(১)
আমার এই প্রবন্ধটি মুক্তমনার পাঠক এবং যুক্তিবাদি গুরুভাইদের জন্যে। তাদের জন্যে একদম এক্সক্লুসিভ রচনা।
আজকাল নানান কারনে লেখার সময় প্রায় নেই-শুধু একটু আধটু ব্লগ পড়ি। কিন্ত সৌদি আরবে ৮ বাংলাদেশীর শিরোচ্ছেদকে কেন্দ্রকরে যেভাবে নানান বাংলাদেশী ব্লগে ইসলাম এবং ইসলাম বিরোধি গোষ্টর বিতর্ক হচ্ছে, তাতে আমি কিছুটা হতাশ।
তাই দুটো কথা লিখছি-
প্রথমত একদল মনে করে এর জন্যে ইসলাম দায়ী। আরেকদল মনে করে, ইসলামের এমন নিষ্টুর আইন বিধান সমাজের জন্যে ভাল।
দ্বিতীয়ত গোটা ঘটনাটা কেও ইতিহাস ধরে , ইতিহাসের প্রগতি থেকে বিচার করলো না। আরবে এক সময় বৃটিশরা ক্ষমতায় ছিল। তারা কেন সেখানে বৃটিশ আইন চালু করল না? কেন মধ্যপ্রাচ্য আদিম যুগে থেকে গেল? এর জন্যে কি শুধু ইসলাম দায়ী? যুক্তিবাদিদের দাবী সেই রকমই।
বিতর্ক লেখালেখি ভাল জিনিস। বিরক্ত হয়েছি অন্য কারনে। বর্তমান বিশ্বে অকুপাই ওয়ালস্ট্রিট, গ্রীস-ইটালিতে সরকার বিরোধি আন্দোলন, অর্থনৈতিক মন্দা, মধ্যপ্রাচ্যে গণতান্ত্রিক জাসমিন বিপ্লব, তীব্র খাদ্য সংকট এবং পরিবেশ বিপর্যয় চলছে। এইসব বর্তমান ঘটনা বিশ্বের ইতিহাসের পরিবর্তন অনুঘটক। মুক্তমনা সমাজে এই নিয়ে খুব বেশী চিন্তা ভাবনা দেখি না। শুধু ইসলাম পেটানোতে লোকের উৎসাহ বেশী।
ঢাকা এবং কোলকাতা দুটিই বসবাসের অযোগ্য শহর। এগুলোকে বসবাসযোগ্য করা নিয়ে কোন চিন্তাভাবনা ব্লগে দেখি না। শুধু ব্লগের পর ব্লগ ইসলাম নিয়ে। যতদোষ নন্দঘোষ টাইপের আনক্রিটিক্যাল লেখাতে ভর্ত্তি হচ্ছে মুক্তমনা।
(২)
ইসলাম কি?
ইসলাম প্রেমীদের কাছে তা সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম, ইসলাম বিরোধিদের কাছে তা সর্ব নিকৃষ্ট ধর্ম।
তাতে অসুবিধা নেই। কিন্ত একজন যুক্তিবাদি, বিজ্ঞান মনস্ক মানুষের কাছে “ইসলাম” কি তাহলে?
বিজ্ঞানে ধর্মের অস্তিত্ব নেই। সমাজ বিজ্ঞানে ধর্ম একটি বিবর্তিত সাংস্কৃতিক মিম। সেলফ অর্গানাইজেশন বা সমাজ/রাষ্ট্র গড়ার জন্যে কিছু নির্বাচিত মিম। সমাজ এবং রাষ্ট্রের জন্মের জন্যে এককালে ইহাদের দরকার ছিল। আজকে উন্নত যোগাযোগ এবং বাজারের যুগে তা অর্থহীন। কারন গোটা বিশ্বই একটি ক্ষুদ্র গ্রামে পরিণত হতে চলেছে। আজকে মানুষ সমাজ বদ্ধ হচ্ছে স্যোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে-বাজারের মাধ্যমে। রাষ্ট্রর ধারণাটাই উঠে যেতে চলেছে। এবং আস্তে আস্তে রাষ্ট্রের সীমানা দুর্বল হচ্ছে বাজারের চাপে। ত্রিশ বছর আগেও ইসলাম নিয়ে মাতামাতি ছিল না। কারন আরবের তেলের পয়সা ছিল না। সবটাই একটা বাজারের প্রোডাক্ট। টাকা এল, মাদ্রাসা খুললো-কিছু গরীবের সংস্থান হল। তাহলে ইসলামে পেট চালাতে পারে-এমন ধারনা পেল সবাই। ফলে মধ্যযুগীয় আরবিক ধারনাও ফিরে এল। তেল শেষ হলে আরবের খাওয়ানোর ক্ষমতা চলে গেলে, এসব উৎপাত ও যাবে। যদি কোন হিন্দু গরীবকে খাওয়াতে পারে, তাহলে সেই সর্বহারা হিন্দুয়ানীতে বিশ্বাস করবে, ইসলাম খাওয়ালে সে ইসলামের ভক্ত হবে। কালকে যদি ২৫ লাখ বাংলাদেশী ভারতে আইন মেনে ভাল কাজ পায়, তারাও ভারতীয় সিস্টেমের দিকেই ঝুঁকবে। সুতরাং যেসব বাংলাদেশীরা আরবের টাকায় সংসার প্রতিপালন করে, তাদের আরবের প্রতি দুর্বলতা থাকা স্বাভাবিক।
ইসলামের বর্তমান উৎপাত খুব সাময়িক একটা এবারেশন। যা কিছু উন্নত উৎপাদন দিতে ব্যার্থ-তা দীর্ঘদিন চলতে পারে না। যা করলে পেট চলে, বেঁচে থাকা যায়, মানুষ সেটাকেই ধর্ম হিসাবে নেয়। কলকাতার ঝি লোকাল ট্রেন গুলোতে দেখা যাবে দরিদ্র কবলিত অঞ্চলগুলি থেকে কপালে বিশাল সিন্দুর লাগিয়ে ঝিয়েরা বাবু-বিবিদের বাড়িতে কাজ করতে আসে। এদের অনেকেই মুসলমান-কিন্ত কাজের জন্যে হিন্দু সেজে এসে কাজ করে। দীর্ঘদিন কাজ করার পরে হিন্দুয়ানী রপ্ত ও করে ফেলে।
আমি কিছুক্ষণ আগেই একটা মুদির দোকান থেকে ফিরলাম। দুই পাকিস্তানি মহিলা এর মালিক এবং ভাল চালাচ্ছে। এরা যখন শুরু করেছিল, দোকানের দুদিকে মক্কা মদিনার ছবি, কোরানের আয়াত ইত্যাদি ছিল। কিন্ত কাস্টমাররা ত সব শিখ আর হিন্দু। টাকাও এদের পকেটেই বেশী। আর তার ওপর পাশেই একটা ভারতী মুদির দোকান। দুবছরে এই দুই মহিলা দোকানের ডেকরেশন সব বদলে দিয়েছে। আগে ঢুকলে বোঝা যেত এটা মুসলমানীদের দোকান-এখন সেসব চিহ্ন নেই। মালকিন কারা না জানলে, ঢুকলে মনে হবে এটা আরেকটা ভারতীয়র দোকান। এগুলো কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা না- আমি এমন অনেক কেস দেখেছি।
ভারতে আমার বাড়ীর সামনে নদী পেরোলেই মুসলমান গ্রাম। সেখানে আগে ইসলামের গন্ধ ছিল না। সবাই হিন্দু শহরে এসে জীবিকা নির্বাহ করত। ১৯৯০ সাল থেকে আরবের টাকায় সেখানে মসজিদ, মাদ্রাসা হয়ে, তারা আর ভারতে থাকে না, নিজেদের বেশী আরবীয় বলেই মনে করে। যেদিন আরবের টাকাতে আর এসব চলবে না-সেদিন আবার আগের জায়গাতেই ফিরে যাবে।
সবর্ত্র আমি এটাই দেখছি, ধর্ম পেট চালানোর ক্ষমতা না দিলে, সেই ধর্ম এমনিতেই লোপ পায়। গুটিকয় শিক্ষিতলোকের ধর্মবিলাস দিয়ে ধর্ম নির্নীত হয় না। বাঙালী মুসলমানরা কি ধরনের মুসলমান? ১৮৮০ সালের আগে বাংলা ভাষাতে লেখা কোন কোরানই ছিল না। গিরীশ ভাই নামে এক হিন্দু প্রথম ফার্সী থেকে কোরানের বঙ্গানুবাদ করেন। এর কারন কি? আসলে অসংখ্য বাঙালী মুসলমানদের কাছে ইসলাম ছিল এক সহজিয়া ধর্ম- হিন্দু জাতিভেদ থেকে বাঁচার উপায়। কিন্ত আরবের সংস্কৃতিকে অত জড়িয়ে ধরার প্রয়োজন তাদের হয় নি। কারন সেই সংস্কৃতি থেকে তাদের বাঁচার উপাদান কিছুই ছিল না।
তাই আমরা দেখি ১৬০০ খ্রীষ্ঠাব্দ থেকে মুসলমান বাঙালী কবিরা হিন্দু উপাখ্যান নিয়েই সাহিত্য রচনা করেছে-কোরানের বঙ্গানুবাদ করে তারা সময় নষ্ট করে নি। কোরান হদিস তাদের র্যাডারেই ছিল না। হয়ত বিংশ শতাব্দির আগে অধিকাংশ বাঙালী মুসলমান জানতই না কোরান বলে এক গ্রন্থের কথা। কারন তারা ছিল নিরক্ষর এবং বাংলা ভাষাতে কোরান তখনো কেও লেখে নি। তাদের কাছে ইসলাম ছিল এক সাম্যের ধর্ম-যেখানে জাতের কারনে তাদের সমাজে ছোট হয়ে থাকতে হত না। অর্থাৎ ইসলাম ছিল তাদের বাঁচার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এবং সেই বাঙালী ইসলামের সাথে কোরানের কোন সম্পর্ক ছিল না। থাকলে ১৬০০ সালের আগেই যখন আরাকানে বাঙালী মুসলমানরা কাব্য রচনা করছেন-তখনই বাংলাতে কোরান লেখা হত।
আমার বক্তব্য এটাই বিজ্ঞানে ধর্ম বলে কোন কিছু নেই। সমাজ বিজ্ঞানে যা আছে তা হচ্ছে “বেঁচে থাকার জন্যে সাংস্কৃতিক উপাদান” যা বিবর্তনের পথে নির্বাচিত ।
ইসলাম বা যেকোন ধর্মকে ধর্ম বলে মানা এবং দেখা হচ্ছে সব থেকে বড় অবৈজ্ঞানিক যুক্তি। সুতরাং একজন ধর্ম বিরোধি যখন ইসলামকে একটি ধর্ম হিসাবে দেখে এবং ধর্ম হিসাবে তার বিরোধিতা করে-তার যুক্তিও একজন ধার্মিকের সমান অবৈজ্ঞানিক।
(৩)
প্রতিটা মানুষের পরিধি সীমিত। মুক্তমনার অধিকাংশ লেখক বয়সে নবীন। তারা ইসলামিক সমাজের অবিচার, অনাচার এবং অত্যাচার দেখে বড় হয়েছে। এতে তাদের যুক্তিবাদি মন বিদ্রোহী হয়েছে এবং তারা মুক্তমনাতে ইসলাম বিরোধি লেখালেখি করছে। এমন ঘটনা হিন্দু ধর্মে ঘটেছিল ১৮২০-৩০ সালে ডিরোজিওর শিষ্যদের মধ্যে। কিন্ত তাদের যুক্তিবাদি চেতনাতে হিন্দু ধর্ম উঠে যায় নি। বড়জোর বিবর্তিত হয়েছে। এর কারন হিন্দু ধর্মের কিছু কিছু “এলিমেন্ট” এই দেশের মানুষের বেঁচে থাকার জন্যে দরকার ছিল। এই প্রথম এলিমেন্টটার নাম হিন্দু জাতিয়তাবাদ যা বৃটিশ বিরোধি আধুনিক আন্দোলনের প্রথম ধাপ। ইতিহাস খুব ভাল ভাবে পড়লে বোঝা যাবে বিবেকানন্দ, দয়ানন্দ সরস্বতীদের উত্থানের পেছনে একটা বড় কারন বৃটিশ বিরোধি আন্দোলন, বৃটেনের হাত থেকে স্বাধীন হওয়ার আকাঙ্খা।
তাহলে যুক্তিবাদি আন্দোলন শ্রেষ্ঠতর হওয়া সত্ত্বেও হিন্দু ধর্মটা ডিরোজিওর শিষ্যদের হাত থেকে টিকে গেল কি করে?
এখানেও প্রথমে উঠে আসবে বেঁচে থাকার টেকনিক। মানুষ সমাজবদ্ধ ভাবে বেঁচে থাকে। ধর্ম সেই সামাজিক আইনগুলো – পিতা মাতার প্রতি কর্তব্য, সন্তানের প্রতি দ্বায়িত্ব, সমাজের প্রতি দ্বায়িত্ব-এই যুথবদ্ধতা শেখায়। যা গুরুত্বপূর্ন সাপোর্ট সিস্টেম তৈরী করে। বেঁচে থাকার জন্যে এগুলি দরকার। ধর্ম বিরোধি ঋণাত্মক আন্দোলনে এগুলি গুরুত্ব না দিলে, ধর্ম বিরোধিতা ফালতু। এই কারনে রিচার্ড ডকিন্স ফোরামে নাস্তিকদের মধ্যে পেরেন্টিং, স্যোশালাইজেশন ইত্যাদি বিষয়গুলির ওপর বেশী জোর দেওয়া হয়-এই সাপোর্ট সিস্টেম না তৈরী হলে ধর্মকে তোলা অসম্ভব।
এমন নয় যে এই সাপোর্ট সিস্টেম বা সামাজিক আইনগুলির জন্যে ধর্ম অপরিহার্য্য। মোটেও তা না। ধর্ম নিরেপেক্ষ আইনের ভিত্তিভূমি বৃটেনের ইউলিটেরিয়ান আন্দোলন। যা এই ধরনের যুথবদ্ধতার আইনগুলির ভিত্তিভূমি রচনা করেছিল। যদিও অনেকেই মনে করেন, তা খ্রীষ্ঠান ধর্মের সংস্কার আন্দোলন থেকে জন্ম নেওয়া। তেমনই ইসলামের সংস্কার আন্দোলন থেকে ইউলেটেরিয়ান ধরনের ধর্ম নিরেপেক্ষ আইনের জন্ম হতে পারে উন্নততর সমাজের জন্যে। সবটাই সেই উন্নততর উৎপাদনের প্রয়োজনে বিবর্তিত হয়।
(৪)
তাহলে উন্নততর উৎপাদন ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্যে ইসলাম বদলাচ্ছে না কেন? খ্রীষ্ঠানরা বদলেছে, হিন্দুরা ধর্ম থেকে আস্তে আস্তে সরে আসছে-মুসলমানরা বদলাচ্ছে না কেন?
আসলে মধ্যপ্র্যাচ্যের তেল ইসলামি বিশ্বের আধুনিক অগ্রগতির দারুণ ক্ষতি করেছে। যদ্দিন মধ্য প্রাচ্যে তেলের আবিস্কার হয় নি তদ্দিন মিশর, ইরান, ইরাকে সর্বত্র আধুনিক বাম ভাবধারার রাজনৈতিক আন্দোলন শুরু হয়েছিল ১৯৪০ সাল থেকেই যা উপনিবেশ বিরোধি আন্দোলন থেকে উদ্ভুত। কিন্ত মধ্য প্রাচ্যে তেলের আবিস্কারের সাথে সাথে মুসলিম বিশ্বের তিনটি ক্ষতি হয় যা মুসলিমদেরকে আজও মধ্যযুগে আবদ্ধ করে রেখেছে-
এক- বৃটেন এবং আমেরিকা এই সব প্রগতিশীল আন্দোলনগুলিকে ছুড়ি মারে-কারন এগুলি ছিল জাতিয়তাবাদি আন্দোলন যা তৈলখনিগুলির জাতিয়তকরন চেয়েছিল। এতে বৃটিশ এবং আমেরিকার তেলের কোম্পানীগুলি নিজেদের ব্যবসা হারাবার আশঙ্কায় এই প্রগতিশীল আন্দোলন ধ্বংস করে,সেখানে বশংবদ ডিক্টেটরিয়াল শাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলে।
দুই- এইসব প্রগতিশীল আন্দোলনের উৎস ছিল দুটি-পেটের ক্ষিদে এবং উপনিবেশ থেকে মুক্তির আকাঙ্খা। ইসলাম দিয়ে পেটের ক্ষিদে মিটবে না-এটা ১৯৩০-১৯৬০ অব্দি এই সব আন্দোলনের নেতারা বুঝেছিলেন। তারা বুঝেছিলেন, চাই আধুনিক রাষ্ট্র। হোসেন মুবারক থেকে বার্থ পার্টি-সব এই চিন্তাধারার ফসল। কিন্ত তেলের ডলার আসতেই আসল সহজ জীবন-খাবার বিলাস ব্যসন সব সস্তায় এবং সুলভে পেয়ে গেলে-লোকে জীবনের উদ্দেশ্য নিয়ে বেশী ভাবার সময় পায়। ফলে ধর্ম আবার চেপে বসল এদের ঘারে।
তিন- এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে জন সংখ্যাও বাড়তে থাকে গুনিতক প্রগতিতে। ফলত সেই সমৃদ্ধি তারা ধরে রাখতে পারে নি। ইরান এবং মিশরে -বিশেষত উত্তর আফ্রিকাতে খাবারের তীব্র সংকট শুরু হয়েছে। সেই সংকট থেকে, আজকের জাসমিন বিপ্লব ছিল আসন্ন।
মোদ্দা কথা লোকজনকে খাওয়াতে না পারলে কোন ধর্ম, কোন রাজনৈতিক সিস্টেম টেকে না। তেলের টাকায় ইসলামিক বিশ্ব তাদের জনগণকে খাওয়াচ্ছিল-এখন আস্তে আস্তে তা আর সম্ভব হচ্ছে না। যা ফলশ্রুতি স্বরূপ সেই সিস্টেমের বিরুদ্ধে বিপ্লব হচ্ছে। এবং নিজেদের বাঁচাতেই তাদের শ্রেষ্ঠতর সিস্টেম বেছে নিতে হবে।
পেটের আগুনই তাদের ঠিক পথের সন্ধান দেবে।
(৫)
আমার শুধু একটাই অনুরোধ -ইসলাম নামে এই কচলানো লেবুর চর্চা মুক্তমনাতে কমালে ভাল হয়। পরিবেশ, নগর ব্যাবস্থা, দুর্নীতি, অর্থনৈতিক দুরবস্থা, বেকারত্ব, শ্রমিক শোষন-ইত্যাদি বিষয়গুলি ইসলামের থেকে অনেক বেশী জ্বলন্ত। এই বিষয় গুলি নিয়ে বেশী চর্চা হৌক।
নইলে মুক্তমনা ব্লগটি কচলানো লেবুতে পরিণত হবে।
সেই চিন্তাধারাই টেকে, যে চিন্তাধারা উন্নততর উৎপাদনের জন্ম দিতে সক্ষম। এটিই বিবর্তন বিধাতার আইন।
:-s “ইসলাম বা যেকোন ধর্মকে ধর্ম বলে মানা এবং দেখা হচ্ছে সব থেকে বড় অবৈজ্ঞানিক যুক্তি। সুতরাং একজন ধর্ম বিরোধি যখন ইসলামকে একটি ধর্ম হিসাবে দেখে এবং ধর্ম হিসাবে তার বিরোধিতা করে-তার যুক্তিও একজন ধার্মিকের সমান অবৈজ্ঞানিক। ”
দিলেন তো লেবু কচলানোর আনন্দটাই মাটি করে। :-s (Y) (Y)
যে যত কথাই বলুক পরিবর্তন এক দিনে আসে না। অনেক সময় এবং প্রয়োজনীয়তাই পরিবর্তন ঘটায়। আমরা ব্লগ লিখে হাত ব্যথাও করতে পারি অথবা চুপচাপ লেখায় চোঁখ ও বুলাতে পারি, কাজের কাজ খুব যে বেশি হবে তা কিন্তু না, কিন্তু যে তথ্য ও উপাত্ত্ব আমরা এই ব্লগ থেকে আহরন করব তা আমাদের চলার পথে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়ক হবে যা কিনা পরিবর্তনের জন্য খুবই প্রয়োজন, লেবু না চিপলে রস বেরবে না খোলোসেই থেকে যাবে, তাই চাপ দেওয়াও দরকার।
এখানটায় আমিও একমত নই। ধর্ম জিনিসটি মূলত মধ্যবিত্ত আর উচ্চ মধ্যবিত্তদের মাঝে বেশি বিদ্যমান।
বিপ্লব পাল যেমন বলেছেন, পেটের খাবার যোগাড় করা ছাড়া অত্যন্ত দরিদ্রদের ধর্ম নিয়ে ভাবার সময় থাকেনা। আমার নিজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি গ্রামে যারা ক্ষেতে কাজ করত, নৌকো বাইত তারা এবং তাদের পরিবারের সবাই ধর্মের প্রতি অনেক উদাসীন। সারাদিন প্রচন্ড কাজ সেরে এসে ধর্ম মানা, নামাজ পড়া শরীরে আর মনে সয়না। এসব দরিদ্র জনবাসীর মুখ হতেই কিন্তু “আল্লাহ রসুল সব নিজের কাছে, ধর্ম মানা আপনা ব্যাপার” এ ধরনের কথা বের হয়। ইনারা অনেক বেশি উদার আর আধুনিক ধর্মের ক্ষেত্রে। সেই একই গ্রামে যার একটা মুদির দোকান আছে সে একটু বেশি ধর্মভীরু পাছে সে তার দোকান হারিয়ে ক্ষেতে খেটে খাওয়া মজুরে পরিণত না হয়।
শহরের দিকে তাকালেও একই ব্যাপার। একজন রিক্সাচালক অথবা যিনি ইট ভাঙ্গেন তাদের খুব কমই রাস্তার পাশে নামাজে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। অথচ একজন মধ্যবিত্ত অফিসের কেরানী অথবা সেক্রেটারি লাঞ্চ ব্রেকে আগে ছুঁটে মসজিদের দিকে, অথবা অফিসেই নামাজে বসে যায়।
আমাদের দেশেও যেসব কম বয়শী তরুন যারা রগ কাটায় ব্যস্ত, গলা ফাটিয়ে ধর্ম নিয়ে চেঁচানোয় ব্যস্ত, যারা রাস্তায় আর মানুষের গায়ে বোমা ছুঁড়ে মারছে, দেয়ালে দেয়ালে তসলিমা আর আহমেদ শরীফের ফাঁসি চাই পোস্টার লাগাচ্ছে, যে কোন নাস্তিকদের সাথে ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে লড়াই করছে তাদের অধিকাংশই মধ্যবিত্ত পরিবার হতে উঠে আসা।
আফগানিস্তানের মতন দেশে অথবা আমাদের দেশে যারা মাদ্রাসা হতে এসব ট্রেনিং নিচ্ছে তাদের ব্যাকগ্রাউন্ডও কিন্তু হতদরিদ্রের নয়। হতদরিদ্রের ছেলেমেয়েরা মাদ্রাসায় যায় না। তারা মাটি কাটায় ব্যস্ত, রিক্সা চালানোয় ব্যস্ত, তারা ঠেলা গাড়ি ঠেলতে ব্যস্ত, তারা ভিক্ষায় ব্যস্ত। কুচক্রিরা নিম্ন মধ্যবিত্তদের লক্ষ্য করে ধর্মের লোভ দেখিয়ে জান্নাতে যাবার পাসপোর্ট পাইয়ে দেবার কথা বলে এসব কাজ হাসিল করে নিচ্ছে। অধিকাংশ এসব ছেলেদের কিন্তু উচ্চাশা নেই, বড় বাড়ি, গাড়ি চায়না, শ্রেণীহিন সমাজ চায়না, চায়না সবার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে, চায় শুধু বেহেশ্তে পৌঁছাতে। তাই খাবারের লোভে যে তারা বোমা আর বন্দুক হাতে নিচ্ছে তা নয়।
চুড়ান্ত উচ্চবিত্ত দের আল্লাহ অথবা ধর্ম লাগেনা। তারা এ পৃথিবীর সবার ধরা ছোঁয়ার বাহিরে।
মানব সমাজের বিবর্তনে বাজার তত্ত্ব ছাড়াও আরও অনেক উপাদান কাজ করে। আপনি যে পয়েন্ট উল্লেখ করেছেন তা সামাজিক বিবর্তনের একটা ভগ্নাংশ মাত্র। আমি নিজে ব্যাক্তিগত জীবনে সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাই। এক সময় খুব ধার্মিক ছিলাম। তখন মনে একটা প্রশান্তি বিরাজ করত। কোন ভয় বা বিপদে পড়লে তথাকথিত সৃষ্টিকর্তার কাছে আর্জি জানিয়ে মনে কিছুটা বল পাওয়া যেত। এখন খানিকটা অসহায় মনে হয়। বিষয়টা হলো- বিশ্বজগত সৃষ্টি হয়েছে একটা চান্সের মাধ্যমে আর মানুষের সৃষ্টিও অনেকটা চান্সের ব্যপার। ৬ কোটি বছর আগে সারা দুনিয়া থেকে কোন এক অজানা কারনে ( যদিও উল্কা তত্ত্ব একটা আছে) যদি সব ডাইনোসর বিনাশ না হয়ে যেত তাহলে দুনিয়াতে এখন আমরা থাকতাম না এটা প্রায় নিশ্চিত। তার মানে হলো- চান্সের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়ে আমরা দুনিয়াতে ঘুরে বেড়াচ্ছি। এ থেকে একটা হতাশাবোধ সৃষ্টি হতে পারে, তা হলো- জীবনের কি কোন উদ্দেশ্য নেই? নিতান্তই উদ্দেশ্যহীন সৃষ্টির এত সম্ভার ? ঠিক এরকম ভাবালুতার কারনেও বহু মানুষ ধর্মীয় রীতি নীতিতে বিশ্বাসী হয়ে পড়ে।এখানে বাজার তত্ত্ব একেবারেই কাজ করে না। জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে আমেরিকার অর্ধেকেরও বেশী মানুষ ধর্ম ও সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী।কেন সেটা ? সেখানকার বাজার অর্থনীতি হয়ত তাদেরকে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করাকে নিয়ন্ত্রিত করেছে কিন্তু সময় সুযোগ পেলে তার বহি:প্রকাশ ঘটতে বিন্দু মাত্র দেরী হবে না। যার প্রমান- ২০০১ সালে টুইন টাওয়ার ধ্বংস হওয়ার পর বুশের হুংকার- নতুন করে জিহাদ শুরু হলো।পরে এ বাক্যকে সংশোধন করা হয়। বর্তমানে ইসলামের উগ্রতা বৃদ্ধির কারনে বহু নাস্তিক বা উদারভাবাপন্ন যারা নন মুসলিম তারাও তাদের স্বধর্মীদের প্রতি সহানুভুতিশীল হয়ে সাম্প্রদায়ীক হয়ে পড়ছে আর ইসলাম বা মুসলিমদের প্রতি মনে মনে হুংকার ছাড়ছে।আমার আশে পাশেই আমি অনেক দেখি।
৪র্থ শ্রেনী পাশ যে মুসলমানটির কথা বলা হয়েছে, সোজা কথায় তা বিশ্বাসযোগ্য না। এটা সম্পূর্ন বানান গল্প। আমি চ্যলেঞ্জ দিতে পারি। দারিদ্র যেখানে বেশী ধর্মীয় কুসংস্কার শিকড় গাড়ে সেখানেই বেশী- এটা সর্বজন বিদিত একটা পরিক্ষীত বাস্তব তত্ত্ব।তার জলজ্যান্ত উদাহরন তো সবাই জানে। যেসব মুসলমানরা দরিদ্র তাদের জন্য এটা আরও সত্য। কারন কোরান হাদিসে বলা আছে- যারা দরিদ্র পরকালে তাদের বিচার সহজ করা হবে। তার মানে তারা প্রায় বিনা আয়াসে বেহেস্তে প্রবেশ করবে, আর সেখানে অনন্তকাল ধরে সুখভোগ করবে। অনেকের কাছেই বিষয়টি পাগলামো মনে হতে পারে, কিন্তু একজন নিরক্ষর ও দরিদ্র মুসলমানের জন্য এটা একটা বিশাল স্বান্তনার ব্যপার। যে কারনে দরিদ্র ও নিরক্ষর একজনও মুসলমান পাওয়া যাবে না যে প্রচন্ড ধর্মভীরু না। শুধু মুসলমান নয়, এটা হিন্দু খৃষ্টান বৌদ্ধ সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। শুধু নিরক্ষর ও দরিদ্রদের কথা বলি কেন? বহু শিক্ষিত ব্যাক্তিরাও শুধুমাত্র বেহেস্তে যাওয়ার আশায় প্রচন্ড ধর্মভীরু। এদেরকে সচেতন করে তুলতে গেলে অর্থনৈতিক উন্নতি যেমন দরকার একই সাথে খোদ ধর্মীয় কিতাব ও রীতিনীতি যে নিতান্তই অসার ও অযৌক্তিক এসবগুলোও যৌক্তিক ভাবে বুঝানো দরকার। ইউরোপে যে মানুষ উদার তার কারন কি খালি বাজার তন্ত্র ও উৎপাদন ব্যবস্থা ? মোটেও না। সেই মধ্যযুগে যখন পাদ্রীরা স্বর্গের টিকেট বিক্রি করত তখন একদল দার্শনিক ও চিন্তাবিদরা অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে তাদের অসারতা প্রকাশ করতে থাকে। যে কারনেই ইউরোপে ধর্মীয় সংস্কারবাদী আন্দোলন বেগবান হয়। শুধুমাত্র বাজার ও উৎপাদন ব্যবস্থার পরিবর্তনে আজকের এ পরিবর্তন আসত না।একজন গ্যলিলিওর ৪০ বছর কারাবাস বা একজন ব্রুনোকে পুড়িয়ে হত্যা বাজার ও উৎপাদন ব্যবস্থার চেয়ে অনেক দ্রুত ফলদায়ক হয়। সোজা কথা হলো – ধর্মের অসারতা তুলে ধরতে হবে সেই সাথে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাতে হবে। ধর্মের অসারতা তুলে ধরতে গেলেই লেবুকে একটু চটকাতেই হবে। মাছ ধরতে চাইব আর গায়ে পানি লাগাব না – এমন আব্দার চলে না।মুশকিল হলো- যারা ধর্মের প্রচার করে তারা আসলে বুঝতে পারে না তারা সমাজের কি পরিমান ক্ষতি করছে,তারা যে সব সময় নিজের ব্যবসার ধান্ধায় তা করে তা নয়, অধিকাংশ সময়ই সে হয়ত নিজের প্রচন্ড বিশ্বাস থেকেই কাজটা করে। এ প্রসঙ্গে তাবলিগী জামাতের কথা বলা যেতে পারে।
@ভবঘুরে,
না। এটা কোন গল্প না। বরকত আলি আমাদের ওখানের একজন সুপরিচিত রাজমিস্ত্রই। সে তার ধর্ম বিশ্বাসের কথা প্রকাশ্যে ভয়ে বলে না, তবে জায়গা পেলেই বলে। আরো অনেক মুসলমান ছোট বেলাতে দেখেছি-খুব গরীব-তাদের কোন ধর্ম আছে বলে মনে হত না। কারন পেটের জোগার ছারা আর কোন চিন্তা তাদের থাকতে পারে বলে মনে হয় নি। আমার বড়াবরের জন্যে মনে হয়েছে ধর্ম পালনটা আর্থিক ভাবে স্বচ্ছলদের বিলাসিতা। সদালাপ থেকে তাই মনে হয়।
সাধারন খেটে খাওয়া মানুষদের সাথে যারা মেশে নি-তারা এই সমাজের এই নী্চু অংশকে চিনবেই বা কি করে।
ইসলাম যে শুধু ধর্ম নয় বরং সামাজিক-সাংস্কৃতিক উপাদানের বাইরেও আর্থ-রাজনৈতিক এবং দার্শনিক একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এটা পাঁড় নাস্তিক বা আস্তিক উভয়েই স্বীকার করবেন। অর্থনৈতিক উৎপাদন ব্যবস্থা যে এর উপরে প্রভাব ফেলে তাতো আমরা দেখছিই (সুদমুক্ত!! ইসলামী ব্যাংক, ভাসানীর ইসলামী সমাজতন্ত্র, সৌদীয়া ইসলামী পুঁজিবাদ ইত্যাদি ইত্যাদি)। প্রশ্ন হলো এর বিকল্প নিয়ে মুক্তমনা সম্প্রদায় কি ভাবছেন? দ্ব্বান্দ্বিক বস্তুবাদের স্বাভাবিক পরিণতি সমাজতন্ত্রকে কাটছাট করে সিজারীয়ান প্রি ম্যাচিউর ডেলিভারী দিলে যে কি অবস্থা হয় তাতো আমরা সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের পতন থেকেই দেখছি, আবার সর্বগ্রাসী পুঁজিবাদের পুটুমারা আম্রিকা তো বটেই এমনকি আমরাও খাচ্ছি(শেয়ার বাজার যার জ্বলন্ত উদাহরণ!)। অর্থনৈতিক উৎপাদন ব্যবস্থায় তাহলে মুক্তমনা সম্প্রদায় কি উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবনা আনছেন এখানে(ইসলাম ব্যাশিং একটু পাশে রেখে!)? নাকি দেশের ৯৯.৯৯৯৯% আস্তিকরা অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ইয়ে মারা খেয়ে গেলেও তাদের কিছু যায় আসেনা?
মনে রাখবেন শৌখিন ড্রইংরুম জাত কজিটো এর্গো সাম বা অকামস রেজর দিয়ে সাধারণ মানুষের পেট ভরবে না। আলবেনিয়ার মতন নাস্তিক রাষ্ট্রতন্ত্র দিয়েও কাজ হবেনা। উতপাদন ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে চাই বিজ্ঞানের প্রসার এবং প্রযুক্তির প্রসার। তখন এমনকি ইসলামের বজ্র আঁটুনিও ফসকা গেড়ো হয়ে যাবে(যেমন মালয়েশিয়া)।
মুক্তমনায় কি তবে কোনো অর্থনীতিবিদ, সমাজবিজ্ঞানী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী নেই? অর্থনীতি হচ্ছে রাষ্ট্রের মস্তিষ্ক। যে দেশের সবচেয়ে অচ্ছুৎ, অনাগ্রহীতাপূর্ণ সাব্জেক্ট হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি পড়া সে দেশ থেকে আর কি আশা করা যায়? অথচ একটু খোঁজ নিলেই জানবেন যে বাংলাদেশে ৬০ এর দশকে সবচেয়ে প্রেস্টিজিয়াস সাব্জেক্ট ছিলো ফিজিক্স আর অর্থনীতি। আর এখন আমাদের উচ্চশিক্ষা হচ্ছে কেরানী(থুক্কু কর্পোরেট এক্সিকিউটিভ), উচ্চকামলা(থুক্কু ইঞ্জিনিয়ার) আর হাঁটুবাহিনী। এমনকি ডাক্তারীতেও দীর্ঘসূত্রিতার কারনে সেখানে পড়তে মেধাবিরা এখন অনুৎসাহী। পড়ুয়ারাও ব্লগে বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে অনুৎসাহিত করছে সবাইকে। টেকনোলজি, মাছিমারা কেরাণীগিরি আর প্রতিরক্ষার মতন গৌণ বিষয়ে জীবিকার ঠিকা নিয়ে রাখা যুবসমাজ(যার মাঝে নব্য মুক্তমনারাও পড়েন অধিকাঙ্গশেই)দের কাছ থেকে আর কতটুকু গহীনত আশা করা যায়? এরা যতই মুক্তমনা হোন না কেন। অর্থনৈতিক নীতিমালার যে পাঠ তাদের বাধ্য হয়েই ফলো করতে হবে সেটা ঐ সব অর্ধশিক্ষিত মন্ত্রী, আমলারাই বানাবেন। তাহলে এইসব উঁচুমার্গীয় ড্রইংরুমীয় আলাপের হেতু কি? মানসিক প্রশান্তি কেবল?
আমি একটা জিনিস বুঝিনা যে দেশের রাজনিতি আর অর্থনীতিকে দূরে সরিয়ে রেখে(যদি তা নাহয় তবে প্লিজ রেফারেন্স দিন এজাতীয় লেখার) স্রেফ ইসলাম ব্যাশিং করে কিভাবে মুক্তমনা হওয়া যায়?
আর যারা তলোয়ার তত্ত্বের স্বপ্নে বাংলাদেশে ইসলাম কায়েম নিয়ে বিভোর তাদের ভয়াবহ মুক্ত চক্ষুকে আরো মুক্ত করতে নিচের বইটির লিঙ্ক দিলাম। কলোনিয়াল স্টেরিওটাইপিং থেকে বের হতে এটা আপনাদের সাহায্য করবে।
Eaton, Richard M. The Rise of Islam and the Bengal Frontier, 1204-1760. Berkeley: University of California Press, c1993-
ধন্যবাদ।
লেখার মূল বক্তব্যের সাথে সহমত। তবে সমস্যা হচ্ছে যে এই সমস্যা হতে উত্তরণের সম্ভাবনা আমি সহসা দেখি না। ঠিক একই বিষয়েই একটি লেখার ইচ্ছে ছিল। ভালো হয়েছে যে আপনি লিখেছেন।
আপনার লেখার সাথে আমি কিছু যুক্ত করবো। মুক্তমনা এখন বিজ্ঞান ভিক্তিক ব্লগ থেকে দূরে সরে গিয়ে শুধুমাত্র নাস্তিক ব্লগ হিসেবে আত্মপ্রকাশ পাচ্ছে। ব্লগের চরিত্র নির্ধারণ করে ব্লগে যারা লেখালেখি করে সেই লেখকেরা এবং সেই ব্লগের পাঠক শ্রেণী। এখন, এই ব্লগের লেখকেরা প্রথম থেকেই সবাই নাস্তিক ধারণারই ছিলেন কিন্তু সেই সাথে হয় বিজ্ঞানের লেখক, রাজনীতি বিষয়ক লেখক কিংবা সাহিত্যিক ছিলেন। কিন্তু এখন শুধু নাস্তিক হলেই লেখক হওয়া সম্ভব, আর উনারা যে শুধু ধর্ম নিয়েই লিখবেন তাতে বিষ্ময়ের কিছু নেই। তাতেও সমস্যা ছিলো না। সমস্যা হচ্ছে যে ইসলাম নিয়ে যে লেখাগুলো আসছে তার অনেকগুলোই চর্বিত চর্বণ। এই মুহুর্তে ভবঘুরের যে লেখাটি রয়েছে সেই টপিকে আগেও লেখা এসেছে। এক আকাশ মালিকের “যে সত্য বলা হয়নি” বই পড়ার পর ইসলাম নিয়ে যত লেখাই পড়ি বেশির ভাগই মনে হয় একই কথা বলা হচ্ছে। বেশ কিছু দিন আগে হৃদয় আকাশের একটি লেখা পড়ে মনে হলো যে আকাশ মালিক ভাইয়ের লেখাই পড়ছি। কয়েক স্থানে তো হুবুহু একই মনে হয়েছে। আমি নিশ্চিত এই বিষয়টি আকাশ ভাইয়ের নজর এড়ায়নি।
তাই আমি মুক্তমনার বর্তমান এই অবস্থার জন্যে অনেকটা দায়ী করবো মুক্তমনা কর্তৃপক্ষকে। যে কোন জার্নালের মান ধরে রাখার দায়িত্ব সম্পাদকের। তেমনি মুক্তমনার চরিত্র রচণার দায়িত্বও মুক্তমনার মডারেটরদের। উনাদেরকেই ঠিক করতে হবে উনারা মুক্তমনাকে ভবিষ্যিতে কি ধরণের ব্লগ হিসেবে দেখতে চায়। সে হিসেবেই মুক্তমনার সদস্য পদ দেওয়া উচিত। যদি উনার চান এটিকে বিজ্ঞান ভিক্তিক ব্লগ হিসেবে দেখতে সেক্ষেত্রে বেশি করে বিজ্ঞান বিষয়ের উপর লেখকদেরকে সদস্য পদ দেওয়া উচিত। শুধু নাস্তিকতাই যেন ব্লগের সদস্য পদ পাওয়ার মাপকাঠি না হয়।
মডারেটরের কাজ অনেক কঠিন স্বীকার করি। তাই শুধু দোষ দেওয়ার উদ্দেশ্য বলছিনা, মুক্তমনাকে নিজের ঘর বলে মনে করি বলেই উপরের কথাগুলো বলছি। আশা করি মডুরা রাগ করবেন না। আর যারা শুধু ধর্মকেই সকল সমস্যার মূলে বলে মনে করেন তাদেরকে বলছি, শুধু একবার চিন্তা করুন, এই মুহুর্তে যদি পৃথিবীর সকল মানুষ একই সাথে নাস্তিক হয়ে যায় পরিপূর্ণ ভাবে তাতে কি বিশ্বে মানুষে মানুষে যে মারামারি তা বন্ধ হয়ে যাবে? বাংলাদেশের সকল মানুষ যদি নাস্তিক হয়ে যায় তাতে কি বাংলাদেশের অবস্থার পরিবর্তন হয়ে যাবে? তা তো নয়। যতদিন উৎপাদনের তুলনায় চাহিদা বেশি থাকবে অর্থনীতির বেসিক সুত্র অনুসারে মানুষে মানুষে বাঁচার সংগ্রাম চলবে। এই সংগ্রামই নির্ধারণ করে মানুষের নৈতিকতা। তাই ধর্ম না থাকলেও সংগ্রাম থাকবেই যতদিন চাহিদা রয়ে যাবে। তাই সেই চাহিদা আর উৎপাদনের মধ্যকার পার্থক্য কিভাবে কমানো যায় সেটার চিন্তা করাটাই প্রকৃত মুক্তমনার কাজ হওয়া উচিত।
@স্বাধীন,
আমি নাস্তিক নহি
শুধু প্রশ্ন করিবার অধিকার চাহি
আস্তিক হইতে চাহি
যুক্তি যেন আস্তিককতার শত্রু নাহি হয়
আমি নহি আস্তিক, নহি আমি নাস্তিক
আমি মানুষ
ঈশর আমাকে ক্ষমা করিবেন
আমি সত্য জানিতে ঈশ্বরকে কে বানাইয়াছি ফানুস।
না হইতে যদি হাঁ এ পৌছাই
ঈশ্বর আমাকে ভালবাসিবেন নিশ্চয়।
@স্বাধীন,
আমি সঠিক পরিসংখ্যান জানি না, গুণে দেখিনি, তবে মুক্তমনাতে বিজ্ঞান এবং অন্য বিষয়ক লেখা ধর্মের তুলনায় খুব কম মনে হয় নি। আমি হয়ত প্রতিদিন মুক্তমনার হোম পেইজ চেক করিনা, তবে যতবার করেছি, দেখেছি প্রোগ্রামিং এর উপর লেখা, গ্রান্ড ডিজাইন এর অনুবাদ, টেকি সাফির লেখা ‘এলিগ্যান্ট ইউনিভার্সের অনুবাদ’, অভিজিৎ দার ‘ভালবাসা কারে কয়’, বিপ্লব দার লেখা ইত্যাদি। ধর্ম নিয়ে চোখে পড়ার মত লেখা দেখেছি ভবঘুরের ‘মোহাম্মাদের চরিত্র…’ , আকাশ মালিকের লেখাগুলো যেগুলো আমার কাছে খুবই প্রয়োজনীয় মনে হয়েছে। মুক্তমনার ই-বুক গুলোর দিকে যদি তাকাই, দেখব ইসলাম নিয়ে লেখা মনে হয় একটা কি দুটো বই, বাকি গুলো ত বিজ্ঞান নিয়েই। তবে আবারও বলছি, যেহেতু আমি সঠিক পরিসংখ্যান টা এখনও জানি না, তাই আমার ধারণা ভুল হতে পারে, তারপরেও মুক্তমনার আবেদন আমার কাছে কম মনে হয় নি এখনও।
বিপ্লব পাল,
দাদা একটা কবিতা মেরে দিলুম,দেখুন ত আপনার মনের কথার সাথে মিলে কি না?ঃ
ধর্ম কথা
সপ্তক
ধর্ম নিয়ে অনেক কথা
ধর্মের সাথে বসবাস করেও ধর্ম কে আমরা চিনি না।
খুজে ফিরি ধর্ম কে
কোথায় ধর্ম ? , কোথায় সে সত্য ধর্ম ?
যে দিতে পারে কঠিন এক সঙ্কল্প , যে সঙ্কল্প করতে চাই আমরা সবাই বিনা রক্তপাতে
কোথায় সে ধর্ম ? , ঠিকানা কে দেবে ?
অনেক খুজেছি ধর্মকে , নোয়াখালী হতে নর্থ আমেরিকা তে
মসজিদ , মন্দির , গির্জাতে
পাইনি খুজে কোথাও ধর্মকে
ধর্ম যদি থাকে বিবেকে তবে কেন তাকে খুজতে গেলাম এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে ? ।
কোথায় আছে ধর্ম ?…। মক্কা অথবা ভ্যাটিক্যান এ ? , জেরুজালেম অথবা কাশীতে
কোথাও ত পেলাম না ধর্মকে ।
ধর্ম আছে মনের মসজিদে
ধর্ম আছে মনের মন্দিরে
ধর্ম আছে মনের গির্জাতে ।
আর খুজব না ধর্মকে , যদি খুজতে হয় খুজব নিজেকে
নিজেকে আবিস্কার করে ধর্মকে বিসর্জন দেব ।
ধর্ম বিশ্বকে কিছুই দেয়নি তা ও বলিনা
যখন ছিল না বিজ্ঞান , তখন ছিল ধর্ম
যখন ছিল না দর্শন তখন ছিল ধর্ম
যখন ছিল না ইতিহাস তখন ছিল ধর্ম ।
এখন বিজ্ঞান , দর্শন ,ইতিহাস সবই আছে , তবে যাব কেন মসজিদ , মন্দির অথবা গির্জাতে!
ধ্যান এর জন্য ধর্ম জরুরী নয় জেনে গেছি আমি বিজ্ঞানের ই কল্যাণে
ধর্ম তোমাকে দূর হতে এন্টিক হিসেবে আমি দেখব
মনের মসজিদ , মন্দিরে নিজেকে ই ধারন করব ।
মানবতাকে আসল ধর্ম মানব ।
এভাবেই আমি সভ্য হতে সভ্যতর হব , বিকশিত হব ।
পরজনমের ভয়ে আর কুঁকড়ে যাব না
এ জনমেও অনাচার করব না
আমি কোথাও হতে আসিনি , আমি কোথাও যাবও না ।
আমার জন্য বেহেশত অপেক্ষা করে থাকলেও দোজখের অস্তিত্ব যে নেই তা আমি জেনে গেছি
এখন আমি শান্ত , স্নিগ্ধ , মানবতার তরে উৎসগ’কৃত
এভাবেই আমি নিজের মাঝেই নিজে বিলীন হবো ।
লেখার মূল নর্যাসের সাথে পুরোপুরি একমত। ধর্ম ছাড়াও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে যা নিয়ে অনেক বেশি লেখালেখি এবং আলোচনা হওয়া উচিত আর ইসলাম নিয়ে ভাসাভাসা আলোচনা না করে সমাজবিজ্ঞান ও নৃতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে একে দেখা জরুরি। কিন্তু আমি মনে করিনা ইসলাম নিয়ে আলোচনা বন্ধ করে না দিলে মুক্তমনা কচলানো লেবু হয়ে যাবে। আর আপনি ইসলামের উত্থান ও টিকে থাকা নিয়ে যে আলোচনা করেছেন তা অসম্পূর্ণ মনে হয়েছে। কাল পরীক্ষা নইলে লেখা থেকে কিছু জিনিস পয়েন্টআউট করে আলোচনার ইচ্ছে ছিল। যাহোক নিঃসন্দেহে বলতে পারি, থিম অনুযায়ী লেখাটা নিঃসন্দেহে দরকারী এবং প্রশংসনীয়। ভাল থাকবেন।
@লীনা রহমান,
ঠিক আছে-পরীক্ষায় ভাল ফলের জন্যে শুভেচ্ছা রইলো। পরীক্ষার পর এই নিয়ে আলোচনা হবে।
@লীনা রহমান,
” ইসলাম নিয়ে ভাসাভাসা আলোচনা না করে সমাজবিজ্ঞান ও নৃতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে একে দেখা জরুরি। ”
– ঠিক বলেছেন ।আর এ কাজটি একমাত্র বিপ্লব পালকেই করতে দেখি এবং বাকীরা গালিগালাজ দিয়েই কাম সারে।
মূল লেখা পড়ে প্রতিক্রিয়া হয়, মন্তব্য করি। তারপর বিভিন্ন মন্তব্য পাঠ করেও কিছু প্রতিক্রিয়া হয় বৈকি। তো সেইসব মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সামান্য মন্তব্যঃ
অর্থনৈতিক প্রাধান্য বিস্তার করতে গিয়ে যুদ্ধবাজরা শুধু অস্ত্র নিয়েই মাঠে ময়দানে, ভাবাটা ভুল। তারা সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও হামলা চালায়। এ হামলার আওতায় ভাষা, বিশ্বাস, আচার-আচরণ পর্যন্ত লক্ষবস্তু হয়ে ওঠে।
আর্য বীর সেনানীরা যেমনটা করেছিল, কি করেছিল, বিশদ বর্ণনার প্রয়োজন নেই। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ভারতের লোকায়ত দর্শন। চার্বাককে আমরা দেখলাম মহাভারতে এক রাক্ষস হিসাবে। আমরা হারিয়েছি লোকায়ত দর্শনের অমূল্য সৃষ্টি।
মুসলমানরা এলো, ধ্বংস করলো নালান্দা। ভাঙলো মন্দির। এক বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আরেক বিশ্বাসের আগ্রাসন। কেড়ে নিতে চাইলো ভাষা। তারপরও আমরা সেইসব খাঁটি মুসলমানদের দেখলে কুন্ঠিত হই।
ইংরেজরা এলো তারাও নিয়ে এলো পাদ্রী। এখানেও সেই আক্রমন। আক্রমনটা যে শুধু বিশ্বাসের উপর সীমাবদ্ধ ছিল, তা নয়। এখানেও ভাষা আক্রান্ত। আর এ আক্রমন এতটাই নোংরা ছিল যে কোন কোন জায়গায় লেখা থাকতো কুকুর এবং নেটিভদের প্রবেশ নিষেধ। তারপরও আমরা সাদা চামড়ার পুজো করি।
বলা হয়ে থাকে পৃথিবীতে ধর্মীয় কারণে যত মানুষ মরেছে, অন্য কারণে তত মানুষ মরেনি। তো ধর্মের পেছনে আর্যবীরদের তীর-ধনুক, মুসলমানদের তলোয়ার আর খ্রীস্টানের বন্দুক, কথা তো একটাই গনেসের আর্শীবাদ।
এ দু’টোকে কি খুব বেশি আলাদা করা যায়? সমস্যা হলো, কোন একটা নিয়ে পড়ে থাকলে।
আমি খুব খুব করে চেষ্টা করে গেছি, একটুখানি ছুঁয়ে যাওয়ার। এগুলো আপনারাও জানেন, শুধু একটুখানি স্মরণ করিয়ে দে’য়া। আমরা সবাই কম-বেশি ভুলে যাই।
সবাইকে ধন্যবাদ।
ডঃ বিপ্লব পালের লেখা পড়ে আমি বুঝিনা উনি কোন দিকে যাচ্ছেন। মাঝে মাঝে উনার লেখায় বেশ দরকারী তথ্য পাওয়া যায়—তা অবশ্য গুগুল ঘাঁটলেই সবাই জানতে পারে।
যাই হোক, বিপ্লব পালের এই লেখাকে অনেক সাধুবাদ জানাচ্ছেন। ভাল কথা। এই লেখায় নতুন কিছুই নাই। আসলে পাঠকেরা যদি ‘সদালাপ’ পড়েন তবে দেখবেন ওখানকার অনেক লেখকই ডঃ বিপ্লব পালের মত লেখাই লিখেন—অর্থাৎ ইসলাম নিয়ে এত আলোচনার কোন প্রয়োজন নাই—দেখতে হবে কেমন করে পেটের ভাত মিলে আর আমাদের সমাজের অন্যান্য অভাব দূর করা যায়।
বলাবাহুল্য এই সব লেখার একটাই উদ্দশ্য–ইসলামের তীব্র সমালোচনার মুখে ইনারা দিশাহারা হয়ে ইয়া নফসি, ইয়া নফসি করছেন; কোন সদুত্তর না দিতে পেরে পাঠকদের দৃষ্টি অন্য দিকে ফিরাচ্ছেন।
মনে হচ্ছে ডঃ বিপ্লব পালের লেখাটা সদালাপ অত্যন্ত সাদরে তাদের সাইটে প্রকাশ করবে।
এদিকে ডঃ বিপ্লব নিজেই কিন্তু অনেক সময় ইসলামের বর্বরতা নিয়ে লেখা দেন–অনেক এই সব লেখা মুক্তমনাতেই আছে।
তা’হলে আমরা কি বুঝলাম?
আর বিপ্লব পাল যদি এতই আহত হন ইসলামের সমালোচনা সহ্য না করতে পেরে—তবে উনি লিখুন না কিছু যা দিয়ে বাঙলাদেশের রুটি জি সহ সকল সামাজিক সমস্যার সমাধাণ আমরা পেয়ে যাব। তা না করে উনি মুক্তমনার সদস্যদের বলে দিচ্ছেন কি কি বিষয় নিয়ে লিখতে হবে। তা, আমরা যারা ইসলাম নিয়ে কচলা কচলি করি তারা কি কাউকে বাধা দিয়েছে না কি অন্য বিষয়ে লেখার? পাঠকেরা আমাদের লেখা পাশ কাটিয়ে যেতে পারেন।
আমার মনে হয় ডঃ বিপ্লব পালের কোন লক্ষ্য দৃষ্টি ((ফোকাস) নাই। উনি সর্ব্বোত্রই হাত চালাচ্ছেন, যার ফলে পাঠকেরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন।
ইসলামের সমালোচকেরা একেবারেই ফোকাসড–তাঁরা খুব ভাল করে জানেন কি লিখতে হবে—কোথায় আঘাত করতে হবে। ডঃ বিপ্লব পাল তা জানেন না। তাই আমতা আমতা করে পুরানো গতবাথা দিয়ে যাচ্ছেন।
এখন ইসলামের সমালোচকরা তরুণ, আমাদের চাইতে বয়সে অনেক কম–এ ত আমাদের জন্য অতীব আনন্দের খবর। আমারা যারা বয়স্ক হয়ে যাচ্ছি–তারা ত তাই-ই চাচ্ছি। আজ আমাদের সেই স্বপ্ন সফল হতে চলেছে–এর চাইতে আনন্দের খবর কি হতে পারে? আমরা যে এই নতুন তরুণ-তরুণীদের ইসলামের সমালোচনায় অনুপ্রাণীত করতে পারেছি এই-ই ত আমাদের সাফল্য।
ডঃ বিপ্লব পাল যতই বলুন–ইসলামের সমালোচনা–বাঙ্গালিদের মাঝে উত্তরোত্তর আরো বৃদ্ধি পাবে। উনি হয়ত জানেননা যে বাঙলাদেশের আপামর জনসাধারণ কেমন ভাবে ইসলামের নাগপাশে বাঁধা। বাঙলদেশের এই ইসলাম-মোহাবিষ্ট জনগণের মুক্তির প্রথম সোপান হচ্ছে ইসলামের এই নাগপাশ থেকে মুক্তি পাওয়া।
@আবুল কাশেম,
মুক্তমনা এবং ফেসবুকে আরো বেশী বেশী করে তরুণ ছেলে মেয়েরা ধর্ম বিরোধি অবস্থান নিচ্ছে। এতে আপনার মতন আমিও আমোদিত।
তবে ধর্ম যেমন পেট ভরায় না-তেমন নিধার্মিক কাজকর্মেও ক্ষুদা নিবারন হবে না।
একদিন না একদিন এদের সমাজে নিজেদের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠা করে নিতে হবে। এবং যেহেতু আমরা সবাই চাইব এরা সৎভাবেই সেটা করুক- সমাজ এবং রাজনীতিকে আরো গভীরে গিয়ে এরা জানলে সবার মঙ্গল। রাজনৈতিক শক্তি না বদলালে, ধর্মের উৎপাত কমবে না। আর রাজনীতি করতে গেলে সামাজিক শক্তিগুলিকে জানতে হবে আগে।
আপনি দাবী করতেই পারেন আপনাদের কোরানের গদাঘাতে কোরানের পক্ষের লোকেরা কাবু। তেমনটা হলেই ভাল। তবে আমি তেমনটা দেখি না। কারন কোরান সহ যাবতীয় ধর্মগ্রন্থ যেহেতু দুর্বল টেক্সট-আপনি একটি আয়াতের যে ব্যখ্যা দেবেন, তারা ঠিক তার উলটো ব্যখ্যা দিতে সক্ষম। সুতরাং আপনারা সবাই একটি “ডিকনস্ট্রাকশনের বৃত্তে” ঘুরে ফিরবেন।
এই ব্যাপারটা আমি বহুদিন আগে আমার ডিকন্সট্রাকশন প্রবন্ধে লিখেছিলাম।
এই জন্যে রাজনীতি এবং সমাজ আমার কাছে সব থেকে বেশী গুরুত্বপূর্ণ। ধর্ম তার একটি উপাদান মাত্র। ধর্মকে আপনি যতদিন না পর্যন্ত রাজনীতি এবং সামাজিক শক্তির বোরে হিসাবে না দেখতে পাচ্ছেন- ভাববাদের বৃত্তেই আপনাদের অবস্থান থাকবে।
আমি ধর্মের সমালোচনা বন্ধ করতে বলি নি। কিন্ত প্রকাশ্যে ঘৃণা ছড়ানোর আগেও বিরোধি ছিলাম-আজও আছি।
@বিপ্লব পাল,
এইযে দাদা করলেনতো ভুল! আপনার কাছে কি এমন কোনো পরিসংখ্যান আছে যার মাধ্যমে আপনি নিশ্চিত যে আবুল কাশেম স্যার, আকাশ মালিক ভাই, ভবঘুরে এদের লেখা পড়ে কারো বোধদয় হয়নি? তাহলে শুনুন, এই কাশেম স্যার, মালিক ভাইদের লেখা পড়ে আমি সহ আমার পরিচিত অন্তত পাঁচজন ধর্ম থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছি। উপরে যদি খেয়াল করেন দেখবেন নিটোল, আব্দুল হাকিম চাকলাদার সহ আর অনেকে এটার দ্বারা উপকার পেয়েছেন। আপনি বলছেন অর্থনীতি, সমাজ, ইতিহাস এসব নিয়ে লিখতে, আমি আপনার সাথে একমত। এসব নিয়ে বেশি বেশি লিখা কাম্য কিন্তু সেই সাথে ধর্মকে পেটালে সমস্যা কোথায়? যেখানে আমি নিজে সহ অনেকে ধর্ম পেটানো লেখা থেকে সরাসরি বেনিফিটেড। এসব থেকে যদি একজনও বেনিফিটেড হয় সেটাও কি এচিভমেন্ট নয় দাদা?
@সুমন,
না। উলটোটাই সত্য। অনেকের বোধদয় হয়েছে। এই ধরনের লেখা বন্ধ করতে ও আর্জি করছি না।
সমস্যাটা অন্যত্র। আমি লেখাগুলিকে বেশী মাত্রায় ক্রিটিক্যাল হতে বলেছি, তাহলে সংখ্যাটা ৫ এর স্থলে ৫০০০ হতে পারে।
@বিপ্লব পাল,
এই ব্লগে কোন লেখার দ্বারাই তো ক্ষুদা নিবারণ হবে না। তাহলে আপনার ব্লগে লেখার উদ্দেশ্য কি ?
(১) বাংলাদেশে ধর্মই রাজনীতিকে চালায়। রাজনীতি ধর্মকে নয় আর (২) রাজনৈতিক শক্তি না বদলালে? হাঁ , একি বললেন ? রাজনৈতিক শক্তি বদল হয়ে ইসলামী দল ও যে আসতে পারে সেটা জানেন না? তুরস্কে রাজনৈতিক বদল হয়ে ইসলামী ঘেষা দল এসেছে (যদিও অন্য মুসলীম দেশের তুলনায় অনেক কম ইসলামী)। পাকিস্তানে জুলফিকার ভুট্টোর সামাজতন্ত্রবান্ধব (নামে মাত্র যদিও, তবুও ইসলামিস্ট তো নয়) দলের জায়গায় বদল হয়ে জিয়াউল হকের শরীয়াবান্ধব দল এসেছিল, যার চূড়ান্ত পরিণতিতে আজ পাকিস্তান/বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইসলামী বিষাক্রিয়ার কুফল দেখতে পাচ্ছি আমরা সর্বত্র।
আপনার মার্ক্সবাদীরা যে ভুল তার ব্যাখ্যারও উলটো ব্যখ্যা দিচ্ছে মার্ক্সবাদীরা। কিন্তু আপনি পারছেন সেই ডিকনস্ট্রাকশনের বৃত্তের থেকে বেরিয়ে আসতে? উল্টো ব্যাখ্যার ভয়ে কি যুক্তিবাদীদের প্রমাদ গুনে ক্ষান্ত হওয়া উচিৎ? আপনি কি প্রমাদ গুনছেন? কুব্যাখ্যা আর সুব্যাখ্যার পার্থক্য রেখার কথা তো আপনি অন্তত স্বীকার করেন, নাকি? “তারা ঠিক তার উলটো ব্যখ্যা দিতে সক্ষম” বটে, কিন্তু সেই ব্যাখ্যা গিলছে তারা নিজেরাই আর তাদের পিঠচাপড়ান ধর্মান্ধরা। কিন্ত এক বিরাট অংশ যারা ধর্মের প্রতি কিছুটা আসক্ত কিন্তু একেবারে ধর্মান্ধ নয়।, যুক্তিবোধ যাদের মধ্যে একেবারে লোপ পায়নি তারা ঠিকই কোন ব্যাখ্যাটা প্রকৃত যুক্তিপূর্ণ সেটা বুঝে সঠিক দিকেই বদলে যায়। সঠিক ব্যাখ্যার কারণে স্বল্প বা পুরো ধার্মিক থেকে যুক্তিবাদী নির্ধার্মিক হবার নজীর এই মুক্তমনাতেই আছে। এর জন্য ধন্যবাদার্হ সেই যুক্তিপূর্ণ ইসলামের লেবু কপচান সমালোচকরাই। ইসলামের ক্ষেত্রে লেবু কচলালেই বিষক্রিয়ার উপশম হয়। বরং আপনার “ইসলামের সমালোচনা নয়, সমাজ/অর্থনীতি বোঝ” এই লেবু কপচানিতে কোন সুফল হয়েছে বলে মনে হয় না। বরং এর সুফল পাচ্ছে ইসলামিস্টরা, তারা এটাকে তাদের অবস্থানের সমর্থন বলে গলা ফাটিয়ে চেঁচাচ্ছে। বলছে “আমরাও তো এই কথাই বলে আসছি এতদিন। যাক একজন অন্তত বুঝেছে”।
“সামাজিক শক্তির বোরে হিসাবে…” এর ইংরেজী অনুবাদ করে দিন প্লীজ। যদি বলতে চাইছেন ধর্ম রাজনৈতিক শক্তির উৎস তাহলে তাহলে আপনার আগের উক্তি “রাজনৈতিক শক্তি না বদলালে ধর্মের উৎপাত কমবে না” সেটা স্ববিরোধী বা অর্থহীন হয়ে যায়। ধর্ম থাকলেই (ইসলাম থাকলেই) রাজনৈতিক শক্তিগুলি ইসলামকে ব্যবহার করবে নিজেদের স্বার্থে। তবে হ্যাঁ, আমি এব্যাপারে একমত হতে পারি যে একটা অনন্য রাজনৈতক শক্তি্র (কিন্তু কম্যুনিস্ট নয়) আগমন আবশ্যক যে নাকি ধর্মকে মানুষের ব্যক্তিপর্যায়ে সীমিত রাখাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বলবৎ করতে পারে, যেমন তুরস্কে, ইরাকে, তিউনিসিয়ায় ঘটেছিল এবং বর্তমান সিরিয়ায় । সিরিয়া গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিকাব (বোরখা) নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল, যা বাংলাদেশে অকল্পনীয়। তাই বাংলাদেশে সেরকম কোন সম্ভাবনা দেখিনা।
আপনার মত স্বঘোষিত বস্তুবাদী লোক “ঘৃণা ছড়ানোর” মত ভাববাদী কথা বলেন কিভাবে । এই ব্যক্তিনির্ভর নির্বচনের কোন বস্তুবাদী সংজ্ঞা আছে কি? আপনার অনেক কথাই তো অনেকের কাছে ঘৃণা হিসেবে মনে হয়েছে। বিশেষ করে নুতুন লেখকদের যেমন করে “কিছুই জানে না। না জেনে বলেছে” ইতাদি কথাতো তাদের কাছে ঘৃণাই। আমার বোধশক্তিতে ঘৃণার মূল উপাদান হল কারো কোন নেতিবাচক কার্যকলাপের জন্য নয় বরং স্রেফ তাদের পরিচয়ের জন্য তাদের অমঙ্গল বা ক্ষতিসাধনের ইচ্ছা। ইসলামের সমালোচনাকারীরা সেই ঘৃণা থেকে এক আলোকবর্ষ দূরে আছে। অন্যধর্মের সাথে তুলনা করলে অনেকে অন্যধর্মের অতীতের কথা তোলেন। তাই বর্তমানকে ভিত্তি করেই বলি, ইসলামে বিশ্বাসীরা যদি বর্তমান বিশ্বে খ্রীষ্টান/বুদ্ধ/হিন্দুদের মত ধর্মকে শুধু ব্যক্তিগত পর্যায়ে সীমিত রাখত, অন্যের ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ না করত, তাহলে ইসলামের সমালোচনাকারীরা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যেত।
আপনি আরেক ব্লগে বলেছেন ঘৃণার বদলে ঘৃণা , হত্যার বদলে হত্যা নয়, শান্তি আর প্রেমের দ্বারাই ঘৃণা জয় করা সম্ভব। শুনতে ভাল লাগে । পপ্যুলিস্ট কথা। কিন্তু ধরুণ আপনি ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ছিলেন ১৯৬৫ তে যখন পাকিস্তান ভারতকে আক্রমন করে। আপনি কি শান্তি বা প্রেম নিবেদন করে পাকিস্তানকে ঠেকাতেন? কৌটিল্য কি শান্তির কথা বলতেন? গীতাতে ইন্দ্র অর্জুনকে যুদ্ধে উদবুদ্ধ কেন করেছিলেন তাহলে, যে গীতাতে হিন্দুদের গভীর বিশ্বাস? পশ্চিম বঙ্গের নক্সাল ঠেকাতে আপনি কি নক্সালদের প্রেম নিবেদন বা শান্তির কথা বলবেন? আপনি ধর্মে বিশ্বাসী না সেটা মানলাম, আমরাও না। কিন্তু যেখানে সব ধর্মের (এমনকি নাস্তিকদেরও) এক বিরাট অংশ মনে করে সহিংসতাকে প্রেম বা অহিংসা দিয়ে ঠেকান যায় না সেখানে কজন আপনার এই হিংসার বদলে শান্তির বাণী কিনবে। আর আপনি তো বস্তুবাদী, বিবর্তনে বিশ্বাসী। বিবর্তন কি হিংসাকে প্রেম দিয়ে নির্মূল করা যায় এরকম ব্যাখ্যা দেয়? আসলে গান্ধীবাদী বা গৌতম বুদ্ধের মত বা যীশু খ্রীষ্টের মত একতরফা শান্তির নীতি সার্বজনীন সূত্র হতে পারে না কখনও। ক্ষেত্র বিশেষে এটা অনুঘটক হিসেবে (মুখ্য শক্তি হিসেবে নয়) কাজ করতে পারে, বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে গান্ধীর অহিংস আন্দোলন যেটা করেছিল। এটা আমার কাছে একটা ওয়ান টাইম ব্যাপার বলে মনে হয়।
আপনি “শুধু ইসলাম নিয়ে কেন, সমাজ,অর্থনীতি, সাহিত্য নিয়ে লেখনা কেন” এ জাতীয় লেবু কপচানির উত্তরে বলতে হয় আপনি এটাকে Either or করে ফেলছেন কেন। সবই তো সমান্তরালভাবে হতে পারে এবং হচ্ছে। রবীন্দ্রনাথ, প্রেমের বিবর্তনীয় ব্যাখ্যা, মার্ক্সবাদ, এগুলো নিয়ে লেখার তো প্রচুর পাঠসঙ্খ্যা আর মন্তব্য পাচ্ছে। আপনার লেখাও তো বেশ কাটতি পায়। তাহলে এত ক্ষেদ কেন?
শেষে আরেকটা পয়েন্ট যোগ করতে চাই। আপনি প্রায় বলেন আপনাদের ওপারে বামদের নিয়ে খুব ঝামেলায় আছেন। আমরা এপারে আপনাদের এই কষ্ট আপনার মত অ্যাপ্রিশিয়েট করতে পারব না এটা সত্য, আপনিও তাই মানবেন। সেরকম ইসলামিস্টদের নিয়ে আমরাও এপারে যে কি ঝামেলায় আছি সেটাও আপনি আমাদের মত অ্যাপ্রিশিয়েট করতে পারবেন না। ইসলামিস্টরা হিন্দুদের প্রতি ততটা হিংস্র নয় যতটা ইসলাম ধর্মে জন্ম হওয়া নাস্তিক, ইসলাম সমালোচনাকারী, বা স্বাধীনচেতা নারীদের প্রতি।
আপনার সৎউদ্দ্যেশ্যের প্রতি আমার কোন সন্দেহ নেই। কেবল সন্দেহ আপনার শান্তির ফর্মূলার কার্যকারিতা নিয়ে।
@যাযাবর,
ক্ষুদা নিবারনটা একটা রূপক অর্থে ব্যবহার করেছি এর আসল মানে সারভাইভাল স্ট্রাটেজি। দর্শন একটাই -সেটা জীবন দর্শন। বেঁচে থাকার দর্শন।
আত্মরক্ষার দর্শন, আলট্রুইজম, গান্ধীবাদ, মাওবাদ-মুক্তমনা-সব কিছুই সেই বেঁচে থাকার জন্যে।
প্রেম এবং আত্মরক্ষার জন্যে যুদ্ধ -দুটোই সেই সারভাইভাল স্ট্রাটেজির অংশ। একমুদ্রার দুইপিঠ।
কিন্ত ঘৃণার চাষবাস এর মধ্যে পড়ে না- সে শিক্ষার অপচয়।
ইসলামকে আমি ঘৃণা করি, মহম্মদকে ঘৃণা করি এই সব বাক্য, শ্রেফ আহাম্মকি-নির্বুদ্ধিতার পরিচয় এবং কুশিক্ষার পরিচয় ও বটে। মহম্মদের কাজের সমালোচনা, ইসলামের সমালোচনার সাথে আমি এদের ঘৃণা করি-এটা এক বস্তু না।
মুসলিম বিশ্বে ‘পরিবেশ, নগর ব্যাবস্থা, দুর্নীতি, অর্থনৈতিক দুরবস্থা, বেকারত্ব, শ্রমিক শোষন-ইত্যাদি বিষয়গুলি’র দুরাবস্থার জন্য ইসলাম ধর্মটিই যে সব থেকে বেশী দায়ী বাস্তবতার আলোকে এটাই সত্যি।
>>
এগুলো ত ভারতের জন্যে ও সত্য। পৃথিবীর সব থেকে বেশী নিরক্ষর আর দরিদ্রলোক ভারতে বাস করে। তার জন্যে তাহলে হিন্দু ধর্ম দায়ী? এইযুক্তিতে কিন্ত তাই দাঁড়াচ্ছে :-Y
@বিপ্লব পাল,
নিরক্ষরতা আর দারিদ্রতা ধর্মান্ধ লোকের মধ্যেই বেশী বিরাজ করে সে যে ধর্মই হউক না কেন। কিন্তু কথা হচ্ছে ইসলাম ধর্মের ধর্মান্ধতার কুফল সব ধর্মকে ছাড়িয়ে গিয়েছে এবং যাচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতে ভারতেও কোন একদিন নিরক্ষরতা আর দারিদ্রতা বিমোচনের সপ্ন দেখা অবাস্তব হয়না, কিন্তু ইসলাম শাসিত অঞ্চলে সে সপ্নের বাস্তবায়ন কখনও সম্ভব নয়।
@ব্রাইট স্মাইল্,
ভারতের প্রায় মাথাপিছু অর্ধেক আয় নিয়েও বাংলাদেশ নিরক্ষরতা দূরীকরনে, অপুষ্টি বিমোচনে ভারতের থেকে ভাল করছে গত ১০ বছরে।
এই ব্যপারে সব দোষ ইসলাম তত্ত্বের ব্যখ্যা কি?
@বিপ্লব পাল,
বাংলাদেশ নিরক্ষরতা দূরীকরনে, অপুষ্টি বিমোচনে ভারতের থেকে ভাল করছে গত ১০ বছরে? এসবের প্রমান কোথায়? লিটেরেসি ও মেলনিউট্রিশন উভয় ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থা ভারতের চেয়ে শোচনীয়। বর্তমানে ভারতকে বলা হয় ভারত শুধু এশিয়া নয় বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তি। মনে হচ্ছে তারপরে বলে বসবেন যে বাংলাদেশ ভারতকে ছাড়িয়ে বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিনত হয়েছে। ইচ্ছামতো যা কিছু বলার স্বাধীনতাতো সবারই আছে কি বলেন? হাঃ হাঃ!
@ব্রাইট স্মাইল্,
অমর্ত্য সেনের ইন্টারভিউ থেকে তুলে দিলামঃ
“In income, India has a huge lead over Bangladesh, with a GNP per capita of $1,170, compared with $590 in Bangladesh. This difference has expanded rapidly because of India’s faster rate of recent economic growth, and that, of course, is a point in India’s favor. But we must ask how well India’s income advantage is reflected in other things that also matter. I fear the answer is: not well at all.
Mean years of schooling amount to 4.8 years in Bangladesh compared with India’s 4.4 years. While India is ahead of Bangladesh in the male literacy rate for the age group between fifteen and twenty-four, the female rate in Bangladesh is higher than in India.
Interestingly, the female literacy rate among young Bangladeshis is actually higher than the male rate, whereas young women still have substantially lower rates than young males in India. There is much evidence to suggest that Bangladesh’s current progress has a great deal to do with the role that liberated Bangladeshi women are beginning to play in the country.
What about health? The mortality rate of children under five is sixty-six per thousand in India compared with fifty-two in Bangladesh. In infant mortality, Bangladesh has a similar advantage: it is fifty per thousand in India and forty-one in Bangladesh. While 94 percent of Bangladeshi children are immunized with DPT vaccine, only 66 percent of Indian children are. In each of these respects, Bangladesh does better than India, despite having only half of India’s per capita income.”
সোর্সঃ অমর্ত্য সেনের ইন্টারভিউ
http://www.oxfamblogs.org/fp2p/?tag=bangladesh
******************
তোমাদের মতন নিধার্মিকদের যুক্তিবুদ্ধির মান কেন সদালাপী ধার্মিকদের থেকে বেশী নয় আশা করি বুঝতে পারছ। শুধু নিধার্মিক হলেই যুক্তির ধার বাড়ে না। ইতিহাস দর্শন সমাজ বিজ্ঞান, অর্থনীতি সব কিছু নিয়ে পড়াশোনা না করলে, তোমাদের যুক্তির স্টান্ডার্ড সদালাপের লেভেলেই থেকে যাবে।
@বিপ্লব পাল,
অমর্ত্য সেনের ইন্টারভিউ থেকে বুঝলাম যে
per capita income বাংলাদেশের তুলনায় ভারতের দ্বিগুন হওয়া সত্তেও
তাতে ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের এমন কোন আহামরি চিত্র পাওয়া যায়না। তা ছাড়া এমন দাবীও কেউ করেনি যে ইসলাম যে দেশে নাই সেই দেশগুলোই পৃথিবীর সবচাইতে উন্নত দেশ। কথা হলো বর্তমান সময়ে ইসলাম ধর্মটি মুসলিম দেশগুলোতে সব ধরনের উন্নতির পথে অন্তরায় হয়ে দাড়িয়েছে, আর সে কারনে এই ধর্মটির আসল স্বরূপ জনসমক্ষে প্রকাশ হওয়া দরকার। বাংলাদেশে আরও উন্নতি সম্ভব হতো যদি না ইসলাম নামক ধর্মটি এই দেশের লোকজনদেরকে মোহাবিষ্ট করে না রাখতো।
নিধার্মিক হলেই যুক্তির ধার বাড়ে এই থিউরি আবার কবে তৈরী হলো কে জানে। সদালাপের স্টান্ডার্ড কোন লেভেলের এই সম্পর্কে কোন ধারনা নেই। আর তা ছাড়া ধার্মিক হলেই কারো যুক্তির স্টান্ডার্ডকে অবমুল্যায়ন করতে হবে এমনটি মনে করিনা। ইতিহাস দর্শন সমাজ বিজ্ঞান, অর্থনীতি সব কিছু নিয়ে পড়াশোনা করে ‘Jack of all trades, master of none’ হওয়ার কোন ইচ্ছা আমার নেই।
@ব্রাইট স্মাইল্,
দেখ, তোমরা নিজেদের যুক্তিবাদি বলে দাবী কর-অথচ নিজেদের বক্তব্যের সপক্ষে কাল্পনিক উপসংহার টেনে দিলে। এবং সেটা আমি চোখ দিয়ে একটা উদাহরণ দিয়ে দেখানোর পরেও :-s
ইসলাম বাংলাদেশের কি ক্ষতি করেছে, সেটা একটু নিরেপেক্ষ ভাবে বিশ্লেষণ কর-অন্যদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।
ইসলাম বাংলাদেশের মূলত যে ক্ষতিটা করেছে ১৯৭১ এর পর থেকে, সেটা হচ্ছে ভারত বিদ্বেশ চালু করে, একটা অবাস্তব বিদেশ নীতি নিয়েছে-যার জন্যে বাংলাদেশের বাণিজ্য মার খেয়েছে সাংঘাতিক ভাবে। ভারতের সাথে সর্বত ভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছারা এবং ভারত-বাংলাদেশ মুক্ত বাণিজ্য ছারা বাংলাদেশের অর্থনীতির ভবিষয়ত নেই। এটা প্রফেসর ইউনুস ও অনেকবার বলেছেন। বাংলাদেশ ইসলামিক জাতিয়তাবাদের আবহে সেই দিকে হাঁটেনি। ফলে পিছিয়ে পড়েছে। আরেকটা ক্ষতি ইসলাম বাংলাদেশের রাজনীতিতে করেছে- সেটা হচ্ছে স্কুল স্থাপন না করে অতিরিক্ত হারে মাদ্রাসা চালিয়ে অনুন্নত মানব সম্পদ বাজারে ছেরেছে।
জামাত-বিএনপির রাজনীতি ভারতেও আছে। সেটা কোন ইসলামি স্পেশাল না।
এখন যদি বল ইসলামের জন্যে বাংলাদেশ শিক্ষাতে পিছিয়ে আছে-তাহলে আমি ভারতের উদাহরন দিলাম। বাংলাদেশ নারী শিক্ষাতে আরো ভাল করেছে।
স্বাস্থ্যের কথা যদি বল-সেখানেও দেখালাম বাংলাদেশ ভারতের থেকে ভাল করেছে।
আর যদি মারামারি খুনোখুনি দলাদলির কথা বল-বাংলাদেশের রেকর্ড পশ্চিম বঙ্গের থেকে অনেক বেশী ভাল। পশ্চিম বঙ্গে রাজনৈতিক দাঙ্গায় যেভাবে দলে দলে খুন করে মাটির নিচে
পুঁতত সিপিএমের দলবল, সেই তুলনায় বাংলাদেশে জামাতদের উৎপাত অকিঞ্ছিতকর। সিপিএম যে ভাবে তিন জন আনন্দমার্গী সন্নাসিনীকে কলকাতার প্রকাশ্য রাজপথে ( বিজন সেতুতে ) জন সমকক্ষে পুড়িয়ে মেরেছিল বা গরবেতায় ৮ জনকে গুলি করে, অন্তত ১০ বছর লাশ করব দিয়ে রেখেছিল-সেই ধারাবাহিক নৃশংসতার ইতিহাস বাংলাদেশে অন্তত ১৯৭৫ সালের পর থেকে নেই। গত ৩৫ বছরে সিপিএমের হাতে অন্তত ৪০০০ এর বেশী বিরোধি খুন হয়েছে বেশ ধারাবাহিক ভাবে। পশ্চিম বঙ্গে পার্টির অস্তিত্ব ছিল- সরকারের অস্তিত্ব ছিল না।
বাংলাদেশেও খুনো খুনি হয়েছে। কিন্ত আমাদের এই দিকের হারে না। ভাবতে পারা যায় আজকে ৩৫ বছর বাদে, সেই সব মৃত দের কঙ্কাল উদ্ধার হচ্ছে?
এসবের জন্যে কাকে দোষ দেব? এর কারন মূলত অধিক ঘণবসতি। আর কিছু না। এত অল্প জমির ওপর এত লোক। ফলে এগুলো বস্তুবাদি কারন একটি বিবদমান রাজনৈতিক সিস্টেমের জন্যে।
@বিপ্লব পাল,
আমি আপনার অন্য বিষয়ে কথা বলব না, শুধু জানিয়ে গেলাম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০২, পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি পুলিশ ক্যাম্পে আক্রমন করে প্রজান্ত্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত চার জন পুলিশকে খুন করে চলে যায়। স্বাধীনতার পর কমিউনিস্ট পার্টি গুলি আমার দেশে কম অত্যাচার করেনি, আমার জানা মতে আর কোন দল অত্যাচারের(খুনের) মাত্রায় পরিসংখ্যানের আলোকে কমিউনিস্ট পার্টি গুলিকে হারাতে পারবে না। জানার ভুল থাকলে ক্ষমা প্রার্থি। ধন্যবাদ।
@বিপ্লব পাল,
সেখানেও সেই একই কথা। ইসলাম মুলতঃ অন্য ধর্মের দেশ বা জাতিকে ঘৃনা করতে শেখায় বলেইতো সেখানে ভারত বিদ্বেষ চালু হয়েছে আর তাই বাংলাদেশের বিদেশ নীতি ইসলামের কারনেই অবাস্তব (আপনার মতে অবাস্তব)। যদিও ইসলাম বাংলাদেশের মূলত কি ক্ষতি করেছে এই মতামত আপনার নিজস্ব ও তর্কের অপেক্ষা রাখে।
মাদ্রাসা স্থাপন ইসলামি স্পেশাল নয়তো কি? জামাত-বিএনপির রাজনীতি ভারতেও আছে কিন্ত ভারতের রাজনীতি কি বাংলাদেশের মতো ইসলাম দখল করে রেখেছে?
নারী শিক্ষা ও স্বাস্থে বাংলাদেশ ভারতের থেকে সামান্য একটু ভাল করেছে বলেই ইসলাম ধর্মের কুফলগুলো এক ফুঁয়ে শুন্যে মিলিয়ে যাবেন না। আর এখানে এটা প্রমান করেনা যে ইসলামের কারনে এটা সম্ভব হয়েছে বা এটার অর্থ এই নয় যে বাংলাদেশ নারী শিক্ষা ও স্বাস্থে পৃথিবীর ধনী দেশগুলোর সমকক্ষ হয়ে গেছে। মুল কথা হলো বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে যা দেখা যাচ্ছে আফগানিস্থানের মতো নারী শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে এই দেশটি ইসলামের কারনে হুমকির সম্নুখিন হয়ে আছে। আর ভারত এই ক্ষেত্রে ভাল করছেনা সেটা ভারতের নিজস্ব সমস্যা। কেঊ বলছেনা যে ইসলাম ছাড়া পৃথিবীতে আর কোন সমস্যা নেই।
বাংলাদেশে জামাতদের উৎপাত অকিঞ্চিতকর এই অবাস্তব ধারনা নিয়ে তর্ক চলেনা। তবে হ্যা, জামাতীদের কাছে বা জামাত সমর্থনকারিদের কাছেতো এটা উৎপাত মনে হবেনা তা বলাই বাহুল্য।
বাংলাদেশে এই অধিক ঘনবসতিও ইসলামের কারনে। ইসলাম জন্ম নিয়ন্ত্রনে বাঁধা দেয় বলেইতো সেখানকার জন্ম হার অনিয়ন্ত্রিতভাবে বেড়ে চলছে এটা কে না জানে।
ইসলাম নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের যতক্ষন মোহ মুক্তি না ঘটবে, ইসলামের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে বাংলাদেশের জনগনের যতক্ষন বোঁধদয় না ঘটবে ততক্ষন এর থেকে পরিত্রান নেই। এই নিয়ে যত বেশী লেখালেখি হবে ততই বাংলাদেশের তথা পৃথিবীর জন্য তা মংগল বয়ে আনবে। তা লেবু যত তিতাই হউকনা কেন একটু সহ্য করে নিলে আখেঁরে ভালো হবে।
@ব্রাইট স্মাইল্ ও কাশেম ভাই,
বিপ্লব দাকে বুঝিয়ে কোন লাভ হবেনা। ঐ, কী যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে—-অবস্থা। প্রায়এক যুগের সময় যাবত বিপ্লব দা ঠিক এই ধারায়ই তর্ক করে আসছেন, এর মাঝে ইসলাম ছাপ্পান্ন হাজার বর্গ মাইলে কতো হাজার বোমা মারলো, কতোজন জজ ম্যাজিষ্ট্রেট, কতো রাজনীতিবিদকে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দিল,, কতো সাহিত্যিককে দেশ ছাড়া, কতো কবিকে খুন করলো, কতো হেলি, শেলী, নুরজাহানকে মাটিতে পুঁতে পাথর মারলো, সে খবর কি বিপ্লব দা রাখেন? এই যাতনা বুঝতে হলে, হৃদয়ে অনুভব করতে হলে আপনাকে জন্ম নিতে হবে আরজ আলী, হুমায়ুন আযাদ, শামসুর রহমান, তাসলিমার দেশে। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া ইসলামি বিষবাষ্পের ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন, শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে নতুর প্রজন্মের। মুক্তমনার কল্যাণে তারা ইসলামের বিষঁদাত চিনতে পেরেছে, দেখতে পেয়েছে তার আসল কুৎসিত চেহারা। তারা বেরিয়ে আসতে চায় ১৪ শো বছরের পুরনো, ঘুনে ধরা, পঁচা সমাজব্যবস্থা থেকে।
বাংলাদেশের সাথে অন্য দেশের, ইসলামের সাথে অন্য ধর্মের তুলনা করা ঠিক নয়। অন্যান্য ধর্ম আজ নখ-দন্তহীন মৃত প্রায় বাপুরাম সাপুড়ের ডোরা সাপ, যে সাপের নখ নেই দাঁত নেই, মারেনা কো কাটেনা——। ইসলাম কোন ধর্মের নাম নয়, ইসলাম হলো ধর্মের মুখোশ পরা, প্রগতি ও মানবতার শত্রু আরব সাম্রাজ্যবাদী এক সন্ত্রাসের নাম। ইসলাম যেখানে আছে শান্তি ও প্রগতি সেখানে অসম্ভব। এই বিষাক্ত শর্পকে দুধ-কলা (বিজ্ঞান ও অর্থ) দিয়ে পোষলেও দংশন করবে। আমরা আমাদের বাঙ্গালি মুসলমানদেরকে, আমাদের নতুন প্রজন্মকে এর দংশন থেকে বাঁচাতে তার বিষদাঁত ভেঙ্গে দিতে বদ্ধপরিকর।
@আকাশ মালিক,
(Y)
@আকাশ মালিক,
একদম ঠিক বলেছেন। ইসলামকে কচলাতেই হবে অনবরত; যতক্ষণ এর বিষ নখ ও দাঁত পড়ে না যায়। কচলানো বন্ধ করলে নতুন পাঠক ও নতুন প্রজন্ম এর বিষাক্ততা সম্মন্ধে জানবে কীকরে?
@আকাশ মালিক,
সেই ‘যে সত্য বলা হয় নি‘ বইটি পড়ার পর থেকেই আমি আমার সারা জীবনের ভুল বিশ্বাস টি ত্যাগ করতে পেরেছিলাম। মুক্তমনায় ধর্মের মুখোশ উম্মোচন কারী লেখা যদি না পেতাম, তাহলে আজও আমি হয়ত জানতা্মই না যে, “ইসলাম হলো ধর্মের মুখোশ পরা, প্রগতি ও মানবতার শত্রু আরব সাম্রাজ্যবাদী এক সন্ত্রাসের নাম”। যে যাই বলুক না কেন, আমি জানি, মুক্তমনার লেখা আমার জীবনে কত বড় উপকারটি করেছে। মুক্তমনা আর সামহোয়ার ইন ব্লগ পড়ার আগ পর্যন্ত যদাও ইসলাম নিয়ে সন্দেহ কিছুটা ছিল, তবুও আমি কল্পনাই করতে পারতাম না যে, ইসলাম সত্যিই মিথ্যা হতে পারে। আমার মনের প্রশ্ন যে আরও অনেকের ছিল, ইসলামের সমালোচনা যে করা যায় এসব কিছুই জানতাম না। জানতাম যে, শুধু বিধর্মিরাই ইসলামের সমালোচনা করে (যেমন সালমান রুশদি) কারণ তারা বুঝে গেছে যে ইসলাম সত্যি তাই ….তাই … তাই কি ? … সত্যই অদ্ভুত… নিজের মনকে যা খুশী তাই বুঝ দেয়া।….
বিপ্লব দার লেখা টা সুন্দর, তাতে কোনই সন্দেহ নেই, কিন্তু আমি নিশ্চিত যে, ভুক্তভোগীরা কোনদিনও এ ব্যপারে একমত পোষণ করবে না। আমি ধর্মের কারণে এক
রকম ভুক্তভোগী। আমি আমার জীবনের চরম মূল্যবান সময় ধর্মের পিছনে ব্যয় করেছি, যে সময় টা আমি আরও পড়াশোনা এবং সৃজনশীল কাজ করতে পারতাম। আমি যখন দেখি এই ব্লগে আমার চেয়ে বয়সে অনেক ছোট ছেলে/মেয়েরা এখনই ধর্মের মুখোশ টা বুঝতে পেরেছে, (যেমন টেকি সাফি,.. এবং আরও অনেকেই), আমার তাদের প্রতি এক রকম ঈর্ষাই হয় যে, আমি কেন সেই সময়ে আমার পছন্দের বিজ্ঞান চর্চা বাদ দিয়ে চিল্লায় সময় কাটিয়েছি এবং ইসলামে নিষেধ বলে অনেক পছন্দের কিছুই শিখতে পারি নি (যেমন সংগীত আমার খুব পছন্দের শিল্প ছিল যা ইসলামের ভয়ে বাদ দিতে হয়েছে)। আমার মনে মাঝে মাঝে সন্দেহ হত কিন্তু এরকম প্রশ্ন করার মত কাউকে পেতাম না। ছোটবেলায় হুজুর দের জিজ্ঞাসা করে বেতের বাড়ি খেয়েছি। তারপরেও এক সময় যখন সন্দেহের দানা চরমে পৌছল, ভাবলাম, নাহ, আমাকে জানতেই হবে ইসলাম কেন সত্য ? তখন বিভিন্ন আলেম এবং ওয়েবসাইটে তরমুজে আল্লাহর নাম, গরু ছাগলের গায়ে আল্লাহর নাম ইত্যাদি দেখে ঈমান টাকে ধরে রাখতে হয়েছিল। এরপরে ঈমান শক্ত হল যে, কোরআনে নাকি বিজ্ঞান আছে এটা জেনে, আর আল আমিন নবী কেনই বা মিথ্যা বলবে আর ১৪০০ বছর আগে বিজ্ঞান কিভাবে জানবে। মুক্তমনা এবং সামহোয়ার ইন ব্লগের কল্যাণে আস্তে আস্তে এসব সন্দেহ দূর হয়ে গেল। সবচেয়ে চরম সাহায্য করেছে ‘যে সত্য হয়নি বলা‘ লেখাটি, এজন্য আমি আকাশ মালিকের কাছে চির কৃতজ্ঞ। ভবঘুরের লেখা ‘মোহাম্মাদের চরিত্র….‘ টিও আমাকে আনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে যার আমার খুবই প্রয়োজন ছিল।
তাই আমি বিপ্লব দাকে অনুরোধ করছি, আপনি প্লীজ ধর্ম সম্পর্কিত লেখাগুলোকে নিরুৎসাহিত করবেন না। আমার মনে হয় এসব লেখাগুলোর প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়নি। বিশেষ করে যে ধর্মে শেখানোই হয়
১. বিধর্মীরা শত্রু,
২. ইসলাম ত্যাগকারী হচ্ছে মুরতাদ যার কল্লা কাটা ফরজ.
৩. শরিয়া আইন কায়েম করতেই হবে এবং বিধর্মি দের সেই আইন মানতে বাধ্য করতে হবে।
এই ৩ টি মূলনীতিই ইসলামকে ভয়ংকর এবং সন্ত্রাসী বানিয়েছে। ইসলামে যদি শুধু এই তিনটি বিষয় না থাকত, তাহলে, আমি ইসলাম নিয়ে পরোয়াই করতাম না, ভয় পেতাম না, বলতাম, যার ধর্ম সে পালন করুক, আমার কি, এবং বিপ্লব দার সাথে একমত হয়েই বলতাম, একটা ধর্মের প্যান প্যানানি নিয়ে আমাদের সময় এবং মেধা নষ্ট করা সমিচীন নয়।
@ব্রাইট স্মাইল্,
ভারতের বাংলাদেশ বিদ্বেষকে ব্যাখ্যা করবেন কী দিয়ে? কিংবা অনেকে অমুসলিম দেশ আছে যারা একে অন্যের প্রতি বিদ্বেষপরায়ণ, সেটার ব্যাখ্যাই বা কী হবে?
জন্মনিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের অর্জন ঈর্ষণীয়। এই মুহুর্তে বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ভারতের চেয়েও কম। শুধু জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণেই নয়, নারী শিক্ষাতেও বাংলাদেশ এগিয়ে আছে প্রতিবেশী দেশসমূহের তুলনায়।
ইসলামের অনেক দোষ আছে। পশ্চাদপদ আগ্রাসী একটা ধর্ম। এটা না থাকলে আমরা নিঃসন্দেহে আরো এগোতাম। কিন্তু কথা হচ্ছে, যে দোষ ইসলামের নয়, সেই দোষও তার ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়াটা যৌক্তিক কাজ নয়।
এই অংশটুকুর সাথে সম্পূর্ণ একমত।
@ফরিদ আহমেদ,
দেখুন ঘৃনা বা বিদ্বেষ বিভিন্ন কারনে হতে পারে, পৃথিবীতে একমাত্র ইসলামের লোকজনই শুধু ঘৃনা পোষন করে এমন দাবী কেউ করছেনা। কিন্তু ইসলাম ছাড়া অন্য লোকজনের মাঝে বিদ্বেষ আছে বলে ইসলামের বিদ্বেষকে অস্বীকার করা যায় কি?
জন্মনিয়ন্ত্রণ বা নারী শিক্ষাতেও বাংলাদেশের অগ্রগতি ভারতের তুলনায় যৎসামান্য হয়েছে, তার অর্থ এই নয় যে অগ্রগতিতে বিরাট সাফল্য আছে, আর এই মুহুর্তে এই নিয়ে আমাদের চিন্তা-ভাবনা করার দরকার নেই। ধর্মের ব্যাপারে এখনই কঠিন পদক্ষেপ না নিলে সেই যৎসামান্য অগ্রগতিও চিরতরে বন্ধ হতে বাধ্য।
সব দোষ ইসলামের এমন অবাস্তব কথা কেউ বলছেনা। কিন্তু ইসলামের যেগুলো দোষ সেগুলোর জন্য ইসলামকে দায়ী না করাটাও কি যুক্তির কাজ?
@ব্রাইট স্মাইল্,
বাংলাদেশের মানুষের ভারত বিদ্বেষের ক্ষেত্রে আপনি ইসলামকে সিঙ্গল আউট করেছিলেন আপনার আগের মন্তব্যেই। সেখান থেকে সরে এসেছেন দেখে খুশি হলাম। এটাই আসল কথা যে, ঘৃণা-বিদ্বেষ বিভিন্ন কারণে হতে পারে। কাজেই, বাংলাদেশের মানুষের ভারত বিদ্বেষের পিছনে শুধু ইসলাম ইন্ধন যোগাচ্ছে, এই ভাবনাটা অতি সরলীকরণ এবং অনেকটা সব দোষ নন্দ ঘোষের ঘাড়ে চাপানোর একটা প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়।
না অস্বীকার করা যায় না বা অস্বীকার করা উচিতও নয়। তবে, যেখানে অন্য ফ্যাক্টরও কাজ করতে পারে, সেখানে শুধু ইসলামের ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টাটা এক চক্ষুয়ীয় আচরণের পর্যায়ে পড়ে।
এই অগ্রগতিতে বিরাট সাফল্য হয়তো নেই, তবে সামান্য হলেও সাফল্যতো আছেই। এই সাফল্যের কথাও এসেছে ভিন্ন কারণে। আজকে বাংলাদেশ যদি এই দুটোতে ভারতের থেকে পিছিয়ে থাকতো, তবে এই মুক্তমনাতেই কেউ হয়তো এর সাথে ইসলামের কোরিলেশন খুঁজে পেতো। ব্যর্থতার ক্ষেত্রে আমরা ইসলামকে টেনে আনছি, কিন্তু সাফল্যের সময়ে ভিন্ন ফ্যাক্টরকে নিয়ে আসছি, অথবা এটা বিরাট কিছু না বলে খারিজ করে দিচ্ছি। এই দ্বিমুখিতাটা সঠিক নয়।
একটা বিষয় উল্লেখ করি। বিস্ময়কর হলেও সত্যি এটা। সামাজিক উন্নতির সূচকের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই মুহুর্তে বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে এগিয়ে। শুধু ভারত নয়, এশিয়ার অনেক দেশকেই পিছনে ফেলে দিয়েছে ইসলামিক(!) এই দেশটা।
অবশ্যই যুক্তির কাজ নয়। সে জন্যই আট বাংলাদেশির হত্যার কারণে মাত্র কদিন আগেই ইসলামকে ধরে আচ্ছামত পিটুনি দিয়েছি আমরা।
মুসলিম বিশ্বে ‘পরিবেশ, নগর ব্যাবস্থা, দুর্নীতি, অর্থনৈতিক দুরবস্থা, বেকারত্ব, শ্রমিক শোষন-ইত্যাদি বিষয়গুলি’র দুরাবস্থার জন্য ইসলাম ধর্মটিই যে সব থেকে বেশী দায়ী বাস্তবতার আলোকে এটাই সত্যি। সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় হচ্ছে চামচিকা না ধরে পালের গোঁদাকে ধরা। আর তাই মুক্তমনায় এই নিয়ে যত বেশী লেখালেখি ও চিন্তা ভাবনা হবে গোটা সমাজ ও বিশ্ববাসী তত বেশী উপকৃত হবে বলে আমি মনে করি। দেয়ালে যখন পিঠ ঠেকে যায় তখন লেবু কচলানোর ফলে কারো কাছে তা তিতা লাগলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে কিছুই করার থাকেনা। অপ্রিয় সত্য তিতা হলেও শেষ পর্য্যন্ত মেনে নিতেই হয়।
@ব্রাইট স্মাইল্,
>>
এগুলো ত ভারতের জন্যে ও সত্য। পৃথিবীর সব থেকে বেশী নিরক্ষর আর দরিদ্রলোক ভারতে বাস করে। তার জন্যে তাহলে হিন্দু ধর্ম দায়ী? এইযুক্তিতে কিন্ত তাই দাঁড়াচ্ছে
দাদা,
আপনিই তো বলছেন ফ্রি মার্কেট! ধর্ম নিয়ে লেখাগুলো কিরাম জনপ্রিয় সেটা দেখেছেন? যতদিন ধর্ম নিয়ে লেখাগুলোর জনপ্রিয়তা থাকবে লেখকেরাও এটা নিয়ে লিখতে থাকবেন। ধর্ম নিয়ে লিখাগুলিন আমার কাছেও মাঝে মাঝে লেবু কচলানো মনে হয় কিন্তু অন্যদের দিকটাওতো দেখতে হবে দাদা। অন্তত যে ছেলেটা আজিই প্রথম মুক্তমনাতে এসেছে। আমার মুক্তিওতো ঘটেছিলো মুক্তমনার এই ধর্ম নিয়ে লেখাগুলো পড়েই। তাছাড়া মুক্তমনাতো একেবারে বন্ধ্যা হয়ে যায়নি অন্যান্য লেখাওতো আসছে, হয়তো পরিমানে কম। আপনি বড়জোর আর্জি জানাতে পারেন অন্য প্রডাক্টিক টপিক নিয়ে লেখা পাবার জন্য। কিন্তু আপনার বিরক্তির অজুহাতে ধর্ম নিয়ে লেখাগুলোর গলা টিপে ধরতে চাওয়াটা কতটা যুক্তিযুক্ত?
@সুমন,
মোটেও গলাটিপে ধরছি না।
বলছি লেখার মধ্যে আরো বেশী দ্বান্দিক বিশ্লেষণ করতে-আর্থ সামাজিক ঐতিহাসিক বিশ্লেষণ করতে। নইলে নিধার্মিকদের মান ধার্মিকদের থেকে উন্নত হচ্ছে না।
সাধারন মানুষের (শাসকের নয়) দৈনন্দিন প্রয়োজনে কবে এটার দরকার ছিল? কবে এর প্রয়োজন ফুরিয়ে গেল?
এই “অর্থহীন” জিনিষটাকে নির্মূল/সংযত করার জন্য ‘লেখালিখি /সমালোচনা /আলোচনা’ ছাড়া আর কি কি পদ্ধতিতে ‘মুক্তমনা/ যুক্তিবাদীরা’ সাধারন মানুষদের সচেতনতা বাড়াতে পারে?
ইসলাম নিয়ে মাতামতি ছিল কিনা তা প্রমান সাপেক্ষ বিষয়। কারন “ইন্টারনেট” প্রযুক্তির আগে ইসলামের বিরুদ্ধে কোন রুপ ভিন্নমত পোষন ছিল অসম্ভব। ১০০% শুধু পক্ষ শক্তির মত। “মাতামতি” করতে কম-পক্ষে ‘দুপক্ষের’ প্রয়োজন।
মাদ্রাসা খুলে ‘গরীবের সংস্থান’ কিভাবে হলো তা ঠিক বুঝলাম না। বরং উল্টোটা সত্যি। মাদ্রাসার শিক্ষা মানুষকে আরো পুংগু করে।”মধ্যযুগীয় আরবিক ধারনা” ফিরে এল রপ্তানী-কৃত ইসলামী প্রপাগান্ডার মাধ্যমে, “গরীবের সংস্থান” হওয়ার জন্য নয়।
কিভাবে নিশ্চিত হলেন? যদি ধরেও নিয় “এটা সাময়িক উৎপাত”, তবে এই সাময়িক উৎপাতের বিরুদ্ধে যারা “জীবন বাজী” রেখে লেখালেখি ও প্রতিবাদ করছে তাদের বিরুদ্ধাচরন করা (যা আপনি প্রায়ই করে থাকেন) কতটা যুক্তিসংগত? আপনার বিভিন্ন ভারী ভারী মন্তব্যে যে জিনিষটা দিবালোকের মত স্পষ্ঠ তা হলো আপনি এই “উৎপাত” ঠেকানোর (পরোক্ষভাবে হলেও) বিপক্ষ শক্তি।
আজকের মুসলমানরা ‘জ্ঞানে-গরীমা-যুক্তি-মুক্তবুদ্ধি’ চর্চায় পৃথিবীর সর্বনিম্ন -‘ইসলামী শিক্ষার’ বাস্তব ‘উৎপাদন’। তা সত্বেও ইসলাম যে ১৪০০ বছর ধরে শুধু টিকেই আছে তা নয়, এর উৎপাত বেড়েই চলেছে। এটার ব্যাখ্যা কি? শুধুই কি ‘পেট্রডলার’ নাকি আরো কিছু আছে?
আমার অভিজ্ঞতা আপনার অভিজ্ঞতার সম্পূর্ন বিপরীত। যাদের পেটে ভাত নাই, যে যত অভাবী (অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-শিক্ষা-চিকিৎসা) তারাই ধর্মকে বেশী-বেশী আঁকড়ে থাকে। যে রাষ্ট্র /সমাজ যত বেশী পশ্চাদপদ, সে তত বেশী “ধর্মান্ধ”।
একমত।
এটা আবার কি বললেন? মুসলামান কিন্তু ‘কুরানের’ নাম জানে না এই তথ্য আপনি কোথায় পেলেন?
মানসিকভাবে সুস্থ্য পৃথিবীতে “একজন” মুসলমানও এই দলে আছে বলে আমার জানা নাই।
ধর্মের কাজই হলো ‘মগজ ধোলাই”। যে যে ধর্মে বিশ্বাসী সে তার ‘বিশ্বাস-মত’ তার স্বপক্ষে যুক্তি বের করে নেই।
একমত। কিন্তু আমরা তো বিজ্ঞানের আলোচনা করছি না। অধিকাংশ মানুষই জন্ম-সুত্রে কোন না কোম ধর্মাম্বলী। নাস্তিক পিতামাতার সন্তান ‘খুবই নগন্য’।
“ধর্মকে ধর্ম বলে না মেনে বা না দেখে” অন্য কিভাবে দেখা যায়? ধর্মকে ধর্ম হিসাবেই দেখা উচিৎ- ‘মানা না মানার’ প্রশ্ন ব্যক্তিগত।
সেই পুরানো ক্যাচাল। “নাস্তিক্যবাদ’ ও একটি ধর্ম (?!)”
এটি সত্যিই আশার কথা! আমি ভীষন আশাবাদী! আমি নবীন নই। জন্মসুত্রে মুসলামান বলে ‘ইসলামের’ ভিতর-বাহির দেখার সূযোগ হয়েছে। অন্যান্য ধর্মের ব্যাপারে আমি বেশী কিছু পড়াশুনা নাই। আমি মনে করি কোন ধর্মের “অন্ধকার দিকগুলো” প্রকাশ করতে হলে তাকে ব্যালান্স করার জন্য ‘তুলন-মূলক ধর্ম তত্ব” আলোচনা করতে হবে। যারা এই যুক্তিতে বিশ্বাসী তারা মূলতঃ “মৌলবাদী /সূযোগ সন্ধানী”।
“যুক্তিবাদী চেতনা” প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে যদি ‘ধর্মকে বিবর্তিত’ করে ‘সমাজ ও পরিবেশের’ ক্ষতি সাধন থেকে বিরত রাখা যায় তাহলে সে প্রচেষ্ঠাকে বাধা দান (প্রত্যক্ষ বা পরক্ষভাবে) করা কোন মুক্ত-বুদ্ধির পরিচায়ক নয়।
একেবারেই একমত নই! এটা মৌলবাদীদের যুক্তি। মানুষের বিবর্তবানের ইতিহাসে ‘প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম’ অত্যন্ত নব্য-সংযোজন, বড় জোর ৭০০০ হাজার বছর। অপ্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম ৪০,০০০ বছর। এর পূর্বে মানুষ লক্ষ লক্ষ বছর ধরে ‘কোন ধর্ম’ ছাড়াই সংগ-বদ্ধ ভাবে শিকারী জীবন অতিবাহিত করেছে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেই, ‘প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম’ প্রতিষ্ঠার পর থেকে মানুষে বিভাজন বৃদ্ধি পেয়েছে, হানা-হানি/যুদ্ধ খুনা-খুনী বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় সব ‘প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের মুল-মন্ত্র”:
“I am right, you are wrong (partially or completely”.
একমত নই। আগেই বলেছি, ‘অভাবী লোকেরা’ বেশী ধার্মিক। বিলাস ব্যসনে অভ্যস্ত লোকের ঘাড় থেকে ‘ধর্ম” বিদারিত হয়। অভাবে কিংবা অসুবিধায় পড়লে ‘ধর্ম’ কথা মনে আসে।
আবারো একেবারেই একমত নই। মুক্তমনায় অন্যান্য ধর্মের তুলানায় ‘ইসলাম নিয়ে’ কেন বেশী লেখা-লেখি হয় তা বহু বার বলা হয়েছে। আবারও বলিঃ ১) সময়ের ব্যবধানে যেখানে অন্যান্য ধর্ম বিবর্তিত হয়ে যেখানে সভ্য-সমাজের সহনীয় পর্যায়ে পর্য্যবেসিত হয়েছে সেখানে ‘ইসলামের কালো থাবা’ উত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে- যা আপনি নিজেও স্বীকার করেছেন (এবং ‘পেট্র-ডলারকে’ দায়ী করেছেন)। আপনার বক্তব্য স্ব-বিরোধী। এক দিকে বলছেন “উৎপাত বৃদ্ধি পেয়েছে”, আবার অন্যদিকে এর “উৎপাতের” বিপক্ষে লেখা-লেখিকে “কচলানো লেবুর চর্চা” বলে তাচ্ছিল্য করছেন। মুক্তমনার বহু পাঠক-পাঠিকার মত আপনার স্ব-বিরোধী ‘উচ্চ-মার্গের’ বক্তব্য ভীষন বিভ্রান্তিকর। ২) মুক্ত-মনার অধিকাংশ লেখক বাংলাদেশী /বাংগালী – তাই ইসলামের ‘উৎপাতে(আপনার ভাষায়)’ প্রতক্ষ্য বা পরোক্ষভাবে কোন না কোন ভাবে আক্রান্ত। সে কারনে এ বিষয়ে বেশি লেখা হয়। এর পরেও আমি মনে করি মুক্তমনায় অন্যান্য বিষয়ের তুলানায় ‘এ লেখা’ যৎসামান্য। আমি মনে করি ‘ধর্মীয় কুসংস্কারের’ বিরুদ্ধে আরো বেশী লেখা উচিত।
সমস্যা সমস্যায়। কোনটা বেশী কোনটা কম সেটার অনেকটাই ‘ব্যক্তি-নির্ভর’ জাজমেন্ট। ‘হাত বেশী গুরুত্ব-পূর্ন নাকি পা’ এ আলোচনা অর্থহীন। আপনার যে সমস্যাকে “বেশী জ্বলন্ত” মনে হয় সে বিষয়ের উপর লিখুন, আলোচনা করুন। কিছু মানুষের কোন কোন “বিষয় বা বস্তুর” Allergy/Hypersensitivity থাকে, এবং সে কারনে স্বাবাভিক কিংবা স্বল্প-মাত্রাতেও সে সেইব বস্তু/বিষয়ের প্রতি ‘অতিমাত্রায় প্রতিক্রিয়া’ দেখায়। বিভিন্ন সময় করা আপনার ‘মন্তব্য গুলো’ এবং আজকের এই প্রবন্ধ পড়ে আমার মনে হয়েছে ‘ইসলাম সংক্রান্ত’ কুসংস্কার বিরোধী লেখায় আপনি ভীষন Allergic/Hypersensitive. আপনার মতামতের আমি শ্রদ্ধা করি, কিন্তু একমত হতে পারি না।
আগেই উল্লেখ করেছি “উন্নততর উৎপাদনের জন্ম” না দিয়েও “ধর্ম” হাজার হাজার বছর ধরে টিকে আছে। ‘”ধর্ম” নামক বেড়াজাল থেকে বেড়িয়ে না আসতে পারলে ‘উৎপাদন” বাধাগ্রস্থ হয়, আলৌকিকত্বে
বিশ্বাস বাড়ে এবং মানুষ ধর্মীয় কুসংস্কারকে আরো বেশী বেশী আঁকড়ে ধরে।
ভাল থাকুন।
Correction:
আমি মনে করি না যে কোন ধর্মের “অন্ধকার দিকগুলো” প্রকাশ করতে হলে তাকে ব্যালান্স করার জন্য ‘তুলনা-মূলক ধর্ম তত্ব” আলোচনা করতে হবে।
Correction:
মুক্তমনার বহু পাঠক-পাঠিকার মত ‘আমার কাছেও‘ আপনার স্ব-বিরোধী ‘উচ্চ-মার্গের’ বক্তব্য ভীষন বিভ্রান্তিকর
@গোলাপ,আপনার লেখাটি বিপ্লব যা বলতে চাইছে তার একদম নির্যাস ধারন করে আছে। প্রতি লাইনে অজ্ঞতা ধারনে করে একটা বিরক্তিকর ফিস্কিং (Fisking)করে মনে করছেন বক্তব্য রিফিউট করতে পারছেন। এভাবে ফিস্কিং করবেন না, এটা একদম সুখপাঠ্য নয় এবং বিতর্কে কোনো ভ্যালু যোগ করে না।
” ইতিহাস সাক্ষ্য দেই, ‘প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম’ প্রতিষ্ঠার পর থেকে মানুষে বিভাজন বৃদ্ধি পেয়েছে, হানা-হানি/যুদ্ধ খুনা-খুনী বৃদ্ধি পেয়েছে।”- এই একলাইনের দাম্ভিক উচ্চারনই বুঝিয়ে দেয় আপনার মনোম্যানিয়া কত ব্যপক। দয়া করে ইন্টারনেটে সময় পেলে Steven Pinker এর নতুন বই The Better Angels of Our Nature এর কোন ভালো রিভিউ পড়ে নেবেন। হান্টার-গেদারার গোষ্ঠীতেই ভায়োলেন্স ছিলো সর্বোচ্চ। মানুষ যত একের পর এক সামাজিক প্রতিষ্ঠান গড়েছে তত ভায়োলেন্স এর প্রাতিষ্ঠানিক মনোপলাইজেশনের মাধ্যমে সাধারনের মধ্যে ভায়োলেন্স কমেছে। প্রতিটি এ্স্টাবলিশমেন্ট ধর্ম এসে সমাজের ভায়োলেন্স কমিয়েছে, অর্ডার বাড়িয়েছে।
@সফিক,
আপনার কাছে এ লিখাটিকে “অসাধারন” মনে হয়েছে, আমার কাছে মনে হয়েছে তার বিপরীত।তার কারনও উল্লেখ করেছি ‘পয়েন্ট বাই পয়েন্ট’ উল্লেখ করে। বিতর্কে কোন ভ্যালু যোগ হয়েছে কিনা তা ব্যক্তি নির্ভর মতামত। সবার বিচার বিবেচনা একই রকম হয় না।
@গোলাপ,
সংঘবদ্ধ ভাবে হোমো ইরেক্টাসরা বা স্যাপিয়েন্সরা ধর্ম ছারাও জীবন জাপন করেছে -এটা ঠিক। কিন্ত যেটা আপনি ভুল করলেন এখানে
(১) ধর্মের জন্ম মূলত “জটিল সামাজিক স্ট্রাকচারের” সাথে যুক্ত। রাজ্য , দেশ রাষ্ট্রএর উদ্ভবের সাথে সাথে ধর্ম নামক সাংস্কৃতিক এলিমেন্টটির দরকার ছিল বা যে সব গোষ্টি এই ধর্মকে নির্ভর করেছে তাদের রিপ্রোডাক্টিভ ফিটনেস নানান কারনে বেড়েছে। মূলত তা বেড়েছে আরো শৃঙ্খলাবদ্ধ সামাজিক জীবনের জন্যে।
রিপ্রোডাক্টিভ ফিটনেসের সাথে ধর্মের সম্পর্ক নিবিড়। ধার্মিক সমাজে সংখ্যাবৃদ্ধির হার কিছু বেশী ছিল। এখানে ধর্মের সাথে ইতিহাস এবং সমাজ বিবর্তনের ওপর অনেক গুরুত্বপূর্ন কিছু ব্লগ আছে । দেখতে পারেন।
(২) আপনাকে একটা সহজ প্রশ্ন করি। নাস্তিক যুক্তিবাদি সমাজ ৩০০০ বছর আগেও ছিল। বৌদ্ধ এবং জৈনরা এর প্রমান। তারা টিকল না-টিকল যুক্তিবাদের দৃষ্টিতে তাদের থেকেও নিকৃষ্ট ধর্মগুলি। কেন? এই প্রশ্নটা আগে নিজেকে করুন। আমার প্রবন্ধটি বুঝতে পারবেন।
বিজ্ঞানের দর্শনটা ঠিক কি?
বিজ্ঞানের দর্শন হল একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্যে একটা ফ্রেমওয়ার্ক যেখানে “ত্রুটির” ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকে। ত্রুটির ওপর নিয়ন্ত্রন আনার একমাত্র উপায়, প্রতিটা সিদ্ধান্তেকে ফলসিফাই করা। বিরুদ্ধাচরন থেকেই “ক্রিটিক্যাল” দৃষ্টিভংগী নির্নীত হয়।
যারা ধর্মের বিরুদ্ধে লেখালেখি করছেন-তাদের অধিকাংশের লেখা বেশ দুর্বল।
কেন জানেন?
কারন লেখাগুলির মধ্যে এই “ক্রিটিক্যাল” দৃষ্টিভংগী-অর্থাৎ, নিজেদের সিদ্ধান্তগুলিকে ফলসিফাই করার প্রবণতা কম থাকে। ফলে তারা চিন্তাভাবনার গভীরে ঢুকতে পারছে না।
সিন্থেসিসের জন্যে থিসিস এবং এন্টিথিসিস দুটোই লাগে। শুধু থিসিস থেকে সিন্থেসিস হয় না।
নতুন চিন্তার সংশ্লেষনের একমাত্র উপায় ডায়ালেক্টিক চিন্তাধারা।
যা সদালাপের ধার্মিক লেখকেদের মধ্যে অনুপস্থিত-তাই সেগুলো নিম্নমানের লেখা। কিন্ত নিধার্মিকদের যুক্তিবাদি লেখার মধ্যে সেই ক্রিটিক্যাল দৃষ্টি ভংগী থাকবে না কেন?
হজরত মহম্মদ মহান এর সপক্ষে ১০০ টা যুক্তি দেওয়া যায়-হজরত মহম্মদ সব থেকে খচ্চর লোক ছিল তার সপক্ষে আরো ১০০ টা যুক্তি দেওয়া যায়। তাতে কি কিছু সিন্থেসিস হয়।
সিন্থেসিস তখনই হবে যখন একজন লেখক দুটোদিক গভীর ভাবে বিবেচনা করার ক্ষমতা রাখবে।
এতটা যখন বল্লাম, এবার আপনার লেখা থেকে দেখায় ডায়ালেক্টিক ( দ্বান্দিক) লজিক না প্রয়োগ করলে, লেখা কেন বালখিল্য হয়। পরের মন্তব্যটা সেই দৃষ্টী থেকেই তুলে দিচ্ছি। আরো এরকম অনেক তুলে দিতে পারি আপনার মন্তব্য থেকে। শুধু একটা দেখাচ্ছি।
এটা তথ্যগত ভাবে ভুল। ইসলামের বিরুদ্ধে প্রতিটি যুগেই নতুন চিন্তাধারা এসেছে। আরবেই অনেক মুক্ত চিন্তাবিদের জন্ম হয়েছে-ইবনে সিনহা ( ৯৮০-১০৩৭) লিখেছিলেন কোরানের পরকালের ধারনা ইত্যাদি সব ফালতু। ইসলামের বিরুদ্ধে সমালোচনার ইতিহাস লম্বা।
আবার এটাও ঠিক রাষ্ট্র এবং রাজনীতি ইসলামের সমালোচনাকে গলাটিপে মারার চেষ্টা করেছে।
সুফী ইসলাম মূলতা রাজনৈতিক ইসলামের বিরোধিতা থেকে জন্ম নিয়েছিল। তারা কোন কোন রাষ্ট্রএ সমাদৃত কোথাও নিন্দিত।
সুতরাং এই ধরনের ব্লাঙ্কেট মন্তব্য মোটেও সত্য উপস্থাপন করে না।
সত্যের আসল রূপ সর্বদা দ্বান্দিক। এটা না করলে, ধার্মিক এবং নিধার্মিকদের মান এক লেভেলেই থাকবে।
@বিপ্লব পাল,
অর্থাৎ আপনি বলতে চাচ্ছেন যেহেতু ‘নাস্তিক যুক্তিবাদি সমাজ এবং বৌদ্ধ এবং জৈনরা’ উন্নত উৎপাদন দিতে ব্যার্থ- (আপনার ভাষায়) বলেই তা টিকতে পারে নাই। আর ‘ধর্মান্ধতা’ তা দিতে পেরেছিল বলেই ‘টিকে আছে’। সোজা ভাষায় ‘ইশ্ব্র্রর আবিশ্বাসীরা’ ধার্মিক /ধর্মান্ধদের তুলানায় অপেক্ষাকৃত স্বল্প উৎপাদনশীল গুষ্ঠী (?!)। দুঃখিত, আমি আপনার সাথে আবারো একেবারেই একমত নই। এসব আজগুবি ‘যুক্তি’ ধর্মান্ধ ব্যক্তিরায় যুগে যুগে দিয়ে এসেছে তাদের “শ্রেষ্ঠত্থ/প্রভুত্থ/আধিপত্ত (Supremacy) এবং নিরিশ্বরবাদীদের হেয় প্রমান করার জন্য।
দেখুন ডঃ পাল, ধর্ম-তত্ব (Theology) বিষয়টি বড় জটীল বিষয়। আপনার মনগড়া ‘উৎপাদন নির্ভর’ তত্ব দিয়ে এর কোন কিছুই ব্যাখা করা যাবে না। প্রতি বছর শুধু বাংলাদেশ থেকেই হাজীরা কমপক্ষে ২৫০০ কোটী টাকা হ্ব্জ বাবদ খরচ করে, প্রতিটি ধর্মের ধর্মানুসারীরা ‘প্রাত্যহিক’ ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানাদিতে ‘সময়-অর্থ-মেধা’ খরচ করে আসছে হাজার হাজার বছর ধরে। এ বিধিগুলো স্পষ্টতঃই তার ‘ব্যক্তি উৎপাদনের’ সহায়ক নয়। তা সত্বেও তা চলছে যুগের পর যুগ বংশ-পরস্পরায়। ‘প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের’ উৎপত্তি ও প্রসার কিভাবে হয়েছে তা যদি খুবই সংক্ষিপ্তভাবে বলতে হয়, তাহলে হবে এরকমঃ
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, যে কেহই এই ‘শাসক+জাজাক চক্রের” বিরোধিতা করেছে তাদেরকে ‘অমানুষিক নিষ্ঠুরতায়’ দমন করা হয়েছে। ‘ইশ্ব্র্রর আবিশ্বাসীরা’ ধার্মিক /ধর্মান্ধদের তুলানায় অপেক্ষাকৃত স্বল্প উৎপাদনশীল গুষ্ঠী (?!) বলে ‘বিফল-কাম’ হয়েছে এ তথ্য সত্য নয়, “প্রচারনা (Myth)”.
‘ইসলামের সমালোচনাকে গলাটিপে মারার’ দিনের কোন বিশেষ পরিবর্তন হয় নাই। সে কারনেই তো ‘যুক্তি-বাদীরা’ কলম ধরেছে। “যুক্তিবাদী চেতনা” প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে যদি ‘ধর্মকে বিবর্তিত’ করে সমাজ ও পরিবেশের’ ক্ষতি সাধন থেকে বিরত রক্ষার সার্থে কে কি কি ভুমিকা রাখছে সেটাই হলো মুল বিবেচ্য। মুক্ত-মনাকে অনেক ধন্যবাদ এই প্লাট-ফর্মকি তৈরি করার জন্য। আপনার বিভিন্ন সময়ের মন্তব্য এবং এই প্রবন্ধ পড়ে আমার মনে হয় নি যে আপনি ‘এর পক্ষের শক্তি’। জীবনের সমস্যা বহুবিধ। অধিকাংশ সমস্যাই পরস্পরের সম্পুর্ক-যুক্ত। একটা ‘সমস্যা’ নিয়ে আলোকপাত করতে হলে আরেক ‘সমস্যার আলোকপাতকারী লেখক ও পাঠককে’ তাচ্ছিল্য (কচলানু লেবু) করতে হবে বা বাধা দিতে হবে এর কোন যুক্তি নেই।
অনেক মন্তব্য-কারীই বলেছেন তারা ‘মুক্তমনার লিখা থেকে’ অনেক উপকৃত হয়েছে, আমি নিজেও। আমি মুক্ত-মনার অনেক পুরনো পাঠক, সেই প্রথম থেকে। “কুরান-সিরাত-হাদিসের’ আলোকে আসুন না আমরা আলোচনা করি, আসল সত্য বের করার চেষ্টা করি। উপযুক্ত রেফারেন্সের বিচার করে যে তারা আসলেই ‘ইসলামের নামে’ মিথ্যা/ঘৃনা ছড়াচ্ছে (ইস্লামীষ্টদের ভাষা) নাকি ‘অজানা সত্য উৎঘাটন করছে’ তা যাচাই-বাছাই করে দেখি। আপনাকেও আমি উদার্থ আহ্বান জানাচ্ছি এ বিতর্কে অংশ নেয়ার জন্য। এতে পাঠকরা উপকৃত হবে। এ ছাড়া আপনার ‘উচ্চ-মার্গের ফিলসফিকাল মন্তব্য’ ধর্মান্ধদেরই বেশী উপকারে আসবে।
@গোলাপ,
বৌদ্ধ এবং জৈনরা যে হেরে গেছে জীবন যুদ্ধে এটাত প্রমাণিত ইতিহাস। যে সিস্টেমটা নির্বাচিত হল, সেটা হিন্দু বা মুসলিম আইন না। সেটা বৃটিশ আইন।
সেটার ব্যখ্যা দিন আগে। সেটা না দিয়ে হজ্জ্বর প্রসংগ উঠছে কেন? বলা হল ত এই যুগে ইসলামের উৎপাদন শক্তি নেই। আপনি ত যুক্তিগুলিই ঠিক ঠাক বুঝে উঠতে পারেন নি।
আপনাকে বিবর্তনের সূত্রগুলি আগে ভাল করে বুঝতে হবে। মুসলিমরা আমাদের মেরে ধরে হারিয়ে দখল করে নিয়েছে, তাই আমরা পারি নি- এর অন্য অর্থ হল, মুসলি্মদের মিলিটারী শক্তি সেই সময় বেশী ছিল। আর উন্নত মিলিটারি, উন্নত উৎপাদন শক্তি্র পরিচয়।
সেটাই ভারতের ইতিহাসে হয়েছে। মুঘল আমলে ভারতের সমৃদ্ধির মূল কারন-মুঘল সরকারি ব্যবস্থা বা রাজস্ব সিস্টেম। তার স্বপতি আবুল ফজল আবার রাজনৈতিক দর্শনের শিক্ষা পেয়েছিলেন গ্রীক দর্শন থেকে। মুঘল এবং অটোমান-দুই বৃহত্তম সাম্রাজ্যের কেও শরিয়া বা মুসলিম আইন দিয়ে বা আরবের সংস্কৃতি ইম্পোর্ট করে নি। তারা গ্রীক-রোমান সভ্যতা থেকেই তাদের সিস্টেম সাজিয়েছে -এবং সেই কারনে ্তৎকালী্ন সময়ের উন্নত ব্যবস্থা দিতে পেরেছে।
আপনি বরং বিবর্তন কি ভাবে কাজ করে, সেটা আগে নিজের কাছে পরিস্কার করুন। নইলে উৎপাদন ব্যবস্থাটার গুরুত্ব আপনি বুঝতে অক্ষম হচ্ছেন।
@গোলাপ,
আপনার মন্তব্যগুলো পড়ে যারপরনাই হতাশ। কারণগুলি নীচেই ব্যাখ্যা করছি:
ইসলামের কথাই ধরা যাক। আরবের আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগে ‘ইসলাম’ একটা বিরাট সামাজিক আন্দোলন-রূপে আবির্ভূত হয়েছিল; যাযাবর আরবদের একতাবদ্ধ ও নিয়মতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে যে সংস্কার ভীষণ জরুরি ছিল। আজকের যুগের প্রেক্ষাপটে তাকে বিচার করলে চলবে না; ঔ সময়ের ও সমাজের প্রেক্ষিতে দেখতে হবে।
আপনি বুঝতে ভুল করেছেন। ‘ইসলাম নিয়ে মাতামাতি’ বলতে বিপ্লব-দা বোঝাতে চেয়েছেন, দুর্বল ও গোলাম হয়ে থাকা ইসলাম তখন পাশ্চাত্য শক্তির কাছে কোন আলোচনা-সমালোচনারই বিষয়বস্তু ছিল না। তেল আবিষ্কারের পরই পাশ্চাত্য ইসলামি দেশগুলোকে নিয়ে নতুন করে কর্নসার্ন্ড হয়। দেশগুলোতে বশংবদ সৃষ্টি করে এবং সংস্কার রুখতে মৌলবাদকে আস্কারা দেয় যা থেকে আজকের ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের উৎপত্তি এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে ‘ইসলাম ফোবিয়া’র জন্ম।
আপনি ‘পশ্চাৎপদ’ সমাজ বলতে আসলে কি বুঝাতে চাইছেন? অভাবী সমাজ আপনার কাছে পশ্চাৎপদ? আমার তো মনে হয়, পশ্চাৎপদ বলতে জ্ঞান-বিজ্ঞানে পিছিয়ে পড়া বোঝায়; যে কারণে আমার কাছে ধনী রাষ্ট্র সৌদি আরব অনেক অনেক বেশী পশ্চাৎপদ। আর বিপ্লব-দা মনে হয় বোঝাতে চেয়েছেন যে, আজকে বাংলাদেশের মত মুসলিম রাষ্ট্রগুলোতে সৌদি প্রভাব ফলানোর একমাত্র কারণ হল তেলের টাকা। যখন এই তেলের টাকা শেষ হয়ে যাবে, তখন সৌদি সারা পৃথিবীতে ‘ওয়াহাবী’ নামক ‘ভাইরাস’ এত অবলীলায় ছড়াতে পারবে না।
বাংলাদেশে ইসলাম ধর্মে কনভার্সনের জন্য দলে দলে লোক এসেছিল ‘জাত-পাতের’ ভেদ থেকে মুক্ত হতে। তখন আজকের মত কোরআন ও ইসলাম বিষয়ে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করার কথা ভাবতেই পারত না। ইসলাম তাদের কাছে ছিল শুধু একটা ভিন্ন পথের জীবন, যেখানে তারা কিছু সামাজিক অনাচার থেকে মুক্তি তালাশ করছিল। তাই এটা খুবই সম্ভব যে, অনেকেই কোরানের কথা জানত না। আজও গ্রামীণ বাংলাদেশে দেখতে পাবেন, অনেক মুসলিমই ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের অনেক নিয়ম-কানুনকেই গুলিয়ে ফেলে। চাইলেই তাদের কাছে কোরান ও গিতাকে উল্টো করে হাজির করতে পারবেন!
আশ্চর্য! আশ্চর্য! এটা কি বললেন? অপ্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের পূর্বে লক্ষ লক্ষ বছর মানুষ যে শিকারি জীবন যাপন করেছে, তা তো অনেকটাই জন্তুদের মত জীবন। অভিজিৎ -দার লেখাতেই পেয়েছি, তখনকার পুরুষদের কিভাবে পশুদের মত লড়াই করে একটা নারীকে দখলে রাখতে হত ও বংশবিস্তার করতে হত! মানছি, প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম প্রতিষ্ঠার পরও অনেক হানাহানি-যুদ্ধ-বিবাদ হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। কিন্তু ধর্মের অনুপযোগিতা প্রমাণ করতে সেই শিকারি মানুষদের জীবনকে ধর্ম প্রতিষ্ঠার পরবর্তী জীবনের তুলনায় শ্রেয়তর বলবেন? আশ্চর্য! আশ্চর্য।
@কাজি মামুন,
এ সমস্ত গত বাঁধা “ডাঁহা মিথ্যা ভাষন” ছোট কাল থেকে মসজিদ-মাদ্রাসা ও ইসলামী ওয়াজ মাহফিলে শুনে এসেছি।শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে তা বংশ পরস্পরায় চলে এসেছে ‘হুজুর-মোল্লা-মৌলভী’ সাহেবদের কল্যানে। নতুন কিছু যদি জানতে চান তবে অনুগ্রহ করে আবুল কাশেমের অনুবাদিত “এম, এ, খানের ইংরেজি বই “জিহাদঃ জবরদস্তিমূলক ধর্মান্তরকরণ, সাম্রাজ্যবাদ ও ক্রীতদাসত্বের উত্তরাধিকার” ধারাবাহিক প্রবন্ধটি অনুসরন করুন।মুক্তমনায় তিনি “ইসলামে বর্বরতা” নামে ধারাবাহিক ভাবে তা প্রকাশ করছেন। আমার বিশ্বাস অনেকের চোখই কপালে উঠবে। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময় এই মুক্ত মনাতেই করা আমার মন্তব্য গুলো দেখতে পারেনঃ এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
@গোলাপ,
যারা তলোয়ার তত্ত্বের স্বপ্নে বাংলাদেশে ইসলাম কায়েম নিয়ে বিভোর তাদের ভয়াবহ মুক্ত চক্ষুকে আরো মুক্ত করতে নিচের বইটির লিঙ্ক দিলাম। কলোনিয়াল স্টেরিওটাইপিং থেকে বের হতে এটা আপনাদের সাহায্য করবে।
Eaton, Richard M. The Rise of Islam and the Bengal Frontier, 1204-1760. Berkeley: University of California Press, c1993-
ইসলামের সমালোচনা হোক এবং আরো হওয়া দরকার এবং তা আরো তীব্র আরো যুক্তিপূর্ণ হোক। ইসলামের সমালোচনা যতটুকু হচ্ছে আর যেভাবে হচ্ছে তার কোনোটাই যথেষ্ট নয়। ১৯ মিরাকল নিয়ে বিশাল সাইজের একটি লেখা দিয়েছিলাম এখানে, উদ্দেশ্য ছিল যাতে আর কখনো এটা নিয়ে কেউ প্রতারণায় না নামতে পারে। কিন্তু দেখুন কী অবস্থা হচ্ছে এখানে। আমি হলফ করে বলতে পারি ওখানে যা হচ্ছে তার কোনো অবদান নেই চৌদি পেট্রোডলারের।
কিন্তু মুক্তমনায় অন্যান্য বিষয়গুলোও বেশি পরিমাণে আসা দরকার। আপনার এ বিষয় জোর দেয়া দরকার ছিল। অন্যান্য বিষয় নিয়ে লেখতে হলে ইসলাম প্রসংগ বাদ দিতে হবে কেন? ইসলাম কি তার তরবারি আমাদের কাধের উপর তোলে রাখে নি? আমরা যারা বাংলাদেশি তারা প্রতিটি মুহূর্ত ইসলাম নিয়ে ভয়ে আছি। সারাটি দেশে একযোগে বোমা হামলা হল ইসলামকে ব্যবহার করে। হুমায়ুন আজাদের উপর হামলা আমরা কি ভুলে যাব? বিষফোড়ার মত একটি রাজাকার দল রাজনীতির খেল দেখিয়ে যাচ্ছে আমাদের। খা-লেদাও শুরু করেছেন ইসলাম নিয়ে ঘৃণ্য রাজনীতি। ইসলাম যতদিন থাকবে ততদিন তার ব্যবহার চলবেই।
এখন ইসলাম নিয়ে যেরকম লেখা আসছে অন্য বিষয় নিয়ে সেরকম লেখা মুক্তমনায় কেন আসছে না তা নিয়ে একটু ভাবা দরকার। কারণ হল, ইসলাম সহ অন্যান্য ধর্ম নিয়ে যতটা মন খোলে লেখা যায় মুক্তমনায় অন্য ব্লগে তার সুযোগ অতটা নেই। একমাত্র মুক্তমনাই ধর্মবিরোধী চেতনা ধারণ করে।
আরেকটি বিষয় আপনি হয়ত খেয়াল করবেন। মোটামুটি উদার সকল বাংলাদেশি নিয়ন্ত্রিত ব্লগেই ইসলাম নিয়ে ব্যাপক হৈচৈ হয়। মুসলমানরা সকল মাধ্যমে ধর্মবিরোধিতাকে সম্পূর্ণ বন্ধ করতে বদ্ধ পরিকর কিন্তু ব্লগে তারা অতটা পারছে না। তাই সকল ব্লগেই ঘুরেফিরে একই অবস্থা। আর ইসলাম ধর্মটাও মাসাল্লা, সবকিছুতেই রয়েছে তার হুকুম-আহকাম, সকল কিছুতেই ঢুকে যেতে চায়।
আপনি ইসলাম যেভাবে শান্তিপূর্ণ উপায়ে এসে হঠাৎ আরবের টাকা পেয়ে হিংস্র হয়ে গেছে বলে ভাবছেন তা অতি সরলীকরণ। আপনার দরকার দেরী না করে এম, এ, খান এর ‘জিহাদ’ বইটি পড়ে ফেলা। আবুল কাশেম কিছু অধ্যায় মুক্তমনায় পোস্ট করেছেন দেখবেন তাঁর ব্লগে।
@সৈকত চৌধুরী,
”আর ইসলাম ধর্মটাও মাসাল্লা, সবকিছুতেই রয়েছে তার হুকুম-আহকাম, সকল কিছুতেই ঢুকে যেতে চায়। ”- ব্যাপক মজা পাইলাম।
@সৈকত চৌধুরী,
ইসলাম সম্পর্কে সত্য উদ্ঘাটনে যাঁদের প্রানে ব্যথার উদ্রেক হয় তাদের সবারই এই বইগুলো পড়া দরকার। (Y)
কোরানের মিরাকেল ১৯ এর উনিশ বিশ
লেখকঃ শৈকত চৌধুরী ও অনন্ত বিজয় দাস
তাং আগষ্ট ১৮,২০০৯\
জনাব শৈকত চৌধুরী,
আপনার উক্ত প্রবন্ধটি আমার অত্যন্ত কাজে লেগেছে। ওটা সব সময় মুক্তমনা ওয়েব ছাইটে ছেভ করে রাখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।বরং সম্ভব হলে আরো বিভিন্ন ভবে প্রকাশিত করুন।
ঘটনাটি তাহলে এবার বিস্তারিত খুলে বলি। আমার বড় ভাই ব্যারিস্টার আঃ হালিম চাকলাদার, ঢাকা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট এ দীর্ঘ দিন যাবত আইন পেশায় নিয়োজিত। প্রতি বৎসরের ন্যায় এ বৎসর ও গ্রীস্মের ছুটিতে আমার কাছে প্রায় ১ মাসের জন্য ভ্রমনে এসেছিলেন।মাত্র সপ্তাহ খানেক হল ফেরত ও চলে গিয়েছেন।
আমি তো মুক্তমনার লেখকদের পোষ্টিং ও মন্তব্য নিয়মিত পড়ি ও কিছু কিছু তাকেও শুনাইতাম।
তিনি নিয়মিত মসজিদে যাতায়াত কারি ও হাজি ও।
তিনি একদিন বলিলেন কোরান যে আল্লাহর বানি এটাত একজন বিদেশি কম্পিউটার বিশারদ ১৯ র মিরাকল দ্বারা প্রমান করিয়াছন। কোন মানুষের তৈরী পুস্তকে এরুপ থাকা সম্ভব নয়। কয়েক বৎসর পূর্বে ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত সে অংস টুকু আমি আমার সহকর্মিদের দেখিয়েছি ও সযত্নে তুলে রেখেছি।
তোর মুক্তমনা লেখকদের জিজ্ঞাসা করে দেখতো এর কি উত্তর দেয়?
তখন আমি আপনার ও অনন্ত বিজয় দাসের লেখা ঐ প্রবন্ধটি সম্পুর্ন তাকে পড়িয়া শুনাইলাম।
তিনি এতে পরিপূর্ন তৃপ্ত হইলেন এবং নিজের ভূল ধারনা হইতে প্রত্যাবর্তন করিলেন এবং বলিলেন রাসাদ খলিফা যে একজন নারী ধর্সক,নিজেকে নবী বলে দাবীকারী,কোরানে নিজের নাম ঢুকানো, সুরা তওবার শেষের দুই বাক্য বাদ দেওয়া, এসমস্ত ঘটনা তো আমাদর দেশের পত্রিকায় দেয় নাই। সম্ভবতঃ তারা এত কিছু জনেনা।
আরো interesting ঘটনা:
এর পর আমরা দুজনে নিকটস্থ মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়িতে গেলাম। নামাজ শেষে মসজিদের ইমাম মাওলানা সাহেবের সম্মুখে একটি কোরান খুলিয়া ও বিছমিল্লাহ দেখাইয়া উহাতে কয়টি অক্ষর আছে গুনিয়া দেখাইতে বলিলাম। মাওলানা সাহেব না গুনিয়াই বলিয়া দিলেন ১৯টা। আমি বলিলাম তাশদীদ যুক্ত অক্ষর ২টা অক্ষরের সমান এবং খাড়া যবর একটা আলিফ হিসাবে গণিয়া ১৯ টা পূরন করুন।
তখন মাওলানা সাহেব বলিলেন এটা বুখারি হাদিছে আছে। এর উপর একটি চমৎকার বর্ননা আছে। আমি জুমায় বর্ননা করিব।
এরপর আমিও ভাই বেরিয়ে এলাম এবং ভাইকে বল্লাম দেখ গনিয়া ১৯ পুরন করিতে না পারিয়া শেষে হাদিছ বোখারির রেফারেন্স দিলেন।
ভাই বলিলেন হাদিছ বোখারীতে এটা থাকতে যাবে কেন? মাওলানা সাহেব তোর প্রশ্নে বড় বিপদে পড়ে গিয়েছিলেন, এ নিয়ে আর কখনো জিজ্ঞাসা করতে যাবিনা।
আপনাদের মত বিজ্ঞ লেখক গন যদি ধর্মিয় ধোকাবাজির ব্যাপারে মুক্তমনায় তুলে না ধরেন তাহলে সাধারন মানুষগন ধর্মিয় ধোকাবাজি হতে রক্ষা পাওয়ার আর কোনই পথ
নাই।
প্রবন্ধটি মুক্তমনায় দেওয়ার জন্য আপনাক ও অনন্ত বিজয় দাস কে অশেষ ধন্যবাদ।
ধন্যবাদান্তে
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
পরিবেশ বিপর্যয়ের উপর বেশ কিছু কার্টুন পাবেন এখানেঃ
দু’য়েকটা ছবি দিতে গিয়েও পারিনি, মানে জানিনা। খুব প্রাসঙ্গিক বলে লিঙ্কটা দিয়ে দিলাম।
@স্বপন মাঝি,
লিংকটা দিয়ে একটা কাজের কাজ করেছেন ভাই, জানা ছিল না। টপিকগুলো গুরুত্বপূর্ণ আর কার্টুন গুলো তাৎপর্যপূর্ণ।
লেখাটা খুবই ভালো লাগলো। এক্কেবারে মনের কথা বলেছেন।
বাংলাদেশের শিক্ষাব্যাবস্থার উন্নতি, পরিবেশ দূষণ নিরসন, অর্থনৈতিক উৎপাদন ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ, উত্তরবঙ্গে ই পি জেড, আফ্রিকায় জমি চাষ, জাহাজ শিল্পে অংশগ্রহণ, বিজ্ঞানের নানা বিষয়ে রিসার্চ সেন্টার স্থাপনে উদ্যোগ, সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে বিপ্লব সাধন, কৃষিতে সবুজ বিপ্লব সাধন, বিদেশে দক্ষ কর্মী প্রেরণের পূর্বপ্রক্রিয়া সমূহ, রাষ্ট্রনীতি নিয়ে আলোচনা, চীন-বাংলাদেশ-মায়ানমার মেরুকরণ(ভারত থেকে সমীহ পাওয়ার স্বার্থে।), নারী শিক্ষার প্রসার, শিশু মৃত্যু রোধে সচেতনতা, চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে দু এক কথা, শিক্ষাংগনে রাজনীতি, দলীয় তোষামোদী, জিয়া-মুজিব নামক দুই ঈশ্বরের লিংগচ্ছেদ, ব্যাপক মাদকাক্রান্ত যুবসমাজ, ভাইরাল হারে ভইউর মোবাইল ভিডিও ছড়িয়ে পড়া, আশু ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি, সরকারের শেষ দুই বছরের লেজে গোবরে হেগে দেওয়া রাষ্ট্রকাঠামোর সম্ভাব্য ভয়াবহতা, আশু শিবির- লীগ গৃহযুদ্ধ ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয়গুলো আসলে মুক্তমনাদের সুবিশাআআআআআআআআআআআআআল মননে ঠাঁই পায় না।
আর পাবেই বা কীভাবে? তাদের বেশিরভাগ যে দূর পরবাসে তারা গুণে আকাশে আকাশে দেশের জন্য জাবর কাটতে পছন্দ করেন! কাজেই ইসলাম ব্যাশিং আর বিবর্তনবাদ(অবশ্যই এদুটোর প্রয়োজন আছে, তবে উপরের পয়েন্টগুলো আসলেই এক্কেবারে ফেলনা! তাইনা? 😉 ) আর দেশের কচি কচি নাবালেগ মুরীদানরা সবেমাত্র মুক্তমনত্ব অর্জন করায় কেবল হাঁটতে শেখা শিশুর মতন ওই যে ইসলামের পিছু দৌঁড়াচ্ছেন তো দৌঁড়াচ্ছেনই। মাঝ থেকে যে উপরের বিষয়গুলো আমাদের পশ্চাদ্দেশ ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে সেদিকে খেয়ালই নেই! যেন দেশ থেকে ইসলাম দূর হয়ে নাস্তিকতা আসলেই আমরা সবাই অর্থনীতিতে সুইডেন হয়ে যাবো!
আরে ভাই, নাস্তিকতা হলো ব্যক্তিগত ব্যাপার! দেশের অর্থনীতিতে(যার উপরে আক্ষরিক অর্থে সার্বভৌমত্ব নির্ভর করে!) তার ভূমিকা কি? উৎপাদন ব্যবস্থায় আস্তিক-নাস্তিক কি ..টা ছিড়বে?
দেশের এইসব কচি কচি খোকারা মুক্ত মনে আরো কিছু কাজ দ্যাখাক, তাহলেই হবে।
“আমার শুধু একটাই অনুরোধ -ইসলাম নামে এই কচলানো লেবুর চর্চা মুক্তমনাতে কমালে ভাল হয়। পরিবেশ, নগর ব্যাবস্থা, দুর্নীতি, অর্থনৈতিক দুরবস্থা, বেকারত্ব, শ্রমিক শোষন-ইত্যাদি বিষয়গুলি ইসলামের থেকে অনেক বেশী জ্বলন্ত। এই বিষয় গুলি নিয়ে বেশী চর্চা হৌক। ”
সম্পূর্ণ একমত। তবে বর্বরতার বিরুদ্ধে কথা বলাও ফারজ-এ-আইন।
(Y)
মনের কথাটা বলছেন। 🙂 🙂
দুঃখজনক সত্য। (U)
করুনতম যৌক্তিক দাবী। (Y)
সর্বোপরি লিখাটা সময় উপযোগী। কিছুদিন যাবত মুক্তমনার লিখা গুলি কেমন যেন বদ্ধমনের লেখা বলে মনে হচ্ছিল। 🙁
ধন্যবাদ 🙂
মুক্তমনার সবার কাছে নিরপেক্ষ, তথ্য নির্ভর বৈজ্ঞানিক আলোচনাই আশা করি।
মুক্তমনার আমি একজন দারুন ভক্ত। ছোট বেলা থেকেই ধর্মীয় বিষয়ে আমি উদাসহীন । ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে আমার মনে অনেক প্রশ্ন আসতো কিন্তু এ বিষয়ে কারো কাছেই মন খুলে জিজ্ঞাসা করতে পারতাম না। পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞান বিষয়ক কিছু লেখা পড়তাম, এরপর কিছু বই পেলাম এ বিষয় নিয়ে (যেমনঃ- অলৌকিক নয় লৌকিক) কিন্তু কোন ভাবেই মনের পিপাসা মেটাতে পারছিলাম না। এর মধ্যে দেশের বাহিরেও চলে আসলাম তাই এই নিয়ে মাথা ঘামাবার সময়ও পাইনি বেশি। কিন্তু প্রবাসে আসাতে একটা বিষয়ে স্বাধীনতা পেলাম আর সেটা হলো অবাদ ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ। আর যেহেতু আমার “ধর্ম বিষয়ে জিজ্ঞাসা ও বিজ্ঞানের প্রতি ঝোক” তাই এ বিষয়গুলোই খুজতে লাগলাম। আর আমার সেই প্রত্যাসা পূরণ করেছে মুক্তমনা ব্লক সাইটি। বিদেশের বাড়িতে কাজ শেষে মুক্তমনার লেখাগুলোই বার বার পড়ি। আমার আজন্ম প্রশ্নগুলোর উত্তর যেন এখানেই খুঁজে পাই। কারণ, মুক্তমনার প্রত্যেকটি লেখাই তথ্য-প্রমানসহ দেওয়া থাকে, তাই কারো বুঝতে কোন সমস্যা হয়না। আর বুঝতে সমস্যা হলেও প্রশ্ন করার সুযোগ থাকে। এখানে বিপ্লব পাল “ইসলাম এবং একটি কচলানো লেবুর গল্প” বিষয়ে যে লেখাটি দিয়েছে সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু, “ইতিহাস, সমাজবিজ্ঞান, পরিবেশ ও অর্থনীতি” আমাদের সমাজে এসব বিষয় নিয়ে লেখার অনেক দায়িত্বশীল শুভাকাঙ্ক্ষী আছেন। কিন্তু ধর্মীও বিষয়ের মত স্পর্শকাতর বিষয়গুলো নিয়ে সমালোচনা করার ক্ষমতা খুব কম লেখকেরই আছে। আর ইতিহাস, সমাজ, পরিবেশ ও অর্থনীতি যাই বলেন সব কিছুর মধ্যে ধর্ম নামের কু-সংস্কৃতি সব কিছু অন্ধ করে রেখেছে; যেখানে লেখক, রাজনীতিবিদ, ইতিহাসবিদ, সমাজপতিরাও বাদ যাচ্ছেনা। যেমন এখানে আমাদের দেশের একজন বিশিষ্ট লেখককে নিয়ে লেখেছেন টেকি সাফি “হুমায়ূন আহমেদের কিছু লেখাঃ বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও তথ্যের বিকৃতি ও অপবিজ্ঞান নিয়ে কিছু কথা-২” সাথে লিংকটি দেওয়া হলো (http://blog.mukto-mona.com/?p=19074) । আমাদের বিখ্যাত লেখকরা ধর্মীয় মৌলবাদীদের তেল মেরে লিখে যায়। কারন তারা হুমায়ূন আজাদের মত মৌলবাদীদের হাতে বলি হতে চায় না। কিন্তু তাই বলে কি মৌলবাদীর মত ধর্মান্ধ, অপশক্তিদের ভয়ে মুক্তমনার অসীম সাহসী লেখকদের কলম থেমে যাবে??? আমরা জানি, ইতিহাসের যত বর্বরতা, যুদ্ধ, হানা-হানি, অত্যাচার, নির্যাতন এর বেশির ভাগের পিছনেই ধর্মই দায়ী। তাই ধর্মীয় অন্ধ, কু-সংস্কার, ভণ্ডামিকে প্রস্রয় দিয়ে সমাজ ও দেশকে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছনো সম্ভব না।
@জিল্লুর রহমান,
”আমরা জানি, ইতিহাসের যত বর্বরতা, যুদ্ধ, হানা-হানি, অত্যাচার, নির্যাতন এর বেশির ভাগের পিছনেই ধর্মই দায়ী।”
-বেশির ভাগের পেছনে ধর্ম দায়ী কথাটি ঠিক নয়। প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ ধর্মের কারণে হয়নি। নেপোলিয়ন ধর্মের কারণে যুদ্ধ করেনি। আলেক জান্ডার ও ধর্মের কারণে দুনিয়া জুড়ে রক্তপাত করেনি।আর এখন আমেরিকা এবং ব্রিটেন যা করছে তা ও কী ধর্মের কারণে ?
@জিল্লুর রহমান,
আমি খুব একমত না। বাঙালী বুদ্ধিবৃত্তির চর্চার মান বেশ নিম্নমানের। আমরা জ্ঞানে বিজ্ঞানে বুদ্ধিতে মোটেই এগিয়ে নেই। যাদের বাঙালী বুদ্ধিজীবি বলে মানা হয় ( বিতর্ক এড়াতে নাম নিলাম না), তাদের লেখা আন্তর্জাতিক মানেই আসে না। ক্রিটিক্যাল দৃষ্টিভংগীর অভাব। দর্শন বা সমাজ বিজ্ঞানেও পড়াশোনার অভাব বিশেষ ভাবে ধরা পড়ে।
বিপ্লব দা,
বাল গঙ্গাধর তিলক এর মূল বক্তব্য ছিল হিন্দু ধর্মের সংন্স্কারটা হিন্দু ধর্মের মধ্যে থেকেই উঠুক।ইংরেজদের করে দেওয়া আইনের দ্বারা নয়।বিধবা বিবাহ বা সতীদাহ প্রথা রদের সময় তিলক ছিলেন না কিন্তু তিলক বাল্য বিবাহের সপক্ষে ছিলেন এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।
সঙ্গে সঙ্গে এটাও স্বীকার করে নেওয়া ভালো যে তিলকের কথা অনুসারে হিন্দু ধর্মের মধ্যে থেকে দাবি ওঠার পর বাল্য বিবাহ নিষিদ্ধ হলে কত হাজার হাজার বালিকার জীবন ধংস্ব হত সেটা ওনার বা আমাদের ধারণার বাইরে।
কিন্তু সেই সময়ে ইংরাজ বিরোধিতার আমলে তিলকের ভাবনা বা বক্তব্যের ভ্রান্ত ব্যাখ্যা সম্পূর্ন অযৌক্তিক।
@সায়ন ঘোষ, তিলক বাল্য বিবাহের সপক্ষে ছিলেন এবং তার সম্পাদিত পত্রিকায় এর পক্ষে কলমও ধরেছিলেন। আপনি সুনীলের প্রথম আলো উপন্যাসের তিলকের মুখে গুঁজে দেওয়া যে সাফাই আউড়াচ্ছেন তারই কোনো রেফারেন্স নাই। এই লোকই শিবাজী উৎসবের মাধ্যমে ভূভারতে হিন্দুত্ববাদী জাতীয়তার উদগাতা, যা থেকে শুরু এবং পরিণতি বর্তমানের বিজেপি, আর এস এস আর বজরঙ্গবলী। এরকম সাম্প্রদায়িক নেতা স্রেফ ইংরেজ বিরোধিতা করেছেন বলে তাকে সমর্থন করতে হবে এটা সুনীল টাইপ লেখক পারবেন। মুক্তমনারা পারবেন কি?
@সায়ন ঘোষ,
তিলক ছিলেন একজন হিন্দুত্ববাদি এবং সম্পূর্ন হিন্দুত্ববাদের জন্যেই তিনি Age of Consent Act, 1891 এর বিরোধিতা করেছিলেন। অর্থাৎ নাবালিকাদের ধর্ষনের পক্ষেই তিনি রায় দিয়েছেন, যেখানে জিন্না পর্যন্ত এই বিলের অন্যতম কারিগর ছিলেন।
ইতিহাস পড়ে মন্তব্য করঃ
http://en.wikipedia.org/wiki/Age_of_Consent_Act,_1891
While an 1880 case in a Bombay high court by a child-bride, Rukhmabai, renewed discussion of such a law, the death of an eleven-year-old Bengali girl, Phulomnee, due to forceful intercourse by her 35 year old husband in 1889, necessitated intervention by the British.[4] The act was passed in 1891. It received support from Indian reformers such as Behramji Malabari and women social organisations and was opposed by Hindu nationalists including Bal Gangadhar Tilak
(Y) আসল কথা হোল মন খুলে চোখ দেখা। এ ব্লগে অবশ্যই সেটা সম্ভব। সম্ভাবনাময় এমন একটি প্লাটফর্ম যতটা সহজ ভাবে সম্ভব ব্যবহার করা দরকার। সর্বসাধারণের জন্য তা বোধগম্যও যেন হয়।
আপনার যুক্তিগুলোর সাথে একমত। সামগ্রিক বক্তব্যের সাথেও একমত। তবে কিছু জায়গায় সামান্য দ্বিমত আছে।
আপনি বলছেন যে ইসলাম নিয়ে বেশি লাফালফি করাটা লেবু কচলে তিতা হয়ে যাওয়ার মতোই। ঠিক। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থা এখনো সেই পর্যায়ে পৌঁছেনি যে বিরুদ্ধ একটা মত খোলাখুলি প্রকাশ করা যাবে। আমার ধারণা বাংলাদেশের কোনো ছেলে বা মেয়ে যে ভালোমতো ইন্টারনেট ব্যবহার করার সুযোগ পায়নি সে জানেই না যে ইসলামের সমালোচনা করা যায়। তাদের ধারণাতেই থাকে না যে ইসলামের কোনো ভুল-ভ্রান্তি কিংবা এর সমালোচনা করা সম্ভব। তারা মুক্তমনায় এসে এ ধরনের প্রবন্ধগুলো যখন পড়ে তখন বুঝতে পারে যে তাদের ধর্মকে চুপ করে মেনে নেয়নি এমন লোকজনও পৃথিবীতে আছে। এর ফলে তারা ধীরে ধীরে আরো তথ্য জানার জন্য আগ্রহী হয়ে পড়ে। এটাই তাদেরকে নিধার্মিকতার পথে নিয়ে আসে। এসকল প্রবন্ধগুলো আপনার মতো কিংবা মুক্তমনার লেখকদের মতো লোকজনের বিরক্তির কারণ হতে পারে কিন্তু সত্যিকার অর্থে প্রবন্ধগুলো কার্যকর। আমি নিজের কথাই বলি। আমি সেই ক্লাস নাইন টেন থেকে ধর্মের প্রতি বিশাস হারাতে থাকি। কিছু বিষয়ে আমি বুঝতাম যে ধর্ম সঠিক ব্যাখ্যা দিচ্ছে না। কিন্তু বন্ধুমহলে তা প্রতিষ্ঠিত করার মতো জানাশোনা আর লেখাপড়া আমার ছিল না। মুক্তমনায় যে কেও ওসব ব্যাখ্যা, যুক্তি, তথ্য খুঁজে পাবে আর নিজের চিন্তার জন্য খুব শক্তিশালী একটা ভিত্তি পাবে। তাই আমি মনে করি এখনো ইসলামের সমালোচনা লেখার প্রয়োজনীয়তা আছে বৈকি।
@নিটোল, (Y)
দেড় হাজার বছর কি দীর্ঘ সময় নয়?
@তামান্না ঝুমু,
ইসলাম এক সময় পৃথিবীর সব থেকে উন্নত উৎপাদন ব্যবস্থা দিয়েছে-সেটা ৭০০-১২০০।
মুরদের নিয়ে পড়াশোনা করলে এটা জানতে পারতে।
তারপরে ইসলাম কোথায় গেল? অটোমানদের দৌলতে ইসলামের আধিপত্য তাও ১৮২৪ ( গ্রীসের স্বাধীনতা যুদ্ধ) পর্যন্ত টিকেছে। তারপর থেকে তারা পাশ্চাত্যের গোলাম। তেলের আবিস্কার এই ভূমিকা কিছুটা বদলেছে। সবুজ বিপ্লব এবং তেল, দুটীই ইসলামকে কিছুটা অক্সিজেন দিয়েছে-সেটাও আর বেশী দিন থাকবে না।
ধর্মের সাথে সায়েন্সের প্রত্যক্ষ কোন সম্পর্ক নাই এটা সোজা কথা । তাহলে কেন এই ব্লগের সবগুলো ট্যাগে ধর্ম থাকে ? প্রথম পাতার সবগুলো পোস্টেই ধর্ম নিয়ে হাসাহাসি করা হয়েছে । মুহম্মদের নাম ব্যঙ্গ করে ফান পোস্ট দেয়াটাকি তথাকথিত মানবতাবাদ / যুক্তিবাদ / সায়েন্সমনষ্ক কাজ ? দেশের শীর্ষ ব্লগে সৌদি আরবের ব্যাপারটা নিয়ে একটা স্টিকি পোস্ট ছিল । বারো ঘন্টা হওয়ার আগেই সেইটার আঠাও ফুরাইল পোস্টটাও গায়েব এবং পোস্টদাতা জেনারেল পদে উন্নীত । 😀 নাস্তিক মানে কি আমি ভাল করেই জানি । নাস্তিরা ধর্মের ব্যাপারে সম্পূর্ণ উদাসীন । তারা ধর্মবিষয়ক কিছুতে জড়াতে চায় না । কোন ধর্মের বিরুদ্ধে কিছু বললে তারা বিরক্ত হয় । ধর্ম বিষয়ক আলোচনা তাদের কাছে সংকোচের বিষয় । এটা বাস্তবতা । আপনিও এটা ভাল করেই জানেন । আর ধর্ম কোন প্রাণী নয় যে তা মানুষকে খাওয়াবে । ধর্ম মানুষকে সংঘবদ্ধ করে ও জীবধারণের জন্যে নীতিমালা প্রণয়ন করে । মুক্তমনার হাস্যকর উপস্থাপনায় ধর্মে বিশ্বাসী একজনও কমে যাবে না । গালিসর্বস্ব পোস্টের মাধ্যমে নিজের অজান্তেই ধর্মবিরোধিরা গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে । আর মানুষ যখন কোন বিশ্বাশের ঘোর বিরোধী হয়ে পড়ে , তখন তার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লাগে ।
@ক্রুসেডার,
স্ববিরোধি বক্তব্য- আইন প্রণয়ন করা হয় উৎপাদন কাঠামো টিকিয়ে রাখতে। আইন না থাকলে-লোকে ফসল লুঠ করে খাবে-বাজারের জন্মই হবে না।
@ক্রুসেডার,।
একজন যুদ্ধবাজ, খুনী, ধর্ষক,লুটেরা,মিথ্যেবাদী, সর্বোপরি মানবতা বিরোধি এবং মনগড়া বিজ্ঞান বিরোধি আজগুবি মতবাদ প্রচারকারীর নামে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করা অবশ্যই যুক্তি সংগত ও মানবতাবাদী কাজ।
ডঃ বিপ্লব
ভাল কথা। তবে আরো কিছু কথা থেকে যায়।
তরুনেরা তো আজ ধর্মের নিপীড়ন ও নির্যাতনের তোড়ে লেবু কচলানতে নামতে বাধ্য হয়েছে। ১৪০০ শত বৎসর পূর্বে বর্বর আরব জাতির উপর সর্ব কালের, সর্ব জাতির, সর্ব দেশের জন্য এই সর্বশ্রেষঠ ধর্মটি এখন তো বাঙালি জাতির তরুনদের উপর একটি বিরাট বোঝা ও অগ্রগতির প্রতিবন্ধক হয়ে দাড়িয়েছে।
যেহেতু বাংগালী জাতির জন্য কোন পৃথক নবী পাঠানো হয় নাই, যদিও কোরানে প্রত্যেক জাতির জন্য নবী পাঠানোর কথা বলা হয়েছে, এবং নবী আসা শেষ হয়ে গিয়েছে, আর কোন দিন ও কোন নবী কোন দেশে আসবেননা, এবং ১৪০০ বছর পূর্বে বর্বর আরব জাতির উপর প্রবর্তিত ধর্মে সর্বকালের সর্ব মানুষের পূর্নাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা রেখে দেওয়া হয়েছে এবং সমসাময়িক আভির্ভুত সমস্যার সংগে খাপ খাইয়ে একে update ও করা যাবেনা, সেক্ষেত্রে যুগের সংগে তাল মিলিয়ে অগ্রগতি অর্জন কি ভাবে সম্ভব?
মুসলমানরা তো ইসলাম ধর্মের শৃঙ্খে আষ্টে-পৃষ্ঠে আবদ্ধ।
যেখানে জীবনের মূল্য ধর্মের কাছে নগন্য করিয়া, তরুনদেরকে প্রশিক্ষন দিয়ে বুকে বোম্ব বেধে আত্মঘাতি বানাইয়া নিরপরাধ ইহুদি নাছারা,মুসলমানদের কে হত্যাকরে ও নিজে মরে শহীদ হয়ে সংগে সংগে বেহেশত বাসী হয়ে যাওয়ার জন্য কোরান হাদিছের অকাট্য দলিল সমুহ আঙ্গুল ধরিয়া দেখাইয়া পাঠানো হচ্ছে, সেখানে আধুনিক সচেতন যুবকরা কি করে বসে থাকতে পারে?
পৃথিবীতে তো আরো বহু ধর্ম আছে, ইহুদি,খৃষ্টান,হিন্দু,বৌদ্ধ, তাদের ধর্ম গ্রন্থ হতে তো এরুপ ভাবে নিজের মতাদর্ষ বিরোধিকে হত্যা করে শহীদ হয়ে স্বর্গে চলে যেতে উদ্বুদ্ধ করেনা।
তাহলে কি এরা এজন্য করে যে এই পৃথিবীতে তাদের কোন মতবিরোধিদের বসবাস করিবার অধিকার নাই? মারাত্মক বটে!!!
আর এই নীতিতে বিশ্বাষ করলে কি ইসলাম বিশ্বে শান্তি আনতে পারবে? অথচ ইসলাম শব্দের অর্থই হইল “শান্তি”
আমি মনে করি,যতদিন পর্যন্ত ঈসলাম ধর্ম অন্যান্য ধর্মের মত যুগের সংগে ও অন্যান্য ধর্মালম্বিদের সংগে মিলে মিসে ও খাপ খাইয়ে চলতে প্রতিবন্ধক হিসাবে থাকিবে,ততদিন মুক্তমনায় ধর্মিয় আলোচনা-সমালোচনার অতিব প্রয়োজন আছে ।
ধর্মিয় কারন আমাদের সর্ব অগ্রগতির প্রতিবন্ধক হয়ে দড়িয়েছে।
ধন।বাদান্তে,
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
”যেখানে জীবনের মূল্য ধর্মের কাছে নগন্য করিয়া, তরুনদেরকে প্রশিক্ষন দিয়ে বুকে বোম্ব বেধে আত্মঘাতি বানাইয়া নিরপরাধ ইহুদি নাছারা,মুসলমানদের কে হত্যাকরে ও নিজে মরে শহীদ হয়ে সংগে সংগে বেহেশত বাসী হয়ে যাওয়ার জন্য কোরান হাদিছের অকাট্য দলিল সমুহ আঙ্গুল ধরিয়া দেখাইয়া পাঠানো হচ্ছে, সেখানে আধুনিক সচেতন যুবকরা কি করে বসে থাকতে পারে?”
– আপনি কোন দুনিয়াতে বসবাস করেন ভাই ? আপনি কী একদেশ দর্শী ? মানে চাঁদের একটি পিঠই দেখেন সব সময় ?
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
“অথচ ইসলাম শব্দের অর্থই হইল “শান্তি””
খুব সম্ভবত ‘ইসলাম’-অর্থ——-‘আত্মসমর্পণ’।
@শান্তনু সাহা,
দুইটাই এর অর্থ বহন করে।আমরা যেমন বলে থাকি’আছ্ছালামু আলাইকুম” এর অর্থ “তোমার উপর শান্তি বর্ষিত হউক” এই ‘আছ্ছালাম” শব্দটি এবং “ইছলাম” শব্দটির মূল শব্দ হইল”ছিলম”যেটা উভয় অর্থে ব্যবহৃত হয়।
ধন্যবাদান্তে,
আঃ হাকিম চাকলাদার
অত্যন্ত সুন্দর এই লেখাটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ,তবে একটা কথা না বলে পারছি না প্রায় প্রতিটি বিষয়ের সাথেই ধর্ম কোন না কোনভাবে জরিত,যেমন জনসংখ্যা সমস্যা,এর সাথে ধর্ম ওতপ্রতভাবে জরিত জান মাল আল্লার হাতে,খুন, রাহাজানি,লুট,দাংগা,এক কথায় সকল সমস্যার মুলে ধর্ম,ধর্ম আমাদের রন্দ্রে রন্দ্রে কাজেই অন্যান্য বিষয়ের সাথে সাথে ধর্মের অপ্রয়োজনিয়তা নিয়েও প্রচার অবশ্যই দরকার আর এক্ষেত্রে মুক্তমনা একটা গুরুত্যপুর্ণ ভুমিকা রাখতে পারে,কেননা যারা লিখেন বা যারা মন্তব্য করি তাদের মধ্যেই মুক্তমনা সিমাবদ্ধ নয় এর প্রসার প্রতিনিয়ত গুনাতিক হারে বারছে । মাঝে মাঝে হয়ত বিরক্ত লাগতে পারে তবুও চালিয়ে যেতে হবে আর এর দায়িত্বও আপনাদেরই হাতে ।
বিপ্লব-দা,
এইজন্যই আপনার লেখার জন্য মুখিয়ে থাকি! যখন ধর্মের বিরোধিতা করতে যেয়ে অনেকেই নতুন এক ধরনের ফ্যানেটিসিজমে আক্রান্ত হয়েছেন, তখন আপনি চোখে আঙ্গুল দিয়ে সত্যটি দেখিয়ে দিলেন! এত নির্মোহ ভঙ্গিতে লেখেন আপনি! আপনার এক একটি লেখা পড়ি, আর নিজেকে আগের চেয়ে বেশী শিক্ষিত মনে হয়! আপনাকে (F)
দাদা, ইউলেটেরিয়ান আইনটা আমি ঠিক বুঝতে পারিনি! আর কি করে ইসলামের সংস্কার আন্দোলন থেকে এই ধরনের ধর্মনিরপেক্ষ আইন জন্ম নিতে পারে? এই আইন বাস্তবায়িত হলে সামাজিক আইন বা সাপোর্ট সিস্টেম এর জন্য ধর্মের প্রয়োজন ফুরোবে?
@কাজি মামুন,
এটা আরো বিস্তারিত ভাবে আমার লেখা উচিত ছিল।
আজকে শরিয়ার বদলে যে ধর্ম নিরেপেক্ষ আইন তোমরা চাইছ-সেটা কি?
সবাই শুধু এটাই জানে সেটা বৃটিশ আইন।
কিন্ত কিভাবে বৃটিশ আইন ধর্মনিরেপেক্ষ হল সেই ইতিহাসটা অনেকেই জানে না।
ধর্ম নিরেপেক্ষ আইনের ভিত্তি ইউলিটারিনিজম নামে এক বৃটিশ দর্শন। যার জন্মদাতা এবং
মেন্টর-জন স্টুয়ার্ট মিল এবং জেরেমি বেন্থাম।
এটি একটি ন্যায় ( Ethics ) দর্শন- এই দর্শনের ভিত্তি, সঠিক কর্ম সেটিই যা সব থেকে বেশী লোকের ভাল করে।
যেমন বৃটেনে দাশ প্রথার বিলোপে এবং গোটা বিশ্বজুরে তা বিলোপ করতে এরা সব থেকে বেশী সক্রিয় ছিলেন। কারন এদের বক্তব্য ছিল দাশ প্রথাতে শুধু কিছু লোকের সমৃদ্ধি হয়-কিন্ত অধিকাংশ লোকের দুর্দশা বাড়ে। অর্থাৎ সরকার এমন কিছু আইন যেন না করে, যাতে সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকেদের ক্ষতি হয়। নারীবাদের সূচনাতে বা মেয়েদের আইনি অধিকার পেতে মিল এবং বেন্থাম-এবং তাদের শিষয় দের সব থেকে বড় ভূমিকা ছিল। বৃটিশ আইন ধারাবাহিক ভাবেই আধুনিক হয়েছে-কিন্ত তাকে একটা দর্শনের ওপর বসিয়েছিলেন মিল এবং বেন্থাম।
এই ইউলেটেরিয়ান আন্দোলনটা মুসলিমদের মধ্যেও আস্তে আস্তে আসবে। ধর এই যে মহিলাদের উত্তরাধিকার সংক্রান্ত আইন নিয়ে বাংলাদেশে ঝড় বয়ে গেল। লক্ষ্য করবে, এখানে ধর্মের লোকেরা শরিয়া এবং ঈশ্বরের আইন বলে জোর গলায় চেঁচাল-আর সেকুলারররা বলল আমাদের ধর্ম নিরেপেক্ষ আইন চাই। সমস্যা হচ্ছে ইসলামিস্টরা জোর গলায় বলছে তাদের আইনে উৎস কোরান-কিন্ত ধর্ম নিরেপেক্ষ গোষ্টি জোর গলায় বলতে পারছে না, তাদের আইনটার ভিত্তি কি! এর জন্যে মিল বেন্থাম পড়া জরুরী। তাহলে ধর্ম নিরেপেক্ষ আইনের ভিত্তিটা পরিস্কার হবে।
মোদ্দা কথা আইন সেটাই হওয়া উচিত যাতে, সেই আইনের বলে অধিকাংশ মানুষের উন্নতি হয় এবং আইন সেই উন্নতিকে ম্যাক্সিমাইক বা বর্ধন করতে সাহায্য করে মাত্র।
@বিপ্লব-দা,
মিল ও বেন্থাম এর রচনা পড়ার চেষ্টা করছি! আমি একুশে বইমেলা থেকে জন স্টুয়ার্ট মিলের ”প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার” বইটি কিনেছিলাম। বলা বাহুল্য, এই অনুবাদ বইটা খুবই কঠিন। যাই হোক, আপনাকে আমার অসীম কৃতজ্ঞতা!
:thanks:
বিপ্লবদার যুক্তিগুলো ভাল লাগল। তবে আমার মনে হয় মুক্তমনায় ধর্মের বিপক্ষে যুক্তিবাদী লেখার চেয়ে অন্যান্য লেখাই বেশি। তাছাড়া বিজ্ঞান, সাহিত্য ইত্যাদি বিষয়ক লেখা গুলোর জনপ্রিয়তাও অত্যধিক, অন্তত মন্তব্যের সংখ্যা দেখে তাই মনে হয়। তারপরও
নইলে মুক্তমনা ব্লগটি কচলানো লেবুতে পরিণত হবে।
পুরু ব্লগটি কিভাবে কচলানো লেবুতে পরিণত হবে বুঝলাম না।
একেকটা ব্লগের সাধারণত একটি বিশেষত্ব থাকে। ‘মুক্তমনা’র বিশেষত্বই হল মুক্তমনন এবং মুক্ত সমাজ তৈরি করা যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধর্মের দ্বারা আবদ্ধ থাকে। আর এই বিশেষত্বটির জন্যই মনে হয় মুক্তমনা এতো জনপ্রিয়।
আর, লেবু কচলানোর তিতা স্বাদটা নির্ভর করে ব্যক্তি বিশেষের উপর। আমাদের মধ্যে এমন অনেক আছেন ( যারা নাস্তিক এবং বেশির ভাগই বিদেশে বসবাসরত ) যাদের দৈনন্দিন জীবন-যাপন এবং চার পাশের পরিবেশে ধর্মের উপস্থিতি নেয় বললেই চলে। ধর্মের বাতাস তাদের গায়ে লাগে তখনই যখন ধর্মের বিপক্ষে কোন লেখা পড়ে ( ধর্মীয় কোন লেখা তারা পড়েও না বা পড়ার প্রয়োজনও নেয়।) । যেহেতু একই পক্ষের এবং জানা তথ্যগুলো বারবার ঘুরে ফিরে আসতেছে, তাই তাদের কাছে যুক্তিবাদী লেখাগুলোকেও তিতা করল্লা মনে হতে পারে।
অন্য দিকে যারা এমন কোন লোককে চিনত, জানত এবং ভালবাসত, যাকে বর্বর ইসলামিক আইন এক কুপে কল্লা ফেলে দিয়েছে, তাদের মাথা বিহীন দেহ কল্পনা করে সেই কচলানো তিতা লেবুর রসই অমৃতের মত পাণ করে পিপাসার্ত হৃদয় ঠান্ডা করে এবং নিজের সম্ভাব্য কল্লা বাঁচানোর চেষ্টা করে।
@হেলাল,
শুধু ধর্ম পেটালে মুক্তমনন তৈরী হয় না।
মুক্তমনাতে বিজ্ঞান সংক্রান্ত ব্লগের মান খুব ভাল। সাহিত্য নিয়ে ব্লগ খুব কম-যেগুলো আসে সেগুলোও নিম্নমানের। বাকী ইতিহাস, সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি নিয়ে খুব কম ব্লগ আসে। যেগুলো আসে সেগুলো বেশ ভাল মানের। তবে সংখ্যায় খুব কম। পরিবেশ নিয়ে আরো অনেক বেশী সচেতনতা দরকার-ধর্মের থেকেও বেশী।
@বিপ্লব পাল,
“সাহিত্য নিয়ে ব্লগ খুব কম-যেগুলো আসে সেগুলোও নিম্নমানের।”
——– বেড়ালটি বড় পর্দাশীন; পরবর্তীতে বোরকা পরিয়ে বের করবেন, প্লিজ।
@বিপ্লব পাল,
একমত। 🙂
প্রিয় বিপ্লব পাল,
আপনার লেখাটি খুব আগ্রহ নিয়ে পড়লাম – অত্যন্ত বিশ্লেষণধর্মী ও উচ্চমানের লেখা | আপনাকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ |
ধর্ম নিয়ে বিপ্লবদার বেশিরভাগ লেখাই আমার ভাল লাগে। উনি বেশ নিরপেক্ষভাবে বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করতে পারেন। আসলে সত্যি কথা এটাই যে একেকজনের ইসলাম একেক ধরণের। মোল্লার ইসলাম আর সাধারণ মানুষের ইসলাম এক নয়। একেকজনের দৃষ্টিভঙ্গিও একেক ধরণের তাই ধর্মকেও ভিন্ন ভিন্ন মানুষ ভিন্ন ভিন্ন ভাবে দেখে। ইসলাম নিয়ে আমার চিন্তাধারা ও অবস্থানও বিপ্লবদার সাথে অনেকটা মিলে যায়। তবে কাজী রহমান ও সফিক ভাইয়ের সাথে একমত হয়ে আমিও বলব যে ইসলাম নিয়ে লেবু কচলানো উচিৎ কারণ মুসলিম দেশগুলিতে এখনও ইসলাম নিয়ে যত মাতামাতি করা হয় অন্য কোথাও ধর্ম নিয়ে এত মাতামাতি করা হয় না। কচলানো লেবুর তেতো স্বাদে বিরক্ত হয়ে মুসলিমরা যত তাড়াতাড়ি ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের দিকে এগিয়ে যাবে ততই মুসলিম সমাজ ও মানবজাতির মঙ্গল হবে।
@আলোকের অভিযাত্রী,
সমস্যাটার শুরু কিন্ত আপনাদের এই ধরনের সরল চিন্তাধারা থেকে। আপনি জানেন ১৯৭৮ সালে আফগানিস্থানের পিডিপিএ বাম সরকার [ তখনো রাশিয়ান অকুপেশন শুরু হয় নি], আফগানিস্থান থেকে ধর্ম তোলার ফরমান জারি করেছিল?
বাথ পার্টি ধর্মীয় ইউনিটগুলির ওপর একদা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল?
ইসলামের আধুনিকরন আমেরিকার নিজের ইন্টারেস্টের জন্য দারুন ভাবে মার খেয়েছে। এই সত্য অস্বীকার করে লাভ নেই। আবার শুধ আমেরিকাকে দোষ দিয়েও লাভ নেই। কারন মুসলিম রাষ্ট্রের বর্তমান রাজনৈতিক নেতৃত্ব -সবকটি প্রায় বিদেশী শক্তির পরগাছা ছারা কিছু না। বেশ ভাল একটা সিম্বায়োসিস তৈরী করা গেছে ইসলামের আফিং জনগনকে খাইয়ে।
”তাদের কাছে ইসলাম ছিল এক সাম্যের ধর্ম-যেখানে জাতের কারনে তাদের সমাজে ছোট হয়ে থাকতে হত না। অর্থাৎ ইসলাম ছিল তাদের বাঁচার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ”
– এই উপমহাদেশের জন গোষ্ঠির একটা অংশের ইসলাম ধর্ম কে আলিংগণ করার পেছনে বড় কারণ এটাই -বর্ণ হিন্দুদের অত্যাচার হতে বাঁচা এবং সম্মানের সাথে বাঁচা। এক হাতে কোরান আর আরেক হাতে তলোয়ার নিয়ে এদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয় নি।
@মোহিত,
গবেষণা থেকে যেটা জানা যাচ্ছে শ্রীচৈতন্যের পর বাংলাতে আর হিন্দুরা মুসলমান হয় নি। অর্থাৎ হিন্দু ধর্মে জাতিভেদ প্রথার লোপ করতেই বাংলাতে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তিকরন শেষ হয়ে যায়। গৌরীয় বৈষ্ণব ধর্মে জাতিভেদ তুলে দিয়ে সবাই কৃষ্ণভক্ত হল।
এটাই কট্টর প্রমান, বাঙালীরা মুসলমান হয়েছিল জাতিভেদ প্রথা থেকে বাঁচতে।
”মানুষ সমাজবদ্ধ ভাবে বেঁচে থাকে। ধর্ম সেই সামাজিক আইনগুলো – পিতা মাতার প্রতি কর্তব্য, সন্তানের প্রতি দ্বায়িত্ব, সমাজের প্রতি দ্বায়িত্ব-এই যুথবদ্ধতা শেখায়। যা গুরুত্বপূর্ন সাপোর্ট সিস্টেম তৈরী করে। বেঁচে থাকার জন্যে এগুলি দরকার। ধর্ম বিরোধি ঋণাত্মক আন্দোলনে এগুলি গুরুত্ব না দিলে, ধর্ম বিরোধিতা ফালতু।”
– খুবই বাস্তব কথা।
”এক ভয়াবহ বিপদ আমাদের দুয়ারে কড়া নাড়ছে, আমরা নির্বিকার। আমাদের চোখে কুম্ভকর্ণের ঘুম।”
– কুম্ভকর্ণের ঘুম ? না ইসলাম বিদ্বেষের আফিম- এ বুঁদ হয়ে আছে সবাই ?
@মোহিত,
আমার মনে হয়, আমি আমার বক্তব্য ঠিকমত প্রকাশ করতে পারিনি। আর সে কারণেই আপনি কুম্ভকর্ণের ঘুমকে ইসলাম বিদ্বেষের মধ্যে টেনে এনেছেন। অনুগ্রহ করে আবার একটু চোখ বুলিয়ে নিন, দেখুন কিছুটা পরিস্কার হয় কি-না।
ধন্যবাদ।
লেখা ভাল হয়েছে, তবে আপনার এই কথাটা বুঝলাম না
” ইসলাম বা যেকোন ধর্মকে ধর্ম বলে মানা এবং দেখা হচ্ছে সব থেকে বড় অবৈজ্ঞানিক যুক্তি। সুতরাং একজন ধর্ম বিরোধি যখন ইসলামকে একটি ধর্ম হিসাবে দেখে এবং ধর্ম হিসাবে তার বিরোধিতা করে-তার যুক্তিও একজন ধার্মিকের সমান অবৈজ্ঞানিক। ”
বুঝিয়ে বলবেন কি ?
@এমরান,
ধার্মিকরা বিশ্বাস করে ধর্ম ঈশ্বরের বাণী-তা ধর্মগ্রন্থে লিপিবদ্ধ। তাদের কাছে ধর্ম ঈশ্বর সৃষ্ট “রিভিলেশন”।
সেটাত বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে ১০০% ভাগ ভুল। সুতরাং বিজ্ঞানের চোখে ধর্মগ্রন্থ বা ধর্মের অস্তিত্বই নেই। এগুলো সাংস্কৃতিক বিবর্তনের ফলে নির্বাচিত কিছু সাংস্কৃতিক ট্রেইট বা মিম বলতে পারেন। সুতরাং কোন ধর্মের বিরুদ্ধে বিজ্ঞান সম্মত আন্দোলন এই পয়েন্ট থেকেই শুরু করা উচিত।
ডঃ বিপ্লব,
এখনো সবটুকু পড়ার সময় হয় নাই। তবে প্রথম লাইনটাই অত্যন্ত চমৎকার এবং একেবারেই সঠিক।
ধন্যবাদান্তে,
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
অনেকদিন পর আজ একটুখানি বৃষ্টি হল।
এক ভয়াবহ বিপদ আমাদের দুয়ারে কড়া নাড়ছে, আমরা নির্বিকার। আমাদের চোখে কুম্ভকর্ণের ঘুম।
কিন্তু সীমান্ত প্রাচীর বা কাঁটাতারের বেড়া কি তা প্রমাণ করে?
পাক-ভারত সম্পর্ক সাপে নেউলে হয়ে থাকলেও এই প্রবাসে আমিও দেখেছি, দোকানের নাম ইন্দো-পাক গ্রোসারি বা রেস্টুরেন্ট। এসব দেখে মনে পড়তো, আব্দুল মতিন খানের কিছু লেখা যার মর্ম ছিল পাক-ভারত-বাংলাদেশ মিলে এ্কটা যুক্তরাষ্টীয় কাঠামো, বিশ্ব বাজারে টিকে থাকতে হলে, এটা খুব জরুরী।
সব কথার শেষ কথাটা তো মনে হয় তাই।
সুকান্তের ভাষায়,’ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়/ পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি।
কোন সন্দেহ নেই, ভাববাদে আক্রান্ত মানুষ রুখে না দাঁড়িয়ে বরং আত্মহত্যার মত পথটাকে মনে করে সহজ। যে কারণে এক ভারতে কত কৃষক আত্মহত্যা করে একটু খোঁজ নিলেই বেরিয়ে আসবে।
ক্ষুধার রাজ্য থেকে বেরিয়ে আসার পথে ধর্ম তো একটা বাঁধা বটে, কিন্তু প্রধান এবং একমাত্র বাঁধা নয়।
খুব সময় উপযোগী এ লেখার জন্য লেখককে ধন্যবাদ
কোন ডক্টরিন যেমন এমনি এমনি বেড়ে উঠেনি তেমনি আপনা থেকে তা ফিকেও হয়নি। সচেতন সক্রিয়তা সেখানে মূল শক্তি হিসেবে কাজ করেছে।
অন্যায় অত্যাচারে জর্জরিত হবার পর সতীদাহ যেমন প্রায় নেই হয়ে গেছে, ইসালামে কল্লা কাটাকেও তেমনি বিকল্প পথ চেনাতে হবে।
প্রচন্ড জনমত তৈরীর কারনেই সতীদাহ কমেছে, নতুন আইন ধর্মীয় আইনকে বশে আনতে পেরেছে। কল্লা কাটার বিরূদ্ধে মাত্র দু চারটা ব্লগে যখন কথা চলছে, জনমত তৈরী হচ্ছে তখন লেবু অল্প কটা দিনের জন্য তেতো হলে কি এমন মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে? অন্য কোন লেখাও তো প্রকাশে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে না।
@কাজী রহমান,
>>>
খুব ভুল ধারনা। সতীদাহের পক্ষের লোক এখনো ভারতে অনেক আছে। বিজেপি এবং কংগ্রেসের নেতারা সতীধামে এখনো পুজো দেয়।
শুধু জনমতে কিছ হয় না। ব্যাপারটা উৎপাদন পক্রিয়াকে কতটা ক্ষতি করছে, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
@বিপ্লব পাল,
আসল লেবু ছেড়েছুড়ে এ আবার কি নিয়ে পড়লেন। এখানে এস্লাম নিয়ে আকছার লেখা হচ্ছে সত্যি, একটু তেতো তো লাগবেই। এই সময়ে মুক্তমনা এস্লামি অন্ধত্ব ঘোচাবার একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্লাটফরম। অন্য কোন লেখাতে তো কেউ বাধা দিচ্ছে না। আপনি নিজেও কিন্তু আগে এসব নিয়ে প্রচুর ফাটাফাটি লেখা লিখেছেন। তাই না?
সতীদাহ বন্ধ হয়েছে কিংবা সতীদাহের পক্ষে কেউ নেইএমনটা কখন বললাম? নিজে থেকে বানিয়ে নিলেন? চমৎমুখো
গুগলি বল ভেবে ‘জনমত’ শব্দটাকে হাঁকালেন তো? নিজের ব্যাট দিয়ে আবার নিজের উইকেট ভাঙ্গবেন না যেন। জনমতটি যে লালমূখো প্রভুদের ছিলো না বুঝলেন কি করে? লালমুখোদের ডাণ্ডাবাজী দিয়ে ওটা দমন করা হয়েছে তা তো দেখি ঠিকই বুঝলেন।
যে বিলেতি সভ্যতার পায়ে তেল দিতে জামবাটি নিয়ে বসলেন তাকেই আবার শেখাচ্ছেন? একটু সুবাধাবাদী স্ববিরোধী আচরন হয়ে গেল না? আপনিই তো দেখি বলছেন নাস্তিক যুক্তিবাদি সমাজ ৩০০০ বছর আগেও ছিল। বৌদ্ধ এবং জৈনরা এর প্রমান।। নীচে দেখুনঃ
চার্বাক আর অন্যদের আর আরো হাজার বছর না হয় বাদই দিলাম। এগুলো দেখলে আমাদের উপমহাদেশের আপন সভ্যতার বয়স কি দুগ্ধপোষ্য শিশুর সমান মনে হয়? আপন সভ্যতার স্ফুরনের অন্তরায় দখলদার শাসকদের খারাপত্ব দেখলেনই না। অন্যান্য সকল দখলদার শাসকদের যে কোন ভালত্ব বাদ দিয়ে শুধুমাত্র বেনিয়াদেরকেই ভালবাসলেন? বাজার ভালবাসা? এ কেমন যুক্তি?
@কাজী রহমান,
correction:
সতীদাহ বন্ধ হয়েছে কিংবা সতীদাহের পক্ষে কেউ নেইএমনটা কখন বললাম? নিজে থেকে বানিয়ে নিলেন? চমৎকার।
@কাজী রহমান,
ভালবাসার প্রশ্ন নেই। বৃটিশরা এদেশে আধুনিক শিক্ষা চালু করেছিল নিজেদের উপনিবেশ চালু রাখতে। এটা যেমন ঠিক। ঠিক তেমনই লর্ড বেন্টিং এর মতন বৃটিশরা এদেশে না আসলে রাজা রামমোহন রায় বা তাদের ধর্ম সংস্কার ফলপ্রসূ হত না।
লর্ড বেন্টিং এর লেখা চিঠি গুলো পড়তে অনুরোধ করছি সবাইকে। এমন একটা চিঠি, বেশ কিছুদিন আগে মুক্তমনাতেই আমি ছেপেছিঃ
বৃটিশদের উপনিবেশবাদের অত্যাচারে ভারতের অর্থনৈতিক কাঠামো যেমন ধ্বংশ হয়েছিল-এটি সত্য-ঠিক তেমনি, তারা আমাদের মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগে নিয়ে গেছে, সেটাও সত্য।
সত্যের রূপ সর্বদা দ্বান্দিক।
আপনার বিশ্লেষণ টা সত্যি অনেক ভালো লাগলো। এভাবে অনেকেই এখন বিশ্লেষণ করেনা। সত্যি কথা বলতেই মুক্তমনা এখন অনেকটা সঙ্কীর্ন হয়ে যাচ্ছে, প্রথমত ইসলাম নিয়ে লিখলে অনেক লিখা যায় আবার পাঠক ও মন্তব্যকারী ও থাকে অনেক।
তবে ধর্ম বিষয়ে আমি বিশ্বাস করি, এর পরিবর্তন দরকার। ধর্মতো মানুষের জীবনধারাকে উন্নত করার জন্যই, তবে যেখানে উন্নত হচ্ছেনা সেখানটায় ধরে এর জন্য ব্যবস্থা নিতে এত আপত্তি কেন? খ্রীষ্টান ধর্মে টেষ্টামেন যদি পরিবর্তিত হয়, হিন্দু ধর্মে বেদ – উপনিষদ- পুরান- গীতা এভাবে ধীরে যুগ অনুযায়ী পরিবর্তন হয়, তবে একটা ধর্মকে গন্ডীতে আটকে রেখে লাভের তো কিছুই দেখছিনা। গোড়ামিতে ভরে যাচ্ছে। বর্তমানে বিশ্বায়নের যুগে যেখানে প্রতি মিনিটে মিনিটে নিজের ও সমাজের পরিবর্তন হচ্ছে সেখানে পুরাতন কিছু অসংলগ্ন আইন বা নীতিকে আকড়ে ধরে রাখলে কি হবে? এক সময় ছুটবেই তার ই ডঙ্কাধ্বনি বেজে উঠছে ।
ধন্যবাদ আপনাকে।
@পদ্মফুল,
আমি ত মূলত এই প্রশ্নের উত্তরই খুঁজছি গত ৫ বছর ধরে। সেটাই এখানে লিখলাম।
কিন্ত আমিত বস্তবাদি লোক। সুতরাং আমার কাছে ধর্ম বস্তুটা অস্তিত্বহীন। সুতরাং আমাদের পুরো বিষয়টা উৎপাদন কাঠামো থেকে দেখতে হবে। কেন পুরানো উৎপাদন কাঠামোটা ভাংছে না?
আমিত দেখেছি ভারতের অধিকাংশ সফটোয়ার ইঞ্জিনিয়ার প্রচুর উপায় করে এবং নিদারুন ধার্মিক । মুসলমান সফটৈওয়ার ইঞ্জিনিয়ারদে র ওই একই দুরাবস্থা।
অথচ আমাদের দেশের বাড়ির রাজমিস্ত্রি বরকত আলি বলে এক ফোর পাশ করা লোক -সে কিন্ত এসব ধর্ম মানে না। সে ধর্মের আসল স্বরূপ চেনে। কেন?
এর উত্তর পেতে সেই উৎপাদন কাঠামোতেই ঢুকতে হবে।
বরকত আলি খুব দারিদ্রের সাথে মানুশ হয়েছে। সমাজকে সে চেনে বলে নিজের ব্যবসা করে খাচ্ছে। সে ধর্মের সাথে সমাজের সম্পর্কটা, মানুষ কি করে ধর্মকে ব্যবহার করে ঠকায়, নিজের চোখে দেখেছে। তাকে এটা জানতে হয়েছে, নইলে লোকে তাকে ঠকাবে। সে তার গ্রামের মসজিদ তৈরীর সময় একটা ইঁটও দেয় নি, গাঁথে নি।
তার বক্তব্য ছিল, টাকা দাও দিব।
জীবন সংগ্রাম তাকে সারভাইভাল টেকনিক বা বেঁচে থাকা শিখিয়েছে-তাতে সে ধর্মের জোচ্চুরি বুঝে গেছে।
কিন্ত এই সফটোওয়ার ইঞ্জিনিয়ার গুলোর অবস্থা কিছুটা আরবদের শেখের মতন। আউটসোর্সিং এবং গ্লোবালাইজেশনের দৌলতে অতি উচ্চ জীবন যাত্রা তারা পাচ্ছে প্রায় কিছু জীবন সংগ্রাম না করেই। এরাই আবার নিজেরা ব্যবসা করতে নামলে, সমাজটাকে বুঝত। কিন্ত এদের সমাজটাকে বুঝতে হচ্ছে না-ভাল মাইনে পাচ্ছে, ভাল খাচ্ছে দাচ্ছে। ফলে সারভাইভাল টেকনিকগুলো এদের মধ্যে গভীর ভাবে জন্মায় নি, যা একজন মানুষকে আসল “যুক্তিবাদি” করে তোলে।
অসাধারন লেখা। একেবারে আসল নির্যাসে পৌছেছেন আপনি। মুক্তমনায় বেশকিছু লেখক আছেন যারা মনে করেন যে ইসলামকে অন্য সবধর্মের চেয়ে নিকৃষ্ট এবং মানব সভ্যতার সবচেয়ে বড়ো শত্রু প্রতিপন্ন করলেই যেন এসব দেশে মুক্তি আর যুক্তির হাওয়া অবারিত ভাবে বইবে। তারা বুঝতে পারেন না যে ইসলামকে আলাদাভাবে আইডেন্টিফাই করাতে মুসলিম জনগনের এক বৃহৎ অংশ,যাদের কাছে ইসলাম ব্যক্তিগত স্পিরিচুয়াল নিডের এক সরবরাহ, তারা অটোম্যাটিক্যালি ডিফেন্সিভ হয়ে উঠে। বিশেষ করে যখন যেকোন স্বাভাবিক বুদ্ধিজ্ঞান সম্পন্ন লোকই জানে যে পৃথিবীর প্রতিটি প্রধান ধর্মের হাজার বছরের ইতিহাসে রয়েছে অমানবিকতার কলংকের দীর্ঘ লিস্টি।
আমি অনেক আগে একখানে পড়ে ছিলাম যে যুবক সাদ্দাম হোসেন যখন ইরাকের বাথ পার্টির উঠতি নেতা ছিলো তখন সে কমুনিস্ট-ন্যাশনালিস্ট চিন্তাধারায় এতোটাই প্রভাবিত ছিলো যে সে প্রকাশ্য ঘোষনা দিয়েছিলো আল্লাহ’র জানাজা হয়ে গিয়েছে। নাসের, সাদাত এবং অন্যান্যা আরব ন্যাশনালিস্ট নেতারাও প্রচলিত ইসলামে কতটুকু বিশ্বাস করতেন সে সম্পর্কে অনেক কাহিনী রয়েছে।
আমার মনে হয় ইসলাম নিয়ে লেবু কচলানোতে কোনো অসুবিধা নেই। কারন চিন্তার স্বাধীনতা ধর্মীয় অনুভুতির অজুহাতে বন্ধ করে রাখা যাবে না, এই আধুনিক কনসেনশাসটা এখনো মুসলিম বিশ্বের এমনকি প্রগতিশীল অংশের মধ্যেও পেনেট্রেট করে নি। সুতরাং হ্যামারিং চলাই উচিৎ। কিন্তু তাই বলে জন্ডিস আক্রান্তের মতো ইসলামকে মনোম্যানিয়াক ভাবে আক্রমন করলে ভালোর চেয়ে খারাপই বেশী হবে।
@সফিক,
”অসাধারন লেখা। একেবারে আসল নির্যাসে পৌছেছেন আপনি। মুক্তমনায় বেশকিছু লেখক আছেন যারা মনে করেন যে ইসলামকে অন্য সবধর্মের চেয়ে নিকৃষ্ট এবং মানব সভ্যতার সবচেয়ে বড়ো শত্রু প্রতিপন্ন করলেই যেন এসব দেশে মুক্তি আর যুক্তির হাওয়া অবারিত ভাবে বইবে। তারা বুঝতে পারেন না যে ইসলামকে আলাদাভাবে আইডেন্টিফাই করাতে মুসলিম জনগনের এক বৃহৎ অংশ,যাদের কাছে ইসলাম ব্যক্তিগত স্পিরিচুয়াল নিডের এক সরবরাহ, তারা অটোম্যাটিক্যালি ডিফেন্সিভ হয়ে উঠে। বিশেষ করে যখন যেকোন স্বাভাবিক বুদ্ধিজ্ঞান সম্পন্ন লোকই জানে যে পৃথিবীর প্রতিটি প্রধান ধর্মের হাজার বছরের ইতিহাসে রয়েছে অমানবিকতার কলংকের দীর্ঘ লিস্টি।”
– Correct Observation and Inference.
@সফিক,
ধর্মের বিরুদ্ধে হ্যামারিং চলা অবশ্যই উচিত।কিন্ত সেখানেও ইতিহাস, সমাজবিজ্ঞান বাদ দিয়ে শুধু কোরান শরিয়ত হদিস নিয়ে কচলালে, সেটা কি যুক্তিবাদি আন্দোলন হয়?
@সফিক,আমি তো জানি যে ভারত থেকে সতীদাহ দূর হয়েছে ইংরেজ সরকার বাহাদুরের লাঠির ভয়ে। বাতিলের সময়ে হিন্দু সমাজপিতারা এবং জনগন এই প্রথার পক্ষেই ছিলেন। বালগংগাধর তিলকের মতো ন্যাশনালিস্টরা আপত্তি করেছিলেন ইংরেজদের হিন্দু ধর্মের উপরে অযাচিত হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে।
ঠিক যেমনটি ভারত মহাসাগরীয় আরব স্লেভ ট্রেড বন্ধ হয়েছিলো বৃটিশ নেভীর কামানের ভয়ে। ফিরিংগী শয়তানদের হস্তক্ষেপ না থাকলে আমরা আরও কয়েকশ বছর নিশ্চিন্তে সতী পোড়াতে পারতাম আর প্রতি সপ্তাহে বাজারে যেয়ে মাছ-মাংস-সব্জীর সাথে একটা দুটো দাস-দাসী কিনএ বাসায় ফিরতেও পারতাম।
@সফিক,
একদম ঠিক বলেছেন। বৃটিশরা না থাকলে আমরা মধ্যযুগে থাকতাম এটাই আসল বাস্তব। বাল
গঙ্গাধর তিলক বাল্যবিবাহের ও সপক্ষে ছিলেন 😛