প্রিয়,ফুল খেলবার দিন নয় অদ্য
-ইরতিশাদ আহমদ
“ইয়োর অনার, আপনাকে উদ্দেশ্য করে বলা আমার কথাগুলোকে একটা শ্রেণির প্রতিনিধির আরেকটা শ্রেণির প্রতিনিধিকে বলা কথা হিসেবে ধরে নিতে পারেন”।
-শিকাগো এইট-এর অন্যতম, মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত অগাস্ট স্পিজ, বিচারের সময় আদালতে।
শ্রমিকের রক্তে ভেজা মে দিবস আজ। আঠারোশো ছিয়াশি সালে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের ‘হে মার্কেটে’ আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপরে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয় অগুনতি শ্রমিককে। দিনে আটঘণ্টার বেশি কাজ নয়, এই দাবী আদায়ের জন্য ছিল তাঁদের আন্দোলন।
এর আগে এমন কি, দিনে ষোলঘন্টা, সপ্তাহের সাতদিনই কাজ করেছে তাঁরা। দূর্বিষহ জীবনে বলি দিয়েছে সুখের আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু না, এমন জীবন তো মেনে নেয়া যায় না। মেনে নেয় নি তারা। ধীরে ধীরে হয়েছে সঙ্গবদ্ধ। সংগঠিত হয়েছে ইউনিয়নে।
আঠারোশো চুরাশির অক্টোবরে ‘ফেডারেশন অফ অর্গানাইজড ট্রেডস এ্যান্ড লেবর ইউনিয়নস অফ দ্য ইউনাইটেড স্টেটস এ্যান্ড কানাডা’ ঘোষণা দেয়, “…আঠারোশো ছিয়াশির মে মাসের এক তারিখ থেকে আইনসম্মত শ্রমদিন (লিগ্যাল ডে’স লেবর) আট ঘন্টা নির্ধারিত হলো, এবং আমরা শ্রমিক সংগঠনগুলোকে এই মর্মে সুপারিশ করছি যে, তারা যেন প্রস্তাবিত সময়ের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত কার্যকরী করে”।
আঠারোশো ছিয়াশির মে’র পয়লা তারিখে শ্রমিকেরা আট ঘণ্টা শ্রমদিবসের দাবীতে দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট ডাকে। সারা দেশে সাড়ে তিনলাখেরও বেশি শ্রমিক এই ধর্মঘটে অংশ নেয়। মিছিলে যোগ দেয় হাজার হাজার শ্রমিক। চলমান ধর্মঘটের তৃতীয়দিনে আমেরিকার শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রভূমি শিকাগোর হে’ মার্কেটে নিরস্ত্র শ্রমিকদের ওপরে গুলি চালায় পুলিশ। মারা যায় ছয়জন, আহত হয় অগুণতি। সরকার আর পুলিশের বর্বরতার বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠে মানুষ। পরের দিন প্রতিবাদসভা আর বিক্ষোভের আয়োজন করা হয় দেশব্যাপী।
চৌঠা মে, হে’মার্কেট স্কোয়ারে জমায়েত হয় কয়েক হাজার শ্রমিক জনতা, পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে। সেদিনের বর্ষণমুখর সন্ধ্যায় শেষ বক্তাটি যখন তাঁর কথা প্রায় শেষ করে এনেছেন, মাত্র শ’দুয়েক নিবেদিতপ্রাণ শ্রমিকশ্রোতা তখনো উপস্থিত। এমন সময় একশত আশি জনের এক সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী তাদের কাছে মার্চ করে এগিয়ে আসে এবং তক্ষুনি সরে যেতে নির্দেশ দেয়। এমন সময় হঠাৎ পুলিশ বাহিনীর মাঝখানে একটা বোমা বিস্ফোরিত হয়, মারা যায় সাতজন। কার ষড়যন্ত্র ছিল এটি আজো আবিষ্কৃত হয় নি। বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ না করে, খ্যাপা জানোয়ারের মতো, পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায় নিরস্ত্র শ্রমিকদের লক্ষ্য করে। পুলিশের গুলিতে কতজন শ্রমিক মারা গিয়েছিলেন সেদিন, আর কতজন যে আহত হয়েছিলেন আজো কেউ জানে না।
আটজনকে রায়ট বাধানোর এবং পুলিশ হত্যার অপরাধে গ্রেফতার করা হ্য়। পরবর্তী কয়কেদিন পুলিশ নযীরবিহীন নির্যাতন চালায় নির্দোষ শ্রমিকদের ওপর। অভিযুক্ত আটজনের মধ্যে মাত্র একজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, যিনি ছিলেন সেদিনের সমাবেশের শেষ বক্তা (স্যামুয়েল ফিল্ডেন)। তাঁর বক্তৃতার সময়েই বোমাটি বিস্ফোরিত হয়। কারো বিরুদ্ধেই বোমা নিক্ষেপের অভিযোগ প্রমাণিত হয় নি। কোন সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়াই সাজানো প্রহসনমূলক বিচারে আটজনই দোষী সাব্যস্ত হন। চার জন – আলবার্ট পারসন্স, অগাস্ট স্পিজ, জর্জ এঙ্গেল আর এডলফ ফিশার-কে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয় আঠারোশো সাতাশি সালে । লুইস লিন্গ কারাগারে আত্নহত্যা করেন। বাকী তিনজনকে (মাইকেল শোয়াব, স্যামুয়েল ফিল্ডেন, অস্কার নীবে) শ্রমিকদের তীব্র আন্দোলনের মুখে মুক্তি দেয়া হয়, আঠারোশো তিরানব্বই সালে।
হে মার্কেটের ঘটনাবলীর নায়করা পরবর্তীতে পরিচিতি পান ‘শিকাগো এইট’ নামে।
ঠিক কি কারণে মে’র পয়লা তারিখটাকে বেছে নেয় হয়েছিল দৈনিক আট ঘণ্টা শ্রমসময়ের দাবী কার্যকর করার জন্য তা জানা যায় না। তবে আঠারোশো ঊননব্বইয়ের চৌদ্দই জুলাই (বাস্তিল দিবসের শততম বার্ষিকীতে) কম্যুনিস্টদের সংগঠন দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক (সেকেন্ড ইন্টারন্যাশনাল) তাদের প্যারিসে অনুষ্ঠিত কংগ্রেসে প্রতিবছর মে’র প্রথম দিনটাকে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস (ইন্টারন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ডে) হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়। ঘোষণায় বলা হয়,
“কংগ্রেসএকটা বিরাট আন্তর্জাতিক বিক্ষোভানুষ্ঠান সংগঠিত করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যাতে বিশ্বের দেশে দেশে প্রতিটি শহরে একটি নির্দিষ্ট দিনে মেহনতি জনগণ সরকারী কর্তৃপক্ষের কাছে আইনসম্মত শ্রমদিবসকে আটঘন্টায় নামিয়ে আনার দাবী জানাবে, এবং একই সাথে প্যারিস কংগ্রেসে নেয়া ইন্টারন্যাশনালের অন্যান্য সিদ্ধান্তাবলীও কার্যকরী করবে। যেহেতু আঠারোশো নব্বইয়ের পয়লা মে আমেরিকান ফেডারেশন অফ লেবর তাদের ডিসেম্বর, আঠারোশো অষ্টাশিতে অনুষ্ঠিত সেইন্ট লুই কনভেনশনে এই ধরনের বিক্ষোভানুষ্ঠান সংগঠনের সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যেই নিয়ে ফেলেছে, আমরাও এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক বিক্ষোভানুষ্ঠানের জন্য যথাযোগ্য বলে গ্রহণ করেছি। বিশ্বের দেশে দেশে শ্রমিকরা নিজ নিজ দেশের বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে অবশ্যই এই ধরনের বিক্ষোভানুষ্ঠান সংগঠিত করবেন”।
সেই থেকে মে’র প্রথম দিন পালিত হয়ে আসছে বিশ্বের দেশে দেশে (যুক্তরাষ্ট্র আর কানাডা বাদে) আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে।
আজকের এই বিশেষ দিনে মুক্তমনার পাঠকদের উপহার দিতে চাই আমার অত্যন্ত প্রিয় একটা কবিতা, সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘মে-দিনের কবিতা’ আর একটা গান, হেমাঙ্গ বিশ্বাসের ‘জন হেনরী’।
মে দিবস দীর্ঘজীবি হোক। সবাইকে মে দিবসের শুভেচ্ছা।
মে-দিনের কবিতা
সুভাষ মুখোপাধ্যায়
প্রিয়,ফুল খেলবার দিন নয় অদ্য
ধ্বংসের মুখোমুখি আমরা,
চোখে আর স্বপ্নের নেই নীল মদ্য
কাঠফাটা রোদ সেঁকে চামড়া।
চিমনির মুখে শোনো সাইরেন-শঙ্খ,
গান গায় হাতুড়ি ও কাস্তে,
তিল তিল মরণেও জীবন অসংখ্য
জীবনকে চায় ভালবাসতে।
প্রণয়ের যৌতুক দাও প্রতিবন্ধে,
মারণের পণ নখদন্তে;
বন্ধন ঘুচে যাবে জাগবার ছন্দে,
উজ্জ্বল দিন দিক্-অন্তে।
শতাব্দীলাঞ্ছিত আর্তের কান্না
প্রতি নিঃশ্বাসে আনে লজ্জা;
মৃত্যুর ভয়ে ভীরু বসে থাকা, আর না –
পরো পরো যুদ্ধের সজ্জা।
প্রিয়, ফুল খেলবার দিন নয় অদ্য
এসে গেছে ধ্বংসের বার্তা,
দুর্যোগে পথ হয় হোক দুর্বোধ্য
চিনে নেবে যৌবন-আত্মা।।
জন হেনরী
গান – হেমাঙ্গ বিশ্বাস
জন হেনরী, জন হেনরী-
নাম তার ছিল জন হেনরী
ছিল যেন জীবন্ত ইঞ্জিন
হাতুড়ির তালে তালে গান গেয়ে শিল্পী
খুশী মনে কাজ করে রাত-দিন
হো হো হো হো- খুশী মনে কাজ করে রাত-দিন।।
কালো পাথরে খোদাই জন হেনরী
কালো পাথরে খোদাই জন হেনরী
গ্রানাইট পেশী গড়া ঝলমল
হাতুড়ির ঘায়ে ঘায়ে পাথরে আগুন ধরে
হাতুড়ি চালানো তার সম্বল
হো হো হো হো – হাতুড়ি চালানো তার সম্বল।।
পশ্চিম ভার্জিনিয়ার রেলে সুরঙ্গে
পশ্চিম ভার্জিনিয়ার রেল সুরঙ্গে
পাথুরে পাহাড় কেটে কেটে
রেল লাইন পাতা হবে হেনরীর হাতুড়ির –
ঘায়ে ঘায়ে রাত যায় কেটে
হো হো হো হো – ঘায়ে ঘায়ে রাত যায় কেটে।।
জন হেনরীর চির প্রিয় সঙ্গিনী
নাম তার মেরি ম্যাক ডেলিন
সুরঙ্গের কাছে যেত কান পেতে শুনত
হেনরীর হাতুড়ির বিন
হো হো হো হো- হেনরীর হাতুড়ির বিন।।
সাদা সর্দার কাজ চায় আরো
সাদা সর্দার কাজ চায় আরো
স্টীম ড্রিল করে আমদানী
আশংকা হেনরীর মেশিনের কাছে বুঝি
পেশী নিবে পরাজয় মানি
হো হো হো হো- পেশী নিবে পরাজয় মানি।।
আমি মেশিনের হবো প্রতিদ্বন্দ্বী
আমি মেশিনের হবো প্রতিদ্বন্দ্বী
জন হেনরী বলে বুক ঠুকে
স্টীম ড্রিলের সাথে চলে হাতুড়ির পাল্লা
কে আর বলো তারে রোখে
হো হো হো হো- কে আর বলো তারে রোখে।।
সাদা সর্দার বলে হেসে হেসে
সাদা সর্দার বলে হেসে হেসে
কালো নিগারের দেখো দুঃসাহস
তোর যদি জয় হয়, হবে না সূর্যোদয়
দুনিয়াটা হবে তোর বশ
হো হো হো হো- দুনিয়াটা হবে তোর বশ।।
জন হেনরীর হাতুড়ির ঝলকে
জন হেনরীর হাতুড়ির ঝলকে
চমকায় বিজলীর গতি
মানুষের সৃষ্টি দুরন্ত স্টীম ড্রিল
মানুষের কাছে মানে নতি
হো হো হো হো- মানুষের কাছে মানে নতি।।
অগ্নিগিরি হলো রুদ্ধ
থেমে গেল হাতুড়ির শব্দ
হেনরীর জয়গান চারিদিকে উঠে জমে
হৃদপিন্ড তার স্তব্ধ
হায় হায় হায় হায়- হৃদপিন্ড তার স্তব্ধ।।
জন হেনরীর কচি ফুল মেয়েটি
জন হেনরীর কচি ফুল মেয়েটি
পাথরের বুকে যেন ঝরনা
মার কোল থেকে সে পথ চেয়ে আছে তার
বাবা তার আসবে না আর না
হায় হায় হায় হায়- বাবা তার আসবে না আর না।।
পাখির কাকলি ভরা ভোরে
পুবালী আকাশ যবে রঙ্গীন
পাখির কাকলি ভরা ভোরে
পুবালী আকাশ যবে রঙ্গীন
হেনরীর বীর গাঁথা বাতাসে ছড়িয়ে দিয়ে
সিটি দিয়ে চলে যায় ইঞ্জিন
হো হো হো হো – সিটি দিয়ে চলে যায় ইঞ্জিন।।
প্রতি মে দিবসের গানে গানে
নীল আকাশের তলে দূর
শ্রমিকের জয়গান কান পেতে শোন ঐ
হেনরীর হাতুড়ির সুর
হো হো হো হো- হেনরীর হাতুড়ির সুর।।
জন হেনরী, জন হেনরী-
নাম তার ছিল জন হেনরী
ছিল যেন জীবন্ত ইঞ্জিন
হেমাঙ্গ বিশ্বাসের গানটি ডাউনলোড করতে চাইলে –
http://www.esnips.com/doc/d8ac916a-3bc6-44b4-a470-72bde8bf8246/john-henry
তথ্যসূত্রঃ
http://www.salon.com/2012/04/30/may_days_radical_history/singleton/
http://www.marxists.org/subject/mayday/articles/speeches.html
Weinberger, Jeff., May Day: “May we?” or Mayhem, One Struggle, V. 1, Ed. 1, 2012
এই মে দিবসে একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলাম, সব্বাই খুব জোরেশোরে মে দিবসের কথা বলে কিন্তু যাদের জন্যে এই মে দিবস তারা অনেকেই এটা সম্পর্কে জানে না! মে দিবস হল শ্রমিকদের ছুটির দিন কিন্তু তাদের ছুটি না দিতে ছুটি উপভোগ করি আমরা! স্কুল, কলেজ, অফিস বন্ধ থাকে কিন্তু মালিকরা হোটেল ,প্রেস ইত্যাদি ঠিক ই খোলা রাখে! সব কেমন আজব মনে হয় না?!
কিছু কিছু আন্তর্জাতিক অফিসেও কিন্তু মে দিবসের ছুটি নেই। যেমন,বাংলাদেশে সব ছুটি, কিন্তু জাতি সঙ্ঘের এজেন্সি সমূহের অফিস খোলা।
যাহোক, ইতিহাস মিশ্রিত লেখাটি ভাল লাগল।
আমাদের দেশের শ্রমিক স্বার্থ রক্ষায় কবে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে সে আশায় আছি…
আমাদের দেশেও বর্তমানে শ্রমিকরা শ্রমের ন্যায্য মূল্য তো পাচ্ছেই না বরং গাধার মত খাটছে । তাদের এই পরিশ্রমী মানসিকতার কারনে এখনও আামদের দেশে অনেক প্রতিষ্ঠান টিকে আছে ।
বাংলাদেশে শ্রমিকদের অবস্থা দেখে নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়। এ নিয়ে সচলায়তনে লিখেছিলাম একবার। (লিঙ্ক)
@তানভীরুল ইসলাম,
‘দুঃসময়ে আমার যৌবন’ পড়লাম। কোন কোন লেখা আমাদের জ্ঞান চক্ষু খুলে দেয়, কোন কোন লেখা আমাদের নির্মল আনন্দ দেয়, আবার কোন কোন লেখা আমাদের কাঁদায়।
এসব কোন একটাকে বাদ দিলে, জীবনের মানে কীরকম হয়, আমার জানা নেই।
এটা জানি, কোন কোন লেখা পড়ে খুব খুব করে মানবিক হয়ে উঠতে ইচ্ছে করে। একটুখানি মানুষ হ’তে মন চায়। আপনার লেখাটা পড়ে, মনে হলো; একটুখানি মানুষ হয়ে উঠি।
ধন্যবাদ, লিংকটা দেয়ার জন্য।
আমার মনে হয়না এইটা আদৌ ঠিক ভারতে আইটি সেক্টরে যাদের দেখেন ৮০ ঘন্টা আপিস করতে, তাদের মধ্যে বেশিরভাগী পোলাপান।ছুটির দিনেও আপিসে গিয়ে বসে থাকে মূলত এসির হাওয়া খেতে, নয়তো বিনি পয়সায় নেট সার্ফ করতে।
ভারতে আইটি সেক্টরের কোম্পানিগুলো মূলত তিন প্রকার:
১)ডেল, মাইক্রসফ্ট, সিসকো, এইচ পি জাতীয় কোম্পানি যারা তাদের কাজের একটা অংশ এখন ভারত থেকে করছে (সাপোর্ট, মেনটেননেনস এবং টেস্টিং প্রধান কাজ)। এদের কাজের সময় ঘন্টা খুবই নিয়ম মেনে দৈনিক আট ঘন্টা। কেউ বেশীক্ষণ আপিসে বসে থাকুক এতে মোটেই প্ররোচনা দেওয়া হয়না এই সব কম্পানিতে।বরং সন্ধ্যে ছটার পর কেউ বসে থাকলে তাকে জিজ্ঞেস করা হয় সে কি করছে।
২) উইপ্রো, টি সি এস, ইনফোসিস, সি টি এস এর মতন ভারতীয় বহুজাতিকগুলো। এই সব কোম্পানি গুলো খাতায় কলমে দৈনিক আট থেকে সাড়ে আট ঘন্টার বেশী কাজ করতে নিরুত্সাহ করে। কটায় লোকে আপিস আসবে আর কখন বেরোবে তা নির্ভর করে কোন location তার উপর। যেমন বাঙ্গালোরে ৯০% লোকে পৌনে নটায় আপিস ঢুকে ৬.১৫ বা ৬.৩০ তে বেরিয়ে যায় আবার কলকাতাতে লোকে ১০ নাগাদ এসে ৮টা বা ৮.৩০ অবধি থাকে। হিসেব করে দেখলে সেই আট ঘন্টা কাজ করে, বাকি এক দেড় ঘন্টা লাঞ্ছ খেয়ে, চা বিড়ি খেয়ে, জিম করে বা টি টি খেলে কাটিয়ে দেয় জনতা।
৩)ছোট বা মাঝারি কোম্পানি গুলো। এরা প্রানান্তকর খাটায়। সপ্তাহে ৮০ ঘন্টা কোনো ব্যাপারই নয় পারলে ১২০ ঘন্টা কাজ করায়। কিন্তু এইখানে যারা কাজ করে তারা সাধারণত আসে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে বড় নামী-দামী কোম্পানি তে ঢুকতে। যে ৮০-১২০ ঘন্টা কাজ করছে তার মধ্যে একটা intense learning curve থাকে। তাই কেউ বড় একটা অভিযোগ করে না। কিছু বছরের মধ্যেই লোকে এখনকার মাইনের দ্বিগুন থেকে তিনগুন মাইনা নিয়ে বড় কোম্পানিগুলোতে (যথা উইপ্রো, টি সি এস, ইনফোসিস, সি টি এস এর মতন ভারতীয় বহুজাতিক) ঢুকে পড়ে।
অতএব গার্মেন্টস শিল্পে যে আশি ঘন্টা খাটছে তার সাথে আইটি যে আশি ঘন্টা আপিস করছে তার কোনো তুলনাই হয় না।
মে দিবস আমেরিকাতে এখন অপ্রাসঙ্গিক। উন্নত অর্থনীতির বিশ্বেও। অনুন্নত অর্থনীতিতে মে দিবস এখনো তাৎপর্য বহন করে।
এখন আই টির লোকেদের সপ্তাহে ৮০ ঘন্টা খাটানো হয়-বিশেষত ভারতে এটা দেখেছি। মনে হয় না এত কিছুর পরেও তারা মে দিবসের তাৎপর্য বা অর্গানাইজড বার্গেন ব্যপারটা বুঝতে চাইছে। ভারত এবং বাংলাদেশের ৯৬% শ্রমিক আনর্গানাইজড সেক্টরের। সেখানে আট ঘন্টা কাজের কোন মূল্য নেই-ঘন্টা ধরে কাজ।
মে দিবস কেন আস্তে আস্তে তাৎপর্য হারাবে, সেটা নিয়ে মুক্তমনাতেই ৭ বছর আগে লিখেছিলাম। লেখটার পিডিএফ দিলাম এখানে।
ইরতিশাদ ভাই,
আচ্ছা, খোদ আমেরিকার শিকাগো শহরে এই ঘটনাটা ঘটলো, সারা বিশ্ব এই দিবসটা পালন করে, অথচ আমেরিকা করে না, এর পিছনে কারণটা কী, জানেন?
@বন্যা আহমেদ,
আমেরিকার নিজস্ব লেবার ডে আছে, সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সোমবার। এটাকে একবার পরিবর্তন করে পহেলা মে-তে নিয়ে যাবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ১৯২১ সালে। কিন্তু রাশান বিপ্লবের কারণে সেই উদ্যোগ মাঠে মারা গিয়েছিল। লাল ঘোড়ার পিঠে সওয়ার হওয়া কাউকে আমেরিকা তার দেশে রাখতে চায় নি, যতই জন্ম এখানে হোক না কেনো। লাল ঘোড়ার সাথে সাথে রক্তের কাফনে মোড়ানো শ্রম বিপ্লবও দাবড়ানি খেয়ে বের হয়ে গিয়েছে বহির্বিশ্বে।
@ফরিদ আহমেদ,
তথ্যটা জানা ছিল না, ফরিদ ভাই। অনেক ধন্যবাদ।
@বন্যা, ফরিদ,
প্রশ্নের জন্য বন্যাকে আর উত্তরের জন্য ফরিদকে ধন্যবাদ।
অস্ট্রেলিয়াতেও একেক রাজ্যে একেক দিন লেবার ডে পালন করে। শনি ও রবিবারের সাপ্তাহিক ছুটির সাথে যোগ করে লেবার ডে’র ছুটি সবসময় সোমবারে হয়।
মে দিবসকে এত চমৎকারভাবে স্মরণ করার জন্য ইরতিশাদ ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
মে দিবস উপলক্ষে নিলীম চমৎকার একটি ব্যানার করেছেন আমাদের জন্য। ধন্যবাদ তাকেও।
আর জন হেনরিকে নিয়ে হেমাঙ্গ বিশ্বাসের অপূর্ব গানটা ফকির আলমগীরের কন্ঠে বিটিভিতে ছোটবেলায় অনেক শুনেছি। এখানেও দিলাম –
httpv://www.youtube.com/watch?v=KpO-dGAxde0
আর Harry Belafonte এর ইংরেজী গানটা তো ফরিদ ভাই উপরেই দিয়েছেন।
@অভিজিৎ,
খাঁটি কথা। তবে একটা নয়, দুরাধর্য নিলীম অনেকগুলো দুর্ধর্ষ শিরনামা করেছে শ্রম দিবসের জন্য। তাঁর শিরনামাগুলো আর ইরতিশাদ ভাইয়ের এই অসাধারণ শৈল্পিক লেখার সংগতটাও হয়েছে সতেজ এবং সুডৌল।
মুক্তমনায় মুগ্ধ আমি আজিকে। 🙂
@অভিজিৎ,
আমার এককালের বন্ধু ফকির আলমগীরের গানটার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
বলি, ইতালি প্রবাসী এক শ্রমজীবীর কথাঃ
মহান মে দিবসে, শ্রমজীবীর পক্ষ হতে
জানাই সবাইকে রক্তিম লাল জবার শুভেচ্ছা!
শ্রমের মর্যাদা কর প্রতিষ্ঠা, শ্রমের ন্যায্য মূল্য চাই,
মানুষ হিসাবে চাই মানুষের অধিকার,
চাই বাঁচার মৌলিক অধিকার।
মালিকের স্বার্থান্বেষী, লোভাতুরা অসুরের দু’চোখ দেখেছি!
সে-চোখে নেই কোন দয়ামায়া,
তাঁর চোখে আমি কোন মানুষ নই,
যেন এক মেশিন!
যত ইচ্ছে নেয় আমায় খাটিয়ে।
শ্রম দিতে পারলে আমি ব্রাবো!
না-পারলেই আমি ল্যান্ত, কাত্তিবো!
আমার শরীর অসুস্থ হতে পারবে না
কারন আমি শ্রমিক, মেশিনের ন্যায় সচল!
কোন কারনে যদি মেশিন বন্ধ হয়,
তুত্ত কল্পা মিয়া…।।
শুনি মালিকের গালি, “মেরদা!”
(শামিম মিঠু- ০১/০৫/২০১২)
@শামিম মিঠু,
তারপরও আমাদেরকে মাথা নত করে বলতে হবে, ‘তোমরাই আমাদের মহান ঈশ্বর’। তোমার দয়ায় আমরা এখনো বেঁচে আছি।
@স্বপন মাঝি,
এ মাথা নত করে বাঁচতে কে চায় বল?
এ-বাঁচা হতে মরণই শ্রেয়!
এটা বাঁচা নই, মরা।
এ যে, দাসত্বের শৃঙ্খল!
মহান ঈশ্বর? সে-তো আমাদের সৃষ্ট
আমাদেরই দেওয়া নাম।
আমাদের উপর করে নির্ভর!
দয়া! কিসের দয়া?
ওরা দিচ্ছে আমাদের পাওনা!
দেয়না ন্যায্য মূল্য, দেয়না ন্যায্য অধিকার!
এসো, পুঁজিবাদ ভেঙ্গে সাম্যবাদ গড়ি।
মে দিবসের সাথে আমাদের একুশের অনেক মিল খুঁজে পাই আমি। কখনো কখনো একটি বিশেষ অঞ্চলের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম এতই তাৎপর্যপূর্ণ হতে পারে যে, তার বার্তা সহজেই সক্ষম হয় স্থান-কাল-পাত্রের সম সীমারেখা মুছে দিতে।
মে দিবস যে কত প্রাসঙ্গিক এখনো,তা আজকের বাংলাদেশের দিকে তাকালেই সহজেই বোঝা যায়। সবচেয়ে দুঃখজনক হল,মে দিবসকে ব্যবহার করেই নোংরা রাজনীতি করা হয়। প্রতিবারের মত আজও নিশ্চিত করেই দেশের প্রধান প্রধান দল গলা ফাটিয়ে শ্রমিকদের অধিকারের কথা বলবে,শোষনহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার কথা বলবে! কিন্তু আসলে শ্রমিকরা তো কেবল রক্ত ঢেলে আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য! আর সরকার হল শিল্পপতিদের প্রটেকশান দেয়ার জন্য,তাদের নির্দেশে শ্রমিকদের উপর গুলি চালানোর জন্য। সুতরাং, শিকাগো এইটের অন্যতম মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত অগাস্ট স্পিজ যে দুটো শ্রেণির কথা বলেছেন, তা এখনো আছে বাংলাদেশে,বেশ প্রকটভাবেই।
আমাদের দেশের অর্থনীতি আজ দাড়িয়ে আছে মূলত পোশাক শিল্প ও রেমিটেন্সের উপর, যার প্রায় শতভাগ কৃতিত্ব বাংলাদেশের খেটে খাওয়া মানুষের হাড় নিংড়ানো শ্রম
ন্যূনতম মজুরির বিনিময়ে। এই মানুষগুলোকে শোষণ করে মালিক শ্রেণি, আর তাদেরকে ব্যবহার করে গদিতে বসে আরেকটি শ্রেণী, যারা আবার মালিক শ্রেণী কর্তৃক ব্যবহৃত হয় শ্রমিক শ্রেণীর বিরুদ্ধে। এ যেন এক শ্রেণী চক্র বা শৃঙ্খল!
ইরতিশাদ ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ মে দিবসের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস জানানোর জন্য। পাশাপাশি কবিতা দুটোর সংযুক্তি বেশ লেগেছে। শিকাগো এইটসহ ১৮৮৬ সনের মে মাসের সকল নায়কদের জন্য আমার :candle:
@কাজি মামুন,
নিদারুণ সত্য কথা। কিন্তু দেশটা তথাকথিত ভদ্রলোকদের দখলে।
মে দিবসের অঙ্গীকার পালন করা হোক। সমস্ত মেহনতী মানুষের রক্তে ভেজা ঘামে গড়ে উঠেছে সভ্যতা। একে অস্বীকার করা সম্ভব নয়। শ্রমিক শ্রেণী শোষণমুক্ত হোক এই প্রত্যাশা করি।
‘জন হেনরী’ গানটা আগেও শুনেছি। কিন্তু হেমেঙ্গ বিশ্বাসের যে তা জানা ছিল না।
যে দেশে শ্রমিক দিবস আন্দোলনের উৎপত্তি আর সে দেশে শ্রমিক দিবস পালন করা হয় না! তথ্যটা জানতামনাতো। এতো সুন্দর তথ্যপূর্ণ একটি লেখার জন্য লেখককে অনেক ধন্যবাদ।
@জিল্লুর রহমান,
ধন্যবাদ, ভালো লেগেছে জেনে আমারো ভালো লাগছে।
Well John Henry said to the captain,
Oh a man ain’t nothin’ but a man
‘Fore I’d let your steam drill beat me down,
I’d die with my hammer in my hand, Lord, Lord
Die with my hammer in my hand
httpv://www.youtube.com/watch?v=g6vcvYJCkic
@ফরিদ,
অনেক ধন্যবাদ, ফরিদ। অপূর্ব এই গান টা।
@ফরিদ আহমেদ,
আপনাকে খুব খুব করে ধন্যবাদ দিচ্ছি, মূল গানটা কখনো শোনা হয়নি, আপনার কল্যাণে শোনা হলো।
আট ঘন্টা শ্রমদিবসের জন্য যে রক্তক্ষয়ী দেনা দিনমজুরদের দিতে হয়েছে সেটা অনেক ক্ষেত্রেই বাঙলাদেশে কিংবদন্তির মতন। এখানে আপনি পোষাক শিল্পের দিকে নজর দিলে দেখবেন অনেক জায়গাতেই আটঘন্টার বেশি শ্রম বাধ্যতামুলকভাবে করানো হয়। যদিও নামমাত্র ওভারটাইম মজুরী দেয়া হয়।
বাঙলাদেশের বেশ কয়েক ধরনের কল-কারখানায় প্রচলিত বেতনসীমা দেখলে স্রেফ আতকে উঠতে হয়। সবচেয়ে বেশী যেখানে দেয় সেটা হল তেল বা ঐ জাতীয় যেসব কারখানা আছে। বেতনসীমা ৪৮০০ টাকা। তারপরে পোষাক শিল্পে। ৩০০০ টাকা। আর সবচেয়ে কম যেটা সেটা হল সম্ভবত হোটেলে যেসব ছেলেরা কাজ করে তাদের। বেতনসীমা ১২০০ টাকা!। চিন্তা করা যায়?
মে দিবসে চমৎকার লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ লেখককে।
@সাইফুল ইসলাম,
(Y)
সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার হল,এই নিতান্ত অকিঞ্চিৎকর বেতনসীমা আদায় করার জন্য নাকি সরকারকে আবার কঠিন ফাইট করতে হয় শিল্পপতিদের সাথে! শেষ পর্যন্ত শিল্পপতিবাবুরা পথে বসার সম্ভাবনা স্বত্বেও ৩০০০-৪০০০ টাকার বেতনসীমা মেনে নেয় শুধু মজুরদের প্রতি সীমাহীন প্রীতি-ভালবাসার কারণে!
@সাইফুল ইসলাম, আমাদের দেশের গার্মেন্টস শিল্পের শ্রমিকদের (তাদের মধ্যে ১২-১৪ বছরের বাচ্চা ছেলেমেয়েরাঃ অন্তর্ভুক্ত) মধ্যে ১২-১৪ ঘন্টা কাজ করা তো একটা নৈমত্তিক ব্যাপার, কখনো কখনো তাদের কয়েক ঘন্টা বিশ্রাম নিয়ে একটানা ২-৩ দিন এক নাগাড়ে কাজ করতেও দেখেছি। এসব নিয়ে কথা বলতে গেলে কেমন যেন অসহায় লাগে, ধুর .. :-Y
@সাইফুল ইসলাম,
অনেক ধন্যবাদ গার্মেন্টস শ্রমিকদের কথা উল্লেখ করার জন্য। শুনেছিলাম, ওদের না কি ইউনিয়ন করার অধিকার নেই। মুক্তমনায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিয়ে কেউ লিখলে খুব ভালো হয়।
@সাইফুল ইসলাম,
এই প্রবাসে, ৮ ঘন্টার নিয়ম দেখে খুব হাসি পায়। অধিকাংশ মানুষ ৮ ঘন্টা কাজ করে পেট চালাতে পারে না। আমিও পারবো না। তো কী আর করা? ২য় কাজ খুঁজে নিতে হয়। দোকানে অনেক অনেক কাস্টমার আসে, যারা পেট চালাবার জন্য সপ্তাহে ৪০ ঘন্টার নিয়ম থেকে বেরিয়ে গিয়ে ৬০ থেকে ৮০ ঘন্টা পর্যন্ত কা,জ করছে। তারপরও পকেটে পয়সা নেই।
কথাটা হলো নিয়ম ভাঙ্গবো না, এমন এক বাস্তবতায় ঢেলে দেয়া, যে আইনকে রক্ষা করেই আমাকে দিয়ে ৬০ থেকে ৮০ ঘন্টা কাজ করিয়ে নেয়া।
কথাগুলো গুছিয়ে বলা আমার দ্বারা হয় না, ইরতিশাদ দা-র মত হাত পাকলে, হয়তো পারবো।
মে দিবস আমেরিকায় পালন করা হয় না। এটা বাংলাদেশের কোন পত্রিকা ভুলেও উল্লেখ করে না। দেশে যেভাবে শুনে এসেছি, এখানে এসে অনেককে প্রশ্ন করে, আমি নিজেই বোকা হয়ে গেলাম। সেই বোকামীর কারণে এ দিবসটাই ভুলে গিয়েছিলাম। আপনারদের মত লেখক; যারা খ্যাতির চেয়ে, মানুষের কথা বলতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন,আমার মত এক কর্মজীবির শুভেচ্ছা নিন।
চেতন বা অবচেতনে শ্রেণী কীভাবে কাজ করে, খুব করে, এখনো দেখে যাচ্ছি। সেই দেখার একটুখানি – উচ্চারণ; আমাদের মত মানুষদের আন্দোলিত করে, ভাবায়।
httpv://www.youtube.com/watch?v=_SXh_gPfZiQ&feature=related
@স্বপন মাঝি,
মে দিবসের লেখাটা লেখার কথা ছিল তোমার। নিলীমের করা মে দিবসের ব্যানারগুলো দেখে তোমাকে লিখতে বলেছিলাম। আমার ওপর চাপিয়ে দিয়ে পিছলায়ে গেলা। যাক গে, ইউটিউবের ক্লিপটার জন্য এবারের মতো অব্যাহতি দেয়া গেল। 😉
ইরতিশাদ ভাই, কেন জানি-না যা শিকাগোর হে মার্কেটের যে জায়গাটাতে ঘটনাটা ঘটেছিলো সেটা এখনো কেমন জানি অনুন্নত আর পুরাতন স্টাইলের। শিকাগোর ডাউনটাউন থেকে খুব বেশি দূরে নয় জায়গাটা। খানিক দূরের আশপাশের সব বিল্ডিংগুলো যেখানে অত্যাধুনিক, সেখানে হে মার্কেটের চারপাশের বিল্ডিংগুলো কেমন জানি পুরোনো স্টোরেজ টাইপ মনে হলো। এমনও হতে পারে যে, শহর কর্তৃপক্ষ স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে সেখানে কোনো ধরণের পরিবর্তনের অনুমতি দেয় না।
রাস্তার পাশে থাকা ভাস্কর্যটা খুব সুন্দর। আমি অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে দেখেছিলাম এবং সেখানে থাকা লেখাগুলো পড়েছিলাম। মনে হয়েছিলো ভাস্কর্য নয়, যেন এক টুকরো জীবন্ত ইতিহাস। মুক্তমনায় অনেক আগে এক মন্তব্যে কথা দিয়ে এসেছিলাম, শিকাগোতে অবস্থিত হে মার্কেট বা মে দিবস এবং এখানে অবস্থিত বাহাই টেম্পল বা বাহাই ধর্ম নিয়ে লিখবো। কিন্তু, লেখা হয়ে উঠেনি। এখন আমার কাজ সহজ হয়ে গেলো। আপনার লেখার লিঙ্কটা দিয়েই কাজ হয়ে যাবে। 🙂
@রাজু,
অনেক ধন্যবাদ।
না, এতো সহজে পার পাচ্ছো না। হে মার্কেটের ওপরে একটা সচিত্র প্রতিবেদন তাড়াতাড়ি নামাও।
@মইনুল রাজু,
কোন এক বিচিত্র কারণে আমি আপনার লেখা পছন্দ করি। আমার মনে হয়, আপনি হাতে কলম তুলে নিলে, আমাদের মত পাঠকরা উপকৃত হবে।
@স্বপন মাঝি,
ইরতিশাদ ভাই শুরুটা খুব সুন্দর করে করেছেন। তাই পরবর্তী ধাপে আমি পরিকল্পনা করছি, এখানকার এবং বিভিন্ন দেশের মানুষের সাথে একটু কথা বলে, তাদের কি দৃষ্টিভঙ্গি সেটা জেনে, তারপর একটা লিখা লিখবো। মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। 🙂