১. শিশুদের সম্পর্কে প্রচলিত ধারণাগুলোর একটা হচ্ছে শিশুরা নাকি খালি কলসির মত! যুগ যুগ ধরে শিশুদেরকে আমরা ‘শূন্য’ কলসি হিসেবেই দেখে আসছি যাকে শিক্ষাদীক্ষায়, জ্ঞানে ও বুদ্ধিতে ‘পূর্ণ’ করে তোলার এক মহান ব্রত বড়দের উপর অর্পিত। বাস্তবেও আমরা দেখি যে যেভাবে পারছে শিশুকে পূর্ণ করার চেষ্টা করছে। আর সবার মত আমারও শিশু সম্পর্কে ধারণাটা এতদিন এমনই ছিল, কিন্তু মারিয়া মন্তিসেরি (১৮৭০-১৯৫২)নামক জনৈক ইতালিয়ান ভদ্রমহিলার একখানা বই পড়ে শিশু মনস্তত্ত্ব নিয়ে আমার ধারণাতে ছোটখাটো একটা বিপ্লবই যেন ঘটে গেল!
২. বইটির নাম ‘দ্য সিক্রেট অভ চাইল্ডহুড’। মাস কয়েক আগে ফ্রয়েডবাবুর (১৮৫৬-১৯৩৯) ‘মনঃসমীক্ষণঃস্বপ্ন’ পড়ে জানতে পারলাম প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের নানাবিধ গূড়ৈষার (Complex) উৎপত্তিকাল মূলতঃ শৈশব, এ প্রসঙ্গে ‘ঈদিপাস কমপ্লেক্স’ বিশেশভাবে স্মরণযোগ্য। তার মানে এই যে শৈশবকালকে অথবা শিশু মনস্তত্বকে সঠিকভাবে জানতে এবং বুঝতে পারলে এমনকি বড়দেরও অনেক মানসিক অবস্থার কূলকিনারা করা যেতে পারে। তো এমনি করে শিশু মনস্তত্বের উপর হঠাৎ করে একটা আগ্রহ জন্মে গেল। ঘটনাক্রমে পেয়ে গেলাম আলোচ্য বইটি।
৩. মন্তিসেরির এই বইটি লেখার পেছনে উদ্দেশ্য ছিল মূলতঃ শিশুলালন সম্পর্কিত প্রচলিত ধারণার অবসান এবং নতুন দিকনির্দেশনা দান। তবে শিশুলালন নিয়ে বয়স্কদের এই নির্দেশনাগুলো দেওয়ার পূর্বে তিনি শিশু মনস্তত্ব নিয়ে করেছেন এক দীর্ঘ আলোচনা, আমার আগ্রহের বিষয় মূলতঃ এই অংশটুকুই (শিশুলালন নিয়ে এখন জেনে আর কী হবে, বিয়ের তো এখনও অনেক দেরী!)।
মন্তিসেরি শুরু করেছেন একটা অভিযোগ দিয়ে। তিনি বলেছেন দীর্ঘকাল ধরে শিশুলালনের ক্ষেত্রে শিশুর শারীরিক পরিচর্যার ব্যাপারটাতেই আমরা আবদ্ধ রয়েছি, কখনো তার মানসিক চেতনাকে বুঝতে চেষ্টা করি নি। মন্তিসেরি দেখিয়েছেন শিশুরা প্রকৃতপক্ষে কোন খালি কলসি নয়, মূলতঃ প্রতিটা শিশুর ভেতরেই একটা করে সচেতন সত্তা বাস করে। বড়রা সেই সচেতন সত্তাকে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বুঝতে চায় না, অথবা বুঝতে পারে না। আমরা বড়রা সবচেয়ে বড় ভুল যেটা করি সেটা হচ্ছে শিশুদের সমস্ত কার্যকলাপ আমরা আমাদের অর্থাৎ বড়দের মানদন্ডে বিচার করি, কিন্তু শিশুদেরও যে একটা মানদন্ড থাকতে পারে সেটা আমরা উপলব্দ্ধি করতে পারি না।
মূলতঃ শিশুদের মানদন্ড বড়দের মানদন্ডের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। আমরা বড়রা যেভাবে আমাদের জগৎকে দেখছি শিশুরা কিন্তু সেভাবে দেখছে না। কিন্তু আমরা এই স্বাভাবিক ব্যাপারটা স্বীকার না করে উল্টো শিশুদের উপর আমাদের ব্যক্তিত্বকে দিই চাপিয়ে। ফলশ্রুতিতে শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি হয় ব্যাহত।
৪. শিশুদের কিছু অভিনব বৈশিষ্ট্য:
সংবেদনশীল সময়: শৈশবকাল পুরোটাই হচ্ছে শেখার সময়। শিশুদের দিকে দেখলেই বোঝা যায় সারাক্ষণই তারা যেন নতুন কিছু শিখতে, জানতে এবং বুঝতে চেষ্টা করছে। বড়দের শেখার সাথে শিশুদের শেখার পার্থক্য হচ্ছে এই যে শিশুরা শেখার চেষ্টা করে সেইসব মৌলিক বিষয়গুলো যেগুলোতে বড়রা ইতিমধ্যেই দক্ষ হয়ে উঠেছে। কথা বলতে পারা এরকমই একটি বিষয়। আর একটি জিনিস লক্ষণীয়, সেটা হচ্ছে বড়দের নতুন কিছু একটা শিখতে যে পরিশ্রম এবং সময় দরকার হয় শিশুদের কিন্তু বিস্ময়করভাবে তার ছিটেঁফোঁটাও লাগে না! উদাহরণস্বরূপ বলা যায় শিশুরা খুব দ্রুতই তাদের মাতৃভাষা রপ্ত করতে পারে, কিন্তু বড়দের একটা নতুন ভাষা পুরোপুরি রপ্ত করতে অনেক সময় লেগে যায়। কি সেই গোপন জিনিস যার কারণে শিশুরা মৌলিক বিষয়গুলো এত দ্রুত রপ্ত করতে পারে?
মন্তিসেরি এর কারণ হিসেবে বিশেষ কিছু ‘সংবেদনশীল সময়’এর অস্তিস্তকে চিহ্নিত করেছেন। তিনি বলেছেন, শিশুরা যখন এরকম সংবেদনশীল সময়ের মধ্যে দিয়ে যায় তখন তাদের মধ্যে কিছু গুরূত্বপূর্ণ রূপান্তর সংঘটিত হয়। যেমন কোন একটি নির্দিষ্ট সংবেদনশীল সময়ের মধ্যে শিশুরা কথা বলতে সমর্থ হয়, অন্য একটি সংবেদনশীল সময়ে সমর্থ হয় দাঁড়াতে এবং হাঁটতে। মজার ব্যাপার হল, রূপান্তরটি সংঘটিত হওয়ার পরে সেই বিশেষ সংবেদনশীলতাটিও উধাও হয়ে যায়!
শিশুর অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলাবোধ: খুব ছোট শিশুদের একটি গুরূত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে শৃঙ্খলার প্রতি ভালোবাসা। এক্ষেত্রেও শিশুর শৃঙ্খলাবোধের সাথে বড়দের শৃঙ্খলাবোধের স্পষ্ট পার্থক্য আছে। মন্তিসেরির মতে যেখানে বড়দের কাছে শৃঙ্খলাবোধ ব্যাপারটা ততটা গুরূত্বপূর্ণ নয়, সেখানে শিশুদের কাছে এটা প্রায় জীবনমরণ সমস্যা হয়ে উঠতে পারে! শিশুরা তাদের আশেপাশের জগতকে সুশৃঙ্খল দেখতে চায়, এই সুশৃঙ্খলতার আকস্মিক পরিবর্তন তাদের মানস জগতে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
শৃঙ্খলার প্রতি শিশুর এই অকৃত্রিম ভালোবাসা কয়েকটি জীবন্ত উদাহরণের মাধ্যমে মন্তিসেরি ফুটিয়ে তুলেছেন। একটি উদাহরণ দেওয়ার লোভ সামলাতে পারছি না।
কয়েকটি শিশুর সাথে মন্তিসেরি একবার লুকোচুরি খেলা খেলছিলেন। খেলাটা ছিল এরকম: একটি শিশু অন্য শিশুদের উপস্থিতিতেই একটি টেবিলের নীচে লুকায়, যে টেবিলটা একটি লম্বা টেবিলক্লথ দিয়ে ঢাকা ছিল। একবার অন্য সবাই পাশের রূমে গেল, আবার ফিরে এল এবং টেবিলক্লথটির নীচে তাদের সঙ্গীটিকে আবিষ্কার করার তীব্র আনন্দে ফেটে পড়ল। বেশ কিছুক্ষণ পর লেখকের পালা আসলে লেখক কিন্তু টেবিলের নীচে না লুকিয়ে লুকালেন একটি ওয়াড্রোবের পেছনে। শিশুরা পাশের রূম থেকে ফিরে এসে প্রথমেই টেবিলের নীচে লেখককে খুঁজতে গেল। কিন্তু সেখানে তাকে না পেয়ে হতোদ্যম হয়ে খোঁজাই বন্ধ করে দিল! কিছুক্ষণ পর লেখক আড়াল থেকে বের হয়ে আসলে ওরা লেখককে তিরস্কারের সাথে জিজ্ঞাসা করল, “তুমি আমাদের সাথে খেলছ না কেন? তুমি লুকালে না কেন?!” শিশুরা ভাবতেই পারেনি যে টেবিলের নীচে ছাড়া অন্য কোথাও লেখক লুকাতে পারেন!
শিশুরা শূন্য নয়: এতদিনকার প্রচলিত ধারণা আমাদের বলে যে শিশুদের নিজেদের বলতে কিছুই নেই, বরং শিশুর বর্হিজগতই পুরোপুরি নির্ধারণ করে দেয় শিশুর মনোজগতকে। এই ধারণা অনুযায়ী শিশু একটি নিষ্ক্রিয় সত্তা ব্যতীত আর কিছুই নয়।
কিন্তু মন্তিসেরি শিশুকে মোটেও নিষ্ক্রিয় সত্তা হিসেবে মেনে নিতে রাজি হন নি। তিনি শিশুদের মধ্যে গভীর সংবেদনশীলতা আবিষ্কার করেছেন, দেখেছেন শিশুদেরও আছে নিজস্ব ইন্দ্রিয়ানুভূতি। শিশুদেরও আগ্রহের কতিপয় বিষয়বস্তু থাকে; আর এই আগ্রহের অনুভূতিটা বাইরের পরিবেশ থেকে আসে না, বরং এটা শিশুর অভ্যন্তরীণ সংবেদনশীলতারই বহিঃপ্রকাশ।
৫. শেষ কথা: মন্তিসেরি একজন গোঁড়া ক্যাথলিক ছিলেন। ধর্মবিশ্বাসীদের ক্ষেত্রে যেটা হয়, প্রায়ই তারা কাজের চেয়ে আকাজের কথা বেশি বলেন। মন্তিসেরিও এই বইতে অনেক প্রয়োজনাতিরিক্ত কথা বলেছেন, অযথাই বারেবারে আধ্যাত্মিকতাকে টেনে এনেছেন, শিশুকে যীশুর সাথে তুলনা করে শিশুর মধ্যে একটা ‘অবতারত্ব’ আরোপ করতে চেয়েছেন।
এইসব বাহুল্য সত্তেও বলা যায়, ‘দ্য সিক্রেট অভ চাইল্ডহুড’ শিশ-মানস সম্পর্কে আমাদেরকে নতুন কিছু ধারণা দান করে। বইটিতে শিশুদেরকে শুধুই শিশু হিসেবে না দেখে সচেতন এক সত্তা হিসেবে দেখার অনুপ্রেরণা দেয়, উন্মোচন করে শিশুর অর্ন্তজগতের এক নতুন রহস্যকে, সর্বোপরি এই শিক্ষাই আমাদেরকে দেয় যে শিশুদেরকে পুরোপুরি বুঝতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই শিশুদের কাতারে নেমে আসতে হবে।
(দ্য সিক্রেট অব চাইল্ডহুড,
মূল: মারিয়া মন্তিসেরি
অনুবাদ: অসিতবরণ ঘোষ
ঐতিহ্য, ফেব্রুয়ারি’০৭)
(২৬/৪/১০)
শিশুদের উপর আমরা একটা মানসিক উপদ্রব সৃষ্টি করি আমাদের মত করে তাদের পরিচর্যা করতে যেয়ে। নির্দিষ্ট সময়ের পর তাদের কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার সুযোগ দেওয়াটা খুবই প্রয়োজন। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, অনেক অভিভাবক তাদের অতি-অভিভাবকত্ব (!) প্রদর্শন করে শিশুর অন্তর্নিহিত অপার সম্ভবনাকে ধ্বংস করে ফেলেন। তাদের মনে রাখা উচিত-
” তোমার সন্তানরা তোমার সন্তান নয়।
জীবনের নিজের প্রতি নিজের যে তৃষ্ণা, তারা হল তারই পুত্রকণ্যা।
তারা তোমাদের মাধ্যমে আসে, তোমাদের থেকে নয়।
এবং যদিও তারা থাকে তোমাদের সঙ্গে, কিন্তু তাদের মালিক তোমরা নয়।
তুমি তাদের দিতে পারো তোমার ভালবাসা,
কিন্তু দিতে পারো না তোমার চিন্তা, কারন তাদের নিজেদের চিন্তা আছে।
তুমি তাদের শরীরকে বাসগৃহ জোগাতে পারো, কিন্তু তাদের আত্মাকে নয়।
কারন তাদের আত্মা বাস করে ভবিষ্যতের ঘরে। যেখানে তুমি যেতে পারো না,
এমনকি তোমার স্বপ্নের মধ্যেও নয়।
তুমি তাদের মতো হওয়ার সাধনা করতে পারো, কিন্তু
তাদের তোমার মতো বানানোর চেষ্টা কর না।
কারন জীবন পিছনের দিকে যায় না, গতকালের জন্য বসেও থাকে না।
তোমরা হচ্ছ ধনুক, আর তোমাদেরও সন্তানরা হচ্ছে ছুটে যাওয়া তীর।
ধনুবির্দ অনন্তের পথে চিহ্নের দিকে তাকিয়ে থাকেন। যেন তার তীর ছোটে দ্রুত আর দুরে।
তুমি ধনুক, তুমি বাঁকো ধনুবিদের হাতে বেঁকে যাওয়া যেন আনেন্দর জন্য হয়।”
(- কাহলিল জিবরান )
আনন্দের বিষয় হচ্ছে, এখন সাইকোলজি, নিউরো সাইকোলজির কাজগুলো অত্যন্ত দ্রুত এগিয়ে চলেছে এবং এ নিয়ে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখাগুলো একসাথে অনেক কাজ করছে। আমরা এখনো মানুষের ব্রেইনের অনেক কিছুই বুঝিনা, ভবিষ্যতে আরও যত বুঝবো ততই মনে হয় এব্যপারে আমাদের সচেতনতা বাড়বে। শিশু মনস্তত্ত্ব বোঝা এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে বাচ্চার সাথে বাবা মা’র সঠিক যোগাযোগ স্থাপন করা যে কি জরুরী একটা বিষয় সেটা আমার মেয়েকে বড় করতে গিয়ে অত্যন্ত সচেতনভাবে উপলব্ধি করেছি।
ধন্যবাদ আপনাকে এমন একটা চমৎকার বিষয় নিয়ে লেখার জন্য। কম্পিউটারটা খুব গন্ডোগোল করছে না হলে বেশ বড় করে কিছু কথা লিখতাম। আমাদের মত দেশগুলোতে শিশু মনস্তত্ত্ব একেবারেই চিন্তা ভাবনা করা হয় না। আসলে দেশকেই বা দোষ দিয়ে লাভ কি, এর চেয়ে আরও কত বড় বড় সমস্যা নিয়েই তো কেউ কিছু করেন না। কিন্তু সুস্থ পরবর্তী প্রজন্ম তৈরির জন্য শিশুদের সুস্থ মনস্তত্ত্ব গঠনও যে জরুরী সেটা বোধ হয় আমরা এখনও বুঝে উঠতে পারিনি। যেমন ধরুন, আমাদের দেশে সেক্স এডুকেশনটাকে একটা ‘ট্যাবু’ হিসেবেই গন্য করা হয়, কিন্তু এটা যে একটা মানুষের ভালোভাবে গড়ে উঠার জন্য কতটা প্রয়োজনীয় তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে?
@রাহাত খান, চারিদিকে তো শুধু ট্যাবুই দেখি। আসলে এখানকার মানুষ প্রথাচ্ছন্ন, প্রথাবিরোধিতা শুধু মুষ্টিমেয় কিছু প্রগতিশীল মানুষের করায়ত্তে।
লেখাটা দারুন হয়েছে। বইটা হাতের কাছে পেয়েও কিনি নাই। সোফির জগৎ বই থেকে একটা উক্তি তুলে দেবার খুব ইচ্ছা হচ্ছে,
মনস্তত্ব নিয়ে পড়ে আমি আসলেই মজা পেয়েছি। এরকম লেখা আরো চাই। আমার নিজেরও আরো বই কেনার ইচ্ছা আছে। দেখি কি হয়!! :rose2:
@তানভী, আসলেই ভাই মনস্তত্ব একটা জটিল ব্যাপার, তবে পুরোপুরি বোঝার জন্য ব্যাপক পঠন-পাঠনের দরকার আছে।
লেখাটা খুব ভাল লাগলো সূর্য। আপনার মতো আমারো একই মতামত – শিশুরা শূন্য নয়। আসলে ব্ল্যাঙ্ক স্লেটের ধারনা আমাদের শিখিয়েছে শিশুদের ‘শূন্য’ হিসেবে ভাবতে। অধিকাংশ মানুষ মনে করে, শিশুরা জন্ম নেয় একটা স্বচ্ছ্ব স্লেটের মত, মানুষ যত বড় হতে থাকে – তার চারপাশের পরিবেশ ও পারিপার্শিকতার মাধ্যমে ঐ স্বচ্ছ্ব স্লেটে মানুষের স্বভাব ক্রমশঃ লিখিত হতে থাকে। অর্থাৎ, ভাল-মন্দ সবকিছুর জন্য দায়ী হচ্ছে একমাত্র পরিবেশ। খারাপ পরিবেশে থাকলে স্লেটে লেখা হবে হিংস্রতা কিংবা পাশবিকতার বীজ, আর ভাল পরিবেশ পেলে স্লেটও হয়ে উঠবে আলোকিত। ব্রিটিশ দার্শনিক লক (১৬৩২ -১৭০৪ খ্রীষ্টাব্দ) এই ‘ব্ল্যাঙ্ক স্লেট’ মতবাদের প্রবক্তা ছিলেন। এম.আই.টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের (বর্তমানে হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের) অধ্যাপক অধ্যাপক স্টিভেন পিঙ্কার ২০০৩ সালে একটি বই লেখেন ‘The Blank Slate: The Modern Denial of Human Nature’ শিরোনামে। তিনি বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোন থেকে সমাজে গেঁথে যাওয়া এবং জনপ্রিয় এই ‘ব্ল্যাঙ্ক স্লেট’ তত্ত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে একে একধরণের ‘ডগমা’ হিসবে আখ্যায়িত করেন। আমি এ নিয়ে আমার ই-বই – মানব প্রকৃতির জৈববিজ্ঞানীয় ভাবনাতে বিস্তৃতভাবে লিখেছিলাম। মানুষ কি সত্যই ‘ব্ল্যাঙ্ক স্লেট‘ হয়ে পৃথিবীতে জন্মায়? অংশটিতে এ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা আছে।
চমৎকার এই বিষয়টির অবতারণার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ দা,
ধন্যবাদ।
ওই বইটাতো এখনও পড়া হয়নি। :-Y :-Y :-Y
খুব দ্রুতই পড়তে হবে তো!