এক.
আটের দশকে এসএসসি পরীক্ষার পর আমার স্কুলের বন্ধুরা কেউ স্পোকেন ইংলিশ, কেউ বেসিক ইংলিশ, কেউ বা শর্টহ্যান্ড-টাইপরাইটিং বা কম্পিউটার কোর্সে ভর্তি হয়ে গেল। তখন আমেরিকা যাওয়ার খুব ক্রেজ। এবং মাইকেল জ্যাকসন।…
আমি এ সব কিছুর কোনোটাই করিনি। একেবারে সিরিয়াস পরীক্ষার্থীর মতো সকাল বেলাতেই খাতা-কলম গুছিয়ে যেতে শুরু করি শাহবাগের পাবলিক লাইব্রেরিতে। তারপর একেবারে টানা চলতে থাকে গভীর অধ্যায়ন।
সেই সময় আমি খুঁজে পাই আরেক সিরিয়াস পাঠককে। তার নাম জাহিদ হাসান পাপ্পু। সংক্ষেপে– জাহিদ। বয়সে আমার চেয়ে বছর চারেক বড়। আশ্চর্য সুন্দর ঝাঁ চকচকে তরুন। আয়নার মতো জ্বলজ্বলে চোখ। তার মেধার গভীরতা ও ক্ষুরধার যুক্তি আমাকে টানে। খুব দ্রুত আমাদের বন্ধুত্ব হয়। আমি মোহিত হই।
দুনিয়ার তাবৎ বিষয়ে আমাদের কথা হয়। বই পড়ি, আর তর্কে মাতি। তুমুল চেঁচামেচি করে একেকটি বিষয়ে একেবারে হাতাহাতি করার উপক্রম।
দুই.
পাবলিক লাইব্রেরির পর আমরা আরো বইয়ের সন্ধানে হানা দেই বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের লাইব্রেরিতে। গোগ্রাসে গিলতে থাকি বঙ্কিম, বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, শরৎ, মানিক, জীবনানন্দ, বোদলেয়ার, চেখভ, তলস্তয়, দস্তভিস্ক, গোর্কি, কামু, কাফকা, সক্রেটিস, প্লেটো, রুশো, ভলতেয়ার, মার্কস, এঙ্গেলস, লেনিন, মাও, দেরিদা, বেকন, জ্যাক লন্ডন, মম, মার্ক টোয়েন এবং আরো অনেক…
আমার সাবেক নকশালাইট বাবা আজিজ মেহের বলতেন, মানুষের জীবন খুব ছোটো। এ জন্য বই পড়তে হবে বাছাই করে, ভেবেচিন্তে। আর জাহিদ ভাই বলেন অন্যকথা, যা পড়তে ভাল লাগে, তার সবই পড়ে ফেলতে হবে–একেবারে মার্কস থেকে মাসুদ রানা পর্যন্ত।
আমি জাহিদ ভাইয়ের কথাটাই গ্রহণ করি। বাবার পরেই জাহিদ ভাই হয়ে ওঠেন আমার দ্বিতীয় ঈশ্বর। আমি তার সাথে উড়াল দেই।…
তিন.
সেই সময় দেখতাম জাহিদ ভাই খুব সুন্দর কবিতা লিখতেন। পিজি হাসপাতাল (এখন বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল) এলাকা ঘিরে জমে ওঠা লিটল ম্যাগের নানা গ্রুপ তার কাছ থেকে দু-একটা কবিতা চেয়ে নিত। কি যে সুন্দর তার হাতের লেখা! মনে হয়, একেকটি অক্ষর ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখি।
অনেক কবিতাকেই উনি আবার নিজেই সুর দিয়ে গান বাঁধেন। সবই নগর-বাউল ঘরনার গান। গান কম্পোজ হতো সন্ধ্যায়, চারুকলার শুকনো পুকুর পাড়ে, পেশাদার ঢুলির ঢোলের বোলে।
তখন বিখ্যাত সব বাউলদের সঙ্গে দেখি তার অদ্ভুদ সখ্যতা। গ্রামীণ বাউল গানের সন্ধানে আমরা কুষ্টিয়ার ছেঁউরিয়ায় লালন সাঁইয়ের মাজারে, ঘোড়াশালে লেঙটা পীরের ওরশে, মাতাল রাজ্জাকের আসরে, চট্টগ্রামে মাইজভান্ডারী শরীফে, এমনকি হাইকোর্টের মাজারেও ঘুরে বেড়াতে শুরু করি। সেই সময় পরিচয় হয় বাউল সম্রাট মহিম সাঁই, বর্ষিয়ান হিরু সাঁই, অতি গুনি শিল্পী রব বাউল ও মনা পাগলার সঙ্গে। …মাঝে মাঝে সিগারেটে বা এক বিঘৎ কল্কে দিয়ে গাঁজা টানাও চলতো। আশ্চর্য সোনালী সুন্দর সেই সব দিন।…
চার.
কলেজে উঠে আমি জড়িয়ে পড়ি সামরিক জান্তা এরশাদ বিরোধী ছাত্র রাজনীতিতে। জাহিদ ভাইয়ের সঙ্গে আমার যোগাযোগ কমতে থাকে। কলেজ শেষ করে আমি পেশাদার সাংবাদিকতায় ব্যস্ত হই। দিনের পর দিন জাহিদ ভাইয়ের সঙ্গে আমার দেখা হয় না।…
অনেক বছর পর একদিন গভীর বিস্ময় আর বেদনা নিয়ে আমি দেখি, পাবলিক লাইব্রেরির বারান্দায় আমার কবিতার মাস্টার জাহিদ ভাইকে। উনি তখন বদ্ধ উন্মাদ, পুরোপুরি হেরোইন আসক্ত, ভবঘুরে। মাথায় জট পাকানো চুল, পরনে শতছিন্ন নোঙরা পোষাক। দেখলে থুতু দিতে ইচ্ছে করে। …বেঁচে আছেন মানুষের দয়া-দক্ষিণায়, ভিক্ষে করে।
কতোজনে তাকে ফেরাতে চেষ্টা করেছে। শুনেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা তাকে কয়েকবার রিহ্যাবে দিয়েছিল। কিন্তু কোনোটাতেই কোনো কাজ হয়নি। … সে তুলনায় আমি আর কোন ছাড়? সামান্য অক্ষরজীবী মাত্র; নিজের জীবন টেনে টেনে ক্লান্ত, খুব ক্লান্ত।…
পাঁচ.
এখনো পথ চলতে চারুকলার সামনে, ছবি হাটে বা একুশের বই মেলায় মাঝে মাঝে তার সঙ্গে দেখা হয়ে যায়। নেশাহীন জাহিদ ভাই কখনো আমাকে চিনতে পারেন, নেশাড়ে জাহিদ ভাই কখনো তা-ও পারেন না।
এমনি চেনাচেনির এক পর্বে তাকে বলি আমার হিংসার কথা। আমি বলি, জাহিদ ভাই, আপনিই আসলে সফল। কি চমৎকার সব কিছু ছেড়েছুঁড়ে দিয়ে বসে আছেন।…জগতে যা কিছু আছে কিছু নেই তার অনুসঙ্গে।…আর আমরা? আমরা দিনরাত ব্যস্ত ইঁদুর দৌড়ে…অথবা মত্ত তৈলাক্ত বাঁশ বেয়ে উঠে যাওয়ার অবিরাম চেষ্টায়।…
ভয়ংকর মাদকাসক্ত জাহিদ ভাই কী আমার কথা বোঝেন? না কী বোঝেন না? আমি ডাকি, জাহিদ ভাই, জাহিদ ভাই।…উনি ঘুরে তাকান। মৃত মাছের মতো দৃষ্টিশুন্য চোখ। আমার বুকের ভেতর ধ্বক করে ওঠে। আমি একটা সিগারেট জ্বালিয়ে তার হাতে ধরিয়ে দিলে কি যেন ভেবে তিনি অস্পষ্ট ফ্যাসফ্যাসে গলায় গেয়ে ওঠেন একদা এক স্বর্নালী দিনে লেখা তারই গান:
আমি যারে ভালবাসি
তারে আবার বাসি না
তারে ভাল লাগে না, লাগে না, গো…যে মোরগের আজান শুইনা
রোজ সকালে ঘুম ভাঙিলা
তারে আবার না খাইলে
তোমার মগজ বাড়ে নাআমি যারে ভালবাসি গো…
আমার বুকের ভেতর থেকে কী দারুন এক কষ্ট ওপরের দিকে উঠে এসে দলা পাকিয়ে গলায় আটকে যায়। আমি একসঙ্গে হরবর করে অনেক কথা বলতে চাই, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই বলতে পারি না।…
—
পুনশ্চ: কয়েক বছর আগে বাংলা ব্যান্ডের আনুশেহ জাহিদ ভাইয়ের একটা গান গেয়ে খুব জনপ্রিয় করেছেন: তোমার ঘরে বাস করে কারা, তুমি জান না, তোমার ঘরে বসত করে কয় জনা?… [লিংক]
—
ছবি: মুন রাইজ, ভ্যান গখ, অন্তর্জাল।
লেখাটা কিছুদিন পরপর বারবার পড়ি। একটা টান সৃষ্টি হয়েছে বহুদিন আগে লেখাটার প্রতি। জাহিদ হাসান পাপ্পুর এখন কি অবস্থা?
জাহিদ এমন একটা গান এর জান্মদাতা জানতাম না।উনাকে কি আবার সুস্থ করে তোলা যায় না?
@চয়ন ভাই,
জাহিদ ভাইকে অনেকে ফেরানোর চেষ্টা করেছেন, কিন্তু পারেন নি। তিনি কিছুদিন নেশাহীন থাকেন, পরে আবার সেই আগের মতো ভয়ংকর নেশাড়ে।….আমার মনে হয়, যিনি পণ করেছেন, একটু একটু করে আত্নহত্যা করবেন, তাকে আর স্বুস্থ্য জীবনে ফেরাবে কে?…
আপনার পাঠের জন্য ধন্যবাদ। :rose:
গানটি আমার খুব প্রিয় একটি গান। কিন্তু গানের স্রষ্টার কাহিনীটি পড়ে মনটি খারাপ হয়ে গেল। তারপরেও বিপ্লব রহমানকে ধন্যবাদ লেখাটির মাধ্যমে উনার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য। এখানেই আমি ব্লগ মাধ্যমকে এগিয়ে রাখি। সনাতন মিডিয়াতে এই সব মানুষের কথা আসবে না, যদি না কেউ কোন দিন তাঁকে নিয়ে উপন্যাস না লিখেন। কিন্তু ব্লগে খুব সহজেই এই মানুষদের তুলে ধরা যায় পাঠকের কাছে। লেখককে আবারো ধন্যবাদ লেখাটির জন্য।
@স্বাধীন,
আপনার পাঠ প্রতিক্রিয়ার জন্য ধন্যবাদ।
বিনীত অনুরোধ জানাই, মুক্তমনা ব্লগে নিয়মিত লেখার। :yes:
@বিপ্লব রহমান,
বিপ্লব ভাই
আমি মুলত পাঠক। কালে ভদ্রে লিখি। লিখবো তো অবশ্যই। ধন্যবাদ আপনাকে।
@স্বাধীন,
আপনার ওই লেখাটি পাঠের প্রতীক্ষায়… :rose:
ছোটবেলা থেকেই টিএসসি’র ক্যাম্পাসে ঘুরাঘুরি আর বহু ব্যান্ড সঙ্গীতদলের সাথে ওঠাবসার কারণে শিল্পীদের নেশা কবিতা আর গানের পারষ্পরিক সম্পর্কের ‘হৃদ্যতাটা’ কিছুটা হলেও অনুভব করতে পারি। যদিও শিল্পী হলেই নেশাখোর হতে হবে – এটি আমি মানি না। কিন্তু তাদের অনেকেরই নেশার প্রতি আকর্ষণের ভিত্তিটা টের পাই।
যা হোক, মুক্তমনার অন্যতম ব্যতিক্রমী একটি লেখা হিসেবে নিঃসন্দেহে পাঠকেরা একে মনে রাখবে।
তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা গানটা ইউটিউব থেকে —
httpv://www.youtube.com/watch?v=dWYqSisf1RU
@অভিজিৎ দা,
আপনার প্রতিক্রিয়া পেয়ে খুব ভালো লাগলো। চলুক। :yes:
আপডেট: ইউটিউব এ খুঁজে পাওয়া জাহিদ হাসানের সেই গান, যেখান থেকে এই লেখার শিরোনাম:
https://youtu.be/81v8Rij2-pI
—
অ/ট: অভিজিতের মৃত্যু নাই! ✌
জাহিদ ভাই এখন পুরোপুরি সুস্থ। একটা হাউজে চাকরিও করতেছেন
আপডেট: মূল লেখায় জাহিদ হাসানের লেখা ও সুর করা এবং আনুশেহ আন্দালীর গাওয়া ‘তোমার ঘরে বাস করে কারা’ গানটির অডিও সংযোজন করেছি। [লিংক]
@বিপ্লব রহমান,
আনুশেহ নিজেও শুনছি ঐ লাইনে ছিল (গাঞ্জা) 🙂 ।
@আদিল মাহমুদ,
আনুশেহ শিল্পী জীবনে নিজেও হেরোইন আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন। এ নিয়ে কয়েক বছর আগে তিনি দৈনিক প্রথম আলোতে খোলাখুলি কথা বলেছেন। পরে চিকিৎসক ও পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় এবং নিজের ইচ্ছে শক্তির জোরে নেশার অন্ধকার জগৎ থেকে ফিরে আসেন।
আনুশেহ আন্দালীব যা পেরেছেন, জাহিদ হাসান তা পারেননি। :deadrose:
@বিপ্লব রহমান,
হ্যা, তেমনই শুনেছিলাম। ক’বছর আগে তাকে একটা নাটকে দেখেছিলাম। উনি অনেক ভাগ্যবতী।
পরিবারের সাপোর্টটা মনে হয় খুব ভাইটাল।
@আদিল মাহমুদ, :yes:
@বিপ্লব রহমান,
আপনার লেখাটা মাথায় নিয়ে গানটা শুনতে একদম অন্যরকম লাগল। ধন্যবাদ।
@রৌরব,
:rose:
খুবই বিষাদময় লেখা। জীবনের এরকম অপচয়ের কোন মানে হয় না।
যদিও ফরিদ ভাই এর সাথে ১০০% একমত (দায় ভদ্রলোকের নিজেরই, যদিও জানি না নেহায়েত দেখানেপনা থেকেই নাকি ব্যাক্তিগত কোন সংকটের ফলে এই পথে গেছেন) তবুও মাদকের বিরুদ্ধে ঘৃনাও আবার নুতন করে জাগ্রত হল।
প্রথা বিরোধী, এমনকি যার সামান্য শিল্প সাহিত্য এসব কিছু প্রতিভা আছে তাদেরই বোহেমিয়ান জীবন যাপনের প্রতি আকর্ষন অসহ্য ঠেকে। দেখানেপনা ভাব দেখলে আসলেই মনে হয় দেই দুটা থাপ্পড় কষায়। গনিকালয়ে গমন না করলে নাকি সাহিত্য বের হয় না।
রুদ্র মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ থেকে তসলিমা নাসরিস কেউই এই ধারার বাইরে নন। খুবই দূঃখজনক প্রবনতা। ইন্টেলেকচুয়াল হতে হলেই এসব করে বেড়াতে হবে?
@আদিল মাহমুদ,
আপনি হয়তো ঠিকই বলেছেন। আবারও তবে এ বিষয়ে জাহিদ ভাইয়ের অবস্থান ভিন্ন। …
কথা প্রসঙ্গে অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের নেওয়া একটি পুরনো সাক্ষাৎকারের কথা মনে পড়ছে। শিল্পী এসএম সুলতানের গঞ্জিকা আসক্তি নিয়ে তাকে প্রশ্ন করেছিলাম, এটি কেনো? শিল্পের সঙ্গে কী মাদকের কোনো সম্পর্ক আছে? জবাবে উনি বলেছিলেন, সম্ভবত আছে। কারণ নেশা অনেক ধরণের বিভ্রম তৈরি করে। সেখান থেকে শিল্পী-সাহিত্যিকরা সৃষ্টির উপকরণ পেতেও পারেন। … 😕
আবারও আপনাকে ধন্যবাদ।
@বিপ্লব রহমান,
গাঁজা অত শক্ত নেশাও নয়।
@রৌরব, 😕
@বিপ্লব রহমান,
কথা মনে হয় সত্যি। স্যামুয়েল টেইলর কোলরিজের সেরা তিনটা কবিতা হচ্ছে, দ্য রাইম অব এনশেন্ট ম্যারিনার, ক্রিস্টাবেল আর কুবলা খান। এর মধ্যে কুবলা খান হচ্ছে অসমাপ্ত কবিতা।
এক বন্ধুর ফার্ম হাউজে বেড়াতে গিয়েছিলেন কোলরিজ। বন্ধুপত্নী এমনই আদর যত্ন করে রেঁধে বেড়ে খাইয়েছে যে বেচারার পেট খারাপ। ছোট্ট ঘরে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে অবস্থা কাহিল। শেষে বাঁচার জন্যে দুই গ্রাম অপিয়াম গিলে ফেলেছিলেন। আর তাতেই রাতের নেশাময় তন্দ্রায় স্বপ্নে এসে হানা দেয় চেঙ্গিস খানের নাতি কুবলাই খান। সকালে ঘুম থেকে উঠেই নেশার ঘোরে লিখতে বসে যান তিনি। দুই-তিনশো লাইনের কবিতা লেখার ইচ্ছা ছিল তাঁর। কিন্তু পোরলক থেকে দেখা করতে আসা বেরসিক এক লোকের কারণে বাগড়া পড়ে যায় তাতে। নেশা যায় কেটে। ফলে, কবিতাটাও থেকে যায় চিরঅসমাপ্ত।
চিন্তা করে দেখেন, ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম সেরা একটি কবিতা নেশার থেকে জন্ম নিল আর শুধুমাত্র নেশাভঙ্গের কারণে তা সমাপ্ত হতে পারলো না।
ইংরেজদের উচিত ছিল কোলরিজকে দিনের পর দিন গাদা গাদা অপিয়াম সাপ্লাই দিয়ে কোন ফার্মহাউজে অবকাশ জীবন কাটানোর সুযোগ করে দেওয়া।
ইংরেজরা পারেনি, তবে আমরা পারি। আমাদের সব উঠতি কবি, সাহিত্যিক এবং চিত্রশিল্পীদের বিনা পয়সায় বাংলা মদ, গাঁজা, হেরোইন, ফেন্সিডিলের অফুরন্ত সরবরাহ দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে সেরাটা আদায় করে নিতে পারি আমরা। এতে করে দুই দিনেই আমাদের শিল্প-সাহিত্য বিশ্বমানে পৌঁছে যাবে বলেই আমার ধারণা। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
আপনার সাহিত্য প্রতিভা কিন্তু অসাধারন।
এতদিনে মনে হয় রহস্য ভেদ হল 😀 ।
এখন বুঝি কেন মাঝে মাঝে টানা কদিন উধাও হন।
@আদিল মাহমুদ,
হা হা প গে কে ধ… :hahahee:
@আদিল মাহমুদ,
:-X
@ফরিদ আহমেদ,
চুল ছিড়ছেন কেন? মাত্রা বেশি পড়েছে নাকি? 😀
@রৌরব, 😀
@ফরিদ আহমেদ,
দূঃখ বা রাগের কিছুই নাই। আপনাদের থেকেই উদীয়মান তরুন সাহিত্যিকেরা পাবে নব উদ্যোম।
ধন্যবাদ আপনাকে সরল মনে গুমোর ফাঁস করে দেওয়ার জন্য।
@আদিল মাহমুদ,
দলবদ্ধভাবে একজন নিরীহ মানুষের প্রতি আপনাদের ব্যক্তিই আক্রমণকে আমি ধিক্কার জানাই। মুক্তমনার নীতমালার ৩.৪ এ এই ধরনের আচরণকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
দেখা যাক, মডারেটররা এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেন।
আপনাদের দুর্গতি আগাম অনুমান করে আনন্দে উল্লসিত আমি। 😀
@ফরিদ আহমেদ,
:-Y
আমি আক্রমন করলাম কোথায়???
উলটো তো উচ্ছসিত প্রসংশাই করলাম! দ্বি-মতওতো পোষন করিনি,আমিও সম্পূর্ন একমত।
আপনার ব্যাক্তিগত জীবনে আমার কোনই আগ্রহ নেই, যদিও একজন সফল সাহিত্যিকের সফলতার রহস্য ভেদে অবশ্যই আগ্রহ আছে 😀 ।
@আদিল মাহমুদ,
হ 😛
@আদিল মাহমুদ,
সব ইন্টেলেকচুয়াল নয়, দেখা গেছে সাহিত্যে যাঁরা ইন্টেলেকচুয়াল তাদের মধ্যেই এই প্রবনতাটা বেশী। তাঁরা বোধ হ্য় একটু বেশী ইমোশানাল হন, সেটাও একটা কারন হতে পারে।
@ব্রাইট স্মাইল্,
আমার মনে হয় সব ধরনের মধ্যেই এই প্রবনতা কম বেশী কাজ করে। নিজেকে সবার থেকে আলাদা বা উচ্চ দেখানোর উদ্দেশ্য থেকেই মনে হয় শুরু হয়।
হুমায়ুন আজাদ কে এজন্যই আমি অনেক এগিয়ে রাখি। তার ব্যাক্তিগত জীবন আর দশজন মানুষের মতই স্বাভাবিক।
@আদিল মাহমুদ,
বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার মধ্যে দিয়ে গেলে দেখতে পাবেন যে, গাঁজা বা ক্যানাবিস একটা পরিমান পর্যন্ত নিলে মস্তিস্কের উভয় অংশ একসাথে কাজ করে। হয়ত সৃষ্টিশীল কাজে এটা সাহায্য করে।
আমি ব্যাক্তিগত ভাবে মাদক এবং শিল্পের সমন্নয় কখনই সমর্থন করিনা। কিন্তু কিছু মানুষ আছে যারা গাঁজা টানলে সৃষ্টিশীল কাজ ভাল করে। কিন্তু মেজাজ টা খারাপ হয়ে যায় কতিপয় কাপুরুষ কে দেখে, যারা জীবন যুদ্ধে হারার অজুহাত দিয়ে জীবন টা কে নষ্ট করে। তার পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন অস্থিরতা তৈরী তো এরা করেই। সব মিলে জঘন্ন একটা পরিবেশ তৈরী হয়। এটা বন্ধ করা উচিত।
সব কথার শেষ কথা, সব নেশাখোর বুদ্ধিজীবি নয়, কিন্তু অনেক বুদ্ধিজীবি ই নেশাখোর।
@অজ্ঞেয়বাদী,
আপনার চমৎকার প্রতিক্রিয়ার জন্য ধন্যবাদ। :rose:
আমি তো ভেবেছিলাম গানটি লালনের, সঠিক তথ্য পেয়ে একই সাথে বিস্মিত, এবং জাহিত হাসান পাপ্পুর পরিণতিতে বেদনার্ত হচ্ছি।
@রৌরব, 🙁
লেখাটা পড়ে খারাপ লাগল।
আমাদের দেশের তরুনদের পশ্চিম থেকে খারাপটা নেয়াই ফ্যাশন!
এবার দেশে গিয়ে দেখলাম টিনএজ ছেলে মেয়েদের গায়ে টাট্টু।
ইউরোপে বিশেষ বিশেষ গ্রুপের ছেলে মেয়েদের তা থাকে।
ফরাসিরা বিদেশীদের হাজারো অসুবিধা হলেও তাদের সাথে
ইংরেজী বলেনা।
আমাদের আত্মসম্মান বোধের অভাবই বোধের অভাবই বোধ হয়
এসবের কারণ!
@লাইজু নাহার,
আমাদের মুশকিল হল বিদেশীদের থেকে তাদের ভাল জিনিসগুলি শিখি না। শিখি সব উন্নাসিকতার বিষয়গুলি।
বিদেশীদের সময়ানূবর্তিতা, কাজের প্রতি নিষ্ঠা, নৈতিক সততাএসব আমাদের আকর্ষন করে না। করে তারা কিভাবে নানান রকমের ডে পালন করে, টাট্টু মারে, ড্রিংক করে এইসব।
@লাইজু নাহার, @ আদিল মাহমুদ,
পাঠ প্রতিক্রিয়ার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ।
তবে আবারো বলছি, জাহিদ ভাই কখনোই ওই ধরণের কবি বা নেশাড়ে কোনটাই নন। এর পরেও হতাশাগ্রস্থ তরুণ সমাজের সার্বিক অবক্ষয়ের সঙ্গে মাদকাসক্ত জাহিদের যোগসূত্র আছে বৈকি। :yes:
খুবই দুঃখজনক। বাংলাদেশে জাহিদের মতো এমন কতো মেধাবী তরুন মাদকাসক্ত হয়ে আছে কে তার হিসাব রাখে।
@ব্রাইট স্মাইল্,
🙁
বিপ্লব,
জাহিদ এর মত লোকদের জন্য কষ্ট হয়, আমার বার ক্ষোভও হয় যখন বিপ্লব রহমানেরা নিজেদের জাহিদের মত হতে পারেনি বলে আফসোস করে।
গান লিখলে, কবিতা লিখলে, সাহিত্য চর্চা করলে জাহিদ হতে হবে কেন?
জাহিদদেরকে ফিরিয়ে আনতে হবে জীবনের পথে এবং নিজেদেরও সংসারে থেকেও নিজের জন্য আলাদা জগৎ সৃষ্টি করে নিতে হবে।
আমার এ কথাগুলো আমার চেনা ঘোড়াশালের এক কবির কথা মনে পড়ে গেল বলেই লেখা । যে লক্ষণ মোটেই ভাল নয় নামে একটা কবিতার বই ছাপিয়ে জাহিদের মতই হয়ে গিয়েছিল।
@গীতা দাস,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকেই দেখেছি যে, অনেক উঠতি কবি সাহিত্যিকদের মধ্যে মদ, গাঁজা খাওয়াটা এক ধরনের ফ্যাশনের মধ্যেই পড়ে। এটাকে তাঁরা প্রথার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ এবং তাঁদের প্রতিভার বিকাশের অনুকূল বলে মনে করে থাকেন।
গাঁজা খেয়ে টিএসসির করিডোর, লোফারস কর্ণার বা চারুকলার পিছনের কোণায় কালজ্বরে ভোগা কুঁকড়ির মত কুঁকড়িসুকড়ি মেরে না ঝিমুলে কারো কারো মস্তিষ্কে কবিতার শব্দগুলো ঝিলিক মারে না। নীলক্ষেতে গিয়ে হাঁড়ি হাঁড়ি বাংলা মদ না গিললে হড়হড় করে মহত্তম সাহিত্য হাঁকাতে পারে না কেউ কেউ। আর নিষিদ্ধ পল্লিতে নিয়মিত গমন না করলে কারো কারো নিয়মিত কবিতাই প্রসবিত হয় না।
মদ, গাঁজা আর নিষিদ্ধ পল্লি গমনই আমাদের সাহিত্যকে সজীব, সচ্ছল এবং শৌর্যবান করে রেখেছে। না হলে বহু আগেই বাংলা সাহিত্য বাঁজা কোন বালাতে পরিণত হয়ে যেতো। 🙂
জাহিদ হাসান পাপ্পুর জন্য যতখানি দুঃখবোধাক্রান্ত হবার কথা ততখানি হতে পারলাম না বলে দুঃখিত। 🙁
@ফরিদ আহমেদ,
কথাটা ১০০% ঠিক। ওরা যতটা না কবি বা শিল্পী তার চাইতে ভান করে বেশী। আর নিজেদেরকে জাহির করতে মাল খেয়ে চোখ লাল করে বসে থাকে। ভাবে এটা করলেই বিশাল কিছু হয়ে যাবে। বোকার হদ্দ সব। এজন্যেই তো দেশে ভাল কবি সাহিত্যিক বা শিল্পী কোনকিছুই তৈরী হয় না , তৈরী হয় কিছু আতেল।
@ফরিদ আহমেদ, @ ভবঘুরে,
আপনাদের পর্যবেক্ষণ হয়তো ঠিকই আছে। কিন্তু যারাই জাহিদ ভাইকে চিনবেন– তারাই এক বাক্যে স্বীকার করবেন, তিনি কখনোই ওই মাত্রার কবি বা নেশাড়ে কোনোটাই নন। তার ভেতরে ‘লোক দেখানো’ বিষয়টিই নেই। ভয়ংকর রকম নেশাড়ে হলেও তার বিনয় একেবারে বিস্ময়কর!
আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। :yes:
@গীতা দাস,
দীর্ঘশ্বাস!
মন খারাপ করা লেখা।
বাংলার করা গানটা যে জাহিদ ভাইয়ের লেখা তা জানতাম না।
দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া আর কিই বা করার আছে।
@সাইফুল ইসলাম,
পাঠের জন্য ধন্যবাদ।