বন্যা আপাকে আমার আগের লেখায় মন্তব্যে লিখেছিলাম যে আমার জীবন এখন বিবর্তনময় হয়ে গিয়েছে। আমার চারপাশে আমি এখন শুধু বিবর্তনকেই দেখতে পাই। বিবর্তনের আলোকে নিজের অনেক কর্মের ব্যাখ্যা পাই, নিজের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থাও ঠিক করি। এর জন্য বন্যা আপার “বিবর্তনের পথ ধরে” বইয়ের অবদান অনেক। আজ অফিসিয়ালি কৃতজ্ঞতা জানালাম। বিবর্তনের উপর প্রাথমিক জ্ঞানের জন্য এই বইটির তুলনা হয় না। তবে আমার মূল আগ্রহ হচ্ছে রাজনৈতিক দর্শনে। প্রাথমিক জ্ঞানটুকু পাবার পর আমি এখন মূলত পড়ি বিবর্তনের আলোকে মানুষ বা সমাজ, বা রাষ্ট্রের চরিত্র বোঝার বিষয়গুলো নিয়ে। আজকের লেখাটি আমার সেই বিবর্তনময় জীবন নিয়ে কিছু আবজাব।
আমি দর্শনকে দু’ভাগে ভাগ করবোঃ বিবর্তন পূর্ব দর্শন এবং বিবর্তন পরবর্তী দর্শন। আজ বিজ্ঞানের অগ্রগতীর ফলে দর্শন এবং বিজ্ঞান এখন প্রায় সমার্থক শব্দ হয়ে গিয়েছে। বিজ্ঞানের সাথে সাংঘর্ষিক এখন কোন দর্শন সম্ভব নয়। তাই জীব বিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, ণৃ-বিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান, রাষ্ট্র বিজ্ঞান, অর্থনীতি, ইতিহাস সহ সকল ক্ষেত্রেই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির উপস্থিতি লক্ষনীয়। তাই এখন একজন দার্শনিক দর্শন নিয়ে কাজ করেন আবার বিবর্তনের মত বিজ্ঞান নিয়েও কাজ করেন। তাই ডকিন্স, হকিংস এর মত বিজ্ঞানীরা হয়ে উঠেন একই সাথে দার্শনিক আবার ডেনেটের মত দার্শনিকেরা হয়ে উঠেন বিবর্তনীয় বিজ্ঞানী।
আমি যখন ধর্ম সম্পর্কে লেখাকে নিরুৎসাহিত করি তখন সেটা ধর্মকে নিয়ে গবেষণাধর্মী লেখার কথা বুঝাইনি। ধর্মকে শুধু মাত্র কোরান বা মুহাম্মদের চরিত্রকে খন্ডনের মাঝে সীমাবদ্ধ না রেখে দর্শনের আলোকে, ইতিহাসের আলোকে, নৃবিজ্ঞানের আলোকে, বিবর্তনের আলোকেও খন্ডন করার কথা বলি। এই ক্ষেত্রে ডেনেট এর ব্রেকিং দ্যা স্পেল বা ডকিন্সের সেলফিশ জিন বইগুলোর কথা বলতে পারি। ডেনেট তার এই বইয়ে দেখিয়েছেন কিভাবে আজকের প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের শুরু আমাদের লোকজ ধর্মগুলো হতে। তিনি ধর্মকে একটি লোকজ ধারা হিসেবে দেখিয়েছেন যেমনতর আমাদের রয়েছে লোকজ সঙ্গীত, লোকজ সংস্কৃতি বা লোকজ ভাষা। লোকজ সঙ্গীত যেমন বিবর্তিত হয়ে আজ প্রাতিষ্ঠানিক রক, ব্যান্ড, আধুনিক কিংবা জ্যাজ সঙ্গীতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তেমনি লোকজ ধর্মগুলো বিবর্তিত হয়ে আজকের প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আপনি হয়তো রক পছন্দ করেন না, শুধু মেলোডি নির্ভর পছন্দ করেন, তেমনি আরেকজন হয়তো এখনো শুধু লোকজ সঙ্গীতই পছন্দ করেন, কিন্তু তাই বলে নিশ্চয়ই আরেকজনের পছন্দকে পাগল বলে বাতিল করে দেননা।
বিশ্বাস বা ধারণা বা কোন আইডিয়া নামক বস্তুটি আমাদের মস্তিষ্কের মাঝে বিবর্তনের পথে কোন একসময়ে এসেছে। যে কোন বিশ্বাস, বা সঙ্গীত বা চিত্রকলা বা সংস্কৃতি এগুলো আমাদের মস্তিষ্কে একধরনের ভাল লাগার অনুভূতি প্রদান করে। আবার অনেক ক্ষেত্রে সমাজকে সংগঠিত করতে সাহায্য করে, যার ফলে গ্রুপ সিলেকশনে টিকে থাকতে ফিটনেস বাড়ায়। সে কারণে এই সমস্ত বিষয়গুলো আমাদের মস্তিষ্কে বংশপরম্পরায় টিকে থেকে গিয়েছে। এর মধ্যে যেগুলো আবার সমাজের জন্য ক্ষতিকর বলে চিহ্নিত হবে সেগুলো আবার বিববর্তনের সুত্র মতেই ধীরে ধীরে বংশপরম্পায় বাদ হয়ে যাবে। ধর্ম বিশ্বাসকে আমি সেভাবেই দেখি। এক সময় সেটা সমাজকে সংগঠিত করেছে, কিন্তু আজ সেটাই এখন ক্ষতির কারন হয়ে দাড়াচ্ছে। আমার বাবা/মা যেভাবে ধর্ম পালন করতো, আমি সেভাবে করি না, আর আমার সন্তানরা যে আরো করবে না সেটা বলাই বাহুল্য। তিন/চার হাজার বছরের পুরোন বিশ্বাস চলে যেতে আমাদেরকে প্রায় সেরকম সময় অপেক্ষা করতে হবে। বিবর্তন খুব ধীর গতির যা সহজে আমাদের চোখে পড়ে না। কিন্তু খুব ভাল করে লক্ষ্য করলে পরিবর্তন কিন্তু চোখে পড়বে। টোটাল পরিবর্তনের জন্য আমাদের সময় দিতে হবে। সেটা আমি বা আপনি দেখে যেতে পারবো না।
ডেনেটের একটি বক্তব্য আমার বেশ ভাল লেগেছে তা হল ধারণা বা আইডিয়া কিভাবে একটি মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে। মানুষই একমাত্র প্রাণী যারা কোন একটি ধারণার জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করতে পারে। আমরা গণতন্ত্রের জন্য প্রাণ দিতে পারি, জাতীয়তাবাদ, সাম্যবাদের জন্য প্রাণ দিতে পারি আবার ধর্মের জন্যেও শহীদ হতে পারি। এ সবই করি কারণ, আমাদের মস্তিষ্কের ধারণা নামক বস্তুটির জন্য। ডকিন্স এটিকেই বলেছেন সেলফিশনেস অফ মিম, অনেকটা সেলফিশনেস অফ জিনের মত। জিন যেমন নিজের বংশবৃদ্ধির জন্য তার হোষ্টকে মরে যেতে উদ্বুদ্ধ করতে সক্ষম তেমনি মিমও সেটা করতে পারে। একজন মা যেমন তার সন্তানকে বাঁচানোর জন্য নিজের জীবন দিতে পারে তেমনি একজন মানুষ তার বিশ্বাসকে রক্ষার জন্য জীবন দিতে পারে। এই ধারনা বা বিশ্বাস জিনিসটিকে ডেনেট পরজীবী জীবের সাথে তুলনা করেছেন। Lancet liver fluke এর মত পরজীবী যেমন একটি পিঁপড়েকে নিজের স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে আত্মহননে বাধ্য করে তেমনি আমাদের বিশ্বাস একজন মানুষকে বাধ্য করে আত্মহননের মত কাজে। যে কোন মানুষকে আঘাত দেওয়ার আগে তাই কেন মানুষের মাঝে এমন বিশ্বাস নামক বস্তুটির উৎপত্তি হয় সেটা বোঝা জরুরী। তখন আপনি রোগটিকে নিরাময় করতে পারবেন সহজে।
মজার ব্যাপার হল মানুষের মস্তিষ্কে এই ধারণাগুলোর প্রবেশ বা প্রতিস্থাপন করানো কিন্তু খুব সহজ একটি কাজ যেটা আমরা সব সময় করে আসি। ছোটবেলায় বাবা/মার শেখানো নানান বুলিগুলো দিয়ে শুরু হয় ধারণার প্রতিস্থাপন। ধর্মের ধারণাও সবাই পরিবারের কাছ থেকেই পাই প্রথমে। তারপর বন্ধু, আত্মীয় স্বজন, সমাজ সবর্ত্রের মাধ্যমে এই ধারণা আরো পাকাপোক্ত হয়। এর পর থেকে কখন যে বিশ্বাস/ধারণাই চালিকা শক্তি হয়ে যায় সেটা আর টের পাই না। যার ফলে বিদেশে এসে হালাল/হারাম খুঁজি। ধারণা প্রতিস্থাপন নিয়ে সম্প্রতি একটি ছবি হয়েছে, ডিকাপ্রিওর, নাম Inception. দেখতে পারেন। আমার চমৎকার লেগেছে। ছবিটির মাঝে একটি ক্ষুদ্র ধারণা কিভাবে অন্যের মস্তিষ্কে প্রতিস্থাপন করা যায় এবং সেটি কিভাবে একজনের দৃষ্টিভঙ্গীকে বদলে দিতে পারে সেটা তুলে ধরা হয়েছে।
মানুষের মনের বা মস্তিষ্কের বিবর্তনের কথা যদি চিন্তা করি তাহলে দেখবো যে মানুষই এই ধর্মগুলোকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে আবার তারাই আজ ধর্মগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করা শুরু করেছে। তাই প্রয়োজন নিছক সমালোচনা নয়, প্রয়োজন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গবেষণা। ধর্মকে নিয়ে যত গবেষণা হবে, নৃবিজ্ঞানের আলোকে, ইতিহাসের আলোকে, বিবর্তিনের আলোকে ততই মানুষ ধর্মের বিবর্তন সম্পর্কে আরো বেশি করে জানতে পারবে এবং নিজেই পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে পারবে। ডেনেট তার বইয়ে ধর্ম নিয়ে এই গবেষণার উপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন প্রয়োজন হলে ধার্মিক/বিশ্বাসী গবেষকদের দিয়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ধর্ম নিয়ে গবেষণা করতে। হয় তারা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গবেষণার দ্বারা ধর্মকে ব্যাখ্যা করুক, প্রতিষ্ঠিত করুক নয়তো তারা স্বীকার করুক তাঁদের ভুল।
আমরা যারা গবেষক নই তারা কি করতে পারি? তারা ডেনেটের এই বইটি কিংবা ডকিন্স এর সেলফিশ জিন বইয়ের মত বইগুলোকে অনুবাদ করে মানুষের কাছে তুলে ধরতে পারি। ধর্ম নিয়ে আরেকটি গবেষনা মুলক বইয়ের নাম এখানে দিতে পারি। বইটির নামঃ Where God and science meet : How Brain and Evolutionary Studies Alter Our Understanding of Religion Edited by Patrick McNamara. এর তিনটি খন্ড রয়েছে। প্রথম খন্ডে আপনি পাবেন Evolution, Genes, and the Religious Brain, দ্বিতীয় খন্ডে পাবেনঃ The Neurology of Religious Experience এবং তৃতীয় খন্ডে পাবেনঃ The Psychology of Religious Experience। পুরো ৯০০ পৃষ্ঠার এই বইয়ে বিবর্তন এবং মনোবিজ্ঞানের আলোকে ধর্মকে নিয়ে গবেষণালব্ধ অনেক কিছুই পাওয়া যাবে যা দিয়ে নিজের যুক্তিগুলোকে শাণিত করতে পারবেন। বইটি কারো লাগলে এখানে ইমেইল ঠিকানা দিলে, আমি পাঠিয়ে দিতে পারবো। শর্ত হল একটি অধ্যায় হলেও পড়ে সারমর্ম পোষ্ট করতে হবে।
বিবর্তন একটি শক্তিশালী শাখা বিজ্ঞানের, এবং এটি আজ শুধু জীববিজ্ঞানেই সীমাবদ্ধ নয়। মানুষ বিবর্তনের বিভিন্ন চিন্তাধারাগুলো এরই মধ্যে বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখাগুলোতে প্রয়োগ করছে। বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান আজ চিকিৎসা বিজ্ঞানে একটি প্রতিষ্ঠিত শাখা। তেমনি বিবর্তনের দৃষ্টি দিয়ে মানুষের গোষ্ঠিবদ্ধ আচরনকে বোঝার চেষ্টা চলছে যার ফলশ্রুতিতে এখন বিবর্তনীয় সমাজবিজ্ঞান, বিবর্তনীয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বা বিবর্তনীয় অর্থনীতির মত বিষয়গুলো দেখতে পাই। বলাই বাহুল্য এই বিষয়গুলো সদ্য যাত্রা করেছে এবং এই বিষয়গুলো পরিপূর্ণতা পেতে আরো কয়েক দশক অপেক্ষা করতে হবে, কিন্তু সেটা যে হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। আমরা বাংলা ভাষাভাষী যারা রয়েছি তারা এই সম্পর্কের বইগুলো পড়ে সেগুলো সম্পর্কে বেশি বেশি করে লিখতে পারি, যেন তরুন গবেষকরা এই সব বিষয় সম্পর্কে আগ্রহী হয়। তবেই কিন্তু একটি মুক্তবুদ্ধির সমাজ পাবো।
পরিশেষে ধর্মের উপর লেখাগুলো নিয়ে বিবর্তন আর্কাইভের মত একটি আর্কাইভ খোলার প্রয়োজনীয়তার কথা আবারো বলে যাচ্ছি। আর লেখাটি বিক্ষিপ্ত, এলোমেলো, তাই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি আগেই।
বিবর্তন বলতে এতদিন মানুষ বানর তিমি মাছ এদের কথাই জানতাম। বিবর্তনীয় মনোবিদ্যার ভূমিকার যে এত ব্যাপক তা ধারনা করতে পারিনি। অভিজিতের শেষ লেখাটা দেখে ব্যাপারটার গুরুত্ব বুঝতে পেরেছি। ধর্ম সংক্রান্ত সমস্যা, নারীর অধিকার, আরো নানান রকমের সামাজিক সমস্যা এ জাতীয় সব সমস্যা বুঝতে হলে আসলে বিবর্তনীয় মনোবিদ্যা আয়ত্ব করা অতি জরূরী।
স্বাধীনের কাছে এলোমেলো চিন্তা মনে হচ্ছে, যদিও তিনি যে বুঝতে পারছেন চিন্তাগুলি এলোমেলো হতে পারে এটাই মনে হয় বেশীরভাগ মানুষ বোঝেন না। এই এলোমেলো চিন্তাগুলি এক সুত্রে বাধার কাজ করতে পারে বিবর্তনীয় মনোবিদ্যা।
ধর্ম নিয়ে নানান জনের সাথে বিতর্কে করতে গিয়ে এটা ধরতে পেরেছি। বেশীরভাগ লোকে আসলে জানেন যে ধর্মগুলির প্রয়োযনীয়তা আজ আর সেভাবে নেই। কিন্তু গোছানো চিন্তা শক্তির অভাবে ব্যাপারটার দর্শনগত দিক ধরতে পারেন না, ফলে রয়ে যায় তাদের বিশ্বাস এবং জীবন যাপনের মাঝে বিরাট ফারাক।
@আদিল মাহমুদ,
মন্তব্যটি নৃপেন্দ্র’দার লেখায় দিয়েছিলাম। আপনার মন্তব্য পড়ে মনে হল আপনার জন্য এই রেফারেন্সটি কার্যকরী হতে পারে তাই আবার দিচ্ছি।
সম্প্রতি এই বইটি পড়েছি, আমার কাছে ভাল লেগেছে বইটির লেখার স্টাইল।
Evolutionary psychology : an introduction / Lance Workman and Will Reader.
বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানের উপর এটি একটি ভাল রেফারেন্স হতে পারে। বইটির সবগুলো অধ্যায় এখানে দিয়ে দিলাম, যদি কারোর আগ্রহ হয়।
1 Introduction to evolutionary psychology
2 Mechanisms of evolutionary change
3 Sexual selection
4 The evolution of human mate choice
5 Cognitive development and the innateness issue
6 Social development
7 The evolutionary psychology of social behaviour – kin relationships and conflict
8 The evolutionary psychology of social behaviour – reciprocity and group behaviour
9 Evolution, thought and cognition
10 The evolution of language
11 The evolution of emotion
12 Evolutionary psychopathology and Darwinian medicine
13 Evolution and individual differences
14 Evolutionary psychology and culture
@স্বাধীন,
অনেক ধন্যবাদ। স্থানীয় লাইব্রেরীতে অর্ডার দিলাম। ২য় সংস্করন পাওয়া গেল। আশা করি এর পর আর বের হয়নি।
আপনার লেখা আসলেই খুব ভাল হয়েছে। আগে বলতে ভুলে গেছি। অন্য ব্লগেও দিলে পারেন।
বিবর্তনবাদ বিরোধীরা একে বিজ্ঞান না বলে ধর্ম বলে প্রচার করতে পছন্দ করেন। এখন মনে হয় যে বিবর্তনবাদ আসলে শুধু বিজ্ঞানই নয়, একটা খুব গুরুত্বপূর্ন দর্শনও এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
@আদিল মাহমুদ,
আমি আসলে সচলায়তন আর মুক্তমনা ছাড়া আর কোথাও যাই না। সময়ের অভাব। একটি লেখা দিলে তাতে পাঠকের মন্তব্যের জবাব না দেওয়াটাকে আমার কাছে খুব গর্হিত কাজ বলে মনে হয়। তাই দু’টোর বেশি ব্লগ চালিয়ে যাওয়া একপ্রকার অসম্ভব কাজ।
বইটি পড়েন, ভাল লাগবে আশা করি। কেমন লাগলো সেই অনুভূতি জানিয়ে একটি লেখা দিয়েন। আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
@স্বাধীন, আপনার লেখার উপরে আমার নাম দেখে চমকে উঠেছিলাম, পড়ে তো অবাকই হলাম। তবে বিবর্তনের পথ ধরে যদি আপনার চিন্তাভাবনাকে এতটাই প্রভাবিত করে থাকে তাহলে বুঝতে হবে আমার আমার এই বইটা লেখা আসলেই সার্থক হয়েছে। মাঝে মাঝেই দেশ থেকে পাঠকদের ইমেইল পাই, তারাও প্রায় একই ধরণের কথাই বলেন। বিজ্ঞানের বই যে উপন্যাসের মত বিক্রি হবে না সেটা তো জানতামই, তবে আমাদের বইগুলোর কাটতি দেখলে মনে হয় আসলে দেশেও এসব বইএরও পাঠক আচ্ছে, লেখকের সংখ্যাই হয়তো কম ।
আমার কাছে বিবর্তন শুধু জীববিজ্ঞানের একটি তত্ত্বই নয়, এটা আসলে একটা বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গী। আপনি বিভিন্ন শাখায় বিবর্তনীয় মতবাদ বা দৃষ্টিভঙ্গীর ব্যবহারের কথা বলেছেন। নিজেদের ইতিহাস জানা, বোঝা, জীবনকে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গী দিয়ে দেখতে শেখার ব্যাপারগুলো তো আছেই আজ বিবর্তনবিদ্যা বিভিন্ন শাখার গবেষণা এবং কাজে ব্যবহৃত হতে শুরু করেছে। বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা, ওষুধ বা কীটনাশক তৈরিতে বিবর্তনের ভূমিকা তো ছিলই, এখনো আছে, আজকাল ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশনের জন্য ব্যবহৃত ফরেন্সিক সাইন্স, দূষিত পানি বা বায়ু শোধণ প্রক্রিয়া, পরিবেশ বা জৈববৈচিত্রকে টিকিয়ে রাখা, এমনকি রোবোটিক্স, বা কম্পিউটার প্রোগ্রামিংএ পর্যন্ত বিবর্তনের ধারণা প্রয়োগ করা হচ্ছে। এ নিয়ে ভবিষ্যতে লেখার ইচ্ছে আছে।
ভালো থাকবেন।
@বন্যা আহমেদ,
শুধুমাত্র এই কারণেই এই লেখাটির অবতাড়না। আমিও প্রত্যশা করি, আপনাদের মত যারা বিবর্তনকে ভাল বুঝেন, তারা শুধুমাত্র জীববিজ্ঞানে পড়ে না থেকে বিবর্তনের অন্যান্য শাখায়ও কিভাবে বিবর্তনকে ব্যবহার করা যায় সেগুলো নিয়েও নিজের পড়াশুনা এবং লেখালেখি চালিয়ে যাবেন।
আমি আমাদের বিশ্ববিদ্যাল্যের লাইব্রেরীতে সার্চ দিয়ে দেখেছি, বিবর্তন এর মাঝেই সমাজ বিজ্ঞানের পাশাপাশি রাজনীতি, অর্থনীতিতেও প্রয়োগ হচ্ছে। Evolutionary politics, Evolutionary economics এর মত বিষয় নিয়ে পাঠ্যপুস্তকও এখন লাইব্রেরীতে পাওয়া যায়। আমার কাছে মনে হয় মানুষের মুক্তি সম্ভব যখন আমরা মানুষের আচার/ব্যবহার/চরিত্রকে আরো ভাল করে জানতে ও বুঝতে পারবো। Evolutionary psychology সেই কাজটিকে এর মধ্যেই শুরু করে দিয়েছে। মানুষের অনেক ব্যবহারই এখন বিবর্তনীয় মনোবিদ্যার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা সম্ভব।
আমাদের সকলের মিলিত এই প্রচেষ্টা চলতে থাকুক মুক্তমনায়, এই কামনা করি। ভাল থাকুন।
@বন্যা আহমেদ,
– এটা আমিও একটা রেফারেন্সে দেখেছি। বিস্তারিত জানার অপেক্ষায় রইলাম।
আমাদের বিজ্ঞানকে ধর্মের বিকল্প হিসেবে তুলে ধরতে হবে । আমাদের সতর্ক হতে হবে যাতে , এক ধর্ম ভুল = অন্য ধর্ম সঠিক , এমন ধারনা মানুষে মনে বদ্ধমূল না হয় । এটা জনসংযোগে একটা বিপর্যয় হিসেবে বিবেচিত কেননা , তাতে করে আর্গুমেন্ট মানুষের বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে।
@সংশপ্তক,
অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
আমার মনে হয় দুই ধরনের লেখারই দরকার আছে। সাধারন মানুষের কাছে ধর্মের ণৃ-তাত্ত্বিক ব্যখ্যার কোন মুল্য নেই। সাধারন মানুষের কাছে পৌছাতে হলে আপনাকে ধর্ম গ্রন্থের সমালোচনা করা লাগবেই। দুটোকে পাশাপাশিই চালাতে হবে।
@সাইফুল ইসলাম,
আমি নিজেও কিন্তু দু’ধরণের লেখার কথা বলেছি, তবে গুরুত্ব দিয়েছি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গবেষণা লব্ধ জ্ঞানের উপর। নিজের লেখা থেকেই উদ্ধৃতি দিচ্ছি
এই খানে কিছুটা দ্বিমত করবো। সাধারণ মানুষের সংজ্ঞা কিভাবে দিব তার উপর নির্ভর করে। আমি যদি অধিকাংশ নিম্ন বিত্তের অথবা উচ্চ বিত্তের কথা বলি তাঁদেরএমনিতেই ধর্মের বিষয়ে আগ্রহ কম। তারা আমার আপনার যুক্তির বাহিরে নিজস্ব বিচার/বুদ্ধি দিয়ে ধর্মের অসারতা ধরে ফেলে। যে কারণে প্র্যাকটেসিং ধার্মিক সেই গ্রুপে কম দেখবেন। তাঁদের কাছে ধর্মের ণৃ-তাত্ত্বিক ব্যাখ্যার যেমন মূল্য নেই তেমনি ধর্মগ্রন্থের সমালোচনারও মূল্য কম হবে বলেই মনে করি।
তাহলে বাকি রইল মধ্যবিত্ত। ধর্ম বলেন, সংস্কৃতি, জাতীয়তাবাদ বলেন সব বিশ্বাসের ধারক/বাহক হচ্ছে মূলত মধ্যবিত্ত সমাজ। এখন এই মধ্যবিত্তের মাঝে নানান ধরণের লোকই আছে। সবাই যে অশিক্ষিত তা নয়। বহু শিক্ষিত মানুষও আছে আবার গড়পরতার মানুষও আছে। এদের কাছে আপনার যুক্তিকে পৌছাতে হলে শুধু ধর্মগ্রন্থের সমালোচনা করে এদের বিশ্বাস ভাঙ্গতে পারবেন বলে মনে হয় না। এদেরকে আধুনিক বিজ্ঞানের সকল যুক্তি দিয়েই বুঝাতে হবে।
হ্যাঁ, অবশ্যই ধর্মগ্রন্থেরর সমালোচনা হবে, তবে শুধু সেটা নিয়েই যুদ্ধ চালানো যাবে না, আপনাকে সাথে বিজ্ঞানের জ্ঞানের সাহায্য নিতে হবে, সেটাই আমার মূল বক্তব্য।
অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
ফরিদ ভাইয়ের সাথে একমত। এলোমেলো নয়, সুগ্রন্থিত লেখা। তবে আরেকটু বড় হলে ভাল হত। পড়তে না পড়তেই শেষ হয়ে গেল মনে হল। অবশ্য ব্লগে খুব বড় লেখা পড়তে অনেকেরই অসুবিধা হয়। সে হিসেবে বোধ হয় ঠিক আছে।
ডেনিয়েল ডেনেটের ল্যান্সেট ফ্লুক পরজীবীর উপমাটা আমারো খুব পছন্দের। আমি এই ব্যাপারটা নিয়ে লিখেছিলাম আমার বিশ্বাসের ভাইরাস নামের প্রবন্ধটিতে। ল্যান্সেট ফ্লুক পিঁপড়ের জন্য কাজ করে এক ধরনের প্রাণঘাতি ভাইরাস হিসবে – যার ফলশ্রুতিতে পিপড়ে বুঝে হোক, না বুঝে তার দ্বারা অযান্তেই চালিত হয়, আর পাথরের গা বেয়ে কেবলই উঠা নামা করে। আমাদের দীর্ঘদিনের জমে থাকা প্রথাগত বিশ্বাসের ‘ভাইরাসগুলোও‘ কি আমাদের সময় সময় এভাবে আমাদের অযান্তেই বিপথে চালিত করে না কি? আমরা আমাদের বিশ্বাস রক্ষার জন্য প্রাণ দেই, বিধর্মীদের হত্যা করি, টুইন টাওয়ারের উপর হামলে পড়ি, সতী নারীদের পুড়িয়ে আত্মতৃপ্তি পাই, বেগানা মেয়েদের পাত্থর মারি ……।
যা হোক, আসলে স্বাধীন ঠিকই বলেছে। কেবল ধর্মের আয়াত বা শ্লোকে আটকে না থেকে আধুনিক জীববিজ্ঞান, বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান এবং নৃবিজ্ঞানের চোখ দিয়ে বিশ্বাসগুলোকে দেখতে হবে। তবেই আসবে পরিপূর্ণ বিশ্লেষণ। মুক্তমনাতেই এই কাজটি শুরু হয়েছে বিভিন্ন লেখকের মাধ্যমে। চলুক এর অগ্রগামীতা। :yes:
@অভিজিৎ,
আপনার লেখাটি পড়লাম। হু, ডেনেটের বিশ্বাসের ভাইরাসের ধারণাটি আর পরজীবীর উপমাটি আমার নিজেরও বেশ পছন্দ হয়েছে বিধায় লিখে ফেললাম। তার উপর সম্প্রতি ইন্সেপশান ছবিটি দেখে আরো মুগ্ধ। দেখেছেন নাকি ছবিটা? না দেখলে দেখে ফেলুন। ছবিটা দেখে আমার মনে হয়েছে ডেনেটের এই ধারণাটির উপর ভিক্তি করেই কাহিনীটা লেখা।
তবে লেখাটি কাউকে উদ্দেশ্য করে নয়, অনেকটা নিজেকেই উদ্দেশ্য করে লেখা। তাই এলোমেলো, আর ছোট। নিজের চলার পথগুলো ঠিক করে দিচ্ছে এই চিন্তাগুলো। কেউ যদি তাতে উপকৃত হয়, সে কারণেই ব্লগে দেওয়া। অন্যথায় মলাট বন্দী হয়ে থাকতো।
@স্বাধীন,
অনেকগুলা মুভি দেখা হয়ে গেছে এর মধ্যে। ইনসেপশন, ডেস্পিকেবল মি, সল্ট …সবই দেখা হয়ে গেছে। এর মধ্যে ইনসেপশন অবশ্য এক কথায় অপূর্ব।
আপনি বলার আগে অবশ্য মনে হয় নাই। এখন আসলেই মিল খুঁজে পাচ্ছি। এতদিন কেবল ম্যাট্রিক্সের সাথেই মিল পাচ্ছিলাম।
@অভিজিৎ,
ম্যাট্রিক্সের সাথে মিল শুধু স্বপ্নের জগতের ব্যাপারটি। কিন্তু মূল ধিম যেটার উপর ভিক্তি করে ছবিটা, যেমন একটি আইডিয়া অন্যের মস্তিষ্কে প্রতিস্থাপন এবং সেটা ভাইরাসের মত হোস্টের উপর প্রভাব বিস্তার, সেটি কিন্তু প্রথম থেকেই আমার ডেনেটের এই ধারণার কথাই মনে করিয়ে দেয়।
দুর্দান্ত!!!
এলোমেলো নয়, একেবারে সুচিন্তিত এবং সুসংবদ্ধ চিন্তাই মনে হলো আমার কাছে। এই রকম লেখাই মুক্তমনার প্রাণ।
এত চমৎকার একটা লেখায় বানান নিয়ে কিছু বলাটাই অশোভন। তবুও দুটো শব্দের ক্ষেত্রে না বলে পারছি না। কেননা, এই শব্দ দুটো অসংখ্যবার এসেছে এই লেখায়। ধারণা এবং গবেষণা। দুটোতেই ন এর বদলে ণ হবে।
@ফরিদ আহমেদ,
আপনি ঝাড়ি দিলেও বেশি দেন আবার প্রশংসা করলেও বেশি করে ফেলেন। বানান দু’টোর জন্য অনেক ধন্যবাদ। ‘ণ-ত্ব’ বিধান নিয়ে ঝামেলাতেই আছি।
আচ্ছা আরো দু’টো বানান নিয়ে একটু জিজ্ঞেস করি। “কারন” কি ঠিক আছে? নাকি “কারণ” হবে? আর “মুলত বা মুল” কি ঠিক আছে নাকি “মূল বা মূলত” হবে?
@স্বাধীন,
হা হা হা। সব পুরুষবাদী লোকেরাই মনে হয় এমনতর। প্রেমেও কড়া, পিটানোতেও চড়া। 😀
ঝামেলার কিছু নেই। শুধু খেয়াল রাখবেন যে বাংলায় শুধুমাত্র তৎসম শব্দ ছাড়া আর কোথাও ণ এর ব্যবহার নেই। আর সাধারণত ঋ, র আর ষ এর পরেই ণ বসে। এ ছাড়াও আরো নিয়ম আছে, সেগুলো বলে ভারাক্রান্ত করতে চাই না। 🙂
কারণ এ যে ণ হবে এটা নিশ্চয়ই এখন বুঝে গিয়েছেন।
মূল বা মূলতই সঠিক। দীর্ঘ ঊ কার হবে। মুল বলে কোন শব্দ বাংলায় নেই।
@ফরিদ আহমেদ,
ধন্যবাদ দিয়ে আর ছোট নাই করি।
আমরা বাঙ্গালী মাত্রেই মনে হয় সব কিছুতে একটু বেশি বেশি আর কি! দেখি এটা নিয়ে বিবর্তন কি বলে :-/ ? এটা আমি অভি’দা অথবা বন্যা’পা উনাদের হাতেই ছেড়ে দেই।
@স্বাধীন,
বাঙ্গালী বানান বাতিল হয়ে গেছে। বাঙ্গালী এখন বাঙালি বানানে লেখাটাই শুদ্ধ।
দা আর পা এর হাতে ছেড়ে দিলে দাপাদাপি-ই হবে, কাজের কাজ কিছু হবে না। 🙂
বরং হুমায়ুন আজাদের ‘বাঙালিঃ একটি রুগ্ন জনগোষ্ঠী?’ প্রবন্ধ থেকে বাঙালির চরিত্র মাধুর্য একটু দেখে নেই আমরা এই সুযোগে। তিনি লিখেছেনঃ
বাঙালি, পৃথিবীর সবচেয়ে অহমিকাপরায়ণ জাতিগুলোর একটি, বাস করে পৃথিবীর এককোণে; ছোটো, জুতোর গুহার মতো, ভূভাগে;- খুবই দরিদ্র, এখন পৃথিবীর দরিদ্রতম। …. প্রতিটি বাঙালি ভোগে অহমিকারোগে, নিজেকে বড়ো ভাবার অচিকিৎস্য ব্যধিতে আক্রান্ত বাঙালি।
জাতি হিশেবে বাঙালি বাচাল ও বাকসর্বস্ব; অপ্রয়োজনেও প্রচুর কথা বলে। বাঙালির স্বভাব উঁচু গলায় কথা বলা; সাধারণত শুরুই করে উচ্চকণ্ঠে, বা ক্রমশ তার গলার আওয়াজ চড়তে থাকে। যদি আলাপের বিষয়টি বিতর্কিত হয়, পক্ষবিপক্ষ থাকে, তাহলে অল্প সময়েই তারা প্রচণ্ড আওয়াজ সৃষ্টি করতে থাকে; এবং অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা যদি দুয়ের বেশি হয়, তিন-চার-পাঁচজন হয়, তাহলে আলোচনা পুরোপুরি পণ্ড হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যে-কোনো আলাপে বাঙালি নিজেই নিজেকে প্রবেশ করিয়ে দেয়, অন্যদের অনুমতির প্রয়োজন বোধ করে না; এমনকি, অনেক সময়, আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে কিছু না জেনেই বাঙালি তীব্র আলোচনায় অংশ নেয়। বাঙালির যুক্তি কণ্ঠের উচ্চতা; যার কণ্ঠ যতো উঁচু, সে নিজেকে ততোটা যুক্তিপরায়ণ ব’লে গণ্য করে; এবং নিজের জয় অবধারিত ব’লে জানে। যুক্তিতে কোনো বাঙালি কখনো পরাজিত হয় নি, হয় না, ভবিষ্যতেও হবে না।
@স্বাধীন,
তানভীর (পোলাডা গেলো কই?) ফরিদ মামু ঠিকি কইছে –
এখনো সময় আছে সঠিক মামু ধরেন। তার একসময় কাহিনী নিয়ে কাহিনি করা থেকেই বুঝে গেছি তানভীর মামুর বাণীটাই আসলে ঠিক, আমাগো ডিকশনারীতে যাই থাকুক।
@অভিজিৎ,
তানভী-র মামুতো জানি আদিল মাহমুদ। :-/ সঠিক মামুইতো ধরছে সে। আদিল মাহমুদ হচ্ছেন মুক্তমনার মামা, চাচা, জ্যাঠা, খালু, তালু, ফুফা, কুফা সব। একের ভিতরে পাঁচ নয়, একেবারে পঞ্চাশ। :laugh:
@ফরিদ আহমেদ,
নিরীহ ব্লগারকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এইরকম পাবলিক ফিগারে পরিনত করার তীব্র নিন্দা জানাই।
আমার জানামতে আদিল শুধু মামা এবং চাচাতেই সীমাবদ্ধ আছে। বৈবাহিক সূত্রের কোন সম্পর্কে সে এখনো যায়নি।
@অভিজিৎ,
ওই মিয়া, তোমার প্রিয় প্রথম আলু খেয়াল কইরা দ্যাখো। হেরাও কাহিনি-ই ল্যাখে, খালি আমি একা না। 🙁
@ফরিদ আহমেদ,
পিছলাইলে হইব না। আমার হাতে এখন প্রমাণ আছে। এই যে লিঙ্ক।
কী চমৎকার মামা-ভাগ্নে সংলাপ!
আর বানানের ব্যাপারে প্রথম আলুরে আর কি কমু। আমার নামের বানানটাও রিভিউতে ভুল লিখছে। ৎ এর জায়গায় ত। আপনের সোর্সগুলা আপনের ভাগ্নের মতোই আনরিলায়েবল!
@অভিজিৎ,
পিছলানোর কী আছে? এই সংলাপ দেখলেইতো বোঝা যাইতাছে যে তানভীরে আমি চিনি না। জিগাইতাছি যে হে কেমনে আমার ভাইগ্না বইলা দাবি করে।
বাংলা একাডেমীর সোর্স দিলাম। মানলা না। আলুরে টানলাম। তাও কও আনরিলায়েবল। যাই কই তাইলে? এখন মোক্ষম অস্ত্র হইতাছে এই মুক্তমনাতেই বন্যা, লাইজু নাহার আর আকাশ মালিকেরা কাহিনি লেখা শুরু করছে। এর চেয়ে বড় সোর্স আর কী আছে কও? 😀
@ফরিদ আহমেদ,
আমার মনে হয় কোন এক রগচটা মডারেটরের ভয়ে লিখতাছে (আমি শিওর গনভোট নেয়া হইলে কিংবা তাদের জিগাইলে আমার কথার যথার্থতা প্রমাণিত হইবেক)। কখন সুলেমানী বান (মানে ব্যান) মাইরা তাড়ায় দেওয়া হয় এই ডরে লিখতেসে … 😀 , ঠিক না মালিক ভাই কি কন?
@ স্বাধীন,
আর এই ধরনের কাছে যারা লিপ্ত থাকে তাদেরকে বলা হয় মুক্তমনা।
আপনি নিজে ‘বিক্ষিপ্ত আর এলোমেলো’ বলতে তো হবে না; ফরিদ ভাই কিন্তু “দুর্দান্ত!!!” বলে সার্টিফাই করেছেন। অতএব আপনার ধারণা বাতিল বলে গণ্য হলো।
লেখা শেষ করার পরে বলছেন- ‘ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি আগেই।’ লেখার আগে বললে ক্ষমা করা যেতো। উঁহু, এখন কোনো ক্ষমা নাই। আরো লেখা চাই।
@মাহফুজ,
কেন ভাই আমার পেছনে লাগলেন :-Y ? আমি তো জানামতে আপনার কোন ক্ষতি করেছি বলে তো মনে পড়ে না। :-/ ।
যা হোক, মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
@স্বাধীন,
ক্ষতি কিম্বা উপকার নিয়ে ছিদ্রান্বেষীরা ভাবে না। এরা “স্বাধীন”ভাবে চোখ তুলে তাকায় কলসির নীচের লুকোনো ছায়াঢাকা ছিদ্রটির প্রতি। এটা তাদের মজ্জাগত স্বভাব।