…
খবরটাতে চমক আছে বলতেই হবে, ‘১৭ অক্টোবর একই মঞ্চে বক্তব্য রাখবেন হাসিনা-খালেদা।’ আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে বহুদিন ধরে দুই নেত্রী শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়ার মধ্যে যেখানে পরস্পর কথা বলা দূরে থাক্, মুখ দেখা-দেখিও বন্ধ থাকাটাই স্বাভাবিক বলে বিবেচিত হয়ে আসছে, সেখানে দুই নেত্রী একই মঞ্চে অবস্থান করে বক্তব্য রাখবেন, বিষয়টার গুরুত্ব খাটো করে দেখার উপায় তো নেই-ই, জাতির কাছে এরকম বহুল কাঙ্ক্ষিত ঘটনা যে দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে একটা সুবাতাস বইয়ে দেয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে, নাগরিক হিসেবে আমাদের জন্যেও তা আশ্বস্ত হওয়ার ব্যাপার বৈ কি। এই বিরল ঘটনা কী করে সম্ভব হচ্ছে ? অনেকগুলো পত্রিকাতেই খবরটা এসেছে। ১২ অক্টোবর ২০০৯ তারিখের দৈনিক ‘সমকাল’ থেকে জানা যাচ্ছে যে আগামী ১৭ অক্টোবর ২০০৯ তারিখ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (প্রাক্তন চীন-মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র) বিকেল ৩.০০টায় দারিদ্র্য বিমোচনে জাতিসংঘের মিলেনিয়াম ক্যাম্পেইনের অর্থসহায়তায় বাংলাদেশের সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপ (এপিপিজি) আয়োজিত ‘দারিদ্র্য বিমোচন’ শীর্ষক অনুষ্ঠিতব্য এক বর্ণাঢ্য আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ইতোমধ্যে দুই নেত্রী উপস্থিত থাকতে রাজি হয়েছেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া ভাষণ দেবেন।
এ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে “দাঁড়াও, কাজ করো, দারিদ্র্য হটাও”। জাতিসংঘের সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অনুসারে ২০১৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশের অর্ধেক জনশক্তিকে দারিদ্র্যমুক্ত করার লক্ষ্যে দারিদ্র্য বিমোচনের বৈশ্বিক ক্যাম্পেইনকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতেই এই আয়োজন। জানা যায় জাতীয় সংসদের স্পীকার ও এপিপিজি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ এই সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন। দুই নেত্রী ছাড়াও এখানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, এপিপিজি’র দুই কো-চেয়ারম্যান ও সরকারি দলের চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ এবং বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকও বক্তব্য রাখবেন। এছাড়া নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য দেয়ার কথা রয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দাতাদেশ ও সংস্থার প্রতিনিধি এবং কূটনীতিকরা এতে উপস্থিত থাকবেন। মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক, পদস্থ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদেরও সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হবে। সম্মেলন উপলক্ষে দেশের প্রতিটি মহানগর ও জেলা সদরে বড় ধরনের সমাবেশের আয়োজন করা হবে। এইসব সমাবেশে উপস্থিত সুধীজনের সামনে সরাসরি সম্মেলনটি সম্প্রচার করে দেখানোর ব্যবস্থা করা হবে। জেলা প্রশাসনকে ওই সমাবেশ অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে খবরে প্রকাশ।
এই সম্মেলনের জন্য যে বিশাল ও বর্ণিল আয়োজন করা হচ্ছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। সবই ঠিক আছে। শুধু সন্দেহের একটা ‘কিন্তু’ যুক্ত হয়ে যায় যখন শোনা যায় যে দেশী-বিদেশী ছোট বড় এতো এতো আমন্ত্রিতদের মধ্যে বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল লরিয়েট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নাম নেই। অর্থাৎ তাঁকে এ সম্মেলনে অফিসিয়ালি আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না। বড়ই মজার বিষয় ! ড. ইউনূসকে নিয়ে যার যার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিতে যত বিতর্কই থাকুক না কেন, কেউ কি এই নিশ্চয়তা দিতে পারবেন যে আমন্ত্রিত অতিথিরা সবাই গুণে-মানে-যোগ্যতায়-অবস্থানে ড. ইউনূসের চাইতে এগিয়ে ? তিনি কি কোন দেশদ্রোহী ? তাঁর বিরুদ্ধে কি অপরাধী হিসেবে গোটা কয়েক মামলা ঝুলে আছে ? না-কি কর ফাঁকি দিয়েছেন তিনি ? ব্যক্তি জীবনে অত্যন্ত সাদাসিধে সৎ ও বাহুল্যহীন জীবন যাপনকারী এই ব্যক্তিই যে জাতিসংঘে বা আন্তর্জাতিক বিশ্বে দারিদ্র্য বিমোচন বিষয়ক ভাবনাজগতে একটি উজ্জ্বল ও বিশেষ আইকন হিসেবে উচ্চ মর্যাদা পেয়ে থাকেন, এটা কি অস্বীকার করা যাবে ? সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদক ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম’ প্রদান অনুষ্ঠানে আমেরিকায় তাঁর প্রতি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের কুটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত নজিরবিহীন নির্লিপ্তির মধ্য দিয়ে বিদেশের মাটিতে যে রাষ্ট্রীয় হীনমন্যতা দেখানো হয়েছে, নিজের দেশে নিজ মাটিতেও সেই হীনমন্যতাই কি প্রকাশ করা হচ্ছে না ? ব্যক্তি বিরোধ, দলীয় বিরোধ, রাজনৈতিক বিরোধ বা তাত্ত্বিক বিরোধ কারো সাথে কারো হয়তো থাকতেই পারে। তাই বলে একজন যোগ্য নাগরিকের সাথে জাতীয় মান-সম্মান ভূলুণ্ঠিত হওয়ার মতো রাষ্ট্র পর্যায়ের বিরোধ কি হতে পারে ? তাহলে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দল মত নির্বিশেষে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম কথাটা কি ফাঁকা বুলি হয়ে গেলো না !
সেলুকাসের এতো বৈচিত্র্য-বিস্ময় এ দেশেই বুঝি সম্ভব। নিজে চোখ বন্ধ রেখে কেউ দেখছে না ভাবা কতোটা শুভ বুদ্ধির পরিচায়ক কে জানে, তথ্য-প্রযুক্তির আলোকবেগের কল্যাণে আমাদের এসব সুকৃত (!) অর্জন কি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কারো অজানা বা অপ্রকাশিত থাকছে ? ঢাকায় অবস্থানকারী বিভিন্ন দেশের এমবেসি বা হাইকমিশনগুলোও নিশ্চয়ই বসে বসে মূলো চিবুচ্ছে না বা ঘুমাচ্ছে না। এ জন্যেই কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন এবং ভারতের কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী’কে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তাঁরা নির্ধারিত অন্য গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচির কারণ দেখিয়ে আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন নি ? শোনা যায় নোবেল লরিয়েট অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন সহ বিশ্বপর্যায়ের আরো কাউকে কাউকে এ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাঁদের উপস্থিতি এই সম্মেলনকে অবশ্যই আরো ঐশ্বর্য্যময় ও ফলপ্রসূ করে তুলবে। এই দেশের নাগরিক হিসেবে আমরাও তা চাই।
কিন্তু আমাদের সরকার কি সত্যি সত্যি দারিদ্র্য বিমোচনে আন্তরিক ? সন্দেহ হয়। কেননা ১২ অক্টোবর ২০০৯-এর দৈনিক ‘সমকাল’-এর প্রথম পাতায় ‘সামনের সারি ফাঁকা : স্পিকার ভীষণ ক্ষুব্ধ’ শীর্ষক আরেকটি প্রতিবেদন আমাদেরকে এ বিষয়ে সন্দেহবাতিক করে তুলে। সামনের সারিতে আসনের দাবিতে যখন জাতীয় সংসদের অধিবেশন বর্জন করছে বিরোধী দল, তখন কিনা চলমান অধিবেশনে সামনের সারিতে আসন পাওয়া সাংসদদেরকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ! প্রধানমন্ত্রী ছাড়া বাকি সিনিয়র সংসদ সদস্যদের এমন অনুপস্থিতি নিয়ে নাকি গত ১১ অক্টোবর ২০০৯ তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্পীকার অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ। এ কারণে রোববার দিনের নির্ধারিত কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত ‘দারিদ্র্য বিমোচন কৌশলপত্র’ (পিআরএসপি) নিয়ে সাধারণ আলোচনা বাতিল করতে হয় !
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের পর অধিবেশন শুরুতেই স্পিকার আবদুল হামিদ বলেন- ‘দিনের কার্যসূচি অনুযায়ী প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উত্থাপন করে দারিদ্র্য বিমোচন কৌশলপত্র (পিআরএসপি) নিয়ে সাধারণ আলোচনার কথা ছিল। কিন্তু যারা আলোচনার জন্য তুমুল আগ্রহ দেখিয়েছিলেন তাদেরই অধিবেশন কক্ষে দেখা যাচ্ছে না। এমনকি যিনি আলোচনা উত্থাপন করবেন (অর্থমন্ত্রী) তিনিও নেই। সামনের সারির মন্ত্রী ও নেতারা অনুপস্থিত। প্রধান হুইপকেও দেখা যাচ্ছে না।’…
…‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি নিজে নির্ধারিত সময়ে সংসদ অধিবেশনে উপস্থিত হতে পারলে মন্ত্রীরা পারবেন না কেন ? এটি আমি স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারছি না। এভাবে তো চলতে পারে না।’
দৈনিক পত্রিকাগুলোয় চোখ বুলালেই এসব কতো বাহারি ঘটনার পরোক্ষ সাক্ষি হয়ে যাই আমরা। দারিদ্র্য বিমোচন হবে কি হবে না, সরকার এতে আন্তরিক কি-না, এসব নিয়ে বহু তর্ক-বিতর্ক হতে পারে বা হতে থাকবে। তবে এসব আলামতের মধ্যে একটা কাকতালীয় মুদ্রন-ত্রুটিতে চোখ পড়তেই প্রথমে চমকে উঠলাম। অতঃপর হাসতে হাসতে পেটে খিল পড়ার যোগার। সমকালের ‘একই মঞ্চে হাসিনা-খালেদা’ শীর্ষক প্রতিবেদনটির ১৭ পাতায় মুদ্রিত চতুর্থ লাইন থেকে উদ্ধৃত ত্রুটিপূর্ণ বাক্যটি কি সেরকম কোন আগাম আলামতেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে-
‘সম্মেলন থেকে ‘দারিদ্র্য বিমোচনের বিরুদ্ধে’ ঐক্যবদ্ধভাবে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার ‘শপথ’ও নেবেন দুই নেত্রী।’
…
অতিরিক্ত সংযুক্তি: আজ ১৭ অক্টোবর ২০০৯ তারিখের সমকালে প্রধান শিরোনামটি হচ্ছে ‘হঠাৎ কেন বেঁকে বসলেন খালেদা’। গতকাল আকস্মিক সংবাদ সম্মেলন করে বেগম খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার সঙ্গে এক মঞ্চে উঠবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সাথে কিছু শর্তও জুড়ে দিয়েছেন। কেনইবা আমন্ত্রণ গ্রহণ, আর কেনইবা প্রত্যাখান ! বঙ্গদেশে সেলুকাস বড়ই বিচিত্র ! আহা দারিদ্র্য বিমোচন !
…
জনাব হেলাল,
এটুকু যোগ করতে ভুলে গিয়েছিলাম।
আর হ্যাঁ, ঐ ভদ্রলোকের ছেলের জন্মদিনটি ১৫ই অগাষ্ট! দেখেছেন, একজন সাধারন মানুষের ভাবনা আর এক রাজনৈতিক দলের প্রধানের ভাবনার পার্থক্য!
জনাব হেলাল,
প্রধান মন্ত্রীর এই ভাষাটাকে কি আপনার খুউব অশালীন মনে হয়? আমারতো মনে হয় প্রধানমন্ত্রী খুউব একটা মিথ্যে বলেন নি!
কারন:
১. খালেদা জিয়াকে কালো টাকা সাদা করতে হয়েছে জরিমানা দিয়ে, বিশ্বে আর কোন দ্বিতীয় উদাহরণ আছেকি কোন প্রধান মন্ত্রীর ক্ষেত্রে?
২. পত্রিকায় দেখলাম তিনি তার অসৎ পুত্রের পরামর্শেই শেষে বেঁকে বসেছেন! এই রাজনৈতিক ধীশক্তি কি আমাদের দেশের জন্যে মঙ্গল জনক?
৩. তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ সংসদে যাবার প্রয়োজন অনুভব করছেন না! দিনি যে অভিযোগ গুলো দায়ের করেছেন বর্ত্তমান সরকারের বিরুদ্ধে, তাকি আপনি সত্যমনে করেন? তার সাথে খালেদা আমলের দিন গুলোর কথা একটু ভাববেন কি? আমি টিট ফর ট্যাট্ এর কথা বলছিনা। তানা বিরোধী নেত্রী বলেতো কচি খুকী নন, যে পুতুল পাবার মতো, প্রথম সারিতে সিট পাবার জন্যে গোঁধরে বসে থাকবেন! তার মাঝে দায়িত্ত্বশীলতা থাকতে হবে। অছে কি?
৪. বঙ্গবন্ধুর মৃত্যবার্ষিকীতে তিনি জন্মদিনের কেক কাটেন! সুস্থ মানুষ হলে কি কাটতেন? আমি আমার পাড়ায় এক অতিসিধারন ভদ্রলোক কে জানি, তিনি তার চার বছরের বাচ্চার জন্মদিন করেন না, বাচ্চাকে নিয়ে চিড়িয়াখানা, যাদুঘর, নদীর ধারে, ঐতিহাসিক খনন কাজের স্পট গুলোতে ঘুরে বেড়ান! সেদিন তিনি অফিস থেকে ছুটিও নেন, বাচ্চাকে সময়দেবার জন্যে!
আরোও আছে….. সময় নেবো না। এসব হিসেব করলে একবিচারে মনে হয়না যে প্রধান মন্ত্রী ভুল করেছেন! আর গ্রামের পাতিনেতার কথা বললেন! কিন্তু তার দলই কোন এক নির্বাচনী প্রচারে যে সাবাস বাংলাদেশ প্রচার করেছিলো, সেটিকি খুব রুচিকরছিলো?
আমার মনে হয়েছে, এই মন্তব্যের মধ্যেদিয়ে বর্ত্তমান প্রধানমন্ত্রী যে তাকে সম্মেলনে আন্তরিক ভাবে চেয়েও পাননি, সেই বিরক্তি তিনি অপেক্ষাকৃত নরম সুরে প্রকাশের চেষ্টা করেছেন। তবে হ্যাঁ খোঁচাটা হয়তো শক্ত হতে পারে তবে সত্যি বটে! আর এই খোঁচাটা প্রযোজ্য বলেই আমি মনে করি। কারন অবঞ্জা করার একটা সীমা থাকা দরকার! বিরোধী নেত্রীর এই অবঞ্জা সরকারের প্রতি নয় শুধু গোটা দেশের মানুষের প্রতি।
হ্যাঁ, তবে রণদীপম বসু যে বিষয়টি ইঙ্গীত করেছেন, তা ভাববার মতো। ডঃ ইউনুস নোবেল জয় করেছেন এটি আমাদের জাতীয় সম্মান নিঃসন্দেহে! যেভাবেই তিনি পান না কেনো, যৌক্তিকতা যতোই কম থাকুক না কেনো, তবুও এটি জাতীয় অর্জন। এতো এতো আমন্ত্রীতদের মাঝে যদি ডঃ ইউনুস না থাকেন তবে ধরে নিতেই হবে বিষয়টি সরকারের হীনমন্যতা।
আর পশ্চিমের তাঁবেদারী যখন আমাদের সরকার গুলোকে করতেই হয় তখন পশ্চিমের পছন্দের লোক গুলোকে একটু খাতির করাটাই বোধ হয় শোভন! যেমন বারাক ওবামা পেলেন নোবল শান্তি! কাজেই আমাদের ডঃ ইউনুস আর বারাক ওবামা মযার্দার দিক দিয়েতো একই! এটিই তো আমাদের গৌড়বের কারন হতে পারে, না কি! পশ্চিম কি এমনই একটা মেসেজ সরকারকে দিতে চাইছে!
তবে আমার মনে হয় নোবেল কমিটি আমাদের বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত! সম্ভবতঃ আমাদের জাতীয় মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করতেই এবারের শান্তি নোবেল ঘোষনা!
দারিদ্র্য বিমোচনের বিরুদ্ধে’ ঐক্যবদ্ধভাবে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার ‘শপথ’ও নেবেন দুই নেত্রী।’
মনে হচ্ছে তারা তাই চায়।তাই মজা না পেয়ে আঁতকে উঠলাম। দেশ দারিদ্র্য থাকলে লুটপাটে সুবিধা।
আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও বিরোদিদলীয় নেত্রীদ্বয়ের একে অপরকে আক্রমনের ভাষার যে সংস্কৃতি চালো হচ্ছে তা কি তাদের সাঙ্গপাঙ্গদের তথা জনগনের মধ্যে সঞ্চালিত হচ্ছে না? এতে কি আমরা অসহিষ্ণু জাতিতে পরিনত হচ্ছিনা? দুই বড় দলেরই সম্মিলিত চেষ্টা ছাড়া দারিদ্র ও দূর্নীতি দুর তথা কোন টার্গেটই পুরণ হবেনা, এটা সবারই জানা। কিন্ত সম্মিলিত হতে হলে যে দুই নেত্রীর ভাষার সম্মিলন আগে দরকার।
দারিদ্র বিমোচনের লক্ষে্ আয়োজিত সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রুখব দারিদ্র্য’-এর বদলে ‘লুটব সম্পদ, হব ধনী’—এই স্লোগান দিলে হয়তো তিনি (খালেদা জিয়া) আসতেন। স্লোগানটি পছন্দ না হওয়ায় হয়তো তিনি আসেননি।
এভাবে আক্রমনাত্বক ভাষা পরিহার করা জরুরী।
সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী এবং স্পিকার তারাও খালেদা জিয়ার সমালোচনা করেন।কিন্ত তাদের কথার সাথে প্রধানমন্ত্রী কথা তুলনা করলে প্রধানমন্ত্রীকে গ্রামের পাতি নেতা মনে হয়।
লাগাম ছাড়া ,সত্য-মিথ্যা যাঁচায় ছাড়া এক অপরকে দুষারোপের সংস্কৃতি কি এখনও বন্ধ করার সময় হয়নি?
@হেলাল,
সহমত।
শেখ হাসিনার আরো সংযত আচরণ করা উচিত।
খালেদা জিয়াকে কেউ স্বশিক্ষিত দাবি করলে হাসি পায়।এটা আরজ আলি মাতুব্বরের মত প্রকৃত স্বশিক্ষিত লোকদের পক্ষে চরম অপমান।আর এটাও ঠিক যে,তিনি এখন স্কুলের বাচ্চাদের মত আবদার করছেন।
তবে দোষারোপের রাজনীতি পৃথিবীর সব জায়গায়ই আছে।কিন্তু এমন তীব্র হয়তো না।