সিলেটের জঙ্গিকান্ডে এটি বুঝতে পারা যায়, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ কতটা গভীরে বিস্তৃত হয়েছে।
সরকার ও দেশের জনগণ আশা করি এবার অনুধাবন করতে পারছে যে, বর্তমানে জঙ্গিবাদ বাংলাদেশের প্রধানতম সমস্যা।
নাস্তিক, প্রগতিশীল, সংখ্যালঘু দিয়ে শুরু করে জঙ্গিদের টার্গেট এখন সারা বাংলাদেশ, এবিষয়টি চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে সিলেট জঙ্গিকান্ড।

এই জঙ্গিরা হঠাৎ করে উদ্ভুত হয়নি। বছরের পর বছর সামাজিক ও ধর্মীয় প্রভাবে এদের জন্ম।
সামাজিকভাবে ইসলামের মারেফতি ভাবধারা থেকে সরে এসে শরিয়ত ধারা এদেশে প্রতিষ্টিত হয়েছে।
সুফি ভাবধারা থেকে সরে এসে সালাফি-ওয়াহাবি-মওদুদি-তালেবানি দেওবন্দির মত উগ্র মতধারা এদেশে সৃষ্টি ও বিস্তৃত হয়েছে বহু বছরের প্রক্রিয়ায়।
উগ্রবাদি ওয়াজ মাহফিল, শরিয়তি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জনদাবি, নিয়মিত সংখ্যালঘু নিপীড়নের ঘটনাগুলো এদেশে কয়েক দশক ধরে সবার নাকের উপর ঘটেছে।
চট্টগ্রামের পার্বত্য ও দুর্গম অঞ্চলে এবং নোয়াখালির চর অঞ্চলগুলো জঙ্গি ট্রেনিং ক্যাম্পের সন্ধান পাওয়ার খবর নিয়মিতভাবে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

প্রশাসন এসবে তেমন মাথা ঘামায়নি।
এর কারন হতে পারে, হয় প্রশাসন উদাসিন ছিল, নয়তো প্রশাসনের ক্ষমতাবানরা এমনটিকে স্বাভাবিক ঘটনা বলে মেনে নিয়েছিল।
প্রশাসনের উদাসিনতা হোক কিংবা প্রচ্ছন্ন সমর্থন, বছরের পর বছর ঘটে যাওয়া এসব ঘটনার সামষ্টিক পরিণতি হচ্ছে বর্তমান জঙ্গি পরিস্থিতি।
এর দায় প্রশাসন বা জনগণ কেউ এড়াতে পারবে না।
বছরের পর বছর প্রগতিশীলরা এসব বিষয়ে প্রশাসন এবং জনগণকে জঙ্গি বিষয়ে সাবধান করে এসেছে।
কিন্তু কেউ এসব গায়ে মাখানোর দায় বোধ করেনি।
এমনকি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যখন নাস্তিক, প্রগতিশীল ও সংখ্যালঘুদের উপর একের পর এক জঙ্গি হামলা হয়েছে, তখন প্রশাসন জঙ্গিবাদকে অস্বীকার করেছে।

গুলশান জঙ্গিহামলার পর সরকার জঙ্গিবাদের উপস্থিতির কথা স্বীকার করতে বাধ্য হয় এবং জঙ্গিদের বিরুদ্ধে একশানে যায়।
কিন্তু ততদিনে বহু দেরি হয়ে গেছে, জঙ্গিবাদের বিষবৃক্ষের তার যৌবনে পদাপর্ন করেছে এদেশে।
সিলেট, ঢাকা, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের জঙ্গি ঘটনাগুলো তার প্রমাণ।

জঙ্গিবাদের বিষয়ে প্রশাসন এতটা উদাসিন ছিল যে, ধর্মীয় ভাবধারার পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করার মত ঘটনা এদেশে সাম্প্রতিকালে ঘটেছে।
জঙ্গিবাদের অন্যতম উৎস মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কারের বদলে প্রশাসন মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থার ধর্মীয়করণের মধ্য দিয়ে বরং জঙ্গিবাদ বিস্তৃত হবার উপায় করে দিয়েছে।

জঙ্গিবাদের যে আগুন বাংলাদেশে জ্বলছে, তা নিভানো না হলে কেউ-ই পুড়ে যাওয়া থেকে বাদ যাবে না।
সরকার ও জনগণকে এবিষয়টি মেনে নিয়ে সমাধানের দিকে এগুতো হবে যে, আন্তর্জাতিকভাবে বর্তমানে বিস্তৃত ইসলামি জঙ্গিবাদের শিকার বাংলাদেশ; এসব কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং দীর্ঘদিনের ধারাবাহিক ঘটনার অংশ।
জঙ্গিবাদের এই তীব্র উত্থান বন্ধ না করা গেলে দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ক্রমেই আরো অস্থির হয়ে উঠবে।

প্রশাসনের উচিত তার ইন্টেলিজেন্স ও নিরাপত্তা শক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার জঙ্গিনির্মূল না হওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে প্রায়োরিটি দিয়ে চালিয়ে যাওয়া।
জঙ্গিদের আর্দশিক নেতৃবৃন্দ, অর্থ ও অস্ত্রের উৎস উদঘাটন এবং ধ্বংস করা নিশ্চিত করতে হবে।
জঙ্গিদের নেটওয়ার্কের একের পর এক স্তরের ধ্বংস ঘটাতে হবে।
এর ব্যাতয় হলে, সিলেটকান্ডের চেয়ে ভয়াবহ পরিণতি বাংলাদেশের জন্য অপেক্ষা করছে।

জঙ্গিবাদ দমনে শক্তির প্রয়োগের পাশাপাশি মাদ্রাসা ও ধর্মীয় সংগঠনগুলোতে নজরদারি ও জোরদার নিয়ন্ত্রন আরোপ করা জরুরি। কারন জঙ্গিবাদের আর্দশিক উৎস হলো এসব প্রতিষ্ঠান। শিক্ষাব্যবস্থার সাম্প্রতিক ধর্মীয়করন নীতি চিরস্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে। সর্বস্তরে বিজ্ঞানমনস্ক ও সেক্যুলার শিক্ষাব্যবস্থা চালু হলে, জঙ্গিবাদের এই বিষবৃক্ষের শিকড় উপরে ফেলা যাবে। শিকড়হীন গাছ টেকে না, তেমনি জঙ্গিবাদও তার একটি বড় উৎসস্থান হারাবে।

জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির কর্মসূচী বৃদ্ধি করা আবশ্যকীয়।
জনগণকে এটি অনুধাবন করাতে হবে যে- দেশ ভয়াবহ ধর্মীয় সন্ত্রাসে আক্রান্ত, এখানে জঙ্গিদের প্রতি কোন সিমপ্যাথি দেখানো যাবে না, ধার্মিক-নিধার্মিক নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিক জঙ্গিদের হামলার শিকার হতে পারেন।
স্থানীয় প্রশাসনকে সংযুক্ত করে গ্রাম ও শহরের প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত জঙ্গিবাদ বিরুদ্ধে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
এরফলে জঙ্গিবাদ দমনে প্রশাসন ও জনগণ পারস্পরিক সহযোগীতায় কাজ করতে পারবে।

জঙ্গিকান্ডের সবচেয়ে বড় বেনেফিসিয়ারি হলো জামাত। তাই, জামাতের কার্যক্রমের উপর কড়া নজরদারি রাখতে হবে।
কারন, জামাত হলো এসব জঙ্গিদের মূল নার্চারার, জঙ্গিবাদ যদি সাপের শরীর হয়, তবে জামাত সেই সাপের মাথা।
গত জোট সরকারের আমলে জেএমবি’র উৎত্থানের ও কার্যক্রম পরিচালনা করার ঘটনা থেতে আমরা এটি স্পষ্ট বুঝতে পারি যে- জামাতের প্রচ্ছন্ন ছায়া জেএমবি, জামাতের ডার্টিওয়ার্ক করার জন্য জেএমবি’র জন্ম হয়েছিল।
সুবীর ভৌমিকের লেখা ‘Jihad or Joi Bangla: Bangladesh in Peril’ নামে একটি আর্টিকেল জয়দ্বীপ সাইকিয়া ও ইকাতেরিনা স্তেপানোভা’র সম্পাদিত ও ২০০৯ সালে প্রকাশিত ‘Terrorism: Patterns of Internationalization’ বইতে সংকলিত হয়েছিল। এই প্রবন্ধে লেখক রীতিমত তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন ও গবেষণা করে দেখিয়েছেন যে, জামাত-ই-ইসলামি বাংলাদেশে ইসলামি জঙ্গিবাদের মূলহোতা, পৃষ্টপোষক এবং লালনকারী। এমনকি জামাত-ই-ইসলামি বৃহত্তর উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে তাদের তরিকা ‘মওদুদিবাদের’ বাইরে ভিন্ন তরিকার জঙ্গিসংগঠনদেরও উৎসাহ, সহযোগিতা ও পৃষ্টপোষকতা করে। বর্তমানে জঙ্গিদের সম্পর্কে যেসব প্রাতিষ্ঠানিক রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে, তাতে এই বিষয়টি খুবই স্পষ্ট। সুবীর তার গবেষণা ও উপস্থাপিত তথ্য-উপাত্ত হতে দেখিয়েছেন, জামাতের এই জঙ্গি পরিকল্পনা কম করে হলেও দুই যুগ আগে অর্থাৎ আওয়ামীলীগের প্রথম পিরিয়ডে (১৯৯৬) করা হয়েছিল। বাংলাদেশ সরকারের কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগ জঙ্গিসমস্যার মূল-উৎপাটনে এসব ডাটাগুলো এনালাইসিস করতে পারেন।

বাংলাদেশের জঙ্গি ঘটনাগুলোর পর মিডিয়ায় প্রকাশিত তথ্য-উপাত্ত হতে জামাতের সংশ্লিষ্ঠতার কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে আলোকপাত করা যায়। ইসলামি জিহাদি আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো তথা- আইএস, আল-কায়েদা, তালেবান, লস্কর ই তৈয়্যবা ও ভারতীয় ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠীর ভাবশিষ্য (আর্দশে অনুপ্রাণীত ও কর্মপন্থার অনুসরণ) হিসেবে কাজ করছে বাংলাদেশের জেএমবি ও আনসার আল ইসলাম। জেএমবি ও আনসার আল ইসলাম সংগঠন ভিন্ন হলেও অভিন্ন উদ্দেশ্য ও কর্মপন্থায় কাজ করছে অর্থাৎ সহিংসতার মাধ্যমে ইসলামি শাসন কায়েম করতে চাইছে এবং এই দুটো সংগঠনের মধ্যে যোগাযোগ আছে। সিলেটের জঙ্গিকান্ড, গুলশান ও শোলাকিয়া হামলার অনুসন্ধান, কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় অভিযান এবং বিভিন্নস্থানে গ্রেফতারকৃত জঙ্গিদের হতে প্রাপ্ত তথ্য হতে এটি স্পষ্ট যে, এসব অর্গানাইজড হামলার সাথে জড়িত জেএমবি, যা আইএসের ভাবশিষ্য। জেএমবি ও আনসার আল ইসলাম “একটি গ্রুপেরই” পোষ্য দুটো সংগঠন।
আইএস ও আল-কায়েদার সাথে এদের সম্পর্ক শুধুই আর্দশিক, কর্মপন্থার, টেকনিক্যাল ও লজিস্টিক বিষয়ে। জামাত-শিবির, হেফাজত, হিজবুত তাহরির ও মাদ্রাসার অনেকে এই জঙ্গিচক্রের সাথে সরাসরি জড়িত। ভিন্ন তরিকার এই মানুষগুলো কমন পার্পাসের খাতিরে একত্রে কাজ করছে, তা হলো সহিংসতার মাধ্যমে ইসলামি খিলাফত কায়েম করা।
উপরে বলেছি, ‘জেএমবি ও আনসার আল ইসলাম’ একটি গ্রুপের পোষ্য জঙ্গিসংগঠন। সেই গ্রুপটি জামাত-ই-ইসলামি, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই, বিএনপি, জিহাদি আর্দশের ব্যবসায়ী-কর্তাব্যাক্তির সমন্বয়ে গঠিত গ্রুপ, যাদের এক ও অভিন্ন লক্ষ্য বাংলাদেশে ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠা করা।

চারটি স্তরে এই জঙ্গিচক্র কাজ করে- স্পন্সর, সংগঠক, দাওয়াহ ও মুজাহিদ গ্রুপ।
স্পন্সর গ্রুপ- জঙ্গিদের স্পন্সর, লজিস্টিক সাপোর্ট ও লালন পালন করে, এদের ট্রেস করা কঠিন, এরা কাজের ক্ষেত্রে থার্ড-ফোর্থ-ফিফথ পার্টি ব্যবহার করে। এই গ্রুপের মাথা হলো জামাত-ই-ইসলামি ও টেকনিক্যাল পার্টনার পাকিস্তানের আইএসআই।
সংগঠক গ্রুপ- এরা স্পন্সর গ্রুপ ও আইএস-আলকায়েদার সাথে যোগাযোগ মেনটেন করে এবং জঙ্গিসংগঠন পরিচালনা করে। মেজর জিয়া ও তামিমরা এই গ্রুপের সদস্য।
দাওয়াহ গ্রুপ- এরা জঙ্গি তথা জিহাদি বা মুজাহিদ রিক্রুট করে। এরা মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ডের বা খুব ভালো জিহাদ ও ধর্মজ্ঞান সম্পন্ন এবং বাকপটু ও বাগ্মী। মুজাহিদ তথা জঙ্গিদের রিক্রুট করার এই কাজটি ওরা করে অনলাইনে ও এলাকা/আড্ডা/বন্ধুর বড়ভাই হয়ে। রিক্রুটিংয়ের প্রক্রিয়াটা শিবিরের রিক্রুটিং প্রক্রিয়ার অনুরূপ; বন্ধু বা বড়ভাই হয়ে এরা ঘনিষ্ট হয় এবং ধীরে ধীরে জিহাদের পথেথে অনুপ্রাণিত করে। এরা সংগঠক গ্রুপ ও মুজাহিদ গ্রুপের মাঝে সমন্বয় সাধন করে এবং মুজাহিদদের নার্সিং ও পরিচালনা করে। মুফতি মো. জসীমউদ্দিন রাহমানী, রেদয়ানুল আজাদ রানা, হাফেজ মাওলানা মো. রাশেদুল আলমরা এই গ্রুপের সদস্য।
মুজাহিদ গ্রুপ- এরা জঙ্গি অপারেশানগুলোতে অংশ নেয়। ধর্মের বিধান দেখিয়ে এদের হত্যার ট্রেনিং দেয়া হয়। টার্গেট কিলিং এবং ম্যাস কিলিং ও এটাকে এরা অংশ নেয়। মুজাহিদ গ্রুপের সদস্যদের রিক্রুট করা হয় স্কুল-কলেজ-ভার্সিটি-মাদ্রাসা ও বিভিন্ন এলাকা হতে।
নাশকতা করার জন্য ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে জঙ্গিরা বর্তমানে সারাদেশে অসংখ্য ক্যাম্প স্থাপন করেছে। তাদের কর্মপন্থা হচ্ছে টার্গেট কিলিং ও জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য বোম্বিং ও কিলিং। জঙ্গিবাদ দমনে তাই প্রশাসনকে এইসব স্তরগুলোর একেবারে গোড়া থেকে অপারেশান চালাতে হবে।

জঙ্গিদের উদ্দেশ্য জেহাদের মাধ্যমে তালেবান/আইএস ঘরানার ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠা করা।
আর এজন্য তাদের মূল টার্গেট প্রগতিশীল ও ভিন্নমতালম্বীদের হত্যা ও বোমা আতংকের মাধ্যমে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা।
এলক্ষ্যে তারা চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড, সিলেটের শিববাড়ির মত সারা দেশে নিজেদের জেহাদি অপারেশান ক্যাম্প প্রতিষ্ঠা করেছে কিন্তু এভাবে সহিংসতা করে কি অসত্য ও বর্বর ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠা করা যায়?
ইউরোপের মধ্যযুগে বিজ্ঞানমনস্কতার জন্য, মুক্তমত প্রকাশ করার অপরাধে বিজ্ঞানীদের হত্যা করা হতো, একঘরে করে রাখা হতো, সামাজিকভাবে বয়কট করা হতো; প্রাক-আধুনিক যুগেও ইউরোপে বিজ্ঞানমনস্কতা ও মুক্তমতের জন্য দেশান্তরী হতে হয়েছে, সামাজিকভাবে নিগৃহীত হতে হয়েছে, ধর্মীয় সন্ত্রাসীদের দ্বারা নির্যাতিত হতে হয়েছে। ধর্মীয় সন্ত্রাসীরা সত্য ও প্রগতির কাছে কোনঠাসা হয়ে নাশকতা করেছিল, আতংক সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু তাতে কি কুসংস্কার জিতে গিয়েছিল? না, জিতে যায়নি বরং কুসংস্কারমনারা তাদের কুসংস্কারসহ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আজকে সভ্যতার চরম শিখরে অবস্থান করা ইউরোপ তার প্রমাণ।
বাংলাদেশ বর্তমানে ইউরোপের মধ্যযুগ অতিক্রম করছে। এখানে বিজ্ঞানমনস্কতা, মুক্তমত, উন্মুক্ত লেখালেখির জন্য প্রাণ দিতে হচ্ছে। কুসংস্কারবাদীরা ফণা তুলে বিষ ছোবলে হত্যা করে সত্য ও আলোর পথযাত্রী মুক্তমনাদের। কিন্তু এসবে কি সত্যের প্রতিষ্ঠা বন্ধ হবে? হবে না। রাত শেষে দিন আসে; এটি যেমন ধ্রুব সত্য; তেমনি এই জনপদে বিজ্ঞানমনস্কতার প্রতিষ্ঠা হবেই, এটিই অবধারিত পরিণতি। কুসংস্কারমনা, বর্বর ধর্মীয় সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের বিলুপ্তি হবেই। এখনো অনেক পথ পাড়ি দেয়া বাকি আর সেই পথটা খুব বন্ধুর, অমসৃণ কিন্তু প্রগতির অগ্রযাত্রা ঠেকানো যায় না।

বর্তমানে যে দুঃসময় আমরা পার করছি, তাতে বাংলাদেশ পুড়ছে। জঙ্গিসমস্যার প্রতিকারে বাংলাদেশের জনগণ ও প্রশাসনকে এক কাতারে এসে কাজ করতে হবে। নচেৎ আরো দীর্ঘদিন জঙ্গিবাদের আগুনে পুড়বে বাংলাদেশ।