বিবর্তনতত্ত্ব অনুযায়ী , পৃথিবীতে আজকের যে জীবজগত আমরা প্রত্যক্ষ করি তা একদিনে সৃষ্টি হয়নি বরং কোটি কোটি বছরের বিবর্তনের ফলে সৃষ্টি হয়েছে। উদাহরন স্বরূপ, আজকের আধুনিক মানুষ কয়েক লক্ষ বছর আগে আজকের মানুষের মত ছিল না , ছিল একটু ভিন্ন রকম, লক্ষ লক্ষ বছরের বিবর্তনের পর আজকের মানুষে রূপান্তরিত হয়েছে। বিষয়টা শিক্ষিত মানুষ মাত্রেই কিছু না কিছু জানে, তবে সবাই তা বিশ্বাস করে না। যেমন যারা অতি ধার্মিক প্রকৃতির মানুষ তারা বিজ্ঞান পড়ার সময় এটা জানে, এমন কি বাস্তব প্রমানও চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ করে, কিন্তু বিশ্বাস করে না। তাদের বিশ্বাস, কোন এক সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ বা ঈশ্বর কোন এক সময় আসমান জমিন সৃষ্টি করার পর আদম ও হাওয়া নামক দুজন আদিম মানুষ তৈরী করে তাদেরকে এনে দুনিয়াতে (জমিন) ছেড়ে দেন, তারা অত:পর বংশ বিস্তারের মাধ্যমে আজকের মানব জাতির গোড়া পত্তন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় বড় ডিগ্রীধারী, শিক্ষক, ইঞ্জিনীয়ার, ডাক্তার, বিজ্ঞানী, উকিল, ব্যরিষ্টার, নেতা, পাতিনেতা, চামচা অনেকেই এ আদম-হাওয়া তত্ত্ব বিশ্বাস করে। শিক্ষাগত যোগ্যতা বা জ্ঞানবিদ্যা এ বিশ্বাসে সামান্যতম চিড় ধরাতে পারে না বা পারেনি। সে যাই হোক , আদম হাওয়া তত্ত্ব অনেক সময় সখের প্রত্নতাত্ত্বিক এরিক ফন ডানিকেন নামক এক সুইস ভদ্রলোকের ভিন গ্রহের মানব তত্ত্বের কথা স্মরন করিয়ে দেয়। তার মতে বাইবেলে বর্নিত ইডেন উদ্যান মূলত আমাদের সৌরজগতের বাইরের কোন গ্রহ যেখানে মানুষের চেয়ে অনেক উন্নত কোন জীব বসবাস করে, তারা তাদের মহাশূন্য অভিযানের সময় ঘুরতে ঘুরতে আমাদের সৌরজগতে এসে পড়ে, তারপর তারা আমাদের পৃথিবী নামক গ্রহে বিশাল জীবজগতের সন্ধান পায়, তখন তাদের মাথায় আসে এখানে একটা বুদ্ধিমান জীবগোষ্ঠির পত্তনের। যার ফলশ্রুতিতে, আদম ও হাওয়ার সৃষ্টি ও তাদেরকে পৃথিবীতে প্রেরন। ডানিকেন তার তত্ত্বের প্রমান স্বরূপ বলেন- যে কারনে প্রতিটি আদি ধর্মীয় গ্রন্থে দেখা যায়, মানুষের সাথে দেবতাদের সরাসরি সংযোগ, মেলামেলা, এমন কি বিয়ে শাদি, বাচ্চা কাচ্চা জন্ম ইত্যাদির মত ঘটনা আখছার। যেমন- মহাভারতের পঞ্চ পান্ডবের কেউই তাদের পিতা পান্ডুর সন্তান ছিল না, ছিল দেবতাদের- যুধিষ্টির ধর্মদেবতার, অর্জুন ইন্দ্র দেবতার, ভীম পবন দেবতার, নকুল ও সহদেব অশ্মিনীকুমার দেবতাদ্বয়ের সন্তান। এমন কি কুমারী কুন্তির আর এক সন্তান কর্নের জনক ছিলেন সূর্য দেবতা। তার মতে এটা হলো-ভিন গ্রহবাসীরা তাদের মত গুন সম্পন্ন একটা সভ্যতার পত্তন ঘটানোর জন্য মানুষের সাথে বর্ন সংকর প্রজাতির মানুষ সৃষ্টি করেছে যাদের উত্তরাধিকারী হলাম এখন আমরা। অভিনব তত্ত্ব হিসাবে বিষয়টি গত শতাব্দির ষাট ও সত্তর দশকে বিপুল সাড়া জাগিয়েছিল। বর্তমানে এ ধরনের মতবাদের পক্ষে তেমন কোন সাড়া শব্দ পাওয়া যায় না অথবা বলা যায় এ তত্ত্বের অপমৃত্যু ঘটেছে। তার কারন, বিবর্তনতত্ত্বের বিপুল অগ্রগতি। এক সময় মাটির তলে প্রাপ্ত ফসিল ছিল বিবর্তনতত্ত্ব প্রমানের একমাত্র উপায়, কিন্তু বিগত কয়েক দশকে জেনেটিক্স বা বংশগতি বিদ্যার ব্যপক উন্নতির কারনে, বিবর্তনতত্ত্ব প্রমান করতে আর ফসিলের দরকার তেমন একটা নেই। গবেষণাগারে দুনিয়ার জীবকুলের জেনেটিক কোড বিশ্লেষণের মাধ্যমেই দ্ব্যর্থহীন ভাবেই প্রমান করা যাচ্ছে যে- দুনিয়ার সকল জীবের উত্থান ঘটেছে কোন এক সরল এককোষী জীব থেকে। তার অর্থ বিবর্তনতত্ত্ব মোতাবেক, পৃথিবীতেই সকল জীবের উদ্ভব ঘটেছে আর যা তারা বংশগতি বিদ্যা দ্বারা সন্দেহাতীত ভাবে প্রমান করে দিতে পেরেছেন। অর্থাৎ- বিবর্তনতত্ত্ব ভিনগ্রহের জীবের সংকরায়ন তত্ত্ব বা আদম-হাওয়া তত্ত্ব উভয়কেই ভুল প্রমান করে দিয়েছে সন্দেহাতীত ভাবেই। এখন প্রশ্ন হলো- বংশগতি বিদ্যার অগ্রগতির ফলে যদি ডানিকেনের তত্ত্বের অপমৃত্যু ঘটে, সেই একই কারনে আব্রাহামিক ধর্মসমূহে বর্নিত আদম-হাওয়া তত্ত্বের অপমৃত্যু কেন ঘটবে না ? কেন এর পরেও এক বিপুল সংখ্যক মানুষ আদম-হাওয়া তত্ত্বকে প্রচন্ডভাবে বিশ্বাস করবে? এর কারনটা কি ?

এর কারন খুজতে গেলে দেখা যায়- সমস্যাটা মূলত প্রচারের ব্যর্থতা। বংশগতিবিদ্যা অনুযায়ী আদম-হাওয়া তত্ত্বের যে অপমৃত্যু ঘটেছে এটা বিজ্ঞান জগতের কিছু পন্ডিত ব্যাক্তি ও উৎসাহী কিছু ব্যক্তি ছাড়া আর কেউ এর খবর রাখে না, পক্ষান্তরে আদম-হাওয়া তত্ত্বের খবর অহরহ মানুষ শুনছে- টেলিভিশনে, পত্র-পত্রিকায়, মসজিদে, মাদ্রাসায়, ওয়াজ মাহফিলে, স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় সর্বত্র, সব সময়, বার বার। একটা কথা যদি বার বার মানুষ শোনে মানুষ তো সেটাই বিশ্বাস করে। এটাই তো মানুষের প্রবৃত্তি। আর এ শোনাটা তো মানুষ শুনে আসছে বংশ পরম্পরায়, শত শত বছর ধরে। শুনে আসছে জন্মের পর থেকেই । শুনতে বাধ্য করা হচ্ছে। আর একটা কারন হলো- ছদ্ম বিজ্ঞানী জাতীয় কিছু ব্যক্তির আবির্ভাব। এরা যখন দেখল- বংশগতি বিদ্যার দ্বারা বিবর্তনতত্ত্ব নিশ্চিতভাবে প্রমানিত হয়েই যাচ্ছে তখন তারা, বিশেষ করে মুসলমান ছদ্ম বিজ্ঞানীরা, কোরানের আয়াত ঘাটা শুরু করল, কোন আয়াতকে বিবর্তনতত্ত্ব এর সাথে মেলানো যায়। বলা বাহুল্য, তারা পেয়েও গেল অনেকগুলো আয়াত। যেমন-

তিনি তোমাদের জন্যে পৃথিবীকে শয্যা করেছেন, এবং তাতে চলার পথ করেছেন, আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষন করেছেন এবং তা দ্বারা আমি বিভিন্ন উদ্ভিদ উৎপন্ন করেছি। সূরা: ত্বা-হা, ২০: ৫৩

তিনি ভূমন্ডলকে বিস্তৃত করেছেন ও তাতে পাহাড় পর্বত, নদ নদী স্থাপন করেছেন এবং প্রত্যেক ফলের মধ্যে দুপ্রকার দু দু প্রকার সৃষ্টি করে রেখেছেন। তিনি দিনকে রাত দ্বারা আবৃত করেন। এতে তোমাদের জন্য নিদর্শন রয়েছে, যারা চিন্তা করে। সূরা: রাদ, ১৩:০৩

আল্লাহ প্রত্যেক চলন্ত জীবকে পানির দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। তাদের কতক বুকে ভর দিয়ে চলে, কতক দুই পায়ে ভর দিয়ে চলে, আর কতক চার পায়ে ভর দিয়ে চলে। আল্লাহ যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব কিছু করতে সক্ষম। সূরা: আন নুর, ২৪: ৪৫
তিনিই জমীন হতে তোমাদেরকে পয়দা করেছেন, তন্মধ্যে তোমাদেরকে বসতি দান করেছেন—। সূরা: হুদ, ১১: ৬১

আমি তোমাদেরকে মৃত্তিকা থেকে সৃষ্টি করেছি।——। সূরা: হজ্জ্ব, ২২: ০৫

তিনিই তোমাদেরকে মাটির দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। —–। সূরা: আল আন-আম, ০৬:০২

যিনি তার প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে সুন্দর করেছেন এবং কাদা মাটির থেকে মানব সৃষ্টি করেছেন। সূরা: সেজদাহ্, ৩২: ০৭

আমিই তাদেরকে সৃষ্টি করেছি এটেল মাটি থেকে। সূরা: আস্ সাফ্ফাত, ৩৭:১১

তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন পোড়া মাটির ন্যায় শুষ্ক মৃত্তিকা থেকে। সূরা: আর রাহমান, ৫৫: ১৪

আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি। সূরা: মুমিনুন, ২৩: ১২

আমি তাদেরকে সৃষ্টি করেছি , মজবুত করেছি তাদের গঠন। আমি যখন ইচ্ছা করব তখন তাদের পরিবর্তে অনুরূপ লোক আনব। সূরা: আদ-দাহর, ৭৬:২৮

আপনার প্রতিপালক অমুখাপেক্ষী করুনাময়। তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদের সবাইকে উচ্ছেদ করে দিবেন এবং তোমাদের পর যাকে ইচ্ছা তাকে অভিষিক্ত করে দিবেন। যেমন তোমাদেরকে অন্য সম্প্রদায়ের এক বংশধর হতে সৃষ্টি করেছেন। সূরা: আল-আন আম, ০৬: ১৩৩

উপরের আয়াতগুলি পড়ে কার বাপের সাধ্য যে আবিষ্কার করবে আয়াতগুলো বিবর্তনতত্ত্ব এর কথা বলছে। এটা তো সেই বাইবেলীয় সৃষ্টি তত্ত্বের কথা বলছে সহজ সরল ভাবে।

উপরের আয়াতগুলি বার বার বলছে- আল্লাহ মাটি থেকে মানুষকে সৃষ্টি করেছেন সোজাসুজি। বিষয়টা এরকম- আল্লাহ মাটি দিয়ে মানুষের একটি মুর্তি তৈরী করেছেন, তার পর তার দেহে জীবন দান করে তাকে জীবন্ত মানুষ বানিয়েছেন। এখন এর অর্থ কি বিবর্তনতত্ত্ব সমর্থন করা নাকি ? ইসলামি ছদ্ম বৈজ্ঞানিকরা এ ধরনের একটি যুগান্তকারী আবিষ্কারের আগে কারও সাধ্য ছিল বোঝা যে উক্ত আয়াতগুলো বিবর্তনবাদ সমর্থন করছে? আর ছদ্ম বিজ্ঞানীরা বলছে বলেই কি তা বিবর্তনের সমর্থনকারী হয়ে গেল নাকি ? আদম হাওয়া নিয়ে কোরানে যা আছে আমি আপাতত সেটুকুর ওপরই আলোকপাত করতে চাই। আদম হাওয়া নিয়ে কত কিচ্ছা প্রচলিত আছে আমি তাকে এড়িয়ে গেলাম কারন অনেকেই বলবেন ওগুলো তো আল্লাহর কথা না তাই ওগুলো নিয়ে কথা বলার কোন মানে হয় না।

পৃথিবীতে জীবনের উদ্ভব আজ থেকে কম পক্ষে একশ’ কোটি বছর বা তারও বেশী আগে। বিবর্তনতত্ত্ব অনুযায়ী, প্রথম যে জীব সৃষ্টি হয় পৃথিবীতে তা ছিল অতি সরল এক কোষী জীবকনা আর তা সৃষ্টি হয়েছিল মূলত: আবদ্ধ পানিতে, মাটিতে নয়। কিভাবে সে জীবকনার উদ্ভব পৃথিবীতে ঘটল সেটা এক বিরাট আলোচনা আর গবেষণার বিষয়, সেটা আলোচ্য নিবন্ধের মূল বক্তব্য না বিধায় তা এড়িয়ে গেলাম। সে জীবকনার আবির্ভাবের পর পৃথিবীতে কোটি কোটি বছর কেটে গেছে, এককোষী থেকে বহুকোষী জীব সৃষ্টি হতেও কেটে গেছে বহু কোটি বছর, তার পর তারা উদ্ভিদ ও প্রানী জগতে ভাগ হয়ে গেছে। এর পর কত ধরনের জীব জন্তু দুনিয়াতে আসল আর গেল, কত ধরনের জীব জন্তু সমূলে উচ্ছেদ হয়ে গেল দুনিয়া থেকে তা তো অনেকেই জানে। তারপরও উদাহরন স্বরূপ- ডাইনোসর এর কথা ধরা যায় যারা প্রায় ৬ কোটি বছর আগে দুনিয়া থেকে চিরতরে অবলুপ্ত হয়ে যায় কোন এক অজানা কারনে। ওরা বিলুপ্ত হয়ে গেছিল বলেই উষ্ণ রক্তবাহী স্তন্যপায়ী প্রানীর বিকাশ সম্ভব হয় পৃথিবীতে। ডাইনোসররা বিলুপ্ত না হলে হয়ত স্তন্যপায়ী প্রানীদের বিকাশই ঘটত না আর তাহলে আজকে মানুষের মত দুপেয়ে জন্তুগুলো দুনিয়াতে না দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা হতো অধিক। ডাইনোসরদের দাপটে স্তন্যপায়ী প্রানীদের টিকে থাকাই হতো দায়। সেক্ষেত্রে আমাদের মত কতিপয় মুক্তমনা সদস্যদের জন্য সেটা হতো দারুন দু:সংবাদ। পৃথিবীর রঙ্গ মঞ্চে মানুষের আবির্ভাব বলতে গেলে এই সেদিনের ব্যপার। আধুনিক মানুষের (হোমো স্যাপিয়েন্স) আবির্ভাব এ পর্যন্ত যা বোঝা যাচ্ছে তাতে মনে হয় মাত্র ত্রিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার বছরের মত। পৃথিবীর উদ্ভব কাল থেকে যদি হিসাব করা হয় ( এর বয়স ৪৫০ কোটি বছর ধরে), আর গোটা সময়কালকে যদি ২৪ ঘন্টা ধরা হয়, তাহলে পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাব হলো ২৩ টা ৫৯ মিনিটের পর মানে একেবারে শেষ মিনিটে। এখন কোরানে বার বার বলছে আল্লাহ মানুষকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন, সৃষ্টি করে তাকে জান্নাতে তার স্ত্রী হাওয়া সহ বাস করতে দিয়েছেন। সেখানে তারা বেশ কিছুকাল নানারকম ফল ও অন্যান্য খাবার মহানন্দে খেয়ে পরে ইবলিশের প্ররোচনায় পড়ে বিপথগামী হয়, আল্লাহর আদেশ অমান্য করে। শাস্তি স্বরূপ উভয়কেই পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। আর তারা যে পরিপূর্ন মানুষ ছিল অন্য কোন জীব জানোয়ার ছিল না তা কিন্তু বার বার বলা হয়েছে কোরানে। একথা বলার অর্থ একারনে যে ধুর্ত ইসলামী ছদ্ম বিজ্ঞানীদের কেউ কেউ আবার আদম হাওয়াকে পরিপূর্ন মানুষ হিসাবে স্বীকার করতে চায় না ইদানিং। কারন তাহলে তাতে বিবর্তনবাদের সাথে আদম হাওয়াকে জুড়ে দিতে ভারী সুবিধা। এখানে কোরানেরেএ আয়াতগুলোতে কোথাও কি সামান্য ইংগিত পাওয়া যায় যে মানুষ আসলে বিবর্তনের ধারায় পৃথিবীতে জীবকনা সৃষ্টি হওয়ার প্রায় ১০০ কোটি বছর পরে পৃথিবীতে এসেছে বহু চড়াই উতরাই পার হয়ে? কতিপয় ছ্দ্ম বিজ্ঞানী ছাড়া আর কারও পক্ষে কি তা বোঝা সম্ভব ?

উপরোক্ত আয়াত গুলো কি সত্যিই বিবর্তনতত্ত্ব সমর্থন করে ?

এবার দেখুন নিচের আয়াত–

আমি আদমকে হুকুম করলাম তুমি আর তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করতে থাক এবং ওখানে যা চাও যেখান থেকে চাও পরিতৃপ্তি সহকারে খেতে থাক কিন্তু এ গাছটির নিকটে এস না । অন্যথায় তোমরা যলিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়বে। সূরা: বাক্বারা, ০২:৩৫

আল্লাহ বেহেস্তে আদম ও হাওয়াকে সৃষ্টি করে তার পর সকল ফেরেস্তাদেরকে বললেন আদমকে সেজদা করতে। ইবলিস ছাড়া সবাই সেজদা করল। তারপর ইবলিসকে অভিশাপ দিয়ে আদম ও হাওয়াকে বেহেস্তে বাস করার অনুমতি দিল। পুরো ঘটনাটি বাইবেলের আদি পুস্তক থেকে ধার করা। আদি পুস্তকে ঘটনাটির পুরো বর্ননা আছে, কোরানে পুরো বর্ননা নেই। যাহোক , উক্ত আয়াত থেকে পরিস্কার যে, আদম কে বিশেষভাবে আল্লাহ তৈরী করে, তারপর তাকে জান্নাতে বাস করতে অনুমতি দিয়েছিলেন, আদমকে কোন বিবর্তন প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি করা হয়নি।

অতপর শয়তান তাদেরকে পদস্খলিত করেছিল । পরে তারা যে সুখ স্বাচ্ছন্দে ছিল তা থেকে তাদেরকে বের করে দিল এবং আমি বললাম তোমরা নেমে যাও। তোমরা পরস্পর একে অন্যের শত্রু হবে এবং তোমাদেরকে কিছুকাল সেখানে অবস্থান করতে হবে ও লাভ সংগ্রহ করতে হবে। সূরা: বাক্বারা, ০২: ৩৬

উপরের আয়াত থেকে দেখা যায়, ইবলিস শয়তানের প্ররোচনায় আদম ও হাওয়া গন্ধম ফল খেলে আল্লাহ তাদেরকে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেন। তার মানে তারা জলজ্যন্ত পরিপূর্ন মানুষ হিসেবেই পৃথিবীতে আগমন করে, তারা কোন পূর্ব পুরুষ থেকে বিবর্তন প্রক্রিয়ায় মানুষে রূপান্তরিত হয়নি।

আদমের কিচ্ছাটি আবার কোরানের প্রচন্ড একটি স্ববিরোধী চরিত্র প্রকাশ করে। যেমন কোরানে আল্লাহ বলছে-

আর তোমার পালনকর্তা যখন ফেরেস্তাদিগকে বললেন, আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি পাঠাতে যাচ্ছি, তখন ফেরেস্তারা বলল. তুমি কি পৃথিবীতে এমন একজনকে সৃষ্টি করবে যে দাঙ্গা হাঙ্গামা বাধাবে আর রক্তপাত ঘটাবে ? সূরা: বাক্কারা, ০২:৩০

তার মানে আদমকে যে পৃথিবীতে পাঠাবেন বসবাসের জন্য তা আল্লাহর আগেরই সিদ্ধান্ত। তাহলে খামোখা এসব ভনিতা করে আদম হাওয়াকে বলার দরকার কি যে জান্নাতে থাক , সব রকম ফল খাও , খালি একটা গাছের ধারে কাছে যেও না ? আল্লাহ আদম আর হাওয়াকে বানিয়ে সরাসরি পৃথিবীতে পাঠিয়ে দিলেই তো লেঠা চুকে যেত। তাহলে তো বলতে হয় ইবলিস যে আল্লাহর হুকুম অমান্য করে আদমকে সেজদা করেনি এটাও আল্লাহর পরিকল্পনা। কারন ইবলিস আদমকে সেজদা না করাতে সে আল্লাহর বিরাগ ভাজন হয় (যা মূলত একটা ভন্ডামি ছাড়া আর কিছু না ) ও একই সাথে আদমের শত্রুতে পরিনত হয়। তাই ইবলিসের এখানে কোনই দোষ নেই, সব ঝামেলার মূল স্বয়ং আল্লাহ। আল্লাহই চেয়েছে ইবলিস তার কথা অমান্য করুক, তার ফলে সে আদমের শত্রুতে পরিনত হবে, পরে ইবলিস ছলা কলা করে আদম ও হাওয়াকে দিয়ে সেই নিষিদ্ধ গাছের ফল খাওয়াবে যাতে আল্লাহ রুষ্ট হয়ে তাদেরকে ধাক্কা মেরে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেবে। এখানে আল্লাহর রুষ্ট হওয়াটাও মূলত একটা অভিনয় ছাড়া আর কিছু না। আসলে সমস্যাটা হয়েছে মোহাম্মদের জন্যেই তা পরিষ্কার বোঝা যায়। তিনি বাইবেল থেকে কাহিনীটা ধার করেছেন ঠিকই কিন্তু হুবহু অনুসরন করতে চাননি। যেহেতু তিনি নিজেকে শেষ নবী দাবী করছেন তাই ইচ্ছে করেই বাইবেলের কাহিনীকে নিজের মত করে তৈরী করে বাইবেলের সাথে কোরানের একটা পার্থক্য সৃষ্টি করতে চেয়েছেন আর তা করতে গিয়ে গোজামিলটা দিয়েছেন। যেমন বাইবেলের কাহিনীতে ইডেন উদ্যনে আদম হাওয়াকে রাখা হয়েছিল যা মূলত পৃথিবীর মধ্যেই অবস্থিত একটি জায়গা। কোরানে সে জায়গাটা হলো জান্নাত যা আকাশে অবস্থিত। বাইবেলে কিন্তু ঈশ্বর বলেনি যে তিনি পৃথিবীতে মানুষকে প্রতিনিধি হিসাবে পাঠাতে চান, বরং পৃথিবীতেই ইডেন নামক এক স্বর্গীয় জায়গা তৈরী করে ঈশ্বর আদম হাওয়াকে সেখানে মহাসূখে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন তবে তাদেরকে নিষিদ্ধ ফল খেতে বারন করেছিলেন। বাইবেলে ঈশ্বর কাউকে বলেননি আদমকে সেজদা করতে, ফলে আদমের কোন শত্রুও সৃষ্টি হয়নি। তবে খল প্রকৃতির সাপ আদম-হাওয়াকে প্রলুব্ধ করাতে তারা নিষিদ্ধ ফল খায়, যার ফলে তারা ঈশ্বরের কথার অমান্য করে বা পাপ কাজ করে, যার সাজা স্বরূপ তিনি আদম হাওয়াকে প্রলুব্ধ করাতে তারা নিষিদ্ধ ফল খায়, যার ফলে তারা ঈশ্বরের কথার অমান্য করে বা পাপ কাজ করে, যার সাজা স্বরূপ তিনি আদম হাওয়াকে ইডেন উদ্যন থেকে বহিস্কার করেন। এখানে আদম হাওয়া সুষ্পষ্টভাবেই ঈশ্বরের আদেশ লংঘন করেছে ঈশ্বরের কোন ষড়যন্ত্র ছাড়াই। তাই সঙ্গত কারনে আদম হাওয়ার জন্য শাস্তি প্রাপ্য হয়ে গেছে আর তারা তা পেয়েছেও। বাইবেলের এ কাহিনীটায় কিন্তু কোন ফাক নেই , মানে ঈশ্বরের কোন ভনিতার প্রমান পাওয়া যায় না , কাহিনীর গাথুনি বেশ শক্ত। পক্ষান্তরে , কোরানে আল্লাহ ভনিতা বা ষড়যন্ত্র করে ইবলিশকে আদম-হাওয়ার শত্রু বানায়, পরে শত্রুর প্ররোচনায় তাদেরকে জান্নাত থেকে বহিস্কার হতে হয়।অনেককটা বিনা দোষে আদম হাওয়াকে জান্নাত থেকে বহিষ্কার হতে হয়। কোরানে সাপ এর স্থানে ইবলিশকে বসানো হয়েছে। যেহেতু কোরানের কাহিনীতে আল্লাহর ভনিতা বা ষড়যন্ত্রের লক্ষন সুষ্পষ্ট, তাই কোরানের কাহিনীর গাথুনী খুবই দুর্বল। যে কেউ একটু নিরপেক্ষ দৃষ্টি নিয়ে পড়লেই তা ধরতে পারবে। কাহিনীর এ দুর্বলতার কারন হলো মোহাম্মদের শিক্ষার অভাব। একটু বিদ্যা বুদ্ধি থাকলে এত দুর্বল কাহিনী তিনি আল্লাহর বানী নামক কোরানে লিপিবদ্ধ করতেন না ।

বাইবেলের কাহিনীতে আরও আছে, ঈশ্বর পৃথিবীতে প্রথমে নানা জাতের জীব জন্তু উদ্ভিদ প্রানী এসব সৃষ্টি করার পরেই অবশেষে আদমকে তৈরী করেন। তার মানে তিনি সর্বশেষেই আদমকে তৈরী করেন যা বরং সামান্য হলেও বিবর্তনতত্ত্বকে সমর্থন করে। কারন বিবর্তনবাদ তত্ত্ব অনুযায়ী পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চে সর্বশেষে প্রবেশ করে মানুষ নামক দ্বিপদী জন্তুটি। বাইবেলও খুব পরিষ্কার ভাবে তাই বলছে। বাইবেলে এ বিষয়ক বর্ননা অত্যন্ত ধারাবাহিক ও পরিষ্কার ভাবে বর্ননা করা আছে যা কোরানের কোথাও খুজে পাওয়া যাবে না। কোরানে আছে বিক্ষিপ্ত আকারে, ধারাবাহিক ভাবে কোন বর্ননা নেই। দুনিয়াতে মানুষ আগে এসেছে নাকি জীবজন্তু আগে এসেছে কোরান পড়ে তা কিন্তু বোঝার উপায় নেই। কিন্তু বিবর্তনবাদ এর ক্ষেত্রে সেটাই সবচাইতে বেশী জরুরী জানাটা। কোরানে তার ছিটে ফোটাও নেই, অথচ দাবী করা হচ্ছে , কোরান বিবর্তনবাদ সমর্থন করে।

দেখা যাক বাইবেলের আদি পুস্তক কি বলে. ওখানে গিয়ে আদি পুস্তকের ২০ থেকে ২৮ বাক্য পর্যন্ত একটু পড়ুন

http://www.asram.org/downloads/scriptorium/jbold/Genesis.pdf

বাইবেলের মাহাত্ম গাওয়ার কোন উদ্দেশ্যই আমার এখানে নেই । আমি খালি দেখাতে চেয়েছি যে কোরান দাবী করে কোরানের আবির্ভাবের পর বাইবেলের প্রয়োজন শেষ, অন্তত পৃথিবীর জীব জগত সৃষ্টির ব্যপারে সেই কোরানের চেয়ে বাইবেলের বর্ননা অনেক বেশী পরিষ্কার আর যৌক্তিক। কিন্তু মুসলিম ভাই বোনেরা অধিকাংশই তা জানেন না কারন তারা এসব পড়ে দেখার দরকার মনে করেন না । বাইবেল তো দুরের কথা তারা তাদের কোরানকেও মাতৃভাষায় কখনো পড়ে দেখার দরকার মনে করেন না। এতই অনীহা তাদের সত্য জানার আর জ্ঞান সাধনায়।

এছাড়া আর একটা বিরাট দুর্বলতা আছে উপরোক্ত সূরাটিতে। তা হলো মানুষ যে দুনিয়াতে দাঙ্গা হাঙ্গামা আর খুন খারাবি করে বেড়াবে তা ফেরেস্তারা আদম হাওয়া সৃষ্টির আগেই অগ্রিম জানল কিভাবে ? ওটা তো সবজান্তা আল্লাহ ছাড়া আর কারও জানার কথা নয়। তা ছাড়া কোরান হাদিসে যতটুকু আমরা দেখি আল্লাহর হুকুম মান্য করা ও আল্লাহর গুনগান করা ছাড়া ফেরেস্তাদের কোন কাজ নেই বা অন্য কিছু তারা জানেও না। আল্লাহ তাদেরকে সে ক্ষমতা দেন নি। তাহলে তারা ভবিষ্যত জানল কেমনে ? তারপর সেই একান্ত বাধ্যগত দাসরূপ ফেরেস্তারা তাদের প্রভুর সাথে তর্ক করে কিভাবে ? তারা কিভাবে তাদের প্রভুর মুখের ওপর পাল্টা কথা বলে জিজ্ঞেস করতে পারে – তুমি কি পৃথিবীতে এমন একজনকে সৃষ্টি করবে যে দাঙ্গা হাঙ্গামা বাধাবে আর রক্তপাত ঘটাবে ? এ তো অনেকটা প্রতিবাদের ভাষা। যদিও খুব মারাত্মক প্রতিবাদ না তবে প্রভুর সাথে বেয়াদবি করার জন্য এটুকু যথেষ্ট । এটা আল্লাহ তো অনেক দুরের ব্যপার , আমাদের দেশে কোন অফিসের বসের সাথে তার অধস্তনরাও তো এ ভাবে তর্ক করতে পারে না । কোরানের বানী আল্লাহর বানী হলে এত তুচ্ছ ভুল ত্রুটি কেমনে থাকে ? বানীগুলো আসলে মোহাম্মদের নিজের বানী হওয়াতেই সমস্যাগুলো ঘটেছে তা খুবই পরিস্কার ভাবে বোঝা যায়। আমাদের মুসলমান ভাই বোনরা কবে একটু মুক্ত মনে কোরান হাদিসগুলো পড়বে ?

এবার দেখা যাক, আমাদের মহানবী মোহাম্মদ আদম সম্পর্কে কি বলে গেছেন।

আবু হোরায়রা থেকে বর্নিত, আল্লাহর নবী বলেছেন, আল্লাহ আদমকে ৬০ কিউবিট লম্বা করে তৈরী করেছেন। যখন তিনি আদমকে সৃষ্টি করলেন তখন তিনি তাকে একদল ফেরেস্তার কাছে গিয়ে সম্ভাষণ জানানো ও তাদের প্রতি-উত্তর শোনার জন্য বললেন কারন সেটাই হবে তার সম্ভাষন জানানো ও প্রতি-উত্তর দেয়ার রীতি। আদম ফেরেস্তাদের বলল, আসসালাম আলাইকুম। ফেরেস্তারা তাকে প্রতি উত্তর দিল, আসসালামু আলাইকা ওয়া রাহমাতু ইলাহি। সহি বুখারী, বই – ৫৫, হাদিস নং-৫৪৩

মহানবী বলে কথা ! যিনি আল্লাহর ইঙ্গিত ছাড়া একটা কথা বলা তো দুরের কথা একটা পদক্ষেপও দিতেন না কারন প্রতিটি মুহুর্তই আল্লাহ তাকে পরিচালনা করতেন। তাই প্রকারান্তরে মোহাম্মদের কথা মানেই হলো- আল্লাহর কথা। প্রকৃত মুসলমানদের কিন্তু সেটাই বিশ্বাস, দৃঢ় বিশ্বাস। তো আল্লাহর নবী বলছেন- আল্লাহ আদমকে ৬০ কিউবিট লম্বা করে সৃষ্টি করেছিলেন। সেই তখনকার কালে কিউবিটের নানা রকম মাপ চালু ছিল, তার মধ্যে সব চাইতে ছোট যে মাপটা চালু ছিল আমরা সেটা গ্রহন যদি করি তাহলে তার পরিমান হলো ১৮ ইঞ্চি। তাহলে ৬০ কিউবিট= ১০৮০ ইঞ্চি=৯০ ফুট। পৃথিবীর সবচাইতে বড় প্রানী নীল তিমিও অত বড় হয় না। তার মানে আদম ছিল এক অতি বিশাল আকারের দৈত্য মানব। এ হাদিস থেকে কয়েকটি উপসংহারে আসা যায়-

এক. আল্লাহ আদমকে একটি নির্দিষ্ট সময়ে সম্পূর্ন ভাবে তৈরী করেছিলেন ও পরে এক সময়ে পরিপূর্ন মানুষ হিসেবে তাকে পৃথিবীতে প্রেরন করেছিলেন। কোনমতেই আল্লাহ কোটি কোটি বছর ধরে আদমকে বিবর্তনের ধারায় গড়ে তোলেন নি।

দুই. আদম ছিল পর্বতসম অতিকায় এক দৈত্যাকার মানুষ।

তিন. আদম ও হাওয়া থেকে গোটা মানব জাতির উদ্ভব।

উপরোক্ত অনুকল্পের কোনটাই বিজ্ঞানের ধারায় বা বিবর্তনের ধারায় সত্য নয় । পৃথিবীতে হঠাৎ করে মানুষ উল্কার মত উদয় হয়নি যা ১০০% সত্য বলে ইতোমধ্যে প্রমানিত। আর দুনিয়া জুড়ে কোটি কোটি বছর আগের ফসিল পাওয়া গেছে, বিশাল বিশাল ডাইনোসরের ফসিল পাওয়া গেছে যা অবশ্যই কম পক্ষে ৬ কোটি বছরের পুরনো । বহু মানুষ, মানুষের মত প্রানীর ফসিল পাওয়া গেছে যাদের বয়স লক্ষ লক্ষ বছর। কিন্তু মানবাকৃতির কোন ফসিল পাওয়া যায়নি যার দৈর্ঘ্য ৯০ ফুট বা তার কাছা কাছি। আমি ঠিক শুনিনি ইসলামী ছদ্ম বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যেই অতিকায় ডাইনোসরদেরকে আদম বা তার বংশধর বলে প্রচার শুরু করে দিয়েছে কি না। যদি শুরু করে দেয় তাতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না। পরিশেষে, বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে বংশগতি বিদ্যার মাধ্যমে প্রমান করে ফেলেছে যে , মানবজাতির উদ্ভব নির্দিষ্ট কোন এক জোড়া মানুষ থেকে ঘটেনি। ঘটেছে একটা গোষ্ঠি থেকে। সুতরং বিবর্তনের ধারা অনুযায়ী শুধুমাত্র আদম-হাওয়া থেকে মানব জাতির সৃষ্টি এটা একটা উদ্ভট কল্পনা। তবে এসব আজগুবি আর অবাস্তব বক্তব্য থাকার কারনে ইদানিং হাদিস বাদ দিয়ে কোরান ওনলি মতবাদের অনুসারীর আবির্ভাব ঘটেছে রঙ্গমঞ্চে। তবে তাতেও কোন লাভ নেই , কোরানের বানী বিশ্লেষণ করলেও হাদিসের মতই বহু ত্রুটি বিচ্যুতি বের হয়ে আসে , যা পুর্বেই করা হয়েছে।

সুতরাং আমার প্রশ্ন , সত্যিই কি কোরানে বিবর্তনতত্ত্ব এর সূত্রকে সমর্থন করে এমন কোন বানী আছে ? পূর্বোক্ত আলোচনায় দেখা যায়, নেই। তাহলে এসব ইসলামের ছদ্ম বিজ্ঞানীরা কি ইসলামের উপকার করছে নাকি কোরানের বিষযে বানোয়াট বক্তব্য ও ব্যখ্যা দিয়ে কোরান ও ইসলামের ক্ষতি করছে ?