সৌদি আরব কি ইসলামী সন্ত্রাসিদের পক্ষে না বিপক্ষে?
মূলঃ খালেদ ওলীদ
অনুবাদ: আবুল কাশেম
এপ্রিল ৪, ২০১০
[ভূমিকাঃ ডিসেম্বর ও ফেব্রুয়ারি মাসে খালেদ ওলিদের ইসলাম পরিত্যাগের জবানবন্দির ও সৌদি নারীদের অবস্থা অনুবাদ করেছিলাম। খালেদের সে সময়কয়ার অনেক ই-মেইল থেকে সৌদি আরাবের ইসলাম সম্পর্কে ধারণা পেয়েছিলাম। এখানে আমি তার আর একটি লেখা অনুবাদ করে দিলাম। উল্লেখযোগ্য যে খালেদের এই লেখাটি একটা বইতে প্রকাশ হয়েছে। বইটার শিরোনাম হলো: Why We Left Islam.
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ: বাংলায় লেখা এবং বাংলা টাইপে এটা আমার তৃতীয় প্রচেষ্টা। ভুলভ্রান্তি থাকলে জানিয়ে দেবেন।
আবুল কাশেম]
:line:
সৌদি আরব সর্বদা দাবী করে আসছে যে তারা ইসলামী সন্ত্রাসিদের বিরুদ্ধে লড়ছে। সে সাথে এটাও বলতে কার্পণ্য করে না যে, সৌদি আরব এক মধ্যপন্থী মুসলিম দেশ এবং তারা নরম গরমের মাঝামাঝি (মডারেট) ধরণের ইসলাম সমর্থন করে। ভ্রমবশতঃ সাধারণ গোবেচারা অবিশ্বাসীরা (পড়ুন কাফেররা), বিশেষতঃ পাশ্চাত্যের অমুসলিম লোকেরা ইসলামী সন্ত্রাসিদের ব্যাপারে সৌদি আরবের এই ভণ্ডামীপূর্ণ অবস্থান পুরোপুরি বিশ্বাস করে নিয়েছে। সৌদি আরবের এক পুরাতন বাসিন্দা হিসেবে আমি এই লেখায় দেখাব কেন এই ধারণা সম্পূর্ণ ভূল।
সৌদি আরবের এই ভণ্ডামী ও দুই মুখী চেহারা উন্মোচনের জন্যে আমি ব্যাখ্যা করব কিভাবে এ দেশের শিক্ষা পদ্ধতি চালানো হয়। আপনারা যখন দেখবেন ইসলাম প্রচার এবং কাফেরদের প্রতি আসীম ঘৃণা প্রকাশই হচ্ছে এই সৌদি সরকারের নীতি তখন বুঝতে পারবেন কেন সৌদি আরব এই ছলনা, কপটতা ও ভানের আশ্রয় নিয়েছে। যখন আপনি জানবেন যে সৌদি সরকারের শিক্ষা নীতির মূল উদ্দেশ্য হলো যে কোন মূল্যেই হোক বিশ্ব থেকে অনৈসলামী দূর করতে হবে তখন আপনি সৌদি আরবের বাস্তবতা স্বীকার করে নেবেন। এর থেকে কারও বুঝতে অসুবিধা হবে না যে আজকের বিশ্বে যে সীমাহীন, অদম্য ইসলামী সন্ত্রাস চলছে তার জন্ম কেন্দ্র হচ্ছে সৌদি আরবের শিক্ষা পদ্ধতি।
প্রথমেই আমি আলোকপাত করব এই দেশের প্রাথমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা পরিস্থিতি নিয়ে। এই শিক্ষার কেন্দ্রে আছে অ মুসলিমদের (কাফেরদের) প্রতি অপরিসীম ঘৃণা জন্মানোর সকল ব্যবস্থা। কাফেরদের প্রতি এই অসীম ঘৃণার জন্যই আজ সৌদি আরবের ছাত্র ও জনতা সভ্য বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কেউ বিশ্বাস করুক আর নাই করুক, আমার মতে এটাই হচ্ছে সর্বপ্রথম সত্য।
এখানে বলা দরকার যে মৌলবাদী ওহাবী বিদ্যালয় থেকে সৌদি আরবের অন্যান্য বিদ্যালয় কিছুটা স্বতন্ত্র হলেও মোটামুটি সৌদি আরবের সব বিদ্যালয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একই ধরনের শিক্ষাই দেওয়া হয়। মুলতঃ ওই বিদ্যালয়গুলোতে যা শেখানো হয় তা ওহাবি বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থারই অনুকৃতি। রিয়াদ এবং কাসেম অঞ্চল হচ্ছে ওহাবিদের লীলাভূমি আর ইসলামী সন্ত্রাসের উৎসস্থল। আমি ঠিক সৌদি আরবের ওই এলাকায় থাকি না। তাই সেখানে পরিচালিত ওহাবী সন্ত্রাসিদের ব্যাপারে একেবারে খুঁটিনাটি কিছু লিখতে পারবো না। তবে খোদ সৌদি আরবের বাসিন্দা হিসেবে আমার জায়গাগুলো সম্বন্ধে সার্বিকভাবে মোটামুটি একটা ধারনা জন্মে গেছে। আমি নিশ্চিত যে সৌদি আরবের অন্যান্য এলাকার চাইতে রিয়াদ এবং কাসেম এলাকার বাসিন্দারা ওহাবীদের দ্বারা দারুণ ভাবে নির্যাতিত হচ্ছে।
স্পষ্ট মনে পড়ছে আমার সেই সব বিদ্যালয়ের দিন গুলির কথা। আমাদের শিক্ষকেরা পরতেন চরম জবরজং ও কুরুচিপূর্ন দেহ পোষাক। এ এগুলো হচ্ছে ‘থয়াব’ নামক লম্বা ধুতি যাতীয়, যার সাথে থাকত ‘গুট্রা’ নামের মাথায় এক চাদর। কিন্তু ওই ‘গুট্রা’ তে থাকতোনা কোন কালো চিকন রশি, যা সাধারণ আরবরা ব্যবহার করে। শিক্ষকদের সাথে আমাদেরকেও বাধ্যতামূলক ভাবে পরতে হত ঐ অস্বস্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ আলখাল্লা। সৌদি আরবের প্রত্যেক লোক এই পোষাক দেখলেই জানে এই বালকেরা হচ্ছে ধর্মীয় বিদ্যালয়ের ছাত্র। ধর্মীয় পোষাক ও সাধারণ পোষাকের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে এই যে ধর্মীয় পোষাক লম্বায় একটু খাট হয় এবং মাথার কাপড়ে কোন কালো রশি থাকেনা। আরা সাধারণ পোষাক হচ্ছে ঢিলেঢালা পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত লম্বা এবং মাথার কাপড়ে থাকে কলো রশি। সৌদি আরবের সমস্ত ধর্মীয় বিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্য ঐ কুরুচিপুর্ণ পোষাক পরা বাধ্যতামূলক—এর কোন ব্যতিক্রম হয় না। এর অন্যতম কারণ হলো শিশুদেরকে শৈশব থেকেই আত্মসমর্পণ করানো হয় সৌদি আরবের ধর্মীয় কতৃপক্ষের অবিসংবাদিত দাপট ও অপরিসীম ক্ষমতার কাছে। এই মোল্লাদের ক্ষমতার প্রতাপ এখানে একেবারে নিরঙ্কুশ, কারন ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ দ্বারা নির্দিষ্ট ঐ আলখাল্লা ছাড়া কেউ বিদ্যালয়ের কোথাও পা বাড়াতে পারবে না। আমার মনে আছে কতবারই না আমরা কয়েকজন বিদ্যালয় থেকে বহিস্কৃত হয়েছিলাম পোষাক সংক্রান্ত ঐ কঠোর নিয়ন্ত্রণ ভঙ্গের জন্য। এমনকি কখনো এমনও হত যে আমরা কেউ হয়তো ভূলে গেছি মাথার কাপড়টা ঠিক মতো লাগাতে। কিন্তু তারপরেও শাস্তি থেকে মুক্তি পেতাম না। বিদ্যালয়ের শিশুদের প্রতি এমনি নিষ্ঠুর এবং কঠিন হচ্ছে সৌদি ধর্মীয় কতৃপক্ষ।
এখানে বলা বাহুল্য যে শার্ট, প্যান্ট, অথবা ট্রাউজার ও টি শার্ট পরা তো বিদ্যালয়ে একেবারই হারাম। আমাদেরকে কঠিন ভাবে বলা হত যে এ সব পোষাক পরিচ্ছদ হচ্ছে কাফের বা অবিশ্বাসীদের। কোন ছাত্র যদি কদাচিৎ সাহস করে পোষাক পরে বিদ্যালয়ে হাজির হত, তবে তাকে সাথে সাথে ‘কাফের’ নামে আখ্যায়িত করা হত। এর পর তাকে হেন তেন প্রকারে নাস্তানাবুদ করা হত, শুধু তাই নয়, তাকে রাস্ট্র ও ধর্মের প্রতি বিশ্বাসঘাতক হিসেবে চিহ্নিত করা হত।
শ্রেণীকক্ষে আমাদের মোল্লা শিক্ষকেরা বলতেন যে আমাদের জাতীয় পতাকাকে সালাম করা হারাম। সরকার কিংবা অন্য কোন মানুষের প্রতি আমাদের সালাম বা শ্রদ্ধা জানানো উচিত নয়। আমাদের শিক্ষকেরা কঠোর ভাষায় বলতেন যে সমস্ত সম্মান ও শ্রদ্ধা একমাত্র আল্লাহ্র জন্যেই। মজার ব্যপার হল, এতদুসত্ত্বেও আমরা দৈনন্দিন বিদ্যালয় শুরু করতাম জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় পতাকাকে সালাম দিয়ে। সে সময় আমাদের মোল্লারা মুখ বুঁজে থাকতেন, কেননা ঐ সব আচার অনুষ্ঠান সরকারী আদেশ দ্বারা কার্যকরী করা হোত। আমাদের শিক্ষকেরা শুধুমাত্র বিড়বিড় করেই তাঁদের অসন্তোষ প্রকাশ করতেন। এ ছাড়া ওনাদের আর করারও কিছু ছিল না।
এই অনুষ্ঠানের পর আমাদের প্রভাত শুরু হোত কোরআন ও হাদিস আবৃত্তি দিয়ে। এটা ছিল বাধ্যতামূলক, কোন ব্যতক্রম হবার নয়। এরপর শুরু হোত কাফেরদের উপহাস এবং নাজেহাল করা নিয়ে কবিতা আবৃত্তি। শেষ হোত প্যালেস্টিন, চেচনিয়া, কাশ্মীর, ফিলিপাইন এবং বিশ্বের অন্যান্য স্থানে যেখানে মুসলমানরা নির্যাতিত তাদের প্রতি অকুন্ঠ সমর্থন জানিয়ে। এই সব নির্যাতনের কথা, যা আমাদের শিক্ষকেরা তিলকে তাল করে বলতেন, তখন আমরা তা সম্পূর্ণ বিশ্বাস করতাম। এরপর চলত আরো কবিতা—বিশ্ব মুজাহিদিনদের (অর্থাৎ ইসলামী সন্ত্রাসিদের) প্রশংসা ও তাদের বিজয়ের কামনা করে। আমাদের শিক্ষকেরা যেসব স্থানে মুসলমানরা নির্যাতিত হচ্ছেন সেসব স্থানের নাম মুখস্ত করিয়ে দিতেন। আমাদেরকে এই বলে উদ্বুদ্ধ করা হোত যে ইসলামের রক্ষার জন্যে জিহাদ করা বাধ্যতামূলক। আমরা বেরিয়ে পড়তাম ঐ মুজাহিদিনদের জন্যে চাঁদা তুলবার জন্যে। ঘরে ঘরে যেয়ে আমরা বলতাম মুজাহিদিনরা ঐ সব দেশে প্রাণপাত করছেন এবং কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করছেন, আপনারা চাঁদা দিন।
এরপর শুরু হোত ইসলামের গৌরবময় অতীত নিয়ে বড়াই করা ও বাগাড়ম্বরপূর্ণ বক্তৃতা। এখন আমি বুঝি যে এসব করা হোত একমাত্র আমাদের কচি ও সহজে প্রভাবিত মনকে ইসলামী জোশে ভরপূর করার জন্যে, যাতে করে আমরা ইসলামের অতীত বিজয় গৌরব ফিরিয়ে আনতে পারি। ধর্মীয় শিক্ষকরা তরুন সমাজকে ক্ষতিকর অভ্যাস থেকে বিরত থাকার জন্যে নির্দেশ দিতেন; এগুলো হচ্ছে: ধুমপান, পাশ্চাত্যের ধরণে চুল ছাঁটা ও পোষাক পরা, মেয়েলি পোষাক পরা, সঙ্গীত শোনা—বিশেষত্বঃ পাশ্চাত্য সঙ্গীত, টেলিভিশন উপভোগ করা। এখানে উল্লেখ্য যে আমাদের মোল্লারা বলত টেলিভিশন দেখা হচ্ছে সব চাইতে বড় পাপ। সত্যি বলতে কি এ ব্যাপারে একটা ফতোয়া প্রচলিত আছে, যাতে বলা হয়েছে যে – যার বাসায় স্যাটালাইট অ্যান্টেনা থাকবে সে বেহেশতে যাবেনা। পাশ্চাত্যের অনুকরণে চুল বাঁধা হচ্ছে একেবারে অশালীন ও দুর্বিনীত ব্যাবহার। এরই জন্যে আমাদের মাথার চুল ছাঁটা থাকত সামনে এবং পিছনে। সত্যি বলতে কি আমাদের মাঝে যাতে কোন ক্রমেই পাশ্চাত্যের চুল ছাঁটার প্রভাব না পড়ে সে জন্যে আমাদের প্রধান শিক্ষক ব্যক্তিগত ভাবে আমাদের প্রত্যেকের মাথা পরীক্ষা করতেন। কেউ যদি চুল কাটার আইন অবজ্ঞা করত তবে জোরপূর্বক তার মাথার চুল ছেঁটে দেয়া হত বিদ্যালয়ের সেলুনে। এর অর্থ হলো আমাদের অনেকেরই চুল ছাঁটা হোত ‘কদম ছাঁট’ দিয়ে—একে বারে ক্রু কাট যাকে বলে। আমাদেরকে তখন দেখলে মনে হত সামরিক বাহিনীর ক্ষুদে সৈনিক—কোন বিদ্যালয়ের ছাত্র নয়।
আমাদেরকে সর্বদায় মনে করিয়ে দেয়া হোত মৃত্যু সম্পর্কে। এ প্রসঙ্গে বলে রাখা দরকার যে মৃত্যু হচ্ছে ইসলামের একটি সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বক্তৃতা দেওয়া হোত যে মৃত্যুর কথা মনে করা খুবই পুণ্যের কাজ। এরপর আমাদেরকে বর্ণনা দেওয়া হোত মৃতের দেহের সৎকার (কবর দেওয়া) এবং অন্যান্য অনুসাঙ্গিক বিষয় যা মৃত্যু ও শোককে ঘিরে থাকে। বলতে হয় আমাদের ধর্মীয় শিক্ষা সর্বদাই মৃত্যু নিয়ে আবিষ্ট বা মোহাচ্ছন্ন। যারা এই সব মর্মান্তিক বিষয় আমাদের ঐ কোমল মনে মৃত্যুর ধারণা ভাবনা ঢুকিয়ে দেয় তারা কোনদিন চিন্তাও করে না এর কি মারাত্মক প্রভাব পড়ে তরুন মনে। এই সবের জন্যে আমি প্রায়ই ভাবতাম আল্লাহ্ কি কারনে আমাকে ইহজগতে পাঠালেন, যখন জন্মের সাথে সাথেই আমাকে মৃত্যুর জন্যে প্রস্তুত হতে বলা হচ্ছে। এসবের কি অর্থ হতে পারে—ইসলাম মানেই কি মৃত্যু? আমাদের মনে গভীর ভীতির সঞ্চারের জন্যে সুস্পষ্ট বর্ণনা দেয়া হত কবরের ভিতরে আমাদের কি যন্ত্রনায়ই না পেতে হবে। এর পরিণাম এই হোল যে কবরের ঐ যন্ত্রনা এড়ানোর জন্য যেসব কাজ নিষেধ করা হয়েছে আমরা সেগুলো অক্ষরে অক্ষরে পালন করার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলাম।
এখন যখন আমি ঐ সব দিনগুলির কথা ভাবি তখন আমার কোন সন্দেহ থাকেনা যে আমাদের শিক্ষকেরা পরিষ্কার মিথ্যা কথা বলে আমাদের শিশু মনে ভীতি ও আতঙ্কের সৃষ্টি করতেন যাতে করে যেমন করেই হোক আমরা ইসলামকে আঁকড়ে ধরে থাকি। এই প্রসঙ্গে ছোটবেলায় শিক্ষকদের থেকে প্রায়শঃই শোনা একটা কালো সাপের গল্প মনে পড়ে গেল। গল্পটা হচ্ছে নিম্নরূপ:
এক ব্যক্তি মারা গেলে তার পরিবার তাকে কবর দেওয়ার জন্যে কবরস্থানে নিয়ে গেল। কবরস্থানে দেখে এক কালো সর্প কবরের পাশে অবস্থান করছে। তাই তারা অন্য একটি কবরের কাছে গেল। সেখানেও ঐ একই অবস্থা—একটি কালো সাপ কবরের নিকট বসে আছে। এই ভাবে অনেক ঘোরাঘুরি করে লোকেরা ক্লান্ত হয়ে পড়ল। এরপর মরিয়া হয়ে, ঐ কালো সাপ কে উপেক্ষা করেই তারা মৃত লোকটিকে কবর দিয়ে দিল। কিন্তু যেই তারা ফিরে যাচ্ছিল তখনই তারা শুনতে পেলো কবরের ভেতর থেকে আসছে ভীষণ চিৎকার ও হৈ হল্লার শব্দ। তারা তৎক্ষণাৎ কবরটি খুঁড়ে ফেলল এবং দেখল ঐ কালো সাপ কেমন করে এঁকে বেঁকে কবরে ঢুকে পড়ে মৃত দেহটিকে এমনভাবে আঁকড়ে ধরেছে যে মৃত ব্যক্তির হাড় ভেঙ্গে গেছে। তখন লোকেরা ঐ মৃতের পিতাকে জিজ্ঞেস করল, “তোমার ছেলে কি করেছিল?” পিতা উত্তর দিল, “আমার ছেলে তেমন কিছুই খারাপ করে নাই; শধুমাত্র ব্যাপার এই যে সে নিয়মিত নামায পড়ত না”।
এখন আমি দৃঢ়তার সাথে বলতে পারি যে আমাদের শিক্ষকেরা ঐ ধরণের প্রচুর মিথ্যা, ভয়ংকরী গল্প শুনিয়েছেন। আজ মোল্লাদের ঐ সব আজগুবি গল্পের কথা মনে পড়লে আমার হাসিই আসে। কিন্তু সেদিন তাদের বানানো ভয়ানক গল্পগুলোর প্রতিটি শব্দ আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতাম যেহেতু তারা ছিল পরম শ্রদ্ধেয় এবং ধর্মের শিক্ষক। আমরা ওই ধরণের শিশু নির্যাতনকারী গাল-গল্পের প্রভাবে প্রচন্ড ভীতি ও আতঙ্কের মাঝে থাকতাম। সর্বত্র আমরা দেখতাম আতঙ্ক, সন্ত্রাস; মৃত্যুভীতি, কবরের যন্ত্রনা, এবং শেষ বিচার দিনের শাস্তির কথায় উদ্বিগ্ন হয়ে আমরা কাঁপতে থাকতাম। এছাড়াও সর্বদা আমাদের মনকে আবিষ্ট করে থাকত কাফের, আল্লাহ্র ক্রোধ আক্রোশ, পশ্চিমা বিশ্ব, ইসরাঈল…ইত্যাদি। তখন আমরা ঘুণাক্ষরেও ভাবতাম না যে ঐ শিক্ষকেরা নিজেদের অভিলাষ চরিতার্থ করতে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলতেন আর গুজব রটাতেন। সর্বত্র আমরা ভীতি ছাড়া কিছুই দেখতাম না। আমাদের চারিদিক ঘিরে থাকত সন্ত্রাস, ভীতি ও আতঙ্ক। আমরা আতঙ্কিত থাকতাম এই ভেবে যে পশ্চিমা বিশ্ব ও ইসরাঈল আমাদেরকে আনবিক বোমা মেরে ধ্বংস করে দেবে। আপনার হয়তো হাসবেন, কিন্তু সত্যি সত্যি বলছি: আমার এক বন্ধুর ছেলে যখনই এরোপ্লেনের শব্দ শোনে তখনই সে কান্না জুড়ে দেয়। সেই শিশু বয়সী ছেলে মনে করে এরোপ্লেনের শব্দ মানেই যুদ্ধের শুরু। এই আতঙ্কের রোগ আমাদের প্রত্যকের মনে আজ মজ্জাগত হয়ে গেছে আমাদের ঐ ধর্মীয় শিক্ষকদেরর জন্যে। য়ামাদের জন্ম হয় আতঙ্ক নিয়ে, জীবনযাপন করি আতঙ্কের সাথে, এবং মারাও যায় আতঙ্কের ছায়ায়। আমাদের সরকার আমাদেরকে বন্দি করে রেখেছে চিরস্থায়ী আতঙ্ক দিয়ে—এই সর্বগ্রাসী ইসলামী আতঙ্ক থেকে আমাদের মুক্তির কোন পথই নেই।
আমাদের ধর্মীয় শিক্ষকেরা কখনই বিশ্বাস করে না যে যথাযথ ইংরেজি ভাষা শিক্ষা দেওয়া সৌদি আরবের ছাত্রদের অনুকুলে যাবে। বলা বাহুল্য যে এই সব মোল্লারা একেবারেই ভুল পথে রয়েছে। এরা এক মিথ্যা অহমিকা ও ভান করা দম্ভভরের মোহে আচ্ছন্ন। আমাদের বিদ্যালয়গুলিতে যে মৌলিক ইংরেজি শেখানো হয় তা নিতান্তই ধোঁকাবাজীতে ভরপুর। সত্যি কথা হোল: ইংরেজি ভাষার পরীক্ষায় চলে অবাধ নকল। আমি আমাদের দেশের শিক্ষকদের সাথে এই নকলের ব্যাপারে প্রচুর আলাপ করেছি। কিন্তু তারা একেবারে নিশ্চিত যে ইংরেজি শেখা আমাদের জন্য তেমন গুরুত্বের কিছু নয়—আমাদের খুবই গর্বিত হওয়া উচিত আমাদের আরবী ভাষার জন্য, যে ভাষায় কোরআন লেখা হয়েছে।
আমাদের শিক্ষানীতির একটা বৈশিষ্ট এই যে মুসলমানদের সাফল্যের প্রশংসা ছাড়া আমরা আর কারো ই প্রশংসা করতে পারি না। অ মুসলিমদের কোন সাফল্যের প্রশংসা করা এক মহাপাপ ও দন্ডার্হ অপরাধ। আমাদের শিক্ষকেরা সবসময় জিহাদ এবং জিহাদে অংশ গ্রহণের ফযিলতের কথা নিয়ে ব্যস্ত। আমাদেরকে বলা হচ্ছে জিহাদিদেরকে মুগ্ধভাবে প্রশংসা করতে ও সর্বতভাবে তাদেরকে অনুকরণ করতে। আমাদেরকে উদ্দীপ্ত করা হচ্ছে যে আমাদের প্রত্যকের কর্তব্য জীবনে একবার হলেও জিহাদে যোগদান করা। এই ব্যাপারে নিম্নের হাদিস প্রায়ই উল্লেখ করা হয়:
আবু হুরায়রা বললেন: আল্লাহর রসুল বলেছেন, “যে কেহ আল্লাহ্র সাথে দেখা করবে অথচ তার কাছে জিহাদের কোন চিহ্ন থাকবে না সে এক খুঁত নিয়ে আল্লাহ্র সাথে সাক্ষাত করবে”। (জামি তিরমিজি, ভলুম ৩, হাদিস ১৬৬৬, প্রকাশক: দারুস্সালাম, রিয়াদ, সৌদি আরব। অনুবাদ অনুবাদকের)
আমাদের সমাজে যেসব ছাত্ররা ধর্ম নিয়ে পড়াশোনা করে তারা সর্বদাই হচ্ছে সর্বোত্তম ছাত্র। এই সব ছাত্ররা প্রধান শিক্ষক থেকে সাধারণ শিক্ষক পর্যন্ত সবার সম্মান পেয়ে থাকে। এরা তাদের চুল ছাঁটে ‘জিরো’তে, পোষাক থাকে ‘থোয়াব’ এবং প্রায়ই ধর্মীয় পুলিশ হিসাবে চাকুরী করে ওরা যেই বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছিল সেই বিদ্যালয়েই। পুরস্কার হিসাবে তারা পায় প্রচুর সুযোগ সুবিধা ও অপরিমেয় সম্মান। এই জন্যেই প্রচুর ছাত্র ধার্মিক হয় কেননা তারা আকুল ভাবে কামনা করে ঐ সব মহার্ঘ ও ঐস্বর্যবান্ সুযোগ সুবিধা ও আমোদ প্রমোদের ব্যবস্থা যা সরকার ও জনগণ ওদেরকে অকুন্ঠ ভাবে দিয়ে থাকে। মোদ্দা কথায়, সৌদি আরবের ধর্মান্ধ লোকেরা সরকার ও আম জনতা থেকে বিশেষ সম্মান ও পুরস্কার পায়। এদেরকে বলা হয় আল্লাহ্র তত্ত্বাবধায়ক।
আমাদের বিদ্যালয়গুলিতে অংকের শিক্ষকেরা খুব স্বাভাবিক ভাবেই জিহাদ নিয়ে আলোচনা করেন, এমনকি যে সব শিক্ষক বিজ্ঞান পড়ান তারাও জিহাদ নিয়ে মাতোয়ারা থাকেন। অনেক বিজ্ঞান শিক্ষক যখনই কাফেরদের কোন নতুন আবিস্কার সম্বন্ধে জানেন তখনই আস্থার সাথে ঘোষণা যে কাফেরদের পূর্বেই ঐ সব আবিষ্কার অতীতে ইসলামের দ্বারা হয়েছিল। আমাদের ক্রীড়া শিক্ষকেরা ক্রীড়ার স্থলে আলোচনা করেন ইসলামী ক্রীড়ায় হারাম ও হালাল পোষাক সম্বন্ধে। উদাহরণতঃ বলা যায় যে শর্ট অথবা জার্সি—যাতে কোন প্রতীক থাকবে তা হারাম। আমার মনে আছে: একবার ছাত্র শিক্ষদের সাথে এক ফুটবল খেলার সময় আমাদের এক শিক্ষক শর্ট প্যান্ট পরে খেলতে নামলেন। এই জঘণ্য ব্যাপার দেখে আমাদের প্রধান শিক্ষক ঐ শিক্ষককে আদেশ দিলেন অবিলম্বে কাফেরদের পোষাক পরিবর্তন করার জন্যে, না করলে ঐ শিক্ষকের চাকুরী খোয়া যাবে। প্রধাণ শিক্ষকের যুক্তি ছিল এই যে শিক্ষককে হতে হবে ছাত্রদের জন্য উদাহরণ স্বরূপ। এতদ হয়রানির পরও ঐ শিক্ষক কাফেরদের পোষাক পরিবর্তন করতে অস্বীকৃতি জানালেন। ফলে তিনি চাকুরী থেকে বরখাস্ত হলেন। সেই শিক্ষকের বদলে ক্রীড়া শিক্ষক হিসাবে আনা হোল এক লম্বা দাড়ীওয়ালা, ঢোলা ট্রাউজার পরিহিত এক ধর্মীয় শিক্ষককে।
আমার মনে আছে আমাদের কট্টরপন্থী ইতিহাসের শিক্ষক ৭৩২ খৃঃ তূরের যুদ্ধের কথা প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে মুসলমানেরা তখন বলেছিল যে অতি শীঘ্রই ইউরোপে ধ্বনিত হবে আযানের শব্দ। কিন্তু আমার আজ ইচ্ছে করে ঐ শিক্ষকে জানানোর যে এখন তো ইউরোপের সর্বত্রই আযান ধ্বনিত হচ্ছে। আজকাল এই আযান আমেরিকা, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য কাফেরদের দেশেই সবচাইতে জোরালো। ইসলামের এই বিজয় হয়েছে একটিও যুদ্ধ না করে। আমি মনে করি এটা সম্ভব হয়েছে মূঢ় কাফেরদের জন্যেই। এই মূঢ়তা হচ্ছে কাফেরদের আবিষ্কৃত অবাধ পশ্চিমা গনতন্ত্র। এখন দেখা যাচ্ছে কাফেরদের এই বোকামীর সুযোগ নিয়ে জিহাদিরা পাশ্চাত্য সভ্যতা ধ্বংস করতে খড়্গহস্ত। কাফেরদের তৈরী গনতান্ত্রিক ব্যবস্থা-ই আজ তাদের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। জিহাদিরা এখন এই পশ্চিমা গনতন্ত্রকেই মোক্ষ অস্ত্র হিসাবে ব্যাবহার করছে পাশ্চাত্যের সর্বনাশের জন্য। এই সব ধুর্ত ইসলামীদের এখন আর কোন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করতে হয় না। কাফেরদের অস্ত্র দিয়েই ওরা কাফেরদের ঘায়েল করতে চায়। দেখা যাচ্ছে নির্বোধ কাফেররা হাসিমুখে তুলে দিচ্ছে তাদের অস্ত্র ইসলামীদের হাতে। পশ্চিমা গনতন্ত্র ও অবাধ চিন্তার স্বাধীনতা এখন ইসলামীদের হাতে দুইটি বড় অস্ত্র।
আমরা তাহলে দেখছি আমাদের বিদ্যালয়ে শুধু ধর্মের শিক্ষকেরাই নয়, প্রতিটি শিক্ষকই ইসলাম নিয়ে বিভোর—দিন, রাত চব্বিশ ঘন্টা, মাস, বছর—যেন আমাদের জীবনে ইসলাম ছাড়া আর কিছুই নাই—ইসলাম আমাদেরকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রেখেছে। এমনকি আমাদের ইংরেজি ক্লাসেও পড়ানো হয় ইসলাম—মক্কা, মদিনা—এই সবের ইতিহাস। প্রত্যেক টার্মে আমাদেরকে শিখতে হত ছয়টি ইসলামী বিষয়। এগুলো হলো: কোরআন, হাদিস, তফসির, তাজোয়াদ, তৌহিদ, এবং ফিকহ্। এছাড়াও প্রতিদিন বিদ্যালয়ে প্রাতঃরাশের পর বিশ্রামের যে সময়টুকু পেতাম সেটা কাটাতে হোত যোহরের নামায পড়ে। যে সব ছাত্ররা হাফিয হতে চাইত তদেরকে সন্ধ্যাবেলায় আমার বিদ্যালয়ে ফিরে যেতে হত হাফয-ই কোরআন শেখার জন্য।
এই প্রসঙ্গে অনেকেই হয়তো জানতে চাইবেন যে বিদ্যালয়ে পড়ার সময় সঙ্গীতের কোন চর্চা ছিল কি না। এ ব্যাপারে বলতে হচ্ছে যে ইসলামে সঙ্গীতের কোন স্থান নেই—এ সব একেবারেই হারাম, কেননা গান সঙ্গীত হলো শয়তানের ধ্বনি।
আমাদের বিদ্যালয়জীবনের দিনগুলোতে সবচাইতে যে ব্যাপারে বেশী আলোচনা হোত তা ছিল যে সব মুজাহিদ্দিনেরা আফগানিস্তান থেকে যুদ্ধ করে ফিরেছে তাদের বিষয়ে। আমাদের প্রাতঃরাশ বিরতির সময় আমরা হা হয়ে শুনতাম ওদের বীরত্বের গাঁথা—কেমন করে একজন মাত্র মুজাহিদ গণ্ডাখানেক রাশিয়ান সৈনিককে মেরে ফেলেছে, তাও মাত্র ‘আল্লাহু আকবর, লাইলাহা ইল্লা আল্লাহহ্’ শব্দ উচ্চারণ করে। শুনতাম কেমন অলৌকিক ভাবে আহত মুজাহিদ্দিনেরা অনতিবিলম্বে সেরে উঠত। জানতাম কি আপূর্ব সুগন্ধি বাতাসে ভেসে বেড়াত নিহত, পচিত, গলিত শহীদদের লাশ থেকে। এই সব শ্বাসরুদ্ধকর, অবিশ্বাস্য ও অলৌকিক গল্প শুনে আমরা সম্মোহিত হয়ে পড়তাম এবং ঈর্ষাপরায়নকাতর হয়ে পড়তাম ঐ সব মুজাদিদের উপর যারা যুদ্ধে যোগদান করেছে এবং যারা শহীদ হয়েছে আফগানিস্তানে। মনে আমাদের এতই প্রবল প্রেরণা জন্মাতো জিহাদ যুদ্ধে চলে যেতে এবং শহীদ হতে যে ঐ মুহূর্তেই যেন আমরা সব কিছু ত্যাগ করতে রাজি হয়ে যেতাম।
এখন আমি বুঝতে পারছি যে অফুরন্ত কাফেরভীতি, তাদের প্রতি সীমাহীন ঘৃনা, এবং তাদেরকে মেরে ফেলার অদম্য স্পৃহা, অথবা তাদের হাতে শহীদ হবার অপরিসীম আকাংখাই বহু সৌদি তরুনকে চালিত করেছিল আফগানিস্তানের যুদ্ধে যোগ দিতে। দেখুন, কতজন সৌদি আফগানিস্তান, চেচনিয়া, ইরাক এবং অন্যান্য স্থানে জিহাদ করতে গিয়ে মারা গেছে। এই সব অকুতভয়, মৌলবাদী ইসলামীরা মনে করে শিক্ষালাভ করা সময়ের অপচয় ছাড়া কিছু নয়। সোজাসুজি বেহেস্তে যাবার একমাত্র রাস্তা হচ্ছে আল্লাহ্র জন্যে জিহাদ যুদ্ধে শহীদ হওয়া—এটাই তাদের বেছে নেয়া পথ।
জিহাদি জোশে মাতোয়ারা হয়ে আমরা অনেকেই মনে মনে রাজি হয়ে যেতাম যে অর্থহীন পার্থিব জীবনের মায়া ত্যাগ করে আমদের শহীদের পথে পা বাড়াতে হবে। এই উদ্দেশ্যে আমরা আমাদের ধর্মীয় শিক্ষকদের মতামত চাইলাম। ওনাদের মতামত ছিল ভিন্ন প্রকৃতির। অনেকের মত ছিল, আমরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত নই, আমাদের উচিত হবে প্রস্তুতি নিয়ে অগ্রসর হওয়া। অনেক শিক্ষক পরামর্শ দিলেন যে আমাদের দরকার মুফতির অনুমতি নেওয়া। যদি মুফতি অনুমতি দেন তবে অবিলম্বে আমাদের পা বাড়াতে হবে কাফেরদের হত্যার জন্য। ঐ সব শিক্ষকেরা বললেন আমাদের বন্দুক, পিস্তল, অথবা কোন অস্ত্র নেবার দরকার নেই, কারন যাই—ই হোক আমরাই তো জিতবো ই। আর যদি মারা যাই তবে একেবারে সোজাসুজি বেহেস্তে, আর যদি কাফের হত্যা করে ফিরে আসি তবে তা হবে ইসলামের বিজয়। যে ভাবেই দেখা যাক আমাদের বিজয় তো অবশ্যম্ভাবী। এই ভাবেই আমরা একেবারেই নিশ্চিত হলাম যে আমাদের পরাজয় কোন মতেই হবে না।
আমার মনে পড়ছে বিদ্যালয়ে নামায ছিল আমাদের উপর নির্মম অত্যাচার। নিয়মিত নামাযের উপরেও আমাদেরকে অতিরিক্ত নামায পড়তে বাধ্য করানো হত। আগেই লিখেছিলাম যে বিদ্যালয় শেষ হওয়া পর্যন্ত আমাদেরকে যোহরের নামায পড়তে হত। কিন্তু এটাই আমাদের শেষ আনুষ্ঠানিক ব্যাপার ছিলনা। এরপরও আমাদেরকে বাধ্যবাধকতামূলকভাবে পড়তে হত সুন্নত নামায। এ নামায ছিল আমাদের সবচাইতে অপছন্দ। আমাদের শিক্ষকেরা আমাদেরকে জোরজবরদস্তি সহকারে ঐ নামাযে বাধ্য করতেন, শুধু আমাদের নবী ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের প্রতি প্রগাঢ় স্রদ্ধা দেখানোর জন্য।
বিদ্যালয়ের ঐ সব ক্রিয়াকলাপের দরুণ আমাদের মনে হত আমরা যেন নবী মুহম্মদের যুগেই বাস করছি—সেই সুদূর অতীতে। এখন যখন আমি ঐসব দিনগুলির কথা স্মরণ করি তখন আমার মনে হয় আমরা যেন এক সময় ভ্রমনে (time-travel) ছিলাম, কিন্তু এই ভ্রমন ছিল পশ্চাদ্দিকে। আমরা বাস করতাম বর্তমানে নয়—বরং সপ্তম শতাব্দীতে। এমনকি আমাদের শিক্ষকেরা বলতেন যে আধুনিক সময় বলতে তালিবান সময়কেই বুঝায়—তালিবান সময় ছাড়া আর কোন সময় ছিল না, থাকতে পারে না। এই তালিবান সময় আর কিছু না—এ হচ্ছে মুহম্মদের সময়। আমার মনে এটাই হচ্ছে পুরো আরবীয় সমাজব্যবস্থাটাই একটা পশ্চাৎপদ ইসলামী সময় ভ্রমন যন্ত্র (Islamic Time Machine).
এ পর্যন্ত আমি আমাদের বিদ্যালয় জীবনের কথা লিখলাম। আফগান যুদ্ধ শেষ হবার পর, কাফের রাশিয়ানরা ইসলামী আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যায়। আমাদের মুজাহিদ্দিনরা দেশে ফিরে আসে। তখন আমি মনে করেছিলাম যে জিহাদের প্রতি প্রবল ব্যাকুলতা হয়তো শেষ হবে। এরপর ৯/১১ ঘটল এবং সৌদি আরব অনেক প্রতিকুল পরিস্থিতে পড়ে গেল। আমি মনে করলাম এবার ইসলামীরা সুপ্ত থাকবে। কিন্তু আমার ভাবনা ছিল একেবারেই ভ্রান্ত।
এটা অত্যান্ত দুঃখের ব্যাপার যে এত কিছু ঘটে যাবার পরও ইসলামীদের ইসলামী জোশের কিছুই পরিবর্তন হয় নাই। আমার অনুজ আমারই বিদ্যালয়ে যায়। সে বলল যে আমাদের অনেক বিদ্যালয়ের সাথীরা এখন ঐ বিদ্যালয়েই শিক্ষকতা করছে। তারা প্রবল বিক্রমে তাদের সময়ে পাওয়া ইসলামী স্পৃহা প্রচার করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। সত্যি কথা হোল ঐ সব ধর্মীয় শিক্ষকেরাই আজকের ইসলামী সন্ত্রাসি। এরা এখন এতই প্রভাবশালী যে সরকার পর্যন্ত তাদেরকে রীতিমত ভয় পায়। নিশ্চিত ভাবে এটা ইসলামী সন্ত্রাসিদের জন্যে এক বিপুল বিজয়—তারা যা চাচ্ছিল তা—ই পেয়ে গেছে। এখন তারা সম্পূর্ণ নিশ্চিত যে তাদেরকে নড়ানোর ক্ষমতা কারো নাই। এই সব ওহাবি সন্ত্রাসিরা এখন এতই শক্তিশালী যে তারা সোজাসুজি বলে যা তারা ই সৌদি আরবের শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ন্ত্রণ করবে—আর কেউ নয়। ইদানিং তারা যা চাইছিল তা পেয়ে গেল। নতুন শিক্ষা মন্ত্রী হচ্ছেন কাসেম অঞ্চলের লোক—আর কাসেম হচ্ছে ওহাবি ভূমি। দেখুন ঐ নতুন শিক্ষামন্ত্রীর ছবি (ছবিটা এখানে দেওয়া হলো না—অনুবাদক)।
সৌদি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে কি হচ্ছে?
এ পর্যন্ত আমি যা লিখেছি তা হোল সৌদি বিদ্যালয়সমূহে কি হচ্ছে তার এক সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। নিরাশার কথা হোল সৌদি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও ঐ ভয়ংকর ইসলামী প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। সৌদি আরবের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্যে ধর্মীয় শিক্ষা একেবারে বাধ্যবাধ্যকতামূলক। এই সব বিষয় না সম্পন্ন করলে কোন ছাত্রই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি পাবে না। সঙ্গত কারনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষা বিদ্যালয়ের মত ততটা ব্যাপক নয়। যাই হোক, বিদ্যালয়ের ছাত্রদের মতই তাদেরকে ধর্মীয় বিভাগের অপরিসীম উৎপীড়ন সহ্য করতে হয়। প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে ন্যূনতম চারটি ইসলামী সংস্কৃতি বিষয় পড়তে হবে। এ ছাড়াও যারা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তাদেরকে পারদর্শীতা দেখাতে হবে ন্যূনতম এক জুজের কোরআন। এখানে বলা নিতান্তই নিস্প্রয়োজন যে বিদ্যালয় জীবনে যে নির্বোধ ও জড়বুদ্ধিপ্রসূত ইসলামী অত্যাচার শুরু হয়েছিল তা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত গড়িয়ে পড়েছে, শুধু একমাত্র উদ্দেশ্যেই—আর তা হোল অমানবিক ইসলামকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যে।
কয়েক বছর আগে রিয়াদে অবস্থিত মুহাম্মদ বিন সাদ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আদেশ দেয়া হোল যে তাদের ফজরের (প্রভাত) নামায পড়তে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের জামাতে (দলবদ্ধ ভাবে)। কোন ছাত্রই তার কক্ষে প্রভাতের নামায পড়তে পারবেনা। এর অর্থ হোল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক ছাত্রকে প্রত্যুষে উঠেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের দিকে রওয়ানা হতে হবে। এই অসহ্য ব্যবস্থা আইন অনুযায়ী পরিচালিত করার জন্যে মসজিদের ইমামকে ছাত্রদের হাজিরা নেবার ক্ষমতা দেয়া হোল। কিন্তু হাজিরা নেওয়া হবে নামাযের পর—নামাযের আগে নয়। কোন ছাত্র যদি কোন ভাল কারণ ছাড়া পরপর তিন দিন অনুপস্থিত থাকে তবে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে বাস করার সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হবে। কিছু সময়ের পর এই ব্যবস্থা উঠিয়ে নেওয়া হোল। এটা ধর্মীয় লোকদের কোন অনূকম্পার জন্যে নয়। দেখা গেল যে ঐ কঠোর নিয়ম চালু করার সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস প্রায় শুন্য হয়ে যায়। এই অবস্থা এমন চরম পর্যায়ে চলে গেল যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাধ্য হোল ছত্রাবাস বন্ধ করে দিতে। এখন অবস্থা এমন পর্যায়ে যে কয়েকটি ছোট বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসগুলো বন্ধ পড়ে আছে।
কিন্তু এতে ওহাবিদের কি ই বা আসে যায়। এরা অনেক স্থানেই প্রচুর প্রভাবশালী এবং যা চাচ্ছে তা ই পাচ্ছে। তারা সৌদি আরবের সর্বত্র পুরুষ এবং মহিলাদের জন্যে ইসলামী মহাবিদ্যালয় (কলেজ) ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে বদ্ধপরিকর। মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা শাখায় নিয়ম করা হয়েছে যে ছাত্রদেরকে আইনানুগ লিখিত দলিলে সই করতে হবে যে যতদিন তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকবে ততদিন তারা তাদের দাড়ি ছাঁটতে পারবে না। কোন ছাত্র যদি ঐ আইনের ধারা লঙ্ঘন করে তবে বিশ্ববিদ্যালয় তাকে বহিষ্কারের অধিকার রাখে। এই সব অদ্ভুত এবং জড়বুদ্ধিসম্পন্ন নিয়ম ছাড়াও এমন নিয়মও আছে যে কোন ছাত্র কাফেরদের পোষাক পরতে পারবে না। তার মানে হচ্ছে ছাত্ররা জিনস্ অথবা টি শার্ট পরতে পারবে না। কোন ছাত্র যদি ঐ ধরনের কোন পোষাক পরে ক্লাসে যায় তবে তাকে সেই ক্লাস থেকে বহিষ্কার করা যাবে।
পাঠকরা লক্ষ্য করুন যে কয়েক বছর আগে, আমি যেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (মুহাম্মদ সাদ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়) কথা লিখলাম সেখানের এক পোস্টগ্রাজুয়েট ছাত্র পি.এইচ ডি পেল। তার গবেষণার বিষয় ছিল আরব বিশ্বের একশত পণ্ডিত ও চিন্তাবিদদের কাফেরী করা। এই পি.এইচ.ডি ধারণকারীর মতে অনেক মুসলমান যারা সাংবাদিক, অভিনেতা, গায়ক ও যেসব মুসলমান যারা নিজেদেরকে মধ্যপন্থী (মডারেট) বলে পরিচয় দেয় তারা হচ্ছে কাফের। এদের একমাত্র সাজা হচ্ছে মৃত্যুদন্ড।
সৌদি আরবে নারী শিক্ষার কি হচ্ছে?
এতক্ষন আমি সৌদি ছেলেদের লেখাপড়ার ব্যপারে লিখলাম। এই পড়ে আপনারা যদি কাতর হয়ে যান তবে চিন্তা করুন এখানকার নারীদের শিক্ষার নামে কি হচ্ছে। সভ্য বিশ্বের কাছে এ তো কল্পনারও বাইরে যে আমাদের দেশের মেয়েরা কি সীমাহীন ধর্মীয় যন্ত্রনার শিকার। আপনারা কেউ বিশ্বাস করবেন না আমাদের দেশের ছাত্রীরা কি পরিমানে লাঞ্ছিত হচ্ছে ধর্মীয় গুরুদের দ্বারা। ঐ আরব মেয়েদের দুরাবস্থার কথা লেখার ভাষা আমার নেই। তবুও এখানে আমি কয়েকটা উদাহরণ দিলাম যা থেকে আপনারে জানতে পারবেন কি ভাবে আমাদের দেশের ছাত্রীদেরকে আমাদের ধর্ম দফতর নিয়মিতভাবে হয়রানি করে বেড়ায়।
- ধর্ম দফতরের ক্ষমতা আছে কোন নোটিশ কিংবা কোন অনুমতি ছাড়াই যে কোন সময় যে কোন ছাত্রীর বাসস্থল (হোস্টেল কক্ষ) পরীক্ষা করতে পারে। কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা আছে কোন ছাত্রীর কক্ষের টেলিভিশন, সাময়িক পত্রিকা, মুঠো ফোন বাজেয়াপ্ত করার।
- ছাত্রীরা বাধ্য হয় তাদের দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য জিনিষপত্র লুকিয়ে রাখতে। এ না করলে তারা ধর্মদফতরের শকুনি দৃষ্টি এড়াতে পারবে না। কারন হচ্ছে যে হয়তো ধর্ম পুলিশ ঐ সব ব্যবহৃত দ্রব্য পছন্দ করে না।
- কোন ক্রমেই মেয়েরা ছাত্রীবাসের বাইরে যেতে পারবে না। তাদেরকে তাদের নিজস্ব কক্ষে সর্বদা বন্দিনীর জীবনযাপন করতে হবে। একমাত্র মেয়ের মাহ্রম অথবা মেয়ের মালিক-ই অথবা মেয়ের বিশ্ববিদ্যলয়ের অভিভাবক মেয়েকে ছাত্রীবাসের বাইরে নিতে পারবে।
- যেসব মেয়েরা দুরবর্তী অঞ্চল থেকে আসে এবং যাদের মাহ্রম মেয়েদের ব্যাপারে উদাসীন সেসব মেয়েরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ খোলা সময় পর্যন্ত ছাত্রীবাসের কক্ষে থাকতে হবে। অর্থাৎ মধ্যবর্তীকালীন ছুটির সময়েও ঐ মেয়েরা হোস্টেলের বাইরে যেতে পারবে না। এটা তো মনে হয় যাবজ্জীবন কারাদন্ডের সামিল। এই সব মেয়েদের জীবন একটা চক্রের মত—বাসে উঠা, ক্লাসে বসা, বাসে করে হোস্টেলে ফিরে আসা, খাওয়া ও ঘুমানো। ওদের কিছুর প্রয়োজন হোলে ওরা টাকা দিয়ে দেয় তার জন্যে নির্ধারিত মাহ্রমের হাতে। মাহ্রম যা আনবে তা ই গ্রহণ করতে হবে। এই মেয়েদের জীবন সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে তাদের হোস্টেলের মাহ্রমের উপর।
- অন্তবর্তীকালীন ছুটির সময় এই সব মেয়েদের তাদের জন্যে নির্ধারিত বাসে চড়তে হবে। বাস যখন গন্তব্যস্থলে পৌঁছবে মেয়েটি কোন ক্রমেই একেলা পায়ে হেঁটে তার বাড়িতে যেতে পারবে না। তাকে অপেক্ষা করতে হবে যতক্ষন না তার মাহ্রম বাস স্ট্যান্ডে এসে তাকে নিয়ে বাড়িতে যায়। মেয়েদের প্রতি এই সীমাহীন দুর্গতি চাপিয়ে দেয়া হয় একমাত্র কারণে—যেন মেয়েটি কোন ক্রমেই কোন পরপুরুষের সাথে কথা বলতে অথবা দেখা করতে না পারে।
তবে আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে যে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রত্যেক উচ্চশিক্ষার্থী সৌদিরা চায় বিদেশে পাড়ি দিতে। তারা চায় যে কোন প্রকারে হোক তাদেরকে সৌদি আরব থেকে বের হতে হবে। তবে বিদেশে যাবার আগে এই সব শিক্ষার্থীদেরকে দুই সপ্তাহের এক পরিচিতি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হয়। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে কেমন করে ওরা কাফেরদের নৈতিক কলুষতা থেকে নিজেদের রক্ষা করবে। এই পরিচিতি অনুষ্ঠান সাধারণতঃ আয়োজন করে থাকে যেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদেরকে বিদেশে পাঠানো হচ্ছে। এই পরিচিতি অনুষ্ঠানে এই সব ব্যাপারে অনূশীলন দেওয়া হয়:
- কেমন করে কাফেরদের থেকে নিজেকে বহুদুরে রাখা যায়।
- কোন কাফের যদি ইসলাম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে তবে সবচাইতে ভাল উত্তর কি দিতে হবে।
- যদি কোন কাফের ইসলাম সম্বন্ধে বিব্রতকর প্রশ্ন করে তবে তার কেমন করে যথাযত উত্তর দিতে হবে।
- কোন কাফের যদি ভোজসভায় আমন্ত্রণ জানায় তবে করণীয় কি।
- কাফের যদি কোন পানীয় পান করতে দেয় তবে কি করতে হবে।
- যদি হারাম খাদ্য দেয়া হয় তবে তার করণীয় কি।
- কেমন করে কাফেরদের নৈতিক অধঃপতন ও দূষিত সংস্কৃতি থেকে নিজেকে রক্ষা করে শিক্ষা শেষে দেশে ফিরে আসা।
মোদ্দা কথায় এসবের উদ্দেশ্য হচ্ছে যে কোন ক্রমেই যেন সৌদি ছাত্ররা অ মুসলিম ছাত্রদের দ্বারা প্রভাবিত না হয়।
এই প্রবন্ধের শেষের দিকে আমি একটি সংবাদ উদ্ধৃতি দিচ্ছি (আরব নিউজ) যা থেকে আপনারা আঁচ করতে পারবেন যে ইসলামে কি ধরনের সহিষ্ণুতা আছে। এ ছাড়াও দেখা যাবে সৌদি সরকার ইসলামী সন্ত্রাসিদের বিরুদ্ধে কি করছে।
মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০০৬: এক ফুলের দোকানদার নৈতিক পুলিশের (moral police) হয়রানি এড়াবার জন্যে তিন দিনের জন্যে দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আল ওয়াতান জানিয়েছে যে ভ্যালেন্টিন দিবসে নৈতিক বিশুদ্ধতার উন্নতি ও নৈতিক অধঃপতন রোধ করার কমিটি খুবই তৎপর হয়ে উঠে। ধর্মীয় পুলিশ এই দিনটিকে ধরে অনৈতিকতা বৃদ্ধির দিন হিসেবে গণ্য করে থাকে। তাই নৈতিক পুলিশের উৎপাত থেকে মুক্তির জন্য ফুলের দোকান থেকে ভ্যালেন্টিন দিবসের এক দিন আগে, ঐ দিনটিতে এবং ঐ দিনের এক দিন পর পর্যন্ত লাল গোলাপ উধাও হয়ে যায়। এই টা বিশেষতঃ দেখা যায় রিয়াদের ফুলের দোকানগুলোতে।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে জানি যে অনেক ফুলের দোকান ভ্যালেন্টিন দিবসে বন্ধ থাকে, এর কারণ হলো গত বছর ভ্যালেন্টিন দিবসে দোকান খোলা রাখার জন্যে ঐসব দোকানগুলোকে জরিমানা করা হয়। যদিও তারা লাল গোলাপ বিক্রি করে না তথাপিও ফুলের দোকানগুলোকে ভ্যালেন্টিন দিবসে বন্ধ রাখতেই হবে। ধর্মীয় পুলিশ জোরজবরদস্তিমূলক ভাবে ফুলের দোকানগুলোকে বন্ধ করে দেয় কেননা ওরা চায়না যে ছাত্র ছাত্রী এবং তরুণ তরুণীরা কাফেরদের অনুকরণ করুক। এই ধর্মান্ধ সৈনেকেরা উদ্বিগ্ন থাকে যে দেশের তরুণেরা না জানি কফেরদের প্রেমে পড়ে যায়। এখানে উল্লেখ্য যে আমাদের দেশের ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ কোন দিনই সহ্য করবেনা যে আমাদের কেঊ কোন দিন কাফেরদেরকে ভালবাসে। কর্তৃপক্ষ সর্বদা ব্যাস্ত আছে সৌদিদের মনে কাফেরদের প্রতি অতীব ঘৃণা ও শত্রুতা সৃষ্টি করতে যাতে করে কোন সৌদির হৃদয়ে কোন ভাবেই যেন অ মুসলিমদের প্রতি সহানুভূতি ও অনুকম্পার উদ্রেক না হয়। দুঃখের বিষয় হচ্ছে যে ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে খুবই জয়ী। এরা প্রচন্ড দমন নীতি, আতঙ্ক, সন্ত্রাস ও আইনী সাজা আরোপের মাধ্যমে সৌদিদের মনে কাফেরদের প্রতি অতীব ঘৃণা ও অবজ্ঞার ভাব সৃষ্টি করতে সফল হয়েছে। এ—ই হচ্ছে ইসলামের সর্বগ্রাসী শক্তি।
উপসংহারে আমাকে বলতে হচ্ছে যে সৌদি আরবে প্রেম ও ভালবাসার কোন স্থান নেই। প্রেম ও ভালবাসার যে কোন প্রতীক প্রকাশ করা এক মহাপাপ এবং এই পাপ এক দণ্ডার্হ অপরাধ, যার জন্যে গুরতর শাস্তি পর্যন্ত পেতে হয়। এই সব অমানুষিক অত্যাচার ও অমানবিক আচরণ সরকারের নাকের ডগায় করা হচ্ছে কিন্তু সরকার নির্বিকার। সত্যি বলতে কি এই সব অসভ্য কীর্তি কলাপ সরকারী অর্থ এবং পৃষ্টপোষকতায় ই চালানো হচ্ছে। এখানে লক্ষনীয় যে সৌদি আরবে যে সমস্ত ইসলামী সংস্থা আছে সে সবগুলোই সৈদি সরকার দ্বারা সমর্থিত। এর ফল এই যে সৌদি সরকার ইসলামী ধর্মান্ধদের নীরব সমর্থক। সরকারের এই নীরব সমর্থনের কারণ এই যে যাতে কেউ কোন ভাবেই যেন রাজপরিবারের সমালোচনা করতে না পারে। সংক্ষিপ্ত ভাবে ইসলামী সন্ত্রাসের প্রতি সৌদি রাজপরিবাবের নীতি হোল এই: দরকার হোলে তোমরা (ইসলামী সন্ত্রাসিরা) সমস্ত বিশ্বে আগুন লাগিয়ে দাও; কিন্তু কোন ভাবেই আমাদের বিরুদ্ধে কিছু করবে না অথবা বলবে না।
কাজেই আমরা কেমন করে বিশ্বাস করি যে সৌদি আরব ইসলামী সন্ত্রাসির বিপক্ষে? অনুগ্রহপূর্ব্বক একটু চিন্তা করে দেখুন।
খালেদ ওলীদ
এপ্রিল ২১, ২০০৬
সৌদি আরব
আমার মনে হয়, আরববাসীরা মোহাম্মদ ও ইসলাম যে ভুয়া ঠিকই চিনতে পেরেছে । কথায় বলে না রতনে রতন চেনে। মোহাম্মদ একজন আরব , সুতরাং আরবরাই তাকে চিনবে ভাল এটাই তো স্বাভাবিক। যে কারনে খোদ মোহাম্মদের দেশের লোক হয়ে তারা সব রকম অনৈসলামিক কার্য কলাপে লিপ্ত থাকে, অবশ্যই আড়ালে। উপরে উপরে ইসলামের লেবাস পরে থাকে। ভিতরে ভিতরে তারা যথেচ্ছ মদ খায়, জুয়া খেলে, অবৈধ যৌন সংসর্গ করে। যে লোক কোরানের উপর পূর্ন বিশ্বাস স্থাপন করবে তার পক্ষ এ ধরনের কাজ করা একটা অকল্পনীয় ব্যাপার। ওসব গুনাহ এর শাস্তি যে অনন্তকাল ধরে জাহান্নামের আগুনে পুড়ে খাক হওয়া তা তো ওরা ভাল মতই জানে। তার পরেও ওরা সেসব কাজ করে অবলীলায় . তার মানে ইসলাম ভূয়া না হলে তারা তা কখনো করত না। তাহলে তারা ইসলাম নিয়ে অত মাতামাতি করে কেন ? কারন একটাই, যে কোন কারনেই হোক , ইসলাম মানব সমাজের এক বিরাট অংশকে অবচেতন করে ফেলেছে, তাই ইসলামকে ওরা অন্য মানুষের ওপর প্রভাব বিস্তারের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করতে পারে অনেকটা বিনা আয়াশে। এ ধরনের অস্ত্র কি কেউ ত্যাগ করে নাকি ? কেউ কল্পনা করেছেন, হজ্জ ও ওমরা থেকে কি বিপুল অর্থনৈতিক লাভ করে সৌদি আরব প্রতি বছর? সৌদিরা বুঝে ফেলেছে, তেল ওদের বেশীদিন থাকবে না . তখন ওদেরকে না খেয়ে থাকতে হবে। কেউ ওদের মত অসভ্যদেরকে সাহায্য করতে যাবে না। তাই তার আগেই যতটা পারা যায় বিশ্ববাসিকে ইসলাম ও কোরান দ্বারা বেশী বেশী অবচেতন করে ফেলতে হবে। তা হলে তেল শেষ হলেও অসুবিধা নেই। প্রতি বছর যে লক্ষ লক্ষ লোক হজ ও ওমরা পালন করতে যাবে, তা থেকে যা লাভ হবে তা দিয়েই তারা বেশ আরাম আয়েশে থাকতে পারবে। সাম্প্রতিক কালে ইসলাম নিয়ে সৌদিদের অতিরিক্ত আগ্রহের কারনটা সেটাই। যে কারনে তারা তথাকথিক ইসলামিক চিন্তাবিদ নামক কিছু দালাল তৈরী করছে সামান্য কিছু বিনিয়োগ দ্বারা যার ফসল তারা পরে পাবে।
একটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। শারজাহ’র এক শেখের সাথে পরিচয়। তিন চার দিন তার সাথে আড্ডাও দিলাম। আমার আড্ডার কৌতুহল ছিল কারন আমি আসলে শেখদের জীবন যাপন, চিন্তা ভাবনা এগুলো জানতে চাইছিলাম।
আমাদের আলোচ্য ভদ্রলোক বাংলাদেশে এসেছেন মসজিদ মাদ্রাসায় দান খয়রাত করতে। তিনি শরিয়া কোর্টের বিচারক ছিলেন পাকিস্তানে এবং আমিরাতে। এখন ব্যবসায়ী। তার অনেকগুলো পেট্রোলপাম্প আছে, আছে নিজস্ব ওয়েসিস।
প্রথমেই বিপদে পড়া গেল হারাম হারাম নিয়ে। ঘটনাটা নেপালে। কোন খাবার হালাল তা যেহেতু নিশ্চিত না তাই তিনি শুধু সালাদ খেয়ে যাচ্ছিলেন। অনেক খুজে আমি তার জন্য একটা টার্কিশ রেস্তোরা বের করলাম। তবে সেখানে কাজ করে সব নেপালী। তারাওযে হালাল উপায়ে সব করে তার কোন গ্যারান্টি নেই। কিন্তু টার্কিশ বলে উনি আর না করলেন না। আস্ত মুর্গীর রোষ্ট খেলেন দুটা।
পরদিন গিয়ে দেখি ভদ্রলোক রুমে নেই। পরে তাকে আবিস্কার করলাম হোটেলের ম্যাসাজ পার্লারে। সেখানে উনি নরম হাতের ম্যাসাজ নিচ্ছেন।
রাতের বেলায় আমাকে বললেন কিছু ভ্যালেন্টাইন মেসেজ লিখে দিতে। আমি আগ্রহী হয়ে আরেকটু চাপাচাপি করাতে তিনি আসল ঘটনা বললেন। এক ফিলিপিনো মেয়ের সাথে তার ভাব। ফিলিপিন গেলে সে তার সাথে থাকে। আমি পরদিন নেট থেকে ডাউনলোড করে তাকে শখানেক মেসেজ প্রিন্ট করে দিলাম।
যাই হোক তিনি আমাকে শরিয়তের বিচারে মহিলাদের আচরন নিয়ে অনেক জ্ঞানও দিয়েছিলেন। অনেকগুলো গল্প বলেছিলেন তার কোর্ট এর ঘটনা থেকে। অনেক রোমহর্ষক ঘটনা আছে সেখানে। কিন্তু গল্প বলে তার কোন রেফারেন্স নেই। কাজেই সেগুলো আর শেয়ার করছিনা।
@বকলম,
আমি নিশ্চিত যে আপনি ঐ শেখের সাথে ছিলেন বলে উনি হারাম-হলাল নিয়ে নিশ্চিত হওয়ার ভান করছিলেন। তা না হলে যে রেস্তোরায় হালালের কোন গ্যারান্টি নেই সেখানে কি করে মুর্গীর রোষ্ট খান, শুধু মুসলিম রেস্তোরা বলে? ওনাদের সব হারামই হালাল হয়ে যায় যখন ওনারা কিছু করার খায়েশ পোষন করেন, কারন ধর্মীয় লেবাসের আড়ালে সবকিছুই জায়েজ।
আবার সেই ভদ্রলোকই বাংলাদেশে যান মসজিদ মাদ্রাসায় দান খয়রাত করতে! বাংলাদেশে স্কুল-কলেজ স্থাপন না করে মসজিদ-মাদ্রাসায় ওনাদের অত ইন্টারেষ্ট কেন?
অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
@বিপ্লব পাল,
এই নির্দোষ চাওয়াতো শুধু একা মুসলমানদের না, এটা যে কোন সুস্থ লোকেরই চাওয়া। তো সারভাইভাল আব ফিটনেসের মর্মার্থ্য অন্য সব ধর্মের লোকজন উপলব্দি করলনা, করল শুধু মুসলমানরাই? যৌনতার মত একটি স্বাভাবিক জিনিসকে মুসলিম সমাজে এত অবদমিত করে রাখার কারন কি? তারা ভাত চাইছে, বংশধর চাইছে এটাই শুধু কারন নয়, কারনটা অন্য কিছু এবং তা হলো স্বার্থ হাসিল করার সহজ উপায়।
@ব্রাইট স্মাইল্,
তা ঠিক না। মুসলমানদের মধ্যে শিক্ষা এবং চেতনার অভাব আছে বলে তারা ধর্মের শর্টকাটতে বিশ্বাস করে বেশী।
@বিপ্লব পাল,
মুসলমানদের মধ্যে শিক্ষা এবং চেতনার অভাব কেন হয়, নিশ্চয়ই মুসলমানরা যে ধর্ম পালন করে তাতে কোথাও গলদ আছে।
লিখতে ভূলে গেছিলাম:
আরবের সবার, নারী ও পুরুষ, তাদের আছে অদম্য যৌনক্ষুধা। এরা বোধ করি বিশ্বের সবচাইতে কামাতূর লোক। এটা আমার মনগড়া কথা নয়। নবীজির জীবনি রচয়িতা রডিন্সন সাহেব লিখেছেন যে যদি বিশ্বের সমস্ত যৌনক্ষুধা এক করা হত তবে তা থাকবে আরবদের দেহে।
আমি এতে অন্যায়ের কিংবা অনৈতিকতার কিছু দেখি না। যৌনক্ষুধা তো এক প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। এই ক্ষুধাকে এড়ানো তো অসম্ভব।
এখন চিন্তা করুন এই অদম্য আদিম ক্ষুধাকে যখন শক্তিবলে বেঁধে রাখা হয়, তখন তা একটা আনবিক বোমার মতই সুপ্ত হয়ে থাকে। এটা যেন একটা বাঁধের মতই, ছাড়া পেলেই সর্বগ্রাসী বন্যায় পরিনত হবে।
সৌদি আরবের পুরুষেরা এই যৌন আনবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়, যখনই তারা বিদেশে যায়, বিশেষত্বঃ মিশর, বাংকক, ম্যানিলা, কোপেনহাগেন, মুম্বাই, আমস্টারডাম… আপনি যদি কোনদিন বাংকক-এর উঁচুদরের হোটেলের কোন বারে যান তবে দেখবেন এই সব আরবেরা কি করছে। দেখবেন তারা মদ্য পান করে যাচ্ছেতাই ব্যবহার করছে বারের কর্মী মেয়েদের উপর। প্রত্যেকের পাশে বসা থাকে থাই বেশ্যা। আর আরবেরা লোক চক্ষুর সম্মুখেই ঐ অসহায়া বেশ্যা নারীদের সাথে অশ্লীল, কুরুচিপূর্ণ ব্যাবহার করছে। লক্ষ্য করবেন যে ঐ আরবেরা ছাড়া অন্য সব খদ্দের মদ খাচ্ছে কিন্তু সভ্য ব্যবহার করছে।
হয়তো জিজ্ঞাসা করবেন আমি কি করছিলাম ঐ হোটেলের বারে। হাঁ আমিও ওখানে দুই পাত্র বিয়ার পান করেছিলাম। কিন্তু সুন্দরী থাই বেশ্যা ক্রয় করার মত সামর্থ্য আমার ছিলনা। তখন আমি ছাত্র ছিলাম। তাই দুই গ্লাস বিয়ার ছাড়া আমার পক্ষে ক্রয়সাধ্য কিছু ছিলনা। আরবদের ঐ বেলেল্লেপনা ব্যবহারে আমার লজ্জার অন্ত ছিলনা। কারণ আমার নামটা যে ছিল ইসলামী।
এখানে বলে রাখা ভাল যে শরীয়া আইন অনূযায়ী কাফের মেয়েদের সাথে অফুরন্ত যৌন সঙ্গমে কোন বাধা নেই ইসলামে—আর তা যদি হয় কাফেরদের দেশে তাতে কোন অসুবিধাই নেই।
কিন্তু দুঃখ হয় সৌদি আরবের যৌনক্ষুধিত মেয়েদের জন্যে। তাদের বিদেশে গিয়ে ঐ যৌন আনবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটানোর কোন সুযোগই নেই। তাই এই অতিশয় যৌনক্ষুধার্ত আরব মেয়েদের বিকল্প পথ বেছে নিতে হয়—যা আমি আগেই লিখেছি।
@আবুল কাশেম,
আপনি কি বলতে চাইছেন ইসলাম অনুযায়ী কাফের মেয়েদের সাথে যা খুশী ব্যাবহার করা ইসলাম সিদ্ধ? তাই কখনো হয় না কি। এগুলো আমার মতে একটু বেশী অপব্যাখ্যা হচ্ছে। মুসলিমরা সাম্প্রদায়িক একটু বেশী তার কারন ধর্মীয় বিবর্তনের অভাব-কিন্ত সেটাকে এই ভাবে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বলাটা ঠিক না।
@বিপ্লব পাল,
ডঃ বিপ্লব, আমি জানতাম আপনি আমার কথা বিশ্বাস করবেন না।
আপনি কি হেদায়া বইর নাম শুনেছেন? ঐ বইটি হচ্ছে হানাফি শরীয়া আইনের একমাত্র বই যা পাক-ভারত ও বাংলাদেশের ্মুসলিম আইনের কোড যা আদালত মেনে চলে। এমনকি ইংল্যান্ডের ও অন্যান্য দেশের ব্যারিস্টার্র ইসলামী আইনের মামলআ গুলোর নিস্পত্তি করে এই বই-এর লেখা আইনোনুযায়ী। আমার সময় নাই এই বই-এর উদ্ধৃতি বাংলায় অনুবাদ করে এখানে দেবার। এ বিষয়ে আমার লেখা ‘ইসলামে কাম ও কামকেলী’ এবং ঊইমেন ইন ইসলাম বইদুটি পড়তে পারেন।
আপনি হেদায়া বইটা সংগ্রহ করে পড়ুন। তার পর যদি প্রমান করতে পারেন যে আমি হানাফি শরিয়া আইনের অপব্যাখ্যা করেছি তবে আমি প্রতিজ্ঞা করছে যে ইসলামের বিরুদ্ধে যে কলম ধরেছি আজ প্রায় দশ বছর যাবত, সেই কলম আমি ছেড়ে দেব।
আপনি কি জানেন মুক্তিযুদ্ধের সময় জামাতীরা গনিমাত্তের মাল (যুদ্ধেলব্দধ নারী) সরবরাহ করত পাকিস্তানের ইসলামী জিহাদিদের জন্য? জামাতীদের মত ছিল জামাতীদের ছাড়া অন্য বাঙ্গালীরা কাফের। তাই তাদের মেয়েদেরকে ব্যবহার করা যায় গনিমত্তের মাল হিসাবে।
@আবুল কাশেম,
আপনি কোরানে কোন আয়াত দিয়ে প্রমাণ দিলে ভাল হয়। হানাফি আইনটি কি সেটাও এখানে জানালে বাধিত হই। গণিমাল ভোগ আর কাফের কন্যা কি এক? তাছারা অনেক ইসলামিক পন্ডিতই রায় দিচ্ছেন যুদ্ধকালীন যেসব আয়াত ছিল, সেগুলো বর্তমানে টানাই উচিত না।
ধর্ম নিয়ে কোন ইল্যুশন আমার নেই-কিন্ত একটা ধর্ম এত বাজে হতে পারে না যে সেখানে নির্দেশ থাকবে অন্যধর্মের মেয়েদের ইজ্জত লুট করা পুন্যবানের কাজ।
@বিপ্লব পাল,
ডঃ বিপ্লব
দেখুন:
http://www.mukto-mona.com/women/women_in_islam1.htm
http://www.faithfreedom.org/Articles/abulkazem/SexualityinIslam.htm
এর বাংলা অনুবাদ এখানে:
http://www.mukto-mona.com/Articles/kasem/IslamiKamsutra-1.pdf
এই দুটি রচনায় আপনার যা দরকার পেয়ে যাবেন
হেদায়ার ব্যাপারে দেখুন:
Hamilton, Charles. Hedaya. Translated in English in 1870 from the Persian version. Reprinted by Kitab Bhavan, 1784 Kalan Mahal, Daraya Ganj, New Delhi, 1994.
No punishment for Zina or adultery committed in a foreign country—185
Punishment is not incurred by committing whoredom in foreign country.—IF a Mussalman be guilty of whoredom in a foreign country, or in the territory of the rebels, and afterwards return into a Mussalman state, punisment is not to be inflicted upon him, on the plea that a man, in embracing the Mussalman faith, binds himself to all the obligations thereof, wherever he may be. The arguments of our doctors on this occasion are twofold; –FIRST, the Prophet gas said, “punishment is not to be inflicted in a foreign land; “—SECONDLY, the design of the institution of punishment is that it may operate as a prevention or warning; now the Mussalman magistrate has no authority in a foreign country, wherefore if punishment were instituted upon a person committing whoredom in a foreign country, yet the institution would be useless; for the use of the institution is that punishment may be executed; and as the magistrate has no authority in a foreign country, the execution is impossible; whence it appears that the commission of whoredom in a foreign country does not occasion punishment there; and if this person should afterwards come from the foreign territory into a Mussalman state, punishment cannot be executed upon him; because as his whoredom did not occasion punishment at the time of its being committed, it will not afterwards occasion.
এ ব্যাপারে অনেক প্রবন্ধ লেখা হয়েছে। মুক্তমনাতেও পাবেন। অথবা ফেইথ ফ্রীডম, কিম্বা ইসলাম ওয়াচ সাইট দেখতে পারেন।
ইসলাম ও অনৈসলামের যুদ্ধ চলবে অনন্তকাল যাবত। এজন্য সবই, কাফের মেয়েরা তো অবশ্যই গনিমাত্তের মাল। যেহেতু অনৈসলামী বিশ্ব ইসলামী বিশ্বের চাইতে অনেক শক্তিশালী, তাই ইসলামীরা পারছেনা কাফের মেয়েদেরকে গনিমাত্তের মাল হিসেবে ব্যাবহার করতে। দেখুন, মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙ্গালীরা যখন দুর্বল ছিল, তখন তাদের মেয়েদেরকে ইসলামীরা ঠিকই গনিমাত্তের মাল হিসেবে ধরেছে। এব্যাপারে যদি আপনি ভিন্নমত পোষন করেন তবে আমার আর কিই বা লেখার আছে। দুখের সাথে বলতে হয়—আপনি ইসলামের কিছুই জানেন না।
আপনি ঠিকই লিখেছেন। আমিও তাই-ই বিশ্বাস করতাম—ইসলাম কোন দিন এত বাজে হতে পারে না। সেই জন্যেই তো গত তিরিশ বছর যাবত ইসলামকে জানতে প্রচেষ্টা করেছি। ফলাফল তো আপনি নিজেই দেখছেন আমার লেখায়।
আপনিও দেখুন না—ইসলাম নিয়ে গভীর পড়াশোনা করুন। তারপর আপনার মতামত জানান।
আচ্ছা, এই ফোরামে ইসলাম নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করার সময় আমার আমার নেই। আপনি যদি মনে করেন আমি ইসলামের অপব্যাখ্যা দিচ্ছি—তবে আপনি একটি পূর্ণাঙ্গ প্রবন্ধ লিখুন, সেটি প্রকাশ করুন মুক্তমনায়, অথবা অন্য কোন সাইটে। তারপর আমি আপনার প্রবন্ধের উত্তর দিব।
আপনি ঐ প্রবন্ধ বাংলা অথবা ইংরাজী এক্যে কোন ভাষায় লিখতে পারেন।
@আবুল কাশেম,
আমি আপনার লেখা এবং কোরান পরে অনেক কিছু জানতে শিকতে পেরেছি। কিন্তু আমি ভারতিও মুসলিমদের বললে ওরা deny করে। ওরা শবশময় একটা denial mode-এ থাকে। আপনি সততি কথাই বলেছেন। রেফারেন্স গুলওতে তাই দেখলাম। ধন্নবাদ।
@আবুল কাশেম,
পারেননি বলেই আরবীদের প্রতি বিদ্বেষ মূলক মনোভাব প্রকাশ করছেন। আপনার যে মজা করার খায়েশ ছিল তা কিন্তু বোঝা যায়, আপনার সেই সকল বারে সবল উপস্থিতি। তবে মনে হয় এখন পকেটের জোর বেড়েছে , এখন একবার ট্রাই করতে পারেন। কি আমার কেন জানি মনে হচ্ছে, আপনার কাছে আঙ্গুর ফল টক। পয়সার অভাবে আপনি থাই গার্লদের সাথে মজা মারতে আর করবেন, অসভ্য আরবদের ওপর আল্লাহর রহমত আছে, তাই ওদের দেশেই সব তেলের খনি। তেল বিক্রি করে আর মজা মারে। আল্লার রহমত ছাড়া কি তা সম্ভব ? সবই আল্লাহর ইচ্ছা ভাই। আল্লাহ যারে দেন তারে ছাপ্পর মাইরা দেন। :-/
@ভবঘুরে,
আমার কেন জানি মনে হচ্ছে, আপনার কাছে আঙ্গুর ফল টক। পয়সার অভাবে আপনি থাই গার্লদের সাথে মজা মারতে পারেননি বলেই আরবীদের প্রতি বিদ্বেষ মূলক মনোভাব প্রকাশ করছেন। আপনার যে মজা করার খায়েশ ছিল তা কিন্তু বোঝা যায়, আপনার সেই সকল বারে সবল উপস্থিতি। তবে মনে হয় এখন পকেটের জোর বেড়েছে , এখন একবার ট্রাই করতে পারেন। কি আর করবেন, অসভ্য আরবদের ওপর আল্লাহর রহমত আছে, তাই ওদের দেশেই সব তেলের খনি। তেল বিক্রি করে আর মজা মারে। আল্লার রহমত ছাড়া কি তা সম্ভব? সবই আল্লাহর ইচ্ছা ভাই। আল্লাহ যারে দেন তারে ছাপ্পর মাইরা দেন। :-/
@ভবঘুরে,
হাঁ, আপনি ঠিকই লিখেছেন। ঐ আরবেরা সুন্দরী থাই নারীদের সঙ্গ পাচ্ছে পয়সার জোরে আর আমি কোন একটি থাই ্রঅমনীর কেশেরও আঘ্রান পেলাম না—এটা কি কম দুঃখ?
তখন ঐ আরব্দের প্রতি ঈর্শা হচ্ছিল বৈকি। তাই ভুলবার জন্য দুই গ্লাস বিয়ার খেলাম ও অতীব সুন্দরী যে থাই মেয়েটি বিয়ার সরবরাহ করলো তার প্রতি মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আমি আমার কামনা চরিতার্থ করলাম। তখন তরন ছিলাম–আরা এখন বয়স হয়ে গেছে।
@আবুল কাশেম,
আপনার অকপট স্বীকারুক্তি প্রসংশাযোগ্য। আমার মনে হয় সাধারনভাবে কোন নরম্যাল পুরুষ এভাবেই চিন্তা করে। হতে পারে আমি ভুল।
@আবুল কাশেম,
আমার কেন জানি মনে হচ্ছে, আপনার কাছে আঙ্গুর ফল টক। পয়সার অভাবে আপনি থাই গার্লদের সাথে মজা মারতে পারেননি বলেই আরবীদের প্রতি বিদ্বেষ মূলক মনোভাব প্রকাশ করছেন। আপনার যে মজা করার খায়েশ ছিল তা কিন্তু বোঝা যায়, আপনার সেই সকল বারে সবল উপস্থিতি। তবে মনে হয় এখন পকেটের জোর বেড়েছে , এখন একবার ট্রাই করতে পারেন। কি আর করবেন, অসভ্য আরবদের ওপর আল্লাহর রহমত আছে, তাই ওদের দেশেই সব তেলের খনি। তেল বিক্রি করে আর মজা মারে। আল্লার রহমত ছাড়া কি তা সম্ভব? সবই আল্লাহর ইচ্ছা ভাই। আল্লাহ যারে দেন তারে ছাপ্পর মাইরা দেন। :-/
@ভবঘুরে,
এক কথা এতবার বলার মানে কি?
@আদিল মাহমুদ,
আসলে অভ্র ফরাটে পরিবর্তনে ভুল হয়ে গেছিল প্রথম, লাইন এলোমেলো হয়ে গেছিল। পরের বার দেখি নিজেকে নিজেই উত্তর দিয়েছি। অর্থাৎ মহা গাধামি করে ফেলেছিলাম। তৃতীয়বার সফল হয়েছিলাম। প্রকৃত বিষয় হলো আমি এখনো আপনাদের অভ্র বা ইউনিকোড ইত্যাদি বিষয়ে দতা অর্জন করতে পারি নাই। তাই মাঝে মাঝে মজা করতে গিয়ে নিজেই মজার পাত্র হয়ে যাই। 😥 যাইহোক, অনিচ্ছাকৃত রিপিট এর জন্য দুঃখিত। 🙁
@ভবঘুরে,
বুঝলাম।
তবে কাশেম সাহেব কতটা মজা পান সেটা হল কথা।
এই ধরনের কথাবার্তা একটা রাশানলিস্ট ফোরামে আশা করা যায় না। যৌনতা একটি স্বাভাবিক জিনিস এবং তা অবদমিত করে রাখলে, সেখানে বিচ্যুতি আসবেই। কিন্ত এই বাক্যের মানে হল শুধু আরবের মেয়েরাই যৌন ক্ষুদায় ভুগছে, বাকি মেয়েদের যৌন ক্ষুদা নেই! এসব ত পাগলের কাহিনী। রক্ষনশীল সমাজ কেন, আমেরিকার লিব্যারাল সমাজেও কি ইনসেস্ট কম হয় না কি?
ইসলামকে আক্রমন করার জন্যে এই সব আট ভাট যৌন আলোচনা করা কি খুব জরুরী? নৃতত্ত্ব এবং সমাজবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে দেখলেই ত আমার মনে হয় যেসব মুসলমানরা অন্ধকারে আছে, তাদের দৃষ্টি বেশী খুলবে। তারা দুটো ভাত চাইছে-চাইছে তাদের বংশধর-আর সেই বংশধরদের জন্যে নিরাপত্তা। আপনারা সেখান থেকেই শুরু করুন না। অনেক বেশী লোকে শুনবে। বোঝান কেন ধর্ম বর্তমান যুগে তার সারভাইভাল ফিটনেস কমাবে। প্রতিটা লোক সন্তান সহ বাঁচতে চাইছে-আপনারা সেখান থেকে শুরু করলেই ভাল হয়।
@বিপ্লব পাল,
ডঃ বিপ্লব, আমি যা পড়েছি এবং খালেদ আমাকে ই-মেলে যা লিখছে তা-ই বলেছি।
দুনিয়ার সব জাগাতেই যৌন ব্যভিচার হয়–এটা আমরা সবাই জানি। এতে নতুন কিছু নাই।
কিন্তু ইসলামী সমাজে তো আল্লা্র নিয়ম চলে। এখানে কেমন করে এই সব ব্যাভিচার হতে পার?।
এবার আপনি আমাকে দেখান আমি কেমন করে ইসলামকে আক্রমন করেছি।
@বিপ্লব পাল,
পাশ্চাত্য দেশগুলিতেও উদার সমাজের নামে অনেক অনাচারই হয়। তবে ধর্মের নামে ভন্ডামী দেখলে খারাপ লাগে বেশী।
পাশ্চাত্য সমাজ ও টিপিক্যাল মধ্যপ্রাচ্যীয় সমাজে দুই ধরনের চরম পন্থা কাজ করে আমার মনে হয়। একটি সমাজ অতিরিক্ত উদার, আর একটি অতিরিক্ত রক্ষনশীল।
বিলিয়ন ডলার প্রশ্ন হল যে এর মাঝামাঝি নিখুত সমাজ ব্যাবস্থা কোনটি? কি ই বা তার ভিত্তি? এই প্রশ্নের জবাব মনে হয় কখনোই পাওয়া যাবে না, আর উত্তর মনে হয় সময় ও স্থানের সাথে পরিবর্তনশীল।
@আদিল মাহমুদ,
আরেকটু যোগ করার বাকী রয়ে গেল,
একটি সমাজ অতিরিক্ত উদার, অনাচার চলছে, কিন্তু ভন্ডামী করে নয়।
আর একটি অতিরিক্ত রক্ষনশীল, অনাচার চলছে, কিন্তু চরমতম ভন্ডামীর আড়ালে।
@ব্রাইট স্মাইল্,
সে কথা আগেই বলেছি, ধর্মের নামে ভন্ডামি দেখতে ভাল লাগে না।
উদার সমাজ উদারতার নামে বাড়াবাড়ি করলেও আশা করা যায় যে এক সময় সমস্যা বুঝলে ঠিকই হয়ত শোধরাতে পারবে, কট্টরপন্থী সমাজে সে সম্ভাবনা অনেক কিমি.।
সংক্ষিপ্ত ভাবে ইসলামী সন্ত্রাসের প্রতি সৌদি রাজপরিবাবের নীতি হোল এই: দরকার হোলে তোমরা (ইসলামী সন্ত্রাসিরা) সমস্ত বিশ্বে আগুন লাগিয়ে দাও; কিন্তু কোন ভাবেই আমাদের বিরুদ্ধে কিছু করবে না অথবা বলবে না।
@লাইজু নাহার,
আল্লাহ ছাড়া ওদের উদ্ধার করার কেউ নেই। চোদ্দ শ বছর আগে একবার উদ্ধার করেছিল বলেই কিন্তু ওরা একসময় বিশ্ব দাবড়ে বেড়িয়েছে। আজকেও তেলের পয়সায় বিশ্ব দাবড়ে বেড়ায়। আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কি তা সম্ভব? সুতরাং অপো করুন, মনে হয় আবারও কোন পয়গম্বর আসার টাইম হয়ে গেছে ওদেরকে উদ্ধার করতে।
ধন্যবাদ।
@ আবুল কাসেম,
তৃতীয় প্রচেষ্টায় আপনি যা করেছেন, আমি হাজার চেষ্টা করেও তা করতে পারবো না। আপনার অনুবাদ সুন্দর সহজ সাবলিল, শব্দ চয়ন, বাক্য গঠনে যাদু আছে, পড়ি মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায়। লেখাটি কপি করে নিয়ে যাচ্ছি, বাসায় গিয়ে আর একবার পড়বো।
@মাহফুজ,
আপনাকেও ্ধন্যবাদ। আপনার লেখাতেও যাদু। আমি তো এক নাগাড়ে আপনার লেখা পড়ি, এমনকি টয়লেটে যেতেও ভূলে যায়।
অরবের টাকায় চালিত একটা স্কুলে আমি বেশ কয় বছর পড়েছিলাম। খালেদ ওলীদ এর লেখা পড়তে পড়তে অনেক কথা মনে পড়ে গেল। আমাদেরকেও ট্রাউজার পড়ে ফুটবল খেলতে বাধ্য করা হতো। একবার আন্ত-স্কুল প্রতিযোগীতায় আমরা যখন খেলছিলাম তখন বৃষ্টি শুরু হলো। আমাদের ট্রাউজারের ভারে আমারা নড়তেই পারছিলাম না। যখন আমরা শর্টস পড়ার অনুমতি পেয়েছিলাম তখন খেলার ফলাফল ছিল ৩-০। ট্রাউজার থেকে মুক্তির পরে আর মাত্র ১ গোল শোধ করতে পেরেছিলাম। আমাদেরকেও জোহরের নামাজ পড়তে বাধ্যকরা হতো। এরপর শুরু হতো বয়ান। যথারিতী আফগান মুজাহিদদেরকে ফেরেস্তারা কিভাবে সরাসরি সাহায্য করছে তার বর্ননা থাকতো। মঝে মাঝে আমাদের কে নামাজের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হতো অসময়ে। বড় ভাইয়েরা আমাদেরকে তালিম দিত। পরে জেনেছি তারা ছাত্র শিবিরের লোক। স্কুলটি এখন ও আছে। তবে টুপি পড়া এখন আর বাধ্যতামূলক না। আমাদের অংক স্যার শুনেছি তার চার বিবি নিয়ে স্কুল প্রাঙ্গনেই কোয়াটারে বাস করছেন।
শুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের এক ভ্রমন কাহিনীতে পড়েছিলাম, মেসিডোনিয়াতে কিছু লোক এখনো মহাবীর আলেকজান্ডারের মূর্তি লুকিয়ে পুজো করে। স্ব্প্ন দেখে প্রবল পরাক্রান্ত মেসিডোনিয়ার।
শুনীল বলেছেন- এটা এক মোহময় স্ব্প্ন বা এই জাতীয় কিছু একটা ঠিক মনে নেই। বঙ্কীমচন্দ্র যেমন সত্যযূগের স্ব্প্ন দেখতেন।
বর্তমান যার রিক্ত অতীত নিয়ে গৌরব করার প্রবনতা তার বেশী। আরবদের তেল ফুরাতে আর কত দিন লাগবে, কেউ বলতে পারেন ? তাদের এই জিহাদী জোসের মূল কারন তেল। তেল যখন পাওয়া যায়নি জোস কিন্তু ঝিমিয়ে এসেছিল। জিবীকার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছেনাতো তাই স্ব্প্ন দখতেও বাঁধছেনা। কোরান অবশ্যই একটা কারন, তবে এর প্রান শক্তি অফুরন্ত একথা আমি মানিনা। বাইবেলেও ঘৃ্না সৃষ্টির বহু উপাদান রয়েছে। তবে কোরানের চাইতে পাঁচশত বছরের আগে রচিত হওয়ায় কাজটা কোরানের মত সার্থকভাবে করতে পারেনি।
@আতিক রাঢ়ী,
সৌদী আরবের জাতীয় দলের ফুটবল দল কিন্তু শর্টস পরেই খেলে।
@আদিল মাহমুদ,
কারনটা এই লেখাতেই আছে। জাতীয় পতাকার প্রসংগটা খেয়াল করুন। সরকারী আদেশ আর মোল্লাদের বিরবির করা। আসলে সৌদিতে সরকার আর মোল্লাদের মধ্যে কে বাশী ক্ষমতা রাখে তা এক গবেষনার বিষয়।
“প্রেম ও ভালবাসার যে কোন প্রতীক প্রকাশ করা এক মহাপাপ এবং এই পাপ এক দণ্ডার্হ অপরাধ, যার জন্যে গুরতর শাস্তি পর্যন্ত পেতে হয়। এই সব অমানুষিক অত্যাচার ও অমানবিক আচরণ সরকারের নাকের ডগায় করা হচ্ছে কিন্তু সরকার নির্বিকার। সত্যি বলতে কি এই সব অসভ্য কীর্তি কলাপ সরকারী অর্থ এবং পৃষ্টপোষকতায় ই চালানো হচ্ছে। এখানে লক্ষনীয় যে সৌদি আরবে যে সমস্ত ইসলামী সংস্থা আছে সে সবগুলোই সৈদি সরকার দ্বারা সমর্থিত। এর ফল এই যে সৌদি সরকার ইসলামী ধর্মান্ধদের নীরব সমর্থক। সরকারের এই নীরব সমর্থনের কারণ এই যে যাতে কেউ কোন ভাবেই যেন রাজপরিবারের সমালোচনা করতে না পারে। সংক্ষিপ্ত ভাবে ইসলামী সন্ত্রাসের প্রতি সৌদি রাজপরিবাবের নীতি হোল এই: দরকার হোলে তোমরা (ইসলামী সন্ত্রাসিরা) সমস্ত বিশ্বে আগুন লাগিয়ে দাও; কিন্তু কোন ভাবেই আমাদের বিরুদ্ধে কিছু করবে না অথবা বলবে না।
এর আগে প্রথম খন্ড পড়েছিলাম। অসাধারন আর লোম হর্ষক ।
বিশেষ আপনজনের কাছ থেকে জানা একটা তথ্য
সৌদি আরবের মেয়েদের অনেক বয়স পর্যন্ত বিবাহ হয়না । বিশেষতঃ দেন মোহরের কারনে , তো বাংলাদেশের এক যুবক দুই সৌদি মেয়ের (অসহায় ?) খপ্পরে পড়ে। পালা করে দুই বোন যখন তাদের ভাই (অভিভাবক ) বাসায় থাকতনা তখন তারা তাদের জৈবিক ক্ষুধা মেটাত ।
” একটা পুরূষএর যেমন জৈবিক ক্ষুধা থাকে ,এই মোতাবেক নারীর ও থাকা অস্বাভাবিক নয় ।”
@একা,
হা হা হা , বাংলাদেশে যারা ভাল জীবিকার অভাবে বিয়ে করতে পারছে না , তারা সৌদি আরব গিয়ে মুফতে মজা মারার চিন্তা করতে পারে। তাতে রথ দেখা ও কলা বেচা দুটোই হতে পারে , মানে মজাও লোটা গেল , হয়ত গিফট হিসাবে কিছূ টাকাও পাওয়া যেতে পারে। তবে যত দুর শুনেছি, ধরা পড়লেই কিন্তু মহাবিপদ। একেবারে প্রকাশ্য ময়দানে তলোয়ারের আঘাতে গর্দান পড়ে যাবে।
@ভবঘুরে, আপনার জ্ঞ্যাতার্থে জানাচ্ছি, ধরা পড়েছিল , 😛 (বেচারার উপায় ছিলনা মহলাদের হাত থেকে বাঁচবার) কিন্তু ,পরে ঐ দুবোন ছাড়িয়ে এনেছিল ,এই বলে যে অন্দর মহলে তারা কাজের জন্য
ডেকেছিল । ইশশ ! কী দুঃখজনক । :-X
@একা,
তাহলে লোকটার ভাগ্য ভীষণ ভালো বলতে হবে। তবে আপনি জানলেন কেমনে এ গোপন খবর? এধরনের কোন ঘটনার সাথে কোন লোক জড়িত থাকলে তো সাধারনত তারা তা প্রকাশ করে না , তাহলে ? 😀
@ভবঘুরে,
এমন ঘটনা নাকি ও তল্লাটে মাঝে মাঝেই ঘটে। আমি অনেক বছর আগে শুনেছিলাম এক বৃদ্ধ বাংগালী ভদ্রলোকের কাহিনী, তিনি আবার ঘটনাক্রমে বাংগালীদের স্থানীয় ঈমাম। তিনি একদিন জুমার বারে ইমামতি করতে আসবেন, অনেক দেরী করে আসলেন। তবে কোমর বাঁকা করে সামনে ঝুকে রীতিমত কাঁপতে কাঁপতে। শউধু বলেছিলেন, আমাজে আপনারা ক্ষমা করুন, আমার পেছনে নামাজ হবে না। পুরো কাহিনী আশা করি আর বলতে হবে না।
সাধারনত ছোট খাট কাজে নিয়োজিত লোকেরা বাড়ির আশে পাশে পুরুষেরা না থাকলে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারেন বলে শুনেছি।
@আদিল মাহমুদ,
ওরা কি বুড়ো হাবড়াদেরও ছাড়ে না ? শুনেছি ওরা এক একজন তিন চারটা বিয়ে করে। এর পরেও ওদের মেয়েরা অবিবাহিত থাকে ? একটা মেয়েকেই যেখানে পরিপূর্ন সন্তুষ্ট করা কঠিন , সেখানে তিন চারটারে সন্তুষ্ট করে কেমনে ?
@ভবঘুরে,
কারন ৪ নারীর একজন পুরুষ থাকলে তাদের একজন পুরুষ শেয়ার করতে হয় না? শেয়ার মানেই যে ইকুয়েল শেয়ার হবে এমন তো না। বুঝতেই তো পারেন। সুয়ো রানী দুয়ো রানী বলে কথা আছে। তার উপর অনেক পুরুষ আবার দিনের পর দিন আসেই না, মুম্বাই ব্যাকংকে আরো অধিক বৈচিত্র্যের জন্য যায়।
এসব মিলিয়েই মনে হয় মহিলাদের অবস্থা একটু বেশী লোনলী হয়ে থাকে।
@আদিল মাহমুদ,
এই চান্স েএকটা চাকর িনয়ি েসৌদ িআরব যাব নাক?ি
@ভবঘুরে,
দেখেন লাক ট্রাই করে।
তবে মালি, ক্লীনার, ড্রাইভার, কি দারোয়ান এ জাতীয় কাজে নিষ্ঠা ও আগ্রহ থাকা চাই। সৌদী মহিলারা মনে হয় এখনো অতটা ডেস্পারেট হয়নি যে অফিস আদালত রাস্থাঘাট থেকে জাল মেরে যাকে খুশী তাকেই পাকড়ে নেবে।
গুড লাক। দোয়া রইল।
@একা,
আপনি কষ্ট করে খালীদের বর্ণনা পড়েছেন জেনে খুশী হলাম। ওলীদের সাথে আমার আরা যোগাযোগ নেই। তাকে ই-মেল দিয়েও উত্তর পাই নি। আমি জানিনা তার ভাগ্যে কি ঘটেছে। তবে আমার মনে আছে খালীদ আমাকে একবার লিখেছিল, সৌদি মেয়েদের যৌন ক্ষুধা এতই প্রবল যে অনেক মেয়েই লুকিয়ে মরভুমির বিশাল প্রান্তরে চলে যায়। সেখানে তাদের জন্যে অপেক্ষ করে তাদের বয়ফ্রেন্ড অথবা ভাড়া করা প্রেমিক।
এ ছাড়াও সৌদি নারীরা অনেকেই যৌন ক্ষুধা মিটায় তাদের পরিবারের মাঝেই। অর্থাত, ভাই, পিতা, চাচা, দাদা, নানা, কাজিন—-ইত্যদি। সংবাদপত্রে এবং কোন বইতে (খুব সম্ভবতঃ প্রিন্সেস) পড়েছিলাম সৌদি নারীরা গোপনে তাদের যৌন ক্ষুধা মিটাতে যা কিছু করতে প্রস্তুত—এমনকি মৃত্যু কে উপেক্ষা করেই। অস্ট্রেলিয়ার এক সংবাদপত্রে পড়েছিলাম যে আরব তথা ইসলামী সমাজে incest খুবই প্রকট। এই প্রসঙ্গে পাকিস্তানেরও উল্লেখ ছিল।
ইসলামে যৌনতা নিয়ে জানতে হলে পড়তে পারেন আমার লেখা ‘ঈসলামে কাম ও কামকেলি’ বইটা। এটা মুক্তমনায় আছে।
ভবিশ্যতে ইসলামী নারীদের যৌনতা নিয়ে লেখার ইচ্ছা রইল।
@আবুল কাশেম,
” এ ছাড়াও সৌদি নারীরা অনেকেই যৌন ক্ষুধা মিটায় তাদের পরিবারের মাঝেই। অর্থাত, ভাই, পিতা, চাচা, দাদা, নানা, কাজিন—-ইত্যদি। সংবাদপত্রে এবং কোন বইতে (খুব সম্ভবতঃ প্রিন্সেস) পড়েছিলাম সৌদি নারীরা গোপনে তাদের যৌন ক্ষুধা মিটাতে যা কিছু করতে প্রস্তুত—এমনকি মৃত্যু কে উপেক্ষা করেই। অস্ট্রেলিয়ার এক সংবাদপত্রে পড়েছিলাম যে আরব তথা ইসলামী সমাজে incest খুবই প্রকট। এই প্রসঙ্গে পাকিস্তানেরও উল্লেখ ছিল।”
আপনার জবাবে অবাক হলাম না ,কেননা আমার এক পরিচিতের ড্রাইভার বেচারা এ দেশে প্রায় ই ফোন করে , আর তার দুঃখের কাহিনী বলে ।এইটাও বলে” ম্যাডাম ,এখানে ইসলাম নেই ।কি অসভ্য মেয়েগুলান ( স্থানীয় ভাষা ) আমাগো দেশী মাইয়া গুলান অনেক ভাল।”আমি নতুন বিধায় “কাম কেলী”দেখা হয়নি ।দেখব । আপনার জবাবে আমি আরো অনেক কিছু জানতে পারলাম। আপনাকে ধন্যবাদ ।
@একা,
এমন কথা সৌদি আরব থেকে পালিয়ে অথবা ভিসা নিয়ে ইংল্যান্ডে আসা অনেক প্রত্যক্ষদর্শী যুবকের কাছ থেকে শুনেছি। বাগানের মালী (ক) তার গৃহকর্ত্রীর আদেশ পালনে বাধ্য হয়েছিল, মৃত্যুদন্ডের ঝুঁকি নিয়েও।
আমার জানতে ইচ্ছে করে, মাত্র ১৪০০ বছর পূর্বে মুহাম্মদ ও তাঁর খোলাফায়ে রাশেদীনদের যুগের আরবের মুসলিম সমাজ আর আজকের অবস্থার মধ্যে পার্থক্য কতোটুকু?
একটা সময় ছিল, যখন ফুরাত নদীর তীর থেকে কোন সুন্দরী যুবতী মাথায় স্বর্ণবোঝা নিয়ে একা একা হেঁটে সাহারা মরুভূমি পাড়ি দিলেও কেউ তার দিকে চোখ তোলে তাকাতো না !
শাসন কর্তা নিশীত রাত জেগে প্রজাদের বাড়িবাড়ি ঘুরে খোঁজ নিতেন, প্রয়োজনে নিজের মাথায় আটার বস্তা বহন করে অনাহারীর ঘরে পৌছায়ে দিতেন !
এই নারীই কি সেই নারী, যারা নিজের স্বামীর গায়ে আতর গোলাপ, চন্দন লাগিয়ে সাজিয়ে গুজিয়ে অন্য নারীর সাথে সঙ্গম করতে পাঠাতেন?
হায় ইসলামের স্বর্ণযুগ !
@আতিক রাঢ়ী,
ঠিক তাই, তেল ফুরালে ওরা আর খেতেও পাবে না। ধর্ম একটা আনপ্রোডাক্টিভ জিনিস। যখন পেটে ছুঁচোটান দেবে, তখন ধর্মের ভুত ও পালাবে।
কোন সোর্স ছাড়া শুনলে মনে করতাম ইয়ার্কি হচ্ছে।
পিএইচডি ছাত্রের গবেষনার বিষয় শুনে সবচেয়ে আমোদ পেয়েছি।
– আরব বিশ্ব জ্ঞানচর্চায় পিছিয়ে আছে কে বলল??? যত্তসব বানোয়াট কথাবার্তা।