দেশের পত্রিকা খুললেই প্রায় চোখে পরে ভারত থেকে দলবলসহ সাংস্কৃতিক দল আসছে!
আমাদের কোন সাংস্কৃতিক দল ওদেশে যাচ্ছে কিনা সে খবর তেমন চোখে পরেনা।
আজকাল দেশে নাকি সিভিতে হিন্দি জানাটা একটা প্লাস পয়েন্ট!
পাঠক যারা পড়ালেখা করতে ভারতে যায় তাদের কথা বলছিনা!
উর্দূর জায়গাটা কি হিন্দি দখল করল শেষমেশ!
এমনিতেই আবার রুনা লায়লা বিশ্বকাপক্রিকেটে “দমাদম মাস কালান্দর”- শুরু করেছেন!
হিন্দি সিরিয়ালের ফ্যাশন অনুকরণ করে, ঈদে তরুনীরা “মাশাকালী”, আর মায়েরা আনারকলি খোঁজে!
তবে রবীন্দ্রনাথ যে বিশুদ্ধ বাঙ্গালিয়ানা প্রর্বতন করেছিলেন তার কি হবে!
“পরনে ঢাকাই শাড়ী কপালে টিপ” কি পুরোনো চলচিত্র আর গানেই বেঁচে থাকবে?
আমাদের সচেতন গোষ্ঠীদেরও এব্যাপারে কিছু বলতে শোনা যায়না।
ব্লগাররাই এ বিষয়ে মুখর!বলতে ইচ্ছে করে – “ওপারে নীরব কেন কুহু হায়”!
আন্তর্জাতিকতা অবশ্যই থাকবে, সেটা স্বকীয়তা বিসর্জন দিয়ে নয়।
জার্মান, ফরাসীরা ইংরেজী জানলেও টু্রিষ্টদের সাথে বলেনা।
নিজেদের সংস্কৃতি, ভাষা সবার ওপরে রাখে।
এবারে মুক্তমনার পাঠকদের জন্য একটা লেখা “সায়ন আনজির” এর
আমি খুব হেসেছি, আপনারা হাসলে সেটা সায়নের প্রাপ্য।
“খুব কষ্ট হয় ওদেরকে দেখে”-
আবারো লিখতে বসলাম আমাদের দেশের সংস্কৃতি নিয়ে।(ভাবটা এমন যে আমি ছাড়া আর কেউ নাই এটাকে বাঁচানোর জন্য!খিক খিক…)এবার অবশ্য একটা ব্যাতিক্রমি ব্যাপার নিয়ে বলতে চাই- আমাদের দেশের হয়ে যাওয়া ট্রাই নেশন মেগা শো নিয়ে…
কিছুদিন ধরেই দেখছিলাম যেখানে সেখানে ফালায়া মারতেসে- ভয়ের কিছু নাই, পোস্টারগুলো মাটিতে ফালায়া আঠা মারতেছিল,তারপরে দেওয়ালে লাগানো হয়েছে।তা তে দেখলাম বলিউডের সালমান, ক্যাট্রিনা কাইফ, অক্ষয়, প্রিতম আরো কে কে যেন পারফর্ম করবে সাথে আমাদের দেশের ও শ্রীলঙ্কান শিল্পীরা। পোস্টারে অনেক খুঁজেও পেলাম না আমাদের দেশের কারা সেখানে পারফর্ম করবে। ভাবলাম হয়ত চমক-টমক থাকবে আরকি…! টিকিটের রেট দেখে যথারীতি আমার দাঁতে দাঁত লেগে যাওয়ার উপক্রম ! ২৫০০০ টাকা পর্যন্ত লেখা আছে আর তার পরেরগুলোতে লেখা “কল ফর ডিটেইলস”…!
টিভি তে অনুষ্ঠানটি দেখার সৌভাগ্য(নাকি দূর্ভাগ্য!)হল। আমি মনে হয় প্রথমটুকু মিস করেছিলাম যে কারনে দেখলাম স্টেজ খালি মানে বাংলাদেশের আর শ্রীলঙ্কান পারফরমেন্স শেষ…বাংলাদেশের কিরণ চন্দ্র রায় (অদ্ভুত সুন্দর কন্ঠ)আর ফরিদা পারভিন (পল্লীগীতির রানী) নাকি পারফর্ম করেছেন। তাদের সাথে আরো ছিলেন “ইভা” রহমান! (পরে জানলাম এই অনুষ্ঠানের আয়োজক নাকি এটিএন-উনি থাকতে অন্য শিল্পি! ভাবাই যায়না !) বাংলাদেশের অন্যতম(!)সফল নায়ক “স্কিব” (আসল নাম মনে হয় সাকিব)খান ও নাকি পারফর্ম করেছে মিম, শখ আরো কার কার সাথে…।
এরপরে স্টেজ এ আসলো আনুশকা…ভালই নাচ দেখালো। কিন্তু ক্যামেরার যাচ্ছেতাই ওঠানামা আর নাচের মাঝখানে মাঝে মাঝেই আকাশ দেখানো কি কারনে বুঝলাম না! সাউন্ড এর বাহার আর কি বলবো বুঝতেসি না…একেকবার হুমহুম করে শোনা যাচ্ছে-আবার পরের মুহুর্তেই মিনমিন করছে! এরপরে স্টেয এ আসলেন প্রীতম। উনি পশ্চিমবঙ্গের লোক-খুব সুন্দর বাংলায় কথা বলেন কিন্তু আমার প্রশ্ন হল-ভাঙ্গা গলায় এতটা বেসুরো হয়ে কি করে বাংলাদেশে কনসার্ট করার আমন্ত্রন পেলেন? চমক আরো বাকি ছিল। উনি “আমি বাংলার গান গাই”-শুরু করতেই আমি মনে মনে বললাম আমাকে বাঁচাও…গান ছিলো নাকি ছড়া ছিলো তা উপস্থিত সবাই ভালো বলতে পারবেন। গানের তাল-লয়-কথা গুলিয়ে লেজে-গোবরে অবস্থা মনে হয় একেই বলে ! কিন্তু কি আশ্চর্য্য ! তার পরের গানেই দেখি উনার মাথার উপরের লাইট অফ করে দেওয়া হল-আর কি অদ্ভুত সুন্দর গান করলেন উনি…উনি যে ঠোঁট মিলিয়েছেন তা বুঝতে কষ্ট হয়নি একটু ও…(হায়রে ড. মাহফুজ, আন্নের বউরে ইস্টেজ়ে উডানির লাই ইতারে লই আসি কি কইচ্চেন…ইজ্জত লই টানাটানি লাগি গেসে গই !!!)
এর পরে একে একে আসলো- ক্যাট্রিনা কাইফ, অক্ষয় আর সালমান। ক্যাটরিনার নাচ দেখেই বোঝা গিয়েছে স্টেপিং হচ্ছেনা-হয় স্টেজ এর দোষ(নাচতে না জানলে স্টেজ বাঁকা!) নাহয় উনি রিহার্সেল করেন নাই ঠিকমত! তারপর ও-যারা ওই কোমর দুলানো “শিলা কি জাবানি” দেখে কাইত তাদের জন্য ওটাই যথেষ্ঠ । অক্ষয় আসার স্টাইল দেখে মনে হল বাঙ্গালীরে মদন পাইসে ! ক্রেন এ করে উপর থেকে বিশাল ভাব নিয়ে নামার পরে যাই নাচ দেখাল-পয়সা উসুল হইসে কিনা জানি না। আবার নামার সময় মাইক্রোফোন হাতে ধরে চিক্কুর করতে করতে নামলো-যেন সে ই গান গাইছে। নামার সাথে সাথে বিপত্তি-গান আর থামে না! বেচারা আমাদেরকে মাইকেল বানাইতে গিয়া নিজেই মাইকেল সেজে গেল। এক নাগাড়ে গান চলছেই-আর উনি ঠোঁট মিলাতে মিলাতে হাঁপায়ে গেছেন!
সালমান আসার পরে যথারীতি সামান্য হেলিয়ে-দুলিয়ে স্পিডি টেম্পোর গান বাজানো হল। খুব চেষ্টা করেছেন সবাইকে আনন্দ দিতে(আমি আনন্দ না পেয়ে হতাশ!)।
এরপরে আতশবাজি দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ !
এখানে কয়েকটা কথা না বললেই না-
প্রথমতঃ এমন একটি বিশাল(!) আয়োজনে ইভা রহমান আমাদের দেশকে কতটুকু রিপ্রেজেন্ট করলেন? কিভাবে করলেন? উনি কি বাকিদের সাথে (প্রীতম ছাড়া !!!) এক কাতারে দাঁড়ানোর যোগ্য?
দ্বিতীয়তঃ খুব বেশি দরকার ছিল এটা ২১ ফেব্রুয়ারীর এত কাছাকাছি তে করার?
তৃতীয়তঃ এটা যদি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের অংশ হয়ে থাকে তাহলে দেখার এখনো বাকি আছে যে ইন্ডিয়া আর শ্রীলঙ্কাতে বাংলাদেশের কয়জন শিল্পি অংশ নেয়।
চতুর্থতঃ আউল-ফাউল শিল্পিদের কে দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা কে কামালো?
পঞ্চমতঃ যেই গান গুলোকে abuse করা হল, সেগুলোর কি হবে?(প্রীতম হালায় কুঁইত্তা কুঁইত্তা যেই গানটারে মারসে ! ), এটা কি কপিরাইট লঙ্ঘন করে না ? ভালো গাইলে বলতাম না কিন্তু যা গাইছে-না বলে উপায় নাই !
ষষ্ঠতঃ আমাদের দেশের মানুষের দাম কি এতই অল্প যে এটিএন আর ডেস্টিনি (দেশের সেরা ২ ধান্দাবাজ কোম্পানী !!!)এমন একটা কিছু করার সাহস পেলো এবং করে পার ও পেয়ে যাবে?
Scion Anjir
সূত্রঃ ফেসবুক
২৭/০২/২০১১
আমার একটা ভুল ধারনা ছিল যে মেয়েরা বুঝি হিন্দির প্রতি বেশি আকৃষ্ট আপনার লেখা পড়ে ভুল ভাঙল । বাঙালীর হিন্দি প্রিতি দেখে আমার তো আশংকা হয় যে আর দু এক শতক পরে হয় তো বাংলার অস্তিত্ব থাকবেনা । ধন্যবাদ লেখার জন্য ।
@মাসুদ রানা,
ধন্যবাদ মাসুদ রানা লেখাটা আগ্রহ নিয়ে পড়ার জন্য।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস বাঙালীরা এই হিন্দি চক্র থেকে খুব দ্রুতই বেরিয়ে আসতে পারবে,
অনেক শুভেচ্ছা সহমর্মীতার জন্য।
সম্প্রতি আমার একটি লেখা মুক্তমনা নামের একটি ব্লগে শেয়ার করা হয়েছে এবং আমি নিজেকে খুবই গর্বিত ও অনুপ্রানিত মনে করছি কারন আমার লেখা পছন্দ হয়েছে দেখেই সেটা পোস্ট করা হয়েছে-(তারমানে আমি মাঝে-সাঝে ভালোও লিখি নাকি?!) দারুন ! নোবেল প্রাইজ এর জন্য লাইনে দাঁড়াই তাহলে…
কিছু কিছু মানুষের কমেন্ট পড়ে নিজেকে অনেক মুল্যায়ণ করতে পারলাম এবং সমালোচনা থেকে শেখার অনেক কিছু আছে মানতে বাধ্য হলাম।
এবার আসি মূল কথায়, হয়ত সবার কমেন্ট এর উত্তর দেয়া সম্ভব হবে না কিন্তু চেষ্টা করি আর কি-
@পৃথিবী ভাইঃ আমি ও ভাই হেভী মেটাল এর বিশাল ফ্যান-না, আমি ফ্যান না আমি এসি !!! “শিলা কি জাবানি” – একটি হিন্দি ছবির ঝাকানাকা গান…
@লীনা রহমানঃ আপনাকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করতে চাইনা…
@বিপ্লব রহমানঃ সরি ভাই, আমি 3rd gender নিয়ে মস্করা করি নাই-আমি সাকিব কে নিয়ে করেছিলাম কারণ আমার ব্লগ -http://scionsminddessert.blogspot.com/ এ ঢুকলে প্রথমেই চোখে পড়বে নিচের এই ঘোষনাটি-
“আমি কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান,দল, গোষ্ঠি, সমিতি, জাতি, গোত্র, ধর্ম বা শ্রেনীকে কেন্দ্র করে, উপেক্ষা করে, কটাক্ষ করে, আঘাত করে, উদ্দেশ্য করে, ইঙ্গিত করে বা উস্কানী দিয়ে কিছু লিখবো না। তারপর ও যদি কেউ যদি আমার কোন পোস্ট দ্বারা মানসিক, সামাজিক, চারিত্রিক, বাহ্যিক, আন্তরিক (!), আর্থিক বা শারিরিক (!?) ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকে (যা জীবনেও সম্ভব না, হলেও মানবো না !) তাহলে তা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার বলে বিবেচিত হবে কারণ এই ব্লগ শুধুমাত্র ভারসাম্যহীনদের ভারসাম্যের প্রচেষ্টামাত্র…”
ধন্যবাদ জানাই আপনাকে, ভুল হয়ে থাকলে মাফ চাই ।
@অভিজিৎ ভাইঃ আমি আপনার সাথে একমত যে আমাদের বিদেশি সংস্কৃতির সাথে পাল্লা দিয়েই এগিয়ে যেতে হবে- কিন্তু ভাই, পাল্লা দেয়ার মানুষ ই যদি বিক্রী হয়ে বসে থাকে তাহলে এগিয়ে যাবে কে? (এখানে আমি বাংলা কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটি উদাহরণ দেই- আপনি আজ পর্যন্ত কয়টি product-এর packet-এ বাংলা instruction দেখেছেন ???)গর্ব করে বলতে পারি বাংলা সংস্কৃতিকে যতটুকু আগানোর তা নিয়ে গেছে IT-মানুষেরা।শিল্পীরা বা অন্য কেউ শুধু মুখে ফেনা তুলে তা তে বুদবুদের রঙ দেখে…(আমিও দেখি, কারণ আমি IT প্রোফেসনাল হলেও বুদবুদ দেখতে ভালা পাই…খিক খিক !)
@আস্রাফ ভাইঃ জটিল বলেছেন boss…আমিও কাহিল ! আচ্ছা বলেন ত boss, আপনাকে আমি আমার এই ব্লগ টা পড়ার জন্য কতবার অনুরোধ করেছি? আর কমেন্ট করার জন্য কয়বার? Please না বললে আমি লজ্জা পাবো… হাহাহা… আপনাকে যেমন আমি request করি নাই, তেমনি আমি নিজের অনিচ্ছায় ওই অনুষ্ঠান হজম করেছি। আর এইখানে আমি বলতে চেয়েছিলাম “উড়াধুড়া” হিন্দি সিনেমার সস্তা গানের কথা- চাল-ডাল-পেয়াজ নিয়ে পড়লেন কেন? – আর বাংলাদেশি শিল্পীদের কে আমি ব্যঙ্গ করিনি,আমার নিজের মতামত দিয়েছি মাত্র।ধন্যবাদ।
@নিদ্রালুঃ ভাই, আমি জিজ্ঞেস করি, ভারতীয় নায়িকারা কি এখানে গান গাইতে আসে? নায়করা কি নাচতে আসে? যদি তা-ই হয়ে থাকে, তাহলে ত খুবই ভালো।কিন্তু তারা আসে শুধু lipsing করে নাচের মুদ্রায় শরীর দেখিয়ে টাকা কামাতে। এখন আপনি-ই বুঝে নেন এটা কি আমার ফ্যাশন না passion?
@আফরোজা আলমঃ ধন্যবাদ, একমত।
@ আতিকুর রহমান সুমনঃ ধন্যবাদ ভাই, “শিলা কি জাবানি”- তাহলে আপনাকেও আমোদিত (!) করেছে…হিহিহি
@বিপ্লব পালঃ ধন্যবাদ সুন্দর বিশ্লেষনের জন্য। তবে দাদা, কথা হল গে, আমি বাংলাদেশের কথা বলেছিলুম আরকি…
@শ্রাবন আকাশঃ hats off !
@কাজী রহমানঃ ধন্যবাদ…ইস…আপনার মত যদি সবাই হত…
@বন্যা আহমেদঃ জটিল !!! আমিও অপেক্ষায় আছি …
@ফাহিম রেজাঃ ভাই আমি নগন্য মানুষ হয়ে একটি কথা বলি, একপক্ষ ভাবত-এই বাংলাদেশিরা কি জাত? ব্যাটারা নামাজ পড়ে আবার পুজাতে-১লা বৈশাখে নাচে??? আবা্র আরেকপক্ষ ভাবে- এরা এমন কেন? ১লা ফাল্গুন করে-হাল খাতা করে আবার নামাজ-রোযা করে ???
শুরু হয়ে গেল মুসলমান আর বাঙ্গালিত্বকে আলাদা করে ফেলার সীমা তৈরী করা…আমাদের যা আছে-তা ই আমাদের সম্পদ।সেটাকে আঁকড়ে না রাখলেও হারাতে না দেয়াটা কি অপরাধ?
@মির্জা গালিবঃ আপনি নিয়মিত দেখে সুখ লাভ করেন ত? বলেন আমিন আমিন…হাহাহাহা…
পরিশেষে, আপনাদের মন্তব্য, উপদেশ, আদেশ, নিষেধ, অনুরোধ, গালি, ঝাড়ি, ফাপড়, দাবড়ানি, স্নেহ ও ভালোবাসা দিয়ে বাধিত করবেন…
@সায়ন আনজীর,
অনেক ভাল লাগল তোমাকে এখানে দেখতে পেয়ে!
নিয়মিত আসবে আশা করি! (F)
সেটেলাইট ঘরে রেখে হিন্দি সিনেমা গান দেখবেন , আর কনসার্ট এ অরুচি ! প্রতিদিন শয়নে শ্বপনে বলিউডের নায়ক নায়িকাকে ধ্যান করবেন কথা বললে পুরু উলটো , বলিহারি বটে ! ভালো বাঙলা জানেনা টিকই কিন্ত ভুল হিন্দি তো জানে , কম কী । :lotpot: :lotpot: :lotpot:
@মির্জা গালিব,
কাকে বলছেন, কে প্রতিদিন শয়নে শ্বপনে বলিউডের নায়ক নায়িকাকে ধ্যান করেন, আর কীভাবে বুঝলেন আরেকটু বিস্তারিত বলুন প্লিজ।
@আকাশ মালিক,
ধন্যবাদ আকাশ মালিক!
@মির্জা গালিব,
আমি দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকি।
আর দেশে গেলেও কোনদিন হিন্দি চ্যানেল দেখিনা।
যা আমার সংস্কৃতিনা তা গিলতে আমার আপত্তি আছে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ!
ছোট মুখে একটা বড় কথা বলি। বিশ্ব যেখানে এগিয়ে যাচ্ছে সেখানে আমরা বাংলা সংস্কৃতির ধূঁয়া তুলে খালি পেছন দিকেই যাচ্ছি। কই আমেরিকান সংস্কৃতির ধারকেরা কেউ তো বলে না যে কোন মূল্যে আমাদের ভিক্টোরিয়ান সংস্কৃতি বজায় রাখতে হবে। সেই সময় মেয়েরা বাইরে কাজ করত না, বিরাট বিরাট লম্বা ড্রেস পরে কেবল স্বামী বরের সাথে সাথে চলা আর স্বামী প্রভুর গুণগান করা ছিলো তাদের সংস্কৃতির অংশ। সেগুলো থেকে বেরিয়ে এসে পশ্চিমে মেয়েরা ঠিকই বাইরে কাজ করছে। সংস্কৃতির দোহাই পাইড়া ভিক্টোরিয়ান সংস্কৃতি প্রথা চালু রাখতে চায় নি। অথচ আমাদের বেলায় শাড়ি টিপের কী মহিমা। দাসত্ব, রেসাল সগ্রেগেশন এগুলাও ছিল তাদের সংস্কৃতির অংশ। সেজন্য এখন কি সেটা কেউ বজায় রাখার কথা বলছে? খালি সংস্কৃতির জাবর কাটা কি কোন কাজের কাজ হইল?
এ লেখাটায় যে পরিমান বাংলা সংস্কৃতির স্তব, ঠিক ততটাই অফেতুক ঘৃণা দেখা গেল হিন্দি গান, তরুণ শিল্পী আর হিজরাদের প্রতি। খুবই আঁতেল মার্কা অনাকাংক্ষিত বিতর্ক। রবীন্দ্র পুজারিদের রবীন্দ্রনাথের একটা উক্তি দিয়েই কাইৎ করা যায় –
সাত কোটি সন্তানেরে, হে মুগ্ধ জননী, রেখেছ বাঙালী করে, মানুষ কর নি।
রবীন্দ্র পুজারীরা রবীন্দ্রনাথের এত বড় কথাটাই ভুলে বসে আছে। মানুষ হওয়া বাদ দিয়া খালি বাঙালি সেজে থাকতে চাইতেছে।
@ফাহিম রেজা,
পৃথিবীর প্রত্যেক জাতির স্বকীয়তা আছে,জার্মান,ডা্চ,ফরাসী, ইংরেজী
এদের সবারই ভাষা, সংস্কৃতি,সাহিত্য আলাদা।
প্রত্যেকেই নিজেদের ঐতিহ্য নিয়ে গর্বিত!
আার ভিক্টোরিয়ান সংস্কৃতি কিন্তু ইংরেজদের সংস্কৃতি আমেরিকান নয়।
আর সেটা ইংরেজদের অনেক গৌরবের!
পড়া ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ!
আমার মনে হয় শহুরে বাঙালির একটা ব্যাপক অংশ বলিউডি সংস্কৃতি সানন্দে অনুসরণ করায় যারা একধরনের বাঙালিপনা অনুসরণে ‘বিশ্বাসী’, তারা অস্তিত্বের সংকটে পড়েছেন। ফ্যাশানের প্রতিযোগিতা ব্যাপারটা এখানে অনস্বীকার্য। বলিউডি ফ্যাশানের সাথে ‘বিশুদ্ধ’ বাঙালি ফ্যাশানের একটা প্রতিযোগিতা, একটা দ্বন্দ্ব সংঘাত চলছে। বলিউডি আগ্রাসনকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে নাশ করার চেষ্টা এরই একটা অংশ। নিশ্চিত করতে চাইছে যে ক্যাটরিনার পোশাক পড়ি না বলে অথবা শিলা কি জাওয়ানির সাথে গলা, নাচ মিলাই না বলে কিন্তু আমি পিছনে পড়ে যাওয়া নই। আমি চাই-ই না। চাই না কারণ আমি যেটা অনুসরণ করি, সেটাই আমার কাছে প্রিয়। কিন্তু এটুকুও যথেষ্ট হল না অনেকের। তাই আরও আগ বাড়িয়ে বলা, হিন্দি সংস্কৃতি হল উর্দুর মতই আগ্রাসন। যারা এটা অনুসরণ করে, তাদের বাঙালি রক্ত বিশুদ্ধ না। তাদের নিজস্বতা বলে কিছু নেই। দেশের খেয়ে বিদেশের নাচ নাচে এরা!
তবে এগুলো খুব অস্বাভাবিক না। যারা বলিউডি পোশাক নাচ গানের ঠিক মাঝখানে থেকে ছোট থেকে বড় হয়েছে, তাদের কাছে বলিউডি সংস্কৃতিই আপন সংস্কৃতি। আর আমরা যারা সেরকমভাবে বড় হই নি, তাদের কাছে আশেপাশের সংস্কৃতির এই নিয়ত পরিবর্তন একটি বিশাল ঘটনা। অনেকে পরে এর সাথে অভিযোজিত হচ্ছে। অনেকে হচ্ছে না, নিজের বেড়ে ওঠার যে সংস্কৃতিটা, সেটা ধরে রাখতে চাইছে। আমি নাচতে ও গাইতে পারি না। ফলে হঠাৎ একদিন সবার সাথে কোন অনুষ্ঠানে বলিউডি ব্যাপার-স্যাপারের সাথে সহজে মিশে যেতে পারি না। কিছুটা অনীহাও কাজ করে। বলিউডি সংস্কৃতির যে মেজাজটা, সেটার সাথে আমার যায় না। দেখতেও ভাল লাগে না। তার থেকে আইরিশ মেয়েদের নাচ দেখতে আমার বেশি ভালো লাগে। বিশেষ করে আমার হাতের পানীয়টার রঙ যদি তখন সবুজ হয়। 😉
ঢাকার সংস্কৃতিতে বলিউডি সংস্কৃতির অভিযোজন এখনও ক্রিটিকাল পয়েন্টে পৌঁছে নি। আরও আসবে। কিন্তু সেখানে আমি অবলিউডি দিব্ব্যি কাটিয়ে দিতে পারব আমার মনে হয়। আপনিও পারবেন। এরজন্যে বলিউড-অনুসারীদের নিজস্বতাবিহীন ভাবার কোন প্রয়োজন নেই। প্রত্যেক ‘নিজ’-ই নিজস্বতাপূর্ণ।
@রূপম (ধ্রুব),
এ সব ব্যাপারে কোন অবজেকটিভ আলোচনা কি সম্ভব না? রবীন্দ্রনাথের ইংরেজ রোমান্টিকদের ধারণা আত্মীকরণ, “স্বর্ণযুগের” আরবদের ভারত-ইউরোপের জ্ঞান ও সংস্কৃতি গ্রহণ করা, ক্ল্যাসিকাল গ্রীসের orientalizing phase, আর আমাদের বর্তমান বলিউড অনুসরণের মধ্যে কোন পার্থক্যের আলোচনা মানেই কি একপ্রকারের প্রতিক্রিয়াশীল রক্ষণশীলতা?
একই প্রশ্ন অন্যভাবে করা যায়: সংস্কৃতি যেহেতু সবসময়ই ধার ও আত্মীকরণের প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে চলে, কাজেই স্বকীয়তার ধারণা কি অর্থহীন? কোন বিশেষ সাংস্কৃতিক সময়কে অন্য আরেকটি সময়ের চেয়ে বেশি বা কম স্বকীয়, বেশি বা কম আত্মবিশ্বাসী, বেশি বা কম শিকড়-নিষ্ঠ বলা চলে না একেবারেই?
@রৌরব,
আলোচনা আর প্রতিক্রিয়াশীলতা ভিন্ন ব্যাপার বলেই মনে হয়।
সংস্কৃতিতে অর্থের সন্ধান আমি করতে পারি না। আমার কাছে সবই অর্থহীন। সেখানে ‘স্বকীয়তা’ একটু বেশি অর্থহীন না। কিন্তু স্বকীয়তা ব্যাপারটা বুঝিও কম। যে বলিউডি অভিযোজনে বড় হয়েছে, ওটাই তার স্বকীয় বলে আমার মনে হয়। এমনকি যে অবলিউডিভাবে বড় হয়ে পরে পুরোপুরি আত্মস্থ করে নিয়েছে, ওটাও তার স্বকীয় হয়ে গেছে। স্বকীয় জিনিসটা কাল্পনিক মনে হয়। তবে সেটা নিয়ে বড়াই করতেই পারে। তবে আমার কাছে বরং বলিউড নাচনেওয়ালা-ওয়ালিদের মন-মানসিকতাই বেশি ভালো লাগে এ ক্ষেত্রে, তারা সংস্কৃতিতেও সহসাই এসব বিশুদ্ধতাবাদী এলিমেন্ট নিয়ে আসে না বলে। অভিরুচির ব্যাপার ছাড়া তো আর কিছু দেখছি না।
@রৌরব,
সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা যায়। শিকড় ব্যাপারটা অনেক সময়ই রেট্রোস্পেক্টিভ বলে মনে হয়। আমাদের আদৌ কোন শিকড় আছে কিনা দেখতে হবে। স্বকীয়তা জিনিসটা যে বুঝি না সে তো বললাম ই। আর বলিউড নাচনেওয়ালিদের বেশ আত্মবিশ্বাসীই মনে হয় সেই অনুসরণ করা সংস্কৃতির চর্চায়।
আপনি আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ যে আলোচনা করতে পারেন, ‘নিজস্ব’ সংস্কৃতি থাকা না থাকার পরিণাম কি। আমি যদিও মনে করি বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতি বলতে তেমন ঐতিহাসিক কিছু নেই। তবে খুব নিকট অতীত থেকে অনেক কিছু তৈরি হচ্ছে। তবে এখানে বিশেষ জাতির উল্লেখ বাদ দিয়ে, আমরা আলোচনা করতে পারি, একটা জাতির ভবিষ্যত টিকে থাকার জন্যে একান্ত নিজস্ব ও পরিচয়মূলক সংস্কৃতির প্রয়োজন কতটুকু। সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হতে পারে। এখানে নিজস্ব মানে কিন্তু শেকড়-নিষ্ঠ নয়। বলিউডি সংস্কৃতি অবশ্যই শেকড়-নিষ্ঠ নয়, ফিউশান ও ইনোভেশান। কিন্তু ভারতের নিজস্ব বা পরিচয়মূলক বলেই মনে হয়।
ব্যাপারটা অনেকটা এমন, আপনি যদি বাঙালি জাতিকে একটি আলাদা জাতি হিসেবে আগামী এক হাজার বছর দেখতে চান, কিন্তু আলোচনায় বেরিয়ে আসে যে নিজস্ব সংস্কৃতি ছাড়া কোন জাতির ভবিষ্যত বলে কিছু নেই, তাহলে আপনি চাইবেন বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতি তৈরি হোক ও তার চর্চা হোক। ফলে সে আলোচনা জরুরি।
@রূপম (ধ্রুব),
আমার ধারণা একটি ধারাবাহিক সংস্কৃতি না থাকার পরিণাম সুবিধার নয়। এর সাথে চলমান পরিবর্তনের কোন বিরোধ দেখতে পাই না। দুশ বছর পরে বাঙালীর সংস্কৃতি আমাদের সম্পূর্ণ অচেনা মনে হতেই পারে, এবং সেটাই কাম্য। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে বর্তমান পরিবর্তনের প্রকৃতি ও গতি নিয়ে চিন্তিত হতেও পারি (বা নাও পারি)।
প্রথম কথাটার সাথে আমি একমত নই। আমাদের সংস্কৃতি প্রভূত পরিমাণে ধার করা, সতত চলমান — কিন্তু “নিজস্ব”। আমি কোন বিরোধ দেখিনা এখানে। আমাদের আলাদা একটা ভাষা আছে। আমাদের ইতিহাস মোটামুটি ধারাবাহিক প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে। আমাদের জলবায়ু, গাছপালা, খাদ্যাভাস অন্যান্য ভারতীয়দের সংলগ্ন, কিন্তু অভিন্ন নয়। বাংলা সাহিত্যের একটি ধারাবাহিকতা আছে। আমি বলব বাঙালীর নিজস্ব সংস্কৃতি রয়েছে — কোন শ্রেষ্ঠত্ববোধক ভঙ্গিতে বলবনা, স্রেফ তথ্য হিসেবে বলব।
খুব নিকট অতীত থেকে তৈরি হওয়ার ব্যাপারে একমত। কিন্তু সেটা একটা বিশ্বব্যাপী ঐতিহাসিক ট্রেন্ড। জাতীয়তাবাদ আধুনিক ধারণা, এবং এই ধারণার জন্য প্রয়োজনীয় সাংস্কৃতিক উপাদানগুলি গত দু-তিনশ বছরেই একটি বিশেষ রূপ ধারণা করেছে। যেসব জাতির নিজস্বতা সন্দেহাতীত — ধরুন জাপান — তাদের সম্বন্ধেও এটা প্রযোজ্য। সেই নির্মাণটি অনেক নতুন জিনিস তৈরি করেছে — যার উদাহরণ রাবীন্দ্রিক ঐতিহ্য — কিন্তু তা অতীতের সাথে একেবারে অধারাবাহিক নয়।
@রৌরব,
উপরের থ্রেডে আর উত্তর দেওয়ার অপশন দিচ্ছে না, তাই এখানে লিখলাম। আপনার দ্বিমতের সাথে আমি সম্পূর্ণভাবে একমত। সময়ের অভাবে আগে পিছের কিছু মন্তব্য না পড়েই কথাটা বলেছিলাম, মাঝখানে যে এত আলোচনা হয়ে গেছে তা দেখিনি, দুঃখিত। আমার মতে এই আলোচনাগুলো সবসময়েই হয়েছে আরো হবে, এবং হওয়াটাই সুস্থ এবং স্বাভাবিক। সব কালে সব যুগেই সব জাতিই কম বেশী জাত গেল, সংষ্কৃতি গেল বলে হাহুতাশ করেছে, কখনও কখনও যে সেটা সঠিক ছিল না তাও কিন্তু নয়। সংষ্কৃতি এমনি একটা বিষয়, এর মধ্যে এত ধরণের ভেরিয়েবল আছে, এর মধ্যে সাব্জেক্টিভিটি, আপেক্ষিকতা এতই প্রবল যে অনেক সময় এর সাফল্য বা ব্যর্থতাগুলোকে বর্তমানে দাঁড়িয়ে বিচার করা যায় না। এ বিষয়ে সচেতন আলোচনা এবং বিতর্ককগুলোকে অবশ্যই আলিঙ্গন করতে পারা উচিত, সবসময় সেখানে সরাসরি ভুল বা শুদ্ধর ব্যাপার নাও থাকতে পারে । তবে সেটা করতে গিয়ে যখন আমরা অতীতকে আঁকড়ে ধরে সংষ্কৃতির সুস্থ প্রবাহমানতার টুটি চেপে ধরার চেষ্টা করি, আধুনিকতা বা বাস্তবতাকে অস্বীকার তখনই আমার আপত্তিটা জোড়ালো হতে শুরু করে। তবে সেটাও আমার একান্ত ব্যক্তিগত অবস্থান, সেখানেও সাদা কালোর মত ভুল বা সঠিক বলে কিছু নাও থাকতে পারে।
(Y)
আসলেই ঠুনকো,অসার ব্যক্তিপূজা, ব্যক্তিকে দেবতার আসনে বসানো বাংগালিজাতির ঠুনকো মানসিকতা এখন ঘরে ঘরে শুধু আলোর মিছিল চলছে……কবে যে এমন দৈন্য,হীন,দূর্বল,ভাংগা শূন্য মানসিকতা আমরা নিজের জীবন থেকে ঝেড়ে ফেলে দিতে পারব তা একমাত্র ভবিতব্য জানে……
আমরা শুধু রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতাদের বুলি আওড়ানো বা বংশপরম্পরায় শেখানো কথায় জাত গেল,ধর্ম গেল,সংস্কৃতি গেল বলে শুধু চিৎকার চেচামেচি করি,অথবা চেচামেচি করি আমাদের সমাজের আইকন রবিন্দ্রনাথ,রোকেয়া কে নিয়ে কিন্তু চেচামেচি করি না তাদের কে নিয়ে যারা প্রগতির ধারক-বাহক ছিলেন,আছেন যেমন,আরজআলী মাতুব্বর,আহমেদ শরীফ,হুমায়ন আজাদ বা তসলিমা নাসরিন কে নিয়ে অথবা এবার দেশে গিয়ে জানলাম আরেক স্বশিক্ষিত লেখক হরিশংকর জলদাসকে নিয়ে……
আমাদের অন্তসারশূন্য জাতীয়তাবাদী ও সামন্ত্র্যতান্ত্রিক মনোভাব ব্যক্তি ও সামাজিক মূল্যবোধে কত গভীরে প্রোথিত বা কারেন্ট জালের মতো বিস্তার করে আছে তা দেখা ও বুঝা যায় যখন জাতির সো-ল্ড শিক্ষিত নামধারী মানুষজন হুমায়ন আহমেদ,ইমদাদুল হক মিলনের মতো লোকদের পা ছাটে……আর এমন স্তরের সমাজের আইকনরাই আমাদের ভজনীয়,শ্রদ্ধার পাত্র বলে আমরা মান্য করি।তাদের বুলি আওড়ানো লেখা থেকে আমরা শিখি সভ্যতা,সংস্কৃতি ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ধ্যান-ধারনা।:-s
জয় হউক বুদ্ধিভিত্তিক জ্ঞানের, বিবর্তনীয়বিজ্ঞানের ও প্রযুক্তির,অন্য কিছুর নয়।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
সুখের বিষয় না হলেও এটাই বাস্তব!
এই অবস্থা যাতে বদলায় তার জন্য কি কেউ কিছু করছেন!
ধন্যবাদ !
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
সুখের বিষয় না হলেও এটাই বাস্তব!
এই অবস্থা যাতে বদলায় তার জন্য কি কেউ কিছু করছেন!
ধন্যবাদ !
রবীন্দ্রনাথের আগে তাহলে অশুদ্ধ বাঙালিয়ানা প্রচলিত ছিল? লে হালুয়া।
রবীন্দনাথের মত একজন মধ্যযুগীয় সামন্ততান্ত্রিক মানসিকতার লোক যাদের বিশুদ্ধ বাঙালিত্বের প্রবর্তক, আর রোকেয়ার মত মৃতপতিভক্ত প্রাচীনপন্থী মর্ষকামী নারী, নারীবাদের প্রেরণার উৎস, তাদের নিয়ে আর কথা না বাড়াই।
বাঙালি সংস্কৃতিতে বাঙালির নিজস্ব বলে আসলে কিছু নেই। সবই এসেছে বিদেশি সংস্কৃতি থেকে। আমরা যে হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি বলি, তা আসলে হাজার বছর ধরে মিশ্রিত অসংখ্য বিদেশি সংস্কৃতির মিশ্রণ ছাড়া আর কিছু নয়। এই জগাখিচুড়ি মিশ্রণ থেকে বিদেশি জিনিস ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে চাইলে রাবীন্দ্রিক নারীদের গায়ে শুধু কয়েক হাত লম্বা এক থান কাপড়ই থাকবে। ব্রা, ব্লাউজ, কপালের টিপ সহ সব সুশোভিত জিনিসই উধাও হয়ে যাবে শরীর থেকে। পুরুষদেরও পাঞ্জাবি, পায়জামা, প্যান্ট, শার্ট বাদ দিয়ে নেংটি পরে চলাচল করতে হবে।
বাঙালির বাঙালিত্ব কতখানি নিজস্ব সে বিষয়ে আহমেদ শরীফ এর লেখা ‘বাঙলা ও বাঙালি’ প্রবন্ধ থেকে কিছুটা তুলে দিচ্ছি।
@ফরিদ আহমেদ,
আহমদ শরীফের মন্তব্য অনৈতিহাসিক মনে হচ্ছে। “আর্য” সংস্কৃতি বহু আগেই পূর্ব ভারতে পৌঁছে গেছিল, বুদ্ধের সময় নয়। আর মানুষের আদি নিবাস সাইবেরিয়া ও ভূমধ্যসাগর, এটা তো রীতিমত হাস্যকর মনে হচ্ছে।
সংস্কৃতির দ্রুত চলমানতায় আমি বিশ্বাসী, কাজেই আপনার সাথে বোধহয় মতের অমিল হবে না। কিন্তু বাঙালীর সংস্কৃতি মিশ্র, এটা অবান্তর প্রসঙ্গ বলে মনে হচ্ছে আমার। অমিশ্র সংস্কৃতি আছেটা কার? ক্ল্যাসিকাল গ্রীস, চীন, ইরাক, মিশর, ইংল্যান্ড? কারো নয়। কাজেই একটা অনস্তিত্বশীল প্লাটোনিক আদর্শ বাঙালীর ক্ষেত্রে খাটল কিনা, তাতে কি এসে যায়? মিশ্রিত হলেও বাঙালীর সংস্কৃতি একটা আসল জিনিস, তাকে টিকিয়ে রাখা উচিত না চলতে দেয়া উচিত সে তর্কের মিমাংসায় ওই পর্যবেক্ষণ কোন কাজের নয়।
@রৌরব,
সংস্কৃতির দ্রুত চলমনতায় বিশ্বাসী হওয়া বা অবিশ্বাসী হওয়ার সাথে সংস্কৃতির চলমনতা নির্ভরশীল নয়। সংস্কৃতি এবং ভাষা, আসলেই চলমান এবং সতত পরিবর্তনশীল বিষয়। এর কোনো সার্বজনীন আদর্শ মান নেই। বর্তমানে যেটা প্রচলিত, সেটাই সেই সময়কার স্থানীক মানুষদের সংস্কৃতি। বিশুদ্ধ রাখতে চাওয়ার আবদ্ধ ইচ্ছাটা, এদেরকে হত্যা করারই নামান্তর।
অমিশ্র সংস্কৃতি আসলে কোনো জাতিরই নেই। আমি বাঙালির সংস্কৃতির প্রসঙ্গ এনেছি শুধু এটা বোঝাতেই যে একে নিয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে মায়াকান্না করার কিছু নেই। আজকে যে বাঙালি সংস্কৃতি আমরা দেখছি, হাজার বছর আগে সেটা এরকম ছিল না, হাজার বছর পরের ভবিষ্যতেও এটা পালটে যাবে বিপুল পরিমাণে বর্তমানের রূপ থেকে। কাজেই, একটা সদা পরিবর্তনশীল বিষয়কে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে আদর্শ মানের ছাচে ফেলে এর শুদ্ধতা এবং অশুদ্ধতা বিচার করতে যাওয়াটা নির্বুদ্ধিতারই নামান্তর মাত্র।
@ফরিদ আহমেদ,
দুটি বিষয় আগে আলাদা করি। সংস্কৃতির যেসব বিষয় প্রগতিবিরোধি, সেগুলি শুদ্ধই হোক আর অশুদ্ধই হোক সেগুলি পরিত্যাজ্য। এটি আমার আলোচনার বিষয় নয়। আমি শুধু সংস্কৃতির ক্ষেত্রে বিশুদ্ধতা বা তার অভাব নিয়ে আপাতত ভাবছি।
এই ব্যাপারটিই বুঝতে পারছি না আমি। বিশুদ্ধ হলেই কি উচ্ছসিত হয়ে উঠব আমরা, কাঁদব মায়া-কান্না কাঁদব? আমি যখন বলছেনই যে বিশুদ্ধ সংস্কৃতি বলে কিছু হয় না, তখন সেটা আদৌ একটা মানদণ্ড হবে কেন, সংস্কৃতির পক্ষে বা বিপক্ষে? এখন আপনি যদি বলেন পৃথিবীর কোন সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার নেই যে বিষয়ে ওই সংস্কৃতির লোকেরা উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠতে পারে, তাহলে ভিন্ন কথা। কিন্তু যদি থাকে সেরকম সংস্কৃতি, যা উচ্ছ্বাস জাগায়, যা ধরে রাখার মত; এবং সেই সংস্কৃতি আপনার ভাষ্যমতেই হয়ে থাকে মিশ্রিত; তাহলে নিশ্চয়ই সেই উচ্ছাসের উৎস তার অবিমিশ্রতা নয়, অন্য কিছু। আমার বক্তব্য এটুকুই।
আরেকটু সংশ্লিষ্ট কথা হল, চলমানতা বা পরিবর্তন মানে continuity-র অভাব নয়। বরং, সব শক্তিশালী সংস্কৃতির মধ্যে প্রবহমানতা দেখতে পাওয়া যায়, অর্থাৎ হাজার বছর ধরে বহু পরিবর্তন হলেও পরিবর্তন গুলি পরস্পর-সংশ্লিষ্ট, যা ওই সংস্কৃতিকে দেয় একটি বিজড়িত ভিত্তি। কাজেই বাঙালী (বা অন্য যেকোন) সংস্কৃতির পরিবর্তনশীলতা পর্যবেক্ষণ এবিষয়ক বিতর্ক বিষয়ে একটি শুরুর বিন্দু পারে হয়ত, কিন্তু তারপরও বহু কথা রয়ে যায়।
@রৌরব,
আমি কিন্তু আগেই বলেছি যে, যেহেতু ভাষা এবং সংস্কৃতি সদা-পরিবর্তনশীল, কাজেই এর কোনো আদর্শ মান বা বিশুদ্ধ অবস্থান থাকাটা অসম্ভব। যদি কোনো সংস্কৃতির লোক এরকম মনে করে যে, তাদের সংস্কৃতি বিশুদ্ধ, তবে তারা শুধু মায়াকান্নাই নয়, মড়াকান্নাও কাঁদতে পারে। কারণ ওই সংস্কৃতি আর জীবিত নেই, মরে ভুত হয়ে গিয়েছে। 🙂
আমিতো সেরকম কোনো মানদণ্ডের কথা বলি নি। বরং আমার অবস্থান এর বিপক্ষেই। এখানেইতো বরং দেখলাম পরনে ঢাকাই শাড়ী, কপালে টিপের বাঙালি রমণীর মানদণ্ডকে হাজির করা হয়েছে আদর্শ সংস্কৃতি হিসাবে।
এটুকুর সাথে সম্পূর্ণ একমত আমি। পরিবর্তন মানেই ধারাবাহিকতার অভাব নয়। বরং এই পরিবর্তনগুলো একের সাথে অন্যটা পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। সংস্কৃতি বিশাল একটা মেল্টিং পট এর মধ্যে প্রতি মুহুর্তে মিশ্রিত হচ্ছে। যে উপাদান সেই পটে নেই, সেই উপাদান সেই সংস্কৃতিতে থাকবে না, এটাই সোজা হিসাব।
@রৌরব,
ধন্যবাদ!
@ফরিদ আহমেদ,
বাঙালির মানস জীবনে রবীন্দ্রনাথের অবদানের কথা অস্বীকার করার
ধৃষ্টতা আমার নেই! তা না হলে বঙ্গবন্ধু- “আমার সোনার বাংলা”
নির্বাচন করতেনা।আর কেনা জানে ঠাকুর বাড়িতেই শাড়ীর সাথে ব্লাউজ পরা শুরু হয়।শুরু কুচিঁ দিয়ে শাড়ী পরা।
কারও কিছু কিছু জিনিস অপছন্দ হলেই তার পুরো অর্জনকে অস্বীকার
একমাত্র বাঙালিরাই করতে পারে!
হায়রে বাঙালি!নিজেরা কিছু করেনা, আর যারা করে তাদের পিছনে লাগে।
ডঃ ইউনুস এখন এর শিকার!
আর রোকেয়ার বিষয়ে আমার একই মত।
আপনার সঙ্গে এ নিয়ে অনেক হয়েছে।
আমার প্রজন্মের সব মেয়েই জানে কে তাদে পথ দেখিয়েছিল!
ধন্যবাদ!
@লাইজু নাহার,
রবী ঠাকুর যে শাড়ীর সাথে ব্লাউজ পরা আর কুঁচি দিয়ে শাড়ী পরার এরকম যুগান্তকারী আবিষ্কার করেছিলেন এটা জানা ছিল না। জেনে বিস্মিত হলাম। 😛
তো, কথা হচ্ছে যে, এর আগে উপমহাদেশের অন্য কোনো অঞ্চলের মেয়েরা কি শাড়ীর সাথে ব্লাউজ পরতো না, বা কুঁচি দিয়ে শাড়ী পরতো না? যদি পরে থাকে, তবেতো এটা আর বিশুদ্ধ বাঙালি সংস্কৃতি হতে পারে না। তাই না? বরং বলা চলে যে, ঠাকুর পরিবার বিদেশি সংস্কৃতি চুরি করে এনে বাঙালি সংস্কৃতির বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছিলেন। আপনার মত একজন খাঁটি বাঙালি সংস্কৃতির ধারক-বাহকেরতো এক্ষেত্রে উচ্ছ্বাসের বদলে আপত্তি জানানোটাই বেশি প্রয়োজন। অথচ সেটা করছেন না। এক যাত্রায় দু’ ফল কেন?
শুধু আমার মত অল্প কিছু পুরুষবাদী আর কিছু নারী পুরুষবাদীরাই জানি সেই পথ কতখানি আলোয় ভরা নাকি ঘোর তমস্যাচ্ছন্ন। :))
@ফরিদ আহমেদ,
যদ্দুর জানি বাংলায় ব্লাউজ-এর আধুনিক ব্যবহার ঠাকুর বাড়িরই অবদান। যেহেতু ওই বাড়ির মেয়েরা বাড়ির বাইরে যেতেন ও পুরুষদের সাথে মেলামেশা করতেন, কাজেই খালি শাড়ি পেঁচিয়ে রাখতে অস্বস্তি বোধ করতেন। তবে এটা বোধহয় ভারতের অন্য অংশ থেকে আসেনি, এটা বিলেতি প্রভাব।
@রৌরব,
হাঃ হাঃ হাঃ … এতক্ষণে ঠাকুর বাড়ির আসল এবং বিশুদ্ধ বাঙালি সংস্কৃতি বের হয়েছে। 🙂
বিলেতি পন্য কিনে হও ধন্য।
@রৌরব,
বাংলায় ব্লাউজ এর ব্যবহার ঠাকুর বাড়ির অবদান সেটা আমি জানি। আমি যে বিদ্রুপটা করেছি, সেটা ওই বিদেশ সংস্কৃতি থেকে গ্রহণ করা থেকেই। যেটাকে লাইজু নাহার গর্ব করে বলছেন বিশুদ্ধ বাঙালিয়ানা, সেটাই দেখা যাচ্ছে যে, এসেছে আসলে বিদেশি সংস্কৃতি থেকে সরাসরি নকল করে।
ব্লাউজ বিলেতি প্রভাব। এতে কোনো দ্বিমত নেই আমার। কিন্তু বাংলার মেয়েরাই উপমহাদেশে প্রথম ব্লাউজ পরেছে বা কুঁচি দেয়া শাড়ী পরেছে, এ বিষয়টাতে একমত হতে পারছি না।
@ফরিদ আহমেদ,
হুঁ। “বিশুদ্ধ” শব্দটা ঠাকুরবাড়ির কোন প্রসঙ্গেই খাটে না, এটা ঠিকই। কিন্তু আমার মতে এই শব্দটা পুরো আলোচনাটাকে একটা সরু খালে নিয়ে ফেলেছে। উদাহরণ দিই:
লক্ষ্য করুন, আসল, আদর্শ, বিশুদ্ধ — এই ভিন্ন ধারণাগুলি কিভাবে মিশে যাচ্ছে। “ঠাকুর বাড়ির সংস্কৃতি বিশুদ্ধ নয়, কিন্তু আদর্শ” এটা কিন্তু পরস্পরবিরোধি কোন অবস্থান নয়। ঠাকুর বাড়ির সংস্কৃতি আদর্শ না হওয়ার ১০১ টা কারণ থাকতে পারে, কিন্তু অশুদ্ধতা তার একটা নয়।
আমি আশা করছি লাইজু নাহার বিশুদ্ধতা সম্বন্ধে তার অবস্থানটি আরেকটু পরিষ্কার করবেন।
@রৌরব, আমার মনে হয় এখানে ফরিদ আহমেদ, অভিজিত বা আমি যা বলতে চাইছি তা খুব সোজাসাপ্টা একটা কথা। আসুন আমরা আমাদের নিজেদের রাজনীতি, অর্থনীতি, মানবিক বা সাংষ্কৃতিক ইতিহাসটাকে বর্তমান এবং বৈশ্বয়িক ধারার আলোকে ফেলে সামগ্রিকভাবে বাঙালি সংষ্কৃতির প্রবাহমানতা এবং ভবিষ্যত দিক নির্ধারণের আলোচনাগুলো করি। রাবিন্দ্রিক ‘বিশুদ্ধ’ বাঙালিপনা বা কোন ব্যক্তি পুজার নিরিখে ভবিষ্যতের বাঙালি সংষ্কৃতি নির্ধারণের কোন দরকার নেই। সংষ্কৃতি প্রবাহমান, এখানে ‘বিশুদ্ধ’ বলে কিছু নেই। রাবিন্দ্রিক সংষ্কৃতি আমাদের ইতিহাসের অংশ কিন্তু তা বাঙালিপনার চূড়ান্ত কোন মানদন্ড নয়।
@বন্যা আহমেদ,
হুম ভাল কথা!
সুচিন্তিত মন্তব্য!
তবে মুশকিল হচ্ছে, যারা এটা বলছে তারাই আবার তার কবিতা থেকে
নিয়ে সিরিজ লিখছে, বই এর নাম দিচ্ছে।তাহলে আমরা রবীন্দ্র বলয় থেকে
বেরুব কি করে!
মহা বিপদে দেখছি!:-)
@রৌরব,
আমি আসলে বলতে চেয়েছিলাম রবীন্দ্রনাথ সেসময়ের মেয়েদের
সেকালের নিরীখে একটা স্ট্যান্ডা্র্ড পোষাক নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন।
হয়ত বিশুদ্ধ কথাটা এখানে স্ট্যান্ডা্র্ড হবে।
সেটাকেই এখন পর্যন্ত সিংহভাগ বাঙালি মেয়েরা ধারণ করে আছে।
এরমধ্যে আবার অনেকে হিজাব ধরেছে, যা মধ্যপ্রাচ্যের।
ঢাকার কিছু মেয়ে ওয়েষ্টার্ণ পোশাক পড়ছে ।
@লাইজু নাহার,
আসলে এগুলো ক্ষেত্রে সঠিক ভুল কিংবা স্ট্যান্ডার্ড অস্ট্যাণ্ডার্ডের কিছু নেই। পুরটাই আসলে ব্যক্তিগত অবস্থান এবং অভিরুচির উপর নির্ভরশীল। আপনি বড়জোর বলতে পারেন – শাড়ি টিপ পরতে বা দেখতে ভাল লাগে। তেমনি যে মেয়ে ওয়েস্টার্ণ পোষাক পরছে – সেটাও তার নিজস্ব অভিরুচি। বাঙালি সংস্কৃতির দোহাই দিয়ে কিংবা অপসংস্কৃতির কথা বলে কোনটিকে ভুল বা শুদ্ধ বলার কিছু নেই। কারো অভিরুচিকে এভাবে ভুল বা শুদ্ধ বলতে গেলে অর্থহীন বিতর্কে পর্যবসিত হয়। নীচে বিতর্কগুলো ঠিক সেদিকেই রূপ নিয়েছে, কারণ অনেক ক্ষেত্রেই কারো নিজস্ব অভিরুচিকে সঠিক বা ভুলের মাপ কাঠিতে ফেলে বিচার করার চেষ্টা করা হয়েছে।
ছেলেরা বহুদিন ধরেই শার্ট প্যান্ট পড়ছে – এগুলো তো ওয়েস্টার্ন পোষাকই। আবার ঠাকুরবাড়ির শাড়ির কিংবা স্টাইলের কথা যদি বলেন সেটাও আমাদের সময়ে এসে অনেকটাই জৌলুশ হারিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কিংবা কর্মক্ষেত্রে অধিকাংশ মেয়ে শাড়ি পরে না। সালোয়ার কামিজই পরে। এর পেছনে যতটা না ধর্মীয় কিংবা হিন্দি সিনেমার প্রভাব আছে, তার চেয়ে অনেক বেশি সম্ভবতঃ এজন্য যে, শাড়ির তুলনায় সালোয়ার কামিজ পরে কর্মক্ষেত্রে কাজ করায় স্বাচ্ছন্দ্য। আজ থেকে আরো পরে কর্ম ক্ষেত্রে মেয়েদের সংখ্যা আরো অনেক বাড়বে, তখন, পোশাকের আরো পরিবর্তন হলেও অবাক হবার কিছু থাকবে না। সংস্কৃতি তো এভাবেই বহমান স্রোতের মতো এগিয়ে যায়। এটাকে কি স্ট্যান্ডার্ডের দোহাই দিয়ে আটকে রাখা যাবে?
কাজেই বিতর্কটি শেষ করা যায় এই বলে – আপনি যদি বলেন ওমুকটা আপনার অভিরুচি কিংবা পছন্দ – তাহলে কেউই আপনার কথায় আপত্তি করবে না। আমি যদি বলি আমার জেমসের গান খুব পছন্দ – তাহলে সেটাতে কারো বলার কিছু নেই। কিন্তু কেউ যদি আমাকে বঝাতে আসে ফরিদা পারভীন জেমসের চেয়ে ভাল গান গায় – সেটাই ‘স্ট্যান্ডার্ড’ – তার গানই শোনা উচিৎ জেমস ছেড়ে – তাহলে কিন্তু আমার জন্য সেটা সুখপ্রদ হবে না, ঠিক যেমন আমি যদি আপনাকে ইন্দ্রমোহন রাজবংশী বা রেজওয়ানা বন্যার বদলে জেমস বা বাচ্চু গেলাতে চাই -সেটাও নিশ্চয় সুখপ্রদ কিছু হবে না, তাই না? অর্থাৎ, আপনি যদি আপনার পছন্দটিকে ‘স্ট্যান্ডার্ড’ বলে অন্যদের উপরে চাপাতে চান, আর এর পেছনে সংস্কৃতির কিংবা এ ধরণের অন্য কিছুর দোহাই দেন, বিপত্তিটা কিন্তু শুরু হবে তখনই। কারণ অনেকেই দেখবেন আপনার স্ট্যাণ্ডার্ডটিকে চুড়ান্ত বলে মেনে নিতে আগ্রহী হবেন না। আশা করি বোঝাতে পেরেছি।
ভাল থাকুন।
@অভিজিৎ,
প্রশ্ন হচ্ছে “গেলাতে চাওয়া” বা “চাপাতে চাওয়া” কথাটার অর্থ কি? লাইজু নাহার কি আইন করে হিন্দি গান বন্ধ করতে বলছেন? তা যদি না বলেন, তাহলে তার সাথে বিবর্তন বা বিজ্ঞান শিক্ষা বাড়ানোর প্রস্তাবের পার্থক্য কি?
@রৌরব,
এবার বিষয়টা আরো সিরিয়াসের দিকে মোড় নিতে যাচ্ছে। এখানে প্রথম থেকেই আলোচনার টোনটা আমার কাছে একটু শক্ত মনে হয়েছে। ভেবেছিলাম কিছু বলবো কিন্তু দেখলাম যা বলতে চেয়েছিলাম তা অভিজিৎ দা তার শেষ মন্তব্যে বলেই দিয়েছেন। লাইজু নাহারের লেখা খুবই আবেগপ্রবণ লেখা, আমিও একদিন ঠিক এভাবেই ভাবতাম, এরকমই ছিল আমার ভাষা,সংস্কৃতি দেশপ্রেম। বাঙ্গালির বাঙ্গালিয়ানা, বাঙ্গালিত্ব, জাতিয়তা ও সংস্কৃতি নিয়ে সব চেয়ে সুন্দর, নৃতাত্বিক ও ঐতিহাসিক তথ্যভিত্তিক আলোচনা আমি পেয়েছি ডঃ আহমেদ শরিফের বেশ কয়েকটি লেখায়। এর উপর আরো একটা ভাল বই পড়েছিলাম, লেখকের নামটাই আজ আর মনে নেই, সম্ভবত বইয়ের নাম ছিল বঙ্গ থেকে বাংঙ্গাল (রিজিয়া রহমানের লেখা নয়)। এক কথায় আমরা সংকর জাতি। যাদের বাঙ্গালি বলা হয়, তারা এক গোষ্ঠীর মানুষ নয়। এই জাতির প্রধান হলো অষ্ট্রিক ও দ্রাবিড় এবং অন্যটি হলো আর্য ও মোঙ্গল। সাঁওতাল, গারো, হাজং, মনিপুরি, ত্রিপুরা, চাকমা, মারমা প্রভৃতির রক্তও মূল বাঙ্গালি রক্তে প্রবাহিত। বাঙ্গালির ইতিহাস রবীন্দ্রনাথের জন্মের অনেক পূর্বের ইতিহাস। ঠাকুর বাড়ির সংস্কৃতি দিয়ে বাঙ্গালির পরিচয় খোঁজা আসলেই ভুল। একসময় এদেশের মুসলমানদেরকে ঠাকুরেরা বাঙ্গালি বলতে রাজীই ছিলেন না। আসল কথা হল, সংস্কৃতি এক বহমান নদীর স্রোতের মতই। যা আসে তা চলে যাওয়ার জন্যেই আসে। আমাদের চারপাশের পৃথিবীর দিকে তাকালেই এর স্পষ্ট প্রমাণ দেখতে পাই। এমন কি নিজের ঘরেও। বাবার ধুতি আমার মেয়ের কাছে খুবই হাস্যকর। আমার সন্তানের সংস্কৃতিই আজকের পছন্দসই গ্রহণযোগ্য সংস্কৃতি, বাবার পছন্দ-নাপছন্দে কিছুই যায় আসেনা।
শিক্ষণীয় একটি বিষয়ের উপর জ্ঞাণী-গুণীজনদের কাছে থেকে আক্রমণাত্বক- ভাবহীন আলোচনা কাম্য।
@রৌরব, এই আলোচনাটা যে এখনো চলছে সেটা দেখেই অবাক হলাম। বহু দিক থেকে বহুজনের আলোচনার ফলে বিতর্কের মূল বিষয়টিই ঘোলা হয়ে গেছে। আমি আগেও একবার পুরো বিতর্কটার একটা সারমর্ম হাজির করার চেষ্টা করেছিলাম, সেটা বিতর্কের ঝড়ে হারিয়ে গেছে। আপনার কোন দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশ্ন করছেন সেটা আমি বুঝতে পারছি, নির্দিষ্ট কোট তুলে দিয়ে দিয়ে আলোচনা করার সময় নেই, তাই সংক্ষেপে সমস্যাটার একটা দ্রুত আর সি এ (রুট কস এনালিসিস) করার যায় কিনা দেখা যাক,
– যে কেউ যে কোন অবস্থায় বা সময়ে দাঁড়িয়ে সংষ্কৃতির গতি বা সঠিকতা, বেঠিকতা এমনকি সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন করতে পারে, এখানে রক্ষণশীলতা বা প্রতিক্রিয়াশীলতার কোন প্রশ্ন নেই। এই প্রশ্নগুলোর বেশীরভাগই সাব্জেক্টিভ, এর মধ্যে কতটুকু অব্জেক্টিভিটি আছে সেটা সেই নির্দিষ্ট সময় এবং পরিবেশের বিভিন্ন ভেরিয়েবলের উপর নির্ভর করবে। সেদিক থেকে লেখাটায় কোন সমস্যা নেই।
– কিন্তু সমস্যাটা হয়ে যায় যখন কোন লেখক সংষ্কৃতিকে অতীতের বিশেষ কোন মানদন্ডে ফেলে বিচার করতে চায় বা তাকে স্ট্যান্ডার্ড ধরে নিয়ে বর্তমানের উপর আরোপ করার চেষ্টা করে। এখানে যেমন লেখাটা শুরুই করা হয়েছে শাড়ি টিপ এবং ‘রাবিন্দ্রিক বিশুদ্ধ বাঙ্গালিপনা’ কে বিশুদ্ধ বা স্ট্যান্ডার্ড বলে চালানোর প্রচেষ্টা নিয়ে। লেখকের সদিচ্ছা নিয়ে আমি কোন প্রশ্ন করছি না, তবে আমার মতে নারী, সংষ্কৃতির বহমানতা এবং উৎপাদনব্যবস্থার সাথে সংষ্কৃতির সম্পর্ক না বোঝার ফলে এখানে একটি দৃষ্টিভঙ্গিগত সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এবং সেখানেই আমার মূল আপত্তিটা ছিল। এখানে বাকি প্রসংগগুলো একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক কারণ তার বেশীরভাগই সাব্জেক্টিভ। এ আলোচনাকারীদের সবাই মোটামুটি বলেছেন যে, সংষ্কৃতিকে অতীতের কোন মানদন্ডে তুলে বিচার করা ঠিক নয়, রাবিন্দ্রিক বাঙালিয়ানা কোন স্ট্যাটিক স্ট্যান্ডার্ড হতে পারে না। কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে তা করতে চান তাহলে বলার কিছু নেই, কিন্তু সামগ্রিকভাবে তা চাওয়াটা বাস্তব নয়।
@বন্যা আহমেদ,
আপনার অ্যানালাইসিস-এর সাথে আমি দ্বিমত পোষণ করিনা, বা খুব বেশি করিনা। কিন্তু এখানকার সব আলোচনা আপনার অ্যানালাইসিস-এরই প্রকারভেদ, এ ব্যাপারে আমি সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণকারী। আমিও আবার দীর্ঘ কোট মাইনিং-এ যাব না (যদিও কেউ চাইলেই যেতে পারি 😉 ) — কিন্তু এখানকার অনেক যুক্তিই একপ্রকারের উত্তরাধুনিক শূণ্যতা বলে প্রতিভাত হয়েছে আমার কাছে — ইতিহাসের জটিলতা, সংস্কৃতির সংকরতা, সংস্কৃতির প্রতিভূদের নানা অপকর্ম — এগুলিকে ব্যবহার করা হয়েছে এবিষয়ক যেকোন আলোচনাকে গোড়াতেই infeasible হিসেবে ঘোষণা করার জন্য।
@রৌরব,
আহা হা হা , দিলেন তো সব মাটি করে! ‘রবীন্দ্রনাথের বিশুদ্ধ বাঙ্গালিয়ানা’ তাহলে বিশুদ্ধ নয়, বিলেত থেকে চুরি করা অশুদ্ধ বিশুদ্ধতা :hahahee:
ধিক ধিক…
@লাইজু নাহার
আমার মতে ‘রবীন্দ্রনাথ যে বিশুদ্ধ বাঙ্গালিয়ানা প্রর্বতন করেছিলেন’ তা চুলোয় যাওয়ার সময় হয়েছে, বিশেষ করে তা যদি নারীদের জন্য প্রেস্ক্রাইবড বাঙালিপনার রাবিন্দ্রিক ভার্সান হয় তাহলে তো বিশাল এক বনফায়ার বানিয়ে সেগুলোকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া উচিত। আরো কয়েক দশক আগেই সেটা করার প্রয়োজন ছিল, জাতিগতভাবে এটা আমাদের ব্যর্থতা যে আমরা তা করে উঠতে পারিনি। ঠিক ধরেছেন, “পরনে ঢাকাই শাড়ী কপালে টিপ” এবং সেই সাথে শেলোয়ার কামিজের জায়গা চলচিত্র, গান আর বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত, ঠিক যেরকম হয়েছে কিল্ট, চিপাও, পা পর্যন্ত লম্বা স্কার্ট বা কিমোনোর ক্ষেত্রে। অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে আমরা কদিন পরপর ‘শাড়ি গেল চুড়ি গেল টিপ গেল’ বলে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করি, অথচ ছেলেরা যে তাদের বাঙালি কাপড় চোপড় ছেড়ে দিব্যি সার্ট প্যান্ট পরে ঘুরে বেরাচ্ছে তা ঠিকই আমাদের নজর এড়িয়ে যায়। মেয়েরা আধুনিক উৎপাদন ব্যবস্থার সাথে যুক্ত হলে সনাতন কাপড় চোপড় বদলে যাবে সেটাই তো স্বাভাবিক। আর রবীন্দ্রনাথের বাঙালিপনা তো ইতোমধ্যেই ৬০-৭০-৮০ বছর পুরোনো হয়ে গেছে, আর কতকাল আমরা শুধু পিছনের দিকেই তাকিয়ে থাকবো, সামনে তাকানোর সময়, যোগ্যতা বা ইচ্ছেটা হবে কবে আমাদের? সংষ্কৃতি কোন বদ্ধ স্ট্যাটিক জিনিস নয়, এটা বহমান না হলে, সুস্থভাবে আধুনিকতাকে আলিঙ্গন করতে না শিখলে সে সংষ্কৃতি প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে না।
রবীন্দ্রনাথের পশ্চাদপদ নারী দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে এই মুক্তমনাতেই অনেক বিতর্ক হয়েছে, ওটা আকঁড়ে পড়ে থাকার কারণ কী থাকতে পারে তা আমার বোধগম্য নয়। বাংলা ভাষা বা সিনেমায় অন্য ভাষার আগ্রাসন বা আধুনিকতার মাত্রা নিয়ে আলোচনা বয়া বিতর্ক হতে পারে কিন্তু তার ভিতরে ‘শাড়ী চুড়ি’ সংরক্ষণ করতে চাওয়ার দাবীটাকে ( অথবা কাউকে হিজড়া বলে গালি দেওয়াটা) আমার কাছে অত্যন্ত আপত্তিজনক বলেই মনে হয়।
@বন্যা আহমেদ, (Y) (Y)
@বন্যা আহমেদ,
পৃথিবীর প্রত্যেক জাতিরই নির্দিষ্ট পোষাক আছে যেমন ইন্দোনেশিয়ার সারং,
এমনকি ইউরোপেও ওরা সামারে পরে নিজেদের ঐতিহ্যে গর্ববোধ করে।
এশিয়া, আফ্রিকার উপনিবেশ গুলো একসময় ইউরোপের অধীনে ছিল।
খেয়াল করে দেখবেন তারা সবাই জাতীয় পোষাকই পরে।
পৃথিবী প্রতিটি জাতি তাদের ঐতিহ্য নিয়ে গর্বিত।
পোষাক তারি একটি অংশ।
আপনি বললেই তা চুলোয় যাবেনা।
আর হিজড়া কথাটা আমার লেখায় ছিলনা।
ধন্যবাদ!
@লাইজু নাহার, আপনি মনে হয় আপনার নিজের বক্তব্য থেকেই সরে এসেছেন। আপনি আপনার মূল লেখায় যা বলেছেন তা দিয়ে আর যা বোঝা যাক ‘কখনো কখনো শাড়ি টিপ পড়ে গর্বিত হওয়ার’ কথাটা বোঝা যায়না। দেখুন আপনি কী বলেছিলেন
আমিই বরং আপনাকে ৪-৫ টা ঐতিহ্যবাহী কাপড়ের কথা উল্লেখ করে বলেছিলাম যে উন্নত এই দেশগুলোতে এগুলো শুধু ঐতিহ্য হিসেবেই টিকে আছে এবং শেলওয়ার কামিজ বা শাড়ি টিপেরও সেভাবেই চলচিত্রে, গানে বা বিশেষ অনুষ্ঠানে ঐতিহ্য হিসেবেই টিকে থাকা উচিত, অফিস আদালত বা পেশাগত জীবনে নয়। ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করা এক জিনিস আর তাকে আঁকড়ে পড়ে থাকা আরেক জিনিস। নারী বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের দৃষ্টিভঙ্গী সম্পর্কে যারা অল্প কিছু খবর রাখেন তারাই জানেন যে রাবিন্দ্রিক বাঙ্গালিয়ানার কথা বলে তার পরেই শাড়ি টিপ টিকিয়ে রাখার কথা বলার মানে কি। নারী সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের দৃষ্টিভঙ্গি যে সে সময়েও কতটা পশ্চাদপদ ছিল তা নিয়ে নতুন করে আর বিতর্ক করার কোন অর্থ হয় না। আর তা ছাড়া শুধু শাড়ি টিপই বা কেন টিকে থাকতে হবে, লুঙ্গি গামছা ধুতি কই গেল? আর ক্রিকেট বিশ্বকাপ বাদ দিয়ে কাবাডি বিশ্বকাপই বা করি না কেন?
তা তো বটেই, তা তো বটেই। যতদিন আমরা এগুলোকে পবিত্র দায়িত্ব হিসেবে সংরক্ষণ করে যাব ততদিন আমাদের নারীরা একদিকে মুখে বড় বড় কথা বলবে আর শাড়ি টিপ পড়ে বাপ স্বামী বা ছেলের অধীনতা উপভোগ করবে।
হ্যা ছিল, বিপ্লব রহমান আপত্তি জানানোর আগ পর্যন্ত আপনি তা নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য করেননি। কোন লেখক যদি তার লেখায় উচ্ছসিত হয়ে আরেকজনের লেখা এনে বসায় তাহলে সে লেখার দায়দায়িত্বও লেখককেই নিতে হয়, এটা লেখক মাত্রেরই জানা উচিত। আমার মনে হয় বাঙ্গালিপনা নিয়ে অতিমাত্রায় উদ্বেগ প্রকাশ করার চেয়ে উভলিংগদের মত প্রান্তিক মানুষদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকাটা অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ।
@বন্যা আহমেদ,
(Y)
@রূপম (ধ্রুব),
ঠিকই বলেছেন!
ধন্যবাদ!
🙂 @বন্যা আহমেদ,
আমি কিন্তু বলতে চেয়েছি ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, ভূটান, নেপাল,বার্মা
এই দেশ গুলো আগে উপনিবেশ ছিল।সবাই কিন্তু তাদের জাতীয় পোশাকই পরে। লুঙ্গি গামছা ধুতি প্রাসঙ্গিক ছিল।যদিও তা দেশের সিংহ ভাগ মানুষ পরে।
সামনের দিকে বলতে আপনি কি “চোলি কি পিছে” বোঝাতে চাচ্ছেন?
তাহলে আমার বলার কিছু নেই।
আমার মনে হয় মত প্রান্তিক মানুষদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ আমার একটু বেশীই
আছে।কিন্তু সে কথা বলতে আমি এখানে আসিনি।:-)
ধন্যবাদ
@লাইজু নাহার,
আহারে বাঙালি!! শাড়ি আর চোলি ছাড়া পৃথিবীতে আর কিছুই দেখতে পায় না :)) ।
আপনাকে উত্তর দেওয়ার সময় আমার মাথায় একবারও চোলির কথা আসেনি, আমি যে সব দেশের ঐতিহ্যবাহি কাপড়গুলোর কথা উল্লেখ করেছি সেগুলো কোন কোন দেশের মানুষদের ড্রেস আর তাদের মেয়েরা কাজে কর্মে কী পরে সেটা যদি বের করতে পারেন তাহলেই বুঝবেন আমি কিসের কথা বলেছিলাম।
এই ভাবটা ভালো লেগেছে।
আমার মনে হয়, আমাদের সংস্কৃতি যথেষ্ট শক্তিশালী। নতুন যা আসে তার মধ্যে যা মানুষ গ্রহন করবে তা টিকে থাকবে আর যা অপ্রিয় হবে তা প্রত্যাখ্যাত হবে, ঝরে যাবে। অত বেশী দুশ্চিন্তা না করাই ভালো বলে মনে করি। তবে সমালোচনা তো করতেই হবে। ভালো লাগা মন্দ লাগা সবার এক রকম না, তবু তা বলতে হবে। বলেছেন, তাই ভালো লাগলো।
@কাজী রহমান,
ঠিক!
অনেক ধন্যবাদ!
সেদিন টিভিতে ক্যাটরিনার অনুস্ঠানটি খানিকটা দেখে বিস্ময়ে থমকে গিয়েছিলাম। এই দেশ কী সৃষ্টি করেছিলো ‘৫২, ‘৬২, ‘৬৯, ‘৭১, ‘৯০…গ্লানিতে মন ছেয়ে যায়! 🙁
@বিপ্লব রহমান,
পড়া ও মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ!
আউল বাউল লালনের দেশে শাহরুখ-ক্যাটরা আউলো রে…
ওরে পোলাপানদের মাথা খাইলো রে…
তবু আমার সাধের বাঙালীত্ব তাতে যায় না রে…
যার যাবার, তারই যাবে।
যার যাবে না, তার হাজার শাখরুখ-কেট্রিনায়ও যাবে না।
(যতই চিল্লাফাল্লা করি না কেন, সবই পরিবর্তনশীল।)
@শ্রাবণ আকাশ,
ধন্যবাদ পড়া ও মন্তব্যের জন্য!
বাংলাদেশীদের হিন্দি পছন্দ হবে এটাই ত স্বাভাবিক!
হিন্দিতে ফার্সি এবং আরবী শব্দ অনেক বেশী। গদ্যরীতিতেও তা ফার্সির অনেক কাছে। হিন্দি এবং উর্দু একই ভাষা। শুধু হিন্দি লেখা হয় দেবনাগরীতে আর উর্দু আরবিক অক্ষরে। এই ভাষার উৎপত্তি ইসলাম এবং হিন্দু সংস্কৃতির সংশ্লেষনে। সুতরাং ইসলাম প্রিয় বাংলাদেশীদের হিন্দি ভাল লাগতেই পারে যেহেতু তা ইসলামি সংস্কৃতি এবং ভাষারীতি থেকেই সম্পৃক্ত।
সেই তুলনায় বাংলাভাষা অনেক বেশী সংস্কৃতর কাছে এবং হিন্দুয়ানী। বাংলাতেও অনেক ফার্সি বা আরবী আছে কিন্ত তা হিন্দির কাছে কিছুই না। আর বাংলার গদ্যরীতিও সংস্কৃত অপভ্রংশ থেকে। সেখানে হিন্দি গদ্যরীতি ফারসী ঘরানার।
অবশ্য ভারতে সরকারী ভাবে হিন্দিতে অনেক সংস্কৃত শব্দ ঢোকানো হয়। সেই হিন্দি বলিউডি না-বরং সেটা করলে, তা বাংলারই একটা ডায়ালেক্ট হয়ে যায়। বলিউডি হিন্দি আসলেই অনেক বেশী ফার্সি নির্ভর-যা ভারতীয় উচ্চ মুসলিমদের ভাষা ছিল দীর্ঘদিন। তুলসীদাসের হিন্দি কিন্ত ভারতে স্টান্ডার্ড না।
সুতরাং বাংলাদেশী মুসলমানদের হিন্দি প্রীতি খুবই স্বাভাবিক। এটাই ত হওয়া উচিত যেহেতু হিন্দি ভাষাটা ইসলামি সংস্কৃতির কাছে
@বিপ্লব পাল,
তা হলে কি বাংলাদেশী মুসলমানদের উর্দু প্রীত হওয়াটাও খুবই স্বাভাবিক? বরং উর্দুকে ভালোবাসা আরও স্বাভাবিক এই কারনে যে উর্দু ভাষাটা আরবীর আরও কাছাকাছি এবং মুসলমানদের ভাষা। কিন্তু বাস্তবেতো উল্টো, উর্দু ভাষার জোর জবরদস্তিটাই বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পিছনে অন্যতম কারন ছিল। আসলে ৪০ বছর আগের বাংলাদেশী মুসলমানদের নিজ দেশের, নিজ ভাষার প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির সাথে আজকের বাংলাদেশী মুসলমানগনের দৃষ্টিভঙ্গির অনেকটাই ফারাক আছে বলে মনে হয়। কারনটা গ্লোবালাইজেশনের জন্যও হতে পারে অথবা অতিরিক্ত ইসলাম ভক্ত হয়ে যাওয়াটাও হতে পারে।
@ব্রাইট স্মাইল্,
পড়া ও মন্তব্যের জন্য শুভেচ্ছা!
@বিপ্লব পাল,
আমি আসলে বলিউডের, অন্তসারশূণ্য, চটকদার,অর্ধনগ্ন, যৌণতামাখা নৃত্য নামের বিচিত্র অঙ্গভঙ্গির সংস্কৃতির আগ্রাসনের কথা বলতে চেয়েছি।
রবীন্দ্রনাথ পরনে “ঢাকাই শাড়ী” বাঙ্গালি নারীদের শ্রেষ্ঠ ভেবেছেন!
আমরা আমাদের একুশে,পহেলাবৈশাখ, পৌষপার্বণ, হাজার বছরের
সংস্কৃতি নিয়ে মুগ্ধ!
তাই ক্যাটরিনা, পদ্মিনিদের স্বল্পবসনা বিকৃত নৃত্যকে স্বাগতম জানাতে
পারছিনা।
তবে বাংলাদেশের কিছু সংস্কৃতের মাফিয়ারা তাদের স্বাগত জানাচ্ছে বলে
তারা আসছে।
আমি নিশ্চিত বাংলাদেশের লোকদের রুচীবোধ আছে।
@লাইজু নাহার,
রুচি খুবই আপেক্ষিক ব্যাপার।
আপনার কাছে বলিউডি নৃত্য অরুচিকর-কিন্ত অধিকাংশ বিশ্বের কাছেই তা চিত্তাকর্ষক। তারাও ঠিক। আপনি ও ঠিক। যে যার মতন করে দেখছে। বিশ্ববিক্ষণে বৈচিত্র্য থাকবে-সেটাই স্বাভাবিক।
আমার পৃথিবীই ঠিক বলে দাবী করলে সবাই তালিবান হয়ে যাবে।
ভালো, খারাপ-কুরুচি সুরুচি-একই মুদ্রার দুপিঠ। যা ভাল, তাই খারাপ। নৃত্যের যাথে যৌনতার সম্পর্ক জীববিজ্ঞান পড়লেই জানতে পারতেন-নৃত্যের ইতিহাস পড়লেও জানবেন। নৃত্যের যৌন আবেদন থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। না থাকাটাই বরং অস্বাভাবিক। সুতরাং বলিউডি নৃত্য যতটা নৃত্য-আমাদের লোকনৃত্য ততটা না -যদি তা যৌনতার আকর্ষনের দৃষ্টিতে দেখি। বলিউড কিন্ত ভারতের সব লোকনৃত্যকেও দারুন ভাবে তুলেছে।
আবার আমাদের লোকনৃত্য রক্ষণশীল দৃষ্টিতে অনেকটাই শোভন।
এই সব ভাল খারাপ সুরুচি কুরুচি নিয়ে জ্যাঠামো অজ্ঞতা এবং অপরিণত মনের পরিচয়।
@বিপ্লব পাল,
তাতো বটেই দাদা!
বিষয়টা যখন নিজেদের দেশকে নিয়ে।
তাই নাকি?
আমি দীর্ঘকাল দেশের বাইরে থাকি কই কোথাও তা দেখিনিতো!
@লাইজু নাহার,
অন্ধ হয়ে থাকলেই কি প্রলয় বন্ধ হয়?
বলিঊডের আন্তর্জাতিক দর্শক সংখ্যা এখন হলিউডের থেকে বেশী। এটাত আপনার জানা উচিত আগে।
শুধু নাচা গানার জন্যেই বলিউড বিখ্যাত তা ঠিক না। রাজ কাপুরের সিনেমা কমিনিউস্ট দেশগুলিতে জনপ্রিয় ছিল শ্রমিক শ্রেনীর কথামালার জন্যে। মেরা নাম জোকার রাশিয়া জয় করেছিল। গত দুই দশকে বলিউড সিনেমা টেকনিক্যালি আন্তর্জাতিক মানে এসেছে। তাতে আরো জনপ্রিয়তা বেড়েছে।
সব সিনেমা কি ভাল হতে পারে? সব বই কি ভাল লেখে লেখকরা?
বলিউড ও তেমন। ব্লয়াক বা থ্রি ইডিয়টের মতন সিনেমা কি তারা বানায় না?
আমে্রিকান বক্স অফিস থেকে থ্রি ইডিয়ট গত দুবছরে বিদেশী সিনেমার মধ্যে সব থেকে বেশী টাকা তুলেছে।
তাই বলিউড নিয়ে নাক সিঁটকানো হাস্যকর। আমি যদিও হলিঊড ঘেঁসা, তবুও বলিঊডকে ছোট করার কোন কারন দেখি না।
বাঙালী সিনেমাকে বলিউডের মতন করতে গেলে, দুটো উপায় ছিল
[১] দুই বাংলাতে একই সিনেমা রিলিস করা। সেটাত বাংলাদেশ সরকার চাইছিল-বাংলাদেশী শিল্পীরা চায় নি। সেই নিয়ে এই ফোরামেই বিতর্ক হয়েছে। ফলে বাংলা সিনেমার ভবিষয়ত বাংলাদেশী শিল্পীদের হট্কারি সিদ্ধান্তে আরো ডুবেছে।
[২] সিনেমাটি বাংলা এবং হিন্দিতে একসাথে বানানো। বাংলা হিন্দির পার্থক্য এত কম-এটা না করাটাই বোকামি এবং সেটা পশ্চিম বঙ্গের দিকে এখন হচ্ছে।
গত বছর ২০১০ সালে টলিউড চারটে অসাধারন সিনেমা দিয়েছে-শুকনো লঙ্কা, জাপানিজ ওয়াইফ, নটবর নট আউট আর মনের মানুষ। এগুলোর মধ্যে শুকনো লঙ্কা আর জাপানিজ ওয়াইফ বলিউড হিসাবেই বাজারে এসেছে। http://www.dingora.com গিয়ে ভালো কোয়ালিটিতে এই সিনেমা গুলো দেখুন।
মুশকিল হচ্ছে বাংলা সংস্কৃতির উন্নতি বাংলাদেশকে বাদ দিয়ে সম্ভব না। অথচ এই সিনেমাগুলিতে বাংলাদেশ বাদ কারন বাংলাদেশের শিল্পীরা ভারতীয় সিনেমা বর্ডার পার করতে দেবেন না। ভাল কথা। তাতে বাংলাদেশের সিনেমা শিল্প বাঁচবে না। হলগুলো না বাঁচলে সিনেমা কি করে বাঁচবে?
ফলে বাংলা সিনেমা শিল্পের অধোগতির জন্যে বাংলাদেশী শিল্পীদের বিশেষ ভূমিকা আছে। বাংলাদেশের সরকারের ভূমিকা সঠিকই ছিল। ভারতে বলিঊডের মান বেড়েছে গত দুই দশকে কারন ভারতে এখন হলিঊডের সব ছবি হিন্দি ডাব করে রিলিজ হচ্ছে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকতে গেলে ভাল সিনেমা বানাতেই হবে। সেটাই বলিউড করেছে। টলিউড ও ইদানিং করছে।
বাংলাদেশী শিল্পীরা করতে পারত-কিন্ত তারা প্রতিযোগিতাকে ভয় পাচ্ছে।
ক্ষতি বাংলা সংস্কৃতির।
আর যদি বলিউড নিয়ে এখনো সংশয় থাকে -নেটফ্লিক্স যা আমেরিকার বৃহত্তম সিনেমা রিটেলার তাদের কালেশন দেখুন। তাদের রকু আইপিটিভি চ্যানেল দেখুন। দেখবেন, “বলিউড” কে তারা ফরেন থেকে সরিয়ে আমেরিকান মেইন স্ট্রিমেই দিয়ে দিয়েছে-কারন বাজারে চাহিদা আছে।
@বিপ্লব পাল,
আমার মনে হয় যে কারণে ফালানীরা গুলিবিদ্ধ হয়ে কাঁটাতার ঝুলে থাকে
ঠিক একই কারণে বাংলাদেশের শিল্পীরা তা হতে দেন না।
ব্যাপারটা অর্থনৈতিক!
আর ফালানীর জন্য
(F)
এই প্যান-প্যানানি শেষ পর্যন্ত মুক্তমনাতেও আইসা পরল! মুক্তমনার লেখক-পাঠক তো দেখি সর্বস্তরে ছড়ায়ে পরতাছে। সাধু! সাধু!
@Atiqur Rahman Sumon, বাই দা ওয়ে, আমি কিন্তু শীলা কি জওয়ানি শিরোনাম দেখেই পড়লাম। এই গান আমাকে অল্পকিছুদিনের জন্য হলেও ব্যাপক …সুড়সুড়ি দিতে সক্ষম হয়েছে।
@Atiqur Rahman Sumon,
যাক শীলা দেখে পড়েছেন!
আমার কপাল বলতে হবে!
ধন্যবাদ!
হিন্দি ছবি বা নয়ক-নায়িকা দের নিয়ে নাক শিটকানো মনেহয় সুশীল সমাজের ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমার কাছে ব্যাপারটা ঠিক ভালঠেকে না। ব্রায়ন এডামস আসলে কোন দোষনাই। শাহারুখ, ক্যাটরীনা আসলেই আমাদের গায়ে জ্বলুনি শুরু হয়ে যায় । আগেও দেখেছিলাম শাহারুখ খানের প্রোগামের পরে এক আস্ত বেয়াদব কে নিয়ে মাতামাতি কারন তিনি বলেছিলেন ” আই দোন্ট লাইক হিন্দী”।
ভারতের নায়কেদের চেয়ে যেদিন আমাদের নায়করা বেশী বিখ্যাত হবেন সেদিন অটোমেটিক্যালি তাদের আসা বন্ধ হয়ে যাবে। এর আগে যতই মায়া কান্না করা হোকনা কেন সেটাতে কোন লাভ আসে বলে মনে হয়না।
@নিদ্রালু,
শাহারুখ, ক্যাটরীনা দেশে আসলে কি বয়ে আনছেন?
তারা ষ্টেজে সিনেমার গানের সাথে ঠোঁট মেলায়।
বলিউডী অভিনেত্রীরা প্রায় অর্ধনগ্ন হয়ে নাচে।
আর বাংলাদেশের তারকারা তাদের অন্ধ অনুকরণ করে।
ত্রিশ চল্লিশ বছর আগে ওরা আসতনা।
তখন ভাল চলচিত্র নির্মাণ হত।
মধ্যবিত্তরা হলে গিয়ে সিনেমা দেখত।
আসলে বলিউড হলিউডকে নকল করে।
আর ঢালিউড ওদের ব্যর্থ অনুকরণ করে।
এই পথ থেকে নিজেদের মেধায় সরে আসা দরকার।
আমাদের সংস্কৃতির অঙ্গনে সুরুচীর সুবাতাস দেখতে অনেকেই
চেয়ে আছে।
@লাইজু নাহার,
ইশশ! আপনি যে কিনা এইগুলো ছিল আসল বলিউড তবে তা না দেখলে(যদিও আমি দেখিনিও দিন কারনটা মনে পড়ছেনা পড়লে জানাব) বাংলাদেশি বলিউড দেখতে হত। ইশশ যা দেখলে মাথা আরো ঘুরে যেত। ইয়া মোটা মোটা মেয়ে, সাথে বাঁদরের মত যত্তসব ইয়ে- আর
শুনেছি এই মহিলাকে তার বয় ফ্রেন্ড নাকী সওয়ামী দাড় করিয়ে দিয়েছেন। তিনি (যার নাম আগের জীবনে কখনও শুনিনাই) তাই বলছি টাকায় কিনা হয়। দুঃখ করে, ক্ষোভ করে নাভ নেই।
আমরা এই দেশের মানুষ এমনই। টাকা দিয়ে সব কেনা যায়। 😕 :))
সেই কড়ি দিয়ে কিনলাম
বই এই জন্যই আমার এতো প্রিয়। (*)
@আফরোজা আলম,
অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য!
:-s
ব্লগে এই রকম জ্ঞানী পোষ্ট পড়তে পড়তে কাহিল দশা। ঢাকার ড্রেনের পানি নোঙরা এটা যারা নতুন করে আবিষ্কার করতে যায় তাদের প্রতি আফসোস ছাড়া আর কিছু করা যায় না। সেদিন টিভিতে নিশ্চয় আরো অনুষ্ঠান ছিল? আপনি কেন এত বিরক্ত নিয়ে পুরো অনুষ্ঠানটা দেখতে গেলেন?
ঐপার থেকে তো চাল, ডাল পেয়াজ এসবও আসে, আমাদের দেশ থেকে যায় না তাতে কি প্রমানিত হয়?
ব্রেকেটের সবগুলি লেখাই কি ব্যাঙাতক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে???
আমি এই অনুষ্ঠান দেখিনাই, দেখিনা সাধারণত, বিরক্তি লাগে, কিন্তু কি হইছে কিছু কিছু শুনছি(বিঃদ্রঃআমার কম্পু টিভির পাশে, ওরা শিলা কি জওয়ানি দেখে আর আমি…)
এই অনুষ্ঠানের পুষ্টার দেখি রাস্তায় জ্যামে পড়ে থাকার দরুণ। বুঝলামনা ক্যাট্রিনা, সাল্লু, অক্ষয়, প্রীতম, আনুস্কাদের ছবির পাশে শাকিবের লিবিষ্টিক দেয়া ছবি দিয়া কেমনে ট্রাই নেশন শো এর বিজ্ঞাপন করা যায়??? মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন।
আর আমি বুঝিনা শুধু এই অনুষ্ঠানগুলোতে না সবখানেই বাঙ্গালির একটা বিশেষ স্বভাব আছে(অন্য দেশের মানুষদের মাঝে এত হ্যাংলামি দেখিনি, অবশ্য আমার অন্য দেশের মানুষ দেখার পরিসর কম তাই কথাটা বায়াসড মনে হলে মাফ চাইলাম আগেই), মাইনষের পায়ে পইড়া যাওয়া, সেলিব্রেটি বা বিশিষ্ট মানুষ হইলেই হইল(এটা যেমন শাহরুখের ক্ষেত্রে দেখেছি তেমন আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের ক্ষেত্রেও দেখেছি)
তবে এই অনুষ্ঠানগুলোতে যেন ব্যাপারটা মাত্রা ছাড়িয়ে যায়, ওরে হিন্দির তুবড়ি রে, লাত্থি খায়াও এইখানে যারা যায় সেই পাবলিকে হাসে, জ্যাকেট পাইয়াও, “শালা” শুইনা খুশিতে একেবারে মূর্ছা যায়…
কি আর বলব…
@লীনা রহমান,
মন্তব্য ও পড়ার জন্য শুভেচ্ছ!
@লাইজু নাহার,
আপা, পারলে ব্রাকেটবন্দী অংশ থেকে ‘হিজড়া’ কথাটি বাদ দিন। মুক্তমনায় হিজড়া তথা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের প্রতি অশ্রদ্ধায় আমার আপত্তি আছে। 🙁
অল্পকথায় চমৎকার চিন্তাশীল লেখার জন্য ধন্যবাদ। 🙂
@বিপ্লব রহমান,
(Y)
@বিপ্লব রহমান,
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ!
ঠিক করে দিচ্ছি।
@বিপ্লব রহমান,
(Y)
এ ব্যাপারটা আমিও খেয়াল করছিলাম। মুক্তমনার মত জায়গায় যেখানে সদস্যরা স্পর্শকাতর এবং সামাজিক অধিকার নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন, হিজড়াদের নিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা শোভা পায় না। ধন্যবাদ বিপ্লবকে এ ব্যাপারটি নজরে আনার জন্য।
হিজড়া ছাড়াও বেশ কিছু শিল্পীদের নাম বিকৃত করা হয়েছে (সফল নায়ক “স্কিব” ইত্যাদি…)। হয়ত ব্যঙ্গ করতেই। এপ্রোচটা ঠিক আমার ভাল লাগেনি।
নীচে নিদ্রালুর অধিকাংশ পয়েন্টের সাথেই আমি একমত। বাংলা সংস্কৃতিকে আন্তর্জাতিক করতে হলে আমাদেরকে হিন্দি নাচ-গান ওয়ালাদের সাথে টেক্কা দিয়েই সামনে আসতে হবে। আমার নিজেরো হিন্দি নাচ গান ভাল লাগে না। কিন্তু তা বলে অন্য কারো ভাল লাগলে ঝাঁটা হাতে রুখে দাঁড়াতে হবে – এর সাথে আমি একমত নই।
আহমদ শরীফ একবার বিদেশী সংস্কৃতির আগ্রাসন নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন, তার উদ্ধৃতি দিয়েই বলি –
মনে রাখতে হবে ছেলেদের শার্ট প্যান্ট পরা থেকে শুরু করে ক্রিকেট খেলা পর্যন্ত সব কিছুই বিদেশী সংস্কৃতি থেকে এসেছে। এগুলো ভুলে গিয়ে কেবল শাড়ি চুড়ি পরা রাবীন্দ্রিক নারীর স্তব করা, কিংবা সাপুড়ে বা জেলে নৃত্যের বন্দনা করা কিংবা কাবাডি খেলার জয়গান গাওয়ার মধ্যে আসলেই কি কোন মাহাত্ম্য আছে?
@অভিজিৎ,
নীচের লেখাটা সায়ন আনজীরের তাই হয়ত এসব এসেছে।
আমি কিন্তু বলেছি-
সারাবিশ্বের শ্রেষ্ঠ সঙ্গীতে,কবিতায় গানে আমার অনেক আগ্রহ!
দিবে আর নিবে মেলাবে মিলিবেতে বিশ্বাস করি।
আন্তর্জাতিকতা অবশ্যই থাকবে, সেটা স্বকীয়তা বিসর্জন দিয়ে নয়।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
এই অনুষ্ঠানগুলো দু’টো কারণে দেখি না:-
১) নাচ-গান আমার কখনওই ভাল লাগে না(একমাত্র ব্যতিক্রম- হেভী মেটাল :)) )
২) এসব অনুষ্ঠানে কিছু বাঙ্গালী বলিউড অভিনেতাদের সামনে গিয়ে এমন আচরণ করে যা পীরের মুরিদের ভক্তিকেও হার মানায়। এসব দেখলে লজ্জায় আমার গাল লাল হয়ে যায়।
আচ্ছা, এই “শিলা কি জাওয়ানি” কি কোন সিনেমার গান?
এরকম “শিল্পী” থাকলে লোকজন বলিউডের নায়ক-নায়িকাদের নিয়ে লোল ফালাবে না, সেটা আশাও করা যায় না। এই “শিল্পী” গুলা তো আসলে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে সেই বলিউডের কোমড় দুলানো গানগুলাই গায়। আসল বলিউড থাকতে পাবলিক নকল বলিউড দেখতে চাইলে তাদেরকে খুব একটা দোষ দেওয়া যায় না। বিশ্বায়নের এই যুগে কোন কিছুকেই ভৌগলিক সীমানায় আটকে রাখা যায় না এটা ঠিক, কিন্তু বিদেশী জিনিসকে গ্রহণ করেও কিন্তু সেটার উপর নিজস্ব একটা ছাপ রেখে দেওয়া যায়। নতুন প্রজন্মের “শিল্পী”দের মধ্যে কোন নতুনত্বই খুজে পাই না।
@পৃথিবী,
আসলে ব্যতিক্রমিই!
পড়ার জন্য ধন্যবাদ!
@পৃথিবী,
মনে হয় সিনেমার।ইউটিউবে আছে।
@পৃথিবী,
কস্কী মমিন? এটি তো এখন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের মোবাইল ফোনের জনপ্রিয় রিংটোনও। :-[
@বিপ্লব রহমান, আমরা ইংরেজি ক্লাসে সবাই মিলে চিৎকার করে এই গানটা গাই
এই নাসারাদের মুলুকে টাঙ্গো , সালসা আর হিপ-হপের দাপটে “জাওয়ানি কি লেহরান” তো আমাদের মত অনেক বঙ্গ সন্তানদের স্বপ্নেও শোনা হয়ে ওঠে না বহুকাল যাবৎ , দেখার প্রশ্ন তো সূদুর পরাহত। ইদানিং এবিষয়ে মুক্তমনায় আপনাদের বেশ কিছু লেখা পড়ে ভালো লাগলো যে , অন্তত লেখাগুলো পড়ে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো যাবে।
‘শীলা কি জাওয়ানী’ বলেন আর ‘জাওয়ানী কি লেহরানই’ বলেন , সবই তো এক গঙ্গা-পদ্মার আবাদি। মানুষের হৃদয়কে টুকরো টুকরো করে কাটা গেলেও গঙ্গা-পদ্মা-তিস্তার পানিকে তো কাটা যায় না। পানি একই থাকে। আমরা যদি নদীর মত বেহিসেবী হতে পারতাম , দুঃখের ব্যাংকটা হয়তো দেউলিয়া হয়ে যেত।
@সংশপ্তক,
সারাবিশ্বের শ্রেষ্ঠ সঙ্গীতে,কবিতায় গানে আমার অনেক আগ্রহ!
দিবে আর নিবে মেলাবে মিলিবেতে বিশ্বাস করি।
তা বলে বলিউডি, অন্তসারশূণ্য, চটকদার,যৌণতামাখা নৃত্য নামের
বিচিত্র অঙ্গভঙ্গির সংস্কৃতির বেনোজলে নিজেদের স্বকীয়তাকে ভাসিয়ে
নিয়ে যেতে প্রবল আপত্তি আছে আমার!
আর গঙ্গা-পদ্মা-তিস্তার পানি কি শুধুই একদিকে ধাবিত হবে?
ধন্যবাদ!