নাদিম আহমেদ
ছোটবেলার একটা ঘটনা দিয়ে শুরু করি। আমরা ঢাকায় নতুন এসেছি। এখানকার একটি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছি। প্রথম দিন ক্লাস এ গেলাম। সম্পূর্ণ নতুন পরিবেশ, নতুন জায়গা, নতুন মানুষ। নিজেকে খুব একা মনে হচ্ছিলো। সবাই হইচই করছে, আমি এক কোনে একা বসে আছি। একটু পর স্যার আসলেন, এসেই বই বের করতে বললেন। যাদের বই ছিল তারা বের করলো। আমার যেহেতু প্রথম ক্লাস, সেহেতু আমার বই ছিল না। স্যার তখন বললেন, “যাদের বই নেই তারা কান ধরে দাড়া”। কারা কারা নতুন এসেছে তাদের সাথে পরিচিত হওয়া দূরে থাক, জানার আগ্রহও বোধ করলেন না। আমি আশা করেছিলাম নতুন ক্লাসে নতুন বন্ধু হবে, টিচার দের সাথে ভালো সম্পর্ক হবে। কিন্তু উল্টোটা হল। স্যার দাড়িয়ে থাকা সবাই কে বেত্রাঘাত করলেন। ক্লাসের অন্য ছেলেরা সেটা দেখে খুব মজা পেলো। এই হল আমার ঢাকায় প্রথম ক্লাসের অভিজ্ঞতা। সেদিনের পর শিক্ষক জাতির উপর আমার এক ধরনের ঘৃণা বোধ তৈরি হয়ে গিয়েছিল। আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম আর যাই হই জীবনে শিক্ষক হব না। এই শিক্ষকদের বলা হয় জাতি গড়ার কারিগর। অথচ আমাদের স্কুল গুলোতে ছাত্র ছাত্রী দের কাছে শিক্ষা এবং বিদ্যালয় কে ভীতিকর ব্যাপার করে তোলেন এই তথাকথিত শিক্ষকরা। বিদ্যালয়ে এদের প্রধান কাজই হল ছোট ছোট কোমলমতি বাচ্চাদের কে শারীরিক ও মানসিক ভাবে আঘাত করা। স্কুল এ পড়া কালীন সময়ে দেখেছি, কিছু কিছু শিক্ষক ক্লাসে এসে প্রথমে বলতেন, কে কে পড়া শিখস নাই দাড়া। ক্লাসের প্রায় অর্ধেক ছেলে দাঁড়াত। ক্লাসের অর্ধেক সময় এদের কে প্রহার করে কাটিয়ে দিতেন স্যার। এছাড়া ধর্মীয় ব্যাপারেও শিক্ষকদের বাড়াবাড়ি লক্ষ্য করা যায় বিদ্যালয়গুলোতে। সাধারনত ইসলাম ধর্মের শিক্ষকদের মাঝে অন্য ধর্মের শিক্ষার্থীদের কে হেয় করার প্রবণতা দেখা যায়। অনেক শিক্ষককে দেখেছি ক্লাসে হিন্দু শিক্ষার্থীদের সামনে তাদের ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করতে। যার ফলে মুসলিম ছাত্ররা ও হিন্দু ধর্ম কে নিয়ে ব্যঙ্গ করত। এভাবে ছোটবেলা থেকেই অন্য ধর্মের প্রতি বিদ্বেষমুলক মনোভাব তৈরি করতে আমাদের শিক্ষকগণ অবদান রাখেন। একই মেধা সম্পন্ন হওয়া সত্তেও অন্য ধর্মের হওয়ার কারনে বিমাতাসুলভ আচরণের স্বীকার হতে হয় অনেক হিন্দু শিক্ষার্থীদের। এসব কারনে আমাদের দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে একধরনের হীনমন্যতা তৈরি হয়ে যায় খুব ছোট বেলা থেকে। যার ফলে ইসলাম এবং মুসলিম দের প্রতি এক ধরনের ঘৃণা বোধ তৈরি হয় তাদের মাঝে।
শুধু হিন্দুরা নয় মুসলিম ছাত্ররা ও নিস্তার পায়না এসব ধর্মান্ধ শিক্ষক দের অত্যাচার থেকে। মনে পড়ে ক্লাসে টুপি না পড়ার অপরাধে কত মার খেয়েছি। ধর্ম ক্লাসে অদ্ভুত অদ্ভুত কারনে ছাত্রদের কে প্রহার করা হত। এসব কারনের মধ্যে রয়েছে নামাজ না পড়া, কোরান না পড়া, সালাম না দেওয়া, টুপি না পড়া, টাকনুর নিচে প্যান্ট পড়া ইত্যাদি। মেয়েদের ক্ষেত্রে নেইল পলিশ দেওয়া, ছোট কাপড় পড়া, পর্দা না করা ইত্যাদি কারনে শাস্তি পেতে হত।
কিছুদিন আগে শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের উপর প্রহার করা নিষিদ্ধ হয় সরকারী ভাবে। কিন্তু তার পর ও থেমে নেই প্রহার। আগে বেত দিয়ে মারত এখন ডাস্টার দিয়ে, হাত দিয়ে মারে। আর কথার প্রহার তো আছেই। শিক্ষকগণ বিশ্বাস করেন যে ছাত্রদের থেকে তাদের স্পষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। ছাত্রদের কে লাই দিলে সব মাথায় উঠবে। তাদেরকে সব সময় ভয়ে রাখতে হবে। অনেককে বলতে শুনি তারা তাদের শিক্ষক কে রাস্তায় দেখলে ভয়ে তারা অন্য রাস্তা দিয়ে যেতেন, আর এখনকার ছাত্ররা নাকি শিক্ষক কে সম্মান ই দিতে জানে না। ভয় পাওয়ার নাম যদি সম্মান হয় তাহলে সেই সম্মান ছাত্র শিক্ষক দুজনের জন্যই ক্ষতিকর। শিক্ষকের সাথে ছাত্রের দূরত্ব মানে শিক্ষার সাথে ছাত্রের দূরত্ব।
কোনভাবে এই ধারনা আমাদের শিক্ষা পদ্ধতির মধ্যে ঢুকে গেছে যে ছাত্রদের কে প্রহার না করলে তারা মানুষ হবে না। শুধু স্কুলে না বাড়িতে ও বাবা মার শাসনের প্রক্রিয়াটি খুবই সেকেলে এবং অযৌক্তিক। সন্তান কোন অপরাধ করলে প্রথমেই তাকে শারীরিক শাস্তি দেওয়া হয়। পরীক্ষায় খারাপ ফলাফলের জন্য শিশুকে শারীরিক শাস্তি দেওয়া কখনোই সমর্থন যোগ্য নয়। ধর্মীয় অনুশাসন না মানার জন্য ও অনেকসময় শিশুদের প্রহার করেন বাবা মা’রা। ধর্মের বই তে তাই বলা আছে। আমাদের বাবা মা’রা কখনোই বাচ্চাদের মানসিক বিকাশের ব্যাপারটা গুরুত্তের সাথে নেন না। বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে একশ টা নিষেধাজ্ঞা, আর না মানলে বকা আর মাইর। এমন অনেক বাবা কে দেখেছি যারা শিক্ষকের কাছে ছেলে কে নিয়ে বলে, “স্যার ছেলে কে দিয়ে গেলাম। পড়া না পারলে ইচ্ছামত পিটাইবেন। মাংসগুলা আপনের, হাড্ডিগুলা খালি আমার কাছে পাঠাইয়া দিয়েন”। সেইসব বাবা মা’রা কখনো জানতে পারবেন না যে তারা তার আদরের সন্তান টির কি পরিমাণ ক্ষতি করলেন।
ভয়, লজ্জা আর অপমান নিয়ে বেড়ে ওঠে সেইসব শিশুরা। মানসিক এবং শারীরিক শাস্তি দিয়ে কখনো ই ভালো কিছু আশা করা যায় না একটা মানুষের কাছ থেকে। এসবের ফলে তার মধ্যে তৈরি হয় ঘৃণা, ভয় এবং অশ্রদ্ধা। খারাপ ফলাফলের জন্য একটা বাচ্চা কে শাস্তি দিলে, তার আত্মবিশ্বাস কমে যায়। ক্লাসে শিক্ষক খারাপ ফল করা ছাত্র কে সবার সামনে খারাপ ছাত্র বলে গালি দেন। বাড়িতে বাবা বলেন, তোকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। ফলে সে নিজেও এটা বিশ্বাস করতে শুরু করে যে, তাকে দিয়ে কিছু হবে না। এভাবে সে শিক্ষা থেকে ক্রমশ নিজেকে দূরে সরিয়ে নেয়। পড়াশোনা তার কাছে একটা বোঝার মত হয়ে যায়। মানসিক ভাবে থেকে যায় অপরিপক্ক। আত্মবিশ্বাস হীনতার ফলে জীবনের সব ক্ষেত্রে পিছিয়ে পরে।
আমাদের সমাজে বাবা মায়ের সাথে সন্তানদের এক প্রকার দূরত্ব লক্ষ্য করা যায়। যেটা তৈরি হয় প্রধানত তাদের শাসন প্রক্রিয়া থেকে। বাবার সাথে দূরত্ব টা সবচে বেশি থাকে। বাবার সাথে কথা বলতেও অনেকে ভয় পায়। মজার ব্যাপার হল আমাদের বাবা রা ই আমাদের সাথে একটা দূরত্ব বজায় রাখতে চান, কারন লাই দিলে মাথায় উঠবে। এর প্রভাব টা আমরা একটু লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারব। আমরা ছোটবেলা থেকেই বাবা মা কে লুকিয়ে অনেক কাজ করি, কারন তারা জানতে পারলে শাস্তি দেবে। সন্তানদের প্রতি হাজার টা নিষেধাজ্ঞা থাকে বলে বেশিরভাগ কাজ তারা বাবা মাকে না জানিয়ে করে।ছেলেমেয়েরা কোথায় যাচ্ছে, কাদের সাথে মিশছে এসব কিছুই বাবা মা জানতে পারে না। বলতে গেলে আমাদের জীবনের শতকরা ৮০ ভাগ ব্যপারই তাদের কাছে থাকে অজানা। ফলে নিজের অজান্তে আমরা অনেক বড় বড় ভুল করে ফেলি আর কাউকে বলতে না পেরে নিজের মধ্যে যন্ত্রণায় ছটফট করি।
আমাদের বেশিরভাগ অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের কে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার আর ব্যাংকার বানাতে চায়। অনেকে নিজেদের অতৃপ্ত আকাঙ্খা তার সন্তান কে দিয়ে পুরন করতে চায়। বাবা মার ইচ্ছেমত ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যাংকার হওয়ার জন্য স্কুল জীবনের প্রথম দিন থেকে শুরু হয় যুদ্ধ। বুদ্ধি হওয়ার আগে ই তার মাথায় ঢোকানো হয় ভালো রেজাল্ট করতে হবে, পরীক্ষায় প্রথম হতে হবে, ভালো জায়গায় চান্স পেতে হবে, ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে নয়ত জীবন ব্যর্থ হয়ে যাবে। পৃথিবী টাকে ভালোভাবে বুঝতে না বুঝতেই তাকে ঠেলে দেওয়া হয় এক অসম প্রতিযোগিতার মাঝে। নষ্ট করা হয় শিশুর মননশীলতা, সৃষ্টিশীলতা। জন্মের পর পিতামাতা ঠিক করে দেন তার সন্তানের জীবনের উদ্দেশ্য কী হবে, তার ধর্ম কী হবে, তার চিন্তা ভাবনা কী হবে। একবার ও জানতে চাওয়া হয় না তার কোনটা ভালো লাগে, সে কী হতে চায়। বেশীরভাগ বাবা মা তাদের সন্তান কে সৃষ্টিশীল কাজে উৎসাহিত করে না। আবৃত্তি বা চিত্রাঙ্কন নয় বরং দুবোর্ধ্য আরবি ভাষা শেখানোর জন্য হুজুর রাখা হয়। এভাবে তার নিজস্ব চিন্তা ভাবনার পরিধিকে ছোট করে দেওয়া হয়।
ছোট ছোট বাচ্চাদের উপর আঁট দশটা রসকসহীন বইয়ের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে এবং সেগুলো মুখস্ত করতে বাধ্য করে অভিভাবকগণ তাদের সন্তানদের সুস্থ মানসিক বিকাশের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করছেন। এসব কারনে মুক্তচিন্তা এবং যুক্তি বোধ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে নতুন প্রজন্ম। কুসংস্কার, কুপমন্ডুকতা, ধর্মান্ধতা বাসা বাধছে তাদের মনে।
সবশেষে যে কথাটা বলতে চাই তা হল, শিশুদের কে সঠিক ভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ না দিলে একটা সুস্থ সমাজ গঠন কখনোই সম্ভব নয়। ছোট বাচ্চাদের ছোট ছোট কথা, অনুভতিগুলো কে গুরুত্ত দেওয়া উচিত। তারা যেন কখনো হীনমন্যতায় না ভোগে। সবচেয়ে বড়কথা শিশুর সাথে তার শিক্ষক এবং বাবা মার সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত। তাদের পছন্দ অপছন্দ গুলোকে বোঝা উচিত। শিশুদের কে ভালো এবং মন্দের মধ্যে পার্থক্য গুলো বোঝাতে হবে, এবং সেসব বিষয়ে তার মতামত বিবেচনা করতে হবে। তাকে নিজস্ব ব্যাক্তিত্ত বোধ এবং রুচি বোধ তৈরি করতে সাহায্য করতে হবে। নতুন কিছু জানার আগ্রহ কে উৎসাহিত করতে হবে এবং শিক্ষাকে আনন্দময় করে তুলতে হবে। দয়া করে আপনার সন্তান কে অসম প্রতিযোগিতার মাঝে ঠেলে দেবেন না। তার শৈশব এবং কৈশোরের আনন্দময় সময়টুকু কেড়ে নেবেন না। প্রত্যেকটি শিশুর সুস্থভাবে বেচে থাকার অধিকার রয়েছে। প্রতিটি শিশুকে সুশিক্ষা এবং সুস্বাস্থ্য নিয়ে বেড়ে উঠতে দিন। তাদের পৃথিবী হোক ভয়হীন ও বাধাহীন। অবাধে বিচরন করুক তারা চিন্তার রাজ্যে।
এখানে সুন্দর ভাবে ধরমিয় সম্প্রিতি নস্ট করার প্রায়াস আছে।
বাংলাদেশের এমন কোন স্কুল নাই যেখানে একজন মুসলিম শিক্ষক হিন্দু ছাত্রকে কটাক্ষ করে কিছু বলেছে।
তা ও সবার ছোট কোমল মতি বাচ্চা কে।
“এমন অনেক বাবা কে দেখেছি যারা শিক্ষকের কাছে ছেলে কে নিয়ে বলে, “স্যার ছেলে কে দিয়ে গেলাম। পড়া না পারলে ইচ্ছামত পিটাইবেন। মাংসগুলা আপনের, হাড্ডিগুলা খালি আমার কাছে পাঠাইয়া দিয়েন”। সেইসব বাবা মা’রা কখনো জানতে পারবেন না যে তারা তার আদরের সন্তান টির কি পরিমাণ ক্ষতি করলেন।”
লেখাটা পড়তে পড়তে অতীত দিনের স্মৃতি মনের পর্দায় ভেসে ওঠে এবং এরকম দূভার্গ্যের জন্য শুধুমাত্র ভাগ্যকেই দোষ দিয়ে স্বান্তনা খুঁজি। তবে মনে প্রশ্ন ভেসে ওঠে অভিভাবকেরা কেন সন্তানটির ক্ষতির দিকটি বুঝেন না? কেন? কেন?
এ ক ম ত। এই কুপমুন্ডুকতাকে স্কুল ও পরিবার থেকেও অনেক সময় উস্কে দেওয়া হয়। অন্য ধর্মকে হেয় করতে শেখানো তো বটেই।
প্রাণবন্ত লেখাটির জন্য নাদিম আহমেদকে ধন্যবাদ। (Y)
শিশু শিক্ষা নিয়ে অনেকদিন আগে মুক্তমনায় একটি লেখা লিখেছিলাম : আমাদের শিশুরা কী পড়ছে?
পুনশ্চ:
অনলাইনপত্র গুরুচণ্ডালি ডটকম-এ শিশু শিক্ষা নিয়ে দীর্ঘ আলাপ-চারিতা চলছে। সেখানে এই লেখাটর লিংক তুলে দিলাম। আগ্রহীদের গুচ’র আলাপ-চারিতায় যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাই।
শিশুশিক্ষা ও বিদ্যালয় অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যত
(F)
সবচেয়ে ভাল হয় যদি স্কুল থেকে ধর্মশিক্ষা তুলে একটি নৈতিকতা শিক্ষার সিলেবাস পড়ান হয় । কিন্তু সে আশা এদেশে সুদূর নাহোক -দূরপরাহত । লোকায়ত ইসলামের ধারাটি – যা গ্রামদেশে একদা ছিল – উদার ইসলামের পীর-ফকির-দরবেশ তাও নেই। আউলবাউলদের যে সমন্বয়ধর্মী সামাজিক সহাবস্থান তাও আজ অন্তর্হিত ।
ভালো লেখা। এইরকম কিছু শিক্ষকের স্মৃতি সবারই থাকে, যেগুলো সেই সময়ে ট্রমা সৃষ্টি করে এবং পরবর্তীকালে দুঃস্বপ্ন হিসাবে ফিরে আসে মাঝে মাঝে। ভাল ব্যাপার, কিছুদিন আগে পশ্চিমবঙ্গ (নাকি ভারত) শারীরিক শাস্তি নিষিদ্ধ করেছে, তবে তাতে যে সবসময় কাজ হয়েছে তা নয়।
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে মানুষের মধ্যে ভাবনাচিন্তার অভাব খুব প্রকট। এর মধ্যে লেখককে ধন্যবাদ যে তিনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছেন।
আমি দুবছর আগে বিএড কমপ্লিট করি। বিএড না পড়লে শিক্ষা কি কেন, কিভাবে, কতটুকু ইত্যাদি বিষয় জানতামই না। এখন বুঝতে পারি আমাদের শিক্ষকরা কেন ছাত্রদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। প্রাইমারি শিক্ষকরা প্রত্যেকেই সিইনএড কমপ্লিট করে, তারপরও তারা ছাত্রদের সাথে কেন খারাপ ব্যবহার করে তা কি আপনারা কেউ জানেন? হয়ত জানেননা। আমি অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, আসলে আমাদের শিক্ষকরা কেউই সত্যিকার অর্থে সিইনএড কিংবা বিএড পড়েন না। তারা চাকুরিতে বেতন বাড়াবার জন্য সার্টিফিকেট পাবার জন্য সিইনএড কিংবা বিএড পাশ করার জন্য গাইড বইয়ের সাজেশন অংশটুকু মুখস্ত করেন। সত্যিকারের পড়াশোনা বলতে যা বোঝায়, তা কেউ পড়েন না। এটা ১০০ ভাগ সত্যি। ভদ্রতা করে হয়ত বলা যায় ৯৯.৯ ভাগ।
উপরে মন্তব্যে নাদিম আহমদ বলেছেন
আমি নিশ্চিত নই কথাটা কতটুকু গ্রহণযোগ্য (সত্যি-মিথ্যা জানিনা)। কারণ প্রাগমাটিক শিক্ষাব্যবস্থা হল প্রয়োগমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা। আর এই শিক্ষাই তো তাদেরকে উন্নত করেছে তাইনা? কিন্তু আমরা কেন ব্যর্থ হলাম?
লেখককে মুক্তমনায় নিয়মিত লেখার জন্য উৎসাহিত করছি। তিনি সত্যিই আমার চিন্তাকে নাড়িয়ে দিতে পেরেছেন।
আপনার এই লেখের জন্য আপনাকে শাস্তি দেয়া দরকার। কারন আপনি আমাদের বাল্য কালের সৃতি উস্কে দিয়েছেন, আমাদের অনেককে কাদিয়েছন। আপনি আমাদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, শিক্ষক ছাত্রের সহিত, পিতামাতা সন্তানের সহিত, বয়স্করা শিশুদের সহিত কি আচরণ করতে হবে। আমাদের সমাজের একটি জটিল সমস্যা কত সুন্দর ও প্রানব্জজল ভাষায় তুলে ধরেছেন। তার শাস্তি স্বরূপ আপনাকে নিয়মিত মুক্তমনায় আসতে হবে এবং সমাজের আরও অনেক সমস্যা তুলে ধরে আমাদের মত সাধারণ পাঠকদেরকে আলোকিত করতে হবে।
মুক্তমনায় আপনাকে স্বাগতম। (F) (F)
আপনার জন্য রইল নিরন্তর শুভেচ্ছা।
@ওমর ফারুক,
আপনার মধুর শাস্তি আমি মাথা পেতে নিলাম। যেদিন থেকে মুক্তমনার সন্ধান পেয়েছি, সেদিন থেকে মুক্তমনা আমার প্রাণ। আমি চাইলে ও মুক্তমনা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারবনা।
আপনাকে ধন্যবাদ।
এটা খুবই দু:খজনক যে একদম ছোটো বয়সেই বাচ্চাদের সৃজনশীলতা ধ্বংস করে দেয় কিছু শিক্ষক। আবার সংখ্যায় অল্প হলেও এমন কিছু শিক্ষক আছেন যাদের আজীবন শ্রদ্ধা করা যায়।
মুক্তমনায় স্বাগতম,আশা করি নিয়মিত লিখবেন।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
ধন্যবাদ আপনাকে। লিখার চেষ্টা করব।
ওহ, দুঃখিত, আমি তামান্না ঝুমু নই। আমি তামান্না আহমেদ। নামের প্রথম অংশ লিখে ফেলেছি। সম্পূর্ণ নাম লিখে দেবার জন্য কোন এডিট অপশন পেলাম না। তাই মন্তব্য হিসেবেই জানালাম।
মুক্তমনায় আপনাকে স্বাগতম। আমি সাধারণত মন্তব্য করিনা। কিন্তু আজকে আপনার লেখা দেখে মন্তব্য করছি। আমাদের দেশের স্কুলসমূহে ১৯৩৪ (সম্ভবত) সাল থেকে প্রাগমাটিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু আছে। একই শিক্ষা ব্যবস্থা ইউরোপ আমেরিকায় তার কিছুদিন আগে থেকে এবং জাপানে ১৯৫৩-৫৫ সাল থেকে চালু করা হয়। একই শিক্ষাব্যবস্থা চালু থাকার পরও তারা এগিয়ে গেছে আর আমরা পিছিয়ে গেছি। আমার কাছে মনে হয় ধর্মের প্রবল প্রতাপের কারণে আমাদের দেশের এই দুর্গতি। আরও দুঃখজনক হল যে আমাদের দেশ যারা শাসন করেছে (বিদেশী ও দেশি মিলে) তারা সবাই ধর্মকে শাসনব্যবস্থা থেকে বাদ দিতে পারে নি। বঙ্গবন্ধু চেষ্টা করেছিলেন বোধহয়, কিন্তু তিনিও দেশ স্বাধীন হবার পরপরই ইসলামিক দেশগুলোর কাছে ধর্ণা দিতে গিয়েছিলেন। তারপর তো তিনি মারাই গেলেন। তো ধর্ম প্রধানত ইসলাম ধর্ম যতদিন আমাদের বাংলাদেশে তার থাবা বিস্তার করে থাকবে, ততদিন দুর্ভাগ্য থেকে আমাদের মুক্তি নেই, না শিক্ষায় না রাজনীতিতে।
আপনার সচেতনতার জন্য ধন্যবাদ। পদ্মফুল তো কাদামাটিতেই ফোটে। দেশে ধীরে ধীরে মুক্তচিন্তার মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। পরিবর্তন আসবেই।
@তামান্না,
এই শিক্ষাব্যবস্থা ইংরেজরা চালু করেছিল মুলত তাদের অনুগত কর্মচারী সৃষ্টির লক্ষে। ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান হওয়ার বহু বছর পর ও আমরা বেরিয়ে আসতে পারিনি তা থেকে।
আপনি ঠিকই বলেছেন, উন্নত দেশ গুলো অনেক আগেই ধর্মকে ছুড়ে ফেলেছে। কিন্তু আমাদের দেশে ঔপনিবেশিক শাসকরা ধর্ম কে ধংস করতে চায়নি। কারন ধর্মের আভরন আমাদের চোখের সামনে থেকে সরে গেলে আমারা নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠবো। আর এখন আমরা নিজেরাই ধর্মের লালন করে নিজেদের সর্বনাশ করছি।
আমি যখন ইসলামিক ইউনিভার্সিটি তে পরতাম তখন দেখতাম যে, কিছু ইসলামিক স্যার অন্য ধর্ম সম্পর্কে (বিশেষ করে হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে) উল্টা পাল্টা কথা বলতো। একদিন এক স্যার বলে উঠল ,তোমরা মন্দির,গিরজা র সামনে যাবা না, ওখানে না কি শয়তান থাকে। এমন কি অন্য ধর্ম সব বানানো ধর্ম আর ইসলাম হইল একমাএ সত্য ধর্ম । এই সকল উল্টা পাল্টা কথা বলার কারনে ক্লাসের ছাত্ররা বিভিন্ন রকম কু মন্তব্য করতো , দেখতাম রাগের মাথায় উল্টা পাল্টা গালি-গালাজ করতো। আর আমি অনেক হাসতাম। :lotpot: :hahahee:
বাংলাদেশের শিক্ষাব্যাবস্থা খুবই সেকেল আর খারাপ হলেও এটা কিন্তু খুবই জনপ্রিয় ব্যবস্থা। যারা তাদের শিক্ষার সর্বশেষ পর্যায় শেষ করে কর্মজীবন শুরু করে, তাদের কাছে কিন্তু এর জুরি নেই।
@Anonnymous,
শিক্ষার সর্বশেষ পর্যায় তো অনেকেই সহজে উতরে যায়। কিন্তু নিজের পছন্দ মত কর্মজীবন বেছে নেওয়ার সৌভাগ্য কজনের হয়? তবে যারা এই জুয়া খেলায় জয়ী হয় তাদের কাছে এটার খারাপ দিকটা ধরা পড়বে না। এক্ষেত্রে একজনের কথা মনে পরছে। আমাদের ক্লাসের ফার্স্ট বয়, যে কখনও দ্বিতীয় হয়নি। সে পড়াশুনা শেষ করার সাথে সাথে ই একটা চাকরি পেয়েছে তার পছন্দমত। কিন্তু এলাকায় ভালো ছাত্র হিসেবে তার যে সুনাম ছিল, সেটাকে ব্যবহার করে একটা কোচিং সেন্টার ও খুলে বসেছে। সেখানে দলে দলে ছাত্ররা ভিড় করছে। তো শিক্ষা ব্যবস্থা কিছু মানুষের জন্য টাকা উপার্জনের রাস্তা খুলে দিয়েছে, তারা এর বিরোধিতা করবে কেন?
নাদিম@
পড়ে খুব খারপ লাগলো।মনে পড়ে গেল স্কুল জীবনের সৃত্মি। :guru: :-Y
লেখাটা খুব ভাল হইয়ছে।
(Y) (F) (Y) (F) (Y) (F) (Y) (F) (Y) (F) (Y)
@নেটওয়ার্ক,
ধন্যবাদ (H)
একেবারে সঠিক পর্যবেক্ষণ। তবে শিশুরাও তাদের বাসায় শোনা কথাবার্তা অন্য ধর্মাবলম্বীদের উপর চাপিয়ে দেয় না, এমন নয়, বরংচ আমি এটারই শিকার হয়েছি বেশি। বাংলাদেশের এমন একটি অঞ্চলে আমার শৈশব কেটেছে, যেখানে ধর্মীয় সংকীর্ণতা অত্যাধিক এবং মুক্তচিন্তা দণ্ডনীয় অপরাধ। বিজ্ঞানবিষয়ক প্রতিষ্ঠানের নামকরণও এখানে হয় ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের নামে। তো এহেন জায়গায় শৈশব-কৈশোর অতিক্রান্ত করার বড় একটি অভিশাপ হলো, ধর্ম নিয়ে ক্রমাগত বিভিন্ন ধরণের কটুক্তির শিকার হওয়া। বিদ্বেষমুলক মনোভাবের শিকার যে কত হয়েছি, তার ইয়ত্তা নেই।
এর সাথে প্রথম পরিচয় হলো সেই ক্লাস ওয়ানেই। একবার এক বন্ধু ঘোষণা করলেন, দোজখে যাব আমি। ভীত হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম কেন? জবাব এলো, মুসলমান নই তাই। কাতর হয়ে জানতে চাইলাম, কোন প্রতিকার আছে কি না। বিজ্ঞ বন্ধুটির উত্তর, এখনই কলেমা পড়ে মুসলমান হয়ে যেতে হবে। এতো বড় পদক্ষেপ নিতে পারলাম না তাৎক্ষণিকভাবে, বাসায় গিয়ে প্রচুর অশ্রুজল সহকারে জানালাম নিজের নিশ্চিত নরকগমনের কথা। এটুকু মনে পড়ে, আমাকে শান্ত করতে প্রচুর বেগ পেতে হয়েছিল।
ক্লাস থ্রি থেকে স্কুলে ধর্মশিক্ষা পড়ানো শুরু হয়। আমার কিছু বন্ধুর প্রিয় কাজ ছিল গোপনে ধর্মশিক্ষা বই কেড়ে নিয়ে বিভিন্ন অলংকরণকে বিকৃত করা এবং পাশে ইচ্ছামত মন্তব্য লিখে দেয়া। আমাদের ধর্ম বইয়ে হাস্যকর কথাবার্তা লেখা, এ কথাও বড় কম শুনিনি। আরেকটা কাজ বন্ধুরা করতে ভালোবাসতেন, অন্যকিছু বলে গোমাংস খাইয়ে দেয়া এবং খাওয়ার পর তালি দিয়ে মুসলমান হয়ে গেছি বলে উল্লাস করা।
কৈশোরে এরকম উপদেশ পাওয়া শুরু করলাম: আমাদের ধর্মগ্রন্থগুলান পুরাই ফাউল, এখনও সময় আছে অমুক ধর্মগ্রন্থ যেন পড়ে দেখি – পুরাই বিজ্ঞানময় ইত্যাদি । প্রথম অংশের সাথে একমত ছিলাম নিজস্ব যুক্তিবোধ থেকেই, আর দ্বিতীয় অংশ সম্পর্কেও প্রথমোক্ত গ্রন্থেরই সমান মূল্যায়ন হলো যখন পড়ে দেখলাম ঐ বিজ্ঞানময় কিতাব।
বড় হওয়ার সাথে এ ধরণের কথাবার্তা গা সওয়া হয়ে উঠতে থাকে। কিন্তু এখনও মনে পড়লে তিক্ততায় ভরে ওঠে মন।
@আকাশ চৌধুরী,
আপনার মতো আরও অনেকে রয়েছেন যারা ধর্মীয় বাড়াবাড়ির স্বীকার। শুধু ছোটদের মধ্যে নয়, বড়দের মধ্যেও অন্য ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ লক্ষ্য করা যায়। ছোট বেলায় বাবা মা হিন্দু বাড়িতে যেতে নিষেধ করতেন। তাদের হাতে খাবার খেতে নিষেধ করতেন। ধর্মীয় অনুশাসন না মানলে বলতেন তুই হিন্দু হয়ে যাবি। আমি ভাবতাম পাশাপাশি আমরা বসবাস করছি এতদিন ধরে, অথচ কেন আমরা একদল আরেকদল কে কোন কারন ছাড়া অচ্ছুৎ মনে করি ?
আপনাদের সবাইকে অশেষ ধন্যবাদ আমার লেখাটা পড়ার জন্য। মুক্তমনায় এটাই আমার প্রথম লেখা। মুক্তমনার নিয়মিত লেখকদের তুলনায় আমার জানার পরিধি এবং বিশ্লেষণ ক্ষমতা অনেক অনেক নিচে। তবুও লেখাটা এখানে দেখে খুব ভালো লাগছে। আপনাদের সুন্দর মন্তব্য গুলো পড়ে আরও লেখার উৎসাহ পাচ্ছি।
@নাদিম আহমেদ,
এ রকম লেখাই আমরা (স্বল্প শিক্ষিত সাধারণ মানুষেরা) চাই, যে লেখা পড়তে বুঝতে ডিকশনারি লাগেনা। আমাদের রাবীন্দ্রিক, সেক্সপেরিয়ান উচ্চমানের কঠিন ভাষার দরকার নাই। একটা সামাজিক সমস্যা আপনি সুন্দর সহজ ভাষায় তোলে ধরেছেন, পাঠক স্বানন্দে তাদের অভিমত অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করছেন, এটাই আমাদের পরম পাওয়া, এই তো লেখালেখির স্বার্থকতা।
মুক্তমনায় আপনাকে স্বাগতম, আর প্রথম লেখাটির জন্যে অভিনন্দন জানাই- (Y) (F) (D)
নাদিম@
১ টা জিনিস লক্ষ্য করেন , বাচ্চারা যখন kinder Garden এ পড়ে ,তারা তো ব্যাগ নিয়ে স্কুলে যায়।
আপনারা কি বলতে পারেন তাদের ব্যাগ এর ওজন কত Kg?
যখন ১ টা বাচ্চা six to ten এ পড়ে তখন তার Subject হয় ১১ টা।
আমি এই কষ্ট ক্লাস ১ থেকে ১০ পয্ন্ত করছি।
@নেটওয়ার্ক,
বাচ্চাদের শরীরের চেয়ে তাদের ব্যাগের শরীর কে বড় মনে হয়।
আমার ছোটভাই ক্লাস সিক্স এ পড়ে। ওর বইএর সংখ্যা সতের। আরবি সাহিত্য নামে একটা বই ও আছে। বোর্ড বই এর বাইরে স্কুল থেকে আরও একগাদা ফালতু বইএর লিস্ট দেওয়া হয়।
সন্তানের সবচেয়ে বিশ্বাসের আর আস্থার মানুষেরা তাদের মা বাবা, পরিবারের অন্য সব কাছের মানুষেরা। আর তারাই করে ভয়ঙ্কর এই শিশু নির্যাতন। সম্ভবত বেশীর ভাগই নিজের অজান্তেই। একবার ভেবেও দেখেনা শুধু অন্ধ বিশ্বাসের ওপর ভর করে একটি শিশুকে কি রকম মগজ ধোলাই দেয়া হচ্ছে।
আপনার লেখায় বড়দের, মা বাবার দায়বদ্ধতার কথার উল্লেখ দেখে ভালো লাগলো। নীচের কথাগুলোই লেখাটার প্রান বলে মনে হয়েছেঃ
শুভেচ্ছা।
@কাজী রহমান,
আপনি ঠিকই বলেছেন। মা বাবাই আমাদের ভরসার শ্রেষ্ঠ জায়গা। সচেতন ভাবে কোন বাবা মা তার সন্তানের ক্ষতি করতে চায় না। তারা অশিক্ষা,কুশিক্ষা আর অসুস্থ সমাজের পচে যাওয়া নিয়ম গুলোর স্বীকার। অবচেতন মনে তাই তারা প্রতারনা করে চলেছেন নিজের সন্তানের সাথে।
অশেষ ধন্যবাদ
সমাজে শিশুদের ছোটবেলা থেকেই যেভাবে চিন্তার জগতকে বিশ্সাস এর দেয়াল দিয়ে সংকীর্ণ করে দেওয়া হয় তারপর অনেকেই এই বিস্সাসের দেয়াল টপকে বেরোতে পারেনা , শিক্ষকরাও এর ব্যতিক্রম নয় [img]https://lh5.googleusercontent.com/-3erlv2lsov4/UBISv7W_7LI/AAAAAAAAAbs/sfcvghYUZDA/w832-h501-k/walls%2Bof%2Bfaith.jpg[/img]
@শেষাদ্রী শেখর বাগচী,
আপনার বিশ্লেষণটা অসাধারণ লাগলো। আসলেই একটা দুষ্ট চক্রে আবর্তিত হচ্ছে আমাদের মানসিকতা। এর থেকে বেরিয়ে আসার পথ আমাদের খুজতে হবে।
খুব ভালো লেগেছে। স্কুলের অনেক ঘটনা মনে পড়ে গেল। মানসিকতার পরিবর্তন খুব একটা হয়নি আজো। ধন্যবাদ।
@অসীম,
আপানকেও ধন্যবাদ।
আপনার মত আমার ও একই অবস্থা হয়েছিল. কিন্তু শিক্ষক জাতির উপর আমার আস্থা হারিয়ে যায় নি. আমার মা ও একজন শিক্ষিকা. উনি আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন যুক্তির পথে চলতে. উনার কারনে আজ আমি তথাকথিত নাস্তিক. অবাক করার মত বিষয় উনি ধর্মের আচার ব্যবহার পালন করলে ও আমাকে আমার নাস্তিকতার পথ থেকে সারানোর চেষ্টা ত করেন নি বরঞ্চ প্রেরনা দিয়েছেন. আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু আমার মা. মা স্কুলের স্টুডেন্টদের ও ভাল বন্ধু. একটা উদাহরন দেই. আমার মা প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করেন. অঙ্ক ও সাইন্স পড়ান. প্রাইমারি স্কুলের ছোট ছোট শিশুরা আমার মায়ের গাল ধরে আদর করে দেখলে মনে হয় এক শিশু আর এক শিশুকে আদর করছে. হাই স্কুলে আমি খুব খারাপ ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি. তামান্না ঝুমু আপুর একটা পোষ্ট এর কমেন্ট এ কিছুটা বলেছি ও. কিন্তু এমন ও কিছু শিক্ষক ছিলেন যাদের এখনও আদর্শ মেনে চলি. ভার্সিটিতে ও এমন টিচার ছিল যারা না থাকলে হয়ত কখনো বিশ্বাস করতে পারতাম না শিক্ষক ও ছাত্র দের মাঝে সম্পর্ক এত দারুন হতে পারে. আমি সবসময় একজন শিক্ষক হতে চেয়েছি. এমন একজন শিক্ষক যে সত্যিকার জ্ঞান শিক্ষা দিবে তার ছাত্র দের বন্ধু হয়ে.
@HuminityLover,
আপনি আসলেই ভাগ্যবান। আপনার মায়ের মত মা সবার পাওয়া উচিত।
তথাকথিত নাস্তিক মানে কি?
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনেক বন্ধুসুলভ হয়। কিন্তু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার কারনে সে সৌভাগ্য ও আমার হয়নি। এখানে শিক্ষক রা অধিকমাত্রায় বাণিজ্যিক।
@নাদিম আহমেদ, হ্যা আমি আসলেই ভাগ্যবান। কিন্তু আমার বাবার মত বাবা যাতে কেউ না পায় সেই কামনা করি.
তথাকথিত নাস্তিক মানে অন্য সাবার চোখে আমরা নাস্তিক. কিন্তু আমি মনে করি আমরা নাস্তিক না. আমারা সঠিক পথের যাত্রী. আমরা যুক্তিবাদী.
আমি ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র. হয়ত আমাদের ভাগ্য এক্ষেত্রে ও ভাল ছিল.
ব্যাক্তিগত ভাবে আমার মনে হয় প্রায় সকল শিশু তাদের পিতা,মাতার দ্বারা এ ধরনের মানসিক ধর্ষণের শিকার।
@মহন,
আপনি যথার্থ বলেছেন।
স্বাগতম। আপনার লেখা আমার শৈশব কৈশোরের সাথে পুরোপুরিই মিলে যায়। মনে হচ্ছে আপনি আমার শৈশব লিখেছেন! বাসায় এবং স্কুলে মারের উপরেই আমার সেই সময়টা কেটেছে।
@তামান্না ঝুমু,
ধন্যবাদ
আমি শারীরিক শাস্তির চেয়ে মানসিক শাস্তি বেশি পেয়েছি। সত্যি কথা বলতে আমার শৈশব কৈশোরের কোন আনন্দময় স্মৃতি আমার মনে পড়ে না।
মুক্তম নায় স্বাগতম। (F)
স্কুলে মার খাওয়া আমাদের দেশের ছাত্র জীবনের সাধারণ ঘটনা বরং মার না খাওয়াই অস্বাভাবিক।
পড়ার না শিখার জন্য মার তো খেয়েছি, চুল লম্বা হওয়ার জন্য মার খেয়েছি, এমন কি মার খেয়েছি শার্টের নীচে গেঞ্জি না পরার অপরাধে। সাথে এক শিক্ষকের বেত হাতে কত দৌড়ান যে খেয়েছি স্কুল ছুটির পর ফুটবল খেলার অপরাধে সে আর বলতে! ফুটবল ছিল যেন তাঁর দু’চোখের বিষ। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করতে হয় দাড়ি আর টুপি ছিল স্যারের নিত্য সঙ্গী। স্যারকে বেত নিয়ে আসতে দেখলেই আমরা ছুটে পালাতাম আর স্যারও পিছে পিছে ছুটত বাতাসে বেত নাচিয়ে। অনেকটা চোর পুলিশ খেলার মত। আমাদের ধরতে না পেরে স্যার রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে গজগজ করতে করতে প্রস্থানের পর আমাদের চোখমুখ থেকে টিকরে বেরুত স্যারকে দৌড়ে পরাজিত করার বিজয়ের হাসি।
তবে সব শিক্ষক কে এক পাল্লায় মাপাতে গেলে বড্ড ভুল হবে। এতগুলো বছর পেরিয়ে গেলেও কিছু কিছু স্যার এখনো মনের গভীরে আসন পেতে রয়েছেন তাঁদের শিক্ষক সুলভ ব্যবহারে। তাঁদের কর্ম দক্ষতায়, তাঁদের আচরণে। অতীত ইতিহাসের দায়বদ্ধতা থেকে এই দু’একজন অন্তঃপ্রাণ শিক্ষকরাই আজো বহন করে চলেছেন সমগ্র শিক্ষক জাতির শ্রদ্ধার ভার।
@রাজেশ তালুকদার,
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
।
আমি বেশিরভাগ শিক্ষকের কথা বলেছি। দু একজন ভালো শিক্ষক আমি ও পেয়েছি কিন্তু তাদের সংখ্যা এতটাই কম যে, খারাপ শিক্ষক দের কথাগুলো বার বার চলে আসে। যেমন স্কুল জীবনের কথা চিন্তা করলেই প্রথমেই শিক্ষকদের প্রহারের দৃশ্য গুলো প্রথমে মনে আসে।