(এটি কোনভাবেই কোন মৌলিক লেখা নয়, তবে এটিকে অনুবাদ কর্মও বলা যাবে না, বরং গবেষকদের একাধিক রচনা থেকে পাওয়া ধারণাগুলিকে সংক্ষেপে একত্রীকরণের চেষ্টা, নিউ সায়েনটিস্টের সাম্প্রতিক “God Issue” কে প্রধান রেফারেন্স হিসেবে গণ্য করতে হবে)
এক গবেষণায় দেখা গেছে লাল ছোপ দেয়া হলুদ একটা কাঠিকে যদি গাঙচিল শাবকদের কাছ ধরা হয়, তারা ঐ কাঠিটাকেই তাদের মায়ের ঠোঁট ভেবে বসে। যে ব্যাক্তি কোন দিন জানে না, ধূমকেতু কি জিনিস, সে আকাশে হঠাৎ ধূমকেতু দেখলে, প্রথম বিস্ময়ের ঘোর কাটিয়ে সেটিকে মহাজাগতিক ঝাড়ু ভেবে বসতেই পারে। মহাজাগতিক ঝাড়ু ভাবাতে দোষ নেই, কিন্তু রূপকথার ডাইনির ঝাড়ু ভেবে নিলে? বোধশক্তিযুক্ত প্রাণী মাত্রেই ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য যে কোন বস্তুকে চেনার চেষ্টা করবে। শিশু অবস্থা থেকেই মানুষ শুধু দৃশ্যমান বস্তই নয়, অবস্তু বা বিমূর্ত ধারণাগুলিকেও চিনতে শুরু করে। কোন অচেনা বস্তু/অবস্তু ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য কিংবা চিন্তার অন্তর্ভুক্ত হওয়া মাত্রই সেটিকে শ্রেণীভুক্ত করে, বা অনুমান করতে চায়। জগত সম্বন্ধে, ইন্দ্রিয় সমূহ কিংবা বোধের মাধ্যমে প্রাপ্ত জগতের ধারণার সম্বন্ধে সম্যক ব্যাখ্যা চায়। এর সাথে মানুষের ধর্ম / ঈশ্বর চিন্তার যোগ আছে কি?
শিশু অবস্থায় মানুষের মধ্যে খুব দ্রুত কোন কিছু চিনে ফেলার একটা প্রবণতা থাকে। এর ফলে আমরা খুব দ্রুতই আমাদের জগত সম্বন্ধে ধারণা পেতে শুরু করি। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, ধর্ম কিংবা ঈশ্বর সম্বন্ধে ধারণাগুলিও দেয়া হয় সেই বাচ্চা বয়স থেকেই? বিজ্ঞানীদের মতে আমাদের বেশির ভাগ “জন্মসূত্রে বিশ্বাসী”। কিছু কু-বিজ্ঞানী বলতে চেষ্টা করেছিলেন, মানুষে তার জিনের মধ্যেই ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে আসে, “ঈশ্বর জিন”/ “the god gene” – সুন্দর একটা নামও দেয়া হয়েছিল। আমি অবশ্য ভেবেছিলাম জেনেটিক কোডের মধ্যে যীশুর ছবি পাওয়া গ্যাছে। যাই হোক, ভুয়া বায়োলজিস্টের ভাওতাবাজি না, কথা হচ্ছে মনোবিজ্ঞানীদের নিয়ে। নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী ড্যানিয়েল কানেম্যানের মতে, শিশু অবস্থায় এমন বোধশক্তির(cognitive system) সেইসব অংশ খুব দ্রুত বেড়ে ওঠে, যেগুলিকে বলা হয়, “maturationally natural”। এগুলির প্রভাবে একটা শিশু খুব সহজেই শিখে ফেলে কোনটা জড় বস্তু আর কোনটা নিজে থেকে নড়ে, কোনটা মানুষের মুখ, কোন মানুষের কণ্ঠস্বর ইত্যাদি ইত্যাদি।
মানুষ একেবারে শৈশব থেকেই, মোটামুটি ভাবে বলা যায় তার বোধশক্তি গড়ে উঠার প্রাথমিক স্তরেই, এই ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য(perceivable অর্থে) জগত সম্বন্ধে এক ধরণের কৌতুহল অনুভব করে, যার ফলে এর মধ্যে এক ধরণের বিন্যাস/নিয়ম (Design/Order) খুঁজতে আগ্রহী হয়। অন্তত কোন একটা উদ্দেশ্য(purpose) খুঁজতে চায়। দেখা গেছে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক বোধ সম্পন্ন মানুষের যেসব মৌলিক বিবেচনা থাকে তার প্রায় সবই একটা মানব শিশুর মধ্যেই বিদ্যমান। ঈশ্বর যদি থেকে থাকে তা এমন একটা কিছু যা কিনা এই ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য জগতের সবকিছু থেকে আলাদা, সর্বশক্তিমান, সর্বজ্ঞ, শ্বাশ্বত এরকম কিছু। শিশু অবস্থায় একটা মানুষের পক্ষে তার আশে পাশের ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য জগতের মধ্যে এইরূপ একটা সর্বশক্তিমান/সর্বজ্ঞ কোন সত্তার(agent) উপস্থিতি সম্পর্কে অনুমান করা কি সম্ভবপর? এরপর আরো আছে, এসবের সাথে জগতের সৃষ্টিপ্রশ্ন, উদ্দেশ্য ইত্যাদির মতন আপাত কঠিন দার্শনিক বিষয়সমূহ।
বিভিন্ন সংস্কৃতির বাচ্চাদের মধ্যে গবেষণা করে গেছে, এমন কিছু ব্যাপারে, যা তারা ঠিক ভাবে জানে না, বা করতে পারে না, তখন তারা এমন কিছু সত্তার নাম করেছে, যারা এগুলি জানে বা করতে পারে। অর্থাৎ সর্বজ্ঞ এক প্রকারের সত্তার অস্তিত্ব আছে, এমনটা চিন্তা করতে তারা সক্ষম। ফলে ছোট থেকেই যখন তাদের কে রুটি দেবতা কিংবা সাপমুখো ঈশ্বর, কিংবা অন্যান্য ঐশ্বরিক/অলৌকিক কল্পনার/ধারণার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়, তখন তারা সেগুলিকে গ্রহণ করে। তারা ভাবতে চায়/এটা ভাবতে সক্ষম কিংবা বলা যায় এরকম ভেবে থাকে, যে ব্যাপারটা তারা জানে না, বা করতে পারে না, সেটা এমন কেউ আছে যে জানে কিংবা পারে। ঠিক একই কারণে তারা রূপকথার গল্প শুনতে ভালোবাসে, যেখানে ইভান নামের এক বালক সমুদ্রের নিচে গিয়ে অনন্ত বসন্ত লাভ করে। একই ভাবে বিশ্বাস করে যখন বলা হয় মিশরের রাজপুত্র মুসার সাগর ভাগ করার কথা কিংবা বোরাকে করে ইসলামের নবীর মহাকাশ ভ্রমণের কথা। তবে এটা ঠিক এই সর্বজ্ঞ/সর্ববিদ্যাবিশারদ সত্তার স্থান টিকে তারা সবসময় “ঈশ্বর” দিয়ে পূরণ করে না। যেমন কারো কারো ক্ষেত্রে হয়ত, “আমার মা সব জানে”, বা “আমার বাবা সব পারে” এই পর্যন্তই।
সর্বজ্ঞতা/সর্বশক্তিমান হওয়া ছাড়া বিভিন্ন ধর্মে ঈশ্বর/দেবতার আরেকটা বিশেষ গুণ থাকেঃ তা হলো অমরত্ব বা শ্বাশ্বত সত্তার ধারণা। এই ব্যাপারেও শিশুদের বেশ সরলীকৃত একটা ঝোঁক থাকে- তারা ধরেই নেয় বাকী সব সত্তা অমর। ফলে শিশুদের ধর্মে দীক্ষিত করার জন্য তেমন বেগ পেতে হয় না, এই বিকাশমান অবস্থায় তাদের মধ্যে কাছাকাছি প্রবণতা স্বাভাবিকভাবেই থাকে। আর এই প্রবণতাকে অনেক গবেষক নাম দিয়েছেন, “natural religion”, যা কিনা যে কোন প্রকার যদু-মদু-কদু ধর্ম থেকে সম্পূর্ণভাবেই আলাদা। ফলে “জন্মসূত্রে বিশ্বাসী” শব্দবন্ধকে প্রচলিত ধর্মের অর্থে নিলে হবে না। জেনেটিক কোডে শ্রীকৃষ্ণ/যীশু/আল্লাহ লেখা থাকার সম্ভাবনা নাই।
এখন প্রশ্ন হতে পারে, ঈশ্বরচিন্তা কি তাহলে শিশুসুলভ? শিশু বয়সে পাওয়া ধারণা কি একজন প্রাপ্তবয়স্ক ছুড়ে ফেলে দিবে না? কিংবা ঐ সাপমুখো দেবতা কিংবা, রূপকথার গল্পের ইদূরখেকো ডাইনী/ভুত-পরীদের সাথে ইশ্বরধারণার পার্থক্যই বা রইলো কোথায়? বেড়ে উঠার সাথে সাথে সে যখন বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফলগুলি পাবে, সেগুলির সাথে সাপমুখো দেবতার যে সহাবস্থান ঘটেনা এটি আবিষ্কার করার পর কোন বোধশক্তিসম্পন্ন মানুষ অবশ্যই সাপমুখো দেবতা/ ইত্যাদিকে ছুড়ে ফেলে দিতে পারে। ছোট্ট বাচ্চাটা বিশ্বাস করে, সান্তা ক্লজ সত্যিই তার মোজার মধ্যে বালিশের গোড়ায় তার জন্য উপহার রেখে যান। কিন্তু কোনদিন হয়তো সে জেনে যায় এটি করেন আসলে তার পিতা। এতদ সত্ত্বেও দেখা গেছে অনেকেই শিশু বয়সে এই সব ধারণা, যেগুলিকে তারা গ্রহণ করেন নি পূর্ণবোধশক্তি সম্পন্ন হবার পরে সেগুলিরই দ্বারস্থ হচ্ছেন।
ধর্ম কিংবা বিজ্ঞান কোনোটাই কি এইসব ধারনাগুলিকে নিয়ে কালক্ষেপণ করে? আমাদের এদিকে দর্শনের সাথে ধর্মের সম্পর্ক অনেক প্রগাঢ় বলেই মনে হয়, ব্রাট্রান্ড রাসেলের এক লেখায় পেয়েছিলাম, দর্শনের অবস্থান এই দুটোর মাঝামাঝি। এই মাঝামাঝি কাজটা আসলে করে থিওলজি(theology)। থিওলজির কাজ হলো ধর্মীয় আজগুবি ধারনা ও দাবিগুলির তত্ত্বীয় দিকটা নিয়ে কাজ করা, যাতে বোধশক্তিসম্পন্ন মানুষের মধ্যে তৈরী হওয়া দ্বন্দ্বসমূহের মোকাবিলা করা সম্ভবপর হয় যৌক্তিকভাবে। উদাহরণ স্বরূপ, “ঈশ্বরের ত্রিমূর্তি ধারণা”, কিংবা “ইশ্বর সর্বভূতানাং(panentheism)” এইগুলি বোঝার জন্য সাধারণ মানুষকে একটু বেগ পেতে হয় বৈকি। এজন্যই দরকার পরে থিওলজি। তাহলে কি বেশিরভাগ ধর্মে যেগুলি টিকে আছে এই তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব মোকাবিলা করে? থিওলজিই কি তাহলে মানুষকে ধর্মের পথে টিকিয়ে রেখেছে। আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি, বেশির ভাগ মানুষের মধ্যে যে ধর্ম বিশ্বাস কাজ করে তা হলো ধর্মের জনপ্রিয় ভাষ্য। তারা কান দিয়ে শোনে ধর্মের তত্ত্বীয় ব্যখ্যা-ভাষণ কিন্তু মনে প্রাণে মানে ও পালন করে জনপ্রিয় ধারাটিকেই। হিন্দি সিনেমার আইটেম গানে নায়িকার শীর্ণ কটিদেশের মতন, সেইসবের দিকেই তারা আকৃষ্ট হয় বেশি। কারণ থিওলজিক্যাল দ্বন্দ্ব মোকাবিলা করে ধর্ম পালন কষ্টসাধ্য বটে। এই খানে দুনিয়ার বেশিরভাগ ধার্মিক সুবিধাবাদী।
অপর দিকে অনেক পাঁড় নাস্তিকের অন্ধ দাবি, বিজ্ঞান একদিন এই সব ধর্মগুলিকে উড়িয়েই দিবে। বিবর্তনবাদ কিংবা এরকম আরো আবিষ্কারগুলি তাদের এইসব ধারণার মূলে। অথচ জনপ্রিয় ধর্মবিশ্বাস মতে বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারগুলি ধর্মের জন্য কোন প্রকারের হুমকি নয়। (যেসব ধর্ম বিশ্বাস বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারকে অস্বীকার করে সেগুলি অনির্নায়ক) সব মিলিয়েই পাঁড় নাস্তিকদের দাবি সহসাই পূরণ হচ্ছেনা। প্রথমেই, “maturationally natural cognition” এর প্রভাবকে তারা অগ্রাহ্য করেন। সবাই হয়তো ধার্মিক নন, কিন্তু ধর্মীয় চিন্তাভাবনাগুলি অর্থাৎ ঐ রকম একটা সর্বজ্ঞ/শ্বাশ্বত/সর্বশক্তিমান সত্তা থাকতে পারে এই চিন্তাটা স্বাভাবিক। এর পরে, তারা খারিজ করে দেন থিওলজির আবেদন কিংবা সাফল্য। অথচ কোপারনিকাশ-গ্যালিলিও-ডারউইন দেখার পরেও যৌক্তিক মানুষের কাছে ধর্ম/ঈশ্বর টিকে আছে থিওলজির কল্পশক্তির কল্যাণে। আরেকটা ব্যাপারে নাস্তিকদের ভুল হয়, সেটা হলো, জনপ্রিয় ধর্ম পালন কিংবা থিওলজির দ্বন্দ্ব সামলানো, এই সবগুলির থেকে শক্ত কাজ হলো, “বিজ্ঞান সাধনা”। থিওলজি থেকে লক্ষ-হাজারগুণে জটিল এ বিষয়টিকে সাধারণ মানুষ এত সহজেই বুঝে নিতে পারবে, এমনটি ভাবাই ভুল। আরেকটা ব্যাপারে প্রকট ভ্রান্তি আছে, তা হলো, বিজ্ঞান সাথে ধর্মের তুলনা বা এর উল্টোটা। নাস্তিকের জন্য বিজ্ঞানের কাছাকাছি কিছু হলে হতে পারে একমাত্র থিওলজি, জনপ্রিয় ধর্ম কোনোভাবেই নয়।
কিছু কিছু জিনিস আমার জীবনে প্রায় ই ঘটে থাকে । যেমন বিয়ে বাড়ীতে কখন ই মুরগির রানের রোস্ট পাই না । গতকাল একটা মিলাদে গিয়েছিলাম এবং যথারীতি মিস্টির প্যাকেট পেলাম না। :-Y ধম দিয়ে ব্যাখ্যা করলে কপালের দোষ আর বিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা করলে?????
@পলাশ,
বিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা না করে টাকা দিয়ে কিনে খান
@পলাশ, পলির বর্জন নীতি :-s
@স্বাক্ষর শতাব্দ,
পলির বর্জন নীতি অনু্যায়ী আমি সবসময় বঞ্চিত হব কিন্তু আমি যদি নিজেকে বোসোন হিসােব ধরে নেই তাহলে আমার ক্ষেত্রে পলির বর্জন নীতি প্রযোজ্য হবে না ।
লেখা ভালো লাগছে। কাছাকাছি বিষয়ে আমার একটা লেখা ছিলোঃ বিশ্বাস কি মানব মনে প্রোথিত?
মানুষের স্বাভাবিক বিশ্বাসের যে ক্ষমতা, তার চেয়ে থিওলজি কঠিন, বিজ্ঞান আরও কঠিন। যেমন হিংস্র হবারও যে প্রবণতা, তার চেয়ে রুচি, সংস্কৃতি, ভদ্রস্থ হওয়া কঠিন। বিজ্ঞান দিয়া বিশ্বাসরে উড়ায়ে দেয়ার স্বপ্ন কল্পনারে পুনর্মূল্যায়ন করার কথা বলায় অনেকের এতো গাত্রদাহনের কারণ বুঝলাম না। তবে আপনার সেই কথিত ‘পাড় নাস্তিকদের’ বিরুদ্ধে আমার আপত্তি আরও গোঁড়ায়। ধর্মরে উড়ায়ে দেয়াটা কোনো লক্ষ্য হিসেবে গ্রহণযোগ্যই মনে হয় না আমার। আপনারে আমারে যে কামড়ায় না, সে কুসংস্কার করলো না কি করলো তাতে কার কী আসে যায়? যার আসে যায়, তারে নিয়াই দুশ্চিন্তা করার দরকারটা বেশি। অর্থহীন দুনিয়াটারে আগ্রাসনমুখী ধর্মবাদীরা একটা জেহাদি জোশে অর্থপূর্ণ বানানোর চেষ্টা করছিলো। এখন আপনার কথিত ‘পাড় নাস্তিকেরাও’ আরেকরকম অর্থপূর্ণ একটা দুনিয়া বানানোর একটা জেহাদি জোশ নিয়া নামছে। ভাগ্যিস বিজ্ঞান তার কচুটাও পুছবে না।
@রূপম (ধ্রুব), (F) লেখাটার লিংক দেয়ার জন্য ধন্যবাদ, আগে চোখে পড়ে নি।
স্কেপটিক পত্রিকার এই লেখাটা পড়ে দেখুন। খবরটা আসলেই উদ্বেগের। আমেরিকার মতো উন্নত দেশে বিজ্ঞান শিক্ষার ফল এমন হয় তবে আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে বিজ্ঞান শিক্ষার কারিকুলাম নিয়ে ভাববার অবশ্যই প্রয়োজন আছে।
@অনন্ত বিজয় দাশ, আমেরিকার শিক্ষাব্যাবস্থা যে উন্নত দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পশ্চাদপদ এটা তো আর কারো অজানা থাকার কথা না। এর সাথে অন্য কিছুর তুলনা না করাই বোধ হয় ভালো।
@বন্যা আহমেদ,
বন্যাদি,
বিশ্বের যে কোনো দেশের বিজ্ঞান শিক্ষার অধোগতির খবরে উদ্বিগ্ন হওয়া স্বাভাবিক। তারওপর সে দেশ যদি হয় আমেরিকা, যে দেশ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার আর প্রযুক্তির উৎকর্ষতা আর ব্যবসা-বাণিজ্যে বিশ্বের অন্য যে কোনো রাষ্ট্র থেকে অগ্রগামী, যার আছে এমআইটি’র মতো বিশ্ববিদ্যালয়, যার আছে নাসা বা সিলিকন ভ্যালি, কিংবা ধরেন টেকনোলজিক্যালি মোর অ্যাডভান্সড হলিউড, সেই রাষ্ট্র যখন বিজ্ঞান শিক্ষায় পতনোন্মুখ হয়, তখন দীর্ঘশ্বাসটা একটু গভীর থেকেই বের হয়ে আসে আর কী!
@অনন্ত বিজয় দাশ, অনেক ধন্যবাদ লিংকটার জন্য, শেষ প্যারাটাতে অনেকটা এই সমস্যাটাকেই উদ্দেশ করার চেষ্টা ছিল।
আপনার সংগৃহীত আলোচনাটা ভাল লাগছিল; কিন্তু সমাপ্তি প্যারায় এসে বিশেষ উদ্দেশ্যপূর্ণ মনে হল। বিজ্ঞানের অপ্রতিরোধ্য জয়যাত্রাকে সূক্ষ্মভাবে হলেও ছোট করে দেখানোর প্রবণতা রয়েছে এখানে। যেমনঃ
এমনটা কেন মনে হল? বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারগুলি ধর্মের জন্য হুমকি বলেই চার্চ তার জন্মাবধি বিজ্ঞানকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চেয়েছে, অবশেষে মানুষের প্রগতিশীলতার জয় হলে, এই চার্চই বিজ্ঞানকে বাইবেলে জোর করে যেনতেনভাবে ঢুকিয়ে দিতে চেয়েছে, আর সেটা করেছে বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারগুলোকে হুমকি মনে করে বলেই।
দেখুন আমি “maturationally natural cognition” বুঝি না; কিন্তু একটা জিনিস তেমন কোন গবেষণাপত্র না পড়েই বুঝতে পারি, তা হল, মানুষ চির অনুসন্ধিৎসু একটা প্রাণী। আর শিশু অবস্থাতেই তার সেই অনুসন্ধিৎসার পরম প্রকাশ ঘটে। এই অনুসন্ধিৎসা কিন্তু বিজ্ঞানের পক্ষে যায়, ধর্ম বা থিউলজির পক্ষে তা বিশেষ সহায়ক নয়।
এমনটা কেন হয়? আপনি বলছেন বেশিরভাগ মানুষের জন্য ধর্মই স্বাভাবিক প্রবণতা; কিন্তু আমার মনে হয় উল্টোটাই সত্য। বিজ্ঞান বা বৈজ্ঞানিক বিচার/বোধ এমনকি প্রতিটি সাধারণ মানুষের মাঝেই রয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ সাধারণ জীবনযাপন করতে চায়। তারা যে কারণে আপনার মতে থিয়োলজিকে এড়িয়ে যায়, আমার মতে ঠিক এক কারণেই বিজ্ঞানকে এড়িয়ে যায় এমনকি থিয়োলজির চেয়ে অনেক বেশী বিজ্ঞানমনস্ক হওয়া স্বত্বেও। সাধারণ মানুষের মাঝে ধর্মের অনেক সাংঘর্ষিক বিষয় নিয়ে প্রশ্ন উথিত হয়, কিন্তু তারা এগুলো এড়িয়ে যায়, নিজের বিজ্ঞানবোধকে অবচেতন মনেই দূরে সরিয়ে রাখে, কারণ ধর্মকে মেনে এবং প্রচলিত স্রোতে অবস্থান করে জীবনটা পার করে দেয়া যে অনেক সহজ! গ্যালিলিও, ব্রুনো হলে হয়তো তারা কঠিন সাধনার কথা ভাবতে পারতেন!
@কাজি মামুন, ধন্যবাদ, উত্তর দেয়ার চেষ্টা করছি,
“এমনটা কেন মনে হল?” – আমার আশে পাশের অসংখ্য নমুনা দেখে, বিজ্ঞানের আবিষ্কারগুলি এদের জন্য কোন হুমকি না, থিওলজি/জনপ্রিয় ধর্মের গালগল্পই এরা গিলে। একজনের কথা বলি, উনাকে জিজ্ঞেস করলাম, বিবর্তনবাদ সম্বন্ধে মতামত কি? ব্যাক্তি ব্যাক্টেরিয়া সংক্রান্ত উচ্চতর গবেষণায় রত। উনি সরাসরি অভিজিৎ রায়ের রেফারেন্স দিলেন, কিন্তু দেখা গেলো, ব্রাহ্মণ্যবাদ ছাড়তে পারেন নাই। অর্থপূর্ণ হলো?
“আপনি বলছেন বেশিরভাগ মানুষের জন্য ধর্মই স্বাভাবিক প্রবণতা; কিন্তু আমার মনে হয় উল্টোটাই সত্য।” – এখনো পর্যন্ত তা নয়। আরেকটা কথা, থিওলজি কোনভাবেই বিজ্ঞানমনস্ক না, কল্পনামনস্ক। ধন্যবাদ।
স্ববিরোধীতাহীনতাই যেখানে দর্শনের মূল ভিত্তি সেখানে স্ববিরোধী ধর্মের সাথে দর্শনের সম্পর্ক অনেক প্রগাঢ় বলেই মনে হয় কিভাবে??আমরা যারা কম জানি তাদের জন্য বিশদ ব্যাখ্যার প্রয়োজন ছিল ।
:guli:
@মাসুদ, “আমাদের এদিকে” এই শব্দ দুইটির দিকে বিশেষ খেয়াল করলে কি অর্থে কোন পার্থক্য হয়?
@স্বাক্ষর শতাব্দ
‘বিজ্ঞানের কাছাকাছি’ বলতে কী বুঝাতে চেয়েছেন একটু ব্যাখ্যা করবেন কী?
আপনার কী মনে হয় না বিজ্ঞানের জটিলতা নয় বরং জন্মানোর পর থেকেই একটা শিশুর মাথা ধর্ম দিয়ে ধোলাই করে দেওয়া হয় বলেই তার কাছে ধর্মের মত এত কাল্পনিক এবং অযৌক্তিক একটা ব্যাপারও সহজাত হয়ে ওঠে? ছোটবেলা থেকেই স্কুলের শিক্ষাব্যবস্থায় বিজ্ঞানভিত্তিক কারিকুলাম যোগ করা হলে শিশুদের মধ্যে বিজ্ঞানমনষ্কতা বাড়তে বাধ্য। মানছি ১০০% শিশুই হয়তো বিজ্ঞানমনষ্ক হয়ে গড়ে উঠবে না, কিন্তু শতকরা হার যে আরও বাড়বে সে নিয়ে তো সন্দেহের অবকাশ নেই। কি বলেন?
@বন্যা আহমেদ, এই টুকু যোগ করেছি, কোন সুবিধা হয় তাতে? 🙂
“আপনার কী মনে হয় না বিজ্ঞানের জটিলতা নয় বরং জন্মানোর পর থেকেই একটা শিশুর মাথা ধর্ম দিয়ে ধোলাই করে দেওয়া হয় বলেই তার কাছে ধর্মের মত এত কাল্পনিক এবং অযৌক্তিক একটা ব্যাপারও সহজাত হয়ে ওঠে?” – হ্যা এই ব্যাখ্যা ঠিক মনে হয়। তবে এটাই একমাত্র সম্ভাবনা মনে হয় না, গবেষণার নমুনাগুলি কিভাবে নির্বাচন করা হয়েছে তা খুঁজে দেখা যেতে পারে।
@বন্যা আহমেদ, “নাস্তিকের জন্য” – এইটুকু যোগ করেছি শেষ লাইনে, আগের কমেন্টে আসে নি কোন কারণে 🙁
@স্বাক্ষর শতাব্দ, আপনি কিন্তু আমার প্রথম প্রশ্নের উত্তর দেননি। তানভীরুলও আপনাকে থিওলজির অর্থটা পরিষ্কার করতে বলেছিলেন সেটারও উত্তর দিলেন না। থিওলজির মত একটা কাল্পনিক এবং অবৈজ্ঞানিক ব্যপারকে কী করে টেনে বিজ্ঞানের ‘এত কাছাকাছি’ নিয়ে আসলেন সেটার ব্যাখ্যাটা তো অন্ততপক্ষে দিবেন!
@বন্যা আহমেদ, “এত কাছাকাছি” কি লেখায় কোথাও আছে? শেষ বাক্যে ওরকম একটা অর্থ হতে পারে, বিধায় ওটি কিন্তু সংশোধন করে দিয়েছি। আপনি খেয়াল করেন নি, কিংবা আরেকটু সংশোধন দরকার হতে পারে, চেশHটা করি। থিওলজি নিয়ে বিশদ কিছু বলার নেই, লেখার মূল উদ্দেশ্য থিওলজি নয় বরং ন্যাচারাল রিলিজিওন বলতে যদি কিছু থাকে সেটা। আমি আরো সংশোধন করার চেশHটা করছি, আপনাকে ধন্যবাদ।
@স্বাক্ষর শতাব্দ,
দেখুন, যারা নাস্তিকতার দর্শনটাকে বুঝে নাস্তিক হয় তাদের কাছে থিওলজি এবং বিজ্ঞানের পার্থক্যটা খুব পরিষ্কার, এদের দূরত্ব এতটাই বেশী যে ‘কাছাকাছি’ শব্দটা এখানে কোনভাবেই ধারে কাছে আসতারেনা :-Y । হোলি ট্রিনিটিকে আপনি ‘জনপ্রিয় ধর্ম’ দিয়েই ব্যাখ্যা করুন আর মহাতাত্ত্বিকতার ছদ্মবেশ পড়িয়ে গালভরা ‘থিওলজি’ দিয়েই ব্যাখ্যা করুন ভূত ভূতই থাকবে, মামদো ভূতের ব্যাখ্যা তো আর বিজ্ঞান দিতে আসবে না। এখানে আরেকটা গুরুতর সমস্যা আছে বলে আমি মনে করি, যারা থিওলজির বাগাড়ম্বর দিয়ে ধর্মের অযৌক্তিকতাকে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ঢেকে রাখে তারা আসলে উপকারের চেয়ে ক্ষতিই করে বেশী। সাধারণ মানুষ এগুলোতে আরও বিভ্রান্ত হয়, বড় বড় কথার মধ্যে হারিয়ে গিয়ে ভাবে থিওলজি কীনা জানি বিজ্ঞানের ‘কাছাকাছি’ চলে আসলো, এইতো পাওয়া গেল ধর্মের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি! জাকির নায়েকদের মত লোকেরা কিন্তু সেটাই করে।
@বন্যা আহমেদ, হোলি ট্রিনিটির কোন ব্যাখ্যা না হলেও একজন ধার্মিকের চলে যায়। আর এইসব ব্যাখ্যাও কোনদিনই বিজ্ঞান সম্মত হয় না, বরং “বিজ্ঞানের আলোকে কোরান” এই জাতীয় গোঁজামিলি ধরণের হয়। ফলে এরকম একজন ধার্মিককে নাস্তিক কি সঠিক ভাবে উদ্দেশ করতে পারে? পারলে কিভাবে পারে?
@বন্যা আহমেদ, এই লেখার শেষ প্যারার উদ্দেশ্য অনেকেই ভুল ভাবে নিয়েছেন (সম্ভবত শব্দ চয়ন বা অন্য কোন কারণে, ঠিক করার চেশHটা করছি), নাস্তিক কে গাল দেয়া, কোনভাবেই উদ্দেশ্য হতে পারে না, বরং ন্যাচারাল রিলিজিওনের এসপেক্ট টাকে সঠিক ভাবে উদ্দেশ করতে না পারার কারণে যদি নাস্তিকের উদ্দেশ্য ব্যাহত হবার কোন সম্ভাবনা থাকে সেইটাকে নির্দেশ করার চেশHটা। আপনাকে আবারো ধন্যবাদ।
জনপ্রিয় ধর্ম পালন আর থিওলজির দ্বন্দ্ব ব্যাপারটা বিস্তারিত জানতে চাই, একটু ব্যাখ্যা করবেন কি?
@আকাশ মালিক, যদি ধরে নেয়া যায়, মানুষের ঐ প্রবৃত্তি স্বাভাবিক, তাহলে আমরা দেখি, শৈশব পার হতেই দুনিয়ার বেশিরভাগ এক ধরণের ধর্মবিশ্বাস পেয়ে যায়, এর পরের তার যদি কোন রকমের বোঝাপড়ার দরকার পরে সেটা দেয় থিওলজি। নাস্তিকতা থিওলজির এই কল্পনাশক্তিকে খুব আমলে নেয় না, বলে বিশ্বাসীকে টলিয়ে ধর্মকে নাই করে দেয়াটা খুব সহসাই হয়ে উঠে না।
এরকম বোঝাপড়া আর কি। ধন্যবাদ।
ধর্ম বিশ্বাস টা যেভাবে মানুষের মধ্যে কাজ করে তা থেকে এটা যে একটা জীনগত সমস্যা তা বলাটা খারাপ কিছু হয় নি। এটা আসলেই জীনের মত কাজ করে মনে হয় মানুষের মধ্যে ধর্মীয় জীন আছে। এখন এটা জীববিজ্ঞানের জীন নাকি ধর্মের জ্বীন সেটা বলা দু:সাধ্য।
‘থিওলজি’ বলতে কি বোঝাচ্ছেন পরিষ্কার হয়নি। আরেকটু বিশদে বলবেন কি?
আসুন একটা এক্সপেরিমেন্ট করি।
দুইটা শিশু, একজনকে বড় করা হবে সম্পূর্ণ ধর্মীয় পরিবেশে, আরেকজনকে থিওলজীর ধারণা বিহীন পরিবেশে, ঈশ্বরকে যেখানে তুস্তি বা গালি কোনটাই দেয়া হবে না, দুনিয়ার অনেক তুচ্ছ বিষয়বস্তুর মতও যেগুলো কখনো রেফার করা হয় না, সেইরকম পরিবেশে।
ফলাফল হবে, একজন ধার্মিক, অথবা প্রগাঢ় থিওলজিস্ট, আরেকজন ঈশ্বর সম্পর্কে উদাসীন, তার অস্তিত্ব আছে এই কথা ভাবা তো দূরের কথা, তাকে নিয়ে দ্বন্দ, আছে কি নেই সেই চিন্তা করতেও আগ্রহী হবে না। ঈশ্বর চলে যাবে তার অবেহেলিত বিষয়ের তালিকায়। সেই শিশুর ক্ষেত্রে থিওলজি নিয়ে দ্বন্দের অবকাশ থাকছে কোথায় তাহলে?
একজন পরিপূর্ণ মানুষের আস্তিক থেকে নাস্তিকের পরিণত হবার মধ্যবর্তী স্তরটিকে আমার দৃষ্টিতে থিওলজী সংক্রান্ত দ্বন্দের স্তর বলে মনে হয়। দ্বন্দটা তখনই আসে যখন মানুষ জাস্টিফাই করার চেষ্টা করে , আসলেই ঈশ্বর আছে নাকি নেই? ঈশ্বর বাস্তব নাকি রূপকথা?
পুরো প্রবন্ধটাই একজন শিশুর মানসিক বিকাশ বা কগনিটিভ ডেভেলপমেন্টের ফেজে থিওলজীর উপস্থিতি উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্নটা হচ্ছে, যে শিশুকে পরীক্ষার জন্য নেয়া হচ্ছে সে শিশু কি মোটেও নিরপেক্ষ পরিবেশে বড়ো হওয়া শিশু? এই বিশ্বের শতকরা ৯৫% ভাগ বা তারও বেশি ঈশ্বরে বিশ্বাস করে, তারা তাদের শিশু যে কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে যখন অপারগ হয় তখন তারা বলে ঈশ্বর জানে। শিশু অনুকরণের মাধ্যমে শিখে, তার কগনিটিভ ডেভেলপমেন্ট আসেই অনুকরণের মাধ্যমে, স্বাভাবিক ভাবেই শিশুটিও রেফার করতে শিখে যায়, যা ব্যাখ্যাতীত তা ঈশ্বর জানে। তাদের কাছে তথাকথিত ঈশ্বরকে পৌছে দিচ্ছে তার পরিবেশই। এই শিশু কগনিটিভ ডেভেলপমেন্টাল ফেজকে ব্যবহার করে থিওলজীর অস্তিত্ব, থিওলজিকাল দ্বন্দের অস্তিত্ব অনুধাবণ করার কি আদৌ কোন ভিত্তি আছে?
আমার দ্বিতীয় আপত্তি, বিজ্ঞান দিয়ে থিওলজীকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টায় বা থিওলজীকে বিজ্ঞানের কাছাকাছি চিন্তা করায়। বিজ্ঞান যে মানুষ নিরপেক্ষ মনোভাব থেকে পড়ে না, তার বিজ্ঞানশিক্ষাকেও আমি বায়াসড বলে ভাবি। একজন মানুষের বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ পড়ার উদ্দেশ যদি হয়ে থাকে ঈশ্বর আছে কি নেই তাই খোঁজা, তাহলে যে বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধের ফাঁকে ফাঁকে ঈশ্বরকেই খোজে, বিজ্ঞানের মূল মেসেজটা তার চোখের অগোচরেই রয়ে যায়। সে কখনই দেখতে পায় না, বিজ্ঞানের সৌন্দর্য্য। কারণ সে ঈশ্বর চিন্তায় বুঁদ!
বিবর্তন যদি পড়তে হয়, তাহলে নিরপেক্ষাভাবে বিজ্ঞানকে জানার, নতুন কে জানার জন্য পড়তে হয়, পদার্থবিজ্ঞান পড়তে হলে তাও বিজ্ঞানকে জানার জন্যই পড়তে হয়। ঈশ্বরকে জানার জন্য যে পদার্থবিজ্ঞান পড়ে যে শেষ অব্দি থিওলজীর দ্বন্দেই দোল খায়, তার দ্বিধা কাটেনা।
আপনি দীর্ঘদিন ধরেই থিওলজীর দ্বন্দে আছেন বলে জানি, এই সংশয়বাদকে উৎসাহিত করি, সত্যতা যাচাই সত্য অনুধাবণের পথিকৃৎ। কিন্তু মন যদি থিওলজীর দ্বন্দে অবসেসড হয়ে থাকে, দ্বন্দ কি কাটবে?
থিওলজী একটা দার্শনিক অবস্থা, নয় আস্তিক, নাস্তিক, আস্তিক এসব যেমন একেকটা দার্শনিক অবস্থান।
আমি দর্শনকে বিজ্ঞানের সাথে তুলনা করতে নারাজ। চোখ যখন খোলে, তখন খুলবে, বোধের উদয় হবে। চোখ বন্ধ করে রাখতে চাইলে, কেউ খোলাতে পারবে না।
ধর্মগুলো তখনই বিতর্কিত হয়, যখন তারা বিজ্ঞানকে ভুল বলে, বা বিজ্ঞানকে ব্যবহার করে ধর্ম সত্য সেটা প্রমাণ করার চেষ্টা করে। এখন বিজ্ঞানের রেফারেন্স দিয়ে যত ব্লগে ধর্মকে ইনভ্যালিড প্রমাণ করতে দেখা যায়, তার শুরুটা মনে হয় ধর্ম-এর কারণেই, বিজ্ঞানময় কিতাব, যা যা হচ্ছে তা সবই আগে বলে দেয়া আছে কিতাবে। শুধু কুরানের অবস্থা এমন তা নয় কিন্তু, বাইবেল বেদও এমন দাবী করে। খাল কেটে কুমীর এনে ক্রুসেড ক্রুসেড খেলার কোন মানে দেখি না। বিজ্ঞানের কোন দায় পড়েনি ধর্মের বিরুদ্ধে লড়ার। যার দার্শনিক অবস্থান যাই হোক না কেন, বিজ্ঞান তার যায়গায় নিরপেক্ষ, সত্য। কে মানলো, কে মানলো না, কে দ্বন্দে থাকলো সেটা সেইসব ব্যক্তির ব্যক্তিগত ব্যাপার।
@নীল রোদ্দুর, ধন্যবাদ পড়ার জন্য। প্রথমেই আপত্তিগুলি নিয়ে বলি,
“এই শিশু কগনিটিভ ডেভেলপমেন্টাল ফেজকে ব্যবহার করে থিওলজীর অস্তিত্ব, থিওলজিকাল দ্বন্দের অস্তিত্ব অনুধাবণ করার কি আদৌ কোন ভিত্তি আছে?”
নাই, এরকম কিছু করার চেষ্টাও নেই। থিওলজি কিন্তু ধার্মিকের কাজ, তাও প্রচলিত ধর্মে বিশ্বাসীর, নাস্তিকের কিংবা সংশয়বাদীরও না। “আপনি দীর্ঘদিন ধরেই থিওলজীর দ্বন্দে আছেন বলে জানি” – এটা সবৈর্ব ভুল অনুমান। থিওলজি ধর্মের নানান ধরণের আজগুবি ব্যাপারগুলি নিয়া “বিশ্বাসীর” মধ্যকার দ্বন্দ্ব দূর করে, সংশয়ী কিংবা নাস্তিকের সাথে কোন সম্পর্ক নাই এই দিক দিয়া। এইটার প্রকৃষ্টতম উদাহরণ যীশুর মৃত্যুর পর ও রেনেসার পরের ক্রিস্টান পাদ্রীরা।
এর পরে, ” বিজ্ঞান দিয়ে থিওলজীকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টায় বা থিওলজীকে বিজ্ঞানের কাছাকাছি চিন্তা করায়”, এখানে তুলনামূলক অর্থে কাছাকাছি বলা আছে, কাছাকাছি হবার প্রশ্নই আসে না। নাস্তিকরা কি কি ভুল করতে পারে, তার চার নম্বরটাতে পরে এই আপত্তিটা।
“বিজ্ঞানের কোন দায় পড়েনি ধর্মের বিরুদ্ধে লড়ার” কোথাও কি এমন কিছু বলা হয়েছে? থিওলজি মোটেও বিজ্ঞানের মধ্যে ঈশ্বর খোঁজ করে না, হয় টেক্সট অথবা পাঠে ভুল আছে। দুঃখিত।
@স্বাক্ষর শতাব্দ,
উহু, এই কথাটা আমি আপনার টেক্সট সম্পর্কে বলিনি, বলেছি যারা বিজ্ঞান আর ধর্মকে পরষ্পরের বিপরীতে দাড় করাচ্ছে তাদের সম্পর্কে। যার ইচ্ছে হয়ে সেই বিজ্ঞানকে দাড় করাচ্ছে ধর্মের বিপরীতে, যার বিজ্ঞানকে মানতে ইচ্ছে হচ্ছে না, কারণ এটা তাদের জনপ্রিয় ধর্মের বাণীকে সমর্থন দিচ্ছে না, সেই বিজ্ঞানকে ভুল/ভ্রান্ত বলে আখ্যা দিচ্ছে। এই দুইদল সম্পর্কে বলেছি। তারা কেউই এটা বুঝতে চায় না, বিজ্ঞানের কোন দায় পড়েনি ধর্মের বিরুদ্ধে ক্রুসেডে নামার। বিজ্ঞানের ভিন্নতর উদ্দেশ্য আছে, সত্যকে অনুসন্ধান করা।
@নীল রোদ্দুর, (F)
@নীল রোদ্দুর,
অত্যন্ত চমৎকার মন্তব্য। আপনার মন্তব্যই লেখাটির সমালোচনার সারকথা।
🙂
একেবারে সঠিক পর্যবেক্ষণ। উনার সাম্প্রতিক লেখাগুলো দেখলে মনে হয় উনি আপনার পর্যবেক্ষণমতো ‘ থিওলজীর দ্বন্দ্বে অবসেসড’ হয়ে থাকতে চান। এরকম অবসেসড হয়ে থাকলে দ্বন্দ্ব বোধ করি কাটবে না। পাঠকেরা আপনার মতোই উনার লেখার একটা প্যাটার্ণ খুঁজে পেয়েছেন। আস্তিকদের দুর্বলতার পাশাপাশি নাস্তিকদেরও একপ্রস্থ গালাগালি দিয়ে লেখা শেষ করা। এই লেখাটিও খুব একটা ব্যতিক্রম নয়। লেখাটির শেষ প্যারাগ্রাফ খুব তাৎপর্যময়। অথচ যে সমস্যাগুলো নাস্তিকদের সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেগুলো কতটা নাস্তিকদের সমস্যা সেগুলো নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। সমতল এবং পৃথিবী কেন্দ্রিক বাইবেলীয় ধারণা, ভার্জিন বার্থ রূপকথা, পৃথিবীর বয়সের ভ্রান্ত বাইবেলীয় অনুমান সহ অনেক কিছুই বিজ্ঞানের কষ্টিপাথরে যাচাই করে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা হয়েছে, ভবিষ্যতে আরো হবে। অবশ্যই একটা কারণ আছে কেন পৃথিবীর লিডিং সায়েন্টিস্টেরা গডকে অস্বীকার করেন, এবং এই ট্রেন্ড যতদিন যাচ্ছে ক্রমবর্ধমান। ধর্মগুলো নৈতিকতার নামে পুরোন আমলের রদ্দিমার্কা জিনিস শেখাতে চায়। মানুষের উদ্ভব সম্বন্ধে ভুল ধারনা দেয়, বিজ্ঞানের নানান অপব্যাখ্যা হাজির করে। আর জিহাদ, ধর্মযুদ্ধ, জাতিভেদ, নিম্ন বর্ণের উপর অত্যাচার কিংবা নারীদের অন্তরীণ রাখার বৈধতা – এগুলো তো আছেই। বিজ্ঞানের অগ্রসরতার সাথে সাথে যদি কোন ধর্মীয় রূপকথা বাতিল হয়ে যায়, তাতে দোষটা নাস্তিকদের ঘারে পড়া উচিৎ নয়।
@অভিজিৎ,
(Y)
@অভিজিৎ,
লেখাকে লেখার বিচারে যাচাই না করে লেখকের অনুক্ত অবস্থান নিজে নিজে বোঝার চেষ্টা করে সেটার উপর ভিত্তি করে লেখার ভেতরে প্যাটার্ন খোঁজাটা অদ্ভুত ঠেকলো। লেখাটায় একটা বক্তব্য আছে। যুক্তি প্রদানের চেষ্টা আছে। আলোচনাটা প্রতিযুক্তির নিরীখে হওয়াটা কাম্য, এমন লেখকের মন বোঝা আর প্যাটার্ন ভিত্তিক না হয়ে।
@রূপম (ধ্রুব), (Y)
@রূপম (ধ্রুব),
আপনার কথায় যুক্তি আছে। কিন্তু অন্যভাবেও ভাবার অবকাশ থাকে। কারণ একটা সিকোয়েন্স এর এমন কিছু অর্থ থাকা সম্ভব যেটা শুধু সিকোয়েন্সের সিম্বলগুলোর উপর একটা একটা করে ফোকাস করলে চোখে পড়ে না।
@তানভীরুল ইসলাম,
লেখাকে প্রথমত স্বতন্ত্র লেখা হিসেবে বিচার করাটা কাম্য। সিকোয়েন্সের যে বয়ান, সেটা যদি লেখার স্বতন্ত্র বিচারাগত বয়ানটাকে উদ্দেশ্য করতে অক্ষম হয়, আবার লেখার স্বতন্ত্র বিচারও যদি করা না হয়, তখন কেবল সিকোয়েন্সগত বয়ান সম্ভবত লেখার প্রাথমিক দাবিকে খাটো করে। লেখার স্বতন্ত্র বক্তব্যটা যদি আদৌ আলোচনাযোগ্য হয়, তাহলে কোথায় কীসের প্যাটার্ন মিলে গেলো তাতে লেখার ওই স্বতন্ত্র বক্তব্যের কী এসে যায়?
প্যাটার্ন খোঁজার মাঝে সহসাই মানুষ আর তার ভাবনাকে স্টেরিওটাইপিং ও অগ্রাহ্য করার এক মহান গাঁথা রচিত হয়। ফলে লেখার সিকোয়েন্স বোঝা আমার কাছে তেমন গ্রহণযোগ্য আলোচনা এখন পর্যন্ত মনে হয় না। এমন কি সিকোয়েন্স থেকে প্যাটার্ন বোঝাটা যদি ভ্যালিডও হয়, সেটার খণ্ডন লেখার স্বতন্ত্র বিষয়টায় প্রতিযুক্তি উপস্থাপনের মাধ্যমেই সম্ভব বলে বোধ করি। এখন পর্যন্ত সেই বোধের ব্যত্যয় ঘটে নি। (আমার কাছে) আমলে নেওয়ার মতো প্যাটার্ন যদি কিছু থাকে, সেটা হতে পারে এই-ই যে লেখকের লেখাসকল বারংবার মোক্ষম প্রতিযুক্তি দ্বারা খণ্ডিত। এই লেখার বক্তব্যে যদি সমস্যা থাকে, সেটা কি প্রতিযুক্তির মাধ্যমেই খণ্ডানো সম্ভব নয়? আর সিকোয়েন্স যদি খুঁজতেই হয়, তাহলে কি শতভাগ নিশ্চয়তার সাথে সেটা করা সম্ভব, যাতে করে নিশ্চিত করা যায় যে লেখকের উপর ভুলবশত কোনো অন্যায় করা হচ্ছে না? প্যাটার্ন খোঁজার বা অন্তত সেটা প্রকাশ করার বিপত্তিটাই তো বেশি বলে দেখা যাচ্ছে।
@রূপম (ধ্রুব),
বারবার খণ্ডিত হবার পরেও প্রতিটি লেখায় একই (কু)যুক্তির পুনরাবৃত্তি হতে থাকলে প্যাটার্ণ ধরা পড়ে বই কি। কিন্তু সেই প্যাটার্ণ-এর উল্লেখ দোষোনীয় হিসেবে চিহ্নিত করে কেবল ম্যাসেজের (যে দুর্বল ম্যাসেজগুলো এর আগে বহুবারই খণ্ডন হয়েছে) দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ এবং কেবল তা নিয়েই পড়ে থাকার উপদেশ প্রদানটাকেও কেউ কিন্তু একটা প্যাটার্ণ হিসেবে চিহ্নিত করতে পারেন। কিন্তু এই পরের প্যাটার্ণ যে উত্তম, সেরকম কোন জোরালো প্রমাণ এক্ষেত্রে আমি অন্ততঃ পাইনি। 🙂
@অভিজিৎ,
আপনার কাছে সবিনয়ে জানতে চাইছি, স্পষ্ট করে এই লেখার ‘কু’যুক্তিটা ঠিক কী জানাবেন? লেখকের অনুক্ত কিন্তু আপনার ‘খুঁজে পাওয়া’ এমন মিলজুলের উল্লেখ ব্যতিরেকে কেবল টেক্সটের সাপেক্ষে বলুন। কোন কথাগুলো একেবারে কুযুক্তিতে পর্যবসিত? লেখার কুযুক্তি বুঝতে নিশ্চয়ই ইতিহাস পাঠ আবশ্যক হয় না।
আরো যদি জানান যে আপনার মতে এই লেখায় আলোচনাযোগ্য বক্তব্য ছিলো নাকি না?
আর আপনার কথা শুনে মনে হয়েছে যে আপনি স্বাক্ষর শতাব্দের মন আর তার লেখার প্যাটার্ন বুঝে ফেলেছেন। সত্যিই কি তাই? আপনার এই বোঝা সম্পর্কে কি আপনি এতোটাই নিশ্চিত যে এতে ভুলবশত স্বাক্ষর শতাব্দের উপর অন্যায় হচ্ছে না সেটা আপনি হলফ করে বলতে পারেন? নাকি ওর উপর অন্যায় হলে আপনি কেয়ার করেন না?
প্যাটার্ন খোঁজার একটা টিউটোরিয়ালও যদি দিতেন, কীভাবে নিশ্চিতভাবে লেখকের মন ও তার লেখার প্যাটার্ন বোঝা হয়ে যায়। আপনার অনুক্ত উদ্দেশ্য কেউ বোঝার চেষ্টা করে আপনার লেখার বিশেষ কোনো প্যাটার্নকে সামনে এনে আপনার গোটা লেখাকে ঘায়েল করতে চাইলে আপনি সেই সমালোচনাকে কীভাবে নেবেন? সমর্থন করবেন সমালোচনা করার এমন চর্চাকে? আর মানুষ প্যাটার্ন খোঁজায় কতোটা ফ্রিক, সেটা নিশ্চয়ই আপনাকে বোঝানোর প্রয়োজন পড়বে না। মানুষ মেঘের মাঝে খরগোশকে পায়, কাঁচের উপর দেখতে পায় মাতা মেরিকে। কোরানে পায় ঊনিশের প্যাটার্ন। ওটা কি কোরানের গুণ না দ্রষ্টার?
লেখকের মন বুঝে এভাবে লেখার প্যাটার্ন খোঁজার চর্চাটা কতোটা নির্ভরযোগ্য বা অনুসরণীয়?
মানে নিজে নিজে একবার একটা প্যাটার্ন পেয়ে গেলে তখন কেবল লেখার ম্যাসেজের দুর্বলতা দেখানোর চর্চাটা আর উত্তম নয়? এর চেয়ে উত্তম চর্চাটা তাহলে আপনার জানা আছে? কী সেটা যদি বলতেন … মন্তব্যের শুরুতেই লেখার টেক্সট নিয়ে কথা বলার আগে অভিযুক্ত প্যাটার্নটা আগে উল্লেখ করে নিয়ে গোটা লেখাসমেত লেখককে বাতিল করে রাখার চর্চা নাতো আবার? 🙂
@রূপম (ধ্রুব),
ন্যায় অন্যায়ের বিচারের ভারটা না হয় নিজের উপর নাই তুলে নিলেন। আপনার দেখানো রাস্তায় না হাটলেই সেটা অন্যায় হবে বলে আমি মনে করি না। আপনাকে বার বারই বলছি (কু)যুক্তির পুনরাবৃত্তির কথা, আপনি আমলেই নিচ্ছেন না। আপনার অবগতির জন্য উনার আগের একটা লেখার লিঙ্ক দিচ্ছি, যেটি সম্ভবতঃ গ্রাউণ্ড জিরো মসজিদ বিতর্ক নিয়ে লেখা হয়েছিলো। সেখানে পাঠকদের প্রতিক্রিয়াগুলো একটু পড়ুন (হ্যা সবগুলো মন্তব্য পড়ুন, স্পেশালি নীচের দিকের মন্তব্যগুলো)। সেই সাথে লেখকেরগুলোও। ‘জাকির ভাই আসছেন, খিচুরী খাওয়াইতে চাইলে রাস্তায় নামেন‘ টাইপের মন্তব্যগুলো এই লেখকেরই উদর কিংবা মস্তিষ্কসঞ্জাত ছিলো কিন্তু।
আমি আমার উত্তর এখানেই দিয়েছিলাম, হ্যা – লেখকের মত কাউকে জাকির নায়েক ফায়েক না বানিয়েই। তাতে খুব যে বেশি লাভ হয়েছে বলা জাবে না। এই লেখাটার প্রসবই তার প্রমাণ। বার বার একই কথা বলতে ইচ্ছে করে না। আর ন্যায় অন্যায়ের প্রশ্ন যখন তুলেছেনই, সেই ন্যায় অন্যায় বিচারের সুতিকাগার যে আদালত সেখানেও কি আসামীর প্রায়োর মোটিভ, আগেকার ক্রাইমের ইতিহাস, ক্রাইমের উদ্দেশ্য এগুলো আমলে নেয়া হয় না? নাকি সব সময়ই শূন্য থেকে শুরু করা হয়? কেন আগের মোটিভ বিচার করা অন্যায় হবে?
বলেছিই তো। কুযুক্তির পুনরাবৃত্তির ইতিহাস, নির্দেশনা এবং কনটেক্সট। সেগুলো বাদ দিয়ে রাবাহুত হয়ে এসে ‘এ পথে হাটলে ন্যায়,আর ঐপথে অন্যায়’ কিংবা ‘একটি আলপিনের উপর তাল না হারিয়ে কয় হাজার পিঙ্ক ইউনিকর্ণ নাঁচতে পারবে’ টাইপের তাত্ত্বিক আলোচনায় আমার ইচ্ছে নেই। আরো একটা কথা – যে বিষয়টা নিয়ে আপনার আপত্তি সেটার সূত্রপাত আমার মন্তব্যে নয়, নীল রোদ্দুরের। ‘আপনি দীর্ঘদিন ধরেই থিওলজীর দ্বন্দে আছেন বলে জানি, …’, – এটা ছিলো লেখককে নিয়ে নীল রোদ্দুরের পর্যবেক্ষণ। অর্থাৎ এখানে ব্লগের বাইরেও ‘জানার’ একটা ইঙ্গিত আছে, যেটা লেখকও অস্বীকার করেননি। আমার বক্তব্য মূলতঃ নীল রোদ্দুরেরর পর্যবেক্ষণ এবং লেখকের সাথে আমার পুর্বতন আলোচনা এবং বিতর্কের কন্টেক্সটে দেখলে বাধিত হব।
@অভিজিৎ, উক্ত পোস্টে আমার আচরণ সংযত ছিল না, সেটা স্বীকার করছি, এবং ক্ষমা প্রার্থনা করছি, মুক্তমনার সকল পাঠকের কাছে। সম্ভব হলে পোস্ট নিয়ে আলোচনা করুন। ধন্যবাদ।
@স্বাক্ষর শতাব্দ,
আপনার এই সৎ-স্বীকারোক্তির পর এ নিয়ে আর অযথা তর্ক করার আর মানেই হয় না। আমিও দুঃখ প্রকাশ করছি আপনাকে কোন ধরনের আঘাত দিয়ে থাকলে।
যাহোক, শেষ কথা হল – আমি একমত হই আর না হই, আপনার লেখা সবসময়ই চিন্তার উদ্রেগকারী। মুক্তমনায় আপনার আরো নিয়মিত অংশগ্রহণ কামনা করছি।
রূপমকেও অনেক ধন্যবাদ, প্রাঞ্জল আলোচনার জন্য।
@অভিজিৎ,
ধন্যবাদ দেয়ার কোটা আপনারা নিঃশেষ কইরা ফেলছেন। আপাতত দুইজনরে দুইটা (B) (B) দিয়া ভাগলাম। 🙂
@নীল রোদ্দুর,
খুব সুন্দর উত্তর দিয়েছেন।
শিশুর মাথার ভেতর ঐশ্বরিক ভাবনা ঢোকানো ছবিটা সাঙ্ঘাতিক শক্তিশালী। চমৎকার বিষয় নির্বাচনও বটে। কথা হচ্ছে, শিশুর সবচে কাছে থেকে ঐ মগজ ধোলাই করে কে বা কারা? মা বাবা ভাই বোন নিকটাত্মীয় ধরনের মানুষরাই তো প্রথমে; না’কি? মা বাবা দের একেবারে কোন উল্লেখ না দেখে অবাক হলাম।
এটার উত্তর থিওলজি; খুব সহজ ব্যাপার মনে হচ্ছে তো।
থিওলজি আর বিজ্ঞানের মাঝখানে আরো অনেক ব্যাপার রয়েছে যে। এখানে মগজধোপা আর সর্ষেদানার ভূতেদের মত খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে অতৃপ্তি রয়ে গেলো।
খুব পরিষ্কার পর্যবেক্ষণ। একটা জটিল বিষয় নিয়ে খুব গোছানো সার-সংক্ষপ। লেখাটা মনে হয় আরও বিস্তারিত হ’তে পারতো। পড়ে ভালো লাগলো – ভাবনার খোরাক আছে এতে।
রেফারেন্সটা দিলে ভালো হতো। অনেকেই হয়তো আগ্রহী হবেন সংগ্রহ করতে।
@ইরতিশাদ, নিউ সায়েন্টিস্ট এর মার্চ ২০১২ সংখ্যা, ইন্টারনেটে পাইরেটেড কপি পাওয়া যায়, কিন্তু ওদের ওয়েবসাইটে আর্কাইভের লিংক পেলাম না, পড়া ও মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ |