প্রথমে বলে নিই,এ বিতর্ক যেন-পাত্র কি তৈলাধার না তৈলাধার কি পাত্র-এ জাতীয় অর্থহীন বিতর্ক।
ভাস্কর্য বা sculpture কি বা কাকে বলা হয়? কাঠ বা পাথর খুঁদিয়ে কোন জীব- জন্তু কিংবা মানুষের কিংবা কোন বস্তুর অবিকল, প্রতিকৃতি তৈরী করলে তা ভাস্কর্য। যারা এটা তৈরী করে, তাদের বলা হয় ভাস্কর। এটা একটা দারুণ কষ্টসাধ্য শিল্পও বটে । এসব ভাস্কর শিল্পীরা দারুণ দক্ষ ও মেধাবী। কোন কোন ভাস্কর্য একটি ইতিহাসের রেপ্লিকা হয়ে ওঠে। যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনের ভাস্কর্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অনেক কথা বলে দেয়-যা বিশাল আকারের বই পড়ে জানতে হবে। মূর্তিও সাধারণত এক ধরণের শিল্পীরা নির্মাণ করে থাকে। আকার ও আকৃতিতে কোন কোন মূর্তিও ভাস্কর্য এর রূপ ধারণ করে। এরাও অত্যন্ত দক্ষ ও গুণী শিল্পী। সুতরাং মূর্তি নাজায়েজ, ভাস্কর্য জায়েজ এ জাতীয় বিতর্কও অর্থহীন বাগাড়ম্বর।
মূল প্রশ্ন হল, এ বিতর্কে ধর্ম কেন আসবে?
হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা তাদের ধর্মীয় দেবতাদের মূর্তি বানিয়ে তাকে পূজা করে। এটা তাদেরই ধর্মীয় বিশ্বাস। তাতে মুসলমানদের কিছুই বলার থাকে না। তাতে মুসলমানদের ঈমান-আকিদার কোন ক্ষতি হওয়ার কথা নয়। তাই বলে ভাস্কর্য নির্মাণ, ভাস্কর্য সংরক্ষণের মাধ্যমে আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে শৈল্পিক ব্যঞ্জনায় তুলে ধরা-আগামী প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করে রাখার মধ্যে পাপ কোথায়? হ্যা, বিভিন্ন ভাস্কর্য নির্মাণ করে দেবতার মত তাকে পূজা করলে তাতে মুসলমানদের আপত্তি থাকতে পারে। কারণ ইসলাম ধর্ম তা সমর্থন করে না। মুশকিল হল, এটুকু বুঝতে যে জ্ঞানের প্রয়োজন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে তা আমাদের দেশের ধর্মীয় মৌলবাদীদের নেই । নিকট অতীতে ফটো তোলাও তারা নাজায়েজ বলত। কিন্তু হজ্জে যেতেও যখন ফটো লাগে তখন তারা লা জবাব। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সোল এজেন্ট, আজকের শাসক শ্রেণী কি করলেন?
আজ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলার হুমকির বিরুদ্ধে তারা সোচ্চার বটে, কিন্তু দেশের সর্বোচচ আদালত প্রাঙ্গণে ন্যায় বিচারের অনবদ্য এক প্রতীক হিসাবে নির্মিত ভাস্কর্য মৌলবাদীদের হুঙ্কারে রাতারাতি তারা যখন সরিয়ে ফেলল, তখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল কেন, এ প্রশ্নের জবাব কি কেউ দেবে??
আজ যদি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের কথা না বলে কেবল কলাভবনের সামনে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের অনবদ্য প্রতীক সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্মিত অপরাপর ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে মৌলবাদীরা হুঙ্কার দিত, আমার শঙ্কা হয়, এ সরকার তাদের সে দাবীও মেনে নিত। তাদের সাথে আপোষ করত।
বিগত ০২-১২-২০২০ ইং তারিখে দেশের তথাকথিত “৯৫ জন শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে মাশায়েক ও মুফতি” এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে ফতোয়া দিয়েছেন-মানুষ বা অন্য কোন প্রাণীর ভাস্কর্য অথবা মূর্তি নির্মাণ, স্থাপন ও সংরক্ষণ পূজার উদ্দেশ্যে না হলেও সন্দেহাতীত ভাবে নাজায়েজ, স্পষ্ট হারাম এবং কঠোরতম আজাব যোগ্য গুনাহ। আমরা এখনো জানতে পারিনি, হেফাজতে ইসলামের উদ্যোগে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যের সাথে দেশের কত আলেম একমত কিংবা দ্বি-মত পোষণ করেন। তবে এটা একটি চলমান বিতর্ক বটে। দেশে মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধে বিজয়ের স্মারক হিসাবে বহু ভাষ্কর্য ইতিপূর্বেই নির্মিত হয়ে আছে। বর্তমান বিতর্কটি শুরু হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের সরকারের সর্ব সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে।
ভাস্কর্য মূর্তি কিনা কিংবা মূর্তি ভাস্কর্য কিনা এ বিতর্ক অর্থহীন। কারণ ভাস্কর্য যেমন পাথরে, মাটিতে কিংবা কাঠে খোদাই করে কোন ব্যক্তি, জন্তু, পশুপাখী কিংবা কোন প্রাকৃতিক দৃশ্যের দৃশ্যমান শৈল্পিক উপস্থাপনা, মূর্তিও তাই।প্রত্যেকটি দেবদেবীর যে সকল মূর্তি তৈরা করা হয়-সেগুলোও এক একটি ভাস্কর্যই বটে। কিন্তু হিন্দু সম্প্রদায় তাদের পূজার জন্য যে সকল মূর্তি নির্মাণ করেন-সেগুলো শুধু তাদের নির্দিষ্ট কিছু দেবী-দেবীর মূর্তি বা ভাস্কর্য।
হি্ন্দু সম্প্রদায়ের পূজার বাইরে যে সকল ভাস্কর্য বা মূর্তি সেগুলো কেবল কোন মানুষ বা জীব জন্ত নয়-অনেক কিছুর ভাস্কর্য-যা পৃথিবী প্রায় সকল দেশে কম বেশী বিদ্যমান। তাই প্রশ্নটি যা সামনে আনা হয়েছে-ইসলাম ধর্মে ভাস্কর্য নির্মাণ জায়েজ কিনা। অন্য ধর্মাবলম্বীদের এ বিষয়ে কোন ওজর আপত্তির কথা শুনা যায়নি। সে কারণেই আমাদের উপরোক্ত আলেম-মাশায়েকবৃন্দ ফতোয়া দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন এবং তারা সর্বশেষ তাদের ফতোয়া ঘোষণা করেছেন। যেহেতু সিদ্ধান্তটি নিতে হবে ধর্মীয় বিধি-বিধানের আলোকে, সেহেতু ধর্মীয় গুরু আলেমদের মতামতই এখানে প্রণিধানযোগ্য।
বলাবাহুল্য পৃথিবীর সকল দেশেই বিভিন্ন রকম ভাস্কর্য বিদ্যমান। বিশেষভাবে উল্লে্খ্য যে, সৌদি আরবসহ হেন কোন মুসলিম দেশ আমাদের আলেম সম্প্রদায় দেখাতে পারবেন না, যেখানে অজস্র ভাস্কর্য বিদ্যমান নেই। তাদের বিনয়ের সাথে এ পশ্নটি কি করা যায়, খোদ সৌদী আরব সহ মধ্যপ্রাচ্যের সকল মুসলিম দেশ, যেখানে ইসলামী শাসন প্রচলিত এবং পাকিস্তান ইরান, ইন্দোনেশিয়া আফগানিস্তান এসব দেশ, তাদের দেশে বিভিন্ন ভাস্কর্য নির্মাণের মাধ্যম আমাদের উপরোক্ত ফতোয়াদানকারী আলেম মাশায়েকদের ভাষায় সন্দেহাতীত ভাবে নাজায়েজ, স্পষ্ট হারাম এবং কঠোরতম আজাব যোগ্য গুনাহের কাজটি বৎসরের পর বৎসর তথা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে করে আসছেন, আমাদের আজকের উপরোক্ত আলেম মাশাযেকদের তো কোনদিন কোন বক্তব্য কিংবা সাবধান বাণী উচ্চারণ করতে আমরা শুনিনি। অথচ ফি বছর প্রচুর আলেম মাশায়েক সৌদি আরবে হ্জ্জ্বব্রত পালন করতে যান। তারা কি তখন চোখে ঠুলি পড়ে রাখেন?আজ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগে তারা সম্বিত ফিরে পেলেন?
ধর্মীয় বিধি-বিধানের ব্যাখার সোল এজেন্ট আমাদের আলেম-মাশায়েকগণ। তাই আমি ধর্মীয় কোন ব্যাখা হাজির করে তাদের বক্তব্য খণ্ডনের ধৃষ্টতা দেখাব না। আমি যদি যুক্তি ও বিজ্ঞানমনস্কতা দিয়ে ভাস্কর্যের উপযোগিতা বোঝাবার চেষ্টা করি-তাও তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। আমি শুধু সমাজ ও সভ্যতার বিকাশের বাঁকে বাঁকে এ সমস্ত আলেম মাশায়েকদের ভূমিকা কী ছিল-তা তুলে ধরে তাদের বক্তব্যের নীতিনিষ্ঠতা প্রমাণের চেষ্টা করব।
বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসন আমলের শুরুতে পিছিয়ে পড়া মুসলিম জনগোষ্ঠী যখন ক্রমান্বয়ে শিক্ষার দিকে ঝুঁকে পড়তে থাকে, তখন এসমস্ত আলেম-মাশায়েকদের উত্তরসুরীরা ফতোয়া দিয়েছিল-ইংরেজি পড়া হারাম। তারা মুসলিম জনগোষ্ঠীকে বিজ্ঞান, চিকিৎসা বিজ্ঞান সহ সকল আধুনিক শিক্ষার বিরুদ্ধে দলবদ্ধভাবে মাদ্রাসা শিক্ষাগ্রহণের জন্যে ফতোয়া জারী করেছিল। এমনকি ইংরেজদের বিরুদ্ধে সৃষ্ট জাতীয়তাবাদী আন্দোলন না জায়েজ বলে ফতোয়া জারী করেছিলেন তাদেরই গুরু মৌলানা মওদুদী।(তার বহুল আলোচিত গ্রন্থ সিয়াসী কাসমাকাস দ্রষ্টব্য)। একই কারণে তারা পাকিস্তান আন্দোলনেরও বিরোধী ছিল শুরু থেকে শেষ পর্যদন্ত। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থাকে তখনো ঘৃণা করত এখনো সমভাবে ঘৃণা করে। তাদের গুরু উল্লেখিত একই গ্রন্থসূত্রে পশ্চিমা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অনেক ফতোয়া দিয়েছেন। তাদের মতে গণতন্ত্র হারাম, ভোট দেওয়া হারাম। তারা গণতন্ত্রের পরিবর্তে খেলাফতে বিশ্বাস করে।
আধুনিক ব্যাংকিং, শেয়ার বাজার ইত্যাদি ব্যবস্থাকে তারা এখনো নাজায়েজ মনে করে-তথাকথিত ইসলামী ব্যাংক চালু করেছে-যা বস্তুত: যে লাউ সেই কদু। আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এক অনন্য অবদান রেডিও টেলিভিশন এর বিরুদ্ধে তাদের ফতোয়া ছিল-ঐ সব শয়তানে বাক্স। এগুলো দেখলে বা শুনলে মুসলমানের ঈমান চলে যাবে।তারা সিনেমা-মুভি ইত্যাদি এখনো জায়েজ বলে না। নিকট অতীত পর্যন্ত তাদের ফতোয়া ছিল-ছবি তোলা নাজায়েজ। মজার ব্যাপার হল-তাদের অনৈতিক স্ববিরোধিতা অত্যন্ত প্রকট হয়ে ধরা পড়ে, তারা যখন ইন্টারনেট, ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটারের বিরুদ্ধে ফতোয়া দিয়ে আজ সে সমস্ত সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে তাদের সরব ও নিরবিচ্ছিন্ন উপস্থিতি আমাদের হতবাক করে। এ মোল্লারা এক সময়ে ট্রেনে চড়া ও বিমানে চড়াও হারাম ফতোয়া দিয়েছিল। এসব আজ ইতিহাস। সত্তরের দশকে, আমাদের স্বাধীনতার অব্যবহিত পর, যখন প্রথম অস্ট্রেলিয়াতে টেস্ট টিউব শিশুর জন্ম হয়, তখন একদল পাকিস্তানী সাংবাদিক তখনও জীবিত মওলানা মওদুদীকে বিষয়টি ধর্মীয় দৃষ্টিতে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন জানতে চাইলে, তিনি বলেছিলেন-এটা খোদার উপর খোদগারী। এটা অবাস্তব ও অসম্ভব একটি প্রকল্প। এটা কখনো সম্ভব হবে না। অথচ সারা দুনিয়াতে শুধু নয়, হাজার হাজার টেস্ট টিউব শিশু জন্ম নিয়েছে এবং নিচ্ছে খোদ আমাদের বাংলাদেশেও।
ষাটের দশকের পূর্ব পর্যন্ত এক, দুই, তিন তালাক বলে যে কোন মুসলিম পুরুষ তার স্ত্রীকে কোন কারণ ব্যতিরেকে যখন তালাক দিতে পারত, তখন ষাটের দশকে সামরিক প্রশাসক আইয়ুব খান মুসলিম পারিবাকিক আইন অধ্যাদেশ-১৯৬১, জারী করে সে ব্যবস্থার পরিবর্তন করেন। তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে পুন: বিবাহ করার বর্বর ইলাবিবাহ প্রথা নিষিদ্ধ করেন। তখন এ সমস্ত মোল্লা মাশায়েকর দল পাকিস্তান আমলে এ আইন ইসলাম বিরোধী বলে প্রবল আন্দোলন সৃষ্টি করেছিল। আইয়ুব খান কঠোরভাবে সে আন্দোলন দমন করেন।
বাংলাদেশে এখন সেই মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ দ্বারা পারিবারিক আদালত পরিচালিত হয়।
আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে তাদের সক্রিয় বিরোধীতা ও যুদ্ধাপরাধ এক কলঙ্কিত ইতিহাস তো বটেই। দু:দুঃখজনকভাবে আমার জানতে ইচ্ছা করছে-আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে এত শহীদের তালিকায়-কেহ কি একজন আলেম,মাশায়েকের নাম দেখাতে পারবেন? বীরপ্রতীক,বীরবিক্রম, বীরশ্রেষ্ট হিসাবে কেহ কি এমন কারো নাম জানেন?
আমার শেষ কথা-এসব আলেম মাশায়েকগণ ধর্মের আলখাল্লা পড়ে যুগে যুগে সমাজ ও সভ্যতার বিকাশের পথে নানা বিরোধীতা ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা চালিয়েছে। কিন্তু সমাজ-সভ্যতা তার নিজস্ব গতিতে এগিয়ে গেছে-এগিয়ে যাবে। তবে তাদের মূঢ় প্ররোচণা ও প্রচারণার কারণে পিছিয়ে পড়েছে মুসলিম জনগোষ্ঠী।এটা আমার কোন মন্তব্য বা ধারণা নয়-এটাই ইতিহাস। তাই এদের কথা শুণলে মোদের মুক্তি হবে না। আমাদের বুঝতে হবে, ভাস্কর্য নির্মাণে তাদের এ বিরোধীতা বস্তুত: সমাজপ্রগতির বিরুদ্ধে তাদের মানসিক অবস্থানের বহি:প্রকাশ।তারা আমাদের মধ্যযুগে নিয়ে যেতে চায়।কেবল ভোটের রাজনীতির বিবেচনায় তাদের সাথে আপোষ করলে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ ইতিহাসের এক নিষ্ফল উপাখ্যানে পরিণত হবে। অতএব, সাধু সাবধান।
টিভি টকশো থেকে শুরু করে সবখানেই দেখি তথাকথিত শিক্ষিতরা এসব আলেমের কুসংষ্কারাচ্ছন্ন কথা সমর্থন করে শুধু রাজনৈতিক কারনে।
আমার প্রশ্ন হেফাজতে ইসলাম যদি লাখো লোক জড়ো করতে পারে তা হলে বাংলাদেশের শিক্ষিত সম্প্রদায় কেন কোটি লোক জড়ো করতে পারে না।
তা হলে কি শিক্ষিত মানুষের হেফাজতের প্রতি নিরব সমর্থন আছে?
দেখুন, আজন্ম লালিত ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে আমাদের সমাজ মৌলবাদী চেতনা বিকাশের জন্য অত্যন্ত উর্বর ক্ষেত্র হয়ে আছে। পক্ষান্তরে ধর্মনিরপেক্ষ কিংবা অসাম্প্রদায়িক চেতনা অর্জন ও তা বিকাশের জন্য কঠিন কঠোর অনুশীলন তথা পঠন-পাঠন অপরিহার্য। ধর্মীয় বিশ্বাসকে লালন পালন ও বিকাশের জন্য দেশব্যাপী মসজিদ, মন্দির মাদ্রাসা সহ ল্ক্ষ প্রতিষ্ঠান রাতদিন কাজ করছে। তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে স্বয়ং সরকার সহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বহু প্রতিষ্ঠান। মাুনষকে যুক্তিবাদী ও বিজ্ঞানমনস্ক করার কোন প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ কি চালু আছে ? বেসরকারি ভাবে চলমান প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনও আজ প্রায় স্থিমিত। আপনার প্রশ্নের উত্তর এখানেই খুঁজতে হবে ।
“বিগত ০২-১২-২০২০ ইং তারিখে দেশের তথাকথিত “৯৫ জন শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে মাশায়েক ও মুফতি” এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে ফতোয়া দিয়েছেন-মানুষ বা অন্যকোন প্রাণীর ভাস্কর্য অথবা মূর্তি নির্মাণ, স্থাপন ও সংরক্ষণ পূজার উদ্দেশ্যে না হলেও সন্দেহাতীত ভাবে নাজায়েজ, স্পষ্ট হারাম এবং কঠোরতম আজাবযোগ্য গুনাহ।”
ওলামা, মুফতি, মাশায়েক প্রমুখেরা কোন বিষয়ে মতামত দিতে পারেন, কিন্তু সেই মতামত মানতে রাষ্ট্র, সরকার বা জনগণ বাধ্য নয়। সমস্যা তখনই হয় যখন ধর্মীয় নেতারা ভেবে নেন যে বাংলাদেশ একটি ইসলামী রাষ্ট্র এবং এখানে সবকিছুই শরীয়া মেনে চলবে। ফতোয়াবাজির মাধ্যমে এই ধর্মীয় নেতাদের উস্কানিমূলক বক্তব্য যখন অরাজকতা সৃষ্টি করে এবং সহিংসতার জন্ম দেয়, তখন আর চুপ করে থাকার অবকাশ থাকে না। সরকারের উচিত এক্ষেত্রে ঝোপের আশেপাশে না, একেবারে ঝোপের মধ্যেই কোপ দেয়া। এই ধরনের অন্যায় আবদারকে মৃদু মনে করে আপোষের চেষ্টা করলে তা ভবিষ্যতে আরও বড় সমস্যার জন্ম দেবে।
এরা সকলেই পাকিস্তানি দালাল,,,,আপনি খুবই ভালো লিখেছেন,,,,,, আরো লেখার আহব্বান রইল,,,