( আনাসের লেখা ‘বিশ্ব নবীর ডাক্তারী’ পড়ার পর মোকছেদ আলীর লেখাটির কথা মনে পড়ায় পোষ্ট করতে আগ্রহী হলাম)
তুচ্ছ, কিন্তু ধন্বন্তরী
-মোকছেদ আলী*
একটি কথা প্রায়ই শোনা যায়, আর সেটা হইতেছে – “সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ তায়ালা বিশ্ব ব্রহ্মান্ড অর্থাৎ আসমান ও জমিন এবং এতদউভয়ের মধ্যে যাহা আছে তাহা অকারণ ক্রিড়াচ্ছলে সৃষ্টি করেন নাই।” আল্লাহ তায়ালা তাঁহার পাক কালাম আল কোরানের সুরা দোখানের ৩৮-৩৯ আয়াতে স্পষ্ট ভাষায় বলিয়াছেন- “আমি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু ক্রীড়াচ্ছলে সৃষ্টি করিনি। আমি এগুলো যথাযথ উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছি; কিন্তু তাদের অধিকাংশই বোঝে না।”
এই আয়াতটি হাফেজ মুনির সাহেব অনুবাদ করিয়াছেন-
“আমি আসমানসমূহ, যমীন এবং এদের উভয়ের মাঝখানে যা কিছু আছে তার কোনোটাই খেল তামাশার ছলে পয়দা করিনি। এগুলো আমি যথাযথ উদ্দেশ্য ছাড়াও সৃষ্টি করিনি, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ (সৃষ্টির এ উদ্দেশ্য সম্পর্কে) কিছুই জানে না।”
এই আয়াতের মর্ম অনুসারে প্রকৃতির রাজ্যের কোন বস্তুই তুচ্ছ বা ফেলনার নহে। কিন্তু আমরা অজ্ঞতার কারণে ইহার মূল্য বুঝি না।
ভাগ্যিস, আয়াতটি কোরানে দেওয়া হইয়াছে, তাহা না হইলে আমরা কোন বস্তু দ্বারাই উপকার পাইতাম না, সেগুলো শুধু খেল তামাশার বস্তু হইয়াই থাকিত। আমার প্রশ্ন- উক্ত আয়াতটি কোরানের মধ্যে না থাকিলে প্রকৃতির গাছ-গাছড়াগুলো কিম্বা বিভিন্ন দ্রব্যাদি কি গুণ বিবর্জিত হইয়া থাকিত?
যখনই কোন বিজ্ঞানী কোন কিছুর উপর পর্যবেক্ষণ পরীক্ষা নিরীক্ষা দ্বারা কোনকিছু আব্ষ্কিার করিয়াছেন তখনই ইসলামী ধার্মিক পণ্ডিত ব্যক্তিরা ওয়াজ করিতে শুরু করেন-‘এই কথা তো বহু আগেই কোরানে উল্লেখ করা হইয়াছে।’
এই সমস্ত ইসলামী ধার্মিক পণ্ডিতেরা কোরানকে মেডিকেল সাইন্স বলিতেও দ্বিধাবোধ করে না। এমন দাবীদার ব্যক্তিরা কিন্তু কোরান গবেষণা করিয়া কোন কিছু আবিষ্কার করিতে পারে না। পারে তাহারাই যাহারা কোরান গবেষণা না করিয়া বস্তু লইয়া গবেষণা করিয়াছে।
যাহারা কোরানকে মেডিকেল সাইন্স বলিয়া লাফালাফি করে তাহাদের কথা শুনিয়া মনে হয়- মানুষের রচিত মেডিকেলের বই বাদ দিয়া মেডিকেল কলেজগুলিতে কোরানকে প্রধান পাঠ্য পুস্তক হিসাবে স্থান দিতে হইবে। তাহাতে ডাক্তাররা আরো হয়তো অনেক কিছুই আবিষ্কার করিতে পারিবেন।
কোরানে একটি কথা ঠিক বলিয়াছে, ”কিন্তু অধিকাংশ মানুষ (সৃষ্টির এ উদ্দেশ্য সম্পর্কে) কিছুই জানে না।” এই আয়াতটি একটি না বোধক। অর্থের বিকৃতি না ঘটাইয়া হা সূচক বাক্যে পরিণত করিলে হইবে- ”কিন্তু অল্প মানুষ (সৃষ্টির এ উদ্দেশ্য সম্পর্কে) জানে।”
দুনিয়ার দিকে তাকাইলে দেখা যায় এই অল্প মানুষ কিন্তু মুসলমান নয়, বরং বিধর্মী কিম্বা কোন ধর্মের ধার ধারে না, কিম্বা যাহারা ধর্মের লেবাস লইয়া মাতামাতি করে না। তাহারা আপন মনে গবেষণা করিয়া মানুষের উপকার করিয়া চলে। আবিস্কৃত জিনিসটি জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবারই কাজে লাগে বা তাহারা ব্যবহার করে। ধার্মিকরা বিজ্ঞানের জিনিস খায়, মজা লুটে আর গুণগান গায় আল্লাহর। আর বলে- আল্লাহই তো বিজ্ঞানীদের মাথায় জ্ঞান দিয়াছেন, অতএব গুণগাণ তো আল্লাহরই গাইতে হইবে। আবার বিজ্ঞানীরা যখন আল্লাহর অস্তিত্ব লইয়া টানাটানি করে তখন ধার্মিকরা বিজ্ঞানীদের মাথা কাটিতে উদ্যত হয়। আর কয়, আল্লাহর জ্ঞান লইয়া জিনিস বানাইয়া এখন আল্লাহর বিরুদ্ধে কথা বল, এখন আর তোমাকে বাঁচিয়া থাকিতে দেওয়া যায় না।
নসিহত করিতে গিয়া মৌলবীরা কয় আল্লাহর পাক কালামে আছে- “এই দুনিয়াটা কিছুই নয়, শুধু খেলা আর মন ভুলানোর ব্যাপার মাত্র, আসল জীবনের ঘর তো পরকাল।” (এই মুহূর্তে আয়াতটি কোন সুরায় আছে মনে পড়িতেছে না।)
এখন কথা হইল, একবার বলা হইতেছে- ‘কোন কিছুই ক্রিড়াচ্ছলে সৃষ্টি করিনি’, আবার বলা হইতেছে- ‘খেল তামাশার ব্যাপার মাত্র।’ এমন বৈপরিত্য কথাবার্তা কেন?? (আমি মুখ্য মানুষ, তাই বুঝি না; জ্ঞানীদের দারস্ত হইতে হইবে)।
যাহা হউক, আমার ব্যক্তিগত জীবনের কতকগুলি ঘটনা উল্লেখ করিব- প্রকৃতির তুচ্ছ জিনিস যে কাজে লাগে, তাহা কোরান গবেষণা ছাড়াই ঘটিয়াছে।
এক:
বাল্যকালে মাঠের ঘাস কাটিতে কাটিতে কাচিতে হঠাৎ বাম হাতের কনুই আঙ্গুলটি নখ সমেত কাটিয়া যায়। প্রচুর রক্ত পড়িতে থাকে। যন্ত্রনাও হইল। আমি কাচি ফেলিয়া ডান হাতে চাপ দিয়া আঙ্গুল ধরিয়া কান্দিতে লাগিলাম। বছির বুড়া নামক একজন বৃদ্ধ আমার দুর্দশা দেখিয়া শান্তনা দিয়া কহিল, “কান্দিস না, এখনই সারিয়া যাইবে।” বলিয়া তিনি কালো কচুর ডাঁটা (ডাগুর) ছিড়িয়া আনিলেন। পাতার দিক হইতে আঙ্গুলের চাপে চিপিয়া, ছ্যাপ বা সাবানের ফেনার ন্যায় কস বাহির করিয়া আমার কাটা আঙ্গুলের উপর কষ লাগাইয়া দিলেন। আর সাবধান করিয়া দিলেন, পানি লাগাবি না আর তেঁতুল খাবি না। তারপর উপদেশ দিলেন বাড়ি গিয়া কালো কচুর ডাইগ্যার কষ বেশি করিয়া লাগাইয়া ছাফ তেনা (পরিষ্কার কাপড়) দিয়া আঙ্গুলে জড়াইয়া বান্ধিয়া রাখিবি।
তাহার সাবধান বাণী ও উপদেশ মান্য করিয়া দুই দিনে আমার কাটা স্থান শুকাইয়া উঠিল। কয়েকদিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ সারিয়া গেল বটে কিন্তু চিরদিনের জন্য আঙ্গুলের চাড়ার উপর দাগ শিরার ন্যায় রহিয়া গেল। এই বৃদ্ধ বয়সেও সেই দাগটি খুব স্পষ্ট হইয়া আছে। কাটাস্থানে কালো কচুর কষ যে মহা উপকারী তাহা অনেকেই অবগত নহে।
এখন প্রশ্ন হইল- বসির বুড়া কি কোরানের আয়াত গবেষণা করিয়া কাল কচুর কষ যে উপকারী তাহা বাহির করিয়াছে? কালো কচুর কষের উপকারীতার বিষয়ে কি কোরানে উল্লেখ আছে?
বিজ্ঞানের আবিষ্কারের ফলে এখন তো বাজারে বিভিন্ন ধরনের এন্টিসেপটিক পাওয়া যায়। স্যাভলন, ডেটল জাতীয় অনেক ধরনের তরল, পাউডার, কিম্বা ক্রিম জাতীয় ঔষধ বাহির হইয়াছে। কেন ১৪০০ বছর আগে মোহাম্মদ কোরান গবেষণা করিয়া এগুলি আবিষ্কার করিতে পারিলেন না?
দুই:
শীত চলিয়া গিয়াছে। চৈত্রের গরম হাওয়া মাঠ ঘাটকে উত্তপ্ত করিয়া তুলিয়াছে। মজম আলীদের মাইঠ্যালের পানি প্রায় শুকাইবার উপক্রম হইয়াছে। আমার পাড়ার ছেলেরা ঐ মাইঠ্যালে নামিয়া হাতাইয়া হাতাইয়া মাছ ধরিতেছে। আমি বেশ কতগুলি টাকি, ভেদা ও বাইল্যা মাছ ধরিয়াছি। হাতাইতে হাতাইতে একটি শিং মাছ ধরিয়াছি, পানির কিনারে দাঁড়ানো আমার ভাতিজা বাচ্চুর হাতের বদনায় মাছ রাখিতেছি। জিয়াল মাছটি মাথা ঘুরাইয়া আমার হাতে কাঁটা বসাইয়া দিল। আমি আর পানিতে নামিলাম না। তীব্র একটা বেদনায় হাত জ্বলিতে লাগিল।
আমার এই দুরবস্থা দেখিয়া মজম আলীর মাতা মাইঠ্যালের পাড়িতে গজানো ‘বিষ কাটালী’ গাছের পাতা ছিড়িয়া হাতের তালুতে বুড়া আঙ্গুল দিয়া পিষিয়া রস বাহির করিয়া আমার ক্ষতস্থানে মাখাইয়া দিলেন। তারপর আমাকে তাহার বাড়িতে লইয়া গিয়া, লোহার হাতা, আখার আগুনে গরম করিয়া ক্ষতস্থানে চাপ দিয়া সেঁক দিলেন। আমার বেদনা অনেক কমিয়া গেল। আমার মুখে হাসি ফুটিল। তাহা দেখিয়া মজম আলীর মাতা মন্তব্য করিলেন, “জিয়াল মাছের কাঁটা খাইয়া তখন তো খুব ভ্যাবাইলা, আর এখনতো খুব হাসতিছাও।”
বিষ কাঁটালীর বিষ নাশের কথা কয়জনে জানে? (১ নং এর মত এখানেও একই প্রশ্ন রাখিলাম)
তিন:
ঈশ্বরদী আমবাগানে ব্যবসায়ী মুসলিম মিঞা। বৃদ্ধ মা, ৪ টি ছেলে মেয়ে নিয়ে ছোট্ট সংসার। ব্যবসায়ে যা আয় হয় তাহাতেই স্বচ্ছন্দে চলিয়া যায় সংসার। কাহারো সাতে পাচে থাকে না। অমায়িক নির্ঝঞ্ঝাট মানুষ। নিজে নির্ঝঞ্ঝাট হইলে কি হইবে, আসলে দুনিয়াটা তো নির্ঝঞ্ঝাট নহে। এই ঝঞ্ঝাটটা বাধাইল আমাশয় রোগ।
মুসলিম মিঞা দারুন আমাশয়ে ভুগিতে লাগিলেন। শহরের নাম করা ডাক্তারের ব্যবস্থা মত ফ্লাজিল ট্যাবলেট, অবশেষে সুমাইসিন ক্যাপসুল গিলিয়া গিলিয়া হয়রান, কিন্তু আমাশয় রোগটা আর হয়রান হয় না।
ইস্ বন্ধুর ভাইয়ের বিবাহের দাওয়াতটা পর্যন্ত বাতিল করিতে হইল। বরযাত্রীরা ফিরিয়া আসিয়া খানা পিনার যে ফিরিস্তি দিল, তাহাতে মুসলিম মিয়ার জিব্বায় পানি না আসিলেও চোখের কোণায় পানি জমা হইল। বরযাত্রী বন্ধু কহিল, “তোমার অবস্থাটা বুঝতে পারছি, আমাশয়ে তল পেটে দারুন বেদনা হচ্ছে তো?”
“হ্যাঁ ভাই, তুমি ঠিক কেচটা ঠিকই ধরিয়াছ। কত অসুদ খাইলাম, কিন্তু আমাশয় রোগটা সারিল না।” বন্ধুটি কহিল, “আমার কথা যদি বিশ্বাস কর, তবে বিনা পয়সায় তোমার আমাশয় সেরে যাবে।”
মুসলিম মিয়া কহিল, “পয়সা খরচ কর্ত্তে তো কিরপনতা করছি নারে ভাই। যদি কেউ আমার এই কষ্টকর রোগটা সারাতে পারে, এক্ষুনি তাকে ৫০০ টাকা দিব।”
বন্ধুটি হাসিয়া কহিল, “টাকা আপাতত: পকেটেই রাখ, যা বলি তাই কর।”
করুন নয়নে মুসলিম মিয়া বন্ধুটির মুখের প্রতি তাকাইল। বন্ধুটি গলার স্বরটাকে গম্ভীর করিয়া এক রকম আদেশের সুরেই কহিল, “সাদা কাঁটাক্ষুঁড়ে গাছের শিকড় এক মুঠ লইয়া পরিষ্কার পানি দিয়া ধুইয়া পাটায় ছেঁচিয়া রস একটা গেলাসে লইয়া, তার মধ্যে কুশুরের গুড় দিয়া সরবৎ করিয়া দৈনিক ৩ বার খাও। দুই দিন খাইলেই আমাশয় ত্রাহি ত্রাহি ডাক ছাড়িয়া পালাইবে।”
বন্ধুর পরামর্শে মুসলিম মিঞা কাঁটাখুড়ের শিকড়ের সরবৎ পান করিল।
একি যাদু না ম্যাজিক? দুই দিনেই দীর্ঘদিনের আমাশয় একেবারে সারিয়া গেল।
মুসলিম মিয়া ভাবিতে লাগিল, হাতের কাছে ভাল অসুদ থাকিতে আমরা ডাক্তারের কাছে এত দৌড়াই কেন?
কাঁটাক্ষুড়া যে আমাশয়ের শ্রেষ্ঠ ধন্বন্তরী ঔষধ, মুসলিম মিয়া এই কথাটা বন্ধু মহলে প্রচার করিতে লাগিল।
চার
মুসলিম মিয়ার কন্যা ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। পাড়া প্রতিবেশী লোকেরা বলে, ‘মেয়ে তো নয়, যেন হলদে পাখির ছাও। বিয়ে দিতে পয়সা লাগবে না। পয়সা দিয়েই নিয়ে যাবে।’ এহেন মন্তব্যে পিতা মনে মনে আত্মপ্রসাদ লাভ করে, আর আল্লাহর হাজার শোকর করে।
মেয়ের পায়ের পাতায় একটি ফুস্কুড়ি হয়। ক্রমে সেই ফুস্কুড়িটি গলে গিয়ে সারা পাতায় ঘা হয়। পিতা সুচিকিৎসার সুব্যবস্থা করে। শহরের গণ্যমান্য সব চিকিৎসকের পরামর্শ মতই অসুদ পানি খাওয়ায়। দিন যায়, কিন্তু ঘা সারে না। পয়সা খরচ হয় বেশী, ঘায়ের আয়তনও হয় বেশী।
মেয়ের কষ্টে পিতা চিন্তিত হয়। বন্ধুদের পরামর্শে মেয়েকে রাজশাহী শহরের বড় হাসপাতালে লইয়া যায়। অগাধ অর্থ ব্যয় হয়। দিন যায়, হপ্তা যায়, মাসও চলিয়া যায়, কিন্তু পায়ের ঘা আর যায় না।
পিতামাতা বড়ই চিন্তিত হয়। বাড়ির ভাড়াটিয়ার পরামর্শে এক কবিরাজের সঙ্গে দেখা করে। পায়ের ঘা দেখিয়া কবিরাজ অসুদের ফরমূলা বাতলাইয়া দেয়।
গান্ধাফুলের পাতা পাটায় বাটিয়া আফিমের সহিত মিশাইয়া মলমরূপে পায়ে লাগাইতে বলে। কবিরাজের ফরমূলা মত গাঁদা ফুলের পাতা পাটায় বাটিয়া, তাহার মধ্যে আফিম মিশাইয়া পায়ের ঘায়ে প্রলেপ দেয়।
কিন্তু মুসলিম মিয়ার বিশ্বাস হয় না। এত টাকা খরচ করিয়া সারিল না। আর এই সামান্য জিনিষে সারিবে!
কি আশ্চর্য দুই দিন ব্যবহার করিবার পর ঘা শুকানো শুরু হইয়া গেল। মাত্র এক সপ্তাহ ব্যবহারে সম্পূর্ণ সারিয়া গেল।
বাইদারা যে বলে- চিনলে জরি, না চিনলে জঙ্গলের খড়ি। আসলে কথাটা সত্যি।
পাঁচ
মাঘ মাস। প্রচন্ড শীত। আমার স্ত্রী প্রথম পুত্র সন্তান প্রসব করিল। নবজাতকের কামানের পর আমার স্ত্রীর হাতের তালু ফাটিয়া যায়। শীতের শেষে সাধারণত পায়ের গোড়ালী ও ওষ্ঠদ্বয় ফাটে। কিন্তু হাতের তালু ফাটে, একথা শুনি নাই।
নবজাত শিশুর পরিচর্যা করা ও বাটনা বাটা ও কুটনা কোটার কাজ করিতে পারে না। বড় কষ্ট হইতে লাগিল, অন্যে ভাত মাখাইয়া দেয়, চামচ দিয়া মাখা ভাত গলধঃকরণ করে।
পাবনার প্রবীণ ডাক্তারবাবু, পরিতোষ সাহাকে কল দিলাম। দেখিয়া শুনিয়া ক্যালাডল ব্যবস্থা দিল। ক্যালাডল ডাক্তারের উপদেশ মত প্রায় ১ মাস ব্যবহার করা হইল। কিন্তু ফলোদয় হইল না। খবর শুনিয়া আমার শ্বশুড় আসিয়া তাহাকে লইয়া গেল।
গ্রামের মশহুর প্রবীণ ডাক্তার মোকছেদ হোসেনের১ চিকিৎসাধীনে রহিল। শীত ফুরাইয়া গেল। গরম পড়িল। সবাই ভাবিল এইবার নিশ্চয়ই নিরাময় হইবে। জৈষ্ঠের প্রচণ্ড গরমেও ঘা নিরাময় হইবার কোনই লক্ষণ দেখা গেল না।
আমার এক বন্ধু শুনিয়া কহিল- ইহা ছোঁচবাত, ইহার কোন ঔষধ নাই। প্রতিদিন সকাল বেলায় বাড়ির চারিদিকে ঘুরিতে হইবে এবং হাতের কাছে যে গাছ পাওয়া যাইবে, তাহার পাতা ছিড়িয়া দুই হাতের তালুতে ঘষিতে হইবে। ঐ সব গাছের মধ্যে হয়ত এমন একটি পাতা থাকিতে পারে যাহার গুণে ঐ ফাটা ঘা নিরাময় হইবে। পরামর্শমত প্রায় ৮/১০ দিন পাতা ঘষিল। কিন্তু, যথাপূর্ব্বং তথা পরং।
আমিরুল নামে আমার কারখানার এক শ্রমিক আমার স্ত্রীকে কহিল, “চাচী, আমার বড় মামীর আপনার ন্যাক্যাল ঘা হইছিল, কত অশুধপাতি খাইল। কিন্তু সারিল না। হ্যাশে ফিনাইল মাখিয়া সারিয়া গেল। আপনে ফিনাইল মাখেন সাইরা যাইব।”
অবোধ বালকের কথা শুনিয়া আমার স্ত্রীর বিশ্বাস জন্মিল, হয়ত সারিয়া যাইবে।
সে দুই আনা পয়সা দিয়া ফিনাইল আনাইলো। দুই দিন মাখিলে ফাটা ঘা শুকাইয়া গেল। এক সপ্তাহ পর হাতের তালু মসৃণ হইল।
এখন আমার ছেলের বয়স একত্রিশ, এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে আমার স্ত্রীর হাত মসৃণই আছে। আমার স্ত্রী বলে, “কত টাকা পয়সা খরচ হইল, ক্যালাডল, আরো কত কি অসুদ খাইলাম- ভাল হইল না, আর সামান্য দুই আনার ফিনাইলে ভাল হইল। আল্লাহ পাক কোন্ জিনিসে কোন্ গুণ দিয়া থুইছে তাকি আমরা জানি?”
ছয়:
আমার চতুর্থ পুত্র। নাম রাখা হইয়াছে ওবাইদুল হক, সবাই ডাকে ওবাইদুল্লাহ। হামাগুড়ি হইতে প্রমোশন পাইয়াছে। ওবাইদুল্লাহর দরদী আত্মীয়গণ ওবাইদুল্লাহর হাত ধরিয়া বলে, হাঁটি হাঁটি পা পা। ওবাইদুল্লাহ এক পা দুই পা করিয়া অগ্রসর হয়, আর খুশীতে হাসিতে থাকে। ল্যাটা মারিয়া বসিয়াও থাকে। শীতকাল আসিল। মাঠে আমন ধানে পাক ধরিল। বিকালের পড়ন্ত রোদে ওবাইদুল্লাহকে কোলে লইয়া নলবোনা মাঠে গেলাম। সারা মাঠে পাকাধানের সোনালী শিষের সমারোহ, চোখ জুড়াইয়া যায়। মৌ মৌ গন্ধে পেটও ভরিয়া যায়।
ওবাইদুল্লাহ প্যান্ট ভরিয়া পায়খানা করিল। নদীর পানিতে তাহাকে শৌচাইয়া দিলাম। শৌচাইতে গিয়া দেখি তাহার পাছায় ফুস্কুরি হইয়াছে।
দুইদিন পরে ঐ ফুস্কুরি গলিয়া সারা পাছায় ঘা হইল। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী মলম দিতে লাগিলাম। ডাক্তার কিছু খাওয়ার বড়িও দিলেন। কিন্তু ঘা আর সাড়ে না। ছেলেকে কোলে করা যায় না। খুবই কষ্ট হয়।
একদিন কথা প্রসঙ্গে পাবনা মনোহারী দোকানের মালিক বক্কার মিঞা কহিল, “ভাই, ঢাকার লালমোহন সাহার তৈরি, শংখ ও পদ্ম মার্কা ‘ক্ন্ডু দাবানল’ মলম লাগান, দুই দিনেই ঘা সারিয়া যাইবে।” বলিয়াই সে একটি কৌটা তাহার দোকানের আলমারীর ভিতর হইতে বাহির করিয়া আমার হাতে দিল। জুতার কালির মতো কৌটা। উপরে, পদ্মফুলের উপর শংখের ছবি। লিখা আছে, লাল মোহন সাহার শংখ ও পদ্ম মার্কা কুন্ডুহ দাবানল। কৌটার তলায়, কি কি রোগ নিরাময় হয় ও ব্যবহার পদ্ধতি লিখা আছে।
দুইদিন মাত্র ব্যবহার করিলে, ঘা একেবারে সারিয়া গেল।
ঐ মলম আরো কয়েকটি ছেলের ঘায়ে ব্যবহার করিয়া আশ্চর্য ফল পাইয়াছি।
বাস্তবিকই কুন্ডুহ দাবানল এক ধন্বন্তরী ঘায়ের মলম। বাংলাদেশ হওয়ার পর আর পাওয়া যায় না।
সাত:
বয়স তিন কুড়ি পার হইয়াছে অনেক আগেই। এই বয়সে অনেকের মুখের মধ্যে দাঁতের নাম গন্ধ পর্যন্ত থাকে না। আমার কয়েকজন আত্মীয়ের বয়স তিন কুড়ির অনেক নিচেই রহিয়াছে, কিন্তু তাহাদের মুখ গহব্বরের বিশেষ অস্ত্রগুলি পরে আসিয়া সবার আগেই চলিয়া গিয়াছে। এই অস্ত্রগুলি মুখ বিবরে থাকাকালীন মর্যাদা দিলে চলিয়া যাইতে বিলম্ব করে। বিখ্যাত মনিষীগণ এই কথা কহিয়া থাকেন- ‘দাঁত থাকিতে দাঁতের মর্যাদা দেওয়া উচিত।’ দাঁত থাকিতে দাঁতের মর্ম্ম না জানিলে, পরিশেষে অনাকাংখিত বুড়া উপাধি পাইতে হয়।
অবাঞ্চিত বুড়া উপাধিতে কেহ যাহাতে মধুর সম্বোধন না করে, সেজন্য দাঁতের যেটুকু যত্ন করা কর্তব্য তাহার চেয়ে কিঞ্চিৎ বেশিই করি।
মধুর সম্পর্কের যুবকেরা আমার দাঁতের ঔজ্জ্বল্য দেখিয়া বলে, “দুলাভাইয়ের দাঁত দেখছি সবগুলি ঠিক আছে,” পরক্ষণেই কৌতুহল হইয়া প্রশ্ন করে, “হ্যাঁ দুলাভাই বুট ভাজা চিবাইতে পারেন তো?”
আমি ওষ্ঠদ্বয়কে সংকুচিত করিয়া উজ্জ্বল কোদাল মার্কা দন্তরাজিকে বিকশিত করিয়া বলি, “দিয়াই দ্যাখনা এক ডালা, টেস্ট (test নয়, taste)পরীক্ষাটা হয়েই যাক। ”
আমার এহেন গৌরবের ধন, ছেদন দন্তের একটা নড়বড়ে হইয়া স্থানচ্যুত হইবার আবেদন করিল। আবেদনপত্র মঞ্জুর করিব করিব করিতেছে। এমন সময়, হাকিমুল নজরুল জটাধারী, আবেদন নাকচ করিবার পরামর্শ দিলেন। কহিলেন, “আমি যাহা বলি একটা সাদা কাগজে লিখে নেন্ত।”
লিখিলাম-:
১। নারিকেলে শিকড় এক মুট।
২। সুপারির শিকড় এক মুট।
৩। পেয়ারার পাতা এক মুট।
৪। ডালিমের পাতা এক মুট।
৫। বাবলার ছাল এক মুট।
৬। জিগার ছাল এক মুট।
৭। ফিটকিরি আধা তোলা।
৮। তূতে এক চিমটি।
৯। পানি এক কেজি।
প্রথমে শিকড়গুলি পরিস্কার জলে ধৌত করিয়া, কুচি কুচি করিয়া কাটিবে। একটি পাত্রে নয় নম্বর তালিকার পানি দিয়া, উহাতে উপরোক্ত দ্রব্যগুলি দিয়া জ্বাল দিতে থাকিলে পানি টগ্বগ্ করিয়া ফুটিতে ফুটিতে যখন অর্ধেক পরিমিত রহিবে তখন একটি কাপড়ে ছাকিয়া একটি বোতলে রাখিবে। চায়ের কাপে মুখে সহ্য হয় এরূপ গরম পানি দিয়া তাহার ভিতর চা চামচের এক চামচ কাত দিবে। উক্ত পানি মুখে দিয়া ২/৩ বার অনেক্ষণ ধরিয়া কুল্লি করিবে। সপ্তাহ খানেক পরেই বুঝিতে পারিবে, ছেদন দন্তটি স্বস্থানে বহাল তবিয়তে থাকিয়া কর্তব্য পালন করিতেছে।
হেকিম সাহেবের নির্দেশ মত ৮/৯ দিন, দিনে রাত্রে ৪/৫ বার করে কুলি করিয়া যৎপরোনাস্তি উপকৃত হইয়াছি। ছেদন দন্তটি ভারত-বাংলাদেশের মাঝখানে অবস্থিত। ডিমার্কেশন পোষ্টের মতই দৃঢ়ভাবে দাঁড়াইয়া আছে।
আমাদের দেশের সর্বত্র, আনাচে কানাচে, রোগ নিরাময়ের দাওয়াই, কত গাছ গাছড়া রহিয়াছে, তাহার প্রয়োগ জানার অভাবেই অবহেলিত থাকে। বয়োবৃদ্ধ জ্ঞানী লোকেরা এসব দ্রব্যের গুণ সম্পর্কে সচেতন। আগ্রহী ব্যক্তিকে অনেক তথ্য দিতে পারেন।
আট:
মানবদেহের সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গের গুরুত্ব অপরিসীম। আবার এই সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মধ্যে কতকগুলি আছে যাহা ইন্দ্রিয় নামে পরিচিত। মানুষ জ্ঞান অর্জনের নিমিত্ত প্রকৃতিদত্ত এই সব ইন্দ্রিয় প্রাপ্ত হয়েছে। চক্ষুর মাধ্যমে দর্শন জ্ঞান অর্জিত হয়। সুগন্ধ, দুর্গন্ধ সম্বন্ধীয় জ্ঞান ঘ্রানেন্দ্রিয় নাসিকার মাধ্যমে অর্জিত হয়। শব্দ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জিত হয় শ্রবনেন্দ্রীয় কর্ণের মাধ্যমে। টক মিষ্টি ঝাল কটু তিক্ত পানসে প্রভৃতি স্বাদ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জিত হয়, আস্বাদন ইন্দ্রিয় জিহ্বার মাধ্যমে। উষ্ণ, ঠান্ডা নাতিশীতোষ্ণ প্রভৃতির জ্ঞান অর্জিত হয়, মানবদেহের সর্ব বৃহৎ অঙ্গ, চর্মের মাধ্যমে। স্পর্শ সুখ আমরা অনুভব করি এই চর্মের মাধ্যমে।
এই সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গের গুরুত্ব কোনটার চেয়ে কোনটাই কম নহে। মাতৃগর্ভ হইতে যদি কেহ কোন একটি ইন্দ্রিয় ব্যতিরেকে জন্মগ্রহণ করিয়া থাকে তবে সেই ব্যক্তি সেই ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য বা ইন্দ্রিয় লব্ধ জ্ঞান হইতে বঞ্চিত হয়। তথাপি, মনুষ্যগণ চক্ষুকেই বেশী মূল্যবান মনে করে। বস্তুতঃপক্ষে চক্ষু যে সর্বাপেক্ষা মূল্যবান তাহাতে কোনই সন্দেহ নাই। আমার শ্র্রদ্ধেয়া দাদী আম্মা (ঠান দিদি) প্রায়শঃ বলিতেন, “চক্ষু রতনের দাম পনর আনা, আর বাদ বাকী দেহটার দাম এক আনা। (বর্তমানে আনা নাই, সব পয়সা। দাদী আম্মা বাঁচিয়া থাকিলে হয়ত বলিতেন, চক্ষুর দাম পঁচানব্বই পয়সা, আর দেহটার দাম পাঁচ পয়সা।) এমন মূল্যবান চক্ষু রত্নটিকে যত্ন করিতে কার্পন্য করি না। একখানা চিকিৎসা বিদ্যার চক্ষু অধ্যায়ে পড়িয়াছিলাম চক্ষুর ব্যায়াম চক্ষুর দৃষ্টি শক্তিকে বৃদ্ধি করে।
চক্ষুর ব্যায়ামের পদ্ধতি-
সূর্য উদয়ের পূর্বে সবুজ বৃক্ষাদির দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করিয়া রাখিবে। দশ মিনিটকাল স্থির দৃষ্টে চাহিয়া থাকিবে, পলক ফেলিবে না। চক্ষু দিয়া পানি পড়িবে, তারপর সহসা চক্ষুর দৃষ্টি নিজ বক্ষস্থলে ফিরাইবে। মাথা না ঘুরাইয়া চক্ষুর দৃষ্টি একবার ডাইনে, আবার বামে, আবার উপরে নিচে বার বার ঘুরাইবে। তারপর কিছুক্ষণ চক্ষুর পাতা বন্ধ করিয়া রাখিবে এরূপ কার্য প্রতিদিন অভ্যাস করিবে। ইহাতে চক্ষুর যাবতীয় পীড়া দূরীভূত হইয়া চক্ষুর জ্যোতি বৃদ্ধি পাইবে। বহু দূরের জিনিস সহজে দৃষ্টি গোচর হইবে।
খনার বচনের কেতাবে পড়িয়াছিলাম- “আহারান্তে চোখে জল, হয় তার দৃষ্টি প্রবল।” অর্থাৎ আহার শেষে থালে হাত ধুইয়া ডান হাতের মধ্যমা অঙ্গুলী ভিজাইয়া দুই চোখে দুই ফোটা পানি দিবে, ইহাতে চক্ষুর দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পাইবে।
অমূল্য রতন চোখের দৃষ্টিশক্তিকে অক্ষুন্ন রাখিবার জন্য যথা সম্ভব সব কিছুই করি। মাঝে মাঝে চক্ষুর ব্যায়াম করি। আহারান্তে চোখে এঁটোজলের ফোঁটাও লই। চোখের জ্যোতি আমার ভালই। দূরের ব্যক্তিকেও চিনিতে ভুল হয় না, সুচের ধাগায় সুতা পরাইয়া দেই।
বিপদসঙ্কুল এই পৃথিবী। এখানে বিপদ কখন কোন দিক হইতে আসিবে সঠিক করিয়া কেহই বলিতে পারে না। চেষ্টা ও য্ত্ন করিলেও যে চির জীবন সুস্থ সবল থাকা যায় না, তাহা অতীতের লিখিত ইতিহাসে ভুরি ভুরি প্রমাণ রহিয়াছে।
চক্ষুর কার্যকারীতা অক্ষুন্ন রাখার জন্য চেষ্টা ও যত্নের ত্রুটি করি নাই। কিন্তু আকস্মিক বিপদ হইতে রক্ষা পাইবার কোনই উপায় নাই।
সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলিয়া পড়িয়াছে। মাঠের কাজ সমাপ্ত করিয়া গৃহে প্রত্যাবর্তন করিতেছি। চেচাইনা দোয়ার সাকোর উপর উঠিয়াছি। হঠাৎ দক্ষিণ দিক হইতে আকাশের ছোট বোনরি (ঘূর্ণিবায়ু) আসিয়া আমার চোখ মুখে ঝাপটা দিয়া গেল। তৎক্ষনাৎ বাম চোখটা কুট কুট করিতে লাগিল। আমি পথ চলিতে চলিতে বাম হাতের তালু দিয়া চোখ কচলাইলাম। পানি বাহির হইল।
রাত্রে যতক্ষণ জাগ্রত রহিলাম ততক্ষণই চোখের ভিতর কাঁটা কাঁটা ফুটিতে লাগিল। অসহ্য ঠেকিতে লাগিল। সকালে গিন্নি চোখ দেখিয়া কহিল, “চোখের মনির উপর ফুলি পড়িয়াছে। ফুলির ভাল চিকিৎসা করেন, ভেড়ামারার পৌরসভার চেয়ারম্যান সাহেব।”
কালবিলম্ব না করিয়া চেয়ারম্যান সাহেবের বাড়ি গেলাম। চক্ষু দেখিয়া বলিলেন, “ফুলি পড়িয়াছে, ভয়ের কোন কারণ নাই, খোদার রহমতে, আমার ঝাড়ায় সারিয়া যাইবে।” তাহার আশ্বাস বাণীতে মনে শান্তনা পাইলাম। তিনি আলাপাতা, একটি কলকিতে জ্বালাইয়া, আরেকটি কলকি দিয়া ঢাকিয়া, কলকীর তলায় ফুঁদিয়া ধোঁয়া আমার চোখে দিলেন।
মাত্র পাঁচদিনের চিকিৎসায় ফুলি কাটিয়া চোখ পরিস্কার হইল। চক্ষুর এই চিকিৎসা বাবদ তিনি কোন পারিশ্রমিক গ্রহণ করিলেন না। উপরন্তু তিনি প্রতিদিন সকালে আমাকে চা নাস্তা খাওয়াইতেন।
তিনি এই বিদ্যাটা শিক্ষা করিয়াছিলেন, তাহার পিতার নিকট। তাহার পিতাকে লোকেরা সাত গেরামের পরামানিক বলিয়া শ্রদ্ধা ও সম্মান করিত। তিনি চক্ষু চিকিৎসায় অত্যন্ত পারদর্শী ব্যক্তি ছিলেন, তাহার সুচিকিৎসায় অত্র এলাকার লোকের চক্ষুর পীড়া নিরাময় হইয়াছে, কতজনে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়া পাইয়াছে।
কিন্তু তিনি চিকিৎসা বাবদ কোন পারিশ্রমিক গ্রহণ করেন নাই। তাঁহার চিকিৎসা ছিল সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। তিনি দেশীয় গাছ-গাছড়া দ্বারা চিকিৎসা করিতেন। গাছ গাছড়ার গুণাগুণ সম্বন্ধে তাঁহার জ্ঞান ছিলো অগাধ।
নয়:
শিশুরা স্বভাবতই চঞ্চল হয়। বিশেষ করিয়া ৬/৭ বৎসর বয়সের শিশুগণ একটু বেশি চঞ্চল হয়। আমার এক ভাইজতা, চঞ্চলতায় বাড়ির আর সব ছোটদের সে গুরু। ডাক দোহাই মানে না।
বাড়ির পিছনে খেসারীর ভুই। সেই খেশারীর ভুইয়ের ভিতর পলান টুক টুক খেলিতেছে। বোতল ভাঙ্গা কাঁচ কে যেন খেশারীর ভুইয়ে ফেলিয়াছে, আমন ধানের নাড়ায় জড়াইয়া খেশারী স্থানে স্থানে প্রায় ২ হাত উচু হইয়াছে। সেই উচু খেশারীর আড়ালে লুকাইতে গিয়া ভাঙ্গা বোতলের কাঁচে পা কাটিয়া গেল। দর দর করিয়া রক্ত পড়িতে লাগিল। কান্দিতে কান্দিতে বাড়ি আসিল।
রক্ত এবং কাটা স্থানের হা দেখিয়া আমি অস্থির হইলাম। কলিকাতা হইতে আনা বালীগঞ্জ কেমিক্যাল, হাতকাটা বা মহাশংকর তেল ঘরে ছিল। পরিষ্কার নেকড়া দিয়া রক্ত মুছিয়া ছাপ করিয়া ঐ তেল লাগাইয়া দিয়া একটি সাদা পরিষ্কার নেকড়া দিয়া ব্যান্ডেজ করিয়া দিলাম। ৪/৫ দিন পর দেখি কাটা স্থান জোড়া লাগিয়া গিয়াছে। ব্যাথা বেদনা কিছু নাই। সম্পূর্ণ সারিয়া গিয়াছে।
মহাশংকর তেলের গুণ আছে।
[পুনশ্চ: উপরোক্ত টোটকা চিকিৎসাগুলো চিকিৎসকেরা কি কোরান গবেষণা করিয়া পাইয়াছে?]
-০০০-
অনুলেখক-মাহফুজ।
*মোকছেদ আলী (১৯২২-২০০৯)। স্বশিক্ষিত।
১. ডাক্তার মোকছেদ হোসেন। এম বি বি এস, এফ আর সি এস। এই ডাক্তারের মৃত্যু হয় ১৯৭৫ সালে মোকছেদ আলীর বাড়ীতে। সে সম্পর্কে লেখকের ‘মৃত্যুকথা’ নামে একটি পান্ডুলিপি রয়েছে।
মাহফুজ ভাই;
আমাকে ক্ষমা করে দিন। মন্তব্য বোতামটা ক্লিক করার পর বুঝলাম আমি কি করেছি।
দেখুন এবার কি ঠিক নাম লিখেছি? না হয়ে থাকলে জানবেন আমার চক্ষুর ব্যাধি আছে। লিখতে ও পড়তে অসুবিধা হয়।
@ আবুল কাসেম ভাই,
আমার নাম তো মাহফুজ। হঠাৎ করে পাল্টে দিয়ে মঝফুজ রাখলেন কেন? যদি এই নাম দিতে চান, আমি রাজী। তবে নামের অর্থটা একটু বলে দিয়েন।
ভাই মঝফুজ,
আপনার প্রত্যেক লেখায় আমি কিছু না কিছু শিখি। এই লেখাতেও শিখলাম অনেক ডাক্তারী বিদ্যা। ভাবছি এত সব ইসলামীক ঔষধ থাকা সত্বেও আরবদেশের বাদশাহ কেন হারমীদের দেশে মাসের পর মাস কাটায় রোগ থকে পরিত্রানের জন্যে।
@আবুল কাশেম,
লেখক তার ব্যক্তিগত জীবনে যে সব উপকার পেয়েছেন, তারই বর্ণনা তিনি দিয়েছেন। এবং নিজেও মন্তব্য করেছেন- এসব কী কোরানে লেখা আছে? কোরান গবেষণা ছাড়াই তো এ সমস্ত টোটকা চিকিৎসা করা হয়। লেখক গ্রামের একজন সাধারণ মানুষ। তার শৈশব জীবনে চিকিৎসা বিদ্যার অনেক কিছুই সুফল ভোগ করেন নি। এখনও গ্রামের মধ্যে ছোট ছোট গাছ গাছড়া দিয়ে সাধারণ চিকিৎসা চলে। কিন্তু বড় ধরনের রোগ হলে উপজেলা হাসপাতাল কিম্বা সামর্থ থাকলে শহরের ক্লিনিকে আসে।
আবার কখনও কখনও অপচিকিৎসাও চলে বিভিন্ন পীর ফকির কিম্বা হাতুড়ে ডাক্তারের মারফত।
আরব দেশের বাদশাহরা কেন যে বেদীনদের কাছে যায় চিকিৎসার জন্য তা তাদের কাছ থেকেই জেনে নিতে হবে। তবে একটা ঘটনার কথা বলতে পারি। আমাদের যশোরে এক পীর ছিলেন। উনি ইরান থেকে আগত। সেই পীরের ছেলে এখন গদিনীসীন। এক শুক্রবারে আমি পীরের সেই ছেলের সাথে দেখা করলাম। তাকে বললাম, হুজুর আমার একটা সমস্যা একটু দোয়া করবেন। আমি তো জানি দোয়া ফোয়ায় কোন কাজ হয় না। তিনি প্রথমে আমার পরিচয় নিলেন। পরিচয় জানার পর, তার জবাব- “শিক্ষিত মানুষ হয়ে আপনি আমার কাছে এসেছেন? আপনার উচিত ডাক্তারের কাছে যাওয়া। আমি তো অশিক্ষিতদের ফু-টু, ঝাড়ফুক করি। ওদের বিশ্বাসই ওদেরকে কোন কোন সময় সুস্থ করে তোলে।”
বাদশাহরা যদি গরীব হতো, চিকিৎসা করার সামর্থ না থাকতো তাহলে নিশ্চয়ই তারা গাছ গাছড়া কিম্বা ঝাড় ফুকের উপর নির্ভর করতো। এটা আমার ধারণা। আপনার যদি অন্য কোন ব্যাখ্যা থাকে তাহলে জানাবেন।
দুনিয়া তার আপন গতিতে(তার তকদির অনুষারে) চলবে, এখানে আল কুরান পড়ে বা গবেষনা করে দুনিয়াবি কোন উপকারিতা পাওয়া যাবে কি না, তা বুঝার চেষ্টা করতেছি, তবে আখিরাতের ব্যাপারে উপকারিতা পাওয়া যাবে তা নিশ্চিত। আমি এখন পর্যন্ত যা বুঝেছি আল কুরানের আসল কাজ হচ্ছে, আল্লাহর হুকুম কিংবা সতর্কতা প্রকাশ করা(তবে তার আরো ভিন্ন কাজ আছে)। কি বিশ্বাস করতে হবে? কি না? কি সঠিক কি বেঠিক। কিভাবে আল্লাহ পাকের আনগত্য করতে হবে ইত্যাদি।
যেমনঃ এক বাচ্চা অজু করার সময় পানির দিকে তাকালো, সে দেখল পানির ভিতর শক্ত লোহার খুটি দোল খাইতেছে, সে তার বাকাকে বলল, বাবা পানির খুটি তো নরতেছে (মানে খুটি শক্ত নয়), তার বাবা বল আসলে নরতেছে না। ঐ ছোট বাচ্চা তার বাবার কথা বিশ্বাস করল। এবং ধরে নিল। খুটি নরতেছে না। যদিও এ বিষয়ে তার কাছে কোন প্রমান নেই। এটা হচ্ছে ভালবাসার প্রকাশ। বিশ্বাসের প্রকাশ। সে তার পিতাকে বিশ্বাস করে, ভালবাসে তাই বিনা যুক্তিতেই তার কথা মেনে নিল। কোন উতৃসাহী মন হয়ত এর কারন ও বের করবে, এবং এস্টাব্লিশ করবে তার পিতার কথার সত্যতা। মেডিক্যাল সাইন্স আল কুরানে পরে শিখা যাবে তা কি ভুল কথা? এক ভাবে ভুল কথা, আবার ভিন্ন ভাবে ঐ কথা সত্য। (এটা আপনি মানতে না ও চাইতে পারেন)
এখানে উল্লেখিত সকল বক্তব্য আমার নিজের, এখানে আপনারা ভিন্নমত ব্যাক্ত করতে পারবেন। আমার যা বলার আমি তাই বলেছি। ধন্যবাদ।
@ফুয়াদ,
যা উদাহরণ দিলেন সেটা একটা বাচ্চার। তাকে যা বুঝানো যাবে তাই বুঝবে। অবশ্য কখনো কখনো এর বিপরীতও ঘটে। সহজে বিশ্বাস করতে চাই না। শিশুটি দেখছে খুটিটি নড়ছে। পিতা বলছে, নড়ছে না। এখন কার কথা সত্য? শিশুটি যদি সত্য হয়, তাহলে পিতা মিথ্যা বলছে। শিশুটি পিতার সেই মিথ্যা বিষয়টি গ্রহণ করছে। আর এটার ফল কখনো ভালো হয় না। মিথ্যার উপর দাড়িয়ে থাকলে জীবনে শুধু কুসংস্কার, অপবিশ্বাস -এর জন্ম নেয়।
@মাহফুজ,
লোহার খুটির ব্যাপারে সাধারন কথা ছিল, যা এখটি সাধারন উদাহারন মাত্র। ওজু করার দায়ে পানির দলনা হল পানির নিচে অতি শক্ত খুটি কেও নরতে দেখবেন(নরতে বলতে অনেক জোরে দোলতে দেখবেন) , আসলে খুটি নরতেছে না(মানে অনেক জোরে দোলতেছে না), পানি নরতেছে আর ওই অনুপাতে আলো আপনার চোখে যে প্রতিবিম্ব গড়তেছে তা তানরছে বলে অনুভূতি হয়। মানে আপনি ভুল দেখতেছেন। ধন্যবাদ।
@ফুয়াদ,
আপনার মন্তব্য আবারও পড়লাম। বুঝতে পারছি আমার বুঝতে ভুল হয়েছিল।
কেউ বিশ্বাস ক’রে কোরান পড়লে ডাক্তার হয়ে যাবে?! এটা কি সহজেই মেনে নেয়া যায়?
@মাহফুজ,
প্রায় একটা কথা শুনি যে কুরাণে অনেক আগেই চন্দ্র ,সুর্য ইত্যাদিতে মহাকাশ ভ্রমন করা হয়ে গেছে ।
এখনকার বিজ্ঞানীরা আর এমন নতুন কী বা করেণ । আরো একটা বিষয়ে অবাক লাগে অধিকাংশ
মুসলিম ডাক্তার কে দেখা যায় তারা এক জন রোগীকে চিকিৎসা করেন , আর বলেন আমি কে ,আমি নিমিত্ত মাত্র সবই তো আল্লাহর ইচ্ছে । মানে তার ডাক্তারি বিদ্যা ধুলোয় মিশে গেল ।
এ সব বিষয়ে বক্তব্য কী ? তাহলে এতো টাকা পয়সা খরচা করে ডাক্তারি বিদ্যা না শিখে ,কেবল কুরাণ
পড়ে ঝাড় ফুঁক করে দিলে তো চলে । বড্ড চিন্তার বিষয় । :-/
@একা,
আপনার মন্তব্য পড়ে আমার একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল-
বছরে একবার দুবার হলে আমার প্রচন্ড মাজা (কোমর) ব্যাথা করে। ডাক্তারের ঔষধ খায়, সেরেও যায়; কিন্তু আবারও হয়। এর থেকে কোন একেবারে পরিত্রাণ পাই না। আমার মামাকে আমার এই অসুবিধার কথা জানালাম। তিনি বললেন- এর একমাত্র ঔষধ হচ্ছে ‘নামাজ’। এখানে একটু বলে রাখা ভালো যে, আমার মামা একজন ডাক্তার। তাহলে বুঝুন- ঠ্যালা।
আপনার এই কথাগুলো হুবহু মোকছেদ আলী ‘তাবিজের গুণ’ নামে একটা লেখায় উল্লেখ করেছেন। হয়তো এক সময় সেটি পোষ্ট করবো।
@একা,
তেমন দাবী সব ধর্মে অনুসারীরাই করেন। ধর্মগ্রন্থে বিজ্ঞান আবিষ্কার শুধু এক মুসলমান ধর্মের একচেটিয়া নয়, অন্য সবারই আছে। মুসলিমরা মনে হয় এ কাজে এখনো নুতন, বা পিছিয়ে আছেন। হিন্দু ধর্মে এহেন দাবী আরো অনেক বেশী আছে। একবার amazon এ দেখেছিলাম যে বেদ গীতায় বিজ্ঞান বিষয়ক কয়েকশো বই শুধু সেখাই মজুদ আছে।
তবে মুসমান সনাতনী দর্শন মতে কাজ আসলে আল্লাহই করেন, মানুষ হল নিমিত্ত বা উছিলা মাত্র। সে ডাক্তারের রুগী সারানো বা যা কিছুই হোক। তবে মানুষ চেষ্টা না করলে আল্লাহ সাহায্য করেন না সেটাও বলা আছে।
কুরানে অমুক আছে,তমুক আছে এইসব এখন একটা মিথ। মুসলিমরা সত্য-মিথ্যা যাচাই না করেই এসব বিশ্বাস করে। সব মুসলিম জানে কুরানে বিগ-ব্যাং এর কথা আছে কিন্তু কোথায় আছে এটা কয়জন জানে?
আমার মনে এ ধরনের দর্শনের মধ্য দিয়ে কুরান মানুষকে অপমান করে। মানুষ নিজে সারাদিন পরিশ্রম করে ফল লাভের পর কৃতিত্ব দেয় আল্লাহকে। কেন?
ইহাকেই বলে সুবিধাবাদ :lotpot:
@রামগড়ুড়ের ছানা,
বিগ ব্যাং এখন পর্যন্ত আদৌ কোন প্রমানিত তত্ত্ব নয়। শুধুমাত্র হাইপোথিসিস বা কনজেকচার। সেটা আবিষ্কারই এখনো হয়নি।
এ জটিল প্রশ্নের জবাব আল্লাহয় বিশ্বাসী না হলে আসলেই বোঝা যাবে না। যার অস্তিত্বেই বিশ্বাস করা যাবে না তাকে আবার কৃতিত্বের ভাগ দেবার প্রশ্ন আসবে কেমন করে?
@শাফায়েত,
আমি-ই একদিন মুক্তমনা সাইটে আপনাকে যুগ দিবার কথা বলে ছিলাম, এখানে আসার জন্য বলেছিলাম। এ ব্যাপারে আদিল মাহমুদ ভাই তার বন্দুদের বলেও নাকি আনতে পারেন নি(আদিল ভাইয়ের দৃষ্টি আকর্ষন)। যাইহোক, হঠাত করে একটি ফাকের মধ্যে আমার লেখার উদৃতি দিয়ে দিলেন। আমি যদি এই দিকে না তাকাইতাম তাহলে দেখতেই পেতাম না। আপনি যে এই কাজ করেছেন, সুবিধাবাদি বলে অপবাদ দিয়েছেন।
আপনি যেহেতু মুসলমান নয়, সেহেতু আপনার ইসলাম সম্পর্কে কত দূর ধারনা আছে জানি না। ছবি গুলি মানুষের মধ্যে মুর্তি পুজোর সৃষ্টি করলেও করার চেষ্টা করতে পারবে। যাইহোক, ডিজিটাল ছবি আসলে কি তা আপনার মত একজন কম্পিঊটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র কে বুঝাতে হবে না। এটা কখন-ই আসল পিকচার নয়, বাস্তব কোন আকৃতি নেই। শুধুই কিছু কোড যা আলো হিসাবে মনিটর থেকে আসতেছে, যাকে বাস্তব ছবির সাহিত তুলনা করা যায় না। পোত্তলিকরা ডিজিটাল ছবির পুজো করত না। এখানে আমার বুঝ এটিই। আপনার ভিন্ন বুঝ থাকতে পারে। পুজো বা ইবাদত কি জিনিস তা ও আপনাদের জানা থাকা দরকার ছিল। যাইহোক,(আমি নিজের ভাষায় বলতেছি) ইবনে আব্বাস রাঃ ওই হাদিস বর্ননা করেছিলেন, যখন তার কাছে একটি পাত্র আসে প্রানীর ছবি আকা, তখন তিনি ঐ হাদিস(যা আপনি উপরে উল্লেখ করেছেন) বর্ননা করেন, তখন যে লোক আকত, সে ভয় পেয়ে গেল। বললঃ আমি তো এ দিয়েই খাই(বা চলি বা জীবন ধারন করি)। ইবনে আব্বাস রাঃ বলেছিলেন তাহলে তুমি গাছ পালা(অথবা জড় বস্তুর) ছবি আক।(আমার ১০০%মুঘস্ত নেই তাই নিজের ভাষয় বললাম)
মানে দাড়ায়, ছবি আকার সাথে ইসলামের বিরুদ্ধ নেই। ছবির সাথে ইসলামের শত্রতা নেই। সমস্যা হল পুজায়। আর ডিজিটাল ছবি এখন ঐ কাতারে পরে না। তারপর ও আপনাদের ভিন্নমত থাকতে পারে, কারন আমি আরো অনেক বিষয় পড়েছি, যা দিয়ে আমি আমার বুঝ পেয়েছি। আমার ধর্ম নিয়ে আমার ভালই পড়াশুনা আছে। টিটকারী দিলে দিতে পারেন, কিন্তু আল্লাহ পাক এই পৃথিবী কে এভাবেই সৃষ্টি করেছেন, যে যা এই পৃথিবীকে দিবে সেভাবেই ফিরে পাবে। (আল কুরানের এক আয়াত থেকে তাও মুঘস্ত নেই)
@রামগড়ুড়ের ছানা,
কুরানে বলা হচ্ছে, সমস্ত প্রসংশা জগতসমূহের প্রতিপালকের। ঈশ্বর মানুষের ভেতর প্রবেশ করেন এবং তার মাধ্যমে নিজে কাজ করেন।
তবে এটা মানুষের দায়িত্ব ও ইচ্ছে যে নিজের মধ্যে ঈশ্বরকে প্রবেশ করতে দেবে কি না, আর তা করতে হলে তাকে সীমাহীন কষ্ট আর সংগ্রামের ভেতর দিয়ে অতিক্রম করতে হবে। আর এখানেই মানুষের বিচারের প্রশ্নটি এসে যায়। মানে তার সবকিছুই স্রষ্টা করেন তবে সেটা মানুষের ইচ্ছায়ই। মানুষ না চাইলে বা না চেষ্টা করলে স্রষ্টা তার ভেতরে প্রবেশ করেন না, এটাই নিয়ম প্রকৃতির,
তাই যেহেতু কিছু না থাকলেও মানুষের ইচ্ছা শক্তিকে একেবারে অনন্য ও সম্পূর্ণ মানুষের নিজ নিয়ন্ত্রনাধীন করা হয়েছে, তাই মানুষের বিচারের প্রশ্নটি এসে যায় তাই বিচার হবে । ধন্যবাদ।
@একা,
আমারও তাই মনে হয় আপনার বেশী বেশী নামাজ পড়া উচিত তাহলে আপনার কোমরের ব্যথা সেরে যাবে। তবে ব্যক্তিগত ভাবে আমি দেখেছি আমাদের দেশে অধিকাংশ ডাক্তাররা হয় তাবলীগ জামাতের সদস্য নয়ত ধর্মীয় রাজনীতির সাথে জড়িত। বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করা ইঞ্জিনীয়ারদের বেলায়ও একই ব্যাপার। আমার এক পরিচিত ইঞ্জিনীয়ার ডক্টরেট করতে আমেরিকা গিয়ে সেটল করেছে সেখানেই। প্রচন্ড নামাজী ও মৌলবাদি রাজনীতির সাথে জড়িত। বছর চার আগে দেশে এসে বিয়ে করে নিয়ে গেছে, এরই মধ্যে তিনটি সন্তান। স্ত্রীকে বাসার বাইরে তেমন বেরোতে দেয় না তাও খোদ আমেরিকাতেই। ইদানিং তার গ্রামের বাড়ীতে শুনেছি বেশ কয়েকটা মাদ্রাসা আর মসজিদে সাহায্য করছে ও করার প্রতিশ্র“তি দিয়েছে। বিষয়টা গবেষণা করার মত।
@ভবঘুরে,
বৈদেশ গ্যালে বেবাকেই দেহি লেবাস ধরে!! ইডা বুজবার পারিনা!! আজিব!! ঢাকায়ও আজকাল লেবাস ধরার প্রতিযোগীতা!! যাই কই!!?
@তানভী,
নিজেও ধরা শুরু কর।
এখন যৌবন যার…
বিসমল্লাহ বলে আল্লাহর নামে পড়ুন কোরানের সুরা আল্ হাদীদের ২০ নং আয়াত-
Know that the life of the world is merely a game and a diversion and ostentation, and a cause of boasting among your selves and trying to outdo one another in wealth and children, like the plant-growth after rain, which delights the cultivators. But then it withers, you see it turning yellow, and then it becomes broken stubble. In the hereafter there is terrible punishment, but also forgiveness from Allah and His good pleasure. The life of the world is nothing but the enjoyment of delusion.
সুরা আল্ আলা, আয়াত ১৬/১৭-
Yet still you prefer the life of the world, when the hereafter is better and longer lasting.
সুরা আন্-কাবুত, আয়াত ৬৪-
The life of the world is nothing but a game and a diversion. The abode of the hereafter – that is truly Life, if they only knew.
আর স্বচক্ষে দেখুন আল্লাহর আর্টিষ্ট হারুন ইয়াহিয়ার মনোরম বেহেস্তখানা।
@আকাশ মালিক, যে তিনটি বানী আপনি উদ্ধৃত করলেন তা মনে করি খুবই যুক্তিযুক্ত, একটু চিন্তা করলেই টের পাবেন। ধন্যবাদ। :-/ 😕 :-/
আর হ্যা জনাব হারূন ইয়াহিয়ার অতি চমৎকার দুনিয়াবী বেহেস্ত দেখার পর আমার পেটের খাদ্যগুলো মুখ দিয়ে বের হইবার জন্য আমার কাছে খালি ফরিয়াদ ই করছিল না বরং রীতিমত বিদ্রোহ করা শুরু করছিল, আমি অনেক বুঝিয়ে তাদের থামিয়েছি।(প্রথম পাতা, মানে শুরুয়াৎ দেখার পর আর ভেতরে প্রবেশ করিনি, না জানি প্রবেশ করলে কি ভয়ানক ব্যাধিই না আমার জন্য অপেক্ষা করছিল বাপ্রে!! 🙁 )
@আকাশ মালিক,
ইয়াহিয়া সাহেবের বেহেশতের এমন নিখুত ভিজ়ুয়াল প্রেজেন্টেশন নি:সন্দেহে আপনাদের নাস্তিক কুলকে বিশ্বাসীতে পরিনত হবার প্রেরনা যোগাবে।
উনি দোজখের এমন কিছু বানান নাই? তবেই না তূলনাটা আরো ভালভাবে করতে পারতেন।
@আদিল মাহমুদ,
হারুন ইয়াহিয়া সাহেবের এরকম করার অধিকার আছে কি না? তা আমার জানা নেই। কারন, আমার জানা মতে পৃথিবীর কোন জায়গা কে বেহেস্তের মত বলতেও নাকি, বড় ধরনের সমস্যা আছে। বলার নিয়ম নেই। সেখানে তিনি কিভাবে এটি করেন তা আমার জানা নেই।
তবে হারুন ইয়াহিয়া সাহেব এর শৌল্পিক মনকে শ্রদ্ধা না করে উপায় নেই। একজন শিল্পি হিসাবে উনি আমাদের ধন্যবাদ পেতেই পারেন।
@ফুয়াদ,
কথা সত্য। শিল্পের সৌন্দর্যের প্রসংশা করতেই হবে, সে যেইই করুক না কেন। তবে ইয়াহিয়া সাহেবের এই শিল্প দেখলে কেমন যেন বিদেশী কার্টুন ছবির কথা মনে হয়।
সহি ইসলামী দৃষ্টিতে মনে হয় ইয়াহিয়া সাহেব চরম গুনাহের কাজ করেছে। কেয়ামতের দিন ওনার কপালে যথেষ্ট খারাপী আছে আমি দেখতে পাচ্ছি। যে সে বললে বিশ্বাস করতাম না, বলেছেন আপনারই প্রিয় সদালাপ সাইটের একজন লেখক।
সূত্রঃ
আমি তো ষ্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি হারুন ইয়াহিয়া সাহেব জীবন্ত মাছ ঘোড়া এসব তার নিদারুন শিল্পে ব্যাবহার করেছেন। আশা করি এ নিয়ে আমার সাথে তর্ক কররেন না, করলে এই লেখক বা ইয়াহিয়া সাহেবের সাথে করেন।
আগ্রহী পাঠকরা উপরের প্রবন্ধ পড়ে দেখতে পারেন, বাংলা নববর্ষ হারাম প্রমানে বেশ কনভিন্সিং প্রমান আছে।
@আদিল মাহমুদ,
মুসলিম ৫৫ সাধারনত ব্লগিয় ক্যাচালে অংশ গ্রহন করেন না। উনার কথা উনি আপন মনে বলে যান, কে কি বলল তা কেয়ার করেন না। উনার আকিদা বিষয়ক লেখা গুলি পড়তে পারেন। আপনি জানেন? উনাকে সামুতে বিনা কারনে উনাকে জেনারেল থেকে ব্যান করা হয়েছে। উনার দোষ একটি-ই উনি নাকি শুধু ধর্ম নিয়ে লেখেন।
তবে আপনি যে পয়েন্টে ধরছেন হাদিস দিয়ে তা হারুন ঈয়াহিয়া নিজেকে ডিফেন্ড করতে পারবেন ইজিলি। কারন গ্রাফিক্স আর বাস্তবের ছবি যা মুর্তির কাছা কছি নিতে পারে তা এক কথা নয়। ইলেক্ট্রনিক বিষয় গুলি সাধারনত ঐ অবস্থানে পরে না। তবে এ ক্ষেতে ভিন্ন মত তো আছেই। যাইহোক, এ ব্যাপারে আর আলাপ না বাড়াই, আপনিও চাইবেন না আশাকরি।
@ফুয়াদ,
আপনার মাননীয় লেখক যে লেখা দিয়েছেন তাতে উনি গ্রাফিক্স, ডিজিটাল, হাতে বানানো মূর্তি এসব কিছুর ক্লাসিফিকেশন করেননি।
ওনার দোষও দেওয়া যায় না, যে সময়কার হাদিসের সূত্র দিয়ে এসব নির্দেশাবলী আবিষ্কার উনি করেছেন সে সময়কার হাদিসে ইলেক্ট্রনিক্স ছবির কোন নির্দেশনা পাওয়া গেলে যাবতীয় নাস্তিক কুল কূটতর্ক ছেড়ে আস্তিক হয়ে যেতেন।
ওসব হাদীস আমি আসলেই মন থেকে বিশ্বাস করলে ডিফেন্ড করার জন্য নিজের সুবিধে মত যুক্তি বানিয়ে নিতাম না। হারুন ইয়াহিয়া সাহেব জীবন্ত ছবিই ব্যাবহার করেছেন, সেটা ডিজিটাল নাকি হাতে আঁকা না কি তাতে কিছু যায় আসে? সহি হাদিস আর একবার পড়ে আমাকে দেখান এখানে কোথায় এসব গ্রাফিক্স, ডিজিটাল আর্ট, হাতে তৈরী প্রতিমার ভেদাভেদ আছেঃ
হতে পারে সে ছবির নির্মাতা ইয়াহিয়া সাহেব নিজে নন, তবে নিঃসন্দেহে সেই অতি বড় শিরকী টাইপের পাপ উনি পাপ হিসেবে দেখেননি, নইলে নিজে কেন সে পাপের ফসল ব্যাবহার করতে যাবেন?
আর লেখক কে কি বলল কেয়ার করেন না বলে কি উনি ভুল কিছু বললে তা বাকিরা বিনা আপত্তিতে ছেড়ে দেবেন? মৌনতা অসম্মতির নয়, সম্মতির লক্ষন। উনি তো ধরেই নেবেন যে ওনার লেখা এতই নিখুত যে কেউই আপত্তি করছেন না। যাক, সে আপনাদের ব্যাপার। আমি ওনার লেখার মূল বক্তব্য এখানে আলোচনা করতে চাই না, কারন সেই লেখক এখানে নেই, লেখাও এই সাইটের নয়।
@আদিল মাহমুদ,
হারুন ইয়াহিয়া সাহেব কে ডিফেন্ড করার ইচ্ছা আমার নেই, যেহেতু তিনি এই ফোরামে নেই। এই ফোরামে কে কি বলল তাতে উনার কিছু যায় আসার কারন ও নেই। তাই আমি কেন শুধু শুধু কেন কষ্ট করতে যাব। মুসলিম৫৫ ভাই, কে প্রশ্ন করলে সাধারনত তিনি উত্তর দেন না। পর্বর্তী পোষ্ট দরকার মনে করলে আলোচনা করেন। এর বেশী কিছু করেন না, কারো পোষ্টে সাধারনত কমেন্ট ও করেন না। শুধু বেসিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
শিয়ারা কিন্তু ছবি আকে, নিচের ছবিটি দেখুন একজন ইরানী ইমাম মালেকি একেছেন।
[img]http://onionesquereality.files.wordpress.com/2009/09/2omens-of-hafez.jpg?w=500&h=671[/img]
যাইহোক, উপরে আপনি যে পয়েন্ট ধরেছেন ওই পয়েন্টে আমার ভিন্ন কিছু কথা ছিল, যা বলে এখানে আলোচনা বারাইতে চাই না।
@ফুয়াদ,
শুধু শিয়ারা না, সুন্নীরাও, এমনকি সেরা পূণ্যভূমি সৌদী আরবেও ছবি আঁকা, এমনকি মূর্তি বানানোও হয়। কাবা শরিফের মাত্র অল্প কিছুদুরেই সুপার মার্কেতে আধা নগ্ন নারীর ম্যানিকুইন কাপড়ের দোকানে ব্যাবহার হয়।
এসব কথা আমাকে বলার প্রয়ো্যন নেই। আমি শুধু তত্ত্ব আর বাস্তবের ফারাক দেখালাম।
@ফুয়াদ,
এটা আঁকা ছবি? আপনি শিওর?
@সাইফুল ইসলাম,
আমার মনেও প্রশ্ন জেগেছিল। তবে বেহুদা কথা বাড়াইনি।
যদি আসলেই আঁকা ছবি হয় তো বলতে হবে আমার জীবনের দেখা অন্যতম সেরা হাতে আঁকা ছবি। ফুয়াদ ভাই বড়সড় ধন্যবাদ পাবেন।
@আদিল মাহমুদ, @সাইফুল ইসলাম,
হ্যা হাতে আকা ছবি, আমিও প্রথমে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম মনে হইতেছিল ক্যামেরার তোলা।
তার আরেকটি আকা পিকচার দেখেন,
তাকে নাকি বাস্তব ছবি অংকন কারী বলা হয়। এখানে তার আকা কিছু ছবি দেখেন[img]http://i229.photobucket.com/albums/ee171/sgrao/GreatpaintingsofImanMaleki.jpg[/img]
@ফুয়াদ,
আপনের দেওয়া সেরা কমেন্ট এইটা।
ধর্ম ফর্ম নিয়া হেদায়েত বাদ দিয়া এইসব দেন।
@আদিল মাহমুদ,
আমার কাছে ইসলামিক আর্ট নামে ইরানের একটি বই আছে। সেখানে বেশ কয়েক জায়গায় আদম হাওয়ার উলংগ ছবি আছে।
যে সব হাদিসের উল্লেখ করেছেন শিয়ারা কেন মানে না? ওদের কি আজাবের ভয় নাই? নাকি ওরা মনে করে ওসব হাদিস ভুয়া।
@মাহফুজ,
ইরানের একটি অঞ্চলে এমনকি বালু দিয়ে প্রতি বছর মূর্তি গড়ার আয়োজনও হয়। ইরানে অজস্র প্রাচীন ও বর্তমান যুগেরও মানুষ সহ জীবন্ত প্রানীর আর্ট, ম্যূরাল আছে। সেখানে কেউ সেগুলি গলায় দড়ি বেধে গভীর রাতে টানাটানি করে ফেলে দেয় না।
@মাহফুজ,
শিয়া এবং কিছু সংখ্যক সুন্নি মনে করে, আল্লাহ পাকের একটি নাম হচ্ছে শিল্পি, তাহলে তো আল্লাহ পাকের গুনের দিকে লক্ষ্য করে তারাও শিল্প চর্চা করতে পারে। এটাই ইরানী শিল্পিদের যুক্তি। আর আমি যতদূর জানি তারা বুখারি কিংবা মুসলিম শরীফ তারা মানে না।
@ফুয়াদ,
একটি ভুল হয়ে গেছে, সংশোধনঃ আমি যতদূর জানি তারা(এই তারা শুধু শিয়ারা সুন্নি নয়) বুখারি কিংবা মুসলিম শরীফ তারা মানে না।
@আকাশ মালিক,
ইয়াহিয়ার বেহেশত দেইখা পুরাই টাসকি!! হা হা প গে!! :lotpot: পুরাটা দেখি নাই। একপাতা দেইখাই কাইত!! হুর পরির ছবি টবি থাকলে জানান দেন!! আরেক দফা ভিজিট মারি!!!
@তানভী,
হারুন ইয়াহিয়ার ঐ কাজ থেকে বর্তমান পৃথিবীর বহু স্থান অনেক অনেক সুন্দর। বলতে গেলে দারুন। যদিও হারুন ইয়াহির শৌল্পিক কাজ কে প্রসংসা না করে উপায় নেই। কিন্তু তা আর যাইহোক, এই পৃথিবীর ধারে কাছেও আসতে পারেনি। বেহেস্ত তো বহু দূরের বিষয়।
@তানভী,
আবুল কাসেম ভাইয়ের ইসলামিক ভুদুস বইটা কি দেখেছেন? ওখানে চমৎকার চমৎকার হুর পাইবেন। শুধু হুর না সাকীও পাইবেন?
@মাহফুজ,
না এই বইটা পাই নাই। ই বুক হইলে সাপ্লাই দেন। tanvy158@gmail. com
@তানভী,
এখানে দেখা যেতে পারে
@আকাশ মালিক,
আপনার দেখানো আল্লাহর আর্টিষ্ট হারুন ইয়াহিয়ার ১৪ পৃষ্ঠা বেহেস্তখানা দেখলাম কিন্তু কোন হুর পরী কিম্বা গেলমান চোখে পড়লো না। এর চেয়ে আমাদের আবুল কাসেম ভাইয়ের ইসলামিক ভুদুস অনেক ভালো।
আকাশ ভাই, আপনি কোন বেহেস্তে যেতে চান? হারুন ইয়াহিয়ার নাকি আবুল কাসেম ভাইয়ের।
আপনাকে অনেক শুকরিয়া হুরবিহীন বেহেস্ত দেখানোর জন্য।
@মাহফুজ,
এবার বুঝুন ঠেলা। কোরান পড়ে চোখের সামনে দৃশ্যমান দুনিয়াকে না বুঝলেও চোখের আড়ালে অদৃশ্য আখেরাত বুঝা হয়ে গেছে। এটাকে কি অন্ধের হাতী দর্শণ বলে? আরেকজন ১৫ শো বছর তল্লাশী করেও ( নাকি ঘোড়ার ঘাস কেটেও ) মুসলমান বৈজ্ঞানিকেরা যখন জ্বীন আবিষ্কার করতে পারলোনা, তখন তিনি গ্যারান্টি দিচ্ছেন- জ্বীন একদিন অবশ্যই আবিষ্কার হবে, হতে হবে, কারণ এ নাম কোরানে উল্লেখ করা।
তারা এ সমস্ত বলার কারণ হলো, আল্লাহ বা মুহাম্মদ, বা হারুন ইয়াহিয়ার তৈ্রী ঐ বেহেস্ত খানা। এখানে হারুন সাহেবের উপর কোন কম্পলেইন বা অভিযোগ করা ঠিক হবেনা। এই বেহেশ্তের ডিজাইনার বা পরিকল্পনাকারী, আর্কিটেক্টার নবী মুহাম্মদ, মেটেরিয়েল (বা ইংলো-বাংলা ভাষায়) মাল সাপ্লাইয়ার আল্লাহ, হারুন একজন বিল্ডার বা রাজমিস্ত্রী মাত্র।
এই বেহেস্তের লোভ দেখায়ে একদিন মুহাম্মদ আরব মরুবাসীকে বোকা বানিয়েছিলেন, আর আজ বিশ্বের মুসলমানকে বোকা বানাচ্ছেন হারুন ইয়াহিয়া। তাই বাংলা ব্লগ সমুহ হারুন ইয়াহিয়ার প্রশংসা ও সমর্থনে মুসলমানদের লেখায় ভরপুর।
@আকাশ মালিক,
দারুন বলেছেন!! এই কথাগুলোর জন্য আপনার সাথে আমার মোলাকাত করতে ইচ্ছে করছে। এমন সুন্দর কথা আমার মাথায় খেললো না কেন?
আপনি সব সময়ই সুন্দর সুন্দর কথা বলেন। আমাকে একটু শিখিয়ে দেন না ভাই। আপনার ‘আশেয়া’ তো চমৎকার লাগে। অন্তত ১০ জনকে জোরে জোরে পড়ে শুনিয়েছি।
@আকাশ মালিক,
আমার কেন জানি সন্দেহ হয় যে হারূণ ইয়াহিয়া কোরআন পড়ে থাকলেও ভাল মত বুঝেন নাই। তার কারণ কোরআনের বেহেশতে মাছ অথবা অন্য কোন সামুদ্রিক জীব্জন্তুর তেমন উল্লেখ নেই। আল্লাহ্পাক বলেছেন নেককার মুসলমানগণ বেহেশতে খাবে ফলমূল ও মুরগীর মাংস, পান করবে মদ আর উপভোগ করবে অপূর্ব সুন্দরী হুরদের—বিরামহীন ভাবে, একেবারে উন্মুক্ত ময়দানে। এছাড়া ইসলামী বেহেশ্ত হচ্ছে সপ্তাকাশে, অর্থাৎ পৃথিবীর মাটির উপরে।
কিন্তু হারূন ইয়াহিয়ার চিত্রে দেখা যায় ইসলামী বেহেশ্ত সমদ্রের তলদেশে, যেখানে রয়েছে সামূদ্রিক প্রাণী। কোথাও আমি একটি মুরগী দেখলাম না।
@ প্রিয় এডমিন,
ফুটনোট কিভাবে দিতে হয় বুঝতে পারছি না। আর সুপারস্ক্রিপ্ট কিভাবে দিবো?
আমাকে এব্যাপারে একটু সাহায্য করলে খুশি হবো।
@মাহফুজ,
ফুটনোট দেয়ার আলাদা কোন নিয়ম নেই। যেভাবে দিয়েছেন সেভাবেই দিতে হবে।
তবে সুপারস্ত্রিপ্ট লিখতে একটু কষ্ট করতে হবে। যে জায়গাটিকে সুপারস্ত্রিপ্ট করবেন তার আগে পরে < sup > < /sup> লিখতে হবে ( < বা > এর আগে পরে স্পেসটা দয়া করে দেবেন না, এখানে দেয়া হয়েছে আপনাকে কোডটা দেখানোর জন্য) । আপনার লেখার এডিটে গিয়ে সোর্সকোড দেখলেই বুঝবেন কিভাবে করতে হয়। মডারেটরের পক্ষ থেকে একটা তথ্যসূত্র সুপারস্ত্রিপ্ট করে দেয়া হয়েছে। এভাবে ভবিষ্যতে আপনি নিজেই দিতে পারবেন।
স্বশিক্ষিত মোকছেদ আলীর এই ‘তুচ্ছ, কিন্তু ধন্বন্তরী’ লেখার পাণ্ডুলিপির কিছু অংশ পানিতে ভিজিয়া যাওয়ায় পাঠোদ্ধার সম্ভব হয়নি। তিনি ফাউন্টেন পেন ব্যবহার করেছিলেন। কিছু কিছু অংশ আমি কনটেন্ট অনুসারে বাক্য গঠন করে মিলিয়ে দিয়েছি। -অনুলেখক, মাহফুজ।