ডারউইনের অভিযান
প্রতি বিকেল বেলায় গল্পের আসর জমে আমবাগানে। উৎসব, নওরিন, উর্মী, সোহান, রৌরব, স্বাধীন আরো অনেকেই এসেছে। বড় বড় দুটো শীতল পাটি পেড়ে বসেছে গাছের তলায়। আজ তাদের নানা অন্য ধরনের গল্প বলবেন, অবশ্য সেটা তিনি আগেই জানিয়েছিলেন। নানা এত মজার করে গল্প বলেন যে কেবল শুনতেই ইচ্ছে করে। নানার আসা দেখে নওরিন বলে উঠল- এই তো নানা এসে গেছেন।
নানা আরাম করে পাটিতে বসতে বসতে বললেন- আজ কিন্তু বানানো কোনো ভুত-প্রেত কিম্বা রাজা-রাণীর গল্প শুনাবো না। সিন্দাবাদ কিম্বা ঠাকুমার ঝুলি থেকেও বলবো না। নবীদের কাহিনীও বলবো না। বলবো একদম পিওর সত্য ঘটনা। বলেই তিনি তার ঝুলা থেকে একটা বই বের করে সবাইকে দেখিয়ে বললেন- বলতো এই বইটার নাম কি? সকলেই বইটার দিকে তাকিয়ে উচ্চস্বরে বলে উঠলো- “আবিষ্কারের নেশায়”। নানা আবার শুধালেন- বইটার লেখক কে বলতো? জবাব দিল- আব্দুল্লাহ আল-মুতী।
নানা গল্প বলার ভঙ্গীতে শুরু করলেন- লেখক এই বইটাতে মজার মজার অনেক কাহিনী বলেছেন খুবই সহজ ও সরল ভাষায়। সবগুলোই সত্যি। বইটির সুচিপত্রে রয়েছে মোট ১৬ টা বিষয়। সবগুলোই বিজ্ঞান বিষয়ক। গ্যালিলিউ, আর্কিমিডিস, লেভনহুক, ডারউইন, লুই পাস্তুর, আইনস্টাইসহ বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানীর আবিষ্কারের বিষয়ে বলা হয়েছে। আজ তোমাদের এদের মধ্য থেকে একজনের বিষয়ে পড়ে শোনাব। খুব মনোযোগ দিয়ে শুনবে, কোনো প্রকার হট্টগোল করবে না। সকলেই মাথা কাত করে বলল- ঠিক আছে।
নানা ‘আবিষ্কারের নেশায়’ বইটির পাতা উল্টে ৪১ পৃষ্ঠা বের করে যেভাবে গল্প বলেন ঠিক সেইভাবে গলার স্বর উচু-নিচু করে উচ্চারণ করলেন: — [[ডারউইনের অভিযান]]*
[[যে-ছেলের বাপ আর দাদা দু’জনেই নামজাদা ডাক্তার তার যে ডাক্তারির দিকে টান হবে সেটাই তো স্বাভাবিক। ডারউইনের বেলায়ও সবাই সেটাই ভেবেছিল। কিন্তু আদতে সবার এ-অনুমান ফলল না। ডারউইন ডাক্তার হলে হয়তো তাঁর আব্বার মতো টাকা করতেন অনেক। কিন্তু সারা দুনিয়ার মানুষের মনে তাঁর নাম যেমন চিরদিনের মতো খোদাই হয়ে গিয়েছে, ডাক্তারী পড়লে এমনটি হত কিনা সন্দেহ।
১৮০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তারিখে ইংল্যাণ্ডের শ্রুসবেরি বলে একটা জায়গায় চার্লস ডারউইনের জন্ম হয়। ঠিক এই একই দিনে আমেরিকায় আর একজন বিখ্যাত লোক জন্মেছিলেন- তাঁর নাম আব্রাহাম লিংকন।
বারো বছরের ছেলে ডারউইন। তার কেবলই ইচ্ছে করতো বাইরে বাইরে ঘুরে প্রকৃতির সবকিছু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখার। হরেক রকম গাছগাছড়ার নমুনা যোগাড় করার। নানান ধরনের পোকামাকড়, জীবজন্তুর চালচলন লক্ষ্য করার। এমন কৌতুলী মন যার তার কি বোর্ডিং-স্কুলের বদ্ধ খাঁচায় ভাল লাগবে?
সেকালে এমনকি বিলেতের স্কুলগুলোতেও বিজ্ঞান শেখাবার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। সেখানে শেখানো হত শুকনো ব্যাকরণ, কাব্যতত্ত্ব- এমনি নানারকম কেতাবি বিষয়। এসব একটুও ভাল লাগত না ডারউইনের- তার মন পড়ে থাকত বাইরে। তাই পরীক্ষার ফল হত খারাপ।
এসব কথা ডারউইনের আব্বার কানে পৌঁছত। একদিন তিনি রেগেমেগে ছেলেকে চিঠিতে লিখলেন: শিকার করা, কুকুর পোষা আর ইঁদুর ধরা- এ ছাড়া কোনদিকেই তোমার মন নেই। তুমি তোমার নিজের আর পরিবারের সবার মুখে কালি দেবে, আমি তা স্পষ্টই দেখতে পাচ্ছি।
আব্বা ঠিক করেছিলেন ডারউইনকে তাঁর নিজের মতোই ডাক্তার বানাতে হবে। তাই তাঁকে ষোলো বছর বয়সে একটা ডাক্তারি স্কুলে ভর্তি করে দেয়া হলো। কিন্তু অল্পদিনের মধ্যেই দেখা গেল ডাক্তারি পড়ায় তাঁর মোটেই উৎসাহ নেই। তার চেয়ে বরং তাঁর ঝোঁক ছিল প্রায়ই ছেলেদের সাথে সমুদ্রে নেমে পড়ায়। সেখান থেকে নানারকম সামুদ্রিক জীব সংগ্রহ করে তাদের তিনি পরীক্ষা করে দেখতেন। তাছাড়া কেমব্রিজে ছাত্র-অধ্যাপক মিলে প্রকৃতি-বিজ্ঞানের এক সমিতি ছিল। তার বৈঠকে তিনি গভীর আগ্রহ নিয়ে নিয়মিত যোগ দিতেন।
বছর দু তিন দেখার পর একেবারে নিরুপায় হয়েই তাঁর আব্বা তাঁকে ভর্তি করে দিলেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এবার আর ডাক্তার নয়- পাদরি বানানোর জন্যে। ডারউইন যে কী করে এতে রাজি হলেন সেটা বোঝা শক্ত। হয়তো ভেবেছিলেন, কী আর এসে যায়? যাঁহা বাহান্ন তাঁহা তিপ্পান্ন। তবে তাঁর ঝোঁক থাকলো আগের মতোই। শিকার করা, বিজ্ঞানের নানা বিষয়ে বই পড়া, বৈজ্ঞানিক সভায় যোগ দেওয়া, বনজঙ্গলে পোকামাকড় সংগ্রহ করে বেড়ানো- এইসব নিয়েই মেতে থাকলেন তিনি।
তা বলে পাদরি হবার জন্য ধর্মতত্ত্বের ক্লাসে কি তিনি যেতেন না? হ্যাঁ, তাও যেতেন বইকী! পরীক্ষা পাশও করলেন। পাশ করার সঙ্গে সঙ্গে মস্ত বড় একটা কাজের সুযোগও জুটে গেল। পাদরি হবার? না, তা নয়। বীগল নামে একটা জাহাজ সে-সময় পৃথিবীর নানা সমুদ্রে সফরে বেরুচ্ছিল। উদ্দেশ্য হল ইংরেজ সওদাগরদের জন্যে নানা দেশে যাবার রাস্তা বের করা আর বাণিজ্যের সুবিধে করে দেওয়া।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যার অধ্যাপক হেনসলো ডারউইনের অদ্ভূত খেয়ালের কথা ভালো করে জানতেন, আর তাঁকে ভালও বাসতেন খুব। তিনি ডারউইনকে লিখলেন: বীগল জাহাজে একজন প্রকৃতিবিজ্ঞানী চায়। কোনো মাইনে-টাইনে নেই, তবে কাপ্তান তাঁর কামরায় খানিকটা জায়গা ছেড়ে দেবেন। এতে গেলে নানান দেশবিদেশ থেকে তোমার অনেক কিছু দেখার জানার সুবিধে হবে।– ডারউইন অমনি রাজি হয়ে গেলেন।
কিন্তু শুধু ডারউইন রাজি হলেই তো হবে না। তাঁর আব্বা একবার বেঁকে বসলেন: এরকম বেয়াড়া রকম খামখেয়ালিতে জীবনটা নষ্ট করে দেবার কি কোনো অর্থ হয়? শেষমেষ তাঁর চাচা আব্বাকে অনেক বুঝয়ে কোনোমতে রাজি করালেন। কিন্তু তবুও ডারউইনের এই চাকরিটা একটুর জন্যে হারাবার মতো অবস্থা হয়েছিল। বীগল জাহাজের কাপ্তান তো ডারউইনের চেহারা দেখেই বেঁকে বসলেন। তার ধারণা ছিল লোকের নাক দেখেই তার চরিত্র বোঝা যায়। ডারউইনের নাকটা ছিল আবার একটু বোঁচা। কাপ্তান বললেন: উহুঁ, এরকম কাজের জন্যে যে-পরিমাণ উদ্যম আর সংকল্প থাকা দরকার তা এর থাকতে পারে না। একে দিয়ে কোনো কাজ হবে না।
যাই হোক, শেষ পর্যন্ত ডারউইনের যাওয়ার ব্যবস্থা ঠিক হলো। পরে অবশ্য জাহাজের কাপ্তান স্বীকার করেছেন নাকের ব্যাপারে তার গোঁড়ামিটা একটু বাড়াবাড়ি হয়ে গিয়েছিল।
বীগল জাহাজ ইংরেজ সওদাগরদের কতখানি কাজ দিয়েছিল, এই সফরে বাণিজ্যের কতখানি উপকার হয়েছিল তা আজ আর কেউ মনে রাখেনি। কিন্তু এই জাহাজে পাঁচ বছরের সফরে ডারউইন যে-জ্ঞান সংগ্রহ করেছিলেন তা মানুষের চিন্তার মোড় সম্পূর্ণ ঘুরিয়ে দিয়েছে। এই জাহাজের অভিযানেই ডারউইন তাঁর যুগান্তকারী ক্রমবিকাশ-তত্ত্বের মালমসলা আর সূত্র খুঁজে পেয়েছিলেন।
১৮৩১ সালের ২৭ ডিসেম্বর তারিখে বিলেতের প্রিমাউথ বন্দর থেকে জাহাজ ছাড়ল। ডারউইনের বয়স তখন মাত্র বাইশ বছর। ডারউইনকে এই জাহাজে লম্বা পাঁচটা বছর কাটাতে হয়েছিল। এক দেশ থেকে আরেক দেশে, এক মহাদেশ থেকে আরেক মহাদেশে জাহাজ যায়। আর যেখানেই যান সেখানেই ডারউইন সংগ্রহ করেন নানারকম গাছপালা, পাথর, জীবজন্তুর হাড়, পাথরে ছাপপড়া জীবজন্তুর মূর্তি- যাকে বলে ‘ফসিল’। নানা দেশের গাছপালা, জীবজন্তু দেখে তাদের সম্বন্ধে খাতায় লিখে রাখেন সব কথা। ভরে ওঠে পাতার পর পাতা।
ডারউইন যতই দুনিয়ার নানা দেশ থেকে বেশি করে তথ্য সংগ্রহ করেন ততই সবরকম গাছপালা জীবজন্তুর জন্মরহস্য সম্বন্ধে একটা সত্য তাঁর কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠতে থাকে। একটা দৃঢ় তাঁর মনের মধ্যে গেড়ে বসে: গাছপালা জীবজন্তুর নানা জাত সবাই একসঙ্গে আলাদাভাবে সৃষ্টি হয়েছে একথা সত্যি নয়, সত্যি হতে পারে না। বিভিন্ন রকম জাতের মধ্যে নানান আশ্চর্য মিল তাঁর চোখে পড়তে থাকে।
ঘুরতে ঘুরতে তিন বছর পরে বীগল জাহাজ এসে পৌছায় দক্ষিণ আমেরিকায়। দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিম উপকূল গালাপাগোস নামে একটি দ্বীপপুঞ্জ আছে। বিষুব রেখার ওপরে ডজনখানেক দ্বীপ, মূল মহাদেশ থেকে প্রায় ৬৫০ মাইল দূরে। বীগল নোঙর করল এখানকার কয়েকটা দ্বীপে। আর ডারউইন খুব অদ্ভুত একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলেন। তিনি দেখলেন, যদিও দ্বীপগুলোর ওপরকার গাছগাছড়া আর জীবজন্তু অনেকটা আসল মহাদেশের ওপরকার গাছগাছড়া, জীবজন্তুর মতোই, তবুও তাদের বেশির ভাগই পৃথক জাতের। আবার এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপেও এদের মধ্যে যথেষ্ঠ তফাত রয়েছে।
ডারউইন দেখলেন, গালাপাগোসের এক দ্বীপের পাখি আরেক দ্বীপের পাখির মতো প্রায় একরকমের হলেও একেবারে সম্পূর্ণ এক নয়। তাদের রঙে, তাদের গানে, তাদের বাসা বানাবার কায়দায়, তাদের ডিমে নানান ধরনের খুঁটিনাটি তফাত রয়েছে। তিনি এসব দ্বীপের ওপর থেকে ২৩ রকমের পাখি সংগ্রহ করলেন যার একটাও মহাদেশের ওপর দেখা যায় না।
বিশেষ করে চোখে পড়ল তার বিভিন্ন দ্বীপে বিভিন্ন রকমের ফিঙে। কোনোটার ঠোঁট সরু, কোনোটার মোটা, কোনোটার বাকা। কেউ খায় ছোট বীজ, কেউ খায় বড় বীজ, আবার কেউ-বা বাঁচে পোকামাকড় খেয়ে। দ্বীপগুলোতে তিনি পেলেন ১৪ জাতের ফিঙে। এর একটারও মূল মহাদেশে দেখা পাওয়া যায় না। তাঁর কাছে মনে হল নিশ্চয়ই সুদূর অতীতে মূল মহাদেশ থেকেই দু’একটি ফিঙে এখানে এসেছিল। তারপর বিভিন্ন দ্বীপে বিভিন্ন রকম পরিবেশে পড়ে তাদের মধ্যে যুগ যুগ ধরে নানা পরিবর্তন দেখা দেয়। কোনোটা খেতে শুরু করে এক ধরনের বীজ কোনোটা বা আরেক ধরনের বীজ। বিভিন্ন ধরনের জীবনযাত্রার ফলে ক্রমে ক্রমে তাদের গড়ন বদলে যেতে থাকে, তৈরি হয় নানারকম ঠোঁট – আলাদা আলাদা জাত।
ডারউইন আরও লক্ষ্য করলেন, গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জে বিরাট বিরাট রাক্ষুসে কাছিম আছে- তার এক-একটা এত বড় যে ঝুলিয়ে বয়ে নিতে হলে আটজন জোয়ান মরদের দরকার। আর সবচেয়ে বড় আশ্চর্য হচ্ছে, সেখানকার লোকেরা কাছিমের চেহারা দেখেই বলে দিতে পারে কোনটা কোন দ্বীপের। এইসব মিল-গরমিলের নিশ্চয়ই কিছু একটা মানে আছে। ডারউইন এ-সময়ে তাঁর ডায়েরীতে লিখেছেন: আমি ক্রমেই বিষ্ময়ে অবাক হয়ে যাচ্ছি।
তিনি যতই অবাক হতে লাগলেন আর লক্ষ্য করতে লাগলেন ততই তাঁর কাছে মনে হতে লাগল, এই ধাঁধার একটাই মাত্র জবাব আছে। এইসব গাছ-গাছড়া আর জীবজন্তুর যদি একই ধরনের সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে জন্ম হয়ে থাকে তাহলে খুব সহজেই এদের মিল-গরমিলের মানে খুঁজে পাওয়া যায়। মূল মহাদেশ থেকে সুদূর অতীতে যে-দু’-একটি পূর্বপুরুষ বিভিন্ন দ্বীপে গিয়ে পড়েছিল, যুগ যুগ ধরে তারা বদলাতে বদলাতে ক্রমে ক্রমে একে অন্য থেকে একেবারেই আলাদা হয়ে পড়েছে।
বলা বাহুল্য, একদিনে এসব পরিবর্তন আসেনি, এসেছে হাজার হাজার বছর ধরে ধীরে ধীরে। গালাপাগোসের দ্বীপগুলি মহাদেশ থেকে দূরে বলেই প্রকৃতির এই পরীক্ষাশালায় মানুষের অগোচরে ঘটেছে নানারকম জাতের এই বিচিত্র সমাবেশ।
বীগল জাহাজ দূর্গম, রুক্ষ, গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জে কাটিয়েছিল মাত্র পাঁচ সপ্তাহ। ডারউইন লিখেছেন: এই পাঁচ হপ্তা আমার জীবনের সবচাইতে স্মরণীয় কাল।
বিলেতে ফিরে ডারউইন তাঁর ধারণাগুলি জড়ো করে নোট লিখে চললেন বিশ বছর ধরে। একটার পর একটা নোট বই ভর্তি করে যাচ্ছেন। প্রাণিজগৎ সম্বন্ধে যেখানে যত নতুন তথ্য পাচ্ছেন সব জড়ো করছেন। এইসব তথ্য থেকে তিনি প্রমাণ করলেন: সবরকমের জীবদেহ- সে গাছই হোক আর জীবজন্তুই হোক-সাধারণ পূর্ব-পুরুষ থেকে জন্মেছে। এক জাত থেকে বংশে বংশে বদলে কী করে একেবারে অন্য জাত সৃষ্টি হয় তাও ডারউইন প্রমাণ করলেন।
কী বললেন তিনি?
ডারউইন বললেন, ধরা যাক একটা প্রাণীর কথা। একই প্রাণীর সন্তানসন্তুতির মধ্যে কিছুটা স্বাভাবিক ব্যতিক্রম থাকেই। যেসব ব্যতিক্রম তাকে পরিবেশের সঙ্গে সংগ্রাম করতে সাহায্য করে সেগুলো বংশধরদের মধ্যে টিকে যায়। বাকিগুলো টেকে না; সেসব ব্যতিক্রমওয়ালা বংশধর লুপ্ত হয়ে যায়। আজকের মতো এমন লম্বা গলাওয়ালা জিরাফ চিরকাল ছিল না। জিরাফের মধ্যে কারও কারও হয়তো ছিল কিছুটা লম্বা গলা। তারা বন-জঙ্গলে গাছের ওপর থেকে বেশি পাতা খেয়ে শক্ত-সমর্থ হল বেশি, কাজেই বেশি বংশধরও রেখে গেল। তাদের বংশধররাও কিছুটা পেল বাপ-মায়ের লম্বা গলার আদল। এমনি করে ধীরে ধীরে লম্বা গলাওয়ালা জিরাফের সংখ্যা বাড়তে থাকলো। খাটো গলা যাদের তারা পাতা খেতে পেল কম, তাই প্রতিযোগিতায় টিকল না; ক্রমে ক্রমে তাদের সংখ্যা কমতে লাগলো। ডারউইন একে বলেছেন ‘প্রাকৃতিক নির্বাচন’।
এ ধরনের ক্রমবিকাশ শুধু যে প্রকৃতিতে আপনা-আপনি হয় তা নয়। মানুষ আপন প্রয়োজনমতো এই পরিবর্তনের ধারাকে কাজে লাগাতে পারে। এই ক্রমবিকাশের ধরনকে কাজে লাগিয়েই মানুষ সৃষ্টি করেছে এমন জাতের পোষা গরু যার দুধ বেশি হয়, মাংশ বেশি হয়; এমন জাতের ঘোড়া যা আকারে বড় হয় আর জোরে ছুটতে পারে। এমনি আরও নানারকম প্রাণী আর গাছপালা।
প্রকৃতির এমন একটি সাধারণ নিয়ম এর আগে আর কেউ এত সুন্দর করে প্রকাশ করতে পারেনি। ডারউইন কী করে এমন আশ্চর্য সাফল্য লাভ করলেন?
তাঁর সাফল্যের মোটামুটি দুটি কারণ আছে। প্রথমত, তিনি বিপুল পরিমাণ ঘটনা ও তথ্য যোগাড় করেছিলেন যা দিয়ে আগাগোড়া ব্যাপারটা সকলের চোখের সামনে ছবির মতো ঝকমকে করে তুলে ধরা যায়। দ্বিতীয়ত, শুধু ক্রমবিকাশ হয় একথা বলেই ডারউইন ক্ষান্ত থাকেননি, কী করে হয় এবং কেন হয় তাও তিনি বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
তাঁর ধারণাগুলো ডারউইন ১৮৪৪ সালে একটি বই-এর আকারে লিখতে শুরু করলেন। আঁটসাঁট যুক্তির বাঁধুনি দিতে দিতে পনেরো বছর কেটে গেল। অবশেষে বন্ধুদের নিতান্ত পীড়াপীড়িতে ১৮৫৯ সালে তিনি বইটি বের করলেন। এই বই ‘দি অরিজিন অব স্পিসিজ’ নামে পরিচিত। তাও তিনি যত কথা প্রথমে লিখেছিলেন তার মাত্র পাঁচ ভাগের এক ভাগ ছাপা হলো। ১২৫০ কপি বই একদিনেই বিক্রি শেষ হয়ে গেল। তারপর বার বার ছাপা হতে লাগল এই বই। আজও ছাপা হচ্ছে।
সবাই কি প্রথমেই মেনেছিল তাঁর কথা? মোটেই না। প্রবল বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল তাঁর বই নিয়ে। কিন্তু বিজ্ঞানীদের অজস্র যুক্তি আর প্রমাণের কাছে শেষ পর্যন্ত কোনো বিরোধিতাই টেকেনি। ১৮৮২ সালে ডারউইনের মৃত্যু হলে তাঁকে রাজকীয় সম্মানে নিউটনের সঙ্গে ওয়েস্ট মিনস্টারে সমাধি দেওয়া হয়।]]
পড়া শেষ করে নানা বললেন- কেমন লাগলো? সকলেই সমস্বরে বলল- দারুন, নানা দারুন। রৌরব বলে উঠল- নানা আমার খুব ডারউইন হতে ইচ্ছে করছে। বীগলের মত একটা জাহাজে চড়ে দ্বীপে দ্বীপে ঘুরে বেড়াবো, কী মজাটাই না হবে তখন। উহ্ ভাবতেই কেমন যেন সুখ সুখ লাগছে। উর্মী বলল- তুমি না গতবার বলেছিলে, পিথাগোরাস হতে ইচ্ছে করছে। যখনই মজার কিছু শোনো তখনই তা হতে চাও, ব্যাপার কী ভাইয়া? কবে আবার বলে বসবে- আমার না ডাইনোসোরাস হতে ইচ্ছে করছে। উর্মীর কথা শুনে সকলে হো হো করে হেসে উঠলো। নানা বইটি স্বাধীনের হাতে দিয়ে বললেন- তোমার কাছে রেখে দাও। বেশ কয়েকদিন গল্পের আসরে আসবো না। মেজ মেয়ের বাড়ীতে যাবো। কতদিন আমার নাতী ফরিদকে দেখি না। মনটা বড়ই আনচান আনচান করে। তোমরা সবাই স্বাধীনের পড়াটা মনোযোগ দিয়ে শুনবে আর পড়া শেষ হলে পঠিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে। আশরাফ তো ঢাকাতেই থাকে, ওকে বলে দেবো যেন ১০ কপি কিনে পাঠিয়ে দেয়। তাহলে তোমাদের প্রত্যেককে একটা করে উপহার দিতে পারবো। যাগ্গে, আজ তাহলে বিদায়, সবাই ভালো থেকো।
উপহারের কথা শুনে সকলের মুখ উজ্জ্বল হাসিতে ভরে উঠলো।
========================================
*[[..]] মধ্যে অবস্থিত টেক্সটগুলো আব্দুল্লাহ আল-মুতী রচিত ‘আবিষ্কারের নেশা’ বই-এর ‘ডারউইনের অভিযান’ থেকে নেয়া হয়েছে।
=========================================
আব্দুল্লাহ আল-মুতী শরফুদ্দীন-এর পরিচিতি:
আব্দুল্লাহ আল-মুতী শরফুদ্দীন (১৯৩০-১৯৯৮) জনপ্রিয় বিজ্ঞান লেখক, শিক্ষাবিদ ও প্রশাসক। আব্দুল্লাহ আল-মুতী ১৯৩০ সালের ১ জানুয়ারী সিরাজগঞ্জ জেলার ফুলবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে এম. এসসি এবং মার্কিন যুক্ররাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা বিষয়ে ১৯৬০ সালে এম এ ও ১৯৬২ সালে পিএইচ. ডি ডিগ্রী লাভ করেন।
বাংলাদেশ সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রাক্তন সচিব আল-মুতী শরফুদ্দিনের কর্মজীবন শুরু হয় সরকারী কলেজের একজন শিক্ষক হিসেবে। পরবর্তীতে তিনি শিক্ষক-শিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক, জনশিক্ষা পরিচালক (ডিপিআই), বিদেশে বাংলাদেশে দূতাবাসের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক কাউন্সিলর, শিক্ষা ও বিজ্ঞান বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি এডিবি ইউএনডিপি অর্থায়নকৃত মাধ্যমিক বিজ্ঞান শিক্ষা প্রকল্পের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন।
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে আল-মুতী শরফুদ্দিনের অবদান অসামান্য। তিনি এদেশে বিজ্ঞানকে ছোটদের মধ্যে জনপ্রিয় করার পথিকৃৎ। তাঁর প্রকাশিত বিজ্ঞান, পরিবেশ ও শিক্ষা বিষয়ক বইয়ের সংখ্যা ২৮।
উল্লেখযোগ্য বইগুলির মধ্যে রয়েছে: বিজ্ঞান ও মানুষ, এ যুগের বিজ্ঞান, বিপন্ন পরিবেশ, বিজ্ঞান-জিজ্ঞাসা, সাগরের রহস্যপুরী, মেঘ বৃষ্টি রোদ এবং পরিবেশের সংকট ঘনিয়ে আসছে।
বিজ্ঞান শিক্ষা ও সাহিত্য ক্ষেত্রে অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার, একুশে পদক, শিশু একাডেমী পুরস্কার, ইউনেস্কোর কলিঙ্গ পুরস্কার এবং ড. কুদরাত-ই-খুদা স্বর্ণপদকসহ এক ডজনের অধিক পুরস্কার লাভ করন।
আল-মুতী শরফুদ্দিন বাংলা একাডেমী প্রকাশিত বিজ্ঞান বিশ্বকোষ-এর প্রধান সম্পাদক ছিলেন এবং ‘মুকুল’ নামে ছোটদের ম্যাগাজিনের সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেছেন। কর্মময় জীবনের মাঝখানেও তিনি সাহিত্য সংসদ, প্রগতি লেখক সংঘ, কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলা, বাংলাদেশ শিশু একাডেমী, বিজ্ঞান সংস্কৃতি পরিষদ এবং হিউম্যান ডেভলপমেন্ট ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি ছিলেন ইসলামিক একাডেমী অব সাইন্স-এর প্রতিষ্ঠাতা ফেলো; বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির ফেলো এবং সভাপতি (১০৮৮-৯১)। এছাড়া তিনি বাংলা একাডেমীর সভাপতি (১৯৮৬-৯০), ফাউন্ডেশন ফার রিসার্চ অন প্লানিং এন্ড ডেভলপমেন্ট-এর সহ-সভাপতি (১৯৯৩), বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ফর সাইন্স এডুকেশন- এর সভাপতি (১৯৮৮-৯৫), ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব এসোসিয়েশন ফর সাইন্স এডুকেশন -এর নির্বাহী সদস্য (১৯৮৯-৯৩) এবং ইউনেস্কোর মহাপরিচালক মনোনীত ইন্টারন্যাশনাল সাইন্টিফিক কাউন্সিল-এর সদস্য ছিলেন। আল-মুতী শরফুদ্দিন ১৯৯৮ সালের ৩০ নভেম্বর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি এশিয়াটিক সোসাইটির ন্যাশনাল এনসাইক্লোপিডিয়া অব বাংলাদেশ প্রজেক্ট-এর প্রজেক্ট ইমপ্লিমেনটেশন কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। (বাংলা পিডিয়া থেকে সংগৃহীত)
এ লেখায় মন্তব্য করার অপশন সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করে দেয়া হল। লেখকদের অন্য লেখার প্রতি মনোযোগ দিতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
মাহফুজ ভাইয়ের লেখাটা সহজবোধ্য বলে বেশ ভাল লেগেছে। সত্যি বলতে কি, আর সবার আলোচনা উত্তর প্রতিউত্তরে আরো অনেক বেশী মজা পেয়েছি।
@কাজী রহমান,
স্রেফ মজা পাচ্ছেন, নাকি ভালো-মন্দও কিছু শিখছেন? এই সব মন্তব্যের মধ্যে থেকে উঠে আসে অনেককিছু, নেগেটিভ পজেটিভ সবদিকেই আলোচনা চলে। গঠনমূলক কথাবার্তা হয় এ সমস্ত মন্তব্যের মধ্যে। শুধু গভীর মনোনিবেশসহকারে সেগুলো ভাবতে হয়। সেজন্য কবি বলেন- যেখানে দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দেখ তাই; পাইলে পাইতে পারো মানিক ও রতন।
ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্য। তবে আপনার স্বরচিত কবিতাটি কিন্তু দারুন!
@মাহফুজ,
মাহফুজ ভাই, আমি কিন্তু বেশ ক বছরের পুরানো পাঠক। মন্তব্য করছি নতুন। প্রতিদিন মুক্তমনা পড়তে না পারলেও মন পড়ে থাকে এখানে।
মুক্তমন নিয়ে আনুসন্ধানের এক পর্যায়ে যখন মুক্তমনার লেখাগুলি বাংলাতে পড়তে পেলাম; মনে হল আকাশের চাঁদ হাতে পেলাম, একলাফে অনেক সংশয় পেরিয়ে, সেই থেকে আমি ভক্ত পাঠক। হ্যাঁ, শিখছি। অনেক। অনেক।
কবিতার কমপ্লিমেন্টের জন্য সত্যি ধন্যবাদ (কথা দিচ্ছি পরের বার সতর্ক থাকব)।
@কাজী রহমান,
ভালো লাগলো কথাগুলো পড়ে। আমারও এক সময় আপনার মত হয়েছিল- আর তাই মুক্তমনার সাথে… লিখেছিলাম। না পড়ে থাকলে, পড়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
@মাহফুজ,
এইমাত্র আপনার লেখা “মুক্তমনার সাথে” পড়লাম। মুক্তমনার প্রেমে পড়ার ব্যাপারে আশ্চর্য এই মিলটা মনে হয় আরও অনেকেরও।
বিজ্ঞান, যুক্তি, তথ্য আর বাংলাতে সহজবোধ্য ভঙ্গি দিয়ে মানুষের ঘুম ভাঙ্গানিয়ার যে কঠিন কাজটা মুক্তমনা করছে, তার প্রশংসার ভাষা আমার জানা নেই। আমরা এবং আগামী প্রজন্মরাও মুক্তমনার কাছে ঋণী থাকব।
বেশী করে সবাই মুক্তমনের হোক।
সৃষ্টিবাদীদের অন্ধ চেতনার শুদ্ধি হোক।
সত্যি কথা বলতে কি এগুলো যত ভালোই হোক না কেন, এ ধরণের লেখা দেখলে আমি এখন হতাশ হই। লেখার মানের কারণে নয়, অনেকটা বিষয়বস্তুর কারণে।
বাংলাদেশের বিজ্ঞানমনস্ক ব্যক্তিরা বিবর্তনের মানে শুধু বোঝে ডারউইনের বিগল জাহাজে করে সমুদ্র ভ্রমণ আর তার জীবনী প্রচার। লক্ষ্য করবেন, আবদুল্লাহ আল মুতী ডারউইনের যে জীবনী ১৯৬৯ সালে লিখেছিলেন, সেই চর্বিত চর্বন এখনো চলছে। গতবার বাংলাদেশে গিয়ে দেখলাম গনবিজ্ঞান পরিষদ বিবর্তনের উপর একটি লেখার সংকলন বের করেছে – তার তিন চতুর্থাংশই হচ্ছে ডারউইনের জীবনী বিষয়ক। একেকজন একেকভাবে ডারুইনের বীগল জাহাজে করে সমুদ্র যাত্রার ইতিহাস লিখেছে। তারা সম্ভবতঃ ভাবেন কেবল ডারউইনের সমুদ্রযাত্রার কথা বলা মানেই বিবর্তন সম্বন্ধে জানা। অথচ বিবর্তন তো কেবল ডারউইনের জাহাজে আটকে নেই। বিশেষ করে বিগত কয়েক বছরে জিনোমিক্স, আনবিক জীববিদ্যা থেকে শুরু করে এপিজেনেটিক্স, এভু ডেভু সহ হাজারটা কাটিং এজ জিনিসপত্র এখন বিবর্তনের অংশ। অথচ বাংলাদেশের পত্রপত্রিকায় কিংবা কোন সংকলন দেখলে মনে হয় তারা সেই ১৯৬৯ সালেই বসে থাকতে চান, এর পর এগুবার কোন নামগন্ধ নেই (গত বছর অনন্ত বিজয় দাশের সম্পাদনায় বেরুনো যুক্তির তৃতীয় সংখ্যা ছিলো একটি উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রম)। তারচেয়েও ভয়ঙ্কর হল, বাংলাদেশে অনেকে আছেন যারা ল্যামার্কিজমকেই ডারউইনের তত্ত্ব বলে মনে করেন, অথচ ল্যামার্কের তত্ত্ব ভুল প্রমাণিত হচ্ছে সেই মান্ধাতার আমলেই।
@অভিজিৎ,
তবে আব্দুল্লাহ আল-মুতীকে দোষ দেওয়া যায় না। তিনি লিখেছেন অনেক আগে। তার উপর বাচ্চাদের জন্য। তাই ‘আডভেঞ্চার-রোমাঞ্চ’ এগুলোই বর্ণনায় এসেছে বেশি। মুশকিল হলো ছোটো বেলায় এটুকু পড়েই আমাদের বোদ্ধা রা বিবর্তন বুঝে ফেলেছেন। আর তাতেই যত গণ্ডগোল।
@অভিজিৎ, ভাইয়া, লেখার কথা তো এখন আমাদের। আমরা না লিখে হতাশ হলে লাভটা কোথায়? বিগত শতাব্দীতেই পড়ে থাকতে হবে। জাফর ইকবাল স্যার আমাদের মাঝে কল্পবিজ্ঞান লেখার অভ্যাসটা চালু করে দিয়েছেন, বর্তমান বিজ্ঞান লেখার অভ্যাসটা চালু করতেও তো একজন জাফর ইকবাল স্যারকে দরকার। সাইন্স ফিকশন নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে আজকাল লোকে ভয় পায় না, যত ভয় সে তো সাইন্সকে সহজবোধ্য করে জনগণের হাতে তুলে দিতে! :-Y
@অভিজিৎ, প্রিন্ট মিডিয়ায় লেখালেখি করা লোকজনদের ইমেজ রক্ষা করে চলতে হয়। ডারউইনের বিগল সফর যতটা রোমান্টিক, সেই সফরের ফলাফলটা অনেকের কাছেই হয়ত ততটা রোমান্টিক না। এদেশের মানুষ বিবর্তনবিদ্যার ড্রাস্টিক সিদ্ধান্তগুলো সহজভাবে নিবে না দেখেই মনে হয় কিছু লেখক ডারউইনের নাম নিলেও তাঁর কর্ম ব্যাখ্যা করার সাহস আর করে উঠতে পারেন না।
তবে উন্নত বিশ্বের মত বাংলাদেশেও আস্তে আস্তে প্রিন্ট মিডিয়া থেকে অনলাইন মিডিয়ার প্রতি মানুষের ঝোক বাড়ছে। নীল রোদ্দুর আপুর মত আমিও মনে করি আমাদেরকেই এখন পদক্ষেপ নিতে হবে।
@অভিজিৎ,
একটি সত্যিকারের শিশু ব্যতীত অন্য কারও পক্ষে শিশুতোষ বিবর্তনবাদ রচনা করা সম্ভব নয়। যিনি বিবর্তন বোঝেন অর্থাৎ যিনি মলিকিউলার জেনেটিক্স সম্পর্কে জানেন , তার পক্ষে বিবর্তনের শিশুতোষ সংস্করণ রচনা করাটা একটা পর্বতসমান চ্যালেন্জ। রিচার্ড ডকিন্সের মত ব্যক্তি দার্শনিকদের বিবর্তন শেখাতেই খৈ হাড়িয়ে ফলেন, শিশুতো অনেক দুরের কথা।
বিবর্তন সম্পর্কে কিছু পড়ে বুঝতে হলে শুধু অক্ষরজ্ঞান বা সাধারন বিজ্ঞান ষথেষ্ট নয়। এটার সাথে জেনেটিক্স গভীরভাবে জড়িত যেটা না জানলে বিবর্তন বোঝা আদৌ সম্ভব নয়। শিশুদের এইসব কাটিং এজ জিনিষ দিয়ে শিশুদের শুরুতেই ‘ছদ্ম আঁতেল’ না বানিয়ে বরং শিশুদের শেখানো দরকার বিজ্ঞান জিনিষটাই আসলে কি এবং কেন বিজ্ঞান সাহিত্য নয়।
শিশুদের জন্য আপক্ষিকতাবাদ , বিগ ব্যাঙ , থার্মোডাইনামিক্স ইত্যদি লেখার কথা কৈ শুনিনা তো । কারন এসব যারা বোঝেন তারা ভালো করেই জানেন যে , শিশুদের জন্য আঁতেল হওয়ার চাইতেও সুস্বাস্হ্য এবং পুষ্টি শিক্ষা আরও গুরত্ত্বপূর্ন বিষয়। আর আসল জিনিষ বাদ দিয়ে শুধু জীবনী পড়ার ফলে শিশুরা কাউকে কাউকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট মানব জেনে বড় হয় যা সত্যের অপলাপ মাত্র।
@সংশপ্তক,
:-Y
@শ্রাবণ আকাশ,
দেয়ালে মাথা ঠুকুন কোনো অসুবিধা নাই, মাথাটা তো ফাটছে না! এবার শামসুর রাহমানের ‘কেমন করে শেখাই তাকে’ কবিতাটি পড়ুন।
কেমন করে শেখাই তাকে
শামসুর রাহমান
কেমন করে শেখাই তাকে
ছোট্ট অবুঝ শিশুটাকে
জ্বালতে তারার বাতি,
যখন কিনা আমরা নিজে
অন্ধকারে শুধুই ভিজে
কাদা ছোড়ায় মাতি।
কেমন করে শেখাই তাকে
ছোট্ট অবুঝ শিশুটাকে
বলতে সত্য কথা,
যখন কিনা মিথ্যা থেকে
আমরা নিজে শিখছি ঠেকে
চতুর কথকতা।
কেমন করে শেখাই তাকে
ছোট্ট অবুঝ শিশুটাকে
বাসতে শুধুই ভালো,
যখন কিনা রাত্রিদিন
আমরা নানা অর্বাচীন
হচ্ছি ঘৃণায় কালো।
কেমন করে শেখাই তাকে
ছোট্ট অবুঝ শিশুটাকে
‘আস্থা রাখো ওহে।’ –
যখন কিনা বিশ্ব জুড়ে
আমরা শুধু মরছি ঘুরে
নাস্তিকতার মোহে।
এখানে আব্দুল্লাহ আল মুতী শরফুদ্দিনের ছবি তুলে দিলাম।
[img]http://gunijan.org.bd/admin/NewsPhoto/Prof_Abdullah-Al-Muti-Sharafuddi.jpg[/img]
আমি মুক্তমনার নীতিমালা সম্পর্কে ভালোমত অবগত রয়েছি। যেমন, নীতিমালাতে আছে:
২.৭। কোন লেখা কুম্ভীলকতা বা প্লেইজারিজম (সাহিত্যচুরি) দোষে দুষ্ট হলে লেখককে সতর্ক করা হবে। তিনি উল্লেখ্য অংশটুকু অপসারণ বা উপযুক্ত তথ্যসূত্র নির্দেশ না করলে লেখাটি মুছে দেয়া হবে। ব্যাপারটি আরো বিস্তৃত করা হয়েছে স্বত্তাধিকার প্রসঙ্গে অংশে (৬.১- ৬.৪ দ্রঃ)
৬.২। লেখা বা মন্তব্যে অন্য কোন লেখকের রচনা (তা সে যেখান থেকেই হোক না কেন) ব্যবহার করলে অবশ্যই তথ্যসূত্র উল্লেখ করতে হবে। অন্যথায় সেটা কুম্ভীলকতা বা প্লেইজারিজম তথা সাহিত্যচুরি বলে বিবেচিত হবে। সেক্ষেত্রে লেখককে বিষয়টি জানানো হবে। তিনি যদি সূত্র যোগ করার মাধ্যমে তার লেখা সংশোধন না করেন তাহলে লেখা বা মন্তব্যটি মুছে দেয়া হবে।
লেখার মধ্যেই তথ্যসূত্র উল্লেখ ছিল। বিষয়টি অভীক ও তামান্না ঝুমু ঠিকমত বুঝতে না করার কারণে আমার প্রতি প্রশংসামূলক মন্তব্য করাতে ফরিদ আহমেদ বিষয়টি পরিষ্কার করতে চেয়েছেন।
বিষয়টি যাতে আর অনর্থক বিভ্রান্তির সৃষ্টি না হয় সেজন্য ভালোমত তথ্যসূত্র উল্লেখসহ আব্দুল্লাহ আল মুতী- এর পরিচিতি তুলে ধরা হলো বাংলা পিডিয়া থেকে।
@মাহফুজ,
ধন্যবাদ,
আর এই বই টা “আবিষ্কারের নেশায়” ১৯৬৯ সালে প্রকাশিত হয়ে থাকলে, এখন এর কপিরাইট মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার কথা (৪০ বছর না?)। সে ক্ষেত্রে আব্দুল্লাহ আল-মুতী শরফুদ্দীন-এর লেখাগুলো এভাবে একে একে ডিজিটাইজ করে ফেলা যেতে পারে।
এই কথাটি পড়ে মজা পেলাম!! (*)
আর একটা কথা, উইকিপিডিয়ার মত বাংলাপিডিয়ার টেক্সট মনে হয় ফ্রী না। অবশ্য আমার জানার ভুল হয়ে থাকতে পারে…
@তানভীরুল ইসলাম,
আমিও মনে করি সেটা করা জরুরী। তবে বইটি স্ক্যান করা পিডিএফ ফাইলে পেয়েছি ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে। কিন্তু সেটা পড়তে খুবই অসুবিধা হয়। আপনার সমর্থনে উৎসাহ পাই।
আমি তো বাংলাপিডিয়ার কোন অংশ ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করছি না। রেফারেন্স হিসাবে ব্যবহার অবশ্যই করা যাবে। তাছাড়া পিডিয়ার টেক্সট তো কপি পেষ্টও করছি না। অংশটুকু কম্পোজ করেছি মাত্র। পৃথিবীর যে কোনো ভাষার এনসাইক্লোপিডিয়া থেকে উদ্ধৃতি দেয়া জায়েজ।
@তানভীরুল ইসলাম,
বাংলাদেশের গ্রন্থসত্ত্ব আইনের মেয়াদ বই প্রকাশের দিন থেকে শুরু হয় না। শুরু হয় লেখকের মৃত্যুর পর থেকে। আর এর মেয়াদ পঞ্চাশ বছর, চল্লিশ নয়। তিনি মারা গেছেন ১৯৯৮ সালে। সেই অনুসারে তাঁর লেখার কপিরাইটের মেয়াদ শেষ হবে ২০৪৮ সালে। কাজেই, তাঁর লেখা ডিজিটাইজ করা এই মুহুর্তে আইনসিদ্ধ নয়।
@ফরিদ আহমেদ, যতদূর মনে পড়ে- চুরি আর গবেষণার মধ্যে একটা পার্থক্য আছে। 🙂
@শ্রাবণ আকাশ,
হ্যাঁ, চুরি হচ্ছে একটা বই থেকে মেরে দেয়া, আর গবেষণা হলো গিয়ে অনেকগুলো লেখা থেকে কপি-পেস্ট করা। 😀
@ফরিদ আহমেদ,
কিন্তু সাংবাদিক বিপ্লব রহমান বলেছিলেন বলেছিলেন ষাট বছর। নিশাচর যখন আরজ আলী মাতুব্বরের রচনা কষ্ট করে কম্পোজ করে পোষ্ট করছিলেন, তখন গ্রন্থসত্ত্ব বিষয়টি আলোচনায় আসে। নতুন কোনো আইন তৈরি করে মেয়াদ কি কমানো হলো?
আইনে তো কতকিছুই আছে। কে এত মেনে চলে বলুন? মুক্তমনা তো আর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না। নিশাচর আরজ আলী মাতব্বরের লেখা পোষ্ট করে কী আইন অমান্য করছেন না? ঐসব আইনের কথা বললে দেখা যাবে ‘মুক্তমনা’ নিজেও আইন বিরুদ্ধ কাজ করে চলেছে। আইন অনুসারে যেটা কাগজের পাতায় লিখতে পারা যায় না, তা এই আন্তর্জালে লেখা সম্ভব হচ্ছে। জুলিয়ান এসেঞ্জ এর কথা ভাবুন।
আবার ধর্মীয় আইনের কথা চিন্তা করলে তো মুক্তমনার অনেককে কতল করা জায়েজ হয়ে যাবে।
@মাহফুজ,
কোন ধর্মের আইন? ইসলাম, সনাতন, খ্রিষ্ট? আমার ন্যাশনাল আইডি কার্ড আছে, বার্থ সার্টিফিকেট আছে, তার মানে আমি রাষ্ট্রের অংশ এবং মানুষ। কোন রিলিজিয়াস রেজিস্ট্রেশন তো নেই। ধর্মীয় আইনে কতল হব, এই কথা ভাবলে তো মুক্তচিন্তার কথা মুখেও আনা যাইব না। 😀
মাহফুজ ভাই ঠিকই উদ্ধৃতি দিয়েছেন আবদুল্লাহ আল মুতির বই থেকে।
কাজেই মাহফুজ ভাই যে অন্যায়ভাবে কারও লেখা চুরি করেছেন তা বলা সঠিক হবে না।
@আবুল কাশেম,
(Y) অভিযোগ করাটাই অঠিক মনে হচ্ছে (ভয়ে ভয়ে বলছি যদিও)
@নৃপেন্দ্র সরকার,
(ভয়ে ভয়ে বলছি যদিও)
কার বা কিশের ভয়?–মুক্তমনা চিন্তা পুলিশের না অন্য কিছুর?
@নৃপেন্দ্র সরকার,
হায় হায়;
বানান পুলিশ—
শব্দটি হবে ‘কিসের’। আমার বাংলা বানানের দৌড় এখন বুঝলেন।
মুক্তমনায় সব সময় বানান পুলেশের ভয় থাকে–যদিও এটা আমার জন্যে খুব ভাল। তা না হলে কোনদিন আমার বানান ঠিক হত না। সব পুলিশ খারাব নয়।
@আবুল কাশেম,
পৃথিবীতে কিছু কিছু মানুষ আছেন, যারা কলসীর তলার ছিদ্র খুঁজেন। আবার কিছু কিছু মানুষ আছেন যারা ছিদ্রটির ছায়া কোথায় পড়েছে সেটা খুঁজেন।
সকলের বুঝ তো এক রকম হয় না। দোয়া করবেন- চোরের অপবাদ মাথায় নিয়ে যেন দুনিয়া ছাড়তে না হয়। আমি ডারউইনের মত শশ্রু রাখা শুরু করেছি। আর ঠিক সেই সময় এই অপবাদটি এলো, কী করি বলুন তো?
@মাহফুজ, না না চুরির অপবাদ বোধ হয় দেয়া ঠিক হবে না। কারণ আপনি লেখার প্রথমে পরোক্ষ্যভাবে লিখেছিলেন –
@মাহফুজ,
আপনার সাথে আমি সহমত। লেখক’কে যাচাই বাছাই না করে আগেই ‘চুরি’ এর মত ঘৃণ্য অপবাদ দেওয়াটা মোটেই স্বাস্থকর ব্যপার নয়।
ভুল হলে তা সংশোধন করার সুযোগ দেয়া উচিত।
আর এমনই আমাকেও অকারনে জঘন্য ভাষা শুনতে হয়েছে যা ভাবলে আজও বিস্মিত হই। যারা সাধারণ লেখক তারা বিন্দু মাত্র ভুল করলে ক্ষমাহীন ঘৃন্য শব্দ ব্যাবহার করা হয়। কিন্তু, এডমিনরা
বা ক্ষমতায় যারা আছেন তাদের ভুল তারা কোনো দিন স্বীকার করেন না। দুঃখ এইখানেই।
যথা আমাকে বলে হয়েছিল,
অথচ ভুল আমার ছিল সামান্যই। যাই হোক। তবু মুক্তমনাকে ভালোবাসি, বাসবো তাই এক ঘরের বাসিন্দা হিসাবে মেনে না নিলেও মানিয়ে নিয়েছি।
এই জন্য এডমিনদের কেও অনুরোধ করছি। কেউ ভুল করলে তা নিয়ে গঠন মূলক সমালোচনা হোক।
আঘাত দিয়ে নয়। আশা করি আমার কথায় ভুল বুজবেন না।
দুঃখিত।
আমি আবুল কাশেম’কে বলতে গিয়ে মহফুজের ঘরে চলে গিয়েছে। তাই অনুরোধ,
@ আবুল কাশেম
হবে। ভুলের জন্য মাফি। 🙁
@আফরোজা আলম,
আপনার মন্তব্য পড়ে মনে হচ্ছে সেই পুরোনো কস্ট ভীষণভাবেই আপনাকে আঘাত করেছে যা সহজে ভুলে যেতে পারেন নি। আপনার ‘পুরোনো নামে’ কবিতায় সেই পরিস্থিতি ঘটেছিল।
এখন ফরিদ ভাইয়ের একটি মন্তব্য পড়ুন: (কুলদা রায়ের “কোন লেখাকে যখন নিরুৎসাহিত করা হয়, তার জন্য কেন খেদ থাকে?” নামে একটি পোষ্টে)
আফরোজা আলম, বিষয়টি একটু ভেবে দেখুন। অনেক সময় মানসিক কষ্ট শরীরের উপর ভর করে। দয়া করে মানসিক কষ্ট পুষে রাখবেন না।
@আবুল কাশেম,
আপনার মাহফুজ ভাই উদ্ধৃতি দেওয়ার মত কষ্টকর কাজটি করেন নি। এর চেয়ে আরেকটু সহজ কাজ করেছেন। তিনি আব্দুল্লাহ আল মুতির প্রবন্ধটির শিরোনামসহ প্রথম শব্দ থেকে শুরু করে দাড়ি, কমা চন্দ্রবিন্দুসহ একেবারে শেষ শব্দটি পর্যন্ত কপি করে দিয়েছেন।
আমার ধারণা ছিল যে লেখালেখি খুব কঠিন একটা কাজ। এখন আপনাদের মত পণ্ডিত জ্ঞানীগুণী গবেষকদের বক্তব্য দেখে বুঝতে পারলাম যে, আসলে এটা খুবই সহজ কাজ। কাজটা যখন এত সহজ তখন আর কষ্ট করার কী দরকার? আমিও ভেবেছি যে এখন থেকে প্রতিদিন একটা করে পোস্ট দেব মুক্তমনায়। প্রথম পোস্টটা শুরু হবে এরকমভাবে। এসো বাছারা আজ তোমাদের আব্দুল্লাহ আল মুতির আবিষ্কারের নেশায় বইয়ের ৩০ নং পৃষ্ঠা থেকে পড়ে শোনাই। এরপর মুতি সাহেবের ‘লাস্ট বয় থেকে সেরা বিজ্ঞানী’ প্রবন্ধটি পুরোটা তুলে দেবো। ব্যাস হয়ে গেল একটা লেখা। এইভাবে প্রতিদিন একটা করে লেখা নামিয়ে দেব মুক্তমনায়। আর ঠেকায় কে আমাকে?
মুক্তমনায় একা নামের একজন লেখক ছিলেন। একবার তিনি হুমায়ুন আজাদের নারী গ্রন্থ থেকে একটা অংশ হুবহু তুলে দিয়েছিলেন। প্রবন্ধের শেষে শুধু লিখেছিলেন যে, তথ্যসূত্র হুমায়ুন আজাদ। সেই লেখাটার প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম আমি এই বলে যে, শুধু তথ্যসূত্র উল্লেখ করলেই কারো লেখার কপি করা জায়েজ হয় না। তারপর ভদ্রমহিলা তাঁর লেখা্টি তুলে নিয়ে অভিমান করে আমাদেরকে একা করে দিয়ে সেই যে বিদায় নিয়েছেন, আর ফেরেন নি। এখন আপনাদের কথা শুনে মনে হচ্ছে, ভুলটা আসলে আমারই ছিল। তথ্যসূত্র উল্লেখ করলে, যে কারো পুরো প্রবন্ধই নিজের নামে চালিয়ে দেওয়া যায়।
একদম অঠিক হবে বলাটা। মাহফুজ ভাইয়ের মত একজন অমায়িক সৃষ্টিশীল লোক এই কাজটা করতে পারেন নাকি? 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
ভাই ফরিদ;
আপনি মুক্তমনার উন্নত মান বজায় রাখার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন সেজন্য আমরা আপনার কাছে কৃতজ্ঞ। আপনার এই প্রচেষ্টা না থাকলে মুক্তমনা হয়ত এত সমাদর লাভ করত না–তা আমি স্বীকার করে নিচ্ছি।
তবে একটু মনে রাখা দরকার যে মুক্তমনায় যারা লেখা প্রকাশ করে তারা সবাই পেশাদার লেখক নয় অথবা তারা আশা করে না যে কোন সম্ভ্রান্ত প্রকাশক কোনদিন তাদের লেখা মুক্তমনায় পড়ে তা বই আকারে ছাপাবার আগ্রহ প্রকাশ করবে। তাই সবার কাছ হতে আপনার মত উঁচু মানের ‘অরিজিনাল’ লেখা আশা করা হয়ত একটু বেশী কাম্য বলে আমার মনে হচ্ছে।
আপনার সেন্সরের/সমালোচনার ভাষা খুব কঠোর বলে আমার মনে হচ্ছে। যাই হোক আপনার এই পদক্ষেপ ভাল ফলও দিতে পারে, মুক্তমনাও সমৃদ্ধশালী হবে। কারণ কঠোর না হলে কেউ সংশোধন করতে চায় না।
আমি আপনার এই মন্তব্যটা ঠিক বুঝলাম না। যা বুঝলাম—
তা’হলে আমার মনে হচ্ছে মুক্তমনার অনেক লেখকই চুরি বিদ্যা আয়ত্ত করেছে। বিশ্বাস না হলে দেখুন না মুক্তমনার সবচাইতে বহুল পঠিত লেখাগুলো—দেখুন কি পরিমাণ উদ্ধৃতি ও বাক্য ব্যাবহার করা হয়েছে অন্যের লেখা থেকে। শুধু তাই নয়—আমার তো মনে হয় বিশ্বের অনেক বড় বড় লেখকরা চোর। কি বলেন আপনি? অনেক বাংলা বরেণ্য লেখক তা হলে চিন্তা চোর–কেননা উনারা বিদেশী কোন লেখকের চিন্তা চুরি করে গল্প, কাহিনী, উপন্যাস লিখেছেন।
আমার মনে হচ্ছে এই সব চোরের সর্দার হচ্ছি আমি নিজেই। কারণ আমার প্রত্যেকটি রচনা ভর্তি আছে কোরান, হাদিস, সিরাহ শরিয়ার হুবহু অনুলিপি দিয়ে।
আমি যদি আপনার মন্তব্য ভুল বুঝে থাকি তবে আমাকে শুধরে দিবেন অথবা নিজ গুণে ক্ষমা করে দিবেন।
@আবুল কাশেম,
মুক্তমনার উন্নত মানের জন্য শুধু আমাকে এককভাবে কৃতিত্ব দেওয়াতে নিদারুণ অস্বস্তিবোধ করছি। এর মান উন্নয়নের জন্য শুধু আমি একা নই, এর সংগে সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তিবর্গ, আপনাদের মত উৎকর্ষময় লেখকবৃন্দ, এবং সর্বোপরি এর বোদ্ধা পাঠককূল নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
মুক্তমনার লেখকেরা পেশাদার লেখক নন সেটা আমরা জানি। কিন্তু সে কারণে তাঁদেরকে মৌলিক হতে হবে না, এ বিষয়ে মুক্তমনা একমত নয়। অন্যের লেখা কপি পেস্ট করার জন্য আরো অসংখ্য বাংলা ব্লগ আছে। কেউ যদি অমৌলিক লেখা লিখতে চান, তবে সেখানে তাঁরা তাঁদের অমৌলিক লেখাগুলো দিতে পারেন। মুক্তমনাকে বিব্রত করার কোনো অধিকার তাঁদের নেই। লেখার মানকে আমরা গুরুত্ব দেই অবশ্য, তবে তার চেয়েও অনেক বেশি গুরুত্ব দেই লেখার মৌলিকত্বকে।
আপনার বক্তব্যের এই অংশটুকু আপনার মানের ব্যক্তির কাছ থেকে আমি আশা করি নি। গবেষণা আর অন্যের লেখা পুরোটা মেরে দেবার (তা সে তথ্যসূত্র দিয়েই হোক কিংবা না দিয়েই হোক) পার্থক্য আপনি জানেন না সেটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে আমার।
অনেক বড় বড় লেখক চোর বলেই কি চুরি জায়েজ নাকি। রবীন্দনাথ, নজরুলও বিদেশী সুর চুরি করে গান রচনা করেছেন, তাই বলে কি এই ধরনের চুরি হালাল হয়ে গেছে?
কাশেম ভাই, সমালোচনা এমনই জিনিস যে আপনা-আপনিই এর ভাষা কঠোর হয়ে যায়। মিষ্টি সুরের গান দিয়ে সমালোচনা করা যায় না। আমার কঠোর আচরণে যদি মুক্তমনা সমৃদ্ধশালী হয়, তবে দেখবেন যে, এই আমিই কত কোমল হতে পারি।
মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।
@আবুল কাশেম,
একদম একমত, যে
বাহ যা বলেছেন ভাই, মুক্তমনাকে যদি কেউ অবমুক্ত করে, কলুষিত আব হাওয়া থেকে মনে হয় সে ক্ষেত্রে যার নাম উল্লেখ করলে তিনি একাই যথেষ্ট।কেননা মডারেটর বলতে আর কাউকে তো চিনলাম না। এক জন ব্যক্তি গলা ফেড়ে সবাইকে শুধরে দিচ্ছেন। আহা কাজটা পরিশ্রমের ও বটে। 😕
তবে ভাই, একটা কথা বলি এতো তথাকথিত ‘চোর’ তাড়াতে গিয়ে না দেখা যায় ‘ঠক বাছতে গাঁ উজাড়’ হয়ে যায়। অর্থাৎ মুক্তমনা থেকে মানুষ জন বিদায় না হয়ে যায়। তখন মুক্তমনা কতৃপক্ষকেই নিজে লিখে নিজেই পোষ্ট করতে হবে। কেননা বাকী সবাই অসততার দায়ে দন্ডিত হয়ে পগার পার হয়ে যাবেন যে। :guli:
@আফরোজা আলম,
আপত্তিকর মন্তব্য। মর্মাহত হলাম। মনে হচ্ছে, সুযোগ পেয়ে পুষে রাখা রাগ উগরে দিলেন!
মুক্তমনার মতো মানসম্মত বাংলা ব্লগ দ্বিতীয়টি আছে কিনা সন্দেহ। আর মুক্তমনাকে এই পর্যায়ে নিয়ে আসার পেছনে যে কজন অসাধারণ মননের অধিকারী মানুষের নিরলস অবদান আছে, ফরিদ আহমেদ তাঁদের একজন। তাঁদের পরিশ্রমের ফলই আমরা পাঠকেরা উপভোগ করি।
পাঠক হিসেবে আমিও মুক্তমনায় মৌলিক লেখা আশা করি।
@ইরতিশাদ,
ফরিদ আহমেদ সাহেবের উপর কারও কারও অযথা ব্যক্তি আক্রমন আমাকে হতাশ করেছে।
মুক্তমনাকে মানসম্মত পর্যায়ে অধিষ্টিত রাখতে যে কজন মানুষ কাজ করে যাচ্ছেন , ফরিদ আহমেদ সাহেব তাঁদের অন্যতম। তাঁর মত সম্পাদকদের নিরলস শ্রমের কারনেই মুক্তমনা এখনও একটা ‘খামার ব্লগ’ হয়ে যায় নি যেখানে ভুঁইফোর ব্লগারদের রাজত্বে নিঃস্বাস নেয়াই দায়। মুক্তমনার এই মান সমুন্নত রাখার জন্য সম্পদকমন্ডলীর পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার উপর পূর্ন সমর্থন জ্ঞাপন করছি।
@সংশপ্তক,
খুবই একমত। কাউকে না কাউকে গেট কিপারের দায়িত্ব নিতেই হবে। ফরিদ ভাই সেই দায়িত্বটুকু নেয়ার কারণে অযথা গালমন্দ শুনতে হচ্ছে। এ ব্যাপারটা এরকম বাজে দিকে না যাওয়াটাই অভিপ্রেত ছিলো।
আমি আশা করব মুক্তমনার সবাই সহিষ্ণু পরিবেশ বজায় রাখবেন।
@ইরতিশাদ,
আপনার সাথে সম্পুর্ন একমত। কিছুদিন আগে একজন এই ব্লগে মন্তব্য করেছিলেন যে উনি একটু “গুগল ঘাটাঘাটি করে” খুব সহজেই বিজ্ঞানের উপর লেখা নামিয়ে দিতে পারেন। আশা করি এখন থেকে এই ধরনের মনোভাবের অবসান হবে। গুগল ঘাটাঘাটি করা কিংবা সেই তথ্য লেখাতে ব্যাবহার করাতে আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু তার সাথে নিজে কিছু চিন্তা, বিশ্লেষন ইত্যাদি করার মনে হয় দরকার আছে।
@ইরতিশাদ,
অতি বিনম্রতার সাথে জানাচ্ছি আপনার কথার সাথে একমত। ফরিদ সাহেব’কে কেন আক্রমন করলাম বলে মনে হল।
আর এতো সততা যেখানে, সেখানে আমাকে
এই কথা গুলো কিসের ভিত্তিতে বলেছিলেন তা আজও জানিনি। সেই সময় কারো কি মনে হয়নি এমন আপত্তিকর মন্তব্য কেন করা হয়েছে ভিত্তিহীন ভাবে।
আজ যার জন্য দুঃখ লাগছে তখন এতো সত্যবাদীরা কোথায় ছিল?
একজন লেখক’কে একটা কবিতা পোষ্ট করার কারনে অসাধু বলাটা কি ঠিক?
কথায় আছে আমরা করলে গুন্ডা বদমায়েশ”
রাম করলে লীলাখেলা
অবশ্যই ঝোপ বুঝে কোপ মারতে হয়, আমার সাথে যখন অন্যায় আচরণ করা হয়েছিল। মিথ্যে গালাগাল দেয়া হয়েছিল তখন কেউ এগিয়ে আসেনি। কেননা আমরা সাধারণ লেখক তাই?
তাই এই সব অসম্মান আমাদের প্রাপ্য?
লেখার জায়গা বোধ করি আরও আছে। তাই কারো পিঠ চাপড়ান কথা আমার দ্বারা সম্ভব না।
সম্মান যদি কেউ কাউকে না করতে পারে তবে অমম্মান করার অধিকার কারও নেই।
বিশেষ করে স্বাধীনচেতা লেখকের সাথে। কারও মনরঞ্জন করে প্রিয় পাত্র হবার আমার ইচ্ছে নেই।
আমার হয়ে কাউকে কিছু বলতেও হবে না। আমার জন্য আমি একলাই যথেষ্ঠ।
সবার সাথেই এই মানুষের সমস্যা হচ্ছে, তাহলে কী সবাই দোষী? বলতে পারেন কে কে বাকী আছে?
মুক্তমনার জন্য পরিশ্রম অনেকেই করেন, তবে এতো জাহির করেন না। তফাত এইটুকু।
@মুক্তমনা এডমিন, ব্যাপারটা এত দূর গড়ানোর কোন প্রয়োজন ছিল না। আমি আফরোজা আলমের শেষ দুটি মন্তব্য ডিলিট করে দিতে অনুরোধ করবো।
প্রিয় আফরোজা আলম,
একেবারে বিনা প্ররোচনায় আপনি মুক্তমনার একজন সম্মানিত সদস্য এবং এর মডারেশন টিমের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে যে কদর্য ভাষায় ব্যক্তি আক্রমণ করেছেন, তা মুক্তমনার নীতিমালার ঘোর পরিপন্থী এবং সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। আপনার এই উগ্র আচরণে শুধু মুক্তমনার মডারেশন টিমই আহত নয়, মুক্তমনার অনেক গুরুত্বপূর্ণ সম্মানীয় সদস্যও ইতোমধ্যেই এ বিষয়ে তাঁদের উদ্বেগ এবং হতাশা ব্যক্ত করেছেন।
এর আগেও আপনি অযথাই মুক্তমনার বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন। যার কোনো ব্যাখ্যাই পরবর্তীতে আপনি দিতে পারেন নি। আমরাও মুক্তমনার প্রতি আপনার অহেতুক বিরাগের কারণ অনুধাবনে ব্যর্থ হয়েছি।
শুধু যে মুক্তমনার বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন তাই নয়, ব্যক্তিস্বার্থে একে ব্যবহার করার উদ্দেশে একাধিক ছদ্মনামে এখানে নিবন্ধন করেছেন এবং সেই ছদ্মনাম থেকে লেখা পোস্ট করা থেকে শুরু করে মন্তব্য পর্যন্তও করেছেন।
আপনার এই সমস্ত কর্মকাণ্ড মুক্তমনার একজন দায়িত্বশীল সদস্যের আচরণের মধ্যে পড়ে না। এধরনের আচরণ শৈথিল্য এবং উগ্র আক্রমণাত্মক মনোভাবের কারণে আপনাকে অত্যন্ত কঠোরভাবে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে আপনার আচরণে এ ধরনের বিচ্যুতি পরিলক্ষিত হলে, কোনো ধরনের সতর্কতা বার্তা ছাড়াই আপনাকে মডারেশনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
সন্ধায় বাসায় এসেই পড়েছি।
পড়ে ভালই লেগেছে।
এখন বুঝতে পারছি কেন এত বিবর্তন বিষয়ক বই দরকার। হা হা হা….
অা.ট:
এডমিন@ ইমো কাজ করছেনা।
মজিলা ফায়ার ফক্সই ব্যবহার করি।
@আসরাফ,
জ্ঞানীরা ইশারায় বুঝে।
😀 😀 😀 😀 😀 😀 😀 😀
এই তো ইমো কাছ করছে। আমিও আপনার সাথে একটু হাসি 😀 😀 😀
যাহোক, ধন্যবাদ পড়া ও মন্তব্য করার জন্য। আশা করি শীঘ্রই দেখা হবে।
এই বইটা আমার স্কুলের এক বন্ধু আমাকে জন্মদিনে উপহার দিয়েছিল, আর বলেছিল, আমি জানি, তোকে কি বই দেয়া যায়। :))
মাহফুজ ভাইয়া কে আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ দেব এই লেখাটার জন্য। আমারও অনেকদিন ধরেই মনে হচ্ছে, বাচ্চাদের জন্য লেখালেখির ব্যাপারে সময় দেয়া দরকার। একটা বিজ্ঞানমনষ্ক সমাজ গড়তে হলে আগে একটা বিজ্ঞানমনষ্ক প্রজন্ম গড়তে হবে। বিক্রম সারাভাই হবার সাধ্যি নেই … কিন্তু পথ তো একটা না, অন্যভাবে লক্ষ্যে পৌছুতে হবে… মিডিয়াকে যদি এইব্যাপারে সচেতন করা যেত, কাজের কাজ হত। বিজ্ঞানকে অনেক আকর্ষনীয় উপায়ে উপস্থাপন করা যায়। কোন একটা ভারতীয় টিভি চ্যানেলে দেখেছি, গনেশকে উপস্থাপন করেছে অ্যানিমেটেড কার্টুন চরিত্রের মাধ্যমে। যে বাচ্চা কার্টুন দেখে, তার দেখতে কিন্তু দারুন লাগে। বিষয় বস্তু যাই হোক না কেন। ঐরকম করে বিজ্ঞানকে উপস্থাপন করার মত সৃজনশীল কি আমরা কেও হতে পারিনা।
আমি গল্প লিখতে পারি, কবিতা লিখতে পারি, গান লিখতে পারি এমন মানুষ তো অনেক আছে… কিন্তু সৃজনশীলতার সাথে সাথে একটা দেশকে গড়ার প্রত্যয়টা যুক্ত হলেই তো হয়ে যায়। 🙂
@নীল রোদ্দুর,
শিশুদের উপযোগী করে বিবর্তনের ওপর লেখার ব্যাপারে বন্যা আহমেদও লিখবেন বলে মন্তব্যের মধ্যে জানিয়েছিলেন। আপনারা যারা লেখালেখিতে অভ্যস্ত তাদের এই বিষয়টি চিন্তা করা দরকার। ফরিদ আহমেদও জার্মান বেতার তরঙ্গের এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন- ছোটবেলায় বিজ্ঞান শেখানো উচিত।
আব্দুল্লাহ আল-মুতি যদি না থাকতেন, বা তার বইগুলো যদি না লিখতেন তাহলে আমি হয়তো বিজ্ঞানই পড়তাম না। পুরোনো ভালোলাগা লেখাটা আবারো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আবার পড়লাম। আবার ভালো লাগলো। মাঝে মাঝে ভাবি, কোনো দিন যদি তাঁর মত করে লিখতে পারতাম! আর পারিবারিক আসরে এভাবে বিজ্ঞানের গল্প আবিষ্কারের গল্প বা মানুষের মহান সব কীর্তির গল্প বলার প্রচলন হওয়া উচিত। আমরা নিজেরাই এমন শুরু করতে পারি। তবে বাচ্চাদের আটেনশন ধরে রখার মত করে গল্পের ছলে লেখা সবার কম্মো নয়।
@তানভীরুল ইসলাম,
বাংলা পিডিয়াতে আছে: বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে আল-মুতী শরফুদ্দিনের অবদান অসামান্য। তিনি এদেশে বিজ্ঞানকে ছোটদের মধ্যে জনপ্রিয় করার পথিকৃৎ।
ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
@মাহফুজ,
ছোটবেলায় ডঃ মুতীর বই পড়েই বিজ্ঞানে আগ্রহী হয়েছিলাম। সময়ের সাথে সেই আগ্রহ বেড়েই চলেছে। বিজ্ঞানকে নেশা (মতান্তরে পেশা) হিসেবে বেছে নেবার পেছনে ওনার বইগুলর যথেস্ট ভূমিকা ছিল। এই অসামান্য বিজ্ঞানলেখককে শ্রদ্ধাভরে স্মরন করি।
@মাহ্ফুজ,বিবর্তন বাদের মতো একটা কঠিন বিষয়কে সাবলীল ভাষায় গল্প আকারে লিখেছেন।আপনার গল্প লেখের হাত ভালো বলতে হবে।
@তামান্না ঝুমু,
আপনি এবং অভীক, দুজনেই চরম ধোঁকা খেয়েছেন। এই চমৎকার প্রবন্ধটির লেখক মাহফুজ সাহেব নন। এটি লিখেছেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত বিজ্ঞানী এবং জনপ্রিয় বিজ্ঞান লেখক আব্দুল্লাহ আল মুতি শরফুদ্দিন। আবিষ্কারের নেশা নামে তাঁর একটি বই রয়েছে ছোটদের জন্য। সেই বইয়ে আরো ষোলটি প্রবন্ধের সাথে ‘ডারউইনের অভিযান’ প্রবন্ধটিও স্থান পেয়েছে। বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৬৯ সালে। বর্তমানে অনুপম প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হচ্ছে।
মাহফুজ সাহেব শুধু এই প্রবন্ধের আগে তিনটি অনুচ্ছেদ আর শেষে একটা অনুচ্ছেদ বসিয়ে দিয়েছেন তাঁর উর্বর মস্তিষ্ক থেকে।
@ফরিদ আহমেদ, আউচ! এইটা বড়ই রূঢ় হইয়ে গেলো!
ঐ মাঝখানের অনুচ্ছেদগুলো এক্কেবারে আগাগোড়া পুরোটাই কি শরফুদ্দীনের? সেটা হয়ে থাকলে তো এটা মোটেও কাজের কথা নয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি অন্য কোন বিষয় নিয়ে এটা করলেও ‘বিবর্তন’ বিষয়টি নিয়ে এই ধরণের কাজটা করা একেবারেই উচিত হয়নি। অনেক মানুষ হয়তো বলা যায়না বিবর্তন শিখতেই মুক্তমনায় আসে, তাদের শরফুদ্দীন থাকলে এবং তারাও এটা ধরে ফেলতে পারলে ব্যাপারটা হবে লজ্জাজনক! মাহফুজ সাহেবের প্রতিক্রিয়া শোনার অপেক্ষায় থাকলাম।
@আল্লাচালাইনা, মানে আমি বলছি লেখকের নামটি উল্লেখ করতে ব্যর্থ হওয়াটা। গল্পচ্ছলে বললেও লেখকের মানটা এবং কোন বই থেকে এটা নেওয়া, সেটা উল্লেখ করা উচিত ছিলো।
@আল্লাচালাইনা,
আছে তো!
@তানভীরুল ইসলাম,
একমত।
তবে মাহফুজ সাহেব নিজে আরও অনেক বেশি লিখে আব্দুল্লাহ আল-মুতি শরফুদ্দিনের বই থেকে কম উদ্ধৃতি দিলে পারতেন।
@আল্লাচালাইনা,
না না, কোনো রূঢ় আচরণ হয়নি। ফরিদ আহমেদ যা করেন তা আমার মঙ্গলের জন্যই করেন। উর্বর মস্তিকওয়ালা (মেধাহীন) বলে আমাকে জাগিয়ে তুলতে চাচ্ছেন, যেন আমি মৌলিক কিছু রচনা করি।
আপনি তো আপনার লেখার সত্ত্বাধিকারী দাবী করেন না। সবাই যদি আপনার মতো হতো তাহলে খুবই উপকার হতো এই সমাজের। যাহোক এখন এডিট করে ঠিকমত সূত্র উল্লেখ করে দিয়েছি। সে সাথে আরো কিছু সংযোজন ও বানান ভুল ঠিক করেছি।
@ফরিদ আহমেদ,
ধন্যবাদ ভুল ভাঙিয়ে দেয়ার জন্যে।
@তামান্না ঝুমু,
আপনার ইমেইল একাউন্টে লগইন তথ্য পাঠানো হয়েছে। পেয়েছেন কিনা জানাবেন। পেলে এখন থেকে লগ ইন করে মন্তব্য করবেন। আর না পেয়ে থাকলে কিংবা কোন সমস্যাবোধ করলে মডারেটরের সাথে যোগাযোগ করুন।
@মুক্তমনা এডমিন, আডমিনের ইমেইল পেয়েছি,ধন্যবাদ।মন্তব্য করার জন্যে
ব্লগের উপরে ডান পাশে যেখানে পাস ওয়ার্ড ও লগইন লেখা আছে সেখানে পাসোয়ার্ডের ঘরে পাসোয়য়ার্ড লিখে লগইনে ক্লিক করলে কি হবে?আর আমি যদি কোন লেখা পাঠাতে চাই তাহলে কি লেখাটা microsoft office w তে লিখে ([email protected]) এই ঠিকানায় ইমেইল করলে হবে?
@তামান্না ঝুমু,
হ্যা হবে।
ইমেইল করার দরকার নেই। সদস্যরা নিজেরাই লেখা পোস্ট করে দিতে পারেন। ডানপাশে লগ-ইন এর জায়গা থেকে লগ ইন করলে “ব্লগ লিখুন” বলে একটি লিঙ্ক দেখতে পাবেন। সেখানে ক্লিক করে পোস্ট করতে পারেন। তারপর মডারেটর এপ্রুভ করলে তা ব্লগে পোষ্ট হয়ে যাবে।
@মুক্তমনা এডমিন,
কোন লেখার উপরে মন্তব্য করার সময় যে লাইনগুলোর উপরে মন্তব্য করা হয় তাতে কিভাবে হাইলাইট করা হয়?
@তামান্না ঝুমু,
যে অংশটাকে উদ্ধৃতি মধ্যে নিতে চান সেটিকে আগে কপি করে নিয়ে এসে মন্তব্যের ঘরে পেস্ট করুন। তারপর ওই অংশটিকে হাইলাইট করে উদ্ধৃতি বাটনে ক্লিক করুন।
@তামান্না ঝুমু, অভিনন্দন আপনাকে! আজ কয়দিন ধরে মুক্তমনায় আপনার কমেন্ট পড়ছি, এইবার আপনার লেখা চাই। 🙂
@তামান্না ঝুমু,
মূল গল্প তো আব্দুল্লাহ আল মুতী লিখেছেন, বিষয়টি উল্লেখ করাও হয়েছে। বিষয়টি আরো পরিষ্কার করার জন্য তথ্যসূত্র উল্লেখ করা হয়েছে। নতুন করে আব্দুল্লাহ আল মুতীর পরিচিতিও দেয়া হলো, পড়ে দেখতে পারেন।
পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ডারউইনের জীবনী নিয়ে এর আগেও পড়েছি। আপনি বেশ সুন্দরভাবেই সেগুলোকে এক পোস্টে নিয়ে এসেছেন। আপনার প্রশংসা করতে হয়।
এটা আমার আগে জানা ছিল না। ধন্যবাদ এই গুরুত্বপুর্ণ তথ্যটা তুলে ধরায়
@ এডমিন,
হেডিংকে কিভাবে মিডিল পজিশনে আনতে হয়? মানে সেন্টার করবো কী করে?