদাত্রী ও শিশু উভয়কেই শিকার হতে হয় যাবতীয় চরম ধিক্কার এবং ঘৃণার। চিরকালের সীলমোহর এঁটে যায় তাদের ললাটে। চিরদিনের তরে মা-টি হয়ে যায় পতিতা, কুলটা, মহাপাপী। যে নির্দোষ শিশু তার জন্মের ইতিহাস কিছুই জানে না, যে মোটেই দায়ী নয় তার জন্মের জন্য সে হয়ে যায় “জারজ”। ঔরসদাতা মহাপুরুশের দেহে বা মনে এসবের বাতাসও লাগেনা।
সমাজ, সংসার, রাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি সবকিছুই নারীর প্রতিকূল। প্রকৃতিও কেন নারীর প্রতি বিরূপ? যে দুর্ঘটনার জন্য নারী দায়ী নয় সে দুর্ঘটনার সম্পূর্ণ দায়ভার এবং চূড়ান্ত ফলাফলের ভারী বোঝা প্রকৃতি কেন কেবল নারীর উপরেই স্থায়ীভাবে চাপিয়ে দিয়েছে? প্রকৃতিও কি নারীর বিরুদ্ধে পুরুশের সাথে যুক্তি করেছে? যেই মাতৃত্বকে মহান ব্যাপার বিবেচনা করা হয়, পিতৃ-পরিচয়হীন হলেই কেন সেই মাতৃত্বের মহত্ব ঘৃণ্যতায় পর্যবসিত হয়? ঔরসদাতা মহাপুরুশ যে-ই হোক না কেন; গর্ভধারিণী, জন্মদাত্রী মা নির্বাচনে তো কারো গবেষণার প্রয়োজন হয় না!
অতিশয় মর্মান্তিক কাহিনি ।আমাদের উপমহাদেশের মহিলারা চিরদিনই এই বিড়ম্বনার শিকার ।বিয়ে বহিরবুত; বাচ্ছা নেয়া আমাদের উপমহাদেশে গ্রহণযোগ্য নয়,এ ধরনের মা’কে আমরা নষ্টা/পতিতা অনেক নামই দেই ।শুধু তাই নয় সেই মায়ের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলি ।শুদু তাকে কেন তার নিস্পাপ বাচ্ছাকেও পাপের ফল/যারজ ইত্যাদি নামে ডাকি ।সাউথ আফ্রিকাতে গত দশ বছর ধরে আছি এখানকার সমাজে বিয়ে বিহীন বাচ্ছা নেয়া কখনই খারাপ চোখে দেখা হয়না ।বাচ্ছার বাবা কে এটা না দেখে বরং মা কে পরিচর্যা করে এবং বাচ্ছা ভূমিষ্ঠ হবার পর ১৬ বছর পনযন্ত সরকার ভাতা প্রদান করে,যাতে সেই বাচ্ছা লালন-পালন করতে মায়ের বেঘ পেতে হয়না ।এখানকার সমাজে আমাদের মত এতো করা-নিষেধ না থাকায় বুধহয় এরা মানসিক ভাবে আমাদের চেয়ে অনেক সুখী ।বিবাহ প্রথা উন্নত সমাজ তৈরি করতে সহায়তা করে,কিন্তু বিয়ে ছাড়াও সংসার করাটা আধুনিক কালে স্বাভাবিক ঘটনা ।বিয়ে সামাজিক বৈধতা বৈ আর কিছুইনা ।
পড়লাম এতটুকুই। কিছু মন্তব্য করার ভাষা নেই। (U)
এই নারী তবু নিজের দুঃখের কথা বলতে পারে, সমাজ কে ধিক্কার দিতে পারে। কিন্তু এই বাংলাদেশের ঘরে ঘরে রয়েছে অসংখ্য ধর্ষিতা। তারা কাউকে কিছু বলতে ও পারে না, সইতে ও পারে না। স্বামী নামক ধর্ষকদের কোন দিন কোন বিচারের কাঠগড়া তে দাড়াতে হয় না। সেই ধর্ষণের ফলে যেসব শিশুদের জন্ম হয়, তারা হয় অসুস্থ অযোগ্য। কারন তাদের বাবা মা তাদেরকে ভালবেসে পৃথিবীতে আনেনি।
@নাদিম আহমেদ,
এই কথা টা মানতে পারলাম না, সব স্বামীরা কি ধর্ষক না কি? অনেক ধার্মিক আছে যারা তাদের নিজের স্ত্রী প্রতি যথেষ্ট যত্ন শীল।
সুন্দর লিখার জন্য ধন্যবাদ!
@আমিনুল, আপনাকেও ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ সুন্দর করে উপস্থাপন করার জন্য.
@Mosharaf,ধন্যবাদ
প্রবন্ধ টি ছোট হলেও সারবস্তু সপ্মন্ন সামাজিক একটি বাস্তব করুন চিত্র।
এটা লেখার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
@আঃ হাকিম চাকলাদার,আপনাকেও ধন্যবাদ, পড়া ও মতামত জানানর জন্য।
আপু ছোট করে লেখার জন্য ধন্যবাদ। এতে পড়তে কষ্ট কম হয়।
এর জন্য মেয়েরাই দায়ি।মেয়েরা তাদের নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেতন না, বাংলাদেশের মেয়েদের বুদ্ধি অনান্য দেশের মেয়েদের তুলনায় কম (বুদ্ধি সম্পন্ন)। তাদের সোয়ামিরা যা বুঝাই তারা তা বোকার মত মেনে নেয়। তবে আপনে অনেক অধিকার সচেতন , সেটা বুঝা যায় আপনার লেখায়। ভাল থাকবেন, নতুন আর্টিকেল এর আশায় থাকলাম।
@NETWORK,অধিকার সচেতন হলেও অনেক সময় তা প্রয়োগ করার পরিস্থিতি থাকেনা।
@তামান্না ঝুমু,
সত্যি দুঃখ জনক। “অধিকার সচেতন” এটা বুঝতে পারাটাও আমি মনে করি অনেক বিরাট ১ টা সাফল্য।কারন বাংলাদেশের মেয়েরা এটাও ঠিক মত বুঝতে পারছেনা ।
ভাল থাকবেন।
@NETWORK,নিজের অধিকার বুঝতে পারলে একদিন তা প্রতিষ্ঠিত করাও সম্ভব হতে পারে।
@তামান্না ঝুমু,
বুঝব, মরলে পড়ে।(হতাশ)
ছোট হয়ে গেছে । তৃষ্ণা থেকে গেল । তারপরেও ভালো লেগেছে । ধন্যবাদ ।
@samir, আরেকটু বড় লিখে তৃষ্ণা নিবারণের চেষ্টা থাকবে আগামীতে। ধন্যবাদ
আমি আপনার একজন একান্ত ভক্ত। আপনার লেখা পড়ে সবসময় কল্পনায় হারিয়ে যেতে চেষ্টা করি। কিন্তু এই লেখাটা পড়ে কল্পনা থেকে কঠিন বাস্তবে নেমে এলাম। নিচের লাইন গুলো একটু বেশিই ভাল লাগল।
ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা বিষয় নিয়ে লেখার জন্য। (F) (F)
@অনিরুদ্ধ,আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ (F) (F) (F)
আসলে কি বলবো জানিনা, শুধু গত শুক্রবারের দুপুরের দ্শ্য টা ভেসে আসছে, একজন অধর্নগ্ন গর্ভবতী পাগলী, একটি ব্যস্ত সড়ক, অসহনীয় চিৎকার, আতর্নাদ…………………..আর রাস্তার ব্যস্ত মানুষের ফিরে না তাকানো, কিছু লোকের কামুক দ্ষ্টি……………….
@রুদ্র, এটা ত নিত্যনৈমিত্তিক চিত্র।
@তামান্না ঝুমু, হুম আমি এটা দেখতে দেখতে ক্লান্ত, মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে খুন করে ফেলি
দিনে যাদের মুখ দেখাই হারাম রাতে তারা বেহেস্তের হুর যারা তৈরীই হয়েছে শকুনের হাতে নিশ্বেষিত হতে। যদি আমরা শিশু থাকতেই কারো মাথায় ধর্মিয় পাপ পূণ ও পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের বদলে মানবতা ঢুকিয়ে দিতাম তাহলে হয়ত অবস্থা একটু হলে ভালো হতে পারত।
@সাদিয়া মাশারুফ, একেবারে সঠিক কথা।
@সাদিয়া মাশারুফ, যদি আপনি নারী হয়ে থাকেন……তাহলে আপনার পক্ষে জানা সম্ভব হবে না যে আপনার দিকে একজন পুরুষ কোন দৃষ্টিতে তাকায়……
Ò[মাশুল কেন শুধু নারীকেই দিতে হয়? বোঝা কেন শুধু নারীকেই বইতে হয়?Ó]
নারীর বহু শত্রুর মধ্যে প্রধান শত্রু হলো ধর্ম। এরপরে রয়েছে সমাজ ও রাষ্ট্র। ধর্ম এবং সমাজের কারণেই নারীকে এ বোঝা বইতে হয়। তবে এমন নারীরাও মাঝে মধ্যে যেরূপভাবে ক্ষেপে ওঠে দেখে খুব আনন্দ লাগে। বহু বছর আগের কথা, তখন ঢাকাতে এতো যানবাহন ছিলো না। গুলিস-ান-মিরপুর রুটে তখন বিআরটিসি’র দোতলা বাস খুবই জনপ্রিয়। দোতলায় উঠে বাদিকের একটি সিটে বসে আছি। জিপিও’র সামনে বাসটি দাড়ালে উপর থেকে দেখলাম, ফুটপাথে এক শতছিন্ন, নোংরা কাপড়চোপড় পরা এক ভিখারে একহাতে একটি সন-ান ধরা, কোলে একটি আরেকটি হাঁটছে, মনে হলো পেটেও একটি আছে। বাচ্চাগুলোর গায়ে কোন কাপড় নেই। মনে হলো প্রত্যেকটির বয়সের ব্যবধান ১ থেকে দেড় বছর হবে। আমার সামনের সিটের এক অসভ্য লোক কুটুক্তি করে জিজ্ঞেস করলো, “ওই বেটি এতোগুলা পোলাপান বানাইছে কে?” ভিখারিণীর জবাব বোধকরি তৈরিই ছিলো। বললেন, “ক্যা তোর!” মনে মনে সেদিন আমি খুবই খুশি হয়েছিলাম এই ভেবে যে, এরকম পুরুষরাই তো ওর সর্বনাশ করে এ অবস’ায় ওকে ফেলেছে। ও তো মা, না পারে এদের খাবার দিতে না পারে ফেলে দিতে। তাই এরূপ কাজ যেসব পুরুষ করে তাদের জন্য কঠোর আইন প্রয়োগ করে এদের ভরণপোষণ আদায় করা রাষ্ট্রের উচিত বলে মনে করি।
“ফালতু” ছবিটির কাহিনীর মতো একটি কাহিনী জানা আছে। এক ড্রাইভার যিনি ১০/১২ বছর সৌদিতে কাটিয়েছেন তার মুখে শোনা, জানি না তিনি ঠিক বলেছেন কি-না? তার বস্ সৌদির একজন ধনকুবের। সেখানে নাকি রাজপরিবারের পশুগুলো শতশত বিয়ে করে, তবে ৪টার বেশি একসঙ্গে রাখে না, কারণ তা ধর্মীয়ভাবে জায়েজ না। বাকি যেগুলোকে কিছুদিন পর পর তালাক দেয় তাদের নাকি আর কোন দিন বিয়ে হতে পারে না, কেউ বিয়ে করলে তার প্রাণনাশ নিশ্চিত, তাই তাদের আর কোনদিন বিয়ে হয় না। তাদের জন্য আলাদা বাড়ি কিনে সেখানে রেখে দেয়, তাদের সন-ানসহ। রাজপরিবার বা ধনকুবেরদের বিয়ে ঠিক করার জন্য নাকি ঘটক থাকে। তারা মেয়েদের ছবি নিয়ে গিয়ে দেখায়, ছবি দেখে রাজপুত্ররা পছন্দ করলেই হলো, ঘটক ওই বিয়ে ঠিকঠাক করে ফেলেন। কচি মেয়ের প্রতি পুরুষের লোভটা সবসময়ই বেশি তাই বোধকরি কচি মেয়ের ছবি দেখে রাজপরিবারের পশু ওই মেয়েকে বিয়ে করার জন্য ঘটক নিয়োগ করলো এবং বিয়ের দিন, তারিখ ঠিক হলো। যাহেক, বিয়ের দিন ওই ড্রাইভারের বসকেও বিয়েতে যেতে হলো। ড্রাইভারটি গাড়ির কাছে অপেক্ষা করছে, আর দেখছে বিয়ে বাড়ির আনন্দ উৎসব চলছে। অনেকক্ষণ পর দেখলো তার বস হন-দন- হয়ে বিয়ে বাড়ি থেকে চলে আসছে, তখন সে জিজ্ঞেস করলো, বস্ কি হয়েছে? বিয়ের খাওয়াদাওয়া এতো তাড়াতাড়ি শেষ? বস বললো, তুই গাড়িতে ওঠ, গাড়ি ছাড় পরে বলছি। পরে তার বস যা বলেছিলো তাহলে। কাজী সাহেব বিয়ে পড়াতে গিয়ে যখন মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করলো, তোমার নাম, পিতার নাম, তখন মেয়েটি তার পিতার যে নাম, ঠিকানা বললো তাতে দেখা গেলো তার বর আর কেউ নয়, তার জন্মদাতা পিতা। আমি মনে করি এ ঘটনাটি যদি ওই ড্রাইভার সত্য বলে থাকে, এরপরও ওসব পশুদের বিয়ের খায়েশ একটুও যে কমেনি তা হলফ করে বলতে পারি। ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
@কামালউদ্দিন আহমেদ, আপনি সৌদি আরবের যে গল্পটি বললেন এটি মোটেও বানিয়ে বলা নয়। সৌদি প্রবাসী অনেক মানুশের কাছেই আমি এই রকম গল্প শুনেছি।
ভদ্রনোকেরা যেসব নোংরা মেয়েমানুশ দেখে থু থু ফেলেন তাদের কাছে ক্ষণিকের অভিসারে যেতে অনেক ভদ্রনোকই ঘেন্না বোধ করেন না।
@কামালউদ্দিন আহমেদ, ধর্ম আসলে নারীর শত্রু নয়……….নারীর শত্রু হচ্ছেন আপনারা……একমাত্র কোরান ছাড়া কোন ধর্ম নারীকে যথাযোগ্য মর্যাদা দেয় নাই……..নারী কে আপনাদের মতই মানুষেরা পণ্য বানিয়েছেন…..নারীকে অভিনয়,freedom,modeling এর নামে আপনারা তাদের সতীত্ব কে কেড়ে নিয়েছেন…..islam যদি ESTABLISH হয়……তাহলে তো আপনারা নারীকে আপনাদের পুতুল বানাতে পারবেন না……আপনাদের মত লোকেরাই bangla choti এর মত জঘন্য ওয়েবসাইট বানান……art and culture এর নামে তাকে self pleasure এর জিনিস বানান…….প্রেম এর কথা বলে তাদের সাথে physical relation স্থাপন করেন তারপর তার responsibility নেন না………এর জন্যই ইসলামকে গা কাঁটার মত মনে হয়…
(Y)
মুভিটা আমাদের দেশের। নাম- “চন্দ্রগ্রহণ” আর মুভিতে শিশুটা থেকে কন্যা শিশু এবং গ্রামের প্রভাবশালী ব্যাক্তি ছেলের সাথে তার প্রণয় হয়।
@বিলম্বিতা, আমাদের দেশের মুভিটি হয়ত কলকাতার মুভিটির অনুকরণে বানিয়ে থাকতে পারে।ধন্যবাদ
@তামান্না ঝুমা
হয়তো আটষট্টি হাজার গ্রামে এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে এ রকম এক লক্ষ বিপন্ন, ব্যতিক্রান্ত মানুষ!
প্রত্যাশা আর প্রাপ্তি কী কখনো পাশাপশি হাঁটে এ মৃত্তিকায়!
আমি জানি না, যদি হেঁটে থাকে তাহলে অন্তত সমাধান না পেলেও নূন্যতম সস্তি পাবেন।
@আহমেদ সায়েম, শুধু গ্রামে কেন, শহরের ফুটপাত অলিগলি বা বাসার ভেতরে গৃহ পরিচারিকাদের মাঝে এই রকম মানুশের সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে।
যারা নিষ্পেষিত তারা হয়ত জানেও না মসৃণ দিনের প্রত্যাশা করতে! হয়ত জানেও না তাদের অধিকারের কথা!এই অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে যেতে হয়ত তাদের ধারণা বদ্ধমূল হয়ে গিয়েছে এই রকমই স্বাভাবিক!
@তামান্না ঝুমু,
পুরুশ আর পুরুষ নেই
পশু হয়ে গেছে।
@আকাশ মালিক, কেমন আছেন দাদা?আমার অত্যন্ত প্রিয় লেখক গোলাম মুরশিদ পুরুষ বানান পুরুশ লিখেন, তাই আমিও লিখলাম আরকি।
(F)
উত্তরটা অপ্রিয় হলেও জানাশোনা সত্যি বটে। আর এটাও জানা যে আজকের নারী আর দুর্বল নয়। অধিকারে, অর্জনে আর অবস্থানে যথেষ্ট শক্তিশালী। বাংলাদেশের নারীরাও একদিন এগুবে। অন্ধকার আর প্রতারনা আর কতকাল সহ্য করবে তারা; বিদ্রোহ তারা করবেই করবে।
ঐ রকম অসহায় ভিখারিনি আর পাগলী সারা দেশ জুড়ে যত আছে তারা যেন জ্বলে ওঠে একসাথে মুক্তি আর অধিকারের মশাল নিয়ে; চিৎকার করে বলতে পারে, কুকুরের বাচ্চার বাপ খুজস ক্যান? বাচ্চার মা আমি, একটা মানুষ, আমারে জিগা।
@কাজী রহমান,হাজার হাজার বছরের আকাশ-পাতাল বৈষম্যে পরিবর্তন এসেছে কিছু কিছু ক্ষেত্রে। সমাধিকার যেন সর্বক্ষেত্রেই প্রতিষ্ঠিত হয়। আপনার লেখা পাচ্ছিনা অনেকদিন।