আজ সকালে মুক্তমনায় অনেকদিন পর আমার খুব প্রিয় একজন মানুষ জাহেদ ভাইয়ের একটা নতুন পোষ্ট দেখলাম। উনার লেখাটা পড়ার পর মনে হলো আমিও কিছু একটা লিখি। কিন্তু কি নিয়ে লিখি!? ভাবতে ভাবতে ঠিক করলাম গত সাপ্তাহে ইউটিউবে দেখা ‘Science Under Attack’ ডকুমেন্টারিটি সম্পর্কে লিখি। বিজ্ঞান মনস্ক মুক্তমনার পাঠকদের এই ডকুমেন্টারিটি ভাল লাগবে বলে আশা করি। পোষ্টের নীচের অংশে ডকুমেন্টারিটির লিংক দেয়া আছে।
নোবেল জয়ী বিজ্ঞানী স্যার পল নার্স(Paul Nurse) বিবিসিতে প্রচারিত তার ‘Science Under Attack’ ডকুমেন্টারিটিতে বিজ্ঞান জগতে পরীক্ষিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন থিওরি নিয়ে কেনো আজও সাধারণ মানুষের মধ্যে সংশয় বা অবিশ্বাস কাজ করছে সে বিষয়ে অনুসন্ধান করেছেন। বিজ্ঞানের এই চরম উৎকর্ষতার যুগে পৃথিবীর মানুষের এক বড় অংশ আজও বিশ্বাস কতে চায় না গ্লোবাল ওয়ার্মিংযের জন্যে দায়ী মানুষ নিজে, তারা মানতে কতে চায় না জেনেটিক মডিফাইড ফুড (GM food) ক্ষতিকারক নয় কিংবা অনেকেই আজও বিশ্বাস করে এইচ,আই,ভির কারণে এইডসের হয় না।পল নার্স তার ডকুমেন্টারিতে বিজ্ঞান জগতে সুপ্রতিষ্ঠিত এই সব থিওরি মানুষ কেনো এখনো বিশ্বাস করেনা তার উপর আলোকপাত করতে গিয়ে এসকল থিওরীর পক্ষে ও বিপক্ষে বিজ্ঞানি ও প্রচারকারিদের সাক্ষাতকার নেন।
বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির পেছনে আসলেই মানুষ দায়ী কি না এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির বিষয়ে প্রতিষ্ঠিত থিওরী কতটুকু সত্য- এ বিষয়ে আলোকপাত করতে গিয়ে ডকুমেন্টারিটিতে নাসার বিজ্ঞানীর বিনসেডলারের(Robert Bindschadler) সাক্ষাতকার নেন।বৈশ্বিক উষ্ণতা অতীতের তুলনায় বর্তমানে খুব দ্রুত বৃদ্ধির পেছনে যে মানুষ দায়ী এই ব্যপারটি বিনসেডলার স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সংগ্রহিত আলোক চিত্র ও উপাত্তের মাধ্যমে খুব সহজভাবে তুলে ধরেন। বিনসেডলারের মতে বর্তমান বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির পেছনে সোলার একটিভিটি প্রাথমিক কারণ নয় বরং মানুষ কর্তৃক ফসিল ওয়েল পুড়াবার ফলে জলবায়ুতে নির্গত বিপুল পরিমাণ কার্বণ ডাই অক্সাইডই মূল কারণ।স্যার পল নার্স শুধু মাত্র নাসার বিজ্ঞানীদের গবেষণার আলোকেই নয়, গত সাত দশকে সারা পৃথিবীর বিজ্ঞানীদের গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলের আলোকে দেখাতে চেয়েছন-‘‘পৃথিবীর উষ্ণতা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, আর এর জন্যে দায়ী মানুষ নিজে’’; আর এটি বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত।
পল নার্স তার ডকুমেন্টারিতে সাংবাদিক জেমস ডেলিংপোলের ( James Delingpole) সাক্ষাতকার নেন। ‘‘climategate email scandal’’ এর ঘটনার মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণতা বিষয়ে প্রচলিত সুপ্রতিষ্টিত বৈজ্ঞানিক থিউরিকে ভুল প্রমাণ করার অপপ্রচেষ্ঠায় খুবই বড় ভূমিকা ছিল এই জেমস ডেলিংপোলের। জেমস ডেলিংপোলের সাথে পল নার্সের সাক্ষাতকারে এ বিষয়টাই বের হয়ে আসে যে- জেমস ডেলিংপোলের বৈশ্বিক উষ্ণতা বিষয়ে সুষ্পষ্ট বৈজ্ঞানিক ধারনা না থাকার পরও কিভাবে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি বিষয়ে বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত সত্যের বিরোধীতা করেছেন।
পল নার্সের ‘Science Under Attack’ ডকুমেন্টারিটি থেকে এ বিষয়টি উঠে এসেছে যে- যারা বিভিন্ন সময় বৈজ্ঞানিক ভাবে সুপ্রতিষ্টিত বিভিন্ন থিওরির বিরোধিতা করেন তারা সাধারণত ঐ থিউরির সাইন্টিফিক পিয়ার রিভিউটি না পড়েই সমালোচনায় লিপ্ত হোন।এধরনের সমালোচনাকারীরা সামগ্রিক থিওরিটির পর্যালোচনা না করে প্রথমেই ঐ বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌছান এবং তার পর নিজেদের মতের সপক্ষে যুক্তি প্রমাণার্থে ঐ থিওরির অংশ বিশেষ ব্যবহার করেন।
পল নার্স তাই তার তথ্যচিত্রের শেষে এসে এ মত ব্যক্ত করেছেন যে-সাধারণ মানুষের বিশ্বাস অর্জনের জন্যে বিজ্ঞানীদের শুধু বিজ্ঞান আবিস্কারের দিকে গুরুত্ব দিলেই চলবে না, সেই সাথে সাথে মিডিয়ার মাধ্যমে তাদের পরীক্ষার ফলাফল ও আবিস্কার সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে খোলা খুলি ভাবে জানাতে হবে। আর তা না হলে তাদের পরীক্ষার ফলাফল ও আবিস্কার সাধারণ মানুষের কাছে বিকৃত ভাবে উপস্থাপন করবে সেই সব ব্যক্তিরা যারা বিজ্ঞান সম্পর্কে জানে না কিংবা তারা যারা বিশেষ কোন রাজনীতি বা মতাদর্শ দ্বারা পরিচালিত।
নীচে একটি কমেন্টে আল্লাচালাইনা পল নার্স ও তার কাজকে হাইলাইট করেছেন খুব সুন্দর ভাবে, পাঠকেরা তাও পড়তে ভুলবেন না।
পল নার্সের ‘Science Under Attack’ ডকুমেন্টারিটির লিংক-
http://www.youtube.com/watch?v=V89AeCLCtJQ
স্যার পল নার্স সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম। লেখকে অনেক ধন্যবাদ।
(Y)
সে কাজটি বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের চাইতে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। অনেক খ্যাতিমান বিজ্ঞানীর ও public relation স্কিল খুব poor.
জাহিদ, ভাল লাগল।
@জাহেদ আহমদ, 🙂
@জাহেদ আহমদ, থ্যাঙ্কু 🙂
বিজ্ঞান বিরোধি চক্রান্তের মূল রাজনৈতিক কারণ জানা দরকার।
আমেরিকাতে রিপাবলিকান রাজনীতিবিদরা এবং মিডিয়া বেশ ঢাকঢোল পিটিয়ে উষ্ণায়নকে অবৈজ্ঞানিক প্রমাণ করতে চেয়েছে- ই পি একে বসিয়ে রাখতে চেয়েছে। এদের বক্তব্য এই কড়াকড়ির জন্যেই আমেরিকাতে শিল্প বিকাশ হচ্ছে না-ফলে চাকরী নেই। :-X
সমস্যা হচ্ছ্বে যেভাবে রিপাবলিকানরা কংগ্রেসে জিতেছে-এবং নানান রাজ্যে টি পার্টির সমর্থনে জিতছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে একটা শ্রেনী তাদের এই সব প্রচারে বিশ্বাস করছে। চাকরী হারিয়ে বেকার আমেরিকানরা আসলে অস্তিত্বের সংকটে- ফলে রিপাবলিকানদের অপবিজ্ঞানে তারা বিশ্বাস করছে-মনে করছে উষ্ণায়ণ বাড়াবারি এবং তাদের চাকরির জন্যে পরিবেশ জনিত আইন লঘু হোক।
বেকার এবং ধর্মভীরুরা একই কারনে অপবিজ্ঞানে বিশ্বাস করে- সেটা হচ্ছে অস্তিত্ববাদের সমস্যা। আর রাজনীতিবিদ দের আসল কাজ এই এক্সিস্টেনিয়াল সংকটকে এক্সপ্লয়েট করা।
ধর্ম বা অপবিজ্ঞান কোনটাই রাজনৈতিক সিস্টেমের প্রশ্রয় ছারা টেকে না। এবং রাজনীতির সাথে অপবিজ্ঞানের যোগসূত্র হচ্ছে মানুষের অস্তিত্ববাদি দুর্বলতা।
@বিপ্লব পাল, (Y)
খুবই ভালো লাগলো স্যার পল নার্স সম্পর্কে লেখাটা দেখে। কে চেনে পল নার্সকে চিনেই বা কি হবে, নোবেল তো প্রতি বছরই আট-দশজন করে পাচ্ছে। পল নার্স এমন একজন মানুষ যার ক্ষমতা নেই কোন মানুষকে অনুপ্রাণীত করতে ব্যার্থ হবার, কেউ যদি তার সাথে ৫ মিনিট কথা বলে কিংবা টেলিভিশনের পর্দায়ও এমনকি তাকে কিছুক্ষণের জন্য দেখে। হাড়ভাঙ্গা খাটুনী করতে জানা এই অস্থিমজ্জায় বিজ্ঞানীটির সারাদিন শ্বাস ফেলার সময় নেই; ক্যান্সার রিসার্চ ইউকের বিজ্ঞান বিভাগের ডাইরেক্টর জেনারেল, রয়াল সোসাইটির প্রেসিডেন্ট, রকফেলার ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট, ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে লন্ডন রিসার্চ ইন্সটিটিউটের প্রধান, এই সুবিস্তৃত এয়ারটাইট স্কেজল নিয়েও তিনি নাকি এখনও সকাল সন্ধ্যা লন্ডন রিসার্চ ইন্সটিটিউট লিঙ্কনস ইন ফিল্ড ল্যাবরেট্রিতে কাজ করেন এবং একা পাঁচজন বিজ্ঞানীর সমান কাজ করেন, আর বুদ্ধি ধারণ করেন একা পঞ্চাশ জন বিজ্ঞানীর সমান। নিজের আকাশচুম্বী অবস্থানকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শনপুর্বক অন্ডারগ্রাড-গ্রাড স্টুডেন্টদের সাথেও এমনকি বিনা প্রতিবন্ধকতায় খাজুড়ে গল্প জুড়ে দেন। সাইক্লিন এবং সাইক্লিন ডিপেন্ডেন্ট কেনেইস আবিষ্কার করেছেন যেটা কিনা জীববিজ্ঞানের ইতিহাসকে আগাগোরা পরিবর্তন করে দিয়েছে; সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন টিউমার সাপ্রেসর প্রটিন পি৫৩ আবিষ্কারের পেছনে যেটি কিনা বলাই বাহুল্য পত্রিকা-টেলিভিশন ও জনসাধারণ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয়তাপ্রাপ্ত একটি প্রোটিন; সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন পুরুষ সেক্স ডিটার্মেনিশেন জিন SRY এর আবিষ্কারে, এবং এইটা হচ্ছে তার ট্রাকরেকর্ডের একটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভগ্নাংশ। ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে এর নিজস্ব ল্যাব আছে ছয়টা, এর মধ্যে এলআরআই ল্যাবের তৃতীয় স্থানে থাকার কথা নর্মালি কেননা এটা ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ল্যাব; অথচ তারা তাদের ফ্লাগশিপ ল্যাবোরেট্রি হিসেবে বিবেচনা করে কিন্তু এলআরআই-কেই কেননা এটি অক্সফোর্ড এবং কেইব্রিজে তাদের ল্যাব দুটি (গ্রেই ল্যাব এবং সিআরআই যথাক্রমে) থেকে অনেক অনেক বেশী প্রডাক্টিভ এবং অনেক অনেক বেশী পাবলিশ করে, এবং এটির অনেকটাই স্যার পল নার্সের কৃতিত্ব, তার নেতৃত্বাধীনে এলআরআই ল্যাব দুটি নোবেল পুরষ্কার ঘরে আনে! পাঁচ ছয় মাস আগে সায়েন্স আন্ডার এটাক দেখেছিলাম আজকে আবার দেখলাম। আগেই শুনেছি, না শুনে থাকলেও সায়েন্স আন্ডার এটাক দেখার পর এটি অনুধাবন না করে কোন উপায় নেই যে- স্যার পল নার্স হচ্ছেন একজন সত্যিকারের প্রোসায়েন্স মানুষ এবং একজন মুক্তমনা। অমানুষিক পরিশ্রম করতে পারার ক্ষমতার অধিকারী এই হাইলি হাইলি সাকসেসফুল মানুষটির প্রতি থাকলো অন্তরের অন্তস্থল হতে স্যালুট। এক মাইল কন্টকাকীর্ণ পথ আমি হাঁটু গেড়ে পারি দিতে পারি স্যার পল নার্সের জুতোর ফিতা বেঁধে দেওয়ার জন্য।।
(Y)
@আল্লাচালাইনা, পল নার্সকে আরো ভালোভাবে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ!
ওনার বক্তব্যের সঙ্গে সহমত। আর এটা নজরে আনার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
এটা বৈশ্বিক উষ্ণতা তত্ত্বের সমর্থনকারীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য । তারাও পিয়ার রিভিউ না পড়েই , ক্লাইমেট মডেল না বুঝেই বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ে নাচা নাচি করেন। বাস্তব হচ্ছে যে, বৈশ্বিক উষ্ণতা কোন সুপ্রতিষ্টিত তত্ত্ব নয় কারন এটাকে ফলসিফাই করা যায় না। পিরিয়ড।
জলবায়ুবিদ্যায় পূর্বাভাসের সুযোগ খুবই কম যা পরবর্তী পাঁচ দিনের পরে সঠিক ভাবে করা কঠিন। এটা একটা রেটরোডিকটিভ শাখা ।
সমস্যা হচ্ছে যে , বিজ্ঞানের সমর্থক এবং বিরোধিতাকারীরা নিজেদের মতবাদ প্রতিষ্টা করতে গিয়ে বিজ্ঞান না বুঝেই বিজ্ঞানের নাম ব্যবহার করেন। প্রকৃত বিজ্ঞানে বিরোধিতা বা সমর্থন করার কথা বলা অর্থহীন।
@সংশপ্তক,
সাধারণ মানুষ বৈজ্ঞানিক গবেষমার পিয়ার রিভিউ পড়ে কোন গবেষণার ফলাফল বুঝবে বা তা সাপোর্ট করবে তা আশা করাটাই ভুল। পল নার্সের এই ডকুমেন্টারিটি মূল ফাইন্ডিং কিন্তু এটিই। আজ এই টুইটার,ফেইসবুকের এই যুগে বিজ্ঞানিরা তাদের গবেষণার ব্যাপারে যতটুকু গুরুত্ব দিচ্ছেন সেই তুলনায় তাদের গবেষনালব্ধ ফলাফল সাধারণের বোধগম্য করে তাদের কাছে পৌছানোর ব্যাপারে তারা সচেষ্ঠ নন। আর শুধু তা করলেই বিজ্ঞানিরা সাধারণ মানুষের ট্রাস্ট অর্জন করতে পারবেন।
পল নার্সের মতে-
“Earning trust requires more than just focusing on the science. We have to communicate it effectively too. Scientists have got to get out there. They have to be open about everything that they do. They do have to talk to the media even if it does sometimes put their reputation at doubt because if we do not do that it will be filled by others who don’t understand the science and who may be driven by politics or ideology. This is far too important to be left to the polemicists and commentators in the media. Scientists have to be there too.”
@জাহিদ রাসেল,
খুবই সত্যি কথা যে বিজ্ঞানের সাথে সম্পৃক্তরা গনসংযোগের ক্ষেত্রে অগ্রনী ভুমিকা না নিলে , অন্যান্যরা এ কাজে নেমে পড়বে যাদের বিজ্ঞানে দু পয়সা নেই কিন্তু ফায়দা লুটার যথেষ্ট সুযোগ আছে।
ScienceMag এর মত মুলধারার বিজ্ঞান সাময়িকীগুলো স্বল্প শিক্ষিত মানুষের জন্য লেখা হয় না। এখন আমাদের যেটা দরকার তা হলো গনমাধ্যমে বিজ্ঞানের বার্তা প্রচারে কি ঘটছে তা পর্যালোচনা করা।
সাংবাদিকদের মধ্যে যারা বিজ্ঞান বোঝেন তারা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারেন। গন মাধ্যমগুলোকে অনেক বেশী বস্তুনিষ্ঠ হতে হবে এক্ষেত্রে – বিশেষ করে বিজ্ঞান সংক্রান্ত সংবাদ প্রচারের সময় সম্পাদনায় অধিক সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। পত্রিকার সম্পাদক না বুঝে ত্রুটিপূর্ণ সংবাদ পরিবেশনে অনুমোদন না দিয়ে উপদেষ্টা রাখতে পারেন। বেশীরভাগ পত্রিকার মালিক কোটিপতি হওয়ায় এখানে তাদের সদিচ্ছাই যথেষ্ট।
সবচেয়ে বড় কথা বিজ্ঞানীরা দিন রাত তাদের কাজ করছেন , মানুষের জীবন বাঁচাচ্ছেন। অন্যদিকে, গনসংযোগের কাজটার মৌলিক দায়দায়িত্ব কিন্তু গনমাধ্যমের উপরই বর্তায় যাদের উচিৎ আরো বেশী বিজ্ঞান শিক্ষিত জনশক্তি নিয়োগ দেয়া। সংবাদ প্রচারে শুধু রগরগে কাহিনী , খুন , ধর্ষন , রাজনীতিতে কলাম বরাদ্দ না রেখে বিজ্ঞানের জন্য কিছু কলাম ছেড়ে দেয়া। গনমাধ্যম যদি খোলা মনে বিজ্ঞান মহলের সহযোগীতা চায় , অবশ্যই বিজ্ঞান মহল তাতে কার্পন্য করবে না।
@জাহিদ রাসেল,
মানদণ্ডটা ভিন্ন হয়ে গেলনা? শুধু বিরোধিতাকারীদের পিয়ার রিভিউ পড়তে হবে কেন?
@রৌরব, পোষ্ট থেকে নেয়া আপনার উল্লেখিত প্রথম বাক্যে সাধারণ মানুষদের কথা বলা হয়েছে। আর ২য় টিতে সাংবাদিক জেমস ডেলিংপোলের মতো সমালোচকদের কথা বলা হয়েছে যারা তাদের সমালোচক মূলক লেখার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের চিন্তা ভাবনাকে প্রভাবিত করেন।
@জাহিদ রাসেল,
“সাধারণ মানুষ” টার্মটা আমার কাছে স্পষ্ট নয়। ডেলিংপোলকে আমার বেশ সাধারণই মনে হচ্ছে। মূল কথাটা হল, আমরা যদি আশা করি “সাধারণ মানুষ” পিয়ার রিভিউ না পড়েই বিজ্ঞানীদের কথা বিশ্বাস করবে, তাহলে বিরোধাকারীদের কাছ থেকে তার বেশি দাবি করব কেন? বিজ্ঞানের ভিত্তি যেহেতু সন্দেহবাদ, বরং বাই ডিফল্ট বিজ্ঞানীদের কথা অবিশ্বাসই করা উচিত।
@রৌরব,
ডেলিংপোল কে সাধারণ মনে করাটাই ভুল। টাইমস এবং টেলিগ্রাফের মতো বিখ্যাত পত্রিকায় লেখার সুবাদে সাধারণ পাঠকের কাছে তিনি একধরনের ট্রাস্ট অর্জন করেছেন। আর তাই যখন তিনি বৈজ্ঞানিক গবেষনার ভুল ব্যখ্যা দেন সাধারন পাঠক তাও গ্রহণ করে। আপনি নিশ্চ্য়ই ”climategate email scandal” এর কথা শুনেছেন। বিজ্ঞানীদের বিরুদ্ধে উঠা সেই নির্লজ্জ মিথ্যা অভিযোগ কিন্তু প্রথম উঠেছিলো এই ডেলিংপোল এর কাছ থেকে।
ckquote
আমার লেখার সীমাবদ্ধতার কারণেই হোক বা আপনার বুঝবার অপারগতার জন্যেই হোক আপনি সাধারণ মানুষ আর বিরোধীদেরবারবার এক কাতারে ফেলে দিচ্ছেন। এখানে কিন্তু বিরোধাকারী বলতে সেই সব প্রচারকারিদের কথা বলা হচ্ছে যারা বিজ্ঞান গবেষক ও বিজ্ঞানিদের নির্লিপ্ততার সুযোগ নিয়ে বৈজ্ঞানিক সমালোচনার মূলক লেখার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে মিস গাইডেড করছে। যেমন করছেন- ডেলিংপোল।
@জাহিদ রাসেল,
বৈজ্ঞানিক consensus এর পক্ষালম্বন করে যারা কাগজপত্রে লেখে, ডেলিংপোলের মতই যারা প্রভাবশালী, তারা কি পিয়ার রিভিউ তন্ন-তন্ন পড়ে লেখে? বহু ক্ষেত্রেই তা লেখে না। হয়ত সেটা সবসময় সম্ভবও না। এমনকি বিজ্ঞানীরাও বিজ্ঞানের অন্য শাখার টেকনিক্যাল ডিটেইলগুলি ধরতে অক্ষম। । ঠিক আছে – কিন্তু এই leeway তাহলে একই পরিমাণে সন্দেহবাদীদেরও পাওয়া উচিত। বিজ্ঞানীরা ঠিকই বলছেন, a priori এটা ধরে নিয়ে বিশেষ করে সন্দেহবাদীদের ঘাড়ে অপ্রমাণের দায়িত্ব চাপানোর কোন কারণ দেখছি না।
ডেলিংপোল বিজ্ঞানী নন, এই অর্থেই তাকে সাধারণ বলছি। তার প্রভাবের কম-বেশ তার ডিসকোর্সের বৈধতার পরিবর্তন কেন ঘটাবে? তার ডিসকোর্স অবৈধ হলে এমনিই অবৈধ, তার সাড়ে তিন কোটি পাঠক আছে বলে নয়।
@সংশপ্তক,
আপনার এই কথাটা সমর্থন করছি। বৈশ্বিক উষ্ণতা যে বাড়ছে সে সম্পর্কে আমি মোটামুটি নিশ্চিত। তবে তাতে মানুষের অবদান কতটুকু এবং প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার অবদানের তুলনায় সেটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সে সম্পর্কে আমি নিশ্চিত নই। ক্লাইমেট মডেল এখন পর্যন্ত ঠিকমত না বোঝার কারনে আমার অবস্থানটা sceptic এর, তবে পাল্লাটা বৈশ্বিক উষ্ণতা তত্ত্বের দিকে কিন্চিত ভারী কিন্তু “নাচা নাচি” করতে রাজি নই।
জীববৈজ্ঞানিক বিবর্তন তত্ত্বওত মুলত রেট্রোএকটিভ; খুব স্বল্পায়ু প্রজাতি ছাড়া বাকী জীবজগতের জন্য ফলসিফায়েবল নয়। তাহলে কি আপনি বলবেন বিবর্তন তত্ত্ব সুপ্রতিষ্টিত তত্ত্ব নয়?
@মোঃ হারুন উজ জামান,
জৈববৈজ্ঞানিক বিবর্তন তত্ত্ব বলতে বিবর্তনের কোন বিশেষ তত্ত্বটাকে বোঝাচ্ছেন ? নামটা বললে প্রতি মন্তব্য করতে সুবিধা হবে।
আমার কাছে মনে হয় কথাটা টেকনিক্যালী ভুল কারণ পৃথিবীর উষ্ণতা স্বাভাবিক কারণেই বাড়তে পারে। অতীতেও এরকম অনেকবার বেড়েছে এবং কমেছে। আসলে আমরা এই উষ্ণতা বৃদ্ধির হারকে ত্বরান্মিত করছি। নাসার বিজ্ঞানী বিনসেডলারের যেমনটি বলেছেন, “বৈশ্বিক উষ্ণতা অতীতের তুলনায় বর্তমানে খুব দ্রুত বৃদ্ধির পেছনে যে মানুষ দায়ী..”
@হোরাস,আছেন কেমন? ধন্যবাদ ভুলটি ধরিয়ে দেনার জন্যে।
দারুন একটা তথ্য শেয়ার করলেন। ধন্যবাদ।
জাহেদের সাথে সাথে জাহিদও প্রমাণ করিল যে তাঁহারও মরণ ঘটে নাই। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
ঠিক কথা। বিবাহিত এবং সদ্য বিবাহিতরা নিজেদের জীবিত প্রমাণ করে আবার মুক্তমনায় ফিরে আসছে দেখে আনন্দিত!
লেখাটা ভাল এবং গুরুত্বপূর্ণ মনে হল জাহিদ। ভিডিও লিঙ্কটার জন্যও ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ দা ও ফরিদ ভাই, 🙂
@অভিজিৎ,
(Y)