কিছু অনুভূতিঃ
পার্বত্য চট্রগ্রামের কথা লিখতে গিয়ে বাস্তবিক জীবনের কথা মনে পড়ে যায়, তারপর একটু বেশি আবেগপ্রবল হয়ে উঠি । এমন আবেগ একসময় মুক্তিকামী বাংলার মুক্তিযোদ্ধারা হৃদয়ে গেঁথে মুক্তির জন্য সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন পাকিস্তানি বর্বর শাসকশ্রেণীর উপর । রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে অধিকারের জন্য জয় ছিনিয়ে নিয়েছিলেন । তাই সেই আবেগ অন্যদশজনের আবেগের চেয়ে ছিল ভিন্ন, সেই আবেগ ছিল ভালোবাসা-মায়া-মমত্ববোধে আবদ্ধ । দেশের-দশের-জাতির মুক্তির সোপানে সেই আবেগ ছিল মর্যাদাপূর্ণ এবং শ্রদ্ধাজনক । আজ আমার মতো অধিকারহারা ছেলে-মেয়ে সেই একই আবেগ হৃদয়ে গেঁথে লাঞ্জনা-বঞ্চনার তীব্র প্রতিবাদী । এই প্রতিবাদ ভেদাভেদ কিংবা অজ্ঞ-অন্ধপূর্ণ নয় কিন্তু ধারাবাহিক অকথ্য করুণ বাস্তবতা মানসিকভাবে জ্বালা দিতে দিতে বাধ্য করাচ্ছে আরো একটু বেশি সতর্ক হবার । এই সতর্কতার কারণ অবিশ্বাস, আর এই অবিশ্বাসের কারণ চাতুকারিতা এবং প্রতারণা করার প্রতিফলন । আজ সেই প্রতারণার পরিপূর্ণ ফসল হচ্ছে “ভ্রাতৃঘাত”, যে ভ্রাতৃঘাতে ঝরে যাচ্ছে বাংলাদেশের একএক সুনাগরিক ।
পার্বত্য চট্রগ্রাম নিয়ে লেখালেখি করতে ব্যক্তিগতভাবে অনেক খারাপ লাগে । তবু ও না লিখলে যে নিজেকে অপরাধী মনে হয়, দ্বায়ভার কম হলেও নিজের উপর ও বত্তায়, তাই অন্য একজনের মতো চুপ করে ও থাকতে পারি না । পার্বত্য সমস্যাটি এখন বহুমুখী । এই বহুমুখী সমস্যাটিকে একমুখী করার আহ্বান জানালে ও আবার আমার রক্তের ভাইয়েরা আমাকে ভুল বুঝে থাকেন । পার্বত্য চট্রগ্রামের সমস্যাটি দিনদিন বহুমুখী আকারে রুপ নিচ্ছে, আর অন্যদিকে নিরাপত্তা বাহিনীর “ডিজিএফআই” -একের পর এক ছক একে নিজেদের উদ্দেশ্যকে বৃহৎ আকারে হাজিল করে যাচ্ছেন । অনেকাংশে আজ নিরাপত্তা বাহিনীরা সফল ও বটে । এমন এক মন্তব্য ফেইসবুকে এক বন্ধু করেছিলেন যেটি আমি লেখার শেষাংশে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই ।
শান্তি চুক্তির অপর নাম এখন অশান্তি চুক্তিঃ
শান্তি চুক্তির উপর শ্রদ্ধা রেখে – বর্তমানে পার্বত্য চট্রগ্রামে তিনটি সক্রিয় আঞ্চলিক রাজনীতিক দল রয়েছে । জেএসএস (সন্তু লারমা), জেএসএস (রুপায়ন দেওয়ান) এবং ইউপিডিএফ ( প্রসিত বিকাশ খীসা) । ১৯৯৭ সালের আগে আঞ্চলিক রাজনীতিক দল ছিল মাত্র একটি তা হচ্ছে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস ( অবিভক্ত ) । কিন্তু ১৯৯৭ সালের পরবর্তীতে “পার্বত্য চুক্তি” ( অন্য নাম “শান্তি চুক্তি” ? ) হওয়ার পর নতুনভাবে পাহাড়ের সবুজ বনাঞ্চল হয়ে যায় রক্তে রঞ্জিত । দীর্ঘ সময়ের জেএসএস এবং বাংলাদেশ সরকারের অস্ত্রবিরতির সমাপ্তি ঘটে, চলে পাহাড়ী কতৃক পাহাড়ী হত্যা-ঘুম-অপহরণসহ মুক্তিপণ আদায় -এর পিছনের অবশ্যই আগেভাগে আঁকা ছিল এক দাবা খেলার ঘর । এই দাবা খেলার ঘরটি এঁকেছিলেন বর্তমানে ক্ষমতাসীন আওয়ামিলীগ সরকারের কূটনীতিকবৃন্ধ অন্যদিকে নিরাপত্তা বাহিনীর “ডিজিএফআই” । আর জীবনহানি খেলায় নাম লেখান দুই পাহাড়ী নেতা -১. সন্তু লারমা ( যিনি তাহার ভাই এমএন লারমার মৃত্যুর পর ছিলেন জেএসএস -এর নেতৃত্ব ), এবং ২. প্রসিত বিকাশ খীসা ( যিনি একজন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের অন্যতম জন্মদাতা, বর্তমানে ইউপিডিএফ’ ) ।
১৯৯৭ সালের চুক্তির পর থেকে পাহাড়ে শান্তি ফিরেছে ভাবলে ভুল করা হবে । বরং শান্তি পিছনে বয়ে বেড়াচ্ছে অব্যত্ত অশান্তি, সন্তানহারা মা-বাবা করুণ আর্তনাত আদৌ কোমলময়ী মা-বাবার বুকে জ্বালা দিয়ে যায় । স্বামীহারা বিধবা মা-বোনের জীবন আজ অসহায় । পিতাহারা সন্তানের অর্থনীতিক দূদর্শা আদৌ মানবিকতা হরণ করে চলে; পড়াশুনার খরচভার বহন করতে না পারাতে অনেক ছেলে-মেয়েকে পড়াশুনা থেকে ঝড়ে যেতে হচ্ছে । তবুও গুলাগুলির আওয়াজে আজ পাহাড় কেঁদে বিলাপ করে; মা-বোনেরা এই বিলাপে অংশ নেন । শুধু তারাই জানে যারা ধ্বংসাত্মক ভ্রাতৃঘাতে হারাচ্ছেন প্রাণপ্রীয় একজনকে -মাষ্টার পাশ একজন শিক্ষিত যুবককে । এর জ্বালার অনুশোচনা কয়েকবার স্বচক্ষে দেখেছি যখনি গ্রামে-গ্রামে ঘুরেছি । সন্তানহারা এক মাকে দেখেছি সন্তান হারানোর ব্যথায় সে পাগলপ্রায়; পরিবারের সবাইকে অবিশ্বাস করে সে । এই অবিশ্বাস অত্যন্ত গভীরের; করুণ মানবিক এবং হৃদয়স্পর্শী । তারপর ও কি চুক্তিটি আসলে “শান্তি চুক্তি” হওয়ার দাবী রাখে ? মাননীয়া শেখ হাসিনার ইউনেস্কো শান্তি পুরষ্কারের মূল্য কোথায় ? আবার নাকি নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার দরকার ছিল ?
পার্বত্য রাজনীতির সংকটে আঞ্চলিক রাজনীতিক দলসমূহঃ
প্রথম আলোতে সাংবাদিক ‘অরুণ কর্মকার ও হরি কিশোর চাকমা’র “সংকটে পার্বত্য রাজনীতি” কলামে পার্বত্য চট্রগ্রামের বর্তমানে চলমান ভ্রাতৃঘাতের বাস্তবধর্মী চিত্র উঠে আসে । পার্বত্য আঞ্চলিক রাজনীতিক দলগুলো প্রায়ই কাঁদা ছুঁড়াছুঁড়িতে ব্যস্ত হয়ে সত্যিকার আন্দোলনকে একটু হলেও ব্যহৃত করছে । একে অপরকে বলছে কুচক্রী-দালাল-সন্ত্রাসি এবং আরো অনেক বিশেষণ এর ব্যবহারবিধি চোখে পড়ার মতো [1] । এবার আসুন একটু চোখ বুলিয়ে নিই, কে কে এই ভ্রাতৃঘাতের দ্বায়িত্বপূর্ণ পদে অত্যন্ত নিষ্ঠতা এবং সততার সহীত নিজের দ্বায়িত্ব এক ভাইকে মারার মধ্যে দিয়ে সম্পন্ন করে যাচ্ছেন । আরো অনেকের নাম বাদ পড়তে পাড়ে কারণ সবগুলোর নাম আমার জানা নেই, তবে কারোর জানা থাকলে মন্তব্য লিখে দিতে পারেন । আমার তাঁদের আত্মত্যাগের জন্য অনবরত শ্রদ্ধা যারা যারা সুখের জীবন উৎসর্গ করে অধিকারহারা জাতিমুক্তির জন্য লড়ায়ে সামিল হয়েছেন ঠিক একইভাবে আমার অশ্রদ্ধা এবং ঘৃণা তাদের ভ্রাতৃহত্যা রাজনীতির জন্য । অস্ত্রবাজী রাজনীতির জন্য, এক ভাই অন্য এক ভাইয়ের বুকে গুলি চালানোর জন্য আমি সেসব হত্যার রাজনীতিকে ঘৃণা করি, আর সেসব ভ্রাতৃঘাতের রাজনীতিকে যারা যারা উস্কে দিচ্ছে তাদেরকে ও আমার অশ্রদ্ধা এবং ঘৃণা । এই ঘৃণা মানবিক আবেদনের । এই ঘৃণা শুধু আবেগের নয় বরং মানবিক প্রশ্নের ।
পার্বত্য চট্রগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস):
পার্বত্য চট্রগ্রাম জনসংহতি সমিতি হচ্ছে পার্বত্য চট্রগ্রামে এগার আদিবাসী জুম্মমানুষের প্রথম রাজনীতিক সংগঠন । এই সংগঠনটির জন্ম হয় ১৫ই ফ্রেব্রুয়ারি ১৯৭২ সালে । তাদের নিজস্ব ওয়েব সাইটে দেয়া আছে যে মানবাধিকার ভাবাদর্শ সম্মিলিত যাতে বিদ্যমান জাতীয়তা, গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িক, সামন্তবাদ এবং সামাজিক সুবিচার । সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন শহীদ মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা [2]। বর্তমানে সংগঠনটির উচ্চপদস্থ নেতা-নেত্রীবৃন্ধরা হলেন; জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় ( ওরফে সন্তু) লারমা (পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সংগঠনের প্রধান ), প্রণতি বিকাশ চাকমা (সাধারণ-সম্পাদক), উষাতন তালুকদার, মঙ্গলকুমার চাকমা, গৌতম চাকমা, শক্তিপদ ত্রিপুরা, সজীব চাকমা নবীনদের সারিতে আছেন বোধিসত্ত্ব চাকমা, দীপায়ন খীসা, বব লারমা, ত্রিজিনাথ চাকমা, তেজদীপ্ত চাকমা, নিটোল চাকমা, বুলবুল চাকমাসহ আরো অনেকেই । মহিলা সমিতির নেত্রী হলেন জ্যোতিপ্রভা লারমা আর নবীন নেত্রীদের সারিতে আছেন চৈতালি ত্রিপুরা, চঞ্চনা চাকমা, সৃজনী ত্রিপুরা প্রমুখ ।
পার্বত্য চট্রগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস -সংষ্কার):
২০০৬ সালের সময়ে সন্তু লারমা নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতির ভাঙ্গন শুরু হয় এর প্রেক্ষিতে নতুন অন্যএক সংষ্কারপন্থী আঞ্চলিক রাজনীতিক দল সৃষ্টি হয়, যেটিকে নামকরণ করা হয় জনসংহতি সমিতি (জেএসএস-এম এন লারমা) । সংগঠনটির বর্তমান কনভেনিং কমিটি গঠন করে ১০রা এপ্রিল ২০১০ সালে । নতুন সংস্কারপন্থী সংগঠনটি অভিযোগ করে যে সন্তু লারমা নেতৃতাধীন ২০-৩১ মার্চের ২০১০ সালে জেএসএস এর ৯ম জাতীয় আলোচনাতে সংবিধান লংঘনের সাথে ৬জন নেতাকে বহিষ্কার করা হয়, যার মধ্যে ছিলেন মৃত চন্দ্র শেখর চাকমা যিনি দলের ৩য় বারের মতো সাধারণ সম্পাদক পদে দ্বায়িত্ব পালন করেন । সংগঠনটি সন্তু লারমাকে একনায়কসুলভ নেতা বলে অভিহিত করে । বর্তমানে সংগঠনটির উচ্চপদস্থ নেতা-নেত্রীরা হলেনঃ সুধাসিন্দু খীসা (কো-চেয়ারপার্সন), রুপায়ন দেওয়ান (কো-চেয়ারপার্সন), তদিন্দ্রলাল চাকমা (সাধারণ-সম্পাদক), আরো আছেন ইন্জিনিয়ার মৃনালকান্তি ত্রিপুরা, এডভোকেট শক্তিমান এবং নেত্রী কাকলি খীসা । [3] http://chtvoice.blogspot.com
ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ):
ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) পার্বত্য চট্রগ্রামের অন্যএক আঞ্চলিক রাজনীতিক সংগঠন । সংগঠনটির জন্ম হয় ২৬শে ডিসেম্বর ১৯৯৮ সালে, এক প্রস্তুতিমূলক কনফারেন্সের মধ্যে দিয়ে যার মধ্যে দিয়ে সংগঠনটি সুষ্পষ্টভাবে শক্তিশালী এবং গুরুতরভাবে ২রা ডিসেম্বরের ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত “পার্বত্য চুক্তি”কে আপত্তি জানাই যে “চুক্তিটি” মৌলিক দাবীগুলো অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে বলে । তাই সংগঠনটি জুম্মমানুষের আত্ম-নিয়ন্ত্রনের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য “পূর্ণ স্বায়ত্বশাসনের” আহ্বান জানায় । আর তাদের ওয়েব সাইটে আছে যে সংগঠনটি দৃরভাবে বিশ্বাস করে গণতান্ত্রিকনীতি, ভ্রাতৃত্ববোধ এবং সামন্তবাদ, এসবকিছু হচ্ছে সমাজকে অত্যাচার এবং ধ্বংস থেকে রক্ষাকরার স্বার্থে । সামন্তবাদের মধ্যে জাতিসমূহের অবিভেদ, লিঙ্গ বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিগত । সংগঠনটির বর্তমান নেতা-নেত্রীরা হলেনঃ প্রসিত বিকাশ খীসা (প্রেসিডেন্ট), রবি শংকর চাকমা (সাধারণ সম্পাদক), উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমা, নিরন চাকমা, ধ্রুব জ্যোতি চাকমা, শান্তি দেব চাকমা, মিথুন চাকমা, মাইকেল চাকমা, রিকো চাকমা, সোনামুনি চাকমা, অংগ্য মারমা, টুংগ্য মারমা এবং আরো অনেকই । নেত্রীর সারিতে আছেন, কণিকা দেওয়ান, যুথিকা চাকমা, রীনা দেওয়ানসহ আরো অনেকেই । [4]
উপরে উল্লেখিত নামগুলোকে চিনে রাখুন, যেগুলোর মধ্যে যেমন আছে জাতির প্রেম তেমনি আছে জাতি হত্যার প্রেম । তেনারা বলেন যে, এই ভ্রাতৃঘাত একটি রাজনীতিক বাস্তবতা যা থেকে বেরিয়ে আসতে সময়ের প্রয়োজন, সেজন্য অনেকেই যুদ্ধকে অনিবার্য বলে মনে করেন । আবার জনসংহতি সমিতির নেতা সন্তু লারমার মতে, “র্বতমানে চট্টগ্রামে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল একটিই, জেএসএস । তিনি মনে করেন, ইউপিডিএফ একটি সন্ত্রাসী সংগঠন । শুরু থেকেই এদের কাজ চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস । আর নবগঠিত জেএসএস (বিক্ষুব্ধ) সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা চক্রান্তকারী, কুচক্রী। খুদে দলবাজি করার জন্য তারা দল থেকে বের হয়ে গেছে । দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে তাদের পেছনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মদদ আছে” [5] । অন্যদিকে ইউপিডিএফের রাঙামাটি জেলার প্রধান সংগঠক শান্তি দেব চাকমা ও তাঁদের অঙ্গসংগঠন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব মাইকেল চাকমা বলেন, “জেএসএস নেতারা প্রতিটি সরকারকে খুশি রেখে নিজেদের বিভিন্ন লাভজনক পদে বহাল রাখার কৌশল অবলম্বন করছেন। পাহাড়ি জনগণের দাবি বাস্তবায়নের অবস্থান থেকে তাঁরা সরে এসেছেন। তাই চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য তাঁরা কোনো কর্মসূচি দিতে পারছেন না। দলে ভাঙনও হয়েছে এই কারণে” [6]। এই হচ্ছে কাঁদা ছুঁড়াছুঁড়ির নমুনা ।
ইউপিডিএফ এর সমর্থিতদের নেতৃবৃন্ধের মধ্যে যারা যারা প্রতিপক্ষ জেএসএস (সন্তু লারমার) গ্রুপের কাছে নিহত হন তারা হলেনঃ প্রদীপ লাল চাকমা, কুসুম প্রিয় চাকমা, রুপক চাকমা এবং অনিমেষ চাকমা [7]। এরমধ্যে আরো শতখানেক সাধারণ কর্মি এবং সমর্থক । আর অন্যদিকে ইউপিডিএফের কাছে নিহত হনঃ অভিলাষ চাকমা [8] । এরমধ্যে আরো শতখানেক সাধারণ কর্মি এবং সমর্থক । গত ১৪ এপ্রিল বাঘাইছড়ি উপজেলার মারিশ্যা ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামে জেএসএস (রুপায়ন) সমর্থিত এক নেতা চিজিমনি চাকমা ও তার দুই বছরের শিশু কন্যা অর্কি চাকমাকে গুলি করে হত্যা করা হয় । এরজন্য দায়ী করা হয় জেএসএস (সন্তু লারমা) কে । শুধুমাত্র গত তিন মাসে ৮ জন খুন এবং অপহরণের শিকার হয়েছে ১৫ জন । [9]
স্বনামে প্রগতিশীল জুম্মপ্রেমীক বনাম জুম্মবিদ্বেষীদের মধ্যে তফাৎতা কোথায় ?
স্বনামে প্রগতিশীল জুম্মপ্রেমীকদের মধ্যে বিপ্লব রহমান, নোমান চৌধুরির মতো লেখক এবং সাংবাদিকরা ও রীতিমতো পক্ষপাতিত্ব করে কাঁদা ছুঁড়াছুঁড়িতে লিপ্ত হয়ে নিজেদেরকে প্রগতিশীল বলে দাবী করেন । বিপ্লব রহমান নিজের অভিমত ব্যত্ত করতে গিয়ে বলেন,
“স্পষ্টতই আমার পক্ষপাতিত্ব জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) প্রতি । সন্তু লারমা থেকে শুরু করে সমিতির শীর্ষস্থানীয়রা সকলেই আত্নত্যাগী বিপ্লবী। স্বশাসনের আদর্শের ভিত্তিতেই তারা অতীতে সশস্ত্র সংগ্রাম করেছেন, এখনো প্রকাশ্য রাজনীতিতে তারই স্বাক্ষর রেখে চলেছেন ” [10]
নোমান চৌধুরী যিনি নিজেকে জুম্মপ্রেমীক মনে করেন আর নিজের প্রগতিশীলতা প্রকাশ করতে গিয়ে সব দোষের ভার ইউপিডিএফ এর উপর ছেড়ে দেন,
“ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে উঠছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। পার্বত্য চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে শান্তিচুক্তিবিরোধী সংগঠনটি একের পর এক অস্ত্রবাজি করে যাচ্ছে। আগে এই অস্ত্রবাজির মহড়া দুর্গম পাহাড়ে সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে সংগঠনটি জেলা ও উপজেলা সদরে ঘাঁটি গেড়ে অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে।” [11]
তেনারা যেদলকে সমর্থন করুক তাতে কোন সমস্যা দেখি না, কিন্তু সৈয়দ ইবনে রহমত, হোসেন খিলজী সাথে কি তেনাদের পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যায় ? সৈয়দ ইবনে রহমতের মতে,
“পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্তু লারমাদের সন্ত্রাসী এবং হিংস্রতার চরম দৃষ্টান্তের নজির আছে অসংখ্য। কিন্তু তাদের বর্বরতার চিত্র আমাদের মিডিয়াতে স্থান পায় না। কারণ তারা আমাদের মিডিয়ার কাছে অসহায় অবলা জীব হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু মিডিয়াতে তাদের পরিচয় যাইহোক সত্য কখনো চাপা থাকে না।” [12]
ঠিক একইভাবে উচ্চ শিক্ষিত হোসেন খিলজী ও খুবভাবে শংকিত যেকোন সময় পার্বত্য চট্রগ্রাম বিচ্ছিন্ন হয়ে পূর্ব তিমুর হয়ে যাবে এমন মানসিকতার । [13] তবে এখানে একটি মাত্র ব্যবধান লক্ষ্যনীয় তা হচ্ছে বিপ্লব রহমান এবং নোমানরা পাহাড়ীদের সান্নিধ্য থেকে পক্ষপাতিত্ব করার সুযোগ পান আর অন্যদিকে সৈয়দ ইবনে রহমত এবং হোসেন খিলজীরা বাইরের থেকে পাথর মারতে থাকেন । তবে সৈয়দ এবং হোসেনদের জন্য ভ্রাতৃঘাত উস্কে যায় না বরং উনাদের চরিত্রগুলো লিখনিতে সুন্দরভাবে ফুটে উঠে যদিও জাতিবিদ্বেষকে উস্কে দিতে উনারা খুবই পটু কিন্তু অন্যদিকে যারা পাহাড়ীদের সান্নিধ্য থেকে পাহাড়ীদের নিয়ে কিছু লেখালেখি করেন প্লাস নির্দিষ্ট দলকে সাপোর্ট দিয়ে নিজেরকে জুম্মপ্রেমীক বলে ঘুরে বেড়ান তারাইতো আরো বেশি ভয়ংকর পার্বত্য চট্রগ্রামের “ভ্রাতৃঘাতকে” উস্কে দেওয়ার জন্য কারণ স্বপক্ষ দলের সব খারাপ কার্যকলাপকে ডেকে রেখে প্রতিপক্ষ দলের বিরুদ্ধে নানারকম লেখালেখিতে ব্যস্ত হয়ে যান । সে পরিপ্রেক্ষিতে স্বপক্ষ দলের সব খারাপ কাজগুলো হয়ে যায় জায়েজ, না হয় জায়েজ করার আপ্রান্ত চেষ্টা ।
পার্বত্য সংকটে কী করণীয়ঃ
আমি খুব আন্তরিকভাবে চাকমা সার্কেলের প্রধান রাজা দেবাশীষ রায় যেভাবে প্রথম আলোকে বলেন তাতে আশাবাদী, তিনি বলেন,
“একাধিক রাজনৈতিক দল থাকা কোনো সমস্যা নয় বরং তা সুস্থ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও সমাজে বহুমত বিকাশে সহায়ক। কিন্তু সমস্যা হলো সশস্ত্র সংঘাত। এই সংঘাত পার্বত্য সমাজে এক দুষ্টক্ষত হিসেবে বিরাজ করছে। অনেক তরুণ অকালে শেষ হয়ে যাচ্ছে। চাকমা রাজা বলেন, সশস্ত্র তৎপরতা স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হলে সংশ্লিষ্ট দলগুলোকে যেমন পরমতসহিষ্ণু হতে হবে, তেমনি সরকারের সহযোগিতাও লাগবে। এই সংঘাত একটি রাজনৈতিক সমস্যা। সে হিসেবেই এটা নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিতে হবে। আর যদি এটাকে আইনশৃঙ্খলার বিষয় বলে বিবেচনা করা হয়, তাহলেও তা নিয়ন্ত্রণে পুলিশি ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করা হচ্ছে পুলিশের কাজে। তা ছাড়া পাহাড়ে ইনসার্জেন্সি (সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী তৎপরতা) না থাকলেও কাউন্টার ইনসার্জেন্সির একটা চশমা এঁটে রাখা হয়েছে। দেশের অন্য কোনো অঞ্চলে এ রকম সশস্ত্র সংঘাত হলে সরকার যা করত, এখানেও তাই করা উচিত।”
পার্বত্য আঞ্চলিক রাজনীতিক সমস্যার জন্য কে বা কারা দ্বায়ীঃ?
পার্বত্য চট্রগ্রামে ভ্রাতৃঘাতের মূল হোতা কিন্তু ক্ষমতাসীন সরকার আর সব ছকের কারিগর কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর “ডিজিএফআই” । ‘মুই জুম্মো’ নামে এক সচেতন ব্যক্তি যিনি আলজাজিরায় পার্বত্য চট্রগ্রামের সাম্প্রতিক রামগড়-গুড়মারাতে ঘটনার বিবরণ দিয়ে খবর প্রকাশে সমর্থ হন । ৫-ই জুন তিনি আরেকটি খুব গুরুত্বপূর্ণ খবর জেএসএস (সন্তু লারমা) সমর্থিত পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের নেতা বুলবুল চাকমাকে মন্তব্যর খাটিরে জানালেন যা প্রায়ই গোপন থাকতো, যদি ও আঁচ করতে পারি কিন্তু পর্যাপ্ত গবেষণার অভাবে প্রকাশ করা হয়ে উঠেনি । তিনি যা লিখেছেন, আমি অস্বীকার করতে পারি না, যেজন্য আমি দুদলের একে-অপরকে যে ‘সন্ত্রাসী’ অভিধাটি দিয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে দুইদলের কর্মী-সমর্থকদের সাথে বেশ কয়েকবার তর্ক করেছি । শুধু তাদের সাথে নয়, এবং কি বিভিন্ন বাংলা ব্লগে আমি উগ্র বাঙালী জাতিবাদী এবং জামাতি-শিবিরদের সাথে এই ‘সন্ত্রাসী’ অভিধাটি নিয়ে গুরুতর তর্ক করেছি । যদি ও আমাদের আঞ্চলিক রাজনীতিবিদরা এখন পর্যন্ত এক চোখ দিয়ে দেখতে ভালোবাসেন । মুই জুম্মো’ যে গুরুত্বপূর্ণ গোপনীয়তাটি প্রকাশ করলেন আমি মনে করি সেটা আঞ্চলিক রাজনীতিবিদদের জানার কথা, না হলে আমাদের আঞ্চলিক রাজনীতিবিদরা এতো অজ্ঞ হয়ে জাতি মুক্তির নেশার স্বপ্ন দেখে কিভাবে ? তাহলে তবু ও কেন এত ভ্রাতৃঘাত ? টাইটেলটি দি্যেছিলাম “নিরাপত্তা বাহিনীর খপ্পরে আমাদের পার্বত্য রাজনীতিক দলগুলো” । মুই জুম্মোর’ মন্তব্যটি আমি হুবহু বাংলার ফন্টে টাইপ করে দিয়ে নোটে রেখে দিয়েছি, যা ছিলঃ
::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
আপনার সাথে একমত….একমাত্র আলোচনায় পারে আমাদের এই অবস্থা থেকে মুক্ত করতে….সাথে দরকার পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং বিশ্বাস (যেটা আমাদের দুই দলের মানুষের-এ অভাব) ।
এবং আরেকটি জিনিস “দালাল” সম্পর্কে……এই ব্যাপারে আমি যেটা মনে করি, কোন পক্ষই দালাল নয়……পারস্পরিক অবিশ্বাসের কারণে এই ভুলবুঝাবুঝি, যার পিছনে দায়ী “সেনাবাহিনী এবং ডিজিএফআই” ।
আমি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে যেটা দেখেছি…..আপনারা যারা রাজনীতি সম্পৃক্ত তারাও হয়ত জানেন, সন্তু লারমা’র যেমন ডিজিএফআই, সেনাবাহিনীদের সাথে আনুষ্ঠানিকতা বজায় রাখার জন্য দেখা করতে হয়, তেমনি খাগড়াছড়িতে ও ইউপিডিএপহ-এর উচ্চপদস্ত নেতাদের একিই জিনিস বজায় রাখতে হয়…..সব ঝামেলা হলো এখানে ।
দুই পক্ষই কিন্তু শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতা বজায় রাখার জন্য বাধ্য হয়ে এই সভায় অংশগ্রহণ করেন….আপনারা যারা রাজনীতিতে যুক্ত তারা ভালোমতো জানেন এসব সভায় এড়িয়ে চলার কোন উপায় নেই ।
গেঞ্জাম সৃষ্টি হয় এখানেই…………………….।
যদিও আমাদের উভয় দল এই সভাটা করেন আনুষ্ঠানিকতা বজায় রাখতে, কিন্তু ডিজিএফআই-সেনাবাহিনী ওদের কাছে কিন্তু এটা আনুষ্ঠানিক সভা না…..ওদের কাছে এটা একটা খেলা, যেই খেলা-এ ওরা আমাদের উভই দলকে হারিয়ে আসছে এত দিন ধরে ।
আনুষ্ঠানিক আলোচনা নামে ডিজিএফআই যা করে টা হলো, একজনের বিরুদ্ধে আরেকজন কে লাগিয়ে দেই…..যেমন ধরেন ইউপিডিএপহ এর জনৈক নেতা এর সাথে আনুষ্ঠানিক আলোচনাতে বসলেন খাগড়াছড়ির ডিজিএফআই এর জনৈক মেজর, উনি করবেন কি উক্ত ইউপিডিএফ নেতার সাথে একটা অনুষ্ঠানিক সম্পর্ক বানানোর চেষ্তা করবেন…..এবং ধীরে ধীরে উনার কাছে সন্তু বাবুর কুৎসা রচনা করতে চেষ্টা করতে থাকবেন, এবং কিছউ ভুয়া প্রমাণ ও দিবেন সাথে করে যাতে উক্ত ইউপিডিএফ নেতা-এর মনে গেঠেই যাই আসলেই সন্তু বাবু সরকারের দালাল ।
একই জিনিস করবে রাঙামাটি ডিজিএফআই-এর কর্তা……সন্তু বাবুকে অনেক প্রমাণ দিবেন যে ইউপিডিএফ শান্তি চাই না, শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে-এ বাঁধা ইউপিডিএফ অনেক কিছু ।
ডিজিএফআই এর উপাস্থাপনা এতই নিখুঁত যে অভাগ্যবঃশত আমাদের নেতারা বুঝতে পারেন না যে ওনাদের বোকা বানানো হইতেছে এসব করে ।
আর আমাদের দলগুলো’র পারস্পরিক অবিশ্বাস এখন এতই বেশি হয়ে গেছে যে আমরা আমাদের বিরুদ্ধে ওরা যা বলে টাই বিশ্বাস করি ।
আর ভুলে গেলে চলবে না, ডিজিএফআই/ইন্টালিজেন্ট ফোর্স এর মানুষগুলো উচ্চ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পেশাদার লোক….যার কারণে ওদের বুদ্ধির কাছে আমরা বারবার পরাজিত হই ।
এরকম একটা উদাহরণ আমি একটা বই এ পড়েছিলাম, যে ইন্টালিজেন্ট ফোর্সগুলো কেমনে অন্তর কোলাহ সৃষ্টি করতে পারে……….কোথায় পড়ছি ঠিক মনে পড়তেছে না কিন্তু কাহিনীটা এরকম, “একটা দলে সদস্যরা একটা শহরে ভয়ংকর রকমের সন্ত্রাসী কার্যকর্ম সৃষ্টি করে চলেছে যা শহরের পুলিশ/নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে গেছে….দলটা এতই শক্তিশালী হয়েছে যে পুলিশ রা আর পারতেছে না…..শক্তিতে যখন পাড়তেছে না তখন শহরের নিরাপত্তা বাহিনী করলো কি বুদ্ধির আশ্রয় নিলো…..ওরা দেখলো কি, আমরা শক্তিতে দলটির সাথে পারছিনা যখন, আমাদের এখন একটা কিছু করতে হবে দলটাকে ভাঙানোর জন্য” ।
এবং একসময় দলটা ভাঙার সুযোগ ও ওরা পেয়ে গেলো…..হইছিলো কি দল-এর কিছু সদস্য একটা ব্যাংক ডাকাটি করলো….এই সুযোগ থাকেই ওরা কাজে লাগালো….ব্যাংক ডাকাতি করে দলের সদস্যরা নিয়েছিলো ধরেন ১০ কোটি টাকা….পরদিন খবরের কাগজে-এ নিরাপত্তা বাহিনীর নির্দেশনায় সাংবাদিকরা টাকার অংকটা ছাপালো ২০ কোটি টাকা । এই শুরু হয়ে গেলো অন্তর খন্ডল দলটার মাঝে….যারা ব্যাংক ডাকাটিতে অংশ নিয়েছিলো, দলের নেতা ওদের ধরলো, তোমরা ২০ কোটি টাকা ব্যাংক থেকে আনছো কিন্তু দলে-এ জমা দিয়েছো মাত্র ১০ কোটি, বাকি ১০ কোটি কোথায় গেলো বলো ।
এভাবে শুরু হয়ে গেলো অন্তরখন্ডল যার শেষ হলো দলকে দুইভাগে ভাগ করে…..এবং দল ভাঙার পর অন্তরখুন্ডলের মাধ্যমে মারামারি করে পুরা দলটাই ধ্বংস হয়ে গেলো…..আর ঐদিকে নিরাপত্তা বাহিনী হাসতে লাগলো ।
যেই দলের সাথে ওরা এতদিন শক্তিতে খুলিয়ে উঠতে পারেনি, ছোটো এক বুদ্ধিতে কেমনে পুরা দলটা রে ধ্বংস করে দিলো ওরা ? মাফ করবেন আমি এখানে আমাদের রাজনীতি দলগুলোকে ঐই খারাপ দলের সাথে তুলনা করেছি ….কিন্তু এটা শুধু নিরাপত্তা বাহিনীর চালাকি টা বুঝানোর জন্য । [14]
:::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
সন্দেহ জন্ম হয় কিজন্য ?
এসব কিছুর পর যখন কেউ এক তরফাভাবে পার্বত্য রাজনীতিক দলদের উপর লেখালেখি সমালোচনা করে তখন সন্দেহ এবং অবিশ্বাস এমনিতেই চলে আসে । পার্বত্য আঞ্চলিক রাজনীতিক দলগুলো ও নিশ্চয় আত্মপক্ষকে সমর্থন করলে খুশীতে আত্মহারা হয়ে যাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই । কিন্তু তাতে করে কোন বৃহৎ স্বার্থ সিদ্ধি হয় না । এই নিয়ে বেশ জোড়েসোড়ে ফেইসবুককে এক অন্যতম মাধ্যম বানিয়ে ঐক্যতার জন্য প্রচারণা করা হচ্ছে, দেয়া হচ্ছে মতামত এবং করা হচ্ছে করুণ আকুতি-মিনতি, সবকিছুর পর ও কাঁদাছুঁড়াছুঁড়িতো আছেই । [15] আন্তরিকতার অভাবে বারবার ঐক্যতা ভেস্তে যাচ্ছে আর ভ্রাতৃঘাত তীব্র থেকে তীব্রতর ধারণ করছে । এ যাবৎ ৫০০ এর অধিক পাহাড়ী হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে এই ভ্রাতৃসংঘাতে । জেএসএস এবং ইউপিডিএফের দস্তাদস্তিতে সাধারণ জনগণ নিরুপায় এবং অসহায় । এমনই বিশ্লেষণধর্মী লেখা পাহাড়ীর অন্যতম ব্লগার অডং চাকমা “জেএসএস-ইউপিডিএফ ঐক্য কী সম্ভব?” শিরোনামে দুদলকে তীব্র সমালোচনার পাশাপাশি ঐক্য হওয়ার আহ্বান করেছেন । [16]
পরিশেষেঃ
পরিশেষে আপনাদের কাছে শ্রদ্ধার সাথে ক্ষমাপ্রার্থী এবং মানবিক আবেদনের সাথে নম্রভাবে বলতে চাই এটি কোন ব্যক্তি আক্রমনাত্মে নয়, এভাবে সরাসরি না লিখলে বাস্তব দিকগুলো উঠে আসে না এবং পার্বত্য সমস্যার উত্তরণ কখনো সম্ভবপর হবে না । যে যেভাবে পারেন পাহাড়ীদের ভ্রাতৃঘাত বন্ধের জন্য সাহায্য করুণ । আরো জানতে হলে বিনাদ্বিধায় প্রশ্ন করতে পারেন । আঘাতের চেয়ে বরং উপকার হবে । পাহাড়ে এসবকিছু মুক্তভাবে আলোচনা করা যায় না, যে করতে চাই থাকে হুমকি দিয়ে নতুবা ধরে নিয়ে যায় । তাই ভ্রাতৃ সংঘাত আদৌ বন্ধ হচ্ছে না দীর্ঘ ১৪ বছরের পর ও । প্রতিদিন কোন না কোন ভ্রাতৃঘাতের ঘটনা লেগেই আছে । পারলে একটু ঐক্যতা নিয়ে কাজ করতে সাহায্য করুণ । ধন্যবাদ ।
:::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
[1] http://2.42.354a.static.theplanet.com/detail/date/2011-06-20/news/93549
[2] http://pcjss-cht.org/
[3] http://chtvoice.blogspot.com
[4] http://www.updfcht.org/about.html
[5] http://2.42.354a.static.theplanet.com/detail/date/2011-06-20/news/93549 ]
[6] http://2.42.354a.static.theplanet.com/detail/date/2011-06-20/news/93549
[7] http://www.samakal.com.bd/details.php?news=70&action=main&menu_type&option=single&news_id=167278&pub_no=732&type
[8] http://webster.site5.com/~pratidin/?view=details&type=gold&data=Loan&pub_no=165&cat_id=1&menu_id=1&news_type_id=1&index=10
[9] http://www.samakal.com.bd/details.php?news=70&action=main&menu_type&option=single&news_id=167278&pub_no=732&type
[10] https://blog.mukto-mona.com/?p=6118
[11] http://www.shaptahik-2000.com/2010/06/13/%E0%A6%87%E0%A6%89%E0%A6%AA%E0%A6%BF%E0%A6%A1%E0%A6%BF%E0%A6%8F%E0%A6%AB%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%85%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%BF-%E0%A6%9A%E0%A6%B2/
[12] http://www.sonarbangladesh.com/blog/sayedibnrahmat/15585
[13] http://www.sonarbangladesh.com/blog/HossainKhilji/35288
[14] http://www.facebook.com/media/albums/?id=100001390287862#!/note.php?note_id=220825447935270
[15] http://www.facebook.com/home.php?sk=group_152613778124973&ap=1
[16] http://prothom-aloblog.com/posts/8/128159
জেএসএস দলে বোধিসত্ত্ব চাকমা ও সৃজনী ত্রিপুরা এ দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আমার জানা মতে, এ দুইজন এখন এ দলে নেই। বোধিসত্ত্ব চাকমা বাসদ করেন আর সৃজনী ত্রিপুরা তাঁর আইনী পেশায় নিযুক্ত রয়েছেন।
:guru: @অডঙ চাকমা ,বিপ্লব রহমান –
এসব নিয়ে আলোচনা করতে হলে নির্জনে করা দরকার।
:-Y ‘‘অগ হদা হলে আমগ বেজার, গরম ভাত দিলে বেলেই বেজার”
:candle: জালেনেই দেশ জাদর হাম গরিবার চঅ, ভালেদ অব তোমার সুগী ওই পারিবা। (Y)
অমিত হিলের এ লেখাটা এর আগে পড়েছিলাম, কিন্তু মন্তব্য দেইনি। এখন দেখি, অনেক আলোচনা হয়ে গেছে। ভয় হচ্ছে কোথা থেকে আমার আলোচনা শুরু করবো। অমিতের লেখা ও সবার আলোচনা থেকে যেসব বিষয়ে আলোকপাত করা উচিত বলে মনে করেছি, সেসব বিষয়ে সাধারণভাবে আমার বক্তব্য তুলে ধরবো। তবে আমার মন্তব্য লেখার আগে অভিজিৎ দা’কে ধন্যবাদ জানাই আমাকে মুক্তমনায় আমন্ত্রণ জানানোর জন্যে।
১. নবীন প্রজন্মের একজন হিসেবে অমিত নিয়মিতভাবে বিভিন্ন সামাজিক ফোরামে যেমন ফেসবুক ও ব্লগে পার্বত্য চট্টগ্রামের দুই আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল জেএসএস-ইউপিডিএফ-এর মধ্যেকার সংঘাতের বিরুদ্ধে লিখে যাচ্ছেন। শুধু অমিত নয়, তরুণ প্রজন্ম জেএসএস-ইউপিডিএফ-এর রাজনৈতিক সংঘাত ও খুনোখুনি নিয়ে ক্ষুব্দ ও তাদের রাজনীতির প্রতি বীতশ্রদ্ধ।তাই ফেসবুক বা ব্লগের লেখনিতে দু’দলের সংঘাতের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ থাকে। এতে দু’দলের সমর্থক বা তাদের ভাবশিষ্যরা অনেক সময় ক্ষুব্দ হন। নিজেদের বিপক্ষে গেলে তো কোন কথাই নেই। তখন সেই লেখক বা ব্লগারের বিরুদ্ধে চলতে থাকে বিষোদগার। তরুণ ব্লগার হিসেবে অমিতরা যখন ‘ভাঙ্গা ভাঙ্গা’ হাতে জেএসএস-ইউপিডিএফ-এর সংঘাতের বিরুদ্ধে মনের দুঃখগুলো ব্যক্ত করেন, তখন তাদের কন্ঠরোধ করার চেষ্টা করা হয় এবং বিভিন্নভাবে রং লাগানোর চেষ্টা করা হয়। এখানেও দু’একজনের মন্তব্যে দেখতে পেলাম বাংলা ব্লগ ‘সামু’ স্টাইলে অমিতকে উপহাস করতে।তার মধ্যে বিপ্লব রহমানের নাম তো স্পষ্ট।
২. আমাদের জুম্ম সমাজ খুবই ছোট। আমরা কোন না কোনভাবে আত্মীয়তার সাথে কিংবা বন্ধুত্বের সাথে সম্পর্কযুক্ত। কোন শিক্ষিত তরুণ – সে জেএসএস হোক কিংবা ইউপিডিএফ হোক, যখন প্রতিপক্ষের গুলিতে খুন হয় স্বাভাবিকভাবে কষ্ট লাগে। ‘শান্তিচুক্তির সমর্থন’ কিংবা ‘পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের’ নামে অযথা তাজা প্রাণের বলি হচ্ছে।তরুণ সমাজের এই অর্থহীন বলিদান জুম্ম জনগণের পক্ষে কোন অধিকার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখতে পারেনা। বরং উভয় দলের নেতারা নিজেদের কোটারি স্বার্থ বজায় রাখার জন্যে তরুণ প্রজন্মকে ব্যবহার করছে। কখনো বা অসহায় লোকদের (যেমন স্বল্পশিক্ষিত বেকার যুবক কিংবা প্রত্যাগত শান্তিবাহিনী কর্মী যারা ইউপিডিএফ-এর কারণে গ্রামে বসবাস করতে পারছে না, অথবা জেএসএস-এর কারণে গ্রামে থাকতে পারছে না এমন লোকদের)দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে উভয় দল তাদেরকে ব্যবহার করছে মারামারিতে। এতে কারোর উপকার হচ্ছে না। বরং এই সংঘাত বছরের পর বছর চলতে থাকতে থাকায় জুম্ম সমাজে এক ভয়ংকর সহিংসতার সংস্কৃতি চর্চা হচ্ছে।এই রাজনৈতিক সহিংসতার সংস্কৃতি যদি জুম্ম সমাজে পাকাপোক্ত হয়ে যায়, অদূর ভবিষ্যতে জুম্ম সমাজে কী রকম ভয়াবহ পরিণতি ঘটে সেটা বলা খুবই মুশকিল। স্বাভাবিকভাবে অমিত হিল বা শিক্ষিত যুব সমাজ জেএসএস-ইউপিডিএফ এই দুই দলের বৃত্তের বাইরে থেকে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত বন্ধে বিভিন্নভাবে আওয়াজ তুলছেন বিভিন্ন ফোরামের মাধ্যমে। এখানে ফেসবুক আর ব্লগ ভাব প্রকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
৩. কেন জেএসএস-ইউপিডিএফ-এর এই সংঘাত? এ বিষয়ে বিভিন্নজনে বিভিন্ন আঙ্গিকে বলে থাকেন, ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন। সে ব্যাপারে এখানে আলোচনা করার সুযোগ নেই।তবে জেএসএস-ইউপিডিএফ-এর সাথে অনেক অ্যাক্টর-ফ্যাক্টর ও ভাবাদর্শগত সমর্থক আছে। যাদের সবাইকে স্টেইকহোল্ডার বলা যায়।অমিত তার লেখাতে এসব স্টেইকহোল্ডারদের ভূমিকা উন্মোচন করার চেষ্টা করেছেন।স্টেইকহোল্ডারদের দু’ভাগে ভাগ করা যায় – প্রাইমারী ও সেকেন্ডারি।প্রাইমারী স্টেইকহোল্ডারের মধ্যে আছে জেএসএস-ইউপিডিএফ বা তাদের সাথে সরাসরি জড়িত নেতা-কর্মীরা। সেকেন্ডারি স্টেইকহোল্ডারদের মধ্যে রয়েছে উভয় দলের সমর্থিত বা তাদের ভাবাদর্শে প্রভাবিত সাংবাদিক, লেখক, রাজনৈতিক কর্মী ও সরকারী এজেন্ট যেমন সেনাবাহিনী ও ডিজিএফআইরা অন্যতম।
৪. অমিত বিভিন্ন স্টেইকহোল্ডারের ভূমিকা আলোচনা করতে গিয়ে কিছু সেকেন্ডারি স্টেইকহোল্ডারের নামও নিয়ে এসেছেন। সেটা করতে গিয়ে তিনি বিপ্লব রহমান ও দীপায়ন খীসাদের বিরাগ ভাজন হয়েছেন। পার্বত্যচুক্তিকে ঘিরে প্রাইমারী স্টেইকহোল্ডার জেএসএস-ইউপিডিএফ কী শুরু করেছে সেটা কারোর অজানা নয়।তাই তাদের ভূমিকা নিয়ে এখানে কিছু বলার নেই। তবে সেকেন্ডারি স্টেইকহোল্ডারদের নিয়ে কিছু বলার আছে। এই স্টেইকহোল্ডাররা জেএসএস-ইউপিডিএফকে ইতিবাচকভাবে যেমন প্রভাবিত করতে পারেন, তেমনি নেতিবাচকভাবেও করতে পারেন।
এখানে বিপ্লব রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কিছু কথা বলতে চাই।আশা করি, তিনি ব্যক্তিগত আক্রমণ হিসেবে নেবেন না। অমিত, তার এ লেখাতে কিছু সেকেন্ডারি স্টেইকহোল্ডারের নাম বিপ্লব রহমান, নোমান চৌধুরী, সৈয়দ ইবনে রহমত ও হোসেন খিলজী ইত্যাদি নাম এনেছেন। যতটুকু জানি, শেষের দু’জন ‘সামু’ ব্লগে বিষাক্ত সাম্প্রদায়িক বাষ্প ছড়ান তাদের লেখার মাধ্যমে। নোমান চৌধুরীর লেখার সাথে তেমন পরিচিতি নেই। সেই হিসেবে বিপ্লব রহমান সবচেয়ে পরিচিত জন। তিনি অনেক আগে থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রাম ইস্যু নিয়ে লেখালেখি করে আসছেন। তিনি নিজেও দাবী করেন, তিনি পার্বত্য রাজনীতির পর্যবেক্ষক।সত্যি কথা বলতে গেলে, পার্বত্য চট্টগ্রাম ইস্যুই তাকে সাংবাদিক হিসেবে পরিচিতি দিয়েছে। পাহাড়ী মানুষের বন্ধু হিসেবে সমাদর পেয়েছেন। পাঠক হিসেবে আমিও তার লেখা আগ্রহভরে পড়তাম।
৫. কিন্তু চুক্তি পরবর্তীতে জেএসএস-ইউপিডিএফ-এর মধ্যে যখন দ্বন্দ্ব শুরু হয়, তখন এর মধ্যে বিপ্লব রহমানের ভূমিকা নিরপেক্ষ থাকেনি।তিনি পুরোপুরি জেএসএস-র পক্ষে এবং জেএসএস-র কলম সৈনিক হিসেবে পত্রিকায়, ব্লগে ও ফেসবুকে কথা বলে যাচ্ছেন। আমরা যারা নির্মোহভাবে জেএসএস-ইউপিডিএফ বৃত্তের বাইরে থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত বিষয়ে কথা বলতে চাই, তারা বিপ্লব রহমানদের ভূমিকা মেনে নিতে পারি না। একটা উদাহরণ দিতে চাই। বিপ্লব রহমান ‘পাহাড়ের রুদ্ধকন্ঠCHTVoice’ নামে একটা ফেসবুক গ্রুপ খুলেছেন। ঐ গ্রুপে তিনি আহবান জানাচ্ছেন, আদিবাসী ইস্যূ নিয়ে, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা নিয়ে লিখতে। দেখা গেছে, যারা জেএসএস-এর বিপক্ষে কিছু লেখেন, তাদের বক্তব্যকে তিনি ‘সামু’ স্টাইলে খন্ডন করার চেষ্টা করেছেন এবং ব্যক্তিগত আক্রমণের দোহাই দিয়ে অনেককে ব্লক/ব্যান করেছেন করেছেন। নিয়মিত অংশগ্রহণকারী অমিত হিলকে ব্লক করেছেন। আমাকেও করেছেন।যাক, সে লম্বা কাহিনী। এখানে যে কথা বলতে চাই সেটা হলো, বিপ্লব রহমান মুক্ত বিতর্কের আহবান জানিয়ে কেবল জেএসএস পক্ষীয় বক্তব্যগুলোকে বাহবা দেন, বাটন টিপে ’লাইক’ দেন। আর ভিন্নমতগুলোকে স্থান দেন না। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন এসে যায়, মুক্ত বিতর্কের নামে কারোর কন্ঠ রুদ্ধ করছেন কী না? আদিবাসী তরুণ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করছেন কী না কোন বিশেষ দলের পক্ষ হয়ে? এ প্রেক্ষিতে কেউ যদি তার বিরুদ্ধে সংঘাতে উস্কে দেওয়ার অভিযোগ আনেন, তার এ ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিত। নিজের ভূমিকা বিশ্লেষণ করা উচিত।
এখানে আরো একটা কথা বলতে চাই, তিনি তার ফেসবুক গ্রুপে বেছে বেছে কারোর কারোর কন্ঠরোধ করেন (যারা জেএসএস-র বিপক্ষে কথা বলেন) গ্রুপের নীতিমালার দোহাই দিয়ে। তার মনে রাখা উচিত, পার্বত্য চট্টগ্রামে আজকের যে জেএসএস-ইউপিডিএফ দ্বন্দ্ব তার মূলে অন্যতম একটি কারণ হলো ভিন্ন কন্ঠরোধ করে দেওয়া, অন্যের মত না শোনা ও সহ্য না করা।জেএসএস-ইউপিডিএফ-এর দাবীগুলোর মধ্যে মৌলিক কোন তফাত নেই; শুধু ভিন্ন ভিন্ন পরিভাষায় দাবীগুলো উচ্চারণ করা হচ্ছে মাত্র। মাফ করবেন, একটু খারাপ ভাষায় বলতে হয়, ইউপিডিএফ হলো জেএসএস-র রাজনৈতিক পাপের ফসল।জেএসএস-র মধ্যে যদি পরমত সহিঞ্চুতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ চর্চা হতো তাহলে ইউপিডিএফ নামক বিষফোঁড়া বেদনাদায়ক হয়ে উঠতো কী না সন্দেহ ছিলো। কাজেই বিপ্লব রহমানের মত যারা পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা দেশের মঙ্গল চান, তাদের জেএসএস কিংবা ইউপিডিএফ-এর প্রতি অনুরাগ বশবর্তী হয়ে কারোর কন্ঠরোধ করা উচিত নয়। মানুষকে কথা বলতে দিন। মুক্তবুদ্ধি চর্চা হতে দিন। আমরা কারোর রুদ্ধকন্ঠ চাই না।
৬. আরো অনেক বিষয় আলোচনায় এসেছে। সেসব বিষয়ে যেতে চাচ্ছিনা। কেননা, আমার মন্তব্য অনেক লম্বা হয়ে যাচ্ছে। শেষে এটুকু বলতে চাই, জেএসএস-ইউপিডিএফ-র ভ্রাতৃঘাতী দ্বন্দ্ব কীভাবে সমাধান হবে তার কোন সহজ সরল উত্তর নেই। তাই আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে – সেটা হোক ব্লগে, ফেসবুকে কিংবা চায়ের আড্ডায়। অমিতরা লিখুন। সে লেখাতে বিপ্লব রহমানদের নামও যদি এসে যায়, তাদের মনক্ষুন্ন হওয়ার কোন কারণ নেই। সামু স্টাইলে উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন নেই। মন খুলে কথা বলুন এবং অন্যকেও বলতে দিন। যুক্তিতে মুক্তি – এই হোক তারুণ্যের স্লোগান।
@অডঙ চাকমা,
আপনার ভিত্তিহীন ব্যক্তি কুৎসা রটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ। (N)
ব্যক্তি বিপ্লবকে বধ করতে হিল ট্যাগি অমিতের সহচর হয়ে আপনার মুক্তমনায় ফেসবুক বিতর্ক টেনে আনা শুধু হাস্যকরই নয়, এটি একটি বালখিল্যতাও বটে। :hahahee: :hahahee: :hahahee:
ফেসবুকে আদিবাসী সমস্যা নিয়ে যে অল্প কয়েকটি উন্মুক্ত গ্রুপ রয়েছে তার মধ্যে ‘পাহাড়ের রুদ্ধকন্ঠ CHTVoice’ সবচেয়ে সক্রিয়। উন্মুক্ত গ্রুপ হওয়ায় এতে সদস্য পদগ্রহণ করা সহজ। আবার মুক্তচিন্তা, তর্ক-বিতর্ক, সৃষ্টিশীল চিন্তার যৌথ মিথস্ত্রিয়াও ঘটে। গ্রুপটি নিম্নোক্ত আদর্শ ও নীতিমালায় পরিচালিত হয়। এর ব্যত্যয় হলে গ্রুপের ছয়জন অ্যডমিন সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষায় আপত্তিকর পোস্ট মুছে ফেলার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট পোস্টদাতাকে সতর্ক করেন। কিন্তু বার বার এতেও কাজ না হলে অ্যাডমিনরা যৌথ সিদ্ধান্তে আপত্তিকর সদস্যকে ব্লক করেন। গ্রুপের শৃঙ্খলা ও সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষার স্বার্থেই এই অপ্রীতিকর পদক্ষেপ নিতে হয়। এটি কারো পছন্দ না হলেও অ্যাডমনরা নিরুপায়। এখানে কে কোন দল করে, তা মোটেই বিবেচ্য নয়। প্রসঙ্গত, বিপ্লব রহমান গ্রুপটির নির্মাতা হলেও এর অন্য পাঁচজন অ্যাডমিন সকলেই আদিবাসী এবং গ্রুপ পরিচালনায় যথেষ্ট গণতন্ত্রী।
[লিংক]
যাইহোক। আপনার বিভ্রান্তি রটনার এই কূটকৌশলের জবাবে শুধু এইটুকুই বলা; নইলে ‘পাহাড়ের রূদ্ধকণ্ঠ CHT Voice’ নিয়ে অন্য ফোরামে আলোচনা নিছক অবান্তর একটি বিষয়।
আবারো ঢালাও মিথ্যে প্রচরানায় ধীক্কার জানাই। (N) (N)
—-
পুনশ্চ: এই পোস্টে এটিই আমার শেষ মন্তব্য। হিল নামধারী অমিত গং, আপনারা যা ইচ্ছে লিখুন বা করুন, মনে রাখবেন, তাতে বিপ্লব রহমানের কিছু যায়-আসে না। :))
@বিপ্লব রহমান,
@বিপ্লব রহমান,
আপনি নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে পারেন সেই অধিকার আপনার আছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, কোনটা সত্য আর কোনটা কুৎসা সেটা বিচার করার মত কোন নিরপেক্ষ বিচারক এ মুহুর্তে এখানে নেই। আর আমার আত্মপক্ষ সমর্থনে তথ্য প্রমাণ হাজির করে মুক্তমনাকে আপনার সৃষ্ট ফেসবুক গ্রুপ ‘পাহাড়ের রুদ্ধকন্ঠ CHTVoice’-এ পরিণত করতে চাই না। মুক্তমনা’র অ্যাডমিনকেও বিব্রত করতে চাই না।
‘পাহাড়ের রুদ্ধকন্ঠ CHTVoice’-এ যে ক’জন অ্যাডমিনের কথা বললেন তাদের সবাইকে চিনি ও জানি। মুক্তমনাতে এসে এ বিষয় নিয়ে বিতর্কে যেতে লজ্জা লাগছে। এখানে শুধু একটা কথা বলবো। আপনি হয়ত মহাভারতের একটি চরিত্র শিখন্ডি’র নাম শুনে থাকবেন। আমরা চাইবো, কেউ যেন আদিবাসীদের ইস্যূ নিয়ে শিখন্ডির ভূমিকা পালন না করেন।
পরিশেষে আরো একটি চাওয়া, কারোর কন্ঠ যেনো কোথাও রুদ্ধ না হয়। আমরা মুক্ত কন্ঠে কথা বলতে চাই। মান অভিমান নয়, আমরা মুক্তচিন্তা ও মুক্তবুদ্ধি চর্চায় বিশ্বাস করি।
————————-
দু:খিত, উপরের মন্তব্যটি যথাযথভাবে আসেনি। তাই আবার পোস্ট করলাম।
@বিপ্লব রহমান,
আপনি একা সিদ্ধান্ত নেন এমন প্রমাণ করতে আরো কি স্ক্রীন শটের দরকার পড়বে নাকী ? এত মিথ্যা-ভিত্তিহীন কথাবার্তা ভালো নয় জনাব । আমাকে ব্লক করার পর আমি অ্যডমিনদের সাথে যোগাযোগ করেছি, তাদের বক্তব্যগুলো এগুলো হারিয়ে যায়নি । (N)
আরো একবার । (N)
আর কোন আবেগবসে নয় । সরাসরি মিথ্যাবাদের প্রতিবাদ । (N)
অমিত হিলের এ লেখাটা এর আগে পড়েছিলাম, কিন্তু মন্তব্য দেইনি। এখন দেখি, অনেক আলোচনা হয়ে গেছে। ভয় হচ্ছে কোথা থেকে আমার আলোচনা শুরু করবো। অমিতের লেখা ও সবার আলোচনা থেকে যেসব বিষয়ে আলোকপাত করা উচিত বলে মনে করেছি, সেসব বিষয়ে সাধারণভাবে আমার বক্তব্য তুলে ধরবো। তবে আমার মন্তব্য লেখার আগে অভিজিৎ দা’কে ধন্যবাদ জানাই আমাকে মুক্তমনায় আমন্ত্রণ জানানোর জন্যে।
১. নবীন প্রজন্মের একজন হিসেবে অমিত নিয়মিতভাবে বিভিন্ন সামাজিক ফোরামে যেমন ফেসবুক ও ব্লগে পার্বত্য চট্টগ্রামের দুই আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল জেএসএস-ইউপিডিএফ-এর মধ্যেকার সংঘাতের বিরুদ্ধে লিখে যাচ্ছেন। শুধু অমিত নয়, তরুণ প্রজন্ম জেএসএস-ইউপিডিএফ-এর রাজনৈতিক সংঘাত ও খুনোখুনি নিয়ে ক্ষুব্দ ও তাদের রাজনীতির প্রতি বীতশ্রদ্ধ।তাই ফেসবুক বা ব্লগের লেখনিতে দু’দলের সংঘাতের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ থাকে। এতে দু’দলের সমর্থক বা তাদের ভাবশিষ্যরা অনেক সময় ক্ষুব্দ হন। নিজেদের বিপক্ষে গেলে তো কোন কথাই নেই। তখন সেই লেখক বা ব্লগারের বিরুদ্ধে চলতে থাকে বিষোদগার। তরুণ ব্লগার হিসেবে অমিতরা যখন ‘ভাঙ্গা ভাঙ্গা’ হাতে জেএসএস-ইউপিডিএফ-এর সংঘাতের বিরুদ্ধে মনের দুঃখগুলো ব্যক্ত করেন, তখন তাদের কন্ঠরোধ করার চেষ্টা করা হয় এবং বিভিন্নভাবে রং লাগানোর চেষ্টা করা হয়। এখানেও দু’একজনের মন্তব্যে দেখতে পেলাম বাংলা ব্লগ ‘সামু’ স্টাইলে অমিতকে উপহাস করতে।তার মধ্যে বিপ্লব রহমানের নাম তো স্পষ্ট।
২. আমাদের জুম্ম সমাজ খুবই ছোট। আমরা কোন না কোনভাবে আত্মীয়তার সাথে কিংবা বন্ধুত্বের সাথে সম্পর্কযুক্ত। কোন শিক্ষিত তরুণ – সে জেএসএস হোক কিংবা ইউপিডিএফ হোক, যখন প্রতিপক্ষের গুলিতে খুন হয় স্বাভাবিকভাবে কষ্ট লাগে। ‘শান্তিচুক্তির সমর্থন’ কিংবা ‘পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের’ নামে অযথা তাজা প্রাণের বলি হচ্ছে।তরুণ সমাজের এই অর্থহীন বলিদান জুম্ম জনগণের পক্ষে কোন অধিকার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখতে পারেনা। বরং উভয় দলের নেতারা নিজেদের কোটারি স্বার্থ বজায় রাখার জন্যে তরুণ প্রজন্মকে ব্যবহার করছে। কখনো বা অসহায় লোকদের (যেমন স্বল্পশিক্ষিত বেকার যুবক কিংবা প্রত্যাগত শান্তিবাহিনী কর্মী যারা ইউপিডিএফ-এর কারণে গ্রামে বসবাস করতে পারছে না, অথবা জেএসএস-এর কারণে গ্রামে থাকতে পারছে না এমন লোকদের)দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে উভয় দল তাদেরকে ব্যবহার করছে মারামারিতে। এতে কারোর উপকার হচ্ছে না। বরং এই সংঘাত বছরের পর বছর চলতে থাকতে থাকায় জুম্ম সমাজে এক ভয়ংকর সহিংসতার সংস্কৃতি চর্চা হচ্ছে।এই
ঐক্যের বিরোধীদের প্রতি
ইউপিডিএফ থেকে বহিষ্কৃত ও বর্তমানে সন্তু লারমার মুরীদ দীপায়ন খীসার “ঐক্যের ফেরিওয়ালাদের কাছে কিছু বিনীত নিবেদন” শিরোনামের লেখাটি পড়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত “দুই বিঘা জমি” কবিতাটি মনে পড়লো৷ এই কবিতার বিষয়বস্তুর সারসংক্ষেপ হলো এই — হতদরিদ্র উপেনের শেষ সম্বল ছিল দুই বিঘা জমি৷ তাও জমিদার ষড়যন্ত্র করে কেড়ে নেয়৷ ভিটেমাটি-হারা ছন্নছাড়া হয়ে উপেন নানা জনপদ ভ্রমণ করেন কিন্তু তার জমি হারানোর শোক ভুলতে পারেন না৷ বহু বছর পর ভূমির মায়ায় তিনি একদিন নিজ গ্রামে ফিরে আসেন৷ ইত্যবসরে তার সেই দুই বিঘা জমির আমূল পরিবর্তন করা হয়েছে৷ তবে প্রাচীরের কাছে একটি আমগাছই কেবল অক্ষত আছে৷ সেটা দেখে তার বাল্যকালের অনেক স্মৃতি মনে পড়ে যায়৷ এমন সময় বাতাসে দু’টি আম তার সামনে পড়লে তিনি সেগুলো কুড়িয়ে নেন৷ আর তখনই যমদূতের মতো হাজির হয়ে মালী তাকে বন্দী করে জমিদারের কাছে নিয়ে যায়৷ জমিদার ক্রোধে ফেটে পড়েন:
শুনি বিবরণ ক্রোধে তিনি কন, ‘মারিয়া করিব খুন’৷
বাবু যত বলে পারিষদ-দলে বলে তার শতগুণ৷
আমি কহিলাম, ‘শুধু দু’টি আম ভিখ মাগি মহাশয়৷’
বাবু কহে হেসে, ‘বেটা সাধুবেশে পাকা চোর অতিশয়!’
আমি শুনে হাসি, আঁখিজলে ভাসি, এই ছিল মোর ঘটে-
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ, আমি আজ চোর বটে।
সত্যি আজ কবিতার জমিদার বাবুর মতো যারা জনগণের সুখ শান্তি কেড়ে নিয়েছে তারাই সাধু, নীতিভ্রষ্ট আদর্শচু্যত দীপায়নরাই আজ ‘প্রকৃত দেশপ্রেমিক’, আর আমরা যারা উপেনের মতো কেবল ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধের “ভিখ মাগছি” তারাই হয়ে গেলাম ‘হিপোক্র্যাট’৷ ভূমিদস্যু জমিদার ক্রোধে ফেটে পড়েছেন কেবল দুটি আমের জন্য৷ আর দীপায়ন বাবু “শান্তিবাদী”দের ওপর ক্রোধে ফেটে পড়ছেন সংঘাত বন্ধের দাবি করায়৷ জমিদার নিজে ভুমি দস্যু হয়েও উপেনকে চোর বলে গালি দেয়, আর হিপোক্রেসির পরাকাষ্ঠা দীপায়ন বাবু অডং, অমিত হিল ও ইউপিডিএফসহ যারা শান্তির পক্ষে তাদের বলেন হিপোক্র্যাট৷ কবি শামসুর রাহমানের কবিতার প্যারোডি করে বলতে ইচ্ছে করে, এক অদ্ভুত গাধার পিঠে চলছে জেএসএস!
দীপায়ন বাবুর লেখায় স্পষ্ট হয়েছে, ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধ না হওয়ার জন্য কেবল সন্তু লারমা নয়, তার আশেপাশে যে সব চামচা চাটুকার রয়েছেন, তারাও কম দায়ী নন৷ ‘বাবু যত বলে পারিষদ-দলে বলে তার শতগুণ৷’ দেখা যাচ্ছে সন্তু লারমা একবার ইউপিডিএফ নির্মূলের কথা বললে তার “পরিষদ-দল” অর্থাত্ দীপায়ন বাবুর মতো চাটুকার-চামচারা তার শতগুণ বলছেন৷ তাই পাহাড়ে রক্ত ঝরছে অবিরাম, মায়ের কোল খালি হচ্ছে একের পর এক আর বিধবা হচ্ছেন অসংখ্য জুম্ম নারী৷ ইতিহাস কি এই চাটুকারদের ক্ষমা করবে?
আমি বলবো যারা ঐক্যের আহ্বান জানাচ্ছেন, যারা ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধের দাবি জানাচ্ছেন, তাদের কটাক্ষ ও হেয় প্রতিপন্ন করে দীপায়ন বাবু যে ঔদ্ধত্য দেখিয়েছেন, তা যেমন ক্ষমার অযোগ্য, তেমনি পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য এক অশনি শঙ্কেত৷ সবচেয়ে অবাক হওয়ার বিষয়, নিজে আদর্শচ্যুত হয়ে, রাজনৈতিক দিগবাজী খেয়ে তিনি অন্যকে হিপোক্র্যাট না হওয়ার উপদেশ বর্ষণ করছেন৷ এর থেকে চরম ভণ্ডামী আর কী হতে পারে! নিজে চোর হয়ে সাধুদের চুরি না করার পরামর্শ দিচ্ছেন৷ সবার মনে রাখা উচিত দীপায়ন বাবুর মতো রাজনৈতিক ভণ্ড ও দিগবাজী বিশারদরা আন্দোলনের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক৷ এদের ব্যাপারে সচেতন থাকাই জাতি ও জনগণের জন্য মঙ্গল৷ এদেরকে ইউপিডিএফ থেকে বিতাড়িত করা গেছে বলেই ইউপিডিএফ এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে৷ এরা যতদিন পার্টিতে ছিল, ততদিন পার্টিকে অনেক খেসারত দিতে হয়েছে৷ পার্টি একই জায়গায় ঘুরপাক খেয়েছে৷
মাছিরা যেমন মরা প্রাণীর দেহে গিয়ে ভিড় করে, দলচ্ছুট সুবিদাবাদী দীপায়ন বাবুরাও নীতি আদর্শহীন মরা পার্টিতে গিয়ে আশ্রয় নেয়৷ যেখানে মাছি ভন্ ভন্ করে, মনে করতে হবে সেখানে কোন মরা প্রাণী আছে৷ ঠিক তেমনি দীপায়নরা যে পার্টিতে ভিড় করে, মনে করতে হবে সে পার্টি রাজনৈতিকভাবে মরে গেছে বা দেউলিয়া হয়ে পড়েছে৷ মাছিরা যেমন জীবন্ত মানুষের গায়ে পড়া মাত্র তাড়া খেয়ে অন্যত্র উড়ে যেতে বাধ্য হয়, দীপায়নরাও ইউপিডিএফ-এর মতো একটি আদর্শবাদী পার্টি থেকে বহিস্কৃত হয়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়৷
দীপায়ন বাবুর লেখার জবাব ইতিমধ্যে অডং চাকমা ও অমিত হিল চমত্কারভাবে দিয়েছেন৷ তার এই লেখার জবাব নতুন করে আর দেয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না৷ তবুও যেহেতু অডং চাকমা ইউপিডিএফ-এর দিক থেকে মন্তব্য আশা করছেন, সেজন্য দু’ একটা কথা না বলে পারছি না৷
প্রথমত, দীপায়ন বাবুর লেখা পড়ে মনে হয়েছে ঐক্যের পক্ষে কথা বলা, ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধের দাবি করা তার কাছে যেন অপরাধ৷ অডং চাকমা ও অন্যান্যরা যেন সেই অপরাধ করেছেন৷ আমি বলবো, ঐক্যের পক্ষে কথা বলা যদি অপরাধ হয়, তাহলে সেই অপরাধ বার বার করা উচিত৷
দ্বিতীয়ত, ফেইসবুক ও ইন্টারনেটের অন্যান্য সোসাল মিডিয়ায় ঐক্য সম্পর্কে যে আলোচনা হচ্ছে, তা বৃথা যাচ্ছে না৷ দীপায়ন যে জেএসএস (সন্তু গ্রুপ) এর পক্ষে প্রতিক্রিয়া দেখাতে বাধ্য হয়েছেন, এটা তারই প্রমাণ৷ সেজন্য আমাদের সবার উচিত হবে এই আলোচনাকে গভীরতর এবং আরো প্রসারিত করা৷ একে একটি আন্দোলনের রূপ দেয়া৷ এটা আজ প্রমাণিত সত্য যে, চরম গণবিরোধী ফ্যাসিস্টরা প্রথম দিকে গণদাবি উপেক্ষা করার ধৃষ্টতা দেখালেও শেষ পর্যন্ত ব্যাপক আন্দোলনের মুখে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়৷
তৃতীয়ত, দীপায়নের মতে, ইউপিডিএফ ঐক্যের প্রস্তাব দিয়ে, চুক্তি বাস্তবায়নে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে সাবালকত্ব নয়, নাবালকত্বেরই প্রমাণ দিয়েছে৷ মেনে নেয়া গেল, ইউপিডিএফ নাবালক, কিন্তু আমাদের সন্তু গ্রুপ তার সাবালকত্ব কীভাবে প্রদর্শন করেছে? সন্তু গ্রুপ ঐক্যের প্রস্তাব ও চুক্তি বাস্তবায়নে সহযোগিতার আশ্বাসের জবাব দিয়েছে ইউপিডিএফ নেতা কর্মীদের বুক গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিয়ে; ইউপিডিএফ-এর বাড়িয়ে দেয়া বন্ধত্বের হাতে হাত মিলিয়ে নয়৷
আসলে ইউপিডিএফ তো সেই সত্যবাদী সরল শিশুটির মতো, যে ন্যাংটো রাজাকে ন্যাংটো বলেছিল৷ যেখানে সকল চাটুকার রাজার রোষের ভয়ে সত্য কথাটা বলার সাহস করেনি, সেখানে একটি ছোট্ট বালকই সত্য উচ্চারণ করেছে এবং রাজার রোষানলে পড়েছে৷ ইউপিডিএফ নেতা প্রসিত খীসারা সাহসের সাথে জেএসএস ও সন্তু লারমার ভুল ও ভয়ঙ্কর রাজনীতির স্বরূপ উন্মোচন করে দিয়েছেন বলেই আজ সন্তু লারমা ও তার ভক্ত মুরীদদের উগ্র রোষের শিকার হয়েছেন৷ গৌতম, উষাতন ও দীপায়ন বাবুদের মতো চাটুকার হলে তাদের পুরস্কারই জুটতো৷ তবে তখন সত্যের বিনাশ ঘটতো৷
চতুর্থত, মহা হিপোক্র্যাট দীপায়ন বাবু “বৈরী ও শত্রুভাবাপন্ন পরিবেশ” এর কথা বলেছেন৷ চুক্তি স্বাক্ষরের বহু আগেই সন্তু লারমা এই বৈরী ও শত্রুভাবাপন্ন পরিবেশ সৃষ্টি করেছিলেন৷ কেবল মাত্র (১৯৯৬ সালের) জাতীয় নির্বাচনের কৌশল নিয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করায় ও জেএসএস-এ ভর্তির আগে গঠনতন্ত্র পড়তে চাওয়ায় সন্তু লারমা জেএসএস-এর সকল ইউনিটে নির্দেশ দিয়ে রেখেছিলেন প্রসিত খীসাসহ ৫ জনকে যেখানে পাওয়া যায় সেখানে “গ্রেফতার” করার জন্য৷ তিনি শরণার্থী শিবিরসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রসিত খীসাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারও শুরু করে দিয়েছিলেন৷ অপরদিকে প্রসিত খীসারা সে সময় কী করেছিলেন তার বিবরণ দীপায়ন বাবুর মুখ থেকেই শোনা যাক৷ সৌম্য চাকমা (দীপায়ন খীসার ছদ্মনাম) নামে “লারমার কলমবাজ-সন্ত্রাসীরা যে কথা বলেননি” শিরোনামে স্বাধিকারের ১৭ নং বুলেটিনে (১ জানুয়ারী ২০০১) তিনি লেখেন:
দীপায়ন বাবুটির পুঁজি এখন মিথ্যাচার ও রাজনৈতিক ভণ্ডামী৷ তার লেখায় একটা যুক্তি নেই, নেই সত্য কথন৷ কেবল “শান্তিবাদীদের” বিরুদ্ধে বিষোদগার৷ তিনি আসলে রাজনৈতিক “কেরেঙা চলছেন”৷ এখন কে তার সুমতি উদয় হওয়ার কামনা করবেন?
পঞ্চমত, দীপায়ন বাবু তার ওস্তাদ সন্তু লারমার প্রতি স্তুতিবাক্য বর্ষণ করে বলেন,”জনসংহতি সমিতি এবং দলটির নেতা সন্তু লারমা দায়িত্বশীলতার সাথে জুম্ম জনগণের মুক্তির সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে৷” আসলে নীতিহীন মানুষ পারে না এমন কাজ নেই৷ দীপায়ন মাটিতে থু থু ফেলে সেটাই আবার তুলে চাটছেন৷ সন্তু গ্রুপে ভিড়ার আগে এক সময় তিনি সন্তু লারমা ও জনসংহতি সমিতির চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করে ছেড়েছিলেন৷ উপরোক্ত “লারমার কলমবাজ-সন্ত্রাসীরা যে কথা বলেননি” শীর্ষক লেখা থেকে আরো কিছু উদ্বৃতি:
.. . … … …
.. . … … …
যিনি সন্তু লারমার কলমবাজ সন্ত্রাসীদের সমালোচনার পর নিজেই তাদের দলে ভিড়ে যান, তার সম্পর্কে বেশী কিছু কি বলার থাকে? তারপরও প্রশ্ন করতে চাই, দয়া করে সন্তু গ্রুপের কেউ বলবেন কি সন্তু লারমা কী রকম “দায়িত্বশীলতার সাথে জুম্ম জনগণের মুক্তির সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে” যাচ্ছেন? জনগণের ঐক্যের আকাঙ্ক্ষাকে পদদলিত করা ও ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধের দাবি উপক্ষা করা কি দায়িত্বশীলতা? ভাইয়ের বুকে গুলি চালানো কি আন্দোলন? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিন বা না দিন, মনে রাখবেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও দাবিকে উপক্ষা করে কোন পার্টি ও নেতা কোন দেশে কোন কালে টিকতে পারেনি৷ সন্তু লারমা এবং জেএসএস-ও পারবে না৷ এটাই চরম সত্য৷
রবীন্দ্রনাথ দিয়ে শুরু করেছি, রবীন্দ্রনাথ দিয়েই শেষ করতে চাই৷ দুই বিঘা জমির উপেনরা কি চিরকাল বঞ্চিত শোষিত হয়ে থাকবে? জমিদার বাবুরা কি চিরদিন জনগণের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাবে? উপেনদের মুক্তির পথও রবীন্দ্রনাথ দেখিয়েছেন৷ “এবার ফিরাও মোরে” কবিতায় তিনি লেখেন:
ফ্যাসিস্টদের নিজেদের শক্তি নেই, আমরা জনগণ অসংগঠিত বলেই তারা আমাদের ওপর ছরি ঘোরায়৷ কিন্তু এক হয়ে তাদের সামনে দাঁড়ালেই তারা পথকুক্কুরের মতো পালিয়ে যায়৷ পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ এক হয়ে দাঁড়ালে ফ্যাসিস্ট সন্তু লারমাকেও সেভাবে পালাতে হবেই৷ এর কোন বিকল্প হতে পারে না৷ কারণ ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত দীর্ঘ দিন চলতে পারে না৷ এর বিরুদ্ধে জনগণের অসন্তোষ ও ক্ষোভ-বিক্ষোভ দ্রুত পুঞ্জিভূত হয়ে চলেছে৷ যে কোন মুহূর্তে তারা ফুঁসে উঠতে পারে৷ এক নেতার কাছে পুরো জনগণ ও আন্দোলনের ভবিষ্যত জিম্মি হয়ে থাকতে পারে না৷
নিরন
২১.৬.২০১১
উৎসঃ http://www.news.chtbd.net/?p=629
@অমিত হিল ও @সমরেশ চাকমা,
মানব ইতিহাস হলো শ্রেনী সংগ্রামের ইতিহাস । দাস সমাজে, দাস ও তার প্রভুর সংগ্রাম । সামন্ত সমাজে কৃষক ও জমিদারের সংগ্রাম এবং পুজিবাদে মেহনতি মানুষ, মধ্যবিত্ত ও পুজিপতির সংগ্রাম ।
স্বার্থের কারনে মধ্যবিত্ত পুজিপতিদের সাথে থাকে । ব্যর্থ হলে অনেকেই মেহনতি মানুষের সাথে সংগ্রামে অবতীর্ণ হয় । আবার কেউ কেউ হতাশায় ভোগে অথবা উগ্র বাম রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়ে সন্ত্রাসী হয় ।
আপনাদের লেখা পড়ে মনে হয়, হয় আপনারা হতাশায় ভুগছেন, নয়তো উগ্র রাজনীতির সাথে যুক্ত আছেন ।
বাংলাদেশের মূল রাজনীতির সাথে যুক্ত বামপন্থী দলগুলির কোন একটার সাথেই ইউপিডিএফ যুক্ত হতে পারেনি। ফলে ঐক্যমতের ভিত্তিতে আন্দোলনে যেতে পারেনি । যার কারনে একক ভাবে রাঙ্গামাটিতে বিক্ষোভ করেছে । ফলে ইউপিডিএফ ভুল রাজনীতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে ।
@আ হা মহিউদ্দীন, আমি কিন্তু ইউপিডিএফের কোন প্রচারণার কথা উল্লেখ করিনি । তাই সমরেশের সাথে গলিয়ে ফেলাকে মানতে পারলাম না । আমি যা বলেছি এবং বলছি বর্তমান প্রেক্ষাপটকে বিবেচনা করে । আমি নই রাজনৈতিক কর্মী; নই বিশ্লেষক । আমার অনুভূতি এবং মানবতা যা আমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে সেটাই লিখেছি । বামফ্রন্টদেরকে সরকারের টেবিলে দেখেছি তাই লিখলাম । প্রশ্নের উত্তরটা আপনি সমরেশকে করলেই পারতেন । যাহোক ধন্যবাদ ।
@অমিত হিল,
রাজনীতি একটি জটিল বিষয় । যে বামদলগুলোকে আপনি সরকারের টেবিলে দেখেছেন, সেই বামদলগুলোকে আবার সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে দেখে থাকবেন । সরকারের পক্ষে ও বিপক্ষে থাকার কারনগুলো অনুধাবন করা প্রয়োজন । এই কারনগুলি জানার জন্য প্রয়োজন সমাজ চলমানতার বিধি-বিধানের উপর জ্ঞান অর্জন । সমাজ চলমানতার কারন হলো সামাজিক দ্বন্দ্ব । আমার-আপনার ক্ষোভ হলো সেই দ্বন্দ্ব । এরকম হাজারও দ্বন্দ্ব সমাজে বিদ্যমান । শ্রেনী বিভক্ত সমাজে বিভিন্ন শ্রেনীর দ্বন্দ্বের কথা আমি আগেই উল্লেখ করেছি ।এই দ্বন্দ্বগুলি কোন বিছিন্ন ঘটনা নয়, পরস্পর সম্পর্কযুক্ত ও নির্ভরশীল । বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন শ্রেনীকে প্রতিনিধিত্ব করে । তবে কোন শ্রেনীর প্রতিনিধিত্ব একাধিক রাজনৈতিক দল করতে পারে । এই বিষয়গুলি জানার জন্য রাজনৈতিক কর্মী বা বিশ্লেষক হওয়ার প্রয়োজন নাই, প্রয়োজন হলো দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদের উপর জ্ঞান । কিন্তু আপনাকে আমার হতাশ মনে হয়েছে ।
রাজনীতির ডিকশনারিতে মানবতা বলে কোন শব্দ নাই । ইতিহাসের প্রথম রাজনৈতিক হত্যা ছিল রোম সম্রাট জুলিয়াস সিজার । তাকে হত্যা করেছিল তারই বন্ধু ব্রুটাস । পিতা ও বোনকে বিন্দী করে সিংহাসনে বসেছিলেন মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব । নবাব সিরাজদৌলার হত্যাকারী ছিল নবাবের আপন খালু মীর জাফর । বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী ছিল তারই বন্ধু মোশতাক ও তার রাজনৈতিক শিস্যরা । তাই রাজনীতিকে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখাটাই বাঞ্ছনীয় ।
@আ হা মহিউদ্দীন, অবশ্যই বাস্তবতা অনেকসময় মানুষকে হতাশ করে যা প্রাকৃতিক । এই হতাশা থেকে পরিত্রাণ হলো দৃঢ় মনোবল । এই হতাশা থেকে জন্ম নিতে পারে অনেক কিছু । পার্বত্য সমস্যার উত্তরণের জন্য বামদলগুলো কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে জানি না, সরকারের ডানপন্থী রাজনৈতিক উচ্চ পদস্থ কর্মীদের যদি মানসিকতার উন্নয়ন না ঘটে । অনেক দেশে দেখা যায় সমাজতান্ত্রিক দলেরা সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুড়তে প্রায় সশস্ত্র আন্দোলনে লিপ্ত হয়ে যায়, যেমন সম্প্রীতি নেপালের মাওদের ক্ষমতা দখল । এক্ষেত্রে আপনার কি মনে হয়, সংঘাতবিহীন পুঁজিপুতির পঠন কতটুকু সম্ভব ? আইন প্রণয়ন এক্ষেত্রে কতটুকু জোড়ালো ভূমিকা রাখতে পারে ? বাংলাদেশের “বাঙালী” জাতিয়তাবাদের প্রেক্ষিতে সমাজতান্ত্রিক নীতির অবস্থান ?
@অমিত হিল,
বর্তমান আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সশস্ত্র আন্দোলনের পথটা ভুল বলে প্রমানিত । তাই নেপালের মাওবাদীরা সশস্ত্র আন্দোলনের পথ ছেড়ে গণতান্ত্রিক উপায় ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে । পার্বত্য চট্টগ্রামের পাশে ভারতীয় রাজ্য মনিপুর ও নাগা ল্যান্ডের সশস্ত্র আন্দোলন স্থিতিমিত । আসামের সশস্ত্র আন্দোলন শেষ ।
অচিরেই বিশ্ব রাজনীতিতে ভারত ও চীন শক্তিধর দেশ হিসাবে আবির্ভুত হতে যাচ্ছে । উপমহাদেশের রাজনৈতিক মানচিত্র পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে । উত্তর-পূর্ব ভারতের সেভেন সিস্টার রাজ্য, পশ্চিম বঙ্গ ও বাংলাদেশ চীন ও ভারতের মধ্যে বাফার জোন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে ।
আদি বাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি অচিরেই সংবিধানে সংযোজিত হবে । এবং বামদলও গণতান্ত্রিক উপায় ক্ষমতায় যাবে । শুধু প্রয়োজন হটকারী কার্যক্রম বন্ধ করে সুষ্ঠু রাজনীতি করা ।
@আ হা মহিউদ্দীন, অবশ্যই গণতান্ত্রিক পদ্ধতির বিকল্প নেই । নেপালের মাও রা কিন্তু দীর্ঘ যুগ অবধি সশস্ত্র যুদ্ধে লিপ্ত ছিল । যুদ্ধে সরকারতন্ত্রকে কোনঠাসা করে, অবশেষে সংসদে যাওয়ার জন্য নির্বাচনে অংশ নেই । আর নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয় লাভ করে গণতান্ত্রিকভাবে রাজশাসন বিলুপ্ত করে দেই । আমি ও সশস্ত্র সংঘাতের বিশ্বাসী নই । কিন্তু আমাদের এও দেখতে হবে মানুষ কখন সশস্ত্র সংঘাতে লিপ্ত হয়ে পড়ে ? আক্রান্ত হলে মানুষ সামনে বস্তুজাতীয় যা পাই তা নিয়ে প্রতিপক্ষের আক্রমণ রুখতে ঝাঁপিয়ে পড়ে । পার্বত্য অঞ্চলে বর্তমান আঞ্চলিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঠিক তাই । জেএসএস এবং ইউপিডিএফ দুদলই প্রতিপক্ষের দল দ্বারা আক্রান্ত । তাই দুদলই প্রতিরক্ষার উছলা দিয়ে সংঘাতে লিপ্ত হচ্ছে । এক্ষেত্রে সরকারকে শান্তি চুক্তি” যতদ্রুত সম্ভব বাস্তবায়ন করা উচিত । শান্তিচুক্তি যদি বাস্তবায়ন হয় এবং ভূমি সমস্যা কেটে যায় এমনতিতেই বড় ধরনের সংঘাতের কোন আশংকা থাকবে না । এখন যদি ও শান্তিচুক্তির পক্ষ এবং বিপক্ষ হিসেবে দুই রাজনৈতিক দলকে বিবেচনা করা হয় । কিন্তু বাস্তবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে আমরা দেখি দুই আপন ভাই-বোনের মধ্যে ও আদর্শগত পার্থক্য থাকা স্বাভাবিক; সেক্ষেত্রে এক বা ভিন্ন জাতির মধ্যে আদর্শিক দন্ড থাকতেই পারে । এক্ষেত্রে যদি ইউপিডিএফকে শান্তিচুক্তি বিরোধী অবিহিত করে শান্তিচুক্তিকে বাস্তবায়ন করা না হয়, সেটা হবে সরকারের কৌশল এবং স্বদিচ্ছার ঘাটতি । নিরস্ত্রকরণ নীতি জেএসএস এবং ইউপিডিএফ দুইদলকে সমানভাবে করতে হবে । ভ্রাতৃঘাতের মূল বাঁধা হচ্ছে “শান্তিচুক্তি” বাস্তবায়ন না করা । অদূরে শান্তিচুক্তিকে যদি নিয়মতান্ত্রিকভাবে বাস্তবায়ন না করা হয় পাহাড়ের লোকেরা পুণরায় সশস্ত্র আন্দোলনে জড়াবে না তাতে কোন সন্দেহ নেই । আর অন্যদিকে প্রগতিশীলদের পার্বত্য অঞ্চলের দুই রাজনৈতিক দলকে আলোচনার ভিত্তিতে সমজোতার জন্য বাধ্য করতে আন্তরিক প্রচেষ্টা করা উচিত ।
@অমিত হিল,
ঐতিহাসিক ভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ অংশ । তাই বাংলাদেশের সমস্যা থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা বিচ্ছিন্ন ভাবে দেখার কোন অবকাশ নাই । বিএনপির অনীহা সত্বেও শান্তি চুক্তি হয়েছে । ক্ষমতায় গিয়েও বিএনপি তা রদ করতে পারেনি । তাই আজ হোক বা কাল হোক শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন হবে । ভূমি সংষ্কার কেবলমাত্র পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা নয়, এটা বাংলাদেশের সমস্যা । বাংলাদেশের ভূমি সংষ্কার হলেই পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি সংষ্কার হবে । তাই বাংলাদেশের যে সকল রাজনৈতিক দল ভূমি সংষ্কারে সোচ্চার তাদের সাথে একত্বতা প্রকাশ করাই হবে সুষ্ঠু রাজনৈতিক পদক্ষেপ ।
নেপাল একটি দেশ । বিপরীতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের একটি জেলা । তাই নেপালের উদহারণ টানা হবে ভুল উদহারণ । বিশ্ব রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নেপালের মাওবাদীদের মূল রাজনৈতিক ধারায় ফিরে আসা ছাড়া আর গত্যন্তর ছিল না । তাই তারা নির্বাচনে অংশ নিয়ে ছিল ।
পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্ছলিক দুইটি দল, যাদের সকলেই শিক্ষিত মধ্যবিত্ত থেকে আগত, এর সংহার হলো ক্ষমতার হালুয়া-রুটির ভাগা-ভাগির প্রতিযোগিতা । যেমন বিএনপি, আওয়ামী লীগ ক্ষমতার জন্য সংঘর্ষে লিপ্ত হয় ।
@আ হা মহিউদ্দীন, আমি নেপালকে তুলনা করছিলাম পুরা বাংলাদেশটির সাথে । ধরে নিতে পারি আওয়ামিলীগ এবং বিএনপির শাসনক্ষমতা নেপালের রাজশাসনের মতো । সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এদের জাল । বিএনপি-আওয়ামিলীগ নেতা পুষে ভালো লোকের জন্য না, প্রতি একনেতার পিছনে শতখানেক কর্মী বাহিনী যাদের অধিকাংশ হত্যা-মারামারিতে পটু । এদের গনতন্ত্র একধরনের জোড়-মুল্লুকের রাজনীতি । এদের অনেকেই আবার পুঁজিবাদী । তাই সমাজতান্ত্রিক দলদের ক্ষমতায় আসতে সংঘাতবিহীনভাবে কতটা সম্ভব হবে ? বিপ্লবী প্রচারণা করতে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক । আক্রান্ত হয়ে সহিংসতা এড়াতে যদি বামপন্থী দলগুলো বিপ্লবী প্রচারণা বন্ধ রাখে, সেভাবে ক্ষমতায় আসা কখনো সম্ভব হবে বলে মনে হয় না (যুক্তির প্রেক্ষিতে)। আর তখন সহিংসতা এড়াতে শান্তির বাণী’ অর্থাৎ অহিংসা আন্দোলনই হতে পারে একমাত্র উপায় ।
পার্বত্য চট্রগ্রাম ভৌগলিক অবস্থানভেদে বাংলাদেশের এক অংশ, কেউ অস্বীকার করবে না । তাই, চার যুগের কাছাকাছি গনতান্ত্রিক এবং সশস্ত্র আন্দোলনের পর ও পার্বত্য চট্রগ্রামের কোন আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল আসামের আলফাদের মতো পৃথক রাষ্ট্রের দাবী তুলছে না । ভাষা, সংষ্কৃতি, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিকভাবে সতন্ত্র জাতিস্বত্তা হিসেবে অধিকার না থাকা স্বত্তেও সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্রের পদ্ধতি অনুসরণ করতে চেষ্টা করছে (যতটুকু বুঝি) । বতর্মান ভ্রাতৃদ্বন্ডটি সরকার চাইলে বন্ধ করতে পারে, আর সেটি হতে পারে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ।
পার্বত্য চুক্তিকে (অপর নাম শান্তি চুক্তি) সরকার ও আশ্বাস দিচ্ছে বাস্তবায়ন করা হবে । চুক্তির একটা দূর্বল দিক ছিল চুক্তিটি বাস্তবায়নের নিদির্ষ্ট সময়সীমা ছিল না, তাই সরকার যা ইচ্ছে তাই আশ্বাস দিয়ে কালক্ষেপণ করছে । এক্ষেত্রে মূল ডান রাজনৈতিক দলদের বাধ্য করা না গেলে চুক্তি বাস্তবায়ন হবে না । পরবর্তীতে অস্বীকার ও করা হতে পারে যেহেতু ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে সংবিধানে লিপিবদ্ধ করা হয়নি, যদিও আদালত বাতিল ঘোষনা করেছে । আর পাহাড়ের ভূমি সমস্যা অবশ্যই সমতলের সাথে সম্পর্কযুক্ত, তবে ভূমির মালিকানা নিয়ে পাহাড় বিপদজনক অবস্থানে । এমুহূর্তে আমি চিন্তা করতে পারি না বামদলগুলো খুব সহজে ক্ষমতায় আসতে পারবে, যেহেতু বাংলাদেশ একটি ধর্ম ভীরুদেশ । অধিকাংশ সাধারণ মানুষের ধারণা বামরা আসলে ধর্ম বিশ্বাসের পতন ঘটবে । তাই বামদের ক্ষমতায় আসতে হলে গ্রামে-গ্রামে আগে প্রচুরভাবে বিপ্লবী প্রচারণা চালাতে হবে, সেক্ষেত্রে সহিংসতা মোকাবেলা করার দক্ষতা ও অর্জন করতে হবে ।
পার্বত্য রাজনৈতিক দলগুলোর বর্তমান দন্ধের কারণ অবশ্যই আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে । তাই ক্ষমতাসীন সরকারকে এর সুষ্ঠু সমাধান করা উচিত । তবে এক্ষেত্রে প্রগতিশীলদের ও আন্তরিক এবং সহানুভূতিশীল হওয়া উচিত ।
@আ হা মহিউদ্দীন, জাতিসত্তা মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ‘মার্ক্সপন্থী বামদল ইউপিডিএফের সাথে যুক্ত যারা ফ্যাসিবাদ এবং সাম্রাজ্যবাদের তীব্র বিরোধী । জাতিস্বত্তার স্বীকৃতির দাবীতে তারা ও সোচ্চার (http://move4world.com/?p=3363) । তারা আপোষহীন এবং মুক্তিকামী (http://www.thedailystar.net/newDesign/news-details.php?nid=188809) । আপনি কিভাবে অস্বীকার করবেন তাদের সংগ্রামের উপস্থিতি (http://move4world.com/?p=3343) ? বামদল থেকে উগ্রজাতিবাদের ও উত্তান ঘটে । চীনের মাও সেতুং ও উগ্রজাতিবাদের আসক্ত ছিলেন, নয় কি ? আওয়ামিলীগ এবং বিএনপির কোন তফাৎ নাই । তাই দুদলের সাথে মিশে যাওয়া মানেই শ্রেণীভুক্ত সমাজের মুক্তির সংগ্রামকে হত্যা করে অন্য এক শ্রেণীর প্রজনন ঘটানো । এমনটা হচ্ছে আগামিতে । যেসব বামদল সরকারের গদিতে, অস্বীকার করবেন কিভাবে সংবিধান সংশোধনের তাদের ভূমিকা নেই ? ইউপিডিএফ এবং জেএসএস অবশ্যই মূল রাজনীতির প্রতিফলন; বিচ্ছিন্ন কিছু নই, মূল রাজনীতিযুক্ত বামদলদের । বামদল থেকে সন্ত্রাস এবং উগ্রজাতীয়তাবাদ দুটিই সম্ভব । কারণ পুঁজিপুতি শ্রেণীর সংশোধন এত সহজ নয় ।
@সমরেশ চাকমা,
একমাত্র সন্ত্রাসী ও নক্সালপন্থী বামদল ছাড়া আর সকল বামদলই বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য প্রকাশ্যে কাজ করে । কর্ম কৌশলের ভিন্নতা ছাড়া তারা সকলেই মার্কসবাদপন্থী । মার্কসবাদী দাবীদার আঞ্ছলিক দলগুলোকে এদের সাথে সংহতি প্রকাশ করতে হবে । যেমনটি করেছে জন সংহতি সমিতি । যে আঞ্ছলিক দল করবে না, সেটি হয় সন্ত্রাসী, নয়তো নক্সালপন্থী । উভয়েরই মার্কসের আদর্শ থেকে বিচ্যুতি ঘটেছে । লেখা পড়ে মনে হচ্ছে উগ্রজাতিয়তাবাদ, জাতিয়তাবাদ ও মার্কসবাদ সম্পর্কে আপনার ধারণা স্বচ্ছ নয় । চীনের মাও সেতুং উগ্রজাতিয়তাবাদী ছিলেন না । হিটলার ছিলেন উগ্রজাতিয়তাবাদী নেতা । এখন প্রশ্ন হলো আপনি হিটলার ও মাও সেতুং এর রাজনীতির মধ্যে পার্থক্য বুঝেন কিনা ?
@আ হা মহিউদ্দীন, আপনি নক্সালপন্থী বামদল বলতে কাদের বুঝাতে চেয়েছেন ? জানালে খুশী হবো । আমাদের মনে রাখা জরুরী, একগ্রাম্য শিক্ষিত তরূণ ও যদি শুধু গ্রামে পড়ে থেকে নিরলসভাবে গরীব-মেধাবী ছাত্রদের পড়াই কিন্তু তার নামগন্ধ মেডিয়াতে নাই, তাহলে সেও কি বাংলাদেশের নাগরিকের জন্য কাজ করছে না ? আপনি বললেন যে, মার্কসবাদী দাবীদার আঞ্ছলিক দলগুলোকে এদের সাথে সংহতি প্রকাশ করতে হবে’ এক্ষেত্রে অন্য একজন ভিন্নমত ও পোষণ করতে পারে । যে ভিন্নমত পোষণ করছে তাকেতো খুব সহজে এত সরলীকরণ করে ‘সন্ত্রাসী বা নক্সালপন্থী” তকমা লাগানো যাবে না । আওয়ামিলীগের আগে লুক্কায়িত এখন পরিষ্কার ফ্যাসিস্ট চরিত্র ফুটে উঠেছে, এরপরও কি আপোষ করে তাদের সাথে সংহতি প্রকাশ করাকে আপনি গণতান্ত্রিক অথবা সত্যিকার নাগরিকের জন্য আন্দোলন বলে বিবেচনা করবেন ? তাহলে বাম আর ডানের রাজনৈতিক মতাদর্শের কোন কি ব্যবধান নেই ? জন সংহতি সমিতি’ অন্য দশদলের সাথে সংহতি প্রকাশ করেছে বলে জেএসএস এর হত্যাকান্ডকে মূলনীতির দাবীদার জায়েস করাটা একজন প্রগতিশীলের ক্ষেত্রে মানায় না । একজন পাহাড়ী যুবকের আবেদনটা ও একটু পড়ুন; পাহাড়িদের মধ্যে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত জিইয়ে রাখতে কতিপয় বাম নেতার ভূমিকা ( http://chtnewsbangla.blogspot.com/2011/05/blog-post_25.html) । আপনি কিন্তু বুঝতে চেষ্টা করছেন না কি কারণে সংখ্যালঘুদেরকে আঞ্চলিক রাজনৈতিক আদর্শে আন্দোলনের পথ বেছে নিতে হয়, যা সারাবিশ্বে বিদ্যমান । যারা এগার দলের সাথে সংহতি প্রকাশ করেননি তারা ও বলে যে সরকারের গদিতে থেকে যারা বাম হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে তারাই বরং মার্কসের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়েছে । জাতিবাদকে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায় পাহাড়ীদের জন্য বঙ্গবন্ধু ও একজন উগ্রজাতিবাদী ছিলেন । হিটলার ছিল জার্মান জাতিতে বিশ্বাসী, আর অন্যদিকে মাও সে তুঙ ছিলেন মার্কস-লেনিন মতালম্বী । মাও সাথে যোগ করেন সামরিক রণকৌশল যা আপনি বর্তমান বিশ্ব রাজনৈতিক প্রেক্ষাপথে ভুল বলে প্রমাণ করছেন । এখন মাওকে কখন জাতিবাদী হিসেবে বলা বাঞ্চনীয় যখন চীনের সংখ্যালঘুদের আবেদনের দিকে কর্ণপাত করি । বিপরীতভাবে দেখলে হিটলার ও ছিল জাতিপ্রেমিক যেমন মাও আর তেমনি বঙ্গবন্ধু । আপনি যেভাবে সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনকে ব্যাখ্যা করতে চাইছেন সেভাবে পুঁজিপুথিদের ধ্বংস করা সম্ভব নয় বটে, বরং নব্য পুঁজিপুথি শ্রেনী উন্মেষের পথে খুলে দেয়া হবে । যদি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে শ্রেণী সংগ্রামকে জয়যুক্ত করা যায় তাহলে সমাজাতান্ত্রিক বিপ্লবের প্রয়োজন পড়বে কেনো ?
@সমরেশ চাকমা, পাহাড়িদের মধ্যে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত জিইয়ে রাখতে কতিপয় বাম নেতার ভূমিকা ( http://chtnewsbangla.blogspot.com/2011/05/blog-post_25.html )
@সমরেশ চাকমা,
যারা অবাস্তব, হটকারী ও বিছিন্ন ভাবে কার্য্যক্রম গ্রহন করে, তারা নক্সালপন্থী । পশ্চিম বঙ্গের একটি গ্রামের নাম নক্সালবাড়ী । চারু মজুমদার ও কানু সন্যাল ছিলেন পশ্চিম বঙ্গ কমিউনিষ্ট পার্টির বিশিষ্ট দুই নেতা । মূল পার্টির সাথে দ্বিমত পোষণ করে নক্সালবাড়ীর কৃষকদেরকে নিয়ে ইন্দ্রিরা গান্ধী সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহে লিপ্ত হন এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করে নিহত হন । ফলে নক্সালবাড়ী বিদ্রোহের পরিসমাপ্তি ঘটে । নক্সালপন্থীরা আজ সন্ত্রাসী কার্য্যক্রম চালাচ্ছে ।
একজন পাহাড়ী মেহনতি যুবক ও একজন সমতল ভূমির মেহনতি যুবকের মধ্যে প্রগতিশীলেরা কোন পার্থক্য দেখে না । কারণ উভয় যুবকই শোষিত । পাহাড়ী শিক্ষিত মধ্যবিত্তরাই পার্থক্য দেখে । কারণ তারা হালুয়া-রুটির ভাগ চায় । যেমন ভাগ চায় সমতল ভূমির শিক্ষিত মধ্যবিত্তরা । এই শিক্ষিত মধ্যবিত্তরাই নিজ স্বার্থে ইতিহাস বিকৃত করে এবং বিভিন্ন বিষয়ের সংজ্ঞা বিকৃত করে । অর্থনীতিবিদদের সংজ্ঞা অনুযায়ী পুজিবাদ বিকাশের কয়েকটি ধাপ বিদ্যমান । পুজিবাদ বিকাশের শেষ ধাপ হলো ফ্যাসিষ্ট বা উগ্রজাতিয়তাবাদ । মাওসেতুং ও বঙ্গবন্ধু যে জাতি নিয়ে আন্দোলন করেছেন, সংশ্লিষ্ট সময় সেই জাতির বিকাশ পুজিবাদে উন্নিত হয়নি । তাই তারা ফ্যাসিষ্ট বা উগ্রজাতিয়তাবাদী নয় ।
আমার বা আপনার চাওয়ার উপর পুজিবাদের ধ্বংস নির্ভরশীল নয় । পুজিবাদ তার নিজের ধ্বংস নিজেই ডেকে আনবে । আমি আপনে তাকে ত্বরান্বিত করতে পারি । মার্ক্সের দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ পড়ুন ।
@ সমরেশ চাকমা ও @ আমিত হিল,
সমরেশ চাকমা
বিগত ১৯৭২ সালের সংবিধানে আদি বাসীদের স্বীকৃতি এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বায়ত্তশাসনের দাবী মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা বঙ্গবন্ধুর কাছে উপস্থাপন করলে তা নাকচ হয় । ফলে লারমা সম আদর্শের অন্যান্য পাহাড়ীদের নিয়ে বিগত ১৯৭৩ সালে জন সংহতি সমিতি গঠন করেন এবং সরকারি নীতি প্রতিরোধ করার জন্য শান্তি বাহিনী নামে এক সশস্ত্র বাহিনী গঠিত হয় । জন সংহতি সমিতি হলো রাজনৈতিক সংগঠন এবং সমিতির অধীন শান্তি বাহিনী হলো সশস্ত্র ক্যাডার । আলোচ্য শান্তি বাহিনীর অধীন হলো পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পাহাড়ী গণ পরিষদ । বিগত ১৯৭৭ সালে শান্তি বাহিনী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উপর প্রথম আঘাত হানে । বিগত ১৯৮০ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের ১৩টি আদি বাসীকে একাত্রিত করে জন সংহতি সমিতি জুম্মা জাতিয়তাবাদের শ্লোগান তোলে । মানবেন্দ্র লারমার মৃত্যুর পর সম্ভু লারমা জন সংহতি সমিতির হাল ধরেন ।
বিগত ১৯৯১ সালে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে এলে খালেদা জিয়া সরকার জন সংহতি সমিতির সাথে আলোচনায় বসে । কিন্তু বনিবোনা না হওয়ায় আলোচনা ভেঙ্গে যায় । বিগত ১৯৯৬ সালে আওয়ামি লীগ ক্ষমতায় এলে হাসিনা সরকার জন সংহতি সমিতির সাথে পুণ আলোচনায় বসে এবং চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় । পাহাড়ীদের একমাত্র প্রতিনিধি জন সংহতি সমিতির পক্ষ থেকে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন সম্ভু লারমা ।
প্রতি পাঁচ বছর পর পর পৌরসভার নির্বাচন হওয়ার বিধান বিদ্যমান । এবং নির্বাচন করার দায়ীত্ব নির্বাচন কমিশনের । বিগত ১২ বছর ধরে ঢাকা পৌরসভার নির্বাচন না হওয়ার কারনে বিএনপি নেতা খোকা এখনও ঢাকা পৌরসভার চেয়ারম্যান । অনুরূপ ভাবে আঞ্ছলিক পরিষদের নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত সম্ভু লারমাকে চেয়ারম্যান থাকতে হবে ।
সমরেশ চাকমার ভাষায় পার্বত্য চট্টগ্রামের ৭০ ভাগ ইউপি ডিএফ এর আধিন । এর অর্থ দাড়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামের ৭০ ভাগ অঞ্ছল বাংলাদেশের অধীন নয় । অর্থ্যাৎ ইউপিডিএফ পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চায় । ফলে ইউপিডিএফ কে রাষ্ট্রদ্রোহি সংগঠন বলা যেতে পারে ।
সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম সংযোজন এবং আদি বাসীদের সংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়ার সুপারিশ না করার বিরুদ্ধে বর্তমান ক্ষমতাসীন আঃলীঃ এর নেতৃত্বাধিন মহাজোটের ৭টি দল, বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টি, গণ ফোরাম ও জন সংহতি সমিতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে । এখানে ইউপিডিএফ অনুপস্থিত । অর্থ্যাৎ ইউপিডিএফ আদি বাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি চায় না ।
অমিত হিল
আপনার বিশ্লেষণের সাথে আমার দ্বিমত নাই । তবে বাংলাদেশের লুটেরা গোষ্ঠির মধ্য থেকে পুজিবাদী এক গোষ্ঠির উন্মেষ ঘটেছে । আলোচ্য এই পুজিপতিরা সঞ্ছিত অর্থের নিরাপত্তা চায়, যার জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং প্রশাসনিক সংষ্কার । বিএনপি এখনও লুটেরা গোষ্ঠিকে মদত দিচ্ছে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করে চলছে । তাছাড়া বিএনপির ভারত বিরোধীতাও বাংগালি উঠতি পুজিপতিরা পছন্দ করে না । কারন তারা ভারতের সাথে ব্যবসা-বানিজ্য করতে এবং আন্তর্জাতিক যে ব্যবসা ভারত পেয়ে থাকে, তার সাব-কন্ট্রকট পেতে বাংগালি পুজি আগ্রহী । তাছাড়া য়ত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে বাংলাদেশ ব্যবসা করার সম্মতি পেয়ে গেছে । বড় মাছ যেমন ছোট মাছকে খেয়ে ফেলে, তেমনি বড় পুজি ছোট পুজিকে খেয়ে ফেলে, যার নমুনা আমরা শেয়ার বাজারে দেখেছি । ফলে শাসক দল আঃলী; এর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে । তাই আগামী নির্বাচন হবে খুবই ঝুকিপূর্ণ ।
@আ হা মহিউদ্দীন, সংখ্যালঘুদেরকে রাজনৈতিক কিংবা সামাজিকভাবে সমানভাবে অংশগ্রহনের সুযোগ না দেয়ার কারণে কিন্তু আঞ্চলিক রাজনৈতির বাস্তবতা । আমার মতো অনেকেই দেশের সমগ্র স্বার্থ নিয়ে ভাবেন কিন্তু দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতিকে যখন মূল্যায়ন করা হয় মনের ভিটতা একটু হলে ও নড়ে উঠে । একজন যোগ্য, মেধাবী হলেও জীবনে কখনো প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না শুধু ভিন্ন ধর্মের কারণে । সবকিছু পর ও বাঙালী জাতিয়তাবাদের পরিচয় বহন করতে হবে । অনেক সংখ্যালঘু জাতিস্বত্তার ভাষা বিলুপ্তির পথে, যাও একধরণের শ্রেণীতান্ত্রিকসমাজের ধ্বংসাত্মক রুপ । জাতিগত বৈষম্য দূর হতো যদি সকল জাতিস্বত্তাদের সমানভাবে মূল্যায়ন করা হতো । আঞ্চলিক রাজনীতিক দলগুলোর উত্তান গোষ্ঠিভিত্তিক রাজনীতির বাস্তবতা । বতর্মানে সামন্তবাদী সমাজ ও দুইভাবে দ্বিধাবিভক্ত । কেউ আপোষহীন আবার কেউ নিয়মাতান্ত্রিক । এটি কিন্তু নতুন ইতিহাসের যুগপৎ সুচনা । সংবিধানের নবম সংশোধনীর প্রভাব বামপন্থী রাজনৈতিক দলের উপর দিয়ে ও প্রভাব ফেলবে । কারণ গোষ্ঠিভিত্তিক চেতনা থেকেই যাচ্ছে ।
@অমিত হিল, সংশোধনঃ সংবিধানের নবম সংশোধনীর* এর বদলে পঞ্চদশ সংশোধনী হবে ।
@আ হা মহিউদ্দীন, গতকাল দীর্ঘ একটি মন্তব্য করেছিলাম কিন্তু জানি না মন্তব্যটির কি হয়েছে । পার্বত্য চট্টগ্রামের ৭০ ভাগ ইউপিডিএফ এর আধিন বলতে আমি বুঝিয়েছি রাজনৈতিক সীমানা বিস্তারে । হয়ত বুঝাবুঝিতে ভুল হয়েছে । আওয়ামিলীগ এবং বিএনপি দলের যেমন এলাকাভিত্তিক রাজনীতির কথা বলা হয় ঠিক সেভাবে আমি বুঝাতে চেয়েছি । আপনি আরো আপত্তি তুলেছেন, সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম সংযোজন এবং আদি বাসীদের সংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়ার সুপারিশ না করার বিরুদ্ধে ইউপিডিএফের অনুপস্থিতির কথা, তা একেবারে ঠিক নয় । ইউপিডিএফ আপোষহীনভাবে এর প্রতিবাদ করে যাচ্ছে । কিছু তাজা খবর । পাহাড়ী জাতি সত্ত্বাকে বাঙ্গালী বানানোর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মাটিরাঙ্গাতে পিসিপির বিক্ষোভ মিছিল ( http://www.chtnews24.com/details.php?cid=28&id=2482 ) । ক্ষুদ্র জাতি সমুহের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়া না হলে পার্বত্য জেলা অচল করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে ইউপিডিএফ ( http://www.chtnews24.com/details.php?cid=28&id=2467 ) । পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের দাবীতে পার্বত্য এলাকার বিভিন্ন জায়গায় লাল পতাকা মিছিল খাগড়াছড়িতে পুলিশের বাধাদান ( http://www.chtnews24.com/details.php?cid=28&id=2472 ) । পঞ্চদশ সংশোধনীকে গণবিরোধী আখ্যা দিয়েছে ইউপিডিএফ ( http://www.sheershanews.com/?view=details&data=Host&news_type_id=1&menu_id=1&news_id=18128 ) ।
অমিত হিল মন গড়া তথ্য নিয়ে বিপ্লব রহমানকে আক্রমণ করেছেন। তবে দুঃখ একটাই হিল সাহেব নিজের পরিচয় গোপন রাখেন——–
@দীপায়ন খীসা, আপনাকে মুক্তমনাতে স্বাগতম এবং মন্তব্যর জন্য ধন্যবাদ । আপনার নাম ও কিন্তু বাদ যায়নি সেটা মনে রাখলে চলবে । ভ্রাতৃঘাতের দ্বায় আপনার উপর ও বত্তায় । আমি বিপ্লব রহমান সম্পর্কে পক্ষপাতিত্বের প্রশ্ন তুলেছি সেটার রেফারেন্স ও দিয়েছি । আর পরবর্তীতে লাগলে আরো দেবো । কাঁদাছুড়াছুড়ির প্রমাণ দিতে অনেক স্ক্রীন শট জমা করে রেখেছি যদি লাগে । আমার এই লেখার আলোচনার বিষয়বস্তু কোন ব্যক্তিবিশেষে আক্রমন করা নয় কিন্তু ভ্রাতৃঘাতের জন্য যারাযারা পরোক্ষ এবং প্রত্যক্ষভাবে দ্বায়ী তাদের কথা উল্লেখ করেছি । পরিচয় এখানে গৌণ, আর আলোচনার বিষয়বস্তু হচ্ছে মুখ্য । লেখাতে যদি আপত্তিজনক যদি কিছু থাকে আলোচনা করতে পারেন । তাই আপনার ভিত্তিহীন আপত্তি পেরিয়ে দিলাম ।
@দীপায়ন খীসা, আপনার কাছে আমার অনুরোধ , একজন রাজনীতিক নেতা হিসেবে অন্ততপক্ষে গঠনমূলক সমালোচনা করার আন্তরিক চেষ্টা করা উচিত । আপনি মূলবিষয়বস্তটাকে এড়িয়ে গিয়ে ব্যক্তির উপর আক্রমণ করাটা মাননসই হলো না । এখানে অমিত হিল শুধু যে আপনাকে এবং বিপ্লব রহমানকে সমালোচনা করেছেন তা কি সত্য ? তাহলে আমি বললো আপনি লেখাটি না পড়েই ব্যক্তিকে আঘাত হানতে মন্তব্য করেছেন । গঠনমূলক সমালোচনা করুণ, আর স্বভাবজাতগুলো যাহাতে মুক্তমনার বড় লেখক এবং সমালোচকরা পজিটিভাবে দেখতে পান । এখানে সেই ফেইসবুকের মতো ছোট-ছোট ছেলেমেয়েদের লাগামবিহীন মন্তব্য-পাল্টা মন্তব্যর খেলা চলে না বলে মনেকরি । তাই আশাকরি আপনি আপনার যুক্তি তুলে ধরবেন যদি দ্বিমত থাকে আর অমিত হিলকে ও আহ্বান করবো যাহাতে আলোচনা স্মূট হয় । আলোচনাতে বন্ধুত্বের অন্ধবিশ্বাসকে দূরে রাখা উচিত । দইজনের বন্ধুত্ব সেটা আলোচনা বাইরে ।
অমিত হিল, আপনাকে আপনার পরিশ্রমসাধ্য লেখাটির জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই । আমি যা মনে করি, বর্তমান ভ্রতৃঘাতের জন্য উভয়পক্ষকে সমানভাবে দোষারোপ করা কোন অযৌক্তিক নয় । তবে ‘ভ্রতৃঘাতের” জন্য সন্তু লারমা অনেকটা দায়ী কারণ, দীর্ঘ গরিলাযুদ্ধের অবসান কল্পে ‘পার্বত্য চুক্তির’ মাধ্যমে সংঘাত নিরসনের মানসিকতা দেখালে ও ক্ষোভটি তৎকালীন পাহাড়ী ছাত্র সংঘঠনদের উপর ঝাড়েন যাররুপ আজকের ভতৃঘাত এবং রাজনীতিক বাস্তবতা হিসেবে ইউপিডিএফ-এর জন্ম । কিন্তু, সত্য যে চুক্তির পরবর্তীতে সন্ত লারমার মেডিয়া কভারেস বেড়ে যাওয়াতে ভ্রতৃহত্যাতে আরো বেশি ইন্ধন পান । উদাহরণস্বরুপ, গতমাসে ইউপিডিএফ এর কেন্দ্রিয় সদস্য অনিমেষ চাকমাসহ ৫ জনকে হত্যা করার মধ্যে দিয়ে তা প্রমাণ করে । ( http://amarkagoj.net/?p=7461এবং http://www.bdnews24.com/bangla/details.php?cid=2&id=159095&hb=2 ) । এখন দলমত নির্বিশেষে আমাদের দরকার এর স্থিতিশীলতা এবং সমাধানের দিকে হাঁটা । ঐক্যতা এবং সংঘাত বন্ধের জন্য সরকারকে সততার সাথে কাজ করা বাঞ্জনীয় । এক বছরে এক বছরে জেএসএস-ইউপিডিএফ সংঘাতে নিহত হন ৩৩ যারমধ্যে ছিলেন বেশিরভগই ইউপিডিএফের কর্মি এবং সমর্থক ( http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=b6ac971e55bee482346a196c2a82365a&nttl=2011062646464 ) । সাংবাদিক হরিকিশোর চাকমাসহ পার্বত্য চট্রগ্রামের সুশীল সমাজ মনে করেন যে এই ভ্রতৃঘাত সন্তু লারমা চাইলেই ইতি টানতে পারেন সেহেতু সবাইয়ের চাওয়া উনার কাছে একটু বেশি । শুভকামনা রইল ।
@সমরেশ চাকমা,
সংঘর্ষ সমস্যা সমাধানের পথ নয় । তাছাড়া সম্ভু লারমা চাইলেই ভ্রাতৃঘাত বন্ধ হবে না । কারন স্বাধীনতা উত্তর পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি অধিকার সমস্যার সমাধান না হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ থেকে যাবে । এর সমাধান সম্ভু লারমার হাতে নাই । তা ছাড়া পাহাড়ীদের মধ্যে যে মধ্যবিত্ত শ্রনীর উন্মেষ ঘটেছে, তাদের বিভিন্ন গোষ্ঠির স্বার্থ বিভিন্ন । এরা সাধারণ মানুষের ক্ষোভকে ব্যবহার করে নিজ গোষ্ঠির স্বার্থ উদ্ধারের জন্য হানাহানি করে ।
@আ হা মহিউদ্দীন, পার্বত্য চট্রগ্রামের মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উন্মেষকে অনেকে অর্থনীতিক অগ্রগতি আবার অনেকে বুর্জোয়া শ্রেণীর উত্তান হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন । যারা রাজনীতিক সচেতন তাদের মাঝে দেখা যায় যে তারা সহজেই এই ব্যবধানটা ধরতে পারেন আর অন্যদিকে মধ্যবিত্ত শ্রেনীর ছেলে-মেয়েরা এটাকে অর্থনীতিক অগ্রগতি হিসেবে ধরে নিয়ে উন্নয়নমূলক ভাবধারাতে নিজস্ব চিন্তাকে সীমাবদ্ধ করে রাখতে বেশি আগ্রহী । আর কেটে খাওয়া সরলমনারা এক্ষেত্রে নিরুপায় । পার্বত্য চট্রগ্রামের বর্তমান ভ্রাতৃঘাতের জন্য অবশ্যই অনেকের পরোক্ষ অথবা প্রত্যক্ষভাবে স্ব স্ব স্বার্থ লুকিয়ে আছে । আরো একটি জটিল অন্যতম কারণ হচ্ছে বহুজাতিস্বত্তার মিশ্রণ, যাতে করে শাসকচক্র খুব সহজেই শ্রেণীভেদের ইস্যু বারবার সৃষ্টি করিয়ে পাহাড়ী দিয়ে পাহাড়ী হত্যা করার পন্থা অবলম্ভন করে থাকেন । আমার জন্মের পর হতে সেনাবাহিনীর সৃষ্ট অনেক দলকে দেখেছি, যেগুলো মূলতঃ ব্যবহার করা হতো পাহাড়ীদের হত্যার প্রত্যয়ে, সেরকম দলগুলোর নাম ও ছিল কৌতুহলী যেমন ছিল -গুগ্গুরুক বাহিনী (যারা মূলক ইন্টালিজেন্ট এজেন্ট হিসেবে কাজ করতো), তারপর মুকোশ বাহিনী (যেগুলোকে মূলতঃ সৃষ্টি করা হয়েছিল তৎকালীন পাহাড়ী ছাত্র/ছাত্রীদের আন্দোলনকে স্থমিত করার জন্য) । বর্তমানে ও বর্খা পার্টি নামের অন্য একদল সেনাবাহিনীর কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত । এসব উপদলগুলো মূলত সেনাবাহিনীদের প্রত্যক্ষ সহযোহিতায় সৃষ্ট হয়ে থাকে । পার্বত্য চুক্তির পর পাহাড়ী যুবকদের দর্শনগতভাবে ধ্বংস করতে সেনাবাহিনীরা নিজেরাই হেরোইন ব্যবসা করে অনেক পাহাড়ী ছেলেকে নেশাগ্রস্ততায় অভ্যাস করিয়ে শিক্ষারস্তর থেকে বঞ্চিত করেছে । এর থেকে উত্তরণের জন্য অবশ্যই আলোচনার প্রয়োজন যেহেতু সংঘাত কখনো মানুষের কল্যান বয়ে আনতে পারে না ।
@অমিত হিল, মধ্যবিত্ত যেমন অর্থনৈতিক অগ্রগতির সহায়ক শক্তি, তেমনি পুজি সঞ্চায়নের চালিকা শক্তি । বুর্জোয়া শব্দের অভিধানিক অর্থ হলো মধ্যবিত্ত । এই মধ্যবিত্ত যেমন জ্ঞান দান করে জ্ঞানী হয়, তেমনি আবার প্রগতিশিল রাজনীতিবিদ হয়ে বিপ্লবী হয় । তার চাহিদার পথ যত রুদ্ধ হবে, তত বেশি করে সে প্রগতিশীল রাজনীতির দিকে ঝুঁকবে এবং বিপ্লবী হবে ।
বহুজাতিস্বত্বার মিশ্রন এখন আর মুছে দেয়া সম্ভব নয় । তাই এই সমস্যা স্বীকার করে নিয়ে সমাধানের জন্য আগাতে হবে । এই সমস্যা সমাধানের উপায় হলো ভূমি সংষ্কার । সমতল ভূমির মেহনতি মানুষও ভূমি সমস্যায় ভুগছে । বুর্জোয়া/মধ্যবিত্তের একটি অংশ ভূমি দখল বা বেদখলের উপর জীবিকা নির্বাহ করে । তারা চায় না ভূমি সংষ্কার । তাছাড়া বৃটিশ কলোনিয়াল এবং পাকিস্তানী সামন্ততান্ত্রিক প্রশাসন জনগণের মাথার উপর জগদ্দলের মতো বসে আছে । ফলে ভূমি ও প্রশাসন সংষ্কার ছাড়া আশানুরূপ বুর্জোয়া অর্থনৈতিক উন্নতিও সম্ভব নয় । বর্তমানে বাংলাদেশ অর্ধ-সামন্তবাদী ও অর্ধ-পুজিবাদী আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার মধ্যে বিরাজমান । ভূমি ও প্রশাসন সংষ্কার পূর্ণ ভাবে পুজিবাদী সমাজ বিকাশের পূর্ব শর্ত । আবার সমাজতান্ত্রিক সমাজে উত্তোরণের পূর্ব শর্ত হলো পুজিবাদী সমাজের বিকাশ ।
আঞ্চলিক রাজনীতি পরিহার করে কেবল মাত্র বাংগালি, আদিবাসী ও পাহাড়ীদের মধ্যে বিদ্যমান প্রগতিশীল মধ্যবিত্তের মিলিত শক্তি মেহনতি মানুষকে সংগঠিত করতঃ শাসক গোষ্ঠিকে আলোচ্য সংষ্কার করতে বাধ্য করতে পাড়ে । সেনাবাহিনী শাসক গোষ্ঠির লাঢিয়াল । কর্তার সাথে তারা কির্তন করে । অতএব তাদেরকে দোষ দিয়ে লাভ নাই ।
@আ হা মহিউদ্দীন, বহুজাতিক মিশ্রণকে মুছে দেওয়ার জন্য বলিনি বরং শাসকগোষ্ঠি বারবারই যে এক শ্রেণী পতনের পর অন্য একশ্রেণী সৃষ্টি করে দিয়ে ঔপনিবেশিক মনমানসিকতার ধারাবাহিকভার পরিচয় দিচ্ছে এবং এর ব্যবহারিক প্রয়োগ মূলতঃ সাম্প্রদায়িকতাকে ইস্যু বানিয়ে বিভেদ রেখা টেনে দেওয়া হচ্ছে । এই সাম্প্রদায়িক বিভেদ রেখাকে হাতিয়ার হিসেবে শাসকগোষ্ঠি প্রায়শ দান্ধা-হাঙ্গামা বাঁধিয়ে দেই নতুবা অন্য একশ্রেণীর সৃষ্টি করে দিতে সক্ষম হয় । তবে হ্যাঁ, মানবেন্দ্র নারায়ন লারমাও চেয়েছিলেন জাতিবর্ণ নির্বিশেষে সমাজতান্ত্রিক রাজনীতিতে এগিয়ে যেতে, সূচনা ও ঠিক তেমনভাবে ঘটেছিল । দেখা গেছে শাসকগোষ্ঠী বিচ্ছিন্নবাদীদের আন্দোলন হিসেবে তকমা লাগিয়ে আন্দোলনকে রাষ্ট্রের সংখ্যাগুরুতের মনে বিরুপ প্রভাব ফেলাতে সক্ষম হয়েছে । তবে বর্তমানে আঞ্চলিক রাজনীতিক দলগুলোর দর্শন ও একদিকে যেমন সামন্ততান্ত্রিক অন্যদিকে গণতান্ত্রিক যদিও বা বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন । পার্বত্য অঞ্চলে ভুমি সমস্যা অন্য সমস্যাগুলোর একটি । আশির দশকে মূলত জিয়া গোপন স্মারকলিপির প্রকাশের মধ্যে দিয়ে সরকারিভাবে উদ্ভাস্তদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে সমতল থেকে পার্বত্য অঞ্চলে নিয়ে আছে । গোপন স্মারকলিপি ।
“সেনাবাহিনী শাসক গোষ্ঠির লাঢিয়াল” তা সমতল এলাকার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বটে কিন্তু পার্বত্য অঞ্চলের জন্য সেনাশাসন অন্যএক প্রধান সমস্যা । পার্বত্য অঞ্চলের পুলিশ প্রশাসন মূলতঃ সেনাবাহিনীর প্রতাপের কাছে জিম্মি । আরো ত আছে ভাষা, সংষ্কৃতি, অর্থনীতিক এবং রাজনীতিক অধিকারের কথা । মানুষের যেসব মৌলিক অধিকার থাকা বাঞ্জনীয় সংখ্যালঘু জাতিস্বত্তাদের কোনটিই আদৌ সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি তাছাড়া মাঠ পর্যায়ে সরকারের কোন কার্যক্রম ও নেই । যতদিন পর্যন্ত সংখ্যালঘু জাতিস্বত্তাদের মৌলিক অধিকারগুলোকে সমাধান করা না হবে ততদিন পর্যন্ত সংখ্যালঘুদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত । আর অনিশ্চিয়তা থেকে অবিশ্বাস ক্রমাগতভাবে বেড়ে যেতে থাকবে । সেজন্য আঞ্চলিক রাজনীতিক গন্ডি থেকে বেরিয়ে আসা পার্বত্যবাসীর জন্য কঠিন হবে যেহেতু দেশের সামগ্রিক রাজনীতিক পরিবেশ স্থিতিশীল নয় । পরিস্থিতি বদলাতে সময় না লাগতে ও পারে, অতএব আপনার আহ্বান সত্যি হবে না তাও নয়,
@আ হা মহিউদ্দীন, “সংঘর্ষ সমস্যা সমাধানের পথ নয়” আমি আপনার কথার সাথে দৃরভাবে একমত । তবে আপনি যে বলেছিলেন “তাছাড়া সম্ভু লারমা চাইলেই ভ্রাতৃঘাত বন্ধ হবে না । কারন স্বাধীনতা উত্তর পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি অধিকার সমস্যার সমাধান না হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ থেকে যাবে ।” এখানে আমি দুটি দিক দেখি একটি ভ্রতৃঘাত এবং অন্যটি ভুমি সমস্যা । ভ্রতৃঘাত যেমন রাষ্ট্রীয় তেমন জাতীয় । আর ভুমি সমস্যা হচ্ছে পার্বত্য চট্রগ্রামের মূল সমস্যাটির একটি । বিগত ১৪ বছরের ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় ভ্রতৃঘাতের জন্য সরকারের লেশমাত্র উদ্দ্যোগ নেই বরং ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধ করার হুমকি দিয়ে আসছে । ইউপিডিএফ’ বর্তমানে পার্বত্য চট্রগ্রামের এক রাজনীতিক বাস্তবতা । এই সংগঠনকে সন্তু লারমাও বারবার নিষিদ্ধের দাবী সরকারের কাছে জানিয়ে আসছেন । এক্ষেত্রে সরকারের এবং সন্তু লারমার দৃষ্টিভঙ্গি মিলে যায় । যা ভ্রতৃঘাতকে উস্কে দিতে আরো বেশি কার্যকর অবদান রাখছে । সন্তু লারমা থেকে পৃথক হয়ে যাওয়া জেএসএস সংষ্কারের নেতা রুপায়ন এবং সুদাসিন্দু খীসারা যদি একত্রে ইউপিডিএফের সাথে যুদ্ধবিহীনভাবে আন্দোলন করতে পারে তাহলে সন্তু লারমা এবং প্রসিত খীসার না পারার কোন কারণ দেখি না । সেক্ষেত্রে আক্রমনাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি সন্তু লারমা বরাবরই ইউপিডিএফ কর্মীদের উপর দেখিয়ে যাচ্ছেন যা ভ্রতৃঘাতকে দীর্ঘায়িত করছে । এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের স্বার্থ অবশ্যই নিবিরভাবে জড়িত । শান্তিচুক্তিকে বাস্তবায়ন না করে, ভুমি সমস্যার সামধানহ চুক্তির কোন মৌলিক শর্তকে বাস্তবায়ন না করা স্বত্তেও সরকার সন্তু লারমাকে আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আসীন রেখে সকল সুবিধাদি দিয়ে যাচ্ছেন । সরকারের সুবিধাদি ভোগ করে কি সরকারের অন্যায়ে বিরুদ্ধে আন্দোলন করা যায় ? সেক্ষেত্রে সন্তু লারমার নীতিনির্ধারণকে খানিকটা হলেও দ্বায়ী করা হয়ে থাকে । স্বার্থসিদ্ধিরক্ষেত্রে বুর্জোয়াশ্রেণী সমাজকে লুটে খাবে তা স্বাভাবিক এরমাঝে ও নতুননতুন বিপ্লবের জন্ম হবে তা ও স্বাভাবিক । সেই নতুন বিপ্লবকে দমিয়ে রাখাকে কি বলা হবে তখন ? ফ্যাসিস্ট ?
আপনার আলোচনায় অংশগ্রহণ আশাকরি অমিত হিলের কষ্টসাধ্য লেখাটিকে স্বার্থক করবে । বাস্তবতার কিছু অংশ “THE CHITTAGONG HILL TRACTS COMMISSION” এর ২০০০ সালের রিপোর্ট থেকে পাওয়া যাবে (২২ পৃষ্ঠা দ্রবষ্ট্য) ।
‘LIFE IS NOT OURS’ (Land and Human Rights
in the Chittagong Hill Tracts Bangladesh)- UPDATE 4: http://www.internal-displacement.org/…/Life+is+not+ours+-+UPDATE+4.pdf
@সমরেশ চাকমা, ‘LIFE IS NOT OURS’ (Land and Human Rights in the Chittagong Hill Tracts Bangladesh)- UPDATE 4:
http://www.internal-displacement.org/8025708F004CE90B/httpCountry_Documents?ReadForm&country=Bangladesh&count=10000
@সমরেশ চাকমা,
সমরেশ চাকমা, চীনের একটি প্রবাদ আছে, “বিড়াল সাদা কি কালো সেটা বিবেচ্য নয়, বিবেচ্য হলো বিড়াল শিকারী কিনা”। রাজনীতির জ্ঞান অনুযায়ী আমি সম্ভু লারমাকে দেখি শিকারী বিড়াল হিসাবে, যিনি পাহাড়ীদের সমস্যাকে জাতিয় পর্যায় নিয়ে এসেছেন এবং শাসক গোষ্ঠিকে শান্তি চুক্তি করতে বাধ্য করেছেন । চলার পথে হয়ত সম্ভু লারমার ভুল-ভ্রান্তি হয়ে থাকবে । কিন্তু তার জন্য নিজেদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করাটা হলো মহা ভুল । শাসক গোষ্ঠি যেমন শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে অনীহা প্রকাশ করবে, তেমনি প্রগতিশীলদের উচিত হবে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে শাসক গোষ্ঠিকে বাধ্য করা । ভ্রাতৃঘাত হলো শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের অন্তরায়, যাকে রাজনৈতিক ভাষায় বলে “খাওয়ার জন্য দুই ন্যাড়া কুকুরের লড়াই” ।
কিছুটা হলেও সম্ভু লারমাকে শাসক গোষ্টি ভয় পায়, কারন পাহাড়ীদের মধ্যে সম্ভু লারমা পর্যায় আর কোন প্রগতিশীল নেতা নাই । শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের জন্যই আঞ্চলিক পরিষদ গঠিত হয়েছিল এবং তাকে সংগঠনটির চেয়ারম্যান করা হয়েছিল । চেয়ারম্যান হিসাবে তিনি যদি কিছু সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন, তার জন্য হিংসা করাটা ক্ষুদ্র মনের পরিচয় বহন করে । আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান, সম্ভু লারমা ইচ্ছা করলেই শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন করতে পারেন না । শান্তি চুক্তি তখনই বাস্তবায়িত হবে ,যখন দেশের প্রগতিশীল শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে শাসক গোষ্ঠির উপর কার্যকর চাপ সৃষ্টি করতে সক্ষম হবে । আঞ্চলিক বিবেদ সৃষ্টি করে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন বা ভূমি সংষ্কার সম্ভব নয় ।
@আ হা মহিউদ্দীন, “বিড়াল সাদা কি কালো সেটা বিবেচ্য নয়, বিবেচ্য হলো বিড়াল শিকারী কিনা”- এই প্রবাদটি একইভাবে ইউপিডিএফের ক্ষেত্রে ও প্রযোজ্য । যেহেতু পার্বত্য অঞ্চলের ৭০ ভাগ জায়গা এখন ইউপিডিএফের নিয়ন্ত্রানাধীন । সেজন্য সন্তু লারমাকে ইউপিডিএফকে এক রাজনীতিক বাস্তবতা হিসেবে মেনে নিয়ে আদর্শগতভাবে মোকাবিলা করা উচিত হবে । সহিংসতা কখনো কাম্য নয় । সন্তু লারমার অবদানকে কখনো হেয় প্রতিপন্ন করা হয়নি যতদিন তিনি জনগণের কাতারে ছিলেন । তবে পার্বত্য সমস্যাকে জাতীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে ৯০-এর দশকে বিপ্লবী পাহাড়ী ছাত্র/ছাত্রীদের নিয়ে গঠিত পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন এবং পাহাড়ী গণপরিষদের অবদান বর্তমান যুগের অনেক তরুণই জানেন না । সেই আগমুহূর্ত পর্যন্ত সন্তু লারমা এবং সরকারের সাথে কোন আলোচনা হয়নি বরং রাষ্ট্রতন্ত্র শান্তি বাহিনীকে সন্ত্রাসী এবং বিচ্ছিন্নবাদীদের আন্দোলন হিসেবে আখ্যা দিয়ে একের পর এক সেনাবাহিনীর অপারেশন চালিয়েছিলেন । পরবর্তীতে পাহাড়ীর ছাত্র সমাজ একের পর এক গণমিশিল, গণবিক্ষোভ, লং মার্চ এবং অস্ত্রবিহীন গণআন্দোলনের ডাক দেই ঢাকার রাস্তায়, পাহাড়ের প্রতি গ্রামে-শহরে । পরবর্তীতে সরকার বাধ্য হয় আলোচনায় বসতে । কিন্তু দূঃখ হলেও সত্য সেসব পরিশ্রমী বিপ্লবী ছাত্রদেরকে না জানিয়ে কোনরকম আলোচনা না করে সন্তু লারমা সরকারের সাথে চুক্তি করে ফেলেন, যার কারণে বিপ্লবী ছাত্র সমাজের মনে ক্ষোভ এবং আঘাত লেগে যাই । সম্ভু লারমার ভুল-ভ্রান্তি হয়ে থাকবে সেটা স্বাভাবিক কিন্তু তিনি কখনো নিজের ভুলের স্বীকার জনগণের কাছে করেননি । আদর্শগত তারতম্যর জন্য সমাজ-জাতি-সাধারণ জনগণ না চাইলেও নিজেদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হয় সেটা ভুল কিংবা মহা ভুল হয়ে থাকুক ।
শাসক গোষ্ঠির পার্বত্য চুক্তির অান্তরিকার অভাবে আজ এই অমানবিক পরিস্থিতি যার মাধ্যমে পার্বত্য পাহাড়ী সমাজে বুর্জোয়া শ্রেণীর উদ্ভাবন ক্রমাগত ঘটে চলেছে । আঞ্চলিক পরিষদ সরকারের এবং এনজিওদের একটি ফাঁদ যেখান থেকে অধিকারের নামে অগণতান্ত্রিকভাবে (যদি ও গণতান্ত্রিকতার কথা চুক্তিতে উল্লেখ ছিল) গুটিকয়েকজন লাভবান হচ্ছেন । ভতৃঘাত চুক্তির অন্তরায় বিবেচনা করে সন্তু লারমাকে গণআন্দোলনের আহ্বান দেওয়া উচিত । চুক্তি বাস্তবায়নের পথ দেখানো গেলে ইউপিডিএফের ও কোন কারণ থাকবে না জেএসএস-এর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার । তাই চাওয়াটা সন্তু লারমা কাছে করা হয়ে থাকে ।
“কিছুটা হলেও সম্ভু লারমাকে শাসক গোষ্টি ভয় পায়, কারন পাহাড়ীদের মধ্যে সম্ভু লারমা পর্যায় আর কোন প্রগতিশীল নেতা নাই ।” নেতা হিসেবে সন্তু লারমার নাম আগে; সেহিসেবে তাকে বেশি চোখে পড় তাইতো তার কাছে জনগণের চাওয়া ।
চুক্তিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যানের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর কিন্তু তিনি সেই চেয়ারে বসে আছেন আজ একযুগের ও বেশি সময় ধরে । এখানে হিংসার কোন কারণ দেখি না বরং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিগত রাজনীতির প্রশ্ন ।
অবশ্যই সন্তু লারমা চাইলেই চুক্তি বাস্তবায়ন করাতে পারেন না তাইতো জনগণের সমর্থন আদায় দরকার হয়ে পড়েছে । দেশের প্রগতিশীল শক্তি ও ত বিভিন্নভাবে ভাগ; কেউ মার্ক্সবাদী, কেউ মাও, কেউ লেনিন আবার কেউ সমাজতান্ত্রিক । কেউ ইউপিডিএফের পাশে গিয়ে সন্তু লারমাকে আপোষবাদী সরকারের দালাল বলে অভিহীত করছেন আবার কেউ সন্তু লারমার পাশে দাঁড়িয়ে ইউপিডিএফকে সন্ত্রাসী, প্রতিক্রিয়াশীল ইত্যাদি অভিধা দিয়ে গালি দিচ্ছেন । এই হচ্ছে দেশের আসল রাজনীতিক বাস্তবতা ।
আঞ্চলিক বিভেদ কখন সৃষ্টি হয় (?) যখন রাষ্ট্র সংখ্যালঘুদেরকে সাম্য মানসিকতা দেখাতে এবং মৌলিক অধিকার দিতে ব্যর্থ হয় । পার্বত্য আঞ্চলিক রাজনীতিক দলগুলো কিন্তু সমতলের কোন না কোন রাজনীতিক দলের সাথে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃত্ত । আমাদের মতো সাধারণ লোকদের কথা হচ্ছে কাউকে ছোট বড় করে ব্যবধান না করিয়ে সকল সংখ্যালঘু জাতিস্বত্ত্বাদের স্বার্থে তাদেরকে ঐক্যের আহ্বান করা যা অমিত হিলের লেখার মূল বিষয়বস্তু বলে আমি ধারণা করছি । কারণ ইউপিডিএফের নেতারা ও সবাই সেই বিপ্লবী পাহাড়ী ছাত্রদের নেতা এবং কর্মী ।
আপনার আলোচনাকে সাধুবাদ জানাই । ধন্যবাদ ।
@সমরেশ চাকমা, গত ১৪ বছরে চুক্তির পরবর্তীতে দুইদলের মধ্যে ক্ষোভ জন্মিয়েছে অনেক বেশি । রাষ্ট্রতন্ত্রের যে লীলাখেলা তা আমি অন্তত কিছুটা হলে ও ঈঙ্গিত করেছি । এতে অবশ্যই যে কেউ চাইলেই সংঘাত সহজে বন্ধ করতে পারবে না । সংঘাত বন্ধের জন্য শাসক কায়েমীদের মাঝে মানবতাবোধ জন্মাতে হবে এবং সমস্যা নিরসনে হতে হবে আন্তরিক । শান্তি চুক্তিকে শুধু আশ্বাসে পরিণত করে রাখা হয়েছে । সরকার প্রতিশ্রুতি দিতে ব্যর্থ হয়েছে । তাই চুক্তিকে ঝুলিয়ে রেখে বরং পাহাড়ী দিয়ে পাহাড়ী হত্যার চাতুকারিতা করা হচ্ছে । এতে অবশ্যই আঞ্চলিক দলদের সরকারের এই চাতুকারি মিথ্যা আশ্বাসকে বুঝে উঠে উচিত । ভ্রাতৃ হত্যাতে সরকারই নিজেকে লাভবান করছে মাত্র । তাই দুদলকে অবশ্যই সহবস্থানের এক পথ তৈরি করে ভ্রাতৃহত্যার ইতি টানা জরুরি । তাই একে অপরকে দোষারোপ না করে সহিংসতা বন্ধের পরিকল্পনা নিতে হবে । অবশ্যই আবার ও বলবো যে সরকারের মানসিকতাতে আন্তরিকতার প্রতিফলন থাকতে হবে । আপনাকে মন্তব্যর জন্য ধন্যবাদ ।
@অমিত হিল, অবশ্যই ভ্রতৃহত্যাতে পাহাড়ীরা না সরকারই লাভবান হচ্ছে । আপনিতো নিজেই বললেন যে সরকার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে । কিন্তু সন্তু লারমা কিজন্য শুধু প্রতিপক্ষদল ইউপিডিএফের কর্মী-সমর্থকদের শত্রু হিসেবে বিবেচনা করবে ? আমার প্রশ্ন হচ্ছে এখানে । চুক্তির স্বাক্ষর হয় দুইরাজনীতিক দলের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামিলীগ এবং জনসংহতি সমিতির মধ্যে । ইউপিডিএফ চুক্তির দূর্বল শর্তগুলোর বিরোধিতা করেছে মাত্র যা প্রতিটি গণতান্ত্রিক দেশে এবং জাতিতে অধিকারের এক অংশ । ব্যারিষ্টার রাজা দেবাশীষ রায় ও বলেছেন যে একাধিক রাজনীতিক দল থাকা কোন সমস্যা নয় বরং এক্ষেত্রে গণতান্ত্রিকতার রাজনীতিক পরিবেশ সৃষ্টি হয় । অপরদিকে সন্তু লারমা আদৌ ইউপিডিএফের অস্তিত্বকে স্বীকার করতে নারাজ যেটি ভ্রতৃঘাতকে দীর্ঘায়িত করছে । অবশ্যই ভ্রতৃঘাতের দ্বায়ভারের জন্য ইউপিডিএফ ও উর্ধ্বে নয় । সরকার যে ভ্রতৃঘাত বন্ধের উদ্দ্যোগ নিবে তা আশাকরা বৃথা হবে যেহেতু স্বাক্ষর করা চুক্তিটি পর্যন্ত বাস্তবায়ন করতে অসমর্থ হয়েছে ।
@সমরেশ চাকমা, জনসংহতি সমিতি (সন্তু লারমা) যেভাবে জনগণকে বিশদভাবে না জানিয়ে চুক্তিতে সই করেছে, ঠিক সেভাবে ইউপিডিএফ ও চুক্তিকে বিরোধিতা করে জনগণকে উস্কে দিয়েছে । আমি সেই অতীতে আর ফিরে যেতে চাই না, কারণ অতীতকে নিয়ে পড়ে থাকলে বর্তমানের কোন সমস্যাকে সমাধান করা সম্ভব নয় । তাই আমি মনেকরি প্রধান দুদলকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতে হবে ।
পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা বিশ্লেষণ
পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাটা উত্থাপনের জন্য অমিত হিলকে ধন্যবাদ । বিভিন্নজন বিভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে সমস্যাটি অবলোকন করেছেন, যার বর্ণনা লেখক দিয়েছেন । পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাটি আমার কাছে আঞ্চলিক রাজনৈতিক সমস্যা নয় বলে মনে হচ্ছে । এটা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সমস্যার একটি অংশ । বাংলাদেশ ভূখন্ডের মধ্যে বসবাসরত পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীসহ অন্যান্য আদিবাসীদের সমস্যার সমাধান সহজতর হবে যদি বাংলাদেশের রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান হয় । অন্যথায় আমরা যে তিমিরে আছি সেই তিমিরেই থেকে যাব ।
বাংলাদেশ যেমন বাংগালিদের মাতৃভূমি, তেমনি আদিবাসীদেরও মাতৃভূমি । পাকিস্তান আমলে আলোচ্য ভূখন্ডবাসী বাংগালি ও আদিবাসী সকলেই ছিল নিগৃহীত । তাই কমিউনিষ্ট পার্টি থেকে উচ্চারিত হয় “ইয়ে আজাদি ঝুটা হায়/লাখ এনসান ভূখা হায়” । ফলে কমিউনিষ্ট পার্টির উপর অত্যাচারের ষ্টীম রোলার নেমে আসে । পার্টির হাজার হাজার কর্মী গ্রেফতার হন । জেলখানায় অত্যাচারের মাধ্যমে বহু কর্মীকে পাগল বানিয়ে দেয়া হয়, রাজসাহীর খাপড়া ওয়ার্ডে বহু কর্মীকে হত্যা করা হয়, বহু কর্মীর ভিটা-মাটিতে ঘুঘু চড়িয়ে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয় । নওগার সাওতাল বিদ্রোহের নেত্রী ইলা মিত্রকে পালাক্রমে ২৪ পুলিশ ধর্ষণ করতঃ তার স্ত্রী অংগে সিদ্ধ ডিম ঢুকিয়ে দেয়া হয় এবং মুমূর্ষাবস্থায় তাকে দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয় । সৈয়াদ মুজতবা আলীকেও দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয় ।
এমতাবস্থায় সংখ্যা গরিষ্ঠ বাংগালিদের জাতীয়তাবাদী দল আওয়ামী লীগের উন্মেষ ঘটে । আশা করা হয়েছিল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশ ভূখন্ডের ক্ষুদ্র জাতি সত্ত্বাগুলোর সমস্যার সমাধান করবে । কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু পার্বত্য চট্টগ্রামের আদি বাসীদেরকে বাংগালি হয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন এবং ১৯৭২ এর সংবিধানে আদি বাসীদেরকে সংবিধানিক স্বীকৃতি না দেয়ার কারনে বর্তমান সমস্যা সৃষ্টির সূত্রপাত ঘটে ।
স্বাধীনতার পর থেকে বাংগালি উঠতি মধ্যবিত্তরা লুটপাট আরম্ভ করে । বঙ্গবন্ধু লুটপাটে বাধা দিলে তাকে হত্যার মাধ্যমে জেনারেল জিয়া ক্ষমতা দখল করে বাংলাদেশকে পাকিস্তানীকরণের প্রক্রিয়া আরম্ভ করে, ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দেয়া হয় এবং জমি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সমতল ভূমির বাংগালিদেরকে পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয় । ফলে পাহারী ও বাংগালিদের মধ্যে জমি নিয়ে সংঘর্ষ বেধে যায় । কোটিপতি হওয়ার নেশায় মধ্যবিত্ত জোরেসোরে লুটপাট আরম্ভ করে এবং ছাত্ররা গুন্ডামী ও টেন্ডারবাজীতে ওস্তাদ হয়ে উঠে ।
জিয়ার বিরুদ্ধে প্রায় ২১টি সামরিক ক্যু সংগঠিত হয়েছিল । তাই জেনারেল জিয়া সামরিক বাহিনীর বিদ্রোহ থেকে রক্ষা পাওয়ার লক্ষ্যে সেনা বাহিনীকে পার্বত্য চট্টগ্রামের সংঘর্ষে ব্যবহার করতে থাকেন । ক্ষমতা দখলকারী জেনারেল এরশাদও জিয়ার পথ অনুসরণ করেন । জনতার আন্দোলনে এরশাদের পতন ঘটে ।
বৃটিশ ও পাকিস্তানের কলোনিয়াল প্রশাসনিক কাঠামো দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রশাসন চলতে পারে না এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাও বাস্তবায়ন সম্ভব নয় । ফলে বিগত ১৯৯১ সালের নির্বাচনে প্রশাসন নিরাপেক্ষ না থেকে মুসলিম লীগের নব্য সংষ্করণ বিএনপির পক্ষে কাজ করে এবং দলটি জিতে আসে এবং দলটি জিয়ার পথ অনুসরণ করতে থাকে । হালুয়া-রুটির সাধ পেয়ে বিএনপি ক্ষমতা ধরে রাখার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় । ফলে তত্ত্ববধায়ক সরকারের অধীনে বিএনপিকে নির্বাচন করতে জনতা বাধ্য করে । বিগত ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন প্রথম নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয় লাভ করে ।
আর্থ-সামাজিক ভাবে আঃলী ও বিএনপির মধ্যে কোন পার্থক্য নেই । উভয় দলই ধর্মীয় সংখ্যা লঘিষ্ঠ ও ক্ষুদ্র জাতীসত্তার সম্পত্তি দখলে ওস্তাদ এবং ক্ষমতার জন্য উদগ্রিব । দল দু’টির আভ্যন্তরে গণতন্ত্রের চর্চা হয় না । তাদের মধ্যে পার্থক্য হলো আঃলী গণতান্ত্রিক ভাবে ক্ষমতায় যেতে চায় । বিপরীতে বিএনপি যে কোন উপায় ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আগ্রহী । ফলে তত্তাবধায়ক সরকার নিয়ে বিএনপি ষড়যন্ত্র আরম্ভ করে ।
বিগত ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিএনপির বাধা উপেক্ষা করে পাহাড়িদের সাথে শান্তি চুক্তি করে । পাহাড়ী জনগোষ্ঠির মধ্যে মধ্যবিত্ত শ্রেনীর উন্মেষ ঘটায়, এক গ্রুপ শান্তি চুক্তির পক্ষে এবং অন্য গ্রুপ বিপক্ষে অবস্থান গ্রহন করে, যার অর্থ দাঁড়ায় তারা বিএনপি-আওয়ামী লীগের মতো নিজ গ্রুপ স্বার্থে কাজ করতে থাকে, যা অমিত হিল উল্লেখ করেছেন ।
তত্তাবধায়ক সরকারকে ম্যানুপুলেট করে বিএনপি দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসে ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও আদিবাসী, যারা আঃলী; এর ভোটব্যাংক, এর উপর অত্যাচারের স্টীম রোলার চালায় এবং লুটপাটের রেকর্ড সৃষ্টি করে । ফলে ধনী আরো অধিক ধনী এবং গরিব আরো অধিক গরিব হতে এবং গরিবের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেতে থাকে । এরই প্রেক্ষাপটে আঃলীঃ জাতিকে এক উন্নত ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখায় এবং ২৩ দফা কর্মসূচী উপস্থাপন করে । ফলে জাতি আঃলীঃকে বিপুল ভোটে স্বাগতম জানায় ।
কিন্তু ক্ষমতায় এসে আঃলীঃ বিএনপির পথ অনুসরণ করতে থাকে । সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী ও লুটপাট এখন নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে । আঃলীঃ এখন বিএনপির ভূমিকায় অবতীর্ণ । ১৯৭২ সালের ধর্ম নিরাপেক্ষ সংবিধানে এখন রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম ও বিসমিল্লাহ সংযোজিত হতে যাচ্ছে । আদিবাসীদের সংবিধান স্বীকৃতি দিতে আঃলীঃ অনীহা প্রকাশ করেছে । ভূমি সংষ্কারে আঃলীঃ এর ইচ্ছা নাই । তাই বিএনপি ও আঃলীঃকে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু থেকে উচ্ছেদ না করা পর্যান্ত জনতার মুক্তি সম্ভব নয় ।
@আ হা মহিউদ্দীন ভাইয়া, সুন্দর এবং গোছানো মন্তব্যর জন্য অশেষ ধন্যবাদ । আপনি চরম সত্য কথাটি বলেছেন যাতে করে আমার মনের ভাবটা ও অনেকটা ফুটে উঠেছে । আজকে খবরে দেখলাম যে পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধন বিল গতকাল শনিবার জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে । ‘সংবিধানের ৬ অনুচ্ছেদ প্রতিস্থাপনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসেবে বাঙালী এবং নাগরিকগণ বাংলাদেশী বলিয়া পরিচিত হইবেন ।” [ http://www.kalerkantho.com/?view=details&type=gold&data=Recipe&pub_no=563&cat_id=1&menu_id=13&news_type_id=1&index=0 ]…জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বাঙালী হয়ে যাওয়ার প্রস্তবনাটি অবশেষে বাস্তবায়ন করা হলো । এই হলো ১৯৯৭ সালের “শান্তি চুক্তির” পাওয়ানা ? আর অপরদিকে “শান্তি চুক্তি” নামক এক দলিলকে কেন্দ্র করে চলছে হানাহানি, শাসকচক্রের পরিষ্কার প্রতিফলন । (F) কৃতজ্ঞতা ।
@অমিত হিল,
প্রগতিশীল রাজনৈতিক সচেতন ব্যক্তিত্ব হিসাবে যা বুঝি তাই ব্যক্ত করেছি । ফলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না ।
@আ হা মহিউদ্দীন, আমি আপনার বিশ্লেষনধর্মী মন্তব্য এবং গভীর পাঠের জন্য ভদ্রতার কাটিরে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছি । এতে অন্যকোন কারণে নয় । শুভকামনা রইল ।
@হেলাল ভাইয়া, আপনাকে ধন্যবাদ । ‘পরিশেষে’ প্যারাতে আমি কিন্তু আহ্বান করেছিলাম,
এতে মনে করার কিছু নেই । আমি বরং প্রশ্নের জন্য আপনাকে আরোবেশি ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই । অনেককিছু লেখার ছিল কিন্তু লেখাটি কলেবর বেশি দীর্ঘ হলে পাঠকদের ও অসুবিধা হবে মনে রেখে অনেক কিছু লেখা থেকে বাদ দিয়েছি ।
আমি প্রাথমিকভাবে যদিও বিশদ ব্যাখ্যা কিংবা রেফারেন্স সমৃদ্ধ হয়ে যাইনি কিন্তু আমি দুই উদ্ধৃতিতে রেফারেন্স দিয়েছি । যাহোক আপাততঃ নোমান চৌধুরির কথায় আসা যাক, বিপ্লব রহমান যেহেতু মুক্তমনায় একজন সিনিয়র ব্লগার সেহেতু তেনার মন্তব্য না পাওয়া পর্যন্ত আর বিশদে যাচ্ছি না । আশাকরি আমাকে ভুল বুঝবেন না । তিনি যদি ভুল ধরিয়ে দেন আমি কৃতজ্ঞতার বন্ধনে আবদ্ধ থাকতে বাধ্য । নোমার চৌধুরী সম্পর্কে তেমন গভীরতা নেই, সেদিন তর্কের কাটিরে “পাহাড়ের রুদ্ধকন্ঠ CHT Voice”এ পরিচয় । পরিচয়টি ঘটে অত্যন্ত বিভ্রতকর পরিস্থিতিতে । আমি তখন ব্যস্ত ছিলাম আলোচনা-সমালোচনাতে । নোমান চৌধুরী আসেন একটা লিংক নিয়ে যা তিনি নিজেই রিপোর্ট করেছেন । [লিংকটিঃ http://www.daily-sun.com/?view=details&type=daily_sun_news&pub_no=208&cat_id=1&menu_id=2&news_type_id=1&index=2&archiev=yes&arch_date=07-05-2011 ] । আমি হঠাৎ করে প্রতিবাদ করি যেখানে শাসকতন্ত্র এবং সেনাবাহিনীরা আসল হোতা আর আপনি বলছেন “ইউপিডিএফ” ? এভাবে তর্কবিতর্ক গড়াতে গিয়ে তিনি বলেন জেএসএস (সন্তুর) সাথে এক ইউপিডিএফ-এর কোন তুলনা হয় না । বুঝতে পারলাম তিনি ও তাহলে পক্ষপাতদুষ্ট জুম্মপ্রেমীক, যার তার্গেট ইউপিডিএফ ? পরে গ্রুপের সদস্যদের আপত্তিতে পোষ্ট ডিলেট করা হয় । আবার আরেকটি লিংক পোষ্ট করেনঃ http://www.daily-sun.com/index.php?view=details&type=daily_sun_news&pub_no=223&cat_id=3&menu_id=1&news_type_id=1&index=4&archiev=yes&arch_date=22-05-2011 । এই লিংকটিকে ও আপত্তি জানানো হয় এবং ডিলেইট করা হয় । পরবর্তিতে সদস্যদের প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে বিপ্লব রহমান নোটিশ দেন নোমান যেন আধিবাসীদের উপকারে আসে এমন কিছু পোষ্ট করেন । নোমান প্রতিউত্তরে পাল্টা প্রশ্ন করেন, বিপ্লব রহমান আপনি কিজন্য নিরপেক্ষ হতে চাচ্ছেন ? এসব কিছু ফেইসবুকে ঘটেছে । প্রমাণ রেফারেন্স পাওয়া যাবে স্ক্রীন শটের মাধ্যমে তবে একটু সময় লাগবে । নোমান চৌধুরী পেশায় একজন সাংবাদিক তেনার ফেইসবুক থেকে জানতে পেরেছি । তিনি পার্বত্য ইস্যু নিয়ে রিপোর্ট করেন যেটি তেনার দ্বায়িত্ব । তিনি যদি সেদিন তর্কে জড়িয়ে না পরতেন তেনাকে শুধু এক সাংবাদিক হিসেবে চেনা হতো । তেনার রিপোর্টগুলো পড়তে গিয়ে দেখতে পাই শুধু ইউপিডিএফ-এর উপর এবং রিপোর্টগুলো অনেক্ষেত্রে ইন্টালিজেন্ট এজেন্সি নির্ভর । http://www.daily-sun.com/index.php?view=details&type=daily_sun_news&pub_no=105&cat_id=1&menu_id=1&news_type_id=1&index=7&archiev=yes&arch_date=22-01-2011 ]
http://www.daily-sun.com/?view=details&type=daily_sun_news&pub_no=80&cat_id=3&menu_id=1&news_type_id=1&index=1&archiev=yes&arch_date=28-12-2010
নোমান কিংবা বিপ্লব রহমান-রা লেখাটির মূল টার্গেট নন কিন্তু ভ্রাতৃঘাতের সম্পৃক্ততাতে জড়িত আছেন তা বলতে আমার দ্বিধা কোন নেই । “সন্দেহ জন্ম হয় কিজন্য ?” প্যারাতে আমি পরিষ্কারভাবে লিখেছি,
কাঁদাছুঁড়াছুঁড়ির বিষয়ে আমি কিন্তু স্বজ্ঞানে স্বীকার করে নিয়েছি এই বলে,
বাংলাদেশের মানুষের চালিত ব্লগগুলোর মধ্যে শুধু মুক্তমনা কাঁদাছুঁড়াছুঁড়ি থেকে অনেকটা মুক্ত । এজন্য মুক্তমনার সফলতা কামনা করি । হেলাল ভাইয়া, বাঁধাহীনভাবে প্রশ্ন করতে পারেন। (F)
@অমিত হিল,
আমার নাম নিয়েছেন বলে বাধ্য হয়ে বলছি:
পেশাগত কাজে ব্যস্ততার কারণে আপনার চাতুর্যপূর্ণ ব্যক্তি কুৎসার জবাব এখনই দিতে পারছি না। তবে শিগগিরই এর প্রতিটি পয়েন্টের জবাব দেওয়া হবে। ধন্যবাদ।
httpv://www.youtube.com/watch?v=IaAiWB7JWNg
@বিপ্লব রহমান,ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা বিপ্লব দা । অপেক্ষায় আছি, ভুল হলে শুধরিয়ে দিয়েন । আর আশারাখি তথ্যসমৃদ্ধ করে আপনার উত্তর দিবেন । (Y) (F)
@অমিত হিল,
ভ্রাতা, আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। আপনার এই লেখাটির পাঠ প্রতিক্রয়া মন্তব্যের ছোট্ট ঘরে সম্ভব নয়। সে জন্য একটি আলদা লেখা লিখতে হলো। ‘চিন্তার প্রতিবন্ধকতাসমূহ অথবা নিবেদন ইতি’ [লিংক] নামের লেখাটি আশা করি আপনার অনেক কাজে লাগবে। (Y) (F)
@বিপ্লব রহমান, হাতির মরা খুলা দিয়ে ডেকে রাখা যাই না । সন্দেহ করেছিলাম এনজি কর্মীদের আগমন ঘটবে, তাই হয়েছে । কারণ বিজ্ঞাপনতো আর কম হয় নাই । এনজিও কর্মীদের আপনাকে দরকার বিজ্ঞাপনের জন্য, তাই আপনার প্রতিটি লেখাতে তাদের নাম থাকলে কি আর চলে ? যাকগে, সেটা যারযার নিজস্ব ব্যাপার । অবশেষে আমাকে ডিজিএফআই-এর ট্যাগ লাগিয়ে ( দীপায়ন খীসার মাধ্যমে ) আলোচিত করতে চাইছেন বলে ধন্যবাদ না দিয়ে পারলাম না । আর নিজেও তো ডিজিএফআইকে আড়াল করে উড়িয়ে দিয়েছেন । গাছ চেনা যাই চামড়ায়, মানুষ চেনা যাই কথায় । যুক্তিহীন -সুবিধাবাদ দেখলে সঙ্গে-সঙ্গে প্রতিবাদ । বিজ্ঞাপনের নমুনা আরেকটু বাড়ানো দরকার । (F)
@অমিত হিল,
হাসাইলেন হিল ট্যাগী ভ্রাতা অমিত। :lotpot:
অবিরাম বিনয় ও পুষ্পবৃষ্টির ছদ্মবেশে আপনি যা বলছেন, যা করছেন সে জন্য আবারো আপনাকে সাধুবাদ! আপনাকে আরো সাধুবাদ জানাই নিজের মেধার চমৎকার অপচয়ের নমুনা, তথা নিজস্ব স্বরূপটি উন্মোচনের জন্য। :clap (Y)
আপনার সঙ্গে বাহাসে আমার রুচি নেই; সে সময়ও নেই। তবে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা সম্পর্কে আপনি যে দীর্ঘতর বিভান্তির ধোঁয়াশা তৈরি করেন এবং অপ্রয়োজনে ব্যক্তি কুৎসা রটনায় মত্ত হন, শেষ পর্যন্ত এর দায়ভার আপনার ওপরেই বর্তায়। :))
আপনার অবগতির জন্য আবারো জানাই, আপনার কথিত ফেসবুকের ফেকি আইডিধারি ‘জনৈক সচেতন নাগরিক’ মুই জুম্মর ফেসবুক স্ক্রিণ শটেই প্রমানিত হয়না যে—
আপনার বয়ান মতে ডিজিএফআই কর্তৃক শান্তিচুক্তির সাজানো দাবার ছকে সন্তু লারমার (জেএসএস) ও প্রসিত খীসার (ইউপিডিএফ) কথিত পা বাড়িয়েছেন এবং একই ছকে আবারো তারা ভাতৃঘাতি সংঘাতে জড়িত পড়েছেন।
এভাবে সাময়িক বিভ্রান্তিতে ডুবে থাকা যায়, কিন্তু রক্তের বিনিময়ে অর্জিত শান্তিচুক্তির ইতিহাস তথা পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসকে মুছে ফেলা যায় না।
[লিংক]
আবারো বলছি, পাহাড়ের ভাতৃঘাতি সংঘাত রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের জন্য, এতে সরকার-সামরিক জান্তার সুবিধা হলেও প্রকৃত সত্য এটিই। তা আপনি যে ভাবেই অস্বীকার করুন না কেনো। হাওয়াই তথ্য ও ফেস বুকের ফেকি আইডি রেফারেন্সে ব্লগ বারান্দা গরম করা যায়, সাময়িক বিভ্রান্তি তৈরি করা যায়, এনজিও বলে অন্যকে গাল দেওয়া যায়, নিজের আত্নপরিচায় গোপন রাখা যায় না।…
আপনার এই লেখার পাঠ প্রতিক্রিয়া ‘চিন্তার প্রতিবন্ধকতাসমূহ অথবা নিবেদন ইতি’তে বলা হয়েছে:
অথচ আপনি তালগাছ ছাড়তে শুধু নারাজই নয়, একেবারে গাছে কাণ্ডে চড়ে বসে একের পর এক ব্লগ-ফেসবুক ঘেঁটে বিপ্লব রহমানের আদ্যপান্ত ঘেঁটে চলেছেন, সেখানে একের পর এক হাবিজাবি লিংক দিয়ে মেধার কি মারাত্নক অপচয়ই না ঘটিয়ে চলেছেন! 😛
দু:খিত– হিল বিশ্লেষক ভ্রাতা অমিত, আপনার জন্য ভীষণভাবে দুঃখবোধ করছি। (U) আপনার গুদামজাত ফেসবুক ও ব্লগের টুকরো মন্তব্যে বিপ্লব রহমানকে একেবারেই বোঝা যাচ্ছে না, তবে অমিত হিলকে কিন্তু স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। 🙂
ইউপিডিএফ-এর সমালোচনা করে বিপ্লব রহমান দুটি ব্লগ লিখেছে, একটি নিউজ লিখেছে, ফেসবুকে কিছু টুকরো মন্তব্য দিয়েছে— ব্যস প্রমান হয়ে গেল ‘তিনি ভাতৃঘাতকে উস্কে’ দেন! কি চমৎকার যুক্তিবোধ!! 😕
বিনীত ভাবে আহব্বান জানাই, এই অধমকে বার বার নকশালী পন্থায় হেনতেন ট্যাগিং না দিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্লগ পোস্টে গিয়ে যুক্তি-তর্ক দিয়ে সমালোচনার খণ্ডন করুন। আর রাজনৈতিক দলের সৃষ্টিশীল সমলোচনা রাজনীতিকেই শুদ্ধ করে, এতে এতো আহত হওয়ার কিছু নেই।
আপতত এইটুকুই। অনেক শুভেচ্ছা। (Y)
@বিপ্লব রহমান, অমিত কোন ইতিহাসকে মিথ্যা প্রমাণ করেনি এবং কি “শান্তি চুক্তির” উপর শ্রদ্ধা রেখেই সে লিখেছে,
বরং লেখক বিপ্লব রহমান অমিত হিলের আলোচনার বিষয়বস্তুতাকে অন্যদিকে মোড় গড়াতে আপ্রান্ত চেষ্টা চালাচ্ছেন । অমিত হিলের আগে বিপ্লব রহমান কখনো বর্তমান পার্বত্য চট্রগ্রামের আঞ্চলিক রাজনৈতিক বাস্তবতার কথা না লিখে ইউপিডিএফকে নাবালক, সন্ত্রাসীসহ নানাভাবে অভিধা দিয়েছেন । যদি ও অমিত হিল বলেছিল,
অমিত হিল বর্তমান পরিস্থিতির অমানবিক দিকগুলো তুলে ধরতে চেয়েছিল মাত্র । সে ব্যক্তিবিশেষের কথা না বলে সামগ্রিক দিককে বিবেচনা করেছে । মুই জুম্মোরা সত্য কথা বলে তারা পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনতে জেএসএস এবং ইউপিডিএফদের মধ্যে ঐক্য গড়াতে চাই । আর বিপ্লব রহমানরা চাই সহিংসতা বাড়াতে, কারণ;
অমিত মুক্তমনায় নবাগত তাই সে বিপ্লব রহমানকে একজন সিনিয়র ব্লগার হিসেবে যথেষ্ট সম্মানের সাথে নম্রভাবে কথা বলতে এবং উত্তর দিতে চেয়েছে, কিন্তু বিপ্লব রহমান যখন নিজের সম্মান রাখতে চাইছেন না তখন আর অমিত হিলের কি করার আছে ? হিলের লোক তো তাই অজ্ঞ । অমিত হিল যা বলেছে তাই প্রমাণ করেছে কিন্তু বিপ্লব রহমান প্যাচাল বাড়ানোর জন্য অনেক কিছু মিশিয়ে জগাখিচুরি বানিয়েছেন ।
স্বীকার করেছেন বটে তাই ধন্যবাদ । আগে যদিও এই বলে উড়িয়ে দিতে চেয়েছেন,
এখন প্রমাণ পাওয়ার পর ও দেখি বিপ্লব রহমান লাফাইতেই আছেন । যুক্তিগুলোর মোড় পাল্টিয়ে মিথ্যাভাবে উপাস্থাপন করতে আপ্রান্ত । মুক্তমনায় বিপ্লব রহমানের বিবেশনযুক্ত শব্দগুলো দেখে থমকে যাচ্ছি । জানি না অমিত হিল নিজের লেখাতে কয়টি বিশেষণযুক্ত ব্যবহার করেছে ? যদিও সে আপত্তি করেছে ভ্রাতৃঘাত উস্কে দেয়ার জন্য কিন্তু সেটো এত বিশেষনযুক্ত শব্দ ব্যবহার করেনি ? বরং সে জেএসএস এবং ইউপিডিএফের ব্যব হৃত বিশেষণ “সন্ত্রাসী” শব্দটি ও ব্যবহারের পক্ষপাতি নয় ।
এখানে কি একটু ও বুঝা যায় না বিপ্লব রহমান আসলেই কি চাই ? সিরিয়াস আলোচনাকে সে হাসি-থামাসা করে উড়ি্যে দিচ্ছে, যদি ও অমিত হিল বিপ্লব রহমানের প্রথম মন্তব্যর প্রতিউত্তরে বলেছিল,
এরপর ও এই অধমের কি বলার আছে ? এমনিতেই জাতিগতভাবে তাকে “বাঙালী” পরিচয় দিতে হবে তাই বিপ্লব রহমানের “হিল” ট্যাগের আপত্তি ও জোড়ালো আবেদন রাখছে । শুভ কামনা রইল ।
@অমিত হিল,
ভ্রাতা, আবারো হাসাইলেন! :lotpot:
ব্যাস– লেখায় একটি মাত্র বাক্য উল্লেখেই প্রমান হয়ে গেল যে, রক্তের বিনিময়ে অর্জিত শান্তিচুক্তি ও পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়ার জন্য অমিত হিলের কোনো আপ্রাণ চেষ্টা নেই! একই সঙ্গে ওই একটি মাত্র মহান উদ্ধৃতিতে (‘সচেতন নাগরিক’ মুই জুম্ম’র বয়ানসহ?) এ-ও প্রমান হয়ে গেল যে, অমিত হিলের হাওয়াই বিশ্লেষণ মতে, শান্তিচুক্তিটি ডিজিএফআই’র নকশা এবং একই নকশায় পাহাড়ে ভাতৃঘাতি সংঘাত চলছে! কাঁঠালের আমসত্ব বটে!! অদ্ভুদ অমিত যুক্তিবোধ!!! :))
হিল বিশ্লেষক ভ্রাতা অমিত,
বিপ্লব রহমানের গুষ্টি উদ্ধার করে যতোই ব্লগ ও ফেসবুকের গুদামজাত রেফারেন্স এবং তৎসংলগ্ন আবোলতাবোল বিশ্লেষণ নিয়ে আনন্দে মত্ত থাকুন বা নকশালী কায়দা শ্রেণী শত্রু খতমের মোহে পুলকিত হোন বা ফেসবুকের ফেকি আইডি ধারীদের হাততালি নিন বা তাকে ট্যাগিং এর পর ট্যাগিং জুড়ে দিয়ে মুক্তমনায় নজির সৃষ্টি করুন [১. স্বনামে প্রগতিশীল জুম্মপ্রেমীক, ২. পাহাড়িদের সান্নিধ্য থেকে পাহাড়িদের নিয়ে কিছু লেখালেখি করেন, ৩. নির্দিষ্ট দলকে সাপোর্ট দিয়ে নিজেরকে জুম্মপ্রেমীক বলে ঘুরে বেড়ান, ৪. তিনি স্বপক্ষ দলের সব খারাপ কাজগুলোকে জায়েজ করেন, না হয় জায়েজ করার আপ্রান্ত চেষ্টা করেন, ৫. পার্বত্য চট্রগ্রামের “ভ্রাতৃঘাতকে” উস্কে দেওয়ার জন্য তিনি আরো বেশি ভয়ংকর–ইত্যাদি ইত্যাদি] বা বিপ্লব বধে আরো সব হেনতেন দক্ষযজ্ঞ করুন না কোনো– তাতে পার্বত্য সমস্যার সামাধানে কোনো অগ্রগতি না হলেও মুখোশ বিহীন হিল ট্যাগি অমিতদের গোপন দূরাভিসন্ধী ঠিকই প্রকাশিত হচ্ছে বৈকি। তাই নিজস্ব স্বরূপটি পুর্নবার প্রকাশ্য করায় আবারো আপনাকে সাধুবাদ। :clap (F)
শুভ কামনা রইলো। (Y)
@বিপ্লব রহমান, বিপ্লব রহমান যখন মূল আলোচনার বিষয়বস্তুকে এড়িয়ে যাচ্ছেন অধম অমিতের কি করার আছে ? অমিত শুধু বলবে-
একটা জিনিস মনে রাখেন যে, বিপ্লব রহমান মূল আলোচনাতে না এসে অমিত হিলের উপর চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন । ফেসবুক রেফারেন্সকে বলছেন গুদামজাত যখনি বিপ্লব রহমানের বহুলেখাতে ‘পাহাড়ের রুদ্ধকন্ঠ CHT Voice‘ এর রেফারেন্সের সরাসরি । আর অমিত গুদামজাত ব্লগের (বিপ্লব রহমাতের মতে) রেফারেন্স খিলজী এবং সৈয়দের দিছে, সে রেফারেন্সগুলো শুধু স্ক্রীন শটগুলোকে দেখিয়ে দিতে যেহেতু বিপ্লব রহমান চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন । আলোচনা এড়িয়ে গেলে কি নিজেকে ভালো প্রমাণ করা যায় ? কৌতুহল ডিজিএফআইকে দায়ী করে বিপ্লব রহমানের গায়ের লোম কিজন্য খাড়া হইলো ? মুইজুম্ম লেখাটি জেএসএস এবং ইউপিডিএফ নেতাদের সামনে মন্তব্য করা হয়েছে, কই কোন নেতাইতো প্রতিউত্তর হিসেবে “না” মন্তব্য করেননি? আর সেখানে বিপ্লব রহমানের ঘাম বেড়িয়ে যাচ্ছে মুই জুম্মের তথ্যটিকে মিথ্যা প্রমাণ করতে । তাইলে, বিপ্লব রহমান নিজেকে কি নিজেই ডিজিএফআই-এর প্রতিনিধি ভাবছেন ? :-s
বিপ্লব রহমান কখনো কোন সময় অস্বীকার করতে পারবেন না, তিনি স্বনামে প্রগতিশীল নন কারণ প্রমাণ করতে হলে অনেক লেখা এবং মন্তব্য বিপ্লব রহমানকে ডিলিট করে দিতে হবে । ভ্রাতৃঘাতের যেসব উৎস দরকার বিপ্লব রহমানের দুই-তিনটি লেখা এবং বেশ কয়েক মন্তব্য থেকে প্রতীয়মান । সেগুলোকে ট্যাগিং বলে না, বলতে হয় সমালোচনা । আর অমিত হিলকে উদ্দেশ্য করে বিপ্লব রহমানের ট্যাগিং তালিকাঃ
1. আলোচ্য হিল ট্যাগের
2. মস্তিকপ্রসূত
3. গরলভেল
4. নামতে নামতে কোন অতলে নেমে
5. অকালপক্ক সিদ্ধান্ত
6. নকশালী প্রবনতা
7. বিনয়ের ছদ্মবেশে
8. গুদামজাত ফেসবুক
9. চাতুর্যপূর্ণ ব্যক্তি কুৎসার
10. অবিরাম বিনয় ও পুষ্পবৃষ্টির ছদ্মবেশে
11. বাহাসে আমার রুচি নেই;
12. তালগাছ :clap
@অমিত হিল,
ট্যাগ সর্বস্ব ভ্রাতা, আপনার নানান সব ট্যাগিং-এর আঁঠা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য ওই মাত্র ১২টি চিমটা ব্যবহার করেছি মাত্র, এগুলোকে তালিকাবদ্ধ করায় আপনারকে সাধুবাদ। (F)
তবে আপনার নিত্যনতুন ডিজিএফআই তত্ব এবং বিভ্রান্তি ও কুৎসা রটনার সমাবেশে ট্যাগিংগুলোর সংখ্যা গুনতে গুনতে খেই হারিয়ে ফেলছি। 🙁 অনুগ্রহ করে এগুলোরও কী একটি তালিকা দেবেন? 🙂
সত্যিই আপনার মারাত্নক মেধার অপচয়, এখানে-সেখানে ফেসবুক ও ব্লগের হাওয়াই রেফারেন্স গুঁজে দিয়ে নিজস্ব মুখোশের আড়ালের মুখটিকে খুব কুৎসিত ঠেকছে। তা একই সঙ্গে অরুচিকর ও ক্লান্তিকরও বটে। নিন, তালগাছটি আপনারই থাক। এখন প্রাণ খুলে বিজয়োল্লাস করুন। :rotfl: এই সব মন্তব্য-প্রতিমন্তব্যর স্ত্রিন শটে আপনার গুদামটি সমৃদ্ধ করে ফেসবুকের ফেকিদের বাহবা কুড়ান, হাততালি নিন। :clap
আপনার সুমতি প্রত্যাশা। (Y)
@বিপ্লব রহমান, বিপ্লব রহমান একজন মজার মানুষ । কথাগুলো বলার ছিলো, গলায় আটকিয়ে গেছে ( :lotpot: ) কারণ তেমন শব্দ অমিতের মুখ থেকে খুব সহজে বেরুই না ।…………বুঝে নিন সেগুলো কেমন শব্দ হতে পারে ? অমিত বলে নাই যে বিপ্লব রহমান ডিজিএফআই-এর বরং সে বলছে-
একটু মাথা কাটান কোনখানে আটকিয়ে যাচ্ছেন ? 😉
@অমিত হিল,
হিল ভ্রাতা, আবারো আপনার বিনোদনমূলক উপস্থিতির জন্য ধন্যবাদ। ইয়ে…মুই জুম্মটা যেনো কে? আপনার ওই পেয়ারে ডিজিএফআই ত্বত্বের রপ্তানীকারক? 😀
না জানলে জেনে নিন, শান্তিচুক্তিটি ডিজিএফআই’র নকশা এবং একই নকশায় পাহাড়ে ভাতৃঘাতি সংঘাত চলছে!— ইত্যাদি হাওয়াই ত্বত্ব নিয়ে আপনারা যতোই নর্দন-কুর্দন করুন না কেনো, রক্তাক্ত পাহাড়ের ইতিহাস কোনো মতেই তা বদলে যাবে না; বরং এসব নিয়ে যতোই বাহাদুরি করবেন, ততোই মুখোশের আড়ালের কুৎসিত মুখটি আরেকটু প্রকাশ্য হবে মাত্র। ইতিহাসের নিয়মেই ইতিহাস চলবে এবং শেষ পর্যন্ত আবর্জনার গন্তব্য হবে আস্তাকুঁড়ে। 😛
অনেক ধন্যবাদ। (F) (Y)
পুনশ্চ: তালগাছটি বুঝে পেয়েছেন তো? :hahahee:
@বিপ্লব রহমান, Mui Jummo এর মন্তব্যটির পুরা আলোচনাটি পড়তে হলে এখানে ক্লিক করুন । আর একটা কথা মনে রাখবেন যে Mui Jummo রা আপনাকে আলজাজিরাতে সাক্ষাৎকার দিতে সুযোগ করে দিয়েছিল । মানুষকে বেশি বোকা ভাবা ঠিক নয় । Mui Jummo একাউন্টি । আপনাকে ধন্যবাদ অনেক পরিবর্তনে এসেছেন দেখে । নাবালক থেকে আত্মত্যাগি, আদিবাসী থেকে সংখ্যালঘু জাতিস্বত্তার অধিকার । ভবিষ্যতে আরো যাতে এই পরিবর্তন দেখা যায় সেই আশাই অমিত নিজের মনোভাব ফুটে তুলবে ।
নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা ।
@অমিত হিল,
মাফ করবেন। পেয়ারে ডিজিএফআই অমিত ভ্রাতা, আপনার কথিত স্বঘোষিত হিল বা মুই জুম্ম নামধারী জুম্ম প্রেমী বা ফেসবুকের ফেকি আইডি গং বা ডিজিএফআই তত্ত্বের রপ্তানীকারকদের পেছনে আপাতাত সময় নষ্ট করার প্রয়োজন বোধ করছি না। 😛
ঞঁ!! 😕 নতুন করে মিডিয়ার এক ক্ষমতাধরের কথা জানলাম। যদিও ঘটনা সত্যি নয়, তবু আপনার ভাষ্যেই ওনাকে আমার লাল গোলাপ শুভেচ্ছা। (F)
তাই? এটি ট্যাগিং নম্বর কতো যেনো? তা আপনার এই নয়া আবিস্কারটি পেটেন্ট করিয়েছেন তো? :hahahee:
নিখাঁদ ব্লগ বিনোদনের জন্য আবারো আপনাকে সাধুবাদ। (F) (Y)
@বিপ্লব রহমান দা,
মানুষ যখন একরুপ থেকে অন্যরুপে বদলায়; তা দেখে আমার হাসি পাই । দীর্ঘ জীবন পরিক্রমায় দূঃখ থেকে সুখে অনেকবার এসেছি । কত ধরনের না মানুষ দেখেছি ? লজ্জাহীন, সুবিধাবাদ, পরার্থপর, সাধু-অসাধু ব্যবসায়ী, ভালো থেকে খারাপের চিত্র, কতকিছু না দেখেছি ? সংসারের হাল থেকে ছিটকে পড়েছি বহুবার, তবুও খারাপকে ভালো করাতে সবসময় উৎসাহ-উদ্দীপনা যুগিয়েছি । নিষ্ঠুর মানুষের মনে স্থান নিয়েছি যখনি কাছে বসেছি । হেরোইন-গাঁজা খুরীদের সাথে হাত মিলিয়ে ভালো পথে থাবিত করিয়েছি । অন্ধ জাতিবাদী সঙ্গীদের চোখ খুলে দিয়েছি, মানুষ বানাতে ভালোবাসা দিয়েছি । তাই বিপ্লব রহমানরা নতুনভাবে মানুষ হউক এই কামনা রাখি । শুভেচ্ছা । (F)
@অমিত হিল,
এনজিও কর্মী বলতে কাকে বোঝাচ্ছেন? কাদের আগমন ঘটেছে এখানে? বিপ্লব রহমানের সাথে এনজিও-র সম্পর্কটা কী রকম? কারা বিপ্লব রহমানকে কাজে লাগাচ্ছে তাদের প্রচারের জন্য? আপনার দেওয়া লিংক থেকে দেখলাম ফেইসবুকেও দুইএকজন পাহাড়ি নামধারী ব্যক্তি বিপ্লব রহমান পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ব্যবসা করেন বলে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন।
এর আগেও বিপ্লব রহমানের লেখা ‘কল্পনা চাকমাঃ পাপমোচনের দায়‘ লেখায় ইমরান মাহমুদ ডালিম এ ধরনের একটা মন্তব্য করেছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে বিপ্লব রহমান ক্ষিপ্ত অথবা বিরক্ত হয়ে ডালিমকে তাঁর লেখায় মন্তব্য করতে নিষেধ করেছিলেন। ডালিমের মন্তব্যটা তুলে দিচ্ছি এখানে।
পাহাড়ে এনজিও-র কর্মকাণ্ড, তাদের স্বার্থের বিষয়টা জানার বিষয়ে আমি কৌতুহলী। পাহাড়িদের প্রতি আমাদের সরল সহানুভূতিকে কতখানি তারা গরলভাবে তাদের নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে, সেটা জানতে পারলে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনীতির অনেক কিছুই পরিষ্কার হয়ে আসতো।
@ফরিদ আহমেদ,
ওহ! নানান সব নকশালী ট্যাগিং-এর ভীড়ে অমিত হিল-গং এর এই নব্য ট্যাগিং-এর কথা ভুলে গিয়েছিলাম। ধন্যবাদ ফরিদ ভাই। এ বিষয়ে আমারো কৌতুহল কম নয়। তো, এটি ট্যাগিং নম্বর কতো যেনো? ছয়? সাত? নাকি আট? :hahahee: :hahahee: :hahahee:
অমিতের ট্যাগিং এর কথা বাদ দিন। আমি এনজিওদের ভূমিকাটার বিষয়ে সত্যি সত্যি-ই কৌতুহলী। পাহাড়ি জনগণের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার সাম্প্রতিক তড়িঘড়ি করে বেশ কিছু হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তগুলোর সাথে এনজিও-র (জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক) কর্মকাণ্ডের কোনো ভূমিকা আছে কিনা, সেটাই দেখতে চাচ্ছি আমি। হয়তো সরকার এমন কিছু জানে, যেটা আমরা জানি না। সে কারণেই এই সব হঠকারী (!) সিদ্ধান্ত। সেই সাথে পার্বত্য এলাকায় এনজিও-দের নিজস্ব স্বার্থটাও বুঝতে চাচ্ছি। সেই স্বার্থ বাস্তবায়নে কোন পথে তারা অগ্রসর হচ্ছে, সেটা জানাটা পার্বত্য এলাকার জনগণের জন্যই শুধু জরুরী নয়, বাংলাদেশের সব মানুষের জন্যই জরুরী। কারণ, পার্বত্য এলাকা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়, এটা বাংলাদেশেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ।
@ফরিদ আহমেদ,
মূলতঃ এনজিও কর্মকান্ড বেড়ে যাই সরকার যখন ব্যর্থ হয় জনগণের মৌলিক চাহিদা মেটাতে । এখানে একটা জিনিস একটু পরিষ্কার করি । সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে এনজিওগুলো রাজনৈতিক ফায়দা লুটছে, অর্থাৎ সরকার গন্ধ পায় পার্বত্য চট্রগ্রামকে ঘিরে এনজিওরা চক্রান্ত চালাচ্ছে, আর অন্যদিকে বাম -আঞ্চলিক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্ধরা মনে করেন এনজিওরা প্রকৃত আন্দোলনের জন্য বড় বাঁধা এবং বৈষম্যমূলক সমাজ গঠনের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। যেকোন এনজিও কিন্তু বেশিরভাগক্ষেত্রে সুবিধাভোগী । অধিকার এবং উন্নয়নের জন্য এনজিওদের ব্যবস্থাপনা । বাংলাদেশের রাঙামাটি শহরে জীবনযাত্রার মান মফস্বল হলেও ব্যয়বহুল । মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উন্মেষ নিম্ন মধ্যবিত্তদের ভোগাচ্ছে । আর খাগড়াছড়িতে ও একই অবস্থা । খাগড়াছড়িতে মুরগির মাংস ৩০০ টাকা যেখানে ঢাকা শহরে ২০০ এর কাছাকাছি । এর ব্যবধানের কারণ উন্নয়ন সহযোগী এনজিওদের প্রভাব । সরকারি চাকুরিজীবিদের যাদের বাড়তি আয় (অর্থাৎ ঘুষ) নেই তাদের ভীষণভাবে পোহাতে হচ্ছে । আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিরা অর্থ ব্যয় করছে উন্নয়নের জন্য কিন্তু যেখানে শাসনব্যবস্থার স্থিতিশীলতা নেই সেখানে উন্নয়ন কতটুকু সম্ভব তা বিবেচ্য । আর অন্যদিকে স্থানীয় এনজিওরা নিজেদের প্রোজেক্টের জন্য ধর্ণা দিচ্ছে যেকোন সুবিধাভোগীর কাছে । এখানে হচ্ছে সুবিধার টানা হেঁচড়া । আর সৃষ্ট হচ্ছে নতুন নতুন সুবিধাভোগী । তাই পার্বত্য আঞ্চলের প্রতিটি সমস্যাকে বস্তুভিক্তিক পণ্য বানিয়ে বিক্রি করে খাচ্ছে গুটিকয়েক সুবিধাভোগী । তাই কলমে আর সমাধান ধরে না, বরং সমস্যা বৃদ্ধির নতুন-নতুন ফাঁক ।
ফেইসবুকে আমরা কয়েকজন ঐক্যবদ্ধ সমাজের জন্য লেখালেখি শুরু করলে আমাদের উপর আঙ্গুল তুলে নানাভাবে অভিধা করা হয় ঠিক যেভাবে বিপ্লব রহমান অপবাদ দিয়ে যাচ্ছেন । দীপায়ন খীসা নামে যে ব্যক্তিটি আমার এবং বিপ্লব রহমানের লেখা দুটিতে দুই লাইনে মন্তব্য করেছেন; যেগুলো ছিলঃ
এই দীপায়ন খীসা সম্পর্কে জানতে হলে দীপায়ন খীসার “ঐক্যের ফেরিওয়ালাদের কাছে কিছু বিনীত নিবেদন” ও এক ফেরিওয়ালার প্রতিক্রিয়া, কলামে অডঙ চাকমা দীপায়ন খীসার লেখাটির প্রতিউত্তরের কিছুটা ধারণা পাওয়া যেতে পারে । দীপায়ন খীসা যারা ঐক্যে চান তাদেরকে ফেরিওয়ালা হিসেবে অভিধা দিতে ভালোবাসেন সাথেসাথে নানারকম গল্প ও শুনিয়ে যান ঐক্যর ফেরিওয়ালাদের কাছে কিছু বিনীত নিবেদন । এই দীপায়ন খীসা এক এনজিওতে গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল আছেন এবং বিপ্লব রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু । বিপ্লব রহমানের আরো আছেন অনেক এনজিও কর্মী সঙ্গী তাদের নাম একাধিক বার বিপ্লব রহমানের লেখাতে উঠে আছে । বারবার তাদেরকে প্রচারণা করা হয় পাহাড়ের অভিজ্ঞ, সম্পাদক ঘুরেফিরে, সাথে নিজেকে ও । বিপ্লব রহমান কতবছর খাগড়াছড়িতে যান না উনি কি মনে করতে পারেন ? সমাজ পরিবর্তনশীল । পরিবর্তন ঘটছে খুব দ্রুত ।
বিপ্লব রহমানের লেখাতে Jummobi Chakma নামে যিনি মন্তব্য করেন তিনি চাকমা নাও হতে পারেন, বরং আন্তর্জাতিক কোন এক এনজিওতে কাজ করছেন বলে সন্দেহ করছি;
জুম্মবি লেখেন, আমার মিশন আছে । হ্যাঁ, নিশ্চয় আমার মিশন আছে । সে মিশন কারোকে ঠকানো নয় । গালিগালাজ-নানারকম উপাধি উপেক্ষা করে কারো থেকে এক পয়সা টাকা না নিয়ে মিশন করছি শুধু মানুষদের ভাবিয়ে তোলার জন্য, ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য । কিন্তু সন্দেহ হয়, কেনো তারা ঐক্য চায় না ? ঐক্যে যারা চাই তাদের বিরুদ্ধে তাদের প্রচারণা ও কম নয় । তা হচ্ছে ফেইক আইডিধারী জনৈক ব্যক্তি, তাই তার কথা শুনতে নেই । তাদেরক্ষেত্রে দেখা গেছে বক্তব্যর চেয়ে মানুষের চেহারা দেখতে বেশি ভালোবাসেন কারণ, হুমকির রাজনীতির প্রতি তাদের বেশি আশ্বাস ।
তাই বিপ্লবদের লেখাগুলোতে সমাধানের ঈঙ্গিত পাওয়া যায় না, বরং আরো সমস্যা দরকার । জানি না আমার লেখনির মাধ্যমে কতটুকু বুঝাতে পেরেছি ? আমি কোন ইতিহাস ব্যাখ্যা করিনি । বর্তমান পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেছি । পরবর্তীতে আরো উঠে আসবে । বিপ্লব রহমান এখন ইস্যু টানছেন আমি শান্তি চুক্তির অপব্যাখ্যা দিচ্ছি । যাহোক বিপ্লব রহমানের যদি ভবিষ্যতে মানবিক বোধশক্তি জন্মায় আমি খোলামনে বরণ করে নেবো । আর তাই হবে আমার লেখনির স্বার্থকতা ।
অফটপিকঃ আমি কিন্তু মুক্তমনার অনেক নিয়ম-নীতি জানি না । তাই আমি যদি সীমানা অতিক্রম করি বার্তা পাঠালে অনেক খুশি হবো ।
@অমিত হিল,
ধন্যবাদ অমিত। সেই সাথে বিপ্লব রহমান, দীপায়ন খীসা, সমরেশ চাকমা, অডঙ চাকমাসহ অন্যদেরকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। অনেক অজানা বিষয় উঠে আসছে আপনাদের আলোচনা থেকে। আমি নিশ্চিত যে, আমিসহ মুক্তমনার বেশিরভাগ সদস্যই পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাগুলোর এতো গভীরতর রূপ আগে জানতাম না।
এনজিও নিয়ে আপনার বক্তব্য শুনলাম। দেখা যাক, বিপ্লব রহমান, দীপায়ন খীসা, ইমরান মাহমুদ ডালিম বা অন্যরা কী বলে এ বিষয়ে।
মুক্তমনার নীতিমালাটা পড়ে নিন। তাহলেই চলবে। সীমানা অতিক্রম নিয়ে অত বেশি ভাবার প্রয়োজন নেই। সেরকম কিছু হলে, মুক্তমনার সদস্যরা, না হয়তো মডারেটরদের মধ্য থেকে কেউ এসে লাল পতাকা দেখিয়ে দেবে আপনাকে।
@ফরিদ আহমেদ,
বলেন কী ফরিদ ভাই? অমিত অফুরন্ত নকশালী ট্যাগিং বাদ দিলে তো অমিত হিলের বিবিধ ফেসবুক/ব্লগের গুদামজাত লিংক স্বর্বস্ব গরলভেল বিশ্লেষনী তথা ব্যক্তি আক্রমন ও ব্যক্তি কুৎসা নিয়ে আলোচনারই কিছু থাকে না। 🙂
এই দেখুন না–
পার্বত্য রাজনীতির রক্তাক্ত ইতিহাস তথা রক্তের বিনিময়ে অর্জিত শান্তিচুক্তির ইতিহাস ভুলিয়ে দিতে অমিত হিল ডিজিএফআই ট্যাগ করে হাওয়াই তত্বে জানান, ডিজিএফআই কর্তৃক শান্তিচুক্তির সাজানো দাবার ছকে সন্তু লারমার (জেএসএস) ও প্রসিত খীসার (ইউপিডিএফ) কথিত পা বাড়িয়েছেন এবং একই ছকে আবারো তারা ভাতৃঘাতি সংঘাতে জড়িত পড়েছেন। :))
এবং
ইউপিডিএফ-এর সমালোচনা করে বিপ্লব রহমান দুটি ব্লগ লিখেছে, একটি নিউজ লিখেছে, ফেসবুকে কিছু টুকরো মন্তব্য দিয়েছে— ব্যস অমিত হিলের ট্যাগিং এ প্রমান হয়ে গেল ‘তিনি ভাতৃঘাতকে উস্কে’ দেন! 😀
এবং তার ভাষ্যমতে,
এই তো কেমন আরেক নব্য ট্যাগিং প্রমান হয়ে গেল– দীপায়ন খীসা এনজিও’র বিশাল চাই, তিনি বিপ্লব রহমানের বন্ধু এবং বিপ্লব রহমান পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ব্যবসা করেন–ইত্যাদি ইত্যাদি (গুদামজাত ফেসবুক/ব্লগের লিংক এখানে অনুপস্থিত)। :lotpot:
অথচ হিল ট্যাগী ভ্রাতা অমিত, দীপায়ন খীসার দীর্ঘ আত্নত্যাগী রাজনৈতিক জীবনের কথা ভুলেও প্রকাশ করেন না। এটিও তিনি এ-ও চেপে যান যে, দীপায়ন খীসা কম্পু-কি বোর্ডের কোনো লেজে গোবরে বিশ্লেষক নন, তিনি যা লেখেন, তা স্বনামে, স্বপরিচয়ে, নিজস্ব বিশ্বাস ও প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা থেকেই লেখেন। সে জন্য তাকে ডিজিএফআই বা ‘সচেতন নাগরিক’ ফেসবুকের ফেকি ‘মুই জুম্ম’র হাওয়াই তত্ত্ব ধার করতে হয় না। 😛 :
আর লেখক ও সাংবাদিক বিপ্লব রহমানের কলম কখনো কোথাও বর্গা দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। সেনা বাহিনী বা সেটেলার বা সন্তু লারমা বা প্রসিত খীসা বা রূপয়ন দেওয়ান এবং এনজিও-র কাছে তো নয়ই। তিনি যা লেখেন, তা তথ্য সাংবাদিকতার পেশাগত দায়িত্ববোধ এবং মানবিক তাড়না থেকেই লেখেন।
উপরন্তু আমাদের পেয়ারে ডিজিএফআই অমিত আবারো নয়া ট্যাগিং এর আমদানী ঘটান–
তাই নাকি? বিপ্লব রহমানের খাগড়াছড়ি যান না কেনো? কার ভয়ে? ডিজিএফআই? এনএসআই? সেনা বাহিনী? জেএসএস (সন্তু/রূপায়ন)? নাকি ইউপিডিএফ বা অমিত হিল-এর ভয়ে? তাহলে হিল অমিত যখন মি প্রু নিয়ে বিনীদ্র রজনীর আহাজারী করে ব্লগবারান্দা অশ্রুজলে সিক্ত করেন, তখন বিপ্লব রহমানের নামে এই সরেজমিন প্রতিবেদন কোন ভুতে লিখেছে? [লিংক] অথবা গত বছর খাগড়াছড়ি-বাঘাইছড়ির সহিংসতার ওপর তার একাধিক সরেজমিন প্রতিবেদনগুলো কী ফেসবুকের অমুক-তমুক ফেকি আইডি গং থেকে টুকলিফাইকৃত [লিংক, শেষ তিনটি প্যারা দৃষ্টব্য] :hahahee:
ফরিদ ভাই,
পাহাড়ের এনজিও রাজনীতি বিস্তারিত আলোচনার দাবি রাখে। সে বিষয়ে না হয় আরেকদিন। (Y)
@বিপ্লব রহমান,
দীপায়ন খীসা এনজিও-তে চাকরী করেন বলেই যে, তিনি এনজিও-র ষড়যন্ত্রের সাথে যুক্ত আছেন, এমনটা কেউ-ই ভাববে না। সত্যি সত্যি ষড়যন্ত্রের সাথে যুক্ত থাকলে অবশ্য ভিন্ন কথা। 😛 জীবিকার জন্য অনেককেই অনেক কাজ করতে হয়। তিনি হয়তো সেরকমই করছেন।
এই দিন দিন নয়, আরেকদিন আছে। 🙂 সেই আরেকদিনের অপেক্ষায়ে রইলাম।
@ফরিদ আহমেদ, :hahahee: :hahahee: :hahahee:
@বিপ্লব রহমান, অমিততো দীপায়ন খীসাকে ব্যবসা করেন বলে নাই, সে বলছে এনজিও করেন । বিপ্লব রহমান কি বলতে কি যে বললেন ? :lotpot: আর দীপায়ন খীসার আত্মত্যাগি রাজনৈতিক অবদানের কথা তাইলে অবশ্যই স্বীকার করতে হবে জোড় করে হলেও ? সেসব আদর্শকে (যা দীপায়ন খীসা ধারণ করছেন) অমিত জনগণের ক্ষতিকারক আদর্শ বলে মনে করেন । এক দলে গিয়ে বিপক্ষ দলের লোককে মারেন, আর কয়েকদিন পর বিপক্ষ দলে গিয়ে আগের দলকে মারেন । তেমন আদর্শকে অমিত আত্মত্যাগ বলে না, বরং সে ক্ষতিকারক আদর্শ বলে মনে করে । এত উৎকন্ঠা কেনো ? বাঘাইছড়ি কি খাগড়াছড়িতে ? 😛 মিপ্রুর রিপোর্টা কি সরেজমিনের ? :-s বিপ্লব রহমান সাংবাদিক হিসেবে নিজের দ্বায়িত্ব পালন করছেন অমিত অস্বীকার করে না । তার বাইরে যখন বিপ্লব রহমান সম্পাদকীয় কলাম এবং ব্লগ লেখেন তখন তিনি হয়ে যান সম্পূর্ণ ভিন্ন, কারণটা ?
@অমিত হিল,
@অমিত হিল,
ট্যাগ সর্বস্ব ভ্রাতা, আপনার নিত্যনতুন ডিজিএফআই তত্ব এবং নানান বিভ্রান্তি ও কুৎসা রটনার ট্যাগিংগুলোর সংখ্যা গুনতে গুনতে এর ঠিক সংখ্যা এখন কতো হবে– তার খেই হারিয়ে ফেলছি। 🙁
এ পর্যায়ে সত্যিই আপনার মারাত্নক মেধার অপচয়, এখানে-সেখানে ফেসবুক ও ব্লগের হাওয়াই রেফারেন্স গুঁজে দেওয়ার বিকৃত প্রবণতা, তথা নিজস্ব মুখোশের আড়ালের মুখটিকে খুব কুৎসিত ঠেকছে। তা একই সঙ্গে অরুচিকর ও ক্লান্তিকরও বটে। নিন, তালগাছটি আপনারই থাক। এখন প্রাণ খুলে বিজয়োল্লাস করুন। :rotfl: এই সব মন্তব্য-প্রতিমন্তব্যর স্ত্রিন শটে আপনার গুদামটি সমৃদ্ধ করে ফেসবুকের ফেকিদের বাহবা কুড়ান, (F) কুপমণ্ডুকদের হাততালি নিন। :clap
আপনার সুমতি প্রত্যাশা। (Y)
@অমিত হিল,
পুনশ্চ: দুঃখিত, পেয়ারে ডিজিএফআই- ত্বত্বের আবিস্কারক ভ্রাতা, আপনার মন্তব্যের শেষ প্রশ্নগুলো নজর এড়িয়ে গিয়েছিল। তাই আবার লিখতে হলো।
আপনি এর আগে প্রশ্ন তুলেছেন:
তাৎক্ষনিকভাবে দুটি সরেজমিন প্রতিবেদনের রেফারেন্স দেওয়ায় এখন প্রশ্ন তুলেছেন:
নাহ, তো! একদমই উৎকণ্ঠা নেই। বরং বলতে পারেন, উর্বর মস্তিকটির জন্য কিছু করুণা আছে মাত্র। (U)
হিল মশাই, বাঘাইছড়ি খাগড়াছড়িতে নয়; এটি সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনেই অস্পষ্ট। তবে সে সময় যাতায়তের সুবিধার্থে সে সময় খাগড়াছড়ি থেকেই এই অধমকে এক নাগাড়ে কয়েকদিন বাঘাইছড়ি যাতায়ত করে প্রতিবেদনগুলো করতে হয়েছে। হয়তো প্রতিবেদনের এই অংশগুলো আপনার দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে:
জ্বি মশাই, মি প্রু’র রিপোর্টটি সরেজমিনের, নিরাপত্তার স্বার্থে সে সময় এতে অনেক নামধাম ও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি, আর এতে ব্লগ বারান্দা ভাসিয়ে দেওয়ার মতো যথেষ্ট উপাদন না থাকলেও ওই একটি ছোট্ট প্রতিবেদনেই নিখোঁজ মেয়েটির প্রথম সন্ধান মিলেছিল। [লিংক]
দীপায়ন খীসা এরই মধ্যে তার অবস্থান পরিস্কার করেছেন। তার দীর্ঘ আত্নত্যাগী জীবন নিয়ে মুক্তমনায় লিখবেন বলে আশাও প্রকাশ করেছেন, এতে হয়তো অনেক রাজনৈতিক ভণ্ডামীর কিছুটা মুখোশ উন্মোচিত হবে।
আপনার বাদবাকী বিষয়ে নিয়ে আলাপচারিতায় আর আগ্রহ নেই। এখন আবার নিত্য নতুন ট্যাগ, অমূলক সন্দেহ, হাওয়াই প্রশ্ন, লেজেগোবরে বিশ্লেষণসহ যা-খুশী তাই করতে পারেন। তালগাছটি তো আপনারই। :rotfl:
আপনার সুমতি কামনা। (F) (Y)
ছোট্ট একটু কৌতুহল আছে আমার। দীপায়ন খীসা যদি ইউপিডিএফ ছেড়ে না আসতেন, তাহলে আপনি নিজেও কি তাঁর দীর্ঘ আত্মত্যাগী রাজনৈতিক জীবনের কথা প্রকাশ করতেন? নাকি অন্য সব ইউপিডিএফ সদস্যদের যেভাবে নাবালক বলে অভিহিত করেন, সেরকম করে নাবালকই বলতেন তাঁকে?
ইউপিডিএফ সদস্যদের আপনার এই নাবালক ট্যাগে খুব মজা পেয়েছি। দেখলাম যে আপনার দেওয়া ট্যাগটি দীপায়ন খীসার লেখাতেও সংক্রমিত হয়েছে। তিনিও ইউপিডিএফ সদস্যদের নাবালক বলে অভিহিত করেছেন।
@ফরিদ আহমেদ, (Y) যথার্ত প্রশ্ন । আরো অনেক কাহিনী এখনো বাকি ।
সব কাহিনি-ই শুনতে ইচ্ছুক আমরা। এতদিন শুধু বিপ্লব রহমানের একমাত্রিক কাহিনি শুনেছি। ভিন্নমাত্রার কাহিনিগুলো স্বাভাবিকভাবে দারুণভাবে আকৃষ্ট করছে আমাদের। সুস্থ বিতর্ক চলুক অব্যাহত।
@ফরিদ আহমেদ,
আপনার আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে এই থ্রেডে আবারো আসতে হলো ফরিদ ভাই। 🙂
ইউপিডিএফ-এর প্রতিষ্ঠাতা আত্নত্যাগী শীর্ষ নেতারা অনেকেই দলত্যাগ করেছেন। দীপায়ন খীসা তাদের অন্যতম।
[লিংক]
এর মধ্যে অভিলাষ চাকমা সম্প্রতি ভাতৃঘাতি সংঘাতে নিহত হয়েছেন। শীর্ষ নেতা সঞ্জয় চাকমা ও বাবুল চাকমা অনেকদিন ধরেই প্রবাসী। দলটির দ্বিতীয় স্তরের আত্নগ্যাগী নেতাদের অনেকে এখন পুনর্গঠিত কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। এসবই আমার নিজস্ব পর্যবেক্ষণ।
এখন যদি প্রশ্ন করেন, ইউপিডিএফ’কে নাবালক বিপ্লবী-ট্যাগিং করা কেন? তাহলে ওই লেখাটির পাশাপাশি এর মন্তব্যগুলো এবং ওই লেখাটির নীচে দেওয়া লিংকগুলো পড়ে দেখার অনুরোধ জানাই। এতে হয়তো এর খানিকটা জবাব মিলবে।
অনেক ধন্যবাদ। (Y)
অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি আসলেই গভীর আগ্রহ নিয়ে আপনাদের এই বিতর্কটাকে অনুসরণ করে চলেছি। পার্বত্য বিষয়ে আমার স্বল্পজ্ঞানকে সমৃদ্ধ করার এই সুযোগটাকে হাতছাড়া করতে চাই না আমি।
ইউপিডিএফেও যে আত্মত্যাগী নেতা আছে এটা স্বীকার করার জন্য ধন্যবাদ প্রাপ্য আপনার। কারণ, আপনার ওই লেখায় ইউপিডিএফের সদস্যদের শুধু নাবালকই বলেন নি আপনি, সেই সাথ আম্রে সাংকে প্রত্যুত্তর দিতে গিয়ে তাঁদেরকে আদর্শহীন এবং সন্ত্রাসী চক্রও বলেছেন। দীপায়ন খীসা ইউপিডিএফের জন্মপ্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত ছিলেন। শুধু তাই নয়, তারপরেও বছর চারেক এর সঙ্গে থেকেছেন। আপনার বক্তব্যকে সত্য ধরে নিলে আত্মত্যাগী দীপায়ন খীসাও ওই চারবছর নাবালক, সন্ত্রাসীচক্রের সদস্য এবং আদর্শহীন ব্যক্তি ছিলেন।
এই বিতর্ক অব্যাহত থাকুক, সেই কামনা করছি। অডঙ চাকমাকে মিস করছি। তিনি এলে নিশ্চিতভাবেই আরো সমৃদ্ধ হতো এই বিতর্ক।
@বিপ্লব রহমান,
১। অনিল চাকমা (ওরফে গোর্কি) বর্তমানে সেনাকতৃক চালিত বোরখা পার্টির জন্মদাতা, বর্তমানে এর হর্তাকর্তা । লক্ষিছড়ির জুম্মজনগণ বোরখা পার্টি আতংকে অভিশক্ত ।
( http://chtnewsbangla.blogspot.com/2011/06/blog-post_6728.html ) ( http://chtnewsbangla.blogspot.com/2011/05/blog-post_9127.html ) । অনিল চাকমা জাতির একজন বেঈমান ।
২। নিহত অনিমেষ চাকমা এবং দীপায়ন খীসা জেএসএস এ যোগ দেন । অনিমেষ চাকমার হত্যা হওয়ার রহস্য এখনো উৎঘাটন করা যায়নি । কারণ আঞ্চলিক পরিষদের পাশেই তিনি বাস করতেন, যেখানে ইউপিডিএফকে যাওয়া অসম্ভব ।
৩। সঞ্চয় চাকমা সুইলারল্যান্ডে, দীপ্তিশংকর জাপানে ।
৪। দীপায়ন খীসা এবং গোর্কি পার্টি থেকে চলে যাননি তাদেরকে পার্টি থেকে বহিষ্কৃত করা হয়েছিল ( http://www.news.chtbd.net/?p=629 )। দীপ্তিশংকর পারিবারিক দূরাবস্থার কারণে প্রবাসে চলে যান । সঞ্চয় চাকমার সাথে প্রসিত খীসার কেমন ঝামেলা ছিল কেউ জানেন না, তবে সঞ্চয় চাকমা যাওয়ার আগে চট্রগ্রামে এক সভায় বলেন দেখা হবে পুণরায় । পরে কক্সবাজার যাচ্ছেন করে সুইজারল্যান্ড চলে যান ।
৫। সঞ্চয় চাকমা ইউপিডিএফের বিরুদ্ধমূলক কোন কর্মকান্ডে লিপ্ত হননি এবং কি দীপ্তিশংকর ও । জাপানে জুম্মনেট(জেএসএস সাপোর্ট) এর সাথে কাজ করার অপরাগকতা জানালে দীপ্তিশংকরকে জেএসএস বেঈমান হিসেবে অভিহিত করে । কারণ জাপান যাওয়ার সময় জেএসএস দীপ্তিশংকরকে সহযোগিতা দিয়েছিল । দীপ্তিশংকর এবং সঞ্চয়রা আমৃত্যু আদর্শ ধারণ করেছেন, তাঁরা ইউপিডিএফের আদর্শের সাথে প্রতারণা করেননি ।
৬। অনেকে স্ব স্ব কর্মজীবনে চলে গেছেন শুধুমাত্র পারিবারিক দূরাবস্থা এবং ভতৃঘাতের মতো জঘন্য বাস্তবতার কারণে, আর একটা কথা স্মরণ রাখা উচিত ইউপিডিএফের নেতৃবৃন্ধ তরূণ এবং যুবক হওয়াতে ভতৃঘাত বন্ধের জন্য অনেক আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছেন ।
( http://chtnewsbangla.blogspot.com/2011/06/blog-post_10.html ) ।
৭। জন্মদাতা কেন্দ্রীয় কমিটির প্রসিত, রবিশংকর, ধ্রুবজ্যোতি এখনো ইউপিডিএফের সাথে নিবিরভাবে জড়িত । কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে এখনো পর্যন্ত দুইজন চলে গিয়েছেন (সঞ্চয় চাকমা এবং দীপ্তিশংকর চাকমা) । সেক্ষেত্রে বরং জেএসএস (সন্তু লারমা) থেকে ডজনখানেক একসাথে চলে যান এবং সংষ্কারপন্থী জেএসএস গঠন করেন ।
৮। ২০০১ সালের গণতান্ত্রিক ভোটে ইউপিডিএফ অংশগ্রহণ করে, সেসময় দূর্নীতিতে দ্বিতীয় শ্রেণীর কয়েক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে । এসময় তাদেরকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয় । কিন্তু বহিষ্কারের অপমান সহ্য করতে না পেরে অনেকেই পার্টি ছেড়ে অন্যপথ ধরেন । তাঁদের মধ্যে দীপায়ন খীসা, গোর্কি চাকমা, অভিলাষ চাকমা অন্যতম । তাঁরা রাজনৈতিক হাইপোক্রেসির সাথে জড়িয়ে পড়েন আর জেএসএস (সন্তু লারমা) কতৃর্ক ইউপিডিএফ কর্মীদের উপর হত্যাকান্ডের তীব্রতা বাড়াতে সহযোগিতা করেন । তবে অনেক নেতা সাময়িক বরখাস্তের সময় কেটে উঠতে সমর্থ হন, তারপরবর্তীতে তারা আবার ইউপিডিএফের কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন । আদর্শের গুরুত্ব বুঝতে পারেন ।
৯ । @ বিপ্লব রহমান, কিন্তু আমার অবাক লাগলো আপনি যারা ইউপিডিএফ ছেড়েছেন তাঁদেরকে আত্মত্যাগী আর যারা ইউপিডিএফে নিবিরভাবে জড়িত তাঁদেরকে নাবালক বলে অভিহিত করছেন ?
১০। আর জেএসএস (সন্তু লারমা) থেকে চলে যাওয়াদের মঈনের নীতির গন্ধ পান । একটু জটিল হবেন কি ?
@ফরিদ আহমেদ,
একটু বোধহয় বোঝার ভুল, না হয় বোঝানোর ভুল থেকে যাচ্ছে। আত্নত্যাগী নেতা-কর্মী পাহাড়ের আঞ্চলিক দলগুলোতে অবশ্যই রয়েছে। এটি অস্বীকার করা মানে পাহাড়ের ইতিহাসকেই অস্বীকার করা। আবার আদর্শহীন রাজনীতিতে শুধু আত্নত্যাগই শেষ কথা নয়। [দ্র. সিরাজ সিকদার: অন্য আলোয় দেখা]
ফরিদ ভাই, বিনীতভাবে জানাই, যদি, সহি ইউপিডিএফ রঙ্গনামা… লেখাটি পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এতে দেওয়া লিংকগুলোও অনুসরণ করা না হয়, তাহলে জটিল পার্বত্য রাজনীতির অনেক কিছুই হয়তো চট করে বোধগম্য হবে না। এ জন্য আবার টুকরো মন্তব্যই যথেষ্ট নয়।
অবশ্যই। এটি আমার নিজস্ব পর্যবেক্ষন। খুব সাধারণ অর্থে, দলটিতে আত্নগ্যাগী নেতা-কর্মী থাকলেও অস্ত্র নির্ভর এবং ‘পূর্ণস্বায়ত্বশাসন’ নামে এক বায়বীয় আদর্শের দাবিদার ইউপিডিএফ (কথিত এই পূর্ণস্বায়ত্বশাসনের রূপ রেখা দলটি প্রতিষ্ঠার প্রায় দেড় দশকেও হাজির করতে পারেনি, এ সম্পর্কে শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে সাধারণ কর্মী — কারও কোনো ধারণাই নেই, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও ধারালো মেধার উপস্থিতির প্রসঙ্গ না হয় আপাতত বাদই দেওয়া গেলো) — তার সামাগ্রিক কর্মকাণ্ডে বিপ্লবী বোলচালে নাবালকসুলভ পরিচয় দিয়েই চলেছে। একটি ছোট্ট উদাহরণ দেওয়া যাক (আবারো জানাই, এই একটি উদাহরণই এ জন্য যথেষ্ট নয়):
২০০৬ সালের ৫ জানুয়ারি কথিত গণতান্ত্রিক দল — ইউপিডিএফ ঢাকা থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে চার মাসের জন্য জনসংহতি সমিতির প্রতি ’সাধারণ ক্ষমা’ ঘোষণার ঔদ্ধত্ব দেখায়! একই সঙ্গে এতে প্রকাশ যায় বন্দুকবাজ দলটির সীমাহীন উগ্রতা। [লিংক]
এই দলটিকে নাবালক বিপ্লবীদের দল বলার প্রাথমিক ব্যাখ্যা এইটু্কুই। বিস্তারিত ব্যাখ্যা ‘সহি ইউপিডিএফ আমলনামার আপডেট ভার্সনে দেওয়া সম্ভব।
আপনার আগ্রহের জন্য আবারো ধন্যবাদ। (Y)
আত্মত্যাগ শব্দটা ইতিবাচক একটা শব্দ। কোনো সন্ত্রাসী বা আদর্শহীন দলের সাথে আত্মত্যাগী নেতা কথাটা যায় না। সুস্থ কোনো ব্যক্তি বিন লাদেন বা বাংলা ভাইকে আত্মত্যাগী নেতা বলবে না নিশ্চয়ই। ইউপিডিএফকে সন্ত্রাসী বলবেন, আদর্শহীন বলবেন, নাবালক বিপ্লবীদের দল বলবেন, আবার সেই দল থেকে দলত্যাগী নেতাদের আত্মত্যাগী বলবেন, এই বৈপরিত্য খুব চোখে লাগছে।
আপনার লেখাটা পড়েছি, সেই সাথে লিংকগুলোও। শুধু আপনার নয়, এখানে যে যা লিখছেন বা লিংক দিচ্ছে্ন, তার সবই পড়ে নিচ্ছি। বুদ্ধির সীমাবদ্ধতার কারণেই হয়তো সবকিছু বোধগম্য হচ্ছে না। তবে নিশ্চিত থাকুন, আমার অধ্যাবসায়ের অনাগ্রহ অত্যল্প।
পূর্ণ স্বায়ত্বশাসনকে বায়বীয় আদর্শ বলছেন কেন? শুধু রূপরেখা নেই বলে? নাকি এই দাবীতেই আপনার আস্থা নেই বলে? পূর্ণ স্বায়ত্বশাসনতো ইউপিডিএফ নতুন করে চায় নি। এই চাওয়া পাহাড়ের বহু পুরোনো চাওয়া। ১৯৭২ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারী মং রাজা মং প্রু সাইনের নেতৃত্বে একদল পাহাড়ি নেতা শেখ মুজিবের সাথে দেখা করতে আসেন। কিন্তু শেখ মুজিব তাঁদের সাথে দেখা করেন নি। শেখ মুজিবের সাথে দেখা না করতে পেরে হতাশ নেতারা তাঁদের চারদফা দাবী রেখে যান। এই চারদফা দাবীর প্রথম দফাই ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বায়ত্বশাসন। এই দলে ছিলেন মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা, কে কে রায়, বিনীতা রায়, সুবিমল দেওয়ান ও জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা। মানবেন্দ্র লারমার স্বায়ত্বশাসন চাওয়াতে যদি দোষ না থাকে, তবে ইউপিডিএফ কি দোষ করলো?
পাহাড়িরা যদি পার্বত্য এলাকার স্বায়ত্বশাসনের দাবী করে অথবা স্বজাতির প্রেমে বিভোর একজন স্বপ্নবাজ চাকমা তরুণ যদি স্বাধীন জুম্মল্যান্ডের স্বপ্ন দেখে, তবে সেই দাবী বা স্বপ্নকে বায়বীয় বলার অর্থ কী? অদূর ভবিষ্যতে এর বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলে, নাকি তাঁদের স্বপ্ন দেখাটাই ধৃষ্টতা বলে?
আপনাকে আবারো কয়েকটা প্রশ্ন করি। আশা করবো যে সৎ উত্তর দেবেন। পাহাড়ে বন্দুকবাজি কি শুধু ইউপিডিএফ একাই করছে? জনসংহতি সমিতি কি বুদ্ধের অহিংস নীতিতে বিশাসী? তাঁরাও কি অবৈধ অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে ইউপিডিএফ নিধনে নামে নি? যদি এগুলোর উত্তর হ্যাঁ হয়, তবে আপনি কেন শুধুমাত্র ইউপিডিএফকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলছেন? একজন সাংবাদিক হিসাবে আপনার নিরপেক্ষ থাকাটাই কি সঠিক কাজ নয়? আপনি যেভাবে লেখালেখি করছেন, তাতে আপনাকে সাংবাদিক বা মানবাধিকার কর্মীর চেয়েও অনেক বেশি পরিমাণে জনসংহতি সমিতির একনিষ্ঠ কর্মী বলে মনে হচ্ছে।
@ফরিদ আহমেদ,
একদম তাই। যে খুঁটি ধরে ইউপিডিএফ এর বিপ্লবী বোলচাল বা তাবৎ লম্ফঝম্ফ বা জন্মলগ্ন থেকে শান্তিচুক্তির বিরোধীতা বা সন্তুস নিধন জনিত দক্ষযজ্ঞ– সেই খুঁটিটিই তো একেবারেই হাওয়াই, প্রতিষ্ঠার দেড় দশকে ‘ফুল অটোনমির’ ফুলটিই এখনো পরিস্ফুটিত হয়নি!
[লিংক]
অবশ্যই জনসংহতি সমিতিও পাল্টা অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে ইউপিডিএফ নিধনে নেমেছে–এটি দিবালকের মতোই পরিস্কার, নইলে ভাতৃঘাতি সংঘাত নিয়ে এতো বাক-বিতণ্ডাই তো অসার। তাহলে এই অবান্তর প্রশ্ন কেনো? আজাব!! 😕
সম্ভবত আমার লেখার এই অংশটুকু আপনার নজরে আসেনি:
[লিংক]
ফরিদ ভাই, বিনয়ের সঙ্গে আবারো জানাই, আগেই যে আশঙ্কা করেছিলাম, খুব সম্ভবত তাই হতে চলেছে– বিচ্ছিন্ন পাঠ ও পর্যবেক্ষণে জটিল পার্বত্য রাজনীতির অনেক কিছুই না বোঝার সম্ভবনা রয়েছে, সরলীকরণের বিপদটিও পাহাড়ের ভুল রাজনীতির মতোই আত্নঘাতি।
আপনি বলছেন:
আমি বলেছিলাম:
আপনি সম্ভবত, সিরাজ সিকদারের লেখাটির লিংকসহ আমার বক্তব্যের ফোকাস পয়েন্টই ধরতে পারেননি; নয়তো এটি বোঝাতে না পারার ব্যর্থতা আমারই। দেখুন, ইউপিডিএফ কথিত পূর্ণশ্বাসয়ত্ব শাসন এর বাস্তব রূপরেখা না থাকলেও এই কথাটি আদিবাসী পাহাড়ীদের মুক্তির আকাঙ্খা ধারণ করে।
এর ইতিহাসটিও অনেক পুরনো (খানিকটা আপনিই বলেছেন), এ জন্যই সাবেক গেরিলা দল শান্তিবাহিনী প্রায় তিন দশক পাহাড়ে রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র সংগ্রাম করেছে, এমএন লারমাসহ এ লড়াই এ জীবন দিয়েছে আনুমানিক ২৫ হাজার পাহাড়ি-বাঙালি, প্রায় ৬০ হাজার পাহাড়ি এক যুগ শরণার্থীর গ্লানিময় জীবন কাটিয়েছে, পরে শান্তিবাহিনীর পাঁচদফা দাবিনামার সংশোধিত রূপ শান্তিচুক্তি পরিনত হয়েছে, এটিও আঞ্চলিক স্বায়ত্বশাসনের আকাঙ্খাকে ধারণ করেই। …
তো এই পূর্ণস্বায়ত্বশাসনপন্থী ও চুক্তি বিরোধী দলটিতে আত্নত্যাগি নেতা-কর্মী থাকবেই, এটিই তো স্বাভাবিক। বিপ্লবের আকাঙ্খায় ভুল রাজনীতিতে ঝাঁপিয়ে পড়া সর্বহারা পার্টির শত শত কর্মীর কী কোনোই আত্নত্যাগ ছিলো না? স্বয়ং সিরাজ সিকদার নিজেই কী জীবন দিয়ে চরম আত্নগ্যাগের প্রমান দেননি? তাই বলেছি:
মাফ করবেন। সাংবাদিকতা ও ব্লগিংকে গুলিয়ে ফেলছেন কেনো ভাই? সাংবাদিক হিসেবে আমি যথেষ্টই নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল থাকার চেষ্টা আজীবন করে এসেছি, যতদিন এই পেশায় আছি, ততদিন তা-ই থাকার চেষ্টা করবো, ফরিদ ভাই, পার্বত্য সংবাদের ক্ষেত্রে একেকটি অক্ষরের জীবন ঝুঁকির কথা না হয় বাদই দিলাম। কিন্তু তথ্য-সংবাদ আর ব্লগ ভাবনা কী এক? একজন সাংবাদিক কী ভোট দেন না? তার কী কোনো দলের প্রতি কোনো নৈতিক সমর্থন থাকতে নেই? আর আমি তো কোনোভাবেই কোথাও নিজেকে মানাবাধিকার কর্মী বলে দাবি করিনি? আজব!! 😕
আপনি সৎ উত্তর চেয়েছেন, খুব সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গেই বলছি:
সাংবাদিক বিপ্লব রহমানের কলম কখনো কোথাও বর্গা দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। সেনা বাহিনী বা সেটেলার বা সন্তু লারমা বা প্রসিত খীসা বা রূপয়ন দেওয়ান বা এনজিও’র কাছে তো নয়ই। তিনি যা লেখেন, তা তথ্য সাংবাদিকতার পেশাগত দায়িত্ববোধ এবং মানবিক তাড়না থেকেই। তিনি যে দু-একটি লেখায় জেএসএস বা ইউপিডিএফ-এর যে সমালোচনা তুলে করেছেন, তা তাদের রাজনৈতিক অসারত্বের কারণেই, এটি রাজনীতিকেই শুদ্ধ করার জন্য, তা আপনি যে ভাবেই ব্যাখা করুন না কেনো!
আগও বলেছি, আবারো বলছি, যুক্তি-তর্কে ইউপিডিএফকে নাবালক বিপ্লবীদের দল বলার প্রেক্ষপটটি অনেক বিস্তৃত, এর সঙ্গে তত্বগত বিশ্লেষণ ছাড়াও প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা জড়িত, এটি জটিল পার্বত্য রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং এর কোনো সহজ পাঠ নেই।
আপনার আগ্রহের জন্য আবারো ধন্যবাদ। এই থ্রেডে এটিই আমার শেষ মন্তব্য। (Y)
আপনি যেহেতু এই থ্রেডে আর মন্তব্য করবেন না, সে কারণে আমিও আর আলোচনা চালিয়ে যাবার কোনো প্রয়োজনীয়তাবোধ করছি না। মনের মধ্যে দুঃখ থেকে গেল এই ভেবে যে, অনেক কিছুই বলার ছিল, অনেক কিছুই জানার ছিল, সেগুলো আর হলো না। 🙁
এটা আমারই ভুল হয়েছে। দুঃখ প্রকাশ করছি অনাকাঙ্ক্ষিত এই ভুলের জন্য। আপনি যেভাবে পাহাড়ের মানবাধিকার নিয়ে লেখালেখি করেন, সে কারণেই এরকম একটা ভাবমূর্তি আমার মনের মধ্যে তৈরি হয়েছিল বলেই ভুলটা ঘটেছে। প্রচলিত পেশাদার বা অপেশাদার মানবাধিকার কর্মী বলতে যা বোঝায়, সেরকম কিছু আপনাকে আমি বোঝাতে চাই নি।
@ফরিদ আহমেদ, বিপ্লব রহমান লিখেছেন;
অমিত হিলকে ধন্যবাদ যে সে বিপ্লব রহমানকে প্রভাবিত করতে পেরেছেন ।
আশারাখি বিপ্লব রহমান একজন পাহাড় পর্যবেক্ষক হিসেবে সমস্যা নিরসনের জন্য নিজের অবস্থান এবং যুক্তিযুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে পার্বত্য সমস্যা নিরসনের জন্য আন্তরিক মনোভাব পোষণ করবেন ।
@ফরিদ আহমেদ, ধন্যবাদ নীতিমালা লিংকটি দেয়ার জন্য । পড়ে নিছি ।
অমিত হিল,
লেখাটি থেকে পাহাড়ি সমস্যার আরেকটি নতুন দিক জানতে পারলাম। ভাল লেগেছে। তবে কিছু মনে না করলে কিছু প্রশ্ন করি।
স্বনামে প্রগতিশীল জুম্মপ্রেমীকদের মধ্যে বিপ্লব রহমান, নোমান চৌধুরির মতো লেখক এবং সাংবাদিকরা ও রীতিমতো পক্ষপাতিত্ব করে কাঁদা ছুঁড়াছুঁড়িতে লিপ্ত হয়ে নিজেদেরকে প্রগতিশীল বলে দাবী করেন।
আপনি কিন্তু বিপ্লব রহমানের বা নোমান চৌধুরী কোথায় কিভাবে কাঁদা ছুঁড়াছুঁড়িতে লিপ্ত তা বলেনি বা রেফারেন্সও দেন নি।
অন্যদিকে যারা পাহাড়ীদের সান্নিধ্য থেকে পাহাড়ীদের নিয়ে কিছু লেখালেখি করেন প্লাস নির্দিষ্ট দলকে সাপোর্ট দিয়ে নিজেরকে জুম্মপ্রেমীক বলে ঘুরে বেড়ান তারাইতো আরো বেশি ভয়ংকর পার্বত্য চট্রগ্রামের “ভ্রাতৃঘাতকে” উস্কে দেওয়ার জন্য কারণ স্বপক্ষ দলের সব খারাপ কার্যকলাপকে ডেকে রেখে প্রতিপক্ষ দলের বিরুদ্ধে নানারকম লেখালেখিতে ব্যস্ত হয়ে যান।
এ লাইনটিও বিপ্লব রহমানের সাথেই সংশ্লিষ্ট। এখানে তিনি কিভাবে কোন লেখায় ভ্রাতৃ-ঘাতকে উস্কে দিলেন তার কোন তথ্য দেননি।
আপনারা যারা দীর্ঘদিন সমস্যাটি নিয়ে জড়িত তারা হয়তো একে অপরকে ভাল জানেন। তবে বিপ্লব রহমানের লেখাগুলোতে কাঁদা ছুঁড়াছুঁড়ি বা ভ্রাতৃ-ঘাত উস্কে দেয়ার মত কোন কিছু এখনও পাইনি। যদিও তার সব লেখা হয়তো এখনও পড়িনি। সত্য কথা কি আদিবাসী ব্লগ গুলোতে নিজেদের কাঁদা ছুঁড়াছুঁড়ি লেখায় বেশী। সে তুলনায় বিপ্লব রহমানের লেখায় মানবিক আবেদন বেশী থাকে।
আশা করি মুক্তমনায় নিয়মিত লিখবেন যাতে পাহাড়ি সমস্যাটি আরো জানতে পারি।
@হেলাল ভাইয়া, এই মন্তব্যটি একটু দয়া করে পড়ুন । আশাকরি বিপ্লব রহমান দাদার সাথে আর সমস্যা হবে না । সাংবাদিক এবং লেখক বিপ্লব রহমানের সমীপে । আমার মূল প্রশ্নটি এবং বি্প্লব দাদার সুন্দর উত্তরটি আমার ফেইসবুক নোটে লিপিবদ্ধ আছে । ফেইসবুক একাউন্টের যে কেউ দেখতে পারবেন ।
শ্রমসাধ্য একটি লেখার জন্যে ধন্যবাদ জানাই। পাহাড়ের রাজনীতির একটি সুন্দর চিত্র ফুটে উঠেছে। অনেক কিছুই জানলাম। আপনার আবেদন সকলের কাছে পৌঁছাক এই কামনা করি। (Y)
@স্বাধীন দাদা, অবশ্যই অনেক ব্যস্ততার মধ্যে ও কষ্ট করে হলেও শ্রমদিতে হয় অভাগী মানুষদের কথা তুলে ধরার জন্য । সঙ্গে থাকার জন্য অশেষ ধন্যবাদ এবং শুভকামনা । (F)
দারুণ একটা লেখা। পাহাড়ের রাজনীতির অনেক অজানা চিত্র উঠে এসেছে। অভিনন্দন রইলো।
@ফরিদ আহমেদ, ভাইয়া, আপনাকে ও ধন্যবাদ । অভিনন্দন সাদরে গ্রহণ করা হলো । (F)
আরো অনেক কিছু জানার আছে পাহাড়ী মানুষদের একরাশ সুখের জন্য । সঙ্গে থাকার জন্য অশেষ ধন্যবাদ পুণরায় এবং বারবার ।
আমি আশা করি পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক দল গুলোর নেতাদের মনে শুভ বুদ্ধির উদয় হবে, ভ্রাতৃঘাত বন্ধ হবে,
@অরূপ,
এই কামনা করি । ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যর জন্য ।