চলমান টি২০ ক্রিকেট বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওয়েস্ট-ইন্ডিজের কাছে ভারত হেরে যাবার পর শুনি প্রচন্ড চিৎকার, উল্লাসধ্বনি; বারান্দা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি, ভারত হেরে যাওয়ায় রাস্তায় নেমে মানুষজন উল্লাস করছে।
নিশ্চিতভাবে এটি ‘ভারত-বিদ্বেষ’; এই বিদ্বেষের পিছনে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ নেই, আছে ‘বাঙালির মুসলিম জাতীয়তাবাদ তথা সাম্প্রদায়িকতা’। ভারতীয়দের প্রতি এই ঘৃণার উৎস হলো ধর্মীয় পার্থক্য।
‘ভারত-বিরোধিতা’ ও ‘ভারত-বিদ্বেষ’ ভিন্ন বিষয়; ঠিক তেমনি ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ ও ‘বাঙালির মুসলিম জাতীয়তাবাদ’ ভিন্ন বিষয়; ‘বাঙালির মুসলিম জাতীয়তাবাদ’ হলো সাম্প্রদায়িকতা।
বেশ কয়েক বছর আগে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অবৈধভাবে সীমান্ত পার হওয়া বাংলাদেশিদের বিএসএফের হাতে হত্যা-নির্যাতনের ঘটনায় প্রতিবাদ করেছিলাম।
সেই প্রতিবাদের ভাষাও মাঝে মাঝে কড়া ছিল।
সচলায়তন হতে ভারতীয় পণ্য বয়কটের আহবানেও অংশগ্রহণ করেছিলাম।
এসবই ছিল নির্দিষ্ট ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে ‘ভারত-বিরোধিতা’; আমাদের প্রতিবাদের ভাষা কিছু কিছু ক্ষেত্রে কড়া ছিল কিন্তু কোন অবস্থাতেই তাতে ‘ভারত-বিদ্বেষ’ ছিল না।
সীমান্তে হত্যার প্রতিবাদে আমাদের মনোবল যুগিয়েছিল ‘মানবিকতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ’।
‘বাঙালির মুসলিম জাতীয়তাবাদের’ উন্মেষের চুড়ান্ত ফলাফল হিসেবে ১৯৪৭-এ পূর্ব-বঙ্গ পাকিস্তানের অংশ হয়।
পরবর্তীতে ধর্মীয় এই জাতীয়তাবাদ অসাড়, ব্যর্থ ও ভুল বলে প্রমাণিত হয়। ফলাফল হিসেবে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদের’ উত্থান, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ভারত মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের প্রতি অকৃত্রিম বন্ধুত্বের প্রমাণ রেখেছে, সত্যি বলতে- ভারতের সহায়তা না পেলে আমাদের স্বাধীনতার জন্য আরো বেশি মূল্য দিতে হতো এবং মুক্তিযুদ্ধ দীর্ঘায়িত হতো।
স্বাধীন-সার্বভৌম দেশগুলোর মাঝে সাধারণতঃ যেধরণের সম্পর্ক বিদ্যমান থাকতে দেখা যায়, যাকে স্বাভাবিক সম্পর্ক বলে, ভারতের সাথে সেধরণের রাজনৈতিক সম্পর্ক স্বাধীন হবার পর বাংলাদেশের সব সময়ই ছিল।
সীমান্ত ও বাঁধজনিত সমস্যাগুলো প্রতিবেশী অনেক দেশেই দেখা যায় কিন্তু তারপরও বৃহত্তর অর্থে রাজনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক থাকে।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আমদানি বাণিজ্যের অংশীদার হলো ভারত। বাংলাদেশের মোট আমদানির প্রায় ১৫% ভারতের সাথে। এই চিত্রটি বাংলাদেশের সাড়ে চার দশকের ইতিহাসে প্রায় সব সময়ই ছিল।
বিষয়ভিত্তিক ইস্যুতে (যেমন, সীমান্তে হত্যা ও বাঁধ ইস্যু) ‘ভারত-বিরোধিতা’ রাজনৈতিক দিক হতে স্বাভাবিক ঘটনা কিন্তু ‘ভারত-বিদ্বেষীতা’ স্বাভাবিক ঘটনা নয়। বিদ্বেষ বা ঘৃণা কখনই স্বাভাবিক ঘটনা নয়। সত্যি বলতে ভারত রাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের এমন কোন ঘটনা নেই যে ভারতের প্রতি এমন ঘৃণার জন্ম হতে পারে।
তাহলে, এই ভারত-বিদ্বেষের কারন কি?
এই প্রশ্নের উত্তর হিসেবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়- ‘বাঙালির মুসলিম জাতীয়তাবাদ’।
‘বাঙালির মুসলিম জাতীয়তাবাদের’ কারনে মুসলমান ধর্মে বিশ্বাসী বাঙালিরা ভারতকে হিন্দুর রাষ্ট্র ভাবতে পছন্দ করে।
যদিও ভারত সাংবিধানিকভাবে সেক্যুলার ও বহুধর্মের মানুষের রাষ্ট্র এবং হিন্দুত্ববাদীদের একক প্রাধান্য নেই; তারপরও মুসলমান ধর্মে বিশ্বাসী বাঙালিরা ভারতকে হিন্দুর দেশ ভাবে।
‘বাঙালির মুসলিম জাতীয়তাবাদের’ শিক্ষা এতটাই বোধশূণ্য যে, মুসলমান ধর্মে বিশ্বাসী বাঙালিদের একটি বড় অংশ একাত্তরে বর্বরতার চুড়ান্ত নজির রেখে যাবার পরও নিপীড়ক পাকিস্তানকে আপন ভাবতে পারে।
মূলতঃ ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদ তথা সাম্প্রদায়িকতার মূল দৈন্যতা এখানেই। ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদ কখনোই মনুষ্যত্বের নীতি মেনে চলতে পারে না; এই এধরণের জাতীয়তাবাদ একটি নৃতাত্ত্বিক জাতির মধ্যেই শ্রেণীবিভেদ সৃষ্টি করে। উগ্রজাতীয়তাবাদ ও ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদ দুটোই বিষবৃক্ষের বিষফল।
ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদ কখনোই কোন সুফল বয়ে আনতে পারে না। বর্তমান পৃথিবীর বাস্তবতায় ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদ অসাড় বিষয়। একত্রিত পাকিস্তানের অযোগ্যতা ও অবসান এর একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
সাধারণতঃ নিপীড়ন, বঞ্চনা হতে মুক্তি ও অন্যায়ের প্রতিবাদ হতে সুস্থ জাতীয়তাবাদের ধারা সৃষ্টি হয়। কিন্তু একটি সম্প্রদায় বা জাতি যখন অন্যদের উপর নিজেদের সুপিরিয়রিটি প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তা কোনভাবেই জাতীয়তাবাদের সুস্থধারা নয়; এগুলো হলো সাম্প্রদায়িকতা বা ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদ ও উগ্রজাতীয়তাবাদ।
এই সাম্প্রদায়িকতা বা ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদে আক্রান্ত বাংলাদেশের জনগণ; স্রেফ ধর্মীয় কারনে ভারতের বিরুদ্ধে আমাদের তীব্র ঘৃণা ও বিদ্বেষ প্রকাশ পায় এবং প্রাত্যাহিক জীবনাচরণ ও খেলাধুলোর মধ্য দিয়ে এর নগ্ন বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ভারতের প্রতি চরমদ্বেষ ও পাকিস্তানের প্রতি চরমপ্রীতি আমাদের এই জনপদের ধর্মভিত্তিক তথা সাম্প্রদায়িকতা আক্রান্ত রুগ্ন চিন্তাভাবনার বহিঃপ্রকাশ।
পাকিস্তান বাংলাদেশকে নিজেদের করায়াত্তে রাখার জন্য ধর্মীয় কারনে ও জাতিগত ঘৃণা হতে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের কম পক্ষে ত্রিশ লক্ষ মানুষ হত্যা করেছিল, পাঁচ লক্ষ নারীকে নির্যাতন করেছিল, উদ্বাস্তু হয়েছিল এক কোটি মানুষ, ধ্বংস করেছিল পুরো জনপদ। স্বাভাবিক কারনে পাকিস্তানীদের প্রতি দূরত্ব অনুভব করার কথা বাঙালিদের কিন্তু বাস্তবে ব্যাপারটি হয়ে গেলো উল্টো; শুধুমাত্র ধর্মে মিল থাকার কারনে বাংলাদেশের মানুষরা পাকিস্তানের প্রতি আন্তরিকতা অনুভব করে, নিপীড়কের প্রতি ভালোবাসা অনুভব করে।
অন্যদিকে ভারতের সাথে আজ পর্যন্ত আমাদের ধর্তব্যে আনার মত বা শত্রুতা সৃষ্টির মত সংঘাত বা এই ধরণের কোন ঘটনা ঘটেনি বরং মুক্তিযুদ্ধে তাদের অবদান অপরিসীম ও স্বাধীন বাংলাদেশে তারা আমাদের বাণিজ্য অংশীদার। তারপরও শুধুমাত্র বাঙালি সাম্প্রদায়িক মনোভাবের কারনে ভারতের প্রতি বাংলাদেশের একটি বড় অংশের মানুষ ঘৃণা পোষণ করে।
এগুলো হলো সাম্প্রদায়িকতা তথা ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদের প্রত্যক্ষ কুফল ও অবশ্যম্ভাবী পরিণতি।
সাম্প্রদায়িকতার তথা ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদের বীজ এই জনপদে বিদ্যমান ছিল; ভারত-বিদ্বেষ পুরোনো ও চর্চিত বিষয়।
মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জনের পর অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে বাংলাদেশের পথ চলা শুরু হয়। কিন্তু জাতি ও রাষ্ট্রের অসাম্প্রদায়িক এই চর্চা বেশিদিন টিকে ছিল না। মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত পক্ষ স্বাধীন বাংলাদেশে নিজেদের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের ফলে নিভু নিভু সাম্প্রদায়িকতার আগুনকে উসকে দেয়। হিন্দু-মুসলিমের পুরোনো শত্রুতাকে পুঁজি করে ভারতকে হিন্দু ও শত্রু রাষ্ট্র আখ্যা দিয়ে সফলভাবে সাম্প্রদায়িকতার বীজ পুনরায় বপন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তিকে দেয়া হয় ‘ভারতের দালাল’ তকমা। এভাবে করে ধর্মীয় আবহে ভারত-বিদ্বেষ সৃষ্টি করে ও বাংলাদেশে ইসলামের ধারক-বাহকরূপে আবির্ভূত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত পক্ষ তথা মুসলিম জাতীয়তাবাদী সাম্পদায়িক অপশক্তি এবং পরিণতিতে বাংলাদেশের জনগণের একটি বড় অংশের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়ে যায়।
আর এই কাজে সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলোকে সরাসরি পৃষ্টপোষকতা করে ‘৭৫ পরবর্তী প্রো-পাকিস্তানি ও ধান্ধাবাজ সরকারগুলো; এছাড়া বামাতি প্রগতিশীল ও অর্থ-ক্ষমতালোভী ধান্ধাবাজদের বড় ভূমিকা আছে; এরা নিজেদের ক্ষমতা ও আর্থিক লাভের জন্য ভারতকে বাংলাদেশের শত্রু হিসেবে উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত-বিদ্বেষের চর্চা শুরু করে।
ভারত-বিদ্বেষের সাথে সাথে এই জনপদের মানুষরা বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে নিজ দেশের হিন্দুদের প্রতিও তীব্র বিদ্বেষ পোষণ করে। পরবর্তীতে অন্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতিও এই বিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়ে।
তাই, ফলশ্রুতিতে দেখা যায়, বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমান জনগণের সাম্প্রদায়িক তথা বাঙালির মুসলিম জাতীয়তাবাদী মানসিকতা ফলে সৃষ্ট সহিংসতার বলি হয়েছে বাংলাদেশের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান-পাহাড়ি-উপজাতি-আদিবাসী-নাস্তিক সহ সকল ভিন্ন মত ও ধর্মের অনুসারীরা, এমনকি মুসলমান সংখ্যালঘু শিয়া, আহমাদি, লাহোরি আহমাদি’র মত সম্প্রদায়গুলো সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানদের সাম্প্রদায়িক আক্রোশের শিকার হয়েছে।
সাম্প্রদায়িক হামলা ও সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষজনিত ঘটনাগুলো বাংলাদেশে নিত্যকার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই, স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে, তবে এথেকে উদ্ধার পাবার উপায় কি?
বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে এই সমস্যার সমাধান হিসেবে নিম্নোক্ত কাজগুলো করা যেতে পারেঃ
১. রাষ্ট্রীয়ভাবে বাধ্যতামূলকভাবে সর্বস্তরে ধর্মনিরপেক্ষতার প্রবর্তন ও চর্চা করা।
২. ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা।
৩. রাজনীতির ধর্মনিরপেক্ষকরণ।
৪. বিজ্ঞান ও মানবিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণ।
৫. জঙ্গিগোষ্টীগুলোর প্রতি কঠোর মনোভাব গ্রহণ ও দমনে অভিযান পরিচালনা করা।
৬. একাত্তরের পরাজিত পক্ষ ও সাম্প্রদায়িক গোষ্টীকে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে বয়কট করা এবং তাদের প্রচার ও প্রসারমূলক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রন করা।
বাঙালিয়ানা, ধর্মনিরপেক্ষতা, সম্পদের সুষম বন্টন ও গণতান্ত্রিক চর্চার প্রত্যয় নিয়ে সাড়ে চার দশক আগে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়।
সাম্প্রদায়িক পক্ষের আগ্রাসন ও ধান্ধাবাজদের নোংরামির কারনে সেই প্রত্যয়গুলো আজ ছিন্নভিন্ন, লন্ডভন্ড; ফলশ্রুতিতে মৃত্যুর দ্বার প্রান্তে বাংলাদেশ।
তারপরও আমরা আশাহত নয়; সমস্যা হলে, সমাধানও থাকে; তাই, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার এই সমস্যার সমাধান আছে, সেই লক্ষ্যে কাজও চলছে।
বর্তমানে চলমান একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করা ও রায় বাস্তবায়ন অসাম্প্রদায়িক ও একাত্তরের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ার পথে অনেক বড় ভূমিকা রাখবে। এবং এর সাথে সাথে উপরে উল্লেখিত ছয় ধারার কর্মপন্থাটিরও বাস্তবায়ন করা জরুরি।
সারকথা হলো, ধর্মনিরপেক্ষ ও বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ বিনির্মান করা না গেলে একাত্তরে লাখো ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই বাংলাদেশের মৃত্যু আসন্ন।
আর বাংলাদেশের মৃত্যু মানে আমাদের অস্তিত্ব ও স্বাভাবিকত্বের অবসান।
তাই, নিজেদের অস্তিত্ব ও স্বাভাবিকত্ব টিকিয়ে রাখতে আমাদেরই এগিয়ে আসতে হবে, রুখে দিতে হবে সাম্প্রদায়িকতা।
Dear Naam Prokashe Onichhuk, If you look at world picture there are jihadist activities in few development countries where job or DOLL money is not a problem. Some of them jihadist are even from school. It is completely political and cultural issue. Extremest are educated, technologically sound and also economically solvent. So think the other way.
লেখাটা পুরা পড়ে শেষ করলাম। কিন্তু ঘুম চোখে সব অনুধাবন করতে পারলামনা। আমি একটি বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে শুরু করতে চাই।
প্রবাসে আমার রুমমেট (এখানে বাসা শেয়ার করাকে রুমমেট বলে) আমাকে বলল যে, ভাই আমিতো “Gravitational Wave” এর বিষয়ে এত পড়ালেখা করছি যে মোনে কোরতে পারেন আমি এ বিষয়ে পি.এইচ.ডি ডিগ্রী নিয়ে ফেলেছি। এর সর্ম্পকে কিছু জানতে হলে আমার কাছে আসিয়েন। আমি আপনাকে সাহায্য করব। এর পড়ে সে সেই তত্ত্ব আমার অন্য এক রুমমেটকে বুঝানো শুরু করল। লক্ষ্য করলাম দুই জন খুব মনযোগ দিয়ে সেই তত্ত্বে মজে আছে। আমি একটু মজা করার জন্য তাদের প্রশ্ন করলাম যে, “আচ্ছা সূর্য যদি কোনদিন হারিয়ে যায় তবে তখন পৃথিবীর কি হবে?” এটা কি এই তত্ত্ব দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়। আমার এ প্রশ্নটি শুনে তাদের প্রতিক্রিয়া হল যে কই আমরা দুই “Black hole” নিয়ে পড়ে আছি। এদের তরঙ্গ নিয়ে কথা বলতেছি আর আপনি আসছেন পৃথিবী আর সূর্য নিয়ে।
এখানে এই গল্প বলার একটি কারন ও আছে। এখানে পড়াশুনা করতে এসে কখনো মনে হয়নি যে আমাকে ধর্মের কারনে কোন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হবে। কারন এরা সবাই নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত। সবাই সবার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ব্যস্ত থাকে। অন্য করো দিকে চোখ দেবার সময় কোথায়। আর একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম যে, বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করার আগে আমার ল্যাবমেটরা ২/৩ জায়গাতে জব অফার পেয়ে গেছে। পরীক্ষা শেষে জয়েন্ট করবে।
@ লেখক:- সাম্প্রদায়িক হামলা ও সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষজনিত ঘটনাগুলো বাংলাদেশে নিত্যকার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই, স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে, তবে এথেকে উদ্ধার পাবার উপায় কি?
বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে এই সমস্যার সমাধান হিসেবে নিম্নোক্ত কাজগুলো করা যেতে পারেঃ
১. রাষ্ট্রীয়ভাবে বাধ্যতামূলকভাবে সর্বস্তরে ধর্মনিরপেক্ষতার প্রবর্তন ও চর্চা করা।
২. ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা।
৩. রাজনীতির ধর্মনিরপেক্ষকরণ।
৪. বিজ্ঞান ও মানবিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণ।
৫. জঙ্গিগোষ্টীগুলোর প্রতি কঠোর মনোভাব গ্রহণ ও দমনে অভিযান পরিচালনা করা।
৬. একাত্তরের পরাজিত পক্ষ ও সাম্প্রদায়িক গোষ্টীকে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে বয়কট করা এবং তাদের প্রচার ও প্রসারমূলক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রন করা।
আমার মনে হয় আপনি মূল জিনিসটাকে আনুধাবন করতে পারছেন না। আমাদের দেশে বর্তমানে শিক্ষিতের হার বেশি হলেও পযার্প্ত পরিমানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়নি। আর আপনি যত ই সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ এর প্রভাব বিস্তার করেন না কেন, মানুষকে কাজে নিয়োজিত করতে না পারলে এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবেই। আপনি যত ই মুক্ত মনার মুখোশ পড়েন না কেন তাতে আর কোন লাভ হবেনা।
অভিজিতদা এর কথা মনে হলে খুব খারাপ লাগে। কারন যে আন্দোলন তিনি শুরু করেছিলেন তা যে এভাবে অন্ধভাবে কোন মানুষ অনুসরন করবে তা তিনি কল্পনাতে ও আনেননি। যদি বুঝতে পড়তেন তাহলে তিনি আপনাদের এ পথে আসার আহবান জানাতেন না। কারন আমার দৃষ্টিতে আমার রুমমেট আর আপনার মধ্যে কোন পার্থক্য খুজে পাইলাম না।
বাংলাদেশের শীর্ষ জঙ্গি সংগঠন জামাত-শিবিরকে আপনার বেকার মনে হয় নাকি!
জামাত-শিবিরের সব সদস্য আর্থিকভাবে নিরাপদ থাকে।
আপনার এই অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারনে মানুষ জঙ্গি হয়, এই থিওরি গ্রহণযোগ্য না।
আর জামাত-শিবির-জঙ্গিরা জেনে বুঝেই জঙ্গি হয়, কোন টাকার লোভে না, দায়িত্ব মনে করেই জঙ্গিপনা করে।
ছোটবেলার একটি গল্প দিয়ে উত্তরটা শুরু করা যাক। এ গল্পটি আমার এক হলের বড়ভাই এর কাছ থেকে শোনা গল্প। ধরুন রাকিব আর রাশেদ দুই ভাই। তারা ভীষন দুষ্ট। পড়ালেখাতে তাদের কোন মনযোগ নেই। তাদের বাবা এসব দেখে তষ্টিত হয়ে একজন গৃহ শিক্ষক নিয়োগ করলেন। তাদের বাবা সদ্য নিয়োগকৃত গৃহ শিক্ষককে তাদের আচরন সর্ম্পকে আগে থেকেই সব জানিয়ে দিলেন । গৃহ শিক্ষক ও তাদেরকে সঠিক পথে নিয়ে আসার জন্য সবচেষ্ঠা করলেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হলনা। এদিকে মাস শেষ হতে চলল। একদিন শিক্ষক তাদের নিয়ে একটি আম বাগানে গিয়ে কিছু আম চুরি করল। এতে করে দুই ভাই ব্যাপক বিনোদন পাইল। যদিও তাদের আম বাগানের দারোয়ানের দৌড়ানী খাইতে হিছিল। যাই হোক। কিছু আম তো নিজের সাথে আনা গেল। তো মাস্টার মশাই সব আম গুলোকে তিন জনের মধ্যে ভাগ করার জন্য রাশেরকে বললেন। রাশেদ তার কথা মত ভাগ করা শুরু করল। কি পাশে থেকে তার ভাই রাকিব বলল ভাই করিস না, স্যার তোকে অংক করানো শিক্ষাচ্ছে।
@ লেখক:- আপনি আমার কথার মর্মটা অনুধাবন করতে পারেননি এতো বোকা লোক আপনি নন। এ ব্লগে যারা লেখে তাদের কিছু যোগ্যতা অবশ্য ই আছে। কিন্তু স্বভাবের কারনে না বুঝার ভান করাটা ঠিক বোধগম্য হলনা। আমরা যদি দেশের শতকরা ৬০ ভাগ মানুষকে কর্মজীবী করে তোলতে পারি তবে আর যাই হোক, ধর্ম নিয়ে অত মাতামাতি হবেনা। সামাজিক নিরাপত্তার নামে গোলটেবিল মনে হয় না তখন আর লাগবে। আর চিৎকার করে বলতে হবেনা যে কোন নাগরিক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আসল কথা হল গোটা জাতিকে কর্মমুখী করে তোলতে হবে। এটা সম্ভব হলে আর নাস্তিক/আস্তিক এর বিরোধ লাগবে বলে মনে হয় না।
অভিজিজ দা আজকে দুঃখ পেত একারনে যে, তার নাম ব্যবহার করে কিছু মানুষ নিজেদের অন্নসংস্থানের ব্যবস্থা করার চিন্তা করছে। এরা না বুঝে মুক্ত ভাবে চিন্তা করতে না বুঝে বিজ্ঞান। এদের কাছে বিজ্ঞান হল আপেল গাছের নিচে বসে থাকব আর আপেল মাথার উপর পড়বে আর আমি মহান একজন হয়ে যাব। পৃথিবীটা এতো সহজ না। কথায় কথায় জামাত-শিবির-জঙ্গি নিয়ে আসা এখন মনে হয় সবার অ্ভ্যাস হয়ে দাড়িয়েছে। আমার মনে হয় গল্পের রাকিব আর আপনার মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নাই।
যদি রাজনিতিকভাবে চিন্তা করেন তাহলে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ। আর সাধারন মানুষ হিসেবে চিন্তা করেন বিদ্বেষি হয়ে উঠার অনেক কারন আছে।আপনার শুরুটা ছিল খেলা নিয়া।শেষ করলেন ধর্ম দিয়া।লেখা পডে মনে হল ধর্ম নিয়ে আপনার ভিতরে এক প্রকারের অসাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ আছে।মুক্ত চিন্তা করেন,ব্যপারটা ক্লিয়ার হয়ে যাবেন।
বিরোধিতা ও বিদ্বেষ ব্যাখ্যাটি বহুল প্রচার প্রয়োজন। বহু শিক্ষিত ব্যক্তিত্ব এবারের টি ২০ ক্রিকেট নিয়ে মনের প্রকাশ গুলিয়ে ফেলেছেন।
ঠিক বলেছেন
যে ধর্মীয় উন্মাদনায় একটা ছেলে তার জন্মদাত্রী মাকে হত্যা পর্যন্ত করতে পারে সেখানে ধর্মীয় কারণে ভারতের বিরুদ্ধাচারন স্বাভাবিক পর্যায়ে পড়ে।
আর কত?
এটাই দুখের বিষয়.. আসল বন্ধু চিনতে সবাই ভুল করে…
:good:
ফেলানির নামটা সম্মানের সাথে উচ্চারন করা উচিত ছিল, এ সরকারের পুলিশি হত্যা ও গুমের সাথে ভারতের যোগসূত্র প্রমানিত সত্য ।
বাংলাদেশের এক শ্রেনীর ধর্ম ব্যবসায়ী,স্বাধীনতা বিরোধী চক্র কোন সময়ই বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারেনি।কিন্তু তারাও বিশ্বাস করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পেছনে ভারতের ভূমিকা অনিস্বীকার্য। যে কারনে ভারতের ভারতের প্রতি তাদের সব সময়ই প্রচন্ড বিদ্ধেশ ছিল এবং এখনও আছে। তারা সব সময় চায় বাংলাদেশকে ভারতের মুখোমুখি দাড় করাতে। আর এ কাজেও তারা ব্যবহার করে তাদের চিরাচরিত সবচেয়ে বড় অস্ত্র ধর্ম।