আবুল কাশেম
[রচনাটি এম, এ, খানের ইংরেজি বই থেকে অনুবাদিত “জিহাদঃ জবরদস্তিমূলক ধর্মান্তরকরণ, সাম্রাজ্যবাদ ও ক্রীতদাসত্বের উত্তরাধিকার” গ্রন্থের ‘ইসলামি ক্রীতদাসত্ব’ অধ্যায়ের অংশ এবং লেখক ও ব-দ্বীপ প্রকাশনের অনুমতিক্রমে প্রকাশিত হলো।]
ইসলামি ক্রীতদাসত্ব, খণ্ড ৬
লেখক: এম, এ, খান
ক্রীতদাসদের সামাজিক মর্যাদা ও অবস্থান
ইবনে ওয়ারাকের মতে:
ইসলামের অধীনে ক্রীতদাসদের আইনগত কোনোই অধিকার নেই; তারা কেবল একটা ‘বস্তু’ হিসেবে বিবেচিত − তাদের প্রভুদের সম্পদ, যা তারা খেয়াল-খুশিমতো ব্যবহার করতে বা ফেলে দিতে পারে − বিক্রি কিংবা উপহার হিসেবে ইত্যাদি। ক্রীতদাসরা অভিভাবক বা আদালতে সাক্ষী হতে পারে না, এবং তারা যা আয় করবে তা হবে প্রভুর। অমুসলিম ক্রীতদাসদের ইসলামে ধর্মান্তরণও তাকে সরাসরি মুক্ত করবে না। মালিকের জন্য কোনো নারী বা পুরুষ ক্রীতদাসকে মুক্ত করে দেওয়ার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।[৯৩]
নিচে দেখা যাবে যে, শরীয়া আইনে ক্রীতদাসরা সাধারণ সম্পদ ও পণ্যের মধ্যে তালিকাভুক্ত এবং তাদেরকে বিক্রির জন্য বাণিজ্য-আইন ধারার নিয়ম-কানুন ও নির্দেশনা। ক্রীতদাসকে কেনার পর ক্রেতা-মালিক তার মধ্যে কোনোরকম খুঁত খুঁজে পেলে সে মালিক তাকে প্রহার করতে পারে, শরীরে দৃশ্যমান কোনো ক্ষত অথবা দাগ সৃষ্টি না করে। ‘ফতোয়া-ই আলমগীরি’ মোতবেক, প্রহার ও নির্যাতনের পর ক্রীতদাসের শরীরে যদি কোনো স্থায়ী দাগ না পড়ে, তাহলে ক্রেতা-মালিক পূর্ণ ক্ষতিপূরণসহ সে ক্রীতদাসকে বিক্রেতার কাছে ফেরত দিতে পারে। দ্বাদশ শতাব্দে রচিত হানাফী আইনের সারসংক্ষেপ ‘হেদাইয়াহ্’ গ্রন্থটি আমাদেরকে তথ্য দেয় যে, মুসলিম সমাজে ‘চুরির দায়ে ক্রীতদাসদের অঙ্গ-প্রতঙ্গ ব্যবচ্ছেদ করা আইন দ্বারা স্বীকৃত একটি সাধারণ নিয়ম ছিল।’ ইসলাম যদিও ক্রীতদাসদের প্রতি ভাল আচরণ করার কথা বলেছে, তবুও মালিক তার ক্রীতদাসকে হত্যা করলে সেটা ইসলামে স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে বিবেচিত।[৯৪]
অবিশ্বাসীদের উপর দখলকারী আক্রমণগুলোতে মুসলিম ধর্মযোদ্ধারা প্রায়শই অস্ত্রবহনে সক্ষম বয়সী সকল পুরুষ-বন্দিকে হত্যা করেছে (কেননা তারা পুনরায় সংগঠিত হয়ে হুমকি সৃষ্টি করতে পারতো) এবং ক্রীতদাস বানিয়েছে সকল নারী-শিশুকে, যাদেরকে স্বাভাবিকভাবেই ইসলাম গ্রহণ করতে হয়েছে। বন্দিদেরকে হত্যা সম্পর্কে হেদাইয়াহ্ বলেছে: ‘বন্দিদেরকে হত্যার ক্ষেত্রে ইমামের (শাসকের) ইচ্ছার স্বাধীনতা রয়েছে, কেননা নবি বন্দিদেরকে হত্যা করতেন, এবং তাদেরকে হত্যা তাদের অপকর্ম বা পাপের সমাপ্তি ঘটায়।’ হেদাইয়াহ্ বলে যে, নারী ও শিশু বন্দিরা, যারা কোনো হুমকি নয়, তাদেরকে সাধারণত ক্রীতদাস করা হবে, ‘কেননা তাদেরকে ক্রীতদাসকরণ (ইসলামে ধর্মান্তরের জন্যে) তাদের অপকর্মের সুযোগ নিরাময় করে এবং সে সাথে মুসলিমরা একটা সুবিধা অর্জন করে (তাদের শ্রম শোষণ ও মুসলিম সংখ্যা বৃদ্ধিকরণের মাধ্যমে)’।[৯৫] বিখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ ইবনে খালদুন (মৃত্যু ১৪০৬), যিনি অনেক পশ্চিমা পণ্ডিতদের দ্বারাও উচ্চ প্রশংসিত,[৯৬] তিনি মুসলিম বিশ্বে চলমান ক্রীতদাসকরণ পেশাকে ধর্মীয় গৌরবের সাথে বর্ণনা করতঃ লিখেছেন: ‘(বন্দিদেরকে) ‘যুদ্ধের ঘর’ (অমুসলিম বিশ্ব) থেকে ‘ইসলামের ঘর’-এ (মুসলিম বিশ্বে) এনে দাসপ্রথা আইনের অধীনে রাখা হয়, যা স্বর্গীয় তত্ত্বাবধানের মধ্যেই নিহিত; দাসকরণের মাধ্যমে আরোগ্যলাভ করে তারা অত্যন্ত দৃঢ়সংকল্প পাকা বিশ্বাসী হয়ে মুসলিম ধর্মে প্রবেশ করে।’[৯৭] ১১৯৪ সালে বখতিয়ার খিলজির কল (আলিগড়) বিধ্বস্ত করার সময় বন্দিদের মধ্যে যারা ‘জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান’ ছিল, তারা ধর্মান্তরিত হয়; কিন্তু যারা স্বধর্ম আঁকড়ে থাকে, তাদেরকে হত্যা করা হয় (পূর্বে উল্লেখিত)। এখানে তাদেরকে ‘জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান’ বলা হয়েছে, যারা তরবারির ভয়ে দ্রুত ইসলাম গ্রহণ করে ক্রীতদাসত্ব বরণ করে নিয়েছিল। ‘হেদাইয়াহ্’ বলে যে, কোনো যুদ্ধ-বন্দি যদি মুসলিম হয়ে যায়, তথাপি ‘তিনি (ইমাম বা শাসক) তাকে আইনসঙ্গতভাবেই ক্রীতদাস বানাতে পারেন, কেননা ক্রীতদাসকরণের কারণ (অর্থাৎ তার অবিশ্বাসী হওয়া) তাদের ইসলাম গ্রহণের পূর্বে বিদ্যমান ছিল (যুদ্ধ-বন্দি তথা ক্রীতদাস হওয়ার মাধ্যমে)। আটক হওয়ার পূর্বে কোনো অবিশ্বাসী মুসলিম হয়ে গেলে সেটা ভিন্ন ব্যাপার (অর্থাৎ তাকে ক্রীতদাস করা যাবেনা)।’[৯৮]
[আগামী পর্বে আলোচিত হবেঃ ক্রীতদাসদের দুঃখ-দুর্দশা ও ভোগান্তি]
সূত্রঃ
93. Ibn Warraq, p. 203
94. Lal (1994), p. 148
95. Hughes TP (1998) Dictionary of Islam, Adam Publishers and Distributors, New Delhi, p. 597
96. British historian Toynbee termed his Muqaddimah as “undoubtedly the greatest work of its kind that has ever been created by any mind in time or place”. Bernard Lewis in his The Arabs in History called him “the greatest historian of the Arabs and perhaps the greatest historical thinker of the Middle Ages.”
97. Lal (1994), p. 41
98. Hughes, p. 597
ইসলামি ক্রীতদাসত্ব, খণ্ড ৭
লেখক: এম, এ, খান
[রচনাটি এম, এ, খানের ইংরেজি বই থেকে অনুবাদিত “জিহাদঃ জবরদস্তিমূলক ধর্মান্তরকরণ, সাম্রাজ্যবাদ ও ক্রীতদাসত্বের উত্তরাধিকার” গ্রন্থের ‘ইসলামি ক্রীতদাসত্ব’ অধ্যায়ের অংশ এবং লেখক ও ব-দ্বীপ প্রকাশনের অনুমতিক্রমে প্রকাশিত হলো।]
ক্রীতদাসদের দুঃখ-দুর্দশা ও ভোগান্তি
অন্যথায় মর্যাদা-সম্পন্ন স্বাধীন মানুষকে গৃহপালিত পশুর মত বোবা-কালা জন্তুতে পরিণত করা নিঃসন্দেহে বড় ধরনের মানসিক ও মনস্তাত্ত্বিক যন্ত্রণা, যা তার মর্যাদা ও আত্ম-সম্মান বোধও হরণ করে। তদুপরি মুসলিম বন্দিকারীরা সাধারণত বন্দিদেরকে প্রকাশ্যে চৌরাস্তার মোড়ে কুচকাওয়াজ করানোর মাধ্যমে উপহাস, বিদ্রূপ ও অমর্যাদার পাত্র বানাতো। উদাহরণস্বরূপ, সুলতান মাহমুদ কাবুলের হিন্দু রাজা জয়পালকে ক্রীতদাস করে গজনীতে নিয়ে যান এবং জনসমক্ষে তাঁকে চরম অসম্মানিত করেন। ক্রীতদাস বাজারে যেখানে তাঁকে সাধারণ ক্রীতদাসের মত নিলামে তোলা হয়েছিল, সেখানে তাঁকে ‘প্রকাশ্যে প্যারেড করানো হয়, যাতে তাঁর বন্দি সন্তান ও পরাজিত সেনাধ্যক্ষরা এ রকম লজ্জাজনক, বন্দি ও অমর্যাদাকর অবস্থায় তাঁকে দেখতে পায়; সাধারণ ক্রীতদাসের সঙ্গে একত্রে মিশিয়ে তাঁকে জনসমক্ষে অমর্যাদার পাত্র করা হয়।’[৯৯] এরূপ চরম অমর্যাদায় বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যুকে শ্রেয় মনে করে তিনি আগুনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
ইসলামি কর্তৃত্বের শেষকাল পর্যন্তও সর্বত্র ক্রীতদাসদের একইরকম, এমনকি তার চেয়েও খারাপ, ভাগ্য বরণ করতে হয়েছে। মরক্কোর সুলতান মৌলে ইসমাইল (মৃত্যু ১৭৭২)-এর শাসনকালের শেষ দিকে সমুদ্রপথে ধৃত বাণিজ্যযাত্রী শ্বেতাঙ্গ বন্দিদেরকে উপকূলে ভেড়ার পর শিকল দিয়ে বাঁধা অবস্থায় উৎসব করে শহর ও রাজধানীর পথে পথে ঘুরানো হতো। তাদেরকে অভিশাপ দিতে ও উপহাস করতে বিপুল সংখ্যক অভব্য ও অভদ্র জনতা এসে জমা হতো, যারা তাদের সঙ্গে সর্ব প্রকারের অমর্যাদাকর ও শত্রুতামূলক আচরণ করতো। এক জাহাজে ধরা পড়া ইংরেজ বন্দি জর্জ এলিয়ট জানায়: যখন তাদেরকে তীরে নেয়া হয়, তখন ‘কয়েক শ’ অলস ও বদমাস প্রকৃতির লোক এবং অসভ্য তরুণরা’ তাকে ও তার সহকর্মীদেরকে চারিদিক থেকে ঘিরে ধরে অসভ্য গালাগাল করে এবং তাদেরকে ‘নগরীর বিভিন্ন রাস্তায় ভেড়ার পালের মতো ঘুরানো হয়।’[১০০]
তবে ক্রীতদাসদেরকে সবচেয়ে অসহনীয় যে যন্ত্রণা ভোগ করতে হতো, তা ছিল শারীরিক: যেমন শারীরিক কষ্ট, ক্ষুধা, তৃষ্ণা ও রোগ ইত্যাদি। আটক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শারীরিক নির্যাতন ও কষ্ট শুরু হতো, যা চলতে থাকতো গন্তব্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত। গন্তব্য কখনো কখনো হাজার হাজার মাইল দূরের বিদেশী ভূখণ্ডে অবস্থিত ছিল, যেখানে তাদেরকে পশু-পালের মতো দুর্গম পথঘাট পাড়ি দিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো। সর্বশেষ মালিকের কাছে বিক্রি না হওয়া পর্যন্ত বন্দিদেরকে শৃঙ্খলে বাঁধা অবস্থায় রাখা হতো। কখনো কখনো একজন ক্রীতদাসের ২০ বার দাস-ব্যবসায়ীদের মধ্যে হাত-বদল হতো।
কীভাবে ক্রীতদাসদের দীর্ঘ ভ্রমণ শুরু হতো তার একটা দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় সুলতান মাহমুদ কর্তৃক রাজা জয়পালকে পরাজিত ও ক্রীতদাসকরণের বর্ণনা থেকে। আল-উতবি জানান: ‘তাঁর (জয়পালের) সন্তান ও নাতিপুতি, তাঁর ভাতিজা ও গোত্রের প্রধানবর্গ এবং তাঁর আত্মীয়-স্বজনদেরকে আটক করে দড়ি দিয়ে শক্ত করে বাঁধা হয় এবং সুলতানের সামনে দিয়ে তাদেরকে সাধারণ অপরাধীদের মতো নিয়ে যাওয়া হয়… তাদের কারো কারো হাত পিছনে শক্ত করে বাঁধা ছিল, কাউকে গলা-টিপে ধরা হয়, কাউকে গলায় ধাক্কা দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়।’[১০১]
স্মরণ রাখতে হবে যে, সুলতান মাহমুদ কখনো কখনো মাসের পর মাস ভারত থেকে পথিমধ্যে লাখ লাখ ক্রীতদাস আটক করতেন। এসব ক্রীতদাসকে একত্রে বেঁধে ভীষণ অসুবিধাজনক ও নিদারুণ যন্ত্রণাদায়ক অবস্থায় রাজধানী গজনীতে গরু-ছাগলের মতো তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হতো। ভারতের অভ্যন্তরভাগ থেকে গজনী শত-শত হাজার-হাজার মাইল দূরে অবস্থিত। আর সেসব ক্রীতদাসের অধিকাংশই ছিল দুর্বল নারী ও শিশু; অথচ তাদেরকে শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষার মধ্য দিয়ে পাহাড়ি এবরো-থেবরো উঁচুনিচু দুর্গম পথ-জঙ্গল পাড়ি দিয়ে মাসের পর মাস পায়ে হেঁটে যেতে হতো। তিমুরের ভারত অভিযানের স্থায়ীত্বকাল ছিল চার-পাঁচ মাস (সেপ্টেম্বর ১৩৯৮-জানুয়ারি ১৩৯৯)। দিল্লিতে পৌঁছানোর পূর্বেই পথিমধ্যে তিনি ১০০,০০০ ক্রীতদাস সংগ্রহ করেছিলেন তার মধ্য-এশীয় রাজধানী সমরখন্দে নিয়ে যাওয়ার জন্য। দিল্লি থেকে ফেরার পথে তিনি আরো ২০ থেকে ২৫ লাখ ক্রীতদাসকে আটক করে হাজার হাজার মাইল দূরে অবস্থিত সমরখন্দে নিয়ে যান।
বন্দি ক্রীতদাসরা যে কী চরম অসহনীয় শারীরিক নিষ্পেষণ, যন্ত্রণা ও দুর্ভোগের শিকার হতো, এসব দৃষ্টান্ত তার জ্বলন্ত প্রমাণ দেয়। যারা শারীরিক দুর্বলতা বা অক্ষমতার কারণে সবার সাথে তাল মিলিয়ে এগুতে ব্যর্থ হয়েছে, তাদেরকে তাল রেখে হাঁটার জন্য অমানবিক ও নিষ্ঠুর প্রহারের শিকার হতে হয়েছে। এমন বিপুল সংখ্যক লোকের জন্য হাজার হাজার মাইলের নিদারুণ দুর্গম পথে যথেষ্ট খাবার ও পানীয়ের নিরাপত্তা খুব কমই ছিল। যারা অসুস্থ হয়ে পড়তো, নিশ্চয়ই তাদের জন্য কোনো চিকিৎসা বা সেবা-শুশ্রুষার ব্যবস্থা ছিল না। তাদের কেউ চলতে অক্ষম হয়ে পড়লে তাকে বিরান পথ-জঙ্গলে ফেলে রেখে যাওয়া হতো, যেখানে সে একাকী রোগ-যন্ত্রণায় মারা যেত ও বন্যপ্রাণীর খোরাক হতো।
বন্দিদের দুর্ভোগের একটা সুস্পষ্ট ও পরিপূর্ণ বর্ণনা পাওয়া যায় উলুগ খান বলবন কর্তৃক রাজস্থানের জালরের রাজা কনহরদেবকে আক্রমণের এক প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ থেকে। সে আক্রমণে আটককৃত বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষকে বেঁধে গাদাগাদি করে তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্ধৃতি দিয়ে পঞ্চদশ শতকের ভারতীয় লেখক প্রবন্ধা লিখেছেন: ‘‘(বালুকাময় রাজস্থান মরুভূমির মাঝে) মাথার উপর আচ্ছাদনহীন অবস্থায় দিনের বেলায় তারা প্রচণ্ড সূর্যতাপ সহ্য করে, আর রাত্রিকালে ভোগ করে খোলা আকাশের নিচে হাড়-কাঁপানো শীত। বাড়িঘর ও মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে আনা শিশুরা দুঃসহ দুরবস্থায় কাঁদতে থাকে। ইতিমধ্যে পিপাসা ও ক্ষুধার যন্ত্রণায়, এ অবস্থা তাদের কষ্ট-দুর্দশা বাড়িয়ে দেয়। কোনো কোনো বন্দি অসুস্থ, কেউ কেউ উঠতে-বসতে অপারগ। কারো কারো পায়ে জুতা নেই, না আছে পরার মতো কাপড়-চোপড়।” তিনি আরো লিখেছেন: ‘‘কারো পায়ে লোহার বেড়ি বা শিকল পরানো। প্রত্যেককে স্বজন-পরিজন থেকে আলাদা করে চামড়ার ফিতা দিয়ে বেঁধে গাদাগাদি করে তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। শিশুদেরকে পিতা-মাতা থেকে, স্ত্রীদেরকে স্বামীদের থেকে, বিচ্ছিন্ন করেছে সর্বনাশা এ নিষ্ঠুর হামলা। শিশু ও বয়স্ক সবাই কষ্ট-যন্ত্রণায় প্রচণ্ডভাবে আর্তচীৎকার করে উঠে শিবিরের সে অংশ থেকে যেখানে তাদেরকে গাদাগাদি করে রাখা হয়েছে। তারা ক্রন্দন ও বিলাপ করছিল, তখনো এ আশায় যে, কোনো অলৌকিক শক্তি হয়তো তাদেরকে রক্ষা করবে।’’[১০২]
এটা কেবলমাত্র প্রথম কয়েকদিনের দুর্ভোগের চিত্র। পাঠকদের অনুমান করতে অসুবিধা হবে না যে, ক্রীতদাসদেরকে মাসের পর মাস ধরে হাজার হাজার মাইল অতিক্রম করে সুলতান মাহমুদ, মোহাম্মদ গোরী ও আমির তিমুরের বিদেশী রাজধানীতে পৌঁছাতে কী অবর্ণনীয়, দুঃসহ ও ভয়ঙ্কর যন্ত্রণা ও দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ ক্রীতদাসদের ক্ষেত্রেও কষ্ট-যন্ত্রনা ভোগের একই বা আরো দুর্বহ চিত্র পাওয়া যায়। তাদেরকে মধ্যপ্রাচ্যের, এমনকি ভারতের, বাজারগুলোতে দীর্ঘতর পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছাতে যে ভয়ানক কষ্টের শিকার হতে হয়েছে, তা ভাষা দিয়ে বোঝানো অসম্ভব! বার্বার মুসলিম জলদস্যুদের হাতে ধরা পড়া ইউরোপীয় বন্দিদেরকে যে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হতো, তা আফ্রিকায় আটককৃত কৃষ্ণাঙ্গ ক্রীতদাসদের প্রতি ভয়াবহ আচরণ ও দুর্ভোগের একটা ধারণা দিবে।
[আগামী পর্বে আলোচিত হবেঃ উত্তর আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গ ক্রীতদাসদের ভোগান্তি]
সূত্রঃ
99. Lal (1994), p. 22
100. Milton, p. 65-66
101. Lal (1994), p. 22
102. Ibid, p. 54-55
————–
ইসলামে র্বরতা (দাসত্ব অধ্যায় ১)
ইসলামে বর্বরতা দাসত্ব অধ্যায় ২)
ইসলামে র্বরতা (দাসত্ব অধ্যায় ৩)
ইসলামে র্বরতা (দাসত্ব অধ্যায় ৪)
————–
@মুক্তমনা এডমিন-
আপনাদের সাইটে একটা বাগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। একটা কমেন্ট লিখে পোস্ট করার পর সেই থ্রেডে আরেকটা কমেন্ট পোস্ট করলে পাবলিশের সময় শুধু পরেরটা আসে। আগেরটা হারিয়ে যায়।
ধন্যবাদ।
“বঙ্গের সাধারন জনগণ ছিল কামার,কুমার,জেলে ,তাতি”.. যদি পাচশত থেকে হাজার বছর পিছনে যাই, তাহলে দেখতে পাব, বঙ্গের বহু অধিবাসী ছিল আদিম জনগোষ্ঠীর কোল, ওরাও, মুন্ডা, শবর, নিষাদ ইত্যাদি। তারা ছিল আদিম বিশ্বাসী, পৃকৃতি পুজক ঠিক হিন্দু বলতে যা বোঝায় (বেদ-গীতা বিশ্বাসী), তা নয়। যারা মূল ধারার হিন্দু তারা নগরবাসীই ছিল। বাকী সম্পূর্ণ অংশটাতো ছিল বনজঙ্গল/ গ্রাম।
ইসলামের অপরাধপ্রবণতা সম্পর্কে আমি সচেতন আছি। বাংলায় এই জাতীয় বই মুদ্রিত হওয়া শুরু হলেই বাংলাদেশে ইসলাম ধ্বসে পড়বে। আমি অনেক অনেককে চিনি, যারা ইসলামের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। শুধু আইনে আটকায়, আর তেমন ভাল তথ্যপ্রমাণ জানেনা বলে চুপ আছে।
লেখাটি ও মূল বইয়ের বহুল প্রচার কামনা করি। বদ্বীপ থেকে জিহাদ বইটি কিনেছি। কিন্তু দাম অনেক বেশি। ৫০-১০০ টাকার মধ্যে বই (কম পৃষ্ঠার নির্দিষ্ট বিষয়ে) বের করলে তা সবার কাছে পৌছাবে বলে মনে করি। লেখকদেরকে এই দিকে দৃষ্টি দেয়ার জন্য সনির্বন্ধ অনুরোধ করছি।
@নীলিমা পারভীন, বদ্বীপের প্রকাশকের সাথে কথা হয়েছিল বই কিনতে গিয়ে। “জিহাদ” বইটার দামের কথা তুললে উনি বললেন বইটা অনুবাদ, শুদ্ধিকরণ ও কম্পোজে অনেক টাকা গিয়েছে। ৬০০ কপি ছেপেছে এবং প্রত্যেক কপির বিনিয়োগ মূল্য পড়ে গেছে ৬০০ টাকার উপর। বললেন দ্বিতীয় সংস্করণে বইটা সস্তা করা যাবে বড় সংখ্যায় ছাপলে। আশা করি আপনার পরামর্শটা লেখক বা প্রকাশকের কাছে যাবে কাসেম ভাইয়ের মাধ্যমে।
@নীলিমা পারভীন,
অপেক্ষায় থাকেন , কবে শুনবেন বইটা নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়ে গেছে।
ভারতে ইসলাম সব ভাবেই এসেছে। সুফি,বেবসায়ি,তরবারী।।সবার হাত ধরেই। একথাও সত্য যে বঙ্গে যতটা ইসলাম প্রসার পায় ভারতের অন্য দিকে ততটা নয়। মুঘল সম্রাট রা ধর্ম প্রচারে তেমন মনযোগী ছিলেন না ,তাদের উদ্দেশ্য ছিল সাশন,অনেক্টা সেই আরয দের মতই, স্থানিয়দের তারা নেটিভ ই মনে করত। মুঘল রা যখন ভারতে আসে তখন হিন্দুদের মন্দিরে মূল্যবান ধন রক্ষিত রাখা হত তাই মুঘল রা লুন্ঠন এর জন্য মন্দির আক্রমণ করত,হয়ত মন্দির ধংসের জন্য নয়।কিন্তু বঙ্গের সাধারন জনগণ ছিল কামার,কুমার,জেলে ,তাতি।।যাদের অচ্ছুৎ মনে করত বর্ণ হিন্দুরা,যেভাবেই হোক ইসলাম এর সাম্যের বানী তাদের মন জয় করে,তারা মুসল্মান হয়।জোর করে ধর্ম খুব বেশী মানুষের পরিবর্তন করা যায় না,স্পেনে যায় নাই।
@সপ্তক, একজ্যাকটলি। আরো বিশদে বললে ভারতে ইসলাম এসেছে বেশ কয়েকটি মেয়াদে ও রূপে, যথা,
১. দস্যুবৃত্তি- কাসিম দিয়ে শুরু, মোটাদাগে মাহমুদ দিয়ে শেষ।
২. সাম্রাজ্য- তুর্কি, ঘুরি বা মোগল। দক্ষিনেও এসেছে আরো কিছু। এদের বিভিন্ন জাতিসত্ত্বা থাকলেও ওরিয়েন্টালিস্ট দৃষ্টিভঙ্গিতে এদের সবাইকে লেজেগোবরে মিশিয়ে মুসলিম সাম্রাজ্য বলে ডাকা হয়। অথচ খেয়াল করুন আমরা কিন্তু বৌদ্ধ, প্যাগান, ব্রাহ্মণ সাম্রাজ্য বলিনা, বলি মৌর্য, পাল বা সেন সাম্রাজ্য!
৩. ব্যবসাবৃত্তি- মূলত দক্ষিণভারত ও বাংলাদেশে।
৪. সুফী- মেজরিটিই ইরান থেকে। নিঃসংগ ও ভবঘুরে টাইপের। এদের মোটাদাগে তিন ভাগে ভাগ করা যায়-
৪.১. রাজকীয় সুফী- অনেকটা আর্চ বিশপ টাইপের, যেমন নুর কুতুবুল আলম, কুতুবুদ্দিন বখতিয়ার কাকী ইত্যাদি।
৪.২ ভবঘুরে সুফী মিশনারী টাইপের- শাহজালাল, বাবা আদম এরা। এইধারার সাথে মিশেছে আদিবাসী সহজীয়া ধারা যার দ্বারা প্রচুর সহজীয়া মুসলিম সেক্ট তোইরী হয়েছে ব্লেণ্ডিং এ। এদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ পরিণতি আমরা পাই ছেউরিয়ার লালন আর উত্তর ভারতের কবির দাদুর মধ্যে। ইসলামাইজেশন সবচেয়ে ম্যাসিভ স্কেলে হয়েছে এদের মাধ্যমে।
৪.৩ সাম্রাজ্যের প্রশাসক- এরা সংস্কার কর্মের জন্য মৃত্যুর শত শত বছর পরে সুফির টাইটেল পেয়েছেন(মূলত লোভী খাদেমদের জন্য) যেমন বাগেরহাটের খান জাহান আলী।
মনে রাখতে হবে সাম্রাজ্য বিস্তারে আসারা কেউই ধর্মপ্রচারে আসেননি। তাছাড়া কনভার্সন করলে দাস বানানো যায়না, ইসলামে মানা আছে। কাজেই তারা মোটেই ধর্মবিস্তারে উৎসাহী ছিলেননা। মোগলদের রাষ্ট্রনীতি ছিলো সম্পূর্ণ ধর্মনিরপেক্ষ(অবশ্যই আওরংগজেব বাদে, তবে তিনি যুদ্ধবিগ্রহ ছাড়া তেমন একটা দমফেলার ফুরসতই পাননি। এবং তার আমলের বিদ্রোহগুলোও তলোয়ার তত্ত্বের অসারতা সম্পর্কে আমাদের ধারণা দেয়।) অবশ্যই ফর্সড কনভার্সেশন হয়েছে। কিন্তু সেটাই মূল ধারা বা গ্লোবাল ট্রেণ্ড, এটা এখন পর্যন্ত কেউই প্রমাণ করতে পারেন নি। অপরদিকে সুফিদের কনভার্সেশন প্রক্রিয়া নিয়ে অনেক রেফারেন্স ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন জায়গায়।
অনেকেই কাসিম বা খিলজির আক্রমণকে তলোয়ার তত্ত্বের প্রমাণ হিসাবে উপস্থাপন করছেন। তাহলে তো আলেকজাণ্ডার বা শক বা হুণ দের দ্বারাও কনভার্সেশন হওয়ার কথা। কই সেসব?
মন্দির ধ্বংস স্রেফ লুটপাটের জন্যও না, সেই আদিকাল থেকেই মন্দিরের কাল্ট ছিলো সাম্রাজ্যের অক্ষত থাকার প্রতীক, কাজেই সেটাকে ধ্বংস করার মাধ্যমে চূড়ান্ত সাম্রাজ্য ধ্বংসের কাজটি করা হত, মরালিটি ভেঙে দেওয়ার জন্য। সুপ্রাচীণ কাল থেকেই একারণে এটা করা হয়ে আসছে। দাসব্যবসা ও গণহত্যার ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে। কোনোটাই ভালো না, তবে স্রেফ মুসলিমদের এসব কারনে বিশেষায়িত করার পেছনে কি কোনো উদ্দেশ্য কাজ করে? আর এমন যদি হতো এটা নতুন কোনো ঐতিহাসিক ইন্টারপ্রিটেশন তাও একটা কথা ছিলো। সেই অনেক আগেই ওরিয়েন্টালিস্টরা এসব তত্ত্ব দিয়ে গেছেন যার কোনোটাই প্রমাণাভাবে টেকেনি; সেক্ষেত্রে এসব ভুলভাল তথ্য দিয়ে ইসলাম বিদ্বেষ জারী রাখার মাজেজাটা কি?
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
হাঁ আপনি ঠিক ই বলেছেন,তবে ইসলামে যেভাবে রাজ্য বিস্তারের ক্ষেত্রে ধর্ম কে ব্যাবহার করা হয়েছে অন্য ধর্মে আবার তা করা হয়নি এটাও ঠিক। সইনিকদের নৈতিক মনবল বাড়ানাওর জন্য ইসলাম কে ব্যাবহার করা হয়েছে সবসময়,গনিমতের মাল এর ভাগ এবং শহীদ হলে হুরের লোভ দেখানো ত ছিলই। চেঙ্গিস খান (চেঙ্গিস মুসল্মান ছিলেন না) যখন ভারতবর্ষ অধিকার করেন তার সেনাবাহিনি তে অনেক মুসল্মান সেনাপতি ছিল। চেঙ্গিস খান তার মুসলিম সেনাপতিদের কোরান দেখিয়ে নিরদেশ দেন, হিন্দুস্তান কাফেরদের জায়গা,আর কাফের দের হত্যা করা ইসলামে জায়েজ। কিন্তু সেনাপতিরা এই বলে অসিক্রিতি জানান যে, হিন্দুস্তান মুসল্মান্দের পুণ্যভূমি অনেক পীর-আউলিয়া এর পীঠস্থান। পরে কিছু হিন্দু দুর্ভাগ্যক্রমে কিছু মুসলিম সৈন্য হত্যা করলে ,চেঙ্গিস খান হুকুম দেন যে হিন্দুদের মুণ্ডু দিয়ে একটা তোরণ বানাতে হবে যার নীচ দিয়ে তিনি ঘোড়া নিয়ে যাবেন এবং তাই করা হয়েছিল । চেঙ্গিস খানের পরের বংশ ধরদের মধ্যে গাজা খা ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন এবং পরবর্তী বংশধর হালা কু খা (মুসলিম ছিলেন) বাগদাদ জয় করার পরে ব্যাবিলনের সভ্যতা এমন ভাবে ধংশ করেন যে ঐতিহাসিকদের মতে এই নৃশংসতার অতিরঞ্জন বর্ণনা সম্ভব নয়।
অতএব মুসলিম রা যে নৃশংস কর্মকাণ্ড করেছে তা যেমন ঠিক আবার অনেক ভাল কাজও করেছে।
@সপ্তক, আমার আপত্তি কিন্তু মুসলিমদের কুকর্ম নিয়ে না, মুসলিম নামের এই ওরিয়েন্টাল জেনারেলাইজেশন নিয়ে। কেউই কিন্তু হালাকু খানের আক্রমণকে মুসলিম ইনভেশন বলে না, বলে মোংগল ইনভেশন। ইন্টারেস্টিং পয়েন্টটা খেয়াল করুন, সমরকন্দ, বোখারা বা বাগদাদে যাদের উপরে নৃশংসতা চালানো হয়েছে তারাও কিন্তু মুসলিম। তাহলে পার্থক্যটা কোথায়? জাতিসত্ত্বায়।
একইভাবে সপ্তম/অষ্টম শতাব্দীর আরব ইনভেশনকেও ওই একইভাবে ঢালাও ইসলামিক ইনভেশন নামে চালানো হচ্ছে। অথচ ২য় খলীফা উমর স্পষ্ট করেই অনারবদের উপরে আরবদের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করেছেন। এমনকি অনারব মুসলিম হলেও(আজমী) তাকে ট্যাক্স দিতে হতো। অর্থাৎ মূল কারণটা হলো অর্থনোইতিক। তৎকালীন বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ সেনাবাহিনী তখন আরবদের, বাইজেন্টাইন আর পারসীয় সাম্রাজ্য মুমুর্ষু। সাম্রাজ্যবিস্তারের স্বাভাবিক ধারাতেই তা সেই সময়ের সবচেয়ে উন্নত সেনাবাহিনীর পক্ষে গেছে।
আবার দেখুন পালাবদলে সেটা পারসীদের হাতে গেছে। তারাও কিন্তু নিজেদের পারসী বলে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করতো। ফারসী ভাষার প্যাগান রাজাদের স্তুতিমূলক শাহনামা ছিলো তাদের প্রিয়। এমনকি ফারসী ভাষার মসনবীও। কালক্রমে তা গেছে মোংগল, তুর্কি আর শেষকালে ভারতে মোঙ্গল আর ইউরোপে অটোম্যানদের কাছে। এই বিপুল বিস্তৃত পার্থক্যে জোড়াতালি দিয়ে ইসলামের সুতোয় এক করার কারণ কি?
আর যোদ্ধাদের চাঙা করতে ধর্মীয় উন্মাদনা কি সকল ধর্ম বর্নের সেনাবাহিনীতেই ঘটেনা? এখানেই বা অসাধারণত্ব কোথায়? রাণী ১ম এলিজাবেথের বিরুদ্ধে স্পেন ও ওই একই প্রনোদনা কাজে লাগিয়েছিলো।
আবার দেখুন দক্ষিণ আমেরিকায় আর আফ্রিকার কলোনিয়াল সাম্রাজ্যবিস্তারের ইতিহাস। সেখানেও একইভাবে খ্রিস্টান তত্ত্ব কাজে লাগানো হয়েছে ইউরোপের আগ্রাসী শক্তিগুলোর মাধ্যমে। কই সেখানে কেউ তো ক্রিস্টানী বর্বরতা বলে না! কেন বলে না?
আমি এই দৃষ্টিভংগীতার কথাই বলছি। আশাকরি বুঝতে পেরেছেন। কাজেই মুসলিমরা ভালো কাজ করেছে আবার খারাপ কাজও করেছে এধরনের কথা খুবই গ্রস জেনারালাইজেশন হয়ে যায়। আমাদের খেয়াল রাখা উচিত ইসলাম একটা ধর্মমত। এর পরের যে ধাপ গুলো আমরা বানাই যেমন ইসলামিক সাম্রাজ্য বা ইসলামিক সংস্কৃতি এগুলো একেবারেই ভিত্তিহীন। কেননা সাম্রাজ্য বা সংস্কৃতি জাতিসত্ত্বা ভিত্তিক একটা উপাদানসমষ্টি যার অসংখ্য এলিমেন্টের ভেতরে ধর্ম স্রেফ একটি। এধরণের ভিত্তিহীন ধারণাই দ্বিজাতিতত্ত্বের মাধ্যমে ফাকিস্তান বানিয়েছে যার অসারতা নিয়ে নিশ্চয়ই নতুন করে আর কিছু বলার নেই, 🙂
আপনাকে ধন্যবাদ।
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
বুঝলাম না। কেন তা বলবে? হালাকু খান কি মুসলিম? মোংগলদের ইসলাম গ্রহণ তো আরো বেশ খানিকটা পরের ব্যাপার।
কিন্তু সেটা কি তারা নিজেরাই বলেনি, উমর শুদ্ধ? (আর ওই একজনের ওপর বেশি দিয়ে ফেললেন না? পারস্য আক্রমণ তো আগেই ঘটেছে)। আপনি দেখুন না ইটনের মন্তব্য যা আপনিই উদ্ধৃত করেছেন — রাজনৈতিক সাম্রাজ্যবিস্তারকে ইসলামের বিজয় হিসেবে লিপিবদ্ধ করে গেছে তারা নিজেরাই। পুরো দোষটা ওরিয়েন্টালিস্টদের ঘাড়ে চাপালে হবে?
কিন্তু বলে তো! Christendom নাম তো তাদেরই দেয়া! দক্ষিণ আমেরিকায় যে তার খ্রিস্টধর্ম প্রচার করতে গিয়েছে তা তো নিজেরাই জোর গলায় বলে বেড়িয়েছে — যখন old world এর রোগের প্রকোপে আদিবাসীরা মরা শুরু করেছে তখন তাকে ঈশ্বরের আশীর্বাদ হিসেবে বর্ণনা করেছে, দাসপ্রথাকে বাইবেল দিয়ে justify করছে। আপনি কি বলবেন, এগুলোর সাথে খ্রীস্টধর্মের কোন যোগ স্থাপনের চেষ্টা একধরণের (reverse) ওরিয়েন্টালিসম?
দেখুন, আব্রাহামিক ধর্মগুলির মধ্যে এই বৈশিষ্ট্যটা তীব্র (অন্য ধর্মে নেই বলছি না)। জিহাদ, ক্রুসেদ, christendom, খিলাফৎ, ধর্ম প্রচারের তীব্র ও (ক্ষেত্রবিশেষে) হিংস্র প্রবণতা — বিভিন্ন রাজনৈতিক কাঠামোর প্রেক্ষিতেও এই যোগসূত্রগুলি লক্ষ্য করা একেবারে অযৌক্তিক মনে হচ্ছে আপনার?
@রৌরব,
দুঃখিত, আমি bereke khan এর সাথে গুলিয়ে ফেলেছি, তাছাড়া উপরে সপ্তকের কমেন্টের মুসলিম উল্লেখের কারণেও কিছুটা গুলিয়েছে।
এখানে দোষ চাপানোর কিছু নেই। মধ্যযুগীয় ঐতিহাসিক, যুদ্ধবিবরণী রচয়িতা আর ওরিয়েন্টালিস্টদের মত ভুল ইন্টারপ্রিটেশন আমরাও কেন করবো বা কেন অনুসরণ করবো সেটাই জানতে চেয়েছি। রিভিশনারী ইতিহাস বাদ দিয়ে গৎবাঁধা ইতিহাসেই বা কেন পড়ে থাকবো সেটাই আমার মূল প্রশ্ন। ইসলামী সাম্রাজ্য বা সংস্কৃতির কল্প শব্দবন্ধ সদালাপ বা হিজবুত তাহরীর ভাবতে পারে, মুক্তমনারাও কেন সেটা ভাববে? পার্থক্যটা কোথায় তাইলে? 🙂
আরে ভাই ধর্মের সাথে যোগ চাপানোতে সমস্যা নেইতো! সমস্যা হলো সেকারণে যদি আমরা মূল ইতিহাস থেকে সরে যাই সেটাই। খুবই সহজ কথায় বলি, খ্রিস্টানে বর্বরতা(দাসত্ব অধ্যায়) নাম দিয়ে আমি যদি ঢালাওভাবে সবগুলো ইউরোপিয়ান, বাইজেন্টিনিয়ান ডাইনাস্টিগুলোর কাহিনী একসাথে লিখি এবং পাশাপাশি স্রেফ ওল্ড আর নিউ টেস্টামেন্ট এর উদাহরণ দেই তবে সেই ইতিহাসের প্রাসংগিকতা বা গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু? এক্কেবারে মূল প্রসঙ্গটাই এখানে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে, আর সেটা হলো অর্থনৈতিক ব্যাপারটি। স্রেফ ইসলামকে ব্যাশিংয়ের জন্য এমন ঢালাও জেনারালাইজেশনের বিপরীতে খ্রিস্টান বা হিন্দু বা বৌদ্ধ বা ইহুদী উদাহরণে মধ্যযুগের এসব বর্বরতার ঢালাও ধর্মীয় সরলীকরণ করে লেখা আর কোনো গবেষণা কর্মের উদাহরণ দিতে পারবেন? 🙂 ওরিয়েন্টালিজমের এটাই একটা উদাহরণ। ওরিয়েন্টালিস্টরা এটা করেছেন কেন সেটা অনেক সুদীর্ঘ আলোচনার বিষয়; আমার প্রশ্ন হলো মুক্তমনায় শত বছর পরে আবার সেটি করা হচ্ছে কেন?
আজ মায়ান, এজটেকরা স্পেনীয়দের হারালে আপনি তখন সূর্যদেবের সুরেই উল্টে গিয়ে কথাগুলো বলতেন! 🙂 কিংবা ভারতের হিন্দুত্ববাদীরা ক্ষমতায় গেলেও তাই হবে। এমনকি তথাকথিত নিরীহ নির্বিষ বৌদ্ধরাও ক্ষমতায় গেলে একই সুর গাইবে কিংবা রোমান যুগে নিষ্পেষিত আব্রাহামিকরা(ইহুদী, খ্রিস্টান)ও একই সুরে কথা বলতো!! 😀
আর্যদের সাথে অনার্যদেরও এরকম ক্রুসেড চলেছে দীর্ঘকাল! সময়ের আগে বলে আমরা তা বিস্মৃত! খিলাফত তো চার খলিফার পরেই শেষ। ভারতীয়দের(ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া, চীন, জাপান) বা চীনাদের মিশনারী তীব্র প্রচারণাও আজ আমরা ভুলে গেছি।
শুধু নতুন বলে আব্রাহামিকগুলো এখনো জ্বলজ্বল করছে।
তাই বিশেষত্ব কোথায় এখানে? যোগসূত্র কোথায় এখানে? কারা গণহত্যা চালায়নি? কারা দাসব্যবসা করেনি? কারা ধর্ম প্রচার করেনি? কারা বেশি করেছে? তীব্রতার কোনো স্কেল আছে কি? তাহলে কেন স্রেফ ইসলামকে আলাদাকরণ(ব্যাশিংয়ের জন্য!! 😛 ) ? এজেন্ডা কি তাহলে এসবের? আরো গভীরে যাই তবে, মধ্যযুগের একটা জেনেরিক বিষয়ে স্রেফ একটি নির্দিষ্ট ধর্মের অনুসারী বিভিন্ন পরস্পর কালীকসম্পর্ক বিচ্ছিন্ন সাম্রাজ্যের কাজগুলোকে আলাদা করার মানে কি এটাও নয় যে, সেটা অন্য ধর্মের সাম্রাজ্যগুলোর কাজগুলোকে ঢেকে দিচ্ছে? অথচ এই দাসব্যবসায় আদান-প্রদানে সরাসরি সম্পর্ক ছিলো এই বিভিন্ন ধর্মের সাম্রাজ্যগুলোর মধ্যে। অর্থাৎ একঢিলে বেশ কয়েক পাখি মারা হয়ে যাচ্ছে, একই সাথে ইসলাম বিদ্বেষ স্থাপন এবং অন্য ধর্ম বিষয়ে অপকর্মের তরলীকরণ। কারণ সেসব ক্ষেত্রে খ্রিস্টানী দাসব্যবসা না বলে ঔপনিবেশিক দাস ব্যবসা বলে সবকিছু ঔপনিবেশিকদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া যাচ্ছে। অর্থাৎ মুসলিমরাই কেবল বর্বর, নরাধম। তাদের তুলনায় খ্রিস্টান আর ইহুদী আর প্যাগানরা স্রেফ ধোঁইয়া তুলসীপাতা। কাজেই যত দোষ জংগী ঘোষ! এই সুযোগে বিশ্বায়ন জাত নিও লিবারেল টাইপ ব্যাপারগুলোও সহজে বিদ্বেষীদের মগজে ঢুকিয়ে দেওয়া যাচ্ছে।
নিও ওরিয়েন্টালিজম কি এথা হতেই শুরু???
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
আপনার মতে ঐতিহাসিক, যুদ্ধবিবরণী রচয়িতা বা ওরিয়েন্টালিস্টগন ইতিহাসকে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছেন। স্রেফ ইসলামকে ব্যাশিংয়ের কারনে তারা ঢালাও জেনারালাইজেশন করেছেন। কাদের ইতিহাস পর্য্যালোচনা সঠিক আর কাদের ভুল তা নির্নয় করার উপায় কি? সব ইতিহাসবিদদেরইতো ভুরি ভুরি রেফারেন্স আছে। একটি উপায় হচ্ছে আলোচনা করে তা জনসমক্ষে প্রকাশ করা যেখানে মত প্রকাশে কোন বাঁধা নাই আবার মত গ্রহন করার ব্যাপারেও কোন বাধ্যবাধকতা নাই।
গণহত্যা বা দাসব্যবসা বা ধর্ম প্রচার ইত্যাদির তীব্রতা মাপার কোনো স্কেল নেই বলে ওরিয়েন্টালিস্টগন ইচ্ছাকৃত বা উদ্দেশ্যমুলকভাবে ইতিহাস ভুল ইন্টারপ্রিটেশন করেছেন এমনটা ঢালাওভাবে বলে দেওয়াটা কতখানি যুক্তিসংগত? দেখুন ব্যাপারটা হচ্ছে যে একজন লোক যে কন্সেপ্ট মস্তিষ্কে ধারন করে থাকে সেই মতের ইতিহাসগুলোই তার কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে।
@ব্রাইট স্মাইল্,
যেকথা বলিনি সেটা মুখে বসিয়ে দিচ্ছেন কেন? প্রত্যেকেরই ইতিহাসের ভুল উপস্থাপনের পেছনে পৃথক কারণ আছে। কিন্তু মুক্তমনার কারণটি ইসলাম ব্যাশিং না হলে কি সেটাই জানতে চাইছি।
যে কোটটির উত্তরে এসব বলছেন সেটা মুক্তমনার উদ্দেশ্যে ছিলো, ওরিয়েন্টালিস্টদের উদ্দেশ্যে নয়। ওরিয়েন্টালিস্টদের লেখা নিয়ে চাইলে এডওয়ার্ড সাইদের ওরিয়েন্টালিজম পড়তে পারেন। আমি স্রেফ স্কেলের মাপে ঢালাও কিছু বলছি না। পুরোটা পড়ুন-
আমি স্রেফ মুক্তমনার কাছে জানতে চাইছি এই নব্য উল্টোমুখী হাঁটার মাজেজা কি? ঢালাও শ্রেনীকরনের মাজেজা কি? ওরিয়েন্টালিস্টরা আপাতত বাইরেই থাকুক। ক্লীয়ার?
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
না না, এখনই বলব। তাদের জেতা লাগবে কেন? এজটেকরা উগ্র হিংস্রতাকে ধর্ম বানিয়ে পূজো করত, সেটা তারা হেরে গেছে বলেই বলব না নাকি? কিন্তু এটা নিশ্চয়ই স্বীকার করবেন, যে কেউ যদি বর্তমান পৃথিবীকে নিয়ে আলোচনাটা করে, সেখানে খ্রীস্টধর্ম, হিন্দুধর্ম বা ইসলামের আলোচনা বেশি salient?
আমি একমত না যে নতুনত্বটাই বড় কথা, ইহুদী settler দের দেখুন না! আর যদি নতুন বলেই জ্বলজ্বল করে, তাহলে জ্বলজ্বল করছে তো, কারণ যাই হোক। অর্থাৎ ইসলামী সমাজে ধর্ম যতটা/যেভাবে প্রাসঙ্গিক, বৌদ্ধ সমাজে ঠিক সেভাবে হয়ত নয়, নাকি? তাহলে আব্রাহামিকদের নিয়ে আলোচনার পদ্ধতি ভিন্ন হতেই পারে। আর…বৌদ্ধ ধর্ম নিয়ে আলোচনা নিষিদ্ধ নয় নিশ্চয়ই (আপনি লিখুন মুক্তমনায়, আমি মডারেটর নই, কিন্তু মোটামুটি গ্যারান্টি দিতে পারি প্রকাশ হবে)। কিন্তু ইসলাম নিয়ে আলোচনা করতে হলে নিক্তি ধরে বৌদ্ধ ধর্মের ঠিক একই ধরণের সমালোচনা করতে হবে কেন তা বোধগম্য নয়।
আপনি সরলীকরণ বিরোধিতা করতে গিয়ে আরেক সরলীকরণে পা দিচ্ছেন — অর্থনৈতিক ডিটারমিনিজম। সাসানিডরা পার্থিয়ানদের চেয়ে বেশি নৃশংস ছিল। এজটেকরা মায়ানদের চেয়ে বেশি নৃশংস ছিল। শৈবরা বৈষ্ণবদের চেয়ে বেশি দাঙ্গাবাজ। ধর্ম কোন ভূমিকা পালন করেনা একটা সমাজের মৌলিক চরিত্র নির্ধারণ করতে, এটাও তো একটা প্রমাণ সাপেক্ষ দাবি।
ধরেন আমি atlantic maritime দাসপ্রথা নিয়ে বই লিখছি। আরব/মুসলিমরা দাস অানত হাঁটা পথে (মূলত), আর আটলান্টিক দিয়ে যাতায়াতের তাদের প্রশ্নই ওঠেনা। আপনি কি আমাকে বলবেন, atlantic maritime দাসপ্রথা নিয়ে কোন focused আলোচনা আমি করতে পারব না আরব দাসপ্রথা বা জাপানী দাসপ্রথার বিস্তারিত আলোচনা সহ? এটা কি একধরণের nihilism এর আমন্ত্রণ নয়? পৃথিবীতে কি যুক্ত নয় কিসের সাথে? কিন্তু আমি “ক” নিয়ে আলোচনা করলেই “খ” এর কথা কেন বললাম না, এটা কি জ্ঞান পিপাসা নাকি স্রেফ একটা rhetorical device?
@রৌরব, অবশ্যই আমি বলছিনা যে দাসপ্রথা নিয়ে আলোচনা করতে গেলে যাবতীয় জাতি টেনে আনতে হবে। আপনি অর্থনৈতিক ডিটারমিনেজমকে যদি ঢালাওভাবে দেখেন তো তাহলে সেটা ঢালাওই হবে। আমি কিন্তু একেই প্যানসিয়া বলছি না। বলছি যে মূল কারণ। দেখুন শুরুতেই কিন্তু আমি বলেছি যে ধর্মমতই একটা সমাজ তথা সাম্রাজ্য এবং সংস্কৃতির একমাত্র ব্যাখ্যা হতে পারেনা। গভীরে গেলে বলতে পারি, কোনো ধর্মমতই নতুন কিছু আমদানী করেনা, কম্পাইল করে মাত্র। আরব রীতি, কাস্টম, আইন এর যেগুলো তখন মানবিক মনে হয়েছে সেগুলোই ইসলামে স্থান পেয়েছে, অকাতরে খ্রীস্টান আর ইহুদী ক্যানন থেকে মাল মশলা নেওয়া হয়েছে। এর পরে এর সাথে মিশেছে পারসীয় আইন। শুধু ধর্মমতের কথা বললেও তাই বলা যায় যে সেটা আর রিজিড থাকেনি, ক্রম বিবর্তিত হয়েছে। একারনেই ধর্মমতের প্রভাবে দাসপ্রথা এজাতীয় আলাপ ঢালাও শ্রেনীকরণ হয়। সমাজ আর সংস্কৃতির আর সব উপাদানকে ফেলে দিলে, কে লাভবান এই সমীক্ষা ঝেড়ে ফেললে তখন ফোকাসটা অনেক সংকীর্ণ হয়ে যায় যেটা আমি বলতে চেয়েছি। সমাজের মৌলিক চরিত্রে ধর্মের ভূমিকা নেই তাতো বলছিনা, কিন্তু ধর্মের ভূমিকাই মূল(যা উপরের কমেন্টগুলোতে গোলাপ বারবার বলছেন) বা একমাত্র বা অন্য সবকিছুই তুচ্ছ এরকম ঢালাও মন্তব্যের পেছনে জোরালো প্রমাণ কোথায় আছে? ইসলামে বর্বরতা বলতে আসলে এই প্রবন্ধ তথা গবেষণাগ্রন্থে কি কি স্কোপে আলাপ হচ্ছে? ধর্মে? সাম্রাজ্যে? সংস্কৃতিতে? কোন মানদণ্ডে একে বর্বর বলা হচ্ছে? মানদণ্ড বলতে এই না যে এই সুযোগে আমি দাসপ্রথাকে লঘু করছি। আমি স্রেফ জানতে চাচ্ছি যে কোনোকিছুকে বর্বর বলা মানে হলো তার বিপরিতে সভ্য একটা ব্যাপার সম্পর্কে অবহিত থাকা, তাইনা? এই সভ্য এর কন্সেপ্টটি কোথা হতে আসছে? কারা সভ্য? কোন সময় থেকে সভ্য? কেন সভ্য? এগুলো কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। একারণেই কোনো ঐতিহাসিক কখনো লিখতে পারেন না যে হালাকু খান বর্বর ছিলেন। কারণ শুধু এই বর্বর বিশেষণটির যথার্থতা প্রমাণ করতে দেশ, কাল, পাত্র, সমাজ, অবস্থান অনেক কিছু চলে আসে। প্রোপাগাণ্ডামূলক লেখা আর সত্যিকারের ইতিহাস লেখার পার্থক্য এখানেই।
একারণেই স্রেফ ইসলাম নাম নিয়ে আলাদা করলে বা ‘বর্বরতা’ বিশেষণ লাগিয়ে ইতিহাস লিখলে তার প্রাসংগিকতা, বিশেষত্ব, সংযুজ্যতা, তুলনামূলক গ্রহণযোগ্যতা ইত্যাদি মানদণ্ড নিয়ে আসা অত্যন্ত যৌক্তিক বলে মনে করি।
ধন্যবাদ।
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
আর্য-ফার্য ব্যাপারগুলো যে ক্রমশ ঘোলাটে হচ্ছে হয়ত জানেন। ইসলামের ইতিহাসের ব্যাপারে যে সূক্ষ্মতা ঐতিহাসিক প্রমাণদাঢ্য দাবি করছেন, আশা করি “আর্য” দের ব্যাপারেও সেই একই standard maintain করেন?
@রৌরব,
এ ব্যাপারটা নিয়ে অবশ্য আমি এখন বেশ কনফিউজড। শুরুর দিকে ব্রিটিশ জার্মানরা আর্য সভ্যতাই মূল তাইপের অনেক নাচানাচি করলেন(হিটলার তো বটেই)। ইন্দো ইউরোপীয় ভাষাবংশ নিয়ে অনেক নাচানাচি হলো। ইন্দুস ভ্যালী সভ্যতা নিয়ে আবার বিশাল কেওয়াজ! আর্য না প্রাক আর্য? অবশেষে টার্কির গোয়েবেকেলী টেপেতে এসে আবার সব গুলিয়ে গেল।
এখন শুরু হয়েছে পেটি পলিটিক্স! তামিল বনাম হিন্দুত্ববাদীদের আর্য-অনার্য গবেষণা! 🙁
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
উঁ। দুটা পয়েন্ট কেমন খাপ খেল না। পশ্চিমা ওরিয়েন্টলিস্টরা মুসলিমদের গুলিয়ে ফেলবেন কিন্তু হিন্দু/বৌদ্ধ/প্যাগানদের গুলিয়ে ফেলবেন না কেন? আর — মোগল সাম্রাজ্য, সুলতানী আমল, এসব “ধর্মনিরপেক্ষ” তকমা কি অপ্রচলিত?
@রৌরব, সপ্তক কে দেওয়া আমার জবাবটি দেখুন।
ধন্যবাদ।
@রৌরব,
আপনি কাকে কী বলছেন? যে কিনা হালাকুকে বানিয়ে দিয়েছে মুসলমান?
মানে কিভাবে যে এই প্রবল কনফিডেন্স আসে এই পন্ডিতগুলার মাথায় কে জানে!!!!
দেখেন কী সুন্দর করে আলেকজান্ডারের কনভার্শনের কথা বলে যাচ্ছে। আরে ভাই আলেকজান্ডার জীবনে ইন্ডিয়া দখল করতে পেরেছে যে কনভার্শন হবে এখানে?
এরকম পন্ডিতসকল একটা জিনিস বোঝে না, ইন্ডিয়াতে হিন্দু ধর্মের ইতিহাস প্রথম থেকেই। তারপরে এলো(আমি বেশ বড় স্কেলে ধর্মের কনভার্শনের কথা বলছি) বৌদ্ধ। তারপরেই আসল ইসলাম। এখন ইসলামের মাধ্যমে শুধু যে পিটাপিটি করেই মুসলমান হয়েছে তা নয়। হিন্দুদের বর্ণপ্রথা ইসলামের প্রসারে একটা ব্যাপক ভুমিকা রেখেছে।
এগুলো জানা কথা। কিন্তু শুধু শুধু এখানে সেখানে জ্ঞ্যান দিতে দেখলে গাত্রদাহ হয়।
@সাইফুল ইসলাম,
সপ্তকের মন্তব্য দেইখ্যা তার্পরে কথা কন? উনিই আগে বানাইছেন। তাছাড়া ভুল স্বীকারের ক্ষমতা আমার আছে, আমি মুক্ত হ্যাচ্চু! ইসলাম বিদ্বেষী না।
:lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot:
আর্যরা কইত্থেইক্যা আইছে গিয়ানী ভাইটু???
:lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot:
মেগাস্থিনিসের সাম্রাজ্য, ভারতের গান্ধারী শিল্প নিয়া কিছু নলেজ টলেজ আছে??
জ্বী নেহী! যান আবার ওয়ান টু শুরু করেন। এইখানে বড়রা আলাপ পাড়তিছে, স্রেফ এডহোমিনেম আর গালাগালির জায়গা অন্যখানে।
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
“সপ্তকের মন্তব্য দেইখ্যা তার্পরে কথা কন? উনিই আগে বানাইছেন। ”
হাঁ ভুল হতে পারে। আমি যতদূর জানি হালা কু খান চেঙ্গিস এর নাতি এবং হালা কু খান মুসলিম না। গাজা খার সময় থেকে মুসল্মানি শুরু মঙ্গলদের। ভুল ত হতেই পারে ,কিন্তু মুক্তমনা কিছু লেখক/ব্লগার/মন্তব্ব কারি যেভাবে সবাইকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্ল করেন পণ্ডিত বলে তাতে মনে হয় গুগলার যুগে কেডা আসল পণ্ডিত বুঝার জন্য লিখিত পরীক্ষা নেওয়া ছাড়া উপায় নাই।
@সপ্তক,
আমার আগের মন্তব্যের উদ্দেশ্য ছিল ,চেঙ্গিস এর মুসল্মান সেনাপতিদের মনোভাব বোঝান।
@সপ্তক, আমি কিন্তু আপনাকে দোষারোপ করে কিছু বলিনি। মানুষের ভুল যে সাধারণ একটা ব্যাপার সেটাই উল্লেখ করেছি।
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
সপ্তকের কথাটা আমি প্রথমে দেখিনি সত্য। কিন্তু তাতে ঘটনা কি পালটে যাচ্ছে? ভুল হলে বলে ফেলুন, স্বীকার করে নিন ভুল বলেছেন। নাকি ইচ্ছে করেই মিথ্যে বলেছেন? আর এই কথা সপ্তকের ক্ষেত্রেও সত্য।
আচ্ছা আমি তো ভুল বলেছি তাই না, তাহলে সবাইকে আপনার পবিত্র হ্যাঁচ্চুর মাধ্যমে জানিয়ে দিন ভারতীয় ইতিহাসের প্রথম থেকে কী ধর্ম ছিল, আর্যরা কোন ধর্ম পালন করত? ব্যস আমাকে ভুল প্রমানিত করতে আপনাকে আর কিছুই করতে হবে না। সহজ বিজয়। বলে দিন বলে দিন!!!!
কিছুটা আছে, আপনার মত না। আপনিতো ভাই ব্যাপক ব্যাপার। আলেকজান্ডার বর্তমান ভারতের কোন অংশই দখল করতে পারে নি। যেটুকু করেছিল যেটাকে আপনি “গান্ধারী শিল্প” বলছেন সেটা পাকিস্তানের অংশ।
আর মেগাস্থিনিসের সাম্রাজ্য বলতে কী বুঝিয়েছেন আমি তা বুঝতে অক্ষম। ঐ পাবলিক ছিল একজন নৃবিজ্ঞানী। তার ভারতের বর্ননা নিয়ে নানান ধরনের বিতর্ক আছে। সেজন্য আমি এটাকে আলোচনার বাইরে রাখছি। কংক্রিট কিছু নিয়ে আসুন।
ভারতের বর্ণপ্রথা ইসলামের প্রসারে ব্যাপক ভুমিকা রেখেছিল, এই তথ্য ভুল????
আর এডহোমিনেম টার্মটা মনে হয় নতুন শিখেছেন যার জন্য বার বার ব্যাবহার করতে দেখছি। আমার মন্তব্য কোথায় এডহোমিনেম দোষে দুষ্ট দেখিয়ে দিন।
বিরক্ত লাগে কখন জানেন? যখন দেখি ভাসা ভাসা জ্ঞ্যান নিয়ে খালি প্রশ্নের উপর দিয়ে একটা বেশ দাদাগিরি ভাব মারতে দেখি। আমার সাথে আগের তর্কেও একই কাজ করে ভেগেছেন। খালি প্রশ্ন করলে কী বোঝা গেল?
কানটা কাছে আনুন একটা পরামর্শ দেই। মুক্তমনায় আমিই সবচেয়ে কম জানা পাবলিক। আমার সাথে করে পার পেয়ে যেতে পারেন, অন্য কারো সাথে এই বালখিল্যতা করতে যেয়েন না। শুধুই আবুল হবেন পরে।
অনেস্ট পরামর্শ।
@সাইফুল ইসলাম,
🙂
দ্রাবিড় সভ্যতা দেখুন। ইন্দুস ভ্যালির সভ্যতা। এটা প্রি এরিয়ান সময়ের। পশুপতি, স্বস্তিকা সহ বেশকিছু এলিমেন্ট পাওয়া যায়।
Evidence attesting to prehistoric religion in the Indian subcontinent derives from scattered Mesolithic rock paintings such as at Bhimbetka, depicting dances and rituals. Neolithic agriculturalists inhabiting the Indus River Valley buried their dead in a manner suggestive of spiritual practices that incorporated notions of an afterlife and belief in magic.[16] Other South Asian Stone Age sites, such as the Bhimbetka rock shelters in central Madhya Pradesh and the Kupgal petroglyphs of eastern Karnataka, contain rock art portraying religious rites and evidence of possible ritualised music.[17] The Harappan people of the Indus Valley Civilization, which lasted from 3300–1300 BCE (mature period, 2600-1900 BCE) and was centered around the Indus and Ghaggar-Hakra river valleys, may have worshiped an important mother goddess symbolising fertility,[18] a concept that has recently been challenged.[19] Excavations of Indus Valley Civilization sites show small tablets with animals and altars, indicating rituals associated with animal sacrifice.
এরপরে আর্যদের বেদিক রিলিজিয়ন নিয়ে নিশ্চয়ই নতুন করে কিছু বলার নেই। অনেকেই এদের ইরান থেকে আগত বলে মনে করেন, তবে ব্যাপক মতভেদ আছে উৎস নিয়ে।
Indo-Aryan migration
The Indo-Iranians and their expansion are strongly associated with the Proto-Indo-European invention of the chariot. It is assumed that this expansion went into from the Proto-Indo-European homeland north of the Caspian sea south to the Caucasus, Central Asia, the Iranian plateau, and Northern India. They also expanded into Mesopotamia and Syria and introduced the horse and chariot culture to this part of the world. Sumerian texts from EDIIIb Girsu (2500-2350 BC) already mention the ‘chariot’ (gigir) and Ur III texts (2150-2000 BC) mention the horse (anshe-zi-zi).
They left linguistic remains in a Hittite horse-training manual written by one “Kikkuli the Mitannian”. Other evidence is found in references to the names of Mitanni rulers and the gods they swore by in treaties; these remains are found in the archives of the Mitanni’s neighbors. The time period for this is about 1500 BC.[10]:257In a treaty between the Hittites and the Mitanni, the deities Mitra, Varuna, Indra, and Nasatya (Ashvins) are invoked. Kikkuli’s horse training text includes technical terms such as aika (eka, one), tera (tri, three), panza (pancha, five; compare with Gr. pente), satta (sapta, seven), na (nava, nine; compare with Lat. novem), vartana (vartana, turn, round in the horse race; compare with Lat. vertere, vortex). The numeral aika “one” is of particular importance because it places the superstrate in the vicinity of Indo-Aryan proper as opposed to Indo-Iranian or early Iranian (which has “aiva”) in general.[11]
The standard model for the entry of the Indo-European languages into South Asia is that this first wave went over the Hindu Kush, either into the headwaters of the Indus and later the Ganges. The earliest stratum of Vedic Sanskrit, preserved only in the Rigveda, is assigned to roughly 1500 BC.[10]:258[12] From the Indus, the Indo-Aryan languages spread from c. 1500 BC to c. 500 BC, over the northern and central parts of the subcontinent, sparing the extreme south. The Indo-Aryans in these areas established several powerful kingdoms and principalities in the region, from eastern Afghanistan to the doorstep of Bengal. The most powerful of these kingdoms were the post-Rigvedic Kuru (in Kurukshetra and the Delhi area) and their allies the Pañcālas further east, as well as Gandhara and later on, about the time of the Buddha, the kingdom of Kosala and the quickly expanding realm of Magadha. The latter lasted until the 4th century BC, when it was conquered by Chandragupta Maurya and formed the center of the Mauryan empire.
In eastern Afghanistan and southwestern Pakistan, whatever Indo-Aryan languages were spoken there were eventually pushed out by the Iranian languages. Most Indo-Aryan languages, however, were and still are prominent in the rest of the Indian subcontinent. Today, Indo-Aryan languages are spoken in India, Pakistan, Bangladesh, Nepal, Sri Lanka and the Maldives.
To this end a fourth theory, which I call the Religion of Social Liberation thesis, is generally pressed into service. Created by British ethnographers and historians, elaborated by many Pakistani and Bangladeshi nationals, and subscribed to by countless journalists and historians of South Asia, especially Muslims, this theory has for long been the most widely accepted explanation of Islamization in the subcontinent. The theory postulates a Hindu caste system that is unchanging through time and rigidly discriminatory against its own lower orders. For centuries, it is said, the latter suffered under the crushing burden of oppressive and tyrannical high-caste Hindus, especially Brahmans. Then, when Islam “arrived” in the Indian subcontinent, carrying its liberating message of social equality as preached (in most versions of the theory) by Sufi shaikhs, these same oppressed castes, seeking to escape the yoke of Brahmanic oppression and aware of a social equality hitherto denied them, “converted” to Islam en masse.
It can be seen that by juxtaposing what it perceives as the inherent justice of Islam and the inherent wickedness of Hindu society, the Religion of Social Liberation theory identifies motives for conversion that are, from a Muslim perspective, eminently praiseworthy. The problem, however, is that no evidence can be found in support of the theory. Moreover, it is profoundly illogical. First, by attributing present-day values to peoples of the past, it reads history backward. Before their contact with Muslims, India’s lower castes are thought to have possessed, almost as though familiar with the writings of Jean-Jacques Rousseau or Thomas Jefferson, some innate notion of the fundamental equality of all humankind denied them by an oppressive Brahmanic tyranny. In fact, however, in thinking about Islam in relation to Indian religions, premodern Muslim intellectuals did not stress their religion’s ideal of social equality as opposed to Hindu inequality, but rather Islamic monotheism as opposed to Hindu polytheism.[11] That is, their frame of reference for comparing these two civilizations was theological, not social. In fact, the idea that Islam fosters social equality (as opposed to religious equality) seems to be a recent notion, dating only from the period of the Enlightenment, and more particularly from the legacy of the French Revolution among nineteenth-century Muslim reformers.[12]
Second, even if Indians did believe in the fundamental equality of mankind, and even if Islam had been presented to them as an ideology of social equality—though both propositions appear to be false—there is abundant evidence that Indian communities failed, upon Islamization, to improve their status in the social hierarchy. On the contrary, most simply carried into Muslim society the same birth-ascribed rank that they had formerly known in Hindu society.[13] This is especially true of Bengal. As James Wise observed in 1883: “In other parts of India menial work is performed by outcast Hindus; but in Bengal any repulsive or offensive occupation devolves on the Muhammadan. The Beldar [scavenger, and remover of carcasses] is to the Muhammadan village what the Bhuinmali is to the Hindu, and it is not improbable that his ancestors belonged to this vile caste.”[14]
Finally, as with the Sword and Patronage theories, the Religion of Social Liberation theory is refuted by the facts of geography. In 1872, when the earliest reliable census was taken, the highest concentrations of Muslims were found in eastern Bengal, western Punjab, the Northwest Frontier region, and Baluchistan. What is striking about those areas is not only that they lay far from the center of Muslim political power but that their indigenous populations had not yet, at the time of their contact with Islam, been fully integrated into either the Hindu or the Buddhist social system. In Bengal, Muslim converts were drawn mainly from Rajbansi, Pod, Chandal, Kuch, and other indigenous groups that had been only lightly exposed to Brahmanic culture, and in Punjab the same was true of the various Jat clans that eventually formed the bulk of the Muslim community.[15]
But this is hardly surprising. The Baudhāyana-Dharmasūtra, a late Vedic text (fifth-sixth centuries B.C.) reflecting the values of self-styled “clean” castes, divided the subcontinent into three concentric circles, each one containing distinct sociocultural communities. The first of these, Aryavarta, or the Aryan homeland, corresponded to the Upper Ganges-Jumna region of north-central India; there lived the “purest” heirs to Brahmanic tradition, people styling themselves highborn and ritually clean. The second circle contained an outer belt (Avanti, Anga-Magadha, Saurastra, Daksinapatha, Upavrt, and Sindhu-Sauvira) corresponding to Malwa, East and Central Bihar, Gujarat, the Deccan, and Sind. These regions lay within the pale of Indo-Aryan settlement, but they were inhabited by people “of mixed origin” who did not enjoy the same degree of ritual purity as those of the first region. And the third concentric circle contained those outer regions inhabited by “unclean” tribes considered so far beyond the pale that penances were prescribed for those who visited such places. Peoples living in this third circle included the Arattas of Punjab, the Sauviras of southern Punjab and Sind, the Pundras of North Bengal, and the Vangas of central and East Bengal.[16]
Now, the theory of Social Liberation assumes the prior existence of a highly stratified Hindu social order presided over by an entrenched and oppressive Brahman community. If the theory were valid, then, the greatest incidence of conversion to Islam should logically have occurred in those areas where Brahmanic social order was most deeply entrenched—namely, in the core region of Aryavarta. Conversely, Islam should have foundits fewest adherents in those areas having the least exposure to Brah-manic civilization, that is, along the periphery or beyond the pale of that civilization, in the outermost of the three concentric circles cited in the Baudhāyana-Dharmasūtra. But it is precisely in that outer circle—the area roughly coinciding with the areas included in the original (1947) state of Pakistan, with its eastern and western wings—that the vast majority of South Asian Muslims reside. The modern, pre-Partition distribution of South Asian Muslims thus indicates an outcome precisely opposite to the one predicted by the theory—namely, the less the prior exposure to Brahmanic civilization, the greater the incidence of subsequent Islamization. If the aboriginal peoples inhabiting India’s “periphery” had never been fully absorbed in a Brahman-ordered society in the first place, the matter of their escaping an oppressive Hindu social order cannot arise logically, just as it did not arise empirically.
মেগাস্থিনিসের বিবরণি পড়লে সেসময়ের সাম্রাজ্যের অবস্থা সম্পর্কে কিছুটা আঁচ পেতেন। যাকগে উইকির এই দুটো লিঙ্ক থেকে কিছুটা ধারণা পাবেন, আর মনে রাখবেন পাকিস্তান ১৯৪৭ সালের কনসেপ্ট। হাজার বছর আগের ইণ্ডিয়া নিয়ে আমরা কথা বলছি।
Selucid Empire
Indo-Greeks
আর ব্রাদার, প্রশ্ন আমাকে করলে আমি আহত হইনা, উত্তর দেই। আর প্রশ্ন করিও আহত করার জন্য না, এমন কিছু নিয়ে লিখে লাভ কি যেটা আগেই আপনার নলেজে আছে! চাকা বারবার আবিষ্কার করে তো কোনো লাভ নেই তাই না! আর প্রশ্নে আহত হন কেন? প্রশ্নই হলো জ্ঞানের জননী! 🙂
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
না দরকার নেই। কিন্তু যেটার দরকার সেটা হল আপনার একটু চিন্তা করে দেখা যে, বেদিক ধর্মের সাথে বর্তমান হিন্দু ধর্মের কোন তফাত নেই। কয়েকটা তথ্য দেই, মিলিয়ে দেখুন। যে ইন্দো-আরিয়ান মাইগ্রেশনের কথা বলছেন(যদিও এটা নিয়ে বিরাট বিরাট রকমের বিতর্কের অবকাশ রয়েছে) সেটা ঘটেছিল কত সালের দিকে? উইকি বলছে খ্রিষ্টপূর্ব ১৭০০ বা ১৩০০র দিকে। [http://en.wikipedia.org/wiki/Indo-Aryan_migration]
আর হিন্দু স্ক্রিপচার গুলোর বয়স? উইকি কী বলছে একটু মিলিয়ে দেখুন। [http://en.wikipedia.org/wiki/Indo-Aryan_migration]
আমাদের এখানে যে দ্রাবিড়ীয় বা অন্যান্য জাতের মানুষদের ধর্মের কথা বলা হয় সেটা মোটেই আর্যদের বৈদিক ধর্মের থেকে আলাদা কিছু ছিল না।
আর আপনার হিন্দু ধর্মের থেকে ইসলামে আসার লম্বা ইংরেজী তথ্যের ব্যাপারে আগাচ্ছি না। কারন হল আপনি এখানে একটা মাত্র বইকেই বাইবেল ধরে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছেন যেটাকে আমার কাছে খুব একটা যৌক্তিক মনে হয় নি। সেজন্য এই ব্যাপারে আলোচনা না করাটাই ভালো মনে করছি।
আমি যতটুকু জানতাম মেগাস্থিনিসের ইন্ডিয়া সম্পর্কে যে বিবরন সেটা পাওয়া যায় “ইন্ডিকা” নামে একটা বইতে যেটার আসল ম্যানিউস্ক্রিপ্ট এখন নেই। তারপরেও যে বর্ণনা পাওয়া যায় সেটা নিয়ে ব্যাপক ব্যাপক কন্ট্রোভার্সি আছে। সত্যি কথা বলতে মেগাস্থিনিসের অনেক ব্যাপার স্যাপার নিয়েই কন্ট্রোভার্সি আছে। সে অনেক কিছু গুলিয়ে ফেলেছিল। যাই হোক, সেটা অন্য জিনিস। আমি বলতে চাচ্ছি, এরকম কন্ট্রোভার্সাল ঐতিহাসিকের কথাবার্তা নিয়ে আলোচনায় বিতর্কের অবকাশ থাকবেই। শুধুশুধু তর্কের খাতিরে কথা বলে মজা নাই।
এইটা একটা ব্যাপার যেটা আমি উত্তর লেখার পরে আসলে খেয়াল করেছিলাম, আমারই ভুল। ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্টের একেবারে শেষের দিকের অল্প কিছু জায়গা আলেকজান্ডার দখল করতে পেরেছিল। আবারও বলছি এটা নিয়েও বিতর্কের অবকাশ আছে। তারপরেও যদি এটাকেই সঠিক ধরে নেই তারপরেও তেমন কিছু ফ্যক্ট নতুন করে দেখা দিচ্ছে না। ঐ অঞ্চলের পরে গ্রীকরা আর ভেতরে এগিয়ে আসতে সাহস করে নি। এবং তার দুই এক বছর পরেই আলেকজান্ডার মারা যায়। সুতরাং কনভার্শনের ব্যাপারটা আলোচনাতেই আসে না।
আমাকে প্রশ্ন করলেও আমি আহত হই না। আমি যেটা বলেছি সেটা হল দাদাগিরী ভাব ধরবেন না। সেটা দেখলেই মেজাজ ঠিক থাকে না। আপনার জিজ্ঞাসা হল এমন, এটা ভেবেছেন, ওটা করেছেন? এগুলো কি জানার জন্যে জিজ্ঞাসা নাকি নিজে করে এখন ধরে নিচ্ছেন আমি বা আমরা এগুলোর কিছুই করি নি?
এখন যেমন একটু ঠান্ডা ঠান্ডাভাবে আছে সেটা বজায় রাখুন। অযথায় পেচালে জড়াতে হয় না তাহলে।
@সাইফুল ইসলাম,
অন্যদের এপ্রোচ দেখুন, আর আপনার এপ্রোচ দেখুন। আমার সাথে যে এপ্রোচে, যে ভাষায় কথা বলবেন, ঠিক সেরকমই পালটা প্রতিদান পাবেন, একদম ইনস্ট্যান্ট।
অনার্য সভ্যতা নিয়ে বর্তমানে দক্ষিণভারতে উল্লেখযোগ্য কিছু গবেষণা হচ্ছে। কতটা আলাদা সেটা সেখানে পাবেন। আর হিন্দুত্ববাদীদের আগ্রাসনে এই গবেষণার মধ্যে এখন প্রচুর পেটি পলেটিক্স ঢুকে পড়েছে। আর্যদের ভারতীয় বানাতে উঠে পড়ে লেগেছে একটা পক্ষ। এটাও মাথায় রাখার মতন।
ইটনের বই নিয়ে আপনার কথায় স্রেফ হতাশ হলাম। আপনার কি মনে হয় আমি ইটনের বইরে কোরানের মতন চুমা চাট্টি দিয়া উপরের তাকে থুইয়্যা দিছি? ইতিহাস কি কোনো রিভিলেশন যে খালি একজনই তা বানায়? নাহ্, এইরকম এপ্রোচ থাকলে নিরপেক্ষ আলোচনায় আসলেই আগানো যায়না।
দাদাগিরি ভাবের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। নিজে ছাড়ুন, অন্যকে ছাড়তে সাহায্য করুন, 🙂
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
বাজে অবস্থা সত্যিই। কিন্তু হিন্দুত্ববাদীদের বিরোধিতা করতে গিয়ে উল্টো একটা অপ্রমাণিত ক্রুসেডিয় মডেলে বিশ্বাস করার কোন কারণ নেই। আর্য আগমন আদৌ জেনেটিক, না মূলত সাংস্কৃতিক, আদৌ যুদ্ধবিগ্রহ কি হয়েছিল না হয়েছিল, তারাই (“তারা” যারাই হোক না কেন) বর্ণবাদ প্রথা চালু করেছিল নাকি অস্তিত্ববাণ সামাজিক স্ট্রাকচারে নিজেদেরকে বিজড়িত করে নিয়েছিল এর কিছুই তো স্পষ্ট না। আর… অার্য Urheimat ভারতে, হিন্দুত্ববাদীদের এই হাস্যকর দাবির কথা বাদ দিলেও “আর্য” দের কতটা অভারতীয় বলা যায় আমার কাছে স্পষ্ট না। ঋগ্বেদ ১৯০০ বিসির দিকে ভারতে লিখিত। এরা ভারতীয় না হলে ফ্রেঞ্চরা ফ্রেঞ্চ নয়, মাউরিরা নিউজিল্যান্ডার নয়, তুর্কিরা তুর্কি নয়, জাপানীরা জাপানী নয়।
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
ইটনের “লজিক” দেখে স্তম্ভিত হয়ে যাচ্ছি…৫ম খ্রীস্টপূর্বাব্দের বই নিয়ে এসেছেন মুসলিম কনভার্সন ব্যাখ্যা করতে 😀
@রৌরব,
এটা কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আদিবাসী বনাম আর্যসভ্যতার সংস্পর্শ বিষয়ে এটা এসেছে। তাই খুবই হাস্যকর কি আসলে?
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
সংস্পর্শের পয়েন্টটা সত্যি হতে পারে, কিন্তু তার পক্ষে ওই যুক্তি হাস্যকর। ভারতীয় সভ্যতার কেন্দ্র (বা কেন্দ্রগুলি) সবসময়ই চলে ফিরে বেড়িয়েছে। এখন যদি কেউ ঋগ্বেদের প্রাচীণতম অংশ গুলি তুলে ধরে বলে, “হাহা, এরা তো পশ্চিম পাঞ্জাবের বাইরে কোন জায়গার কথা উল্লেখই করেনি, কাজেই বারাণসীর ব্রাহ্মণরা সব আদিবাসী” — কেমন শোনাবে?
তার পরে জেফারসন-টেফারসন তুলে যে কথাগুলি বলেছেন, ওটাও হাস্যকর। অন্য তত্বগুলি যে অসম্পূর্ণ, সে ব্যাপারে আমার তেমন দ্বিমত নেই। কিন্তু ইটন সম্বন্ধে শ্রদ্ধা হারাচ্ছি, সেটা বলতে বাধ্য হচ্ছি।
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
কিন্তু সাইফুল তো বলছিলেন “হিন্দু”-দের কথা। “হিন্দু=আর্য” এটা কি William Muir সুলভ সরলীকরণ হয়ে গেল না? 😉
@রৌরব,
সরলীকরণ হলো কিকরে। হিন্দু বা সনাতনী হাজার ধারার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অংশ হলো আর্য। এটাকে বাদ দিয়ে কি করে আলাদা করা যায় সনাতন ধর্মকে? সেক্ষেত্রে এদের ভিনদেশী অস্তিত্ত্ব নিয়ে কথা বলতেই পারি।
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
ইসলামী সভ্যতার ব্যাপারেও বক্তব্যটা অনেকটা সেরকমই — এই রাজ্য/সাম্রাজ্য/আন্দোলনগুলির মধ্যে একটা উল্লেখযোগ্য যোগসূত্র আছে যার focused আলোচনা অবান্তর নয়।
আর্যদের নিয়ে ফোকাস করলে আমার কোন সমস্যা নাই। ইসলাম নিয়ে ফোকাস করলেও আমার কোন সমস্যা নেই। ফোকাস করাই দরকার।
@সাইফুল ইসলাম,
‘এরকম পন্ডিতসকল একটা জিনিস বোঝে না, ইন্ডিয়াতে হিন্দু ধর্মের ইতিহাস প্রথম থেকেই। তারপরে এলো(আমি বেশ বড় স্কেলে ধর্মের কনভার্শনের কথা বলছি) বৌদ্ধ। তারপরেই আসল ইসলাম। এখন ইসলামের মাধ্যমে শুধু যে পিটাপিটি করেই মুসলমান হয়েছে তা নয়। হিন্দুদের বর্ণপ্রথা ইসলামের প্রসারে একটা ব্যাপক ভুমিকা রেখেছে।
এগুলো জানা কথা। কিন্তু শুধু শুধু এখানে সেখানে জ্ঞ্যান দিতে দেখলে গাত্রদাহ হয়।”
মিয়া ভাই আপ্নের কি মাথা বেশী গরম?। সবাইরে পণ্ডিত কইয়া গালি দেন কা?। হিন্দু ত কোন ধর্মই না,হেগ ধর্ম সনাতন ,ভুল ধরতে চাইলে সারাদিন ধরা ধরা যায়। অস্ত্রিচ ,দ্রাবির,আরয গো ধর্ম মিলাইয়াই এখনকার সনাতন ধর্ম। হিন্দু শব্দ কোন অর্থে ব্যাবহার হয় অইদিকে আর গেলাম না।জ্ঞান দিতে কেউ আসে না ,সবাই শিখতে আসে এইখানে। যতখন পরযন্ত বেক্তি আক্রমণ এ কেউ যাচ্ছে না ততক্ষণ তার সাথে তর্ক করা ই যায় , ভুল জানলে সুধ্রে দেন, কিন্তু পণ্ডিত বলে গালি দিবেন না,কারন এখানে কেউ পণ্ডিত না।
@সপ্তক,
আরে ভাই, আফনে কইছেন এইডা দেখলে কি আর পন্ডিত টন্ডিত কই নি কন? যারে যে ট্রিটমেন্ট বুঝেন না মিয়া!! :))
@সাইফুল ইসলাম,
আপনার প্রতি আমার কমেন্ট এপ্রোচও একই রকম। 😀
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
বাউল শিরোমনি লালনের হাত ধরে কত হাজার বা লাখ হিন্দু মুসলিম হয়েছিল — সে ব্যাপারে কোন পরিসংখ্যান বা ধারনা কারো জানা আছে কি?
@অবিশ্বাসী, স্রেফ একটা প্যারার মধ্যেও আউট অফ কনটেক্সট মাল বের করতে আপনার জুড়ি নেই- আমি লিখেছি-
“৪.২ ভবঘুরে সুফী মিশনারী টাইপের- শাহজালাল, বাবা আদম এরা। এইধারার সাথে মিশেছে আদিবাসী সহজীয়া ধারা যার দ্বারা প্রচুর সহজীয়া মুসলিম সেক্ট তোইরী হয়েছে ব্লেণ্ডিং এ। এদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ পরিণতি আমরা পাই ছেউরিয়ার লালন আর উত্তর ভারতের কবির দাদুর মধ্যে। ইসলামাইজেশন সবচেয়ে ম্যাসিভ স্কেলে হয়েছে এদের মাধ্যমে।”
আমার মনে হয়না কারো এই প্যারা থেকে বোঝার সমস্যা হবে যে, ম্যাসিভ স্কেলে ইসলামাইজেশন হয়েছে এইসব ভবঘুরে মিশনারী টাইপের সুফীদের দ্বারা। যাদের সৃষ্ট বিভিন্ন সেক্টের সাথে দেশজ সহজীয়া সংস্কৃতি মিলে তৈরি হয়েছে অসংখ্য ধারা উপধারা যার সর্বশ্রেষ্ঠ পরিণতি লাভ হয়েছে লালন ও কবিরের মাধ্যমে।
অবশ্য আপনি স্রেফ তক্কোর খাতিরে তক্কো চালাতে চাইলে সে আলাদা কথা! 🙂
@মুক্ত হ্যাচ্চু!, মুক্ত ভাই চেইতা গেলেন দেখি। আপনারা থিওরী বানান ভবঘুরে সুফিরা সব মুসলমান বানাইছে হিন্দু বৌদ্ধ থিকা। বাংলায় বৌদ্ধ সহজিয়া, সুফি-বাউলদের হাত ধইরা সব হিন্দু মুসলমান হইছে। অথচ সর্বশ্রেষ্ঠ বাউলের নামে সাথে কাউকে ইসলামে ধর্মান্তরের ইতিহাস নাই। শাহ-জালালের গুরু নিজামুদ্দিন আউলিয়া ছিলেন ভারতবর্ষের সকল সুফি-পীরদের শিরোমনি এবং একজন ভবঘুরে সুফিদের ঘরানার। অথচ তার মধ্যযুগীয় জীবনীতে মাত্র দু’জন দই বিক্রেতাকে মুসলমান বানানোর কথা লিখা আছে বলে উল্লেখ করেছেন খান।
@অবিশ্বাসী, আপনার অবিশ্বাসের দোহাই লাগে ভাইডি ইটনের বইডা ইকটু পড়েন। কুন জায়গায় কইছিরে ভাই হিন্দু থেইক্যা কনভার্সেশনের কথা?????
যান্! আপনার লগে আর খেলুমই না! 🙁 আপ্নে খালি ত্যানা প্যাঁচাইতাছেন, (U)
@মুক্ত হ্যাচ্চু!, কেন ভাই মুক্ত মিয়া আমি কি এতই খারাপ মানুষ? আপনিই থিওরী দিচ্ছেন ভবঘুরে সুফিরা ইসলামের শান্তির বন্যায় উদ্দেলিত করে ধর্মান্তর ঘটিয়েছে হিন্দু-বৌদ্ধদেরকে। অথচ তাদের নামের সাথে একমাত্র জিহাদ ছাড়া অন্য কোন উপায়ে ধর্মান্তরের কোন তথ্য (ফ্যাক্টস) পাইনা। শাহজালালের গৌর-গোবিন্দের বিরুদ্ধে জিহাদ করার কাহিনী সর্বজনবিদিত — সেটা হঠাৎ মিথ্যে হয়ে গেল আপনার কাছে। শাহ জালালের গুরু নিযামুদ্দিন আওলিয়া মাত্র দু’জনকে মুসলমান বানিয়েছিল বলে লিখেছে তার জীবনী। অথচ তাকে আমরা দেখি সুলতান আলাউদ্দিনকে জিহাদে প্রেরণা দিতে, যেমন মালিক কাফুরের অধিনে দক্ষিণাত্য আক্রমণে আশীর্বাদ দিতে এবং জিহাদের কব্জাকৃত গণিমতের মালে তার খানকা চালাতে। খাজা মঈনুদ্দিন চিস্তি আরেক সুবিখ্যাত ভবঘুরে সুফি। তাকে আমরা দেখি পৃথ্বীরাজ চৌহানের বিরুদ্দে মুহাম্মদ গোরীর জিহাদে অংশ নিতে এবং তিনি দাবী করেছিলেনঃ আমরা পৃথ্বীরাজকে ধরে গোরীর হাতে তুলে দিয়েছি। এবং আজমিরে এসে তিনি যখন বহু মূর্তি-মন্দির দেখলেন, সেখানে ঘাটি (খানকা) গেড়ে প্রতিজ্ঞা করলেনঃ আমি একদিন এসব মন্দির ধুলিসাৎ করব। আমরা তথ্যে কি দেখি আর আপনারা কি বলেন — এ দু’য়ের মাঝে কোন সমঞ্জস্যতা দেখছিনা?
@অবিশ্বাসী,
আদম-হাওয়ার গন্দম খেয়ে দুনিয়ায় নামার কাহিনীও সর্বজনবিদিত, প্রমাণ চাইলে শ্রীলঙ্কায় পায়ের ছাপও আছে! তো? এজন্য এটা মানতে হবে? এটা একটা ভয়াবহ লজিক্যাল ফ্যালাসী।
প্রমাণের অভাব কোনো প্রমাণ নয়। এটাও একটা লজিক্যাল ফ্যালাসী।
আপনার কাছে অপর্যাপ্ত তথ্য থাকলে তার দায়ভার আমি নিতে যাবো কেন? আপনাকে তো বলেইছি। আপনি যদি দাবি করেন যে সুফিরা বলপূর্বক ধর্মান্তর করেছেন সেক্ষেত্রে তার প্রমাণ আপনাকেই দিতে হবে। আপনি না পেলে আমি কি করতে পারি? 🙂
@মুক্ত হ্যাচ্চু!, হ্যাচ্ছু সাহেব, সুফিরা কিভাবে ইসলাম প্রচার করেছে সেটা প্রমাণ পাবেন দক্ষিণাত্যে, কাশ্মীরে। বাংলায় কিভাবে ঘটিয়েছে তার পক্ষে-বিপক্ষে তথ্য কম। যেটুকু আছে সেটুকু দক্ষিণাত্যের, কাশ্মীরের সুফিদের অনুরূপ পন্থার ইঙ্গিত করে। যেমন নুর কুতবি আলম বাচ্চা ছেলে সুলতান যদু আকা জালালুদ্দিন ট্রেনিং দিয়েছিলেন যার ফলশ্রুতিতে যদু তরবারীর ডগায় ধর্মান্তরের ঢল বইয়ে দেয়। আমরা দেখি আরেক সুবিখ্যাত বাংলার পীর-সুফিসাধক ও ধর্মান্তরকারী জালালুদ্দিন পান্দুয়া (মালদায়) এসে এক মন্দির ভেঙ্গে তার খানকা গাড়েন। খান জাহান আরেক নামকরা পীর ও ধর্মান্তরকর্তা ছিলেন এবং তিনিও ছিল যোদ্ধা।
ভারতে এখনও বরণ্প্রথা আছে তবুও ছোট জাতরা মুসলমান হছছে না ?
ভারতে এখনও বরণ্প্রথা আছে তবুও ছোট জাতরা মুসলমান কেনো হছছে না ?
আগের কমেন্ট টা কেন এলনা তা বুঝতে পারছি না। ইটন ভারতবর্ষে তথা বাংলায় ইসলামাইজেশনের ফর্স কনভার্সন বা তলোয়ার তত্ত্বকে খুব ভালোভাবেই রিফিউট করেছেন। তার ঐ বই থেকে কিছু অংশ তুলে দিলাম, পারলে কাফেরী, বাম, পোস্ট মডার্ণ, মার্ক্সবাদী ইত্যাদী এডহোমিনেম জাতীয় কুযুক্তি(যা এতদিন শুধু সদালাপেই দেখেছি) বাদ দিয়ে তা খন্ডন করার চেষ্টা করুন-
The oldest theory of Islamization in India, which I shall call the Religion of the Sword thesis, stresses the role of military force in the diffusion of Islam in India and elsewhere. Dating at least from the time of the Crusades, this idea received big boosts during the nineteenth century, the high tide of European imperial domination over Muslim peoples, and subsequently in the context of the worldwide Islamic reform movements of the late twentieth century. Its general tone is captured in the way many nineteenth- and twentieth-century Orientalists explained the rise of Islam in seventh-century Arabia, as illustrated in these lurid lines penned in 1898 by Sir William Muir:
It was the scent of war that now turned the sullen temper of the Arab tribes into eager loyalty.…Warrior after warrior, column after column, whole tribes in endless succession with their women and children, issued forth to fight. And ever, at the marvelous tale of cities conquered; of rapine rich beyond compute; of maidens parted on the very field of battle “to every man a damsel or two”…fresh tribes arose and went. Onward and still onward, like swarms from the hive, or flights of locusts darkening the land, tribe after tribe issued forth and hastening northward, spread in great masses to the East and to the West.[1]
In the end, though, after the thundering hooves have passed and the dust has settled, in attempting to explain the Arab conquests, Muir leaves us with little of substance. Rather, he simply asserts the Arabs’ fondness for the “scent of war,” their love of “rapine,” and the promise of “a damsel or two.” Muir’s vision of a militant, resurgent Islam gone berserk reflected, in addition to old European associations of Islam with war and sex, colonial fears that Europe’s own Muslim subjects might, in just such a locustlike manner, rise up in revolt and drive the Europeans back to Europe. SirWilliam, after all, was himself a senior British official in colonial India,as well as an aggressive activist for the Christian missionary movementthere.[2]
If colonial officials could imagine that the reason for the rise of Islam was its inherently militant nature, they had little difficulty explaining its extension in India in similar terms. Yet as Peter Hardy has observed, those who argued that Indian Muslims were forcibly converted have generally failed to define either force or conversion,[3] leaving one to presume that a society can and will alter its religious identity simply because it has a sword at its neck. Precisely how this mechanism worked, either in theoretical or in practical terms, has never, however, been satisfactorily explained. Moreover, proponents of this theory seem to have confused conversion to the Islamic religion with the extension of Turko-Iranian rule in North India between 1200 and 1760, a confusion probably originating in too literal a translation of primary Persian accounts narrating the “Islamic” conquest of India. As Yohanan Friedmann has observed, in these accounts one frequently meets with such ambiguous phrases as “they submitted to Islam” (“iṭā‘at-i Islām numūdand”), or “they came under submission to Islam” (“dar iṭā‘at-i Islām āmadand”), in which “Islam” might mean either the religion, the Muslim state, or the “army of Islam.” But a contextual reading of such passages usually favors one of the latter two interpretations, especially as these same sources often refer to Indo-Turkish armies as the lashkar-i Islām, or “army of Islam,” and not the lashkar-i Turkān, or “army of Turks.”[4] In other words, it was the Indo-Muslim state, and, more explicitly, its military arm, to which people were said to have submitted, and not the Islamic faith.
Nor does the theory fit the religious geography of South Asia. If Islamization had ever been a function of military or political force, one would expect that those areas exposed most intensively and over the longest period to rule by Muslim dynasties—that is, those that were most fully exposed to the “sword”—would today contain the greatest number of Muslims. Yet the opposite is the case, as those regions where the most dramatic Islamization occurred, such as eastern Bengal or western Punjab, lay on the fringes of Indo-Muslim rule, where the “sword” was weakest, and where brute force could have exerted the least influence. In such regions the first accurate census reports put the Muslim population at between 70 and 90 percent of the total, whereas in the heartland of Muslim rule in the upper Gangetic Plain—the domain of the Delhi Fort and the Taj Mahal, where Muslim regimes had ruled the most intensively and for the longest period of time—the Muslim population ranged from only 10 to 15 percent. In other words, in the subcontinent as a whole there is an inverse relationship between the degree of Muslim political penetration and the degree of Islamization. Even within Bengal this principle holds true. As the 1901 Census of India put it:
None of these [eastern] districts contains any of the places famous as the head-quarters of Muhammadan rulers. Dacca was the residence of the Nawab for about a hundred years, but it contains a smaller proportion of Muslims than any of the surrounding districts, except Faridpur. Malda and Murshidabad contain the old capitals, which were the center of Musalman rule for nearly four and a half centuries, and yet the Muslims form a smaller proportion of the population than they do in the adjacent districts of Dinajpur, Rajshahi, and Nadia.[5]
Indeed, it has even been proposed that, far from promoting the cause of Islamization, the proximity of Muslim political power in some cases actually hindered it. According to S. L. Sharma and R. N. Srivastava, Mughal persecution of the nominally converted Meo community of Rajasthan had the effect, not of strengthening the Meos’ Islamic identity, but of reinforcing their resistance to Islam.[6]
——–
রেফারেন্স-
1. William Muir, The Caliphate: Its Rise, Decline, and Fall (London, 1898; reprint, Beirut: Khayats, 1963), 45. [BACK]
2. Richard M. Eaton, Islamic History as Global History (Washington, D. C.: American Historical Association, 1990), 13. [BACK]
3. Peter Hardy, “Modern European and Muslim Explanations of Conversion to Islam in South Asia: A Preliminary Survey of the Literature,” in Conversion to Islam, ed. Nehemia Levtzion (New York: Holmes & Meier, 1979), 78. [BACK]
4. See Yohanan Friedmann, “A Contribution to the Early History of Islam in India,” in Studies in Memory of Gaston Wiet, ed. Myrian Rosen-Ayalon (Jerusalem: Institute of Asian and African Studies, 1977), 322. [BACK]
5. Census of India, 1901, vol. 6, The Lower Provinces of Bengal and Their Feudatories (Calcutta: Bengal Secretariat Press, 1902), 156. [BACK]
6. See S. R. Sharma and R. N. Srivastava, “Institutional Resistance to Induced Islamization in a Convert Community—an Empiric Study in Sociology of Religion,” Sociological Bulletin 16, no. 1 (March 1967): 77. [BACK]
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
এটা কি দক্ষিণ ভারতে খাটে?
@রৌরব,
অবশ্যই, ১৮৭২ সালের জরিপের তথ্যগুলো খেয়াল করুন, পাশাপাশি এটাও স্মরণীয় যে, দক্ষিণভারতে সুদীর্ঘকাল বিজয়নগর সাম্রাজ্য আর বাহমানী সালতানাতের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছে। এমনকি বিজাপুরের সুফিরাও রক্তনদী বইয়েছেন যা নিয়ে ইটন সুফিস অফ বিজাপুরে আলোচনা করেছেন, কিন্তু তাতেও মুসলিম পপুলেশন বাড়েনি। খেয়াল করুন জরিপে বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে বাংলার মুসলিম সংখ্যা নিয়ে, এটাও বলা হয়েছে যে তারা বেশিরভাগই কৃষিজীবি!!
The Hindoo element preponderates especially in the south. In Mysore, it comprises 95 per cent, of the whole popu- lation, and in Coorg and Madras about 92 per cent. In Oude, the North-West Pro- vinces, Ajmere, and Berar, it forms between 80 and 90 per cent, of the people. Bombay contains 79 per cent, of Hindoos, and the Central Provinces 7l per cent. In Bengal and Assam the percentage is about 64%, and in the Punjab 34% without, or 41% with, the Sikhs. In British Burma, the stronghold of Buddhism, there are only 11/3 per cent. of Hindoos.
Hindoos:
Bengal 38,975,418
Assam 2,679,507
North West Provinces 26,568,071
Ajmere 252,996
Oude 10,003,323
Punjab 6,125,460
Central Provinces 5,879,772
Berar 1,912,155
Mysore 4,807,425
Coorg 154,476
British Burma 36,658
Madras 28,863,978
Bombay 12,989,329
Total 139,248,568
Conversely, the Mahomedans are found to be most numerous in the northern parts of India. In the Punjab they form the larger half, 53 per cent., of the population. In Bengal they amount to 321/3, and in Assam 26 per cent.; in Ajmere nearly 20, in the North-West Provinces 13, and in Oude 10 per cent.; Bombay has 17 per cent, of Mussulmans; but in Berar and Coorg they do not come up to 7, in Madras they are barely 6, and in Mysore, British Burma, and the Central Provinces, they are only 4, 3, and less than 3 per cent., respectively. It is remarkable that, of the 20 millions of Mussulmans in Bengal and Assam (forming the larger moiety of the Mahomedan population of British India), 17 millions are found in Eastern Bengal and the adjoining Districts of Sylhet and Cachar, where they amount to 49 per cent, of the total population; and in two districts, those of Bogra and Rajshahye, to about 80 per cent. In that part of the country they comprise the bulk of the cultivating
Mahomedans:
Bengal 19,553,831
Assam 1,104,601
North-West Provinces 4,189,348
Ajmere 62,722
Oude 1,197,704
Punjab 9,337,685
Central Provinces 233,247
Berar 154,951
Mysore 208,991
Coorg 11,304
British Burma 99,846
Madras 1,857,857
Bombay 2,870,450
40,882,537
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
বাংলার কথায় আসছি পরে। কিন্তু আপনি যা লিখলেন তাতে দক্ষিণ ভারতে ওই “ইনভার্স” থিয়োরির প্রযোজ্যতা আমার কাছে স্পষ্ট হল না। উত্তর ভারতে মুসলিমের সংখ্যা দক্ষিণ ভারতের চেয়ে বেশি (যা কিনা আপনার উদ্ধৃতিতেই বলা হচ্ছে) সেটা তো ইনভার্স থিয়োরির বিরূদ্ধে গেল, নাকি? দক্ষিণ ভারতে মুসলিম শাসন উত্তর ভারতের চেয়ে বেশি বিস্তৃত ছিল না নিশ্চয়ই। তারপর ধরুন হায়দ্রাবাদের কেসটা। পুরো রাজ্য হিন্দু, শুধু নিজামদের রাজধানীতে প্রচুর মুসলিম।
ইটন এক সরলীকরণ “রিফিউট” করতে গিয়ে আরেক সরলীকরণের ফাঁদে পা দেননি তো? 😉
@রৌরব,
ধন্যবাদ প্রথমেই- ভালো কিছু অংশে আলোকপাত করেছেন বলে। উইকি থেকে দক্ষিণে মুসলিম শাসনের সংক্ষিপ্তসারটি দেখি-
The early medieval period saw the rise of Muslim power in South India. The defeat of the Kakatiya dynasty of Warangal by the forces of the Delhi Sultanate in 1323 CE. and the defeat of the Hoysalas in 1333 CE. heralded a new chapter in South Indian history. The grand struggle of the period was between the Bahmani Sultanate based in Gulbarga and the Vijayanagara Empire with its capital in Vijayanagara in modern Hampi. By the early sixteenth century, the Bahmani empire fragmented into five different kingdoms based in Ahmednagar, Berar, Bidar, Bijapur and Golconda, together called the Deccan Sultanates.
খেয়াল করুন প্রায় একই সময়ে ভারতের বিভিন্ন অংশে মুসলিম ইনভেশন হয়েছে। এবারে প্রথমেই একটি বিষয় পরিষ্কার করে নেওয়া যাক। আমরা যাকে বর্তমানে দক্ষিণ ও উত্তর ভারত বলে আলাদা করি সেসময় কিন্তু সেরকম কোনো সীমানা ছিলোনা। অর্থাৎ এক একটা ডাইন্যাস্টির সীমারেখা একেকরকম ছিলো। কাজেই ইটনের কথা সঠিক হলে আহমেদনগর, বেরার, বিদার, বিজাপুর আর গোলকোণ্ডায় মুসলিম পপুলেশন অনেক কম হওয়ার কথা(শাসনকেন্দ্রের স্কেলে, যা তিনি দিল্লীর ক্ষেত্রে দেখিয়েছেন) এবং তাই হয়েছে। উত্তরভারতের সাথে আপনি পাঞ্জাব, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ আর বেলুচিস্তানকে ধরছেন যা কিন্তু ফ্রিঞ্জ এরিয়া ছিলো। শাসনকেন্দ্র ছিলোনা। একইভাবে দক্ষিনের ওই এলাকাগুলোতেও মুসলিম পপুলেশনের এই বৈপরীত্য দেখা যায়। টিপু সুলতানের বিখ্যাত মহীশুরের কথাই ধরুণ। উপরে জনসংখ্যা দেখুন। কাজেই গড় স্কেলে শাসনকেন্দ্রের হিসেবে তার কথা খুব একটা ভুল হচ্ছে কি? হায়দারাবাদেও মুসলিম পপুলেশন কি অস্বাভাবিক বেশি? কাজেই শাসনকেন্দ্রের হিসেবে তার ইনভার্স থিওরীতো ঠিকই আছে। আর তিনি তো এরকম দাবী করছেন না যে যেখানে মুসলিম শাসন একেবারেই নেই সেখানে মুসলিম বেশি। কাজেই আপনি যদি এর উল্টোতা ধরেন তাওতো ঠিক হবে না,কারণ তিনি ইসলামাইজেশনের মূল বাহক হিসেবে চিহ্ণিত করেছেন আদিবাসীদের। অর্থাৎ ভারতের যে যে অঙ্গশে আদিবাসীরা আর্য সভ্যতার পূর্বে ইসলামী অঙ্গশের সাথে মিলিত হয়েছে তারাই মূলত কনভার্তেড হয়েছে। এর পেছনে নৃতাত্ত্বিক প্রমাণও তিনি দিয়েছেন।
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
হায়দ্রাবাদে মুসলিম জনসংখ্যা অন্ধ্রপ্রদেশের প্রেক্ষিতে আসলেই “অস্বাভাবিক” বেশি। অবশ্য তার মানে এই নয় যে হায়দ্রাবাদে তলোয়ার ধরে ধর্মান্তর হয়েছে। আমার পয়েন্টটা স্রেফ এই যে, ইটন মনে হচ্ছে একটা counter intuitive থিয়োরি খাড়া করতে গিয়ে অতি উৎসাহী হয়ে পড়েছেন।
উত্তর ভারতের মধ্যে পাঞ্জাব ইত্যাদিকে আমি ধরেছি তা না, আপনার উদ্ধৃতিতেই তো সেটা ধরা হচ্ছে। তার চেয়েও বড় কথা, পাঞ্জাব কি তামিলনাড়ুর চেয়েও ফ্রিঞ্জ, মুসলিম শাসনের পেনিট্রেশনের প্রেক্ষিতে? What about সিন্ধ? ইটনের পর্যবেক্ষণ গুলিকে ইন্টারেস্টিং মনে করেও তো এই প্রশ্নটা তোলা যায়।
মহীশুর বিষয়ে আমার একটা প্রশ্ন আছে। সেন্সাসে যে Mysore এর কথা বলা হয়েছে, সেটা কি Mysore শহর, নাকি পুরো রাজ্য। দ্বিতীয় কথা, Kingdom of Mysore তো যতদূর জানি একটা হিন্দু রাজ্য ছিল, যা কিনা স্রেফ দুই প্রজন্ম মুসলিম শাসনে ছিল (হায়দার আলি/টিপু সুলতান), ইংরেজরা দখল নেয়ার আগে। কাজেই কেমনে কি?
আমি উল্টোটা ধরছিনা, আমার কাছে প্রশ্নটা open। আপনি যে আদিবাসী তত্বের কথা বললেন, তার প্রতি আমার কিছু সহানুভূতি আছে, যদিও আপনার দ্বিতীয় বাক্যটা ঠিক ধরতে পারিনি। আর, ইয়ে, “আর্য” পেনিট্রেশনে দক্ষিণ ভারত অনেক পিছিয়ে না? আমার তো ধারণা, বাংলা দক্ষিণ ভারতের চেয়ে বেশি “আর্য”। ইটনের বই আমি পড়িনি, তবে নৃতাত্বিক প্রমাণের ব্যাপারে দ্বিধা প্রকাশ করছি। দক্ষিণ এশিয়ায় “আর্য” পেনিট্রেশনের ইতিহাস, প্রকৃতি ও নৃতত্ব যেখানে সম্পূর্ণ অস্পষ্ট, সেখানে তার উপর ভিত্তি করে মুসলিম পেনিট্রেশনের ইতিহাস রচনা তো আরও বিপজ্জনক।
@রৌরব,
দেখুন উদ্ধৃতিতে কিন্তু ডিগ্রী অফ পেনিট্রেশনের কথা বলা হচ্ছে। আমিও সেই স্কেলেই বলছিলাম। আর ফ্রিঞ্জ কথাটা শুধু শাসনএলাকার ভিত্তিতে ধরলে মনে হয় সুবিচার হবেনা, ফ্রিঞ্জ বলতে বোঝানো হচ্ছে এমন এলাকা যেখানকার আদিবাসীরা কোনোরকমের উন্নত সভ্যতার সংস্পর্শ থেকে বাইরে ছিলো মুসলিম শাসনের বা সুফির সংস্পর্শে আসার আগ পর্যন্ত। সেই হিসাবে তামিলনাড়ু ফ্রিঞ্জ না কারণ অনার্য হলেও তাদের চরম উন্নত একটা সভ্যতা ছিলো এবং উত্তরভারত আর দক্ষিণভারতের মধ্যে সুপ্রাচীণ দ্বন্দ্বের উল্লেখও আমরা পাই বিভিন্ন লোককথায় বা পুরাণে যা ক্ল্যাশ অফ সিভিলাইজেশনেরই ইংগিত দেয়। স্বাভাবিকভাবেই তাই এখানে ইসলাম সেভাবে ছড়াতে পারেনি(বাংলার ক্ষেত্রে পূর্ব বংগ আর পশ্চিম বঙ্গের ফারাকটাও তাই একই কারণে)। সিন্ধ বিষয়ে কি? ঠিক বুঝিনি।
মহীশুর বলতে সম্ভবত পূর্ণ এলাকাই বোঝানো হয়েছে জরিপে।
আর ইটন আর্য পেনিট্রেশন বিষয়ে আদিবাসীপ্রধান অঞ্চলগুলোতে বেশি জোর দিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি মুসলিম হয়েছে উত্তরে বিভিন্ন ‘জাত’ আদিবাসী গোষ্ঠী আর বাংলায় চণ্ডাল, পাঁড়, রাজবংশী এরা। নৃতাত্ত্বিক জরিপের ফলাফলও তিনি এক্ষেত্রে সাজেস্ট করেছেন।
জানিনা কতটুকু আমার তরফ থেকে বলতে পারলাম।
ধন্যবাদ।
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
আপনার সাথে আমার মতপার্থক্য কমে এসেছে।
মন্দ নয়! থিয়োরিটা অনেকটা এরকম তাহলে:
১. মুসলিম শাসনের কেন্দ্রগুলি ঐতিহাসিক কারণের আগে থেকেই “উন্নত সভ্যতা”-র সংস্পর্শিত, কাজেই সেখানে মুসলিমরা সুবিধা করতে পারেনি
২. যেসব জায়গাগুলি মুসলিম শাসনের অধীনে কিন্তু “উন্নত সভ্যতা” মুক্ত, সেখানে তাদের সাফল্য বেশি।
এই দ্বিতীয় পয়েন্টে কিন্তু ধরে নেয়া হচ্ছে রাজনৈতিক শাসনের একটা ভূমিকা আছে, নইলে উত্তরপূর্ব-ভারত (সেভেন সিস্টারস) মুসলিম মুক্ত কেন?
বাংলার ক্ষেত্রে এই থিয়োরিটা মন্দ নয়, ওয়াটার টাইট না হলেও। কিন্তু পাঞ্জাব-সিন্ধুতে এটা হজম করতে পারলাম না। সিন্ধু অববাহিকা আর্য এবং আর্যপূর্ব সভ্যতার জন্মভূমি। I mean …. এর চেয়ে সেন্ট্রাল কিছু ভাবাই কঠিন ভারতের ইতিহাসে।
@রৌরব, নাহ্, আপনাদের এখানে মডারেশন প্রক্রিয়াটি বেশ স্লো। অনুযোগ করছিনা, তবে এতে করে মন্তব্য চালাচালির ফ্লোটা ভালোই ব্যাহত হচ্ছে।
দেখুন, ইটনের এই বইটা বাংলা নিয়ে। তাই স্বাভাবিকভাবেই তিনি পাঞ্জাব নিয়ে বিশদে যাননি। তিনি অবশ্য উল্লেখ করেছেন,
আর সূত্র হিসেবে উল্লেখ করেছেন-
See Richard M. Eaton, “The Political and Religious Authority of the Shrine of Baba Farid,” in Moral Conduct and Authority: The Place of Adab in South Asian Islam, ed. Barbara D. Metcalf (Berkeley and Los Angeles: University of California Press, 1984), 333–56.
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
ভদ্রলোক দেখছি self reference দিতে অত্যন্ত পটু 😀
ইটনের বইগুলো পড়া দরকার, কিন্তু ভদ্রলোক কিছু obvious জিনিস মিস করছেন। পশ্চিম পাঞ্জাব ভারতের ফ্রিঞ্জ হতে পারে, কিন্তু ইসলামী বিশ্বের একেবারে মাঝখানে। ওই খান দিয়েই সব “ইসলামিক” ইনভেশনগুলো হচ্ছে। পশ্চিম পাঞ্জাবের ঠিক দক্ষিণে সিন্ধ। সেটা ভারতে ইসলামের এন্ট্রিপয়েন্ট, বহু আগে থেকে সেখানে ইসলামাইজেশন হচ্ছে, তার কিছু তলোয়ার ধরা। Lo and behold, পূর্ব পাঞ্জাব (যেখানে মুসলিম কম), তার সাথে সিন্ধের বর্ডার নেই। এসব কিছু বাদ দিয়ে স্রেফ এক “উন্নত সভ্যতা” তত্ব নিয়ে পড়েছেন ভদ্রলোক।
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
মুক্ত মিয়া, ইটনের লেখায় আমি শুধু পাচ্ছি উনার “লজিক্যল স্পেকুলেন”। কিন্তু ইতিহাস “হার্ড ফ্যাক্তস”-এর ব্যাপার। ইটন সাহেব যেভাবে মূইরকে ধুলাই করেছেন, সেটা তিনি মুইরকে না করে, করা উচিত ছিল কোরানকে, নবী মুহাম্মদ ও তাঁর জীবনীকার ও হাদিস সংগ্রাহকদেরকে এবং পরবর্তি সব মুল ইসলামী ঐতিহাসিক ও লেখকদেরকে। মূইর কেবলই সেসব লেখা থেকে “ডকুমেন্টিং” করেছেন মাত্র; ইতিহাস সেভাবেই হওয়া উচিত। ইটন ইতিহাস লেখেন স্পেকুলেশণ ভিত্তিক; তার কাছে আসল লিখিত তথ্যের কোনই মূল্য নেই। আপনি নিজে মুইরের লেখা পড়ে থাকলে ইটনের এ লেখায় উচ্ছসিত হতে পারতেন না। পড়ে দেখুন লেখা মুহাম্মদের জীবনী। সেটা পছন্দ না হতে পারে, কিন্তু ঐতিহাসিক তথ্যগত এমন একটা শব্দও সেখানে পাবেন না, যা সমাদৃত ইসলামি সূত্র থেকে আসেনি।
@অবিশ্বাসী, আমি স্রেফ কয়েক প্যারা কপি করেছি, পুরো বইটা পড়েন, হার্ড ফ্যাক্টসও পাবেন। জনসংখ্যার জরিপ যদি আপনার কাছে হার্ড ফ্যাক্ট মনে না হয় সে অবশ্য আলাদা কথা। আর মুরকে তিনি রিফিউট করেছেন কারণ তিনি ডগমা দ্বারা চালিত ইতিহাস লিখেছেন, আর দশটা ওরিয়েন্টালিস্টের মতই। যদিও সেটা এই মুহূর্তে অপ্রাসংগিক কারণ আমরা এখানে মুহম্মদের জীবনী নিয়ে আলাপ করছিনা, আলাপ করছি ভারতবর্ষে ফোর্সড কনভার্সেশন তত্ত্ব নিয়ে। আর ইটন তার এই বইতে কি পরিমাণ লিখিত তথ্যের রেফারেন্স ব্যবহার করেছেন তা রেফারেন্স অংশে দেখলেই পাবেন। কাজেই তিনি শুধু লজিক্যাল ডিডাকশন দিয়ে মিস্ট্রি সলভ করেছেন এটা একেবারেই রেড হেরিং টাইপ কথাবার্তা হয়ে গেলো। প্রচুর হার্ড ফ্যাক্ট তিনি ব্যবহার করেছেন। আমরা খামোকা এই আশেপাশের অংশে না গিয়ে স্ট্রেইট তাকে খণ্ডাই কেমন? অর্থাৎ তার লেখায় ভুল বা অসংগতি কোথায় আছে? কিংবা ফোর্সড কনভার্সেশন তত্ত্বের পক্ষে আপনার কাছে এমন কি হার্ড ফ্যাক্ট আছে যা এ লেখাকে ভুল প্রমাণিত করতে পারে?
@মুক্ত হ্যাচ্চু!, ভাই আমি ইটনের অন্য দু’টো বই পড়েছি। একটা দক্ষিন-পশ্চিম এশিয়ায় ইসলাম প্রচারের বিষয়ে আরেকটা; বিজাপুরের সুফিদের উপর। বিজাপুর সুফিদের উপর ঊনার উদ্ধারকৃত ফ্যাক্টস এক রকম আর উপসংহার অন্য রকম। সব বিখ্যাত সুফিরা যোদ্ধা, হিন্দুদের উপর অত্যাচারী; কিন্তু সুফিরা মানবতা, শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় ইসলাম প্রচার করেছে। একটা দক্ষিন-পশ্চিম এশিয়ায় ইসলাম প্রচারের বিষয়ে লেখাটাতে হার্ড ফ্যাক্টস নেই, পুরোই স্পেকুলেশন। আপনার উদ্ধৃত বইটা খুজছিলাম। ধন্যবাদ লিঙ্কটা দেওয়ার জন্য। বইটা পড়ার জন্য আমি উদ্গ্রীব অনেকদিন। আর আপনি মনে হচ্ছে খানের বইটি পড়েননি, আমি ভেবেছিলাম পড়েছেন। চেষ্টা করতে পারেন।
@অবিশ্বাসী, আপনাকেও ধন্যবাদ।
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
এড হমিনেম হল না কথাটা?
@রৌরব,
আমি যদি লিখতাম যে মুর একজন ইয়াহুদী, নাসারা বা বর্বর ওরিয়েন্তালিস্ট তাহলে সেটা এড হোমিনেম হতো। অরিয়েন্টালিস্টদের লেখার পেছনের যে প্রেরণা সেতাকেই আমি ডগমা বলেছি যা এডওয়ার্ড সাইদ আরো ভালোভাবে আলচনা করেছেন। কাজেই আমার মনে হয়না এখানে এড হোমিনেম হয়েছে।
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
আপনি গালাগাল দিলেন কিনা সেটাতো মূখ্য না। মুরের উদ্দেশ্য কি, সেটা দিয়ে আপনি তার লেখার বিচার করছেন, না করছেন না?
@রৌরব, করছি না। মুরের তথা যেকোন ঐতিহাসিকের লেখার উদ্দেশ্য নিয়ে আমার নির্দিষ্ট পর্যায় পর্যন্ত মাথাব্যথা নাই কিন্তু সেকারণে লেখাটি যদি মূল ইতিহাস থেকে সরে যায় তবে আমার মাথাব্যথা আছে কারণ তা তখন সরাসরি কার্যকারণ সম্পর্কিত যা নিরপেক্ষ ইতিহাসে বাঁধা দেয়। আর মুর কি ভাবে ইতিহাসকে সংকীর্ণ করে ফেলছেন সেটা অপ্রাসংগিক ভেবেই আমি স্রেফ এড়িয়ে গেছি। সহজ তুলনা হিসেবে বললে যদি কেউ বাংলাদেশে এসে পুকুর কাটার মাপ হিসাবে রাখা মাঝখানের উচু মাটির স্তম্ভ দেখে ইতিহাস লেখে যে, বাংলাদেশীরা সবাই শিবলিঙ্গ পুজারী তাহলে যে হাস্যকর ব্যাপারটি দাঁড়ায় ওরিয়েন্টালিস্টরা সেই একই কাজই করেছেন।
ধন্যবাদ।
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
fair enough। মুরকে নিয়ে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করা অপ্রয়োজনীয় বোধ করছি। একথাগুলি যেজন্য বলা তা হল এই — এই থ্রেডের প্রথমে আপনি এড হমিনেম attack এর ব্যাপারে অ্যালার্জি দেখিয়েছেন (আমিও একই রকমের অ্যালার্জিক), কিন্তু তারপর আবার বিভিন্ন জায়গায় দেখছি অন্যদের মতামতকে “ওরিয়েন্টালিস্ট” দের সাথে একীভূত করার চেষ্টা করছেন। তাদের মতটা সরাসরি খণ্ডন করলেই তো হয়, তাই না?
@রৌরব, ভাইরে, তাদের মতকে সরাসরি খন্ডন করতে এডওয়ার্ড সাইদকে আস্ত বই লিখতে হয়েছে। দুয়েক কমেন্টে সেটা কীভাবে সারি বলুন :)।
মন্তব্যগুলো মিলে যাচ্ছে বলেই বলছি, তবে আপনি ঠিকই বলেছেন সেগুলো বিশদ করাটা উচিত। দেখি, সামনে সময় পেলে ওরিয়েন্টালিজম বা মুক্তমনার ইসলাম বিদ্বেষীদের নিও ওরিয়েন্টালিজম নিয়ে লিখবো এখানে।
“বাংলাদেশে ইসলাম ঢুকেছে তরবারির সাথে। খুব অল্প লোকই স্বেচ্ছাই ইসলাম গ্রহণ করেছিল”–
ইসলামোফোবিস্ট হলে মুক্তমনত্বেও যে মিথ্যার পচন ধরে সেটাই দেখছি-
বাংলায় ইসলাম কীভাবে বিকাশ লাভ করেছে তা জানার জন্য সবাই এই বইটি পড়তে পারেন-
The Rise of Islam and the Bengal Frontier, 1204–1760
Richard M. Eaton
UNIVERSITY OF CALIFORNIA PRESS
Berkeley · Los Angeles · London
মানে যারা মুক্তমনা তাদের উদ্দেশ্যেই বলছি আরকি! ইসলাম বিদ্বেষীদের পড়ে খুব একটা লাভ নেই। মোটা দাগে তাদের সাথে ফাণ্ডি মুসলিমদের খুব একটা ফারাক নেই। দু এক বই পড়েই তারা সব জেনে যান! হে হে।
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
মুহাম্মদ বিন কাসিম ভারতবর্ষে ঢুকেছিলেন কি নিয়ে? হাড়ি পাতিল না তরবারি নিয়ে?
বখতিয়ার খিলজি বঙদেশে ঢুকেছিলেন কি নিয়ে?–ফুলের মালা না তরবারি নিয়ে?
ভাইজান, আর কি লিখব? আপনি ত দেখছি কাফেরদের উপর বেশী বিশ্বাস রাখছেন।
আমরা যখন কোরান, সুন্না, শরিয়া, তারিখ দেখাচ্ছি–তখন আপনারা দেখতে বলছেন কাফেরদের বি বি সি।
আমরা যখন ইসলামের ইতিহাস দেখাচ্ছি যা লিখে গেছেন ইসলামের বিশাল পণ্ডিতেরা –আপনারা বলছেন কাফের ইটনের বই পড়ার জন্য।
কি মজাই না দেখাচ্ছেন, ব্রাদার। হাসব না কাঁদব জানিনা।
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
আপনার এ প্রশ্নটার অনেকাংশে উত্তর উপরে দিয়েছি। তবে পড়ে দেখুন আবারো ইটনের রচনাটি। কোথায় সেখানে লেখা হয়েছে তরবারী হাতে বখতিয়ারের, শাহ জালালের বাংলায় প্রবেশের কথা? কোথায় লেখা হয়েছে যদু আকা সুলতান জালালুদ্দিনের অধিনে ধর্মান্তরকরণের রেল গাড়ি চালানোর কথা? ইটনের মতে ধর্মান্তর শান্তিবাদি, মানবতাবাদি সুফিদের কেরামতি। কোন নামকরা সুফিটি আসেননি তলোয়ার হাতে বা তুলে নেননি তলোয়ার কিংবা অমুসলিমদের উপর অত্যাচার চালাননি। শাহজালাল, খান জাহান এরূপ সুবিখ্যাত সুফিদের হাতে আমরা দেখি তলোয়ার। শান্তিবাদি সুফি থেকে থাকলেও তাদের সংখ্যা খুবই কম, তারা বিখ্যাত নন এবং ধর্মান্তরে বড় ভূমিকা রাখেননি।
ইটনের মত বামবাদী, মার্ক্সবাদী ও পোস্টমডার্নিস্ট পণ্ডিতদের জনগণকে ধোকা খাওয়ানোর দিন শেষ হয়ে আসছে।
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
আর খিলজির গণহত্যার, দাস বানানোর রেফারেন্স আছে, কিন্তু কনভার্সনের কোনো রেফারেন্স নাই। শাহ জালালের সাথে গৌড় গোবিন্দের যুদ্ধের ইতিহাস পুরটাই মিথ, এটা ইটন তার বইতে খুব ভালোভাবে দেখিয়েছেন। যদিও গণহতা আর দাস ব্যবস্থার সাফাই গাইছি না তবে টুকু না বললেই না, মোউর্য, পাল আর সেন সাম্রাজ্যকালেও এগুলো যথেষ্ট পরিমাণেই হয়েছে। বৌদ্ধ মন্দির ধ্বংসেও ব্রাহ্মণরা সমান ভূমিকা পালন করেছে। এক কলিংগ যুদ্ধেই অশোক যে পরিমাণ গণহত্যা চালিয়েছেন তার কোনো জুড়ি নেই।
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
@রাজেশ তালুকদার,
পুরো মন্তব্য কেন গেলনা বুঝলাম না!
ক্রীতদাসদের দৃশ্যমান ত্রুটি হলে আবার বিক্রি করার সময় দাম কমে যাবে বলেই ঐ ব্যবস্থা বলে ্মনে হয়েছে। আর নির্যাতনে দাসীদের পেট বাধানো এড়াতেই ছিল আজল প্রচেষ্টা পদ্ধতি; যাতে পুনরায় বিক্রি করলে দাম না কমে। হ্যামদুলিল্লাহ, হ্যামদুলিল্লাহ; সোভহানাল্লাহ
সম্পূর্ন অজ্ঞতা এবং বিদ্ধেষ প্রসূত লেখা। এ বিষয়ে BBC হতেও কিছু দেখতে পারেন:
http://www.bbc.co.uk/religion/religions/islam/history/slavery_1.shtml
@হাসিব সারোয়ার,
আমরা বি বি সি দেখব কেন? আমাদের কাছে রয়েছে, কোরান, হাদিস, সুন্না, শরিয়া আর ইসলামের ইতিহাস যা লিখে গেছেন ইসলামের বিশাল পণ্ডিতেরা। প্রমাণ করুন এই সব ইসলামী পণ্ডিতেরা মিথ্যা লিখেছেন।
ভাইজান আপনি ত দেখছি কোরান, হাদিস, শরিয়া, ইসলামের ইতিহাসের চাইতে বিধর্মিদের লেখায় আপনার বিশ্বাস অনেক বেশী। কি অপূর্ব! আপনি হাসালেন।
@আবুল কাশেম,
:lotpot:
@হাসিব সারোয়ার,
আপনি কি আমার ব্লগ ও মুক্তমনায় হাসিব সারোয়ার, আর সামু ও সদালাপে এস এম রায়হান?
তা ছদ্মনামে কেন? আসুন ওয়েল কামব্যাক টু মুক্তমনা।
@আকাশ মালিক,
:hahahee:
@হাসিব সারোয়ার,
ভাইজান, BBC কি ইমাম বুখারী, ইমাম মুসলিম, ইমাম মাজা, ইমাম নাসাই , ইবেন ইসহাক, আল তাবারি, ইবনে সাদ ইত্যাদি প্রমূখের চেয়ে বেশী ইসলাম জানে নাকি ?BBC এধরনের অনুষ্ঠান প্রচার কেন করে জানেন ? ওরা পশ্চিমারা মুসলমানদেরকে সব সময় দাবিয়ে রাখতে চায়। এ কাজের জন্য সবচাইতে বড় হাতিয়ার হলো- ইসলামী তাবিজ মুসলমানদের গলায় ঝুলিয়ে দেয়া যাতে তারা ইহজাগতিক উন্নতির দিকে ধাবিত না হয়ে ইসলাম আর তার কাল্পনিক ও আজগুবি বেহেস্ত নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আপনাদের চোখ কান একটু খোলা থাকলেই তা ভালমতো বুঝতে পারতেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সে আশার গুড়ে বালি। আপনার চোখ কান তো খুলবেন ই না, পরন্ত ইংরেজদের এ ধরনের উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণাকে সত্য ধরে বাকীদের চোখ কানও অন্ধ করে দিতে চান।
আবুল কাশেম ভাইকে অনেক ধন্যবাদ এ সব লোম-হর্ষক বর্বর অমানবিক ইসলামী ইতিহাস পাঠকেরদেরকে অবহিত করানোর জন্য। বাজারে যে সমস্ত ইসলামী বই-পুস্তক পাওয়া যায়, মসজিদ মক্তব-মাদ্রাসায় যা শিখানো হয়, ওয়াজ মাহফিলে যা বয়ান করা হয় তা পড়ে বা শুনে ‘সত্যিকারের ইসলাম’ সম্বন্ধে কোনরুপ ধারনা পাওয়া সম্ভব নয়। ঐসব গদ বাঁধা সরঞ্জাম থেকে সাধারন মুসলমানেরা কোন দিনই জানতে পারে না যে ইসলাম প্রচার ও প্রসারে মুহাম্মাদ ও তার সাংগো-পাংগো (সাহাবা) এবং পরবর্তীতে মুসলীম শাষকরা কিরুপ নিষ্ঠুর-অমানবিক পন্থার আশ্রয় নিয়েছিল। ক’দিন আগে আমার এক ডাক্তার বন্ধুকে যখন প্রাসংগিক এক আলোচনায় জানালাম যে প্রা্তিষ্ঠানিক প্রায় সব ধর্ম প্রতিষ্ঠার পিছনেই হাজারো মানুষকে নৃশংস খুনের ইতিহাস জরিত। প্রায় স্ংগে সংগেই তার উত্তর, ‘একমাত্র ইসলাম ছাড়া’। বন্ধুটি ৫ ওয়াক্ত নামাজী, হাজী এবং বাজারে সহজলভ্য ইসলামী বই-পুস্তক নিয়ে পড়াশুনাও করেন। ওকে যখন ‘ইসলামী আদি উৎসের কিছু রেফারেন্স দিলাম তখনও সে দ্বিধান্বিত। সাধারন মুসমানদের কাছ থেকে যুগে যুগে ‘সত্যকে’ আড়াল করা হয়েছে এবং হচ্ছে। ইসলামের বিরুদ্ধে যায় এমন কোন সত্য প্রকাশের পরিবেশ ‘ইসলামী আইনে’ কোন কালেই ছিল না, এখনো নাই।”মৃত্যুদন্ড”ই সে অরাধের একমাত্র শাস্তি । তাই ১৪০০ বছর ধরে প্রকাশ্যে শুধু ‘শান্তির বানীই’ প্রচার করার সুযোগ ছিল।ফলশ্রুতিতে ইসলামের ইতিহাসে হাজারো ‘মিথ’ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। তার একটি হলো, ‘হিন্দুদের বর্ন-বৈষম্যে অতিষ্ঠ হয়ে ইসলামের সাম্য ও শান্তির বানীতে মুগ্ধ হয়ে আমাদের পূর্ব-পুরুষরা হিন্দুধর্ম থেকে দলে দলে মুসল্মান হয়েছিলেন। বাংলাদেশের যে অংশে আমার বাড়ি তা ছিল মূলতঃ বৌদ্ধ অধুষিত এলাকা ( যে ধর্মে বর্ন-বৈষম্যের কো্ন বালাই বাই) ।কালের সাক্ষী হিসাবে এখনো বেশ কিছু বৌদ্ধ-বিহারের ধংসস্তুপ দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু সে অন্চলে এখন একজনও বৌদ্ধ নাই। আফিগানিস্তান ছিল এক-কালে বৌদ্ধ অধুষিত, সেখানেও বৌদ্ধরা অনুপস্থিত। প্রায় এক কোটি নিরিহ বৌদ্ধদের খুন করা হয়েছে বলে জানা যায়। বর্ন-বৈষম্যে অতিষ্ঠ হয়ে হিন্দুরা ‘দলে দলে’ মুস্লমান হয়েছিল ‘এ মিথের কোন সত্যতা নাই’। বর্ন-বৈষম্য হিন্দুধর্মে এখনো বিদ্যমান এবং ইসলাম প্রচারে নিবেদিত কর্মীদের সংখ্যা এবং সরঞ্জাম সে আমলের তুলনায় এখন অনেক অনেক সহজলভ্য। তার পরেও ‘হিন্দুরা কেন দলে দলে মুসলামানিত্ব বরন’ করছে না তা চিন্তা করলেই বুঝা যায় যে দলে দলে প্রচারানার গল্প ইসলামের হাজারো ‘মিথের” একটি।“ডাঁহা মিথ্যা”।
পাঠকরা আপনার এ শ্রম-সাধ্য অনুবাদটি থেকে অনেক অজানা তথ্য জানতে পারছেন। আপ নাকে এবং মূল লেখক এম এ খানকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। (F)
@গোলাপ,
বাংলদেশে ইসলামের ইতিহাসে যে শেখনো হচ্ছে তা সর্বৈব মিথ্যা। বাংলাদেশে ইসলাম ঢুকেছে তরবারির সাথে। খুব অল্প লোকই স্বেচ্ছাই ইসলাম গ্রহণ করেছিল।
@আবুল কাশেম,
“বাংলাদেশে ইসলাম ঢুকেছে তরবারির সাথে। খুব অল্প লোকই স্বেচ্ছাই ইসলাম গ্রহণ করেছিল”–
এব্যাপারেও আপনার রেফারেন্স কি সবেধন নীলমনি এম এ খান?
তরবারির সামনে শত শত বছর কোটি কোটি বাংগালী হিন্দু অক্ষত রইলো কেমনে? বাংগাল মুলুক তো মূর্তিপূজক শুন্য হয়ে যাবার কথা।
@সফিক,
জ্বী হাঁ, কারণ এম খানই সাহস করে সত্যি কথা লিখেছেন।
তথাকথিক সুফীদের আসল চেহারা দেখার জন্য এম এ খানের বইটা পড়ুন। তার পর জবাব লিখুন।
@সফিক,
বাংলায় ইসলাম ঢুকেছিল বখতিয়ার খিলজির হাত ধরে; সুফি-পীর শাহজালালের হাত ধরে। এটাতো ছোটকাল থেকেই আমাদেরকে শিখানো হয়। কিন্তু তাদের দু’জনের হাতেই যে ছিল তলোয়ার, সেটার উপর আলোকাপাত বা জোর দেওয়া হয়না। সেটা উজ্ঝ রাখা হয়।
@অবিশ্বাসী,
ভাই আপনি আসল জায়গায় হাত দিয়েছেন।
আমাদের গর্ব করে জানানো হয় খিলজি মাত্র ১৭জন সৈন্য নিয়ে বাংলার রাজা লক্ষন সেনকে পরাজিত করেন। কিন্তু ১৭ জন সৈন্যের পিছে যে আরো ১০ হাজার সৈন্য ছিল সে কথা এক রহস্য জনক কারণে তেমন প্রচারিত হয় না। ইতিহাসিক রিচার্ড ঈটনের মতে খিলজির অগ্রবর্তী দলে ১৭ নয় প্রায় শ”দুয়েক সৈন্য ছিল।আর লক্ষন সেনও তাঁর রাজধানী গৌড়ে ছিলেন না। আক্রমণের সময় তিনি অবস্থান করছিলেন ব্রাহ্মণ পন্ডিতের কেন্দ্র নদিয়ায়। সেখানে তাঁর যুদ্ধ করার মত পর্যাপ্ত সৈন্য ছিল না। ফলে খিলজির বাংলা দখল সহজ হয়ে উঠে।
আর শাহাজালাল ছিলেন পুরাদস্তুর এক যোদ্ধা।১ম বার যুদ্ধে সিকান্দার খান সিলেটের রাজা গোড় গোবিন্দের কাছে হেরে যান।এই পরাজয় দিল্লির সুলতান ফি্রোজ শাহর পক্ষে সহজভাবে মেনে নেওয়া সম্ভব হয়নি।তিনি বুঝতে পারলেন গৌড় গোবিন্দের শক্তি কে খাটো করে দেখা তার মোটেই উচিত হয়নি, তাই পরবর্তী আক্রমনের জন্য বেশ আট ঘাট বেঁধেই মাঠে নামলেন। তিনি তার সেনাপতি নাসির উদ্দীন কে আদেশ দিলেন পুনঃরায় আক্রমনের জন্য তৈরী হতে। হিন্দু বধে সুলতানকে সাহায্য করতেই তথা কথিত পীর-দরবেশ শাহ জালাল তার সাথে ইয়েমেন, তুর্কিস্তান, আলরুম, তুরফান, বুখারা, তিরমিজ সহ আরবের বিভিন্ন আঞ্চল থেকে আসা আরো ৩৬০ জন ভাগ্যন্বেষী যুবক কে সাথে নিয়ে অস্ত্র হাতে ফিরোজ শাহর মুসলমান সৈন্য দলের সাথে যোগ দিলেন হিন্দু রাজা গোবিন্দকে সিলেট থেকে উৎখাত করার লক্ষ্যে।এই ৩৬০ জনের মধ্য তার ভাগ্নে শাহ্ পরানও ছিল। এই হল শাহ জালালের পীর হয়ে উঠার কাহিনী আর ৩৬০ জনের আউলিয়া হওয়ার কাহিনী। আবারো সেই অদৃশ্য কারণে শাহ জালালের অস্ত্র ধরা ও সিলেট দখলের মূল হোতা দিল্লির সুলতান ফি্রোজ শাহর ভূমিকা একেবারেই উদাও।
@রাজেশ তালুকদার,
এই হল শাহ জালালের পীর হয়ে উঠার কাহিনী আর ৩৬০ জনের আউলিয়া হওয়ার কাহিনী। আবারো সেই অদৃশ্য কারণে শাহ জালালের অস্ত্র ধরা ও সিলেট দখলের মূল হোতা দিল্লির সুলতান ফি্রোজ শাহর ভূমিকা একেবারেই উদাও।
তাই ত বলছিলাম বাঙলায় ইসলাম প্রতিষ্ঠার যে ইতিহাস আমরা বাল্যকাল থেকে পড়ে আসছি তা মোটামুটি মিথ্যা এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
সেই সব দরবেশ্ম পীর, ফকির, আঊলিয়া, সুফী–এরা ছিল আরব, তুর্কি, পারস্য থেকে আগত ভাগ্যাম্নবেষী যুবক। অনেকেই ছিল দুর্ধশ্য ডাকাত, জিহাদী অথবা হত্যাকারী। বাগদাদ থেকে আসা অনেক দস্যূও বাংলায় ফকিরের ভেক ধারণ করে নেয়। আর আমরা বোকা বাঙালিরা তদেরকে শান্তির দূত, সুফী, পীর মনে করে তাদের আরাধনা কর।
বাঙলার কোমলমতি বাসিন্দা, কৃষিনির্ভির লোকজন, আমায়িক ব্যবহার ইত্যদি তরবারির ডগায় কুক্ষিগত করা এই সব নির্দয়, বর্বর বেদুইনদের জন্য কত সহজই না ছিল।
কি আশ্চর্য্য!
সামাজিক ও রাষ্টীয় কঠোর/নির্মম দূর্ভোগের মধ্যে শত শত বছর থেকেও কোটি কোটি হিন্দু কিভাবে ভারতে অক্ষত রইলো সে প্রশ্নের জাবাবও দেয়া আছে এম, এ খানের ঐ বইটিতে। রেফারেন্স সমৃদ্ধ তথ্য-বহুল এ বইটি থেকে অনেক অজানা তথ্য পাঠকরা জানতে পারবেন।
@গোলাপ,
এম এ খানের ওই বইয়ের কোথাওই পুর্ব বাংলায় এত বেশি মুসলিম কেন তা নিয়ে লেখা হয় নাই। খামাকা মিথ্যা বলবেন না।
আপনাদের তলোয়ার তত্ত্বের হাস্যকর গ্যাঁজলার বিরুদ্ধে স্রেফ একটা কথাই বলে যাই,
দিল্লীতে সালতানাত প্রতিষ্ঠা হওয়ার কয়েকশত(৪/৫০০) বছর পরে বাংলা দখল হয়েছিলো মোগলদের দ্বারা, তাও আবার ১৫০০ সালের দিকে পুরোপুরিভাবে তুর্কিদের কাছ থেকে।
এতোবছরেও দিল্লীর বেশিরভাগই মুসলিম হয়নাই কিন্তু বাংলার সবাই মুসলিম হলো কীভাবে? যেখানে দিল্লী হলো মূল সৈন্যবাহিনীর ঘাঁটি আর বাংলায় বিদ্রোহ, অরাজকতা লেগেই থাকতো???
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
বাংলায় ইসলাম প্রসারের ব্যাপারে এম, এ, খানের বইটি যথেষ্ট ইংগিত দেয়। খান বাংলার দুই সুবিখ্যাত সুফি-সাধক — যারা সেখানে ইসলাম প্রচারে অগ্রনী ভূমিকার রেখেছিল — তাদের প্রকৃতি-চরিত্রের, তথা সহিংসতা বা সহিংস মনোভাবের কথা উল্লেখ করেছেন। উল্লেখ করেছেন বখতিয়ারের তলোয়ার হাতে বাংলায় প্রবেশের কথা এবং বিশেষত ধর্মান্তরকৃত যদু তথা সুলতান জালালুদ্দিনের অধিনে (১৪১৪-৩১) ধর্মান্তরকরণের কথা। জালালুদ্দিন অমুসলিমদেরকে দিয়েছিলেন কোরান অথবা তলোয়ার। এবং যেসব হিন্দুরা ইসলামগ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল তারা সবাই জংগলে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিল তার আমলে। জালালুদ্দিনের অধিনে যত অমুসলিম ইসলাম গ্রহণে বাধ্য হয়েছিল পরবর্তি ৩০০ বছরেও তত লোক ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়নি। খানের উল্লেখিত এসব তথ্য কি যথেষ্ট ইঙ্গিত দেয় না কিভাবে বাংলার অমুসলিমদেরকে মুসলিম বানানো হয়েছিল?
বাংলায় দিল্লির শাসন মোঘলামলে পোক্ত হলেও ইসলামি শাসন বহাল থেকেছে বখতিয়ারের সময় থেকেই। তবে সেসব মুসলিম শাসকরা থাকতেন দিল্লির শাসক থেকে স্বাধীন। তার মানে এই নয় যে, তারা স্থানীয়ভাবে ইসলামের প্রসারে জোর-জবরদস্তি করেন নি। আমরা যদি দিল্লি থেকে স্বাধীন দক্ষিণাত্যের মুসলিম শাসকদের (বাহমানী সুলতান) কথা বলিঃ তারা দিল্লির সুলতানদের চেয়ে আরো বর্বর ছিলেন অমুসলিমদের প্রতি। আর বাংলার স্থানীয় শাসকদের দিল্লি থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা স্থানীয়দের জন্য অধিক অত্যাচার-দুর্দশার সৃষ্টি করে। একতো, তাদেরকে স্থানীয় শাসক-মুসলিমদের হাতে নির্যাতিত হতে হতো; অন্যদিকে দিল্লি থেকে প্রায়শই আক্রমণ চালানো হতো। একমাত্র আকবরের আমলেই পাঁচবার আক্রমণ চালানো হয় বাংলায় স্থানীয় মুসলিম বিদ্রোহীদেরকে দমন কোরতে। বাংলায় বিদ্রোহ দমনে দিল্লি থেকে তিনটি বড় অভিযান চালানো হয়– সুলতান আলাউদ্দিনের আমলে, সুলতান ফিরোজ শাহর আমলে ও মোগল আমলে — এবং তার প্রত্যেকটিতে ১৮০,০০০ থেকে ২০০,০০০ মানুষকে কচুকাটা করা হয়। কি সাংঘাতিক ছিল সে বাস্তবতা।
@অবিশ্বাসী,
আবারও ঢালাও কিছু মন্তব্য করে নিজেকে হাস্যকর করে তুললেন। জালালুদ্দিনের ব্যাপারে রেফারেন্স দিন দেখি?
[img]http://publishing.cdlib.org/ucpressebooks/data/13030/v9/ft067n99v9/figures/ft067n99v9_map3.jpg[/img]
উপরের ছবিটি খেয়াল করুন। ১৮৭২ সালের জরিপে বাংলায় মুসলিমদের অবস্থান এটি নির্দেশ করে। কালোর গাঢ়ত্ব মানে সংখ্যাধিক্য। আপনার কথা সত্যি হলে মালদহ, মুর্শিদাবাদ কিংবা ঢাকায়(তুর্কি বা মোগল সালতানাতের প্রাদেশিক রাজধানী) সবচেয়ে বেশি মুসলিম হতো। কেন হয়নি? সবচেয়ে বেশি কোথায়?? দক্ষিণবংগে(বাংলাদেশের সবচেয়ে নতুন এলাকা) এতো বেশি কেন? সবচেয়ে বড় কথা, সেই ১৮৭২ সালেও পশ্চিমবংগে এত কম মুসলিম কেন?
তলোয়ার তত্ত্বে পড়ে থাকলে এগুলোর উত্তর জীবনেও দিতে পারবেন না। 🙂
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
ভাইজান, আপনি লিখেছেন,
আপনার এ মন্তব্যে আমি প্রায় নিশ্চিত যে আপনি এম এ খানের বইটি আদৌ পড়েন নাই। তাঁর বইয়ের [English version: ” Islamic Jihad -Legacy of Forced conversion. Imperialism, and slavery) Deceptive propaganda about conversion (page 112-146), sub-section- peaceful conversion by Sufis (page 115 -133), sub-headingঃ conversion of Sufis in Bengal] অনেক রেফারেন্স-তথ্য দিয়ে জানিয়েছেন কিভাবে বাংলায় “ইসলাম” কায়েম হয়েছে। অবিশ্বাসী ভাইকে ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জবাব দেয়ার জন্য। মনে হচ্ছে আপনি ‘Eaton’ সাহেবের লিখার প্রেমে পড়ে গিয়েছেন – কারন তা আপনার মনোপুত হয়েছে – তাই সে ‘মহা-পন্ডিত”। উল্টোটি হলে তাকে “ইসলামো-ফোবিক, কাফেরদের লিখা ইতিহাস (ষড়যন্ত্র)’ বলে আখ্যায়িত করতে ছাড়তেন না। ইতিমধ্যেই আপনি লেখককে এবং মুক্ত-মনায় যারা আপনার সাথে একমত নয় তাদরেকে ‘ইসলামো-ফোবিক /ইসলাম-বিদ্বসী /অল্প-বিদ্যা’ ইত্যাদি বিশেষ বিশেষনে ভূষিত করে ফেলেছেন। টিপিক্যাল ‘ইস্লামীষ্টদের” গত-বাঁধা বিরুক্তিকর মন্তব্য!!
ইসলামের যে ইতিহাস বর্তমান বাজারে বিক্রি হচ্ছে তা আদি উৎস থেকে কেমন “নির্লজ্যতায়”
বিকৃত করা হয়েছে তার কিছুটা আলোকপাত করেছিলাম (দেখুন এখানে)। কারা করেছে? কি উদ্দেশ্য করেছে? এম এ খানের বইটা যে আদৌ পড়েন নাই তার প্রমান আপনার আরেক মন্তব্যঃ
এম এ খানের বইটিতে অস্ংখ্য রেফারেন্স আছে। ইবারাহীম শাহ সিরকী এবং সুফী (!?) নুর কুতুবী আলাম রাজা গনেশকে পরাস্ত করে (১৪১৪ সাল), গনেশের ১২ বছরের শিশু যদুকে ‘ইসলামীত্বে দাখিল’ করায়ে (খুব শান্তি-পুর্ন উপায় – কি বলেন?!), জালালুদ্দিন মুহাম্মাদ নামধারী করে সিহাসনে বসান (১৪১৪-১৪৩১)। অমুসলীমদেরকে অত্যাচারের মাধ্যমে ‘ধর্মান্তকরনের’ কাহিনীর রেফারেন্সগুলো দেয়া আছেঃ
১) Gibb HAR (2004): Ibne Batuta- Travels in Asia and Africa, D K Publishers,New Delhi,
page 269
2) Sharma SS (2004): Caliphs and Sultans Religious Ideology and political praxis, Rupa and Co, New Delhi. Page 243-44
3) Smith VA (1958): The oxford history of India, Oxford University press, London. Page 272
4) Dr. James Wise: Journals of the Asiatic society of Bengal (1894)
5) Lal K S (1990): Indian Muslims-Who are they, Voice of India, New Delhi. Page 57
আপনি লিখেছেন,
আপনার মন্তব্যে মনে হচ্ছে আপনি “ইসালামী তলোয়ার তত্ত্বের” নামই শুনেন নাই।মুহাম্মাদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮) – মুহাম্মদের সর্বপ্রথম জীবনীকার author of “Sirat Raoul Allah”, “আল ওয়াকিদি (৭৪৭-৮২৩)- author: “Kitab Al Maghazi,, মুহাম্মাদ বিন সা’দ (৭৮৪-৮৪৫) -Author of “Kitab Al Tabaqat Al Kabir”).আবু জাফর মুহাম্মাদ বিন জারির আল তাবারি (৮৩৯-৯২৩) – author of “Tarikh Al Rasoul Wal Muluk”, ইসলামের ইতিহাসের এইসব দিকপালদের লিখাগুলো পড়ার সময় ও সুযোগ যদি নাও পান তবে লেখক আকাশ মালিকের ‘যে সত্য বলা হয় নাই” বইটি যত তারাতারি পারেন পড়ে নেন। ইসলামে ‘তলোয়ার তত্ত্ব” কে তখন আর হাস্য কর মনে হবে না। সেটাও পড়ার ও সময় যদি না পান, তবে “আদি-উৎস থেকে (তাবারী/হিশাম/ইবনে সা’দ ইত্যাদী) সংগ্রিহীত মুহাম্মাদের হিজরত থেকে পরবর্তী ৭০ বছরের (৬২২-৬৯২) “ইসলামী তলোয়ারের ইতিহাস /বর্বরতা/নিষ্ঠুরতার” এই লিষ্টটিতে একবার চোখ বুলিয়ে নিনঃ
মুহাম্মাদ তার ১০ বছরের মদীনা জীবনে (৬২২-৬৩২) ৬৬ টির ও বেশী সহিংস ঘটনার ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন, গড়ে প্রতি ৬ সপ্তাহে ১ টা। সেগুলোকে দুভাগে ভাগ করা হয়েছেঃ
ঐসব বিশিষ্ট ইতিহাসবিদদের মতে শুধু খন্দক ও ওহুদ (সেটাও মুহাম্মদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ মক্কা-বাসীর প্রতি আক্রমান) সবগুলোতেই মুহাম্মাদ ছিল আক্রমকারী [গনীমতের মাল/মেয়ে-দাস-দাসী জোগার এবং মুসল্মান বানানোর “জিহাদী” প্রেস্ক্রিপশানের হাতে-কলমে ব্যবহারিক (Practical demonstration) শিক্ষাদান]।
খোলাফায়ে রাশিদিনের (শ্বশুর-জামাইয়ের) রাজত্ব শুরু – ৬৩২-৬৫৬
আবু-বকর (শ্বশুর) ৬৩২-৬৩৪ঃ
ওমরের রাজত্ব (আরেক শ্বশুর)ঃ
ওসমানের (জামাই) রাজত্বঃ
আলীর রাজত্ব (আরেক জামাই /চাচাতো ভাই):
ঊমাইয়া শাসন শুরুঃ
তলোয়ার তত্বের জনক ও প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ। তার অনুসারীরা তাকেই অনুসরন (Divine order from Allah-Muhammad) করবে এটাতে আশ্চর্য্য হবার কিছুই নাই।আশ্চর্য্য হচ্ছি আপনার মন্তব্যে। ইসলামের প্রচার ও প্রসারের ইতিহাস সম্পর্কে যাদের সামান্য ধারনা আছে তারা এমন অদ্ভুত মন্তব্য (“তলোয়ার তত্ত্ব হাস্যকর) কখনোই করবে না।
Correction:
খোলাফায়ে রাশিদিনের (শ্বশুর-জামাইয়ের) রাজত্ব শুরু – ৬৩২-৬৬১।
@গোলাপ, আমার কথা না বুঝে একরাশ লেখার কোনো মানে নেই। আমি আরো সহজ-সরল ভাষায় বলি তবে, 🙂
“ভারতবর্ষ তথা বাংলায় তরবারীর মাধ্যমে ফোর্সড কনভার্সন দ্বারা ইসলামাইজেশনের কোনো প্রমাণ দিতে পারবেন কি?” গণহত্যা, দাসব্যবসা আর কনভার্সন এক না এটা মাথায় রাখবেন।
জালালুদ্দিন বা যদু ফোর্সড কনভার্সন করেছেন এবিষয়ের সপক্ষে রেফারেন্স দিন। আর হ্যাঁ, রেফারেন্স বলতে বোঝায় ঐতিহাসিক উপাদান, যেমন আপনার আগের উদাহরণে আছে ইবনে বতুতার কথা, সেটা বাদে বাকি সবই সাইটেশন, রেফারেন্স না।
আপনার আর বাদবাকী সবকিছুই অপ্রাসঙ্গিক।
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
শুধু ভারতবর্ষ বা বাংলাই নয়, পৃথিবীর কোন স্থানেই “শান্তি-পূর্ন” উপায়ে দলে দলে মানুষ ইসলামে দাখিল হয় নাই। মুহাম্মাদ নিজেও তা করতে পারেন নাই। মক্কায় মুহাম্মদের ১২ বছরের “শান্তি-পূর্ন” অক্লান্ত প্রচারনার ফল সমাজের নিম্ন-মর্যাদা ও আয়-ভুক্ত অনুর্ধ ১৫০ জন মানুষ।মুহাম্মাদ (মদীনা জীবন) এবং তার অনুসারীদেরদের মদীনা জীবনের “নৃশংসতা (জীহাদ)” এবং পরবর্তীতে মুসলীম শাসকদের সেই “জীহাদী” ধারাবাহিকতাই ইসলাম প্রতিষ্ঠা ও প্রসারের ‘মুল-মন্ত্র”। এই বিষয়টা ভালভাবে বুঝতে না পারলে বিভ্রান্ত হবার সম্ভবানা ষোল আনা।এই অত্যন্ত প্রয়োজনীয় তথ্যগুলোকে আপনি অপ্রাস্নগিক বলে আখ্যায়িত করেছেন। ভারতের তথা-কথিত সুফীরা মুহাম্মাদের চেয়েও বেশী “ক্যারিশ্মাটিক ও সৎচরিত্রবান” ছিল এবং তাদের মধুর ব্যবহার এবং বানীতে (সেই একই কুরানের বানী- যার পাতায় পাতায় অমুস্লীমদের প্রতি বিষদগার) মুগ্ধ হয়ে হাজার হাজার ভারতীয়রা দলে দলে ‘ধর্মান্তরিত’ হয়েছিল এমন ‘উদ্ভট’ চিন্তার কোন মানে নাই।খান তার এ বইটিতে “এই মিথটাকে” বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে অমূলক প্রমানিত করেছে। ধর্মান্তকরনে সুফীদের সাফল্য শাষকের হাত ধরে, নতুবা খুবই সামান্য।
According to Saiyyad Muhammad bin Nasiruddin Jafar Makki al-Husaini, the Khalifa of Nasiruddin Chiragh-i-Delhi “held that there were five reasons which led the people to embrace Islam:
@গোলাপ, আমার নিচের দিকের কমেন্টগুলোতে এসব নিয়ে বিস্তারিত আলচনা করেছি। বারবার চাকা আবিষ্কারের কোনো মানে নেই। আমি কি বলতে চাচ্ছি তা আমি আসলেই আপনাকে বুঝাতে পারছিন না এবং কনভার্সেশন বিষয়ে আপনার জেনারেল আইডিয়া(জনসংখ্যার অনুপাত ও আরো বিবিধ প্রসংগ) বেশ অস্বচ্ছই মনে হচ্ছে। তার চেয়েও বড় কথা ইতিহাস এর উপাদান নিয়েও আমি ঠিক নিশ্চিত হতে পারলাম না। কে কি মনে করে তা দিয়ে ইতিহাস কীভাবে বানানো যায়??
আর গলায় ছুরি ধরে মাস কনভার্সেশন সিনারিওটা কতটা হাস্যকর এটা আসলে আপনাকে আমি বোঝাতে পারছিনা। আপনার থিউরী সত্য হলে, প্রাচিন বাংলায় মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও ঢাকায় সবাইকে তরবারীর মাধ্যমে মুসলিম বানানো হয় এবং এই লজ্জায় ও দুঃখে নতুন মুসলিমরা বিদেশী মুস্লিমদের ছেড়ে দিনাজপুর, রাজশাহির মতন প্রান্তে গিয়ে নতুন ধর্মমত পালন করতে থাকে!!!!!!!!!! 😀 😀 😀 😀 😀
ওরিয়েন্টালিজমের সিন্দবাদের ভূত ঘাড় থেকে তাড়ান, আখেরে অনেক ফায়দা হবে, দৃষ্টিশক্তি স্বচ্ছ হবে।
@মুক্ত হ্যাচ্চু!,
বুঝতে পারছি আপনি ‘Forced conversion’ এর অর্থটাই বুঝতে পারেন নাই। ছুড়ির ভয় (Fear of death), নিজের এবং পরিবার-সদস্যদের দাস-দাসীতে পরিনত হবার ভয় (Fear of being enslaved), সামাজিক ও রাষ্টীয় কঠোর/নির্মম দূর্ভোগের স্বীকার হওয়ার ভয়(Fear of social and economic suppression), ‘অমুসলীম (কাফের)’ হবার কারনে জীবনের পদে পদে নানা দূর্ভোগ ও প্রতিকুলতার স্বীকার হবার সম্ভবনা – ইত্যাদী সবই জবরদস্তী ধর্মান্তকরনের আওতাভুক্ত। বলাবাহুল্য অমুসলীমদের প্রতি এসব সমস্ত জবরদস্তীই “ইসলাম সম্মত”। পৃথিবীর সর্বত্ত যেভাবে ইসলাম প্রচার ও প্রসার হয়েছে, ভারতেও হয়েছে ঠিক একইভাবে। অন্যরুপ ভাবার কোনই হেতু নাই। ইসলামের জন্ম-বৃদ্ধি ও প্রসারের ইতিহাস না জেনে উল্টা-পাল্টা মন্তব্য করা “সা-রে-গা-মা” না শিখে গান সন্মন্ধে জ্ঞান দান, অথবা “অক্ষর-জ্ঞান না নিয়ে” ভাষা সম্বন্ধে বক্তৃতা দেয়ার সমতূল্য। আপনার মন্তব্যগুলো পড়ে আমার মনে হয়েছে ইসলামের ইতিহাস সম্বন্ধে আপনার ধারনা সামান্যই।
@ রাজেশ তালুকদার
একেবারে সঠিক কথাটাই বলেছেন।
কি অদ্ভুত ব্যাপার। ছোটবেলা হতেই প্রকৃত ইতিহাস বিকৃত করিয়া শিশুদের মস্তিস্কে অসত্য ইতিহাস ঢুকানোর প্রক্রিয়া চালু রয়েছে আমাদের দেশে।
ধন্যবাদান্তে,
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
@ আবুল কাশেম,
নবি তার লেখা কোরানে লিখে দিয়েছেন-
নবীর পক্ষে উচিত নয় বন্দীদিগকে নিজের কাছে রাখা, যতক্ষণ না দেশময় প্রচুর রক্তপাত ঘটাবে।
It is not for a prophet to have captives until he inflicts a massacre in the land.
সুরা আনফাল, আয়াত ৬৭।
ভাবছি, আপনার এই লেখাটি পড়ার আগে সুলতান মাহমুদ গজনভি, টিপু সুলতান, বখতিয়ার খিলজি, নাজমুদ্দিন, সালাউদ্দিন আয়ুবি, আসাউদ্দিন, নুরুদ্দিন মাহমুদ এদের সম্মন্ধে ছোটবেলায় স্কুলে কী পড়লাম আর এখানে কী দেখছি। এদের সময়কালের পৃথিবীর অবস্থা আজিকার শিশুরা কল্পনাও করতে পারবেনা। এরা আর হালাকু, হিটলার, চেঙ্গিস খানের মাঝে পার্থক্য কোথায়? slavery in islam নামে ইন্টারনেটে ও ইউ টিউবে প্রচুর তথ্য আছে, নীচে ইউ টিউব থেকে দুটো ছবি দিলাম, কিছুটা অনুমান করা যাবে সাম্রাজ্যবাদী ইসলামের রাজ্য দখল, প্রচার ও বিস্তারের নমুনা।
httpv://www.youtube.com/watch?v=8zM_MzkLKPY&NR=1
httpv://www.youtube.com/watch?v=4rjDTyeqXt8&feature=related
@আকাশ মালিক,
এখন এটা পরিষ্কার যে আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে হয়তো ইসলামের ক্রীতদাস হতে হয়েছে নতুবা তরবারির ডগায় ইসলাম কবুল করতে হয়েছে।
তরবারির সামনেই আমাদের পূর্বপুরুষেরা বাধ্য হয়েছিলেন আরব-তুর্কি তথা মক্কার দিকে নতজানু হতে। হয়ত নতজানু হয়ে আমাদের অনেক পুর্বপুরুষদের আরব-তুর্কি-ফার্সি বর্বরদের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাইতে হয়েছে। প্রাণের বিনিময়ে তাদেরকে হতে হয়েছে ক্রীতদাস অথবা খোজা (পুরুষ)।
@আকাশ মালিক,
আমার কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব মুহাম্মদকে এদের চেয়ে জঘন্য মনে হয়।
কি জঘন্য বর্বর ভাবেই না শান্তির ভারবাহি মানুষ গুলো শান্তি খুজত!
প্রথমে পর রাজ্য দখল, তারপর গণহারে হত্যা, তাদের বউ বাচ্চাদের দাস দাসী করে মাইলের পর মেইল টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া, অনাহারে ক্ষুধায় কষ্ট দেওয়া, শারীরিক অত্যাচার করা, ধর্ষন, লুণ্ঠন, অগ্নি সংযোগ, বলদের মত খোজা করা পরিশেষে শান্তির ধর্ম গ্রহনে বাধ্য করা। কি অনৈতিক অমানবিক ঘৃণ্য কাজ নেই যা তারা বাদ দিয়েছে?
আবার তাদের উপযুক্ত উত্তরসুরীদের তা নিয়ে গর্ব করতেও লাজ লজ্জার বালাই নেই। হায়রে শান্তি প্রতিষ্ঠার খেইল! শান্তির শাসনের গর্ব!
একটা জিনিস ভাবার বিষয়ঃ আমাদের বাংলার পূর্বপুরুষরা কিরূপ শিকার ছিল এ জগণ্য ও হৃদয় বিদারক ইসলামি ক্রীতদাস শিকারের? আমি খানের বইটি থেকে আগাম উদ্ধৃতি দিচ্ছিঃ
সমস্যা হচ্ছে বাংলার মুসলিম শাসক দিল্লির সুলতানদের মত ইসলামি কর্মকাণ্ডের ইতিহাস বিস্তারিত লিখে যাননি। কিংবা লিখে থাকলেও তা হারিয়ে গেছে বা অনুবাদিত হয়নি। আমার জানা মতে, বাংলাদেশের এক সংস্থার হাতে প্রায় ১০,০০০ প্রাচীন পাণ্ডূলিপি রয়েছে, কিন্তু তাতে কি লিখা আছে তা গবেষণা করে বের করার কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে এ উদ্ধৃতিতে আমরা বাংলাকে দেখি ক্রীতদাস খোজাকরণে বিশেষভাবে উল্লেখিত হতে। তার মানে বাংলা ইসলামি ক্রীতদাস শিকারের বড় শিকার হয়েছিল বলে মনে হয়। তার মানে আমার-আপনার পূর্বপুরুষরা, হয়ত কারো অতি নিকটাত্মীয়, হয়েছিলেন এরূপ হৃদয়-বিদারক ঘটনার শিকার। তাদের সে দুর্ভাগ্যের কথা ভেবে দেখতে গেলে চোখে অশ্রু, হৃদয়ে ব্যাথা…
বেহেশ্তে হুর বইলা যেই ৭০ খান মাইয়া দিব ঐ টা কি দাসির বেহেশ্তি ফরমেট?
আশ্চর্যের বিষয় যে এই ঘৃনিত অধ্যায়টি নিয়ে আমাদের স্কুল কলেজে কোন কিছুই পড়ান হয় না, শুধুই ইসলামের সুনামই পড়ান হয়,কিন্তু কেন ???
সৈন্য সংখ্যা কত ছিল যে ২০/২৫ লক্ষ কৃতদাস একত্রে ধরে নিয়ে যায়? ওরা কি এতই দুর্বল?
@আস্তরিন,
খুব সহজ উত্তর—সত্যি ঘটনা জানলে ইসলামের সমাধি রচনা হবে। কম্যুনিজমের বেলায়ও তাই হয়েছিল। যুবক বয়সে কম্যুনিজমের গুণগান ছাড়া কিছুই শুনতাম না। যখন রাশিয়ানরা কম্যুনিজমের আসল চেহারা দেখল তখন গুটি কয়েক ক্যাডার ছাড়া আর সবাই কম্যুনিজম ছেড়ে দিল। এই সব সম্ভব হয়েছিল যেহেতু কিছু রাশিয়ান ছিলেন নির্ভীক–লেখক।
ইসলামেরও তাই হবে। শুধু দরকার আরও কিছু সাহসী লেখক–যারা মিন মিন করবে না।
পাকিস্তানী ইসলামি সৈন্যরা ৩০ লাখ বাঙালি হত্যা করেছিল, অকথ্য নির্যাতন চালিয়েছিল। কেমন করে তা সম্ভব ছিল? বাঙালিরা কি এতই দুর্বল ছিল—সহজেই আত্মসমর্পণ করে দিল?
আসল কথা হচ্ছে ‘জোর জার মুল্লুক তার’–হাতে অস্ত্র থাকলে অনেক কিছুই সম্ভব।
@আস্তরিন,
ভাল কথা বলেছেন। শুধু এটা কেন। স্কুল কলেজে পড়ানো হয় বা বাজারে পাওয়া যায় মোহাম্মদের যে জীবনী তাতে কি লেখা থাকে – মোহাম্মদের ১৩ বৌ ছিল আর কি কারনে তাদের বিয়ে করেছিল, আরও ছিল অনেক যৌনদাসী, ৬ বছরের আয়শাকে প্রৌড় বয়েসে বিয়ে করে ৯ বছরের আয়শার সাথে সেক্স করছে, পালিত পূত্র জায়েদের বৌ জয়নাবের প্রেমে পড়ে পরে তাকে বিয়ে করে? মদিনায় গিয়ে দল গঠন করে নিরীহ বানিজ্য কাফেলার ওপর আক্রমন করে, তাদের মালামাল লুঠ করে গণিমতের মাল হিসাবে ভাগ করে নিতেন ?
আসলে বলা প্রতিটি ধর্মেই আছে- “অহিংস পরম ধর্ম।”
আজকাল ধর্মবাদীদের দেখলে বুঝা যায়- “মহাহিংস পরম ধর্ম।”
@মাজ্হার ইজ,
অহিংসা পরম ধর্ম শুধু গৌতম বুদ্ধ বলেছিলেন।
মানবতার কী চরম দুর্ভোগ। কী মূল্যই না দিতে হয়েছে তাদের, শুধুমাত্র ক্রীতদাস আর যুদ্ধবন্দি বলে। প্রত্যক্ষ দাসপ্রথার বিলোপ্তি হলেও কিন্তু এখনো যুদ্ধবন্দিদের বরণ করে নিতে হয় সেই মধ্যযুগীয় বর্বরতা। মানুষ হিসেবে এদেরকে তাদের নুন্যতম যে অধিকার, মর্যাদা তাও দেয়া হয়না। আপনার এ লেখায় ক্রীতদাসদের যে দুরবস্থার কথা পড়লাম তাতে অবাক হচ্ছি এই জন্য যে, সেই নির্যাতনকারীরাও ছিল মানুষ। অসহনীয় যন্ত্রনায় যখন তারা আর্তনাদ করতেছিল কোন অলৌকিক সাহায্যের আশায় যা তাদেরকে মুক্তি দিতে পারে, সেই দিন তারা তাও পায়নি শুধুমাত্র ক্রীতাদাস বলে।
কী করেছে এই ইসালাম? কেবল বাড়িয়ে গিয়েছিল ক্রীতদাসদের সংখ্যা। আর তাদের জন্য জনমের তরে বরাদ্দ করে দিয়েছিল অসহনীয় ও অভিশপ্ত জীবন। সে নারী বা শিশু যেই হোক তাতে ইসলামের কিছু যায় আসেনা, কেবল ক্রীতদাস হলেই যথেষ্ট।
@বাদল চৌধুরী,
হাঁ, তবে তারা ছিল মুসলিম। আল্লাহপাকের ভাষায়, যারা ইসলাম মেনে নেয় শুধু তারাই মানুষ। যারা ইসলাম গ্রহণ করে না তারা পশু–মানে গবাদি পশু।
@আবুল কাশেম,
একেবারে যথার্থ বলেছেন।
আপনার অতীব গুরুত্বপূর্ন এ অনুবাদ উপহার দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
@আবুল কাশেম, আপনার এই মন্তব্যের সাথে আমি এক মত হতে পারলাম না। দয়া করে যা বলবেন প্রমান দলীল সহকারে বলবেন।
@রোহান,
অসুবিধা নাই; এই যে দেখুন আল্লাহপাক কি লিখেছেন কোরান শরীফে
২:১৭১ বস্ততঃ এহেন কাফেরদের উদাহরণ এমন, যেন কেউ এমন কোন জীবকে আহবান করছে যা কোন কিছুই শোনে না, হাঁক-ডাক আর চিৎকার ছাড়া—বধির মুক, এবং অন্ধ। সুতরাং তারা কিছুই বোঝে না।
আর দেখুন ইংরাজিতে
2:171
YUSUFALI: The parable of those who reject Faith is as if one were to shout Like a goat-herd, to things that listen to nothing but calls and cries: Deaf, dumb, and blind, they are void of wisdom.
Hilali and Khan
2: 171. And the example of those who disbelieve, is as that of him who shouts to the (flock of sheep) that hears nothing but calls and cries. (They are) deaf, dumb and blind. So they do not understand.
দেখুন মাওলানা মৌদুদি কি লিখেছেন এই আয়াত প্রসঙ্গে
Maududi 2/169: This parable has two aspects. On the one hand, it suggests that these people are like herds of irrational animals, dumb cattle, that always follow their herdsmen, moving on as they hear their calls without understanding what they mean.
এ ছাড়াও অন্যান্য আয়াত দেখতে পারেন–
2:18, 2:171, 6:25, 7:179, 8:22, 8:23, 22:46, 41:44, 46:26, 43:36 37
জনাব আবুল কাশেম,
সত্যি কথা বলতে কি, কৃতদাস প্রথার এতবড় ভয়ংকর ও বিভৎস চিত্র মুসলিম শাসকদের ইতিহাসে আছে তা আগে কখনো জানতে পারিনাই।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এই মূল্যবান নিবন্ধ টি এম এ খানের মূল ইংরেজী বই অনুবাদ করিয়া আমাদের সম্মুখে তুলে ধরার জন্য।
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
এই খণ্ডটি ও আগামীটা বইটির সবচেয়ে কষ্টকর অংশ পাঠকদের পড়ার জন্য। খুবই হৃদয় বিদারক।