টাকা ধার
(১)
কাঁচুমাচু করে বড় সাহেবের রুমে ঢোকে পিওন দুলাল মিয়া। ঢুকেই লম্বা করে একটা সালাম দেয়। ‘স্লামালেকুম স্যার।‘
লম্বা ডেস্কের উপরে ঝুঁকে পড়ে একটা ফাইল দেখছিলেন আমজাদ আলী সাহেব। মাথা না তুলেই সালামের জবাব দেন তিনি। ‘ওয়ালাইকুম সালাম’।
বড় স্যারকে তার দিকে তাকাতে না দেখে ডেস্ক পরিষ্কার করার ন্যাকড়াটা হাতে তুলে নেয় দুলাল মিয়া। তারপর অযথাই ধুলোহীন টেবিলটাকে পরিষ্কার করতে থাকে। সকালবেলাতে একবার পরিষ্কার করে গেছে আমজাদ সাহেবের টেবিলটা সে। বড় স্যারের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য অকারণেই খুশখুশ করে কেশে উঠে। কাশির আওয়াজেই হয়তো মাথা তুলে তাকায় আমজাদ আলী সাহেব। জিজ্ঞাসু চোখে তাকান দুলাল মিয়ার দিকে।
‘দুলাল, কিছু বলবা?’
বড় স্যারকে তার দিকে তাকাতে দেখেই সামনের দিকে ঝুকে কুঁজো হয়ে যায় দুলাল মিয়া। ন্যাকড়া ধরা হাতটা চলে গিয়েছে শরীরের পিছনে। অন্য হাত দিয়ে খামোখাই মাথা চুলকাতে থাকে সে।
‘স্যার একশ’টা টাকার খুব দরকার ছিল।‘
চশমার ফাঁক দিয়ে স্থির চোখে দুলালের দিকে তাকিয়ে থাকেন আমজাদ সাহেব। কিছু বলেন না।
‘সামনের সপ্তাহে বেতন পেলেই শোধ দিয়ে দেব স্যার। মাসের শেষতো। সে কারণে হাতটা একটু টান, স্যার’। হড়হড় করে বলে উঠে দুলাল মিয়া।
‘মাসের শেষতো আমারও। হাত টানাটানি আমারও চলছে। ছেলেটা আমেরিকায় পড়ে। ওর পিছনে জন্য মাসে কত টাকা পাঠাতে হয় জানো?‘ গম্ভীর স্বরে বলেন আমজাদ সাহেব।
‘স্যার, ছোট ছেলেটার অসুখ করছে। তিনদিন ধরে জ্বর। ওরে ডাক্তার দেখানো লাগবো। আরো অনেকের কাছেই গেছি। কেউই দেয় নাই। সবারই নাকি টানাটানি চলতেছে। আপনি স্যার মা-বাপ। আপনি না দিলে যে ছেলেটারে ডাক্তার দেখাতে পারবো না’।
‘তোমারেতো এর আগেও একবার একশ টাকা দিছিলাম। বলছিলা যে পরের মাসের বেতন পেলেই ফেরত দিবা। সেই টাকা পেতে আমার সময় লাগছে ছয়মাস। এইবারতো মনে হয় ছয়বছর লাগাবা ফেরত দিতে। তাই না?’ রসিকতার সুরে বলেন আমজাদ আলী সাহেব।
‘ভুল হয়ে গেছিলো স্যার। আপনার পায়ে পড়ি। মাফ করে দেন। এমন ভুল আর হবে না। বেতন পাওয়ার সাথে সাথে আপনার টাকাটা ফেরত দিয়ে দেবো। আল্লাহর কসম, স্যার।‘
‘আল্লাহর কসমতো আগেরবারও কাটছিলা। কিন্তু…………।‘
‘শুধু আল্লাহর কসম না স্যার। আমার অসুস্থ ছেলেটারও নামে কসম কাটছি। এক তারিখে সত্যি সত্যি ফেরত দিয়ে দেবো।‘
প্রবল অনিচ্ছা সত্ত্বেও দুলাল মিয়ার করুণ চেহারা দেখে আমজাদ আলীর মনে ক্ষীণ একটু দয়া জাগ্রত হয়। তিনি মানিব্যাগ একশ টাকার একটা মলিন নোট বের করেন।
‘ছেলের নামে কসম কাটছো। মনে থাকে যেন।‘ ইঁদুরের লেজের মত করে ধরে টাকাটা দুলালের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন।
টাকাটা ভাজ করে সযত্নে পকেটে পুরে দুলাল মিয়া। তারপর ধরা গলায় বলে,
‘মনে থাকবে, স্যার।‘
(২)
ম্যানেজারের রুমের বাইরে একটা কাঠের চেয়ারে বসে রয়েছে মোহসিন। তাদের ছোট্ট এই মফস্বল শহরের চৌরাস্তার একমাত্র হার্ডওয়ার দোকানের মালিক সে। অবশ্য একা মালিক নয়। তার আবাল্যবন্ধু শওকতও তার সাথে এই ব্যবসার শরীক রয়েছে। কিছুদিন ধরেই ব্যবসার অবস্থা বেশি ভাল না। পুঁজির টানাটানি চলছে। তার বা শওকত কারোর পক্ষেই ব্যবসাতে আর টাকা ঢালার মত অবস্থা নেই। ইসলামি ব্যাংকের ম্যানেজার সাহেব সন্ধ্যায় তাদের সাথে পাড়ার ক্লাবে মাঝে মাঝে ক্যারম খেলতে আসেন। একদিন তিনিই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য ব্যাংকের যে লোন প্রোগ্রাম আছে সেখান থেকে লোন নিতে। সেই ভরসাতেই ব্যাংকে এসেছে সে। কিন্তু আসার পরেই এক জুনিয়র অফিসার এখানে বসিয়ে রেখেছে ম্যানেজার স্যার ব্যস্ত বলে।
টানা দেড় ঘন্টা ধরে বসে রয়েছে সে। জানে না যে ইচ্ছা করেই তাকে বাইরে বসিয়ে রেখেছে ম্যানেজার সাহেব। নয়া দিগন্তের সর্বশেষ পাতাতা পড়া শেষ হতে বেল বাজিয়ে পিওনকে ডাকেন ম্যানেজার সাহেব। মোহসিনকে ভিতরে পাঠাতে বলেন।
সালাম দিয়ে ম্যানেজারের রুমে ঢোকে মোহসিন।
সামনে রাখা খোলা ফাইল থেকে চোখ তুলে পালটা সালাম দেয় ম্যানেজার সাহেব। তারপর ঠান্ডাস্বরে বলেন।
‘বসুন।‘
ম্যানেজারের শীতল আচরণে কিছুটা ভড়কে যায় মোহসিন। তাড়াহুড়ো করে একটা চেয়ার টেনে বসতে গিয়ে প্রায় উল্টেই ফেলেছিল সে। ম্যানেজার স্যার সবসময় তুমি তুমি করে বলেন। এখন কি কারণে আপনি করে বলছেন বুঝতে পারছে না সে।
মোহসিন বসতে আনুষ্ঠানিক স্বরে তিনি বলেন, ‘আপনার জন্য কী করতে পারি?’
‘একটা লোনের জন্য এসেছিলাম স্যার।‘
‘কিসের লোন? ফ্রিজ নাকি টিভির জন্য?’
‘না স্যার ওগুলো নয়। বিজিনেস লোনের জন্য এসেছিলাম।‘
‘কিসের ব্যবসা করেন আপনি?’
‘একটা হার্ডওয়ারের দোকান আছে শহরের চৌরাস্তায়। ওর জন্যই লোন চাচ্ছি, স্যার।‘
‘বেশ বেশ। তা কত টাকা চাচ্ছেন?’
‘পাঁচ হাজার টাকা, স্যার।‘
‘পাঁআআআচ হাজার? আচ্ছা, ঠিক আছে, পাবেন হয়তো। কিন্তু ব্যবসায়ের মালিকানা প্রমাণ করতে হবে। ট্যাক্সের কাগজপত্র লাগবে। আর বেচা-বিক্রির সব রিসিট দাখিল করতে হবে দরখাস্তের সাথে। কোনো দেনা পাওনা থাকলে সেটাও ডিক্লেয়ার করতে হবে।‘
‘আল্লাহর রহমতে কোনো দেনা নেই স্যার। বিক্রির সব রিসিটও দাখিল করতে পারবো। ইনকাম ট্যাক্স নিয়মিতই দেই।‘
‘গুড গুড। ব্যবসাতেতো আপনার একজন পার্টনার আছে। তাই না?’
মোহসিনকে মাথা নাড়তে দেখে বলেন, ‘তাকেও সই করতে হবে দলিলের কাগজপত্রে।‘
‘ঠিক আছে।‘
‘আপনার স্ত্রীকেও সই করতে হবে।‘
‘আচ্ছা, করবে।‘
‘আপনার মাকেও সই করতে হবে।‘
‘মাকেও করতে হবে? বুড়ো মানুষ স্যার।‘ প্রতিবাদ করার চেষ্টা করে মোহসিন।
‘হ্যা, তাকেও করতে হবে। নইলে লোন পাবেন না।‘ শীতল গলায় বলেন ম্যানেজার সাহেব।
‘ঠিক আছে, করবে স্যার, মা-ও সই করবে।‘ তাড়াতাড়ি বলে উঠে মোহসিন। টাকাটা খুবই প্রয়োজন তার।
‘আর, আরেকটা কথা’। চশমার ফাঁক দিয়ে কঠিন চোখে মোহসিনের দিকে তাকান ম্যানেজার সাহেব। ‘আপনাকে কখনো মসজিদে দেখি না। এখন থেকে যেন নিয়মিত দেখতে পাই। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া সব মুসলমানদের জন্য ফরজ। আপনার বন্ধুকেও বলবেন কথাটা।‘
(৩)
গেলমান এফ রহমানকে তার চেম্বারে ঢুকতে দেখে চেয়ার ছেড়ে দ্রুতগতিতে দরজার কাছে চলে আসেন সোনালি ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট। করমর্দনের জন্য হাত বাড়িয়ে দেন তিনি। মুখে আকর্ণবিস্তৃত হাসি।
‘গুড আফটারনুন স্যার। আপনার জন্যই অপেক্ষায় ছিলাম আমি। জেনারেল ম্যানেজার সাহেব আমাকে বলেছেন যে আপনি আজকে আসবেন।‘
প্রেসিডেন্টের বাড়িয়ে ধরা হাতটা নিজের মুঠোর মধ্যে নেন গেলমান রহমান। মিহি কণ্ঠে বলেন ‘কেমন আছেন প্রেসিডেন্ট সাহেব? কেমন চলছে সব?’
‘আপনাদের দোয়ায় সবকিছুই ভাল চলছে স্যার।‘
গেলমান রহমানকে ভিতরে নিয়ে আসেন তিনি।
‘স্যার আমার চেয়ারটাতে বসেন। এই চেয়ারটা বড় আর আরামদায়ক।‘
‘আরে না না, আমি এখানেই ঠিক আছি।‘ প্রেসিডেন্টের টেবিলের সামনের দিকের একটা চেয়ারে বসতে বসতে উদারস্বরে বলেন।
‘কী খাবেন স্যার? ঠাণ্ডা না গরম?’ টেবিলের উপরে রাখা ইন্টারকমের বোতামের উপর হাত রেখে ব্জিজ্ঞাসা করেন।
‘কিছু খাবো না প্রেসিডেন্ট সাহেব। আজকে সময় নেই। আমি এসেছি শুধু ওই পঞ্চাশ কোটি টাকার লোনের বিষয়টা ফায়সালা করতে।‘
‘আপনি যে দয়া করে এসেছেন সে জন্য কৃতজ্ঞ আমরা।‘ গদগদ ভাবে বলেন প্রেসিডেন্ট সাহেব।
‘মাত্র পঞ্চাশ কোটিতেই কি আপনার হবে স্যার? আপনি যদি একশ কোটি নিতেন তবে আমরা আরো খুশি হতাম।‘
‘নাহ, আপাতত পঞ্চাশ কোটিতেই হয়ে যাবে। পরে প্রয়োজন হলে না হয় আবার আসবো আপনাদের কাছে।’
‘নিশ্চয়ই, নিশ্চয়ই আসবেন, স্যার। আপনাদের খেদমতের জন্যইতো আমরা আছি।‘
‘কোনো সিকিউরিটি বা গ্যারান্টি জাতীয় কিছু কি দিতে হবে নাকি?’
‘কী যে বলেন স্যার? আপনার চেয়ে বড় সিকিউরিটি আর কি আছে এই দেশে? কিছুই লাগবে না আপনার জন্য।‘
‘কোথায় কোথায় সই করতে হবে বলেন, করে দিয়ে যাই।‘ অমায়িকভাবে বলেন গেলমান রহমান।
‘কোথাও সই করা লাগবে না স্যার আপনাকে। আমার অফিসের লোকেরাই ওগুলো দেখাশোনা করবে।‘
‘থ্যাংক ইউ ভেরি মাচ প্রেসিডেন্ট সাহেব। ইউ আর রিয়েলি এক্সট্রিমলি কাইন্ড। এখন তাহলে আমি উঠি। এদিকে এসেছি যখন জোহরের নামাজটা বায়তুল মোকাররম মসজিদেই পড়ে যাই।‘ গেলমান এফ রহমান তাঁর সাদা দাঁড়িতে হাত বুলোতে বুলোতে বলেন।
বিনাক্লেশে মাত্র দশ মিনিটের মধ্যেই পঞ্চাশ কোটি টাকার লেনদেন হয়ে যায়।
_______________________________________________
(স্টিফেন লিককের ছোটগল্প হাউ টু বরো মানি-র ছায়া অবলম্বনে রচিত)
ইসলামী ব্যাঙ্কতো তাহলে দেখা যাচ্ছে অর্থনীতি ভুলে রসায়নের মার্কভনিকভ রুলে চলাফেরা শুরু করেছে ‘he who has more will be given more’? সুন্দর গল্প। আকাশ মালিকের মতোই বলবো একটু সরল হয়ে গিয়েছে, তবে ভালো।
@আল্লাচালাইনা,
শেষের টাকাটা অবশ্য ইসলামি ব্যাংক থেকে যায় নি, গিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সোনালি ব্যাংক থেকে। তবে কথা হচ্ছে যে, মার্কভনিকভের নিয়মে সব ব্যাংকই ঘোরাফিরা করে। ইসলামি ব্যাংক নামেই শুধু ইসলামি, কাজকারবার সব অন্য ব্যাংকের মতই। সুদের বদলে লভ্যাংশ লিখলেইতো আর সুদ হালাল হয়ে যায় না। সুদ সুদই থাকে।
গল্পটা সরল হিসাবেই লেখা হয়েছে। এটি মূলত একটি কৌতুক গল্প (বন্যার সঙ্গে ফাজলেমি করি নি, সত্যি সত্যিই এটি হিউমারাস গল্প)। কিন্তু আমাদের সমাজবাস্তবতার কারণে কেঊ কেঊ এটিকে সিরিয়াস গল্প হিসাবে ভেবে নিয়েছেন। 🙂
ভাইয়া, আপনি আমারে জানি কি একখান গপ্পের লোভ দেখাইছিলেন। ঐডা কই? গপ্প ভালো ওইছে। কিন্তুক নাইফ রানা বেশী মজারু! আপনার গপ্প দেখলেই এখন ঐরকম আশা জাগে মনে। প্রতিবাদই যখন করবেন, মুক্তমনা কাঁপায়ে করেন না।বেরসিকদের রসের যোগানদার তো বেশী নাই। 😀
@নীল রোদ্দুর,
মুক্তমনার পুরুষগুলাই শুধু লুলপুরুষ না, নারীগুলাও দেখি একেকটা লুলললনা। :-Y
@ফরিদ আহমেদ, লুলললনা ছাড়া বাকি ললনাদের দিকে যে লুলপুরুষেরা নাক কুঁচকে তাকায়, সে কি আমি জানিনে। :-Y
আমার দিকে নাঁক কুঁচঁকেঁ তাঁকাঁনো চলবে না। তাইলে :guli:
@নীল রোদ্দুর,
লুলললনাদের দিকে নাঁক কুঁচকেঁ তাঁকাঁনোর সাহস নরকূলের কোনো নিপাট ভদ্রলোকের নেই। নাক কুঁচকাবে কী, তারাতো নেকাবের আড়ালে নাকমুখ ঢেকে নতমস্তকে লুলললনাদের নেকনজর থেকে নিজেদের বাঁচাতেই বেশি ব্যস্ত।
লেখার থেকে সমালোচনা সুন্দর।
@ভাস্কর,
কোন সমালোচনার কথা বলছেন?
@ফরিদ আহমেদ,
বেশীর ভাগই। তবে স্নিগ্ধার মন্তব্য এবং অভিজিৎ – এর বক্রোক্তি সমান মজাদার, ভাববারও।
@ভাস্কর,
আপনার সমালোচনা আরো সুন্দর। এক্কেরে খাসা।
এটা তো গল্প না একেবারে বাস্তব, আর এটা যে বাস্তব তা তো চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া হল।
যে সমস্যার কথা বলা হল তার সাথে পুঁজিবাদের সরাসরি সম্পর্ক আছে, আর এ সমস্যার আদৌ কোনো সমাধান আছে কিনা অন্তত বাংলাদেশের মত দেশে তাও আমাকে ভাবিয়েছে- কিন্তু ভাবা ছাড়া আর কি কিছু আমরা করতে পারি? আর পারলে সেটা কি হতে পারে?
@সৈকত চৌধুরী,
পুঁজিবাদ বড় পাজি জিনিসরে ভাই। কিন্তু এর কোনো মরণ নেই। অমর্তলোক থেকে অমরত্বের অঙ্গীকার আদায় করে নিয়েছে সে।
@সৈকত চৌধুরী, @ফরিদ আহমেদ,
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে লুটেরা পুঁজিবাদের বাস্তবোচিত কাহিনি। ফরিদের অন্যান্য গল্পের চেয়ে অনেক বেশি সিরিয়াস আর রিয়ালিস্টিক এই গল্পটা। অচিরেই ফরিদের একটা গল্প সঙ্কলন বের হবে এই আশা রাখছি।
@ইরতিশাদ,
শুধু আশা করলে হবে না, জাপটে ধরতে হবে। আসুন সবাই মিলে চাপ প্রয়োগ করি।
আর ফরিদ ভাইকে “জাজা” না দিয়ে পারছি না। নিচে দেখলাম তিনি নতুন একটা শব্দের আবির্ভাব ঘটিয়েছেন যা যুগের জন্য অপরিহার্য ছিল 🙂 ।
@সৈকত চৌধুরী,
আমাকে জাপটে ধরতে হবে না, চাপও দিতে হবে না। ছোটগল্পের পাণ্ডুলিপি রেডি করেই বসে আছি, কিন্তু প্রকাশক নাই। বিখ্যাত না হওয়ার এই এক জ্বালা। 🙁 কাজেই, চাপটাপ কিছু দিতে হলে প্রকাশকদেরই দিতে হবে।
পড়লাম, কিন্তু বলার কিছু নেই।
অনেক দিন গান নিয়ে লেখা দেন না। সেদিন আপনার গান নিয়ে লেখাগুলো বের করে গানগুলো শুনলাম আবার। আহ, মনটাই ভাল হয়ে যায়। নুতন কিছু লেখা অথবা গান ছাড়ুন আপনার গানের ঝোলা থেকে।
@স্বাধীন,
আমি যত লেখা লিখেছি তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আনন্দ পেয়েছি গানের লেখাগুলো লিখে। ইচ্ছে আছে আরো কিছু লেখার, কিন্তু সাহস পাই না মুক্তমনার সিরিয়াস পাঠকদের কথা ভেবে।
আপনার জন্যে গান দিলাম একটা। জানি না আগে শুনেছেন কি না। আমার খুব প্রিয় একজন মানুষের প্রিয় গান এটি। কাজেই, আমারও অসম্ভব প্রিয় এই গান।
@ফরিদ আহমেদ,
আমিও আপনার গানের লেখাগুলো পড়ে সবচেয়ে বেশী আনন্দ পেয়েছি। গান নিয়ে আরো কিছু লিখবেন এই আশা রাখছি।
@ব্রাইট স্মাইল্,
অবশ্যই লিখবো। নাচার জন্য তৈরি-ই, শুধু ঢাকের বাড়ির অপেক্ষায় ছিলাম। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
এইটা কোন কথা হলো? মুক্তমনার পাঠক/লেখকেরা সিরিয়াস হতে পারে, কিন্তু তারাও তো রক্তে মাংসের মানুষ, রোবট নয়। গান সব সময়ই আনন্দ দেয়। ব্লগেই প্রচুর সময় ব্যয় হয়, তাই ফাঁকে ফাঁকে গান হলে খারাপ হয় না। গানটি আগে শুনেছি, কিন্তু খুব বেশি নয়। আরো কয়েকবার না হয় শুনলাম, ক্ষতি নেই তাতে। অনেক ধন্যবাদ গানটির জন্য।
“টাকা ধার” এর Trio প্রেক্ষিত খুবই চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
খুব ভাল লাগলো। বাস্তবতা এটাই।
উপমাটা দারুন!
@গোলাপ,
আপনার দেখার চোখ আছে। সঠিক জায়গাতেই লক্ষ্যভেদ করেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফরিদের লেখা মানেই ব্যতিক্রম প্রেক্ষাপট। টাকা ধার এর তিনটি প্লট পড়লাম। আরও আছে নিশ্চয়ই?
স্নিগ্ধা তো হাজার দুয়েক ডলার ধার চেয়ে আরেকটা প্লট এর যোগান দিয়েই দিল।আগের নেমেসিস গল্পের মত এবারও গেলমান এফ রহমান নামের সৃষ্টি পড়ে তো ফরিদের সৃজনশীলতার পরিমাপ করার চেষ্টা ছেড়ে দিলাম।
লেখা অব্যাহত থাকুক।
@গীতা দাস,
ধন্যবাদ দিদি। আরো প্লটতো অবশ্যই আছে। এই যে স্নিগ্ধাকে মাস দুয়েক আগে যে দুই হাজার ডলার ধার দিলাম, কিন্তু এখনও ফেরত পেলাম না, সেটা নিয়েও একটা কিছু লেখা যায় নিশ্চয়ই।
@ফরিদ ভাই, এসব কি সিরিয়াস গল্প লিখতে শুরু করলেন? এরকম গল্প পড়লে মানুষের মাথা খারাপ হয়ে যায়, উলটো হয়ে ঝুলতে ঝুলতে ওপারে চলে যেতে চায়। নাইফ রানা সিরিজটা কই, ওইটার দ্বিতীয় পর্ব ছাড়ুন তাড়াতাড়ি……
@বন্যা আহমেদ,
আরে এটাতো হিউমারাস গল্প, সিরিয়াস পাইলা কই? মুক্তমনার ভারি ভারি লেখার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে লেখা এটি।
:lotpot:। গেলমান এফ রহমান কি বেহেস্তে যাবেন 😉 ?
@রৌরব, গেলমান বেহেস্তে গেলে আপনার কী লাভ?
@বন্যা আহমেদ,
তা বটে, আমি তো সেখানে নাই :-(। তবেও শুনেও সুখ, এই আর কি।
@রৌরব, হুম, বুঝলাম, আঙ্গুর ফল মিষ্টি :-/ ।
@বন্যা আহমেদ,
খালি রৌরবের একারই লাভ না। আমাদেরও লাভ। রৌরবেতো শুধু রৌরবই থাকবে না, আমরাও থাকবো। ওই ব্যাটা দোজখে এলে স্বর্গসম দোজখটাই যে দোজখ হয়ে যাবে।
@ফরিদ আহমেদ,
সবাই তো প্রশংসা, তা’রিফ করলেন আমি একজন না করলে অসুবিধে আছে? নীচে ব্র্যাকেটে যদি না লিখতেন (স্টিফেন লিককের ছোটগল্প হাউ টু বরো মানি-র ছায়া অবলম্বনে রচিত) তাহলে কিছু বলতাম। ইসলামি বেংকের ম্যানেজার হলো বলে একটু হায়া-শরম নাই, লোন ফর্মে মায়ের, বউয়ের সিগন্যাচার চায়?
নো শাম্পেইন, নো ব্রান্ডি, নো হেয়ারলেস লেগ? না, না এটা ফরিদিয় গল্প হলো না। আর তাড়াহুড়া করে লেখার স্পষ্ট ছাপ রয়েই গেছে। ধরিয়ে দেবোনা, পরে নিজে ধরা খাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে।
@আকাশ মালিক,
বলে ফেলতে পারেন। যদিও প্রশংসা শুনতে খুবই আনন্দ লাগে, তবে নিন্দার কথাবার্তাও শোনা প্রয়োজন। এগুলো চাটনির হিসেবে খারাপ না।
লোকজন অভিযোগ করা শুরু করেছে যে আমি নাকি খুব বেশি মশলাযুক্ত গল্প লেখা শুরু করেছি। সেই অভিযোগ কাটানোর জন্যেই এখন থেকে এই ধরনের এসলামি হালাল গল্প লিখবো বলে ঠিক করেছি। 🙂
আর আপনি না আগেরবার বললেন যে লোমহীন পা এখন আর আপনাকে টানে না, বয়স হয়ে গেছে। 😀
অভিজ্ঞ চোখ আপনার। ঠিকই ধরেছেন। একটানে লেখা এটি। সাধারণত কয়েকবার না দেখে আমি কোনো লেখাই পোস্ট করি না। কিন্তু এটার ক্ষেত্রে সেই ধৈর্য্য ধরে রাখতে পারি নি। 😛
ফরিদ ভাই, একজন সহ অ-বিবর্তনবাদী এবং তুশ্চু সমাজ অ-বিজ্ঞানী হিসেবে বলি – মাঝে মাঝে গল্প টল্প লিখে আমাদের বাঁচান! আমাদের বলতে ঐ যে ঐ আমাদের বোঝাচ্ছি আর কি (আসলে গৌরবে বহুবচন, মনে হয় আমি একলাই 🙁 )- ঐ যে, যারা ধরুন গিয়ে MEME বলতে Mildly Eccentric Majorly Expendable লোকজনের কথা ভেবে ফ্যালে, কিংবা হয়তো হ্যাঁচ্চোর ভাইরাস আর বিশ্বাসের ভাইরাস গুলিয়ে ফেলে হতভম্ব হয়ে বসে থাকে, অথবা কোস্টারিকান বাদুড়ও রক্ত চোষে আবার মশাও রক্ত চোষে, তাহলে বিবর্তনের ধারায় বাদুড় কেন পিনপিন করতে পারে না বা মশা কেন উলটো হয়ে ঝুলতে পারে না এই গভীর বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধিৎসায় হাবুডুবু খায় – ঐ আমাদের কথা বলছিলাম আর কি!
আর আপনার গল্পে যে সামাজিক চিত্র না কী যেন কী একটা তুলে ধরতে চেয়েছেন, সেটা কিন্তু এক বিশিষ্ট বিবর্তনবাদী ইতোমধ্যেই রেসিপ্রোক্যাল অ্যাল্ট্রুইজমের প্রসঙ্গে সুন্দর করে আমাদের বলে দিয়েছেন। গতমাসে আসলে বড়সাহেবই পিওনের কাছ থেকে (গল্পে ভুল আছে) সাড়ে বারো টাকা ধার করেছিলেন বলেই এই মাসে তিনি পিওনকে একশটাকা ধার দিলেন। নইলে মোটেই দিতেন নাকো!
[লেখাটা যা মারকাটারি হয়েচে না দাদা!! মন্তব্যে আর কী বলবো, একতোড়া গোলাপ মেইল করেই পাঠাতুম, কিন্তু হঠাৎ করে খুব অর্থসংকটে পড়ায় … হাজার দুয়েক ডলার ধার দেয়া কি নিতান্তই অসম্ভব? একটু দেখুনই না? :deadrose: ]
@স্নিগ্ধা, :laugh: :laugh:
@রৌরব,
হুমম …… ইমোগুলা যদিও অট্টহাসির, কিন্তু একজন বিজ্ঞানলাভিং ইয়ে হিসাবে কি আসলে মিষ্টি করে বিদ্রূপহাসিই দিলেন নাকি ভাবতেসি …… হুমম …… :-/
[এক মন্তব্যে দেখলাম আপনি নাচ শিখছেন! মাশাল্লাহ, মাশাল্লাহ! তা, উঠোন টুঠোন সোজা আছে তো এখনও? 😀 ]
@স্নিগ্ধা,
আমার হাসি নির্র্মল 🙂 🙂 । কিন্তু আপনি যে বিজ্ঞানকে তীর্যক কেঁচকি মারলেন, ভাইবেন না সেটা লক্ষ্য করি নাই:
:guli:
তা আছে, কিন্তু মাজায় কিরকম বক্রতা অনুভব করছি 🙁
@রৌরব,
আসলে হয়েছে কি – মিম এর বাংলা যে মধ্যবয়সী ইমম্যাচিউরড মহিলা -ও হতে পারে শুনে একটু বিপর্যস্ত আছেন কেউ কেউ। না হলে উপরে ‘বাদুরও রক্ত খায়, মশাও রক্ত খায় – তাহলে বাদুড় কেন মশার মতো পিনপিন করতে পারে না’ ধরনের মন্তব্য শুনে রবিঠাকুরেরও দাঁড়ি আছে, রাম ছাগলেরও… তাহলে রবি ঠাকুর কেনো … সেধরনের ‘যুক্তির’ কথা মনে পড়ে যাচ্ছে না? 🙂
ঘোর কলিকাল, বুঝলেন… তবে কলিকালের শুরু আজ থেকে নয়, যেদিন থেকে ‘সোশাল’ ব্যাপারটা ‘সায়েন্স’ হয়ে গিয়ে ‘সোশাল সায়েন্স’, মানে বাংলায় যাকে বলে সমাজ বিজ্ঞান হয়ে গেল – অনেকটা সুকুমার রায়ের ‘বকচ্ছপ মূর্তি‘র মতো – সেদিন থেকেই কিন্তু বিজ্ঞানের পতনের শুরু। তীর্যক কেঁচকি থেকে শুরু করে দন্ত বিকশিত ভেচকি – সবই ওই ক্রমধারার ফল। 🙂
@স্নিগ্ধা,
এ কী? ওপারে চলে গেলি কখন? কাল রাতেও তো ঠিকই ছিলি…
@বন্যা আহমেদ,
শোন, এপার ওপার কোন পারাপারেই আমাকে কেউ দেখতে পারে না রে …… আমি তাই কোত্থাও যাই না …… (আচ্ছা, হাঁ করে হাপুস নয়নে কান্না না, বেদনাবিধূর দুটি চোখ বাহিয়া টুসটুস করিয়া মৃদুমন্দ ছন্দে অশ্রু গড়াইয়া পড়িতেছে – এরকম কোন ইমো নাই? থাকলে এখানে কল্পনা করে নে।)
@স্নিগ্ধা,
আপনাকে না এর আগেও দুই হাজার ডলার ধার দিলাম? সেটাইতো ফেরত দেন নি এখনও। তার আগেই আবার টাকা চাইছেন। আপনাকে নিয়েতো পারা গেল না। না, না, হবে না। ভদ্র মানুষের মত আগে ওটা ফেরত দিন। তারপরে দেখা যাবে এই টাকাটা ধার দেওয়া যাবে কি না।
[চশমার ফাঁক দিয়ে চোখ সরু করে, মুখ কুঁচকে গম্ভীর গলায় কথাগুলো বলছি]
বাংগালীর নিত্য জীবনের চালচিত্র কত সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
পড়ে ভাল লাগল।
@সেন্টু টিকাদার,
ধন্যবাদ আপনাকে, পড়া এবং মন্তব্য করার জন্যে।
বাস্তবতা এটাই। কিন্তু কিছু কি করার আছে? তেলা মাথায় তেল দেয় সবাই। এটাই মনে হয় প্রকৃতির নিয়ম।
@রুশদি,
হুম! বিবর্তনের নিয়ম!! স্বার্থপর জিনের কাজ!!!