গত ৪ঠা সেপ্টেম্বর নাকি ছিল বিশ্ব হিজাব দিবস ছিল। জানা ছিল না অনেক পজিটিভ ডে এর সঙ্গে যে নেগেটিভ ডে গুলিও আজকাল পালিত হয়। মনে মনে ভাবলাম পুরুষতান্ত্রিক চিন্তাভাবনার জয় হোক। হুম! হিজাব মানে হলো নারীকে বস্তা বন্ধী করার সু-কৌশল। পিতৃ-তান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা যখন থেকে শুরু হলো তখন থেকেই পৃথিবীর সু-কৌশলী পুরুষরা নারীকে কিভাবে চার দেওয়ালে আটকে রাখা যায় তার সু-কৌশল চর্চা শুরু করলো। কৃষিভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থায় যেমন সম্পদদের মালিকানা প্রয়োজন হলো তেমনি নারীরও মালিকানার প্রয়োজন হলো। স্বামী কথাটার অর্থ হলো মালিক। এখন কথা হলো হল নারীর মালিকানার কেন দরকার হলো? হুম সেই কৃষির মাধ্যমে বা যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের উত্তরাধিকার রেখে যাওয়া প্রয়োজন তাই পিতৃ-তন্ত্রের মূল লক্ষই হল নিজের পিতৃত্বকে সুনিশ্চিত করা। কারণ সন্তান সৃষ্টি প্রক্রিয়া যেহেতু নারীর অভ্যন্তরে চলে তাই পুরুষ তার পিতৃত্ব নিয়ে নিশ্চিত হতে পারে না। নারীর প্রতি সন্দেহের একটা দৃষ্টি থেকে যায় তাই একমাত্র পথ হলো তাকে বন্দি করো আর নিজের সন্তান সুনিশ্চিত করো। সত্য মিথ্যা বলতে পারবো একবার আমার এক কার্লচারাল সাইকোলজিস্ট বন্ধুর কাছ থেকে শুনেছিলাম বিভিন্ন প্রাচীন গুহাতে নাকি এমন নারী কঙ্কাল পাওয়া গেছে যারা বাধা ছিল। তা থেকে প্রমাণ হয় পুরুষালী জেলাসিই এখানে কাজ করেছে। এমন কি আজকাল যে নারীর হাতে চুড়ি দেখা যায় তা সেই আদিম শৃঙ্খলের বিবর্তনীয় রূপ। যাক এই ঘটনা সত্যি হোক আর মিথ্যা হোক এটা সত্য যে পুরুষের এই জেলাসি নর-নারীর স্বাভাবিক ভালবাসার সম্পর্ককে নিয়ে আসল মালিক-দাসীর সম্পর্কে। নারীরাও অভিযোজন করতে গিয়ে এই পরিস্থিতির সাথে খাপ খায়ে নিলেন তাই আজও অধিকাংশ নারীর মনোজগতে থাকে একজন সম্পদশালী পুরুষ সঙ্গী হিসাবে ধরা আর সন্তানের জন্ম দেওয়াই তাদের জীবনের মূল লক্ষ্য। বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ পাঠ করলে বোঝা যায় মানুষকে বোকা বানিয়ে ভ্রান্ত-ধারণা দিয়ে কিভাবে মানুষকে শোষণ করার রাস্তা করেছিল কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ (পুরুষ বলাই বঞ্চনীয়)। তেমনি নারীকেও শৃঙ্খলিত করতে পরম ঈশ্বরের বড়ি খাইয়ে ভক্তিতে গদগদ করে শোষণ করার রাস্তা তৈরি করে এক শ্রেণীর স্বার্থান্বেষী পুরুষ। স্বামীই পরম গুরু, স্বামীর সেবা করো তো স্বর্গ বাস করা যাবে এমনই অনেক বাণী ধর্মগ্রন্থে ঈশ্বর, আল্লা, গডের বানী বলে চালানো হয়েছে আরও পরিষ্কার করে বলি লক্ষ্য করুন এইগুলি কি পরম করুণাময় ঈশ্বরের বানী নাকি পুরুষের স্বার্থে তৈরি করা তাদের নিজস্ব বানী? আপনারাই পরিষ্কার বোঝতে পারবেন।
*পুত্র-কন্যার সামনে স্বামী উপপত্নী আনা বা বেশ্যাগমন করতে পারবে। কিন্তু স্ত্রীর সামান্য পদস্খলনে সমাজ কঠোর শাস্তি দিবে। (তৈত্তরীয় সংহিতা ৬/৫/৮/২)
বাহ! বুঝুন ঈশ্বর বলে-দিয়েছেন স্বামী যা খুশি করতে পারবে কিন্তু স্ত্রী সামান্য অন্যায়ও সমাজ মানতে পারবে না। নারীর পায়ে তো বেড়ি পরানো হল কিন্তু তাতে পুরুষ যদি ফেঁসে যায় তার জন্য রাস্তা পরিষ্কার রাখা হয়েছে।
*সে নারী উত্তম যে পুত্রসন্তানের জন্ম দেয় এবং স্বামীর কথার উপর কথা বলে না। (ঐত্তরীয় ব্রাক্ষণ ৩/২৪/২৭)
হ্যাঁ যেহেতু সমাজে পুত্র সন্তানকে বংশ রক্ষক হিসাবে ধরা হয় তাই স্ত্রীর পুত্র সন্তান জন্ম দেওয়া বাধ্যতামূলক তাও আবার আপস্তম্ভ ধর্মসূত্রতে বলা হয়েছে ১২ বৎসরের মধ্যে পুত্র সন্তান না জন্মালে সেই স্ত্রীকে ত্যাগ করা যাবে। দেখুন এই সব নাকি ঈশ্বরের বাণী তাহলে তিনি কন্যা সন্তানের জন্ম কেন দেন? যদি সে এতই নিকৃষ্ট হয়। আর হ্যাঁ স্বামীর উপর কথা বলা যাবে না। সেই স্বামী যতই অপদার্থ হোক। সব কিছুই বিনা দ্বিধায় মেনে নিতে হবে। হায়রে নৈতিকতা!
*লাঠি দিয়ে মেরে স্ত্রীকে দুর্বল করা উচিত যেন তার শরীরের উপর কোন অধিকার না থাকে (শতপথ ব্রাক্ষণ ৪/৪/২/১৩)
স্ত্রীর শরীরটাও তো তার নিজের নয়। আসলে নারীরা কি কোন প্রাণী? এরা তো একটা বস্তু তাই বস্তুকে তো যা খুশি তাই করা যায় তাই না?
এমন উদাহরণ প্রচুর দেওয়া যাবে হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ থেকে উদাহরণ তুলে আর আমার লেখাকে মহাভারত করতে চাই না।
এবার দেখি কোরান কি বলছে –
* “ নারী যদি পুরুষের অবাধ্য হয়, যদি নারী বিদ্রোহ করে, তাদেরকে প্রথমে বুঝাও, তাতে যদি কাজ না হয় তাহলে তোমার বিছানায় আসতে নিষেধ করো, তাতেও যদি বশ না মানে, তাদেরকে প্রহার করো। (সুরা ৪, নিসা, আয়াত ৩৪)
কিন্তু মহান আল্লাহতালা স্ত্রীকে প্রহার করার কথা বললেও অপদার্থ স্বামী , অবাধ্য স্বামীকে প্রহার করার কথা কেন বলেননি?
* “পুরুষ নারীর কর্তা ও রক্ষক। আল্লাহ একে অপরের ওপর কর্তৃত্ব দান করেছেন। যেহেতু পুরুষ তার উপার্জনের কিছু অংশ নারীর জন্য খরচ করে তাই নারীকে পুরুষের বাধ্য থাকা উচিৎ। আর তারাই উত্তম নারী যারা তাদের সতীত্ব হেফাজত করে চলে।” (সুরা ৪, নিসা, আয়াত ৩৪)
হুম বলিহারি যুক্তি পুরুষের গায়ের জোর যেহেতু নারীর চেয়ে বেশী তাই পুরুষ নারীর উপর কর্তৃত্ব করবে। তবে তো মানুষের থেকে গায়ে জোর বেশী অনেক প্রাণী আছে যেমন, বাঘ, ভাল্লুক, হাতী, সিংহ এরা মানুষের উপর কর্তৃত্ব করেছে না কেন? আর নারীরা কি উপার্জন করতে পারেন না?
*নারীরা তোমাদের শস্যক্ষেত্র। তোমাদের শস্যক্ষেত্রে যখন যেমন খুশি গমন করো।
আশ্চর্য লাগে এতো সাম্যবাদী দয়ালু ঈশ্বর আল্লা পুরুষকে নারীর প্রতি যৌন-যন্ত্র আর সন্তান তৈরির উৎস ভাবতে বলছেন।
দেখা যাক বাইবেলে কিভাবে বলা হয়েছে-
কিন্তু আমি তোমাকে জানাচ্ছি যে, প্রত্যেক পুরুষের নেতা হচ্ছে খ্রিস্ট, এবং প্রত্যেক নারীর নেতা হচ্ছে পুরুষ, এবং খ্রিস্টের নেতা হচ্ছে ঈশ্বর।
(I Corinthians 11:3)
পুরুষকে যদি ঈশ্বর এইভাবে তৈরি করেন যে নারীর নেতা হবে পুরুষ তাহলে মাতৃ-তান্ত্রিক সমাজে নারী পুরুষের নেতা কি করে হচ্ছে?
পুরুষের জন্যই নারী সৃষ্টি করা হয়েছে।
(I Corinthians 11:8-9)
হায়রে! তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে। পুরুষ-বাদী ঈশ্বর নারীর জন্য আর পুরুষের কেন সৃষ্টি করবেন?
উপরের উদাহরণ থেকে বুঝলেন তো ধর্মগ্রন্থগুলি ঈশ্বরের বাণী নাকি পুরুষের তৈরি বাণী।
এবার আসি পর্দা প্রথা বা হিজাবের কথায় – আমি আগেই বলেছি হিজাব পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার ফসল। পুরুষের জেলাসী থেকেই পর্দা প্রথার সৃষ্টি। ধর্মগ্রন্থ যদি ঘাঁটানো হয় তবে দেখা যায় বাইবেলে পর্দা প্রথার কথা বলা আছে। আবার সেই বাইবেল থেকে মুসলিমদের কোরানে। কিন্তু হিন্দু কোন ধর্মগ্রন্থে এমন বলা নেই তবে ধরা হয় চতুর্দশ শতাব্দী থেকে হিন্দুদের মধ্যেও এই প্রথা চলে আসে যা পরবর্তীতে আলোচনা করবো। তার আগে দেখি বাইবেল পর্দা প্রথা সম্পর্কে কি বলছে?
খ্রীষ্টান রমণীর হিজাব
কোন মহিলা খালি মাথায় ইবাদত বন্দেগী করলে তার মাথাকে অপদস্থ করা হবে। মাথাকে অপদস্থ করা মানে মাথার চুল কামিয়ে দেয়া। অতএব,কোন মহিলা মাথা ঢেকে না রাখলে তার মাথার চুল কামিয়ে দিতে হবে। যদি কোন মহিলার জন্য তার মাথার চুল কামিয়ে ফেলা অপমানজনক মনে হয়;তাহলে সে যেন তার মাথা ঢেকে রাখে। আর পুরুষের মাথা স্রষ্টার প্রতিচ্ছবি হওয়ার কারণে মাথা ঢেকে রাখা উচিত নয়। মহিলারা স্বামীর সন্মানের প্রতিচ্ছবি। কারণ,পুরুষ মহিলা থেকে নয় বরং মহিলা পুরুষ থেকে। পুরুষ মহিলার জন্য সৃজিত হয় নাই বরং মহিলা পুরুষের জন্য সৃজিত হয়েছে। তাই, ফেরেশতার খাতিরেই তার মাথার উপরে তার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।(I Corinthians 11:3-10)
এখান থেকে পরিষ্কার বোঝা যায় এক সময় নারীকে প্রায় জোর করে হিজাব পরতে বাধ্য করা হয়েছিল। যা পরবর্তীতে সংস্কৃতির একটা অঙ্গ হয়ে দাড়ায়। একটা কথা অতি মূল্যবান যে সমাজের একটা অংশ থেকে যদি পচন শুরু হয় তা সমস্ত বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
কোরানে তেমন পরিষ্কার ভাবে পর্দার কথা না থাকলেও বিভিন্ন হাদিসে নারীদের সম্পূর্ণ পর্দার কথা পাওয়া যায়। কোরানে এই আয়াতে যা একটু পাওয়া যায় –
বিশ্বাসী নারীদিগকে তাহাদের দৃষ্টি অবনত করিতে ও লজ্জা-স্থান সংরক্ষণ করিতে বলুন; এবং তাহারা যেন তাহাদের রূপ ও সজ্জার যাহা প্রকাশ্য তাহাই প্রকাশ রাখে, এবং তাহাদের বক্ষদেশের উপর চাদর টানিয়া দেয়, এবং তাহাদের রূপ ও আভরণ, তাহাদের নিজ স্বামী অথবা পিতা অথবা স্বামীর পিতা, অথবা তাহাদের পুত্র অথবা স্বামীর পুত্র অথবা তাহাদের ভ্রাতা বা ভ্রাতার পুত্র অথবা ভগ্নীর পুত্র অথবা তাহাদের আপন নারী বা দাসী বা কামনাহীন পুরুষ অথবা যে সমস্ত শিশু নারীর নগ্নতা সম্বন্ধে অজ্ঞ তাহাদের ব্যতীত অন্য কাহারও সমক্ষে প্রকাশ না করে। এবং তাহারা যেন তাহাদের গুপ্ত আভরণ প্রকাশ করিবার জন্য মাটিতে পা দাপিয়া না চলে। এবং হে বিশ্বাসীগণ! সমবেত ভাবে আল্লাহর প্রতি নিবদ্ধ হও, যাহাতে তোমরা সফলকাম হও। (২৪:৩১)
সহীহ বুখারী হযরত আয়েশা এর বর্ণনা ঃ তিনি ইফ্কের ঘটনা বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন:
সাফওয়ান ইবনে মুয়াত্তাল (রাযি.) পর্দা ফরজ হওয়ার পূর্বে আমাকে দেখেছেন, তাই আমাকে চিনতে পেরে ”ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন”পড়েছেন। তা শুনে আমি জেগে উঠি, অতঃপর আমার চাদর দ্বারা আমার চেহারা ঢেকে নিই। (Sahih Bukhari 5:59:462)
সাফিয়া বিনত সাইবা দ্বারা বর্ণিত :- আয়েশা বলতেন, যখন আয়াত “নারীদের উচিৎ হবে তাদের বুক এবং গলা পর্দা দ্বারা আবৃত রাখা” নাজিল হয়, নারীরা তাদের কোমরের অতিরিক্ত কাপড়ের টুকরো কেটে মুখও ঢেকে রাখতো। (Sahih Bukhari 6:60:282)
উপরিউক্ত হাদিস থেকে পরিষ্কার যে একটি নারীকে আপাদমস্তক ঢেকে রাখতে হবে।
অনেকেই বলেন এর কারণ হলো পুরুষের কুদৃষ্টি থেকে নারীকে বাচাতে এই পর্দা প্রথা। কিন্তু পুরুষের কুদৃষ্টি থেকে বাচাতে নাকি পুরুষের জেলসী থেকে আপাদমস্তক ঢাকার বিধান বিরাট প্রশ্ন থেকে যায়।
আর এটা কি পুরুষের জন্য লজ্জাজনক নয়? পুরুষরা কি নারীকে শুধু কুদৃষ্টির চোখে দেখে?
আর যদি পুরুষরা কুদৃষ্টির চোখে দেখেই তবে নারী কেন বস্তায় বন্ধি হবে? এটা তো পুরুষের দোষ তাই না? ধরুন আমাদের পাড়াতে একটা পাগলা কুকুর আসল তো সেই কুকুরটাকে আমরা আটকাতে যাবো নাকি নিজেরাই খাচাতে ঢুকে যাবো নিরাপত্তার জন্য?
যাক প্রশ্নগুলি পাঠকদের কাছে থাকলো।
মুসলিম নারীদের বোরকা
এবার দেখি হিন্দুদের মধ্যে কিভাবে পর্দা প্রথা ঢুকলো কারণ আমার জানা মতে কোন হিন্দু ধর্মে পর্দার বিধান নেই।
হিন্দু নারীদের মধ্যে যে পর্দা প্রচলিত তাকে বাংলায় বলে ঘোমটা আর হিন্দিতে ঘোঁঘট। এটা শাড়ীকে টেনে মাথা এবং মুখমণ্ডল ঢেকে রাখা হয়। তবে বাঙ্গালী অঞ্চলগুলিতে সাধারণত মাথা ঢেকে রাখা হয়।
হিন্দু নারীদের ঘোমটা
এবার প্রশ্ন হলো কি করে হিন্দু ধর্মে পর্দা ঢুকলো? কথিত আছে – চতুর্দশ শতাব্দীতে আলাউদ্দিন খলজি চিতোরে গড়ের রাজা রাণা রতন-সেনের রাজ্য পরিদর্শনে আসেন। খলজিকে যে প্রাসাদের থাকার জন্য দেওয়া হয় তার বিপরীতে ছিল মেয়েদের থাকার প্রসাদ মধ্যখানে একটা সরোবর দুই প্রাসাদকে বিভক্ত রেখেছিল। একদিন সুন্দরী রাণী পদ্মিনীর পর্দা-হীন মুখ সরোবরে জলে আলাউদিন খলজি দেখলেন এবং তার রাণীকে পছন্দ হয়ে গেল। তিনি চিতোর জয় করা এবং রাণীকে বিয়ে করার স্বপ্ন নিয়ে চিতোর গড় থেকে ফিরে গেলেন এবং আবার চিতোর গড় আক্রমণ করলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি রাণীকে পেলেন ঠিকই কিন্তু তা ছিল তার মৃত পোড়া ছাই। রাণী বিধর্মী পুরুষের কাছে আত্মসমর্পণ না করে মৃত্যুকে বেছে নিলেন। তারপর থেকেই এই অঞ্চলের মেয়েদের মধ্যে পর্দা প্রথা প্রচলন মুসলিম পরিদর্শকদের হাত থেকে বাচতে এবং ধীরে ধীরে এই পর্দা প্রথা প্রায় সারা ভারতের পরম্পরা হয়ে যায়।
এত গেল ধর্মগ্রন্থও ইতিহাসে কথা। বর্তমানেও নারী পর্দা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক চলছে। অনেক মুসলিম প্রধান দেশ সহ অনেক দেশই নারীদের পর্দা প্রথা আইন করে বন্ধ করছে। উপসংহারে আমিও বলি পর্দা প্রথা কোন সমস্যার সমাধান নয়। সমাধান মানসিকতা পরিবর্তনে। আসুন আমরা পাগলা কুকুরের ভয়ে নিজেরা খাঁচাতে না ঢুকে পাগলা কুকুরকে বন্ধী করি। তবে আমরা শোভন-শালী কাপড় নিশ্চয়ই পরবো তবে যা আমাদের জন্য স্বস্তিকর।
হিজাব দিবস উপলক্ষ্যে আমার এই ছোট প্রয়াস। ভাল লাগা মন্দ লাগা পাঠকদের কাছে।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সেই ফেসবুক বন্ধুদের প্রতি যারা এই লেখায় আমাকে তথ্য দিয়ে সাহায্য করেছেন।
ভালো লেগেছে কথাটা……।
আপনি লিখেছেন “তবে আমরা শোভন-শালী কাপড় নিশ্চয়ই পরবো তবে যা আমাদের জন্য স্বস্তিকর।” এই শালীন পোশাক বলতে আপনি কোন ধরনের পোশাক বুঝিয়েছেন যদি দয়া করে বলতেন ।
@মাসুদ রানা, এই প্রশ্নটা আসবে আমি জানতাম। দেখুন এই লেখাটা নির্দ্দিষ্ট কারো জন্য লেখা নয়। আমার যা বক্তব্য রাখার রেখে দিয়েছি, দিয়েও শেষে একটু চেনা গোবরের দোষ রেখেছি। কে রেখেছি? আমি যে সমাজে আছি এটা অতন্ত রক্ষনশীল। এখানে এমন মানুষ খুজে পাওয়া স্বাধ্য যে ব্যাক্তিস্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। আমার অনেক স্থানীয় বন্ধু-বান্ধব আছে যারা এই লেখা নিরবে এসে এখানে পড়বে। এখন আমি শেষের এই লাইনটা না লিখলে ওরাই গুজব ছড়াবে। জানিস্ সুমিতটা পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে পুরো বিশ্বাসী, ভারতীয় সংস্কৃতির ধার-ধারে না। ও পুরো গোলায় গেছে। ভারতীয় নারীকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়ার জন্য লেখালেখি করে। কিন্তু ওই লাষ্টে চেনা-গোবরের একটু দোষ রাখায় এখন বলবে সুমিত একটা দারুণ লেখা লেখেছে।
মেয়েদের আবার শালীন কাপড় পরার কথাও বলেছে। কি করবেন চট করে সমাজকে বদলে ফেলা যাবে না একটু কৌশল অবলম্বন করতে হয়।
আমার মূল বক্তব্য কিন্তু ঠিক রেখেছি। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।
@সুমিত দেবনাথ,সুন্দর লিখাটার জন্য ধন্যবাদ।আসলে পোশাক নিয়ে খুব বেশি মাথা না ঘামানোই ভাল। হিজাব খুব কদর্য জিনিস সন্দেহ নেই, কিন্তু তার মানে এই না যে বিকিনি ই নারীকে মুক্তি দিতে পারে।আপনি হয়ত লক্ষ করে থাকবেন যে ব্রাজিলের সমুদ্র সৈকত গুলো তে বিকিনির ঢল।অথচ জাতি হিসাবে ওদের বেশিরভাগই কিন্তু গোঁড়া ক্যাথলিক ই রয়ে গেছে।এই মুহুর্তে উদাহরণ দিতে পারব না কিন্তু নেটে একটা খবর পড়েছিলাম আর তা হল এক বালিকা ( বয়স সম্ভবত ১৩)রেপ ভিক্টিম হয়ে প্রেগন্যান্ট হয়ে গেলে তার মা তার গর্ভপাত করান। আর এতেই চার্চ তাকে একঘরে করে রাখে। এদিকে তথাকথিত শালিন পোশাক পরার ক্ষেত্রে চার্চ বেশ তাগাদা দিলেও কেন জানি আজকাল তেমন বাড়াবাড়ি করছে না।অথচ ভ্রুন রক্ষায় তারা এতোটাই ব্যস্ত যা দেখে মনে হতে পারে যে নপুংসক ঈশ্বর নিজের সৃষ্টিকে নিজে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়ে পুরোহিত দের দায়িত্ব দিয়ে দিয়েছেন ভ্রুণ রক্ষার।কাজেই একটা মেয়ে রেপড হলে আগে চার্চ কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা করার কথা বলে যে ওই রেপিস্টের শুক্রাণু ভিক্টিমের ডিম্বাণু কে উর্বর করে ফেলল কিনা ( এখানে আমার ব্যখায় ভুল থাকলে যে কেউ ধরিয়ে দেবেন দয়া করে ) ,যদি সেটা করে ফেলে তাহলেই সেরেছে ওটাকে জরায়ুর দেয়ালে লাগতে দিতেই হবে।মানে ঈশ্বর নির্ধারন করে দিয়েছেন তার জন্য। কাজেই কোন জরুরী জন্মনিরোধক ব্যবস্থা নাকি তখন হয়ে যায় খুনের সমার্থক!
আর ব্রেন ওয়াশ করা হয় যে,সেই ভ্রুন হত্যা করা মানে নাকি নিজে মা হয়ে বাচ্চাকে মেরে ফেলা। কি শর্বনাশ দেখেছেন?এটা মোটামুটি ভাবে হিজাবী মগজ ধোলাই থেকেও খানিক উপরে!
আপনি উইকি তে দেখতে পারেন, আয়ারল্যান্ডে এখনো গর্ভপাত পুরোপুরি নিষিদ্ধ।এমনকি রেপভিক্টিমদের জন্যও।আমরা কি একে সভ্যতা বলতে পারি?
কাজেই মুক্ত মনের হতে হলেই যে তথাকথিত শালীন তথা মার্জিত কাপড় পরা যাবে না, আর বিকিনি পরলেই যে মুক্ত মনের মানুষ এটা সঠিক কথা না।
কাজেই। আমি আপনার
এই কথার মধ্যে খারাপ কিছুই দেখছিনা। আপনি রক্ষণশীল দৃষ্টিকোন থেকে কথাটা বলেছেন। কাজেই ঠিক আছে এটি।বিকিনি পরা নিয়ে তেমন কিছুই না বলে ভ্রুন রক্ষার জন্য চার্চ যেমন খাবলাখাবলি করে থাকে, আমার মনে হয় না যে তার থেকে জঘন্য আর কিছুই হতে পারে। অন্তত এই দিক দিয়ে এরা মুসলিম দের থেকেও এককাঠি ওপরে। অসভ্য মুসলিম প্রধান বাংলাদেশে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করা নিয়ে এমন কোন আইন নেই, যা কিনা সু সভ্য (?) আয়ারল্যান্ডে আছে।
আমি আসলে বলতে চেয়েছি যে বিকিনি পরা নিয়ে তেমন কিছুই বলেনা অথচ ভ্রুন রক্ষার জন্য চার্চ যেমন খাবলাখাবলি করে থাকে, আমার মনে হয় না যে তার থেকে জঘন্য আর কিছুই হতে পারে।
@অচেনা, আপনার মন্তব্যের সাথে সহমত তবে এমন হতে পারে। সেখানে গর্ভপাত নিয়ে মানুষের মধ্যে একটা বিভ্রান্তি এখনও আছে, কিন্তু বিকিনি নিয়ে নেই। বিকিনি নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় না। ধর্ম যাজকরা খুব চতুর প্রকৃতির হয়, তাই কোথায় ঝোপ বুঝে কোপ মারতে হবে তারা ঠিক জানে। তাই সেই সমাজে কি নিয়ে কথা বললে ধর্মকে টিকিয়ে রাখা যাবে। তাই তারা চিন্তা করে।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য আন্তরিক অভিনন্দন। (Y)
আপনি সম্পূর্ণভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মগ্ৰন্থগুলি পড়ুন। আপনার লেখায় অজস্র ভুল ধারণা আছে।
পর্দা হিজাব আমি ব্যাক্তি স্বাধীনতা হিসেবেই দেখি, কেউই স্বেচ্ছায় বিকিনি পরলে আমার যেমন কোন সমস্যা নেই, কেউ পর্দা হিজাব পরলেও সমস্যা নাই, শুধু প্রচলিত সোশাল নর্ম অনুযায়ী স্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন হলেই হয়।
সমস্যা হয় যখনই যখন দেখি পর্দা হিসেব এসব জোর জবরদস্তিমূলক ভাবে বা ব্রেন ওয়াশিং এর মাধ্যমে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে এবং ধারনা দেওয়া হচ্ছে যারা এসব পরে না তারা পাপী বা আরো জঘন্য এসব।
আরো মেজাজ খারাপ লাগে যখন দেখি যারা পর্দা হিজাব এসব কায়েম করা জীবনের ব্রত হিসেবে নেন তাদের আশেপাশের লোকে আকন্ঠ দূর্নীতি অনাচারে লিপ্ত থাকে সেসব ব্যাপারে ধর্ম কায়েমের ব্যাপারে উদাসীন দেখলে। পর্দা হিজাব আসলে এক ধরনের ধর্মীয় আইডেন্টিটির চিহ্ন হিসেবেই এরা ব্যাবহার করে, তাই এত গুরুত্ব দেয়। এসব কায়েমের উদ্দেস্য নারীর নিরাপত্তা, পুরুষের কুদৃষ্টি থেকে রক্ষা এসব হল অজুহাত মাত্র। এসব নিয়ে বাড়াবাড়ির ফলেই কিছু মুসলমান দেশেও পর্দা হিজাবের কঠোর রেষ্ট্রিকশন দেওয়া হয়েছে।
@আদিল মাহমুদ, হ্যাঁ কে হিজাব পরলো আর কে বিকিনি পরলো এটা তার সম্পূর্ণ ব্যাক্তিগত ব্যাপার ঠিকই। তবে ব্যাপারটা ব্যাক্তিগত না রেখে সার্বজনিন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। তাই আঘাত করতে হবে।
@আদিল মাহমুদ,
ঠিক বলেছেন ভাইয়া। আপনার সাথে আমি পুরোপুরি একমত।
আমি এটা জানিনা ভাইয়া, কোন কোন মুসলিম দেশ এমন আইন করেছে একটু বলবেন কি? তাহলে আমার বুঝতে সুবিধা হত। আসলেই কি কোন মুসলিম দেশ হিজাবের কঠোর রেষ্ট্রিকশন দেওয়া হয়েছে? 😕 যদি হয়েই থাকে তবে বুঝতে হবে যে দেশগুলো কিছুটা হলেও বিকারগ্রস্থ অবস্থা থেকে মুক্তি লাভ করেছে।
@অচেনা,
– এখানে দেখতে পারেন। কিছুদিন আগে খবরে দেখলাম যে বহু বছর পর মিশরের টিভিতে হিজাব পরিহিতা খবর পাঠিকা আবারো এলাঊ করা হয়েছে। হোসনে মোবারকের সময় অলিখিত নিষেধাজ্ঞা ছিল।
@আদিল মাহমুদ, ধন্যবাদ ভাইয়া।
সময় উপযুগি লিখা। আর কত দিন বন্দিকরে রাখবে মেয়েদের ধর্মের খলশে???
@আমিনুল, যতদিন আমি বন্দি হতে চাইবো। ততদিনই আমি বন্দি থাকবো। 🙁
ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।
বেশ বেশ, এবার একটা বিশ্ব বোরখা দিবসও আসুক…
@কৌস্তুভ, আর আসতে বাকি রইল কই? ;-(
বিশ্ব হিজাব দিবস?অত্যন্ত হাস্যকর 😀 ঈশ্বরের কাছে হয়ত তার নিজের তৈরী মানুষের গঠনই পছন্দ হয়নি।তাই তিনি হিজাব নামক জিনিস দিয়ে তার ব্যর্থতা ঢাকতে চেয়েছেন।lol
@সাদিয়া,
চমৎকার মন্তব্য করেছেন! যৌক্তিক!
@সাদিয়া, (Y)
হিন্দু নারীদের ঘোমটা দেয়ার ব্যাপারটা যে মুসলমানদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এসেছে এটা একেবারেই নতুন জানলাম,তবে এটার ব্যাপারে কোন রেফারেন্স দিলে ব্যাপারটা বিশ্বাসে এবং মূল্যয়নে সুবিধা হত।
এবার একটু নিজের মত করে একটা কথা বলি।পর্দা পুরুষশাসিত সমাজের একটা হাতিয়ার একথা নিঃসন্দেহে সত্যি।এমনকি আমি নিজেও পর্দা করতে হবে এমন মতাদর্শী নই।কিন্তু সমস্যাটা হল —
“বর্তমানেও নারী পর্দা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক চলছে। অনেক মুসলিম প্রধান দেশ সহ অনেক দেশই নারীদের পর্দা প্রথা আইন করে বন্ধ করছে।”
আমি কাউকে জোর করে কোন আইন গিলানোকে সঠিক মনে করিনা।আমার মনে হয় একটা মানুষ নিজের ইচ্ছামত চলতে পারে যতক্ষন তা অন্যের ক্ষতির কারন না হয়।কেউ পর্দা করে চললে তা নিশ্চয় অন্য কারো জন্য ক্ষতিকর নয়।আর পর্দা করা যাবেনা এমন আইন করলে তাতো আসলে মধ্যযুগের “পর্দা করতেই হবে” এই নিয়মের ই সমার্থক হয়ে গেল,শেষমেশ তা মানুষের ব্যাক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ,তাইনা??
নিয়নের আলো,
আমি সুমন আনন্দের একটা বই “ভারতের অজানা ইতিহাস” এই বইয়ে ব্যাপারটা পেয়েছিলাম। তাছাড়া এই সাইট থেকে কিছু তথ্য পেতে পারেন – http://goshaenur.blogspot.in/2011/03/veil-as-ghunghat-purdah-hindu-muslim.html
অনেক ক্ষেত্রে আইনের বল প্রয়োগও প্রয়োজন পড়ে। যেমন একটা মাতাল হয়তো কোন চিল্লা চিৎকার করছে না। কাউকে কোন উপদ্রবও করছে না। কিন্তু পুলিশ তাকে পেলে ঠিকই ধরে নেবে। এখানে যদি ব্যাক্তি স্বাধীনতাকে তোলা হয় তাহলে বেমানান লাগবে তাই না? তেমনি সমাজ থেকে অনেক কুসংস্কারকে তুলতেও আইনের বল লাগে। যেমন কিছুদিন আগে আমার এক ফেবু ফ্রেন্ড বলছিল ইউনির্ভারসিটিতে গেলে অনেক বান্ধবীদের হিজাব করার পরামর্শ শুনলে মেজাজ গরম হয়ে যায়। কিন্তু এখানে যদি এই প্রথাকে আইন করে বন্ধ করে দেওয়া হতো তবে কেউ কাউকে হিজাব করার জন্য জোর করত না। অন্ধ পরম্পরায় বিশ্বাসীরা বিতর্ক চালাবেই কিন্তু একটা সময় গিয়ে সব থেমে যাবে। যেমন সতীদাহ বন্ধের পর অনেক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু আজ কেউ এর পক্ষ্যে বলে না। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
@সুমিত দেবনাথ, মাতালের উদাহরণের ক্ষেত্রে বলব,সে যদি মাতাল হয়, সে চিল্লাফাল্লা অথবা নেশার বশে অন্য কোন কাজ না করে তাহলে বুঝার উপায় কি যে সে মাতাল অথবা কোন দোষেই পুলিশ তাকে ধরে নিবে? বোধহয় মদ খাওয়ার অপরাধে পুলিশ তাকে ধরতে পারে বলে মিন করেছেন,কিন্তু এটা কি আদৌ অপরাধ বা অপরাধের তালিকায় পড়া উচিত?এই ধরেন বাসায় বসে কেউ মদ খাচ্ছে কোন মাতালগিরি করা ছাড়াই,এখন কারো থেকে খবর পেয়ে পুলিশ যদি তাকে ধরে নিয়ে যায়,তবে আমার মনে হয়না সেখনে আইনের চর্চা সঠিক উপায়ে চলছে। তবে একটা কথা, মদ খাওয়ার ব্যাপারে আমাদের দেশের নৈতিকতার যে মানদণ্ড তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে সোজা বাংলায় নিজের যা মনে হয় তা বললাম।
আসলে আমার মনে হয় পৃথিবীতে বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষ থাকবেই,তাই সবার ইচ্ছাটাকেই সমান গুরুত্ব না হোক দমনের দৃষ্টিতে না দেখলেই হল।
@সুমিত দেবনাথ, লিঙ্কের জন্য ধন্যবাদ অনেক।
@নিয়নের আলো,
অনেক ক্ষেত্রে অন্যের জন্য ক্ষতির কারন হতে পারে, যেমন বোরখার কারনে অন্য লোকের নিরাপত্তা জনিত সমস্যা হতে পারে। বাংলাদেশেতো এখন বোরখা বা পর্দার আড়ালে অনেক পকেটমারের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে, তাই পর্দাশীন মহিলা দেখলে অনেকেই এখন সন্দেহের চোখে দেখে দুরত্ব বজায় রেখে চলে। কুকর্মকে আড়াল করার একটা মোক্ষম উপায় হলো পর্দা।
@নিয়নের আলো,
আপনার কথার সাথে আমি একমত যে পর্দা করা যাবেনা এমন আইন করলে তা শেষমেশ মানুষের ব্যাক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হবে। কিন্তু সমাজের বৃহত্তর স্বার্থে কি মানুষের ব্যাক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা অনুচিত হবে???
হিন্দু সমাজে যখন “সতীদাহ” প্রথা প্রচলিত ছিল তখন অনেক মহৎ মানুষেরা চেষ্টা করেছিলেন তা বন্ধ করতে কিন্তু পারেন নি। কারণ ঐটা ছিল তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত ধর্মবিশ্বাসী মানুষেরা কখনই গ্রহণ করতে পারে না। কিন্তু এরকম বর্বর প্রথা সমাজে চলতে দেয়া যায় না ভেবে বিশ্বাসীদের অসম্মতিক্রমেও সে প্রথা বন্ধ করতে আইন প্রণয়ন করতে হয়েছিল। এটা ব্যাক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হলেও আইন প্রণয়ন করার ফলে আস্তে আস্তে “সতীদাহ” প্রথা সমাজ থেকে উঠে যায়। কারণ “সতীদাহ” পালন করলে পরকালে পুরস্কার পাবে কিন্তু ইহকালে তো শাস্তি ভোগ করতে হবে, আর ইহকালের এই জীবন সকলের কাছেই খুব গুরুত্বপূর্ণ। তেমনি পর্দা করা যাবেনা এমন আইন না করলে নারীরা কখনও পর্দা থেকে মুক্তি পাবে না। কারণ নারীদেরকে ধর্মের দোহাই দিয়ে পরকালের ভয় দেখিয়ে পর্দার ভিতর আঁটকে রাখা হয়েছে। আর এই ভয়ের কারণে খুব কম নারীরাই ইহকালে মুক্তি ভোগ করার আকাঙ্খা পোষণ করবে।
তাই পর্দা করা যাবেনা এমন আইন করলে তা কখনই মধ্যযুগের “পর্দা করতেই হবে” এই নিয়মের সমার্থক হয়ে যাবে না।
@অপরিচিত,সতীদাহ প্রথায় যাদের দাহ করা হত তাদের এব্যাপারে মত থাকত,এ সম্পর্কে আমি বেশ ভালভাবেই সন্দিহান।দেখুন এখানে সমাজ বা ধর্ম ইচ্ছে করেই তাদের উপর কিছু চাপাচ্ছে যা সে চাইছেনা,যেটা তার ব্যাক্তিগত জীবনের জন্য হুমকি ছিল।কিন্তু পর্দার ব্যাপারটা একরকম নয়।যে মহিলা নিজের ইচ্ছায় পর্দা করে চলছে তাকে আপনি কোন যুক্তিতে বাধা দিবেন?আসলে মেইন পয়েন্ট টা যেটা বলতে চেষ্টা করছি সেটা হল- সবার ব্যাক্তিগত জীবন তার মত করে চলতে দেয়া উচিত যতক্ষন সেটা আমার আপনার জন্য ক্ষতির কারন না হয়।
আখেরে আইনটা প্রনয়ন করতে পারলে হয়তো সেটা আমাদের জন্য ভাল হত,কিন্তু সেটা করার কোন পজিটিভ ওয়ে দেখছিনা।
ভাল থাকবেন।
হিন্দু নারীদের ঘোমটা প্রথা মুসলিম সংস্কৃতি থেকে আসেনি, চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। হিন্দু নারীদের খোলা মুখমন্ডল দেখে মুসলমানরা তাদেরকে অপমান করত, আক্রমণ করত: এসব থেকে বাচবার জন্যই ঘোমটা প্রথার উদ্ভব। এর মধ্যে কোন সংস্কৃতি নেই, আছে শুধু আধিপত্যবাদ।
@মুক্ত, হয়তো তাই! :guli:
[…৪ঠা সেপ্টেম্বর নাকি ছিল বিশ্ব হিজাব দিবস ছিল।]
বিষয়টা অত্যন্ত হাস্যস্কর বটে। তবে প্রশ্ন, এটি কি জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত? নাকি ইসলামের কোন দেশ বা সংগঠনের ঘোষিত?
@কামালউদ্দিন আহমেদ, জামাত-ই-ইসলামী কর্তৃক ঘোষিত। তবে তারা এমন দাবী করছে যে জাতিসংঘ নাকিবিশ্ব হিজাব ডে মেনে নিয়েছে। কিন্তু এমন কোন তথ্য আমার জানা নেই।
একদম খাঁটি কথা।
এত দিনে কুঝলাম,ঘোমটার রহস্য।আসলে ঘোমটা প্রথা যে মুসলিম সংস্কৃতি থেকে আগত তা আমার জানা ছিল না।লেখাটি আকারে ছোট হলেও ভাল লাগায় লেখককে ধন্যবাদ।
@বোকা বলাকা, মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। (F)