একটা সুখবর দিতে এলুম। উচ্চ আদালত একটা চমৎকার রায়ে বর্তমান বাঙলাদেশের সবচাইতে বড় বস্তি, কড়াইল বস্তি যেটা কিনা বালের থুক্কু কালের কন্ঠ পত্রিকার বয়ানেঃ বর্তমানে গুলশান-বনানীর মতো অভিজাত এলাকার বিষফোড়া হয়ে দেখা দিয়েছে। উচ্ছেদের রায় দিয়েছে(এখানে সম্মিলিত অভিজাত জনতার করতালির শব্দ হবে)। কারন কী? কারন হল এগুলি সরকারি খাস জমি। সরকার বলছেঃ “১৭০ শতাংশের মধ্যে ৮০ শতাংশ বিটিসিএলের মালিকানাধীন ও ৪৩ শতাংশ পিডব্লিইডি’র এবং বাকি জমি আইসিটির।”
সূত্রঃ http://newsmedia24.net/?p=10353
সরকারী কথা আমরা সাধারন আমজামকাঁঠালজনতা সবসময় বিশ্বাস করি এখনও করলাম। কারন সরকারের পিতৃদেবতা এবং মাতৃদেবী সন্তান উৎপাদনের পাশাপাশি ভূমি-জমিও যে বমি করে উগরে দিতে পারে না এমন কোন প্রমান আমাদের হাতে নাই। যুক্তির খাতিরে ধরে নিতে হচ্ছে, কোন এককালে হয়ত এই জমি সরকারের সহোদর ভ্রাতা(কিংবা ভগিনি) হিসেবে প্রসবিত হয়েছিল। কালে কালে অনেক দেখেছি, এটা তেমন কিছু নয়।
যাই হোক, কথা হল বস্তি উচ্ছেদ করে ঢাকার একটি অভিজাত এলাকায় সস্তি ফিরিয়ে আনার যে প্রচেষ্টা চলছে তাকে আমরা সাদরে গ্রহন করছি। উচ্ছেদ করতে গিয়ে তারা ঘুমিয়ে থাকা দুটো শিশু-আবর্জনাকে পৃথিবী থেকে উচ্ছেদ করতে সক্ষম হয়েছে বলে কোন কোন সংবাদ সূত্রে খবর পাওয়া গেছে। পাঠক চিন্তা করে দেখুন, ভবিষ্যতে এই দুটো হয়ত মাদক ব্যবসায়ী হত, হতে পারত ছিনতাইকারী, করত রাহাজানি, সন্ত্রাসী। পরবর্তীতে ঝামেলা না করে কিন্তু তারা এখনই নিকেশ করে দিয়েছে। প্রিভেনশন ইজ বেটার দ্যান কিওর!! মোক্ষম পদক্ষেপ(পড়ুন হস্তক্ষেপ কিংবা বুলড্রোজারক্ষেপ)। আমরা সরকারকে সাধুবাদ জানাই(এখানে আস্তে আস্তে করতালি হতে পারে, তবে মোটেই জোড়ে নয়)।
কিছুদিন আগে এমনই আরেকটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়ে দেশের আপামর টয়োটাপাজেরো ব্যাবহারকারী জনতার আস্থা এবং করতালি কুড়িয়েছিল সরকার। সেসময় গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট থেকে সদরঘাট অবধি সমস্ত হকারদের(হ্যাকার নয় হকার) উচ্ছেদ করা হয়েছিল। ঢাকা আস্তে আস্তে নির্মল বস্তি-হকারমুক্ত সস্তিযুক্ত নগরীতে পরিনত হতে চলেছে। যদিও এক হকার টিভিতে বলেছিল আমার ইনকামের টাকায় আমার সংসার চলে। এখন কি আমি চুরি করুম? কী মুসিবত? তুই কী করবি সেটার জবাব কি আমরা দেব? আমরা কি তোকে এখানে থাকতে বলেছি?
আমরা আপাতত হকার রেখে বস্তির অস্থিতে ঢুকি। সমস্যাটা হয়েছে ঐ বস্তিবাসী ফকিন্নিগুলোকে নিয়ে। এরা জায়গা ছেড়ে মোটেই যেতে চাচ্ছে না। যেনো ওদের বাপের জায়গা!!!!! ওরা এটাও জানে না, এই জমিগুলোর জন্ম সরকারের বাবার ঔরসে। আর সরকার চাওয়া মাত্রই ঐ জমি ওদেরকে দিয়ে দেবে?? সরকার কি এতই বোকা?? তোরা কি সরকারকে নির্বাচনের সময় গাদাগুচ্ছের টাকা দিস?? এটাকি ইন্ড্রিয়ালিস্টের আবদার পেয়েছ যে বলবে আর পা চেটে দেবে? আফোসোস, এই নিরক্ষর অসভ্য ফকিন্নিগুলোকে নিয়ে। এরা না বোঝে ডিপ্লোম্যাসি না বোঝে কিছু। দেখুন ফকিন্নিগুলোর কান্ড দেখুনঃ
কড়াইল বস্তিবাসীর দাবী
১) কড়াইল বস্তিবাসীর দাবী “মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য” পূর্নবাসন ছাড়া বস্তি উচ্ছেদ চলবে না।
২)মহামান্য হাইকোর্টের লেকপার বস্তি উচ্ছেদ রায়কে সন্মানের সহিত শ্রদ্ধার সাথে সন্মান জ্ঞাপন করতেছি।
৩) ১৫-০১-০৯ তারিখে মহামান্য হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী পূর্নবাসন ছাড়া কড়াইল বস্তি উচ্ছেদ চলবে না।
৪) কড়াইল বস্তিবাসী বসবাসরত (তিন লক্ষ মানুষ) সকলের প্রাণের দাবী পূর্নবাসন করে বস্তি উচ্ছেদ করুন।
৫) কড়াইল বস্তিতে আমরা প্রায় তিন লক্ষ লোক ত্রিশ বছর যাবৎ বসবাস করিয়া আসেতিছি।
৬) বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইস্তেহার অনুযায়ী পূর্নবাসন ছাড়া বস্তি উচ্ছেদ চলবে না।
নিবেদক,
কড়াইল বস্তিবাসী সর্বস্তরের জনগণ
কেন বাবারা, বস্তির জায়গাতো তোদের নয়! তাহলে কেন ছাড়তে চাস না? ওরা কী মনে করে কে জানে। আল্লাহ মালুম! চায় পুনর্বাসন। শ্বশুর বাড়ির আবদার পেয়েছে আর কী।
আরো দেখুনঃ
একটা বানান পর্যন্ত ঠিকভাবে লিখতে পারে না তারা আবার আসছে দাবী নিয়ে। সরকারের কাছে একটা দাবী নিয়ে গেলে অন্তত বানানটা ঠিকভাবে লেখ! আসুন এই অশিক্ষিত, নিরক্ষর, বর্বর, সন্ত্রাসী, চোরাকারবারী, পতিতার দালাল, মাদক ব্যাবসায়ী এবং সবচেয়ে যে অপরাধে ওরা বেশী অপরাধী সেই দরিদ্রতার জন্য, সেই হ্যাডমলেসনেসের জন্য ওদেরকে সরকার যাতে গুলি করে হত্যা করে এই জন্য মানব বন্ধন করি। দরকার হলে বিএসএফকে ভাড়া করে নিয়ে আসি। আমাদের নগরীর আভিজাত্য রক্ষার জন্য আমাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। নো কম্প্রোমাইস।
একটা কথা একটু ভেবে দেখুন। যেখানে সরকার দেশের জনগনকে তাদের মাসতুতো, পিসতুতো, পাত্তিতুতো, এলাকাতো, ভাই কিংবা বাবাদের জন্য উচ্ছেদ করে নগরী রক্ষা প্রকল্পে অথচ যাদের বাসস্থানের ব্যাবস্থা করার কথা সরকারের, যাদের খাবার দেয়ার কথা সরকারের, যাদের পড়ালেখার খরচ করার কথা সরকারের। সেই দেশের সংবিধানের উপরে যদি আমি ছ্যাড়ছ্যাড় করে মুতে দিতে চাই তাহলেই টয়োটামার্সিডিজপাজেরো চড়ে হাওয়া খাওয়া, ঘরে বসে নেটে ব্লগিং করা আমজামকাঁঠালজনতার পোদ জ্বলে ওঠে।
কাল রাতে বৈশাখী টিভিতে একটা টকশোতে দেখছিলাম একটি আনখশির কুকুর কীভাবে বস্তিবাসী এত তাড়াতাড়ি সংগঠিত হতে পারল সেটা নিয়ে ঘেউ ঘেউ করে সন্দেহ প্রকাশ করে যাচ্ছে। সাথে সরজমিনে ঘাস খেয়ে আসা দুটো গাধাও বলতে পারছিল না কীভাবে এত তাড়াতাড়ি রাজপথে নেমে অবরোধ করতে পারল! কুই কুই করে উপস্থাপকটি কোন বিশেষ মহলের প্ররোচনায় এটি হতে পারে বলে মতামত দিচ্ছে। আমি বলতে পারব না এটা কি বাঙালির দোষ নাকি দুনিয়ার আর সমস্ত মানুষের মাঝেও এমন শুয়োর কুকুর থাকে। তবে এটা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি যে আনুপাতিক হারে সংখ্যাটা বাঙলাদেশেই বেশী হবে।
সাগর রুনির হত্যা মামলা নিয়ে এই প্রতিবেদনকারীরা যে সাহসী ভুমিকা রেখেছে এবং রাখছে সেই আওয়াজের কোন চিহ্ন এখন বস্তিবাসীদের পক্ষ নিয়ে এই সংবাদব্যবসায়ীদের কণ্ঠে কলমে দেখলাম না। বিষয়টা হয়ত এমন হতে পারে সাগর-রুনি ফ্লাটে বসবাস করত আর এই নিরীহ মানুষগুলো, হত্যাকৃত শিশুদুটো বাস করে বস্তিতে। সাগর-রুনি অক্ষর জ্ঞ্যান সম্পন্ন ছিল আর এরা সম্পন্ন মানুষ নয়। আবার এমনও হতে পারে স্বীয় ব্যবসার পরিনতি দেখে একটু কম্পন ধরেছিল অস্থি মজ্জায় যেটা বস্তিবাসীর উচ্ছেদে ধরছে না। ঘটনা যাই হোক, সত্য হল এরা মানুষ আর ওরা দরিদ্র মানুষ। যার জন্য হ্যাডম নাই এবং যার জন্য এদেশে ওদের বেঁচে থাকার অধিকার নাই।
আসেন গলা মিলিয়ে বলি “বস্তিবাসী নিপাত যাক, দখলদার মুক্তি পাক”। গড়ে উঠুক বস্তিমুক্ত সস্তিযুক্ত অভিজাত বনানী গুলশান ধানমন্ডিও ঢাকা।
ছবির জন্য কৃতজ্ঞতা ব্লগার দিনজুরের কাছে। এই ব্লগ থেকে ছবিদুটো নেওয়া হয়েছে।
ফেসবুকে দেখা কিছু ছবি। বোধ হয় অনেক বাঙ্গালীই দেখে থাকবেন। রাস্তার পাশে কিছু বস্তির ছেলে অথবা টোকাই ঘুমুচ্ছে। কারোই তো বালিশ নেই, একজনের বালিশ হচ্ছে একটি কুকুরের পেট।
একজন মানুষ ভাত খাচ্ছেন। থালা নেই, রাস্তার উপর সব ভাত ঢালা, ওখান হতেই নিয়ে খাওয়া হচ্ছে। পাশে বোধ হয় একটি কুকুর ও আগ্রহী ওই ভাতে।
সেই ছবি “like” হয়েছে বোধ হয় ৯০০ বারেরও বেশি। যারা লাইক-এ ক্লিক করেছেন তারা অমানুষ নন, তারা “এসব ছবি আরো দেখানো দরকার” এ জাতীয় সাপোর্ট বোঝাতেই “like” । আবার যাদের বোধশক্তি আর চিন্তাশক্তির প্রকাশ আছে, তাদের একজন লিখেছেন “এইটা লাইক মারার কি আছে, এইটা তো আমাদের লজ্জা।”
@সাইফুল ইসলাম,- অনেক ভাবলাম। আপনার এ লিখার প্রেক্ষিতে মন্তব্য কি করা যায়। আসলে আমার বলার কিছুই নেই, কারণ কিছুই বলে কিছুই হয়না, হবেওনা। ফেসবুকে ছবি দেখে ছিন্ন পাতা মুক্তমনায় লিখলো, বন্ধুদের জানালো, সাইফুল ইসলামের লিখাকে সাধুবাদ জানানো হলো, তার ভেতরের আগুনের আঁচ অনেকের গায়েই লাগে তাই। তারপর সব নিস্তেজ। আমরা ভেতরের আগুন, লজ্জা, হতাশা নিয়ে খাই দাই ঘুমাই কারণ বুলডোজার এখনো আমার বাড়ির আঙ্গিনায় আসেনি। এভাবেই…সমাপ্তি।
@ছিন্ন পাতা,
থাপ্পর মারার আগে রাগটা ওয়ার্কিং ফোর্স হিসাবে কাজ করে। রাগ না থাকলে থাপ্পর মারা যায় না। আমাদের লক্ষ্য যেহেতু থাপ্পর মারা, আগে না হয় ক্ষেপিয়েই দেই পিনুমিনু জনগনকে। তারপরে সবাই মিলে থাপ্পরটা মারা সহজ হবে। কী বলেন?
তথাকথিত স্বাধীন বিচার বিভাগের অপেক্ষাকৃত স্বাধীন উচ্চ আদালতের কাছে আমার প্রশ্ন, “এধরণের রায় ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে দেয়া হয়না কেন ? তারা তো শুধু সরকারের ও জনগণের ভূমিই দখল করছেনা, নদী,বন,জলা প্রভৃতি দখল করে
পরিবেশদূষণ ও জীববৈচিত্র নষ্ট করছে-বস্তির ঐ মানবেতর মানুষগুলোর চেয়ে হাজার গুণ লক্ষ গূণ বেশী ক্ষতি করছে ।
মার্ক্সের সেই বিশ্লেষণই বা পর্যবেক্ষণই আবার প্রমাণিত হলো-যদিও তিনি তা পূজিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থা সম্পর্কে বলেছিলেন এবং বাংলাদেশ পুরোপুরি পূজিবাদী হয়ে উঠেনি । তিনি লিখেছেন যে, ‘পূজিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থা্য় আইন তৈরী করা হয় শোষক-বুর্জোয়াশ্রেণীর স্বার্থে এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের চরিত্র হয় নির্যাতনমূলক ।’ আর মিডিয়া যেহেতু কর্পোরেট ও লু্টেরা ধণিকদের
নিয়ন্ত্রণে থাকে, তাই মিডিয়া সেইসব লোকদেরই ডেকে আনে যারা তাদের পক্ষে বলবে । এটা শ্রেণীচরিত্রের প্রশ্ন । এই বুর্জোয়া্রা অনেক বেশী শ্রেণীসচেতন শোষিত-গরীব ও বস্তিবাসীর চেয়ে এটাই দুঃখ । আর তথাকথিত সুশীল বাবু্রাও হয় সুবিধাবাদী নয় শ্রেণীসঙ্কীর্ন । আর, যে দলগুলোর এই বস্তিবাসীদের পক্ষে অবস্থান নেয়া উচিত ছিল তারা লজ্জাজনকভাবে নীরব রইল । আর বুর্জোয়া দল গুলোর কাছ থেকে তো প্রত্যাশা করা বৃথা । মৌলিক ইস্যুতে কখনই তাদের রাজনীতি ছিলনা ।
@সুজিত দাশ,
এই কথা ছাড়াও বসের আরো অনেক কথাই সত্যি। কমিউনিষ্ট মেনিফেস্টো দুই বস শুরুই করছিল,
“আজ পর্যন্ত যত সমাজ দেখা গেছে তাদের সকলের ইতিহাসই শ্রেনী সংগ্রামের ইতিহাস”। চিরন্তন সত্য কথা।
সমস্যা হইল এদের কথা মানতে গেলে অনেকের লুঙ্গিতেই টান পড়তে বাধ্য। যার জন্য জেগে জেগে ঘুমানোটাই সর্বোত্তম পন্থা।
@কাজি মামুন,
সুনীলের দুর্দান্ত একটা কবিতা আছে এই ভবিষ্যতবাণী করে, একদিন কেউ এসে বলবে। এই কবিতাটির অসাধারণ আবৃত্তি করেছে ক্যাথেরীনা। এখানে ক্লিক করলেই শুনতে পাবেন সেটি।
@ফরিদ আহমেদ,”একদিন কেউ এসে বলবে” কবিতাটি ভাল লেগেছে……।যেমন ভাল লেগেছে “বস্তিবাসী নিপাত যাক, দখলদার মুক্তি পাক।” পড়ে।
সমাজের আইনগুলি সব সবলদের পক্ষে, দুর্বলদের কে আরো কিভাবে দমন করা যায় তাঁর জন্য নতুন নতুন আইন তৈরি চলছে……!!!
সব দেশে সব কালে দুর্বলদের একই চিত্র, একই অবস্থা। আমরা যারা বর্তমানে ইতালি প্রবাসী তাদের জন্য ইতালিয় সরকার নিত্য নতুন আইন প্রণয়ন করছে যা আমাদের দুর্বলদের জন্য বেস ভুগান্তি! বয়ে এনেছে। ব্যপারটা হল এরকম আমাদের দেশে তোদের থাকতে দিচ্ছে এটাই তো বেশী! আমাদের যা ইচ্ছে তাই করব, তাতে তোদের কি?
@শামিম মিঠু,
ঘটনা সত্য।
আপনি ইতালীতে কোথায় থাকেন?
আমার বাপ থাকত একসময় এই জন্য জিজ্ঞেস করলাম আর কী।
@সাইফুল ইসলাম, আমি ভাই ইতালির বলোনিয়া(bologna) শহরে থাকি।
আপনাকে ধন্যবাদ এবং ভাল থাকুন।
তাও সাইফুলের মত কেউ কেউ আমাদের মাঝে আছে, যার শক্তিশালী কলম বস্তিবাসীর পক্ষে কথা কয় …
ধন্যবাদ সাইফুল। তবে যাদের ঘুম ভাঙ্গার কথা, তাদের বোধ হয় ভাঙ্গবে না …
@অভিজিৎ,
🙁
পার্ল এস বাক এর “গুড আর্থ” এর একটা প্লটের কথা বারবার মনে পড়ে যাচ্ছিল যখন রাস্তায় সেদিন আমি ৪ ঘন্টা জ্যাম এ আটকে পড়েছিলাম। মনে হচ্ছিল এই মানুষগুলো যে কোন মুহুর্তে কি ঝাপিয়ে পড়তে পারে গুড আর্থ এর সেই গ্রাম থেকে শহরে ভীর করা মানুষগুলোর মতো?
সেদিন সারা রাত মনে হচ্ছিল, এই মানুষগুলো কিভাবে কোথায় রাত কাটাচ্ছে?
সরকার বরং বস্তি উত্খাত না করে এদের একেবারে পিষে ফেলত কোন বুলডোজার দিয়ে রাতের আধারে কিংবা হলোকাস্টের মতো কোন বিষাক্ত গেস প্রয়োগ করে, এ দেশে তো সব ই সম্ভব যেমনটি দিনে দুপুরে পিলখানায় এতগুলো মানুষ মেরে ফেলা হয়েছিল, এদেরকেও কোনভাবে শেষ করে ফেললেই তো ল্যাটা চুকে যেত।
নাকি বাঁচিয়ে রেখেছে দীর্ঘ পরিকল্পনার কোন ব্যেব্সার কথা চিন্তা করে। হয়ত ভাগাভাগি হয়েও গেছে। কিছু ভাগ কাজে লাগাবে রাজনীতির গুন্ডামি করতে, এন জি ও গুলো তো ব্যেব্সার জন্য কিছু কাচামাল পেয়ে গেল বিনা কসরতে আর বাদ বাকিরা ছাড় পোকার মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরবে যত্র তত্র অথবা পাচার হয়ে যাবে বরাবরের মত। মানুষ তো নয় এরা! এদের দিয়ে যা ইচ্হে তাই করা যায়।
হায়! এ দেশটায় আসলেই আর আশার কোন আলো দেখি না। শুধু মনে হয় কাঁধে দায়ের বোঝা বেড়েই চলেছে অজানা কারণে।
@নিলীম আহসান,
একমত। এছাড়া কোন উপায় নাই বস্তিবাসীর কীটগুলারে সরানোর।
উত্পল দত্তর টিনের তলোয়ার নাটকের একদম শুরুতে শ্মশানবাসী ডোম কাপ্তেন বাবু চরিত্রটিকে প্রশ্ন করে, “রাজা উজিরদের নিয়ে নাটক না করে, পারবে আমাদের মতন সমাজের নীচের তলায় থাকা মানুষদের নিয়ে নাটক করতে?”
সমাজের তলায় থাকা মানুষ আর উপরে থাকা মানুষদের দুনিয়াতে বিস্তর ফারাক! মধ্যবিত্ত ও শিক্ষিত মানুষের চশমা এঁটে আমরা বিচার করি বস্তি উচ্ছেদের কার্যকরিতার। নোংরা আধা ন্যাংটা গাঞ্জাখোর চর্সী রিক্সাওলারা, মুটে-মজুর আর ঠিকেলোক কিভাবে আমাদের নয়নাভিরাম শহর ও উচ্চবিত্ত পল্লীগুলোর সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয়, তা নিয়ে আমরা থাকি চিন্তিত। অবশ্য একেবারে হৃদয়হীন নই আমরা। তাই চাযের আড্ডা বা উইস্কি গ্লাস হাতে আমরা পুনর্বাসন ইত্যাদি নিয়ে বড় বড় চিন্তাভাবনাও করে থাকি।
কিছু মাস পূর্বে কলকাতার বিখ্যাত এক হাসপাতালে আগুন লেকে ৯০ জন রুগী মারা যান(আমরি হাসপাতাল)। খবর পাওয়া যায় যে অগ্নি কান্ডের জন্যে রুগী মারা যাবার পেছনে শুধু কর্তৃপক্ষের গাফিলতি নয়, দায়ী ছিল আরো অনেক কিছু। কারণ শিক্ষিত সুশীল ও কর্তব্যপরায়ণ ডাক্তার বাবুরা, স্নেহশীলা নার্সরা সেদিন সবার আগে নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে মধ্যরাতে মুমূর্ষু রোগীদের ফেলে পালান।
অথচ সবার আগে হাসপাতাল থেকে ধোয়া বেরোতে দেখে ছুটে আসা পার্শবর্তী পঞ্চাননতলার বস্তিবাসীদের হাসপাতালের সিকিউরিটি গার্ডরা ঢুকতে দেয়নি কারণ তারা নাকি সেখানকার দামী যন্ত্রপাতি চুরি করে পালাত।
অবশেষে যখন সকল ভদ্রলোকেরা পালিয়ে যায়, তখন দমকল আসা অবধি এবং তারপর দমকলকে সহযোগিতা করে, এই চোলাই ঠেক-পাতাখোরদের জন্যে কুখ্যাত পঞ্চাননতলার বস্তিবাসীরা নিজেদের প্রান বিপন্ন করে যেকজনের সম্ভব প্রান বাঁচায়। তাদের আক্ষেপ ছিল যে হাসপাতালের রাতপ্রহরীরা যদি তাদের আরেকটু বিশ্বাস করতে পারত তাহলে আরো কিছু ‘ভদ্রলোকের’ প্রাণ সেই ‘ছোটলোক’-গুলো বাঁচাতে পারত।
কলকাতা শহরে জমির দাম সোনার চেয়ে অনেক বেশি। উচ্চবিত্তদের পল্লী ঢাকুরিয়া, যোধপুর পার্ক, গোলপার্ক প্রভৃতি এলাকার মধ্যে বসবাসকারী পঞ্চাননতলার এই দীনদরিদ্র হতভাগ্যদের সময়ে অসময়ে সরকারী ডালকুত্তা আর জমি হাঙ্গররা মিলে লাথি মেরে দূর করে দেয়।
অথচ এরা রিক্সা না টানলে, বাসন না মাজলে, ময়লা না তুললে বাবু বিবিদের সমাজ বসে যেতে আধবেলাও লাগবে না।
জলে ভেসে থাকা পাতার মতন একদিন জমি বাড়ি হারিয়ে এরা এসে বানিয়েছিল এই বস্তিগুলো। ধাক্কা খেয়ে খেয়ে বেঁচে থেকে টিন, চাঁচের বেড়া, তেরপল দিয়ে বানানো ঘর মজবুত করা সম্ভব নয় শহরের জল হওয়াতে। তাই তারা স্রোতের ধাক্কায় আরো সরে যায়। প্রতিদিন আরেকটু প্রান্তিক হয় তারা। কিন্তু আমরা যারা শিক্ষিত মধ্যবিত্ত বুর্জোয়া ভদ্রলোক তারা ভুলে যাই ফ্যাতারু কবি পুরন্দর ভাটের (নবারুণ ভট্টাচার্যের) অমোঘ সতর্কবাণী :
গাঁড় মারি তোর মোটর গাড়ির,
গাঁড় মারি তোর শপিং মলের।
বুঝবি যেদিন আসবে তেড়ে-
ন্যাংটা মজুর সাবান কলের ।।
@অনামী,
ওরা সত্যি তেড়ে আসছে! বাংলাদেশে ফরাসি বিপ্লবের মত কিছু একটা ঘটতে চলেছে। এই মানুষগুলো যে কি পরিমাণ তেতে রয়েছে, তা তাদের চোখ -মুখ দেখলেই বোঝা যায়। এদের পাশে কেউ নেই, কোন সরকার নেই, বিএনপি, আলীগ বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার, কেউ নেই। যখন এরা গুড়িয়ে দেবে সবকিছু, তখন বাবুবিবিদের পাশেও কেউ থাকবে না, কেউ না।
@কাজি মামুন,
মামুন ভাই,
তেড়ে আসাটাই স্বাভাবিক নয় কি? ওরা তো প্রতিদিন দেখে আমাদের। রঙিন জামা জুতো পরে, গাড়ি চড়ে সুন্দরী স্ত্রী বা বান্ধবীদের নিয়ে সিনেমা হলে, শপিং মলে যেতে যেতে, রোদচশমা পড়ে ভ্রু কুঁচকে আমরা উন্নাসিকের মতন তাদের সামনেই বলি যে ‘দিস কান্ট্রি ইজ সো ডার্টি ইয়ার! সব শালা এই ছোটলোকগুলোর জন্যে! খেতেই যদি না দিতে পারবি তো পয়দা করিস কেন?’
আমাদের উচ্চবিত্ত সমাজের শিশুগুলো এ সি গাড়ি চড়ে ভিডিও গেম পার্লারে গেম খেলবে যত টাকার, তার চেয়ে অনেক কম টাকা থাকলে হয়ত রাস্তার চায়ের দোকানের ছেলেটা মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পারত।
এরা দিনের পর দিন জুলজুল করে দেখবে এবং দেখেই যাবে এমন ভাবার কোনো কারণ নেই।
তথাকথিত শিক্ষিত সুশীল(কলকাতার এক খ্যাতনামা নাট্যব্যক্তিত্ব) ভদ্রলোককে বলেতে শুনেছি, “আমি চাই রিক্সাওয়ালার ছেলে রিক্সাওয়ালা হোক, নয়তো আমি রিক্সা চড়ব কি করে?”
আমাদের প্রিকনসিভড নোসন এই রকমই- চাষীর ছেলে হবে চাষী, রিক্সাওয়ালার ছেলে হবে রিক্সাওয়ালা, ‘ভদ্রলোকের’ ছেলে হবে ‘ভদ্রলোক’ এবং ‘ছোটলোকের’ ছেলে হবে ছোটলোক।
এই সমাজ ব্যবস্থায় আমরা বিশ্বাসী কারণ তা টিকিয়ে রাখা আমাদের ক্ষুদ্রস্বার্থ বজায় রাখতে চমত্কার ভাবে উপকারী।
তাই সহসা এদের মধ্যে কোনো কোনো ‘লুম্পেন প্রলেতারিয়েত’ যখন অনেক অপমানের, খিদের জ্বালা সহ্য করে একদিন ছুরি হাতে ছিনতাই করতে নামে, বা দারিদ্র ভুলতে নেশা করা পাতাখোর যখন ছিঁচকে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে, তখন আমাদের উচ্চবিত্ত-মধ্যবিত্ত সমাজের ন্যায়বোধ নীতিবোধ গর্জে উঠে বলে সেই নোংরা শুওরের বাচ্চাগুলো আমাদের সমাজকে নষ্ট করে দিয়েছে!
@অনামী,
এক বর্ণ মিথ্যা নয় কথাটা। আমরা যারা তথাকথিত ভদ্রসমাজের দাবীদার, এমনকি মাঝে মাঝে গরীবের কাঁধে অসীম ভারবাহী বোঝা দেখলে চোখ মুছি, তারাই কিন্তু অবচেতন মনে সুবিধাবাদী শ্রেণি-চেতনা পুষে রাখি।
@কাজি মামুন,
শ্রেণী-চেতনা কি না জানিনা, তবে তথাকথিত শিক্ষিত ও ভদ্রসমাজের দাবীদার কিছু মানুষ আছে তারা যেন আকাশে বাস করে। এরা খুবই ব্যক্তি স্বার্থপর। কথা বলবে বাস্তব বিবর্জিত। সাপেকাটা মানুষের ধারে কাছেও কোনদিন আসবেনা, অথচ নিরাপদ দূরত্বে থেকে সর্প নিয়ে কবিতা লিখে। গরিবের জন্যে এদের চোখ মুছা এক প্রকার ফ্যান্টাসি- বিলাসিতা।
@অনামী,
একজন পাঠকের গঠনমূলক মন্তব্য অন্য একজন পাঠককেও ভাবায়, আলোড়িত করে। আপনার মন্তব্য পড়ে, তাই হলো। হয়তো এভাবেই মানুষ একটু একটু করে জেগে ওঠে; উঠতে উঠতে, হঠাৎ একদিন পৃথিবীর গৎবাঁধা সব খবরকে আস্তাকুঁড়ে ফেলে দিয়ে, সবকিছুকে অবাক করে দেয়।
@অনামী,
ও হরি, আপনাদের ভারতেও এগুলো আছে!! আপনার সাথে আরেকদিন কথা বলে মনে হয়েছিল শ্রেষ্ঠ গনতান্ত্রিক দেশে এগুলো থাকে না।
সত্যিই অমোঘ সতর্কবাণী।
@সাইফুল ইসলাম,
তা হয়ত থাকে না, কিন্তু আপনিতো শ্রেষ্ঠত্বের লেবেল আগেই পরিয়ে দিয়েছেন।
বস্তি উচ্ছেদের ব্যাপারটা আমি কখনো বুঝি না,বাংলাদেশ নিজে এখন একটি বস্তি। যেখানে দেশের সিংহ ভাগ মানুষ বাস করে সেটাই দেশের আসল পরিচয়। এখানে কে কাকে উচ্ছেদ করবে?।।এটাই ভাবনার বিষয়। পোস্টারে বানান ভুল থাক্লেও একটা করে ইট যখন ওরা ছুড়বে ভুল কিন্তু হবে না লখ্যভেদ ঠিকই করবে, “বেঙ্গল সামার” সমাসন্ন।
@সপ্তক,
গুলশান ধানমন্ডি হইল ধরেন অক্ষরজ্ঞ্যান সম্পন্ন অমানুষের বস্তি, আর এই কড়াইল, এরশাদনগর বস্তি হইল নিরক্ষর মানুষের বস্তি। পার্থক্য এইটাই। অমানুষগুলা ভাত খায় আর মানুষগুলা লাত্থি খায়। তেমন কোন পার্থক্য না যদিও।
বোম্বাইয়া সিনেমায় হগল অত্যাচার কাহিনি বাংলাদেশে বাস্তবতা পাইছে। আর পাইবো না’ই বা ক্যান, এখন পা চাটাচাটি কিংবা চুলাচুলির প্রতিযোগিতাই আসল রাজনীতি। মানুষের জন্য মানুষের রাজনীতি কোথায়? আদর্শিক রাজনীতি ফাজনীতি কইয়া কিছু আছে নাকি? দ্যাশের মালিক, ল্যাংটা জনগণ; একলগে কবে উলঙ্গ হুঙ্কার দিবো?
@কাজী রহমান,
কোনদিন আছিলোও না।
বিরোধী দল বালছাল নিয়ে হরতাল আন্দোলন করে, আর এতগুলো অসহায় লোককে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার, তা নিয়ে কোন আন্দোলন হয় না।
যারা বস্তিতে বাস করে, তাদের বেশীর ভাগই গ্রামে সর্বস্ব হারিয়ে শেষ আশ্রয় হিসেবে শহরে আসে। আর সর্বস্ব হারানো অসহায়দের দেখার দায়িত্ব তো সরকারেরই। তাহলে সরকারেরই তো উচিত তাদের এমন কোন বসবাসের জন্য জায়গা দেয়া, যেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে। তবে তাদের উচ্ছেদ কেন।
বাংলাদেশের মতো গরিব দেশের সামাজিক -অর্থনৈতিক পরিকল্পনাগুলো এসব অসহায় মানুষ কেন্দ্রিক হওয়া উচিত।
ধিক্কার জানাই রাজনীতিবিদদের, সাংবাদিকদের যারা দেশের একটা বৃহৎ অসহায় শ্রেণীকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়।
আমাদের আদালতও তো দেখি রাজনীতিবিদদের মতোই আকাম টা ভালো পারে।
সাইফুল ইসলামের এই বোমারু লেখাটা ইমানানুভিতে আক্রান্ত, বেহায়া, রাজনীতিবিদদের পা চাটা জাজদের শুনানোর দরকার।
@হেলাল,
হইবও না। কারন ওরা পাত্তি দেয় না নির্বাচনের সময়।
এই মানুষগুলার জন্য লিখে কেন যে আপনি ব্লগের জায়গা নষ্ট করতেছেন বুঝলাম্না :-Y । এগুলিরে উৎখাত করলেই কি আর না করলেই কি, ‘তিন লক্ষ লোক ত্রিশ বছর’ই বাস করুক আর তিনশ’ বছরই বাস করুক তাতে করে তো সরকারের প্রসবিত জমি আর ওদের বাপের সম্পত্তিতে পরিনত হয়ে যাবে না……
@বন্যা আহমেদ,
ঐগুলারে মাইরা ফেলানো হউক। চুশীল সমাজের দাবী।
একটি ছবি। ছাপা হয়েছে Financial Express পত্রিকায়। কান্নায় ভেঙ্গে পড়া এক মহিলা সামনে হাত প্রসারিত করে রেখেছে। হয়ত বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করছে কোন বুলড্রোজারক্ষেপীকে। মহিলাটির কোলে একটি শিশু। আশে-পাশে পড়ে রয়েছে তার যৎসামান্য সম্বল। ছবিটি যুদ্ধকালীন বর্বরতার কথা মনে করিয়ে দেয়।
আমাদের দেশে নেতাদের বাড়ি রক্ষার জন্য টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া আন্দোলন হয়। অথচ সেই বিলাসবহুল বাড়িটিতে এমন কয়টি বস্তি ঢুকিয়ে দেয়া যাবে?
বস্তিতে বসবাসকারী লোকগুলো কি অবৈধভাবে বসবাস করে? না, তারা কারো দয়ায় থাকে না। সরকারী ছত্রছায়ায় থাকা লোকদের ভাল অংকের অর্থমূল্য দিয়েই তারা কোনমতে মাথা গুঁজে থাকে।
তারা কি নগরীর চাকচিক্যে মুগ্ধ হয়ে থাকে এই আলো ঝলসানো শহরে? না, তারা গ্রাম থেকে উচ্ছেদকৃত একই টাইপের কোন গ্রামপতি বা গ্রামস্বামী দ্বারা। শামসুর রহমান বেঁচে থাকলে হয়ত লিখতেনঃ
তোমাকে পাওয়ার জন্য হে বাস্তস্বাধীনতা
আর কতবার উচ্ছেদ হতে হবে এদের….
একটি পত্রিকার রিপোর্টে দেখলাম জনৈক দেলোয়ার হোসেন (মন্তব্যকারী) আশংকা প্রকাশ করেছেন যে এই হাড়জিড়জিড়ে লোকগুলো নাকি অফিস-আদালত, বিল্ডিং-ইমারত সব দখল করে ফেলবে যদি বস্তিবাসীদের দখলদারিত্ব চলতেই থাকে। সত্যি বলতে কি, দেলোয়ার হোসেনের মত বা তার শ্রেণীর লোকদের দখলেই রয়েছে সিংহভাগ সম্পদ; তাই তাদের আশংকা একেবারে অমূলক নয়। শোষিত মানুষেরা একসময় রুখে দাঁড়াবেই, চূর্ণ করে দেবে আলো ঝলসানো ইমারতগুলো, ইতিহাস সে কথাই বলে। মুক্তমনায় আমার প্রথম লেখাটিতে তেমন ইংগিতই ছিল।
অত্যন্ত শক্তিশালী পোস্ট। আপনার তেজস্বী ভাষা দেশস্বামীদের ঘুম ভাঙ্গাতে পারবে কিনা জানি না (কারণ তারা ইচ্ছে করেই ঘুমিয়ে থাকেন এই সময়গুলোতে) ; তবে দেলোয়ার হোসেনের মত নাগরসুখে বেহুঁশ লোকদের লজ্জায় ফেলতে পারবে বলে মনে হয়।
@কাজি মামুন,
আপনার সোনার বাঙলাদেশের এই অবস্থায় আমি হতাশ।
@সাইফুল ইসলাম,
আমি হতাশ না। সাইফুল ভাইদের মত তেজস্বী লেখক যে দেশে জন্ম নিয়েছেন, সেই দেশকে নিয়ে আমি হতাশ হতে পারি না। যদি হতাশ হই, সেটা হবে বাংলাদেশের তারুণ্যের অমিত তেজ, শক্তি আর সাহসকে অপমান করা!
দারুণ লিখেছেন। আরও ঘন ঘন আপনার গনগনে লেখা পড়তে চাই। ভাল থাকুন।
প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে হলে; দয়া, মায়া, মানবতা, মানবিক সম্পর্ক মন থেকে উচ্ছেদ জরুরী।
ডিজিট্যাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য আরো আরো নির্মম, নিষ্ঠুরতম উপায়সমূহ উদ্ভাবন করা হোক।
@স্বপন মাঝি,
হউক হউক হউক। না হইলে অনশন ধর্মঘট।
শালারা বাপের বাড়ির আবদার পাইচে……। শালারা জানে না, এই দেশটা আমলাগো…।। বস্তির প্রত্যেকটা কীটরে গুল্লি কইরা মারা উচিত। হালাগ লিগা আমরা আরামে চলতে পারি না। ফকিন্নির পুতেরা ।
@কামরুল আলম,
মাইরা ফেলানো হউক। এই দাবী না মানলে অনশন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হইব।
তিলোত্তমার কপোলে কালো হাড় জিরেজিরে এই মানুষগুলো ব্রনের মতই বিরক্তিকর এবং সৌন্দর্যহানিকর। এদের উচ্ছেদ না করতে পারলে রূপমাধুর্য যে মলিন হয়ে যাবে মনলোভার।
এই কড়াইলই কি কুড়িল? প্রচলিত নাম ছেড়ে পোশাকী নাম ধরলো কবে থেকে?
@ফরিদ আহমেদ,
রূপমাধুর্য বড়ই প্রকট আকার ধারন করছে! 🙁
পক্ষে-বিপক্ষে অনেক মন্তব্য দেখলাম। আসল সমস্যা হলো ভন্ড অসৎ রাজনীতিবিদরা। যতদিন পর্যন্ত সংসদ থেকে এদেরকে উচ্ছেদ করা না গেছে, ততদিন পর্যন্ত একের পর এক সমস্যা লেগেই থাকবে। বস্তিবাসীর উপর রাগ করে ভন্ডরা বলে- খাওয়ার ব্যবস্থা নাই, এতো বাচ্চা জন্মায় কেন? তারাই আবার বিশ্বাস করে সকল বাচ্চা আল্লাহর হুকুমেই জন্মায়, সকলের রিজেক জন্মের আগেই আল্লাহ তৈ্রী করে রাখে। সংসদ হয়েছে ভন্ড, লোভী, স্বার্থপর কিছু মানুষের আখড়া, আর বাহিরে চলছে মরু-দস্যুদের বিকৃত উল্লাস। উভয় দলই নিজ স্বার্থে, দেশের গরিব, অশিক্ষিত মানুষদের তাদের ক্ষমতার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে।
@আকাশ মালিক,
দোজখে প্রত্যেক জাতির জন্য আলাদা আলাদা জায়গা বরাদ্দ করা হইছে। বিরাট উচা উচা দেওয়াল দিয়া আটকাইয়া রাখছে। তার উপ্রে সব গেটেই রাখছে পাহারাদার। কিন্তু বাঙালি জাতি যেইখানে রাখছে ঐখানে ঈশ্বর কোন পাহারাদার রাখে নাই। ফেরেস্তারা জিগাইল, প্রভু, সমস্ত জায়গাতেই পাহারাদার আছে কিন্তু এই বিশেষ জায়গাটাতে কোন পাহারাদার নেই কেন? এদের প্রতি কি আপনার নেক নজর আছে?
ঈশ্বর কইল, অন্যান্য জায়গায় পাহারাদার দিছি এই জন্য যে কেউ পলাইতে চাইলে যাতে ওরা আটকাইতে পারে। কিন্তু বাঙালিগুলার জন্য কোন পাহারাদার দেই নাই কারন বাঙালি কেউ পলাইতে চাইলে আরেকজনে ঠিকই নিচের তে ঐডারে টাইন্যা নামাইয়া ফেলাইব। পাহারাদারের কোন দরকার নাই।
যেই দেশের পেট ভইরা ভাত খাইতে পারে জনগন ভাত না পাওয়া জনগনরে অন্যায়ভাবে উচ্ছেদের সময় কয় “ঠিকই আছে”, ঐদেশ যে বাঙালদেশ হইব আর ঐ জনগন যে বাঙালি হইব এইটাই স্বাভাবিক।