উইটনিকে (Whitney) মনে রাখবে বিশ্ব অনন্তকাল।

আকাশ মালিক।

এই লেখাটি ড্রাফট করে লিখে রেখেছিলাম ১২ ফেব্রুয়ারি রবিবার, আর প্রকাশ করলাম আজ মঙ্গলবার। সময়ের এমনি আকাল পড়েছে যে, একনাগালে একঘন্টা কমপিউটারের সামনে বসার ফুরসত নেই। ইংরেজি গান এক সময়, বুঝি আর না বুঝি শুনতাম। মাঝে মাঝে অবশ্য বুঝার চেষ্টা করতাম। যে গান মনের কথা, হৃদয়ের কথা বলে সে গান যে কোন ভাষায়ই হউক শুনতে ভাল লাগে। এক সময় উর্দু গানের পোকা ছিলাম। আশি সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডের নাইট ক্লাবগুলোতে শেষ রাতের গানের স্থান এলভিস প্রেসলির সেই প্রসিদ্ধ গানটির- লাভ মি টেন্ডার, লাভ মি ট্রু—এর দখলে ছিল। পঁচাশি থেকে সেই স্থানটি দখল করে নেয় উইটনি হিউস্টনের- আই এম সেইভিং অল মাই লাভ ফর ইউ। উইটনির বিখ্যাত আরেকটি গান হলো- আই ওয়াননা ডান্স উইথ সাম বডি/ সাম বডি হু লাভ মি। উইটনি হিউস্টন আজ আর আমাদের মাঝে নেই। সংস্কৃত জগতের আকাশ থেকে অকালে ঝরে গেল আরেকটি উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার পুরো নাম উইটনি এলিজাবেথ হিউস্টন। বিশ্বজুড়ে অগণিত শ্রোতা ভক্তদের চোখের জলে ভাসিয়ে, ১১ ফেব্রুয়ারি, শনিবার ২০১২ মাত্র ৪৮ বছর বয়সেই চিরতরে থামিয়ে দিলেন তার সঙ্গীতের অভিযাত্রা।

১৯৬৩ সালের ৯ আগস্ট আমেরিকার নিউ জার্সিতে উইটনি জন্মগ্রহণ করেন। তার মা কিসি হিউস্টন ও একজন সঙ্গীতশিল্পী ছিলেন। তিনি গীর্জায় ধর্মীয় গান গাইতেন। মায়ের হাত ধরেই উইটনি ছোটবেলা থেকে গির্জায় গান গাওয়া শুরু করেন। অসাধারণ প্রতিভা, আকর্ষণীয় কণ্ঠ ও সৌন্দর্যের অধিকারিনী উইটনি ছিলেন একাধারে একজন ফ্যাশন মডেল, প্রযোজক, কণ্ঠশিল্পী ও অভিনেত্রী। হলিউডের ব্লকবাস্টার ‘বডিগার্ড’ এবং ‘ওয়েটিং টু এক্সসেইল’ এর মত ছবিতে অভিনয় করেছেন। ২০১০ সাল পর্যন্ত তিনি পেয়েছেন, ছয়টি গ্র্যামি, দুটি এমি, ৩০টি বিলবোর্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ড, ২২ টি আমেরিকান মিউজিক অ্যাওয়ার্ড ও গিনিস ওয়াল্ড রেকর্ডে নাম সহ ৪১৫টি পুরস্কার। সারা দুনিয়া জুড়ে তার ১৭০ মিলিয়ন সলো অডিও ও ভিডিও অ্যালবাম বিক্রি হয়। উইটনি ছিলেন সর্বকালের সবচেয়ে বেশি পুরস্কারপ্রাপ্ত নারী সংগীত শিল্পী। ১৯৯২ সালে ১৮ জুলাই আরেক সঙ্গীতশিল্পী ববি ব্রাউনকে তিনি বিয়ে করেন। ২০০৭ সালে স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদে উইটনির ব্যক্তিগত জীবনে নেমে আসে হতাশ ও ব্যর্থতার ছায়া। তিনি মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলেন নিজের সৃষ্টিশীলতাকে, দূরে সরে চলে যেতে থাকেন সঙ্গীতাঙ্গন থেকে। আশি ও নব্বই দশকের সঙ্গীতপ্রেমীদের নয়নমনি উইটনি হিউস্টন আরো দুজন জগত কাঁপানো তারকা, এলভিস ও জ্যাকসনের মতো অনেকটা রহস্যজনকভাবেই পৃথিবী ছাড়লেন। কিন্তু পৃথিবী উইটনিকে মনে রাখবে অনন্তকাল।

Photobucket