ইসলাম অনুসারে , বিশ্বাসী রা মৃত্যুর পর সর্বময় স্রস্টা আল্লাহ –র তরফ থেকে পাবেন পুরস্কার । আর এই পুরস্কার হল জান্নাত । ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভ দ্বারা যার সারাটা জীবন পরিচালিত হবে ,আল্লাহ-র বিচারের পর নিশ্চিত ভাবেই তার জন্য অপেক্ষা করে আছে আল্লাহ-র সর্বশ্রেষ্ঠ পুরস্কার জান্নাত । কিন্তু খুব ছোট্ট বেলা থেকেই জানতে ইচ্ছা করত এই জান্নাত ঠিক কেমন ? বা এই পুরস্কার আদৌ সারা জীবন একটি নির্দিষ্ট জীবনাচরণ মেনে চলার উপযুক্ত পুরস্কার কিনা । এর উত্তর পেতে গেলে সরাসরি কোরআন ও হাদিসের ছোটছোট এলোমেলো বর্ণনা গুলি সাজিয়ে গুছিয়ে একটি কোলাজ তৈরি করা ছাড়া উপায়ান্তর নেই । আর সেই চেষ্টা তেই আমার বর্তমান লেখা । কোরআন হাদিস যেটুকু পড়েছি , তাতে জান্নাতের যে ছবি আমি পেয়েছি , তা হল —–
‘জান্নাত’ শব্দ টি একটি আরবি শব্দ ,যার আক্ষরিক অর্থ হল উদ্যান । যদিও জান্নাত কে বোঝাতে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ফার্সি ‘বেহেস্ত’ প্রতিশব্দটি ই বেশি প্রচলিত । যাই হোক , কোরআনে বেহেস্ত বা জান্নাত কে বোঝাতে মোট আট প্রকার শব্দ সমষ্টি ব্যাবহার করা হয়েছে । ক) ফেরদৌস খ) নায়ীম গ) মা’ওয়া ঘ)আদন ঙ)দারুস সালাম চ)দারুল খুলদ ছ)দারুল মাকাম জ)ইল্লিয়ন । তাই অনেকে মনে করেন , জান্নাতের সংখ্যা আট টি । আবার অনেকের মতে, এগুলি একটি জান্নাতের-ই আট টি স্তর । তবে জান্নাতুল ফেরদৌস ই হল এদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ । তবে ইসলামি সাহিত্যের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জান্নাত বলতে জান্নাতুল ফেরদৌস কেই বোঝানো হয়েছে ।
আগেই বলা হয়েছে , জান্নাত হল আসলে একটি উদ্যান । তবে কোরআন এবং হাদিস অনুযায়ী ইসলামি জান্নাত একটি না অসংখ্য তা পরিষ্কার ভাবে বলা নেই । কেননা ,কোরআনে একাধিক জায়গা তে এমন ও বলা হয়েছে , “জান্নাতি দের প্রত্যেক কে একটি করে উদ্যানের মালিক করা হবে । প্রতি টি উদ্যানে থাকবে এক বা একাধিক প্রাসাদ ।” অর্থাৎ অসংখ্য উদ্যান আছে জান্নাতে এমন ও হতেপারে । জান্নাতে প্রাপ্য উদ্যানের সংখ্যা সীমা নির্ধারিত করা না থাকলেও বলা হয়েছে , প্রাসাদের সংখ্যা নির্ধারিত হবে জান্নাতি দের কামানো সাওয়াব বা নেকী অনুযায়ী ।
জান্নাতের মহল গুলি হবে জাঁকজমক পূর্ণ ও শান্তি পূর্ণ । সেখানে জান্নাতি রা চিরকাল থাকবে । তবে হাদিস অনুযায়ী এইসব মহলগুলির ক্ষেত্রেও শ্রেণী পার্থক্য বিদ্যমান থাকবে । উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন জান্নাতি গন (নবী রসুলগণ ) এমন সুউচ্চ ও উন্নত তর মহলে অবস্থান করবে ,সাধারণ জান্নাতি রা সেইসব মহল কে দূর থেকে সুদৃশ্য তারা-র মত দেখবে । আবু মালেক আশআরি (রা) বলেন “রসুলুল্লাহ বলেছেন ,জান্নাতে এমন অনেক সুউচ্চ মহল রয়েছে ,যে গুলো শিল্প কর্মে এত স্বচ্ছ যে, তার ভিতর থেকে বাইরের ও বাইরে থেকে ভিতরের সব কিছু পরিদৃষ্ট হয় (মিস্কাত)।
জান্নাতের আবহাওয়া হবে নাতিশীতোষ্ণ (সুরা দাহর) । একাধিক সুপরিচিত বই তে জান্নাত কে এয়ার কন্ডিশনড(!) বলে ব্যাখ্যা করা হয়েছে । সেখানকার আলো হবে প্রভাত কালীন আলোর মত । সুনির্মল সমীরণ ও অথচ উজ্জ্বল আলোয় প্রভাতকালীন পরিবেশ যেমন মন কে প্রফুল্ল রাখে , ঠিক তেমনি হবে জান্নাতের আবহাওয়া । আবার জান্নাতে সুকোমল ছায়াও বিরাজ করবে । সুরা রায়দ ও সুরা নিশায় বলা হয়েছে , জান্নাতে সর্বদা ঘন ছায়া ঘেরা পরিবেশ বিরাজ করে । জান্নাতে দিন রাত্রি ও আছে । কেননা , কোরআন অনুযায়ী জান্নাতে সর্বোচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন জান্নাতি রা প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় আল্লাহ-র দর্শন পাবে । এছাড়াও কোরআনে বলা হয়েছে , যে জান্নাত হবে সুঘ্রাণে পরিপূর্ণ । সেখানে সদা সর্বদা ফুটে থাকা অসংখ্য ফুল ও ফলের সুগন্ধ এবং হুরীদের শরীর থেকে বের হওয়া মৃগনাভির সুগন্ধ মিলে এক অপূর্ব সুগন্ধে জান্নাত সর্বদায় পরিপূর্ণ থাকবে ।
জান্নাতে থাকবে অসংখ্য সুসজ্জিত গাছপালা । এবং সেই গাছ গুলিতে সর্বদায় ফুল ও ফল ধরে থাকবে । সুরা ওয়াকিয়া–তে বলা হয়েছে , “ তারা অবস্থান করবে এমন এক জান্নাতে যেখানে থাকবে কাঁটাবিহীন কুলগাছ , কান্দি ভরা কলাগাছ, সম্প্রসারিত বিরাট ছায়া , সদা প্রবহমান জল ও প্রচুর ফলমূল , যা কখনো শেষ হবে না । সেখানে বিশুদ্ধ দুধ , পানি , মধু ও সুরার প্রবাহ (ঝরনা/নদী) থাকবে । কোনও কোনও ব্যাখ্যা অনুসারে ,জান্নাতে অসংখ্য ঝরনা থাকলেও তাদের মধ্যে চারটি প্রধান । যেমন , সুরা দাহার এ বলা হয়েছে ‘সালসাবিল” নামে একটি প্রবাহের কথা । সালসাবিল হল এমন এক প্রবাহ বা ঝরনা , যা জান্নাতি রা যত্র তত্র নিজ ইচ্ছায় প্রবাহিত করতে পারবে ।
যেসব পুরুষ জান্নাতে যাবে , আল্লাহ-র ইচ্ছায় জান্নাতে তাদের প্রত্যেক কে পূর্ণ বয়স্ক যুবক করে দেওয়া হবে । প্রত্যেক পুরুষের বয়স হবে ৩০ বছর । প্রত্যেকে দেখতে হবে অপূর্ব সুন্দর । সেখানে তাদের দাড়ি আল্লাহ খসিয়ে দেবেন ।শুধু দাড়িই নয় ।তাদের শরীরে রোম ও কেশ থাকবে না । তাদের পোশাক দেওয়া হবে সুন্দর পুরু রেশমের বস্ত্র । তাদের পরানো হবে মুক্তার তাজ ,যেসব মুক্তার একটি পৃথিবী তে খসে পড়লে তা পূর্ব থেকে পশ্চিম—সারা পৃথিবী কে আলোকিত করে তুলবে । তাদের হাতে থাকবে স্বর্ণ কঙ্কন । তাদের খাদ্য ও পানীয় পরিবেশন করা হবে স্বর্ণ পাত্রে । অবশ্য অন্যত্র স্বর্ণ পাত্রের বদলে রৌপ্য পাত্রের কথা বলা হয়েছে । মল মূত্র ইত্যাদি তাদের হবে না । বর্জ্য পদার্থ শরীর থেকে বের হবে ঢেঁকুর ও সুবাসিত ঘামের দ্বারা । তাদের সর্দি ও হবে না । সকল প্রকার রোগ থেকে তাদের মুক্তি দেওয়া হবে । লজ্জা ঘৃণা ও আল্লাহ-র ভয় থেকে তাদের নিষ্কৃতি দেওয়া হবে । তাদের মন সর্বদায় শান্তি বিরাজ করবে । আল্লাহ জান্নাতি দের যৌন ক্ষমতা শত গুন বাড়িয়ে দেবেন । তারা সেখানে অনন্তকাল যৌনসম্ভোগ করবেন । তাদের কখনো ক্লান্তি আসবে না । বীর্য স্খলন হবে না ,যদিও আনন্দ ও উত্তেজনা অনেকবেশি হবে । প্রতিবার যৌন মিলনের স্থায়িত্বকাল হবে ৬০০ বছর । অন্য দিকে জান্নাতি নারী দের প্রত্যেক কে ১৬ বছরের অপূর্ব সুন্দরী যুবতীতে পরিণত করা হবে । তাদের প্রত্যেক কে একজন পুরুষের সাথে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হবে । তবে সে তার ইহ জগতের স্বামী নাও হতে পারে । নারী দের জান্নাতে আর ঠিক কি কি প্রাপ্য আছে তার খুব একটা বিশদ বর্ণনা কোথাও নেই ।
কোরআন অনুসারে , জান্নাতে জান্নাতি দের পুণ্যবতী স্ত্রী দেরও তাদের সঙ্গে রাখা হবে । অন্যত্র বলা হয়েছে , জান্নাতে তাদের পুণ্য কারী বাপ -মা ,দাদা, পতি পত্নী ও সন্তান গন তাদের সাথে একান্নবর্তী পরিবারের মতো বাস করবে (সুরা- আর রা’দ)। সঙ্গে জান্নাতি দের প্রত্যেক পুরুষ কে অন্তত ৭২ টি করে হুরী ও ৮০০০০ গেলমান দেওয়া হবে অনন্তকাল যৌন সম্ভোগের জন্য ।
হজরত আলি কে মহম্মদ জানিয়েছেন , “জান্নাতে একটি বাজার আছে । কিন্তু সেখানে কোনও কিছু কেনা বেচা হয় না । সেখানে অসংখ্য নারী পুরুষের রূপ ও আকৃতির প্রতিকৃতি থাকবে । প্রতি জুম্মার দিন জান্নাতি গন সেখানে মিলিত হবে । কোনও একটি প্রতিকৃতি দেখে যদি কোনও জান্নাতি যদি মনে মনে সেই রুপ ও আকৃতি আশা করে তাহলে তৎক্ষণাৎ তার রূপ ও আকৃতি সেই রকম হয়ে যাবে।” এবং আল্লাহ তাদের রূপ সৌন্দর্য ও পোশাক আরও সুন্দর করে দেবেন । এরপর যখন সে নিজের পরিবারের কাছে ফিরে আসবে তখন তারা বলবে যে , আল্লাহর কসম বলছি , আমাদের কাছ থেকে জাওয়ার পর তোমাদের রূপ সৌন্দর্য অনেকগুণ বেড়ে গেছে ।
সর্বোপরি সুরা হামিম এ বলা হয়েছে, “সেখানে তোমরা যা কিছু চাও , পাবে । এবং তোমাদের ইচ্ছা করার সাথে সাথেই তা হবে । এটা হল আল্লাহ-র তরফ থেকে মেহমানদারী ।”
তো মোটের উপর এই হল জান্নাত সম্পর্কে আমার ধারনা । উপরের প্রত্যেক টিই কোরআন আর হাদিসের কথা । সুতরাং আমার ধারনা ভুল নয় । যদিও তাতে কিছুটা অসম্পূর্ণতা থাকতে পারে । কিন্তু মোটের উপর জান্নাতের এই বর্ণনা আমাকে সন্তুষ্ট করতে পারে নি । বারে বারেই মনে হয়েছে , এসব সত্যি তো ? কখনো মনে হয়েছে , এই জান্নাতে যা কিছু আছে, সে সবই তো পুরুষের জন্য । আমি পুণ্য করলে আমি জান্নাতে যাবো ঠিক । তবে সেটা আমার জন্য নয় বরং তা জান্নাতি পুরুষের জন্য। কোরআন হাদিসে জান্নাতের বর্ণনা দেখে কখনো কখনো এটাও মনে হয়েছে ,এই প্রাপ্তি পুরুষ বা নারী কারো কাছেই পরম প্রাপ্তি বলে গণ্য হতে পারে কি ? তবে সর্বদাই যা মনে হয় ,তা হল, এই জান্নাতে যাওয়ার জন্য সারাটা জীবন ইসলামিক রীতি নীতি পালন করতে অন্তত আমি পারব না । কেননা এই প্রাপ্তি আমার কাছে যথেষ্ট নয়। জান্নাত নিয়ে আমি যতবার চিন্তা করি তত বেশি অসঙ্গতি ,অসম্পূর্ণতা এবং স্বাতন্ত্র্য হীনতা ধরা পরে । এই গুলিই প্রশ্নের আকারে এক এক করে তুলে ধরছি —
প্রশ্ন ১। জান্নাত কে বোঝাতে আট টি ভিন্ন ভিন্ন শব্দ কোরআন এ প্রয়োগ করা হয়েছে । তা কি আসলে একটি জান্নাত এর আট টি স্তর বোঝায় ? না কি জান্নাত আট টি ? না কি জান্নাত অসংখ্য , যার মধ্যে কেবল আট টি উল্লিখিত ? এর সার্বিক উত্তর কারো কাছে নেই ।
প্রশ্ন ২। জান্নাতুল ফেরদৌস সম্পর্কে এত কথা বলা হয়েছে ,অন্যান্য জান্নাত এর সম্পর্কে ( স্তর ই হোক বা পৃথক ) তার এক দশমাংশ ও বলা হয় নি কেন ?
প্রশ্ন ৩। কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী জান্নাতেও শ্রেনী বিভাজন থাকবে । সেখানে অট্টালিকা গুলি জান্নাতি দের পুন্যকর্ম অনুযায়ী দেওয়া হবে । যারা কম পুন্য কারী তারা যখন নিজেদের অট্টালিকা থেকে বেশি পুন্যকারী দের অট্টালিকা গুলি দেখবে তখন তাদের কাছে সেগুলি সুদৃশ্য উজ্জ্বল তারার মত দেখাবে । সুতরাং আল্লাহ-র তৈরি জান্নাত ও শ্রেনী বিভাজন মুক্ত নয় ! সাম্যের আদর্শ নিয়ে আসা ইসলামের সর্বোচ্চ গন্তব্য এবং অন্তিম পুরস্কার অসাম্যের জান্নাত !
প্রশ্ন ৪। জান্নাতি দের পুন্যকারী আত্মীয় রা একান্নবর্তী পরিবারের মতো সেখানে থাকবে বলা হয়েছে ,যা কার্যত অসম্ভব । কেননা , পিতা ও পুত্রের পুণ্য যদি সমান না হয় (একজন কম ও অন্যজন বেশি পুন্যকারী হলে ) ,তাহলে তাদের বাড়ি গুলি তো বহু দূরে দূরে থাকবে । সেক্ষেত্রে তারা একসাথে বাস করবে কিভাবে ?
প্রশ্ন ৫। বাড়ির প্রয়োজন হয় প্রতিকূল প্রাকৃতিক পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য । জান্নাতে তো প্রতিকূল পরিবেশ পরিস্থিতি নেই । তাহলে অট্টালিকা কেন ? আর তা যদি সংগমকালীন পর্দার কারণে হয় , তবে স্বচ্ছ অট্টালিকা কেন ?
প্রশ্ন ৬। কোরআন অনুযায়ী জান্নাতের আবহাওয়া নাতিশীতোষ্ণ । এটা তো না হয় মেনে নিতে অসুবিধা হয় না । কিন্তু ,পুরো জান্নাত জুড়ে প্রভাত সূর্যের মত সুকোমল কিন্তু উজ্জ্বল আলো থাকবে আবার পুরো জান্নাত ঘন ছায়া ঘেরা থাকবে—- এই কথা দুটি কি স্ববিরোধী নয় ?
প্রশ্ন ৭। নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল জান্নাতে নরম আলো থেকে কষ্ট বা ক্লান্তির সম্ভবনা তো নাই । তাছাড়া আল্লাহ-র জান্নাত তো কষ্ট ও ক্লান্তি মুক্ত । তাহলে ঘন ছায়ার প্রয়োজন কোথায় ?
প্রশ্ন ৮। জান্নাতে সকাল ও সন্ধ্যা হয় । কেননা সর্ব উচ্চ মানের জান্নাতি রা প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যায় আল্লাহ-র দর্শন পাবে বলা হয়েছে । কিন্তু অন্যত্র বলা হয়েছে সেখানে সদা সর্বদা প্রভাতসূর্যের মতো আলোকিত থাকবে । এই বিবৃতি দুটি কি স্ববিরোধী নয় ?
প্রশ্ন ৯। একটু খেয়াল করলেই বোঝা যায় , জান্নাতে জান্নাতি দের ভালোলাগা গুলিও কিন্তু এই জগতের মানুষগুলোর মতোই , শুধু কষ্ট ও ক্লান্তির মতো খারাপ অনুভূতি সেখানে নেই । কিন্তু জান্নাতে তো বৈচিত্র্য নেই । সেখানে প্রথম বৃষ্টির স্পর্শ নেই , সোঁদা মাটির গন্ধ নেই , কাশবন নেই , হেমন্তের ঝরা পাতা নেই , ফাল্গুনের বৈঠকি শীতের উপর আলগা মিষ্টি রোদের খেলা নেই । অনন্তকাল একই রকম বৈচিত্র্যহীন স্থানে থাকলে কষ্ট না লাগলেও সেই ভালোলাগার অনুভূতি কি আর ততটা থাকবে ?
প্রশ্ন ১০। জান্নাতে মধু দুধ পানি সুরা এগুলি যখন বিশুদ্ধ হয়ে থাকবে ,তখন এগুলো নিশ্চয়ই তাদের নিজস্ব সকল ধর্ম নিয়েই থাকবে । এগুলোর প্রবাহ যখন থাকবে তখন এগুলোর উৎস ও গন্তব্য নিশ্চয়ই থাকবে । কিন্তু সেখানে কোনও পাহাড় বা কোনও সমুদ্র জাতীয় কিছু তো নেই । পুরোটাই তো বাগান ।
প্রশ্ন ১১। কেশ রোম ও ভ্রূ ছাড়া কি মানুষ সুন্দর লাগতে পারে ? জান্নাতি রা কিভাবে সুন্দর লাগবে ? এমন একটি খুব সুন্দরী নারীর কথা কল্পনা করুন দেখি ,যে কিনা কেশ রোম ও ভ্রূ বিহীন !
প্রশ্ন ১২। জান্নাতি দের সকল কে নেতিবাচক গুণ গুলি থেকে মুক্ত করা হবে । সেইজন্য জান্নাতে সর্বদা শান্তি বিরাজ করবে । কিন্তু এও বলা হয়েছে, জান্নাতি রা নিচে জাহান্নামি দের দিকে তাকিয়ে তাদের উপর পরিহাস করবে । পরনিন্দা করা কি মহৎ গুণ ? সেখানে কি নিজের আনন্দ নিয়ে থাকাই যথেষ্ট নয় ?
প্রশ্ন ১৩। জান্নাতে জান্নাতি দের মধ্যে নিশ্চয়ই চিরকালীন শান্তি ও সন্তুষ্টি থাকবে না। কারন নিজের রূপ ও আকৃতি সম্পর্কে অসন্তুষ্টি থাকলে তবেই তো তারা প্রতি জুম্মায় জান্নাতের বাজারে যাবে এবং অন্য রূপ ও আকৃতি পেতে চাইবে !
প্রশ্ন ১৪। যেখানে নিশ্চিত রূপেই মানুষের মধ্যে সন্তুষ্টি না থাকার প্রমাণ রয়েছে , আল্লাহ যেখানে মানুষের মনের মধ্যেকার অসন্তুষ্টি ও অশান্তি সরাতে পারেন নি , সেখানে নারী রা নিজের পতি কে অন্য ৭২ টা হুরীর সাথে ভাগ করে নিয়ে কতটা শান্তি ও সন্তুষ্টি তে থাকবে তা তো জলের মতো পরিষ্কার !
প্রশ্ন ১৫। আয়েশা নামে আমার একসময়ের খুব অন্তরঙ্গ বান্ধবী আমায় বলতো , সালসাবিল কে আমি দুধের নদীর উপর দিয়ে বয়িয়ে দিলে তো দুধ টা আর বিশুদ্ধ থাকবে না !!
প্রশ্ন ১৬। জান্নাতে প্রবাহিত সুরা হল বিশুদ্ধ সুরা । কিন্তু তা পান করলে কেউ মাতাল হবে না , এটা কিভাবে সম্ভব ? মদশক্তি না থাকলে তাকে কি সুরা বলা যায়? — তাও আবার বিশুদ্ধ সুরা !! মদশক্তি ছাড়া যদি সুরা সম্ভব হয় ,তাহলে পানিও নিশ্চয়ই তৃষ্ণা নিবারনী শক্তি বিহীন হতে পারে !
প্রশ্ন ১৭। জান্নাতি দের যে পাত্রে খাদ্য ও পানীয় পরিবেশিত হবে , তা নিয়েও পরস্পর বিরোধী মত । কোথাও বলা হয়েছে পাত্র গুলি সোনার হবে আবার কোথাও বলা হয়েছে রুপোর হবে — কেন ?
প্রশ্ন ১৮। জান্নাতি দের যে মুক্তার তাজ পরানো হবে সেখান থেকে একটি মুক্তা পৃথিবী তে পড়লে পৃথিবী তে পড়লে পৃথিবীর পশ্চিম থেকে পূর্ব আলোকিত করবে বলা হয়েছে । কোনও মুক্তার আলো-ই তা করতে সক্ষম নয় । কেননা পৃথিবী গোলাকার । [একটি অপ্রাসঙ্গিক কথা— জাকির নায়েক এর মতো পণ্ডিত(?)রা বলেন যে, কোরআন অনুসারে পৃথিবী নাকি উঠ পাখির ডিমের মতো প্রায় গোলাকার । তা কিন্তু পুরোপুরি মিথ্যা । কেননা , (পৃথিবী কে চ্যাপ্টা মনে করলেই একমাত্র) পৃথিবীর পশ্চিম থেকে পূর্ব একটি উৎস থেকে বের হওয়া আলোয় আলোকিত হতে পারে ।]
প্রশ্ন ১৯। কোরআনে বলা হয়েছে , আল্লাহ-র জান্নাতে যা চাওয়া হবে তার সব কিছুই সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যাবে । কিন্তু তা কোনও ভাবেই সম্ভব নয় । যদি কেউ চেয়ে বসে , “আমি চাই জান্নাত হুরী ও গেলমান মুক্ত হোক ” — তাহলে কি জান্নাত হুরী ও গেলমান মুক্ত হবে ? যদি হয়ে যায় ,তাহলে কিন্তু কোরআনের আয়াত মিথ্যা হয়ে যাবে , মিথ্যা হয়ে যাবে আল্লাহ-র প্রতিশ্রুতি । আর যদি তা না হয় , তাহলেও আল্লাহ-র বানী মিথ্যা হয়ে যাবে ।
[এছাড়া হুরী ,গেলমান ও অন্যান্য কয়েকটি পরস্পর সম্পর্কিত বিষয়েও অনেক অসঙ্গতি আছে যেগুলি সযত্নে এড়িয়ে যাওয়া হল প্রসঙ্গ পরিবর্তিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় । পরবর্তী কালে এই বিষয়ে স্বতন্ত্র ভাবে লিখবো ।]
সব শেষে একটি কথা আবার বলতে চাই যে , জান্নাত সম্পর্কে আল্লাহ ও নবীর দাবী গুলি আমার কাছে যৌক্তিক ভাবে এতটাই ভ্রান্ত বলে মনে হয়েছে ,যার লোভ দেখিয়ে একবিংশ শতাব্দীর আধুনিক যুক্তিবাদী মানুষ কে বেশিদিন বোকা বানানো যাবে না । পাঠকের কাছে প্রশ্ন , এই স্ববিরোধী ,অসঙ্গতি পূর্ণ জান্নাতের আশায় কি আপনারা কতকগুলি মধ্যযুগীয় রীতিনীতি সম্পন্ন গ্রন্থ কে আপনার জীবনের পথ নির্দেশিকা হিসাবে মেনে নেবেন ?
—————————————
পোস্টটি আমার খুব সুন্দর লেগেছে আল্লাহ আপনাকে জান্নাতবাসি করুক আমিন।
আস সালামু আলাইকুম।ইসলাম এমন এক ধর্ম,যে ধর্মই শুধুমাত্র বৈজ্ঞানিক চ্যালেঞ্জ নিয়েছে এবং যা পূর্বে অস্পষ্ট মনে হতো,ক্রমে ক্রমে তা স্পষ্ট হয়েছে এবং হচ্ছে।মানুষ চন্দ্রাভিযানের পূর্বে মহানবী (স) এর হাতের ইশারায় চাঁদ দ্বিখণ্ডিত করার ঘটনাকে গাঁজাখুরি গল্প বলেই মনে করতো।কিন্তু আজ আমরা জানতে পারছি,চাঁদের পৃষ্ঠে দ্বিখণ্ডিত অবস্হার ফাটল রয়েছে।এটা কি করে সম্ভব,আপনার মস্তিষ্ককে একবার জিজ্ঞেস করে দেখুন।
মহানবী (স) এর মিরাজের ঘটনার বর্ণনা ছিল এরকম:
পৃথিবীর সাপেক্ষে সময় যখন প্রবাহিত হয়েছে মাত্র একরাত,সে সময় তিনি অতিবাহিত করেছিলেন সাতাশ বছর।১৯০৫ সালের আগে মানুষের কাছে এটা অযৌক্তিক মনে হতো,আজ আমরা আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার সূত্রানুসারে ঐ ঘটনাকে যৌক্তিক মনে করতে পারি।আপনি কি জানেন,চিকিৎসাবিজ্ঞান এখন মানবদেহে আত্নার অস্তিত্বকে বিশ্বাস করে?অথচ যেটা মাত্র ১০ বছর আগেও স্বীকার করা হতো না।
বোন,একসময় হয়তোবা বিজ্ঞানই প্রমাণ করে দেবে জান্নাত জাহান্নামের অস্তিত্ব।
সবশেষে একটা কথে বলে যাই,আপনি যদি কসমোলজি পড়তেন,তবে জান্নাতকে এতোটা অযৌক্তিক মনে হতো না।মহাকাশবিজ্ঞান বলছে,আমাদের চেনা মহাবিশ্বের সাথে অচেনা মহাবিশ্বের
মজার কথা হল যারা জান্নাতে বিশ্বাসই করেন না তাদের জান্নাত নিয়ে এত আগ্রহের কারণ কি? জান্নাতের অস্তিত্ব থাকলে যারা জান্নাতে যেতে চায় তারা চলে যাবে, আর অস্তিত্ব না থাকলে তারা বঞ্চিত হবে। কিন্তু যারা জান্নাতে বিশ্বাস করেনা বা জান্নাতের আশাও করেনা তারা জান্নাত নিয়ে এত মাথা ঘামানোর ফায়দা কোথায়? কেউ যদি বোকার মত জান্নাতের আশায় জীবনভর সাধনা করতে চায় তো করুক না। যারা জান্নাতে বিশ্বাসী নয় তারা জান্নাতের মত কাল্পনিক, অস্তিত্ববিহীন এবং অবাস্তব একটা ব্যাপার নিয়ে অযথা নিজেদের মূল্যবান সময় নষ্ট করার স্বার্থকতা কোথায়? প্রতিটা লোকের ব্যাক্তি স্বাধীনতা বলতে একটা ব্যাপার আছে। কেউ জান্নাতে যেতে চাইলে বা জান্নাতের সাধনা করলে সেটা তার ব্যাক্তি স্বাধীনতার ব্যাপার। সে ব্যাপারে তাকে নিরুৎসাহিত করার উদ্দেশ্য কি? ধর্ম বলতে পৃথিবীতে যে শুধুমাত্র ইসলামেরই অস্তিত্ব আছে তা তো নয়। আরো অনেক ধর্ম আছে। যারা ধর্ম মানতে নারাজ তারা শুধু ইসলাম নিয়েই গবেষণা করার কারণ কি? অন্যান্য ধর্মও তো ধর্ম, তাহলে সেগুলো নিয়ে স্টাডি করতে আপত্তি কোথায়? ইসলামে কী এমন মধু আছে যে শুধুমাত্র ইসলাম নিয়েই সমালোচনা করতে হবে? যারা ধর্ম মানতে নারাজ তাদের কাছে তো সকল ধর্মই অযৌক্তিক মনে হবার কথা এবং সকল ধর্মই তাদের কাছে অলীক স্বপ্ন মনে হবার কথা। কিন্তু অন্য ধর্ম নিয়ে কেউ স্টাডি করতে আগ্রহ বোধ করেন না কেন?
মুসলিমরা তাদের নিজেদের ধর্ম স্টাডি করবে এবং তদানুযায়ী অনুসরণে রত হবে, হিন্দুরা তাদের নিজেদের ধর্ম স্টাডি করবে এবং তদানুযায়ী অনুসরণে রত হবে। অনুরূপ খৃষ্টান বৌদ্ধ সকলেই নিজের ধর্ম নিয়ে স্টাডি ও অনুসরণ করবে এটাই স্বাভবিক। কিন্তু যখনই এক ধর্মের লোক নিজের ধর্ম বাদ দিয়ে অন্য ধর্মের ভুল ধরার কাজে নিয়োজিত হবে তখনই হিংশা-বিদ্বেস, হানাহানি, কাটাকাটি, মারামারি এমন কি হত্যাকান্ডের মত অনাকাংখিত ঘটনা ঘটার পরিবেশ তৈরি হয়। কিন্তু কেউ কাউকে আঘাত না করলে সকলেই শান্তিপুর্ণ ভাবে বসবাস করা যায়। আবার কেউ কাউকে আঘাত করলে তার প্রতিঘাত ও অবশ্যম্ভাবী। অশান্তি সৃষ্টি করা কি কোন সভ্য মানুষের বৈশিষ্ট্য হতে পারে?
সবশেষে জান্নাত সম্পর্কে যেসব বৈসাদৃশ্য আপনার চোখে পড়েছে সেগুলোকে এত সুন্দর করে তুলে ধরতে হলে অবশ্যই অনেক অনেক স্টাডি করতে হয়েছে আপনাকে। বৈসাদৃশ্যের সঠিক উত্তর ও কিন্তু উক্ত গ্রন্থ গুলোতেই আছে। সুন্দর মন নিয়ে আরো বেশি বেশি স্টাডি করলে অবশ্যই এসব জটিল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন আপনি নিজেই, কারণ উত্তরগুলো ও কিন্তুউ সেখানে মযুদ আছে।
হুম , এইবার এইবার
একটা প্রশ্ন করি , আল্লাকে কেমন দেখতে কেউ তো জানে না আপনাদের ধর্মে , জান্নাতে গেলে তার আসল রুপ দেখা যাবে ?
আর আর কেউ যদি চায় , যে পৃথিবী কলঙ্ক মুক্ত হোক জান্নাতে গিয়ে (কেউ না কেউ নিশ্চয় করে থাকতে পারেন) আল্লা কি তার
ইচ্ছা মেনে এই পৃথিবীর আর পৃথিবী বাসির সব সঙ্কট গ্লানি মুহূর্তের মধ্যে দূর করে দেবেন কি ?
—————————- জানতে ইচ্ছা রইল ।
প্রশ্ন ১। জান্নাত কে বোঝাতে আট টি ভিন্ন ভিন্ন শব্দ কোরআন এ প্রয়োগ করা হয়েছে । তা কি আসলে একটি জান্নাত এর আট টি স্তর বোঝায় ? না কি জান্নাত আট টি ? না কি জান্নাত অসংখ্য , যার মধ্যে কেবল আট টি উল্লিখিত ? এর সার্বিক উত্তর কারো কাছে নেই ।
১ নং প্রঃ উঃ
ছোট্ট একটা বাংলাদেশে অসংখ্য উদ্যান। তাহলে বিশাল বড় জান্নাতে মাত্র আটটা উদ্যান থাকবে কেন? বাস্তবে জান্নাতের জান্নাত সমূহ আট প্রকারের। মানুষের পেটে মানুষ। বাইরে মানুষ, ভিতরে মানুষ। সেই রকম জান্নাতের ভিতরে জান্নাত। জান্নাত নাম দেয়া হয়েছে উদ্যান বহুল বলে। ইকোপার্ক, শিশুপার্ক, রমনাপার্ক, ন্যাশনালপার্ক একটা এক রকম। হাদীস অনুযায়ী অনেকে যে জান্নাত পাবে তাতে আট প্রকারের জান্নাতই থাকবে। এটা রুচি বৈচিত্রের কারণে। সব সময় আমাদের আঙ্গুর ভালোলাগেনা, মাঝে সাজে চালতাও ভালোলাগে। পৃথিবীর সব ফলের বীজ জান্নাত থেকে আগত। মাটি এবং আবহওয়ার কারণে এর গুনগতমান সত্তর গুন কমেগেছে। এবার সার্বিক উত্তর পেলেন কি?
হাদিসে আছে , চারটি কাজের বিনিময়ে নারীদের জন্য জান্নাতের ৮ টি দরজাই খোলা থাকবে । নারীরা যেকোনো দরজা দিয়ে ঢুকতে পারবে । তাহলে কেউ যদি এই ৪ টি কাজের বিনিময়ে ৮ টি জান্নাতেই তার জন্য স্থান চায় , তবে কী সে তা পাবে ??
প্রশ্ন ৫। বাড়ির প্রয়োজন হয় প্রতিকূল প্রাকৃতিক পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য । জান্নাতে তো প্রতিকূল পরিবেশ পরিস্থিতি নেই । তাহলে অট্টালিকা কেন ? আর তা যদি সংগমকালীন পর্দার কারণে হয় , তবে স্বচ্ছ অট্টালিকা কেন ?
৫ নং প্রঃ উঃ
অনেক সময় প্রয়োজনের অনেক কারণ থাকে । আরাম বা বিশ্রাম গ্রহণের জন্যও বাড়ি প্রয়োজন হয় । আনন্দ করেও মানুষ ক্লান্ত হয় । তখন বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। জান্নাতে অস্বচ্ছ অট্টালিকাও থাকবে। পৃথিবী জান্নাত ও জাহান্নাম জীবনের মঞ্চায়নের মঞ্চ । পৃথিবীর সকল ইতিবাচক উপকরণ জান্নাতে থাকবে। তবে সে গুলোর মান হবে পৃথিবীর চেয়ে সত্তর গুন বেশী, আর সেখানে মৃত্যু নেই । এ হলো পার্থক্য।
প্রশ্ন ৩। কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী জান্নাতেও শ্রেনী বিভাজন থাকবে । সেখানে অট্টালিকা গুলি জান্নাতি দের পুন্যকর্ম অনুযায়ী দেওয়া হবে । যারা কম পুন্য কারী তারা যখন নিজেদের অট্টালিকা থেকে বেশি পুন্যকারী দের অট্টালিকা গুলি দেখবে তখন তাদের কাছে সেগুলি সুদৃশ্য উজ্জ্বল তারার মত দেখাবে । সুতরাং আল্লাহ-র তৈরি জান্নাত ও শ্রেনী বিভাজন মুক্ত নয় ! সাম্যের আদর্শ নিয়ে আসা ইসলামের সর্বোচ্চ গন্তব্য এবং অন্তিম পুরস্কার অসাম্যের জান্নাত !
৩ নং প্রঃ উঃ
খাদ্য খাদক সমান নয় । গাছ মানুষ সমান নয । ইসরামের সাম্য হলো মানুষ হিসাবে সব মানুষের সমান মর্যাদা। তাই বলে মুক্তিযোদ্ধা আর যুদ্ধ অপরাধীকে ইসলাম সমান বলেনা । আপনিও বলেন না । তাই তাদের ফাঁসি চান । সাম্যই যদি চান তবে তাদের কেন ফাঁসি চান? পারিশ্রমিকের ভিন্নতা না থাকলে আপনি কেন অন্যের চেয়ে বেশী পরিশ্রম করবেন? সুতরাং জান্নাতের বৈসাম্য একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। ভালো কাজের প্রতিযোগীতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এটা করা হয়েছে। আপিনি সমর্থন না করলেও আমরা এটা সমর্থন করি।
প্রশ্ন ২। জান্নাতুল ফেরদৌস সম্পর্কে এত কথা বলা হয়েছে ,অন্যান্য জান্নাত এর সম্পর্কে ( স্তর ই হোক বা পৃথক ) তার এক দশমাংশ ও বলা হয় নি কেন ?
২ নং প্রঃ উঃ
জান্নাতুল ফেরদৌস উঁচুমানের জান্নাত, তাই এ সম্পর্কে আলোচনা একটু বেশী, আর এটাই নিয়ম ।
মুসলিমরা যে শুধু বেহেস্তের লোভেই ইবাদত করে বা ধর্ম পালন করে তা নয়। এর আরেকটা কারণ হল দোজখের শাস্তির ভয়। আমি অনেককে দেখেছি শুধুমাত্র দোজখের ভয়ে কোন প্রশ্ন করতে চান না ধর্ম সম্পর্কে। আপনার লেখাটি খুব সুন্দর হয়েছে। দোজখ নিয়েও এমন লেখা আশা করছি। কেননা আপনার দেখার চোখ আছে। আপনি বেহেস্ত সম্পর্কে যা প্রশ্ন করলেন তা একদম যুক্তিসঙ্গত।
প্লিজ একটা অনুরোধ একটা বইয়ের নাম দিচ্ছি একটু পড়ে দেখবেন কি???
আমার বুঝতে সমস্যা হচ্ছে ….
“আল কুরআন দ্যা চ্যালেঞ্জ ”
মহাকাশ পর্ব 1,2
আল মদিনা প্রকাশনী
বাংলা বাজার, কাটাবন, বায়তুল মোকারম পাওয়া যাবে….
ধন্যবাদ
“পাঠকের কাছে প্রশ্ন , এই স্ববিরোধী ,অসঙ্গতি পূর্ণ জান্নাতের আশায় কি আপনারা কতকগুলি মধ্যযুগীয় রীতিনীতি সম্পন্ন গ্রন্থ কে আপনার জীবনের পথ নির্দেশিকা হিসাবে মেনে নেবেন ?”
নিশ্চয়ই না।
ভাইয়া আপনি যখন নরকে জাবেন , জাকির নায়েক আপনাকে জান্নাত থেকে তিরস্কার করবে!
শোনেন ভাইয়া, আপনাকে একটা বুদ্ধি শিখিয়ে দেই , খুব সিক্রেট , জাকির নায়েক যখন আপনাকে
জান্নাত থেকে তিরস্কার করবে তখন আপনি বলবেন শুনিনাই মাথা নিচু করে বল , যখন উনি মাথা নিচু করে বলবে তখন আপনি একটান দিয়ে উনাকে নরকে নিয়ে আসবেন। তার পর “হাম দোনো এক সাথ কহুঙ্গা , ফি নারে জাহান্নামে…………… জাকির নায়েক ।
ঠাকুর মা ঝুলি পড়ার পর অনেক প্রশ্ন করা যায়? কিন্তু সে সমস্ত প্রশ্ন করলেই উত্তরে বলা হয়- ওগুলো তো গল্প। রূপকথার গল্প থেকে প্রশ্ন করে কী উত্তর পাওয়া যায়? গল্প গল্পই। সমস্যা হচ্ছে – রুপকথার গল্পকে সত্য মনে করা। যারা জান্নাত, হুর বিশ্বাস করে তাদের কাছে যুক্তি মৃত। ১৯ টি কেন হাজারটি প্রশ্ন করলেও তাদের উত্তর আসবে- একমাত্র আল্লাহই ভালো জানেন। জাকির নায়কও এই রীতি মেনে চলেন।
একটা জিনিস বুঝলাম না। এই একবিংশ শতাব্দীতে আমার চাওয়া হইল হাইস্পীড ইন্টারনেট আর আইপ্যাড।কিন্তু আমি এই জিনিস কেমনে পামু? ইসলাম নাকি চিরঞ্জীব ধর্ম, তাহলে ইসলামে এই কথা নাই কেন?
আপনার রচনাটা খুব ভালো হয়েছে।
মন্তব্য করার অনেক কিছু ছিল। দূর্ভাগ্যবশতঃ অফিসের কম্পুটারে মুক্তমনা ভালোমত দেখা যাচ্ছেনা।
সময় পেলে পরে মন্তব্য করব।
@আবুল কাশেম, অপেক্ষায় রইলাম ।
একবার সেক্স করতে ৬০০ বছর. ৭২টি হুরী. মানে ৭২তম হুরী কে মিনিমাম ৬০০ X ৭১ = ৪২৬০০ বছর অপেক্ষা করতে হবে একবার __ খাওয়ার জন্য. বাপরে… শেষে হুরী দের অভিশাপ আর দীর্ঘশ্বাস এ না আল্লা কে দোজখে পুড়ে মরতে হয়.
গেলমান কি?
@Syeem,
গেলমান মানে হল “বালক”,তবে যেহেতু আমার কোরান ও হাদিছ সম্পর্কে কোন জ্ঞান নাই এজন্য বিস্তারিত বলতে পারবনা। তা ছাড়া ৮০০০০ বালক এক একজন বেহেশত বাসীর কি ধরনের সেবার জন্য বরাদ্দ থাকিবে তা আমার ও বোধগম্যের বাহিরে।
দেখা যাক কোন হাদিছ বিশেষজ্ঞ এ ব্যাপারে কোন ব্যাখ্যা দেন কিনা
ধন্যবাদ।
@আঃ হাকিম চাকলাদার, জান্নাতে তাহলে শিশুশ্রম জায়েজ!
@Syeem, পুরুষ সদ্য কিশোর । জান্নাতি উভকামী পুরুষ দের কাম বাসনা খালি নারী তে পূরণ হয় না , সেই জন্য পুরুষের ব্যবস্থা করে রেখেছেন আল্লাহ( যদি ও তিনি আছেন কিনা আমার জানা নেই !!)
@মহসিনা খাতুন,
হায়’হায় কী সর্বনেষে,অমানবিক ও স্ববিরোধী ব্যবস্থা। কোরানে কোথাও আছে ,আমি শুনেছি, আল্লাহ পাক কোন একটি জাতিকে সমকামিতার শাশ্তি স্বরুপ ফেরেশ্তাদের দ্বারা ধংশ করে দিয়েছিলেন,আর এহেন জঘন্যতম কাজের উৎসাহ ও লোভের ব্যবস্থা ও রাখা হয়েছে নাকি? আঃ ছিঃ ছিঃ । লজ্জায় ও ঘেন্নায় আমার মাথাটি অবনত হয়ে গেল! একথা আমার স্ত্রী জানতে পারলে তো আমাকে কখনই বেহেশতে লয়ে যেতে রাজী হবেন না। এখন উপায় কি?
ঘোড়ারডিম অনুসারে , বিশ্বাসী রা মৃত্যুর পর সর্বময় স্রস্টা মামদো ভূতের তরফ থেকে পাবেন পুরস্কার । আর এই পুরস্কার হল প্রেত্নিতলা । ঘোড়ারডিমের পঞ্চ স্তম্ভ দ্বারা যার সারাটা জীবন পরিচালিত হবে ,মামদো ভূতের বিচারের পর নিশ্চিত ভাবেই তার জন্য অপেক্ষা করে আছে মামদো ভূতের সর্বশ্রেষ্ঠ পুরস্কার প্রেত্নিতলা । কিন্তু খুব ছোট্ট বেলা থেকেই জানতে ইচ্ছা করত এই প্রেত্নিতলা ঠিক কেমন ? বা এই পুরস্কার আদৌ সারা জীবন একটি নির্দিষ্ট জীবনাচরণ মেনে চলার উপযুক্ত পুরস্কার কিনা । এর উত্তর পেতে গেলে সরাসরি গোপালভাঁড় ও ঠাকুরমারঝুলির ছোটছোট এলোমেলো বর্ণনা গুলি সাজিয়ে গুছিয়ে একটি কোলাজ তৈরি করা ছাড়া উপায়ান্তর নেই । আর সেই চেষ্টা তেই আমার বর্তমান লেখা । গোপালভাঁড় ও ঠাকুরমারঝুলির যেটুকু পড়েছি , তাতে প্রেত্নিতলার যে ছবি আমি পেয়েছি , তা হল —–/………………………………………………………………………………………………………../সব শেষে একটি কথা আবার বলতে চাই যে , প্রেত্নিতলা সম্পর্কে মামদো ভূত ও শিয়াল পণ্ডিতের দাবী গুলি আমার কাছে যৌক্তিক ভাবে এতটাই ভ্রান্ত বলে মনে হয়েছে ,যার লোভ দেখিয়ে একবিংশ শতাব্দীর আধুনিক যুক্তিবাদী মানুষ কে বেশিদিন বোকা বানানো যাবে না । পাঠকের কাছে প্রশ্ন , এই স্ববিরোধী ,অসঙ্গতি পূর্ণ প্রেত্নিতলার আশায় কি আপনারা কতকগুলি মধ্যযুগীয় রীতিনীতি সম্পন্ন গ্রন্থ কে আপনার জীবনের পথ নির্দেশিকা হিসাবে মেনে নেবেন ? :lotpot:
@ইমরানহক সজীব, এটা আমার ফেভারিট কমেন্ট !
:clap :clap :clap :clap :clap :clap :clap :clap :clap
@ইমরানহক সজীব, এটা আমার ফেভারিট কমেন্ট
:clap :clap :clap :clap :clap :clap :clap :clap :clap
@মহসিনা খাতুন, (L)
আমার বেহেস্তিদের জন্য একটি আক্ষেপ, তা হল-
বেহেস্তের যে বর্ণনা, তা থেকে এটাকে অবাধ ইন্দ্রিয় লালসার ক্ষেত্র বলে মনে হয়।
কিন্তু, মানুষ কী কেবলই ইন্দ্রিয় সুখ চরীতার্থ করেই জীবন যাপন করে?
শিল্প-সাহিত্যের চর্চা মানুষ কেন করে, মনের ক্ষুধা মেটানোর জন্য নয় কী?
বেহেস্তি বর্ণনায় সেসবের তো কোন চিহ্নমাত্রও নেই,
সেখানে নেই কবি, উপন্যাসিক, চিত্রশিল্পী, গায়ক ইত্যাদি ইত্যাদি।
তাহলে কী বেহেস্তিগন মনটা পৃথিবীতেই গচ্ছিত রেখে যাবেন।
ধন্যবাদ লেখককে……. (F)
আপনার লিখাটি ভাল হয়েছে, যুক্তি গুলোও চমৎকার। আমার মনে হয় ধর্ম-বিষয়ে যে কোন লিখায় সুনির্দিষ্ট রেফারেন্স খুবই প্রয়োজন। কারন, বিশ্বাসীদের যে অনুভূতিটি সবচেয়ে বেশী স্পর্ষকাতর তা হলো ‘ধর্মানুভূতি’।
৭২ টি হুরী ও গেলমানের ‘কিচ্ছার’ কথা মনে পরলেই আমার ‘বমি বমি’ লাগে।
@গোলাপ, কয়েকটির রেফারেন্স আমি উল্লেখ করেছি । সব গুলো করি নি ঠিক ।
জান্নাত টা যে ভাবে আছে ওটা ওভাবেই থাকুকনা। ওটা আপাততঃ কোন অসুবিধার সৃষ্টি করবেনা।
তার আগে একটু যাচাই বাছাই করে দেখা যাকনা জান্নাত টার সংবাদ দাতা কোরান এবং হাদিছ নিজেই কতটা সত্যতার পরীক্ষায় টিকতে পারে,কোরান হাদিছ যদি নিজেই সত্যতার পরীক্ষায় টিকতে না পারে তাহলে জান্নাত ও জহাহন্নামের অস্তিত্ব নিমেষেই উধাও হয়ে যাবে।
জান্নাত সম্পর্কে অনেক তথ্য জানতে পারলাম।এজন্য ধন্যবাদ।
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
(Y) :clap
@আঃ হাকিম চাকলাদার, ঠিক বলেছেন । ওই কাজ টাও করতে চাই ।
:lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot:
@শান্ত কৈরী, 😀 😀 😀 😀 😀 😀 😀 😀 😀 😀 😀 😀
এমন কল্প কাহীনি আমিও পড়েছি। মদ দুনিয়াতে হারাম কিন্তু পরকালে হালাল্, আবার যৌন মিলনে বীর্য বাহির না হলে কেমনে চলে বোজলামনা
@মাসুম বাবু রিগ্যান,
এত বোঝার দরকার কি? বীর্য বাহির না হয়েও যদি বাহির হওয়ার মত মজা পাওয়া যায়, বাহির হওয়ার দরকার টা কি ?
আপনার জান্নাতের কল্পকথা পড়ে মনটা কেমন উদাস হয়ে গেল, কারন সেই জান্নাতে নিশ্চয়ই আমাদের মত কাফির মোনাফেকরা যেতে পারবে না। ;-(
কিন্তু আপনি যে ফিরিস্তি দিলেন তা যে আপনার নিজের মনগড়া কল্পনা নয় তার প্রমান কি? সাথে কিছু কিছু হাদিস ও আয়াত জুড়ে দিলে ভাল হতো না ?
বিশেষ করে উক্ত বর্ণনা আপনি কোথা থেকে পেলেন? আমি তো সারা হাদিস কোরান তন্ন তন্ন করেও কোথাও পাইনি, তবে একদিন জাকির নায়েক বলছিল- প্রতিটি নারী নাকি একটা করে স্মার্ট পুরুষ পাবে জান্নাতে, কিন্তু সেও কোন রেফারেন্স না দিয়ে কথাগুলো বলেছিল দেখলাম।
😕
@সপ্তক, তারপর আবার ৬০০ বছর । তারপর আবার । শেষ নাই । :))
আল্লার অস্তিত্বই তো স্ববিরুধি।
@আসরাফ, সে তো অবশ্যই । কিন্তু মানুষ ধর্ম পালন করে থাকে জান্নাতের আশায় । তাদের জান্নাত যে কেমন জায়গা… আমি সেই প্রশ্নই রেখেছি ।
আমি কোন হাদিসে পড়েছিলাম, জান্নাতিদের নাক থাকবে না। নাক ছাড়া মানুষ শ্বাস-প্রশ্বাস নেবে কেমন করে, তাদেরকে দেখতে লাগবে কেমন? রোমকূপ না থাকলে ঘাম নির্গত হবে কিকরে? বেহেস্তে আমরা বিভিন্ন পানীয়ের নদীর বর্ণনা দেখতে পাই। কিন্তু কোন সাগর দেখতে পাইনা। বেহেস্তগুলো কি পৃথিবীর চেয়ে অনেক ছোট? এই ছোট্ট পৃথিবীতেও ত অনেক সাগর মহাসাগর রয়েছে! বেহেস্তে দিবা রাত্রি কিভাবে হবে, কেয়ামতের পরও কি সূর্য উদিত হবে এবং অস্ত যাবে?
জান্নাতে ফ্রি হাই স্পিড ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে কি না এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট আয়াত চাই!
@অরণ্য,
ছিঃ ! কি যে বলেন ! আল্লাহ যখন বলেছেন সব পাওয়া যাবে… বুঝলেন কিনা ! আল্লাহ-র কোথায় আপনি বিশ্বাস করেন না ! কাফের ! আপনাকে সামনে পেলেই :guli:
@মহসিনা খাতুন,
নিশ্চয়ই তবে, সবে সব পাবে
শুধু তাহাকে না কেউ দেখিবে
তবে… কেমনে সবে চাহিবে??
সকলের অধিকার!
@অরণ্য, আমি যতটুকু জানি বর্তমানে পৃথিবীতে হাইএস্ট ১০ এম বি পি এস পর্যন্ত স্পিড পাওয়া যায় কিন্তু পবিত্র কুরানের সুরা টেলিটকের ৭৮৬ নাম্বার আয়াতে উল্লেখ রয়েছে ” নিশ্চয় জান্নাতিগণ যত ইচ্ছা তত স্পিডে নেট ব্যবহার করতে পারবেন শুধুমাত্র বাংলাদেশী জান্নাতিগণকে জান্নাতে অবস্থিত ডিজিটাল বাংলাদেশ মন্ত্রণালয় হতে বি টি সি এলের রেফেরেন্সের মাধ্যমে শর্তসাপেক্ষে হাই স্পিড ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন, আর নিশ্চয় আল্লাহ মহা ডিজিটালময়। “
@মাসুদ রানা,
বি টি সি এলের রেফারেন্স???…
ভিক্ষে নাহয় নাইবা দিলে
তবু কুকুর লেলিয়ে দিওনা 🙁 :-X
আল্লাহ মহা ডিজিটালময়??…
শুধু বিদ্যুৎ নাই… এই যা প্রবলেম! 😛