শরতের ফুটফুটে আকাশ দেখে একমাত্র পাখিদেরই ভালো লাগার কথা। তারা নিশ্চয় উপর থেকে কাশবন দেখে, পাল তোলা নৌকা দেখে, সাঁঝবেলায় বাঁকা হয়ে নিস্তরঙ্গ নদীর ফাঁকা মাঠের মাঝ দিয়ে বয়ে চলা দেখে। বাংলায় ছয়টা ঋতু আছে। আকাশে না উড়তে পারলে এতগুলো ঋতু যে আছে সেটা বুঝতে পারারই কথা নয়। সীসা আর বালির স্তর ভেদ করে ঋতু পরিবর্তনের ছোঁয়া মাটিতে এসে লাগবে, সে আশায় গুঁড়েবালি।
এত কিছু থাকতে শেহরীন আজ হঠাৎ করে কেন যে ঢাকা শহরের ঋতু নিয়ে অনুযোগ করা শুরু করলো সেটাই আঁচ করার চেষ্টা করছে রনিন। কোনো ধরণের কূল-কিনারা না করতে পেরে, ড্রাইভ করতে থাকা রনিন খানিকটা চুপ করে থেকে বলে উঠলো-ঢাকা শহরের মাঝে কাশবন আসবে কোত্থেকে? পাল তোলা নৌকাই বা আসবে কোত্থেকে? তোমার কথা শুনে লোকজনতো হাহামাযা।
-হাহামাযা? হাহামাযা কি?
-হাহামাযা মানে হাসতে হাসতে মারা যাবে।
-এটা কি ধরণের ল্যাঙ্গুয়েজ?
-কেন, সমস্যা কোথায়?
-সমস্যা হচ্ছে, এই তোমাদের মত লোকদের জন্যই বাংলা ভাষার আজ এই দূরবস্থা।
-না, বাংলাভাষার দূরাবস্থা বলে কিছু নেই। আমাদের মত লোকরা কোনো সমস্যা না। এমনকি, তোমাদের মত লোকেরা, যারা এটা কি ধরণের ভাষা না বলে একটা ইংলিশ শব্দ মিশিয়ে বলে এটা কি ধরণের ল্যাঙ্গুয়েজ তারাও ভাষার জন্য সমস্যা না।
-মানে?
-মানে ভাষা তার নিজস্ব গতিতে চলবে। ভাষা সবসময় পরিবর্তনশীল। সেই পরিবর্তনটাকে গ্রহণ করতে হবে।
-তাই বলে, শুদ্ধ মার্জিত ভাষা থাকবে না?
-কোনটা শুদ্ধ আর কোনটা অশুদ্ধ তার মাপকাঠি কি?
-কিন্তু, শ্রুতিমধুরতা বলেতো একটা কথা আছে, না-কি?
-কেউতো শ্রুতিমধুর করে কথা বলতে তোমাকে নিষেধ করেনি। কিন্তু, তাই বলে কেউ যদি তথাকথিত শ্রুতিমধুর ভাষায় না-কথা বলে, তাকে নিষেধ করা হবে কেন?
-অযথা তর্ক করো না রনিন। তুমি তোমার থার্ড ক্লাশ শব্দ ব্যক্তিগত পর্যায়ে রাখলে কারো হয়তো কিছু বলার নেই। কিন্তু, সেটা যদি তুমি গণমাধ্যমে প্রচার করো, তাহলে সেটা দেশের বিশাল একটা অংশকে প্রভাবিত করতে পারে। বিশেষ করে তরুণ সমাজ।
-কিন্তু, কি এমন তোমার সেই ফার্স্ট ক্লাশ ভাষা, যেটা থার্ড ক্লাশ ভাষার দাপটে টিকে উঠতে পারছে না।
-দেখ বিকৃত বাংলা ভাষার প্রয়োগ এবং ব্যবহার কেউই মেনে নেবে না।
-কেউ মেনে নেবে না? তুমি নিশ্চিত।
-হুম্! অন্তত পক্ষে যাদের বিবেক এবং মস্তিস্ক আছে তারা মেনে নেবে না।
-তুমি কি বলতে চাইছো, আমার বিবেক নেই।
-না, আছে।
-তাহলে?
-বাকী অন্যটা নেই।
রনিনকে দেখে বুঝতে পারা যায় না কখন সে রেগে থাকে আর কখন থাকে ফুরফুরে মেজাজে। তবে, তিনগুণ বেড়ে যাওয়া গাড়ীর গতি দেখে অনুমান করতে ভুল হয় না শেহরীনের। কিন্তু, সমস্য হলো, গাড়ির গতি তিনগুণ বাড়িয়েও কোনো লাভ নেই। তিন কদম দূরেই তিন মাইল দীর্ঘ ট্রাফিক জ্যাম।
আর অন্য পাঁচ-দশটা মেয়ে হলে রাগান্বিত মানুষের সাথে হয়তো নরম স্বরেই কথা বলতো। তাকে কিছুটা স্বাভাবিক হবার সময় দিত। কিন্তু, এই মেয়েটা অন্যরকম। রাগান্বিত মানুষের সাথে কথা বলতেই শেহরীনের সবচেয়ে ভালো লাগে। মিনমিন করে সে বলে উঠে- তোমার কি ধারনা এত নামী-দামী সব বিশ্ববিদ্যালয় প্রফেসর অযথাই সতর্ক করছে?
-বিবেকের চেয়ে বড় কোনো প্রফেসর নেই, ঠান্ডা গলায় উত্তর দেয় রনিন।
-তার মানে তুমি বিকৃত বাংলা ভাষার পক্ষে।
-কোনটা বিকৃত আর কোনটা প্রমিত সেটা কেউই ঠিক করতে পারবে না। আজকের বাংলাভাষা আর কয়েক যুগ আগের বাংলা ভাষা এক নয়।
-তাই বলে রেডিও-টিভিতে এই সব চলে না।
-রেডিও টিভি বিনোদনের মাধ্যম, ওগুলো ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র নয়।
-তোমার কথা সঠিক নয়। দেশের রাষ্ট্রীয় রেডিও-টিভিতো ঠিকই প্রমিত ভাষা ব্যবহার করেই চলছে।
-সেটা যারা দেখছে, তাদের এক বিশাল অংশের কখনো প্রমিত ভাষা ব্যবহার করার প্রয়োজন হবে না। আর যাদের প্রমিত ভাষা ব্যবহার করা উচিৎ তারা ও-সব দেখে না।
-কি-সব দেখে না?
-রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
-এমন ভাবে বলছো ও-সব দেখে না, মনে হচ্ছে ওগুলো কোনো নিষিদ্ধ দুষ্টু ছবি।
-দুষ্টু ছবি আবার কি জিনিস? ওগুলো নিষিদ্ধ না হলে বিশিষ্ট কিছুও নয়। শিষ্টতো নয়ই, মিষ্ট হওয়াতো দূরে থাক।
-বাদ দাও। তবে আমার মনে হয় এই বিকৃত উচ্চারণের ভাষার প্রসারের জন্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলে-মেয়েদের ভূমিকা খুবই প্রবল।
-তার আগে বলো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়কে আলাদা একটা গ্রুপ মনে করার কি কারণ? স্টুডেন্টতো স্টুডেন্ট, তাদের সবারই স্বপ্ন এক, জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়া।
-না বড়লোক বাবার ছেলে-মেয়েরা পড়তে আসে না, শুধু নাম লেখাতে আসে।
-কথাটা সবার জন্য প্রযোজ্য না। আর যদি প্রযোজ্য হয়ও, বড়লোক বাবারা তাদের ছেলেমেয়েকে দেশের বাইরেও পাঠিয়েও দিতে পারে। সেটা না করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াচ্ছে, তাতেতো দেশেরই লাভ। আমি বুঝতে পারি না, বড়লোক হওয়া কি অপরাধ না-কি? এদের ছেলে-মেয়েরাও সমস্ত জাতির প্রতিপক্ষ না-কি?
-প্রতিপক্ষ না। তবে সেখানে অনেকেই বিকৃত বাংলায় কথা বলে।
-তাহলে তর্কের খাতিরে বলেই ফেলি, কিছুটা হয়তো রূঢ় শোনাবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপক্ষে আশি ভাগ ছেলে-মেয়েতো বিকৃত বাংলায়ই কথা বলে। তারা বিকৃত আর করবেইটা কি?
-মানে কি এটার।
-মানে তারা আঞ্চলিক বাংলায় কথা বলে।
-আঞ্চলিক বাংলা আর বিকৃত বাংলা এক নয়।
-কিন্তু, কোনটিই শুদ্ধও নয়।
-এখানে পয়েন্ট সেটা না। তুমি কি তর্কের খাতিরে তর্ক করে যাবে না-কি? এখানে পয়েন্ট হচ্ছে, প্রাইভেটের ছেলে-মেয়েদের অনেকেই হয়তো চাইলেই শুদ্ধ বাংলায় কথা বলতে পারে। কিন্তু, তারা সেটা করে না। তারা মনে করে, বিকৃতভাবে কথা বলাটা স্মার্টনেস।
-একবার বোলছো সেটা থার্ড ক্লাস ভাষা, আবার বলছো সেটা স্মার্টনেস।
-তারা মনে করে সেটা স্মার্টনেস, অন্যরা মনে করে না।
-তাই না-কি? নিরপেক্ষ ভাবে ভেবে বলোতো দেখি। কখনো কারো বিয়ের জন্য পাত্র-পাত্রী দেখেছো?
-কি বলতে চাইছো তুমি? খুবই অরূচিকর কথাবার্তা।
-দুঃখিত! হতে পারে। অতটা ভেবে বলিনি।
-অত ভাবনার কিছু নেই। তোমার মনে রাখা উচিত, বাংলা ভাষার জন্য আমাদের দেশের মানুষ প্রাণ দিয়েছিলো।
-এ-সমস্ত সস্তা আবেগের কথা আমার কাছে বলতে যেয়ো না। তাদের প্রতি সন্মানের কোনো কমতি নেই। তাই বলে অযথার্থভাবে সেই রেফারেন্স টেনে আনার মানে হয় না। সেমিনারে গিয়ে চশমা পরা বুদ্ধিজীবীদের সাথে গিয়ে এ-সব আলাপ করো। অবশ্য, তার জন্য তোমাকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
-ফেব্রুয়ারির কথা যখন তুললেই, তখন ভুলে যেওনা বাংলা ভাষার জন্য একুশে ফেব্রুয়ারি আজ আন্তর্জাতিক দিবস।
-না!
-না মানে?
-না মানে, বাংলা ভাষার জন্য না।
-তাহলে কি, তোমার হাহামাযা ভাষার জন্য?
-না-এর মানে হচ্ছে বাংলা ভাষার জন্য সেটি আন্তর্জাতিক দিবস না। মাতৃভাষার জন্য সেটি আন্তর্জাতিক দিবস। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাংলাভাষা আর মাতৃভাষা দু’টোর মধ্যে বিস্তর পার্থক্য। তবে, বাংলাভাষা উপলক্ষ্য ছিলো এবং সেটিও কম গৌরবের বিষয় নয়।
-আমাদের জন্য মাতৃভাষা আর বাংলাভাষায় পার্থক্যটা কোথায়? কিছুটা বিস্ময় প্রকাশ করে বলে উঠে শেহরীন।
–আছে বলে গম্ভীর হয়ে থাকে রনিন।
-শেহরীন বলে উঠে, যেমন?
-শান্ত কণ্ঠস্বরে রনিন বলে, যে মেয়েটি আজকে বিকৃত বাংলায় কথা বলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই মেয়েটি একদিন মা হবে। তাহলে, তার যে সন্তান হবে, তাদের জন্য তার মায়ের বলা বিকৃত ভাষাটাই মাতৃভাষা। যেটা তোমাদের মতে প্রমিত বাংলা ভাষা না। তাহলে, তার সেই সন্তানেরা তাদের মাতৃভাষার জন্য কি প্রাণ বিসর্জন দিয়ে দেবে? যারা তাদের সেই ভাষার সমালোচনা করবে তারা কি তাদের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়াবে?
চুপ করে থাকে শেহরীন। চলন্ত গাড়ীর কাচ দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখে, শহরের এক প্রাচীরের গায়ে, ছোট্ট নির্জলা এক জায়গায় ফুটে আছে শরতের কাশফুল। না রনিন ঠিক বলেনি, ঢাকা শহরের মাঝেও কাশফুল আছে।
অন্যান্য পর্বসমূহের লিঙ্কঃ
দ্বিধালাপঃ প্রেম পর্ব
মইনুল রাজু (ওয়েবসাইট)
[email protected]
বাংলা ভাষা কেমন হবে তা নিয়ে এত কথার দরকার আছে কি? প্রমিত ভাষার বিরোধীরা এবং প্রমিত ভাষার পক্ষের- দুপক্ষেরই একটা ভুল হয়ে যায়। সবাই মনে করছেন এই দুই ভাষার কোন একটাকে হয় ত্যাগ করতে হবে না হয় মেনে চলতে হবে। আদৌ ব্যাপারটা তা নয়। পৃথিবীর সব ভাষারই একটা পোষাকী রূপ আছে। যা মূলত গণমাধ্যম, অফিস-আদালত, সাহিত্যতে ব্যবহার হয়ে থাকে। নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষা বা চট্রগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় যদি দপ্তরিক কাজ চলে তাহলে পুরো দেশের মানুষের অবস্থা কেমন হবে? আর এই জন্যই প্রমিত ভাষা। যা গোটা দেশের মানুষ ব্যবহার করবে তাদের প্রয়োজনে। বাড়িতে বা বন্ধুদের সঙ্গে আমরা অঞ্চল ভেদে যে ভাষায় কথা বলি তা যদি রেডিও টিভিতে প্রয়োগ করি তখন সেটা কেমন হবে? ভাবুন একটা লোক ময়মনসিংহের আঞ্চলিক ভাষায় খবর পাঠ করছে! জিনিসটা কেমন লাগবে? এখন উড়তি বয়সের ছেলে-মেয়েরা যে মেকি একটা ভাষায় কথা বলছে ( আমি খুব ভালো করে জানি ঘরের ভেতর বাবা-মার সঙ্গে এরা এই ভাষায় কথা বলে না। এমনকি ঝগড়ার সময় মুখ ফুটে নিজেদের আসল ভাষা বেরিয়ে পড়ে।) সেটাকে তারা ভাষার পরিবর্তন ইত্যাদি কথা বলে প্রমিত ভাষার বিকল্প করার চেষ্টা করছেন। তাহলে একজন সিলেটিও কাল থেকে তার নিজের ভাষায় সব ব্যবহারিক কাজ সারুক। আমি নিজে একদম বাঙাল ভাষায় কথা বলি নিজের বন্ধুদের সঙ্গে। বাড়িতে বা ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে। কিন্তু যখন কিছু লিখছি তখন প্রমিত ভাষা ছাড়া উপায় কি? (সাহিত্যে সংলাপের ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে না)। অফিসের যখন কথা বলছি সেটা তো আমার আড্ডার ভাষা নয়। প্রমিত আর কথ্য ভাষার এই হচ্ছে গিয়ে ব্যাপার। ঝামেলাটা কোথায় তাহলে? কিছু উজবুক বুঝতে চাইছে না তারা যে ভাষাটা ব্যবহার করছে (ব্লগে, টিভিতে, রেডিওতে, সিনেমায়…) সেটা একটা আঞ্চলিতকার মিশেল। রংপুরের ভাষায় কেউ ব্লগ লিখলে তা কজন বুঝবে? তা হলে সে কোন বাংলা ভাষায় লিখবে? প্রমিত বাংলায়। কেন? এটা একটা সর্বজন ব্যবহারকৃত ভাষার রীতি। ডিজুস ভাষা (রেডিও, ব্লগ আর ন্যাকা ছেলে-মেয়েরা যে ভাষাটা তৈরি করে নিয়েছে) কেন সে লিখবে? যত খুশী সে এটা ব্যবহার করুক কিছু যায় আসে না। কিন্তু গণমাধ্যম সাহিত্য এখানে উদ্ভট কৃত্রিম কোন কিছু ব্যবহার করা ঠিক নয়। ধন্যবাদ।
@সুষুপ্ত পাঠক,
আপনার ব্যাখ্যা কিংবা অবস্থানটা বেশ ভালো হয়েছে। কিন্তু, একটা জিনিস এভাবে নিলে কেমন হয়- কেউ যদি রংপুরের ভাষায় ব্লগ লিখতে চায়, তাহলে তাদেরকে সেই সুযোগটা দেই। নিতান্তই যদি সেটা পড়ার অযোগ্য হয়, তাহলে তার লেখা ব্লগটা এড়িয়ে চলি। কিন্তু, তাকে গিয়ে যেন না বলি, খামোশ! তুমি যা চাও তাই লিখতে পারো না, প্রমিত ভাষায় লিখ। :))
ধন্যবাদ আপনাকে। 🙂
@মইনুল রাজু,তারপর কেউ আবদার করবে আমি আরবি হরফে বাংলা লিখবো ( যেমন এখন মোবাইলে লেখা হয়)। রংপুরের ভাষায় কেউ ব্লগ লিখতে চাইলে তাকে পাগল ছাড়া আর কিছু বলা যাবে না।আপনি পৃথিবীর এমন একটা দেশ দেখান যেখানে প্রমিত ভাষায় কাজ চলছে না। ইংরেজি ভাষাভাষি কোন দেশে গিয়ে আপনি যদি সেখানকার কোন প্রদেশের ইংরেজির আঞ্চলিক ভাষার কবলে পড়েন তখন কেমন হবে? বিবিসি যদি প্রমিত ইংরেজিতে চ্যানেল না চালায় কিছু বুঝবেন? আসল কথা হচ্ছে প্রমিত বাংলা আপনাদের কোথায় সুরসুরি দিলো? ভাব প্রকাশে কোথাও বাঁধা সৃষ্টি করেছে? রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনান্দ, জসিমউদ্দিন, ওয়ালীউল্লা, ইলিয়াস, যে ভাষায় লিখেছেন তা কি তাদের ভাব প্রকাশ পায়নি? আপনাকে একটা কথা বলি। এই যে যেটা এখন শুরু হয়েছে, সেটা কিন্তু শাহবাগের কিছু আঁতেলের কাজ। কোলকাতার সাহিত্যিকদের কাছে কেন পাত্তা পায় না, কেন কোলকাতার কবি-উপন্যাসিকরা এত জয়প্রিয় সেই ক্ষোভে এরা ঠিক করলো প্রচলিত সাহিত্যের যে ভাষা সেটা কোলকাতাঅলাদের ভাষা ( যা মোটেই সঠিক নয়), বাংলাদেশে তারা পূর্ব বঙ্গের নিজস্ব একটা ভাষায় লিখবে ( বাংলাদেশী সাহিত্য। বাংলা সাহিত্য নয়!)। আমরা বাংলাদেশের মানুষ ঐতিহাসিকভাবে ভারত বিরোধী। ৬৫ সালে (ইতিহাস তাই বলে) ঢাকার রাস্তা রোজ `ভারতের দালাল’ বলে লোকজনকে ধরে পিটানো হতো। কেউ একজন রব তুললেই হলো- `ভারতের দালাল’ ব্যস আর কথা নেই, লোক খোঁজা লাগতো না মারধোর করার জন্য। ৭১’ এই মানুষগুলিই দলে দলে গিয়ে আশ্রয় নিলো ভারত তথা কোলকাতায়। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! দেশ স্বাধীন হলে ৭২ কী ৭৩ ( সনটা আমি ঠিক বলতে পারছি না) সালে যখন জুলফিকার আলী ভুট্ট বাংলাদেশ সফরে এলেন তখন জনগনের সেকি উচ্চ্বাস! ভুট্টকে একনজর দেখার জন্য। এত কথা বললাম এই জন্য যে পশ্চিম বাংলার সঙ্গে গোস্সা করে আমরা এক সময় বাংলা ভাষায় অযাযিতভাবে আরবি-ফারসি শব্দ ব্যবহার করেছি ভাষাকে মুসলমানী করে তোলার জন্য। এখন যেমন করা হচ্ছে।কী মজার রংপুরের ভাষায় ব্লগ লেখা হবে- অক্ত (রক্ত) নাল (লাল)! দুঃখিনি বাংলা ভাষা তোমার কপালে দুঃখ আছে। তোমাকে বাঁচাবে কে? এই হৃদয়ে এ্যারাবিয়ান আর পোশাকে ইউরোপীয়ান আর ভাষায় ডিজুসরা তোমাকে বারবানিতার মত রাস্তায় না নামিয়ে ছাড়বে না।এখন গায়ের জোর যার বেশি, গলার জোর যার বেশি তোমাকে নিয়ে তো তারা টানাটানি করবেই।
@সুষুপ্ত পাঠক,
শাহবাগের কিছু আঁতেলের কাজ সম্পর্কে আমার ধারণা নেই। তবে ইংরেজী tbh, lol, grrrl এগুলো বাংলা ‘হাহাপগে’ জাতীয় শব্দই। কিন্তু, অক্সফোর্ড ডিকশনারী খুললে ঠিকই পেয়ে যাবেন। প্রমিত ইংলিশএ ঠিকই কাজ চলছে, কিন্তু নতুন শব্দ আসলে সেটাও তারা গ্রহণ করে নিচ্ছে। বিবিসিতে প্রমিত ইংরেজীদে চ্যানেল না চালালে কিছু বুঝবো না এবং সেটা বর্জন করবো। কিন্তু কেন বিবিসি প্রমিত ইংরেজী বলবে না তা নিয়ে বিক্ষোভ করবো না। তখন বিবিসিকে বিবিসির মত থাকতে দেব, আর নিজ এগিয়ে সিএনএন দেখবো। রংপুরের ব্লগারকে তার ভাষায় ব্লগ লেখার সকল সুবিধাই দেব, কিন্তু নিজে না বুঝলে গিয়ে যশোর কুষ্টিয়ার শুদ্ধ ভাষায় লেখা ব্লগ পড়বো। তাই বলে, রংপুরে ব্লগারকে পাগল বলবো না কখনো।
চর্যাপদে কাহ্নপা, ভুসুক্কুপা রা যে ভাষায় লিখেছে তাতে কি তাদের মনের ভাব প্রকাশ পায়নি! কিন্তু রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনান্দ, জসিমউদ্দিন, ওয়ালীউল্লা, ইলিয়াস ঠিকই পরিবর্তিত ভাষায় লিখেছে!! তবে সব পরিবর্তন স্থায়ী নয়। সময়ই বলে দিবে কোন পরিবর্তন স্থায়ী হবে আর কোনটা হাওয়ায় মিশে যাবে। তাই বলে পরিবর্তনের পালে আগুন ধরিয়ে দিতে হবে না। 🙂
ধন্যবাদ আপনাকে আলোচনায় অংশ নেবার জন্য। 🙂
যা বাবা তাহলে কথা কওয়াই বন্ধ করি দেই
সবার জন্যে (C)
@শান্ত,
চা/কফি দিয়ে বাঁচালেন। কথা বন্ধ করে অন্তত চা খাওয়া যাবে। :))
ক
এম্বে অম্বে পঁ, বাঙ্গালী য্যাম্নে কবি ক,
অ আ কখগ, লইয়া ডাইনে বাঁয়ে ক,
হেইল্ল্যা দুইল্ল্যা করে তরা; য্যাম্নে খুশী ক,
বাঙ্গালী; এম্বে অম্বে পঁ, হাইস্যা কাইন্দ্যা ক।
প্রমিত রঙ্গ কইরা তরা, কইত্থ্য ভাষায় ক,
মনের সুখে বাংলা ভাষা, পরাণ ভইরা ক,
চাষাভূষা কামার কুমার, ক্ষ্যাতে বইয়া ক,
য্যাম্বে কবি ক বাঙ্গালী, বাংলায় কথা ক।
মানুষ লইয়া ক’রে তরা; মাটি লয়া ক,
বলে যারা বাংলা ভাষা; বুইজ্জ্যা লইব ক,
দখলদারের চাবুক ভাষা; দূরে, ফিক্ক্যা দিয়া ক,
তরা বাংলা কথা ক’রে মানুষ; বাংলাডারে ক।
সাহেব টুপি পাগড়ী হগল, গাঙ্গে ফালায় ক,
ঢ্যাপের খৈ আর মোয়ামুড়ি; মিঠাই খায়া ক,
গ্যান্দামালা আলতা পইরা; নাইচ্চা কুইদ্দ্যা ক,
বাংলা তোমায় ভালোবাসি; তরা, য্যাম্নে খুশী ক।
@কাজী রহমান,
(F)
বাহ্!
এই কবিতাটা মাঝেসাঝে মনে করাইয়া দিতে হবে এখন থেকে ভাষা নিয়ন্ত্রণ পরিষদের মেম্বারদের। মনে করাইতে ভুইল্যা গেলে আপনে নিজে আমারে মনে করাইয়া দিয়েন।
আপনার আরেকটা মন্তব্যিতা থেকে তুইলা দিলামঃ
@রূপম (ধ্রুব),
(D)
@কাজী রহমান,
(Y) (D)
@মইনুল রাজু,
(D)
@কাজী রহমান,
কি দিয়েছেন দাদা। ওফ…… অসাধারণ (F) 🙂
@মইনুল রাজু,
প্রেম করতে গেলে সুন্দর করে কথা যারা বলতে পারে তারা অগ্রাধিকার পাবে।
আপনার এই বিষয়টা খুব ইন্টারেস্টিং লাগলো।কি জানি, ঐটা ভেবে তো তখন প্রেম করিনি!!
সারভাইভ্যাল অব দ্যা ফিটেস্ট এর সূত্রানূযায়ী, চাকুরী করতে গেলে, প্রেম করতে গেলে, ইন্টারভিউ দিতে গেলে, বক্তব্য দিতে গেলে, সুন্দর করে কথা যারা বলতে পারে তারা অগ্রাধিকার পাবে, সারভাইভ করবে। তাহলে, খুব স্বাভাবিকভাবেই সবার সুন্দর/প্রমিত বাংলা বলার অভ্যাস করার কথা।
@অসীম,
না না, আমি আপনার সাথে একমত। বরং, আমি এই পয়েন্টটাই বলতে চাচ্ছি। শুধু ব্যাখ্যাটা রকটু ভিন্ন। দুইজন এমপ্লয়ির মধ্যে যদি একজনকে যদি প্রমোশান দিতে বলা হয়, আপনি যদি বস্ হয়ে থাকেন, কাকে দিবেন? যার ভালো উচ্চারণ তাকেইতো দিবেন। এটাইতো সারভাইভ্যাল অব দ্যা ফিটেস্ট। তাহলে সমস্যাযুক্ত উচ্চারণের মানুষটি স্বাভাবিকভাবেইতো পিছিয়ে পড়ছে। সেটার জন্য আপনি তাকে পরামর্শ দিতে পারেন। কিন্তু সে আপনার কথা শুনবে কি শুনবে না সেটা তার ব্যক্তিগত পছন্দ। সে পিছিয়ে পড়বে, তারপরও সে সেভাবেই কথা বলবে, তাতে কার কি!
তবে আপনি যদি কোম্পানীর মালিক হয়ে থাকেন, চাইলে বাধ্য করাতেও পারেন। কিন্তু, আপনার খায় না, পরে না, আপনার কোম্পানীতে চকুরী করে না, কিন্তু আপনার ক্ষমতা আছে বাধ্য করানোর। শুধু আপনার শুনতে খারাপ লাগে, সে-জন্য ক্ষমতার জোরে তাকে বাধ্য করতে পারেন কি! নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসতে পারেন কি!! আমার মনে হয় পারেন না। তাকে পরামর্শ দিলেন, সে না-ই শুনতেই পারে। আপনার কথা না শুনার পর আপনি যদি বিরক্তি প্রাকাশ করেন, হা-হুতাশ করেন, তাহলেও আপনি কিন্তু অসহিষ্ণুতা দেখালেন। অসহিষ্ণুতাতো ভালোই, কথার কথা, কেউ যদি আইন করে এরেস্ট করাবার ব্যবস্থা করেন, তাহলে কি দাঁড়াবে ব্যাপারটা!
প্রেম করতে গেলে সুন্দর কথাতো বলা লাগে। না হলে সুন্দর করে কথা বলে সে-রকম একটা মেয়েতো প্রেম করতে আসবে না। আসবে সুন্দর করে কথা বলে না ওরকম একজন। অবশ্য সুন্দর করে কথা বলা একটা মাত্র মানদণ্ড, অন্য অনেক মানদণ্ডতো আছেই:)) উপরের দিকে হাত বাড়ানোর চেয়ে, নিজে আগে উপরে উঠে পাশাপাশি হাত ধরে থাকা অনেক বেশি স্ট্যাবল নয় কি? আসলে বলার জন্য বলছি, এ-সবে আমার খুব বেশিইইইই অভিজ্ঞতা নাই, যেটা মনে হলো বলে দিলাম আর কি। :)) আমার দ্বিধালাপ এর পরের পর্বের নাম আবার প্রেম পর্ব, যদিও অভিজ্ঞতার অভাবে আর ছোট লেখা হওয়ায় বিস্তারিত কিছুই লিখিনি। 😛
ভালো থাকবেন আপনি। 🙂
দ্বিধাচিত্তে > দ্বিধাহীনচিত্তে 🙂
আমিও ঠিক এমনটাই ভাবি। অবাধ স্বাধীনতায় বিশ্বাসের সাহস দেখি কম মানুষেরই হয়। অনেকে ব্যালেন্সের কথা বলে। অনেকের ভাবনায় ব্যক্তির স্বাধীনতা সমষ্টির উন্নয়নের ভাবনার নিচে পিষ্ট থাকে। স্বাধীনতার কথা যদিও বা একটু সাহস করে বললো, কিন্তু সেটা আবার অবাধ বলবে, মাথা খারাপ? আপনাকে এমন দ্বিধাচিত্তে এটা উচ্চারণ করতে দেখে ভালো লাগলো।
একটা ব্যাপারে এই ভাষা বিষয়টা বার বার প্যাঁচ লেগে যায়। রাষ্ট্র দিয়ে ভাষার উপর খবরদারি করানোর বিরোধিতা করলে তখন লোকে বলে, আপনি নিশ্চয়ই তাহলে এইসব ভাষার ইচ্ছাকৃত বিকৃতি সমর্থন করেন। এটা ফল্স ডিলেমা। এটা তৈরি হয় যখন সবকিছুকে একটা রেখার উপর দেখা হয়। হয় বিকৃতির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ সমর্থন করবেন, নয়তো আপনি এইসব বিকৃতি নিজেই সমর্থন করেন।
কিন্তু এটা তারা বোঝে না যে রাষ্ট্রের খবরদারি বা নিয়ন্ত্রণের বিরোধিতা আর বিকৃতির প্রতিবাদ দুটো অসামাঞ্জস্যপূর্ণ না। কোনোকিছু আমার বিকৃত মনে হলে আমি প্রতিবাদ করতেই পারি, আমার বিভিন্ন যুক্তি সহকারে আমি দেখাতে পারি কী কী সমস্যা ক্ষতি দুর্যোগ হতে পারে। কথা বলায়, চিন্তা করায়, তর্ক করায়, আলোচনা করায় তো বাঁধা নেই। একেবারে নিশ্চিত বিষয়গুলো নিয়েই যেখানে আবার আলোচনা করতে বাঁধা নেই। কিন্তু এখন যা আমি পছন্দ করি না, তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণকে আমার সমর্থন করতে হবে এই যুক্তিটা কোথা থেকে আসে?
বিষয়কে যথাসাধ্য সরল সাধারণ করতে আমি পছন্দ করি। এখানে ভাষার বা যেকোনো কিছুর ব্যাপারে পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান নেওয়াকে আমি ডাইমেনশান এক্স বলতে চাই। আবার নিজের অমুক তমুক বা যেকোনো অবস্থানের ব্যাপারে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণকে কামনা করা আর না করাকে আমি ডাইমেনশান ওয়াই বলতে চাই। এবং বলতে চাই এই দুটো ডাইমেনশান বৃহদার্থে অম্পর্কিত। ভাষার বিকৃতির বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া মানুষ রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ কামনা করতেও পারে, আবার রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণের সম্পূর্ণ বিরোধিতাও করতে পারে। আবার ভাষার বিকৃতির পক্ষে অবস্থান নেওয়া মানুষও তেমনি রাষ্ট্রের দ্বারা জোর করে বিকৃতি চাইতে পারে, আবার এ ব্যাপারে রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপকে অকাম্যও মনে করতে পারে।
এই দুটো ডাইমেনশানের ব্যাপারে যদি আমরা সচেতন হই, তাহলে দেখবো, আমরা যারা এই ভাষার ইচ্ছাকৃত বিকৃতি পছন্দ করি না কিন্তু রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপও কামনা করি না, তারা আরো সাচ্ছন্দ্যে নিজেদের অবস্থানের কথাটা জানাতে পারবো। বলতে পারবো কেনো অপছন্দ করি। এ ডাইমেনশানভেদের বিষয়টা উপলব্ধি করলে অনেকেই দেখবেন যারা এই বিকৃতির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ কামনা করছে, তারা উপলব্ধি করবেন যে এই বিকৃতির বিরোধিতা মানেই রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ কামনা করতে হবে এমন কোনো কথা নেই।
আর এরপরেও কিছু মানুষ তো থাকবেই যারা রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণের বৈধতা ও উপযোগিতার ব্যাপারে নিশ্চিত। তা এরকম বিকৃতিকারীদের মধ্যেও আছে, ছিলো, যারা রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় জোর করে গণমাধ্যমে বিকৃতি চালিয়ে গেছে।
@রূপম (ধ্রুব),
দারুণ ব্যাখ্যা করেছেন। আমার কখনো মনে হয়নি, জোর করে মানুষের মুখে ভাষা ধরিয়ে দেয়া সম্ভব। আর ভাষা সব মানুষের একান্ত আপন একটা জিনিস। আমারতো মনে হয় না, মানুষ নিজেরাই নিজেদের ভাষাকে ম্লান করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে বিকৃত করবে। আর ইচ্ছাকৃতভাবে যদি সেটা না করে, তাহলে তার সম্পূর্ণ অধিকার আছে নিজের খুশিমত ভাষা ব্যবহার করার।
ফ্র্যাঙ্কলিন এর উদ্ধৃতিটা আগে পড়িনি কখনো, খুবই সুন্দর। ধন্যবাদ আপনাকে। 🙂
বস! :guru:
কুনু কতা নাই। পুরাই উরাধুরা? কি হৈল প্রমিত কৈতেবৈ নাকি। মমউগ ( ইয়ে মানে – মরতে মরতে উঠে গেলাম ) 🙂
@তাপস শর্মা,
কৈতারতামনা :))
আপনার মত চেষ্টা করলাম একটু। :))
@তাপস শর্মা,
বোল্ড করা শব্দ দুটোর অর্থ বুঝতারি নাই। আল্লায়ই জানে ঠিক কৈলাম কি না? বুঝতারি গ্রামাটিক্যালি ঠিক আছে তো?
@আকাশ মালিক,
উরাধুরা = আউলা ঝাউলা = অতিরিক্ত ভালো লাগার প্রকাশ বলতে পারেন।
কৈতেবৈ = কইতে + হইবই : মানে বলতে হবেই।
বুঝতারি’র গ্রামার ঠিকাছে কিনা জানিনা। তবে আমি বুঝতে পেরেছি অনায়াসেই। আবার এটা এমন করে বলে আপনি কারো বিশেষ অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে ফেললেন কিনা, খেয়াল করে ভাইয়া। 😉
কিছু উদাহরণ দেখা যাক-
আপনারে দেখতে মুঞ্ছায়।
কোবতেটি লাইকাইলাম।
ছাগু ( ছাগু > মুক্তিযোদ্ধের চেতনা বিরোধী লোক) দেখলেই গদাম।
এর কারণ ঝাতি (জাতি) জানতে চায়।
কথা শুনে হাহাপগে- হাহামগে-হাহাপেফে-হাহামাযা
তোমাকে ডিম থেরাপী দেওন লাইগবো।
বা—-ছা—লেখা এখানে দিওনা।
হা—–নী, পো—–নী, বিগ্যানি, ছাগলামী, হউরি (শাশুড়ি) ছাগুরাম, বাংলিশ
লালুর ল্যাখাটা পইড়া হটাত দুক্ষবোধ
আপনাদের কি মা ভুন নেই?
ম্যালা কথার মানে বাইর কর্তে পারি নাই
আমি লইজ্জাহিন বাভে পোষ্টাইয়া দিমুনে
উপরের বাক্য ও শব্দ সমুহ আঞ্চলিক, না কথ্য, না গালি? তবে যে হারে ব্যবহার হচ্ছে পরবর্তি প্রজন্ম এগুলোকে স্বাভাবিক ভদ্র ভাষা হিসেবেই মেনে নিবে। এবং তারা তাদের কবিতায় গল্পে তা নির্দ্বিধায় ব্যবহার করবে।
@আকাশ মালিক,
আপনার কেন এ-ভাষায় আপত্তি? বোধ করি, ভদ্রোচিত শোনাচ্ছে না সেই জন্য। কিন্তু, ভদ্রতা জনিত যে সমস্যাটা সেটার উত্তর আপনার মন্তব্যেই আছে। আপনি আমি মেনে নিতে না পারলেও পরবর্তী প্রজন্ম সেটাকে যদি ভদ্র ভাষা হিসেবে মেনে নেয়, তাহলেতো সমাধান হয়েই গেলো। সেটা নিয়েতো আর তাদের আপত্তিই থাকবে না। 🙂 তবে, উপরে আপনি যে উদাহরণগুলো দিলেন তার কোনোটিই পারতপক্ষে আমি নিজে ব্যবহার করতে চাইবো না। কিন্তু, কেউ ব্যবহার করলে ব্যাপক বিরক্তও হবো না।
আরেকটা ব্যাপার, আপনার উদাহরণেও কিছু বাক্য আছে, যেগুলো যতটুকু না ভাষার জন্য শুনতে খারাপ তার থেকে অনেক বেশি খারাপ অন্তর্নিহিত তাৎপর্যের জন্য। সমস্যাটা সেখানে ভাষার না, সমস্যাটা চিন্তা-ভাবনার।
ধন্যবাদ আপনাকে। 🙂
@মইনুল রাজু,
কম্যুনিটি স্যোসিয়েল ওয়ার্কে তার প্রমাণ ইংল্যান্ডে বহু আগেই পেয়েছি। এখন আমার ঘরে আমি যেটাকে আশালিন বা অভদ্র মনে করে নাক উঁচু করি, আমার নতুন প্রজন্মের সন্তান আমার মুখের উপর বলে দেয়, That’s nothing, it’s normal. বিবর্তন শুধু বাংলা ভাষায়ই হচ্ছেনা, অন্যান্য সব ভাষাও প্রতিনিয়ত বিবর্তন হচ্ছে।
(Y) এর কিছু উদাহরণ মিলে বিভিন্ন অঞ্চলের কথ্য ভাষায়, যাকে আমরা বলি- এক দেশের বুলি আরেক দেশের গালি।
সবকিছুই আপেক্ষিক | ভাষার শুদ্ধতা অশুদ্ধতাও এর বাইরে নয়|
@অঙ্কন,
নিঃসন্দেহে আপেক্ষিক। কিন্তু, বলে রাখা ভালো যে, সবকিছু আপেক্ষিক হলেও কিছু জিনিসকে নিয়মের আওতায় এনেই আমরা সমাজ-সংস্কৃতি-রাষ্ট্র-সভ্যতা গড়ে তুলি। তবে, সেটা যৌক্তিক ভাবে। এখন প্রশ্নটা হচ্ছে, এই ভাষার মত আপেক্ষিক জিনিসটাতে নিয়মে বন্দী করে ফেলাটা কতটুকু যৌক্তিক। 🙂
ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। 🙂
@অঙ্কন,
হতে পারে না। তাহলে “আপেক্ষিক” শব্দের প্রয়োজন হত না। কিছু জিনিষ আপেক্ষিক নয় বলেই আপেক্ষিক/অনপেক্ষ শব্দ দুটো অভিধানে আছে।
শুদ্ধতা অশুদ্ধতা বিতর্কের জন্য সুবিধাজনক। প্রমিত/অপ্রমিত বললে কথাটা ঠিক হত। উপরে নীল রোদ্দুর সুন্দর করে বলছেন তাঁর মন্তব্যে। প্রমিত বাংলা রাষ্ট্র ব্যাপী শুদ্ধ, আবার সব অঞ্চলের জন্যও শুদ্ধ, কারণ প্রত্যেক অঞ্চল রাষ্ট্রেরই সাবসেট। আঞ্চলিক ভাষা সেই অঞ্চলের জন্য শুদ্ধ, রাষ্ট্রের জন্য নয়। ।
@অপার্থিব,
সেই সুবিধাটা নীল রোদ্দুরও কিন্তু নিয়েছেন
কথাগুলোয়।
@রূপম (ধ্রুব),
ঠিক। আরেকটু সতর্ক হওয়া উচিত ছিল আমার। আমি শুদ্ধ/অশুদ্ধ পবিত্র/অপবিত্র (অর্থাৎ ভাল/খারাপ) অর্থে ভাবছিলাম যখন বলছিলাম তর্কের জন্য সুবিধা। আসলে বোঝাতে চেয়েছিলাম “সঠিক” বা নিয়মানুগ অর্থে। নীল রোদ্দুরও ওটা স্পষ্ট করেননি। তাহলে আমার বক্তব্যের সার হল আঞ্চলিক ভাষা সঠিক কি না সেটা আপেক্ষিক। প্রমিত ভাষার সঠিকতা অঞ্চল নির্ভর নয় (অনপেক্ষ)।
@অপার্থিব,
অভিধানে কিন্তু পঙ্ক্ষীরাজ, হারকিউলিস এই শব্দগুলোও আছে।
আপনার যদি জানা থেকে আপেক্ষিক নয় অর্থাৎ অনপেক্ষ এরকম কিছুর কয়েকটা উদাহরণ দিতে পারেন। চিন্তা করতে সুবিধা হবে। আমি নিজেও চিন্তা করছি, কিন্তু, এ-মুহূর্তে খুঁজে পাচ্ছি না।
ধন্যবাদ। 🙂
@মইনুল রাজু,
উপরে ধ্রূবর মন্ত্যবের জবাবে আমি যা বলেছি সেটাই দ্বিরুক্তি করিঃ
প্রমিত ভাষার সঠিকতা অঞ্চল নির্ভর নয় (অনপেক্ষ)।
(অর্থাৎ আপেক্ষিক নয়)
আলোর গতিও আপেক্ষিক নয়। ধর্ষণ করার অনৈতিকতাও আপেক্ষিক নয়।
@অপার্থিব,
এর সবকিছুইতো নির্ভর করছে কিসের সাপেক্ষে চিন্তা করছি তার উপর। যে জিনিসটার সাপেক্ষে চিন্তা করছি সেটা সুনির্দিষ্ট করা থাকলে ঠিক আছে, না হলে এসবও কিন্তু অপেক্ষিক হয়ে যায়। অন্যদিকে, ভাষার জন্য কিছুই সুনির্দিষ্ট নয়।
ধন্যবাদ আপনার ভালো কিছু উদাহরণের জন্য। 🙂
আমি বিকৃতির সংজ্ঞাই জানি না, মানে ভাষার ক্ষেত্রে আর কি। যারা বাঙলা ভাষার প্রমিত উচ্চারন নিয়া চিন্তিত তাদের কাছে আমি জিগাইতে চাই বাঙলা ভাষা কি কোন মৌলিক ভাষা কি না। মানে বাঙলা বাঙলাই, এইটার উৎপত্তি স্বর্গীয়, অন্যকোন জায়গা থিকা এইটা কিছু আনে নাই। প্রমিত আওয়াজ মারতে গেলে সমস্ত আঞ্চলিক ভাষারে ভাগারে পাঠানোটাই যৌক্তিক বইলা মনে হয়। কলকাতার কোন না কোন এলাকার ভাষারে স্ট্যান্ডার্ড ধইরা ঐ আওয়াজে কথা কইতে আমার আপত্তি আছে। কে কী মনে করল এইটা নিয়া আমার মোটেই কোন ভালোবাসা নাই।
আমি লিখিত রূপের একটা ব্যাকরনের বিপক্ষে না, কারন ভাষার গবেষনার জন্য ঐটার দরকার আছে।
আমি কথ্য ভাষায় বিদেশী ভাষা ব্যাবহারের বিরোধী।
আমি “জিজ্ঞেস” শব্দ “জিগানো” ব্যাবহারের বিপক্ষে না। কারন দুইটাই বাঙলা ভাষা।
ভাষার প্রবল স্রোতা নদীরে বাইন্ধা ধইরা বাধ দিতে গেলে নদী শুকাইয়া যাইব। কামের কাম কিছুই হইব না।
বাঙলা ভাষা হইল বাঙলা ভাষা, এর মধ্যে ইংরেজি ঢুকাইয়া বাঙরেজি, হিন্দি ঢুকাইয়া বান্দি ভাষা না কইরা যেমনে ইচ্ছা তেমনে কউক, আমি মনে করি তাতে কারোরই আপত্তি থাকা উচিত না।
@সাইফুল ইসলাম,
আমারো নিজস্ব মত মানুষ খুশি মতো একটু নিজের ভাষাটা বলুক। সেখানে এত খবরদারি করার কি আছে। আমার ভাষার অনেক কিছু অনেকের ভালো লাগবে না, আবার অনেকের ভাষার অনেক কিছু আমারও ভালো লাগবে না। তাই বলে আমি যেটা সঠিক বললাম সেটা ছাপিয়ে দেবারতো মানে নেই। তবে, হ্যাঁ, যদি কিছু স্ট্যান্ডার্ডাইজ করা যায় তাহলে কারোরই আপত্তি থাকতো না। কিন্তু, সমস্যা হচ্ছে মানুষ কি ভাষা ব্যবহার করবে, সেটার স্ট্যান্ডার্ডাইজ করা যাবে বা মানদণ্ড নিরূপণ করা যাবে বলেতো মনে হ্য়।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। 🙂
খুবই চমৎকার হয়েছে রাজু ভাইয়া। চমৎকার। ভাষা নিয়ে (প্রমিত-প্রচলিত) যে বিতর্ক চলছে সেটাই প্রানবন্ত করে উপস্থাপন করেছেন।
এই প্রসঙ্গে আমার বক্তব্য হল, সারা বিশ্ব ২১এ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সম্মান দিয়েছে, ভালো কথা, আমরা আজ আমাদের ইতিহাস নিয়ে গর্বিত হতেই পারি। কিন্তু আমার কাছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের চেয়ে অনেক অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ ১৯৫২ সালের ২১ আ ফেব্রুয়ারি। এইদিনটিতে যা হয়েছিল, তা ৫০/৬০ বছর পর আন্তর্জাতিক একটি দিবসে পরিণত হবার জন্য নয়, পূর্বপাকিস্থানের মানুষের মাতৃভাষা “বাংলা”কে রাষ্ট্রিভাষা হিসেবে স্বীকৃতী অর্জনের জন্য। সালাম বরকত রফিক জব্বার এবং আরো অজস্র বাঙ্গালীর লড়াইটা ছিল “মাতৃভাষা এবং বাংলা ভাষার” জন্য। এককভাবে মাতৃভাষার জন্যও নয়, বাংলাভাষার জন্যও নয়। বাংলাদেশের মানুষের চিন্তা চেতনায় মাতৃভাষা এবং বাংলাভাষার জন্য অভিন্ন কোন চেতনা নেই। রনিনের শেষের কথাগুলোর যুক্তি দিয়ে ৫০/৬০ বছর পরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ২১শে ফেব্রুয়ারিকে মূল্যায়ন করা হয়েছে, কিন্তু ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারিকে, করা হয়নি। “হাহামাযা” জাতীয় উদ্ভট কথায়, মাতৃভাষার বিকৃতি হয়না বটে, বাংলা ভাষার বিকৃতি হয়। এইখানে শুধু আরেকটু কথা যোগ করি, আঞ্চলিক ভাষাকে কোনদিনই অশুদ্ধ ভাষা হিসেবে দেখা হয় না। রাষ্ট্রভাষা যেমন রাষ্ট্র ব্যাপী শুদ্ধ, আঞ্চলিক ভাষা তেমনি অঞ্চলব্যাপী শুদ্ধ। “হাহামাযা”, মুঞ্চায়…” এগুলো কি ব্যাপী শুদ্ধ?
১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারির মর্যাদা একজন বাঙ্গালী হিসেবে, বাংলাদেশী হিসেবে দিতে গেলে আমাকে, “মাতৃভাষা এবং বাংলাভাষা” উভয়ের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল, যত্নশীল হতে হবে।
সবকথার শেষ কথা, বাংলা এতো সুন্দর, এতো মধুর এতো মিষ্টি একটা ভাষা, যে ভাষা শুনলেই মনটা জুড়িয়ে যায়, সেই ভাষার মধ্যে কেন কতগুলো উদ্ভট শব্দ যোগ করতে হবে? কেন অযত্নে, অবহেলায় আমরা আমাদের ভাষাকে, আমাদের গৌরবের ইতিহাসকে ম্লান করব?
@নীল রোদ্দুর,
এখানে হাহামাযা খুব এক্সট্রিম বিকৃতি বা পরিবর্তন। আমি নিজেও পারত পক্ষে এড়িয়ে চলতে চাইবো। কিন্তু, রেডিওতে এই ভাষায় কথা বলা হয় না, হয়তো স্বর পরিবর্তন করা হয়। আপনার আমার মিষ্টি বাংলাভাষা কিন্তু পরিবর্তিত একটা রূপ মাত্র। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর কিংবা বাংলার ভাষাবিজ্ঞানী সেই পরিবর্তন করেনি, করেছে সাধারণ মানুষ। এখন মূল প্রশ্ন হচ্ছে, কোনটা বিকৃতি আর কোনটা পরিবর্তন।
আর মাতৃভাষা বলতে খালি আমাদের মায়ের ভাষা বুঝালেতো হবে না। যে মা ‘মুঞ্চায়’ আর ‘হাহামাযা’ বলবে, তার সন্তানদের জন্য সেটাই কিন্তু মাতৃভাষা। অন্যদিকে, আমরা চাইলেও আমাদের ভাষা কে ম্লান করে দিতে পারবো না। সংস্কৃত ভাষাকে কি ম্লান করতে পেরেছেন? এক সংস্কৃত ভাষা থেকেতো কতগুলো ভাষা তৈরী হয়েছে। কিন্তু, সেটাতো তার নিজের জায়গাতেই আছে। শুধু সমস্যা হলো কেউ সেই ভাষা আর এখন ব্যবহার করে না। গৌরবের প্রমিত বাংলা যেখানে আছে সেখানেই থাকবে। কথা হচ্ছে সময়ের সাথে সেই প্রমিত বাংলায় কত জন কথা বলবে?
আসলে আপনি যদি আমার কথাগুলো বলতেন, আমি তাহলে হয়তো আপনার কথাগুলো বলতাম। কারণ আসলেই আমরা বা আমি কিছুটা দ্বিধান্বিত। একেবারে শতভাগ সঠিক বলে কিছু পাওয়া যাবে না। অনেকটা ভারত না পাকিস্তান কে ভালো ক্রিকেট খেলে এই প্রশ্নের মতই। 🙂
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন। 🙂
@মইনুল রাজু,
(Y)
(Y)
(Y)
হুম :-s
@কৌস্তুভ,
🙂
@মইনুল রাজু, দারুণ লিখেছেন। আমার অফিসে নিয়োগ সংক্রান্ত প্রচুর ইন্টারভিউ নিতে হয়।গত ১০-১২ বছর ধরে এই কাজটাই করে আসছি। এসব বিকৃত ভাষা শুনছি বহু দিন ধরেই। বিশেষ করে টিভিতে ৬৯ নামক নাটক (অখাদ্য!) প্রচারের পর থেকেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখেছি ও শুনেছি এইসব কিছু। বিশেষকরে যারা গ্রাম থেকে আসতো (সবাই না) তারা মনে করতো এই ভাষায় কথা বলাটা বুঝি স্মার্টনেস।ইদানিং যে ভাষাো এফ.এম রেডিও তে শুনি –ভাবি কোন আজব দেশে আছি।
কিছু উদাহরণ দেয়া যেতে পারে…
দেশ – দ্যাশ
লেখক- ল্যাখক
আসছি-আসতেছি
আরো বহু আছে। মনে আসছে না। যাই হোক …ইংরেজী জানার পাশাপাশি ভালো বাংলা জানাটা চাকরীর জন্য জরুরী–একথাটা সবসময় চাকুরী প্রার্থীদের জানাতে ভুলিনা। আমি শেহরীনের সাথে একমত। ধন্যবাদ।
@অসীম,
এই পয়েন্টেও আমার কিছুটা লেখার ইচ্ছে ছিলো। লেখার কলেবর বড় করতে চাইনি বলে মূল লেখায় দেয়নি। সারভাইভ্যাল অব দ্যা ফিটেস্ট এর সূত্রানূযায়ী, চাকুরী করতে গেলে, প্রেম করতে গেলে, ইন্টারভিউ দিতে গেলে, বক্তব্য দিতে গেলে, সুন্দর করে কথা যারা বলতে পারে তারা অগ্রাধিকার পাবে, সারভাইভ করবে। তাহলে, খুব স্বাভাবিকভাবেই সবার সুন্দর/প্রমিত বাংলা বলার অভ্যাস করার কথা। সেটা না করে একটা অংশ বিকৃত বাংলায় কথা বলছে। আমার কথা হচ্ছে, সেই অংশটা যদি ইচ্ছা করেই সেই জিনিস করে, চাকুরী না-পায়, তাহলে করুক না, চাকুরী না পাক না। তাদের জন্য বাধ্যবাধকতা দিয়ে দেয়াটা বা বিশেয ভাষা ব্যবহার করতে নিষেধ করার যৌক্তিকতা নিয়ে আমি দ্বিধান্বিত।
আপনার জবটা খুব ইন্টারেস্টিং। অনেক ধরণের মানুষের সাথে কথা বলার সুযোগ পান। এটা একটা দারুণ সুযোগ।
আর ৬৯ এর কথা বলছেন। আমি প্রতিটা পর্ব মহা আগ্রহ নিয়ে দেখেছি। আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছিলো। বিশেষ করে দীপার অভিনয় আর প্রফেসরের কর্মকাণ্ড। :)) ভালো থাকবেন। 🙂
বাহ, চমৎকার একটি লেখা আজ ঘুম থেকে উঠে প্রথম পড়লাম। ভাগ্যে বিশ্বাস করিনা তবু কেন জানি ভাবতে ভাল লাগছে আজকের দিনটি আনন্দে কাটবে।
এই তর্কটা হচ্ছে ব্লগে ব্লগে বেশ কিছুদিন যাবত, বিষয়টা খুবই কনফিউজিং। কনফিউজিং শব্দটা ইচ্ছে করেই ব্যবহার করলাম কারণ আপনি ও আপনার গল্পের নায়ক নায়িকা অকারণে বিদেশী শব্দ ব্যবহার করেছেন তাই। যেমন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি। আমি কিন্তু এখন পর্যন্ত শেহরীন এর পক্ষেই আছি।
@আকাশ মালিক,
শুধু গল্পের নায়ক-নায়িকা না। আমাকেও যদি বলা হয় মেপে মেপে বাংলা বলতে, সেটা সম্ভব হবে না। ইংরেজি শব্দ চলে আসবেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলার বিভাগের একজন স্টুডেন্ট আমাকে বলেছিলো- ‘রাজু ভাই কিন্তু আমার কক্ষে কখনো আপনার পদচিহ্ন লেপন করেন নি’। কেন জানি না সেটা মনে হলে এখনো অদ্ভুত লাগে। এই বাংলাতো বলা সম্ভব না। রুমকে যদি কক্ষ বলতে হয় তাহলেতো মুশকিল। :))
রনিন-শেহরীন দু’জনের কথাতেই যুক্তি বা অযুক্তি দেখি। তবে, ব্যক্তিগতভাবে আমি অবাধ স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। ভাষা একেবারেই মানুষের নিজস্ব ব্যাপার। যার যেভাবে খুশি বলবে। কেউ নিয়ম নিয়ে আসলে কিংবা খবরদারি করলে কেন জানি সেটা মেনে নিতে পারি না। 🙂
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। 🙂