৭১ সালের মাঝামাঝি থেকেই ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ অনেকটা অবশ্যম্ভাবী হয়ে দাড়ায়। যুদ্ধের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ভারতীয় নৌবাহিনী নভেম্বর মাসে সেসময়কার তাদের একমাত্র বিমানবাহী জাহাজ আইএনএস ভিক্রান্তকে বাংলাদেশ অভিমূখে পূর্ব দিকে বংগোপসাগর অভিমুখে সরানো শুরু করে। এ খবর পাকিস্তানী নৌবাহিনী জেনে যাবার পর পালটা ব্যাবস্থা হিসেবে তারাও বংগোপসাগর অভিমুখে ভিক্রান্তকে ঠেকানোর উপযুক্ত ব্যাবস্থা নেওয়ার কথা চিন্তা করতে থাকে। তখন বাংলাদেশের সীমানায় পাকিস্তানের যেসব নৌযান ছিল তার কোনটাই ভিক্রান্তের মত বিশাল অত্যাধুনিক বিমানবাহী জাহাজকে ঠেকাবোর মত ছিল না। তাই কতৃপক্ষকে করাচী বন্দর থেকে পুরো আরব সাগর ঘুরে বংগোপসাগরে পাড়ি দেবার একমাত্র নির্ভরযোগ্য যুদ্ধজাহাজ হিসেবে গাজীকেই পাঠাবার সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
কমান্ডার জাফর মোহাম্মদ খানের নেতৃত্বে মোট ৯২ জন নৌসেনা সমেত ৭১ এর ১৪ই নভেম্বর গাজী করাচি বন্দর থেকে তার যাত্রা শুরু করে। গাজীকে পাড়ি দিতে হবে পুরো ৩ হাজার মাইল। পাক ইন্টেলিজেন্সের কাছে পাকা খবর আছে ভিক্রান্ত তখন ভারতীয় নৌবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় সদর দফতর বংগপোসাগরের তীরে বিশাখাপতনামে অবস্থান করছে। তাই গাজীর মিশন; আইএনএস ভিক্রান্তকে ডুবিয়ে দেওয়া। সাথে সাথে বিশাখাপতনাম বন্দরের আশে পাশে মাইন ফেলে আসা যাতে ভারতীয় নৌবাহিনীর অন্য জাহাজগুলিও বন্দর থেকে বের হতে না পারে। গাজীর সফলতার সাথে পূর্বাঞ্চলের যুদ্ধের গুরুত্ত্ব অনেক, কারন গাজী সফল হতে পারলে বংগোপসাগরে পাক নৌবাহিনী একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করতে পারবে, আবার সফল হতে না পারলে ভারতীয় ভিক্রান্ত একতরফাভাবে বংগোপসাগরে আধিপত্য বিস্তার করবে।
নভেম্বর এর শেষ নাগাদ গাজী পৌছে যায় বিশাখাপতনামের কাছাকাছি। তবে যেমনটি আশা করা হয়েছিল, এর মিশন আর গোপন থাকে না। ভারতীয় ইন্টেলিজেন্স এর উপস্থিতি জেনে ফেলে। ভারতের ততকালীন নেভাল ইন্টেলিজেন্স প্রধান মিহির কুমার বোস পরে জানান যে গাজী থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে পাক নৌঘাটিতে পাঠানো একটি মেসেজ তারা সফলভাবে ইন্টারসেপ্ট করতে পারেন। সে মেসেজের মূল বিষয় ছিল একটি বিশেষ ধরনের লুব্রিক্যান্ট অয়েল, যা শুধুমাত্র সাবমেরিনেই ব্যাবহার করা হয়। এর থেকেই ভারতীয় নৌবাহিনী সাবমেরিনের উপস্থিতি নিশ্চিতভাবে টের পায় ও কোনরকম ঝুকে না নিয়ে গাজীর চোখ এড়িয়ে দ্রুততার সাথে বিক্রান্তকে বিশাখাপতনাম থেকে আন্দামানে সরিয়ে নেয়। সাথে সাথে ভারতীয় নৌ কর্তাদের মাথায় খেলে যায় উলটো শিকারীকেই শিকারে পরিণত করার এক পরিকল্পনা। পূর্বাঞ্চলীয় নৌপ্রধান এডমিরাল কৃষনন সিদ্ধান্ত নেন গাজীকে ভিক্রান্তের টোপ দেখিয়ে ফাদে ফেলার। তারা ভান করার সিদ্ধান্ত নেন যে ভিক্রান্ত এখনো বিশাখাপতনামের উপকুলেই আছে। গাজীর কাছে তা প্রকাশ করতে তারা ইচ্ছাকৃতভাবে সিকিউরিটি সাইলেন্স ভেঙ্গে ভিক্রান্তের ছদ্মনামে একটি ভূয়া মেসেজ প্রচার করেন। তাতে ভিক্রান্তের একজন নৌসেনা তার অসূস্থ মায়ের শরীরের খবর জানতে চাচ্ছে। তাদের কৌশল কাজে দিল। গাজীর ট্রান্সমিটারে এ খবর ধরা পড়ল ও তারা শিকার ভিক্রান্তের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত থাকল। ভারতীয় নৌবাহিনীর আরেকটি ডেষ্ট্রয়ার রাজপুতকে দায়িত্ব দেওয়া হল ভিক্রান্তের ভূমিকায় অভিনয় করার।
এ সময় ভারতীয় নৌবাহিনী কয়েকবার চেষ্টা করেও গাজীর অবস্থান বের করতে পারেনি। অবশেষে এলো ৩রা ডিসেম্বর, ভারত-পাকিস্তান আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ শুরু হল। যুদ্ধ শুরুর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরের ঘটনা, ঠিক মধ্যরাত। ভিক্রান্তের ভূমিকায় অভিনয় করে যাওয়া ভারতীয় ডেষ্ট্রয়ার রাজপুত এমনই একটা অভিযানে বন্দর থেকে বের হয়ে আসছিল। এ সময় রাজপুতের ক্যাপ্টেন ঈন্দর সিং বন্দরের সরু প্রবেশমুখের মাত্র আধা মাইল দুরে পানিতে অস্বাভাবিক আলোড়ন দেখতে পান। তার অভিজ্ঞ চোখ এই আলোড়নকে সাবমেরিনের সম্ভাব্য অবস্থান হিসেবে হুশিয়ারি দিল। তিনি কোন ঝুকি না নিয়ে দ্রুত সে যায়গায় গিয়ে দুটো ডেপথ চার্জ (সাবমেরিন ধংসের বড় ড্রামের মত বোমা) পানিতে ফেলে ওই অঞ্চল ছেড়ে চলে যান। রাজপুত সেই ডেপথ চার্জের আর কোন ফল সেরাতে বুঝতে পারেনি। কিন্তু এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর বিশাখাপতনাম উপকুলে প্রচন্ড বিষ্ফোড়নের আওয়াজ শোনা যায়। সেই বিষ্ফোড়ন এতই জোরালো ছিল যে অনেক বাড়ির কাচের জানালা ভেঙ্গে যায়। যদিও কেউ তখনো বুঝতে পারেনি সেই বিষ্ফোড়নের উতস কি। সে রাতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর ভাষন শুনতে বহু লোক জেগে ছিল, এই বিকট আওয়াজে তাদের ধারনা হয়েছিল ভূমিকম্প হচ্ছে।
এর দুদিন পর সকালবেলায় দুজন জেলে বন্দরের নৌদফতরে সাগর থেকে কুড়িয়ে পাওয়া কিছু উপকরন দেখাতে নিয়ে এলো। সেগুলির মধ্যে ছিল কোন জাহাজের লগ বই এর কিছু পাতা, একটি মার্কিন ছাপ ওয়ালা ছিড়ে যাওয়া লাইফ জ্যাকেটের অংশ যা ভারতীয় নৌবাহিনী ব্যাবহার করে না। সাথে সাথে ভারতীয় নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী জাহাজ নিশতার কে জেলেদের নির্দেশিত স্থানে পাঠানো হয়। নৌবাহিনীর ডুবুরীরা পানিতে ডুব দিয়ে সাগর তলে নাক ভাংগা অবস্থায় মৃত গাজীকে দেখতে পায়। গাজীর সাথে তার ৯২ জন ক্রু সবারই মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে। ভারতীয় নৌবাহিনী ৩ জন পাক নাবিকের মৃতদেহ উদ্ধার করে নাবিকদের প্রচলিত উপায়ে সতকার করে বলে পরে জানিয়েছে। এটাই বংগোপসাগরর প্রথম ও এখন পর্যন্ত একমাত্র সাবমেরিন ডুবির ঘটনা।
তবে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ কোনদিন গাজীর ডুবে যাওয়াকে ভারতীয় নৌবাহিনীর কৃতিত্ত্ব বলে স্বীকার করেনি। তাদের মতে গাজী নিছক দূর্ঘটনার স্বীকার। হয় গাজীর নিজের ১০টা টর্পেডোর কোনটা রাজপুতের ডেপথ চার্জের শক ওয়েভের কারনে বিষ্ফোড়িত হয়, অথবা নিজের পাতা মাইনের কোনটার সাথে তার নিজেরই আঘাত লেগে সে ঘায়েল হয়। প্রকৃত ঘটনা মনে হয় কোনদিনই জানা যাবে না কারন সেরাতে গাজীর একজনও নৌসেনাও সাক্ষ্য দেবার জন্য বাচেনি। যুদ্ধের পরে মার্কিন এবং রুশ দুই দেশের পক্ষ থেকেই নিজ খরচে সাগরতল থেকে গাজীকে তুলে আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল যা ভারত প্রত্যাখান করে। ভারতীয় ভার্ষনেও কিছুটা অমিল আছে। ভারতীয় নৌ ইন্টেলিজেন্সের মিহির কুমার রায় পরে তার বইতে নিজেই স্বীকার করেছেন যে গাজী ডোবার মুহুর্তে সে অঞ্চলে কোন ভারতীয় যুদ্ধ জাহাজ ছিল না। যদিও এডমিরাল কৃষনন তার বইতে বলেছেন যে ডেষ্ট্রয়ার রাজপূত যে অবস্থানে ডেপথ চার্জ ফেলে বলে রিপোর্ট করে ঠিক সে যায়গাতেই গাজীকে পাওয়া যায়। সময়ও মিলে যায়। গাজীর উদ্ধার করা একটি ঘড়িতে দেখা যায় যে সেটা ঠিক ১২:১৫ মিনিটে বন্ধ হয়, রাজপুত ডেপথ চার্জ ফেলে মোটামুটি একই সময়ে। অসমর্থিত কিছু সূত্রে জানা যায় যে ভারতীয় নৌবাহিনী ২০০৩ সালে আরেবার ১০ জন ডুবুরীকে সাগরতলে গাজী ডোবার যায়গায় পাঠায়। সেসব ডুবুরী রায় দেয় কোন আভ্যন্তরীন বিষ্ফোড়নের ফলেই গাজী ডুবে যায়, যদিও কারনটা জানা যায়নি।
যুদ্ধের সময়ে এ জাতীয় দাবী পালটা দাবী অনেকসময়ই বেশ ধোয়াশার সৃষ্টি করে। মজার ব্যাপার হল গাজী নিজেই ৬৫ সালের যুদ্ধে একবার এহেন দাবী করেছিল যা পরে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে গাজী ভারতীয় ফ্রীগেট ব্রক্ষ্মপূত্রকে ৪ টি টর্পেডো আঘাতের দাবী করে, তার ৩ টি নিশ্চিত ছিল বলে গাজীর তখনকার কমান্ডার জোর দাবী করেন। এই দাবীর ভিত্তিতে গাজীকে ব্রক্ষ্মপূত্র “ডোবানোর” কৃতিত্ত্বের জন্য করাচী বন্দরে বীরোচিত সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। যদিও ব্রক্ষ্মপূত্রের সেবার আসলে কিছুই হয়নি বলে পরে জানা যায়। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বিশাখাপত্তমে গাজী ডোবানো স্মরন করতে একটি বিজয় স্তম্ভ বানায়, পাকিস্তান ২০০০ সালে গাজী নামে আরেকটি নুতন সাবমেরিন তার বহরে যোগ করে। রাজপুতের কমান্ডার ঈন্দর সিংকে দেওয়া হয় বীর চক্র পদক।
তবে কারন যাই হোক, গাজী ডুবে যাওয়ার ফলে আমাদের বাংলাদেশের উপকুলের নৌযুদ্ধে পাকনৌবাহিনী যুদ্ধ শুরু হবার হবার থেকেই বস্তুত পরাজিত হয়। এরপর ভারতীয় বিমানবাহী জাহাজ ভিক্রান্ত সম্পূর্ণ বিনা বাধায় বংগোপসাগরে প্রবেশ করে, ভিক্রান্ত থেকে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বন্দরে বিমান হামলা করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করা হয় কোন উল্লেখযোগ্য প্রতিরোধ ছাড়াই। চট্টগ্রাম বন্দরের হামলায় ভিক্রান্তের মাত্র একটি বিমান ভূমি থেকে ছোড়া এন্টি-এয়ারক্র্যাফটের গোলায় সামান্য আহত হয়, যদিও সেটা নির্বিঘ্নে বিমানে ফিরে আসে এবং সামান্য মেরামতির পরেই আবারো পূর্ণ কর্মোক্ষম হয়। নৌপথে পাক বাহিনীর হাই অফিশিয়ালদের পালানোর একটা গোপন পরিকল্পনাও এর ফলে বাতিল হয়ে যায়। যুদ্ধের বাকি কটা দিন ভিক্রান্ত আর ভারতীয় অন্য কয়েকটি জাহাজ মিলে ছোট বড় মোট ২৪টি পাকিস্তানী জাহাজ ডোবায়।
তবে গোবরে জন্মেছে বলে পদ্মফুল-ও গোবর হয়ে যায় না। গড়পড়তা মানুষের মত গোবর-পদ্মফুল মিলে মিশে একাকার করে ফেলাও ঠিক না। কি বলেন?
যাহোক……
তথাস্তু!! আপনার (বা আপনাদের) বাসনা পূর্ণ করুন!!
বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।
@অনন্ত বিজয় দাশ,
আমি তো তাইই বললাম, নাকি? আমরাতো গোবরটাকেই ঘৃণা করছি। পদ্মফুলটাকে নয়।
ধন্যবাদ, স্যারের এই কমেন্টটি দৈনিক প্রথম আলো থেকে জেনেছিলাম। ভোরের কাগজ থেকে সাক্ষাৎকারটি পড়া হয়েছিল অনেক আগে, কিন্তু আজ আর মনে নেই বিস্তারিত কিছু।
@অনন্ত বিজয় দাশ, @সাইফুল ইসলাম আমার সমবয়সি ( born in 1973) এক অবাংলি ডাকতার কাজ করেন brooklyn hospital এ, ওনার নাম Dr. Kashem এবং jackson heights এলাকায় সুপরিচিত, উনার বাবার ( jackson heights এ সুপরিচিত ) পরিবারের 21 জন কে উনার সামনেই হত্যা করা হয় April মাসের 1971 এ শান্তাহারে।হত্যাকারিদের race ছিল বান্গালি কিন্ত তাই বলে তারা কখনই সমগ্র জাতিকে খারাপ বলেন না, আমি জানি Dr. Kashem অনন্ত পক্খে এক শত এর অধীক (illegaly residing bengalis in New york or without insurance) এর বিনা খরচে চিকিত্সার ব্যবস্থা করেন।আমি আপনাকে তাদের phone numbers ইমেল করেত পারি। আমরা ৪ বছর new york এ room mate ছিলাম এবং আমি বাংলা তার কাছ থেকেই শিখছিলাম।আমরা জন্ম প্রজন্ম থেকে ঘ্রনা করতে আসতেছি একে অন্যকে এবং বতর্মানে এটার পরিসর হয়েছে নতুন দিগন্তে যেমন উত্তর ভারতীয় বনাম মারাঠা,আসামি বনাম বাংলাদেশী বা উত্তর ভারতীয় ,শিখ বনাম উত্তর ভারতীয় বা হিনদু…..ইত্যাদি, এগুলো কি আদৌ থামবে ?
তাহলে আমরা এভাবে বলি– দুয়েকটি আশ্চর্যজনক ব্যতিক্রম ছাড়া (কারণ ব্যতিক্রম নিয়মকেই প্রতিষ্ঠা করে- প্রাবাদ) পাকিস্তানিরা প্রধানত গোঁড়া, সাম্প্রদায়িক,মোটা মাথা এবং রাজনৈতিক চেতনাহীন। রাজনৈতিক চেতনাহীন এজন্য বলছি যে এত বছর ধরে সেনা শাসন, তালেবানিজম এর প্রসার পাচ্ছে চেতনাহীনতার কারনে (অন্য আর্থসামাজিক কারণ ও আছে)। যে চেতনাহীনতা তাদের ৭১ এ ও ছিল।
এটাও স্বীকার করে নিই–
আসলেই জীবন ঠিক অংকের মত নয়। কিছু ছেলেমানুষি, কিছু আবেগ, কিছু রাগ মানুষের থাকেই। ভাই, যুক্তিবাদীরাওতো মানুষ 😀
****বাচ্চাগুলো আমার চাচাকে ছয়বার বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে মেরেছে। সরকারিভাবে মাফ চাইলে তখন ভেবে দেখা যাবে। কিন্তু তার আগ পর্যন্ত?
আদিল ভাই বলেছেনঃ “এমন উচ্চ লেভেলের ইন্টেলেক্টের একজনের নাম বকলম মোটেই মানায় না। নাম পাল্টান।”
— ইস এই কথাটা যদি আমার বাপরে বুঝান জাইতো! তার ধারনা আমি একটি উৎকৃষ্ট শ্রেণীর বলদ। :-X
তবে উনি আমার যোগ্য পিতা কিনা তা তিনি বলেন না :laugh:
কোন একটি পুরো জাতিকে ঘৃণা করাকে কিন্তু ঠিক যুক্তিবাদী মনোভাব বলা যায় না। এটাকে চরমপন্থা বলা যায়। আবেগ আর যুক্তি মিলিয়ে ফেলা অন্তত যুক্তিবাদীদের সাজে না। আসলেই অনেক পাকিস্তানীই আছেন আমাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। একজন পাঞ্জাবী কবির কথা পড়েছিলাম যিনি আমাদের জন্য কবিতা লিখে জেলে গিয়েছিলেন। এদেরকে কিভাবে ঘৃণা করা যায়? এটা ত রেসিজম ছাড়া আর কিছু না।
জাফর ইকবাল সাহেবের বাবা কে পাক আর্মিরা মেরে ফেলেছিল, আরো দূঃখের ব্যাপার; ঐ হত্যার কোনদিন বিচার হয়নি, হবেও না। তাই ওনার আবেগ নিঃসন্দেহে অনেক বেশী হবে। যুক্তিবোধ কাজ করবে না। তবে একজন নিরপেক্ষ লোক তো ব্যাপারটা সেভাবে দেখবে না।
আজকে ভারতের উপর আমাদের বিরক্ত হবার যথেষ্ট সংগত কারন আছে। তাই বলে আমরা বলা শুরু করব ভারতীয় মানেই পানিখেকো, জবরদখলকারী, সীমান্তে নীরিহ বাংলাদেশী হত্যাকারী? সব ভারতীয়দের আমি ঘৃণা করি?
তবে আমার মনে হয় এই ব্যাপারে পাকিস্তানীদের দায়িত্ব নি:সন্দেহে অনেক বেশী। তারা সরকারীভাবে কোনদিন ক্ষমা প্রকাশ ত দুরের কথা এমনকি দূঃখ প্রকাশও করেনি। উলটা তাদের কূটনীতিক ইরফান রাজা আমাদের রাজধানীতে দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যা তা বলেছে। তাকে শাস্তির যায়গায় ঊল্টো পারভেজ মোশারফ পুরষ্কৃত করেন বলে পরে জানা যায়। পারভেজ মোশারফ নিজে সম্ভবত ২০০২ সালে এসে ৭১ এর “বাড়াবাড়ির” জন্য দূ;খ প্রকাশের নামে আরো অপমান করে গেছে। তাতেই জোট সরকার বেজায় আনন্দিত হয়ে গেছিল।
পাকিস্তান এহেন আচরন ত্যাগ না করলে শুধু উম্মার বন্ধু, কওমের ভাই এ ধরনের গায়েবী কথাবার্তায় কোন কাজ হবে না। অতীত কখনোই ভোলা যায় না, তবে হয়ত জ্বালা কিছুটা হলেও লাঘব করা যায়।
@আদিল ভাই,
আদিল ভাই, প্রথম কথা হল আপনার বক্তব্য খুবই ধোয়াশা। আমি এর মর্ম উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়েছি। আচ্ছা আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় পাকিস্তান সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি? আপনি কি উত্তর দিবেন? পাকিস্তানের জনসংখ্যার একটা হিসাব নিয়ে তারপর কত জন আমাদের পক্ষে ছিল, কত জন বিপক্ষে ছিল, কত জন তখন তামুক খাচ্ছিল বলে নিরপেক্ষ ছিল এবং সেই জন্য আমি এত জনকে ঘৃনা করি,এত জনকে শ্রদ্ধা করি এবং এত জনকে কিছুই করি না এই পরিসংখান দিবেন?
আমরা বাংলাদেশীরা বাইরের পৃথিবীতে মুসলিম দেশ হিসেবে পরিচিত। কারন কি?বাংলাদেশে কি অন্য ধর্মের লোকজন নাই?
এখন যদি আমি বলি না না এ সবই তোমাদের ষড়যন্ত্র, আমি সাইফুল নাস্তিক আছি না? আমাকে তোমরা কেন গোনাতে ধরছ না?
তাহলে কেমন হয়?
পাকিস্তান জাতির কথা আমাকে সম্মানের সহিত বলতে হবে এবং এই কথা আমাকে একজন বাংলাদেশী শেখাচ্ছে এই জন্য আমি যারপর নাই আনন্দিত।
:rotfl:
@সাইফুল ইসলাম,
“পাকিস্তান সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি? আপনি কি উত্তর দিবেন”
– পাকিস্তান তো একটা রাজনৈতিক ভূখন্ডের নাম। সত্য বলতে আমি পাকিস্তানীদের সম্পর্কে পাইকারী ধারনা পোষন করি না। তারা বেশীরভাগই গোড়া, মাথায় বাস্তবতার জ্ঞানের ঘাটতি আছে, তবে সেইজন্য সবাইকে খারাপ একই দোষে দুষ্ট বলাটা অন্যায়। আমি বাস্তবিক কারনেই পাক সংগ এরাতে চাইব কাদের সাথে আমার চিন্তা চেতনা মনন মেলে না। এমনকি ৭১ এর ভুল স্বীকার করলেও তাদের অনেকের সাথেই আরো নানান কারনে আমার বনবে না। তবে বলে বসব না যে পাকিস্তানী মানেই আমি ঘৃনা করি।
আমেরিকায় কালোদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা বেশী, বাড়ি কিনলে কোন ভদ্রলোকে কালো এলাকায় কেনে না। কিন্তু কেউ এরাও কি কেউ বলে বসবেন যে আমি কালোদের ঘৃণা করি, বেটারা সব ঘাগু ক্রিমিনাল? এরাও কি কেউ খবর নিয়ে বলবে যে এত পারসেন্ট কালোকে ঘৃণা করি?
ভারতীয়দের ঘৃনা করার ব্যাপারে কি বলেন? তাদেরও পাইকারী হারে ঘৃণা করা উচিত কিনা? ৭১ এ সাহায্য করেছে তার মানে নিশ্চয়ই আমাদের নদীর পানি মেরে আমাদের শুকিয়ে মারার কোন রাইট তারা পায়নি।
@সাইফুল ইসলাম, প্রচুর বাংগালিরও নাগরিকত্ব ছিল পাকিস্তানি যেমন এ কে ফজলে হক ( পাকিস্তানের ভিত্তিস্থাপক ),হোসেন সোহার্ওয়াদী ….ইত্যাদিরাও কি আপনার গালির আওতায় আসছে। আমার সন্দেহ হয় আপনার মানসিক স্বাস্হের দিক থেকে।আপনি যদি এ কথা আমেরিকায় বলবেন ,আপনি জেলে যাবেন ( যদি আপনি মানুসিক দিক থেকে সুস্হ )।
@তানভী,
শিরোধার্য। :guru:
আদিল ভাই,
সত্যি বলছি মনে হল কোন থ্রিলার গল্প পড়লাম। দারুন লিখেছেন।
আমার মতে এ পর্যন্ত আপানার সেরা লেখা এটি (একান্তই ব্যক্তিগত মতামত)। এবং আরো ভালো জিনিস আসছে বলে ধরে নিচ্ছি। :guru:
@বকলম,
খুশী হলাম বকলম ভাই। এমন উচ্চ লেভেলের ইন্টেলেক্টের একজনের নাম বকলম মোটেই মানায় না। নাম পাল্টান।
দেখি; আরো দুয়েকটা ঝুলতে আছে। ডিসেম্বর থাকতে থাকতেই নামিয়ে দেব। মুশকিল হল বাংলা নেট জগতে মনে হয় ভারতের দালাল হিসেবে সুখ্যাতি হবে 🙂
অলরেডী কাল আমার ব্লগে একজন আমি শুধু ভারতের ভার্ষন লিখছি অভিযোগ করেছেন 😀
@আদিল মাহমুদ,
হুদাই আবজাব মানুষের কথাতে আবার লেখা বন্ধ করে দিয়েন না। আমাদের জন্য হলেও চালায়ে যান। অনেক উপকার হচ্ছে :rose:
@তানভী,
মাইনশের কথা শুনলে মুক্তমণার ঢুকি 🙂
@আদিল মাহমুদ,
একমত। :yes:
আদিল ভাইয়ের অসাধারণ লেখাগুলো পড়ার অপেক্ষায়……
এ লেখাটি ভালো লেগেছে। নতুন বেশ কিছু তথ্য পেলাম। বুঋতে পারলাম, জ্ঞানী মানুষের সান্নিধ্য কখনো বিফলে যায় না। :rose2:
@সৈকত চৌধুরী,
“বুঋতে পারলাম, জ্ঞানী মানুষের সান্নিধ্য কখনো বিফলে যায় না।”
কপি পেষ্ট জ্ঞান চর্চার মজাই এখানে।
ভাল লাগলে কৃতিত্ত্ব নিজের, খারাপ হলে মূল লেখার 😀
@মামুন এবং tausif,
সর্ব প্রথম কথা হলো আমি যা বলেছি তার জন্য কোন ভাবেই আমি লজ্জিত নই।
আমি মনে করি মানুষের যুক্তি অনুসারে কথা বলা উচিত, আমি সবসময় তা চেষ্টও করি। কিন্তু এই একটা ব্যাপার এ আমি কোন যুক্তি কখনই খুজি না, বলতে পারেন খোজার চেষ্টা করি না।
আরব ভূখন্ডের দেশ গুলোকে আমরা প্রগতিশীলরা কিন্তু সব সময়ই গোড়া বলে আসছি। আপনার কি ধারনা তারা সবাই এক একটা লাদেন? না, আরব দেশেই আলি সীনার মত লোকের জন্য হয়েছে। আবুল কাশেম সাহেবের লেখাটা তো এখনও আছেই খালেদ ওলিদকে নিয়ে। সবাই যেহেতু গোড়া না তাহলে ওদেরকে আপনি কি ভাবে ঢালাওভাবে গোড়া বলছেন?আসল কারন হলো ঐখানে যা ঘটছে তা বেশির ভাগ মানুষই সমর্থন করছে।তাই না?
ভারত আমাদের মুক্তি-যুদ্ধের সময় সহায়তা করে যদি এখনও পর্যন্ত আমাদের
কৃতজ্ঞতা পেতে পারে তাহলে ঐ একি লজিকএ পাকিস্তানও আমাদের ঘৃনা পাওয়ার যোগ্য। জানি এই কথাটা ডিপ্লোম্যাটিক দিক দিয়ে খুবি নিম্নমানের, কিন্তু আমি অন্তত পাকিস্তানের ক্ষেত্রে এই যুক্তিতের সন্তুষ্ট।
আর হ্যা, যদি আপনি পাহাড়ী আদিবাসীদের কে নিয়ে বলি। আগে বলি আপনার উপজাতি কথাটা সম্পুর্ন ভুল। উপজাতি বলে কোন definition নাই। আমি আদিবাসীদের সায়ত্বশাসনের পক্ষে। সায়ত্বশাসন পাওয়ার সমস্ত বৈশিষ্ট ওদের আছে।
মামুন,কথাটা ব্যক্তিগতভাবে নিবেন না আশা করি। পাকিস্তান জাতির সামনে আমি শুধু একটা আয়না ধরাতেই আপনি যেভাবে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন তাতে করে আমার আপনার লালন পালন সম্পর্কেই সন্দেহ জাগছে।
@সাইফুল ইসলাম,
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অনুপ্রাণিত প্রতিটি বাঙালিরই ‘পাকিস্তান’ নিয়ে কম-বেশি ঘৃণাবোধ কাজ করে। অস্বীকার করার কিছু নেই। অনেকেই প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে বলেন। যেমন একবার (৯৭/৯৮ সালের দিকে, সঠিক সময় মনে নেই) ভোরের কাগজে সাক্ষাৎকারে কোন এক প্রশ্নের প্রেক্ষিতে অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেছিলেন : “আমি ঘৃণা করি পাকিস্তানকে।” এই লাইনটাই সাক্ষাৎকারের হেডিং হয়েছিল। কেউ কেউ হয়তো দ্বিমত পোষণ করেছিল, জানি না, তবে প্রচণ্ড প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন স্যার, সাক্ষাৎকার থেকে, লোকমুখে শুনেছি। আবার যেমন ধরেন এই মুক্তমনা ব্লগে সাইফুল ইসলামও নিজের ভিতরের অনুভূতিটুকু প্রকাশ করেছেন নির্দ্বিধায়। এ নিয়ে আমার বলার কিছু নেই, তবে ঐ অনুভূতিটুকু আরেকটু শোভনভাবে প্রকাশ করলে হয়তো ভালো হত কিনা- ব্লগার সাইফুল ইসলাম ভেবে দেখবেন আশা করি।
৪৭-এর পর থেকে ৭১ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান) জনগণের প্রতি পাকিস্তান সরকার এবং তাদের সেনাবাহিনীর কৃত বর্বরোচিত-ঘৃণ্য কার্যকলাপের জন্য আমাদের কাছে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটির ভূখণ্ড-সরকার-জনগণ-প্রশাসন সব মিলে-মিশে একাকার হয়ে গেছে। সত্য, তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিশাল জনগোষ্ঠীর মৌন সমর্থন-ই বলি বা প্রকাশ্য সমর্থন বলি, ঐটা ছিল বলেই পাকিস্তান শাসক গোষ্ঠীর কোমরে এত জোর ছিল! বাঙালির রক্ত নিয়ে হোলি খেলায় মেতে উঠতে পেরেছিল!
পাশাপাশি ঐ সময় বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের দাবিতে প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়ে পাকিস্তানের বামপন্থী আন্দোলন কর্মী তাহিরা মাজহার আলী খান (পাকিস্তানের খ্যাতানামা লেখক তারিক আলী’র মা), মালিক জিলানি (মানবাধিকার কর্মী আসমা জাহাঙ্গীর-এর বাবা)-এর মত আরো অনেক ব্যক্তিরা পাকিস্তান সরকারের রোষানলে পড়েছিলেন, সে কথা আমরা ক’জন খবর রাখি? তাদেরকে কী পরিমাণ অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে, তা নিশ্চয়ই এই বাংলাদেশের ভুক্তভোগী জনগণকে বলে বর্ণনা করতে হবে না?
আমাদের ন্যায্য অধিকার, স্বাধীনতা, স্বাধীকারের আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণকারী পশ্চিম পাকিস্তানের সুহৃদদের অবদানকে কি অকুণ্ঠচিত্তে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছি কখনো? রাষ্ট্রীয়ভাবে না হোক, বেসরকারি পর্যায় থেকে? আমি সঠিক জানি না।
ঐ সুহৃদদের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে কাল-ভদ্রে দু-একটি শব্দ হয়তো বাংলাদেশের বিভিন্ন বুদ্ধিজীবীদের সাাৎকারের মধ্যে বেরিয়ে এসেছে, কিন্তু আনুষ্ঠানিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ নজরে আসেনি।
@অনন্ত বিজয় দাশ,
গোবরে পদ্মফুল থাকতেই পারে। তাই বলে তো গোবর পুরাটাই আর পদ্মফুল না। গোবরকে গোবর কইতে দিন! এতে অন্তত কিছু কষ্ট যদি লাঘব হয়!!
@ সাইফুল ভাই
ভাই শুধু শুধু ওগুলোকে কোন পশুর নামে নামাঙ্কিত করবেন না! এতে পশু বা প্রাণিগুলোর অপমান হয়!! প্রাণীগুলো ইতর বিশেষ হতে পারে, কিন্তু উহাদের ইতরামির তুলোনায় এসকল প্রাণী অনেক উচু শ্রেণীতে বাস করে!! তাই প্রাণীদের নামগুলোকে কলঙ্কিত করা হতে যথাসম্ভব বিরত থাকুন!
বাংলাদেশের এথনিক মাইনোরিটি’র প্রতি সম্পূর্ণ সম্মান, সহানুভূতি, সমর্থন, শ্রদ্ধা রেখেই বলছি : আদিবাসী বলতে যদি আদি-নিবাসী বুঝিয়ে থাকে, তাহলে বাংলাদেশের পাহাড়ী জনগোষ্ঠী যারা (কিছুদিন আগেও ‘উপজাতি’ হিসেবে তাদের-আমরা বাঙালি ভদ্দরনোকেরা সম্বোধন করতাম,) আজকে আদিবাসী হিসেবে পরিচিত, তারা সত্যিই কি এই বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডের আদি-নিবাসী?
প্রশ্নটি আমি মুক্তমনার বিদগ্ধ জ্ঞানী-গুনীর নিমিত্তে পেশ করিলাম। জানার আগ্রহ হচ্ছে।
প্রথম আলোতে তার এরকম একটি কলাম পড়েছি। যদ্দুর মনে আছে তিনি বলেছিলেন যে তিনি পাকিস্তানকে তীব্র ঘৃণা করেন। প্রবাসে পাকিস্তানী দোকানের মাংস খেতেন না এবং যেন পাকিস্তানের উপর দিয়ে না আসতে হয়, সেকারণে ভিন্ন এয়াররুটের প্লেনে প্রবাসী থাকা অবস্থায় বাংলাদেশে আসতেন।
তিনি এও বলেছিলেন, এই ঘৃণার জন্য তিনি বিন্দুমাত্র লজ্জিত নন আবার গর্বিতও নন; শুধুই বয়ে বেড়াচ্ছেন।
@সাইফুল ইসলাম,
আপনাকে বলব অনুগ্রহ করে আমার কমেন্টসটি আবারো পড়বেন।মনে হলো আপনি না বুঝে নিজের স্ব-বিরোধীতামূলক জবাবটি আমাকে দিয়েছেন।
:laugh: সর্ব প্রথম কথা হলো আমি যা বলেছি তার জন্য কোন ভাবেই আমি লজ্জিত নই।
আমি মনে করি মানুষের যুক্তি অনুসারে কথা বলা উচিত, আমি সবসময় তা চেষ্টও করি। কিন্তু এই একটা ব্যাপার এ আমি কোন যুক্তি কখনই খুজি না, বলতে পারেন খোজার চেষ্টা করি না। :lotpot:
যুক্তিবাদী হয়েও যুক্তি খোঁজেন না এটা কেমন কথা !!আর কেউ যখন ঐ রকম পরিস্হিতিতে বসবাস করে তখনই সে এক পেশে হয়ে যায় বা অন্ধত্ব অবলম্বন করে।এই জায়গাতেই আমি আপনাকে সমালোচনা করেছি,সমালোচনা করেছি যেহেতু আমরা আমাদেরকে সাংস্কৃতিকমনা ও মানবতাবাদী বলে গন্য করি তাই শালীনতামুলক শব্দ উচ্চারন করা কি ঠিক নয় ?।অন্য কোনও বিষয় নিয়ে নয় ।আপনি যেমন নিজেকে সাংস্কৃতিবান ও বিজ্ঞ বলে কাউকে শূয়রের বাচ্চা বলে গালি দেন তেমনি আমাদের দেশের মুসলমানরা যখন হিন্দুদেরকে মালু বলে গালি ও তু্চছ-তাচ্ছিল্য করে তখন কি আপনার অবস্হান সে-ই একই জায়গায় পড়ে বলে মনে করেন না?? আপনার লেখার জবাবে মনে হলো আপনার ধারনা আমি পাকিস্হানের পক্ষ নিয়েছি,মোটেই না,প্রশ্নই উঠে না,বরং সে-ই ৮৪/৮৫ সালে ভার্সিটিতে একদিকে জলপাই এরশাদ বিরোধী আন্দোলন এবং এই আন্দোলন কে কেন্দ্র করে ছূতা পেয়ে জামাতে-ই-ইসলামী যখন প্রকাশ্যে রাজপথে নামে তখন ৫ দলের ব্যানারে আমরাই সব চাইতে বেশী প্রতিবাদী ও সোচ্চার ছিলাম এবং এখনো আছি ও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত থাকব,এতে কোনো সন্দেহ নাই।আসলে মূল বিষয়টাতো হলো ক্ষমতার লড়াই এবং সেটা রাজনৈ্তিক ও ধর্মীয় পার্টি গুলির ক্ষমতার ধূম্রজালে পড়ে আমরা আমজনতা আজ,গতকাল,শত শত বছর ও হাজার হাজার বছর ধরে এ চক্রের হাতে জেলবন্দি হয়ে আছি,গেছি।এখান থেকেই মানুষ মুক্তি চায়,আমি চাই,আমরা চাই,সকল মানব জাতিই চায়।সে-ই মুক্তির জন্য আমার ও আপ নার কাজ হচ্ছে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ক্ষমতার উৎস গুলি সঠিক ভাবে জেনে যতটুকু আমরা জানি তা যার যার অবস্হান থেকে মানুষের কল্যানের প্রতি জানানো ও কাজ করা এবং দায়বদ্ধ হওয়া বলে মনে করি।
আমি যখন কমেন্টসটি লিখি তখন সত্যি মনে মনে ভেবেছিলাম আপনার ধারনা হবে আমি পাকিস্হানপন্থী এবং তাই-ই হলো।
ভালো থাকবেন।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
আপনি যে বাক্য নিয়ে হাসতে হাসতে মুর্ছা যাচ্ছেন ঐ খানে আসলে হাসির কি আছে আমি সত্যি বুঝতে পারিনি। প্রথমে বলে নিয়েছি আমি সাধারনত যুক্তি মেনেই চলি কিন্তু পাকিস্তানের ব্যাপারে আমি কোনো যুক্তি খুজি না। এখানে হাসার কোনো ব্যাপার আসলেই আছে কিনা সেটা নিয়ে আমি খুবই সন্দিহান।
আপনার পোস্ট পড়ে মনে হল আপনি আসলে বলতে চেয়েছেন যে আমার ঐ বিশেষ প্রানীটির নাম উচ্চারন করা উচিত হয়নি। এই তো? ওতে করে অসাংস্কৃতিক হয়ে যায়? হ্যা যায়। আমি যদি আপনাকে উদ্দেশ্য করে ঐ কথাটা বলতাম তাহলে অবশ্যই তা অসভ্যতা হত। কিন্তু যারা ঐ গালিগুলো শোনার স্পষ্ট দাবিদার তাদের বললে?
দাউদ হায়দারের নাম শুনেছেন? তার একটা কবিতা আছে।
নামঃ শালা ও বাঞ্চোতদের জন্যে।
আমি দাউদ হায়দারের লেখা দিয়ে কোনো ভাবেই আমার কথা justify করছিনা। আমি শুধু একটু দেখালাম যে মানুষের মনের ঘৃনা গালি হয়ে বের হলেই মানুষ অসাংস্কৃতিক হয়ে যায় না।
যদিও বা যায় তারপরেও আমি ঐ কথা বলতে এতটুকুও কুন্ঠা বোধ করব না।
ধন্যবাদ
@সাইফুল ইসলাম,
কে জানি বলেছিল ” নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর কোনো মানে হয় না” শুধু আদিল মাহমুদের লেখার কোটেশন দিয়ে আপনার কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি———আদিল মাহমুদ
Posted ডিসেম্বর 15, 2009 at 9:06 অপরাহ্ণ | Link
কোন একটি পুরো জাতিকে ঘৃণা করাকে কিন্তু ঠিক যুক্তিবাদী মনোভাব বলা যায় না। এটাকে চরমপন্থা বলা যায়। আবেগ আর যুক্তি মিলিয়ে ফেলা অন্তত যুক্তিবাদীদের সাজে না। আসলেই অনেক পাকিস্তানীই আছেন আমাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। একজন পাঞ্জাবী কবির কথা পড়েছিলাম যিনি আমাদের জন্য কবিতা লিখে জেলে গিয়েছিলেন। এদেরকে কিভাবে ঘৃণা করা যায়? এটা ত রেসিজম ছাড়া আর কিছু না।
জনাব, রাগিব সচলায়তনে লেখেন। ওখানে পাওয়া যেতে পারে তার সাথে যোগাযোগের ঠিকানা। ধন্যবাদ।
গাজীর বিস্ফোরনের আরেকটে তত্ত্ব লেখক মিস করে গেছেন। পাকিস্থানি সোর্স মোতাবেক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পূর্বে গাজী ১৬ টি ডেপথ মাইন চার্জার বসিয়েছিল। বিশাখাপত্তনম থেকে বেড়োনো যেকোন জাহাজই এর বলি হতে পারত। সেই দুর্ঘটনার রাত্রে গাজি তখনো মাইন পেতে চলেছে। অনুমান করা হয় ভারতীয় ডেপথ চার্জার ব্লাস্ট করার জন্যে, গাজীর পাতা মাইনে গাজী ধ্বংশ হয়। আমার কাছে এটাই বেশী বিশ্বাসযোগ্য তত্ত্ব। কারন বিশাল সমুদ্রে একটা দুটো ডেপথ চার্জারে সাবমেরিনের কিছুই হয় না ( ১০০ মিটার দূরে ফাটলেও না)। একমাত্র গাজীর পাতা নিজের মাইনে ( যেহেতু গাজী তখন সেগুল ইন্সটল করছিল) গাজীর মৃত্যু হতে পারে-যেহেতু ডেপথ চার্জার জলের চাপ কয়েককিলোমিটারের মধ্যে বাড়াতে পারে-এবং সেই চাপে মাইন ফাটতে পারে।
@বিপ্লব পাল,
সম্ভাবনাটা মনে হয় আমি মিস করিনি।
লক্ষ্য করুনঃ
” নিজের পাতা মাইনের কোনটার সাথে তার নিজেরই আঘাত লেগে সে ঘায়েল হয়।”
এখন হতে পারে যে এই আঘাত সরাসরি লেগে থাকতে পারে বা রাজপুতের ফেলা ডেষ্ট্রয়ারের ডেপথ চার্জের শক ওয়েভে মাইন ডেটোনেট করে।
তবে ডেপথ চার্জের শক ওয়েভ দায়ী হলে তো ভারতের দাবী অনেকটাই খাটে।
যুতমত একটা ডেপথ চার্জই কিন্তু যথেষ্ট হতে পারে। বড় প্রশ্ন রয়ে যায় যে রাজপুত আসলেই সেরাতে চার্জ করেছিল কিনা সেটা।
@বিপ্লব পাল, আশা করি কিছু মনে করবেন না। আপনি সবসময় ‘পাকিস্থানি’ লেখেন, আসলে তো বাংলায় শব্দটা ‘পাকিস্তান’। বাংলা বা ইংলিশ কোথাও তো ‘হ’, ‘থ’ বা ‘h’ নেই।
@রাহাত খান,
দয়া করে পাকিস্তান নিয়া কোনো কথা বলবেন না। এটা আমার বিনীত অনুরোধ। (আর “পাকিস্থান”? ঐটাকে আমি সব সময় শুয়রের বাচ্চাদের স্থান বলি।)
আবারও বলতেছি দয়া করে অন্য কোনো শব্দের বানান ঠিক করুন। এই নোংরা শব্দটাকে বাদ দেন।
@সাইফুল ইসলাম,
(আর “পাকিস্থান”? ঐটাকে আমি সব সময় শুয়রের বাচ্চাদের স্থান বলি।) :rotfl:
আপনার মনের অবস্হা দারুনভাবে টের পাচ্ছি কি রকম ঘৃনাবোধ থেকে ঐ রকম ধিক্কার অনুভূতিমূলক শব্দ আপনার মনের ও চিন্তার কাছ থেকে বের হয় !! ঠিক আছে। আচ্ছা, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ পাহাড়ী উপজাতিদের কি ঐ একই রকম ঘৃনাবোধ বাঙালীদের প্রতি হয় ?????? এই ব্যাপারে কিছু বলবেন ??
@সাইফুল ইসলাম,
ঐটাকে আমি সব সময় শুয়রের বাচ্চাদের স্থান বলি। : 😎
সব ভালো মানুষের স্হান পৃথিবীর কোথাও আছে বলে কি আপনার জানা আছে ?? আর সব মানুষ কিভাবে একটা জাতির সব শূয়রের বাচ্চা হয় ?ঘৃনা থাকা ভালো কিন্তু অন্ধভাবে নয়।৭১´এ আমাদের যুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে একবিন্দুও সন্দেহের অবকাশ নেই,প্রশ্ন-ই উঠে না সংশয় প্রকাশ করার।প্রশ্ন উঠে যখন আমরা দেশ,কাল,স্হান,পাত্র,ক্ষমতা,রাজনীতি,সমাজনীতি,অর্থনীতি,সমরতন্ত্র,সমাজতন্ত্র,গনতন্ত্র ও ধর্মের নামে সকল কেচ্ছা কাহিনীকে একত্রে গুলিয়ে ফেলি।দেশ বলতে তার মাটি,গাছ-পালা ও নদ -নদী কে বুঝায়,দেশের মাটি কত খাঁটি এ সব কে বুঝায়,বুঝায় না দেশটির মধ্যে মানুষ বা তার জাতিটির।জাতি বলতে যে কোনও জাতির মধ্যে উপরেল্লেখিত সব তন্ত্রের লো্কজনই অন্তর্ভূক্ত থাকে,যেমন ৭১`এ যখন আমরা যুদ্ধ করি তখনো কিন্তু ওখানে গনতন্ত্রী, সমাজতন্ত্রী,স্বৈরতন্ত্রী, কঠঠ্রর মৌলবাদী সহ আপনার আমার মতো যারা মানবাদের কথা বলি তারাও ছিল।এই যেমন আমার কয়েক জন পাকিস্হানী বন্ধু আছে যারা সে-ই সময় তাদের দেশের কমিউনিষ্ট পার্টি করত এবং ৭১ সালের যুদ্ধ বিরোধী ছিল, তাদেরকে আপনি কি শূয়রের বাচ্ছা বলবেন?? ১৫ বছর আগে প্রথম যখন তাদের সাথে আমার পরিচয় হয় তখন আমিও এই আপনার মতো তাদের সাথে ৭১ এর যুদ্ধ নিয়ে,আমাদের স্বাধীনতা নিয়ে অনেক অনেক বাক-বিতান্ডা ও ঝড়গা-বিবাদ করেছি।আসলে আবেগ থাকা দরকার কিন্তু আবেগ দিয়ে সব কিছু কে সরলরেখায় মাপা ঠিক না বলে মনে করি।কথায় আছে বাংগালী নাকি খুবই আবেগ প্রবনজাতি এবং একটু তে রক্ত নাকি মাথায় উঠে যায়——————সব কিছুর পরে আপনার মতো আমি ও আমরা সবাই সর্বোস্মমতভাবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই এবং তা এখনই চাই যার জন্য আর একবিন্দু কালবিলম্ব দেরী নয়,কারন ইতিমধ্যে অনেক অনেক দেরী হয়ে গেছে। ভালো থাকবেন।
@সাইফুল ইসলাম, আমার মনে হয় আপনার লালন পালন ঠিক মত হয় নাই, না হলে এখানে গালাগালি করতেন না।71 এ অনেক পাকিসতানি আর্মি অপরেশানের বিরুদ্ধ ছিল যেমন শাহাবজাদা য়াকুব ইসতেফা দেন as as chief martial law adiminstrator of east pakistan এবং army operation থেকে বিরত থাকেন।বেলুচিরা ( তাদের ভুখন্ড বাংলাদেশ থেকে দশ গুন বড় ) এবং NAP এর পাঠান সমর্থকরা বিরোধীতা করেছিল।
আচ্ছা,উইকির রাগিব ভাইতো এই ধরনের লেখার জন্য ব্লগে ব্লগে ধর্না দিচ্ছেন। এই লেখা গুলোকে উইকিতে অন্তর্ভূক্ত করা যায় না?
করতে হলে ঠিক কি ভাবে করা যায় আমাকে কেউ একজন প্লিজ জানান। আমি এখন পুরোদমে বেকার,তাই যখন তখন আমি লেখাগুলো+ আরো আমার সংগ্রহের কিছু বইয়ের লেখা উইকিতে দিতে পারবো।রাগিব ভাইয়ের সাথে সরাসরি যোগাযোগের কোন পথ আমার জানা নাই।(এইভাবে উইকির জন্য লেখা খুঁজলাম বলে মডুর গালি খাবোনা তো?)
লেখাটা ভালো। বক্তব্যগুলো স্পষ্ট।
@তানভী,
ইনি আবার কে?
আমি ত মূলত উইকি থেকেই মারি। রেফারেন্স দেখতে পারেন।
@আদিল মাহমুদ,
উনি(রাগিব হাসান) সম্ভবত উইকির বাংলা অংশের প্রতিষ্ঠাতা(সম্ভবত)।
অন্যান্য ব্লগে(সামু,সচল) লেখালেখি করেন,আর ব্লগের সবাইকে উইকিতে বাংলাদেশের ছবি আর মুক্তিযুদ্ধের উপর লেখা দেয়ার জন্য অবিরাম উৎসাহিত করেন।
@তানভী,
রাগীবের ব্লগে বিস্তারিত বলা আছে কিভাবে উইকিতে লেখা সম্পাদনা করা যায়। এখানে দেখুন।
@ আদিল ভাই
ব্লগে লেখার পাশাপাশি আমরা বাংলা উইকিকেও সমৃদ্ধ করতে পারি আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য।
@স্বাধীন,
আমার তাতে কোন আপত্তি নাই, আমিও চাই সবাই জানুক। তবে ভাই রে, নিজের প্রজন্মকেই তো এখনো জানায় উঠতে পারলাম না, তারপর তো ভবিষ্যত প্রজন্ম।
@আদিল মাহমুদ,
এই প্রজন্মরে নিয়ে চিন্তা করে লাভ নেই। পরিবর্তন হবে প্রজন্ম হতে প্রজন্মে। এই যে আপনি আমার মত দু’ একজন জানছি এতেই আমি খুশি।
দূঃখজনকভাবে লেখাটির সঠিক বিভাগ নির্বাচন করতে পারলাম না। আমার কম্পিউটারে কেন যেন সব বিভাগের নামে শুধু বেশ কিছু আয়তাকার বাক্স দেখা যাচ্ছে, কিছু পড়া যাচ্ছে না। কয়েকবার ট্রায়াল এরর পদ্ধুতি ব্যাবহার করে ক্ষান্ত হলাম।
আশা করি অভিজিত বা কেউ সংশোধন করে ১৯৭১ বা মুক্তিযুদ্ধ করে দেবেন। নিঃসন্দেহে এটা আমার স্মৃতিচারণ নয়।
@আদিল মাহমুদ,
ঠিক করে দেয়া হয়েছে।
@মুক্তমনা এডমিন, :rose2: