গত কয়েকদিনের গরম খবর হল সার্নের LHC বিজ্ঞানীদের হিগ্স্ কণা বা ঈশ্বর কণা আবিস্কারের ঘোষণা। প্রায় চল্লিশ বছর ধরে এই রহস্যময় কণার সন্ধানে পদার্থবিজ্ঞানীরা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছেন এবং এই দীর্ঘ যাত্রার সফল পরিণতি হিসেবে গত ৪ঠা জুলাইএ ঘোষণা এল অবশেষে পাওয়া গেছে হিগ্স্ কণা। নতুন কণা আবিস্কারের সরকারী ঘোষণার যে ন্যূনতম শর্তাবলী পূরণ করতে হয় সেগুলি মেটানোর পরেই এই ঘোষণা। যাতে আবিস্কারের কাজে নিয়োজিত বিজ্ঞানীদের দলে কোন পক্ষপাতিত্বের সুযোগ না থাকে সেকারণে দুটো পৃথক বিজ্ঞানীদলের দ্বারা এই পরীক্ষার কাজ চালান হয়। একটা দল হল ATLAS (A Toroidal LHC Apparatus), আর অন্যটা হল CMS (Compact Muon Solenoid) উভয় দলই একই ফলাফলে উপনীত হয়। কোন দলই অন্য দলের কাজ কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে জানতেন না। আর এই দল দুটি আন্তর্জাতিক, কাজেই কোন বিশেষ দেশের প্রতিনিধিত্ব করছে না কোন দলই। CMS দলে আছেন এক ভারতীয় মহিলা – অর্চনা শর্মা। তা সত্ত্বেও সার্নের বিজ্ঞানীরা বিজ্ঞানীদের চিরাচরিত সতর্কতার সাথে বলছেন যে “হিগ্স্ কণা সদৃশ” এক কণা বা হিগ্স্ কণার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এক কণা পাওয়া গেছে। কিন্তু যেহেতু একমাত্র হিগ্স্ কণাই বর্তমান প্রমিত মডেল (Standard Model) ভবিষ্যৎবাণী করে সেহেতু এটা যে আসলেই হিগ্স্ কণা তার সম্ভাব্যতাই বেশী ( যদিও ১০০% নয়)।
হিগ্স্ কণা কে ঈশ্বর কণা বলা হয় কেন? ঈশ্বর কণা পদার্থবিজ্ঞানের সরকারী পরিভাষায় নেই। নোবেল পদাথবিজ্ঞানী লীয়ন লেডারময়ান তাঁর ১৯৯৩ এর বই “The God Particle: If the Universe Is the Answer, What is the Question?” তে হিগ্স্ কণা কে ঈশ্বর কণা বলে উল্লেখ করায় সাধারণ্যের ভাষায় এই নামকরণ স্থান পেয়ে গেছে। বিজ্ঞানে কম সচেতন বা অজ্ঞদের অনেকেই এই কারণে হিগ্স্ কণা আবিস্কারকে ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রমাণ বলে ভুল করছে। যেমনটা স্টিফেন হকিং এর “A brief history of Time” এর উপসংহারে “ঈশ্বরের মন জানার” কথা বলায় এটাকে অনেকে হকিংএর ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাসের সাক্ষ্য হিসেবে দেখেছিল। কিন্তু হকিং, লেডারম্যান এরা কেউ আস্তিক নন । হিগ্স্ কণার প্রবক্তা হিগ্স্ একজন নাস্তিক। হকিং, লেডারম্যান উভয়ই রূপক অর্থে বা আলঙ্কারিকভাবে “ঈশ্বর” শব্দ ব্যবহার করেছিলেন। ঈশ্বর কণার আবিস্কারের সাথে ঈশ্বরের অস্তিত্বের সম্পর্ক একটা কমলার সাথে বুধবারের যে সম্পর্ক সেরকম। হিগ্স্ কণাকে বিজ্ঞানে হিগ্স্ বোসন বলেই উল্লেখ করা হয়, কারণ হিগ্স্ কণা একটি বোসন কণা। মৌলিক কণা দু প্রকারের (১) বোসন (২) ফার্মিওন। বোসনের স্পিন বা কৌণিক ভরবেগ পূর্ণসংখ্যা(Integer) , আর ফার্মিওনের স্পিন অর্ধপূর্ণ (Half-Integer)। পূর্ণসংখ্যা স্পিনের কণারা যে পরিসংখ্যান বা ব্যাপন মেনে চলে তাকে বোস পরিসংখ্যান বলা হয়। আর অর্ধপূর্ণ স্পিনের কণারা যে পরিসংখ্যান বা ব্যাপন মেনে চলে তাকে ফার্মী পরিসংখ্যান বলা হয়। বোস পরিসংখ্যানের ধারণা প্রথম দিয়েছিলেন ছিলেন বাঙ্গালী পদার্থবিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বোস। বোসন নামকরণ তাঁর নামেই করা হয়েছিল।
তো হিগ্স্ বোসন ব্যাপারটা কি? একটা স্পষ্ট কথা বলে ফেলি। এটা শুনে অনেকে হতাশ বা মনক্ষুণ্ণ হতে পারেন। স্পষ্ট কথাটা হল এটা প্রকৃত অর্থে বোঝা সাধারণ মানুষের (তাত্ত্বিক কণা/ উচ্চশক্তি পদার্থবিজ্ঞনী ও বিশ্বসৃষ্টিতত্ত্ববিদ বা Cosmologist ব্যতীত বাকী সকল) পক্ষে কখনই সম্ভব নয়। হিগ্স্ বোসন কোয়ান্টাম ক্ষেত্র তত্বের (Quantum Field Theory) এর এক বিষয়। আমার নিজের অভিমত হল এটা সন্তোষজনকভাবে বোঝার ন্যূনতম শর্ত হল কোন মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদাথবিজ্ঞানের গ্র্যাজুয়েট (মাস্টার্স বা পিএইচডি) প্রোগ্রামের কোয়ান্টাম ক্ষেত্র তত্বের (Quantum Field Theory) তিন সিকোয়েন্সের কোর্স সফলভাবে সম্পন্ন করা। স্বপাঠেও (Self Study) তা সম্ভব, কিন্তু তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়এর তিন সিকোয়েন্সের কোর্সে যেসব পূর্বশর্ত পূরণ করতে হয় সেগুলোও স্বপাঠের দ্বারা মেটাতে হবে। আরো উল্লেখ করি যে পদাথবিজ্ঞানের যে কোন শাখার পেশাদার ব্যবহারিক পদার্থবিজ্ঞানী (Experimental Physicists) বা পদার্থবিজ্ঞানের কোন কোন শাখার তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী হতে হলে তিন সিকোয়েন্সের কোয়ান্টাম ফিল্ড তত্ত্ব আবশ্যিক নয়। তাই তাঁরা যে এটা সম্পূর্ণ বুঝবেন তার কোন নিশ্চয়তা নেই। কেবল তাত্ত্বিক কণা/ উচ্চশক্তি পদার্থবিজ্ঞনী ও সৃষ্টিতত্ত্ববিদেরা এটা বোঝেন কারণ তাদের জন্য এই তিন সিকোয়েন্সের পাঠ আবশ্যিক। আর তাঁদের মধ্য থেকেই এই বিষয়ের গবেষক তৈরী হয়। কোয়ান্টাম ফিল্ড তত্ত্ব না পড়েও হিগ্স্ বোসন বা প্রক্রিয়া বোঝার অধ্যাস তৈরী করা যায় (এটা যে কোন বৈজ্ঞানিক ধারণার বেলায় প্রযোজ্য)। বুঝেছি বলে নিজেকে প্রবোধ দেয়া যায়। যাহোক কিছু কথা তবুও সাধারণভাবে বলতে হয়, বোঝার অধ্যাস তৈরী করার জন্য যাতে নবীনদের অনেকে এটা নিয়ে উচ্চতর স্তরে পড়াশোনা করার প্রেরণা পায়, আর যাতে এটা তাদের চিন্তা আর উৎসাহকে উস্কিয়ে দেয়।
তো কিভাবে হিগ্স্ বোসন বোঝার অধ্যাস তৈরী করা যায়? বিজ্ঞানের ভাষা ব্যবহার না করে এটা বোঝান বেশ কঠিন। যুক্তরাজ্যের রক্ষণশীল সরকারের বিজ্ঞান মন্ত্রী উইলিয়াম ওয়াল্ডারগ্রেভ ১৯৯৩ সালে বিজ্ঞানীদের জন্য চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন সহজ ভাষায় কে সবচেয়ে ভাল ব্যাখ্যা দিতে পারেন হিগ্স্ নিয়ে। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ডেভিড মিলার জিতে নেন চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেঞ্ছিলেন, ধরুন মার্গারেট থ্যাচার রক্ষনশীল দলকর্মীদের এক পার্টিতে যোগ দিতে গেছেন । দেখা যাবে যে তার সমর্থকরা তাঁর চারিদিকে জটলা পাকিয়ে এক গোলাকার আবরণ সৃষ্টি করেছে। যার ফলে থ্যাচারের এগিয়ে যেতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে, যেটা অন্যান্য সদস্যের বেলায় হচ্ছেনা। একজন অধিক ওজনের মানুষের যেমন নড়াচড়ায় বেশ কষ্ট হয় হালকা পাতলা মানুষের চেয়ে, থ্যাচারের অবস্থাও তেমনই। তার ওজন তাঁর চারপাশে দলা পাকান ভক্তদের কারণে বেড়ে গেছে বলে মনে হবে। হিগ্স্ বোসনও হচ্ছে ঐ রক্ষণশীল দলকর্মীদের মত, যার কারণে ভরহীন কণা ভর অর্জন করে। আর থ্যাচারের চেয়ে কম জনপ্রিয় কোন নেতা(নেত্রী) ঐ জায়াগায় থাকলে তাঁর চারপাশে কম ভক্ত জটলা করবে, ফলে সেই কম জনপ্রিয় নেতার ভর থ্যাচারের চেয়ে কম মনে হবে । একইভাবে মৌলিক কণার সবগুলিই হিগ্স্ ক্ষেত্রের সাথে ক্রিয়া করে সমান ভর লাভ করে না, জনপ্রিয়তার মতই সবার ভর এক হয় না। বলাই বাহুল্য এটা একটা স্থূল উপমা সঠিক বিচারে। এরপর আরো অনেক পদার্থবিজ্ঞানী এর চেয়ে উন্নততর উপমামূলক ব্যাখ্যা নিয়ে হাজির হয়েছেন। থ্যাচারের বদলে কানাডিও পপ তারকা জাস্টিন বীবারকে ব্যবহার করেছেন কেউ, কেউ বা গুড়ের মধ্যে পিংপং বলের চলন দিয়ে। সব ব্যাখ্যাই একটা সান্ত্বনা ব্যাখ্যা আমার মতে।
এবার বৈজ্ঞানিকভাবে হিগ্স্ বোসন ও প্রক্রিয়ার ব্যাখ্যার চেষ্টা (বা ব্যাখ্যার ভানের চেষ্টা) করা যাক। হিগ্স্ বোসন হল পদার্থবিজ্ঞানের প্রমিত মডেল যেসব মৌলিক কণার উপর ভিত্তি করে গঠিত তার অন্যতম এবং একমাত্র অসনাক্তকৃত বা অজানা কণা (৪ঠা জু্লাই ২০১২ এর আগ পর্যন্ত)। জানা কণাগুলো হল ইলেক্ট্রন, কোয়ার্ক, লেপ্টন ইত্যাদি। প্রমিত মডেল বর্তমানে পদার্থবিজ্ঞানের সবচেয়ে সফল তত্ত্ব যার দ্বারা প্রকৃতির চারটি বলের স্বরূপ ব্যাখ্যা করা যায়, যে বলের দ্বারা মহাবিশ্বের তাবৎ পদার্থ বা বস্তু গঠিত হয় মৌলিক কণাগুলির সমন্বয়ে। প্রমিত মডেল অনুযায়ী হিগ্স্ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে (সেটা আরেকটা বোঝার বিষয়) ভরহীন কণিকাগুলি ভর অর্জন করে। সব বোসন কণাই কোন না কোন ফিল্ড বা ক্ষেত্রের সাথে সশ্লিষ্ট। হিগ্স্ বোসন যে ক্ষেত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট সেটাকে বলা হয় হিগ্স্ ক্ষেত্র। ক্ষেত্র জিনিষটা কি? যেমন পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র বিরাজ করে পৃথিবীর সব স্থান জুড়ে , যেমন সব জায়গা জুড়ে তড়িৎ-চৌম্বক ক্ষেত্র বিরাজ করে পৃথিবীর সব স্থানে, ঠিক তেমনি সব বোসন কণার ক্ষেত্র বিরাজ করে সব স্থান জুড়ে। তবে হিগ্স্ বোসনের ক্ষেত্র খুব উচ্চশক্তিতে বিরাজ করে, শক্তির মাত্রা কমে গেলে হিগ্স্ ক্ষেত্র উবে যায়, আদৃশ্য হয়ে যায়। প্রমিত তত্ত্ব অনুযায়ী মহাবিস্ফোরণের ঠিক পর পরই (এক সেকেন্ডের লক্ষ কোটি ভাগের এক ভাগ সময়ে) এরকম উচ্চশক্তি বিরাজ করেছিল। তখন হিগ্স্ ক্ষেত্র বিরাজ করছিল। ঐ সময়ে হিগ্স্ বোসন ছাড়া বাকী সব মৌলিক কণাই ভরহীন ছিল। কিন্তু তাপমাত্রা আরেকটু কমার পর শক্তির বা তেজের মাত্রা কমে যাওয়ায় হিগ্স্ ক্ষেত্রও অদৃশ্য হয়ে গেল। অদৃশ্য হবার মুহূর্তে এক প্রতিসাম্যের ভাঙ্গন ঘটে (Spontaneous Summetry Breaking)। এই প্রতিসাম্য ভঙ্গের কারণ হল হিগ্স্ ক্ষেত্র অদৃশ্য হয়ে গেলেও তার ন্যূনতম শক্তির প্রত্যাশিত মান (Vacuum Expectation Value) শূন্য হয় না। পানি যেমন জমে বরফ হয়ে গেলে পানির অণুগুলির প্রতিসাম্য নষ্ট হয়ে গিয়ে বরফের কেলাসের প্রতিসাম্যহীন (বা কম প্রতিসাম্যপূর্ণ) অণুতে পরিণত হয়, তেমনি হিগ্স্ ক্ষেত্রের হিমায়নের ফলে যে প্রতিসাম্য নষ্ট হয় সেটা হলে ভরের প্রতিসাম্য। সব ভরই শূন্য ছিল এর আগে, একটা প্রতিসাম্যময় অবস্থা অবশ্যই। হিগ্স্ ক্ষেত্রের সাথে ক্রিয়া করে একেক মৌলিক কণা একেক ভর লাভ করে, একটা প্রতিসাম্যবিহীন অবস্থা। কি ভাবে হিগ্স্ ক্ষেত্রের সাথে ক্রিয়া করে ভর লাভের ধারণা পেলেন পদার্থবিজ্ঞানীরা? কোয়ান্টাম ফিল্ড তত্ত্বের এর এক মূল সমীকরণ বা ধারণা হল গেজ অপরিবর্তিতা (gauge invariance)। এই ধারণা অনুযায়ী সব বোসন মৌলিক কণাগুলির ভর শূন্য হবারই কথা। কিন্তু তড়িৎ-ক্ষীন নিউক্লীয় বলের বাহক বোসন কণাগুলির ভর শূন্য নয়, অথচ তড়িৎ-ক্ষীন নিউক্লীয় বলের তত্ত্বে গেজ অপরিবর্তিতা ধরে নেয়া হয় । তাহলে কি করে এই গরমিলের সুরাহা করা যায়?। পদার্থবিজ্ঞানের আরেকটি ধারণা হল স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিসাম্য ভংগ(Sponatneous symmetry breaking)। গাণিতিভাবে দেখান যায় যে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিসাম্য ভঙ্গের ধারণা গেজ ফিল্ড তত্ত্বের সাথে সম্পৃক্ত করলে ভরহীন বোসন কণিকা ভর অর্জন করতে সক্ষম। এটাকে হিগ্স্ প্রক্রিয়া (Higgs Mechanism) বলে। সালাম-ওয়াইনবার্গের উদ্ভাবিত তড়িৎ-ক্ষীন বলের বাহক মৌলিক বোসন গুলির (W+-,Z) ভর অর্জন ও এই হিগ্স্ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই ঘটিত। বলা দরকার যে হিগ্স্ প্রক্রিয়া ঘটার জন্য হিগ্স্ বোসনের অস্তিত্ব আবশ্যিক নয়। অন্যভাবেও এই প্রক্রিয়া ঘটতে পারে। সালাম-ওয়াইনবার্গের তত্ত্বে হিগ্স্ প্রক্রিয়ার আশ্রয় নেয়া হয়েছিল, হিগ্স্ বোসনের অস্তিত্বকে ধরে নিয়ে নয়। তাই হিগ্স্ বোসনের অস্তিত্ব প্রমাণ না হলেও সালাম-ওয়াইনবার্গের নোবেল পুরস্কার অবৈধ হয়ে যেত না। কারণ (W+-,Z) এর হিগ্স্ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভরলাভ এর আগেই পরীক্ষার দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে। এর থেকেই আরেক ধাপ এগিয়ে পদার্থিবিজ্ঞানীরা (বিশেষ করে পিটার হিগ্স্) ষাট দশকের মধ্যভাগে প্রস্তাব করেন যে এমন এক ক্ষেত্র থাকা সম্ভব যার দ্বারা সব ভরহীন কণাই ভর লাভ করতে পারে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিসাম্য ভঙ্গের মাধ্যমে,যেটা হল হিগ্স্ ক্ষেত্র। বলাই বাহুল্য এসবই ক্ষেত্র তত্ত্বের উচ্চতর গাণিতিক ভাষায় ব্যক্ত করা হয়।
কেন হিগ্স্ বোসন এত দেরীতে ধরা পড়ল? আগেই বলেছি হিগস্ কণা তৈরী হয় অনেক উচ্চ শক্তিতে যা এযাবত কোন ল্যাবেই তৈরী সম্ভব হয় নি। কেবল LHC তেই এই মাত্রার শক্তি উৎপাদন সম্ভব হয়েছে অধুনা। এই শক্তি হল মহাবিস্ফোরণের (Big Bang) অব্যবহিত পরের শক্তির তুল্য। কেন হিগ্স্ বোসন এত গুরুত্বপূর্ণ যার পিছনে দশ বিলিয়ন ডলার খরচ করে LHC গড়া হয়েছে? পদার্থবিজ্ঞানের ভিত্তি দাঁড়িয়ে আছে হিগ্স্ বোসনর অস্তিত্বের উপর ভর করে। মহা বিশ্বের যাবতীয় বস্তু, ছায়াপথ, নীহারিকা, গ্রহ নক্ষত্র সব কিছু সৃষ্টির মূলেই আছে এই হিগস্ কণা। তাই মানব জাতির জন্য এর অস্তিত্বকে প্রমাণ করা এক বুদ্ধিবৃত্তীয় নৈতিক দায়িত্ব। এক দেশের পক্ষে এই খরচ বহন করা সম্ভব নয়। তাই ইউরোপীয় দেশগুলির সমষ্টিগত অর্থানুকূল্যে, বিশ্বের অনেক দেশের বিজ্ঞানীদের সহায়তায় গড়ে উঠেছে এই বিশাল পরীক্ষাগার। আশা করা যায় হিগ্স্ বোসনের আবিস্কার মহাবিশ্বকে বোঝার জন্য এক উল্লেখযোগ্য মাইল ফলক হয়ে দাঁড়াবে। তবে এটাও স্মরণ করে দেয়া উচিত যে হিগ্স্ বোসনের আবিস্কার নতুন কোন তত্ত্ব নয়। এটা কেবল বর্তমান তত্ত্বকেই পাকা পোক্ত করল। তবুও এর গুরুত্ব অপরিসীম।
ঈশ্বর কণার আবিস্কার ঈশ্বরের অস্তিত্বের বিতর্কের সাথে এক অর্থে প্রাসঙ্গিক। সেটা হলে ঈশ্বর কণা আবিস্কারের আগে ঈশ্বর কণা আছে কি নেই এটা একটা অর্থবহ প্রশ্ন ছিল। কেউ ঈশ্বর কণার অস্তিত্ব নেই বলে বিশ্বাস করলে সে বিশ্বাসকে বিজ্ঞান বিরোধী বা অর্থহীন বলা যেত না। স্টিফেন হকিং হিগ্স্ বোসনের অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন নি। এখন করেন। ঈশ্বর কণার একটা সুস্পষ্ট ধারণা আছে যেটা সব ধর্মের পদার্থবিজ্ঞানীদের কাছে একই। ঈশ্বর কণা অস্তিত্ব প্রমাণের বা অপ্রমাণের প্রক্রিয়া নিয়েও একমত সব বিজ্ঞানীরা। কিন্তু সব ধর্মের পদার্থবিজ্ঞানীদের কাছে ঈশ্বরের সংজ্ঞা এক নয় বা সুস্পষ্টও নয়। আর প্রমাণের বা অপ্রমাণের প্রক্রিয়া নিয়েও একমত নন তারা। আসলে প্রমাণের বা অপ্রমাণের কোন প্রক্রিয়াই জানা নেই তাদের কাছে, কারণ ধারণাটাই অস্পষ্ট/অর্থহীন। তাই ঈশ্বর আছে কি নেই এই প্রশ্নটা অর্থহীন এক প্রশ্ন। ঠিক তেমনই ঈশ্বর আছেন বলাটা যেমন অর্থহীন ঈশ্বর নেই বলাটাও অর্থহীন। তবে ঈশ্বর আছেন বলে যারা (ভুল) যুক্তি দেয়, তাদের যুক্তির ত্রুটি ধরিয়ে দেয়াটা অর্থহীন নয়।
Many many Thanks Avijit Da for this contemporary article. :)त्र
Thank you avijit da for this contemporary article. त्र 🙂
ভাল লাগলো
অসাধারণ লেখা।
@অপার্থিব, আজ সকালে আনন্দবাজার পত্রিকা থেকে পেলাম…ভালো লাগল….পড়ে দেখতে পারেন….
@অপার্থিব, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। আমি মুক্তমনায় নতুন। ভালো থাকবেন।
মুক্তমনা ব্লগের লেখা গুলো ভালো লাগে । সবচাইতে বড় ব্যাপার এখানে কেউ “ফটকামি” করেনা, তবে অনেকে ভাসা ভাসা জ্ঞান নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় ঝাঁপিয়ে পরে। যদিও অনেক লেখকগণের সাথে মোটেও একমত নই। তবে ভিন্ন মত সম্পর্কে সঠিক জানা না থাকলে আসলে জানাটা অর্ধেক রয়ে যায় । মুক্তমনা ব্লগ কি শুধু ধর্ম বিরোধিতার প্ল্যাটফর্ম নাকি সর্বপ্রকার যুক্তি যুদ্ধের মুক্ত ময়দান !!!!!!!!!!!!!!
এই পোষ্টের উদ্দেশ্য দুটি হতে পারেঃ
১. ভাসা ভাসা কিংবা অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী “তথাকথিত” আধুনিক প্রগ্রেসিভ ধর্মীয় চিন্তাবিদদের এক কাঠি নেওয়ার চেষ্টা।
২. নব আবিষ্কৃত বিজ্ঞানের একটি দিক নিয়ে আলোচনা।
এখানে প্রথম দিকটি নিয়ে কোনই কিছু বলার নেই। পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেই স্বাধীনতা আন্দোলনকারী আছে কিন্তু অনেক দেশে তাদের সংখ্যা এত “বেশি“ কম একটা ওয়েবসাইটেই তাদের ভরসা। যেমন ক্যালিফোর্নিয়া স্বাধীনতা আন্দোলনকারী কিংবা আমাদের দেশের খুলনা অঞ্চলের বঙ্গভূমি নামক অথবা সিলেটের স্বাধীনতা আন্দোলন কারী। এখন তাদের নিয়ে যদি আলোচনা করে মূল্যবান সময় অপচয় করা হয় তাহলে কি আর বলার আছে। (এনালজি)
দ্বিতীয় দিকটি বললে লেখক সুন্দর ভাবে নন ট্যাকনিক্যালি হিগস বোসনের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তবে তিনি অত্যন্ত সুচিন্তিত ভাবেই বিস্তারিত ভাবে কিছু বলেননি কেননা তার প্রধান উদ্দেশ্যটি উপরে উল্লেখিত উদ্দেশ্যর প্রথমটি, তথা “১।” নাম্বার।
যাইহোক,
এখানে অনেক মন্তব্যকারী / পাঠকের কাছে কয়েকটি বিষয়ে ধোঁয়াশা আছে,, তাদের সাথে কোন ধরনের চার্ট কিংবা সূত্র ছাড়া কিছু বিষয় শেয়ার করার প্রয়াসঃ
সব মৌলিক কণাকে বিজ্ঞানীগণ দুটি ভাগে ভাগ করেনঃ
১. ফার্মিয়ন।
২.বোসন।
আবার এদের গ্রুপে অবস্থিত কণা গুলো দুই ধরনের: ১।প্রাথমিক ২। যৌগিক
লক্ষণীয় এনরিকো ফার্মি কিংবা সত্যেন্দ্র নাথ বসু কেউই “ফার্মিয়ন” কিংবা “বোসন” এর প্রথম আবিষ্কারক নন। তাঁরা এর কতগুলো কণার শক্তি ব্যাপ্তি এবং অবস্থা যৌথ ব্যাখ্যা দানকারী। ব্যাখ্যা / তত্ত্বগুলো যথাক্রমে “ফার্মি ডায়রাক স্ট্যাটিক্স” এবং “বোস-আইনস্টাইন স্ট্যাটিক্স” নামে পরিচিত। অর্থাৎ বাকি দুজন ব্যাখাদানকারী হলেন যথাক্রমে পল ডায়রাক (ফার্মির সাথে) এবং আলবার্ট আইনস্টাইন (বসুর সাথে)। বিজ্ঞানী পল ডায়রাকই “বোসন” এবং “ফার্মিয়ন” গ্রুপের নামকরণের প্রস্তাবক। “হিগস” এই বোসন গ্রুপের একটি কণা (অথবা শক্তি)।
ফার্মিয়ন এবং বোসন গ্রুপের কণাদের মাঝে সবচেয়ে মৌলিক পার্থক্য হল দুটো ফার্মিয়ন শ্রেণীর কণা একই জায়গায় অবস্থান করতে পারেনা কিন্তু বোসন কণা পারেনা। তথা বোসনের “আকৃতিগত অস্তিত্ব” নেই অথবা “”আকৃতিগত ভর” নেই। তবে বিজ্ঞানীগণ শক্তিকে ভরে রূপান্তর করে তাদের হিসেব করেন। তাছাড়া আরও সাধারণ পার্থক্য আছে যেমন স্পিন, কালার চার্জ ইত্যাদি। তবে এর কোন কিছুই ঘূর্ণন কিংবা রঙের সাথে সম্পর্কিত নয় যেমন সম্পর্কিত নয় হিগস বোসনের নামকরণের সাথে স্রষ্টার। উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞান বইয়ে সামান্য ধারনা দেওয়া হয় তবে তা “পপুলার সাইন্স” এর কাছাকাছি।
কোয়ান্টাম বলবিদ্যার গণিতের সাহায্য ছাড়া আসলে এর বেশি আর ব্যাখ্যা করলে বিষটি ততটা বোঝা যাবেনা। কেননা “বোসন” গ্রুপের কণা চরিত্রগত ভাবেই নিউটনিয়/ ক্লাসিক্যাল পদার্থ বিজ্ঞান তথা গণিত দ্বারা ব্যাখ্যা করা করা যায়না। কোন কিছুর ভর যদি “০” (কেবল আকৃতি গত ভাবে কল্পিত) হয় তাহলে তা কোন সাধারণ গণিত দূরের কথা সাধারণ কনসেপ্টেই চিন্তায় আসেনা, যেমন আসেনা আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব। বিজ্ঞানীগণ শক্তিকে ভরে রূপান্তর করে তাদের গবেষণা কাজ করেন। কোয়ান্টাম বলবিদ্যা সাধারণত অনার্স / মাস্টার্স / পিএইচডি লেভেলে পদার্থ বিজ্ঞান, তড়িৎ প্রকৌশল এবং রসায়ন বিদ্যায় পড়ানো হয় (অন্যান্য ডিভিশনেও পড়ানো হতে পারে যেমন ফলিত গণিত)।
আজ পর্যন্ত আবিষ্কৃত “সবচাইতে” প্রাথমিক মৌলিক কণাকে বিজ্ঞানীরা “কার্ক” হিসেবে অবহিত করেন। সাধারণ ভাবে চিন্তা করলে ফার্মিয়ন গ্রুপের যৌগিক কণা (যেমন প্রোটন) দুটি বা তিনটি “কার্ক” (এটাও ফার্মিয়ন) এর সমন্বয়ে গঠিত এবং কয়েকটি কার্ক পরস্পরে সাথে “বোসন” গ্রুপের কণা যেমন “গ্লুয়োন” দ্বারা শক্তি বিনিময়ের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে। একে স্ট্রং ফোর্স বলা হয়, যা চারটি মৌলিক “ফোর্স” এর একটি। বাকি তিনটি তড়িৎ চুম্বকীয় শক্তি / বল, মহাকর্ষ এবং উইক ফোর্স। প্রোটন এবং তার পরবর্তী ব্যাপার গুলো আমরা সবাই মাধ্যমিক শ্রেণীতে পড়ে এসেছি।
আরেকটা বিষয় আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানের বেশিরভাগ মৌলিক আবিষ্কার প্রথমে গাণিতিক ভাবে তথা তত্ত্বীয় ভাবে স্বীকার / গ্রহণ / আবিষ্কার করা হয় এবং পরে এর বাস্তব অস্তিত্ব আবিষ্কার / পর্যবেক্ষণ করা হয়, উপযুক্ত প্রযুক্তি এবং অর্থের সংস্থান হলে। এজন্য বিজ্ঞানে গণিতের এত মূল্য। আসলে এই লেভেলে ট্রায়াল এন্ড এরর পদ্ধতিতে কাজ করাকে বড় বেশি ব্যয়বহুল এবং অপচয় ধরা হয়। বিজ্ঞানীগণ ৯০ শতাংশের বেশি নিশ্চিত না হয়ে সহকর্মী প্রকৌশলীদের বাস্তব সিস্টেম ডেভেলপ করতে বলেননা। বিষয়টি এভাবে ব্যাখ্যা করা যায়ঃ
মনে করা যাক বিজ্ঞানীরা ৫ আবিষ্কার করলেন, ২ এর অস্তিত্ব বিজ্ঞানীদের আগেই জানা তবে ১,৬,৭,৮,৯ কিংবা গুনক “X” সম্পর্কে নিশ্চিত নন।, সুতরাং ৫ যদি সত্য হয় তবে ২ এবং ৫ এর মধ্য এমন কিছু আছে, যদি না থাকে তবে ৫ থাকার কথা নয়। তথা বিজ্ঞানীগণ প্রস্তাব দেন ২ এর সাথে অবশ্যই কিছু একটি আছে তা না হলে ৫ হবেনা এর পর ব্যাপক গবেষণা করে ৩ বের করা হয় এবং সিস্টেম ডেভেলপ (যন্ত্রপাতি) হলে বিষয়টি প্রমাণিত হয় ২+৩=৫।
পুনশ্চঃ
যেখানে বিজ্ঞানীদের আধিক্য অনেক বেশি সেখানে বিজ্ঞানীদের নিজস্ব সমাজ আছে যেমন সামরিক বাহিনী কিংবা সাংবাদিক অথবা ব্যবসায়ীদের নিজস্ব সমাজ আছে। বিজ্ঞান – প্রযুক্তিতে যেহেতু আমরা অনগ্রসর এত অধিক পরিমাণ বিজ্ঞানীদের একসাথে দেখতে আমরা অভ্যস্ত নই। বিজ্ঞানীগণ নিজেদের মধ্য স্বাস্থ্যকর কিংবা অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতায় নামেন যা আসলে ওই সমাজের বাহিরের লোক ততটা বোঝেননা আর আমাদের মত তৃতীয় বিশ্বের সাধারণ মানুষদের এ সম্পর্কে ধারনাই নেই। অনেক গুরুত্বপূর্ন আবিষ্কারের সূতিকাগার ক্যাফেটেরিয়া কিংবা ফুটপাত যেখানে দুজন বিজ্ঞানীর আলাপচারিতায় কিংবা একজনের চিন্তায় হঠাত কোন ব্রেকথ্রোর কথা মাথায় চলে আসে। আনেক নামকরণও এরকম অনানুষ্ঠানিক ভাবে করা হয়, পরে যা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। আসলে বেশীরভাগই এত ভেবে চিন্তে করা হয়না কেননা বিজ্ঞানীদের কাছে নাম নয়, কাজই আসল।
লেখা সরাসরি পোস্ট করার কারণে কয়েক জায়গায় ভুল ঠিক করা যায়নি এবং এডিট এর অপশন নেইঃ
জানাটা অর্ধেক রয়ে যায় “রয়ে” হবে ।
পারেনা কিন্তু বোসন কণা পারেনা। এখানে “বোসন কণা পারে” হবে।
কার্ক বাংলায় ট্রান্সলিটারেশন “কোয়ার্ক”।
চমৎকার লেখা (Y) এ ধরনের লেখা আরও আশা করছি।
একটানে পড়ে ফেললাম পুরো লেখাটা। খুবই সুন্দর সহজ ভাষায় লিখেছেন। অনেক ধন্যবাদ লেখককে। 🙂
যারা বিজ্ঞান নিয়ে ভাবতে চান, কথা বলতে চান, তাদের কাছে একটা ছোট্ট অনুরোধ, আমরা এই কণাটিকে অযথা ঈশ্বর কণা না বলি, ঈশ্বরের সাথে ত এই কণার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই, আছে মহাবিশ্বের সাথে, পদার্থবিজ্ঞানের সাথে। কণাটির নাম আমরা “হিগস-বোসন কণা” বলে আলোচনা চালিয়ে যেতে পারি।
চমৎকার লেখা। পড়তে একটু দেরি হয়ে গেল। আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসে ‘হিগ্স বোসন’ এর অনুরূপ কণা (মনে হচ্ছে বেশ রক্ষণশীল অবস্থান নিয়েছেন বিজ্ঞানীরা) আবিষ্কারের ঘোষণা দেয়ার পর বেশ কয়েকজন আমেরিকান আর ইউরোপিয়ান বিজ্ঞানীর সাথে বসে আনন্দপ্রকাশে শরিক হলাম ইস্তাম্বুলের এক কনফারেন্সে এসে। হাজার হোক – ‘বোসন’ তো আমাদেরই সত্যেন বসুর নাম ধারণ করে আছে। সুযোগ পেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ছোট্ট একটা ঘরে বসে সত্যেন বসু কীভাবে কাজ করেছিলেন সেটাও প্রচার করলাম। বেশ অবাক হলাম এই দেখে যে অনেক ইউরোপিয়ান ফিজিক্স টিচার মনে করতেন বোসও আইনস্টাইনের মত কোন একজন ইউরোপিয়ান! তবে আমাদের সাথে এঁদের একটা পার্থক্য দেখলাম – ‘হিগ্স’ কে বা কোন্ দেশের মানুষ তা নিয়ে খুব একটা মাথাব্যথা নেই কারো। কিন্তু ‘হিগ্স বোসন’ সস্পর্কে আগ্রহ আছে। আমরা যারা বাংলায় বিজ্ঞান আলোচনা করছি – বার বার ‘ঈশ্বর কণা’ ‘ঈশ্বর কণা’ বলছি কেন? হিগ্স বোসন বললেই হয়। কারণ বাংলাদেশের সংবাদপত্রে যে খানিকটা উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করলাম – তাতে পাঠকের মন্তব্যগুলো পড়লে – ‘হিগ্স বোসন’ আবিষ্কারের আনন্দ বেশিক্ষণ থাকে না।
@ভবঘুরে,ভাইজান,জব্বর খবর আরেকখান আছে। ল্যাংটা শিবের নাচন নাকি বিগ ব্যাং 😀 । আর কেউ কেউ কইল..বিষ্ণু চক্র ঘুরাইলো..হেইডা নাকি বিগ ব্যাং :lotpot: । কোনটা ঠিক আফনের টা না মুই কইলাম হেইডা।হাইস্যা গড়াগড়ি দিবার চায় এ শরীরডারে…. :rotfl:
সার্ন যতই LHC দিয়ে প্রটোন কনিকার মধ্যে সংঘর্ষ ঘটিয়ে ভরবাহী হিগস বোসন কনিকা তৈরী করুক না কেন এ সম্পর্কে সেই ১৪০০ বছর আগেই কিতাবে বিস্তারিত বর্ণনা করা আছে। যা নিয়ে দেখলাম কিছু ধার্মিক লোক মাতামাতি করছে। তাদের দাবী এভাবেই বিজ্ঞানীরা আবারও প্রমান করলেন ঈশ্বর আছে ও কোরান হলো সেই ঈশ্বরের কিতাব আর হিগস বোসন কনিকার খবর সেই ঈশ্বর চুপে চুপে মোহাম্মদের কানে বলে গেছে। সুতরাং বিজ্ঞানীরা কি এমন তৈরী করলেন বা প্রমান করলেন, বা এসব করে কি এমন কৃতিত্ব দেখালেন সেটাই বুঝলাম না।
@ভবঘুরে,
এখানে দেখুন একটি হিন্দু সাইট থেকে-
রামায়ণ, মহাভারত, বেদ, উপনিষদ, গীতা যাদের আধার, জগতের সেই সর্বাপেক্ষা উদার, পরধর্মসহিষ্ণু, নিরীহ হিন্দুরা সভ্যতার হাজার হাজার বছর ধরে নিজেদের সাংস্কৃতিক স্বকীয়তা ধরে রেখেছে শুধু সর্বমানবেই নয়, পশুপক্ষী, কীটপতঙ্গ এমনকি কীটানুকীট, ধূলিকণায় দিব্যভাব উপলব্ধি করে যা বিজ্ঞানের বোসন (বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু আবিস্কৃত ও তাঁর নামে নামাঙ্কিত) কণা বা ঈশ্বর কণা আজ প্রমাণ দিচ্ছে।
Church & Ministry ব্লগ থেকে-
Scientists have narrowed down the mystery of creation. All that seems to be necessary is some hydrogen gas at the beginning. …And yet there’s the beguiling problem: Where did the original hydrogen come from?
The answer is found in The Bible That is where the REAL God Particle can be found.
প্রথম আলো থেকে-
[img]http://i1088.photobucket.com/albums/i332/malik1956/untitled1.jpg[/img]
[img]http://i1088.photobucket.com/albums/i332/malik1956/untitled3.jpg[/img]
@অপার্থিব, আপনার লেখাটি সরল ভাষায় দারুণ।খুব ভালো লাগল। এ বিষয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে পড়ছি।আপনার সাথে আমি একমত..
পদার্থবিদ্যার একজন (অপদার্থ) ছাত্র হয়েও মাঝে মাঝে অনেক বিষয় বুঝি না। একসময় ডঃ প্রদীপ দেবের কাছে যেতাম…..উনি আমার মতো অপদার্থকে বোঝানোর নিষ্ফল চেষ্টা করে যেতেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। মৌলিক পদার্থ নিয়ে লিখতে গিয়ে কিছু টুকলি মেরে দিলাম…..আর ভরপ্রাপ্ত হলাম (মানে অনেক কিছু জানার ভান ধরলাম!)
“বস্তুর ভর এই ব্রহ্মাণ্ডে প্রায় সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। কণার ভর না থাকলে তা ছোটে আলোর বেগে। জোট বাঁধে না কারও সঙ্গে। অথচ এই ব্রহ্মাণ্ড জুড়ে বস্তুর পাহাড়। গ্যালাক্সি, গ্রহ-নক্ষত্র। পৃথিবী নামে এক গ্রহে আবার নদী-নালা গাছপালা। এবং মানুষ। সবই বস্তু। কণার ভর না থাকলে, থাকে না এ সব কিছুই। পদার্থের ভর, সুতরাং, অনেক কিছুর সঙ্গে মানুষেরও অস্তিত্বের মূলে। ভর-রহস্যের সমাধান মানে, মানুষের অস্তিত্ব ব্যাখ্যা। এত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা দিতে পারে যে কণা, তার নাম তাই সংবাদ মাধ্যমে হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘গড পার্টিকল’। ‘ঈশ্বর কণা’।
‘ঈশ্বর কণা’ গুরুত্বপূর্ণ আরও এক কারণে। ব্রহ্মাণ্ড ব্যাখ্যায় বিজ্ঞানীদের সব চেয়ে সফল তত্ত্বের নাম স্ট্যান্ডার্ড মডেল। ওই তত্ত্বে বলা হয়েছে যতগুলি কণার কথা, তাদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি কেবল ওই ‘ঈশ্বর কণা’। অথচ, তা কি না অন্য কণাদের ভর জোগায়। এ হেন কণার খোঁজ না মিললে স্ট্যান্ডার্ড মডেল যেন মুণ্ডহীন ধড়। অনাবিষ্কৃত কণাটির গুরুত্ব সাধারণ মানুষকে বোঝাতে ১৯৯৩ সালে কলম ধরেছেন লিও লেডারম্যান। বইয়ের নাম কী হবে? লেডারম্যান বললেন, “নাম হোক হিগস বোসন।” ঘোর আপত্তি প্রকাশকের। বললেন।, “এমন নামের বই বিক্রি হবে না। ভাবা হোক জুতসই কোনও নাম।” বিরক্ত লেডারম্যান বললেন, “তা হলে নাম থাক গডড্যাম পার্টিক্যাল।” অর্থাৎ, দূর-ছাই কণা। প্রকাশক একটু ছেঁটে নিলেন সেটা। বইয়ের নাম হল ‘দ্য গড পার্টিকল’। নামের মধ্যে ঈশ্বর! বই বিক্রি হল হু হু করে। ”
”এ হেন কণার খোঁজে সার্ন গবেষণাগারের লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডারে চার বছর ধরে চলেছে খোঁজ। সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে আলোর বেগে ধাবমান বিপরীতমুখী প্রোটন কণা। মুখোমুখি ঠোকাঠুকিতে ধ্বংস হয়েছে তারা। মিলেছে অকল্পনীয় পরিমাণ ‘এনার্জি’। সৃষ্টি হয়েছে বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড জন্মের এক সেকেন্ডের দশ লক্ষ ভাগের এক ভাগ সময়ের পরের অবস্থা। আর সংঘর্ষের বিপুল এনার্জি থেকে আলবার্ট আইনস্টাইন-আবিষ্কৃত নিয়ম অনুযায়ী তৈরি হয়েছে কোটি কোটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা। যারা আবার জন্মের পর সেকেন্ডের কোটি কোটি ভাগের কম সময়ের মধ্যেই ধ্বংস হয়ে জন্ম দিয়েছে আরও নতুন কণার। বিজ্ঞানের হিসেব বলছে, প্রোটন-প্রোটন সংঘর্ষের এনার্জি থেকে জন্মাবে পদার্থের ভর ব্যাখ্যাকারী ‘ঈশ্বর কণা’।
পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করে জানালেন, নতুন যে কণাটির অস্তিত্বের ইঙ্গিত ওঁরা পেয়েছেন, তার ভর ১৩৩টি প্রোটন কণার মতো। এ রকমই কিছু পাওয়া যাবে বলে অনুমান ছিল। অথচ যা পাওয়া গেল, তা কিন্তু নতুনই। অনুমানের বাইরে নয়, অথচ নতুন! কণা-পদার্থবিদ্যার জটিলতা এমনই।”
”এখন বন্ধুবান্ধবরা ফোন করে জানতে চাইছেন, “কিছু একটা পাওয়া তো গেল। এতে লাভ কী?” নতুন কণা দিয়ে কি তৈরি হবে কোনও যন্ত্র? সেই যন্ত্র কি রাতারাতি পাল্টে দেবে দুনিয়া? যাঁরা ফোন করছেন তাঁদের বলছি, না ভাই! সার্ন-এর খবরে সব্জি বাজারে দরদস্তুর এক চুলও নড়বে না। সাধারণ মানুষের দোষ নেই। বিজ্ঞানের খুঁটিনাটি তাঁদের বোঝার কথা নয়। জীবনযাপনে আরাম-বিরাম নিয়ে তাঁদের কারবার। সার্ন-এর আবিষ্কার থেকে কালই কোনও নতুন যন্ত্র তৈরি হবে না, এ কথা জানিয়েও বলছি, বিজ্ঞানে আবিষ্কার সরাসরি দৈনন্দিন জীবনের লাভের কথা চিন্তা করে না। কিন্তু লাভটা সময়ের সঙ্গে এসেই যায়।”
পরিশেষে, সবাইকে ধন্যবাদ।
@অসীম,
খুব প্রাঞ্জল ভাষায় হিগ্স্ বোসনের মূল ধারণাটা প্রকাশ করতে পেরেছেন। বিজ্ঞানের কথা কাব্যিক ভাবে ব্যক্ত করা একটা শিল্প। আমি খুব স্বচ্ছন্দ নই এতে। এটাই আমি আশা করছিলাম কেউ করবেন মন্তব্যে। আপনি সেই আশা পূরণ করলেন। আশা করি বিজ্ঞান নিয়ে আরো লিখবেন। মুক্তমনায় মতুন হলে স্বাগতম।
যারা লাভের কথা বলছে তাদেরকে পিথাগোরাসের সেই ছাত্রের মত চারঅানা পয়সা দিয়ে ছেড়ে দিন।
অনেক কিছুই মাথা অনেক উপর দিয়ে গিয়েছে যদিও, তার পরেও লেখকের জন্যে
(C) (C) (C)
মুক্তমনায় যাদের লেখা আমি সবসময় মনযোগ দিয়ে পড় তাদের মধ্যে অপার্থিব একজন। বিশেষ করে ওনার দর্শন নিয়ে লেখাগুলো। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে উনি নিদারুন কৃপন। লেখা দিতে ওনার বিরাট আপত্তি। এত চমৎকার লিখতে পারলে আমি অন্তত প্রত্যেকদিন লিখতাম। অসাধারন লেখাটার জন্য ধন্যবাদ।
@বন্যা আপা,
কারা যেন শুনেছিলাম “কাঠগড়ায় বিবর্তন” নামে একটা বই বের করার চিন্তা ভাবনা করছে। :)) :))
@ অপার্থিব, আপনাকে লেখাটার জন্য অনেক ধন্যবাদ। (Y) লেখাটার জন্য মুক্তমনার দিকে হা করে দেখে ছিলাম। আরেকটু ভেঙ্গে লেখলে ভালো হতো। আফটার অল, আমার মতোন ফিসিক্স অসচেতন পাবলিক গো কামে আসতো। ভবিষ্যতে মুক্তমনা স্কলারদের এ নিয়ে বিশদ আলোচনা আশা করছি। ভালো থাকবেন। (Y) (F)
ফিজিক্স খুব ভালোমত না পড়লে ঠিকমত বোঝা যাবে না তা তো ঠিকই, তাও খানিক সরলমত করে বোঝানো গেলে সেটুকুই আমাদের জন্য লাভ। আপনি আরেকটু বড় পরিসরে লিখলে ভাল হত, এখন খানিক চাপাচপুপা হয়ে গেছে মনে হচ্ছে। তাও, ধন্যবাদ। 🙂
অসাধারন লিখেছেন। সবার সাথে শেয়ার করলাম। (Y) (Y) (Y)
প্রায় বিনা খাটুনিতে এমন সুন্দর লেখা পেয়ে গেলাম। অনেক ধন্যবাদ অপার্থিব (C)
@ রাজেশ তালুকদার,
বেচারা বিজ্ঞানীরা কৌতুকচ্ছলে ঈশ্বর কণা বলে বড় বিপাকে পড়ে গেছেন। এ নিয়ে ঈশ্বরের মন্ত্রনালয়েও কানাকানি চলছে, এখানে দেখুন-
একেবারে সহমত। অনেকগুলো বিজ্ঞানীর সারাজীবনের সাধনা লেগে যায় হিগস-বোসন কণা প্রয়োজন বুঝতে, আবিষ্কার করতে। আর মাত্র দশ মিনিট ব্যয় করে কিভাবে কেউ আশা করতে পারে এই বিষয়কে বোঝার জন্য?
গতকাল থেকে এখানে খোঁজাখুঁজি করছি হিগস বোসন নিয়ে কিছু একটা পাবার আশায়। অষ্টম বারের চেষ্টায় সফল হলাম এই গভীর রাতে। তবে রাত জাগাটা সার্থক হল লেখাটা পড়ার পরে। অনেক ধন্যবাদ লেখক অপার্থিব ও মুক্তমনাকে।
আমার মাঝে মাঝেই মন হয় এই হার্ডকোর বিজ্ঞানীরা এইসব গড-সংক্রান্ত নাম প্রস্তাব করার ব্যাপারে আরেকটু সাবধান হলেই পারেন। ‘প্রকাশক রাজি হয়নি, কী করবো’ টাইপের অজুহাত আর কত? এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারের পর মূল বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা বাদ দিয়ে গড নিয়ে ফালতু এক মিডিয়া সার্কাস শুরু হয়ে গেল। কোন বিজ্ঞানী যদি নিজে এই সব ‘বি এস’ এ বিশ্বাস করে এসব নাম দেন তাও না হয় বুঝি, তার বিশ্বাস নিয়ে তর্ক বিতর্ক করা যায়, তার উপর এক হাত নিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু নিজে বিশ্বাস না করেও প্রকাশকের কথায় কান ধরে উঠবোস করে এসব নাম দেওয়ার ফলে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশী হয়। আজকের পৃথিবীটা এমনিতেই এত পোলারাইজড, সেখানে ধর্মব্যবসায়ীদের হাতে এ ধরণের অস্ত্র তুলে দেওয়ার কোন মানে হয় না।
@বন্যা আহমেদ,
আমি একটু অন্যভাবে দেখি ব্যাপারটা। লেডারম্যান “ঈশ্বর কণা” র পরিবর্তে “হিগ্স্ কণা” দিয়ে বইয়ের শিরোনাম দিলে বইএর কাটতি অনেক কম হত। এই ধরণের হার্ড বিজ্ঞানের বই যে এত লোক কিনে পড়েছে সেটাই এক লাভ। অনেকে এই বই পড়ে ধার্মিকের পরিবর্তে আরো বিজ্ঞান সচেতন হয়েছে। তাদের অনেকের নজর হয়ত এড়িয়ে যেত “হিগ্স্ কণা” বইয়ের শিরোনামে থাকলে। কিছু ক্ষতি হলেও লাভের পরিমাণটাই বেশি বলে আমার অনুমান। ভাল কাজের জন্য বিজ্ঞাপনী গিমিক প্রয়োজন, এটা এক বাস্তবতা। এই ব্লগেও তো অনেক বিজ্ঞান লেখার শিরোনামই পাঠককে আকৃষ্ট করে প্রথমে, তারপর পড়ার পর পাঠক লাভবান হয় সেটাও সত্য। আর আমার ধারণা ধর্মান্ধরা সব সময়েই বিজ্ঞানের আবিস্কারের সাথে তাদের ধর্মকে জড়াতে চাইবে, হকিং, লেডারম্যান এর এই ধরণের শব্দ চয়ন না করলেও। আরকটা পার্শ্ব লাভ হল বিনোদন্মূলক। ধর্মান্ধরা ঈশ্বরের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে চেঁচামেচির পর যখন আসল ব্যাপারটা জানবে (যে হকিং, লেডারম্যান আস্তিক নন, আর তারা ঈশ্বর বলতে তাদের ঈশ্বর বোঝাননি, বিজ্ঞানের এই ধারণাগুলির সাথে তদের ঈশ্বরের কোন সম্পর্ক নেই) তখন তাদের হতাশাটা দেখার মত ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। ওভারল, বিজ্ঞানেরই জয় হয়, ধর্মের নয়। তবে তোমার কথাও ফেলে দেয়ার মত নয়।
একদম ঠিক বন্যাপা। যেসব বিজ্ঞানী এখনও এই ফালতু নামটা (যে নামটা আমি ব্যবহারও করতে চাই না) ব্যবহার করছেন তাদেরকে আমি সহ্য করতে পারি না। তবে আমার মনে হয় এখন কেউ করছেন না। সার্নের পুরো কনফারেন্সে বিজ্ঞানী ও সাংবাদিক সবাই এই নামটা সচেতনভাবে এড়িয়ে চলেছেন। এমনকি সাংবাদিকদের নাকি বিজ্ঞানী আগেই বলে দিয়েছিলেন এই নাম উচ্চারণ না করতে।
হিগসের এতো জনপ্রিয়তার ৯০% কারণ এই নাম, অস্বীকার করব না। কিন্তু সেক্ষেত্রে এই জনপ্রিয়তা আস্তাকুঁড়ে ছুড়ে ফেলতে আমার কোন আপত্তি নেই। জনপ্রিয়তার চেয়ে একাগ্রতা এবং সততা অনেক বেশি জরুরী।
@শিক্ষানবিস,
শুধু জনপ্রিয়তা নয়। কোথায় যেন সেদিন পড়লাম, এই নামকরণের (ঈশ্বর কণা) পেছনে নাকি গবেষণায় সরকারী ফান্ড পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে এমন একটা ধারনা কাজ করেছিল। আমার আগে একবার মনে হয়েছিল স্টিফেন জে গুল্ডের ‘নন ওভারল্যাপিং ম্যেজিস্ট্রিয়া’ ধারণা উদ্ভাবনের পেছনেও ফান্ডের (পাওয়ার আশা বা না পাওয়ার আশঙ্কা) একটা কার্যকরী প্রভাব ছিল।
@শিক্ষানবিস,
এখানে – Stop calling it “The God Particle!”
@বন্যা আহমেদ, একটু অন্যরকম ভাবলে ব্যাপারটা মোটামুটি ঠিকই অাছে! কারণ বহুল প্রচারিত, মান্যতাপ্রাপ্ত, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর একটি কণারূপে পরিচিতি পেলেন! যার না অাছে চেতনা না অাছে ভয় দেখানোর শক্তি ! তবে কিছু প্রচারলোভী অসৎ মিডিয়া বা ধার্মিক বক নেতা “কণা” শব্দটি উচ্চারণ করছেনা। এব্যাপারে অামাদের কমিউনিস্ট মুখপত্র “গণশক্তি” সঠিক প্রতিবেদন দিয়েছে।” ঈশ্বর নয় কণা পাওয়া গেছে”
(Y)
দারুন লাগলো লেখাটা। আমি সামান্য বিজ্ঞান জানা মানুষ। আপনার লেখায় ব্যাপারটা ভালোভাবে ধরতে পারলাম মনে হয়।
দারুন লেখেছেন অপার্থিব।
অবশ্য হিগ্স্ কণা সম্পর্কে আরেকটু আলোচনার চেষ্টা করতে পারতেন।
মুক্ত-মনার পাঠক হবার পর আমার দৃষ্টি-ভঙ্গিতে পরিবর্তন আসে। সব কিছু নতুন করে ভাবতে শিখি। ধর্ম -বিশ্বাসের অসারতা দিন – দিন চোখের সামনে ধরা পড়তে লাগলো । মুক্ত-মনা আমাকে দিয়েছে একটা মুক্ত মন ও মনের আকাশ। যেখানে কোন ভয় নেই, আছে- অনাবিল শান্তি। সে জন্য মুক্ত-মনার সৃষ্টিশীল লেখকদের কাছে আমি ঋণী। মুক্ত-মনা কে এখন আমি অনেক ভালোবাসি। হে মুক্ত-মনা, তোমার এই সত্য উন্মোচোনের যাত্রাই একজন যাত্রী করতে পেরে আমি যে শান্তি পেয়েছি, তা কোন ঈশ্বর/আল্লাহ (তথাকথিত) কর্তৃক নির্মিত ( যার কোন অস্তিত্ত নেই) স্বর্গ/বেহেস্তে পাওয়া যাবে না।
এই মুহুর্তে ভারতীয় শিল্পী “নচিকেতা” এর একটা জনপ্রিয় গানের কয়েকটা লাইন মনে পড়ল- তাই লাইন দুইটা নিচে লিখে দিলামঃ
” এক দিন ঝড় থেমে যাবে,
পৃথিবী আবার শান্ত হবে,
—————————
জীর্ন মতবাদ সব ইতিহাস হবে!!!
পৃথিবী আবার শান্ত হবে ।।
আপনাদের ( সত্যের সৈনিক) ভালোবাসার আশায় রইলাম !!!
@সনেট,
আপনার মত পাঠকদের চমৎকার সব মন্তব্যই আমাদের অনুপ্রেরণা। মুক্তমনা যে আপনার কাজে আসছে আর ভাল লাগছে সেটা জেনে আমরাও আনন্দিত। মুক্তমনায় নিয়মিত আসুন, লিখুন, আলোচনায় অংশ নিন।
@সনেট, কোরাণে বর্ণিত বেহেস্ত যে নেই, এব্যাপারে দুই শতভাগ গ্যারান্টি দিলাম।
যখন এ আবিস্কারে বিশ্ববাসীগন এবিষয়ে জানবার জন্য অত্যন্ত উৎসাহ বোধ করতেছিল ঠিক সেই সময়েই আপনি এপ্রবন্ধটি উপহার দিয়ে আমাদের তৃষ্নাকে মিটিয়েছেন।
এত বড় উন্নত পদার্থবিজ্ঞানের বিষয় পুরাপুরি বুঝতে সক্ষম না হলেও,অন্ততঃ কিছুটা হলেও তো আঁচ করতে পারা গিয়েছে।
তাছাড়া গডছ পার্টিকেল নাম করন করে উচুতর বিজ্ঞান এবং ধর্মের সৃষ্টিকর্তা একই জয়গায় দুজনে কী ভাবে মিলিত হলেন-এটাও তো একটা বিরাট পশ্ন ছিল।
ধন্যবাদ আপনার লেখার জন্য।
:-Y সারাজীবন শুনে আসলাম সাধারণের পক্ষে ঈশ্বর কে বোঝা সম্ভব না। আর অহন শুন্তেছি ঈশ্বর তো দূর কি বাত হেয়, ঈশ্বর কণা বুঝতে নাকি পিয়াইজ রসুন (পিএইচডি) ডেঙ্গাই আইতে হবে। 😛
ভাল লাগলো…
ঈশ্বর কণা রূপে থাকলে অামার অাপত্তি নেই! কারোরই থাকার কথা নয়।
হিগস কণা সম্পর্কে গভীর ধারণা হয়তোবা পাওয়া যাবেনা কিন্তু যথেষ্টই সাবলীল আলোচনা করেছেন তাত্ত্বিক পদার্থবিদ ম্যাট স্ট্রাস্লার। তার ওয়েবসাইটের লিঙ্কঃ http://profmattstrassler.com
হিগস-বোসন কণা নিয়ে চারিদিকে হই-চই। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য বিভিন্ন সাইটে হন্যে হয়ে খুঁজছিলাম। কিন্তু কোথাও বোঝার মতো ভাষায় কোন লেখা পাচ্ছিলাম না। শেষমেষ একটা আশা ছিল মুক্তমনার উপর। সত্যিই সেটা পূরণ হলো। ধন্যবাদ হে মুক্ত মনা। আর লেখককে ধন্যবাদ দিয়ে খাটো করতে চাইনে। সুন্দর লিখেছেন আপনি…প্রবল আশা নিয়ে আছি ….এ সম্পর্কে আরো লিখবেন।
লেখার জন্য ধন্যবাদ। জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানে পড়ছি, কিন্তু কোয়ান্টাম ক্ষেত্র তত্ত্ব নিয়ে আমার এখনও কোন কোর্স করা হয়নি, ভবিষ্যতে হবে বলেও মনে হয় না। নিজে থেকেই পড়তে হবে আর কি! তবে হিগসের মৌলিক বিষয়টা বোঝা যায় বেশ সহজেই, যা আপনি ভারী মানুষের চলাফেরায় অসুবিধার উপমা দিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন। ব্যাপারটা আসলেই তাই: আমি নিজের ব্লগে এবং ফেসবুকে একটা একেবারে প্রাথমিক পরিচিতি লিখে রেখেছি যাতে যিনি একেবারেই জানেন না তিনি কিছুটা আন্দাজ করতে পারেন। লিংকটা এখানে দিলাম:
http://subarnarekha.com/2012/07/05/higgs-particle/
হিগস কণার শক্তি আলোর গতির এককে আনুমানিক ১২৫ গিগা ইলেকট্রন ভোল্ট। গত ২ বছরের প্রোটন-প্রোটন সংঘর্ষে অবশেষে এমন শক্তির কিছু একটা পাওয়া গেছে যা নিজের ছবিতে খুব স্পষ্ট। ছবিতে ১২৬.৫ জিইভি-তে একটা টিলা দেখা যাচ্ছে যার কারণ হতে পারে কেবলই হিগস কণা।
[img]http://atlas.ch/news/images/stories/1-plot.jpg[/img]
@শিক্ষানবিস,
তোমার সুবর্ণরেখার উজ্জ্বল রশ্মি দেখে অভিভূত হলাম। খুব সহজ ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ কিছু ব্যাপার তুলে ধরেছ।
বিশেষ করে মেঝেতে জোরে গ্লাস ভাঙ্গার উপমাটা প্রোটন প্রোটন সংঘর্ষের ক্ষেত্রে খুবই দারুণ হয়েছে।
তোমার থিসিসসের সাফল্য কামনা করছি। আশা করি থিসিস সাবমিশনের পরে তোমাকে নিয়মিতভাবে পাব…
তোমার পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে লেখাগুলোর দিকে আমি অধীর আগ্রহে তাকিয়ে থাকি…।
বিজ্ঞানিরা ঠিক কিভাবে নিশ্চিত ছিলেন যে, এই জাতীয় কোন কনা আছে?? সেই ব্যাপারটা কি একটু ক্লিয়ার করবেন??
আর একটু বিস্তারিত লিখলে বুঝতে আমার জন্য সহজ হতো।
ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম বই এ এই বিষয়ে অল্প আছে।
@আসরাফ,
আসলে বিষয়টা খুবই জটিল। জটিল বিষয়কে সহজ ভাষায় ব্যক্ত করার ক্ষমতা অনেক নামকরা বিজ্ঞানীদেরই নেই, আমি তো কোন ছার। আমার লেখাটা মূলত আলোচনা ও আগ্রহ উস্কিয়ে দেয়ার জন্য। অভিজিত অনেক বৈজ্ঞানিক বিষয় নিয়ে সহজ ভাষায় বিস্তারিত লেখায় সিদ্ধহস্ত। আশা করি সে এ নিয়ে একটা বিশদ লেখা দেবে তার চিরাচরিত শৈলীতে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
‘ঈশ্বর কনা’ নিয়ে জনপ্রিয় বিজ্ঞান রচনার ক্ষেত্রে বাংলাভাষার সেরা ব্লগে একটি লেখা খুব করে প্রত্যাশা করছিলাম। আপনার লেখা সেই প্রত্যাশা মিটিয়েছে, যদিও লেখাটার কলেবর আরো একটু বড় হতে পারত! যাহোক, আপনি কষ্ট করে পাঠকদের জন্য যে লিখেছেন, এতেই বিরাট ধন্যবাদ প্রাপ্য আপনার!
‘অসনাক্তৃত’ শব্দটি বলতে কি বোঝানো হচ্ছে?
পুরো বুঝতে পারিনি! ঈশ্বর কণার অস্তিত্ব নিয়ে সব ধর্মের বিজ্ঞানিরা নিঃসন্দেহ হলেও অস্তিত্ব প্রমানের প্রক্রিয়া নিয়ে মতভেদ রয়েছে তাদের মাঝে, এইটাই কি বোঝানো হচ্ছে? উদ্ধৃত লাইনটিকে আগের লাইনের সঙ্গে মিলিয়ে পড়লে এই মানেই তো দাঁড়ায়!
যদি প্রমাণ/অপ্রমাণের প্রক্রিয়া জানা না থাকে, তাহলে কি ধরে নিতে হবে যে, ধারণা অস্পষ্ট? তাহলে হিগস-বোসন কনার অস্তিত্ব প্রমান নিয়ে যেহেতু মতভেদ রয়েছে, তাতে কি বলা যাবে যে, হিগস-বোসনের ধারণাই অস্পষ্ট? আর তাছাড়া, লেখাটির শেষ প্যারাতেই তো আছে যে,
লেখাটির জন্য আবারো ধন্যবাদ, অপার্থিব ভাই!
@কাজি মামুন,
অসনাক্তৃত একটা টাইপো। হবে অসনাক্তকৃত (Unidentified)
না । ঈশ্বর কণার অস্তিত্ব নিয়ে সব ধর্মের বিজ্ঞানিরা নিঃসন্দেহ ছিলেন এটাও ঠিক নয় বা আমিও লিখিনি। আর অস্তিত্ব প্রমানের প্রক্রিয়া নিয়ে মতভেদ রয়েছে তাদের মাঝে এটাও ঠিক না। আমি তার উল্টোটাই বলছি। যে প্রক্রিয়ায় তার অস্তিত্ব প্রমাণ করা যায় সেটাই তো LHC তে অনুসরণ করা হয়েছে।
প্রথম অংশের উত্তর হ্যাঁ। দ্বিতীয় অংশের উত্তর না। হিগস-বোসন কনার অস্তিত্ব প্রমান নিয়ে মতভেদ রয়েছে কোথাও বলি নি। হিগস-বোসনের ধারণা পদার্থবিজ্ঞানীদের কাছে সুস্পষ্ট।
এটা আমার একটা হাইপোথেটিক্যাল উক্তি । বিজ্ঞানীদের মধ্যে ঈশ্বর কণার অস্তিত্ব আছে বা নেই এটা নিয়ে দুই ভাগ নেই। আমি বলতে চেয়েছি, যে ধারণার বস্তু সুস্পষ্ট, যার অস্তিত্ব বা অনস্তিত্ব দুটোই সম্ভব, সেক্ষেত্রে যতক্ষণ তার অস্তিত্ব বা অনস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যা না ততক্ষণ তার অস্তিত্ব বা অনস্তিত্বে বিশ্বাস করা। কোনটাই অযৌক্তিক নয়। কিন্তু বিজ্ঞানীদের কাছে বিশ্বাস আর অবিশ্বাস কোনটারই প্রয়োজন নেই।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য আর টাইপো ধরিয়ে দেয়ার জন্য
@অপার্থিব,
তাহলে আপনার ‘ঈশ্বর কণার একটা সুস্পষ্ট ধারণা আছে যেটা সব ধর্মের পদার্থবিজ্ঞানীদের কাছে একই।’ -এই কথাটি কি বোঝাচ্ছে?
তাহলে আপনার বর্নিত ‘ঈশ্বর কণা অস্তিত্ব প্রমাণের বা অপ্রমাণের প্রক্রিয়া নিয়েও একমত সব বিজ্ঞানীরা।’-এই কথাটি কি নির্দেশ করছে?
অপার্থিব ভাই, আমি বুঝতে চাইছি। আপনার লেখার বিষয়বস্তু নিয়ে তর্ক করা আমার অভিপ্রায় নয়, আর তা আমার অসাধ্যও বটে, যেহেতু আমি বিজ্ঞানের ছাত্র নই! দয়া করে ভুল বুঝবেন না!
@অপার্থিব ভাই,
আমার উপরের প্রশ্নটি ভুল ছিল, যেহেতু আমার মনে হয়েছিল ‘একমত নন’ লিখেছেন! এই অনাকাংখিত ভুলের জন্য যারপরনাই দুঃখিত! আসলে আমার প্রশ্নটা হবে, যদি ‘ঈশ্বর কণা অস্তিত্ব প্রমাণের বা অপ্রমাণের প্রক্রিয়া নিয়েও একমত সব বিজ্ঞানীরা।’-এই কথাটি সত্য হয়, তাহলে কি করে ‘ঈশ্বর কণার অস্তিত্ব নিয়ে সব ধর্মের বিজ্ঞানিরা নিঃসন্দেহ ছিলেন এটাও ঠিক নয়’ – এই কথাটি ঠিক হয়?
@কাজি মামুন,
আসলে “আর প্রমাণের বা অপ্রমাণের প্রক্রিয়া নিয়েও একমত নন তারা” কথাটা বলছিলাম ঈশ্বরের ব্যাপারে। কারণ ইশ্বরের ধারণা একেক ধর্মের বিজ্ঞানীদের (বিশ্বাসী বিজ্ঞানীদের মধ্যে) কাছে একে রকম। এবং বিজ্ঞানের কোন পদ্ধতির দ্বারাই তাদের স্ব স্ব ইশ্বরের প্রমাণের কোন পরীক্ষা তাদের জানা নেই। আর অবিশ্বাসী বিজ্ঞানীদের তো ইশ্বর নিয়ে কোন ধারণাই নেই। ইশ্বর কণার ব্যাপারে উল্টোটা ঠিক, মানে একমত তারা (প্রক্রিয়া নিয়ে)। প্রক্রিয়া মানে হল যে পরীক্ষার যার দ্বারা ইশ্বর কণার অস্তিত্বের বা অনস্তিত্বের প্রমাণ হয় সেই পরীক্ষা। LHC এর দুই বিজ্ঞানী দলই সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই ইশ্বর কণার অস্তিত্ব প্রমাণ করেছেন।
ঈশ্বর কণার অস্তিত্ব নিয়ে সব ধর্মের বিজ্ঞানীরা নিঃসন্দেহ ছিলেন এটাও ঠিক নয় বলার কারণ হল ধারণা সুস্পষ্ট হলেও আসলে তার অস্তিত্ব আছে কিনা সেটা পরীক্ষার দ্বারা যাচাই না করা পর্যন্ত নিঃসন্দেহ হওয়া যায়না। এখন বলা যায় তারা মোটামুটিভাবে নিঃসন্দেহ।
এরকম একটা লেখাই চাচ্ছিলাম 🙂 হিগস বোসন সত্যিকার অর্থে বোঝা আমার কম্ম নয়…আমি শুধু খুশী যে বিজ্ঞানীরা শেষ পর্যন্ত একে খুজে পেয়েছেন 🙂
দারুণ লিখেছেন। সময় উপযোগি লেখা। এই কণা আবিষ্কারের পর থেকেই মনে মনে আশা করছিলাম কেউ একজন এই বিষয়ে লিখুক। আপনি সেই আশা পুরন করলেন। ৪০ বছরের অধিক পরিশ্রম ও কাড়ি কাড়ি টাকার বিনিময়ে এক কণা আবিষ্কার ঈশ্বর বিশ্বাসীদের নড়ে চড়ে বসার সুযোগ দিল। এখন অপেক্ষার পালা ধর্মবাদীরা কি বলেন তা দেখার। কিছুদিনের মধ্যে তারা নিশ্চই এই দাবি করে বসবেন- এই কণা আবিষ্কারের কথা তো আমাদের পবিত্র বইতে অনেক আগেই বলা আছে। বিজ্ঞানীরা উক্ত বই ঘেটে রাতের অন্ধকারে চুরি করে সেই কথা নিজেদের কৃতিত্ব হিসাবে প্রচার করছে মাত্র। 🙂
মিছেমিছি এত গুলো টাকা জলাঞ্জলি!
@রাজেশ তালুকদার,
তবে আমার মনে হয় ঈশ্বরবাদীদের এই সব ভন্ডামি বেশি দিন টিকবে না। ইন্টারনেট এর কল্যাণে মানুষ এখন আগের থেকে অনেক বেশি সচেতন।
ধন্যবাদ ঈশ্বর কনা সম্পর্কে ধারনা দেবার জন্য। ড. রিচার্ড ডকিন্স বলেছেন হিগ্স্ কনাকে ঈশ্বর কনা না বলাই ভালো। এতে অনেকের মধ্যে ঈশ্বর সম্পর্কে ভুল ধারনা তৈরি হয়।
@মইনুল মোহাম্মদ,
সহমত।
অত্যন্ত সময়োপযোগী লেখা। ঠিক যখনই ভাবছিলাম এই হিগস নিয়ে মুক্তমনায় কারো না কারো লেখা প্রয়োজন, তখনই অপার্থিবের চমৎকার লেখাটি এসে আমাদের জ্ঞানের ক্ষুধার কিছুটা হলেও নিবৃত্তি ঘটালো।
ঠিক। আরো একটা কথা মনে হয় বলা দরকার। পদাথবিজ্ঞানী লীয়ন লেডারময়ান নিজেই (ঠাট্টাচ্ছলে হলেও) স্বীকার করেছেন যে, তিনি আসলে তার বইয়ের জন্য গড পার্টিকেলের বদলে গডড্যামন পার্টিকেল (Goddamn Particle) প্রস্তাব করেছিলেন, কারণ সেটাই (তার মতে) ছিল বেশি কাছাকাছি। তার ভাষাতেই –
the publisher wouldn’t let us call it the Goddamn Particle, though that might be a more appropriate title, given its villainous nature and the expense it is causing.
জন হর্গন সায়েন্টিফিক আমেরিকান ব্লগে বলেছেন –
লেখাটির জন্য অপার্থিবকে অনেক ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ,
ধন্যবাদ গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য জুড়ে দেয়ার জন্য। অনেক কিছুই বলা যেত। হূট করে লেখা। গুছিয়ে লেখাও হয় নি। তবে জন হর্গন সম্পর্কে আমার কিছু দ্বিধা আছে। উনি অনেক ব্যাপারে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। লেডারমান ভাল উদ্দেশ্য নিয়েই ঈশ্বর কণা উল্লেখ করেছিলেন। যাতে কংগ্রেস (রক্ষণশীলদের দখলে ছিল যতদূর মনে পড়ে) “গড” এর টোপ গিলে অর্থায়নে রাজী হয়। এর জন্য জন হর্গান লেডারমান এর এই শব্দ চয়নকে “most outrageous” বলাটা একটু বেশী কড়া হয় গেছে বলে মনে হয়।
@অপার্থিব, দাদা এটাকে বারবার শুধু হিগস কণা বলছেন কেন?…হিগস বোসন কণা বলুন…আম্রাই যদি আমাদের উপেক্ষা করি তাহলে কিভাবে হবে আর লেখাটার জন্য ধন্যবাদ
@সাগর,
হ্য্যঁ, হিগ্স্ বোসন বলাটাই বেশি ঠিক। কারণ এটি একটি বোসন কণা (ফার্মিওনের বিপরীতে)। আর বোসনের সাথে সত্যেন্দ্রনাথ বোসের নাম জড়িয়ে আছে।