১৮৪৮ সালে ইউরোপের নানা জায়গায় বিপ্লব ছড়িয়ে পড়ে। সেই বিপ্লবের বড় ঘটনাগুলোর একটি ছিলো কার্ল মার্ক্স ও ফ্রিডরিখ এঙ্গেল্স লিখিত “কমিউনিস্ট পার্টির ইশতেহার” প্রকাশ। এই ইশতেহারেরই একটি অতিসংক্ষিপ্ত রূপ হলো “জার্মানির কমিউনিস্ট পার্টির দাবিনামা”। ১৮৪৮ সালের মার্চ মাসে প্যারিসের জার্মান প্রবাসী শ্রমিকদের মধ্যে “জার্মানির কমিউনিস্ট পার্টির দাবিনামা”টি প্রথম বিতরণ করা হয়।
তখনকার রাজন্যের দুঃশাসন ও অনাচারের প্রতিক্রিয়া ছিলো এই দাবিনামাটি। কিন্তু এই দাবিনামা কেবলই প্রতিক্রিয়া নয়। মার্ক্সের কাঙ্ক্ষিত কমিউনিজমে পৌঁছানোর লক্ষ্যে একটা পদক্ষেপও ছিলো এটি। শাশ্বত সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভাবনার এটি একটি প্রতিনিধি। এই অর্থে দাবিনামাটি গুরুত্বপূর্ণ। নিচে এর অনুবাদের চেষ্টা করলাম।
“দুনিয়ার মজদুর, এক হও!”
১. সম্পূর্ণ জার্মানিকে এক ও অখণ্ড গণপ্রজাতন্ত্র ঘোষণা করতে হবে।
২. কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত না হলে একুশ বছর বা তার বেশি বয়সের যেকোনো জার্মান নাগরিককে ভোট দেবার ও নির্বাচিত হবার অধিকার দিতে হবে।
৩. সকল গণপ্রতিনিধিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বেতন প্রদান করতে হবে। এর ফলে শ্রমিকদেরও জার্মানির সংসদসদস্য হবার সুযোগ উন্মুক্ত হবে।
৪. জনতাকে সর্বজনীনভাবে অস্ত্রযুক্ত করতে হবে। ভবিষ্যতের সেনাবাহিনী একই সাথে হবে শ্রমবাহিনী। এতে করে সেনারা আগের মতো শুধুই সম্পদ ভোগ করবে না, বরং উৎপাদনও করবে। নিজেদের জন্যে যতোটুকু প্রয়োজন তার চেয়েও বেশি উৎপাদন করতে হবে তাদেরকে।
এটা শ্রমিকদের সংগঠিত হতেও সাহায্য করবে।
৫. সকল আইনী সেবা হতে হবে বিনামূল্য।
৬. গ্রামের মানুষের উপর চাপানো সকল সামন্ততান্ত্রিক দায়-দেনা, বিনামূল্য শ্রম, ইত্যাদিকে কোনো প্রকার ক্ষতিপূরণ ছাড়াই বিলুপ্ত করতে হবে।
৭. রাজন্য কিংবা সামন্ত প্রভুর অধীনস্থ সকল ভূ-সম্পত্তি, খনি, ইত্যাদিকে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি হিসেবে অধিগ্রহণ করতে হবে। অধিগ্রহণকৃত জমিতে আবাদ করতে হবে গোটা সমাজের স্বার্থকে সামনে রেখে। উৎপাদন করতে হবে বৃহদাকারে এবং সর্বাধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করে।
৮. ছোট জমিওয়ালা কৃষকের বন্ধক দেওয়া সকল জমিকে রাষ্ট্রের সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। এই ধরনের বন্ধকের উপর যতো সুদ আসবে তা কৃষককে রাষ্ট্রের নিকট পরিশোধ করতে হবে।
৯. যেসব লোকালয়ে জমি বা সম্পত্তির উপর ভাড়া-ব্যবস্থা চালু আছে, সেখানে জমির উপর ভাড়া ইত্যাদিকে ট্যাক্স হিসাবে রাষ্ট্রের নিকট পরিশোধ করতে হবে।
দাবি ৬, ৭, ৮ ও ৯ এর উদ্দেশ্য হলো ক্ষেতমজুরদের ও অন্যান্য ক্ষুদ্র ভাড়াখাটা ক্ষেতমজুরদের উপর চাপানো বোঝাকে এমনভাবে লাঘব করা যাতে রাষ্ট্রের নিজের ব্যয় বহনের উপায়ও চালু থাকে, আবার উৎপাদন-ব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
ভূমি মালিক যেহেতু ছোট জমিওয়ালা কৃষকও নয়, আবার ভাড়াখাটা ক্ষেতমজুরও নয়, ফলে উৎপাদনে তার কোনো অংশীদারও নেই। এ কারণে ভূমি মালিকের পক্ষে ভোগ করাটা উৎপাদনের একটা অন্যায় ব্যবহার ছাড়া আর কিছুই নয়।
১০. সকল প্রাইভেট ব্যাংক বিলুপ্ত করে একটামাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক করতে হবে। একমাত্র সেই প্রতিষ্ঠান আইনত গ্রাহ্য মুদ্রা প্রকাশ করতে পারবে। এই পদক্ষেপের ফলে ঋণব্যবস্থাকে সমষ্টির স্বার্থে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে এবং বড় পুঁজিপতিদের আধিপত্যকে খর্ব করা সম্ভব হবে। এছাড়া স্বর্ণ বা রৌপ্যমুদ্রা সরিয়ে ধীরে ধীরে কাগজের মুদ্রার প্রচলন ঘটানো হবে। এতে সর্বজনীন বিনিময়ের সস্তা উপায় তৈরি হবে। স্বর্ণ ও রূপাকে কেবল বাইরের দেশের সাথে বাণিজ্যের জন্যে বরাদ্দ রাখা হবে। এতে রক্ষণশীল বুর্জোয়া শ্রেণীর স্বার্থ সরকারের সাথে একীভূত হবে।
১১. সকল প্রকার যোগাযোগ, রেলপথ, খালবিল, স্টিমচালিত জাহাজ, রাস্তা, ডাকযোগাযোগ, ইত্যাদি রাষ্ট্র দ্বারা অধিগ্রহণ করতে হবে। এগুলো হবে রাষ্ট্রের সম্পত্তি। অর্থসম্বলহীনদের জন্যে এইসব সেবা বিনামূল্যে প্রদান করা হবে।
১২. সকল সরকারী চাকুরে সমান বেতন ভোগ করবে। তবে যেসব সরকারী চাকুরেকে পরিবারের খরচ চালাতে হয়, তারা বেশি বেতন পাবে।
১৩. ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান আর রাষ্ট্রকে সম্পূর্ণরূপে পৃথক করতে হবে। যাজকদের বেতন কেবল ধর্মীয় উপাসনালয়ে সমবেতদের দান করা অর্থ থেকে নির্বাহ করা হবে।
১৪. উত্তারাধিকারকে সীমিত করতে হবে।
১৫. উচ্চহারে ট্যাক্স আদায় করতে হবে এবং ভোগ্যপণ্যের উপর ট্যাক্সকে বিলুপ্ত করতে হবে।
১৬. রাষ্ট্রাধীন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। রাস্ট্রকে সকল শ্রমিকের জীবিকা নিশ্চিত করতে হবে এবং যারা কাজ করতে অক্ষম, তাদের অন্নসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
১৭. সকল মানুষের সর্বজনীন ও বিনামূল্য শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
সর্বশক্তি নিয়োগ করে এই দাবিনামার প্রতি সমর্থন জানানোর মাঝেই জার্মানির প্রলিতারিয়েত, পাতি বুর্জোয়া আর ছোট জমিওয়ালা কৃষকের মঙ্গল নিহীত। সম্পদের প্রকৃত উৎপাদনকারী যারা, জার্মানির সেই লক্ষ লক্ষ মানুষ, যারা গুটিকয়েক মানুষের দ্বারা শোষিত হয়ে এসেছে, আসছে, এই দাবিনামাকে পূর্ণরূপে উপলব্ধি করার মাধ্যমেই কেবল তারা পারবে তাদের অধিকার এবং প্রাপ্য ক্ষমতাকে অর্জন করে নিতে।
কমিটি:
Karl Marx, Karl Schapper, H. Bauer, F. Engels, J. Moll, W. Wolff
(শেষ)
দাবিগুলোকে কেবলই দরিদ্র ও প্রোলিতারিয়েতের স্বার্থ দেখার কর্মসূচী মনে হতে পারে। তবে আমি এখানে মূলত তিন ধরনের দাবি দেখতে পাচ্ছি। ক) রাজনৈতিক অধিকার ও সংস্কার সংক্রান্ত দাবি, যার মধ্যে ২ ও ১৩ পড়ে। খ) দরিদ্র ও প্রোলিতারিয়েতের স্বার্থ সংরক্ষণমূলক কর্মসূচী, যেগুলো করতে রাষ্ট্রকে ব্যয় করতে হবে, যার মধ্যে ৩, ৫, ৬, ১২, ১৬ ও ১৭ পড়ে। গ) রাষ্ট্র যে ব্যয় করবে সেটা নির্বাহ করার জন্যে সে শূন্য থেকে অর্থ উৎপাদন করতে পারে না, ৪, ৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১৪ ও ১৫ হলো সেই ব্যয় নির্বাহনের উপায়: বাধ্যতামূলক উৎপাদন, ট্যাক্স আদায়, ভূমি ও সম্পদ অধিগ্রহণ।
এই ব্লগে এটাই মনে হচ্ছে মার্ক্স এঙ্গেল্সদের নিয়ে সবচেয়ে সহজবোধ্য লেখা। মন্তব্য প্রতিমন্তব্য গুলোও খুব আকর্ষণ করেছে। আগ্রহ নিয়ে পড়লাম (C)
@কাজী রহমান,
(C)
ঘনঘোর, ঘনঘোর এ দিনে প্রশ্ন উত্থাপিত হোক, প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে, কর্তৃত্বের প্রশ্নে নয়।
মৌমাছিরা বলছে, যাই যাই বিদায় নিয়ে চলে যাই। চড়ুই বলছে যাই, এই যাই-এর পাতায় ওঠে আসছে অনেকের নাম।
পণ্য উৎপন্ন হয়েই বলছে, আমার মালিক কে?
গ্রাম বাংলা থেকে ওঠে আসে নগদ নারায়ন , মৃদু হাসে। ভগবান বসে পড়ে যার-তার নামের আগে, বাদ পড়ে বেচারা শিব।
শেকড় চোখে পড়ে না। তাই কান্ড নিয়ে কান্ডজ্ঞানহীন আলোচনায় ডুব সাঁতার।
উস্কে দেবার জন্য ধন্যবাদ লেখকের প্রাপ্য।
@স্বপন মাঝি,
(D)
খুবই চমৎকার একটা কাজ করছেন রূপম ভাই।
প্রত্যেকটা পয়েন্ট অনবদ্য।
এই জিনিস যদি কাউরে বুঝানো যাইত!!
এই জিনিস বাঙলাদেশে অতিসত্ত্বর দরকার।
বাঙলা সেই প্রবাদ মনে পড়তেছে,
মানুষের দূর্ভোগ নিয়া দুঃখ করলে আমি বিরাট দয়ালু মানুষ।
আর যদি জিজ্ঞেস করি কেন এই দূর্ভোগ হইল, তাইলেই আমি “শালা কমিউনিষ্ট”।
@সাইফুল ইসলাম,
ধন্যবাদ সাইফুল ভাই।
ভূমি মালিক যেহেতু ছোট জমিওয়ালা কৃষকও নয়, আবার ভাড়াখাটা ক্ষেতমজুরও নয়, ফলে উৎপাদনে তার কোনো অংশীদারও নেই। এ কারণে ভূমি মালিকের পক্ষে ভোগ করাটা উৎপাদনের একটা অন্যায় ব্যবহার ছাড়া আর কিছুই নয়।
এই জিনিস যদি কাউরে বুঝানো যাইত!!
বুজছি, প্রোপার্টি রাইট্স আর ট্র্যাজেডি অফ দ্য কমন্স নিয়া এখন লেখনের কাম।
সাইফুল ভাই, রাষ্ট্র তো আর দয়ালু তায়ালা ঈশ্বর না। ধনকুবেরের থিকা রাষ্ট্র নয় সম্পদ কাইড়া নিয়া দেখাশুনা করলো। রাষ্ট্ররে কে দেখবো?
আর পৃথিবীর ইতিহাস বলে, উৎপাদন ব্যবস্থা কোনো টপডাউন কেন্দ্রীয় পরিকল্পনার ফলাফল না। বহুর স্বেচ্ছাকৃত exchange ও specialization এর ফলাফল, ব্যক্তি মুনাফা যার কেন্দ্রে। কিন্তু মুনাফা ব্যক্তি কেন্দ্রিক মানে কিন্তু এই না যে এটা একটা জিরো সাম গেইম। উৎপাদন ব্যবস্থায় জড়িত (ভোক্তাসহ) সকলের better off হবার উদাহরণ প্রচুর।
মার্ক্স চাইছেন ওনার কেন্দ্রীয় শাসন ভিত্তিক রাষ্ট্রে ব্যক্তি মালিকানা থাকবে না, ব্যক্তির মুনাফা থাকবে না, ব্যক্তির নিজস্ব উদ্যোগে exchange ও specialization এর মাধ্যমে উৎপাদন থাকবে না, কিন্তু সাম হাউ, ফর সাম মারফতি রিজন, উৎপাদন আগের মতোই দক্ষ ও গতিশীল থাকবে। এভিডেন্স বলে, উৎপাদন ডাজ নট হ্যাপেন লাইক দ্যাট। রৌরবের মতো করে বললে, সেইটা ahistorical। আপনার কী মনে হয়? এই সিস্টেম কাম করবো? নাকি উৎপাদন ব্যবস্থা ধ্বংস হইবো?
আমার ভালো লাগার তালিকায় খালি নিচের কয়টা আছে –
বাকিগুলা হয় সন্দেহের, নাইলে অপছন্দের তালিকায়। 🙂
@রূপম (ধ্রুব),
বছর দুয়েক আগে বাংলাদেশে হিজবুত তাহরীর এর একটা ম্যানিফেস্টো বের হয়েছিলো। তাদের রাষ্ট্র পরিকল্পনার সাথে এই মার্ক্সীয় ইস্তেহারের অনেক মিল। ইতিহাস আর পেছন ফিরে দেখার (hindsight) সুবাদে, এই ধরনের কথাবার্তাকে এখন স্কুলে পড়া ছেলেমেয়েদের আইডিয়ালিস্টিক কল্পনার ফসলতুল্য মনে হয়।
@সফিক,
হুমম। খুব স্বাপ্নিক, কাব্যিক কথাবার্তা, তাই না? অর্থনীতি, উৎপাদন আর সমাজ কীভাবে কাজ করে, সেটার উপলব্ধি এই কথাবার্তাগুলোর মতো এতো সহজ সরল নয়। অনেকটা বিশ্ব সৃষ্টি বা প্রাণী সৃষ্টির মতো। পর্যবেক্ষণলব্ধ রিগোরাস উদ্ঘাটনের আগে কে ভেবেছিলো যে কিছু লক্ষ্যহীন জটিল প্রসেসের বিবর্তনে গ্রহ নক্ষত্র, প্রাণী, মানুষ তৈরি? মানুষের সৃষ্টি চিন্তা টপ ডাউন। একজন কেন্দ্রীয় চরিত্র উপর থেকে আদেশ দিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে জগত সৃষ্টি করে ফেলছে। মার্ক্সও প্রোলিতারিয়েত আর শ্রেণী শোষণকে উল্টিয়ে দিচ্ছেন একটা কেন্দ্রীয় শাসন যন্ত্রের মাধ্যমে, রাতারাতি, ব্যবসায়ী গোষ্ঠি বিলোপ আর সকল সম্পদ, উৎপাদন আর যোগাযোগের মাধ্যম অধিগ্রহণের মাধ্যমে। শিশুর হাতের মোয়ার মতো।
@রূপম (ধ্রুব), মার্ক্সবাদ নিয়ে এখন যত হাসাহাসিই করি না কেনো, মার্ক্স যে মানুষের চিন্তার ইতিহাসে একজন অত্যন্ত প্রতিভাবান এবং প্রভাবশালী দিকপাল হয়ে থাকবেন। কথা হলো, আজকে এই একবিংশ শতাব্দীতে বসে, অর্থনীতি-সমাজবিদ্যার এত ডেভেলাপমেন্ট এর পরেও, যদি কেউ এসব সরল রেখার মত চিন্তা করে ও তা প্রয়োগ করতে যায়, তবে সেটা ক্ষমার অযোগ্য।কেন্দ্রীয় পরিকল্পনার সহজ আকর্ষন উপেক্ষা করা খুবই কঠিন ছিলো আগের অর্থনীতিবিদ-রাজনীতি বিদদের কাছে। এমনকি স্যামুয়েলসনের মতো অর্থনীতিবিদ ৬০ এর দশক পর্যন্ত সোভিয়েত কমান্ড অর্থনীতিকে সামগ্রিক জিডিপি গ্রোথের জন্যে মার্কেট অর্থনীতির চেয়ে সুপিরিয়র ভাবতেন। আসলে গত ৪০ বছরে অর্থনীতির মূল ড্রাইভার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে ইনসেনটিভ। ইনসেনটিভ ছাড়া এখন কোনো অর্থনীতি, রাজনীতি, রাষ্ট্রপরিচালনার পলিসি কিছুই চিন্তা করা যায় না। অথচ এই ইনসেনটিভ-রিওয়ার্ড এর এলাইনমেন্ট পুরো মার্ক্সীয় চিন্তায় অনুপস্থিত।
@সফিক,
একদম ঠিক বললেন।
এই সরলরৈখিক চিন্তার ধরন আরো এই জন্য গুরুত্বপূর্ণ যে এই লাইনের চিন্তা এখনো মানুষের মনে জীবিত। কল্যাণ রাষ্ট্র বলে একটা বিষয় খুব শুনি আজকাল। রাষ্ট্র নাকি অনেক কল্যাণকর বিষয় দেখাশোনা করবে। তাত্ত্বিকভাবে বিষয়টা বাই ইটসেল্ফ হয়তো বিপজ্জনক না। কিন্তু এর তরুণ প্রমোটারদের মধ্যেও রাষ্ট্রের ব্যয় কোথা থেকে নির্বাহ হবে, অর্থনীতি, ইন্সেন্টিভ, এগুলো নিয়ে যারপরনাই অনাগ্রহ, অজ্ঞতা দেখি। তাদের চিন্তা ভাবনা ও প্রস্তাবের ডিরেকশন অনেকটাই “সকল আইনী সেবা হতে হবে বিনামূল্য” লাইনের। আর – এর জন্যে রাষ্ট্র অমুক তমুক সেক্টরের সম্পদ অধিগ্রহণ করবে, উচ্চহারে ট্যাক্স নিবে – এই লাইনের। এই নর্থ অ্যামেরিকায় এমনও বলতে শুনেছি, অর্থনৈতিক অদক্ষতা আর অপচয়ের বিনিময়েও যদি রাষ্ট্র কল্যাণ কর্ম সাধন করতে পারে, তাহলে নাকি ঠিক আছে। সেখানে রাষ্ট্র কর্তৃক কল্যাণ করতে হবে এমন ধারণাটা রিলিজিয়াস হয়ে যায়। আমি নিশ্চিত, তাদের অনেকেই ১৮৪৮ সনের কার্ল মার্ক্সের সাথে একমত হবার অনেক বিষয়ই পাবেন। এই জন্যে কার্ল মার্ক্স এতো প্রাসঙ্গিক।
@সফিক,
আপনার সেন্স অব হিউমার হয়ত সাংঘাতিক পর্যায়ের যার জন্য মার্ক্সের কথা শুনলে হাসি পায়। আমার কেন জানি পায় না। কারন আমি দেখি আজকের অর্থনৈতিক ব্যাবস্থায় দুনিয়ার কথা বাদ দিলাম বাঙলাদেশের প্রায় অর্ধের মানুষ না খাইয়া থাকে দুই বেলাই। এইরকম অবস্থায় হাসি তো দুরের কথা মার্ক্সরে আমার ভাই পুজা করতে ইচ্ছা করে এই কারনে যে দুনিয়াতে এই একখান কুতুবই দেখলাম যে কিনা সবাইরে এটলিস্ট প্যাটে ভাত দেয়নের ইচ্ছাডা প্রকাশ করছে একটা অত্যন্ত যৌক্তিক পথ দেখাইয়া, অন্যদিকে সবাই যহন বাস্তুবতার দোহাই দিয়া আপনার মতন সেন্স অব হিউমারের প্রকাশ ঘটাইছে।
ইন্সেন্টিভের অভিযোগ মার্ক্সিজমের বিরুদ্ধে বহুত পুরাতন। আমি এইটা নিয়া কিছু বলতেছি না। আচ্ছা আমাকে বলেন বর্তমান পৃথিবীতে যে অর্থনৈতিক ব্যাবস্থা চলতেছে এইটা আপনি মানেন কি মানেন না।
@সাইফুল ইসলাম,
“যৌক্তিক” মানে কি?
@রৌরব,
এইটা সেই অ্যাক্সিওমেটিক সিস্টেমের যৌক্তিক আর কি। গোডেল যেইভাবে ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণ করেছেন। নিজে নিজে অ্যাক্সিওম প্রস্তাব করেছেন, যেই অ্যাক্সিওম থেকে ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণে আসা যায়। তারপর প্রমাণটা করিয়ে দেখিয়েছেন যে ঈশ্বরের অস্তিত্ব যৌক্তিক। মার্ক্সিজমও যতোক্ষণ বাস্তবে প্রয়োগ করা না হচ্ছে, ততোক্ষণ মার্ক্সের অ্যাক্সিওমেটিক সিস্টেমে সেটা যৌক্তিক 😉 । পর্যবেক্ষণসিদ্ধ তো আর দাবি করে নাই! আমি আগে একবার আপনেরে বলছিলাম না, আমার গবেষণাগুরু এর উত্তরে বলেন, অবশ্যই যৌক্তিক, কেবল বাস্তব না। :))
আমার গবেষণাগুরু বলেন, অ্যাক্সিওম নিয়ে তর্ক করে লাভ নেই। কোনটা প্র্যাগমেটিক সে নিয়ে আলাপ করতে হবে। যেমন, বেসিক রাইট্সের প্রসঙ্গ। আমি যদি বলেই দেই যে – যে যা বলুক, আমি মনে করি আমার কিছু ইনেলিনিয়েবল রাইট্স আছে – বাক স্বাধীনতা, অস্ত্র বহন, প্রোপার্টি রাইট্স, তাহলে অন্য পার্টিও সমানে সমান। সে বলবে, যে যাই বলুক, আমার রাইট্স আছে আমার চেয়ে যে বেশি খায় তার থেকে খাবার কেড়ে নেওয়ার, ইত্যাদি। মানে অ্যাক্সিওম তথা বিশ্বাস নিয়ে ফাইট। অনেকটা ধর্মীয় ফাইট। এর বদলে আলাপ করতে হবে কোনটার কনসিকোয়েন্স কী। এইটা ওনার মত।
তবে আমার মতে প্র্যাগমেটিক তর্কও একটা পর্যায়ে গিয়ে কিছু অ্যাক্সিওমের তর্কে সীমিত হতে বাধ্য। আমার ধারণা উনি সত্যিকারের ধার্মিক কিংবা কমিউনিস্টের মুখোমুখী হন নি। ফলে অ্যাক্সিওমের পার্থক্য কাকে বলে ততোটা কখনো টের পান নি। কিন্তু আমি সত্যিই ওনার মতো আশা করি যে পুরো ব্যাপারটা কেবল প্র্যাগমেটিক আলাপ দিয়ে রিজল্ভ করা যাবে। 🙁
@রৌরব,
সিদ্ধান্তে যাওয়ার একটা গঠনমূলক, বস্তুনিষ্ঠ পন্থা হইল যুক্তি। যুক্তির পথ ধইরা একটা সিদ্ধান্তে পৌছানোটাই “যৌক্তিকতা”।
@সাইফুল ইসলাম,
আর বৈজ্ঞানিক কি একই জিনিস? না হলে কেন?
@রৌরব,
আপনার প্রশ্নের ধরণ দেখে খুব জানতে ইচ্ছে করছে, আপনি কি পেশায় শিক্ষক?
@সাইফুল ইসলাম,ভাই কেউ যদি ইস্তেহার দেয় “সকল সরকারী চাকুরে সমান বেতন ভোগ করবে” তবে হাসি না পেয়ে উপায় নেই। ২০ বছর পড়াশোনার পর নিউক্লিয়ার ফিজিসিস্ট-ব্রেন সার্জনআর হাই স্কুল ফেল বাস কন্ডাক্টর যদি একই বেতন পায় তবে সেই সমাজ টেকার কোনো সম্ভাবনাই নেই। বাংলায় এই ধরনের একটা লোকগল্প ছিলো না, কোন এক দেশে যেখানে সব কিছুর দাম এক পয়সা।
এমনকি রাশিয়াতেও বিপ্লবের পর খুব শীঘ্রই দেশের প্রায়োরিটি অনুসারে পুরো আলাদা সুবিধা চালু হয়ে গিয়েছিলো। সেখানেও সায়েন্টিস্ট, আর্মামেন্ট ইন্জিনিয়ার রা আলাদা অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে থাকতো, আলাদা রেশন পেতো, তাদের ছেলেমেয়েরা আলাদা কিন্ডার গার্টেন এ যেতো। কারন দেশ চালাতে গিয়ে পাড় কমুনিস্টরাও বুঝেছিলো যে মানুষকে ইনসেনটিভ না দিয়ে কিছু আদায় করা সম্ভব না। আর পার্টির নেতাদের তো ব্যাপারই আলাদা। নিজস্ব ডাচা (শহরের বাইরে বাগানবাড়ী), শোফারসহ গাড়ী, ব্ল্যাক সী’র উপকূলে ভ্যাকেশন হোম।
বলতে পারেন এটা রাশিয়ার লোকজনের দোষ, মার্ক্সীজমের দোষ নয়। এটাই আসল কথা। পৃথিবীর মানুষগুলো আসলে বেশী সুবিধার না। এদের বাদ দিয়ে টেস্টটিউবে যদি খাটি মার্ক্সীস্ট মানুষ উৎপাদন করা যেতো তাহলে অসুবিধা আর হতো না। দারিদ্র- ক্ষুধামুক্ত সমাজের কথা কিন্তু ইসলামও বলে। কিন্তু সমস্যা হলো ঘাড় তেরা মানুষ খাটি মুসলমান হতে পারে না। এই জন্যে পৃথিবীতে খাটি ইসলামী খেলাফতও চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
আর আমার কথা হলো আমি ” বর্তমান পৃথিবীতে যে অর্থনৈতিক ব্যাবস্থা চলতেছে এইটা ” আমি মানি। মার্কেট ইকনমী আর লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক সরকার ব্যবস্থায় অনেক ভুল ত্রুটি আছে, কিন্তু এটা সেলফ কারেক্টিং, এখানে চেক-ব্যালেন্স-বিবর্তনের ব্যাবস্থা আছে। এবং এখন পর্যন্ত এর চেয়ে ভালো কোনো সিস্টেম আসেনি।
@সফিক,
(Y)
শুধু যদি তার ধারণাগুলিকে বৈজ্ঞানিক অবধারিতার তকমা না দিতেন…
@রূপম (ধ্রুব),
হাহাহা, লেখেন, তখন ঐখানে এইটার যৌক্তিকতা অযৌক্তিকতা নিয়া কথা হইব নে। :))
রাষ্ট্র অবশ্যই কতৃত্ববাদী একটা প্রতিষ্ঠান, এইটা অস্বীকার করার উপায় নাই। তাইলে আমরা কী করতে পারি? এমন একটা সিস্টেমে যাইতে পারি যেইটা বস্তুনিষ্ঠভাবে আমাদের রাষ্ট্রহীন একটা সমাজব্যাবস্থায় নিতে পারে। তার জন্য আমাদের এমন একটা মতবাদে বিশ্বাসী পার্টির আন্ডারে যাইতে পারি বা বলা যায় এমন একটা পার্টি ক্ষমতা দখল করব যেই পার্টি বিশ্বাস করে যে, রাষ্ট্র অপ্রয়োজনীয় এবং একটা নির্দিষ্ট সময় পরে রাষ্ট্র ব্যাবস্থার অটোম্যাটিক বিলুপ্তি ঘটব। কারন পার্টির আন্ডারে ছাড়া কোন আন্দোলন সফল হইতে পারে না এবং কোন আন্দোলন ছাড়া বর্তমানে অস্তিত্বশীল চাচারা খালুরা আমগোরে ক্ষমতা নিজ হাতে তুইলাও দিবো না। :))
ধনকুবেররা সম্পদ কুক্ষিগত করে এইটা যখন বুঝতেছেন এবং এই কুক্ষিগত এবং আপনার বোঝাটা যেহেতু একই সিস্টেমের আন্ডারে ঘটছে সুতরাং আমি এইটা কি ধরতে পারি যে আপনি বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যাবস্থায় অনাস্থা জ্ঞ্যাপন করতেছেন?
জনগন। কারন সোসালিজম এমনিতে এমনিতে আসব না। একটা পার্টির নেতৃত্বে আসব জনগনের বিপ্লবের মাধ্যমে। আর ঐ পার্টি সোসালিস্ট, কমিউনিস্ট হইব। সোসালিজমে নির্বাচনের ব্যাপার আছে। কোন পার্টি যদি জনগনের চাওয়া পুরন করতে ব্যার্থ হয় তাইলে পার্টি তাৎক্ষনিক ভাইঙ্গা দেওয়ার এখতিয়ার জনগনের থাকব।
উৎপাদন ব্যাবস্থা নিয়া তো আসলে কোন সমস্যা নাই, সমস্যা উৎপাদন ব্যাবস্থার মালিকানা আর লভ্যাংশের সঠিক বন্টন নিয়া। আপনি যদি উৎপাদন ব্যাবস্থার কথা বলেন তাইলে তো দুনিয়াতে আদিযুগ থিকাই সমাজতন্ত্র বহাল তবিয়তে আছে। কারন কোন একটা জিনিস কেউই একা বানাইতে পারে না। সমস্ত পন্যই সমবেত প্রচেষ্টার ফল। একটা কম্পিউটার বানানো থিকা শুরু কইরা আমার আপনার হাতে আসতে আসতে বহু বহু এবং বহু মানুষের প্রচেষ্টা আর ঘাম ঝরতেছে, কিন্তু মালিক কত পাইতেছে আর যারা ঘাম ঝরাইতেছে তারা কত পাইতেছে?
অনেকেই কয় সমাজতন্ত্র নিয়া কেউ কেউ নাকি লাফালাফি করে দয়া, করুণা থিকা। এক্কেবারে ষাড়ের শিট ভাই এইসব কথা বার্তা। সমাজতন্ত্রীরা বলে খালি যৌক্তিক, ন্যায্য বন্টনের কথা।
মার্ক্স কোন জায়গাতে এই কথা বলছে যে একেবারেই ব্যাক্তি মালিকানা থাকবে না? সমাজতন্ত্র আর কমিউনিজম আলাদা দুইটা জিনিস। সমাজতন্ত্রে কিছু পরিমানে প্রাইভেট ওনারশিপ থাকব কিন্তু অবশ্যই কিছু রেগুলেশন মানতে হইব। ব্যাক্তিমালিকানার বিলুপ্তি ঘটব কমিউনিস্ট সমাজে যেইটা এখনও পৃথিবীতে ঘটে নাই।
আরো ভালো ভাবে কাম করব। কারন এখন শ্রমিকগোর সুবিধা অসুবিধার কথা কোন শিল্পপতি কুতুবই ভাবে না, আর তখন এইসমস্ত প্রতিষ্ঠান চালাইবই শ্রমিকরা, পেট্রোনাইজড বাই সরকারী প্রযুক্তি। আপনার কী মনে হয় পুঁজিবাদি অর্থনৈতিক সিস্টেম আসার আগে মানুষ না খাইয়া ছিল? :))
আপনার
এই কথাটা নিয়া আলাদাভাবে বলার দরকার মনে করতেছি। মানুষ আবিষ্কার করব কারন এইটাই মানুষের কোর বৈশিষ্ট। প্রশ্ন হইল এই আবিষ্কারের মাধ্যমে যদি সে মানুষ শোষনের সিস্টেম চালু করে ঐটারে সাপোর্ট করা হইব কী না।
মহৎ আবিষ্কারের সৃষ্টি মুনাফার জন্য না, মহৎ আবিষ্কারের সৃষ্টি হয় মানুষের স্বকীয় বৈশিষ্টে চালিত হইয়া নতুনত্ব সৃষ্টির প্রক্রিয়ায়। সাথে দরকার পৃষ্ঠপোষকতা, যেইটা খুব ভালো ভাবেই পাইব একটা সমাজতান্ত্রিক সমাজে। সুতরাং সমস্যার কিছু নাই আসলে।
@সাইফুল ইসলাম,
যেই পার্টি এমন বিশ্বাস করে বলে আপনি বিশ্বাস করেন, সেই পার্টির ঈমান কি তার প্রতি আপনার ঈমানের মতোই মজবুত হবে? ইতিহাস তো বলে সেইরকম বলা পার্টির দেশে কোটির ঘরে গণহত্যা ঘইটা গেছে। কিন্তু শুরুতে তারে কথায় বার্তায় তো ঈমানী লুকই মনে হইছিলো। যাউগ্গা, যা হইছে, হইছে। কথা হইলো নেক্সট যেই পার্টি এমন আশা দিবো, সে যে ঠিক ঠিক কাম করবো গ্যারান্টি কী? কোটির ঘরে গণহত্যার রিস্ক লইয়া তারে তো আমি সাপোর্ট দিতাম না। আপনি কোন ভরসায় দিবেন? একটা পার্টিরে স্রেফ বিশ্বাস কইরা ক্ষমতার মনোপলি দিয়া দেওয়াটা কি “যৌক্তিক”?
@রূপম (ধ্রুব),
আমরা কি পার্টি ছাড়া অন্য কথাগুলায় একমত হইয়া গেলাম নাকি??????
না হইলে পার্টির ব্যাপারে আলোচনা কইরা আসলে কোন ফায়দা দেখতাছি না। 🙂
@সাইফুল ইসলাম,
নাহ্। অনেকগুলা বিষয়ে বলছেন। প্রথমটা পার্টি নিয়া। সেইটার উত্তর করলাম। একটা একটা কইরা আসবো ভাবছিলাম।
এমনিতে আলাপের বিষয় দুইরকম হইতে পারে: ১) উদ্দেশ্যে একমত কিনা। ২) উদ্দেশ্য আদৌ বাস্তবায়নযোগ্য কিনা।
দুইটার কোনোটাই অফায়দার না। বরং উদ্দেশ্যের প্রশ্ন যতোটা তাত্ত্বিক আলাপ, বাস্তবায়নযোগ্যতা তার চেয়ে বেশি প্র্যাগমেটিক তথা কাজের আলাপ হয়।
@সাইফুল ইসলাম,
আমি খুব খুশী যে তোমার অনেক অগ্রগতি হয়েছে। আশা করছি এই ধারা অব্যাহত থাকবে। তর্কের মাধ্যমে চিন্তা-ভাবনা প্রসারিত হয়। স্বপন মাঝি আলোচনা শুরু করতে যেয়ে সংক্ষিপ্ত করে ফেললেন বলে মনে হল। ওয়াল স্ট্রীট আন্দোলন ওয়ালারাও নাকি দম নিচ্ছে পড়াশুনা করছে। শুনা যাচ্ছে ইউরোপ আমেরিকায়ও নাকি এখন ক্যমিউনিষ্ট ম্যানোফেষ্টো আর ড্যাস ক্যাপিটাল রিপ্রিন্ট হচ্ছে। এনিয়ে পুঁজিবাদী /সম্রাজ্যবাদীদের পান্ডা প্রজেক্ট ফর দা নিউ আমেরিকান সেন্চুরী ওয়ালাদের রাতের ঘুম শিকেয় উঠেছে। জনগণের টাকায় বেল আউট নে্য়ায় তাদের দার্শনিক গুরু যে ‘র্এন্ড অব দা হিস্টরী’ (http://www.marxists.org/reference/subject/philosophy/works/us/fukuyama.htm ) বলেছিল সেই ফ্রান্সিস ফুকুয়ামার নাকি ফাঁসি খেতে ইচ্ছে হয়েছিল।
তবে এইসব তর্ক অনেক পুরনো হলেও নতুন করে আবার হওয়ার প্রয়োজন আছে। তুমি দেবী প্রাসাদের ভাববাদ খন্ডনটা (মার্ক্সবাদ) একবার রিভাইছ দিতে পার। জেনে যাবে পদর্থ বিজ্ঞানী সালাম বিজ্ঞানী হয়েও কেন বিজ্ঞান মনষ্কতা অর্জন করতে পারেনি। নিদেন পক্ষে জাফর ইকবালের আমেরিকা ভ্রমন বইটি পড়ো দেখবে বুঝবে যে শুধু বিজ্ঞানের ছাত্র না পদার্থ বিজ্ঞানের রিসর্চ ফেলোও পুরনো ধ্যান-ধারণা থেকে বের হতে পারে না। আজ এই পর্যন্তই, উঠি, শহরে যেতে হবে। ভাল থেকো, ফোন করো, অমার ফোনের ডিসপ্লে নষ্ট, একবার না পেলে আবার করো।
@আব্দুল হক,
লেখায় আপনার মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগলো। আলোচনা নানা দিকে মুখ নিয়েছে। যার যার অবস্থান ব্যতিরেকে বিষয়ে যদি একটু আলাপ আলোচনা তর্ক বিতর্কও করা যেতো, মন্দ হতো না। 🙂
(D)
@আব্দুল হক,
আলোচনার সুতোই ধরিয়ে দেই। জনগণের টাকায় বেল আউট নেয়ায় ফুকুয়ামার ফাঁসি খেতে ইচ্ছে হয়েছিল কেনো তিনি ভালো জানেন। ফ্রি ইকোনমির লোকজন তো এই আশা করে না যে একটা failed business মডেল নিজেকে কারেক্টও করবে না, আবার কোনো জাদুবলে দেউলিয়াত্বও এড়াতে পারবে। তার মডেল কারেক্ট করে না নিলে দেউলিয়াত্ব অনিবার্য। তাকে বেইল আউট দেয়াটাই সেখানে অন্যায়। তা সেই অন্যায় কারা করেছে? ওবামার লেফ্ট লিবারালিজমের ধ্বজাধারীরা। ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। ওরা লিবারাল, কারণ ওরা সামাজিক ক্ষেত্রে লিবারালিজমের পক্ষে, কিন্তু ওরা লেফ্ট কারণ ওরা ইকোনমিতে রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের পক্ষে। ফ্রি ইকোনমির পক্ষের লোকজন কিন্তু বেইল আউটের বিপক্ষেই ছিলো। কিন্তু লেফ্টের কাজ লেফ্ট করেছে। জনগণের টাকা নিয়ে ঢেলেছে মার্কেটকে “লাইনে” আনার জন্য। বেইল আউট ফ্রি ইকোনমি বহির্ভূত কর্ম। তা লেফ্টের অপকর্মের জন্যে ফ্রি ইকোনমিকে দুষলে হবে?
@রূপম (ধ্রুব),
ফুকুয়ামার আশু তিরোধানের কোন রেফারেন্স সার্চ দিয়ে পেলাম না, তবে হতে পারে। হয়ত The End of Fukuyama বইটির জন্য বেশিদিন দেরি করতে হবে না 😀
বেইল আউটের ব্যাপারে ডানপন্থীদের মনোভাবও খুব স্বাধীনতাবাদী নয় কিন্তু। এদের অনেকেই “প্রো-বিজনেস”, অর্থাৎ ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানদের বাড়তি সুবিধা দেয়ার পক্ষপাতী। এমনকি reason ম্যাগাজিনের কিছু “লিবার্টারিয়ান” কেও এধরণের supply-side মতামত দিয়ে দেখা যায়।
@রৌরব,
তাহলে সংজ্ঞাগতভাবেই তারা “ফ্রি ইকোনমির পক্ষের” নন।
@রৌরব,
আপনার জন্যে একটা ক্লিকেবল (B)
@রূপম (ধ্রুব),
আমার দুর্বলতা এরকম ধরে ফেললেন!
@আব্দুল হক,
দেবী প্রসাদ চট্রোপাধ্যায়ের মার্ক্সবাদ ইন্টারনেটে উন্মুক্তভাবে পাওয়া যায় কিনা একটু জানালে উপকৃত হতাম।
@রূপম (ধ্রুব),
আমাকে মেইল করুন পাঠিয়ে দেব। আমার [email protected] or [email protected]
@আব্দুল হক,
(F)
@রূপম (ধ্রুব),
আমার জিমেইল দেখছি ঠিকমতো কাজ করছে না। যাহোক ইয়াহু থেকে পাঠিয়েছি। পেয়েছেন কি না জানাবেন। ধন্যবাদ।
@আব্দুল হক,
পাই নি। তবে আপনাকে ইয়াহুতে মেইল করেছি। ওটাতে রিপ্লাই করতে পারেন।
@আব্দুল হক,
আপনার কাছ থেকে কোনো মেইল আসে নি আমার কাছে। পেলে ভালোে লাগতো। 🙂
@রূপম (ধ্রুব),
গ্রামীন নেটওয়ার্ক এর গত কয়েক দিনের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। ২য় বারে সেন্ট ডান ওকে টিক দেখিয়েছে। গত কালও তো ওকে ই দেখিয়েছিল। বুঝতে পারছি না আজ পেলেন কি না?
@আব্দুল হক,
পেয়েছি এখন। ওয়ার্ডে লেখা। ফন্টটা ভাঙা এসেছে। সোজা করার চেষ্টা চালাচ্ছি। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ!
@রূপম (ধ্রুব),
বিশ্বাস অবিশ্বাসের প্রশ্ন যতটা মুখ্য, তার চেয়েও জরুরী হলো – সংগঠিত শক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে আপাত সংগঠিত শক্তি, যার অভিমুখ সকল সংগঠিত শক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিলোপ।
বলা সহজ, প্রয়োগ অনেক জটিল, সন্দেহ নেই। তাই বলে হাল ছেড়ে, পাল তুলে যাত্রা করলে যা হয়, আমাদের সমাজ জীবনে তাই হয়ে চলেছে।
মৌমাছিরা সব মরে যাচ্ছে!
@স্বপন মাঝি,
যিনি হাল ধরতে চান, প্রশ্নের মুখে নিশ্চয়ই তার হাল ফস্কাবে না। তবে উত্তর না থাকলে কোটি-মৌমাছি-হত্যার-তীরে-যাওয়ার-সম্ভবনাযুক্ত-নাওয়ের হাল ছাড়াটাই হয়তো মঙ্গল।
@রূপম (ধ্রুব),
মন্তব্য পোস্ট করার আগেই উধাও। আবার লেখতে ইচ্ছে করছে না। এমনিতে সময়ের অভাবে হযবরল , তার উপর যান্ত্রিক গোলযোগ।
দ্বিমত করার কোন কারণ দেখছি না।
কিন্তু একটু লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন; আমরা আমাদের মন্তব্যে, এক একজন এক এক কাল-খন্ডে অবস্থান করছি।
ধন্যবাদ।
লেখাটিতে একটা ঐতিহাসিক দলিল তুলে ধরলেন কিন্তু আপনার নিজের মত তো দিলেন না। নিজস্ব মত ছাড়া আলোচনা শুরু হবে কিভাবে?
@সফিক,
আলোচনা হয়তো শুরু হবে না। লেখাটা কেবল অনুবাদই তো।