আমিতো চ’লে যাবো একদিন
জীবনের নিষ্ঠুর নিয়মে;
অতি প্রিয় জীবন ছেড়ে
তোমায় ছেড়ে
তোমার ভালোবাসা ছেড়ে
আকাশ, নদী, নক্ষত্র, জোছনা ছেড়ে
ঘাস,লতা,পাতা,ফুল ছেড়ে
পৃথিবীর তামাম ফুলের সুরভী ছেড়ে
মায়াময় পৃথিবী ছেড়ে।
আমার চ’লে যাবার পর
যদি আমায় রাখ তোমার হৃদয়ে
তবে দেখতে পাবে আমায়
নক্ষত্রের বিনিদ্র কম্পিত চোখে
আকাশের মহাশূন্যে, নিঃসীম নীলিমায়।
আমার চ’লে যাবার পর
যদি আমায় রাখ তোমার হৃদয়ে
তবে তোমার তরে আমার গান শুনতে পাবে
পাতার মর্মরে,
নদীর চ্ছল চ্ছল শব্দে।
আমার নিশ্বাস শুনতে পাবে
মৃদু সমীরণে।
আমার হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন শুনতে পাবে
তোমার হৃৎপিণ্ডের স্পন্দনে।
আমার চ’লে যাবার পর
যদি আমায় রাখ তোমার হৃদয়ে
তবে আমার হাসি পাবে দেখতে
শিউলির পাপড়িতে
জোছনার শুভ্রধারাতে
প্রভাতের রবিতে।
আমার চ’লে যাবার পর
যদি আমায় রাখ তোমার হৃদয়ে
তবে তোমার কাছ থেকে আমার
দূরে থাকার বেদনা
দেখতে পাবে শ্রাবণমেঘে,
আমার কান্না শুনতে পাবে
আষাঢ়ের বৃষ্টিতে,
আমার দীর্ঘশ্বাস শুনতে পাবে
বৈশাখী ঝড়েতে,
আমার ফোঁটা ফোঁটা অশ্রু দেখতে পাবে
ঘাসের বুকে শিশিরবিন্দুতে।
আমার চ’লে যাবার পর
যদি আমায় রাখ তোমার হৃদয়ে
তবে আমার ভালোবাসা অনুভব করবে সর্বত্র
আমার ছোঁয়া অনুভব করবে সর্বত্র
আমার শূন্যতা অনুভব করবে সর্বত্র।
আমার চ’লে যাবার পর
যদি আমায় রাখ তোমার হৃদয়ে
তবে আমি অদৃশ্যলতার মতো নিবিড়ভাবে
জড়িয়ে রবো তোমার তনু-মনে
জাগরণে-স্বপনে।
তবে আমায় হারানোর বেদনা
অনুভব করবে হৃদয়ে
অনুভব করবে সকল সময়, সকল কাজে
আমি বেঁচে রবো তোমার হৃদয়মাঝে।
ঝুমু আপুর বাঁচার ইচ্ছে মনে হয় অনেক। জীবনটা মৃত্যুহীন হলে খুব ভাল হত তাই না। হুমায়ন আজাদের ” আমার অবিশ্বাস “পরে দেখুন মনে হয় অনেকটা বেঁচে থাকার আফসোস লাঘব হবে
@মাসুদ রানা,
মরতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে।
কিন্তু জীবিন ত অবিনশ্বর নয়। তাই মৃত্যুর পরেও আমি মানুষের মনের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই।
@তামান্না ঝুমু,
“চলে যাবার পর”
প্রিয়জনরা মনে রাখবে কিছুদিন,
ক্রমান্বয়ে ম্লান হবে সে স্মৃতি।
(কিন্তু) কখনোই “নাই” হবো না আমি,
হারিয়ে যাবার ভয়ে ভীত নই!
আমি নিশ্চিত জানি, মৃতু হলো একটি “নাম”,
প্রকৃতির বহু রুপান্তরের আর একটি।
এখানেই থাকবো আমি রুপান্তরিত রুপে,
‘মহাবিশ্বের’ মৌলিক আদি উপাদানে।
আমি তৈরী সেই উপাদানে,
প্রকৃতির স্বাবাভিক নিয়মে।
আমার নিবাস এই মহাবিশ্বে,
সৃষ্টির আদি থেকে কিংবা তারো আগে।
‘কোথাও হারিয়ে যাচ্ছি না’ আমি,
যাবার কোন জায়গা নেই বলে।
আনন্তকাল ছিলাম এখানে,
আছি এখানে, থাকবোও এখানেই।
অন্য এক রুপে,
মহাবিশ্বের অংশ হিসাবে।
খুব ভাল লাগলো কবিতাটা। আপনার লিখার হাত দারুন!
ভাল থাকুন।
@গোলাপ,
কবিতাটির প্রতিটি কথাই বৈজ্ঞানিকভাবে সত্য ।খুব সুন্দর।এটা কার লেখা?
আপনার মন্তব্যগুলোও দারুন, এবার আপনার লেখা চাই।
@তামান্না ঝুমু,
আরে দূর, এটাকি একটা কবিতা হলো নাকি! আপনার লিখা সুন্দর এ কবিতাটির ‘মন্তব্য’ লিখার সময় তাৎক্ষনিক ভাবেই মনে এলো। লিখে ফেললাম, মিনিট দশেকের মধ্যেই। বাইরে যাবার তাড়া ছিলো, সংশোধনের সময় পাই নাই ।
লেখা-লেখিতে অভ্যস্ত নই। তবে ‘মুহাম্মাদের মক্কা জীবন – কেন তিনি মক্কা ছেড়েছিলেন?’ বিষয়ের উপর লিখবো বলে স্থির করেছি। প্রফেশানাল কাজে বেশ ব্যস্ত থাকতে হয়, একটু সময় লাগবে।
ভাল থাকুন।
@গোলাপ,
তাৎক্ষণিক ভাবে যিনি এতো সুন্দর দার্শনিক ও বৈজ্ঞানিক কবিতা লিখে ফেলতে পারেন তিনি চাইলেতো অনর্গল কবিতা লিখে যেতে পারেন।
লেখার বিষয়টি সুন্দর নির্বাচন করেছেন। ব্যস্ততার মধ্য থেকে একটু একটু সময় বের ক’রে লিখে ফেলুন। আপনার কাছ থেকে গদ্য ও পদ্য দুটোই আশা করছি।
@গোলাপ,
ধন্যবাদ আপনার উৎসাহব্যঞ্জক মন্তব্যের জন্য।
ভাল থাকুন।
correction:
@তামান্না ঝুমু
খুব ভাল লাগছে কবিতা।
@অছেনা অথিথি,
ধন্যবাদ।
খারাপ লাগছে তাদের কথা ভেবে, যারা আপনার কবিতার মত নিবেদন করার পৃথিবীতে কাউকে রেখে যাচ্ছেনা। তার উপর যদি হয় পরকালে অবিশ্বাসী।
বলতে চাইছি, কারো যদি এরকম হৃদয়ে রাখার মত বা ভালবাসা অনুভব করবার মত কোন প্রতিনিধি অবশিষ্ট না থাকে। অনাথ, চির কুমার/কুমারী এদের জন্য বড়ই দুঃখের হতে পারে মৃত্যুটা।
সুন্দর কবিতার জন্য ধন্যবাদ।
@বাদল চৌধুরী,
মৃত্যু হচ্ছে জীবনের নিষ্ঠুর পরিসমাপ্তি। সবার জন্যেই চরম কষ্টের ব্যাপার। যাদের মৃত্যুর পরে পৃথিবীতে আপনজন থাকে তারাইবা কতদিন তাকে স্মরণ রাখে! কয়েকদিন পরে সবাই ভুলে যায়, নিজ নিজ কর্মজীবন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরে। এটাই জীবনের নিয়ম, বেদনা-বিধুর স্মৃতি কেউ বেশি দিন বহন করতে চায়না।ধন্যবাদ।
ভালোবাসা থাকবে কি-না কে জানে , তবে সবই শূন্য।
বরাবরের মত দারুন লেগেছে।
চলুক।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
চ’লে যাবার পরেও আমি সবার হৃদয়মাঝে থাকতে চাই। কিন্তু জানিনা কি হয়, হয়ত কেউ মনে রাখবে কিছুদিন, আর কেউ কেউ হয়ত মন থেকে মুছে ফেলবে সাথে সাথেই। ধন্যবাদ।
ভালোইতো লাগলো, সাধারন এক অনুভুতি প্রকাশ করলেন কবিতার ভাবের মধ্য দিয়ে!
(W)
@টেকি সাফি,
ধন্যবাদ, আপনাকেও শুভেচ্ছা(F)
দারুন লাগল কবিতাটা।
আসলে যখন পরকালে বিশ্বাস করতাম তখন মৃত্যু ব্যাপারটা খুব খারাপ লাগত না। বিশেষ করে হিন্দুধর্মের জন্মান্তরবাদ আমাকে খুব সান্ত্বনা দিত। কিন্তু যখন বুঝতে পারলাম এগুলো সব মেকি তখন মৃত্যুচিন্তা আমাকে সবচেয়ে বেশি যন্ত্রণা দেয়। যখন ভাবি আমি চলে যাব কিন্তু অপার বিশ্বের অপার রহস্যের সিংহভাগই আমার অজানা থাকবে, তখন আরো হাজার বছর বেঁচে থাকতে ইচ্ছা হয়।
কিছু বানান ভুল চোখে পড়ল।
‘চ্ছল চ্ছল’, ‘শূন্যতা’, ‘নিশ্বাস’
আর কিছু বানানে চন্দ্রবিন্দু হবে দেয়া হয়নি।
@রনবীর সরকার,
যখন বিশ্বাসী ছিলাম তখন মৃত্যুর কথা মনে পড়লে দোযখের ভয়াবহ শাস্তির কথা ভেবে ভয়ে আঁতকে উঠতাম। অবিশ্বাসী হওয়ার পরে মৃত্যুকে ভয় করিনা,কিন্তু পৃথিবী ছেড়ে, প্রিয়জনদের ছেড়ে একদিন অনন্ত মহাশুন্যে পাড়ি দিতেও মন চায়না।
চ্ছল চ্ছল> ছল ছল দুটোই শুদ্ধ
নিশ্বাস> নিঃশ্বাস দুটোই শুদ্ধ
শূন্যতাও আমার মনে হয় শুদ্ধ আছে।
বাকী ভুল বানানগুলো ধরিয়ে দিলে ভাল হয়। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্যে।
@রনবীর সরকার,
বলেন কী?! আমার দেখি উলটো প্রতিক্রিয়া!
এখন মরনকে তো ভয় লাগেইনা বরং সের্ফ ইলেকট্রন-কোয়ার্কের একটা বস্তা আমি জানার পর ভালোই লাগে, মরছি কই? আমার ইলেকট্রন, কোয়ার্কগুলো মরছে কই?
আত্মিক মৃত্যু? তাও কই? আমার পরবর্তী বংশধরকে আমি আমার জীনের কোড দিয়ে যাচ্ছি না?
আমারতো এখন ভালই লাগে, আসলে এভাবেই আমি দেখতে পাচ্ছি অনন্ত জীবন তবে অনেকেই শুধু এটুকুতে সান্তনা পান না তাও ঠিক 🙂
@টেকি সাফি,
এখন আর দোযখের ভয় বা বেহেস্তের লোভ নেই, কিন্তু সবাইকে ছেড়ে যেতে হবে তার জন্য দুঃখ হয়।