নিজের গর্বের কথা দিয়েই শুরু করি!
আমার মেয়ে এবং ছেলে দুজনই অহিন্দু বিয়ে করেছে। ছেলের বিয়ের প্রাক্কালে হবু আত্মীয়রা এসেছিল সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য। লাঞ্চ টেবিলের এক পাশে আমি এবং অন্য পাশে আমার মেয়ে। আমার মেয়ে পাত্রী পক্ষের লোকদের বলছে – “আমি গর্বিত যে আমার বাবা আমাদেরকে ধর্মীয় কোন শিক্ষা দেয়নি।“ টেবিলের অন্য প্রান্ত থেকে আমার মেয়ের কথাটা কানে এলো। গর্বে আমার বুকটা ভরে উঠলো।
ছেলে ছোট। ওর বিয়ের দশ বছর পরে, আমার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু জিজ্ঞেস করল, “আচ্ছা দাদা, আপনার ছেলে-মেয়েরা এখন কোন ধর্ম পালন করে?” সহসা প্রশ্নটির উত্তর দিতে পারিনি। কারণ বিষয়টি আমার মাথায় কখনও আসেনি। প্রথমে এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ দিলাম। তারপর ব্যাপারটা একটু ভেবে নিলাম। মেয়ের বিয়ে হয় ২০০৪ সালে। তারপর ছেলের বিয়ে হয় ২০১০ সালে। ষোলটা বছর চোখ বুজে দেখে নিলাম। আমার কাছে দুটো জিনিষ স্পষ্ট হলোঃ ১) ওদের কারও বাড়িতে বা আমার বাড়িতে ধর্ম নিয়ে কোনরকম আলোচনা হয় নাই, এবং ২) ওদের কারোর বাড়িতে কোন রকম ধর্মীয় চিহ্ন নাই। এটা আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। তখন গর্বে স্ফীত বুক নিয়ে বললাম, এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু আমার মাথায় কোনদিন আসেনি। না আসাটাই আমার অহংকার। “ওরা শান্তিতে আছে” শুধু এই জিনিষটাই শুনতে চাই।
আমার জন্ম এক নড়বড়ে হিন্দু পরিবারে। বাবা ধর্মের কোন শিক্ষা দেননি। মা তাঁর সময়ের অনেক এগিয়ে ছিলেন। হিন্দু ধর্মের জাতিভেদ, জন্মসূত্রে তথাকথিত উচ্চ শ্রেণীর ঘৃনা, ভগবানদের অদ্ভূত আকৃতি দেখে দেখে সংশয় নিয়ে বড় হই। মুসলমানদের ধর্মে এসব বালাই নেই। ফলে ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হই। সে সময় কেউ ডাক দিলেই গৃহ ত্যাগ করার মত মানসিক অবস্থা ছিল। কিন্তু Mohammad M Pickthall এর কুরান পড়ে আমি হতভম্ব হয়ে যাই। কুরানে এসব কী লেখা? এ কেমন আল্লাহ? এ কেমন কিতাব যা মানুষকে সেক্স এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে উদ্বোদ্ধ করে? আমার সংশয়ের মাত্রা বাড়তে থাকে। আমার মাথায় এক নতুন বিশ্বাসবোধ দানা বাঁধতে থাকে – ভগবান বা আল্লাহ নামে কেউ থাকতে পারে না। এসব ধূরন্ধরদের সৃষ্টি।
এর পর ডঃ অভিজিৎ রায়ের মুক্তমনা প্ল্যাটফর্মে আমার প্রবেশ ঘটে। আমি সংশয় মুক্ত হয়ে পূর্ণাঙ্গ ধর্মমুক্ত মানুষে পরিণত হই। ধর্মকে ঝেটে বিদেয় করতে পেরে আমার মন অনাবিল আনন্দে ভরে থাকতে শুরু করে। আজ আমি দৃঢ়চিত্তে স্বকীয় বুদ্ধি এবং চেতনা সম্পন্ন মানুষ। আমার হৃদয়ে কোন প্রকার ভুত বা ঈশ্বরের জায়গা নেই। আমি অভিজিৎ রায়ের কাছে আমি ঋনী। আমি অভিজিৎ নক্ষত্রের আলোকে আলোকিত মানুষ।
মহাবিশ্বের বিশালতা আমাকে অস্থির করে তুলে
আমার চিন্তা-ভাবনার পরিসর ছিল পৃথিবী সহ সূর্যের গ্রহাদি এবং রাতের আকাশে খালি চোখে দেখা হাতে গোনা কিছু তারকা মন্ডলী। প্রতিটা তারাই যে এক একটা সূর্য এবং ঐসব সূর্যদেরও যে গ্রহ-উপগ্রহ থাকতে পারে সে ধারণাও আমার ছিল না। এখন আমার চিন্তা-ভাবনার পরিসর অসীম। রাতে খালি চোখে যে সব তারা দেখি এগুলো আমাদের নক্ষত্রমন্ডলীর (গ্যালাক্সি) অতি নগন্য অংশ মাত্র। এরকম কোটি কোটি গ্যালাক্সি নিয়ে আমাদের মহাবিশ্ব। আমি পৃথিবীর গণ্ডী ছাড়িয়ে মহাবিশ্বের বিশালত্ব অনুভব করতে পারি। মহাবিশ্বের সৌন্দর্য আমি হৃদয়ে ধারণ করে পুলকিত হই। আমার মহাবিশ্বের বিশালত্বে হাতিখড়ি ডঃ অভিজিৎ রায়ের বিজ্ঞান বিষয়ক লেখা থেকে। তারপর Astronomy Professor ডঃ দীপেন ভট্টাচার্যের অনেক লেখা পড়েছি। তাঁর ভিডিও অনুষ্ঠান দেখেছি। Michio Kakuর ভিডিও দেখি। Astrophysicist, Dr. Bhaskar Datta of Texas A&M আমার বন্ধু। তিনি মহাবিশ্বের সৃষ্টি লগ্ন নিয়ে গবেষণা করেন। অনেকেই Big Bang এর স্থিতিকাল ১০^(-৪৩) থেকে ১০^(-৩৫) সেকেন্ড মনে করেন। কিন্তু ডঃ দত্তের মডেল অনুযায়ী Big Bang এর স্থিতিকাল ১০^(-২৩) থেকে ১০^(-২০) সেকেন্ড।
মহাবিশ্বের ধারণা আমাকে আমাদের চেনা অতি ক্ষুদ্র পৃথিবীর সীমানা ছাড়িয়ে অনেক উপরে নিয়ে গেছে। আমি এমন একটা জায়গায় পৌছুতে পেরেছি যেখানে ধর্মীয় সৃষ্টিতত্ত্বের কণাসম স্থানও নেই। সব ধর্মই কাল্ট, হাস্যকর ব্যাপার। এখন আমি দৃঢ় প্রত্যয়ে বলতে পারি – কোন ঈশ্বর নেই, বেহেস্ত বা নরক নেই। আমার জীবনে এসবের কোন ভয়ভীতি নেই। সেজন্যই ২০২০ সালে ফেব্রুয়ারী মাসে কভিড আতঙ্ক যখন চরমে তখন ফেসুবুকে আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম – পারলে কোন ভগবান বা আল্লাহ আমাকে কভিড দিয়ে তাদের অস্তিত্ব প্রমাণ করুক। আমি ভগবান-আল্লাকে ভয় করিনা। কিন্তু ভগবান-আল্লাহ বিশ্বাসী সন্ত্রাসীদেরকে ভয় করি। এরা মানুষ খুন করে।
আরজ আলী মাতুব্বর, ডঃ হুমায়ুন আজাদ এবং ডঃ অভিজিৎ রায়
ঈশ্বরের অস্তিত্ব অস্বীকার করে গেছেন বরিশালের লালচিমড়ি গ্রামের আরজ আলী মাতুব্বর। তাঁর মাতা তাঁকে চার পয়সা দামের “অ আ, ক, খ” বইটিও কিনে দিতে পারেন নি। ফলে জীবনে তাঁর কোনদিন স্কুলে যাওয়া হয়নি। কিন্তু তিনি থেমে থাকেন নি। নিজে নিজে লেখাপড়া শিখেছেন ১৯ বছর বয়সে। আরজ আলীর মাথা পরিষ্কার ছিল। অন্যের কথায় বা ভুতের ভয়ে যুক্তিহীন কোন কিছু গ্রহণ করেন নাই। তিনি যা শিখতেন তা তিনি হৃদয়ে ধারণ করতেন। সহজেই তিনি ধূরন্ধর কর্তৃক আল্লাহ বা ভগবান সৃষ্টির ব্যাপারটা ধরে ফেলেন। তখন বরিশাল লাইব্রেরীতে মহাবিশ্বের সৃষ্টিতত্ব নিয়ে কোন বই পাননি। কিন্তু পেয়েছিলেন ডারউইন তত্ত্বের বই। তিনি লিখেছেন, “…. কেননা ‘বিবর্তন’ প্রমাণিত সত্য। যা হো’ক, এখানে এককোষী জীব (এমিবা) থেকে জীব জগতের বিবর্তনের একটি অতি সংক্ষিপ্ত তালিকা লিপিবদ্ধ করছি।…” (আরজ আলী মাতুব্বর রচনা সমগ্র – খণ্ড ১, পৃঃ২৭৭)। তিনি আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্ব নিয়েও লিখেছেন, “…শক্তির সংহতিতে হয় জড়ের উৎপত্তি এবং জড়ের ধ্বংসে হয় শক্তির উদ্ভব…” (আরজ আলী মাতুব্বর রচনা সমগ্র – খণ্ড ২, পৃঃ১৪২)। কুরানের দ্বিতীয় সুরার আয়াত ১০-১১ অনুযায়ী সম্পত্তি বন্টনে আল্লাহ ভুল করে গেছেন। আরজ আলী তা ধরে ফেলেছেন। তিনি উষ্মা প্রকাশ করে বলেছেন, “পবিত্র কোরানে বর্ণিত আলোচ্য ফরায়েজ বিধানের সমস্যাটি সমাধান করিলেন হজরত আলী (রা:) তাঁহার গাণিতিক জ্ঞানের দ্বারা এবং মুসলিম জগতে আজও উহাই প্রচলিত। এ ক্ষেত্রে স্বভাবতই মনে উদয় হয় যে, তবে কি আল্লাহ গনিতজ্ঞ নহেন? হইলে পবিত্র কোরানের উক্ত বিধানটি ত্রুটিপূর্ণ কেন?“ (আরজ আলী মাতুব্বর রচনা সমগ্র – খণ্ড ১, পৃঃ১৩১)।
আরজ আলীর সময়ে তাঁর মত মুক্তমনা এবং যুক্তিমনা কেউ ছিলেন না। ফলে একটি প্ল্যাটফরম তৈরী হয় নি। ডঃ হুমায়ুন আজাদ নিরীশ্বরবাদী আন্দোলনের একজন পথিকৃত। তাঁর আদর্শে অসংখ্য যুক্তিবাদী এবং মুক্তচিন্তক তৈরী হয়েছে। কিন্তু দৃশ্যমান কোন লেখক ফোরাম গড়ে উঠেনি। এদের সাথে ডঃ অভিজিৎ রায়ের পার্থক্য চোখে পড়ে। তিনিই প্রথম
মুক্তমনা প্ল্যাটফরম গড়ে তুলেন। এই প্ল্যাটফরম এতটাই শক্তিশালী হয় যে, ইসলামের অস্তিত্ব নিয়ে ইসলামিস্টরা শংকিত হয়ে পড়ে। তারা মনে করে মুক্তমনা প্ল্যাটফরম ইসলাম ধর্মের অস্তিত্বের জন্য প্রত্যক্ষ হুমকি। অতীতেও খ্রিষ্টান এবং ইসলাম ধর্ম যখনই বুঝেছে বিজ্ঞানের নতুন জ্ঞানের প্রভাবে তাদের ধর্ম বিপন্ন, তখনই তারা বিজ্ঞানীদেরকে খুন করে ধর্ম রক্ষার ব্যর্থ চেষ্টা করেছে। ইসলামিস্টরা একই ভাবে অভিজিৎ রায়কেও খুন করে। বাঁচার জন্য ডুবন্ত মানুষ যেমন করে খড়কুটো আকড়ে ধরে, ইসলামিস্টরা তাদের নিশ্চিত নির্মূল হয়ে যাওয়া ধর্মকে আপাতত রক্ষা করেছে।
অভিজিত ব্রুনোর মতই দার্শনিক হয়ে উঠেন
ধর্মের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়েছিল বলেই জ্যোতির্বিদ জিওদার্নো ব্রুনোকে মারা হয়েছিল। সেটাও ফেব্রুয়ারী মাস ছিল। এই ফেব্রুয়ারী মাসেই ইসলামিস্টরা অভিজিতকে খুন করলো।
ডঃ অভিজিৎ রায় নিরহংকারী মানুষ ছিলেন। বাবা ডঃ অজয় রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের একজন নামকরা অধ্যাপক ছিলেন। পদার্থ বিদ্যায় নোবেল পুরষ্কার তিনি পাননি। কিন্তু দুবার তিনি জুরি বোর্ডে দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৭১ সালে বাবা অজয় রায় একজন তখন টগবগে তরুণ। শেখ মুজিবুর রহমান ডাক দিলেন, ‘যার যা কিছু তাই নিয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়।‘ দেশ স্বাধীন হবে। ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হবে। মুক্ত ও স্বাধীন চিন্তার চর্চা হবে। অজয় রায় ১৯৭১ সালে জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধ করলেন। দেশ স্বাধীন হল। কিন্তু শেখ মুজিবের কন্যার নেতৃত্বে দেশ মৌলবাদী দেশে রূপান্তরিত হল। শেখ মুজিব যাদেরকে “শত্রু” নামে সনাক্ত করেছিলেন, তারাই মুক্তিযোদ্ধা অজয় রায়ের ছেলে ডঃ অভিজিৎ রায়কে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মেরে ফেলল। ২৬শে ফেব্রুয়ারী ২০১৫ সাল। কন্যা হাসিনা রাতের অন্ধকারে চুপিসারে অজয় রায়কে টেলিফোন করে ফিসফিস করে আহা, আহা জানালেন। শেখ মুজিবের নাতি, বিলিওনীয়ার, জয় বললেন, ‘নাস্তিক খুনের বিচার করলে যে পরিমান রাজনৈতিক ক্ষতি হবে তা আমরা নিতে পারব না।‘ অভিজিৎ খুনের বিচার বাংলার মাটিতে হলো না। কারণ, গঠনতন্ত্রে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র লেখা থাকলেও বাংলাদেশ আসলে একটি ইসলামিক রাষ্ট্র। রাষ্ট্র পরিচালনায় মূল হাতিয়ার আরবীয় অপসংস্কৃতির ইসলামিক আইন।
ডঃ অভিজিৎ রায়ের লেখালেখি
ডঃ অভিজিৎ রায়ই প্রথম মুক্তচিন্তার মুক্ত প্ল্যাটফরম সৃষ্টি করেন। বাংলাভাষীদের চারণভূমি – “চিত্ত যেথা ভয়শূন্য,উন্নত শির।”
মুক্তমনা প্ল্যাটফরমের নীতিমালা থেকে দুটো ধারার কিয়দংশ নীচে তুলে ধরা হলোঃ
১.১। মুক্তমনা বাংলা ব্লগের উদ্দেশ্য যে কোনো ধরণের প্রগতিশীল, বৈজ্ঞানিক ও যুক্তিবাদী চিন্তাধারার সাথে সম্পর্কযুক্ত রচনাকে প্রাধান্য দেয়া।
২.৬। মানবতা বিরোধী, বর্ণবাদী, লিঙ্গবৈষম্যবাদী, প্রোপাগান্ডামূলক, স্বাধীনতাবিরোধী কিংবা মৌলবাদী কোন লেখা মুক্তমনায় প্রকাশিত হবে না।
মুক্তমনা প্ল্যাটফর্ম ভদ্র-মার্জিত, রুচি এবং সুস্থমান সম্পন্ন লেখালেখির জায়গা। অভিজিৎ রায়ের লেখা পরিচ্ছন্ন, ভদ্র-মার্জিত, রুচিসম্পন্ন ও সুপাঠ্য। সোনার হাতে সোনার লেখা। একবার পড়তে শুরু করলে শেষ না করে থামা যায় না। ইসলাম বা অন্য কোন বিশেষ ধর্মের বিরুদ্ধে তিনি লিখেননি। তিনি বিশ্বাস করতেন – বিজ্ঞানের আলোকে ধর্মীয় অপবিশ্বাস একদিন নিজেই অন্ধকারে মিলিয়ে যাবে। তিনি মূলত বিজ্ঞানভিত্তিক লেখা লিখতেন। বিজ্ঞানের প্রান্তিক বিষয়গুলো সহজ করে পরিবেশন করতেন। তাঁর ভাষা ছিল সহজ-সুন্দর, পরিপাটি এবং সুপাঠ্য। লক্ষ্য ছিল এক – আমরা যদি আমাদের মহাবিশ্বের প্রাকৃতিক নিয়মগুলো অনুধাবন করতে পারি, তাহলে আমরা চিরাচরিত কুসংস্ককারের জঞ্জাল থেকে পৃথিবীটাকে মুক্ত করতে পারি। ধর্ম এবং কুসংস্কার সমার্থক। কুসংস্কারের ভিত্তিতে গড়ে উঠে অপবিশ্বাস যা সৃষ্টি করে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ, ঘৃনা, হানাহানি এবং রক্তারক্তি। পৃথিবীর প্রতিটি জিনিষেরই বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে। যা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার পরিপন্থী, তা মিথ্যা। মিথ্যাকে টিকিয়ে রেখেই এক শ্রেণীর ধূরন্ধর ধর্মের নামে সমাজে, রাষ্ট্রে প্রভাব বিস্তার করে। প্রভাবের কারণেই সৃষ্টি হয় ভেদাভেদ, ঘৃনা, হানাহানি এবং রক্তারক্তি।
এক সময় পাহাড়-পর্বত দূর্গম ছিল, ঝড়-ঝঞ্জা, আগ্নেয়গিরিকে প্রকাণ্ড শক্তিধর ঈশ্বর মনে করা হত। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা না জানার কারণেই এদেরকে ঈশ্বর বানিয়ে ধূরন্ধররা ফায়দা লুটেছে। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার কারণেই এসব ঈশ্বরে বিশ্বাসের অবসান হয়েছে। এখনও যেসব ধর্ম অর্থাৎ কুসংস্কার টিকে আছে তা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার কাছে পর্যুদস্ত হচ্ছে।
ধর্মকে সরাসরি আঘাত না করেও ধর্মকে দূর্বল করতে পারে বিজ্ঞান সমৃদ্ধ লেখা। অভিজিৎ রায়ের পথ সেটাই। তিনি বাংলা ভাষায় বাঙ্গালীদের মধ্যে বিজ্ঞানকে সহজ ভাষায় পৌছে দিয়েছেন। আর এতেই, বিশেষতঃ ইসলাম ধর্ম বিশ্বাসীরা বুঝে গিয়েছিল অভিজিতের তীক্ষ্ণ লেখা তাদের ধর্মকে সংকটাপন্ন করেছে। ধর্মকে মৃত্যুশয্যা থেকে বাঁচাতেই তারা অভিজিতকে খুন করে ফেলল। পরপর খুন করল আরও অনেক যুক্তিবাদী ও মুক্তচিন্তককে।
Big Bang তত্ত্ব প্রমাণিত হলো
পিটার হিগস ১৯৬০ দশকে বলেছিলেন Higgs Particle সৃষ্টি করা সম্ভব। সার্নের বিজ্ঞানীরা সুইজারল্যান্ডে অবস্থিত পৃথিবীর বৃহত্তম এবং ব্যয়বহুল গবেষণাগারে Higgs Particle এর অস্তিত্ব প্রমাণ করে দেখালেন। সংবাদটি প্রকাশ হলো ৪ জুলাই ২০১২ সালে। আনন্দে পিটার হিগস কাঁদলেন। তিনি ভাবতে পারেননি তাঁর জীবদ্দশায় তাঁর গবেষণা প্রমাণ হবে। আজীবন গবেষণার স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৩ সালে পিটার নোবেল পুরষ্কার পেলেন। এর ঠিক ১০০ বছর আগে রবিঠাকুর নোবেল পুরষ্কার পেয়েছিলেন সাহিত্যে।
৪ জুলাই ২০১২ সালে সংবাদটি প্রকাশের মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় অভিজিৎ রায় Higgs Particle এর উপর দীর্ঘ প্রবন্ধ লিখে উপহার দিয়ে মুক্তমনা বাংলা ব্লগের পাঠকদের অবাক করে দিলেন। লেখাটি টেকনিক্যাল বিষয়ে ভর্তি। কিন্তু এর সাথে ব্যাখ্যাগুলো এমন সহজ বাংলায় লেখা যে, যেকোন পাঠকই বিজ্ঞানের এতবড় গবেষণার ফলাফল বুঝতে পারে। অভিজিতের সার্ন থেকে হিগস বোসন – প্রলয় নাচন নাচলে যখন আপন ভুলে! লেখাটার খানিকটা তুলে ধরছি।
“মহাবিশ্বটা কীভাবে তৈরি হল, এটা তৈরি হয়েছেই বা কী দিয়ে, এর পেছনে কোন্ কোন্ প্রাকৃতিক বলগুলো কাজ করছে, মহাবিশ্ব যে প্রাকৃতিক নিয়মগুলো মেনে চলে তার উৎসই বা কোথায়, আমরাই বা এলাম কোথা থেকে, আমাদের গন্তব্যই বা কোথায়… সবই এখানকার বিজ্ঞানীদের গবেষণার অন্তর্ভুক্ত।
পৃথিবীর বৃহত্তম কণা ত্বরক হিসেবে স্বীকৃত সেই লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার, যাকে সংক্ষেপে আমরা LHC বলি।
জেনেভার সীমান্তে জুরা পাহাড় বলে একটা জায়গা আছে, সেখানে নানা কায়দা কসরত করে মাটির পঞ্চাশ থেকে একশ পঞ্চাশ মিটার (মানে প্রায় ১৬৫ ফুট থেকে পাঁচশ ফুট) নীচে ২৭ কিলোমিটার (মানে প্রায় সাড়ে সতের মাইল) পরিধির ধাতব এক টিউব বসানো হয়েছে। নীচে একটা ছবি দিলাম ব্যাপারটা বোঝাতে।
ঐ যে আমরা জানি প্রায় ১৩.৭ বিলয়ন বছর আগে এক বিশাল বিস্ফোরণ হয়েছিলো আর তার ফলশ্রুতিতে তৈরি হয়েছিলো এই মহাবিশ্ব, সেটার পুরোপুরি না হলেও এক ধরণের কৃত্রিম দশা তৈরি করতে পারবেন বিজ্ঞানীরা এই ধাতব টিউবের মধ্যে।
যদি হিগ্স ক্ষেত্র বলে কিছু না থাকতো, তাহলে কোন বস্তুকণারই ভর বলে কিছু থাকতো না
হিগ্স ফিল্ড বলে কিছু একটা আছে বলেই এই সব কণারা ভর অর্জন করতে পারছে, যা আবার ফলশ্রুতিতে তৈরি করতে পারছে আমাদের গ্রহ, নক্ষত্র, ছায়াপথ সহ সবকিছুই।
এক ধরণের কণা দিয়ে তৈরি ফিল্ডের ব্যাপারটা হিগসের মাথা থেকেই প্রথম বেরিয়েছিল বলে তার নামানুসারেই এই অনুকল্প-কণাটির নাম দেয়া হয় হিগ্স কণা। কিন্তু নাম দিলে কি হবে, সে কণার কোন পরীক্ষালব্ধ প্রমাণ বিজ্ঞানীরা কখনোই দিতে পারেননি।
এই হারানো টুকরাই যেন খুঁজে পেলেন সার্নের বিজ্ঞানীরা। পেলেন হিগ্স কণার অস্তিত্বের সুস্পষ্ট প্রমাণ।
ঐ যে কণা সনাক্তকারক বা ডিটেক্টর গুলোর কথা বলেছিলাম উপরে, তাদের দুটোতে – অ্যাটলাস এবং সিএমএস ডিটেক্টরে। এই দুই সনাক্তকারকের সাথে যুক্ত বিজ্ঞানীরা হিগ্স বোসন জন্মের খোঁজ দিলেন। ফলাফল বিশ্লেষণে স্পষ্ট দেখা গেল, দু’দলই পাচ্ছেন নতুন একটি কণার চিহ্ন। সেটা একটা বিশাল ভারী একটা বোসন কণা। হিগ্স যার নাম।
পেলাম যে পদার্থ ভেঙ্গে অণু। অণু ভেঙ্গে আবার পরমাণু । পরমাণু ভাঙ্গলে পাচ্ছি ইলেকট্রন আর নিউক্লিয়াস। নিউক্লিয়াসকে ভাঙলে প্রোটন আর নিউট্রন। আর ইলেকট্রনকে ইলেকট্রনের জায়গায় রেখে প্রোটন আর নিউট্রনকে ফের ভেঙ্গে পাওয়া গেল কোয়ার্ক। তাহলে এখন পর্যন্ত যা পেলাম তাতে করে কোয়ার্ক এবং ইলেকট্রনই হল পদার্থের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সত্ত্বা, যাদেরকে আমরা বলছি প্রাথমিক কণিকা।
লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডারে সংঘর্ষের মাধ্যমে ১৪ ট্রিলিয়ন ইলেকট্রন ভোল্টের শক্তি উৎপন্ন হয়, আর সেই শক্তির ধাক্কায় উপপারমানবিক কণিকারা (subatomic particles) দিগ্বিদিক হারিয়ে ছুটতে থাকে যত্র তত্র। সেগুলো আবার ধরা পরে যন্ত্রদানবের ডিটেক্টরগুলোতে। এভাবেই আটলাস আর সিএমএস ডিটেকটরে ধরা পড়ল মহামান্যবর হিগসের অস্তিত্ব। হিগসের শক্তি অবশ্য তাত্ত্বিকভাবে হিসাব করা হয়েছিল অনেক আগেই। গতবছরের ডিসেম্বর মাস থেকেই বিজ্ঞানীরা জানতেন হিগ্স কণা যদি থেকে থাকে তবে সেটার ভর থাকবে ১১৪ থেকে ১৩১ বিলিয়ন ইলেকট্রন-ভোল্ট (যেটাকে নতুন এককে গিগা ইলেকট্রন-ভোল্ট বা জিইভি বলা হয়) এর মাঝামাঝি জায়গায়। বিজ্ঞানীদের অনুমান মিথ্যে হয়নি। প্রোটন নিয়ে গুঁতোগুঁতির ফলাফল সনাক্ত করতে গিয়ে এমন একটা কণা পাওয়া গেল যার শক্তি ১২৫ গিগা ইলেকট্রন-ভোল্টের কাছাকাছি।”
স্বর্গ-নরকের অবস্থান কোথায়?
ধূরন্ধরগন স্বর্গ-নরকের অবস্থানের এমন বর্ণনা দিয়েছে যেখানে সাধারণ মানুষের পক্ষে যাওয়া বা কল্পনা করা সম্ভব না। ধূরন্ধররা ঐশী শক্তির দাবীদার। চাইলে তারাই পারে সেখানে নিত্য আসা-যাওয়া করতে। প্রাচীন হিন্দুরা বিশ্বাস করত এবং এখনও করে যে, স্বর্গ-নরক জায়গাটি হিমালয় পর্বতমালার কৈলাশ পর্বতে অবস্থিত। তেত্রিশ কোটি ভগবান ওখানেই বসবাস করে। Google Earth পৃথিবীর প্রতি ইঞ্চি মাটির ছবি তুলে ফেলেছে। কৈলাশ পর্বতে স্বর্গ-নরক নাই এটা নিশ্চিত। তবুও তো হিন্দুরা কৈলাশে অবস্থিত স্বর্গ-নরকে বিশ্বাস করে।
গৌতম বুদ্ধ রাজপ্রাসাদের সুখ-ঐশর্য ছেড়ে বনে চলে যান। আর মরুর দেশের কপর্দকহীন এক এতিম মেষ বালক রাজপ্রাসাদ ও হারেমখানা প্রতিষ্ঠিত করেন। হঠাৎ এক ধনাঢ্য বৃদ্ধাকে বিয়ে করে বিপুল বিত্তের মালিক হন। তার মাথা খুলে যায়। দুনিয়াতে প্রতিপত্তি পেতে হল বিত্তের দরকার এবং মানুষকে ভয়ভীতির মধ্যে ডুবায়ে রাখা দরকার। তিনি অত্যন্ত কূটকৌশলী ব্যক্তিতে পরিনত হয়ে উঠেন। ৭৩টি যুদ্ধ করেন। অগনিত মানুষ খুন করেন। শত্রুকে নির্মূল করাই ছিল তার এগিয়ে যাওয়া একমাত্র পথ। এর সাথে তিনি সৃষ্টি করলেন এক ঈশ্বর। সেই অলীক ঈশ্বরের দোহাই দিয়ে তিনি সব করতেন। এভাবেই তিনি কপর্দকহীন থেকে রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলেন। পাহাড়-পর্বতের পরিবর্তে বেহেস্ত-দোজখ তিনি সাত আসমানে তুলে দিলেন। বেহেস্ত-দোজখের বর্ণনা একমাত্র তিনিই জানেন। কারণ তিনিই ছিলেন আল্লাহর স্রষ্টা। উম্মে হানির সাথে তার একটা ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বরাক নামে এক কল্পিত পশুর পিঠে চড়ে বেহেস্তে ঘুরে আসার কাহিনী শুনালেন। কিন্তু আল্লাহ নিয়ে নতুন কিছু বলতে পারলেন না।
তার সময়ের লোকেরা পৃথিবী সমতল জানত, বিশ্বাস করত সূর্য ঘোলা জলে প্রতিদিন ডুবে। সেজন্য এসব ভুল তথ্য কুরানে স্থান পেয়েছে। তিনি কী ভাবে ভাববেন কোরানের ভুলচুক একদিন বেরিয়ে যাবে? সাধারণ মানুষ একদিন আকাশে উড়বে, তার সময়ে এটা ভাবাও সম্ভব ছিল না। বিজ্ঞানীরা James web space telescope দিয়ে ১৩,৫০০,০০০ আলোকবর্ষ দুরের গ্যালাক্সি দেখে ফেলবেন এটা তার ধারণায় থাকার কথা নয়। বিজ্ঞানীরা এত দুরের গ্যালাক্সি খুজে পেলেন, কিন্তু মুহম্মদ যে বেহেস্তটি ঘুরে এলেন তা খুজে পেলেন না। International Space Station প্রতিদিন পৃথিবীর চারপাশে ঘুরছে ১৬ বার। বেহেস্ত-দোজক বা স্বর্গ-নরক থাকলে অবশ্যই তা চোখে পড়ত। কিন্তু তারপরেও হিন্দুদের মতই মুসলমানরা অস্তিত্বহীন বেহেস্ত আর হুরের নেশায় রোজা-নামাজ করে যাচ্ছে। এর চেয়ে আশ্চর্যের বিষয় আর কী হতে পারে?
অভিজিতদের খুন করে ইসলামিস্টদের কোন লাভ হয়েছে?
ব্রুণোকে হত্যা করে খ্রীস্টানদের লাভ হয় নাই। তবে খ্রীস্টানরা আর সন্ত্রাসী নয়। কিন্তু ইসলামিস্টরা সারা পৃথিবীতে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। “আল্লাহ হু-আকবর” শুনলেই মানুষ আতঙ্কিত হয়। অভিজিতকে হত্যা করে তাঁর লেখা পৃথিবী থেকে মুছে ফেলা যায়নি। অভিজিতের রক্ত নতুন প্রজন্মকে ইসলাম ধর্মের স্বরূপ উদ্ঘাটন করতে সাহায্য করছে। তরুন প্রজন্ম অভিজিতের নাম জানছে। তার লেখার সাথে পরিচিত হচ্ছে। অভিজিতকে খুনের কারণেই ধর্ম প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বেশী। এরা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে প্রতিদিন। অপবিশ্বাসে বিশ্বাসীরা অভিজিৎ, রাজীব হায়দার, অনন্ত, ওয়াশিকুর রহমান, নিলয়দের খুন করে কী লাভ হলো? নতুন প্রজন্ম ধর্মবাদী নয়, বিজ্ঞানবাদী। ইন্টারনেট পৃথিবীর আকার ছোট করে দিয়েছে। চাপাতি দিয়ে বিজ্ঞানকে দমানো যায় না। খ্রীস্টানরা বুঝেছে। আরবদেশের কাল্ট অনুসরণকারিরা তা বুঝে নাই। নতুন প্রজন্ম ধর্মের মূলে প্রবেশ করছে। ধর্মের খোলস উন্মোচন করছে। এদের খুন করে ইসলামের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মেরেছে। ধর্মবিমুখ এবং ধর্মত্যাগ বেগবান হচ্ছে। ধর্ম ত্যাগীরা সন্ত্রাসীদের ভয়ে সাবধানে চলে, সাবধানে কথা বলে। ধর্মত্যাগীদের সংখ্যা বাড়ছে নীরবে।
১৩,৭০০,০০০ বছর আগে Big Bang এর মাধ্যমে আমাদের মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছে। কোটি কোটি গ্যালাক্সি দূর থেকে দুরান্তরে সরে যাচ্ছে। এই সত্যকে ধর্মবাদীরা আর অস্বীকার করতে পারছে না। ফলে ইদানীং বেদ এবং কুরানে Big Bang কথা আছে এরকম হাস্যকর দাবী শোনা যাচ্ছে। আবার এরাই বিবর্তন তত্ত্বকে অস্বীকার করছে। অচিরেই বিবর্তন তত্ত্বও বেদ এবং কুরানে পাওয়া যাবে বলে দাবী উঠবে। তখন আদমতত্ত্ব আর ধর্মতত্ত্বও উড়ে যাবে।
১৪০০ বছর আগে এক ধোকাবাজ নকল আল্লাহ সৃষ্টি করে বিশাল রাজত্ব সৃষ্টি করেছিল। আজও সেই ধোকাবাজি মডেল ব্যবহার করছে অনেক দেশের রাষ্ট্রনেতারা। ১৯৯৫ সালে “আরজ আলী মাতুব্বর রচনা সমগ্রের” প্রথম খন্ডে তিনি লিখলেন “সত্যের সন্ধান”। উৎসর্গে লিখলেন, “মুক্তচিন্তা চর্চা ও প্রসারে উৎসাহী এবং যুক্তিপ্রবণ পাঠকের উদ্দেশ্যে। “ আরজ আলী মাতুব্বর ভবিষ্যৎ দ্রষ্টা ছিলেন তা প্রমাণ হয়েছে।
মুক্তির আলোর মশাল নিয়ে এলেন ডঃ হুমায়ুন আজাদ, ডঃ অভিজিৎ রায়, রাজিব হায়দার, নিলয়, অনন্ত, ওয়াশিকুর রহমান বাবুরা। এরা বাস করে মানুষের হৃদয়ে।
অভিজিৎ নক্ষত্র আমার সমস্ত সংশয় দুর করেছে। আমি মহাবিশ্বটাকে দেখতে পাই। প্রতিদিন শত শত প্লেন পৃথিবীর চার পাশে ঘুরছে। কিন্তু কোন স্বর্গ-নরক বা বেহেস্ত-দোজক কারও চোখে পড়েনি। International Space Station প্রতিদিন পৃথিবীর চারপাশে ঘুরছে ১৬ বার। বেহেস্ত-দোজক বা স্বর্গ-নরক থাকলে অবশ্যই তা চোখে পড়ত। ভুত কারো চোখে পড়েনা। কারণ ভুতের অস্তিত্ব নেই। বেহেস্ত-দোজক, স্বর্গ-নরক বা ঈশ্বর ভুতের মতই অস্তিত্বহীন। তাই চোখে পড়ে না। এরা মূর্খদের “বিশ্বাসে” আছে। আদতে নেই।
কুরানের দ্বিতীয় সুরার আয়াত ১০-১১ what does it say?