১১ জুলাই ২০২২, আমেরিকান সময় সোমবার সন্ধ্যায় (বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার ভোর) প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বিল নেলসন হোয়াইট হাউসে এক সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এই সাক্ষ্য পেশ করেন- “এটা বিশ্বের প্রামাণ্য প্রাচীনতম ছবি, যা এসেছে ১৩০০ কোটি— হ্যাঁ, আবারও বলছি— ১৩০০ কোটি বছর আগে থেকে।”

মহাবিশ্বের এই ১৩৭০ কোটি বছর আগের ছবিটি যে টেলিস্কোপের মাধ্যমে তোলা হয়েছে, তার নাম ‘জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (James Webb Space Telescope বা JWST)’। নাসার অ্যাপোলো প্রোগ্রামের প্রধান বিজ্ঞানী জেমসের ওয়েবের নামের সঙ্গে মিল রেখে যার নাম রাখা হয়েছে। ১৯৯০-এর দশকে মহাকাশে পাড়ি দেওয়ার কথা ছিল এই টেলিস্কোপের। তখনই খরচ ধরা হয়েছিল ১০০ কোটি ডলার। ১৯৯৬ সাল থেকে পরিকল্পিত এ প্রকল্পটি একটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার ফল, যার নেতৃত্বে রয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা। ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা এবং কানাডীয় মহাকাশ সংস্থাও এই কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। প্রায় ৩০ বছর পর, ২০২১ সালের ২৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে যখন এই টেলিস্কোপ মহাকাশে পাড়ি দেয়, তখন খরচ দাঁড়ায় ১০০০ কোটি ডলার (যার মধ্যে নাসার অবদান ৯৭০ কোটি মার্কিন ডলার)। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের পেছনে রয়েছে পৃথিবীর তাবৎ বিজ্ঞানী আর কলাকুশলীর কয়েক দশকের অক্লান্ত পরিশ্রম। অনেক সাইন্টিস্ট এবং ইঞ্জিনিয়ার তাদের সম্পূর্ণ ক্যারিয়ার ব্যয় করেছেন এই টেলিস্কোপের পেছনে। সব মিলিয়ে বিশ্বের ১৪টি দেশ ও ২৯টি মার্কিন অঙ্গরাজ্যের ৩ শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়, সংস্থা ও কোম্পানির পাশাপাশি শতশত বিজ্ঞানী ও হাজার হাজার প্রকৌশলী এই প্রকল্পের উপরে কাজ করেছেন। মানুষের মেধা এবং পরিশ্রমের এক চূড়ান্ত শিখর বলা যেতে পারে এই টেলিস্কোপকে। পুরো টেলিস্কোপে প্রায় ৩০০ টির মতো সিঙ্গেল পয়েন্ট রয়েছে, যার কোনো একটি যদি ঠিক মত কাজ না করত, তবে কয়েক দশকের এই পরিশ্রম সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়ে যেত। পৃথিবী থেকে হাবল টেলিস্কোপ মাত্র ৫৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করে, যেখানে জেমস ওয়েব পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে স্থাপন করছে। ফলে এতে যদি কোনো সমস্যা দেখা দেয় তা মেরামত করারও কোনো সুযোগ নেই। সুতরাং মানুষের কাছে শুধুমাত্র একটিই সুযোগ ছিল পুরো প্রক্রিয়াটিকে সম্পূর্ণভাবে ত্রুটিমুক্ত রেখে সমাপ্ত করার। ফলে বুঝতে অসুবিধা হয়না যে, কতটা মেধা-মনন আর যত্ন-সর্তকতা রয়েছে এই টেলিস্কোপের পেছনে। হাবল স্পেস টেলিস্কোপের সাথে এর মধ্যে মূল পার্থক্য হচ্ছে হাবল টেলিস্কোপ দৃশ্যমান এবং আল্ট্রা ভায়োলেট রে বা ইউভি লাইটের মাধ্যমে কাজ করে। অন্যদিকে জেমস ওয়েব কাজ করে ইনফ্রারেড লাইটের মাধ্যমে। জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপকে ভালোভাবে বুঝতে হলে প্রথমে বুঝতে হবে এই ইনফ্রারেড লাইট আসলে কি। ইনফ্রারেড হলো তাপীয় বিকিরণের তরঙ্গ। বিজ্ঞানী উইলিয়াম হার্শেল ১৮০০ সালে এই বিকিরণ আবিষ্কার করেন। সূর্য, কাঠের আগুন থেকে বিকীর্ণ তাপ এক ধরনের ইনফ্রারেড রশ্মি। মানুষের শ্রবণ শক্তি যেমন ২০ থেকে ২০০০০ হার্জ এর শব্দ তরঙ্গের মধ্যে সীমাবদ্ধ; অর্থাৎ শব্দের ফ্রিকুয়েন্সি যদি ২০ এর কম কিংবা ২০ হাজারের বেশি হয় সেই শব্দ মানুষ শুনতে পাবে না, তেমনিভাবে আলোর ক্ষেত্রও মানুষ একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত দেখতে পায়।

এটি হচ্ছে আলোর (মূলত ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভের) সম্পূর্ণ স্পেকট্রাম। এই স্পেকট্রামের মধ্যে শুধুমাত্র যে সকল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য ৪০০ থেকে ৭০০ ন্যানো মিটারের মধ্যে, শুধু সেই আলো মানুষ দেখতে পায়, যাকে ভিজিবল লাইট বলা হয়। ৪০০ ন্যানোমিটার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট আলোর বর্ণ হচ্ছে বেগুনি। তরঙ্গদৈর্ঘ্য বৃদ্ধির সাথে সাথে আলোর বর্ণ পরিবর্তন হয়। ৪০০ ন্যানোমিটার তরঙ্গদৈর্ঘ্য বাড়তে বাড়তে ৭০০ ন্যানোমিটার হলে, সেই আলোর বর্ণ হবে লাল। এবং এই ৪০০ থেকে ৭০০ ন্যানোমিটার তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের সব গুলোকে একসাথে সাদা দেখায়, যেমন: সূর্যের আলো। দৃশ্যমান আলোর চেয়ে কম তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলো হচ্ছে অল্ট্রাভায়োলেট রে বা ইউভি লাইট, এক্স রে, গামা রে এবং দৃশ্যমান আলোর চেয়ে বেশি তরঙ্গদৈর্ঘ্য হচ্ছে ইনফ্রারেড, মাইক্রোওয়েভ এবং রেডিও ওয়েভ। এদের মধ্যে ইনফ্রারেড রে বা ইনফ্রারেড রেডিয়েশনের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রত্যেক বস্তু থেকে ইনফ্রারেড রে নির্গত হয়। এবং কতটা ইনফ্রারেড রেডিয়েশন নির্গত হবে তা বস্তু কর্তৃক শোষিত তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে। বস্তুর তাপমাত্রা যদি বেশি হয় তাহলে বেশি ইনফ্রারেড রে নির্গত হবে। আর যদি তাপমাত্রা কম হয় তাহলে কম ইনফ্রারেড রে নির্গত হবে। অর্থাৎ ইনফ্রারেড রেডিয়েশনের মাধ্যমে কোনো বস্তুর তাপীয় অবস্থা জানা যায়। এর একটা অতিপরিচিত বাস্তব উদাহরণ হলো, করোনা মহামারীর সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রবেশপথে সিকিউরিটি চেকিং এর সময় ইনফ্রারেড সেন্সর বেসড হ্যান্ড গান ব্যবহার করে শরীরের তাপমাত্রা মাপা হতো।

যেমন বাম পাশের ছবিটি দৃশ্যমান আলোর মাধ্যমে তোলা। কিন্তু ওই স্থানে একটা ইনফ্রারেড সেন্সর বসিয়ে প্রাপ্ত রেডিয়েশন ইনফরমেশনকে যদি তাপমাত্রায় রেকর্ড করা যায় তাহলে ডান পাশের ছবির মতো দেখা যাবে। তার মানে ইনফ্রারেড রেডিয়েশনের মাধ্যমে আড়ালে থাকা বস্তুর অস্তিত্বও বোঝা যাবে। মানুষ যদিও এই ইনফ্রারেড রেডিয়েশন বা আলো খালি চোখে দেখতে পায় না, তবে কিছু কিছু পতঙ্গ এবং প্রাণি তা দেখতে পায়, যেমন: মশা, সাপ, বাদুড়, কিচু প্রজাতির মাছ ইত্যাদি। জেমস ওয়েব কাজ কাজ করবে এই ইনফ্রারেড রেডিয়েশনের মাধ্যমে।

কোনো বস্তুকে আমরা কিভাবে দেখতে পাই? যখন ঐ বস্তুর উপর আলো প্রতিফলিত হয়ে আমাদের চোখে আসে, তখন সেটিকে আমরা দেখতে পাই। আমাদের সৌরজগতের কেন্দ্রে অবস্থিত সূর্য থেকে পৃথিবীতে আলো আসতে সময় লাগে প্রায় আট মিনিট। ফলে, সূর্যকে আমরা সবসময় আট মিনিট আগের সূর্য হিসেবে দেখি। এই ব্যাপারটির একটা সহজ বাস্তব উদাহরণ হলো, বজ্রপাতের সময় আমরা প্রথমে আলোর ঝলকানি দেখতে পাই, তার কয়েক সেকেন্ড পর বিকট শব্দ শুনতে পাই। কারণ শব্দের গতিবেগ আলোর থেকে অনেক কম। ফলে বজ্রপাতের সময় আলো এবং শব্দ যুগপৎ ঘটনা হলেও আমরা পৃথিবীর মানুষ বজ্রপাতের আলো এবং শব্দকে যুগপৎ হিসেবে একই সময়ে সেন্স করতে পারি না। একইভাবে আমাদের সামনে যত দৃশ্যমান বস্তু রয়ছে, তা যে আমাদের পৃথিবীর সময়ের সাথে ঠিক একই সময়ে বর্তমান আছে, তা নয়। আয়নার সামনে দাঁড়ানো নিজের প্রতিচ্ছবিও আসলে এক সেকেন্ডের কোটি কোটি কোটি ভাগের ক্ষুদ্রাংশে অতীতের ছবি, কারণ আয়না থেকে প্রতিফলিত আলোক রশ্নি আমার চোখে এসে পড়তে তাকে কিছু দূরত্ব অতিক্রম করতে হবে। ফলে কোনো বস্তু আমাদের থেকে যত দূরে অবস্থিত আমরা ঐ বস্তুর ততটা অতীত দেখি। অন্যভাবে বলা যায়, জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ মহাবিশ্বের যতটা দূরে দেখতে সক্ষম হবে, আমরা তত বেশি অতীতের ছবি দেখতে পাবো। কিন্তু এখানে সমস্যা হচ্ছে অনেক অনেক দূর থেকে আলো আসতে আসতে তা আর দৃশ্যমান আলোর সীমা অর্থাৎ ৪০০ থেকে ৭০০ ন্যানোমিটারের মধ্যে থাকে না। কারণ আমরা জানি মহাবিশ্ব প্রসারিত হচ্ছে। মহাবিশ্বের এই প্রসারণের ফলে আলো যখন স্পেস অতিক্রম করে, তখন এর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পায়। যাকে বলে রেড শিফটিং। এর ফলে দৃশ্যমান আলো ইনফ্রারেড আলোতে পরিণত হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে মনে করুন আপনি আকাশে একটি টর্চ লাইট অন করলেন। তাহলে এই আলো মহাবিশ্বের পথে যাত্রা শুরু করবে। কিন্তু মহাবিশ্ব যেহেতু অনবরত প্রসারিত হচ্ছে, ফলে টর্চ লাইটের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য অনবরত বাড়তে থাকবে। এবং একসময় এই আলো ইনফ্রারেডে পরিণত হবে। ফলে অনেক অনেক দূরের কোনো গ্রহে থাকা প্রাণি এই আলো সরাসরি দেখতে পাবেনা কিন্তু ওই প্রাণিরা যদি ইনফ্রারেড ক্যাপচার করার মতো ডিভাইস তৈরি করতে পারে, তবে ঠিকই টর্চ লাইটের আলো দেখতে পাবে। ঠিক এইজন্য জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ মূলত ইনফ্রারেড আলো ক্যাপচার করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। এটি মহাবিশ্বের প্রথম স্টার কিংবা গ্যালাক্সি থেকে নির্গত আলো ক্যাপচার করবে। তবে অবশ্যই তা দৃশ্যমান আলো হবেনা। প্রসারণের ফলে মহাবিশ্বের প্রথম আলো আলরেডি ইনফ্রারেডে পরিণত হয়েছে। এবং জেমস ওয়েব মূলত সেই সব ইনফ্রারেড রেডিয়েশন ক্যাপচার করবে। তবে এই ইনফ্রারেড রেডিয়েশন ক্যাপচার করার জন্য জেমস ওয়েবের মধ্যে অত্যাধিক ঠান্ডা, মিনিমাম -২৬৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বজায় রাখতে হবে। অন্যথায় তা কাজ করবে না। মজার বিষয় হলো, পরমশূন্য তাপমাত্রার চেয়ে মাত্র সাত কেলভিন বেশি তাপমাত্রার এই সেন্সরের সংবেদনশীলতা এত বেশি যে, পৃথিবী থেকে চাঁদের সমান দূরত্বে থাকা একটা মৌমাছির শরীরের তাপও এর মাধ্যমে সনাক্ত করা যাবে। এই ঠান্ডা পরিবেশ বজায় রাখার জন্য প্রচুর ইঞ্জিনিয়ারিং করা হয়েছে। কী কী ইঞ্জিনিয়ারিং প্রয়োগ করা হয়েছে তা বলার আগে এটা বলা যাক কেন জেমস ওয়েব টেলিস্কোপে এক্সট্রিমলি কোল্ড টেম্পারেচার প্রয়োজন।

শীতকালে একটি বিষয় লক্ষ্য করে থাকবেন। শীতকালে সামান্য গরম বস্তুর গরমও আমরা অনুভব করতে পারি। শীতকালে যারা নলকূপের পানিতে গোসল করেন তারা অবশ্যই খেয়াল করবেন নলকূপের পানি তুলনামূলক গরম মনে হয়। ঠিক এই জন্যই জেমস ওয়েবে এক্সট্রিমলি লো টেম্পারেচার প্রয়োজন। কারণ মহাবিশ্বের প্রথম স্টার কিংবা গ্যালাক্সির আলো ট্রাভেল করতে করতে ইনফ্রারেডে পরিণত হয়েছে। সেই সকল ইনফ্রারেড রেডিয়েশনের তাপমাত্রা খুবই কম। সুতরাং জেমস ওয়েবের ইনফ্রারেড সেন্সরকে প্রচন্ড ঠান্ডা অবস্থায় না রাখতে পারলে তা ইনফ্রারেড রেডিয়েশন তাপমাত্রা সঠিকভাবে ডিটেক্ট করতে পারবে না। ইনফ্রারেড সেন্সর যদি নিজেই গরম থাকে তাহলে সে ইনফ্রারেড রেডিয়েশনের গরম আলাদাভাবে অনুভব করতে পারবেন না। এজন্য জেমস ওয়েব টেলিস্কোপে অত্যাধিক ঠান্ডা পরিবেশ বজায় রাখা ছিল প্রথম চ্যালেঞ্জ। এবং এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিজ্ঞানীরা তিনটি বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন। প্রথমত, জেমস ওয়েবের অবস্থান নির্ধারণ। দ্বিতীয়ত, পৃথিবী, চাঁদ এবং সূর্য থেকে প্রতিফলিত আলো আটকে দেয়া। তৃতীয়ত, জেমস ওয়েবের নিজস্ব ম্যাকানিজম থেকে সৃষ্ট তাপ মিনিমাইজ করা।

আমাদের সোলার সিস্টেমে পৃথিবীর সাপেক্ষে পাঁচটি ল্যাগ্রাঞ্জ পয়েন্ট রয়েছে। ল্যাগ্রাঞ্জ পয়েন্টকে সহজভাবে বলা যায়- পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে বিপরীতমুখী মহাকর্ষ বল কাটাকাটি হয়ে শূন্য হয় এমন পাঁচটা বিন্দু আছে। আমরা জানি সূর্যের কাছের গ্রহগুলো সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে যেই সময় নেয়, দূরের গ্রহ তার চেয়ে বেশি সময় নেয়। এখন জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ যেহেতু পৃথিবী থেকে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে স্থাপন করা হয়েছে, ফলে পৃথিবী এবং জেমস ওয়েব সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন সময় নিবে। যদি এমনটা হয় তবে সময়ের সাথে সাথে পৃথিবী এবং জেমস ওয়েবের মধ্যবর্তী দূরত্ব অনেক বেড়ে যাবে। যার ফলে জেমস ওয়েবের সাথে কমিউনিকেশন গ্যাপ তৈরি হবে। এমন সমস্যার ক্ষেত্রে সমাধান হচ্ছে ল্যাগ্রাঞ্জ পয়েন্ট। এই ল্যাগ্রাঞ্জ পয়েন্টগুলো গ্র্যাভিটেশনালি স্টেবল। অর্থাৎ এই পয়েন্টগুলোতে কোন বস্তু স্থাপন করলে এরা পৃথিবীর সাপেক্ষে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখবে। সহজ করে বললে পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে যে সময় নেয়, ল্যাগ্রাঞ্জ পয়েন্টে কোন বস্তু রাখলে তা সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে একই সময় নেবে। সুতরাং পৃথিবীর সাপেক্ষে ঐ বস্তুর দূরত্ব একই থাকবে।

এই পাঁচটা ল্যাগ্রাঞ্জ পয়েন্টের মধ্যে জেমস ওয়েবের জন্য সবচেয়ে পারফেক্ট হচ্ছে L2 ল্যাগ্রাঞ্জ পয়েন্ট। এই পয়েন্টের ক্ষেত্রে সূর্যের আলো পৃথিবীর কারণে আটকে যাবে। ফলে জেমস ওয়েব ঠান্ডা থাকবে। এছাড়া সূর্য, পৃথিবী এবং চাঁদ থেকে প্রতিফলিত তাপমাত্রা আটকে দেয়ার প্রয়োজনীয়তা থেকে তৈরি করা হয় সানশীল্ড। সানশীল্ড এমনভাবে তৈরি করার প্রয়োজন ছিল, যা হবে খুবই উচ্চ মাত্রার তাপ প্রতিরোধী, ওজনে হালকা, সেইসাথে মজবুত। যার ফলে সানশীল্ড হিসেবে ব্যবহার করা হয় ক্যাপটন, যা এক ধরনের প্লাস্টিক। ক্যাপটন উচ্চ তাপমাত্রা সেইসাথে নিম্ন তাপমাত্রায় স্ট্যাবল থাকতে পারে। কিন্তু ক্যাপটন ট্রান্সপারেন্ট, ফলে এর মধ্যে খুবই পাতলা অ্যালুমিনিয়ামের আস্তরণ দেয়া হয়। এভাবে জেমস ওয়েবে প্রায় ৩ হাজার ৩০০ স্কয়ার ফিটের পাঁচটি সানশীল্ড ব্যবহার করা হয়, যা প্রায় একটা টেনিস কোর্টের সমান!

এই পাঁচটা সানশীল্ডের মধ্যে কিছুটা গ্যাপ রাখা হয়। যেন প্রথম লেয়ার দিয়ে তাপমাত্রা প্রবেশ করলে তা যেন অ্যালুমিনিয়ামের আস্তরে প্রতিফলিত হয়ে বাইরে বেরিয়ে যায়। প্রথম দুটি সানশিল্ডে অ্যালুমিনিয়াম এর পাশাপাশি সিলিকনের আস্তরণও ব্যবহার করা হয়। যার ফলে তা দেখতে পিংক দেখায়।

সানশীল্ডের এই পাঁচটি আস্তরণ কতটা তাপমাত্রা আটকে দিতে পারে তা জানলে অবাক হবেন! সানশিল্ডের হট সাইডের তাপমাত্রা যদি ৮৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস হয়, তবে কোল্ড সাইডের তাপমাত্রা দাঁড়াবে -২৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস! এই সানশিল্ড থাকবে সূর্যের দিকে। ফলে সূর্য, পৃথিবী এবং চাঁদ থেকে প্রতিফলিত রেডিয়েশন বা তাপমাত্রা আটকে দিয়ে জেমস ওয়েবকে ঠান্ডা রাখবে। জেমস ওয়েবের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেন্সর হচ্ছে মিড ইনফ্রারেড ইন্সট্রুমেন্ট সংক্ষেপে MIRI। যা একই সাথে ক্যামেরা আবার স্পেকটোগ্রাফ। এটি অনেক দূরের গ্যালাক্সি থেকে আসা রেড শিফটেড মিড ইনফ্রারেড লাইটগুলোকে শনাক্ত করতে পারে। এটি ৫ থেকে ২৮ মাইক্রনের তরঙ্গদৈর্ঘ্য পর্যন্ত সনাক্ত করতে পারে। তবে এটি খুবই খুবই নিম্ন তাপমাত্রায় কার্যকর। যে তাপমাত্রা প্রায় পরম শূন্য তাপমাত্রা কাছাকাছি। মাত্র ৬.৭ কেলভিন বা -২৬৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এত নিম্ন তাপমাত্রার ফলে এই সেন্সর জেমস ওয়েবের অন্য অংশের তাপমাত্রা শোষণ করে ফেলতে পারে। ফলে সেটি গরম হয়ে উঠবে। এমন অবস্থায় এই সেন্সর যেন ঠাণ্ডা থাকে এজন্য কুলিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে, যার নাম ক্রায়োকুলার। আর এই ক্রায়োকুলার সিস্টেমে ব্যবহার করা হয়েছে হিলিয়াম। হিলিয়াম এর মাধ্যমে কিছু কমপ্লিকেটেড সিস্টেম মেইনটেন করে সেন্সরের জন্য প্রয়োজনীয় নিম্ন তাপমাত্রা বজায় রাখা হবে।

এরপর সামনে আসে আয়না। হাবল টেলিস্কোপে সরাসরি কাচের আয়না ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু জেমস ওয়েবে ব্যবহার করা হয়েছে স্বর্ণ। কারণ কাচের আয়না ভিজিবল লাইট এবং আল্ট্রাভায়োলেট লাইট খুব ভালো প্রতিফলিত করতে পারে। কিন্তু জেমস ওয়েব মূলত কাজ করবে ইনফ্রারেড রেডিয়েশন নিয়ে। ইনফ্রারেড লাইট সবচেয়ে ভালো প্রতিফলিত হয় স্বর্ণের মধ্যে। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের প্রাইমারি মিরর হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ১.৩২ মিটার কর্ণবিশিষ্ট ১৮টি ষড়ভূজ আকৃতির বেরিলিয়াম কাঠামো, যা হাবল টেলিস্কোপের চাইতে প্রায় ১৫ গুণ বড়।

বেরিলিয়াম ব্যবহারের কারণ হচ্ছে এটি ওজনে হালকা, সেই সাথে এটি নিম্ন তাপমাত্রা এবং উচ্চ তাপমাত্রায় এর নিজস্ব শেপ ধরে রাখতে পারে। বেরিলিয়ামের এই ১৮ টি কাঠামোর উপর মাত্র ৪৮.২ গ্রাম স্বর্ণের খুবই পাতলা প্রলেপ দেয়া হয়েছে। স্বর্ণের এতোটা পাতলা প্রলেপ দেওয়ার মূল কারণ হচ্ছে ১৮ টি কাঠামোর সংযোগস্থলগুলো যেন মসৃণ থাকে। এখানে একটি বিষয় বলা দরকার, এই ১৮টি আয়না কিন্তু প্রোগ্রামেবল। অর্থাৎ ১৮টি খন্ড আলাদা আলাদাভাবে নাড়াচড়া করানো সম্ভব। এর ফলে সুবিধা হচ্ছে প্রাইমারি মিররের আলো যদি সেকেন্ডারি মিররে ঠিকভাবে ফোকাস না করে তবে যেন প্রাইমারি মিরর গুলো ঠিকঠাকভাবে সরিয়ে ফোকাস ঠিক করা যায়। আলো প্রাইমারি মিররে পড়ার পর প্রতিফলিত হয়ে সেকেন্ডারি মিররে পড়বে, তারপর সেই আলো প্রবেশ করবে জেমস ওয়েবের মূল অংশে। এ অংশকে বলা যেতে পারে জেমস ওয়েবের হার্ট। এখানে বসানো হয়েছে বিভিন্ন ধরনের অত্যাধুনিক সেন্সর এবং এই সকল সেন্সরগুলো একেকটি বিষয় নিয়ে কাজ করবে।

প্রথমে রয়েছে নিয়ারক্যাম। এর মূল কাজ হচ্ছে স্টার কিংবা গ্যালাক্সির উজ্জ্বল আলো ব্লক করে দিয়ে ওই উজ্জ্বল বস্তুর আশেপাশে কি রয়েছে তা জানানো। কারণ কোন একটি উজ্জ্বল আলোর আশেপাশে যদি কিছু থাকে তা দেখা যায় না। কিন্তু ঐ উজ্জ্বল আলোকে যদি ব্লক করে দেওয়া যায়, তাহলে তার আশেপাশে কি রয়েছে তা খুব সহজেই বোঝা যায়। এবং এই কাজটিই করবে নিয়ারক্যাম। যদিও এর মাধ্যমে উজ্জ্বল আলোর আশেপাশে যে সকল গ্রহ রয়েছে তাদের ফিজিক্যাল প্রপার্টি জানা যাবে না। নিয়ারক্যামের পরে রয়েছে নিয়ারস্পেক। যা আলোর স্পেকট্রাম নিয়ে কাজ করবে। এবং এর মাধ্যমে যে সকল অবজেক্ট থেকে আলো আসছে তার ম্যাস, টেম্পারেচার, কেমিক্যাল কম্পোজিশন সম্পর্কে জানা যাবে। এই নিয়ারস্পেক আরেকটি কাজ করবে। আকাশে থাকা লক্ষ লক্ষ অবজেক্টের পরিবর্তে নির্দিষ্ট অবজেক্টে ফোকাস করা যাবে। ফলে নির্দিষ্ট অবজেক্ট সম্পর্কে স্টাডি করা যাবে। এরপর রয়েছে ফাইন গাইডেন্স সেন্সর। এর মাধ্যমে জেমস ওয়েব ক্রমাগত বিভিন্ন বস্তুতে একইসাথে নজর রাখতে পারবে। এবং এই ফাইন গাইডেন্স সেন্সরের পর রয়েছে MIRI, যা নিয়ে প্রথমেই বলেছি। তাছাড়াও জেমস ওয়েবে রয়েছে সোলার প্যানেল। টেলিস্কোপটির সব যন্ত্র চালানোর জন্য প্রায় ২০০০ ওয়াট পাওয়ার লাগবে। যেটা পুরোপুরি আসবে সোলার প্যানেল থেকে। এছাড়াও রয়েছে কমিউনিকেশন অ্যান্টেনা। যা প্রতিদিন দুবার করে প্রতিবারে প্রায় ২৮.৬ গিগাবাইট ডেটা পাঠাতে সক্ষম। সোলার অ্যারে, অ্যান্টেনা এসবকিছু রয়েছে সানশিল্ডের হট সাইডের দিকে। তাছাড়া সেখানে কিছু জ্বালানিও স্টোর করে রাখা হয়েছে। এই হচ্ছে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের মোটামুটি ইঞ্জিনিয়ারিং।

জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ তৈরি করার পর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল এই বিশাল বড় কাঠামোকে অ্যারিয়ান ফাইভ রকেটে ফিট করে স্পেসে নিয়ে যাওয়া এবং এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা অরিগ্যামির সাহায্য নেন। সাড়ে একুশ ফুট প্রশস্তের এই টেলিস্কোপকে ভাঁজ করে সাড়ে সতেরো ফুট প্রস্থের রকেটের মধ্যে নেওয়া হয়েছে। টেলিস্কোপটির ভাঁজ খুলতে প্রায় দুই সপ্তাহের মতো সময় লেগেছে। ১৭৮ টি রিলিজ ম্যাকানিজমের মাধ্যমে ৫০ টি কলকব্জা সম্পূর্ণভাবে কাজ করতে হয়েছে। এইধাপে কোনো একটি মেকানিজম কাজ না করলে পুরো প্রজেক্টই বাতিল হয়ে যেত। এই টেলিস্কোপে ৩০০টিরও বেশি নষ্ট হওয়ার মত যন্ত্র রয়েছে। এই সবগুলোকে ঠিকভাবে কাজ করতে হয়েছে। মহাকাশে পাঠানোর সময় রকেটের বেগের কারণে তীব্র ঝাঁকুনিতে এগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারত। অতীতে কয়েকবার উৎক্ষেপনের তারিখ ঠিক হওয়ার পরেও টেলিস্কোপটি মহাকাশে পাঠানো যায় নি। কারণ এটি ভাঁজ করার পর এর মধ্যে কয়েকটি যন্ত্র ভেঙে গিয়েছিল। প্রতিটি জিনিস ঠিক করতেয প্রায় চার বছর করে সময় লেগেছে। এভাবে যন্ত্রটির উৎক্ষেপণ প্রায় ১২ বছর পিছিয়ে যায়। মহাকাশে পৌঁছানোর পর পুরোপুরি কার্যক্ষম হতেও এর মাস খানেক সময় লেগেছে।

পাথুরে পর্বতের মতো দেখতে এই ‘কসমিক ক্লিফস’ মূলত নক্ষত্রের মেঘে আচ্ছন্ন একটি নীহারিকার শেষ প্রান্ত। ‘কারিনা নেবুলা’ নামে এই নীহারিকার ছবি পাঠিয়েছে নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। ছবি: রয়টার্স

পাঁচটি ছায়াপথের এই গুচ্ছটি একে অন্যের খুব কাছাকাছি অবস্থান করে। মাঝে দুটি, একটি উপরের দিকে, বাম পাশে উপরের দিকে একটি এবং নিচের একটি মিলে বিশাল এই নক্ষত্রপুঞ্জটির নাম ‘স্তেফান কুইনটেট’। নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ থেকে পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড়। ছবি: রয়টার্স

পাশাপাশি দুটি ছবিতে এই নীহারিকাটির নাম ‘সাউদার্ন রিং নেবুলা’। নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তোলা বাম পাশের ছবিতে ‘নেয়ার ইনফ্রারেড লাইট’ এবং ডান পাশের ছবিতে ব্যবহার হয়েছে ‘মিড ইনফ্রারেড লাইট’। ছবি রয়টার্স

নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তোলা একটি ছায়াপথের ছবি। ‘নেয়ার ইনফ্রারেড লাইটে’ তোলা ডান পাশের ছবিতে নীল নক্ষত্রগুলো থেকে আলোর বিচ্ছুরণ দেখা গেলেও বামে ‘মিড ইনফ্রারেড লাইটের’ ছবিতে তুষার কণার মতো লাগছে। ছবি: রয়টার্স

ছায়পথগুচ্ছ ‘এসএমএসিএস -৭২৩’ পৃথিবীর জন্মের আগে যেমনটা ছিল। নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তোলা প্রথম ‘ডিপ ফিল্ড’ ছবিটি ‘নেয়ার ইফ্রারেড লাইট’ ব্যবহার করে তোলা হয়। ওয়েবের নিয়ার-ইনফ্রারেড ক্যামেরা (NIRCam) দ্বারা নেওয়া এই গভীর ক্ষেত্রটি বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের চিত্রগুলি থেকে তৈরি একটি কমপ্লেক্স ছবি, মাত্র ১২.৫ ঘন্টা লেগেছে – যেখানে হাবল স্পেস টেলিস্কোপের লেগেছিল কয়েক সপ্তাহ এবং এতো পরিষ্কার ও ছিল না। ছবি: রয়টার্স

আসলে মানুষ তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের সবকিছু যেন পারফেক্টলি হয়। এক্সট্রিমলি লো টেম্পারেচারে কোন ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করা বেটার হবে তা নির্ধারণ করার জন্য কাটিং এজ টেকনোলোজি এবং যতটা সম্ভব ওজন কমিয়ে আনা সহ সকল ধরনের গাণিতিক হিসাবনিকাশ সঠিকভাবে নির্ণয় করা, অরিগামি প্রয়োগ করে তা স্পেসে পাঠানো ইত্যাদি বিষয়গুলোতে ছিল বিজ্ঞান ইতিহাসের সর্বোচ্চ প্রযুক্তির ব্যবহার। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অস্থিরতার মধ্যে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো যখন নানা ভূরাজনৈতিক হিসাব নিকাশে ব্যস্ত, এমনকি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের চার অংশীদারের মধ্যে রাশিয়া থাকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে একটা চাপ তৈরি হয়েছে, যা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গত ৩১ মে, ২০২২ এর কথায় স্পষ্ট- ‘‘আমরা রাশিয়ার হাইটেক আমদানির প্রায় অর্ধেক বিচ্ছিন্ন করে দেবো বলে আমাদের অনুমান৷ সেনাবাহিনীর আধুনীকিকরনের ক্ষমতার উপর আমরা আঘাত করবো৷ এর ফলে মহাকাশ কর্মসূচিসহ তাদের এয়ারোস্পেস শিল্পের মান কমে যাবে৷”, সে মুহূর্তে আনুষ্ঠানিকভাবে জেমস ওয়েবের ছবি প্রকাশ এবং স্যোশাল মিডিয়ায় জো বাইডেনের এই উক্তি -‘এ ছবিগুলো বিশ্বকে মনে করিয়ে দেবে—যুক্তরাষ্ট্র বড় বড় কাজ করতে পারে। এবং মার্কিন জনগণকে, বিশেষ করে আমাদের শিশুদের মনে করিয়ে দেবে যে, আমরা পারি না এমন কিছুই নেই।’, অনেকের মনে নতুন অনুসন্ধানদের জন্ম দিচ্ছে।

তথ্যসূত্র:
1. https://www.nasa.gov/image-feature/goddard/2022/nasa-s-webb-reveals-cosmic-cliffs-glittering-landscape-of-star-birth
2. https://www.jwst.nasa.gov/
3. https://en.wikipedia.org/wiki/James_Webb_Space_Telescope
4. https://www.space.com/21925-james-webb-space-telescope-jwst.html
5. https://www.bbc.com/news/science-environment-62140044
6. https://webbtelescope.org/
7. https://www.esa.int/Science_Exploration/Space_Science/Webb
8. https://esawebb.org/news/weic2210/
9. https://news.sky.com/story/james-webb-space-telescope-team-leaks-two-pictures-of-jupiter-12651084
10. https://www.jwst.nasa.gov/content/about/comparisonWebbVsHubble.html