শুরুর কথা
বেসরকারী টিভি চ্যানেল এনটিভির “আপনার জিজ্ঞাসা” অনুষ্ঠানের আলোচক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মানুষের ইসলাম সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাব দিয়ে ধার্মিক মহলে বেশ জনপ্রিয় হয়েছেন তিনি। মাওলানাকে আমিও চিনেছি এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই। গত কয়েকদিন আগে বিভিন্ন মানুষের কাছে এই মাওলানা সম্পর্কিত স্তুতি বাক্য শুনে আমার ইচ্ছে হলো, তার সম্পর্কে একটু খোঁজ খবর নেবার। যেহেতু তার দাঁড়ি আছে এবং বয়স দেখলে বোঝা যায় মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি যুবক ছিলেন তাই খোঁজখবর নেওয়া মানে হলো, তিনি রাজাকার বা এই জাতীয় কোন কিছুর সাথে জড়িত ছিলেন কিনা, স্বাধীনতা যুদ্ধের তার ভূমিকা কী ছিল সে সম্পর্কে জানা। জানার উদ্দেশ্যে আমি বিভিন্ন মানুষকে মেইল দেওয়া শুরু করি। মেইলা মেইলি শেষ হঠাৎ মনে হয়, কী নির্বোধ আমি গুগলকেই জিজ্ঞেস করা হয়নি। তারপর গুগলে মাওনালা আবুল কালাম আজাদ রাজাকার লিখে সার্চ দিতেই বের হয়ে এলো অসংখ্য তথ্য।
লেখা শুরুর আগে একটা ঘটনা বলি। এবারের রোজায় আইইউটির ইসলামী স্ট্যাডিজ সোসাইটির উদ্যোগে এক ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। ইফতার পার্টির আগের দিন দুপুরে স্পন্সর হিসেবে ওয়ামি (WAMY) এর নাম জানতে পেরে আমি, আমার কয়েকজন সহপাঠী ও জুনিয়র মিলে নেট থেকে এবং পরিচিত কয়েকজনকে ফোন দিয়ে এদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করি। সব তথ্যগুলো এক করে রাতে এই মর্মে পোস্টার লেখা লেখা হয়, ওয়ামি একটি মুসলিম টেররিস্ট ফান্ডিং গ্রুপ। মধ্যপ্রাচ্যের এই ইয়ুথ অর্গানাইজেশন বিশ্বের বিভিন্ন টেররিস্ট ফ্যানাটিক গ্রুপকে সরাসরি অর্থ সাহায্য প্রদান করে থাকে। এছাড়াও বাংলাদেশ ইসলামী শিবিরের সাথে তাদের চমৎকার সুসম্পর্ক বিদ্যমান [[সূত্রঃ শেষ প্যারা]]। ওয়ামির উত্তরার অফিসে শিবিরের বিভিন্ন মিটিং হয়ে থাকে, এছাড়াও যেসব জায়গায় শিবির নিজ নামে প্রবেশ করতে পারেনা সেসব জায়গায় মূলত তারা ওয়ামির ব্যানার ব্যবহার করে থাকে।
আমাদের এই পোস্টারিং এ বিব্রত ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা (পড়ুন শিবিরপ্রাণ) প্রচার চালায়, আমরা মূলত ইসলাম ধ্বংসের জন্য এই পোস্টারিং করেছি। আমাদের সকল তথ্যই ভুয়া। তথ্যগুলো ইন্টারনেটে ইহুদি- খ্রিস্টানদের সাইট থেকে কপি করা, যাদের একমাত্র কাজ হলো এইসব ভুয়া তথ্য প্রচার করে শান্তির ধর্ম ইসলামের সেবাদানকারী একটি প্রতিষ্ঠানের মুখে কালিমা লেপন করা।
এই ঘটনা এখানে বলার মূল উদ্দেশ্য হলো, মাওলানা আবুল কালাম আজাদকে নিয়ে লেখা এই প্রবন্ধ অনেকেরই ভালো লাগবেনা। যেহেতু লেখাটির প্রধান সূত্র ইন্টারনেটের বিভিন্ন পেপার পত্রিকা, মূলধারার বিভিন্ন পত্রিকার অনলাইন ভার্সন, ব্লগ এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ফোরাম, অনেকেই তাই তথ্যগুলোকে ষড়যন্ত্রমূলক আখ্যা দিয়ে বাতিল করে দিবেন। তারা বাদে বাকি সবার উদ্দেশ্যে বলছি তথ্যগুলো নেট থেকে গ্রহণ করা হলেও, যতদূর সম্ভব অনান্য সুত্রের সাথে যাচাই করে দেখা হয়েছে, অতিরঞ্জিত ব্যাপারগুলো বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে, সর্বোপরি পাঠকের জানার সুবিধার্থে মূল লিংকটি সংযুক্ত করে দেওয়া হয়েছে, এছাড়া বইয়ের পৃষ্ঠা, মামলা নং ও উল্লেখিত হয়েছে।
মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের বড় খাড়দিয়া গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ তার এলাকায় পরিচিত “খাড়দিয়ার বাচ্চু” নামে। দরিদ্র পরিবারে বড় হওয়া বাচ্চু মাদ্রাসা শিক্ষা শেষ ভর্তি হন ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে। বাকপটুতার কারণে কলেজে সহজেই পরিচিতি পেয়ে যান বাচ্চু। কলেজে থাকাকালীন সময়েই শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। পাকি সেনাদের সাথে সখ্যতা গড়ে বাচ্চু কবজা করেন প্রচুর অস্ত্র, গোলাবারুদ। এই গোলাবারুদ, অস্ত্র নিয়ে তিনি খাড়দিয়ায় তৈরি করেন নিজস্ব এক মিলিটারি বাহিনী। গ্রামের প্রায় শতাধিক যুবককে নিয়ে তৈরি এই মিলিটারি বাহিনী স্থানীয়দের কাছে পরিচিত ছিল, “খাড়দিয়ার মেলিটারি” নামে। পাক- বাহিনীর দোসর এই বাহিনী খাড়দিয়ার আশে পাশের প্রায় ৫০ গ্রাম জনপদে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে চালিয়েছিল তান্ডবলীলা। স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, এই বাচ্চু ও তার বাহিনী একাত্তরে নৃসংশ ভাবে হত্যা করে হাসামদিয়ার হরিপদ সাহা, সুরেশ পোদ্দার, মল্লিক চক্রবর্তী, সুবল কয়াল, শরৎ সাহা, শ্রীনগরের প্রবীর সাহা, যতীন্দ্রনাথ সাহা, জিন্নাত আলী ব্যাপারী, ময়েনদিয়ার শান্তিরাম বিশ্বাস, কলারনের সুধাংশু রায়, মাঝারদিয়ার মাহাদেবের মা, পুরুরার জ্ঞানেন, মাধব, কালিনগরের জীবন ডাক্তার, ফুলবাড়িয়ার চিত্তরঞ্জন দাস, ওয়াহেদ মোল্লা, দয়াল, মোতালেবের মা, যবদুল, বাদল নাথ, আস্তানার দরবেশ সহ বিভিন্ন জনপদের প্রায় শতাধিক মানুষকে। [[১]]
ফতোয়া সম্পর্কিত হাইকোর্টের যুগান্তকারী রায়ের রিরুদ্ধে লিভ আবেদন কারী ও বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ বাচ্চুর বর্তমান অবস্থা দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন, নগরকান্দা উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের নতিবদিয়া গ্রামের শোভা রানী বিশ্বাস। একাত্তরে তিনি এই আবুল কালাম আজাদের কাছে হয়েছিলেন ধর্ষিত। এ গ্রামেরই নগেন বিশ্বাসের স্ত্রী দেবী বিশ্বাসেরও সম্ভ্রম লুটেছিলেন বাচ্চু। নতিবদিয়ার প্রবীন দুই মৎস্যজীবি নকুল সরদার ও রঘুনাথ দত্ত ২০০০ সালে প্রকাশিত জনকন্ঠের “তুই রাজাকার” শীর্ষক ধারাবাহিক রিপোর্টের রিপোর্টার প্রবীর সিকদারকে জানান [[২]], লুটপাট- হামলা না করার শর্তে আমরা চাঁদা তুলে বাচ্চুকে দু’হাজার চার শ’ টাকা দিয়েছিলাম। তারপরও সে লুটপাট করেছে, গ্রামের দুই নববধূর ইজ্জত হরণ করেছে। পুরুরা গ্রামের জ্ঞানেন জীবন বাঁচাতে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে কচুরিপানার নীচে আশ্রয় নিয়েছিল। বাচ্চু সেখানেই তাকে নৃসংশ ভাবে হত্যা করে। বাচ্চুর রাইফেলের গুলিতে মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারান ফরিদপুরের ফুলবাড়িয়ার চিত্তরঞ্জন দাস। সেদিন তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী জ্যোৎস্না পালিয়ে রক্ষা পেলেও একাত্তরে বিনা চিকিৎসায় মারা যায় তার তিন শিশু সন্তান। স্বাধীনতা পরবর্তী দীর্ঘদিন জ্যোৎস্না শুধু তার স্বামী হন্তারকের বিচার চেয়েছিলেন মনে মনে। অবশেষে এ বছর ৩ মে জ্যোৎস্না রানী দাস রাজাকার মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ও তার শ্যালক মোহাম্মদ কাজীসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলা করেন। [[৩]]
এছাড়াও ২০ এপ্রিল সালথার পুরুরা গ্রামের ভক্ত রঞ্জন বিশ্বাস (৬৫) মাওলানার নামে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হত্যা, লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে [[৪]]। মাওলানা ছাড়াও তার শ্যালক মোহাম্মদ কাজীসহ অজ্ঞাত আরও ১০/ ১২ জনকে আসামী করে দায়ের করা এই মামলার আদালত ও এজহার সূত্রে বাদী পক্ষ থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালের পহেলা জ্যৈষ্ঠ দুপুর ১টায় জেলার সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের পুররা নমপাড়া গ্রামে আবুল কালাম আজাদ ও তার শ্যালক মোহাম্মদ কাজীসহ ১০/১২ রাজাকার সশস্ত্র অবস্থায় বাড়ি ঘেরাও করে। এ সময় তার বাবা মাধব চন্দ্র বিশ্বাস পালাতে গেলে আবুল কালাম আজাদ তার হাতে থাকা রাইফেল দিয়ে গুলি করে তাকে হত্যা করে। মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, ঘটনার দিন মাধব চন্দ্রের বাড়িতে আসা (আত্মীয়) জ্ঞানান্দি বিশ্বাসকে আবুল কালাম আজাদ, শ্যালক মোহাম্মদ কাজী ও তার সঙ্গীরা নিষ্ঠুরভাবে গুলি করে হত্যা করে। পরে তারা তার প্রতিবেশী মন্টু বকসির বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে চলে যায়। মামলায় বলা হয়, আসামিরা মাধব চন্দ্র বিশ্বাস, জ্ঞানান্দি বিশ্বাসকে হত্যা করা ছাড়াও নগরকান্দার ওহাব সরদার, মো. টুকু মোল্লা, কাঞ্চুন ফকির, আ. আদম মোল্লা, আ. হাচেন মিয়াসহ বহু মুক্তিযোদ্ধাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। আসামিরা মুক্তিযোদ্ধা চলাকালে পাক হানাদারদের সঙ্গে আঁতাত করে এলাকার মুক্তিবাহিনী ও নারীদের ধরে পাক সেনাদের কাছে তুলে দিতো। পরে জেলা জুডিশিয়াল কোর্টের প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক মোতাহারাত আক্তার ভূইয়া সালথা থানাকে মামলা হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দেন।
সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম এর দেওয়া ৫০ যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় ৪২ নম্বরে থাকা মাওলানা আবুল কালাম আজাদ সম্পর্কে ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর মোহাম্মদ ক্যাপ্টেন বাবুল সমকালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, ‘বাচ্চু রাজাকার ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধাকে পাকবাহিনীর কাছে ধরিয়ে দিয়েছে এবং আর্মি ক্যাম্পে গিয়ে বন্দিদের মধ্য থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের শনাক্ত করেছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে মেয়েদের ধরে এনে বাচ্চু রাজাকার পাক সেনাদের ক্যাম্পে সাপ্লাই দিত। ’৭১ সালের মাঝামাঝি সময়ে আমি মুক্তিযোদ্ধাদের বড় একটি দল নিয়ে ফরিদপুর শহরে প্রবেশের পথে বাচ্চু রাজাকারের বাহিনীর বাধার সম্মুখীন হয়েছিলাম, যদিও তাদের পরাস্ত্র করে আমরা শহরে ঢুকে পড়ি। ’৭১ সালের আনুমানিক ২ মে পাকবাহিনী ফরিদপুরের হাসামদিয়া ও ময়েনদিয়া গ্রামে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এ সময় তাদের প্রধান দোসর হিসেবে বাচ্চু রাজাকার তাদের সঙ্গে ছিল এবং সে নিজে চারজন নিরীহ গ্রামবাসীকে হাত বাঁধা অবস্থায় গুলি করে হত্যা করে। [[৫]]
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে মাওলানা আবুল কালাম আজাদের স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকার প্রত্যক্ষদর্শী জেলা বোয়ালমারীর কালিনগরের মুক্তিযোদ্ধা মো. ইদ্রিস ফকির জানান, ’৭১ সালে জুলাই মাসের শেষদিকে বাচ্চু রাজাকারের (আবুল কালাম আজাদ) নেতৃত্বে বোয়ালমারী ডহরনগর এলাকার বাবুবাড়ীর সুধাংশ বাবু ও তার পরিবারের সদস্যদের গুলি চালিয়ে হত্যা এবং তাদের বাড়ি লুটপাট করে। তিনি বলেন, সেদিন তারা (আবুল কালাম আজাদ) বাবুবাড়ীতে হত্যাকা- চালিয়ে ডহরনগর এলাকার সাব-রেজিস্ট্রার অখিল চন্দ্রের বাড়িতে গিয়ে জীবন চক্রবর্তীকে ধরে এনে রূপাপাত বাজারের হারান সাহার দোকানের সামনে গুলি চালিয়ে হত্যা করে। [[৬]]
মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম আবু ইউসুফ সিদ্দিকী জানান, আমি পাকবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে ফরিদপুর স্টেডিয়ামের পাশে বন্দিশিবিরে আটকা পড়ি। তিনি বলেন, আমি দেখেছি বাচ্চু রাজাকার জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী-পুরুষ এনে পাক সেনাদের হাতে তুলে দিতো। তিনি জানান, বাচ্চু পাক দোসরদের সঙ্গে বন্দিশিবিরের আটককৃতদের নির্যাতন করতো। আমি একদিন বাচ্চুর এ কাজের প্রতিবাদ করলে সে আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন চালায়।
ফরিদপুরের মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার আবুল ফয়েজ শাহনেওয়াজ জানান, বাচ্চু রাজাকার জেলার নগরকান্দা, সালথা ও বোয়ালমারী অঞ্চলে রাজাকার আলবদর বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিল। সে (বাচ্চু) মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে পাক সেনাদের হাতে তুলে দিতো।
ফরিদপুর সদর উপজেলার চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট শামসুল হক ভোলা মাস্টার জানান, ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বরের পর দীর্ঘদিন এলাকা ছেড়ে পালিয়েছিল বাচ্চু রাজাকার। তিনি বলেন, রাজাকার আবুল কালাম আজাদ দেশ স্বাধীনের পর যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে দীর্ঘদিন হাজতবাস করেছে।
মুক্তিযুদ্ধকালীন নগরকান্দা এলাকার কমান্ডার আলতাফ হোসেন জানান, ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রাজাকার বাচ্চু পাকিস্তানি হানাদারদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করে। সে এলাকায় সশস্ত্র রাজাকার বাহিনী গড়ে তুলে ফরিদপুর, নগরকান্দা ও বোয়ালমারীতে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালায়। তার বাহিনীকে এলাকার মানুষ ‘খাড়দিয়ার মিরিটারি’ নামে চিনতেন।’ তিনি আরো বলেন,‘৭১ সালে আমি মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ৩ বার তাকে ধরার জন্য হানা দেই। কিন্তু রাজাকার বাচ্চু তার শ্বশুর চাঁন কাজীর বাড়িতে পালিয়ে যাওয়ায় প্রতিবারই জানে বেঁচে যায়।’
১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে মুক্তিযুদ্ধে চুড়ান্ত বিজয় অর্জিত হবার পরএলাকা থেকে পালিয়ে যান বাচ্চু। আবু সাঈদ খান প্রণীত ‘মুক্তিযুদ্ধে ফরিদপুর’ গ্রন্থের ১৬৯-১৭০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বাচ্চু রাজাকারের বিরুদ্ধে ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানায় ’৭২ সালে দালাল আইনে যে মামলা হয়েছিল তার নম্বর-১৯ ও ২০, তারিখ ২৩/৩/৭২, ধারা। এই মামলার কারণে পরবর্তীতে তাকে গ্রেফতার করে হাজতে ঢোকানো হয়। কিন্তু পঁচাত্তর পরবর্তী রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে জেল থেকে ছাড়া পান বাচ্চু। জেল থেকে বের হয়ে তিনি মাওলানা আবুল কালাম আজাদ নাম নিয়ে নতুন জীবন শুরু করেন। স্বাধীনতার সময় লুট করা কোটি টাকার সম্পদ দিয়ে ধীরে ধীরে প্রভাব বিস্তার শুরু করেন তিনি। আগের বাহিনীর সদস্যের জমা করে শুরু হয় স্বাধীন দেশে বাচ্চুর নতুন তান্ডব। ততদিনে বিশিষ্ট মাওলানা হয়ে যাওয়া বাচ্চুর একাত্তরের কুকীর্তি প্রচার করতে যেয়ে খুন হন, ফরিপুরের যুবলীগ নেতা ছিরু মিয়া। আদালতে তার (বাচ্চু) নামে হত্যা মামলা দায়ের করা হলেও, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে জামিন পেয়ে যান তিনি। [[৭]]
উল্লেখ্য, ২০০০ সালে সাংবাদিক প্রবীর সিকদার দৈনিক জনকণ্ঠে বাচ্চুসহ ফরিদপুর অঞ্চলের রাজাকারদের নিয়ে ‘তুই রাজাকার’ শীর্ষক প্রামাণ্য সিরিজ প্রতিবেদন করায় (মূল প্রতিবেদনের স্ক্যানড কপি) তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে অস্ত্র, গুলি ও বোমা হামলা চালানো হয়। এ হামলার পেছনে তখন কুখ্যাত রাজাকার নূলা মুসা ও বাচ্চুর ইন্ধনের অভিযোগ ওঠে। চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণকারী বর্তমানে দৈনিক সমকালের সিনিয়র সহ সম্পাদক প্রবীর সিকদার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ বাচ্চু যে কুখ্যাত রাজাকার ছিল এটা সবাই জানেন। তার রাজাকারির প্রমাণপত্র সবই আছে। তাছাড়া আমি প্রতিবেদন করেছিলাম আট বছর আগে। সে সময়তো সে কোনো প্রতিবাদ জানায়নি। এতোদিন পরে এ ধরনের দম্ভোক্তি ও বিষোদগার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারের সন্তান ও দেশের নাগরিক হিসাবে আমি সারাজীবন তার ও যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি চেয়ে যাবো।’ [[৮]]
বেসরকারী টিভি ব্যক্তিত্ব ও ইসলামের সেবক হিসেবে নিজেকে জাহির করা বাচ্চু ওরফে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, ২০ শে সেপ্টেম্বর ২০০৮ সালে বেসরকারী এক টিভি চ্যানেলে তিনি রাজাকার ছিলেন না বলে দম্ভোক্তি করেন। একই সঙ্গে তিনি সাংবাদিক প্রবীর সিকদারসহ কয়েকজন সংবাদিকের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে তাদের নিয়ে কটুক্তি করেন।
এই বক্তব্য টিভিতে প্রচারিত হবার পর, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ফরিদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান খোকন এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘খাড়দিয়ার বাচ্চু এখন মাওলানা আবুল কালাম আজাদ সেজে টিভিতে যেসব কথা বলছে তা হাস্যকর। ফরিদপুরের সর্বস্তরের মানুষ জানেন, ৭১ সালে সে রাজাকার ছিল। সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে বিলম্ব করাতে এসব মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ব্যক্তি এতো বড়ো বড়ো কথা বলার সাহস পাচ্ছে। এই বাচ্চু একাত্তর সালে তার নিজ এলাকা ও ফরিদপুর শহরে পাকিস্তানি সেনাদের সহায়তায় নারীদের ধরে এনে নির্যাতন চালাতো। ফরিদপুর শহরের দুটি হিন্দু বাড়ি দখল করে সেখানে নির্যাতন ক্যাম্প বসিয়েছিল এই কুখ্যাত রাজাকার। লুটের টাকা দিয়ে সে ঢাকার মিরপুরের ২নং পুলিশ ফাঁড়ির সামনে একটি বাড়িও কিনেছে। তাকে ধরে আইনের আওতায় এনে পুরো জাতির সামনে বিচার করতে হবে। সাংবাদিক প্রবীর সিকদারসহ অন্যান্য সাংবাদিকদের ব্যাপারে সে যেসব কটুক্তি করেছে তার জন্য তাকে প্রকাশ্যে নি:শর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। নইলে আমরা তার শাস্তির দাবিতে আন্দোলনে নামবো।’
সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন খবর এবং বর্তমানে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের গন দাবী ওঠায় দেশ ছেড়ে কয়েকদিন আগে আমেরিকা চলে যান বাচ্চু। এনটিভি বাচ্চুকে বাদ দেয় তাদের অনুষ্ঠান থেকে। আমেরিকা চলে গেলেও কুকর্ম করা ছাড়েন নি মাওলানা। ২৫ জানুয়ারী২০০৯ সন্ধ্যায় জ্যামাইকার একটি মসজিদে তহবিল সংগ্রহের নামে মৌলবাদীদের তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা রাখার সময় প্রতিবাদ জানায় এবিসিডিআই সহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সংগঠনসমূহ। এই সময় বিক্ষোভকারীদের অশালীন ভাষায় (মা-বোনসূচক) গালাগালি করা হয়।এবং পরে প্রতিবাদী সমাবেশের উপর কুখ্যাত রাজাকার বাচ্চু ও ৭১’এর ঘাতক রাজাকার আশরাফুজ্জামানের প্ররোচনায় জনৈক মকবুল হোসেন জহির ছুরি নিয়ে হামলা করে। মুখঅবয়বে ঘুষি ও ছুরি দিয়ে আঘাত করে বিশিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিকলীগ সভাপতি এম,আর,আমিনকে মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে নিউইয়র্ক পুলিশ এসে হামলাকরী জহিরকে গ্রেফতার করে এবং তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠান বাতিল করে দেয়। [[৯]] (মূল খবরের লিংকটি এখন আর কাজ করছেনা)
শেষকথা
এংলো আমেরিকান রাজনীতিবিদ ও দার্শনিক থমাস পাইন যিনি তার লেখার মাধ্যমে আমেরিকান ও ফরাসী বিল্পবকে প্রভাবিত করেছেন, বাইবেল সম্পর্কে করা এক মন্তব্যে বলেন, বাইবেল এমন একটি গ্রন্থ যা পৃথিবীর অন্যান্য সকল বইয়ের চেয়ে বেশি পড়া হলেও পরীক্ষিত হয়েছে সবচেয়ে কম। মাওলানা সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া শেষে আমার এই কথাটাই আবার মনে পড়লো। আসলেই আমরা একটু খোঁজ নেবার আগেই সব বিশ্বাস করে বসে থাকি, সবাইকে গুরু মানা শুরু করি। বড় বেশি বৃত্তাধীন আমরা …
আপডেট- ১০ই এপ্রিল, ২০১২
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের সুষ্ঠু ও কার্যকর তদন্তের স্বার্থে আবুল কালাম আযাদের বিরুদ্ধে ৩ এপ্রিল, ২০১২ সালে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। তাঁর বিরুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগিতায় ফরিদপুরে হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধের তথ্য পেয়েছে তদন্ত সংস্থা। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর দীর্ঘদিন গোয়েন্দা নজরদারীতে থাকা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সদস্য (রুকন) হিলি সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন। এ কাজে তাঁকে সহায়তা করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জামায়াতপন্থী এক শিক্ষক। গ্রেপ্তারের পর আযাদের দুই ছেলে ও শ্যালক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
র্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউল আহসান জানান, আবুল কালাম আযাদ বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার পর তাঁর দুই ছেলেও আত্মগোপন করেন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর গতকাল সকালে রাজধানীর লোহারপুল এলাকায় মামাশ্বশুরের বাসা থেকে বড় ছেলে এস এম ফয়সাল আযাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ছোট ছেলে এ কিউ মুশফিক বিল্লাহ জিহাদকে তাঁর মামা কাজী এহতেশামুল হকের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এহতেশামকেও গ্রেপ্তার করে র্যাব।
র্যাব জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে মুশফিক বিল্লাহ জানান, তাঁদের বাবা গ্রেপ্তারের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে পাকিস্তানে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সে অনুযায়ী গত ৩০ মার্চ সন্ধ্যার পরে একটি মাইক্রোবাসে করে তাঁরা বাসা থেকে বের হয়ে প্রথমে যান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আবু ইউসুফের আগারগাঁওয়ের বাসায়। সেখানে পাকিস্তান বা নেপালে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে মুশফিক আরও জানান, তাঁরা আবু ইউসুফের গাড়িতে করে ওই রাত সাড়ে তিনটার দিকে হিলি সীমান্তে পৌঁছে একটি হোটেলে ওঠেন। আবু ইউসুফও সঙ্গে যান। ওই হোটেলে দুই দিন থাকার পর তাঁর বাবা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে যান। ৩ এপ্রিল তিনি পরিস্থিতি জানতে ভারত থেকে এহতেশামকে ফোন করেন।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার এম সোহায়েল প্রথম আলোকে বলেন, হিলি স্থলবন্দরের ওই হোটেলের মালিক আবুল কাশেমকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আযাদের দুই ছেলে, শ্যালক, আবু ইউসুফ ও কাশেমের বিরুদ্ধে পরোয়ানার আসামিকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করার অভিযোগ এনে মামলা করা হচ্ছে। ইউসুফকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। সূত্রঃ প্রথম আলো
প্রথম রায়ে আযাদের ফাঁসি
চার দশক আগে বাঙালি জাতির মুক্তির সংগ্রামকে দমাতে ব্যাপক গণহত্যা, খুন, ধর্ষণ, লুটপাটের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক রুকন আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির আদেশ হয়েছে।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ সোমবার ১১২ পৃষ্ঠার এই ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করে। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত ট্রাইব্যুনালে এটিই প্রথম রায়।
আযাদের বিরুদ্ধে আনা আটটি অভিযোগের মধ্যে সাতটিতে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল প্রধান।
রায়ের কপি
পড়ে বেশ ভালো লগল।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।
সেদিন বাংলার বিবেকবান মানুষ শান্তি পাবে যেদিন সব যুদ্ধাপরাধিদের বিচার এদেশের মাটিতে হবে । বাচ্চু রাজাকারের চেয়েও বড় রাজাকারগুলোর বিচার না দেখে যেনো মরে না যাই । এরা ধর্মের নামে রাজনীতি করে, আর সহজ-সরল ছেলে-মেয়েগুলোর মাথা নষ্ট করেএদের দিয়ে নাশকতামুলক কাজ করায় । সোনার বাংলা তাদের স্বপ্ন ছিলো না মুক্তিযুদ্ধের সময়, তাদের স্বপ্নের সোনার পাকিস্তান হয়নি বলে এদেশেরও ভাল কিছু এরা চায় না । এদের সেদিনই ফাঁসি দেয়া উচিৎ ছিলো যেদিন দেশ স্বাধিন হয়েছিল । এই শয়তানকে ধরে ফাঁসিতে ঝলাতেই হবে, এটাই আমাদের দাবি ।
চাকুরির সুবাদে আমি প্রায় বছরখানেক মফস্বল এলাকায় কাটিয়েছি। সেখানে দেখেছি এই সব ওয়াজ দেয়া ভন্ডরা কি ব্যাপক জনপ্রিয়। মানুষ মোবাইল এ ওয়াজ লোড করে নিয়ে যায় শোনার জন্য। আর তাদের কান্নাজড়িত কন্ঠে আজগুবি গল্প সহকারে বলা ওয়াজ কিযে হাস্যকর শোনায়। অথচ এই হাস্যকর গল্প শুনেও মানুষ কান্নাকাটি করে। আজিব লাগে। একদিন ট্রেনে আমার সামনের সিটে এক লোক তার মোবাইল ফোনে বেশ জোরে ওয়াজ শুনছিলো, তাকে শুধু এটুকু বলেছিলাম “ভাই, একটু আস্তে দেন, কানে লাগছে”। তারপর মোটামুটি এক প্রকার ঝড় বয়ে গেছিল আমার উপর। এই সব ভন্ড রাজাকার স্বাধীন বাংলাদেশে কিভাবে এই অবস্থানে যায় তাও স্বাধীনতার পর এতো কম সময়ের মধ্যে। অদ্ভুত।
–
এদের বিচার ও শাশ্তির প্রক্রিয়া যদিও ৪০ বছর পর আরম্ভ হয়েছে, তবুও এটা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক কথা।
তবে আমার মনে হয় এদের এই আদর্শের উৎস ও কারখানার উপর যতদিন পর্যন্ত সাগঠনিক আকারে আঘাত না হানা যাবে ততদিন পর্যন্ত এক আবুল কালাম আজাদ চলে গেলেও আরো হাজার হাজার আবুল কালাম আজাদ তৈরী হতে থাকতে পারে।
এরা এদের প্রচন্ড সাগঠনিক শক্তির দ্বারাএমনকি বাংলাদেশকে পাকিস্তান-আফগান স্থানের মত শরীয়া ভিত্তিক খাটি ইসলামিক তালেবান রাস্ট্রে পরিনত ও করে ফেলতে পারে।
যেই চ্যানেল এহেন মহান স্কলারকে এনে অনুষ্ঠান করাতো, তাদের বক্তব্য শুনতে ইচ্ছা করছে। আমিও মৃত্যুদণ্ডের পক্ষপাতি না। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের বিশাল ক্লোজার দরকার আছে। এদের ফাসি হলে ভালোই হবে। নতুন ভাবে আমরা দিন শুরু করতে পারবো।
@ রায়হান আবির,
ধন্যবাদ। মাওলানা আবুল কালাম আযাদ বা বাচ্চু রাজাকার সম্বন্ধে তথ্যগুলো জানা ছিলো না। জেনে আনন্দিত হলাম। অন্য রাজাকারদের সম্বন্ধেও লেখা চাই।
আমার মামা বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে হওয়ায় এই লোকটি সম্পর্কে অনেক আগেই আমি অবগত ছিলাম।এর ডাক নাম খাড়দিয়ার বাচ্চু রাজাকার ছাড়াও আরেকটি স্থানীয় নাম রয়েছে সেটি হচ্ছেকুটি আজরাইল। ফরিদপুরের দিকে ছোট শব্দটি বোঝাতে কুটি ব্যবহার করা হয়।বছর কয়েক আগে মামার মোটরসাইকেল নিয়ে আমি ময়েন্দের ঘোষ বাড়ি যাই। সেখানে তাবনী ঘোষের জালিয়ে দেওয়া বাড়িটি দেখি, সেটি তখন পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিলো।পাশের মানুষজনের সাথে কথা বলে জানতে পারি ময়েন্দের ওপর একজন সম্ভ্রান্ত শ্রেনীর মানুষ বাবু বাজারের জমিদার কেষ্ট বাবু কে বাচ্চু নিজ হাতে স্বাধীনতার কয়েকদিন আগে হত্যা করে। বিষয়টি নিয়ে কয়েকজন হিন্দু বৃদ্ধের সাথে কথা বলতে গেলে তাদের কেউই সেসব দিনের কথা স্মরণ করতে গিয়ে চোখের পানি আটকে রাখতে পারেননি। যাই হোক এতদিন পরে এই রায়ে অনেকে খুশি হলেও আমি কিন্তু অতটা খুশি হতে পারিনি ।এদের যেদিন ফাসির দড়িটি গলায় পরেতে পারবো সেদিন শান্তি পাবো। তাই এখন দাবী জানাই আগে এই কুকুরটাকে যেখান থেকে হক যেভাবে হোক ধরে রায় কার্যকর করানোর জন্য।
চমৎকার নির্মোহ লেখা। সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের তালিকাবদ্ধ ঐ ৫০ জন যুদ্ধ আপরাধীদের সম্পর্কেও এমন তথ্য সমৃদ্ধ লেখা হলে, সংগ্রহে রাখার মত একটি রেফারেন্স পোর্টাল হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে মুসা বিন শমসের কিংবা মোশাররফ হোসেনের মত যুদ্ধাপরাধী যাদের আওয়ামীলীগ রাজনৈতিক / ব্যাক্তিগত কারণে ছেড়ে দিয়েছে তাদের সম্পর্কেও লেখা আসা প্রয়োজন।
(Y)
ঘরে আসামী রেখে একজন পলাতক আসামীর মৃত্যুদন্ডের রায়, আমি এর মোজেজাটা বুঝলাম না। বড় থেকে ছোট না ছোট থেকে বড়? ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি যে দশজন প্রধান যুদ্ধাপরাধীকে শাস্তির তালিকায় এনেছিল, বাচ্চুর নাম সেখানে নেই। ১৯৯৩ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে গণআদালত বার্ষিকীতে জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গণতদন্ত কমিটি দশজন যুদ্ধাপরাধীর নাম ঘোষণা করে। তারা হলেনঃ গোলাম আজম, আব্বাস আলী খান, মতিউর রহমান নিজামী, মোঃ কামরুজ্জামান, আবদুল আলীম, দেলোয়ার হোসেন সাঈদী, মওলানা আবদুল মান্নান, আনোয়ার জাহিদ এবং আবদুল কাদের মোল্লা।
@আকাশ মালিক,
১। যুদ্ধ অপরাধের ট্রায়াল কি আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক বিবেচনা প্রসূত!!!!!
২। ট্রায়ালে কি কোন রাজনৈতিক চাপ আছে???
৩।লক্ষনীয়, আবুল কালাম আজাদের গ্রেপ্তার পরে হয়েছে। আবুল কালাম আজাদ ছিল একটি অঞ্চলের। জাতীয় ভাবে যারা নেতৃত্ব দিয়েছিল যেমন গোলাম আযম কিংবা নিজামি তাদেরটা আরো বেশি প্রমানিত। তাদের ট্রায়াল শুরু হয়েছিল আরো আগে!!!! তাদের আগে এই রায় ঘোষণা!
৪। অনেক গণহত্যাকারী যাদের সাথে আওয়ামীলীগ নেতৃত্বের পারিবারিক / রাজনৈতিক সম্পর্ক আছে (যেমন মূসা বিন শমসের) তাদের আক্ষরিক অর্থেই ইম্পিউনিটি দেওয়া হয়েছে।
@সংবাদিকা,
– মুসা বিন শমসের বা অন্য আওয়ামী পসন্দ কোন রাজাকারের বিরুদ্ধে মামলা করা কি নিষিদ্ধ এমন কোন আইন জারি হয়েছে? আমার জানা মতে সুনির্দিষ্ট যে কোন অভিযোগে যে কারো নামেই মামলা করা যেতে পারে, রাষ্ট্র তার তদন্ত করতে বাধ্য। যাদের ব্যাপারে আওয়ামী যোগসাজসের অভিযোগ আচে তাদের ব্যাপারে অন্য কেউ বাদী হয়ে মামলা ঠুকে দিলেই তো হয়।
বাচ্চু রাজাকারের মৃত্যুদন্ডের রায়ে গোটা জাতির সাথে আমিও বেশ খুশি। কিন্তু যারা এই কুলাঙ্গারকে পালিয়ে যেতে দিল তাদের কি বিচার হবে না। সেই আবুল কাশেম আজাদ যে কিনা বাচ্চুকে নিজের হোটেলে এনে রাখল এবং তাকে ভারতে যেতে সহায়তা করল। তার পক্ষে এটা অসম্ভব কিছু না তিনি সিএন্ডএফ সভাপতি। তাকে গ্রেফতারের পর গনমাধ্যমের ভুমিকা দেখে অবাক হয়েছি। সকল গনমাধ্যমে তাকে উপস্থাপন করা হয়েছে জাতীয় পার্টির নেতা হিসেবে। যিনি বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে উপজেলা নির্বাচন করেন তিনি জাপার নেতা হন কিভাবে? সেই আবুল কাশেম আজাদ আজ আজাদ হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
রাত জেগে খবর শুনার অপেক্ষায় থেকে, সকালে চোখে পড়লো আপনার লেখা। খুব দরকার ছিল।
আমার খুব করে মনে পড়ছে, ‘একাত্তরের ঘাতক ও দালালরা কে কোথায়’। এখন মনে নেই, ওখানে বাচ্চু রাজাকারের নাম ছিল কি-না? কথা সেটি নয়। কথা হলো, ঐ বইটি পড়ার পর চোখ অনেকটা খুলে যায়।
মনে পড়ছে, গণ আদালতের কথা, মনে পড়ছে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলার আসামীদের কথা। রায় ঘোষণার পর আমি যেন একটু বেশি আন্দোলিত। জানি, সংশয় থেকে যায়, তা থাকুক। এ রায় যদি কার্যকর করা না হয় বা ভোটের রাজনীতিতে প্রয়োগ করা হয়, তবুও শেষ কথাটা বলার সুযোগ নিয়ে অগ্রসর ও শুভবুদ্ধির চিন্তকরা মানব-তীর্থে পৌঁছতে পারা-র পথে অনেকটা এগিয়ে যেতে পারবে।
ধন্যবাদ।
আমি মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে।
@আদনান আদনান,
আইছে এক ইউটোপিয়ান মাইন্ডেড লিবারেল পোস্টমর্ডানিস্ট!!!!!!!!!!!!! তবে ভায়া, এই চিন্তা ভাবনায় পৃথিবী চলেনা। যাদের পরিবার আক্রান্ত হয়েছিল কষ্টটা তারাই সবচেয়ে বেশি বোঝে। সুতরাং ন্যায়বিচার কাম্য এবং সুপরিকল্পিত ভাবে নিরপরাধ-নিরস্ত্র মানুষ হত্যাকাণ্ড জনিত অপরাধের শাস্তি যা হয়েছে তাই ঠিক।
@আদনান আদনান,
একজন সিরিয়াল কিলারের কি সাজা হওয়া উচিত বলে মনে করেন?একজন রেপিস্টের, যে কিনা রেপ করে মজা পায়, আর সুযোগ পেলে রেপ করবে আর হত্যা করতে থাকবে?আজীবন কারাবাস দিবেন?সেক্ষেত্রে সে যে জেল থেকে পালিয়ে আবার একই অপকর্ম শুরু করবে না তার নিশ্চয়তা কে দেবে?মৃত্যু দণ্ড বিরোধী আইনের বিরুদ্ধে লড়ার আগে আমার মনে হয় যে, দেশের আরো অনেক বিষয় নিয়ে ভাবা দরকার। আগে দেশের এমন অবকাঠামো গড়া দরকার যাতে সারাজীবন অপরাধ করে শেষ দাগী আসামী জেল ছেড়ে পালাতে না পারে।তবে তবু। রেপ করে হত্যা কারী বা গনহত্যা কারীদের ফাঁসিই একমাত্র সাজা বলে মনে হয়।অনেক ক্ষেত্রে মৃত্যু দন্ডের মত সাজা তুলে দিলেও, কিছু ক্ষেত্রে এটা রাখা জরুরি।
এই লোকটি আমেরিকায় কেমন করে গেলো? আমেরিকায় বসেই বা সে প্রকাশ্য সামাজিক-রাজনীতি কেমন করে চালাচ্ছে? সে যে শহরেই থাকুক, সেখানকার মিডিয়া, লোকাল গভর্নমেন্ট, প্রতিবেশী সবাইকে জানানো দরকার তার অপরাধের ফিরিস্তি এবং শাস্তির রায়। এক্সট্রাডিশনের জন্যে আমেরিকান সরকারের উপরে সামাজিক চাপ শীঘ্রই শুরু করা দরকার।
@সফিক,
সমকালের খবর অনুযায়ী সে এখন পাকিস্তানে। তবে বাংলাদেশের সাথে পাকিস্তানের অপরাধী বিনিময় চুক্তি থাকায় সে ওখানে নিরাপদ বোধ করছে না। তার প্ল্যান ইরান বা তুরস্কে পাড়ি জমানো।
প্রশ্ন হচ্ছে, এই ব্যক্তি দেশ থেকে পালালো কিভাবে? তারপর আবার কি সহজে বাংলাদেশ-ভারত আর ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত পার হয়ে করাচী পৌঁছে গেল। এতলোক বিএসেফের গুলিতে মরে………
@মনজুর মুরশেদ,
বিএসএফের গুলিতে মরে গরীব মানুষ, বড়জোর পাতি চোরাকারবারি বা গরুচোর। অর্থবিত্ত যাদের আছে তারা নির্বিঘ্নেই বর্ডার পাড়ি দিতে পারে।
@আদিল মাহমুদ,
আসলেই তাই।
পোস্টটিকে আজকের রায়ের গুরুত্ব বিচারে স্টিকি করে দেয়া হল।
কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির আদেশ হয়েছে, সবাই বোধ হয় জেনে গেছেন।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর সাবেক রুকন আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। এই সেই বাচ্চু রাজাকার যাকে নিয়ে Raihan Abir মুক্তমনা এবং অন্যান্য ব্লগে লেখা শুরু করেছিলেন, এবং তার অপকর্মগুলো ‘অবিশ্বাসের দর্শন‘ বইয়ের ‘ধর্মের কুফল’ অংশেও স্থান করে নিয়েছিল। এনিয়ে কালকে একটা ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম –
+++++++
আমি ধন্যবাদ জানাই রায়হানকে তার কাজের জন্য, বাচ্চু রাজাকারকে আমাদের সামনে নগ্নভাবে তুলে ধরার প্রয়াসের জন্য। আজকে আমরা যুদ্ধপ্রাধীদের বিচারের ব্যাপারে যে আশাবাদী হতে পারছি, সেটা এ জন্যই…
@অভিজিৎ,
খুব ভাল খবর দিয়েছেন দাদা, ধন্যবাদ।দেশের পত্রিকার পড়া আর নিউজ দেখা ছেড়ে দিয়েছি অনেকদিন আগেই, অনেকটা হতাশ হয়ে।মনে হচ্ছে যে এবার থেকে আর মিস দেয়া যাবে না।অন্তত একটা কসাইয়ের ফাঁসির আদেশ তো দেখলাম। আশা করি বাকিগুলোরও হবে।
উফফফ…চোখ খুলে গেলো আজ। আমাদের বোকা বানানো কতো সহজ! একটা টিভি চ্যানেলেতো অনেক সিনিয়র সাংবাদিক থাকার কথা, তারাও কিছু বললো না? আর এইসব লোকজন এতো সহজে আমেরিকা যায় কীভাবে? কি বিচিত্র !
খুব ভালো লেখা। তবে মনে রাখতে হবে এই সব রাজাকারা এরকম কাজ করতে পেরেছে পাকিস্তানি মিলিটারীর সহায়তায়। সেই সব মিলিটারীর অফিসাররা মোটা পেনশন নিয়ে আরামে জীবন কাটাচ্ছে। তাদের ও বিচার করতে হবে আন্তরজাতিক আদালতে। তা না হলে লোকে এটাকে আওয়ামী লীগ আর বিএনপির পলিটিকাল ঝামেলা হিসেবে দেখবে।
@মিয়া সাহেব,
সেটাও হবে। কৌশলগত কারনে সরকার ও ব্যপারে এখন মুখ না খুললেও পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীকেও বিচারের আওতায় হবে।
তথ্যসমৃদ্ধ লেখার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। বুঝতে পারলাম না, যার বিরুদ্ধে যুদ্ধপরাধের স্পষ্ট প্রমান সে কিভাবে টিভিতে হাদিশ শুনায় ! একই অপরাধে অপরাধী আরেকজন আছেন দেলোয়ার হোসেন সাইদী। টিভি কর্তৃপক্ষের কি এই বিষয় গুলো কি জানা নেই ?
@অপু, শুধু টিভি কর্তৃপক্ষ কেন, কিছু জনগনও কি করে এই সব অপরাধীদের সমর্থন করে যাচ্ছে সেটাও একটা অবাক করা ব্যাপার। এদের সমর্থনেই কিন্ত টিভি কর্তৃপক্ষ এদের অনুষ্ঠান প্রচার করে যাচ্ছে। টিভি কর্তৃপক্ষ এই বিষয়গুলো ভাল করেই জানেন।
আমার নিরাপত্তার কথাগুলো শুনে আমি কিন্তু ভয় পেয়ে যাচ্ছি। আমি সাবধান থাকবো কিন্তু প্লিজ এখানে আর সেটা নিয়ে আলোচনা না করা হোক। সবাইকে ধন্যবাদ।
একাধিক বার জানানোর পরেও আদনান সাহেবের বাংলা ব্লগে ইংলিশে লেখা বোধ হয় দৃষ্টিকটু।
আদনান,
আপনি কিন্তু খুব সহজেই বাংলাতে লিখতে পারেন। অভ্র কি-বোর্ডে খুব সহজেই ফনেটিক অপশনে বাংলা লেখা যায়।
বাচ্চু রাজাকার সম্পর্কে যুদ্ধাপরাধের বিস্তারিত কিছু আগেও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় দেখেছি। অভিযোগ গুলো খুবই সুস্পষ্ট। কিন্তু আসল কয়টার ব্যাপারে এরকম সুস্পষ্ট আভিযোগ সেভাবে শুনিছিনা কেন ? আমি মইত্তা, মুজা দের কথা বলছি। শুনেছি মুজা -বুদ্ধিজীবি হত্যার ব্যাপারে বেশ সক্রিয় ছিল। এদের ব্যাপারেও জানতে চাই। কিভাবে বা কোথায় গেলে জানা যাবে যে ব্যাপারে সবার সাহায্য চাই
আমি যদ্দুর জানি , আবুল কালাম আজাদের কন্যা ৮০-এর দশকে BTV তে নাট্যশিল্পী ছিল।
অত্যন্ত সাহসী পোস্টিং। আপনার অঙ্গীকার এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার প্রকাশ দেখলাম , দেশ থেকে হাজার মাইল দূরে নিরাপদ অবস্থানে থেকে আমার অপারগতা – আমায় আবারো সঙ্কুচিত করলো। জয়তু রায়হান!
এনটিভি তে ওনার অনুষ্ঠান খুব আগ্রহভরে দেখতাম। কারন অবশ্য উনি ছিলেন না, ওনার কাছে প্রশ্নত্তোর পর্বে যেসব প্রশ্ন আসত সেগুলি শোনা অনেকটা বিনোদনের মত হয়ে গেছিল। তবে হাস্যকর প্রশ্নগুলির উত্তরে টিপিক্যাল আলেম মোল্লাদের তূলনায় ওনাকে বেশ মডার্নই মনে হত। স্নেহ করে কমলা দাঁড়ি ডাকতাম।
হঠাত একদিন শোনা গেল যে উনি তো ভয়াবহ টাইপের রাজাকার ছিলেন। কেয়ার টেকার আমলের শেষ দিকে শুনলাম একজন মামলাও ঠুকে দিলেন তার বাবাকে ৭১ সালে এই কমলা দাঁড়ির নেতৃত্বে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়েছিল বলে। তারপর সেই অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়, উনি কোথায় যেন পলাতক হন। শেষ খবর দেখেছিলাম যে ইনি ৬ মাসের আগাম জামিন নিয়ে বহাল তবিয়তেই আছেন। তারপর আর আপডেট জানি না। তবে মোটামুটি ধারনা ছিল যে এসব মইত্যা, দিল্লা, বাচ্চু রাজাকারের বিচার এই দেশের মাটিতে হওয়া অনেকটা আকাশ কুসুম ব্যাপার। আজ এদের হাতের অর্থবিত্ত, ক্ষমতা, বিদেশী ছত্রছায়া সবই আছে।
তবে কিছুটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে, যদিও এখনো বহু দূর বাকি।
রায়হাঙ্কে ধন্যবাদ বিস্তারিতভাবে এর কর্মকান্ড বর্ননা করার জন্য।
@আদিল মাহমুদ,
এন টিভি সহ যে সব ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের এই রাজাকার কানেকশন আছে এদের শেকড়ের আগা ঠিক কতোদূর বিস্তৃত তারও একটা অনুসন্ধান দরকার বলে মনে করি।
@কেশব অধিকারী,
এটিএন এর দোষ কতটা দেওয়া যায় কে জানে। আলেম মোল্লা শ্রেনীর বেশীরভাগ লোকের ৭১ বিষয়ে মতামত কেমন ছিল সেটা ইতিহাসেই বলে, বর্তমানেও যে তেমন একটা পরিবর্তন হয়েছে এমন মনে করারও কারন নেই। এই লোকের মত হয়ত বাকিরা অত্যাচার, নির্যাতনের সাথে যুক্ত ছিল না, তবে মানসিকতায় একই রকমের। তাদেরও অনেকে বড় আলেম হিশেবে স্বাধীন বাংলায় জনপ্রিয়তা পেয়েছে, অবাক হবার মত তেমন কিছু নেই।
এই লোকের শেকড় কতটা ছিল কে জানে, তবে সে বেশ কিছু ইসলামী সংগঠন, সমাজ সেবা প্রতিষ্ঠান জাতীয় সংগঠনের সাথে জড়িত ছিল, এভাবেই হয়ত নাম ফুটেছে। বুদ্ধিজীবি হত্যার প্রধান জল্লাদ চৌধূরী মঈনুদ্দিন বহু বছর লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী ইষ্ট লন্ডন মসজিদে ইমামতি করেছে, সম্প্রতি সে রাজ পরিবারের অনুষ্ঠানেও ওঠাবসা করে ছবিতে দেখেছি। আরেক জল্লাদ আশরাফউজ্জামান আমেরিকার এক বড় ইসলামী সংগঠনের সাথে যুক্ত।
@আদিল মাহমুদ,
মঈনুদ্দিন ইষ্ট লন্ডন মসজিদের ইমাম বোধ হয় ছিলনা, ইমাম ছিলেন আবু সাইদ। তবে সুচতুর মঈনুদ্দিন ইংল্যান্ডের ন্যাশনেল হেলথ সার্ভিসের Muslim spiritual care provision এর একজন ডাইরেক্টর হতে পেরেছে। ২০১০ সাল পর্যন্ত সে ইষ্ট লন্ডন মসজিদের ভাইস চেয়ারম্যান ছিল আর এই সুবাদে মসজিদের একস্টেনশন ওপেনিং দিনে প্রিন্স চার্লসের সাথে তার পরিচয় হয়।
[img]http://i1088.photobucket.com/albums/i332/malik1956/moinuddin.jpg[/img]
মঈনুদ্দিন একাধারে ইষ্ট লন্ডন মসজিদের ভাইস চেয়ারম্যান, মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেইন এর সক্রীয় সদস্য, ন্যাশনেল হেলথ সার্ভিস Muslim spiritual care provision এর ডাইরেক্টর, বৃটিশ চ্যারিটি মুসলিম এইড এর ট্রাস্টি, ইসলামিক হাইয়ার এডুকেশন ইউ কে Markfield Institute এর সহকর্মী সদস্য ও ইসলামিক ফোরাম ইউরোপ এর প্রতিষ্ঠাতা।
এই লেখাটির সাথে প্রাসঙ্গীক বিধায় নিচে চ্যানেল ফোর ডিসপ্যাচের ওয়ার ক্রাইম ফাইলটি আবার দিলাম। ভিডিও ক্লিপ ডাউনলোডে দূর্বলতা আছে, কিছু জায়গায় ভেঙ্গে গেছে তবু ধর্য্য সহকারে দেখলে পুরোটাই দেখা যাবে-
War Crimes Files
clip 1
clip 2
clip 3
clip 4
clip 5
@আকাশ মালিক,
হ্যা, আমারই ভুল। চৌধূরী মঈনুদ্দিন ইমাম নয়, মসজিদ কমিটির হর্তাকর্তা ছিল। তাকে নিয়ে ৮৮ সালের প্রথমে বিশাল গন্ডগোল হয়, এক সময় তাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। তবে সে রাজাকার বা নরঘাতক বলে নয়, অর্থ আত্মসাতকে কেন্দ্র করে গোলমাল হয়েছিল।
ইমাম হোক না হোক, ধর্ম ভর করেই যে তার উত্থান তাতে কোন ভুল নেই। এর মৃত্যুদন্ডাদেশ হলে নিঃসন্দেহে দেশে বিদেশে অনেকের হৃদয়ে আঘাত লাগবে, ইসলামের বিরুদ্ধে ১৪০০ বছর ধরে চলমান চক্রান্তের ধারাবাহিকতার প্রমান পাওয়া যাবে এতেও ভুল নেই।
@আদিল মাহমুদ,
আমাদের নিজেদের কিছু সমস্যা আছে, সমস্যাগুলো সামষ্টিক হলে সাধারনতঃ উপেক্ষা করি, কিন্তু ব্যক্তিগত হলে ভীষন সিরিয়াস হয়ে যাই। যেমন, এলাকায় যদি এমন একজন লোক থাকে যার হাত সাফাইয়ের অভ্যাস আছে, আমরা কি জেনে শুনে তাকে বাড়ির প্রহরী পদে নিয়েগ দেই? দেই না। কিন্তু যদি এমন হয় যে পাড়ায় একটা স্কুল আছে, তাহলে তখন অতি মানবিক হয়ে স্কুলের হেডমাস্টার সাহেব কে অনুরোধ করি প্রহরী পদে নিয়োগ দেবার জন্যে, এমনকি কখনো কখনো আমরা প্রভাবশালী কাউকে কিংবা রাজনৈতিক প্রভাবও ব্যবহার করে থাকি এদের জন্যে। কারণ চুরি হলে তো আমার হবেনা স্কুলের হবে, ওটা তো আমার নয়! অথবা এই লোকটাকেই প্রয়োজনে সময়ে ব্যবহার করার মতলব তৈরী করে রাখি। আমাদের মানসিকতা অনেকটা এইরকম।
এই লোকের যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদন্ড হয়েছে! আমি কখনোই বিশ্বাস করতে চাইনা যে এই লোকের এহেনো ঘৃন্য কর্মকান্ড সম্পর্কে (অন্ততঃ যুদ্ধাপরাধী হিসেবে পরিচিতিটুকু) এন টি ভি কর্তৃপক্ষের জানা ছিলো না। কিভাবে সম্ভব এই লোককে টেলিভিশনের সেটের সামনে বসিয়ে তার উদগীরিত আবর্জনা জাতির সামনে পেশ করা? জাতিকে নসিহত করা? যারা এর ব্যবস্থা করেছে, তারা অবশ্যই জেনে শুনেই করেছে। এদের এর অতীত কর্মকান্ডের প্রচ্ছন্ন ভাবে হলেও সমর্থক বিবেচনা করতে হবে। আজ নাহয় এর ফাঁসী হলো, কিন্তু রক্তবীজের মতো যে ছানা গুলোকে সে প্রসব করে গেলো এরা কি সুযোগ পেলে আমাদের ঘাড়ে হাত তুলবে না? আমার আগের মন্তব্যের উদ্দ্যেশ্য ছিলো, যুদ্ধাপরাধী প্রমানিত হবার পরে, যে সব ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান এদের সাথে অদ্যাবধি যুক্ত ছিলো তাদেরও একটা সতন্ত্র তালিকা হোক যাতে আমজনতা এদের থেকে সাবধান হতে পারে।
@কেশব অধিকারী,
দ্বি-চারিতা মনে হয় মানুষের স্বভাবগত, কম বেশী সবার ভেতরেই থাকে।
– সত্য কথা। আপনার উদাহরনগুলির বাইরেও আরো উদাহরন দেওয়া যায়। যেমন দূর্নীতি; দেশে ভয়াবহ দূর্নীতি সমস্যা নিয়ে সকলেই চিন্তিত, ‘অল্প’ কিছু লোকের কারনে যে দেশের সোজা সরল আম জনতার বদনাম হচ্ছে সেটা নিয়ে নানান আলোচনা করেন, এদেরই অনেকে দূর্নীতির সাথে জড়িত, কেউ সরাসরি জড়িত না হলেও নিজের বাবা মামার নামে দূর্নীতির কথা উঠলে ষড়যন্ত্র পেয়ে যান।
– আমি নিশ্চিত না। বাচ্চু রাজাকারের নাম রাজাকারের প্রতিষ্ঠিত যেসব তালিকা আগে প্রকাশিত হয়েছিল সেসব কোথাও নেই। তার ব্যাকগ্রাউন্ড কোন রকমের তদন্তের আগে জানা নাও থাকতে পারে এমন হতেই পারে। যদিও আলেম মাওলানা শ্রেনীর ‘৭১ সালের ভূমিকার কারনে এই বয়সের সকলেরই ব্যাকগ্রাউন্ড চেক মানবিকতা্র স্বার্থেই করা দরকার।
– ভয়াবহ রাজাকার মাওলানা মান্নানের ইনকিলাব পত্রিকা এক সময় সার্কুলেশনে দেশের শীর্ষ অবস্থানে ছিল। মান্নান মাওলানা বাচ্চু রাজাকারের মত অখ্যাত বা পাতি রাজাকারও ছিল না যে তার ভূমিকা জানা ছিল না এই অজুহাত দেওয়া চলে। তাকে কোন আইনী আদালতে দাঁড়াতে না হলেও বিবেকের আদালতে তার বিচার করা যায় ভিক্টিম পক্ষের বক্তব্য শুনে। ডাঃ আলিমের বিধবা স্ত্রী শ্যামলী নাসরিন পরিষ্কার ভাষায় এই মাওলানাকে দায়ী করেছেন তার স্বামী অপহরন ও নৃশংসভাবে হত্যার অভিযোগ করে যা বহু যায়গায় বহু বছর ধরে প্রকাশিত হয়েছে।
এবার বলেন দেখি এই টপ রাজাকার মান্নান মাওলানার পত্রিকা কিভাবে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পত্রিকা হতে পেরেছিল? এই পাঠককূলের মূল্যায়ন ঠিক কিভাবে করা যায়? পাঠকরা কি সকলে রাজাকারি মানসিকতার এটা বিশ্বাস করা যায়? এই আম জনতাকে গাল দেওয়া না গেলে এটিএনকে ঠিক কিভাবে গাল দিতে পারি? এটিএন আর যাই হোক পত্রিকায় অভিযোগ আসার পরেই এর অনুষ্ঠান বন্ধ করেছিল, আদালতের মামলা রায়ের অপেক্ষাও করেনি।
এই রাজাকার পটল তোলার পর তার জানাযায় কত লোকে শরিক হয়েছিল মনে আছে? সেসব লোকের ভেতর একাধিক পদক প্রাপ্ত হাই-প্রোফাইল মুক্তিযোদ্ধাও ছিলেন পত্রিকায় দেখেছি। এদের বেশীরভাগও নিশ্চয়ই রাজাকারদের ঘৃণা করেন। এ জন্যই বলেছিলাম যে দ্বি-চারিতা মানুষের স্বভাবগত।
দেশের শীর্ষ আলেম বলে পরিচিত, যাদের কেউ কেউ সরকারী ইসলামি ফাউন্ডেশনের সাথে জড়িত, যাদের লিখিত নানান ঈমানী কিতাব লাখে লাখে লোকে পড়ে তাদেরও কেউ কেউ আছে রাজাকার। রাজাকারি ব্যাকগ্রাউন্ডে কিছু আসছে যাচ্ছে?
আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় না থাকলে বাচ্চু মিয়ারও সম্ভাবনা ছিল অতীত কর্মকান্ড প্রকাশিত হয়ে যাবার পরে আরো বিখ্যাত হয়ে ওঠা, সামনেরবার ৪ দল থেকে এমপি মন্ত্রী হয়ে যাওয়ায় বিচিত্র কিছু ছিল না। বেচারার কপাল মন্দ, বেঠিক সময় চেহারা ফাঁস হয়েছে।
– এবার তো হাঁসালেন। প্রতিষ্ঠান হিসেবেই প্রথমেই নাম করতে হয় দেশের মাদ্রাসাগুলির। ‘৭১ সালেও এরা ছিল মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী, আজকের দিনেও একই আদর্শের চর্চাই হচ্ছে। সামান্য কিছু আলোচনা এখানে আছে। বেড়ালের গলায় ঘন্টা বেধে ইহকাল পরকালের মেওয়ার লোভ বর্জন করার হীম্মত আছে কয়জনার? তার চাইতে চিহ্নিত কিছু রাজাকারের ওপর যাবতীয় দায় চাপিয়ে, বড়জোর জামাতে ইসলামী বা ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার হুংকার ছাড়া অনেক নিরাপদ, সাথে সাথে যারা মাদ্রাসা শিক্ষা বা প্রচলিত ইসলামী শিক্ষার খুত ধরে, রাজাকারির সম্পর্ক পায় তাদের ইসলাম বিদ্বেষী গাল দিলে দুই কূলই রক্ষা করা যায়। আমি নিজে রাজাকার বদরদের বিচার নিয়ে এ কারনে খুব বেশী আবেগ তাড়িত হতে পারি না।
আইইউটির স্পন্সর ওয়ামি (WAMY) বিরুদ্বে পোস্টারিং করার জন্য আপনাদেরকে ধন্যবাদ। আপনাদের সাহসিকতা প্রশংসার দাবী রাখে। সবার সাথে আমিও বলব যে আপনাদের সাবধানে থাকা দরকার। দেখুন সৌদি আরব রিয়াদ থেকে এখানেও চ্যালেন্জ করা হচ্ছে।
Dear Mr. Raihan,
I agree with Ms. Bonna completely.
What we are seeing in Bangladesh now is more to the political side than pure act of humanity. The bad is completely bad, but the good is not completely good. That is the problem!
The following is from an interview of Maulana Matiur Rahman Nizami:
“When Awami League went to power, it prohibited Islamic politics. It curtailed the growth of Islamic education and culture. But when the late President Ziaur Rahman came to power, he added the word ‘Bismillah’ to the Constitution. He replaced ‘secularism’ with ‘faith in Allah’. That is why we felt an affinity with them and joined them in the alliance.”
Source: http://www.jamaat-e-islami.org/index.php?option=com_publication&task=detail&info_id=19
Do not underestimate these people. They know how to kill and survive. This is nothing new to them. I am sure they are making a hit-list as we speak. They survive because they learned to see good in everything. When everyone is busy talking about them, they are busy making the hit-list.
Regards,
AL
@Adnan Lermontov,
মুক্ত-মনা বাংলা ব্লগে ইংরেজীতে মন্তব্য করা প্রবলভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়। দেখুন নীতিমালা । তাই আপনি যদি বাংলায় লেখা বা মন্তব্য করা শুরু করতেন তবে বেশ ভালো হত।। বাংলা লেখার জন্য আপনি http://www.omicronlab.com/avro-keyboard.html লিংক থেকে অভ্র ডাউনলোড করে লেখা শুরু করে দিন, যেকোন ধরণের সাহায্য প্রয়োজন হলে আমাদের বলবেন। আপনার মন্তব্য গুলো বেশ সুন্দর হয়, চাই আপনি আমাদের সাথে আলোচনায় সবসময় অংশগ্রহণ করুন।
জাহেদ সৌদি আরব রিয়াদ
আপনারা আর কত মিথ্যা কথা বলবেন মিথ্যা কথা বন্দ করুন।
@জাহেদ,
সত্যবাদী মহাশয়। বাচ্চু রাজাকারের সত্যি কথাগুলো আপনিই তাহলে বলেন। আমরা শুনি।
@জাহেদ,
একটা রাজাকারের পক্ষে আপনি কিভাবে কথা বলছেন সেটা ভেবেই আমি আশ্চর্য হচ্ছি।
সত্য টা কি যদি আপনি একটু তুলে ধরেন তাহলে ভাল হয়।
@বকলম, এত অবাক হওয়ার কি আছে? রাজাকার এবং তাদের সমর্থনকারীরা তো সংখ্যায় কম না, আর উনি থাকেন এক্কেবারে রাজাকারদের বাপের দেশ সৌদি আরবে। হয়তো রাজাকার বাচ্চুদের সাথে উঠাবসাও আছে ওনার!
@ জাহেদ সৌদি আরব রিয়াদ
আপনি একটা কাজ করেন না, রায়হানের লেখাটায় কোথায় কোথায় মিথ্যা আছে তা জানিয়ে একটা লেখা পাঠান। রায়হান তো দেখলাম রেফারেন্স দিয়েই লিখেছে, তাহলে কি ওনার রেফারেন্সগুলোও মিথ্যা?
@রাহাত খান,
সহমত
(Y) (Y) (Y)
(F) (F) (F)
@জাহেদ,
এদের মিথ্যা কথাগুলীর ফিরিস্তিটা একটি পোস্ট আকারে দিয়ে দিন। আমরা এবং দেশবাশীরা যাতে অবগত হতে পারি, একই সংগে এই ইসলাম ও কুরআন ছুন্নাহর প্রকৃত রক্ষক তাহলে বিচারের শাশ্তি হতে রক্ষাও পেয়ে যাক।
@জাহেদ,
মিথ্যাই যদি হবে তাহলে এমন ঈমানী বলে বলিয়ান মুমিন মর্দ চোরের মত পালিয়ে গেলেন কেন?
@জাহেদ,
হে সত্য বাদী, ধোয়াতুলসী পাতা আমাদের একটু জানান না যে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাচ্চু রাজাকার-বোয়াল্মারী,নগরকান্দা,আলফাডাঙ্গা,ময়েন্দে এসব এলাকার মানুষজনের উপর কি ভালোবাসাটাই না দেখিয়েছেন। মুক্তমনায় কি নাটক দেখাতে আসছেন? এই মন্তব্যটা করে একটা উত্তরের ও প্রতিউত্তর দিতে পালেননা, নাকি দেওয়ার মত সৎ সাহস নাই কে জানে?আপনার দাবীর পক্ষে যুক্তি নিয়ে আসুন, সত্যের বিপক্ষে যেকোন যুক্তিকেই নির্মোহ ব্যবচ্ছেদ করার সাহস আমাদের আছে।
প্রয়োজনীয় লেখা। যুদ্ধাপরাধীদের মুখোশ উন্মোচন করা দরকার। রায়হানকে অনেক ধন্যবাদ। আইইউটিতে পোস্টারিং এর সাহসিক কাজের জন্য আপনার ও আপনার বন্ধুদের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আপনারা এই কঠিন কাজগুলো করছেন বলেই জামাত-শিবির ক্যাম্প আজকে ডিফেন্সিভ অবস্থানে। ওরা কিন্তু অনেক ঘুঘু। এই সংঘাতকে কিন্তু ওরা এখনো যুদ্ধই মনে করে। সেমিনার, ব্লগ, পোস্টারে এই যুদ্ধ সীমিত থাকবে মনে করাটা ভুল হবে। বন্যা আহমেদের মন্তব্যের সাথে আমি দুটো বিষয়েই একমত। এক, আপনাদের সাবধানে থাকা দরকার, এই কাজগুলোও সাবধানে করা দরকার। দুই, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সরকারের সদিচ্ছা সম্পর্কে আমি যথেষ্ট সন্দিহান। আওয়ামী লীগের ওপরে ভরসা করলে ভোগান্তি আছে।
রায়হান, এই লেখালেখিগুলো একটু সাবধানে করতে অনুরোধ করবো তোমাকে।
এখন খুব মনে হচ্ছে যে, দেশে এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে, রাজাকার বাচ্চুদের শাস্তি হবে। কিন্তু একটু চিন্তা করে দেখো, কয়টা জিনিস আওয়ামী লীগ আসলেই করতে পেরেছে, এতো আপোষ করা শিক্ষানীতিটা পর্যন্ত এখনও বাস্তবায়ন করতে পারলো না! বিচার শুরু হয়ে শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় যে আসলেই এদের বিচার হবে। এত হাতাশাবাদী হওয়ার জন্য দুঃখিত কিন্তু অতীতের কর্মকান্ড বিচার করলে আমি কোন ভরসা পাই না। সেদিন পত্রিকায় দেখলাম নিযামী খুব বড়াই করে বলছে যে, সময় এরকম থাকবে না, তখন তারা দেখে নেবে!!
@বন্যাপা,
আপনার আর ইরতিশাদ মন্তব্যে কে বা কারা মার্কিং করছে। পাঁচ এ এক পাইছেন 😀 । আমি আমার একটা মন্তব্যে পাঁচে তিন পাইছি। প্রথমে মনে হয় আমাকেও এক দিসিলো তারপর কোনও এক ভদ্রলোক পাঁচ দিয়ে গড়ে তিন বানায়ে দিছেন।
@রায়হান আবীর,
আপনি আমাদেরগুলোতেও পাঁচ দাগিয়ে দিন, তাহলে গড়ে তিন পাবো। পাশমার্কও যদি না পাই…… :-X
বাংলাদেশের ইসলাম অন্তপ্রান রাজাকার, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শিবির থেকে তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি মুক্তিযুদ্ধের একজন নিবেদিত প্রান রাজাকারের আসল মুখোশ জাতির সামনে তুলে ধরার জন্য। এহেন কাজ যে করতে পারে সে যে বাংলাদেশ নামক একটি হিন্দু রাষ্ট্রের ভাল বৈ খারাপ চায় না তা স্পষ্ট। এমন কর্মের নিন্দা জ্ঞ্যাপন করছি। 😀
যাক অবশেষে লেখাটা এখানে দিলেন। পুরোটাই মাইক্রোসফট ওয়ান নোটে সেইভ করে রেখেছিলাম 😀
ফেস বুকে ভিন এন এন বাংলা বলে একটা গ্রুপ চালু করেছি সিটিজেন জার্নালিজম বা সিটিজেন সাংবাদিকদের জন্যে।
http://www.facebook.com/#!/group.php?gid=454031185407
এই ধরনের খবরগুলোর লিংক ওখানে দিলে খুব ভাল হয়। এই লিংকটা আমি দিয়ে দিয়েছি। ওখানে মাত্র দুমাসে ২০০০ লোক জয়েন করেছে এবং যুদ্ধাপরাধীদের ব্বিরুদ্ধে অনেক বাংলাদেশী সেখানে লিখছে।
মুক্তমনাতে যারা বাংলাদেশের চলতি ঘটনার ওপর লিখছেন, তারা মুক্তমনার লিংকটা ওখানে দিলে খুব ভাল হয়। এতে মুক্তমনার প্রচার এবং আমাদের গ্রুপের ও খুব ভাল হয়। সেরকম গুরুত্বপূর্ন সংবাদ হলে, আমি সব মেম্বারদের ব্লাস্ট করে জানিয়ে থাকি।
@বিপ্লব পাল,
সরি ফেসবুকের লিংকটা আবার দিলাম
চমৎকার এবং সময়োপযোগী পোস্ট। এই খুনী, ধর্ষণকারী পাক হানাদারের সহচর বাচ্চু রাজাকার’ কিভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে টিভি ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠলো তা আমার কাছে সব সময়ই পরম বিস্ময়।
রায়হান রেফারেন্সগুলো ঠিক মত রেখো, এমনকি ব্যক্তিগত পিসিতেও কপি করে রেখে দেবে। আমি এই কালকেই শুনেছি এই বাচ্চু রাজাকার নাকি তাকে ডিফেন্ড করার জন্য আইনবিদ নিয়োগ করেছেন, যিনি বিভিন্ন ওয়েব সাইটে চিঠি পাঠিয়ে ‘মানহানির’ মামলা ঠুকছেন। অনেক ‘সাহসী’ এবং ‘নিরপেক্ষ’ বলে কথিত সাইট চিঠি পেয়ে নাকি ‘ঝামেলা এড়াতে’ ইনফরমেশন মুছে ফেলছে। কাজেই ব্যাপারটা মাথায় রেখো।
যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে যখন সকলে সোচ্চার হয়েছে, আমাদের এই রেফারেন্সগুলোই ভবিষ্যতে কাজে দেবে ব্যাটার গলায় দড়ি পরাতে।